Tag: Goddess Durga

Goddess Durga

  • Durga Puja 2025: নবদুর্গার সপ্তম রূপ, মহাসপ্তমীতে পূজিতা হন দেবী কালরাত্রি, জানুন মাহাত্ম্য

    Durga Puja 2025: নবদুর্গার সপ্তম রূপ, মহাসপ্তমীতে পূজিতা হন দেবী কালরাত্রি, জানুন মাহাত্ম্য

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মহালয়ার অমাবস্যা তিথিতে পিতৃপক্ষের অবসান ও দেবীপক্ষের (Durga Puja 2025) সূচনা হয়। পরের দিন, অর্থাৎ শুক্ল প্রতিপদ তিথি থেকে শুরু হয় নবরাত্রি (Navaratri 2025)। যা চলে দুর্গা নবমী পর্যন্ত। এই নবরাত্রিতে দেবী দুর্গা নয়টি ভিন্ন রূপে পূজিতা হন। নবদুর্গার (Nabadurga) এই নয়টি রূপ হল— দেবী শৈলপুত্রী, দেবী ব্রহ্মচারিণী, দেবী চন্দ্রঘণ্টা, দেবী কুষ্মাণ্ডা, দেবী স্কন্দমাতা, দেবী কাত্যায়নী, দেবী কালরাত্রি (Devi Kalratri), দেবী মহাগৌরী এবং দেবী সিদ্ধিদাত্রী।

    নবরাত্রির সপ্তম দিনে আরাধিত হন দেবী কালরাত্রি (Devi Kalratri)। বাংলাতে প্রচলিত দুর্গাপুজোর মহাসপ্তমীর (Durga Puja 2025) দেবী তিনি। দেবী কালরাত্রি ভীষণ দর্শনা, এলোকেশী। তাঁর চারটি হাত। ওপরের ডান হাতে আশীর্বাদ, নীচের ডান হাতে অভয় মুদ্রা। বাঁ দিকে ওপরের হাতে খড়্গ এবং নীচের বাম হাতে রয়েছে লোহার কাঁটা। দেবী ত্রিনয়নী এবং তাঁর চোখগুলি গোলাকার। দেবীর গলায় রয়েছে বজ্রের মালা। এই দেবীর বাহন গাধা এবং তাঁর নিশ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে ভয়ঙ্কর অগ্নিশিখা নির্গত হয় বলে কথিত আছে। দেবী কালরাত্রি সম্পর্কে অজস্র পৌরাণিক আখ্যান রয়েছে। তিনি চণ্ড-মুণ্ড নামের দুই অসুরকে বধ করেছিলেন বলে জানা যায়। তাঁর অপর নাম তাই চামুণ্ডা।

    শুম্ভ ও নিশুম্ভের কাহিনি…

    দেবী মাহাত্ম্যতে উল্লেখ রয়েছে, শুম্ভ ও নিশুম্ভ নামক দুই দানব ছিল। তারা প্রজাপতি ব্রহ্মার কঠোর তপস্যা করল। খুশি হয়ে প্রজাপতি ব্রহ্মা বর দিতে আবির্ভূত হলেন। দুই দানব বর চাইল যে কোনও পুরুষ যেন তাদের বধ করতে না পারেন। ব্রহ্মা তাঁদের কাঙ্ক্ষিত বর প্রদান করলেন। দুই অসুর চরম অত্যাচার শুরু করল দেবতাদের ওপর। এই দুজনের সঙ্গে যোগ দিলেন চণ্ড-মুণ্ড নামের আরও দুই অসুর। তাঁদের সঙ্গে এল রক্তবীজ। যাঁর প্রতিটি রক্তবিন্দু মাটিতে পড়লে দ্বিতীয় রক্তবীজ তৈরি হবে। এমনটাই বরদান ছিল তাঁর ওপর প্রজাপতি ব্রহ্মার। এই সমস্ত অসুরদের অত্যাচারে দেবতারা অতিষ্ঠ হয়ে উঠলেন। অসুরদের ওপর ব্রহ্মার বরদান সম্পর্কেও দেবতারা অবগত ছিলেন। মুনি-ঋষিদের যজ্ঞ পণ্ড করা, ঋষি কন্যাদের নানা ভাবে লাঞ্ছিত করা এসব কাজ তো চলছিলই। অসুরদের এমন আক্রমণে দেবতারা অবশেষে পরাজয় স্বীকার করতে বাধ্য হলেন। নিজেদের স্বর্গরাজ্য থেকে তাঁরা বিতাড়িত হলেন।

    দেবী পার্বতীর কালরাত্রি হয়ে ওঠার কাহিনি

    দেবতারা হিমালয়ের কোলে শুরু করলেন দেবীর (Devi Kalratri) স্তব। পুরাণে কথিত রয়েছে, এমন সময় সেখান দিয়ে শিবজায়া দেবী পার্বতী গঙ্গাস্নানের উদ্দেশে যাচ্ছিলেন। দেবী তাদের স্তব শুনে বললেন, হে দেববৃন্দ, আপনারা এখানে কার স্তব করছেন? সেই সময় ভগবতী পার্বতীর শরীর থেকে একই রকম দেখতে আর এক জন দেবী বেরিয়ে এলেন। আবির্ভূত হয়ে নব দেবী (Durga Puja 2025) বললেন, দেবতারা আমার স্তব করছেন। এই দেবীই আদ্যাশক্তি জগত মাতা অম্বিকা মহামায়া। তিনি দেবী পার্বতীর কোষ থেকে সৃষ্টি হয়েছেন বলে তার এক নাম কৌশিকী। কথিত আছে, এরপর নাকি দেবী পার্বতী কৃষ্ণবর্ণা হয়ে যান। যাঁকে আমরা কালরাত্রি বলি। ইনি দেবী কালিকা নামেও পরিচিত।

    পুরাণে আরও উল্লেখিত আছে, দেবী একদিন হিমালয়ে সিংহপৃষ্ঠে বসে মধু পান করছিলেন। এমন সময় চণ্ড আর মুণ্ড নামক দুই দানব দেবীকে দেখতে পেলেন। চণ্ড-মুণ্ড একথা গিয়ে শুম্ভ-নিশুম্ভকে জানালেন। শুম্ভ-নিশুম্ভ সেই দেবীর রূপ বর্ণনা শুনে দেবীকে লাভ করার জন্য আকুল হলেন। সুগ্রীব নামক এক অসুর দেবীর কাছে গেলেন শুম্ভ-নিশুম্ভের দূত হিসেবে। সুগ্রীব হিমালয়ে সেই পর্বত চূড়ায় গিয়ে দেবীকে শুম্ভ-নিশুম্ভের পরাক্রম, ঐশ্বর্যের কথা বলে বিবাহের প্রস্তাব দিলেন। দেবী একথা শুনে হেসে বললেন, আমার প্রতিজ্ঞাটি শোনো। যিনি আমাকে যুদ্ধে জয় করবেন, তিনিই আমার স্বামী হবেন।

    দেবী কালরাত্রির আবির্ভাব

    এরপর শুম্ভ-নিশুম্ভের সেনাপতি ধুম্রলোচন ষাট হাজার সেনা নিয়ে গেলেন দেবীকে পরাজিত করতে। দেবীর তেজে ধুম্রলোচন ভস্মীভূত হলেন। দেবীর সিংহবাহিনী অসুর সেনাকে ধ্বংস করে দিল। শুম্ভ-নিশুম্ভ এরপর চণ্ড-মুণ্ডকে পাঠালেন। চণ্ড-মুণ্ড বহু সেনা, অশ্ব, রথ, হাতি নিয়ে যুদ্ধে এলেন। তাঁরা হিমালয়ের চূড়ায় হাস্যরত দেবী অম্বিকাকে দেখতে পেলেন। এরপর দেবী চণ্ডিকা তাঁদের দেখে ভীষণ ক্রুদ্ধা হলেন। ক্রোধে তাঁর মুখমণ্ডল কৃষ্ণবর্ণা হলেন। তখন দেবীর কপাল থেকে এক ভীষণ দর্শনা দেবী প্রকট হলেন। সেই দেবী কালিকা বা কালরাত্রি। অতি ভীষণা, ভয়ঙ্করী, কোটর গতা, আরক্ত চক্ষু বিশিষ্টা।

    সেই ভয়ঙ্করা দেবী ভীষণ হুঙ্কার দিয়ে যুদ্ধক্ষেত্রে প্রবেশ করলেন। কতগুলি অসুরকে দেবী তাঁর চরণ ভারে পিষে বধ করলেন। যুদ্ধক্ষেত্রে এই ভাবে দেবী অসুরদের ধ্বংস করে ফেললেন। এরপর দেবী তাঁর খড়গ তুলে ‘হং’ শব্দ করে চণ্ডের দিকে ধেয়ে গেলেন। দেবী চণ্ডের চুলের মুঠি ধরে খড়গ দ্বারা এক কোপে চণ্ডের শিরোচ্ছেদ করে ফেললেন। চণ্ড অসুর বধ হল। চণ্ড নিহত হয়েছে দেখে ক্রোধে মুণ্ড দেবীর দিকে ধেয়ে গেলেন। দেবী তাঁর রক্তাক্ত খড়গ দিয়ে আর এক কোপে মুণ্ডের শিরোচ্ছেদ করলেন। চণ্ড-মুণ্ড বধ হতে দেখেই দেবতারা আনন্দে দেবীর জয়ধ্বনি দিতে থাকলেন‌।

    দেবী মাহাত্ম্য (Durga Puja 2025) অনুযায়ী, চণ্ড আর মুণ্ডের ছিন্ন মস্তক নিয়ে দেবী, মহামায়ার কাছে এসে বিকট হেসে বললেন, “এই যুদ্ধরূপ যজ্ঞে আমি আপনাকে চণ্ড ও মুণ্ড নামের দুই মহাপশুর মস্তক উপহার দিলাম। এখন আপনি নিজেই শুম্ভ ও নিশুম্ভকে বধ করবেন।” দেবী অম্বিকা তখন বললেন, “হে দেবী, যেহেতু তুমি চণ্ড ও মুণ্ডের বধ করে মাথা দুটি আমার নিকট নিয়ে এসেছ। সেজন্য আজ থেকে তুমি জগতে ‘চামুণ্ডা’ নামে বিখ্যাত হবে।” দেবী কালরাত্রি শুভফলের দেবী (Durga Puja 2025) বলেও অনেকে মনে করেন। তাই দেবীর আরেক নাম হল শুভঙ্করী। দেবী কালরাত্রির (Devi Kalratri) আশীর্বাদে জীবনের সমস্ত কুপ্রভাব বিনষ্ট হয় বলে ভক্তদের ধারণা। মাতার নৈবেদ্যতে গুড় নিবেদন করলে তিনি প্রসন্না হন বলে ভক্তদের বিশ্বাস।

  • Durga Puja 2025: নবদুর্গার ষষ্ঠ রূপ, মহাষষ্ঠীতে পূজিতা হন দেবী কাত্যায়নী, জানুন মাহাত্ম্য

    Durga Puja 2025: নবদুর্গার ষষ্ঠ রূপ, মহাষষ্ঠীতে পূজিতা হন দেবী কাত্যায়নী, জানুন মাহাত্ম্য

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মহালয়ার অমাবস্যা তিথিতে পিতৃপক্ষের অবসান ও দেবীপক্ষের (Durga Puja 2025) সূচনা হয়। পরের দিন, অর্থাৎ শুক্ল প্রতিপদ তিথি থেকে শুরু হয় নবরাত্রি (Navaratri 2025)। যা চলে দুর্গা নবমী পর্যন্ত। এই নবরাত্রিতে দেবী দুর্গা নয়টি ভিন্ন রূপে পূজিতা হন। নবদুর্গার (Nabadurga) এই নয়টি রূপ হল— দেবী শৈলপুত্রী, দেবী ব্রহ্মচারিণী, দেবী চন্দ্রঘণ্টা, দেবী কুষ্মাণ্ডা, দেবী স্কন্দমাতা, দেবী কাত্যায়নী (Devi Katyayani), দেবী কালরাত্রি, দেবী মহাগৌরী এবং দেবী সিদ্ধিদাত্রী।

    ঋষি কাত্যায়নের কন্যা কাত্যায়নী

    হিমালয়ের কোলে ঘন অরণ্য ঘেরা এক ঋষির আশ্রম। কাত্য গোত্রধারী ওই ঋষির নাম কাত্যায়ন। দীর্ঘদিন তিনি মাতা অম্বিকাকে নিজের কন্যা রূপে পাওয়ার জন্য তপস্যায় রত ছিলেন। পুরাণে কথিত আছে, দেবী তাঁর এই তপস্যায় প্রসন্ন হয়েছিলেন এবং তাঁকে এরূপ বর দিয়েছিলেন যে, যখন দেবতাদের প্রয়োজন হবে, তখন তিনি তাঁর কন্যা রূপে অবতীর্ণ হবেন। বামন পুরাণ অনুযায়ী, মহিষাসুরের কাছে স্বর্গরাজ্য হারিয়ে বিতাড়িত দেবতারা শরণাপন্ন হয়েছিলেন ত্রিদেব অর্থাৎ ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বরের (Brahma-Vishnu-Maheswar)। মহর্ষি কাত্যায়নের আশ্রমে এই ত্রিদেবের তেজ থেকে উদ্ভব হয় অষ্টাদশ ভূজা এক নারীমূর্তির, ইনিই মাতা কাত্যায়নী। নবরাত্রির মহাষষ্ঠীর (Mahasasthi) দিন আরাধিতা হন দেবী কাত্যায়নী। মহর্ষি কাত্যায়নের আশ্রমে সমস্ত দেবগণ নিজেদের অস্ত্র দ্বারা সাজাতে শুরু করলেন দেবী কাত্যায়নীকে (Devi Katyayani)। শিব দিলেন তাঁর ত্রিশূল, ভগবান বিষ্ণু প্রদান করলেন তাঁর সুদর্শন চক্র, অগ্নি দিলেন শক্তি, বায়ু দিলেন ধনুক, সূর্য দিলেন তীরভরা তূণীর, ইন্দ্র দিলেন বজ্র, কুবের দিলেন গদা, ব্রহ্মা দিলেন অক্ষমালা ও কমণ্ডলু, কাল দিলেন খড়্গ ও ঢাল এবং বিশ্বকর্মা দিলেন কুঠার ও অন্যান্য যুদ্ধাস্ত্র। এইভাবে সমস্ত দেবতা তাঁদের অস্ত্র তুলে দিলেন দেবীর হাতে মহিষাসুর বধের নিমিত্তে।

    মহিষাসুরের সঙ্গে দেবীর যুদ্ধ

    পুরাণে কথিত আছে, এরপর দেবী (Durga Puja 2025) গেলেন মহিষাসুরের সঙ্গে যুদ্ধ করতে। মহিষাসুরের দু’জন চর দেবীকে দেখে মহিষাসুরের নিকটে গিয়ে তাঁর রূপ বর্ণনা করলেন। দেবীর রূপে মুগ্ধ মহিষাসুর দেবীকে লাভ করতে চাইলেন। দেবী কাত্যায়নী তখন শর্ত দিলেন যে, তাঁকে লাভ করার পূর্বে যুদ্ধে পরাস্ত করতে হবে। শুরু হল মহিষাসুরের সঙ্গে দেবী কাত্যায়নীর এক প্রবল যুদ্ধ। দেবী কাত্যায়নী ছিলেন তাঁর বাহন সিংহের ওপর সওয়ার, অন্যদিকে মহিষাসুর ছিলেন মহিষের রূপে। পুরাণে আরও উল্লেখ রয়েছে, যুদ্ধ চলাকালীন দেবী কাত্যায়নী (Devi Katyayani) পা দিয়ে তীব্র আঘাত করেন ওই ছদ্মবেশী মহিষকে। আঘাতে মহিষাসুর ধরাতলে পতিত হলে, মাতা কাত্যায়নী তাকে ত্রিশূল দ্বারা বধ করেন। এভাবেই দেবী কাত্যায়নী হয়ে ওঠেন ‘মহিষাসুরমর্দিনী’ (Mahisasurmardini)। যে মহিষাসুরমর্দিনীকে কেন্দ্র করেই প্রতি বছর সম্পন্ন হয় দুর্গাপুজো (Durga Puja 2025)। যে মহিষাসুরমর্দিনীর স্তব প্রত্যেক মহালয়ার ভোরবেলায় বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের কন্ঠে আমরা শুনতে পাই। পুরাণ অনুযায়ী, দেবতারা যুদ্ধ শেষে মাতার কাত্যায়নীর উদ্দেশে পুষ্পবৃষ্টি করেন। রম্ভাপুত্র মহিষাসুরের অত্যাচারে যে দেবতারা স্বর্গ থেকে বিতাড়িত হয়েছিলেন, তাঁরাই আবার স্বর্গরাজ্যের অধিকার ফিরে পেলেন মাতা কাত্যায়নীর কৃপায়।

    দেবী কাত্যায়নী যোদ্ধাদেবী, ঠিক মাতা চণ্ডী বা ভদ্রকালীর মতোই

    বামন পুরাণে উল্লেখিত এই আখ্যান বরাহ পুরাণ এবং দেবী ভাগবত পুরাণেও একইভাবে উল্লেখ করা আছে। অন্যদিকে কালিকা পুরাণ অনুযায়ী, দেবী কাত্যায়নী তিনবার মহিষাসুরকে বধ করেছিলেন (Durga Puja 2025)। আদি সৃষ্টিকল্পে অষ্টাদশভূজা উগ্রচণ্ডী রূপে মহিষাসুরকে বধ করেছিলেন। দ্বিতীয় সৃষ্টিকল্পে ষোড়শভুজা ভদ্রকালী রূপে মহিষাসুরকে বধ করেছিলেন। আবার তৃতীয় সৃষ্টিকল্পে দশভূজা দেবী দুর্গা রূপে মহিষাসুরকে বধ করেছিলেন। মহিষাসুর তৃতীয়বার বধ হওয়ার পর দেবীর আশীর্বাদে তিনি চিরতরে দেবীর পদতলে স্থান পান। বেদের অন্য একটি আখ্যান অনুযায়ী, কাত্যায়নী ও মৈত্রেয়ী ছিলেন শতপথ ব্রাহ্মণের রচয়িতা ঋষি যাজ্ঞবল্ক্যের দুই স্ত্রীর নাম। শাক্তরা মনে করেন, দেবী কাত্যায়নী (Devi Katyayani) যোদ্ধাদেবী ঠিক মাতা চণ্ডী বা ভদ্রকালীর মতোই। মহর্ষি পতঞ্জলি রচিত ‘মহাভাষ্য’ গ্রন্থে মাতা কাত্যায়নীকে সৃষ্টির আদি শক্তিরূপে বর্ণনা করা হয়েছে।

    দেবী কাত্যায়নীর প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায় তৈত্তিরীয় আরণ্যক গ্রন্থে

    দেবী কাত্যায়নীর প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায় তৈত্তিরীয় আরণ্যক গ্রন্থে। মার্কন্ডেয় রচিত ‘দেবী মাহাত্ম্যে’ দেবী কাত্যায়নীর দিব্যলীলার বর্ণনা রয়েছে, এর পাশাপাশি, ভাগবত পুরাণেও দেবী কাত্যায়নীর লীলা বর্ণিত হয়েছে। আবার বৈষ্ণবদের ভাগবত পুরাণেও মাতা কাত্যায়নীর পুজোর উল্লেখ পাওয়া যায় (Durga Puja 2025)। ভাগবত পুরাণে এটি কাত্যায়নী ব্রত নামেই পরিচিত। ব্রজের গোপীরা শ্রী কৃষ্ণকে পতি রুপে পেতে এই ব্রত উদযাপন করত। মাঘ মাস জুড়ে এই ব্রত চলত। যমুনা নদীর তীরে দেবী কাত্যায়নীর মাটির মূর্তি তৈরী করে দীপ, ফল, চন্দন, ধূপ দ্বারা মায়ের আরাধনা করার পরম্পরা ছিল উত্তর ভারতে। আবার একই ভাবে মকর সংক্রান্তিতে দক্ষিণ ভারতের তামিলনাড়ুতে পোঙ্গল উৎসবে মাতা কাত্যায়নীর পুজো চালু রয়েছে।

    রোগ-ভয়-ব্যাধি সমস্ত কিছু মাতা হরণ করে নেন বলেই ভক্তদের ধারণা

    দেবী কাত্যায়নীর (Devi Katyayani) স্বরূপ শৌর্য, তেজ এবং পরাক্রমের প্রতীক বলেই বিবেচিত হয়। পুরাকালে দেবী কাত্যায়নী যেমন মহিষাসুরকে বধ করে আসুরিক শক্তি তথা অশুভ শক্তির বিনাশ করেছিলেন, ঠিক একইভাবে ভক্তদের জীবন থেকে সমস্ত অশুভ শক্তিকে তিনি বিনষ্ট করেন এবং আসুরিক যা কিছু প্রবৃত্তি সেটাও তিনি ধ্বংস করেন বলেই বিশ্বাস রয়েছে ভক্তদের। মাতার এই রূপের উপাসনা করলে সমস্ত অশুভ প্রভাব থেকে নিজেকে মুক্ত করা যায়, জীবনের সমস্ত বাধাবিঘ্ন দূর হয়, রোগ, ভয়, ব্যাধি সমস্ত কিছু মাতা হরণ করে নেন বলেই ভক্তদের ধারণা। মাতা কাত্যায়নীর ভক্তরা নৈবেদ্যতে মায়েরা উদ্দেশ্যে মধু নিবেদন করেন। এতে মা সন্তুষ্ট হন।

  • Durga Puja 2025: নবদুর্গার পঞ্চম রূপ, মহাপঞ্চমীতে পূজিতা হন দেবী স্কন্দমাতা, জানুন মাহাত্ম্য

    Durga Puja 2025: নবদুর্গার পঞ্চম রূপ, মহাপঞ্চমীতে পূজিতা হন দেবী স্কন্দমাতা, জানুন মাহাত্ম্য

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মহালয়ার অমাবস্যা তিথিতে পিতৃপক্ষের অবসান ও দেবীপক্ষের (Durga Puja 2025) সূচনা হয়। পরের দিন, অর্থাৎ শুক্ল প্রতিপদ তিথি থেকে শুরু হয় নবরাত্রি (Navaratri 2025)। যা চলে দুর্গা নবমী পর্যন্ত। এই নবরাত্রিতে দেবী দুর্গা নয়টি ভিন্ন রূপে পূজিতা হন। নবদুর্গার (Nabadurga) এই নয়টি রূপ হল— দেবী শৈলপুত্রী, দেবী ব্রহ্মচারিণী, দেবী চন্দ্রঘণ্টা, দেবী কুষ্মাণ্ডা, দেবী স্কন্দমাতা (Devi Skandamata), দেবী কাত্যায়নী, দেবী কালরাত্রি, দেবী মহাগৌরী এবং দেবী সিদ্ধিদাত্রী।

    পুরাণ অনুযায়ী, দেবাদিদেব মহাদেবের পুত্র হলেন দেব সেনাপতি কার্তিক। তাঁর অপর নাম স্কন্দ। স্কন্দমাতা (Devi Skandamata) মানে হল কার্তিকের মাতা। দেবী পার্বতীর এই রূপেরই পুজো করা হয় নবরাত্রির পঞ্চমীর দিন। কার্তিকের জন্মবৃত্তান্ত এবং মাতা পার্বতীর স্কন্দমাতা হয়ে ওঠার কাহিনি জানতে হলে অপর একটি পৌরাণিক কাহিনি শুনতে হবে (Durga Puja 2025)।

    অসুর-দেবতা যুদ্ধ

    পুরাকালে বজ্রাঙ্গ নামে এক অসুর রাজা ছিলেন। তিনি ছিলেন দিতির পুত্র। দেবতাদের রাজা ইন্দ্রকে বজ্রাঙ্গ সিংহাসনচ্যুত করে বন্দি করেন। দেবতাদের প্রতি বজ্রাঙ্গের এই রোষ আসলে ছিল তাঁর প্রতিশোধ। কারণ ইতিপূর্বে দিতির অসংখ্য পুত্রকে মানে বজ্রাঙ্গের নিজ ভাইদের দেবতারা হত্যা করেছিলেন। বজ্রাঙ্গের হাতে বন্দি ইন্দ্রকে মুক্ত করতে আসেন ব্রহ্মা এবং কাশ্যপ মুনি। কাশ্যপ মুনি ছিলেন বজ্রাঙ্গের পিতা, অর্থাৎ দিতির স্বামী। ব্রহ্মা এবং কাশ্যপ মুনির অনুরোধে বজ্রাঙ্গ তখনকার মতো ইন্দ্রকে (Durga Puja 2025) মুক্ত করেন।

    দৈত্য হয়েও এমন দয়ার ভাব বজ্রাঙ্গের মধ্যে দেখতে পেয়ে ব্রহ্মা তাঁকে বরদান করতে ইচ্ছাপ্রকাশ করলেন। বজ্রাঙ্গ তখন তপস্বী হওয়ার বর প্রার্থনা করলেন এবং বাকি জীবন যেন তিনি ধর্মপথে চলতে পারেন, সেই আশীর্বাদ ব্রহ্মার কাছে চাইলেন। ব্রহ্মা তাঁর মানসকন্যা বরাঙ্গীর সঙ্গে বজ্রাঙ্গের বিবাহ দিলেন। বজ্রাঙ্গ এবং বরাঙ্গী বনের মধ্যে কুটির বানিয়ে ধর্মকর্ম করতে লাগলেন। বজ্রাঙ্গ তপস্যায় রত থাকতেন এবং বরাঙ্গী গৃহস্থের কর্ম সম্পাদন করতেন।

    বরাঙ্গীর গর্ভে জন্ম হল তারকাসুরের

    একদিন দেবরাজ ইন্দ্র ওই কুটিরের পাশ দিয়ে যেতে যেতে বরাঙ্গীকে দেখতে পেয়ে পুরনো অপমানের বদলা নিতে চাইলেন। কখনও বানর সেজে, কখনও ভেড়া বা কখনও সাপ হয়ে কুটির লন্ডভন্ড করতে লাগলেন। ক্রন্দনরত অবস্থায় বরাঙ্গী তাঁর স্বামী বজ্রাঙ্গকে এসব বিষয়ে বললে, বজ্রাঙ্গ ব্রহ্মাকে স্মরণ করলেন। ব্রহ্মা প্রকট হয়ে বর দিতে চাইলে বজ্রাঙ্গ বললেন, “আমাকে এমন পুত্র দিন, যে দেবতাদের উপর অত্যাচার করতে সমর্থ হবে।” ব্রহ্মা বজ্রাঙ্গের মনমতো বরদান করলেন। বরাঙ্গীর গর্ভে জন্ম হল তারক নামের অসুরের‌।

    পরবর্তীতে তারকাসুরের উপর ব্রহ্মার বরদান ছিল যে, “একমাত্র শিবের বালকপুত্র ছাড়া, কারও হাতে তিনি হত হবেন না।” ব্রহ্মার বরদানে অজেয়, অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠেন তারকাসুর। কারণ তিনি জানতেন শিব কখনও বিবাহ করবেন না এবং ত্রিভুবনে ব্রহ্মার বরদানে তাঁকে হত্যা করতে পারে, এমন ক্ষমতা কোনও দেবতা, মানুষ বা জীবজন্তুর নেই। তারকাসুর দেবলোক নিজের দখলে আনেন। দেবরাজ ইন্দ্র সিংহাসনচ্যুত হলেন। বিতাড়িত দেবতারা বুঝতে পারলেন শিবের বিয়ে দিতে পারলে তবে তাঁর পুত্রই তারকাসুরকে বধ করতে পারবেন।

    শিব-পার্বতীর বিবাহ ও স্কন্দের জন্ম

    আয়োজন শুরু হল শিব-পার্বতীর বিবাহের। সেখানেও তারকাসুরের আক্রমণ হল। পার্বতী দেবী (Durga Puja 2025), মাতা চন্দ্রঘণ্টার রূপধারণ করে অসুরদের বিতাড়িত করলেন। এরপর সুসম্পন্ন হল শিব-পার্বতীর বিবাহ। জন্ম হল কার্তিকের। মাতা পার্বতী তখন হলেন স্কন্দমাতা (Devi Skandamata) অর্থাৎ কার্তিক জননী। দৈববাণী পেয়ে দেবরাজ ইন্দ্র কার্তিককে সেনাপতি নিযুক্ত করলেন। এক প্রবল যুদ্ধে কার্তিকের হাতে তারকাসুর হত হলেন। দেবতারা তাঁদের হৃত স্বর্গরাজ্য পুনরায় নিজেদের দখলে আনলেন। এমনটাই লেখা রয়েছে “স্কন্দ পুরাণে”।

    স্কন্দমাতার বিবরণ

    স্কন্দমাতার অপর নাম কার্তিকেয়। ত্রিনয়নী মাতার (Durga Puja 2025) কোলে তাঁর শিশুপুত্রকে দেখতে পাই আমরা। এই শিশুপুত্রই হলেন স্কন্দ বা কার্তিক। স্কন্দমাতা স্নেহ, মায়া, সন্তান বাৎসল্য-এর প্রতীক। মাতার ভক্তরা মনে করেন দেবীর পুজো করলে সমস্ত মনোবাঞ্ছা পূরণ হয়, জীবনের সকল বাধাবিঘ্ন দূর হয়, অশুভ শক্তি বিনষ্ট হয়, সুখ, স্বাচ্ছন্দ্য, সমৃদ্ধিতে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে জীবন। দেবী পদ্মাসনা। তাঁর বাহন সিংহ। তাঁর দুই হাতে দুটি পদ্ম। একহাতে কার্তিককে ধরে থাকেন। অপর হাত বর-মুদ্রার ভঙ্গিতে থাকে। যার দ্বারা ভক্তদের উদ্দেশে সর্বদাই আশীর্বাদ বর্ষিত হয়। স্কন্দমাতার পুজো করলে শত্রু বিনাশ হয়, শক্তি বৃদ্ধি হয়, এমনটাই মনে করেন ভক্তরা। স্কন্দমাতার পুজোতে সাদা রঙের পোশাক পরলে মাতা প্রসন্ন হন, এমনটাই প্রচলিত ধারণা রয়েছে। দেবীর আশীর্বাদ পেতে ভক্তরা নৈবেদ্যতে কলা বা কদলী ভোগ দেন।

  • Durga Puja 2025: নবদুর্গার চতুর্থ রূপ, মহাচতুর্থীতে পূজিতা হন দেবী কুষ্মাণ্ডা, জানুন মাহাত্ম্য

    Durga Puja 2025: নবদুর্গার চতুর্থ রূপ, মহাচতুর্থীতে পূজিতা হন দেবী কুষ্মাণ্ডা, জানুন মাহাত্ম্য

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মহালয়ার অমাবস্যা তিথিতে পিতৃপক্ষের অবসান ও দেবীপক্ষের (Durga Puja 2025) সূচনা হয়। পরের দিন, অর্থাৎ শুক্ল প্রতিপদ তিথি থেকে শুরু হয় নবরাত্রি (Navaratri 2025)। যা চলে দুর্গা নবমী পর্যন্ত। এই নবরাত্রিতে দেবী দুর্গা নয়টি ভিন্ন রূপে পূজিতা হন। নবদুর্গার (Nabadurga) এই নয়টি রূপ হল— দেবী শৈলপুত্রী, দেবী ব্রহ্মচারিণী, দেবী চন্দ্রঘণ্টা, দেবী কুষ্মাণ্ডা (Devi Kushmanda), দেবী স্কন্দমাতা, দেবী কাত্যায়নী, দেবী কালরাত্রি, দেবী মহাগৌরী এবং দেবী সিদ্ধিদাত্রী।

    পুরাণে কথিত আছে, হাসির দ্বারা তিনি (Devi Kushmunda) এই জগৎ বা বিশ্বসংসার সৃষ্টি করেছিলেন। প্রকৃতপক্ষে তাঁকেই জগজ্জননী মানেন ভক্তরা। তিনিই সূর্যের তেজ স্বরূপা। তিনিই আসুরিক শক্তির বিনাশক। নবরাত্রির চতুর্থীতে (Durga Puja 2025) ভক্তদের দ্বারা পূজিতা হন দেবী কুষ্মাণ্ডা।

    দেবী কুষ্মাণ্ডার পৌরাণিক আখ্যান

    পুরাণ অনুযায়ী, এ বিশ্ব যখন তৈরি হয়নি, প্রাণের স্পন্দন যখন কোথাও ছিল না, চারদিকে যখন ঘন অন্ধকার ছাড়া আর কিছুই ছিল না, তখন এক মহাজাগতিক দৈব আলোকরশ্মি ক্রমশ নারী মূর্তির আকার ধারণ করতে থাকে। দৈব ক্ষমতার অধিকারী, জগতের সৃষ্টিকর্ত্রী এই নারী দেবী কুষ্মাণ্ডা (Devi Kushmanda) নামে পরিচিত। মহাবিশ্বে প্রাণের উৎস, শক্তির উৎস, চন্দ্র, সূর্য, গ্রহ, নক্ষত্র, ছায়াপথের সৃষ্টিকর্ত্রী তিনি (Durga Puja 2025)। তিনি সূর্যের কেন্দ্রে অবস্থান করেন। দিন ও রাত্রি তাঁর জন্যই হয়। জীবনের সমস্ত কর্মকাণ্ডের গতি তাঁর দ্বারাই নিয়ন্ত্রিত হয় বলে মনে করেন ভক্তরা।

    কুষ্মাণ্ডা শব্দের অর্থ…

    সৌরমণ্ডলকে পরিচালিত করেন দেবী কুষ্মাণ্ডা (Durga Puja 2025)। তাঁর মুখমণ্ডল সূর্যের মতোই দীপ্তিমান, তেজোদীপ্ত। পণ্ডিতমহলের মতে, ‘কু’ শব্দের অর্থ কুৎসিত এবং ‘উষ্মা’ শব্দের অর্থ ‘তাপ’; ‘কুষ্মা’ শব্দের অর্থ তাই দুঃখ। দেবী জগতের সমস্ত দুঃখ এবং কষ্ট হরণ করে নিজের উদরে ধারণ করেন বলে তাঁর নাম ‘কুষ্মাণ্ডা’ মনে করা হয়। দেবাদিদেব মহাদেব যেমন সমুদ্র মন্থনের সময় সমস্ত বিষ নিজের শরীরে ধারণ করে দেবতাদের রক্ষা করেছিলেন, একই ভাবে মাতা কুষ্মাণ্ডা এ জগতের সকল অশুভ প্রভাব, দুঃখ, কষ্ট, রোগ, যন্ত্রণা, পীড়াকে হরণ করে তাঁর ভক্তদের রক্ষা করেন।

    দেবী কুষ্মাণ্ডার (Devi Kushmanda) বিবরণ

    ভক্তরা মনে করেন, যখন এ বিশ্বে অসুরদের অত্যাচার বেড়ে গিয়েছিল, তখন আবির্ভূত হয়েছিলেন দেবী কুষ্মাণ্ডা। দেবী সিংহে সওয়ার। তিনি অষ্টভূজা। আটটি হাত সাজানো রয়েছে অস্ত্র তথা অন্যান্য সামগ্রী দ্বারা। চারটি হাতে রয়েছে-চক্র, গদা, তির ও ধনুক। অন্য চারটি হাতে রয়েছে জপমালা, পদ্ম, কলস এবং কমণ্ডলু। দেবীর হাতে অস্ত্র ছাড়াও দুটো পাত্রের উল্লেখ করা হয়েছে। একটিতে থাকে অমৃত ও অপরটিতে থাকে রক্ত। অর্থাৎ দেবী কুষ্মাণ্ডার এক হাতে সৃষ্টি ও অপর হাতে ধ্বংস। দেবীর বাহন সিংহকে ধর্মের প্রতীক বলে মনে করা হয়। ধর্মের স্থাপন (Durga Puja 2025) এবং ধর্মকে বহন করে মাতা কুষ্মাণ্ডার সিংহ।

    কীভাবে সন্তুষ্ট হন দেবী কুষ্মাণ্ডা

    দেবী কুষ্মাণ্ডার সামনে কুমড়ো বলির প্রথা চালু আছে। দেবী কুষ্মাণ্ডার ভক্তরা মায়ের উদ্দেশে যে সব সামগ্রী নিবেদন বা অর্পণ করে থাকেন, সেগুলি হল-সিঁদুর, কাজল, চুড়ি, বিন্দি, পায়ের আংটি, চিরুনি, আয়না, পায়ের পাতা, সুগন্ধি, কানের দুল, নাকের পিন, গলার মালা, লাল চুনরি ইত্যাদি। ভক্তদের বিশ্বাস, মাতা কুষ্মাণ্ডাকে মালপোয়া, দই থেকে তৈরি যে কোনও পদ এবং হালুয়া নৈবেদ্যতে ভক্তিপূর্বক অর্পণ করলে মাতা প্রসন্ন হন। তিনি তাঁর ভক্তদের জীবনকে সুখী, শান্তি, সমৃদ্ধি, যশ, আয়ু দ্বারা পরিপূর্ণ করে তোলেন। ভক্তদের ব্রহ্ম জ্ঞানও তিনিই দান করেন।

  • Durga Puja 2025: নবদুর্গার তৃতীয় রূপ, তৃতীয়ার দিন পূজিতা হন দেবী চন্দ্রঘণ্টা, জানুন মাহাত্ম্য

    Durga Puja 2025: নবদুর্গার তৃতীয় রূপ, তৃতীয়ার দিন পূজিতা হন দেবী চন্দ্রঘণ্টা, জানুন মাহাত্ম্য

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মহালয়ার অমাবস্যা তিথিতে পিতৃপক্ষের অবসান ও দেবীপক্ষের সূচনা হয়। পরের দিন, অর্থাৎ শুক্ল প্রতিপদ তিথি থেকে শুরু হয় নবরাত্রি (Navaratri 2025)। যা চলে দুর্গা নবমী পর্যন্ত। এই নবরাত্রিতে দেবী দুর্গা নয়টি ভিন্ন রূপে পূজিতা হন। নবদুর্গার (Nabadurga) এই নয়টি রূপ হল— দেবী শৈলপুত্রী, দেবী ব্রহ্মচারিণী, দেবী চন্দ্রঘণ্টা (Devi Chandra Ghanta), দেবী কুষ্মাণ্ডা, দেবী স্কন্দমাতা, দেবী কাত্যায়নী, দেবী কালরাত্রি, দেবী মহাগৌরী এবং দেবী সিদ্ধিদাত্রী।

    পৌরাণিক কাহিনি…

    মহিষাসুরের (Mahisasura) দখলে তখন সম্পূর্ণ স্বর্গরাজ্য। দেবতা, মুনি, ঋষি কেউই রম্ভা পুত্রের ভয়ঙ্কর বীভৎস অত্যাচারে টিকতে পারছেন না। দেবতারা পরাস্ত এবং বিতাড়িত। ব্রহ্মার বরদানে মহিষাসুরকে প্রতিহত করার কেউ নেই। মহিষাসুর জানতেন ব্রহ্মার আশীর্বাদে কোনও পুরুষ তাঁকে হত্যা করতে পারবে না। বিতাড়িত দেবতা, মুনি-ঋষিরা শরণাপন্ন হলেন ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহেশ্বরের। মহিষাসুরের অত্যাচারের কাহিনি শোনার পর ক্রোধান্বিত হলেন ত্রিদেব। ক্রোধাগ্নির প্রচণ্ড তেজ সম্মিলিত হয়ে মহর্ষি কাত্যায়ন ঋষির আশ্রমে সৃষ্টি হল এক নারীর। তিনি মা দুর্গা (Durga Puja 2025)।

    রাজা ইন্দ্র ঐরাবতের গলার ঘণ্টা থেকে একটি নিয়ে দেবীর হাতে দিলেন…

    নবরাত্রির ন’দিনে মা দুর্গা নয়টি রূপ ধারণ করে অসুরদের সঙ্গে প্রচণ্ড যুদ্ধ করেছিলেন। নবরাত্রির তৃতীয় দিনে পূজিতা হন দেবী চন্দ্রঘণ্টা (Devi Chandraghanta)। প্রবল তেজসম্পন্ন এই দেবী (Durga Puja 2025) মাতা চন্দ্রঘণ্টা, ঘণ্টা বাজিয়ে অসুরদের সতর্ক করেন। এখনকার ভাষায় ওয়ার্নিং বলা যেতে পারে। তাই দেবীর নাম চন্দ্রঘণ্টা। কালিকাপুরাণে দেবীর এমন নামকরণের উল্লেখ পাওয়া যায়। কাত্যায়ন মুনির আশ্রমে ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বরের তেজ থেকে সৃষ্ট নারী মূর্তিকে যখন সমস্ত দেবতা একে একে অস্ত্র দ্বারা সজ্জিত করছিলেন, তখন দেবতাদের রাজা ইন্দ্র তাঁর বাহন ঐরাবৎ হাতির গলার ঘণ্টা থেকে একটি ঘণ্টা নিয়ে দেবীর একটি হাতে দিলেন।

    ঘণ্টার শব্দেই দৈত্যদের প্রাণ ভয়ে খাঁচাছাড়া অবস্থা হয়েছিল

    পুরাণে উল্লেখ রয়েছে, অসুরদের সঙ্গে প্রবল যুদ্ধ চলাকালীন মাতা (Durga Puja 2025) চন্দ্রঘণ্টার এই তীব্র ঘণ্টানাদ বিকট শব্দ সৃষ্টি করেছিল। সেই ঘণ্টার শব্দেই দৈত্যদের প্রাণ ভয়ে খাঁচাছাড়া হওয়ার অবস্থা হয়েছিল। অসুরদের অশুভ শক্তিকে হরণ করার জন্যই দেবী চন্দ্রঘণ্টা ঘণ্টা বাজিয়েছিলেন। পৌরাণিক কাহিনিতে এও দেখা যাচ্ছে যে, যুদ্ধ শেষে দেবীর এই ঘণ্টার শরণাপন্ন হচ্ছেন দেবতা, মুনি, ঋষিরা। তাঁরা বলছেন, “সা ঘণ্টা পাতু নো দেবি পাপেভ্যো নঃ সুতাম্ইব”। যার অর্থ বিশ্লেষণ করলে দাঁড়ায়, হে মা, তোমার এই প্রবল ঘণ্টাধ্বনি যেভাবে অসুরদের শক্তি ক্ষয় করে, তাদের দুর্বল করেছিল, ঠিক সেভাবেই এই ঘণ্টা যেন আমাদের ভিতরে থাকা সমস্ত পাপবোধকে হরণ করে নেয়। ভক্তদের বিশ্বাস রয়েছে, কল্যাণকারী মাতা (Devi Chandraghanta) তাঁদের জীবন থেকে সমস্ত পাপবোধ, ভয়, শত্রুতা, বাধা-বিঘ্ন হরণ করে নেন।

    দেবী চন্দ্রঘণ্টা আসলে হিমালয়কন্যা ও শিবের স্ত্রী মাতা পার্বতী

    পৌরাণিক কাহিনিতে আরও উল্লেখ রয়েছে, দেবী চন্দ্রঘণ্টা আসলে হিমালয়কন্যা ও শিবের স্ত্রী মাতা পার্বতী। শিব-পার্বতীর বিবাহ পণ্ড করতে তারকাসুর দৈত্য, দানবদের মিলিত এক বাহিনী নিয়ে আক্রমণ করে। এই অবস্থায় বিবাহকে নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে দেবী পার্বতী, মাতা চন্দ্রঘন্টার রূপ ধারণ করেন। তিনি ছিলেন বাঘের পিঠে সওয়ার। চন্দ্রের মতো বিশালাকার ঘণ্টা তিনি বাজাতে থাকেন। ঘণ্টার তীব্র আওয়াজে ভীতগ্রস্ত হয়ে দানবরা রণে ভঙ্গ দেয়। একটি পৌরাণিক মত অনুযায়ী, দেবী পার্বতী এক্ষেত্রে কোনও উগ্র ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেননি। কারণ জন্মের পর যখন দশম মহাবিদ্যা ও বিশ্বরূপ দেবী পার্বতী তাঁর পিতা এবং মাতাকে দর্শন করিয়েছিলেন, তখন দেবী পার্বতীকে তাঁর মাতা মেনকা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ করিয়ে নিয়েছিলেন যে, যখন দেবী পার্বতী নিজ পিতৃগৃহে অবস্থান করবেন, তখন কোনও অবস্থাতেই তিনি উগ্র রূপ ধারণ করবেন না এবং তৃতীয় চক্ষুকে লুকিয়ে রাখবেন। অর্থাৎ মাতা পার্বতী (Durga Puja 2025) পিতৃগৃহে থাকলে শান্ত হিমালয় কন্যা হিসেবেই থাকবেন।

    কল্যাণ প্রদানকারী দেবী চন্দ্রঘণ্টা

    কল্যাণ প্রদানকারী দেবী চন্দ্রঘণ্টার (Devi Chandraghanta) বাহন বাঘ অথবা সিংহ। তিনি ত্রিনয়নী এবং কপালে ঘণ্টার আকৃতির অর্ধচন্দ্রের অবস্থান। দেবী চন্দ্রঘণ্টা আসুরিক শক্তিকে ধ্বংস করতে বা বিনাশ করতে সদা প্রস্তুত। তাঁর ভক্তদের বিশ্বাস দেবী চন্দ্রঘণ্টা জীবনের সকল বাধাবিঘ্ন দূর করে চলার পথকে সুগম করে তোলেন। এই দেবীর পছন্দের রঙ কমলা বলেই মনে করেন ভক্তরা। তাই এই নির্দিষ্ট রঙের পোশাক পরিধান করে মাতা চন্দ্রঘণ্টার আরাধনা করলে সুফল বা শুভফল মেলে বলে ভক্তদের ধারণা। মায়ের উদ্দেশে তাঁর ভক্তরা সাধারণত দুগ্ধজাত ভোগ নিবেদন করেন মায়ের নৈবেদ্যতে, এটা সাধারণত মিষ্টি, ক্ষীর বা রাবড়ি হয়। ভক্তদের বিশ্বাস এতে দেবী চন্দ্রঘণ্টা প্রসন্ন হন।

  • Durga Puja 2025: নবদুর্গার দ্বিতীয় রূপ, নবরাত্রির দ্বিতীয়াতে পূজিতা হন দেবী ব্রহ্মচারিণী, জানুন মাহাত্ম্য

    Durga Puja 2025: নবদুর্গার দ্বিতীয় রূপ, নবরাত্রির দ্বিতীয়াতে পূজিতা হন দেবী ব্রহ্মচারিণী, জানুন মাহাত্ম্য

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মহালয়ার অমাবস্যা তিথিতে পিতৃপক্ষের অবসান ও দেবীপক্ষের সূচনা হয়। পরের দিন, অর্থাৎ শুক্ল প্রতিপদ তিথি থেকে শুরু হয় নবরাত্রি (Navaratri 2025)। যা চলে দুর্গা নবমী পর্যন্ত। এই নবরাত্রিতে দেবী দুর্গা নয়টি ভিন্ন রূপে পূজিতা হন। নবদুর্গার (Nabadurga) এই নয়টি রূপ হল— দেবী শৈলপুত্রী, দেবী ব্রহ্মচারিণী (Devi Brahmacharini), দেবী চন্দ্রঘণ্টা, দেবী কুষ্মাণ্ডা, দেবী স্কন্দমাতা, দেবী কাত্যায়নী, দেবী কালরাত্রি, দেবী মহাগৌরী এবং দেবী সিদ্ধিদাত্রী।

    নবদুর্গার অবিবাহিত রূপ…

    নবরাত্রির (Durga Puja 2025) দ্বিতীয় দিনে দেবী ব্রহ্মচারিণীর পুজো করা হয়। ভক্তদের বিশ্বাস, সঠিক নিয়ম মেনে মা ব্রহ্মচারিণীর পুজো করলে সব ইচ্ছা পূরণ হয়। মা ব্রহ্মচারিণীকে প্রেম, আনুগত্য, প্রজ্ঞা, ধৈর্য ও জ্ঞানের প্রতীক বলে মানা হয়। তাঁর আশীর্বাদে ভক্তের জীবনে সুখ-শান্তি আসে। দেবী ব্রহ্মচারিণীকে (Devi Brahmacharini) জবা এবং পদ্মফুলও প্রদান করা হয়। দেবীর এই রূপে এক হাতে মালা এবং অন্য হাতে কমণ্ডলু ধারণ করা অবস্থায় দেখা যায়। ধর্মীয় বিশ্বাস (Durga Puja 2025) অনুযায়ী, দেবী ব্রহ্মচারিণী হলেন নবদুর্গার (Nabadurga) অবিবাহিত রূপ। নবরাত্রির দ্বিতীয় দিনে দেবী ব্রহ্মচারিণীর ভোগে চিনি নিবেদন করতে হয়। ভক্তদের বিশ্বাস, এর ফলে দীর্ঘায়ুর আশীর্বাদ পাওয়া যায়।

    মাতা ব্রহ্মচারিণীর পৌরাণিক আখ্যান

    পৌরাণিক কাহিনি (Durga Puja 2025) অনুসারে, দেবী পার্বতী ভগবান শিবকে স্বামী হিসেবে পেতে ব্রহ্মচারিণী হয়ে কয়েক হাজার বছর ধরে কঠোর তপস্যা করেছিলেন। মায়ের এই তপস্যার কারণেই তাঁর নাম হয় দেবী ব্রহ্মচারিণী। কথিত আছে, সতী পরবর্তীকালে পর্বতরাজ হিমালয়ের কন্যা হিসেবে জন্মগ্রহণ করেন। তখন তাঁর নাম হয় পার্বতী বা হেমাবতী। পার্বতী ভগবান শিবকে তাঁর স্বামী হিসেবে গ্রহণ করতে চান। পুরাণ অনুসারে, তখন ব্রহ্মার মানসপুত্র নারদ তাঁকে কঠোর তপস্যা করার পরামর্শ দেন। নারদ মুনির কথা শুনে তিনি কঠোর তপস্যা করতে শুরু করেন। তপস্যার ফলে তিনি ভগবান শিবকে স্বামী হিসেবে পান পরবর্তীকালে।

    কীভাবে করবেন মাতা ব্রহ্মচারিণীর (Devi Brahmacharini) পুজো

    ১) নবরাত্রির (Durga Puja 2025) দ্বিতীয় দিনে সূর্যোদয়ের আগে ঘুম থেকে উঠুন।

    ২) স্নান করে পরিষ্কার কাপড় পরিধান করুন।

    ৩) নিয়ম অনুযায়ী, মা ব্রহ্মচারিণীর পুজোর আগে যথাযথভাবে কলস দেবতা এবং ভগবান গণেশের পুজো করুন।

    ৪) মা ব্রহ্মচারিণীর পুজো শুরু করুন। প্রথমে মাকে পঞ্চামৃত দিয়ে স্নান করান। তারপর মাকে ফুল, অক্ষত, কুমকুম, সিঁদুর দিয়ে সাজান।

    ৫) পান, সুপারি, মিষ্টি ইত্যাদি প্রদান করুন।

    ৬) মা ব্রহ্মচারিণীর (Devi Brahmacharini) ব্রতকথা পাঠ করুন।

    ৭) মায়ের আরতি করুন।

  • Durga Puja 2025: দেবী দুর্গা ও তাঁর সন্তানদের সঙ্গে থাকা বাহনগুলির পৌরাণিক তাৎপর্য কি জানেন?

    Durga Puja 2025: দেবী দুর্গা ও তাঁর সন্তানদের সঙ্গে থাকা বাহনগুলির পৌরাণিক তাৎপর্য কি জানেন?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: শরৎকালে প্রতি বছর মা দুর্গা (Durga Puja 2025) কৈলাস থেকে মর্তে বাপের বাড়িতে আসেন সন্তানদের সঙ্গে নিয়ে। মা দুর্গা এবং তাঁর সন্তানদের সঙ্গে আসেন বাহনগুলিও। ইঁদুর আসে গণেশের সঙ্গে, রাজহাঁস আসে মা সরস্বতীর সঙ্গে, পেঁচা আসে মা লক্ষ্মীর সঙ্গে, ময়ূর আসে কার্তিকের সঙ্গে এবং স্বয়ং মা দুর্গা আসেন সিংহের পিঠে চড়ে। বাহনগুলির পৌরাণিক কাহিনিতে (Hindu Mythology) যাওয়ার আগে বলা দরকার, ভারতীয় উপমহাদেশে প্রকৃতি পুজোর রীতি বৈদিক যুগ থেকেই ছিল। মাটি, অগ্নি, বায়ু, নদী, গাছ সবকিছুই পুজো করা হত ওই যুগে। একটি মন্ত্রে আছে-

    গঙ্গেচযমুনেচৈব গোদাবরীসরস্বতী।
    নর্মদে সিন্ধু কাবেরী জলস্মিনসন্নিদ্ধিম কুরু।।

    অর্থাৎ, ভারতীয় সভ্যতায় গাছপালা, নদনদীর সঙ্গে সঙ্গে জীবজন্তুও মানুষের দৈনন্দিন কাজে উপকারী বলেই গণ্য হয়। এই ধারণা থেকেই বাহন হিসেবে হয়তো তারাও পূজিত হয়। এবার আসা যাক পৌরাণিক কাহিনিগুলিতে।

    মা দুর্গার বাহন সিংহ (Durga Puja 2025)

    পুরাণ অনুযায়ী (Mythological Significance)-দেবী পার্বতী হাজার বছর ধরে তপস্যা করেছিলেন শিবকে তাঁর স্বামী হিসেবে পাওয়ার জন্য। তপস্যার কারণে দেবী অন্ধকারে মিশে যান। বিয়ের পর পার্বতীকে মহাদেব কালী বলে সম্বোধন করলে দেবী তৎক্ষণাৎ কৈলাস ত্যাগ করে ফের তপস্যায় মগ্ন হয়ে যান। তপস্যা রত দেবীকে শিকার করার ইচ্ছায় এক ক্ষুধার্ত সিংহ তাঁর দিকে আসতে শুরু করে। কিন্তু দেবীকে দেখে সেখানেই চুপ করে বসে যায় সে। সেই সময় বসে বসে সিংহ চিন্তা করতে থাকে, দেবী তপস্যা থেকে যখন উঠবেন, তখন তিনি খাবার হিসেবে গ্রহণ করবেন। এর মধ্যে বহু বছর কেটে যায়, কিন্তু সিংহ তার নিজের জায়গা থেকে নড়ে না। এদিকে দেবী পার্বতীর তপস্যা সম্পন্ন হওয়ার পর মহাদেব আবির্ভূত হলে পার্বতীকে গৌরবর্ণ বলে বর্ণনা করেন (Durga Puja 2025)। যে সিংহটি দেবীকে শিকার করতে এসেছিল, তাকেই বাহন হিসেবে গ্রহণ করেন দেবী। কারণ দেবীর জন্য অনেক বছর অপেক্ষা করেছিল সিংহ। এরপর পার্বতীর বাহনকে সিংহ বলে মনে করা হয়। আবার কালিকাপুরাণ অনুযায়ী, শ্রীহরি দেবীকে বহন করছেন। এই হরি শব্দের এক অর্থ সিংহ। আবার শ্রীশ্রীচণ্ডীতে উল্লেখ আছে গিরিরাজ হিমালয় দেবীকে সিংহ দান করেন। শিবপুরাণ বলে, ব্রহ্মা দুর্গাকে বাহনরূপে সিংহ দান করেছেন। সিংহ হলো শৌর্য, পরাক্রম, শক্তির প্রতীক। অসুরদের বিনাশকারী বাহন সিংহ।

    গণেশের বাহন ইঁদুর

    স্বর্গে দেবলোকের সভায় গান গেয়ে সকলের মনোরঞ্জন করতেন ক্রঞ্চ নামে এক গন্ধর্ব। একদিন বামদেব নামে এক ঋষি এসে উপস্থিত হন সেই সভায়। তিনি গান করতে থাকেন। সেই গান শুনে নিজের হাসি চাপতে পারেননি গন্ধর্ব ক্রঞ্চ। সেই হাসি দেখে ফেলেন বামদেব। সঙ্গে সঙ্গে ক্রোধান্বিত হয়ে পড়ে তিনি ক্রঞ্চকে অভিশাপ দেন। অভিশাপের ফলে ক্রঞ্চ ইঁদুর হয়ে যান। ঋষি অভিশাপ দেন, কোনও দিন আর গান গাইতে পারবেন না ক্রঞ্চ। ক্রঞ্চ নিজের ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চান। কিন্তু তাতে বিশেষ ফল হয়নি। তিনি ইঁদুর হয়ে যান এবং মর্ত্যে নেমে আসেন। তবে মুনি বলেছিলেন কোনও দিন যদি গণেশ তাঁকে বাহন করেন তা হলে মুক্তি মিলবে। মর্তলোকে তিনি যেখানে নেমেছিলেন, কাছেই ছিল পরাশর মুনির কুটির। ইঁদুর ক্রঞ্চ সেখানেই নিজের খাদ্যের সন্ধানে যেতে শুরু করেন। এদিকে ইঁদুরের উৎপাতে অতিষ্ট হয়ে ওঠেন কুটিরবাসীরা। অপর দিকে একদিন গণেশ সেই মুনির কুটিরে পৌঁছন। সেখানে জানতে পারেন ইঁদুরের কুকীর্তির কথা। তখন তাকে ধরতে উদ্যত হন গণেশ। অবশেষে ধরেও ফেলেন। কিন্তু ক্রঞ্চ নিজের পরিচয় দিয়ে সব কথা বলেন গণেশকে। বলেন, বামদেব বলেছিলেন যে স্বয়ং দুর্গা (Durga Puja 2025) পুত্র গণপতি যদি তাকে তাঁর বাহন করেন, তবেই ঘুচবে তাঁর দুঃখ। এ কথা শুনে ইঁদুরকেই তিনি নিজের বাহন হিসেবে স্বীকৃতি দেন।

    মা লক্ষ্মীর বাহন পেঁচা

    পৌরাণিক (Hindu Puranas) গল্প অনুযায়ী, যখন দেব-দেবীরা প্রাণীজগতের সৃষ্টি করেছিলেন তখন তাঁরা পৃথিবী ভ্রমণে আসেন। সেই সময় পশু ও পাখিরা দেবতাদের ধন্যবাদ জানায়। পশু ও পাখিরা বলতে থাকে, আপনারা যেহেতু আমাদের তৈরি করেছেন তাই আপনাদের বাহন হয়ে আমরা পৃথিবীতে থাকব। সেই সময় দেবতারা নিজেদের বাহন পছন্দ করে নেন। যখন দুর্গা কন্যা (Durga Puja 2025) লক্ষ্মীর নিজের বাহন বেছে নেওয়ার সময় আসে, তখন তিনি বলেন আমি যেহেতু রাতে পৃথিবীতে আসি তাই রাতে যে প্রাণী দেখতে পায় সেই হবে আমার বাহন। এরপর পেঁচা হয়ে ওঠে দেবী লক্ষ্মীর বাহন।

    কার্তিকের বাহন ময়ূর

    তারকাসুরকে বধ করেছিলেন দেবসেনাপতি কার্তিক। পৌরাণিক কাহিনী মতে, মৃত্যুর আগে তারকাসুর কার্তিকের বাহন হিসেবে থাকতে চেয়েছিল। ময়ূরের ছদ্মবেশে কার্তিককে আক্রমণও করেছিল যুদ্ধ ক্ষেত্রে তারকাসুর। কথিত আছে ওই ময়ূরটিই হল দুর্গা (Durga Puja 2024) পুত্র কার্তিকের বাহন।

    সরস্বতীর বাহন রাজহাঁস

    হাঁস নাকি জল, স্থল, অন্তরীক্ষে থাকতে পারে। জ্ঞান ও বিদ্যার দেবীকেও এই তিনটি জায়গায় থাকতে হয় জ্ঞান ও বিদ্যাদানের জন্য। তাই বাহন হিসেবে হাঁসকেই বেছে নিয়েছেন দেবী দুর্গার (Durga Puja 2025) কন্যা সরস্বতী। একই ভাবে হংস শব্দের ‘হং’ এবং ‘স’ এই দুটি শব্দের মধ্যে জাগতিক শক্তি এবং শাক্তির আধারের মহাজ্ঞান গ্রন্থিত হয়ে রয়েছে। তাই হংস বিদ্যাদেবীর বাহন হয়ে মহাপ্রজ্ঞার প্রতীক।

  • Durga Puja 2025: নবদুর্গার প্রথম রূপ, নবরাত্রির প্রথম দিনেই পূজিত মাতা শৈলপুত্রী, জানুন মাহাত্ম্য

    Durga Puja 2025: নবদুর্গার প্রথম রূপ, নবরাত্রির প্রথম দিনেই পূজিত মাতা শৈলপুত্রী, জানুন মাহাত্ম্য

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মহালয়ার অমাবস্যা তিথিতে পিতৃপক্ষের অবসান ও দেবীপক্ষের সূচনা হয়। পরের দিন, অর্থাৎ শুক্ল প্রতিপদ তিথি থেকে শুরু হয় নবরাত্রি (Navaratri 2025)। যা চলে দুর্গা নবমী পর্যন্ত। এই নবরাত্রিতে দেবী দুর্গা নয়টি ভিন্ন রূপে পূজিতা হন। নবদুর্গার (Nabadurga) এই নয়টি রূপ হল— দেবী শৈলপুত্রী (Devi Shailaputri), দেবী ব্রহ্মচারিণী, দেবী চন্দ্রঘণ্টা, দেবী কুষ্মাণ্ডা, দেবী স্কন্দমাতা, দেবী কাত্যায়নী, দেবী কালরাত্রি, দেবী মহাগৌরী এবং দেবী সিদ্ধিদাত্রী।

    নবরাত্রির প্রথম দিনেই আরাধনা করা হয় মাতা শৈলপুত্রীর (Devi Shailaputri)। নবদুর্গার (Durga Puja 2025) প্রথম রূপ মানা হয় তাঁকে। শৈলপুত্রী নামকরণের কারণ? শাস্ত্র বিশেষজ্ঞরা বলেন, পর্বতরাজ হিমালয়ের ঘরে কন্যা রূপে জন্ম নেওয়ার কারণে তাঁর নাম রাখা হয়েছিল শৈলপুত্রী। শৈলপুত্রী একটি সংস্কৃত শব্দ, যার আক্ষরিক অর্থ পর্বত কন্যা। শৈল মানে পর্বত আর পুত্রী মানে কন্যা।

    দেবী সতী ও দক্ষযজ্ঞের কাহিনি

    পৌরাণিক কাহিনি অনুসারে, একবার রাজা দক্ষ যজ্ঞ করছিলেন। সমস্ত দেবতাদের যজ্ঞ গ্রহণ করার জন্য ডাকা হলেও শিবকে সেই যজ্ঞে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। অন্যদিকে, দক্ষকন্যা সতী শুনলেন, তাঁর বাবা একটি বিশাল যজ্ঞের অনুষ্ঠান করছেন। একথা শোনা মাত্রই তিনি ওই অনুষ্ঠানে যেতে চাইলেন (Durga Puja 2025)। এরপর দেবাদিদেব মহাদেবকে নিজের ইচ্ছার কথা বললেন সতী। প্রত্যুত্তরে শিব যজ্ঞের অনুষ্ঠানে তাঁকে আমন্ত্রণ না জানানোর কথা বলেন। সতীকে সেখানে যেতেও নিষেধ করেন শিব। তবে দেবাদিদেব মহাদেবের কথা মানতে চাননি সতী। বাবার কাছে যাওয়ার তীব্র আগ্রহ দেখে ভগবান মহাদেব তাঁকে সেখানে যাওয়ার অনুমতি দেন।

    পর্বতরাজ হিমালয়ের কন্যা রূপে জন্ম নেন সতী

    সতী তাঁর বাবার বাড়িতে পৌঁছে দেখলেন যে কেউ তাঁর সঙ্গে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার সঙ্গে কথা বলছেন না। সব মানুষ মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। শুধু তাঁর মা তাঁকে স্নেহের সঙ্গে জড়িয়ে ধরেছিলেন। বোনের কথায় ছিল কটাক্ষ ও উপহাস। প্রতি মুহূর্তে শিবকে নিয়ে উপহাসও করা হতে থাকে (Durga Puja 2025)। এই সব দেখে সতী খুবই শোকাহত হয়ে পড়েন। তিনি সঙ্গে সঙ্গে সেই যজ্ঞের মধ্যে নিজেকে সমর্পণ করেন এবং পুড়ে ছাই হয়ে যান। সেই দুঃসংবাদ মহাদেব শোনামাত্রই দক্ষের যজ্ঞ পুরোপুরি ধ্বংস করে দেন। ভক্তদের বিশ্বাস, পরবর্তী জীবনে শৈলরাজ হিমালয়ের কন্যা হিসেবে জন্মগ্রহণ করেছিলেন সতী। তাই তিনি শৈলপুত্রী নামে পরিচিত। পার্বতী, হেমাবতীও তাঁর নাম।

    মাতা শৈলপুত্রীর পুজোর পদ্ধতি (Durga Puja 2025)

    শৈলপুত্রী রূপকে অত্যন্ত কোমল হৃদয় এবং দয়ালু প্রকৃতির বলে মনে করেন ভক্তরা। তাঁর পুজো করার জন্য নবরাত্রির প্রথম দিনে ব্রাহ্মমুহূর্তে উঠে স্নানকার্য সেরে, পরিষ্কার বস্ত্র পরিধান করুন। তারপর প্রথম পুজো করে গণপতিকে আবাহন করুন। শৈলপুত্রীকে (Devi Shailaputri) ষোড়শপচার পদ্ধতিতে পুজো করা হয়। পরে মায়ের পবিত্র চরণে কুমকুম নিবেদন করুন।

  • Durga Puja 2025: নামকরণ করেছিলেন প্রজাপতি ব্রহ্মা, নবরাত্রিতে দেবী দুর্গা পুজিত হন নয়টি ভিন্ন রূপে

    Durga Puja 2025: নামকরণ করেছিলেন প্রজাপতি ব্রহ্মা, নবরাত্রিতে দেবী দুর্গা পুজিত হন নয়টি ভিন্ন রূপে

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: রামায়ণে আছে, ভগবান শ্রীরামচন্দ্র রাবণকে বধ করার জন্য দেবী দুর্গার (Durga Puja 2025) অকাল বোধন করেছিলেন। এই নিয়ম মেনে আশ্বিন মাসে শারদীয়া দুর্গাপুজো করে থাকে গোটা বাঙালি সমাজ। কিন্তু দুর্গাপুজোর আসল সময় হল বসন্ত ঋতুতেই, যা দেবী বাসন্তীর পুজো হিসেবে পরিচিত। বাংলায় দুই পুজোই হয়ে থাকে, কিন্তু শরৎকালের পুজো হল প্রধান এবং বড় পুজো। নবরাত্রির সঙ্গে দেবী দশভূজার একটি বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে। তিথি-নক্ষত্র মিলিয়ে একই রীতিনীতির মধ্যেই পুজো করা হয়ে থাকে।

    কবে পালিত হয় (Durga Puja 2025)?

    বসন্ত ঋতুতে চৈত্র মাসে যে নবরাত্রি (Navratri) পালন করা হয়, তাতে দেবী দুর্গাকে (Goddess Durga) নয়টি অবতারে পুজো করা হয়। শরৎকালের পুজোও হয় একই ভাবে। আশ্বিন মাসের শুক্ল পক্ষের প্রতিপদ থেকে নবমী তিথি পর্যন্ত ন’দিন ধরে দেবী দুর্গার ন’টি রূপের পুজো করা হয়। শরতের এই নবরাত্রিকে শারদীয় নবরাত্রিও বলা হয়। দুর্গার এই ন’টি রূপের নামকরণ করেছিলেন প্রজাপতি ব্রহ্মা। নবরাত্রির এক একটি তিথিতে, অর্থাৎ প্রতিপদ থেকে নবমী পর্যন্ত, দেবী দুর্গা এক এক রূপে পূজিতা হন।

    দেবীর নয় রূপ

    দেবী দুর্গার ন’টি অবতার হল, দেবী শৈলপুত্রী, দেবী ব্রহ্মচারিণী, দেবী চন্দ্রঘণ্টা, দেবী কুষ্মাণ্ডা, দেবী স্কন্দমাতা, দেবী কাত্যায়নী, দেবী কালরাত্রি, দেবী মহাগৌরী, দেবী সিদ্ধিদাত্রী। তিথি মেনে টানা নয় দিন ধরে পুজো করে মায়ের কাছে বর চেয়ে অশুভ শক্তির পরাজয় এবং শুভ শক্তির জাগরণের জন্য কামনা করা হয়। সংসারের শ্রীবৃদ্ধি, অর্থধন লাভ, সন্তানদের সাফল্য, পারবারিক সুখ সমৃদ্ধি এবং নারী শক্তির জাগরণের আশায় ভক্তরা এই নবরূপে দেবী দুর্গা মায়ের পুজো করা হয়ে থাকে। এ বছর, দেবী দুর্গা (Durga Puja 2025) মা গজে চড়ে পরিবারের সঙ্গে মর্ত্যে বাপের বাড়িতে আসছেন। নবরাত্রির পর আবার দোলায় করে কৈলাসে পাড়ি দেন মা দুর্গা।

    দেবী শৈলপুত্রী

    দেবী শৈলপুত্রী হলেন হিমালয়ের কন্যা। তাঁর স্বামী হলেন ভগবান শিব। তাঁর দুই সন্তান কার্তিক এবং গণেশ। দক্ষরাজের কন্যা হলেন সতী। সতীর অপর নাম শৈলপুত্রী। এই দেবীর (Durga Puja 2025) পুজো করা হয় নবরাত্রির প্রথম দিনে।

    দেবী ব্রহ্মচারিণী

    দেবী ব্রহ্মচারিণী হলেন মা দুর্গার (Goddess Durga) দ্বিতীয় অবতার। তাঁর পুজো করা হয় নবরাত্রির দ্বিতীয় দিনে। দেবী দুর্গার তপস্যার প্রতীক হলেন দেবী ব্রহ্মচারিণী। তিনি ভগবান ব্রহ্মার মার্গের পথে সাধনা করে সিদ্ধিলাভ করে ছিলেন। এই দেবীর সাধানায় পরিবারে মঙ্গলকামনা এবং বিদ্যা-বুদ্ধির প্রাপ্তি হয়।

    দেবী চন্দ্রঘণ্টা

    দেবী চন্দ্রঘণ্টা হলেন দেবী দুর্গার (Goddess Durga) তৃতীয় রূপ। বাঘের উপর উপবিষ্ট থাকেন স্বয়ং দেবী। অসুর বিনাশিনী দেবী। তাঁর দশ হাতে পদ্ম, গদা, ত্রিশূল, তলোয়ার, তীরধনুক ইত্যাদি দশ অস্ত্রে সুসজ্জিত থাকে। দেবীর মস্তকে অর্ধচন্দ্র অবস্থান করে। তাই দেবীকে চন্দ্রঘণ্টা নামে ডাকা হয়। এই দেবী অভয়ার প্রতীক।

    দেবী কুষ্মাণ্ডা

    দেবী কুষ্মাণ্ডা হলেন চতুর্থ অবতার। এই দেবী (Durga Puja 2025) স্বয়ং ব্রহ্মাণ্ডকে সৃষ্টি করেছেন। তাঁর অনাহত চক্রে মানুষকে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী করেন। এই দেবীর আরাধনায় পারিবার সুস্থ এবং রোগমুক্ত থাকে।

    দেবী স্কন্দমাতা

    দেবী স্কন্ধ হলেন পঞ্চম অবতার। তিনি ভক্তের কাছে মুক্তি এবং শক্তির প্রতীক। তিনি এই রূপে সিংহবাহনা। ত্রিনয়নী এবং চারটি মস্তকে সজ্জিত। স্কন্দের জননী হওয়ায় তাঁকে স্কন্দমাতা বলা হয়। এই দেবীর পুজোতে অশুভ শক্তির বিনাশ হয়।

    দেবী কাত্যায়নী

    দেবী কাত্যায়নী হলেন মহিষাসুরমর্দিনী (Durga Puja 2025)। তিনি হলেন মায়ের ষষ্ঠ অবতার। সকল অশুভ শক্তিকে পরাজয় করে অসুরদের বিনাশ করে থাকেন। বৈদিক যুগে কাত্যায়ন নামে এক ঋষি ছিলেন। সেই সূত্রেই এই নামকরণ হয়েছে কাত্যায়নী।

    দেবী কালরাত্রি

    দেবী কালরাত্রি হলেন দুর্গার (Goddess Durga) সপ্তম অবতার। সব রকম রাক্ষস এবং ভূতেদের বিনাশ করে থাকেন এই দেবী। অসুর বিনাশিনী উগ্ররূপিণী রূপ অশুভ শক্তিকে স্বমূলে উৎখাত করেন।

    দেবী মহাগৌরী

    মহাগৌরী হলেন দেবীর অষ্টম অবতার। তিনি হলেন ভক্তের সমৃদ্ধি এবং সুখ প্রদানের দেবী। অর্থ সমৃদ্ধি এবং কল্যাণময় বার্তা আসে।

    দেবী সিদ্ধিদাত্রী

    সিদ্ধিদাত্রী (Durga Puja 2025) দেবী হলেন মহাসিদ্ধি প্রদানের দেবী। নবরাত্রিতে (Navratri) দেবী দুর্গার নবম অবতার এবং ভগবান শিবের পত্নী। তাঁকে সিদ্ধিদাত্রীকে বলা হয় শিবের অর্ধাঙ্গিনী হিসেবে।

  • Durga Puja 2024: যৌনপল্লির মাটি ছাড়া উমার মূর্তি তৈরির রীতি নেই! কেন মানা হয় এই প্রথা?

    Durga Puja 2024: যৌনপল্লির মাটি ছাড়া উমার মূর্তি তৈরির রীতি নেই! কেন মানা হয় এই প্রথা?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পতিতাপল্লিকে নিষিদ্ধপল্লি বলা হয়। যৌনপল্লির রাস্তা দিয়ে হাঁটাও অনেকের কাছে অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। অথচ কী আশ্চর্য্য নিয়ম! পতিতাপল্লির মাটি ছাড়া অসম্পূর্ণ বাঙালির সব চেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপুজো (Durga Puja 2024)। যৌনপল্লির মাটি ছাড়া উমার মূর্তি (Durga Idol) তৈরির রীতি নেই। যুগ যুগ ধরেই চলে আসছে এই নিয়ম। জানা যায়, এক সময় ব্রাহ্মণরা নিজে গিয়ে মন্ত্রপাঠ করে মাতৃ নির্মাণের জন্য নিয়ে আসতেন পতিতাপল্লির মাটি। কিন্তু কেন এই প্রথা? এই প্রথার পিছনে নানা যুক্তি রয়েছে শাস্ত্রবিদদের। অনেকেই মনে করেন, একবার কোনও পুরুষ পতিতালয়ে গেলে যৌনকর্মীর বাড়ির দরজায় নিজের সারা জীবনের সঞ্চিত সব পুণ্য বিসর্জন দিয়ে আসেন। শাস্ত্রমতে, সেই কারণেই যৌনপল্লির মাটি হয়ে ওঠে অত্য়ন্ত পবিত্র। আর সেই পবিত্র মাটি দিয়েই গড়া হয় উমাকে।

    মহামায়া ৯ রূপে পূজিত হন এই বিশ্বে (Durga Puja 2024)

    আবার হিন্দু শাস্ত্র অনুযায়ী, অসুরদলনী দুর্গাকে (Durga Puja 2024) আদ্যাশক্তি মহামায়ার আরেক রূপ বলে মনে করা হয়। মহামায়া ৯ রূপে পূজিত হন এই বিশ্বে। এই ৯ রূপ হল নর্তকী, কাপালিকা, ধোপানী, নাপিতানী, ব্রাহ্মণী, শূদ্রাণী, গোয়ালিনী, মালিনী ও পতিতা। মহামায়ার এই ৯ রূপ সমাজের নানা জাত, বর্ণের প্রতীক। ঠিকঠাক ভাবে পাঠক যদি এই ৯ রূপ লক্ষ্য করেন তাহলে দেখবেন, উচ্চ থেকে নিম্ন-সব বর্ণই অন্তর্ভুক্ত রয়েছে এই ৯ রূপে। এঁদের মধ্যে মায়ের নবম রূপ ‘পতিতা’, যৌনপল্লির মহিলাদেরই প্রতীক (Durga Idol)। এই কারণেই এমন প্রথার শুরু বলে মনে করেন অনেকে।

    সমগ্র নারীশক্তির প্রতিনিধি দেবী দুর্গা 

    আসলে সমগ্র নারীশক্তির প্রতিনিধি দেবী দুর্গা (Durga Puja 2024। জাতি, বর্ণ, শ্রেণি নির্বিশেষে হিন্দু শক্তির প্রতীক তিনি। যিনি সমাজের অসুর দমন করেন, তিনিই দেবী দুর্গা। তাই অনেকের মতে সকল স্তরের নারী শক্তিকে সম্মান জানাতেই এই প্রথার শুরু হয়েছিল। 

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

LinkedIn
Share