Tag: Hindu Mythology

Hindu Mythology

  • Kartik Puja: শিব-পার্বতীর পুত্র কীভাবে হলেন দেব সেনাপতি কার্তিক, জেনে নিন সেই গল্প

    Kartik Puja: শিব-পার্বতীর পুত্র কীভাবে হলেন দেব সেনাপতি কার্তিক, জেনে নিন সেই গল্প

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: নবদম্পতির বাড়ির সামনে কার্তিক (Kartik Puja) রেখে এসেছে, এমন বন্ধু আমাদের পরিচিত মহলে নিশ্চয়ই রয়েছে। স্বয়ং মহাদেব-পুত্র তাঁদের বাড়িতে এসেছেন বলে কথা! গৃহকর্তা বা কর্ত্রীকে তাই পরপর চার বছর এই পুজো করতে হয়। কিন্তু বাড়ির সামনে কার্তিক ঠাকুরই বা কেন রাখা হয়? নিছক মজার উদ্দেশ্যেই নবদম্পতির বাড়ির সামনে কার্তিক ঠাকুর রাখা হয় না। এরমধ্যে লোকাচার রয়েছে। কী সেই লোকাচার? নবদম্পতির কোলে যেন কার্তিকের মতো পুত্র আসে। হঠাৎ কার্তিকের মতো পুত্রের আকাঙ্খা কেন? এর জন্য আমাদের জানতে হবে একটি পৌরাণিক আখ্যান।

    কার্তিকের পৌরাণিক কাহিনী

    পুরাণ অনুযায়ী, দেবাদিদেব মহাদেবের পুত্র হলেন দেব সেনাপতি কার্তিক (Kartik Puja)। তাঁর অপর নাম স্কন্দ। স্কন্দমাতা মানে হল কার্তিকের মাতা। দেবী পার্বতীর এই রূপেরই পুজো করা হয় নবরাত্রির পঞ্চমীর দিন। পৌরাণিক আখ্যান অনুযায়ী, বজ্রাঙ্গ নামে এক অসুর রাজা ছিলেন। তিনি ছিলেন দিতির পুত্র। দেবতাদের রাজা ইন্দ্রকে বজ্রাঙ্গ সিংহাসনচ্যুত করে, বন্দি করেন। দেবতাদের প্রতি বজ্রাঙ্গের এই রোষ আসলে ছিল তাঁর প্রতিশোধ। কারণ ইতিপূর্বে দিতির অসংখ্য পুত্রকে মানে বজ্রাঙ্গের নিজ ভাইদের দেবতারা হত্যা করেছিল। বজ্রাঙ্গের হাতে বন্দি ইন্দ্রকে মুক্ত করতে আসেন ব্রহ্মা এবং কাশ্যপ মুনি। কাশ্যপ মুনি ছিলেন বজ্রাঙ্গের পিতা, অর্থাৎ দিতির স্বামী। ব্রহ্মা এবং কাশ্যপ মুনির অনুরোধে বজ্রাঙ্গ তখনকার মতো ইন্দ্রকে মুক্ত করেন। 

    দৈত্য হয়েও এমন দয়ার ভাব বজ্রাঙ্গের মধ্যে দেখতে পেয়ে ব্রহ্মা তাঁকে বরদান করতে ইচ্ছাপ্রকাশ করলেন। বজ্রাঙ্গ তখন তপস্বী হওয়ার বর প্রার্থনা করলেন এবং বাকি জীবন যেন তিনি ধর্ম পথে চলতে পারেন সেই আশীর্বাদ ব্রহ্মার কাছে চাইলেন। ব্রহ্মা তাঁর মানস কন্যা বরাঙ্গীর সঙ্গে বজ্রাঙ্গের বিবাহ দিলেন। বজ্রাঙ্গ এবং বরাঙ্গী বনের মধ্যে কুটির বানিয়ে ধর্ম কর্ম করতে লাগলেন। বজ্রাঙ্গ তপস্যায় রত থাকতেন এবং বরাঙ্গী গৃহ কর্ম সম্পাদন করতেন।

    একদিন দেবরাজ ইন্দ্র ওই কুটিরের পাশ দিয়ে যেতে যেতে বরাঙ্গীকে দেখতে পেয়ে পুরনো অপমানের বদলা নিতে চাইলেন। কখনও বানর সেজে, কখনও ভেড়া বা কখনও সাপ হয়ে কুটির লন্ডভন্ড করতে লাগলেন। ক্রন্দনরত অবস্থায় বরাঙ্গী তাঁর স্বামী বজ্রাঙ্গকে এসব বিষয়ে বললে, বজ্রাঙ্গ ব্রহ্মাকে স্মরণ করলেন। ব্রহ্মা প্রকট হয়ে বর দিতে চাইলে বজ্রাঙ্গ বললেন, “আমাকে এমন পুত্র দিন, যে দেবতাদের উপর অত্যাচার করতে সমর্থ হবে।”‌ ব্রহ্মা বজ্রাঙ্গের মনোমত বরদান করলেন। বরাঙ্গীর গর্ভে জন্ম হল তারক নামের অসুরের‌।

    পরবর্তীতে তারকাসুরের উপর ব্রহ্মার বরদান ছিল যে- “একমাত্র শিবের বালক পুত্র ছাড়া, কারও হাতে তিনি হত হবেন না।” ব্রহ্মার বরদানে অজেয়, অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠেন তারকাসুর। কারণ তিনি জানতেন শিব কখনও বিবাহ করবেন না এবং ত্রিভুবনে ব্রহ্মার বরদানে তাঁকে হত্যা করতে পারে এমন ক্ষমতা কোনও দেবতা, মানুষ বা জীবজন্তুর নেই। তারকাসুর দেবলোক নিজের দখলে আনেন। দেবরাজ ইন্দ্র সিংহাসনচ্যুত হলেন। বিতাড়িত দেবতারা বুঝতে পারলেন শিবের বিয়ে দিতে পারলে তবে তাঁর পুত্রই তারকাসুরকে বধ করতে পারবেন।

    আয়োজন শুরু হল শিব-পার্বতীর বিবাহের। সেখানেও তারকাসুরের আক্রমণ হল। সেই সময় মাতা চন্দ্রঘন্টার রূপ ধারণ করে পার্বতী দেবী অসুরদের বিতাড়িত করেন। এরপর সুসম্পন্ন হয় শিব-পার্বতীর বিবাহ। জন্ম হয় কার্তিকের (Kartik Puja)। মাতা পার্বতী তখন হন স্কন্দমাতা অর্থাৎ কার্তিক জননী। দৈববাণী পেয়ে দেবরাজ ইন্দ্র কার্তিককে সেনাপতি নিযুক্ত করলেন। এক প্রবল যুদ্ধে কার্তিকের হাতে তারকাসুর হত হলেন। দেবতারা তাঁদের হৃত স্বর্গরাজ্য পুনরায় নিজেদের দখলে আনলেন। এমনটাই লেখা রয়েছে “স্কন্দপুরাণে”। শিব-পার্বতীর পুত্রের জন্মই হয়েছিল তারকাসুরের বধ এবং স্বর্গ রাজ্যে দেবতাদের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার জন্য। তাই প্রতিটি সন্তান যেন ‘কার্তিক’ এর মতো হয় এই কামনায় বাড়ি বাড়ি পুজো হয় কার্তিকের। 

    আরও পড়ুন: মহা পঞ্চমীর মাহাত্ম্য: জানুন তারকাসুর বধ ও স্কন্দমাতার আখ্যান

    কার্তিকের প্রণাম মন্ত্র 

    দেব সেনাপতি কার্তিকের প্রণাম মন্ত্রটি হল –
     
    ওঁ কার্ত্তিকের মহাভাগ দৈত্যদর্পনিসূদন।
    প্রণোতোহং মহাবাহো নমস্তে শিখিবাহন।
    রুদ্রপুত্র নমস্ত্তভ্যং শক্তিহস্ত বরপ্রদ।
    ষান্মাতুর মহাভাগ তারকান্তকর প্রভো।
    মহাতপস্বী ভগবান্ পিতুর্মাতুঃ প্রিয় সদা।
    দেবানাং যজ্ঞরক্ষার্থং জাতস্ত্বং গিরিশিখরে।
    শৈলাত্মজায়াং ভবতে তুভ্যং নিত্যং নমো নমঃ।
     
    অনুবাদ: হে মহাভাগ, দৈত্যদলনকারী কার্তিক দেব তোমায় প্রণাম করি। হে মহাবাহু, ময়ূর বাহন, তোমাকে নমস্কার। হে রুদ্রের (শিব) পুত্র, শক্তি নামক অস্ত্র তোমার হাতে। তুমি বর প্রদান কর। কৃত্তিকা তোমার ধাত্রীমাতা। জনক-জননী প্রিয় হে মহাভাগ, হে ভগবান, তারকাসুর বিনাশক, হে মহাতপস্বী প্রভু তোমাকে প্রণাম। দেবতাদের যজ্ঞ রক্ষার জন্য পর্বতের চূড়ায় তুমি জন্মগ্রহণ করেছ। হে পার্বতী দেবীর পুত্র তোমাকে সতত প্রণাম করি।

    বাংলায় কার্তিক পুজো বেশ জনপ্রিয়

    বাংলায় কার্তিক পুজো (Kartik Puja) প্রায় সর্বত্রই হয়, এর মধ্যে হুগলির বাঁশবেড়িয়া এবং পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার কার্তিক পুজো  ব্যাপক জনপ্রিয়। এই দুই জায়গায় কার্তিক পুজোকে কেন্দ্র করে উৎসবে মাতেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। সুসজ্জিত আলোর মালা, মণ্ডপসজ্জার কারুকার্য, বিভিন্ন হিন্দু দেব-দেবীদের বিশালাকার প্রতিমার সঙ্গে থাকে নানা রকমের বাজনা।

  • Ratanti Kali Puja: কেন হয় রটন্তী কালীপুজো? কী বা তার ইতিহাস?

    Ratanti Kali Puja: কেন হয় রটন্তী কালীপুজো? কী বা তার ইতিহাস?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: হিন্দুধর্মে মা কালীর আরাধনা সর্বজনবিদিত। বিভিন্ন তিথিতে দেবীর বিভিন্ন রূপের পুজো করা হয়। মাঘ মাসের কৃষ্ণ চতুর্দশীতে রটন্তী কালীপুজো হয়।

    কথিত আছে, শ্রীরাধা বনে শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে লীলা করতেন বলে তাঁর শাশুড়ি জটিলা এবং ননদিনী কূটিলা শ্রীরাধার নামে কলঙ্ক রটিয়ে ছিলেন এবং তা প্রমাণ করার জন্য একদিন গোপনে তারা আয়ান ঘোষকে সঙ্গে নিয়ে শ্রীরাধার পিছু নেন। আয়ান ঘোষের আরাধ্যা দেবী ছিলেন কালী। 

    অন্তর্যামী শ্রীকৃষ্ণ জটিলা-কূটিলার গোপন অভিপ্রায় জানতে পেরে স্বয়ং কালীরূপ ধারণ করেছিলেন। শ্রীরাধাও কালীরূপী শ্রীকৃষ্ণকে কদম্ব বৃক্ষের মূলে ফল, ফুল দিয়ে পুজো করেছিলেন। এদৃশ্য দেখে জটিলা, কূটিলা ও আয়ান ঘোষের ভূল ভাঙে এবং শ্রীরাধা যে স্বয়ং আদ্যাশক্তি তা বুঝতে পেরেছিলেন। এই ঘটনাটি স্মরণ করেই ভক্তজন রটন্তী কালীপুজো করে থাকেন।

    শাস্ত্রমতে আবার শোনা যায়, যখন শ্রীকৃষ্ণের প্রেমলীলায় রাধা মত্ত ছিলেন, সেই সময়ে একদিন দুপুরে গোপীনিরা তাঁর বাঁশির আওয়াজ শুনে চমকে উঠেছিলেন। গোপিনীরা বনের দিকে ছুটে গিয়ে দেখলেন সামনে ইষ্টমূর্তি। শ্রীরাধাই যে স্বয়ং আদ্যাশক্তি তা সেদিন বুঝতে পেরেছিলেন তাঁরা। সেই দিনকে স্মরণ করেই বিশেষ তিথিতে হয় রটন্তী কালীপুজো।

    রটন্তী’ শব্দটি এসেছে ‘রটনা’ শব্দ থেকে। যার অর্থ প্রচার হওয়া। মনে করা হয়, এই বিশেষ দিনেই দেবীর মহিমা চতুর্দিকে রটে যায়। মুক্তকেশী মায়ের মহিমা এই তিথিতেই সর্বস্তরে রটিত হয়ে থাকে। আবার লোক কথা অনুসারে শোনা যায়, এদিনই দেবী ছিন্নমস্তার আবির্ভাব হয়েছিল। দেবী পার্বতী তাঁর সহচরীদের খিদে মেটানোর জন্যে নিজ মুণ্ডুচ্ছেদ করে ত্রিধারায় রক্তবারি প্রকট করেছিলেন।

     

LinkedIn
Share