Tag: রামকৃষ্ণ কথা

  • Ramakrishna 391: নরেন্দ্রের উপর যত ব্যাকুলতা হয়েছিল এর উপর (ছোট নরেনের) তত হয় নাই

    Ramakrishna 391: নরেন্দ্রের উপর যত ব্যাকুলতা হয়েছিল এর উপর (ছোট নরেনের) তত হয় নাই

    ঠাকুর ছোটখাটটিতে বসিয়া আছেন। ছোকরা ভক্তদের দেখিতেছেন ও আনন্দে বিভোর হইতেছেন। রাখাল এখন দক্ষিণেশ্বরে আসেন না। কয় মাস বলরামের সহিত বৃন্দাবনে ছিলেন। ফিরিয়া আসিয়া এখন বাটিতে আছেন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (সহাস্যে) – রাখাল এখন পেনশন খাচ্ছে। বৃন্দাবন থেকে এসে এখন বাড়িতে থাকে। বাড়িতে পরিবার আছে। কিন্তু আবার বলেছে হাজার টাকা মাহিনা দিলে ও চাকরি করবে না। এখানে শুয়ে শুয়ে বলত, তোমাকেও ভালো লাগেনা। এমনই তার একটি অবস্থা হয়েছিল।

    ভবনাথ বিয়ে করেছে কিন্তু সমস্ত রাত্রি স্ত্রীর সঙ্গে কেবল ধর্মকথা কয়। ঈশ্বরের কথা নিয়ে দুজনে থাকে, আমি বললাম পরিবারের সঙ্গে একটু আমোদ আহ্লাদ করবি। তখন রেগে রোক করে বললে কি আমরাও আমদ আহ্লাদ নিয়ে থাকব।

    ঠাকুর এইবার নরেন্দ্রের কথা কহিতেছেন।

    শ্রী রামকৃষ্ণ ভক্তদের প্রতি- কিন্তু নরেন্দ্রের উপর যত ব্যাকুলতা হয়েছিল এর উপর (ছোট নরেনের) তত হয় নাই।

    (হরিপদর প্রতি)- তুই গিরিশ ঘোষের বাড়ি যাস?

    হরিপদ- আমাদের বাড়ির কাছে বাড়ি প্রায় যায়।

    শ্রীরামকৃষ্ণ- নরেন্দ্র চায়

    হরিপদ- আজ্ঞে হ্যাঁ। কখন কখন দেখতে পায়।

    শ্রীরামকৃষ্ণ- গিরিশ ঘোষ যা বলে তাতে ও কি বলে।

    হরিপদ- তর্কে হেরে গেছেন

    শ্রী রামকৃষ্ণ- না আসে বললে, গিরিশ ঘোষের এখন এত বিশ্বাস। আমি কেন কোন কথা বলবো।

    জজ অনুকূল মুখোপাধ্যায় জামাইয়ের ভাই আসিয়াছেন

    শ্রী রামকৃষ্ণ- তুমি নরেন্দ্র কে জানো?

    জামাইয়ের ভাই- আজ্ঞে হ্যাঁ নরেন্দ্র বুদ্ধিমান ছোকরা।

    শ্রী রামকৃষ্ণ (ভক্তদের প্রতি)- ইনি ভালো লোক। যে কালে নরেন্দ্রের সুখ্যাতি করেছেন, সেদিন নরেন্দ্র এসেছিল। ত্রৈলোকের সঙ্গে সেদিন গান গাইলে কিন্তু ও গানটি সেদিন আলুনি লাগলো।

  • Ramakrishna 390: ঠাকুর ছোটখাটটিতে বসিয়া আছেন, ছোকরা ভক্তদের দেখিতেছেন ও আনন্দে বিভোর হইতেছেন

    Ramakrishna 390: ঠাকুর ছোটখাটটিতে বসিয়া আছেন, ছোকরা ভক্তদের দেখিতেছেন ও আনন্দে বিভোর হইতেছেন

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) (মাস্টারের প্রতি)- আমার এসব বিচার ভালো লাগেনা।

    শ্রী রামকৃষ্ণ (রামের প্রতি)- থাম তোমার একে অসুখ

    মাস্টারের প্রতি- আমার এসব ভালো লাগেনা। আমি কাঁদতুম। আর বলতুম, মা এ বলছে এই এই। ও বলছে আর একরকম। কোনটা সত্য তুই আমায় বলে দে।

    শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে আনন্দে বসিয়া আছেন। বাবুরাম ছোট নরেন, পল্টু, হরিপদ, মোহিনী মোহন ইত্যাদি ভক্তেরা মেঝেতে বসে আছেন। একটি ব্রাহ্মণ যুবক দুই-তিন দিন ঠাকুরের কাছে আছেন। তিনিও বসিয়া আছেন। আজ শনিবার ২৫ শে ফাল্গুন ৭ মার্চ ১৮৮৫। বেলা আন্দাজ তিনটা আর চৈত্র কৃষ্ণা সপ্তমী।

    শ্রী শ্রী মা, নহবতে আজকাল আছেন তিনি মাঝে মাঝে ঠাকুরবাড়িতে আসিয়া থাকেন। শ্রীরামকৃষ্ণের সেবার জন্য। মোহিনী মোহনের সঙ্গে স্ত্রী। নবীন বাবুর মা গাড়ি করিয়া আসিয়াছেন। মেয়েরা নহবতে গিয়া শ্রী শ্রী মাকে দর্শন ও প্রণাম করিয়া সেই খানেই আছেন। ভক্তেরা একটু সরে গেলে ঠাকুরকে আসিয়া প্রণাম করিবেন। ঠাকুর ছোটখাটটিতে বসিয়া আছেন। ছোকরা ভক্তদের দেখিতেছেন ও আনন্দে বিভোর হইতেছেন। রাখাল এখন দক্ষিণেশ্বরে আসেন না। কয় মাস বলরামের সহিত বৃন্দাবনে ছিলেন। ফিরিয়া আসিয়া এখন বাটিতে আছেন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (সহাস্যে) – রাখাল এখন পেনশন খাচ্ছে। বৃন্দাবন থেকে এসে এখন বাড়িতে থাকে। বাড়িতে পরিবার আছে। কিন্তু আবার বলেছে হাজার টাকা মাহিনা দিলে ও চাকরি করবে না। এখানে শুয়ে শুয়ে বলত, তোমাকেও ভালো লাগেনা। এমনই তার একটি অবস্থা হয়েছিল।

    ভবনাথ বিয়ে করেছে কিন্তু সমস্ত রাত্রি স্ত্রীর সঙ্গে কেবল ধর্মকথা কয়। ঈশ্বরের কথা নিয়ে দুজনে থাকে, আমি বললাম পরিবারের সঙ্গে একটু আমোদ আহ্লাদ করবি। তখন রেগে রোক করে বললে কি আমরাও আমদ আহ্লাদ নিয়ে থাকব।

  • Ramakrishna 389: কোনটা সত্য তুই আমায় বলে দে

    Ramakrishna 389: কোনটা সত্য তুই আমায় বলে দে

     এইবার ঠাকুর মাস্টারের সহিত কথা কহিতে কহিতে ঘরে ফিরতেছেন। বকুলতলায় ঘাটের কাছে আসিয়া বসিলেন, আচ্ছা এই যে কেউ কেউ অবতার বলছে তোমার কি বোধ হয়?

    কথা কহিতে কহিতে ঘরে আসিয়া পড়িলেন। চটি জুতা খুলিয়া ছোট খাটটিতে বসলেন। খাটের পূর্ব দিকের পাশে একখানে পাপোশ আছে। মাস্টার তাহার উপর বসিয়া কথা কহিতেছেন। ঠাকুর ওই কথা আবার জিজ্ঞাসা করিতেছেন। অন্যান্য ভক্তরা একটু দূরে বসিয়া আছেন। তারা এ সকল কথা কিছু বুঝিতে পারিতেছেন না।

    শ্রীরামকৃষ্ণ- তুমি কি বলো?

    মাস্টার- আজ্ঞা আমারও তাই মনে হয়। যেমন চৈতন্যদেব ছিলেন।

    শ্রী রামকৃষ্ণ (Ramakrishna)- পূর্ণ না অংশ? না কলা? ওজন বলোনা।

    মাস্টার- আজ্ঞে ওজন বুঝতে পারছি না। তবে তাঁর শক্তি অবতীর্ণ হয়েছেন তিনি তো আছেনই।

    শ্রী রামকৃষ্ণ- হ্যাঁ চৈতন্যদেব শক্তি চেয়েছিলেন (Kathamrita)।

    ঠাকুর কিন্তু চুপ করিয়া রহিলেন। পরেই বলিতেছেন- কিন্তু ষড়ভুজ

    মাস্টার ভাবিতেছেন। চৈতন্যদেব ষড়ভূজ হয়েছিলেন। ভক্তরা দেখিয়াছিলেন ঠাকুর একথা উল্লেখ কেন করিলেন!

    (পূর্বকথা- ঠাকুরের উন্মাদ ও মার কাছে ক্রন্দন, তর্ক বিচার ভালো লাগেনা)

    ভক্তেরা অদূরে ঘরের ভেতর বসিয়া আছেন। নরেন্দ্র বিচার করিতেছেন। রাম সবে অসুখ থেকে সেরে এসেছেন। তিনিও নরেন্দ্র সঙ্গে (Kathamrita) ঘোরতর তর্ক করছেন। ঠাকুর দেখিতেছেন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) (মাস্টারের প্রতি)- আমার এসব বিচার ভালো লাগেনা।

    শ্রী রামকৃষ্ণ (রামের প্রতি)- থাম তোমার একে অসুখ

    মাস্টারের প্রতি- আমার এসব ভালো লাগেনা। আমি কাঁদতুম। আর বলতুম, মা এ বলছে এই এই। ও বলছে আর একরকম। কোনটা সত্য তুই আমায় বলে দে।

  • Ramakrishna 387: পাকা খেলোয়াড়ের কিছু ভয় নাই

    Ramakrishna 387: পাকা খেলোয়াড়ের কিছু ভয় নাই

    ঠাকুর ঘরে প্রবেশ করিলেন। ভক্তদের গায়ে আবির দিলেন। সকলেই প্রণাম করিতে লাগলেন। অপরাহ্ণ হইল। ভক্তরা এদিক-ওদিক বেড়াতে লাগিলেন। ঠাকুর মাস্টারের সঙ্গে চুপিচুপি কথা কইতেছেন। কাছে কেহ নাই। ভক্তদের কথা কহিতেছেন। বলছেন, আচ্ছা সবাই বলে বেশ ধ্যান হয়। পল্টুর ধ্যান হয় না কেন?

    নরেন্দ্রকে তোমার কি রকম মনে হয়? বেশ সরল তবে সংসারের অনেক তাল পড়েছে। তাই একটু চাপা ও থাকবে না।

    ঠাকুর মাঝে মাঝে বারান্দায় উঠিয়া যাইতেছেন (Kathamrita)। নরেন্দ্র একজন বেদান্তবাদীর সঙ্গে বিচার করছেন। ক্রমে ভক্তেরা আবার ঘরে আসিল। মহিমাচরণকে স্তব পাঠ করিতে বলিলেন। তিনি মহান নির্বাণ তন্ত্র হইতে স্তব বলিতেছেন।

    (গৃহস্থের প্রতি অভয়) (Kathamrita)

    আরও দুই একটি স্তবের পর মহিমাচরণ শংকরাচার্যের স্তব বলিতেছেন। তাহাতে সংসার কূপের, সংসার গহনের কথা আছে। মহিমাচরণ সংসারী ভক্ত।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (মহিমার প্রতি) (Ramakrishna)- সংসার কূপ, সংসার গহন কেন বল? ও প্রথম প্রথম বলতে হয় তাকে ধরলে আর ভয় কি তখন-

    এই সংসার মজার কুটি
    আমি খাই দাই আর মজা লুটি
    জনক রাজা মহাতেজা
    তার কিসে ছিল ত্রুটি!
    সে যে এদিক-ওদিক দুদিক রেখেছিল দুধের বাটি

    কি ভয়! তাঁকে ধর। কাঁটাবন হলেই বা। জুতো পায়ে দিয়ে কাঁটাবনে চলে যাও। কিসের ভয় যে বুড়ি ছোঁয়, সে কি আর চোর হয়।

    জনক রাজা দুখানা তলোয়ার ঘোরাত (Ramakrishna)। একখানা জ্ঞানের, একখানা কর্মের। পাকা খেলোয়াড়ের কিছু ভয় নাই। এরুপ ঈশ্বরীয় কথা চলিতেছে। ঠাকুর ছোটখাটটিতে বসে আছেন। খাটের পাশে মাস্টার বসে আছেন।

  • Ramakrishna 386: ঠাকুর পাকা উঠান দিয়া কালীঘাটের দিকে যাইতেছেন রাধাকান্তের মন্দিরে আগে প্রবেশ করিলেন

    Ramakrishna 386: ঠাকুর পাকা উঠান দিয়া কালীঘাটের দিকে যাইতেছেন রাধাকান্তের মন্দিরে আগে প্রবেশ করিলেন

    শ্রী শ্রী দোলযাত্রা ও শ্রীরামকৃষ্ণের রাধাকান্ত- মা কালীকে ও ভক্ত দিকের গায়ে আবির প্রদান

    নবাই চৈতন্য গান গাহিতেছেন। ভক্তরা সকলেই বসিয়া আছেন। ঠাকুর ছোট খাটটিতে বসিয়াছিলেন। হঠাৎ উঠিলেন। ঘরের বাহিরে গেলেন (Kathamrita)। ভক্তরা সকলে বসিয়া রহিলেন গান চলিতে লাগিল।

    মাস্টার ঠাকুরের (Ramakrishna) সঙ্গে সঙ্গে গেলেন। ঠাকুর পাকা উঠান দিয়া কালীঘাটের দিকে যাইতেছেন। রাধাকান্তের মন্দির আগে প্রবেশ করিলেন। ভূমিষ্ঠ হইয়া প্রণাম করিলেন। তাঁহার প্রণাম দেখিয়ে মাস্টারও প্রণাম করলে। ঠাকুরের সম্মুখে থালায় আবির ছিল।

    এইবার কালিঘরে যাইতেছেন। প্রথম সাতটি ধাপ ছাড়াইয়া চাতালে দাঁড়াইলেন। মাকে দর্শন করিয়া ভিতরে প্রবেশ করিলেন। মাকে আবির দিলেন। প্রণাম করিয়া কালীঘাট (Ramakrishna) হইতে চলিয়া আসিতেছেন। কালিঘরের সম্মুখের চাতালে দাঁড়াইয়া মাস্টারকে বলিতেছেন, বাবুরাম কে আনলে না কেন?

    ঠাকুর আবার পাকা উঠান দিয়া যাইতেছেন। সঙ্গে মাস্টার ও আর একজন আবিরের থালা হাতে করিয়া আসিতেছেন। ঘরে প্রবেশ করিয়া সব পটকে ফাগ দিলেন। দুই একটি পট ছাড়া নিজের ফটোগ্রাফ ও যিশুখ্রিস্টের ছবি।
    এইবার বারান্দায় আসিলেন (Kathamrita)। নরেন্দ্র ঘরে ঢুকিতে বারান্দায় বসিয়া আছেন কোনও কোনও ভক্তের সহিত কথা কহিতেছেন। ঠাকুর নরেন্দ্রের গায়ে হাত দিলেন। ঘরে ঢুকিতেছেন। মাস্টার সঙ্গে আসিতেছেন। তিনিও আবির প্রসাদ পাইলেন।

    ঘরে প্রবেশ করিলেন। ভক্তদের গায়ে আবির দিলেন। সকলেই প্রণাম করিতে লাগলেন। অপরাহ্ণ হইল। ভক্তরা এদিক-ওদিক বেড়াতে লাগিলেন। ঠাকুর মাস্টারের সঙ্গে চুপিচুপি কথা কইতেছেন। কাছে কেহ নাই। ভক্তদের কথা কহিতেছেন। বলছেন, আচ্ছা সবাই বলে বেশ ধ্যান হয়। পল্টুর ধ্যান হয় না কেন?

  • Ramakrishna 385: এগিয়ে পড়ো, আরও আগে যাও চন্দন কাঠ পাবে, আরও আগে যাও রুপার খনি পাবে…

    Ramakrishna 385: এগিয়ে পড়ো, আরও আগে যাও চন্দন কাঠ পাবে, আরও আগে যাও রুপার খনি পাবে…

    শ্রীরামকৃষ্ণের ভয়, বুঝি নরেন্দ্র আর কাহারও হইল। আমার বুঝি হল না। নরেন্দ্র অশ্রুপূর্ণ লোচনে চাহিয়া আছেন। বাইরের একটি ভক্ত ঠাকুরকে দর্শন করিয়া আসিয়াছিলেন। তিনিও কাছে বসে সমস্ত দেখিতেছিলেন।

    ভক্ত- মহাশয় কামিনী কাঞ্চন যদি ত্যাগ করতে হবে। তবে গৃহস্থ কি করবে?

    শ্রীরামকৃষ্ণ- তা তুমি করো না, আমাদের অমনি একটা কথা হয়ে গেল।

    (গৃহস্থ ভক্তের প্রতি অভয়দান ও উত্তেজনা)

    মহিমাচরন চুপ করিয়া বসিয়া আছেন মুখে কথাটি নাই

    শ্রীরামকৃষ্ণ (মহিমার প্রতি)- এগিয়ে পড়। আর আরও আগে যাও চন্দন কাঠ পাবে, আরও আগে যাও রুপার খনি পাবে, আরও এগিয়ে যাও সোনার খনি পাবে, আরও এগিয়ে যাও হিরে মাণিক পাবে। এগিয়ে পড়ো।

    মহিমা- আজ্ঞে টেনে রাখে যে এগুতে দেয় না

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)- কেন লাগাম কাটো তার নাম গুণে কাটো, কালী নামেতে কালপাশ কাটে।

    নরেন্দ্র পিতৃ বিয়োগের পর সংসারে বড় কষ্ট পাইতেছেন। তাহার উপর অনেক তাল যাইতেছে। ঠাকুর মাঝে মাঝে নরেন্দ্রকে দেখিতেছেন। ঠাকুর (Ramakrishna) বলিতেছেন, তুই কি চিকিৎসক হয়েছিস?

    ঠাকুর (Ramakrishna) কি বলিতেছেন নরেন্দ্রের এই বয়সে অনেক দেখাশোনা হইল। সুখ দুঃখের সঙ্গে অনেক (Kathamrita) পরিচয় হইল। নরেন্দ্র ঈষৎ হাসিয়া চুপ করিয়া রইলেন।

    শ্রী শ্রী দোলযাত্রা ও শ্রীরামকৃষ্ণের রাধাকান্ত- মা কালীকে ও ভক্ত দিকের গায়ে আবির প্রদান

    নবাই চৈতন্য গান গাহিতেছেন। ভক্তরা সকলেই বসিয়া আছেন। ঠাকুর ছোট খাটটিতে বসিয়াছিলেন। হঠাৎ উঠিলেন। ঘরের বাহিরে গেলেন (Kathamrita)। ভক্তরা সকলে বসিয়া রহিলেন গান চলিতে লাগিল।

    মাস্টার ঠাকুরের (Ramakrishna) সঙ্গে সঙ্গে গেলেন। ঠাকুর পাকা উঠান দিয়া কালীঘাটের দিকে যাইতেছেন। রাধাকান্তের মন্দির আগে প্রবেশ করিলেন। ভূমিষ্ঠ হইয়া প্রণাম করিলেন। তাঁহার প্রণাম দেখিয়ে মাস্টারও প্রণাম করলে। ঠাকুরের সম্মুখে থালায় আবির ছিল।

  • Ramakrishna 384: শ্রীরামকৃষ্ণ নরেন্দ্রকে বলিলেন, বাবা কামিনী কাঞ্চন ত্যাগ না হলে হবে না

    Ramakrishna 384: শ্রীরামকৃষ্ণ নরেন্দ্রকে বলিলেন, বাবা কামিনী কাঞ্চন ত্যাগ না হলে হবে না

    (পূর্বকথা- হৃদয় মুখুজ্জের হাঁকডাক- ঠাকুরের সত্ত্বগুণের অবস্থা)

    নরেন্দ্র- গিরিশ ঘোষ এখন কেবল এইসব চিন্তাই করে।

    শ্রীরামকৃষ্ণ- সে খুব ভালো। তবে এত গালাগাল, মুখ খারাপ করে কেন? সে অবস্থা আমার নয়। বাজ পড়লে ঘরের মোটা জিনিস তত নড়ে না কিন্তু সারসি ঘটঘট করে। আমার সেই অবস্থা নয়, সত্ত্ব গুণের অবস্থায় হৈচৈ হয় না। হৃদয় তাই চলে গেল। মা রাখলেন না শেষা শেষি। আমায় গালাগালি দিত। হাঁকডাক করত।

    নরেন্দ্র- আমি কিছু বলি নাই, তিনিই বলেন, তাঁর অবতার বলে বিশ্বাস। আমি আর কিছু বললাম না।

    শ্রী রামকৃষ্ণ- কিন্তু খুব বিশ্বাস দেখেছিস।

    ভক্তেরা এক দৃষ্টি দেখিতেছেন। ঠাকুর নিচেই মাদুরের উপর বসিয়া আছেন। কাছে মাস্টার, সম্মুখে নরেন্দ্র, চতুর্দিকে ভক্তগণ। ঠাকুর একটু চুপ করিয়া নরেন্দ্রকে সস্নেহে দেখিতেছেন। পরে নরেন্দ্র কে বলিলেন, বাবা কামিনী কাঞ্চন ত্যাগ না হলে হবে না। বলিতে বলিতে ভাব পূর্ণ হইয়া উঠিলেন। সেই করুনামাখা সস্নেহ দৃষ্টি তাহার সঙ্গে ভাবন্মোত্ত হইয়া গান ধরিলেন-

    কথা বলতে ডরাই না বললেও ডরাই
    মনের সন্দেহ হয় পাছে তোমাধনে হারাই হারাই।।
    আমরা জানি যে মন-তোর দিলাম তোকে
    সেই মন্তর এখন মন্তর
    আমরা যে মন্ত্রে বিপদে তরি ডরাই।।

    শ্রীরামকৃষ্ণের ভয়, বুঝি নরেন্দ্র আর কাহারও হইল। আমার বুঝি হল না। নরেন্দ্র অশ্রুপূর্ণ লোচনে চাহিয়া আছেন। বাইরের একটি ভক্ত ঠাকুরকে দর্শন করিয়া আসিয়াছিলেন। তিনিও কাছে বসে সমস্ত দেখিতেছিলেন।

    ভক্ত- মহাশয় কামিনী কাঞ্চন যদি ত্যাগ করতে হবে। তবে গৃহস্থ কি করবে?

    শ্রীরামকৃষ্ণ- তা তুমি করো না, আমাদের অমনি একটা কথা হয়ে গেল।

  • Ramakrishna 383: ঈশ্বরের জন্য গঙ্গায় ঝাঁপ দিয়ে মরেছিস একথা বরং শুনব তবু কারও দাসত্ব করিস একথা যেন না শুনি

    Ramakrishna 383: ঈশ্বরের জন্য গঙ্গায় ঝাঁপ দিয়ে মরেছিস একথা বরং শুনব তবু কারও দাসত্ব করিস একথা যেন না শুনি

    রাবণকে একজন বলেছিল, তুমি সব রূপ ধরে সীতার কাছে যাও। রামরূপ ধরো না কেন? রাবণ বললে, রামরূপ হৃদয় একবার দেখলে রম্ভা তিলোত্তমা এদের চিতার ভস্ম বলে বোধ হয়। ব্রহ্মপদ তুচ্ছ হয়। পরস্ত্রীর কথা তো দূরে থাক (Ramakrishna)।

    সব কলাইয়ের ডালের খদ্দের। শুদ্ধ আধার না হলে ঈশ্বরের শুদ্ধাভক্তি হয় না। এক লক্ষ্য হয় না, নানাদিকে মন থাকে।

    (নেপালি মেয়ে- ঈশ্বরের দাসী সংসারির দাসত্ব)

    শ্রী রামকৃষ্ণ (Ramakrishna) (মনমোহনের প্রতি)- তুমি রাগই করো আর যাই করো। রাখালকে বললাম ঈশ্বরের জন্য গঙ্গায় ঝাঁপ দিয়ে মরেছিস একথা বরং শুনব তবু কারও দাসত্ব করিস একথা যেন না শুনি।

    নেপালের একটি মেয়ে এসেছিল। বেশ এসরাজ বাজিয়ে গান করলে হরিনাম গান। কেউ জিজ্ঞাসা করলে, তোমার বিবাহ হয়েছে? তা বললে আবার কার দাসী হব! এক ভগবানের দাসী আমি। কামিনী কাঞ্চনের ভিতর থেকে কী করে হবে। অনাসক্ত হওয়া বড় কঠিন (Ramakrishna)। একদিকে মেগের দাস, একদিকে টাকার দাস আর একদিকে মনিবের দাস। তাদের চাকরি করতে হয়।

    এক ফকির বনে কুটির করে থাকত। তখন আকবর শা দিল্লির বাদশা। ফকিরটির কাছে অনেকে আসত। অতিথি সৎকার করতে তার বড় ইচ্ছা হয়। একদিন ভাবলে যে টাকা কড়ি না হলে কেমন করে অতিথি সৎকার হয়। তবে যাই একবার আকবর শার কাছে (Ramakrishna)। সাধু ফকিরের অবারিত দ্বার। আকবর তখন নামাজ পড়ছিলেন। ফকির নামাজ ঘরে গিয়ে বসল। দেখলে আকবর শা নামাজের শেষে বলছে হে আল্লা ধন-দৌলত দাও! আরও কত কী! এই সময় নামাজের ঘর থেকে চলে যাবার উদ্যোগ করতে লাগল ফকির। আকবর শা ইশারা করে বসতে বললেন। নামাজ শেষ হলে বাদশা জিজ্ঞাসা করলেন আপনি এসে বসলেন, চলে যাচ্ছেন কেন? ফকির বললে সে আর মহারাজের জেনে কাজ নেই। আমি চললুম (Kathamrita)। বাদশা অনেক জিদ করাতে ফকির বললে, আমার ওখানে অনেকে আসে, তাই কিছু টাকা প্রার্থনা করতে এসেছিলাম। একবার বললে (Kathamrita) তবে যাচ্ছিলেন কেন? ফকির বলে যখন দেখলাম তুমিও ধন দৌলতের ভিখারি। তখন মনে করলাম যে ভিখারির কাছে চেয়ে আর কী হবে? চাইতে হয়ত আল্লার কাছে চাইব।

  • Ramakrishna 382: সব দেখছি কলাইয়ের ডালের খদ্দের! কামিনী কাঞ্চন ছাড়তে চায় না

    Ramakrishna 382: সব দেখছি কলাইয়ের ডালের খদ্দের! কামিনী কাঞ্চন ছাড়তে চায় না

    একজন একটি ভাগবতের পণ্ডিত চেয়েছিল (Ramakrishna)। তার বন্ধু বললে, একটি উত্তম ভাগবতের পণ্ডিত আছে। কিন্তু তার একটু গোল আছে। তার নিজের অনেক চাষবাস দেখতে হয়। চারখানা লাঙ্গল, আটটা হেলে গরু। সর্বদা তদারক করতে হয়। অবসর নাই (Kathamrita)। যার পণ্ডিতের দরকার সে বললে আমার এমন ভাগবতের পণ্ডিতের দরকার নাই। যার অবসর নাই (Ramakrishna), লাঙ্গল হেলে গরু ওয়ালা ভাগবত পন্ডিত আমি খুঁজছি না, আমি এমন ভাগবত পণ্ডিত চাই যে আমাকে ভাগবত শোনাতে পারে।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)- এক রাজা রোজ ভাগবত শুনত। পণ্ডিত পড়া শেষ হলে রাজাকে বলত, রাজা বুঝেছো? রাজাও রোজ বলে, আগে তুমি বোঝো। পণ্ডিত বাড়ি গিয়ে রোজ ভাবে, রাজা এমন কথা বলে কেন যে তুমি আগে বোঝো। লোকটা সাধন-ভজন করত। ক্রমে চৈতন্য হল। তখন দেখলে যে হরিপাদপদম্মই সার। আর সব মিথ্যা। সংসারে বিরক্ত হয়ে বেরিয়ে এল। কেবল একজনকে পাঠালে রাজাকে (Kathamrita) বলতে যে রাজা এইবার বুঝেছি (Ramakrishna)।

    তবে কি এদের ঘৃণা করি? না ব্রহ্মজ্ঞানী তখন আনি। তিনি সব হয়েছেন। সকলেই নারায়ণ। সব যোনীই মাতৃ যোনী। তখন বেশ্যা ও সতীলক্ষ্মীতে কোন প্রভেদ দেখিনা।

    (সব কলাইয়ের ডালের খদ্দের, রূপ ঐশ্বর্যের বশ)

    কি বলবো? সব দেখছি কলাইয়ের ডালের খদ্দের (Kathamrita)। কামিনী কাঞ্চন ছাড়তে চায় না। লোকে মেয়ে মানুষের রূপে ভুলে যায়। টাকা ঐশ্বর্য দেখলে ভুলে যায়। কিন্তু ঈশ্বরের রূপ দর্শন করলে (Ramakrishna) ব্রহ্মপদ তুচ্ছ হয়।

    রাবণকে একজন বলেছিল, তুমি সব রূপ ধরে সীতার কাছে যাও। রামরূপ ধরো না কেন? রাবণ বললে, রামরূপ হৃদয় একবার দেখলে রম্ভা তিলোত্তমা এদের চিতার ভস্ম বলে বোধ হয়। ব্রহ্মপদ তুচ্ছ হয়। পরস্ত্রীর কথা তো দূরে থাক (Ramakrishna)।

    সব কলাইয়ের ডালের খদ্দের। শুদ্ধ আধার না হলে ঈশ্বরের শুদ্ধাভক্তি হয় না। এক লক্ষ্য হয় না, নানাদিকে মন থাকে।

  • Ramakrishna 381: একটি স্ত্রীলোক সেইখান দিয়ে চলে যাচ্ছে, সকলে ঈশ্বর চিন্তা করছে, একজন আড়চোখে চেয়ে দেখলে….

    Ramakrishna 381: একটি স্ত্রীলোক সেইখান দিয়ে চলে যাচ্ছে, সকলে ঈশ্বর চিন্তা করছে, একজন আড়চোখে চেয়ে দেখলে….

    নতুন হাড়ি আর দই পাতা হাঁড়ি। দই পাতা হাঁড়িতে দুধ রাখতে ভয় হয়। প্রায় দুধ নষ্ট হয়ে যায়। ওরা থাক আলাদা যোগ আছে। ভোগও আছে। যেমন রাবণের ভাব। নাগকন্যা, দেবকন্যা নেবে। রামকেও লাভ করবে। অসুররা নানা ভোগও করছে। আবার নারায়ণকেও লাভ করছে।

    নরেন্দ্র- গিরিশ ঘোষ আগেকার সঙ্গ ছেড়েছে

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)- বড় বেলায় দামড়া হয়েছে। আমি বর্ধমানে দেখেছিলাম। একটা দামড়া, গাই গরুর কাছে যেতে দেখে আমি জিজ্ঞেস করলাম, এ কি হল এতো দামড়া। তখন গাড়োয়ান বলে, মশায় এ বেশি বয়সে দামরা হয়েছিল। তাই আগেকার সংস্কার যায় নাই। এক জায়গায় সন্ন্যাসীরা বসে আছে একটি স্ত্রীলোক সেইখান দিয়ে চলে যাচ্ছে। সকলে ঈশ্বর চিন্তা করছে। একজন আড় চোখে চেয়ে দেখলে। সে তিনটে ছেলে হবার পর সন্ন্যাসী হয়েছিল। একটি বাটিতে যদি রসুন গোলা যায়। রসুনের গন্ধ কি যায়? বাবুই গাছে কি আম হয়? হতে পারে সিদ্ধায়। তেমন থাকলে বাবুই গাছও আম হয়। সে সিদ্ধায় কি সকলের হয়? সংসারী লোকের অবসর কই? একজন একটি ভাগবতের পণ্ডিত চেয়েছিল (Ramakrishna)। তার বন্ধু বললে, একটি উত্তম ভাগবতের পন্ডিত আছে। কিন্তু তার একটু গোল আছে। তারা নিজের অনেক চাষবাস দেখতে হয়। চারখানা লাঙ্গল, আটটা হেলে গরু। সর্বদা তদারক করতে হয়। অবসর নাই (Kathamrita)। যার পণ্ডিতের দরকার সে বললে আমার এমন ভাগবতের পণ্ডিতের দরকার নাই। যার অবসর নাই (Ramakrishna), লাঙ্গল হেলে গরু ওয়ালা ভাগবত পন্ডিত আমি খুঁজছি না, আমি এমন ভাগবত পণ্ডিত চাই যে আমাকে ভাগবত শোনাতে পারে।

LinkedIn
Share