Tag: Amoeba Attack india

  • Brain Eating Amoeba: ফের আশঙ্কা বাড়াচ্ছে ‘মস্তিষ্ক খেকো’ অ্যামিবা! কতখানি বিপজ্জনক?

    Brain Eating Amoeba: ফের আশঙ্কা বাড়াচ্ছে ‘মস্তিষ্ক খেকো’ অ্যামিবা! কতখানি বিপজ্জনক?

    তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল

    দেবীপক্ষ শুরু হয়ে গিয়েছে। সেই সঙ্গে শুরু হয়েছে বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসব, দুর্গাপুজো। আনন্দে মাতোয়ারা আট থেকে আশি, সব বয়সের মানুষ।‌ কিন্তু ঠিক তার আগেই অ্যামিবার চোখ রাঙানিতে আতঙ্ক বাড়ছে। জলে নামলেই কি মস্তিষ্কে প্রবেশ করবে অ্যামিবা! এমন আতঙ্কও তৈরি হয়েছে।

    কী এই অ্যামিবা আতঙ্ক?

    কয়েক সপ্তাহ আগে কেরলে হঠাৎ এই অ্যামিবা সংক্রমণ শুরু হয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, কেরলে এই পর্যন্ত প্রায় ১৯ জন এই অ্যামিবা সংক্রমণে মারা গিয়েছেন। আক্রান্তের সংখ্যা ৮০ ছাড়িয়েছে। কয়েক মাসের শিশু থেকে প্রৌঢ়, আক্রান্ত ও মৃতের তালিকায় সব বয়সের মানুষ রয়েছেন। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এই সংক্রমণের নাম প্রাইমারি অ্যামিওবিক মেনিঞ্জিওএনসেফেলাইটিস। বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, এই এককোষী প্রাণী অ্যামিবা খুব দ্রুত সংক্রমণ ছড়াতে সক্ষম। তাই এই সংক্রমণ উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।

    কীভাবে এই অ্যামিবা সংক্রমণ হচ্ছে?

    চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, জল থেকেই এই অ্যামিবা সংক্রমণ হচ্ছে। তাঁরা জানাচ্ছেন, এই অ্যামিবা মিষ্টি জলে থাকে। সাধারণত পুকুরের জলে স্নান করার সময় কিংবা সাঁতার কাটার সময়ে নাকের ভিতর দিয়ে অ্যামিবা শরীরে প্রবেশ করছে। আর তারপরেই অ্যামিবা মস্তিষ্কে সংক্রমণ ঘটাচ্ছে। মস্তিষ্কে প্রবেশের পরেই ওই অ্যামিবা কোষে ধাক্কা দিচ্ছে। এর ফলে মস্তিষ্কের কার্যকারিতাও নষ্ট হচ্ছে। স্নায়ুর ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। যার জেরেই প্রাণঘাতী পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে।

    কতখানি বিপজ্জনক এই সংক্রমণ?

    চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, বিশ্ব জুড়ে এই অ্যামিবা সংক্রমণে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি নয়। শ’পাঁচেক মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। কিন্তু আক্রান্তের মধ্যে মৃত্যু হার উদ্বেগজনকভাবে বেশি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, এই রোগে আক্রান্তের ৯৫ শতাংশের মৃত্যু হয়। চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, এই অ্যামিবাকে ‘মস্তিষ্ক খেকো’ অ্যামিবাও বলা হয়। কারণ, এই এককোষী প্রাণী শরীরে প্রবেশ করার পরেই মস্তিষ্কের সমস্ত কোষ ধ্বংস করা শুরু করে। ফলে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা শেষ হয়ে যায়। তার জেরেই আক্রান্তের মৃত্যু হয়। তাই এই অ্যামিবা প্রাণঘাতী! অধিকাংশ সময়েই এই রোগে আক্রান্তের চিকিৎসার সুযোগ ও পাওয়া যায় না। তবে দ্রুত রোগ নির্ণয় হলে কিছু প্রয়োজনীয় ওষুধ সময় মতো শরীরে পৌঁছলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব বলেও মনে করছেন বিশেষজ্ঞ মহল।

    কীভাবে এই সংক্রমণ মোকাবিলা সম্ভব?

    চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, জল নিয়ে বাড়তি সতর্কতা জরুরি। তাঁরা জানাচ্ছেন, পৃথিবীতে প্রায় সাড়ে চারশোর বেশি অ্যামিবা প্রজাতির প্রাণী রয়েছে। কিন্তু তার মধ্যে মাত্র দুটি প্রজাতি মানুষের মস্তিষ্কে সংক্রমণ ছড়ায়। এই রোগে জ্বর, হঠাৎ করেই খিঁচুনি, হাত-পা শিথিল হয়ে যাওয়ার মতো উপসর্গ দেখা যায়‌। তাই সতর্কতা জরুরি। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, খাওয়ার জলের পাশপাশি স্নানের জলের পরিচ্ছন্নতা নিয়েও সতর্কতা জরুরি। তাঁরা জানাচ্ছেন, অপরিচ্ছন্ন জলেই এই ধরনের অ্যামিবা থাকে। সংক্রমণ ও ছড়িয়ে পড়ে। তাই পুকুর পরিষ্কার জরুরি। যারা পুকুরে নিয়মিত স্নান করেন, এই সময়ে সেটা এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। তাহলে সংক্রমণের ঝুঁকি কমবে। আবার সাঁতার কাটার সময়েও জলের পরিচ্ছন্নতার দিকে নজরদারি প্রয়োজন। তাই সাধারণ মানুষের পাশপাশি প্রশাসনকেও উদ্যোগী হতে হবে। পুকুর পরিচ্ছন্নতার দিকে নজরদারি বাড়ানো দরকার।

    জ্বর, হাত-পায়ে ব্যথার মতো উপসর্গ দেখা দিলেও দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ‌ নেওয়া জরুরি। নির্দিষ্ট শারীরিক পরীক্ষার মাধ্যমে রোগ নির্ণয় সম্ভব। দ্রুত রোগ নির্ণয় করতে পারলে কিছু প্রয়োজনীয় স্টেরয়েড, ওষুধ দিলে এই অ্যামিবার ক্ষমতা রোধ করা যায়। ধীরে ধীরে অ্যামিবাকে নিষ্ক্রিয় করা সম্ভব হয়। যাতে আক্রান্তের দ্রুত অবস্থার অবনতি না হয়, সেটা চেষ্টা করা সম্ভব হয়। কিন্তু তার জন্য প্রাথমিক পর্বে রোগ নির্ণয় জরুরি। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে তবেই রোগী চিকিৎসকের কাছে আসেন। তাই মৃত্যুর ঝুঁকি বেড়ে যায়।

     

     

    DISCLAIMER: এই প্রতিবেদনটি বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী লেখা। এর সঙ্গে মাধ্যম-এর কোনও সম্পর্ক নেই। মাধ্যম এর কোনও দায় নিচ্ছে না। এখানে বলা যে কোনও উপদেশ পালন করার আগে অবশ্যই কোনও চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

LinkedIn
Share