Tag: Balochistan Army

  • Operation Baam: শুরু ‘অপারেশন বাম’, বালোচ বিদ্রোহীদের ১৭ হামলায় কেঁপে উঠল পাকিস্তান

    Operation Baam: শুরু ‘অপারেশন বাম’, বালোচ বিদ্রোহীদের ১৭ হামলায় কেঁপে উঠল পাকিস্তান

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বালোচ বিদ্রোহী সংগঠন বালোচিস্তান লিবারেশন ফ্রন্ট (বিএলএফ) পাকিস্তানের ভেতরে শুরু করেছে বড়সড় অভিযান—‘অপারেশন বাম’ (Operation Baam)। সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে , এই অভিযানের অংশ হিসেবে এখন পর্যন্ত ১৭টি হামলা চালানো হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে বালোচিস্তানের বিভিন্ন সরকারি ভবনে বিস্ফোরণ ঘটে, যা গোটা অঞ্চলকে নাড়িয়ে দেয়।

    ‘অপারেশন বাম’ শব্দের অর্থ কী?

    ‘বাম’ শব্দটি স্থানীয় ভাষায় ‘ভোর’ বোঝায়। এই নামেই অভিযান চালাচ্ছে বিএলএফ, যারা বহুদিন ধরেই স্বাধীন বালোচিস্তানের (Operation Baam) দাবি তুলে আসছে। পাকিস্তানি দৈনিক দ্য ডন-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বালোচিস্তানের তুরবাত এলাকায় এক বাড়িতে গ্রেনেড হামলায় নারী ও শিশু সহ পাঁচজন আহত হয়েছেন। বিস্ফোরণে বাড়িটির পেছনের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পুলিশ জানায়, মোটরসাইকেলে করে আসা দুর্বৃত্তরা গ্রেনেড ছুঁড়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। এছাড়া সিবি এলাকায় একটি পুলিশ চেকপোস্টে গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটে। কেচ জেলার তুরবাতে মকরান ডিভিশনের এক ডিভিশনাল হেডকোয়ার্টারের আধিকারিক মহম্মদ ইউনুসের বাড়িও হামলার শিকার হয়। এসব হামলা থেকে বোঝা যাচ্ছে, বালোচ বিদ্রোহীরা (Operation Baam) আবারও সংগঠিত হচ্ছে।

    হামলার লক্ষ্য পাকিস্তানের সেনা চেকপোস্ট, প্রশাসনিক ভবন

    এএনআই জানিয়েছে, এই হামলাগুলোর লক্ষ্য ছিল পাকিস্তানের সেনা চেকপোস্ট, প্রশাসনিক ভবন ও গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামো। বিএলএফ মুখপাত্র গওহারাম বালোচ এক বিবৃতিতে জানান, ‘অপারেশন বাম’ বিস্তৃত হবে মাকরান উপকূল থেকে শুরু করে কোহ-ই-সুলেমানের পাহাড়ি অঞ্চল পর্যন্ত।বিদ্রোহীদের একের পর এক হামলায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে বালোচিস্তানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সেনা হেলিকপ্টার ও ড্রোন ব্যবহার করে বিভিন্ন গ্রামীণ অঞ্চলে নজরদারি চালানো হচ্ছে বলেও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। এই অভিযানের জেরে অনেক এলাকায় মোবাইল নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট সংযোগ পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন ছিল। অনেক জায়গায় স্থানীয় বাসিন্দারা ঘর থেকে বেরোতে পারেননি। আতঙ্কে ব্যবসা-বাণিজ্য, স্কুল-কলেজ, যানবাহন চলাচল—সব কিছুই কার্যত স্তব্ধ হয়ে যায়।‘অপারেশন বাম’-এর কারণে পাকিস্তান এখন রীতিমতো কোণঠাসা।একের পর এক বিস্ফোরণ ও হামলায় সেনা ও প্রশাসনের উপর চাপ বাড়ছে।

  • Baloch Human Rights Protests: বালোচ বিদ্রোহ পাকিস্তানের তৈরি! মানবাধিকার কর্মীদের মুক্তির দাবিতে উত্তাল করাচি

    Baloch Human Rights Protests: বালোচ বিদ্রোহ পাকিস্তানের তৈরি! মানবাধিকার কর্মীদের মুক্তির দাবিতে উত্তাল করাচি

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বালোচিস্তানের মানবাধিকার কর্মী (Baloch Human Rights Protest) মেহরান বালোচকে মুক্তির দাবিতে উত্তাল করাচি। বালোচিস্তানে (Balochistan) মানবাধিকার লঙ্ঘনের মাত্রা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। কোয়েটায় বালোচ ইয়াকজেহতির (BYC) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বিবার্গ জেহরি, তার ভাই হাম্মাল জেহরি, ডাঃ ইলিয়াস, মানবাধিকার কর্মী সাঈদা বালোচসহ বেশ কয়েকজন বেলুচ কর্মীর বলপূর্বক অন্তর্ধানের প্রতিবাদে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। অভিযোগ, বালোচ নেতাদের মুক্তির দাবিতে আন্দোলনরত সাধারণ মানুষ ও রাজনৈতিক কর্মীদের বিরুদ্ধে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী (Pakistan Army) কঠোর পদক্ষেপ করছে। বালোচ ন্যাশনাল মুভমেন্ট (BNM) এবং বালোচ স্টুডেন্ট অর্গানাইজেশন আজাদ (BSO-A)-এর কর্মীদের নিশানা করে ব্যাপক ধরপাকড় শুরু করেছে। পাক সেনাবাহিনীর দমন অভিযানে নারী ও শিশুরাও আক্রান্ত।

    বালোচ আন্দোলনের প্রেক্ষাপট, জিন্নার বিশ্বাসঘাতকতা

    ১৯৪৭ সালে পাকিস্তানের জন্মলগ্নে বালোচিস্তানকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিয়েছিলেন মহম্মদ আলি জিন্না। ওই সময়ে বালোচিস্তান মোট চারটি এলাকায় বিভক্ত। কালাত ছাড়া বাকি তিনটি জায়গা হল খারান, লাসবেলা এবং মাকরান। এগুলিও আর পাঁচটা দেশীয় রাজ্যের মতোই ছিল। ভারত ভাগ হওয়ার পর ২২৭ দিন পর্যন্ত একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র ছিল স্টেট অব কালাত বা বালোচিস্তান। কিন্তু ব্রিটিশদের চলে যাওয়ার পর শুরু হয় বিশ্বাসঘাতকতা! ১৯৪৮ সালের মার্চের মধ্যে সুচতুর জিন্না এক এক করে খারান, লাসবেলা এবং মাকরানকে পাকিস্তানের সঙ্গে জুড়ে নেন। কালাত তখনও স্বাধীনতার ধ্বজা টিকিয়ে রেখেছে। ১৯৪৮ সালের ২৮ মার্চ মেজর জেনারেল আকবর খানের নেতৃত্বে ওই এলাকায় হামলা চালায় পাক সেনা। কালাতের শেষ শাসককে বন্দি করে করাচি নিয়ে যায় তারা। করাচিতে পাকিস্তানের সঙ্গে কালাতের (ইনস্ট্রুমেন্ট অব অ্যাকসেশন) সংযুক্তির চুক্তিতে সই করতে বাধ্য করা হয় বালোচদের। ফলে বালোচিস্তান পাকিস্তানের অংশ হয়ে যায়। আর তার প্রতিবাদেই শুরু হয় প্রথম বালোচ বিদ্রোহ (১৯৪৮-১৯৫০)। এই বিদ্রোহের নেতা ছিলেন প্রিন্স আবদুল করিম। তিনি দোস্ত-ই-ঝালাওয়ান নামে বাহিনী নিয়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরেন। শুরু হয় বালোচিস্তানের স্বাধীনতার লড়াই।

    বালোচদের সাম্প্রতিক লড়াই

    বালোচিস্তানের মানবাধিকার কর্মীদের (Baloch Human Rights Protest) অভিযোগ, পাকিস্তান সরকার প্রথম থেকেই বালোচ জনগণের ন্যায্য দাবিকে সহিংস দমন-পীড়নের মাধ্যমে দমিয়ে রাখছে। সম্প্রতি পাক সেনার হামলায় পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার নিয়েছে। লাঠিচার্জ, টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ এবং নির্বিচারে গণগ্রেফতারের মাধ্যমে আন্দোলন থামানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। পরিস্থিতি আরও মারাত্মক হয়ে ওঠে, যখন সরিয়াবে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর গুলিতে তিনজন বালোচ বিক্ষোভকারী নিহত হন এবং বহু আহত হন। এছাড়া, ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়, যাতে বিক্ষোভের খবর আন্তর্জাতিক মহলে না পৌঁছায়। শুধু বিক্ষোভকারীরাই নয়, পাকিস্তানি সেনাবাহিনী সাধারণ বালোচ জনগণের ওপরও ভয়াবহ নির্যাতন চালাচ্ছে।

    আন্তর্জাতিক মহলে চর্চা

    যতই পাক সরকার আন্দোলন দমন করার চেষ্টা করুক, বালোচিস্তানে চলমান মানবাধিকার লঙ্ঘন আন্তর্জাতিক মহলের নজর এড়ায়নি। জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের (UNHRC) ৫৮তম অধিবেশনে বালোচিস্তানের এই পরিস্থিতি গুরুতরভাবে উত্থাপিত হয়েছে। বালোচ জাতীয় আন্দোলনের নেতা নিয়াজ বালোচ বলেছেন, “বলপূর্বক অন্তর্ধান এখন বালোচিস্তানে নিপীড়নের একটি পদ্ধতিগত অস্ত্র হয়ে উঠেছে।” তিনি অভিযোগ করেন যে বিবার্গ জেহরি, হাম্মাল জেহরি এবং আরও বহু বালোচ কর্মীকে পরিকল্পিতভাবে গুম করা হয়েছে। পাশাপাশি, নিরাপত্তা বাহিনীর বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বালোচিস্তানের সংকটকে আরও ঘনীভূত করছে। নিয়াজ বালোচ আরও বলেন, পাকিস্তানি সেনাবাহিনী সরকার-সমর্থিত গোষ্ঠীগুলোর মাধ্যমে বালোচ জনগণের ওপর দমননীতি চালিয়ে যাচ্ছে, যার ফলে বহু পরিবার সম্মিলিত শাস্তির শিকার হচ্ছে।

    বালোচরা শুধু প্রাকৃতিক সম্পদের উৎস

    পাকিস্তানের কাছে বালোচরা শুধু প্রাকৃতিক সম্পদের উৎস। বালোচিস্তানের খনিজ সম্পদ, গ্যাস, খনিগুলি লুট করা শুরু হল। অথচ, বালোচদের উন্নয়নে কিছুই করা হল না। রাজস্বের ভাগও তারা পেল না। বিনিয়োগও এল না। পাকিস্তানের অধীন এসে বালোচরা টের পেল, তাদের শুধু লুট-ই করা হচ্ছে! পরিসংখ্যান বলছে, এখানকার ৭০ শতাংশ বাসিন্দা এখনও দারিদ্র্যসীমার নীচে। আর ১৫ শতাংশ বালোচ ভোগেন হেপাটাইটিস বি এবং সি-তে। বালোচিস্তানের প্রায় ১৮ লাখ শিশু স্কুলে পড়ার সুযোগই পায় না। সেখানকার পাঁচ হাজার বিদ্যালয়ে রয়েছে মাত্র একটি করে ক্লাসরুম। পাকিস্তানের শিশুমৃত্যুর হার যেখানে প্রতি এক লক্ষে ২৭৮, সেখানে বালোচিস্তানে তা ৭৮৫। মৃত্যুহারের এই পার্থক্যের পিছনে রয়েছে অত্যন্ত নিম্নমানের স্বাস্থ্য পরিষেবা। এসব পরিসংখ্যানে ইসলামাবাদের কোনও যায় আসে না।

    বালোচ বিদ্রোহ পাকিস্তানের তৈরি

    পাকিস্তান দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছে, বালোচ বিদ্রোহ আসলে বাইরের শক্তির ষড়যন্ত্র। একসময় এই ‘বাইরের শক্তি’ বলতে তারা ভারতকে বোঝাত। এখন তারা আফগানিস্তানকেও সেই তালিকায় ঢুকিয়েছে। কিন্তু আসলে বালোচদের বিদ্রোহ পাকিস্তানের হাতেই তৈরি। সেই ১৯৪৮ সাল থেকে। বালোচদের প্রতি ইসলামাবাদের বছরের পর বছর ধরে অবহেলা, দমননীতি আর নিপীড়নের ফল— বালোচ লিবারেশন আর্মির সশস্ত্র বিদ্রোহ! পাকিস্তানের ভুল নীতির কারণে যেসব সমস্যা তৈরি হয়েছে, তার জন্য কখনও নিজেদের দায় স্বীকার করেনি ইসলামাবাদ। তার উপর রয়েছে ‘চিন পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর’-এর (সিপিইসি) প্রকল্প ঘিরে বালোচিস্তানের প্রতি দীর্ঘ বঞ্চনা।

LinkedIn
Share