মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বীরভূমের (Birbhum News) বিভাস অধিকারী ছিলেন অনুব্রত মণ্ডলের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। তাঁর নাম জড়িয়েছিল নিয়োগ দুর্নীতিতে। এবার উত্তরপ্রদেশের নয়ডায় আস্ত একটা ভুয়ো থানা খোলার জন্য গ্রেফতার করা হল বীরভূমের এই প্রাক্তন তৃণমূল নেতাকে (Bivas Adhikari)। তাঁর সঙ্গে গ্রেফতার করা হয়েছে আরও পাঁচজনকে। রয়েছে তাঁর ছেলেও। পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়েছে যে নয়ডায় একটা অফিস খুলে প্রতারণা চালাচ্ছিলেন প্রাক্তন তৃণমূল নেতা। একদা তৃণমূল নেতার এই অফিসের সামনে বোর্ড লাগানো ছিল ‘ইন্টারন্যাশনাল পুলিশ অ্যান্ড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো’।
ভুয়ো আধিকারিক সেজে লোকের কাছে টাকা তুলত (Birbhum News)
শুধু তাই নয়, লোকজনকে তাঁরা আন্তর্জাতিক তদন্তকারী সংস্থার অফিসার হিসেবে পরিচয় দিতেন এবং সে ক্ষেত্রে তৈরি করা হয়েছিল ভুয়ো পরিচয়পত্র। কী না হত না! পুলিশ অফিসার, আবার কখনও বা তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিক সেজে মানুষকে ভয় দেখানো হত, আর এরপরে টাকা তোলা হত। গোপন সূত্রে এই খবর পায় পুলিশ। তারপরেই তারা অভিযানে নামে। এরপরেই গ্রেফতার করা হল একদা তৃণমূল নেতা বিভাস অধিকারী এবং তাঁর ছেলে সহ ছয় অভিযুক্তকে।
তৃণমূল ছেড়ে খুলেছিলেন সর্বভারতীয় আর্য মহাসভা নামের সংগঠন
প্রসঙ্গত, বীরভূমের (Birbhum News) নলহাটি ২ নম্বর ব্লকের সভাপতি ছিলেন বিভাস অধিকারী (Bivas Adhikari)। প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় নাম উঠে এসেছিল তাঁরও। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তদন্তের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় বিভাস অধিকারীকে। পরে অবশ্য তৃণমূল ছেড়ে সর্বভারতীয় আর্য মহাসভা নামে একটি নতুন দল গঠন করেন বিভাস অধিকারী। আসলে একদা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি থাকা মানিক ভট্টাচার্যের গ্রেফতারের পর এই নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বিভাসের নাম উঠে আসে। মানিক ভট্টাচার্যের ফ্ল্যাটে যখন তল্লাশি চালানো হয় (Birbhum News), তখনই ইডি তদন্তকারীদের হাতে আসে বিভাস অধিকারীর নাম। গরু পাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডল যখন গ্রেফতার হন, তখনই তৃণমূল ছেড়ে দেন বিভাস অধিকারী। নয়ডার একজন পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, এই গ্রুপের সদস্যরা নিজেদের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অনুদান সংগ্রহ করার কাজ করত এবং সরকারি কর্মচারীর ছদ্মবেশে ঘুরে বেড়াত। দেখা গিয়েছে, জাতীয়-আন্তর্জাতিক কিছু জাল নথি এবং পুলিশের লোগোও তারা ব্যবহার করত প্রতারণার কাজে।
কী বলছেন সেন্ট্রাল নয়ডার ডিসিপি
সেন্ট্রাল নয়ডার ডিসিপি শক্তি মোহন অবস্থি বলেন, “এরা সকলেই গত ৪ জুন তাদের ভুয়ো অফিস খোলার জন্য একটি বাড়ি ভাড়া নিয়েছিল ৷ সেখানে একটি বোর্ড লাগিয়ে এক সপ্তাহ ধরে কাজও করছিল। অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্তে দেখা যায়, তারা ‘ইন্টারন্যাশনাল পুলিশ অ্যান্ড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো’-এর নামে নিজেদেরকে সমান্তরাল পুলিশ ব্যবস্থা হিসেবে তুলে ধরে মানুষকে বিভ্রান্ত করছিল।”ডিসিপি আরও বলেন, “অভিযুক্তদের ব্যবহৃত পুলিশের লোগোটি আসলটির সঙ্গে অনেকাংশেই মিলে যায় ৷ তাদের লোগোর কোনও কপিরাইট, ট্রেডমার্ক বা রেজিস্টেশন পাওয়া যায়নি ৷ মূলত মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্যই এই লোগো ব্যবহার করেছে তারা।” উত্তরপ্রদেশ পুলিশ জানিয়েছে, এদের কাছ থেকে ১৭টি স্ট্যাম্প, নয়টি মোবাইল ফোন, নয়টি পরিচয়পত্র, ছয়টি চেক বই, একটি প্যান কার্ড, একটি ভোটার আইডি কার্ড, ছয়টি এটিএম কার্ড, তিনটি ভিজিটিং কার্ড, মন্ত্রক থেকে প্রাপ্ত সার্টিফিকেট, কম্পিউটার এবং চারটি আন্তর্জাতিক পুলিশ এবং অপরাধ তদন্ত ব্যুরোর বোর্ড উদ্ধার করা হয়েছে।