Tag: ICC

ICC

  • PM Modi Meets Indian Cricketers: প্রধানমন্ত্রীই অনুপ্রেরণা! জানালেন হরমনরা,ফিট ইন্ডিয়া মুভমেন্টে এগিয়ে আসার আহ্বান মোদির

    PM Modi Meets Indian Cricketers: প্রধানমন্ত্রীই অনুপ্রেরণা! জানালেন হরমনরা,ফিট ইন্ডিয়া মুভমেন্টে এগিয়ে আসার আহ্বান মোদির

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: নারীশক্তির দাপটে বিশ্বমঞ্চে গর্বিত হয়েছে ভারত। প্রথমবার মহিলাদের বিশ্বকাপ এসেছে দেশে। ইতিহাস গড়া হরমনপ্রীত কৌরের ব্রিগেডকে এবার সংবর্ধনা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বললেন, ভারকীয় মহিলা ক্রিকেট দলের এই সাফল্য দেশের প্রতিটি মেয়েকে উজ্জবীতি করবে। নতুন প্রেরণা জোগাবে। ফিট ইন্ডিয়া মুভমেন্টে মেয়েদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী মোদি। বুধবার লোক কল্যাণ মার্গে প্রধানমন্ত্রী তাঁর বাসভবনে ভারতের মহিলা বিশ্বকাপ জয়ী দলের ক্রিকেটারদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তাঁদের আপ্যায়ন করেন।

    স্মৃতিমেদুর হয়ে পড়েন হরমনপ্রীত

    প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দলকে জয়ের জন্য অভিনন্দন জানান। তিনি বিশ্বকাপে ভারতীয় দলের লাগাতার তিনটি পরাজয় এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রোলিংয়ের শিকার হওয়ার পরে টুর্নামেন্টে তাদের দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তনের প্রশংসা করেন। উল্লেখ্য, ভারতীয় দল লিগ পর্যায়ে দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে গিয়েছিল। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে অধিনায়ক হরমনপ্রীত জিজ্ঞেস করেন যে, তিনি কীভাবে সবসময় বর্তমানে থাকেন। প্রধানমন্ত্রী মোদি জানান যে, এটি তাঁর জীবনের একটি অংশ হয়ে গিয়েছে, অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ২০২১ সালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে হারলিন দেওলের ক্যাচটির কথাও স্মরণ করেন, যা নিয়ে তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্টও করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎপর্বে স্মৃতিমেদুর হয়ে পড়েন হরমনপ্রীত। তাঁর মনে পড়ে গিয়েছিল আট বছর আগের কথা। ২০১৭ সালে বিশ্বকাপের ফাইনালে মাত্র ৯ রানে হারের পরও তাঁরা প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে দেখা করেছিলেন। তবে সেবার ট্রফি ছাড়াই। এবার যেন সব আক্ষেপ মেটালেন ভারতীয় ক্রিকেটারেরা।

    প্রধানমন্ত্রী মোদি তাঁদের অনুপ্রেরণা

    স্মৃতি মন্ধানা বলেন যে, প্রধানমন্ত্রী মোদি তাঁদের অনুপ্রাণিত করেছেন এবং তিনি সকলের জন্য অনুপ্রেরণা ছিলেন। তিনি জানান যে, কীভাবে আজ মেয়েরা প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর কারণে ভাল পারফর্ম করছে। দীপ্তি শর্মা বলেন যে, তিনি প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে দেখা করার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। দীপ্তি টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী মোদি হাসিমুখে দীপ্তির ইনস্টাগ্রামে লেখা ‘জয় শ্রী রাম’ এবং তাঁর হাতে থাকা ভগবান হনুমানের উল্কির কথাও উল্লেখ করেন। দীপ্তি বলেন, “ওই উল্কি ও বিশ্বাসই আমাকে শক্তি জোগায়।”

    ‘ফিট ইন্ডিয়া’ আন্দোলনের বার্তা

    গত বছর ভারতের পুরুষদের দল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতে দেশে ফিরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। তাঁদের পরনে ছিল ভারতের জার্সি। তবে হরমনপ্রীতেরা জার্সির বদলে ফরম্যাল পোশাকে গিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে বেশ কিছু ক্ষণ ছিলেন হরমনপ্রীতেরা। মোদির হাতে বিশ্বকাপের ট্রফি তুলে দেন তাঁরা। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছবিও তোলেন। সকল ক্রিকেটারের সই করা একটি জার্সিও প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন হরমনপ্রীত। সেই জার্সির নম্বর ‘১’। তাতে লেখা রয়েছে ‘নমো’। সব শেষে প্রধানমন্ত্রী মোদি খেলোয়াড়দের ‘ফিট ইন্ডিয়া’ আন্দোলনের বার্তা দেশজুড়ে ছড়িয়ে দিতে আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “আজকের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে স্থূলতা বাড়ছে। তাই শরীরচর্চা ও সুস্থ থাকার বার্তা প্রতিটি স্কুলে, প্রতিটি মেয়ের কাছে পৌঁছে দিতে হবে।”

  • ICC Women’s World Cup: ভারতীয় মহিলা ক্রিকেটের উন্নতিতে সদা সক্রিয়, জানেন কে এই ব্যক্তি?

    ICC Women’s World Cup: ভারতীয় মহিলা ক্রিকেটের উন্নতিতে সদা সক্রিয়, জানেন কে এই ব্যক্তি?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দীর্ঘদিন ধরে ভারতীয় মেয়েদের ক্রিকেটে সাফল্য ছিল ‘প্রায়’-এর গল্প। ২০০৫ ও ২০১৭, দু’দুবার ফাইনালে পৌঁছেও শেষ মুহূর্তে হাতছাড়া হয়েছিল স্বপ্ন। কিন্তু হরমনপ্রীতদের হাতে যখন সেই বহু প্রতীক্ষিত কাপ উঠল, তখন যেন দেশের অর্ধেক জনসংখ্যার স্বপ্নও বাস্তব হয়ে গেল। ১৯৮৩ অনুপ্রাণিত করেছিল এক প্রজন্মকে বড় স্বপ্ন দেখতে। এদিন মেয়েরা সেই কাজটাই করল—দেশের হাজারো মেয়েকে দেখিয়ে দিল, তারাও একদিন ব্যাট হাতে বিশ্বজয় করতে পারে। নারী শক্তির এই জয়ে ভারতীয় ক্রিকেটে যার অবদান সবচেয়ে বেশি, তিনি হলেন জয় অমিতভাই শাহ।

    সমান ম্যাচ ফি দেওয়ার ঘোষণা

    রাজনৈতিক কারণে আপনি জয় শাহকে পছন্দ করতে পারেন বা অপছন্দ। কিন্তু বিগত কয়েক বছরে এই মানুষটা ভারতীয় মহিলা ক্রিকেটের জন্য যা করেছেন, তা সাধারণ মানুষ হিসেবে আমরা ততটা না জানলেও বা বুঝলেও হরমনপ্রীত কৌররা জানেন। তাই সেই কৃতজ্ঞতা, সেই অ্যাডমিরেশন থেকেই বিশ্বকাপের মঞ্চে কাপ গ্রহণের আগে তাঁর পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করতে গেলেন হরমনপ্রীত কৌর। ২০২২ সালে জয় শাহের নেতৃত্বে ভারত বিশ্বের প্রথম ক্রিকেট বোর্ড ছিলো, যারা পুরুষ ও মহিলা ক্রিকেটারদের সমান ম্যাচ ফি দেওয়ার কথা ঘোষণা করে। যা ভারতীয় মহিলা ক্রিকেটারদের মানসিকতাই বদলে দিয়েছিল।

    দরকার ছিল একটা বড় মঞ্চের সাফল্য

    এই বিজয় মানে আত্মবিশ্বাসের পুনর্জন্ম। এখন মেয়েদের ক্রিকেটে পরিকাঠামো, স্পনসরশিপ ও প্রশিক্ষণের সুযোগ আগের চেয়ে অনেক উন্নত। বোর্ডের বিনিয়োগও বেড়েছে। তবু দরকার ছিল একটা বড় মঞ্চের সাফল্য, যে সাফল্য দর্শক, মিডিয়া ও সমাজের দৃষ্টিভঙ্গিই বদলে দিতে পারে। সেই ব্রেকথ্রু এল রবিবার। হরমনপ্রীতের হাতে সেই কাপ, যা মিতালি রাজ (Mithali Raj) বা ঝুলন গোস্বামীর (Jhulan Goswami) প্রজন্মের নাগালের বাইরে থেকে গিয়েছিল। তাঁদের পাতা পথেই দাঁড়িয়ে আজ ভারতীয় মেয়েরা দেখাল, কঠোর পরিশ্রম আর বিশ্বাস থাকলে অসম্ভব কিছুই নয়। আর সমতা কোনও দয়া নয়, সাফল্যের শর্ত।

    উইমেন্স প্রিমিয়ার লিগ চালু

    আইপিএল এর সাফল্যের ব্যাপারে ক্রিকেট ভক্তরা ওয়াকিবহাল। কিন্তু আইপিএলের ধাঁচে উইমেন্স প্রিমিয়ার লিগ চালু করে মহিলা ক্রিকেটের উন্মাদনা দেশের প্রতিটি প্রান্তে পৌঁছে দেওয়ার সাহস দেখিয়েছেন জয় শাহ ২০২৩ সালে। প্লেয়ার ডেভেলপমেন্ট এর জন্য ডব্লু পি এলের অবদান এখন সর্বজনবিদিত। বিনামূল্যে টিকিট দিয়ে মহিলা ক্রিকেট দেখার জন্য সাধারণ মানুষকে উৎসাহিত করেছেন জয় শাহ-ই। দেশের ভেতরে মহিলা ক্রিকেটের জন্য প্রোপার ডোমেস্টিক প্ল্যাটফর্ম, ম্যাচের সংখ্যা বাড়ানো, উন্নত প্রযুক্তি ও ফ্যাসিলিটির ব্যবস্থা করা যে বৃথা যায়নি, তা বিশ্বকাপ জয়ের দ্বারা প্রমাণিত।

    মহিলা ক্রিকেটের উন্নতিতে সদর্থক পদক্ষেপ

    ২০২৫ সালের শুরু থেকেই ভারতীয় বোর্ড পুরুষ ও মহিলা দলের জন্য সমস্ত টুর্নামেন্টে প্রাইজ মানি সমান করেছে। আইসিসি চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নিয়েই মহিলা ক্রিকেটের উন্নতিতে সদর্থক পদক্ষেপ করেছেন। গত মাসে আইসিসি চেয়ারম্যান মহিলা ক্রিকেটের প্রাইজমানি ৩০০ শতাংশ বাড়িয়েছেন। ২.৮৮ মিলিয়ন ডলার থেকে তা বেড়ে ১৪ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। এসব উদ্যোগে মহিলাদের ক্রিকেট অনেক দূর এগিয়েছে। একসময় যেখানে মহিলা খেলোয়াড়দের সাফল্য মানে ছিল “সব প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে জয়”, আজ তা হয়ে উঠেছে “ব্যবস্থার সহায়তায় জয়”। সমান পারিশ্রমিকের সিদ্ধান্ত কাগজে লেখা একটি নীতিমালা ছিল, আজ তা বাস্তবের উজ্জ্বল উদাহরণ।

  • ICC Women’s World Cup: হচ্ছে না বিজয় মিছিল! বুধেই বিশ্বজয়ীদের সঙ্গে চা-য়ে পে চর্চায় প্রধানমন্ত্রী মোদি

    ICC Women’s World Cup: হচ্ছে না বিজয় মিছিল! বুধেই বিশ্বজয়ীদের সঙ্গে চা-য়ে পে চর্চায় প্রধানমন্ত্রী মোদি

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বিশ্বজয়ী (ICC Women’s World Cup) ভারতীয় দলের সঙ্গে দেখা করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Modi)। দক্ষিণ আফিকাকে হারিয়ে বিশ্বজয়ের পর ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দলকে (Indian Women Cricket Team) শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ঐতিহাসিক জয় ভবিষ্যতের চ্যাম্পিয়নদের যে অনুপ্রেরণা জোগাবে, সে কথা লেখেন প্রধানমন্ত্রী। সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর, বুধবার ৫ নভেম্বর হরমনপ্রীতদের সঙ্গে দেখা করতে পারেন তিনি।

    দলকে অভিনন্দন

    বুধবার নয়াদিল্লিতে বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করার সম্ভাবনা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী মোদির। সোমবার এক অনুষ্ঠানে আবারও ভারতের বিশ্বকাপ জয়ের কথা তুলে ধরেন তিনি। তাঁর কথায়, “আমি প্রথমে ভারতের অসাধারণ জয়ের কথা বলব। এমন সাফল্যে উচ্ছ্বসিত গোটা ভারত। এটা ভারতের প্রথম মহিলা বিশ্বকাপ জয়। ভারতীয় দলকে অভিনন্দন। তোমাদের জন্য গর্বিত।” দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৫২ রানে হারিয়ে প্রথমবার বিশ্বজয়ের স্বাদ পেয়েছেন হরমনপ্রীতরা। ঐতিহাসিক এই সাফল্যে এখন সেলিব্রেশনের মুডে অসমুদ্রহিমাচল। গোটা দলের জন্য ৫১ কোটি টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে বিসিসিআই। তবে কোনও বিজয় প্যারেডের কথা জানানো হয়নি।

    প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত

    এর আগে ২০২৪ সালে টি-২০ বিশ্বকাপ (2024 ICC Men’s T20 World Cup) জয়ের পর ভারতের পুরুষ ক্রিকেট দলের সঙ্গেও দেখা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। এবার তিনি মহিলা দলের সঙ্গে দেখা করছেন। ভারতের মহিলা ক্রিকেট দল সিনিয়র পর্যায়ে প্রথমবার যে কোনও ফর্ম্যাটে বিশ্বকাপ জেতায় সারা দেশ উচ্ছ্বসিত। প্রধানমন্ত্রীও সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডলে পোস্টের মাধ্যমে ক্রিকেটারদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। এবার ক্রিকেটারদের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের অভিনন্দন জানাবেন প্রধানমন্ত্রী। বিসিসিআই (BCCI) কর্তারাও এই সাক্ষাতে থাকতে পারেন। বুধবার সন্ধ্যায় নয়াদিল্লিতে মহিলা দলের সদস্যদের সংবর্ধনা দেবেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। অনুষ্ঠানটি প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে অনুষ্ঠিত হবে।

    কেন নেই বিজয় শোভাযাত্রা

    দেশজুড়ে উচ্ছ্বাস থাকলেও, নিরাপত্তাজনিত কারণে ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড (BCCI) এবার কোনো বিজয় শোভাযাত্রা আয়োজন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বোর্ড জানিয়েছে, লজিস্টিক ও নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জই এই সিদ্ধান্তের মূল কারণ। এ বছরের শুরুতে বেঙ্গালুরুর এম. চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের বাইরে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর আইপিএল শিরোপা উদযাপনকালে ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক পদদলনের ঘটনায় কয়েকজন প্রাণ হারান। সেই অভিজ্ঞতার পর বড় জনসমাবেশ এড়িয়ে সতর্ক পথে হাঁটছে বোর্ড। পুরো দেশ যেখানে এই ঐতিহাসিক জয়ে আনন্দে ভাসছে, সেখানে শোভাযাত্রা না হওয়ায় ভক্তদের মধ্যে খানিক হতাশা দেখা দিয়েছে।

    বিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে ৫১ কোটি টাকার ঘোষণা

    বিসিসিআই সোমবার ঘোষণা করেছে, খেলোয়াড়, সাপোর্ট স্টাফ ও নির্বাচক কমিটির জন্য মোট ৫১ কোটি টাকার নগদ পুরস্কার দেওয়া হবে। এর পাশাপাশি, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (ICC) থেকেও ভারতীয় দল পাবে ৪০ কোটি টাকার পুরস্কার — যা বিশ্বকাপ ইতিহাসে সর্বাধিক এবং আগের ৫০ ওভারের আসরে অস্ট্রেলিয়া পাওয়া পুরস্কারের তুলনায় ২৯৭ শতাংশ বেশি। এছাড়াও সুরাটের শিল্পপতি ও রাজ্যসভা সাংসদ গোবিন্দ ঢোলাকিয়া (চেয়ারম্যান, শ্রী রামকৃষ্ণ এক্সপোর্টস প্রা. লি.) ঘোষণা করেছেন, তিনি প্রত্যেক খেলোয়াড়কে হাতে তৈরি হীরার গয়না উপহার দেবেন এবং তাঁদের বাড়িতে সৌরবিদ্যুৎ (solar panel) স্থাপন করবেন। ঢোলাকিয়া বিসিসিআই সহ-সভাপতি রাজীব শুক্লাকে চিঠি লিখে এই ইচ্ছা প্রকাশ করেন।

    বিভিন্ন রাজ্যএর তরফে নানা পুরস্কার

    রাজ্য ও সংস্থার তরফেও পুরস্কার। হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিং সুখু শিমলার কন্যা ও পেসার রেনুকা ঠাকুরকে ১ কোটি টাকার পুরস্কার ঘোষণা করেছে। মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মোহন যাদব একই পরিমাণ অর্থ প্রদান করবেন খেলোয়াড় ক্রান্তি গৌদ-কে। পাঞ্জাব ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন (PCA) জানিয়েছে, অধিনায়ক হরমানপ্রীত কৌর ও অলরাউন্ডার অমনজোত কৌর-কে ১১ লক্ষ করে টাকা দেওয়া হবে, আর ফিল্ডিং কোচ মুনীশ বালিকে ৫ লক্ষ টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে। শীঘ্রই এই তিনজনকে সম্মান জানাতে একটি বিশেষ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানও আয়োজন করবে পিসিএ। বিভিন্ন ক্রিকেটারদের সঙ্গে কর্পোরেট সংস্থার চুক্তির পরিমাণও বেড়ে গিয়েছে। বিশ্বকাপ জেতার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে হরমনপ্রীতের সঙ্গে চুক্তি করেছে একটি নির্মাণ সংস্থা। হরমনপ্রীতকে ‘ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর’ করেছে তারা। স্মৃতি ইতিমধ্যেই অনেক সংস্থার সঙ্গে যুক্ত। বিজ্ঞাপনের জন্য প্রচুর সংস্থা তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা শুরু করেছে

     

     

     

     

     

  • ICC Women’s World Cup: সমতাই সাফল্যের চাবিকাঠি! বিসিসিআই দেখাল সমান পারিশ্রমিক বদলে দিতে পারে মানসিকতা

    ICC Women’s World Cup: সমতাই সাফল্যের চাবিকাঠি! বিসিসিআই দেখাল সমান পারিশ্রমিক বদলে দিতে পারে মানসিকতা

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: একটা বিশ্বকাপ (ICC Women’s World Cup) অনেকের কষ্ট মুছে দেয়। ৬ বিশ্বকাপ খেলেও মিতালি রাজ পারেননি। ৫টা বিশ্বকাপ খেলে পারেননি ঝুলন গোস্বামী। সব আক্ষেপ এক রাতে মুছে দিলেন হরমনপ্রীত, স্মৃতি, দীপ্তি, শেফালিরা। ফারাক একটাই সমতা। নবি মুম্বাইয়ের ডিওয়াই পাতিল স্টেডিয়ামের উজ্জ্বল আলোয় ইতিহাস রচনা করলেন হারমনপ্রীত কৌর। শেষ বলে উড়ে আসা ক্যাচটি যখন তিনি মাথার উপরে তুলে ধরলেন, তখন তাঁর সতীর্থরা ছুটে এলেন মাঠে, চোখে জল, মুখে অবিশ্বাসের হাসি। প্রথমবার ভারতের মহিলা ক্রিকেট দল জয় করল বিশ্বের সর্বোচ্চ মঞ্চ—ওয়ানডে বিশ্বকাপ। কিন্তু এই জয় শুধুই ক্রিকেটের নয়, এটি এক নীতির জয়—যার সূচনা হয়েছিল তিন বছর আগে বোর্ডরুমের এক নীরব বৈঠকে।

    “আবেগতাড়িত সিদ্ধান্ত”ই যুক্তিযুক্ত

    ২০২২ সালের অক্টোবরে, বিসিসিআই-এর (BCCI) ১৫তম অ্যাপেক্স কাউন্সিল বৈঠকে নেওয়া হয়েছিল এক ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত—পুরুষ ও মহিলা ক্রিকেটারদের মধ্যে সমান ম্যাচ ফি চালুর প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। রোহিত-বিরাটদের মতো পারিশ্রমিক বা ম্যাচ -ফি পেতে শুরু করেন হরমনপ্রীত, মান্ধানারা। সেই সিদ্ধান্ত তখন আলোড়ন তুলেছিল বিশ্ব ক্রীড়ামহলে। তখন বিসিসিআই সচিব পদে ছোট-খাটো চেহারার এক ব্যক্তি জয় অমিতভাই শাহ। যার রাজনৈতিক পরিচয়, প্রভাব নিয়ে বারবার প্রশ্ন তুলেছিলেন বিরোধীরা। কিন্তু তিনি নীরবে কাজ করে গিয়েছেন। সমালোচকেরা প্রশ্ন তুলেছিলেন—মহিলা ক্রিকেট কি এখনও সেই অর্থনৈতিক উচ্চতায় পৌঁছেছে যেখানে সমান পারিশ্রমিক যুক্তিযুক্ত? কেউ কেউ বলেছিলেন এটি “আবেগতাড়িত সিদ্ধান্ত”, যুক্তির নয়।

    বিশ্বাসে অটল বিসিসিআই

    সদ্য শেষ হওয়া বিশ্বকাপের (ICC Women’s World Cup) লিগ পর্বে যখন ভারতের পারফরম্যান্স দুর্বল হচ্ছিল, তখন সেই সমালোচনা আরও জোরালো হয়। সামাজিক মাধ্যমে বাড়তে থাকে নারীবিদ্বেষী মন্তব্য। কিন্তু বিসিসিআই তাদের বিশ্বাসে অটল ছিল। বিশ্বকাপের ট্রফি হাতে নিয়ে হরমনপ্রীতরা প্রমাণ করলেন, সেই বিশ্বাস বৃথা যায়নি। বিশ্বকাপ জয়ের পর বিসিসিআই সচিব জয় শাহ এক টুইটে লেখেন, “ভারতের মেয়েদের প্রথম বিশ্বকাপ জয় ভারতের প্রতিটি নাগরিককে গর্বিত করেছে। দলের লড়াই, আত্মবিশ্বাস ও দক্ষতা যেমন অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে, তেমনি বিসিসিআই-এর নীতিগত সিদ্ধান্ত—সমান পারিশ্রমিক, বাড়তি বিনিয়োগ, উন্নত কোচিং কাঠামো ও উইমেনস প্রিমিয়ার লিগ-এর অভিজ্ঞতা—এই সাফল্যের ভিত গড়ে দিয়েছে।”

    এক সুপরিকল্পিত কাঠামোর ফল

    এই জয় আকস্মিক নয়, এটি এক সুপরিকল্পিত কাঠামোর ফল। সমান পারিশ্রমিকের সঙ্গে সঙ্গে মহিলা ক্রিকেটে এসেছে উন্নত পরিকাঠামো, দক্ষ কোচিং স্টাফ, এবং উইমেনস প্রিমিয়ার লিগ (WPL)-এর মতো প্রতিযোগিতা, যা মেয়েদের আন্তর্জাতিক মানের ক্রিকেট খেলার সুযোগ দিয়েছে। সমান পারিশ্রমিক শুধু অর্থনৈতিক নয়, মানসিক বিপ্লবও ঘটিয়েছে। মহিলা ক্রিকেটাররা এখন সম্পূর্ণ স্বাবলম্বী। অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা থেকে মুক্ত। সেই আত্মবিশ্বাসই আজ প্রতিটি রান, প্রতিটি উইকেটে প্রতিফলিত। সমান পারিশ্রমিক তাদের মনে করিয়ে দিয়েছে—সমতা কোনও দয়া নয়, এটি অগ্রগতির অপরিহার্য শর্ত।

    ৫১ কোটি টাকার পুরস্কার ঘোষণা

    বিশ্বকাপ (ICC Women’s World Cup) জয়ের পর ভারতের মহিলা ক্রিকেট দলের জন্য ৫১ কোটি টাকার পুরস্কার ঘোষণা করেছে বিসিসিআই (BCCI)। সংস্থার সচিব দেবজিৎ শাইকিয়া জানান, এই পুরস্কার দলের সব সদস্য, কোচ এবং সাপোর্ট স্টাফদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হবে। তিনি বলেন, “জয় শাহ ২০১৯ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত বিসিসিআই সচিব থাকাকালীন মেয়েদের ক্রিকেটে একাধিক বদল এনেছেন। পে প্যারিটি বা সমান বেতন কাঠামোর বিষয়টি তখনই কার্যকর হয়। গত মাসে আইসিসি চেয়ারম্যান মহিলা ক্রিকেটের প্রাইজমানি ৩০০ শতাংশ বাড়িয়েছেন। ২.৮৮ মিলিয়ন ডলার থেকে তা বেড়ে ১৪ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। এসব উদ্যোগে মহিলাদের ক্রিকেট অনেক দূর এগিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে বিসিসিআই ৫১ কোটি টাকার পুরস্কার ঘোষণা করেছে।”

    জয় শাহের নেতৃত্বে আইসিসি-তেও নয়া ধারা

    জয় শাহের নেতৃত্বে আইসিসি-র তরফেও প্রাইজমানির পরিমাণ এবার বেড়েছে। ভারত পেয়েছে ৪.৪৮ মিলিয়ন ডলার অর্থাৎ প্রায় ৪০ কোটি টাকা। আগের আসরে যেখানে অস্ট্রেলিয়া পেয়েছিল মাত্র ১.৩২ মিলিয়ন ডলার অর্থাৎ প্রায় ১২ কোটি। রানার্স-আপ দক্ষিণ আফ্রিকা পেয়েছে ২.২৪ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ২০ কোটি টাকা), আর সেমিফাইনালে হেরে যাওয়া দুই দল প্রত্যেকে পেয়েছে ১.১২ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ১০ কোটি টাকা)। পুরো টুর্নামেন্টের মোট প্রাইজমানি ছিল ১৩.৮৮ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ১২৩ কোটি টাকা), যা আগের বিশ্বকাপের ৩.৫ মিলিয়ন ডলারের তুলনায় প্রায় চারগুণ বেশি। এমনকি এই পরিমাণ পুরস্কার ২০২৩ সালের পুরুষদের বিশ্বকাপের ১০ মিলিয়ন ডলারের পুরস্কার অর্থকেও ছাপিয়ে গিয়েছে।

    সমতা আগে এলে সাফল্য আসবেই

    ভারতের এই সাফল্য বিশ্ব ক্রীড়াজগতে এক নতুন বার্তা দিচ্ছে। এতদিন মহিলা ক্রিকেটারদের বলা হত, “প্রথমে তোমাদের খেলা বাণিজ্যিকভাবে সফল হোক, তারপর আসবে সমান অধিকার।” ভারত দেখিয়ে দিল—সমতা আগে এলে সাফল্য আসবেই। বিসিসিআইয়ের (BCCI) মতো একটি বাণিজ্যিকভাবে প্রভাবশালী বোর্ড যখন সমতাকে কৌশল হিসেবে গ্রহণ করে, তখন সেটি বিশ্ব ক্রীড়ার মানদণ্ড বদলে দেয়। এই জয় শুধু ট্রফি নয়—এটি এক নতুন ভারতীয় বাস্তবতার প্রতীক। ডিওয়াই পাতিলের আকাশে যখন তেরঙা উড়ছিল, ট্রফি হাতে দাঁড়িয়ে ভারতীয় দল নতুন ভবিষ্যতের ছবি আঁকছিল। এটি শুধু ভারতের মেয়েদের জয় নয়—এটি সারা বিশ্বের কাছে এক বার্তা: সমান সুযোগ দিলে, মেয়েরা ইতিহাস লেখে।

  • ICC Women World Cup 2025: সৌরভ-ঝুলন পারেননি! রিচার হাত ধরে বাঙালি স্পর্শ করল বিশ্বকাপ

    ICC Women World Cup 2025: সৌরভ-ঝুলন পারেননি! রিচার হাত ধরে বাঙালি স্পর্শ করল বিশ্বকাপ

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: প্রথম বার ক্রিকেট বিশ্বকাপ হাতে ছুঁয়ে দেখল এক বাঙালি। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় পারেননি। ঝুলন গোস্বামী পারেননি। রিচা ঘোষ পারলেন। শিলিগুড়ির মেয়ের হাত ধরে বাঙালিও স্পর্শ করল ক্রিকেট বিশ্বকাপ। রবিবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে বিশ্বকাপ ফাইনালে রিচার ৩৪ রান গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। উত্তরবঙ্গের মেয়ে রিচার উত্থান ভারতীয় ক্রিকেটে হয়েছে উল্কা গতিতে। শিলিগুড়ির এই মেয়ের বিগ হিটিং স্কিল কারুর অজানা নয়। এদিন নবী মুম্বইয়ের স্টেডিয়ামে নিজের সেই ক্ষমতা উজার করে দিয়েছেন রিচা। ম্যাচের পর রিচা জানালেন, জীবন বাজি রেখে নেমেছিলেন ফাইনালে। বিশ্বকাপ জিতে স্বপ্ন পূরণ হয়েছে।

    বিশ্বকাপে সর্বাধিক ছয় মারার রেকর্ড

    ব্যাট হাতে এদিন রিচা ঝড় উঠল স্টেডিয়ামে। বিশ্বকাপ ফাইনালের মতো বড় মঞ্চে ২৪ বলে ৩৪ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলেন রিচা৷ তাঁর ইনিংস সাজানো ছিল ৩ টি চার ও ২ টি ছক্কা দিয়ে। ২টো ছয় মেরে এদিন বিশ্বকাপে সর্বাধিক ছয় মারার রেকর্ডও ছুঁয়ে ফেলেন রিচা। তাঁর কথায়, “সকলে একটাই কথা বলেছিলাম, এটাই প্রতিযোগিতার শেষ দিন। নিজেদের মধ্যে যা আছে পুরোটা উজাড় করে দিতে হবে। নিজের শরীর, শক্তির শেষ বিন্দু সমর্পণ করতে হবে। একে অপরের জন্য খেলব আমরা। সব উজাড় করে দাও, এটাই ছিল আসল মন্ত্র।” এত বড় মঞ্চে নিজের সেরাটা দেওয়াও কি চাপের নয়? রিচার স্পষ্ট উত্তর, “চাপ ছিল ঠিকই। মাঠে প্রচুর লোক এসেছিলেন। এই পরিবেশে আমরা খুব একটা খেলিনি। আমি নিজেকে বলেছিলাম, অনেক পরিশ্রম করেছি। এ বার নিজের উপর বিশ্বাস রাখার পালা। দলের সকলে বিশ্বাস করেছিল যে আমি ম্যাচে প্রভাব ফেলতে পারি। সেই আস্থা আমাকে খুব সাহায্য করেছে।” এদিন ২৫ বছর পর মহিলাদের ক্রিকেট পেয়েছে নতুন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে নাম লিখিয়েছে হরমনপ্রীত কৌর অ্যান্ড কোম্পানি। ২০০০ সালে তৃতীয় দেশ হিসেবে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল নিউজিল্যান্ড। তারপর থেকে সব খেতাব ভাগ করে নিয়েছে প্রথম দুই চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া এবং ইংল্যান্ড।

    রাত জাগল শিলিগুড়ি থেকে বাংলা

    উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান হিসাবে পুরুষ ক্রিকেটে এমএস ধোনির বীরগাথা এতদিন দেখেছে গোটা দেশ। এদিন রিচা ঘোষকে দেখল ইন্ডিয়া। এর আগে বিশ্বকাপ জয়ের দোরগোড়ায় এসে ব্য়র্থ হয়েছেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। ২০০৩ সালে বিশ্বকাপ ফাইনালে অজিবাহিনীর হাতে পরাজিত হয় টিম ইন্ডিয়া। পরবর্তীতে ভারতীয় মহিলা ক্রিকেটের কিংবদন্তি , চাকদা এক্সপ্রেস ঝুলন গোস্বামীও খুব কাছে পৌঁছালেও কাপ ছুঁতে পারেননি। রিচা পারলেন। প্রথম বাঙালি ক্রিকেটার হিসাবে বিশ্বকাপ উঠল তাঁর হাতে। চার বাড়ির মূল দরজায় ঝুলছে তালা। দীপাবলির আলো এখনও সরানো হয়নি দরজার একপাশে থাকা দোতলা ঘর থেকে। সন্ধ্যার পর বাড়ির সামনেটা অন্ধকার হয়ে গেলেও সেই বাড়ি ঘিরেই দেখা গেল শিলিগুড়ির আবেগ। রাত ১২টার পর শিলিগুড়ির ভেনাস মোড় থেকে কলোজ মোড় মেতে উঠল বিশ্বকাপ জয়ের আনন্দে। কালীপুজোর ১১দিন পর ফের অকাল দীপাবলি। এদিন বিশ্বকাপ জিতে আহ্লাদে আটখানা রিচা। ম্য়াচ শেষে চোখে জল বাংলার এই বীর কন্যার। তিনি বললেন, ‘অনেকদিন ধরে অপেক্ষা করছিলাম কবে ট্রফি হাতে পাব, অবশেষে সেই স্বপ্নপূরণ। ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না’।

     

     

     

     

  • India-W World Cup Champion: ‘একটা ঐতিহাসিক মাইলফলক’, বললেন শচিন, ‘গোটা দেশকে গর্বিত করেছ’, লিখলেন কোহলি

    India-W World Cup Champion: ‘একটা ঐতিহাসিক মাইলফলক’, বললেন শচিন, ‘গোটা দেশকে গর্বিত করেছ’, লিখলেন কোহলি

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৫২ রানে হারিয়ে প্রথমবারের মত মহিলা বিশ্বকাপ জিতে ইতিহাস রচনা করেছে ভারতের মেয়েরা। মুম্বইতে ফাইনালে ব্যাটে-বলে দুরন্ত পারফর্ম করে দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটিয়েছে ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দল। এই ঐতিহাসিক জয় ঘিরে সোশ্যাল মিডিয়ায় চলছে উৎসবের আমেজ। বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে “উইমেন ইন ব্লু”-দের উদ্দেশে অভিনন্দন বার্তা আসছে। বিরাট কোহলি, সচিন তেন্ডুলকর, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, যুবরাজ সিং স বর্তমান ও প্রাক্তন ক্রিকেটাররা সকলেই শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ভারতীয় মহিলা দলকে।

    একটা ঐতিহাসিক মাইলফলক: শচিন

    এক্স হ্যান্ডেলে শচিন লিখলেন, ‘১৯৮৩ সালের ঐতিহাসিক জয় যেমন বড় স্বপ্ন দেখতে এবং সেই স্বপ্ন পূরণের পিছনে দৌড়াতে একটা গোটা প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করেছিল, আজ আমাদের মহিলা ক্রিকেট দল সত্যিকারের সেই ইতিহাস করল। তারা সারা দেশের অসংখ্য তরুণীকে ব্যাট-বল হাতে তুলে মাঠে নামতে এবং বিশ্বাস করতে অনুপ্রাণিত করেছে যে তারাও একদিন এই ট্রফি তুলতে পারবে। ভারতীয় মহিলা ক্রিকেটের জার্নিতে এটা একটা ঐতিহাসিক মাইলফলক। সাবাস, টিম ইন্ডিয়া। তোমরা গোটা দেশকে গর্বিত করেছ।’

    ভীষণ গর্বিত… বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন: সৌরভ

    ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক তথা প্রাক্তন বিসিসিআই সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ও মহিলা দলকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ও তাদের জন্য গর্বিত বলে জানিয়েছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, ‘‘মেয়েদের অসাধারণ সাফল্য! গত ৬ বছরে তারা অনেক দূর এগিয়েছে। তাদের নিয়ে ভীষণ গর্বিত… বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন।”

    তোমরা গোটা দেশকে গর্বিত করেছ: কোহলি

    অভিনন্দন জানালেন বিরাট কোহলিও। এক্সে পোস্ট করে তিনি লিখলেন, ‘ভারতের মেয়েরা ইতিহাস গড়লেন! তাঁদের এই ঐতিহাসিক সাফল্যে গর্বে ভরে উঠেছে গোটা দেশ। বহু বছরের পরিশ্রম ও অধ্যবসায় আজ বাস্তবের রূপ নিয়েছে। অধিনায়ক হরমনপ্রীত কৌর এবং গোটা দলকে আন্তরিক অভিনন্দন। শুধু খেলোয়াড়রা নয়, দলের সঙ্গে যুক্ত সমগ্র সাপোর্ট স্টাফ ও ম্যানেজমেন্টকেও ধন্যবাদ জানানো উচিত, যাঁদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফল এই জয়। দারুণ খেলেছ টিম ইন্ডিয়া। এই ঐতিহাসিক মুহূর্ত উপভোগ করো হৃদয়ভরে। দেশের অসংখ্য কন্যা এই জয় দেখে অনুপ্রাণিত হবে ক্রিকেটসহ অন্যান্য খেলাধুলায় নিজেদের ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে।’ ট্রফি হাতে ভারতীয় দলের ছবি দিয়ে লেখেন, “তোমরা পরের প্রজন্মকে উদ্বুদ্ধ করবে। ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলে তোমরা গোটা দেশকে গর্বিত করেছ। তোমাদের এই শুভেচ্ছা প্রাপ্য। এই মুহূর্তটা তোমাদের। উপভোগ করো। হরমন ও তার দল দুর্দান্ত খেলেছো। জয় হিন্দ।”

    আবেগপ্রবণ রোহিতের চোখে জল

    এদিকে, টিম ইন্ডিয়াকে সাপোর্ট করার জন্য ডিওয়াই পাটিল স্টেডিয়ামে গিয়েছিলেন রোহিত শর্মা। টিম ইন্ডিয়ার জয় তিনিও উদযাপন করেন এবং যথেষ্ট আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন তিনি। হরমনপ্রীতের ক্যাচে ভারত ম্যাচ জেতার পর ক্যামেরা ধরে রোহিতকে। দেখা যায়, আকাশের দিকে তাকিয়ে হাততালি দিচ্ছেন তিনি। বোঝা যাচ্ছিল, রোহিতের চোখে জল। কোনও রকমে আবেগ সামলানোর চেষ্টা করছিলেন তিনি। ২ বছর আগে এমনই এক নভেম্বরে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ভারতের পুরুষ দল বিশ্বকাপ ফাইনালে হেরেছিল। স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল দেড় কোটি ভারতবাসীর। সেদিন কাঁদতে কাঁদতে মাঠ ছেড়েছিলেন রোহিত। তবে সেই কান্না লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। আর গতকাল রাতে চোখের সামনে হরমনপ্রীতদের বিশ্বকাপ জয় দেখে চোখ ছলছল হয়ে গিয়েছিল রোহিত শর্মার। যেন, তিনি যে না করতে পারেননি, তা হরমনরা করতে পারায় বুকের ওপর থেকে কিছুটা হলেও বোঝা কমল। বা হয়ত, সেই ২০২৩ সালের নভেম্বরের রাতের কথাটাই তাঁর মনে পড়ছিল।

    ভারতীয় ক্রিকেটে এক নতুন যুগের সূচনা: যুবরাজ

    আর এক বিশ্বকাপজয়ী যুবরাজ সিং গোটা দল তো বটেই, বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানিয়েছেন দীপ্তি শর্মা, শেফালি ভার্মা, রিচা ঘোষকে। তিনি লেখেন, ‘ভারতীয় ক্রিকেটে এক নতুন যুগের সূচনা হল। ইতিহাসের পিছনে রয়েছে আমাদের উইমেন ইন ব্লু–র অদম্য মনোবল, দৃঢ়তা এবং অতুলনীয় দক্ষতা। অদম্য জেদে গড়া এই দল একসঙ্গে মিলিত হয়ে এমন এক মুহূর্ত সৃষ্টি করেছে, যা গোটা বিশ্ব কখনও ভুলবে না। স্বপ্ন পূরণের জন্য তাঁরা নিজেদের সমস্তটুকু উজাড় করে দিয়েছেন, শরীর-মন এক করে খেলেছেন শেষ বল পর্যন্ত। ব্যাট হাতে দুরন্ত শুরু করে ও বল হাতে গুরুত্বপূর্ণ উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছেন শেফালি ভার্মা। অসাধারণ অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে উজ্জ্বল দীপ্তি শর্মা ব্যাটে-বলে ম্যাচ ঘুরিয়ে দিয়েছেন। পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে ধারাবাহিকতা, সৌন্দর্য ও দৃঢ়তায় ভারতের ব্যাটিং আক্রমণকে নেতৃত্ব দিয়েছেন স্মৃতি মান্ধানা। রিচা ঘোষের আত্মবিশ্বাসে ভরপুর ইনিংস ভারতকে রানের গতি বাড়াতে সাহায্য করেছে। বিশেষ অভিনন্দন হরমনপ্রীত কৌর এবং কোচ অমল মজুমদারকে। ভারত এখন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন!’

  • ICC Women World Cup 2025: “দিন-রাত খেটেছি, একটা দল হয়ে খেলেছি”, বিশ্বকাপটা জিততেই হতো! আর কী বললেন হরমনপ্রীত

    ICC Women World Cup 2025: “দিন-রাত খেটেছি, একটা দল হয়ে খেলেছি”, বিশ্বকাপটা জিততেই হতো! আর কী বললেন হরমনপ্রীত

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: অবশেষে শাপমুক্তি! আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কেরিয়ারের সায়াহ্নে এসে তাঁর হাতে উঠল বিশ্বকাপ ট্রফি (ICC Women World Cup 2025)। কপিল দেব, মহেন্দ্র সিং ধোনি, রোহিত শর্মার পর চতুর্থ ভারতীয় ও প্রথম মহিলা ক্রিকেট দলের ক্যাপ্টেন হিসেবে বিশ্বখেতাব জয়ের নজির গড়লেন হরমনপ্রীত কৌর। ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৫২ রানে হারিয়ে উচ্ছ্বাসে ভাসলেন শেফালি বর্মা, দীপ্তি শর্মা, রিচা, স্মৃতি, জেমাইমারা। মাঠেই শুরু হয়ে গেল উৎসব। চোখের জল যেন বাঁধ মানছিল না কারও। এ তো শেষ নয়, এ সবে শুরু। এবার এটা অভ্যেসে পরিণত হবে। বললেন বিশ্বজয়ী হরমনপ্রীত।

    বেড়াটা ভাঙতেই হত

    ভারতের প্রথম অধিনায়ক হিসেবে মহিলাদের বিশ্বকাপ জিতেছেন হরমনপ্রীত কৌর। এর আগে দু’বার ফাইনালে গিয়ে হারতে হয়েছিল। এ বার সেই বেড়া ভেঙেছেন হরমনপ্রীতেরা। বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়ে “বেড়াটা ভাঙতে চেয়েছিলাম। এই জয় দরকার ছিল। সবে শুরু। এ বার জেতা অভ্যাসে পরিণত করতে চাই। এই মুহূর্তের অপেক্ষা করছিলাম। আমরা আরও উন্নতি করতে চাই। এটাই শেষ নয়। এ তো সবে শুরু।” ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ জয়ের আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করতে পারেননি হরমনপ্রীত। প্রতিযোগিতার মাঝে পর পর তিনটি ম্যাচ হেরেছিল ভারত। তার পরেও নিজেদের উপর বিশ্বাস ছিল তাঁদের। হরমনপ্রীত বলেন, “আমরা পর পর তিনটে ম্যাচে হেরেছিলাম। কিন্তু তার পরেও নিজেদের উপর বিশ্বাস ছিল। জানতাম, ঠিক কিছু একটা ভাল হবে। দলের সকলে আত্মবিশ্বাসী ছিল। দিন-রাত খেটেছি। একটা দল হয়ে খেলেছি।”

    শেফালিই এদিন সেরার সেরা

    দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস চলাকালীন ফাটকা খেলেন হরমনপ্রীত। শেফালি বর্মার হাতে বল তুলে দেন তিনি। সেই ফাটকা কাজে লাগে। শেফালি জোড়া উইকেট তুলে দলকে খেলায় ফেরান। অধিনায়ক বলেন, “লরা ও সুনে ভাল খেলছিল। হঠাৎ শেফালির দিকে আমার নজর গেল। দেখলাম, ও দাঁড়িয়ে আছে। মনে হল, একটা ফাটকা খেলি। ওকে খালি একটা ওভার দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ভাবিনি ও খেলাটাই বদলে দেবে। এত ভাল বল করছিল যে ওকে আরও কয়েকটা ওভার দিই। যে ভাবে ও বল করেছে, তার পুরো কৃতিত্ব শেফালির।” বিশ্বকাপের চৌহদ্দির ১০০ কিলোমিটারের মধ্যেও ছিলেন না শেফালি বর্মা। ভারতের বিশ্বকাপের দলে জায়গা না পেয়ে ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি প্রতিযোগিতা খেলছিলেন। ফর্মে থাকা প্রতিকা রাওয়াল চোট পেয়ে ছিটকে যাওয়ায় বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের আগে দলে সুযোগ পেয়েছিলেন শেফালি। ফাইনালে সেই শেফালিই ভারতকে চ্যাম্পিয়ন করলেন। ব্যাটে-বলে দাপট দেখালেন তিনি। প্রত্যাবর্তনের কাহিনি লিখলেন ভারতের এই ক্রিকেটার।

    শচিন স্যারকে দেখে আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায়

    শেফালি বললেন, “এই ম্যাচে আমার একটাই লক্ষ্য ছিল। রান করতে হবে। দলের সকলে আমাকে বলেছিল, স্বাভাবিক খেলা থেকে না বেরাতে। আমি নিজের স্বাভাবিক খেলাই খেলেছি। বড় শট মেরেছি। শতরান করতে পারতাম। কিন্তু আমার কাছে দলের রান বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। দলের জয়ে আমার যোগদান রয়েছে। এর থেকে ভাল কিছু হতে পারে না।” শেফালি ভক্ত শচিন তেন্ডুলকরের। এই ম্যাচ শচিন গ্যালারিতে বসে তাঁর ব্যাটিং দেখেছেন। এর থেকে অনুপ্রেরণার আর কিছু হতে পারে না শেফালির কাছে। তিনি বললেন, “শচিন স্যারকে দেখে আমার আত্মবিশ্বাস আরও বেড়ে গিয়েছিল। ওঁর সঙ্গে আমার কথা হয়। উনি সবসময় আমাকে আত্মবিশ্বাস জোগান। উনি কিংবদন্তি। ওঁর কাছে শেখার অনেক কিছু রয়েছে। চেষ্টা করি শেখার। খুব ভাল লাগছে যে উনি আমার খেলা দেখলেন।”

    নজির গড়লেন হরমনপ্রীত

    ফাইনাল জেতার জন্য গোটা দলের প্রশংসা শোনা গিয়েছে হরমনপ্রীতের গলায়। পাশাপাশি কোচের দায়িত্ব পাওয়ার পর গত দু’বছরে অমল মুজুমদার যে পরিশ্রম করেছেন তারও প্রশংসা শোনা গিয়েছেন অধিনায়কের গলায়। তাঁদের সব রকমের সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার জন্য ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডকেও ধন্যবাদ দিয়েছেন হরমনপ্রীত। পরিসংখ্যান বলছে, মহিলাদের ক্রিকেট সবচেয়ে বয়স্ক ক্যাপ্টেন হিসেবে বিশ্বকাপ জেতার নজির গড়লেন হরমনপ্রীত। এছাড়াও আইসিসি টুর্নামেন্টের নক আউট পর্বে সর্বাধিক রান করা ক্রিকেটার হিসেবে টেক্কা দিলেন অস্ট্রেলিয়ার বেলিন্ডা ক্লার্ককে। তিনিই এতদিন শীর্ষে ছিলেন। আইসিসি নকআউট ম্যাচে হরমনপ্রীতের মোট রান এখন ৩৩১, গড় ১১০.৩৩। রয়েছে একটি সেঞ্চুরি ও দু’টি হাফ-সেঞ্চুরি। এই তালিকায় এতদিন শীর্ষে ছিলেন বেলিন্ডা ক্লার্ক, যাঁর রান ছিল ৩৩০। চারটি হাফ-সেঞ্চুরি ছিল তাঁর ঝুলিতে, সর্বোচ্চ স্কোর ৯১।

    ৪৫ দিন ঘুমোইনি বিশ্বকাপের জন্য

    তৃতীয় বারের চেষ্টায় শেষ পর্যন্ত বিশ্ব জয়ের স্বাদ পেয়েছেন ভারতের মেয়েরা। ঘরের মাঠে লিখে ফেলেছেন ইতিহাস। বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়ে আবেগ প্রবণ স্মৃতি মান্ধানা বললেন, ‘এটা আমার জন্য আবেগপ্রবণ এক স্মৃতি। আমি জানি না, কী করতে হবে। এখনও ঘোরের মধ্যে আছি। আমি মাঠে আবেগপ্রবণ হই না। কিন্তু দেশের মাটিতে বিশ্বকাপ, ভাবতে পারছি না। আমাদের ঘাড়ে অনেক বড় দায়িত্ব ছিল বিশ্বকাপ জেতার। আমি জানি না শেষ ৪০ দিন কী ভাবে কাটিয়েছি। ৪৫ দিন ঘুমোইনি বিশ্বকাপের জন্য। শেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দল কোয়ালিফাই করতে পারেনি নকআউটে। গ্রুপ পর্বেই ছিটকে গিয়েছিলাম। আমাদের সবার কাছে কঠিন লড়াই ছিল। আমাদের ফোকাস ছিল ফিটনেস নিয়ে কাজ করা। আমাদের শক্তি হচ্ছে কেউ ব্যর্থতা নিয়ে কথা বলে না। সবাই এগিয়ে যেতে চায়। আমরা সবাই একে অন্যের সাফল্য উপভোগ করি।’ কোচ অমোল মজ়ুমদারও আনন্দে আত্মহারা। কোচ হিসেবে তাঁর লড়াইও এ দিন স্বার্থক হলো। আবেগে ভাসলেন কোচ অমল মজুমদার বলেন, ‘কোনও সন্দেহ নেই, দারুণ জয়। এই জয় দলের মেয়েদের প্রাপ্য ছিল। ওদের পরিশ্রম সামনে থেকে দেখেছি। আমি হারকে হার হিসেবে দেখিনি। দেখেছি কোথায় খামতি ছিল। যেই ম্যাচে দাপট দেখিয়েছি সেগুলিকে কাজে লাগিয়েছি। আমরা কিছু ভুল করলে, তার থেকে শিক্ষা নিয়েছি। যার ফল এই বিশ্বকাপ জয়। শেফালি বর্মা, ম্যাজিকাল। সেমি ফাইনালে এসে কোনও চাপ ছাড়া খেলেছে। বল হাতে উইকেট তুলল। শেষ দুই বছরে আমরা ফিটনেস নিয়ে কাজ করেছি। আমি এর থেকে বেশি কিছু চাইতে পারি না।’

  • ICC Women World Cup 2025: ঐতিহাসিক বিশ্বজয়, এক নতুন ভোর! ভবিষ্যতের অনুপ্রেরণা হরমনপ্রীতরা, অভিনন্দন প্রধানমন্ত্রী মোদির

    ICC Women World Cup 2025: ঐতিহাসিক বিশ্বজয়, এক নতুন ভোর! ভবিষ্যতের অনুপ্রেরণা হরমনপ্রীতরা, অভিনন্দন প্রধানমন্ত্রী মোদির

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: নারীশক্তির জয়। আবার ভারতে এল বিশ্বকাপ। বিশ্ব জয় করল ভারতের মেয়েরা। আইসিসি ওমেন্স ক্রিকেট ওয়ার্ল্ড কাপ (ICC Women Cricket World Cup) জিতল হরমনপ্রীত-শেফালি-দীপ্তিরা। এই প্রথম মহিলা বিশ্বকাপ জিতল ভারত। মেয়েদের এই সাফল্যে অভিনন্দন জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Narendra Modi), রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু থেকে শুরু করে ক্রীড়া, বিনোদন, রাজনৈতিক জগতের তাবড় ব্যাক্তিত্বরা। রাত ১২টার পর মেয়েরা যখন হাতে বিশ্বকাপ তুলল, প্রধানমন্ত্রী লিখলেন, “ঐতিহাসিক এই জয় ভবিষ্যতের চ্যাম্পিয়নদের খেলতে অনুপ্রাণিত করবে”।

    ঐতিহাসিক জয়, অনুপ্রেরণা

    ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৫২ রানে হারিয়ে প্রথমবার বিশ্বকাপ জয় করল ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট টিম। তাঁদের এই সাফল্যে শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করেন, “আইসিসি মহিলা বিশ্বকাপের ফাইনালে অসাধারণ জয় ভারতীয় টিমের। ফাইনালে তাদের পারফরম্যান্স অসাধারণ দক্ষতা ও আত্মবিশ্বাসকেই ফুটিয়ে তুলেছে। টুর্নামেন্ট জুড়ে টিম অতুলনীয় টিমওয়ার্ক ও লড়াকু মনোভাব দেখিয়েছে। আমাদের খেলোয়াড়দের অভিনন্দন। এই ঐতিহাসিক জয় ভবিষ্যতের চ্যাম্পিয়নদের খেলা বেছে নিতে অনুপ্রাণিত করবে।”

    প্রতিজ্ঞা করেই নেমেছিলেন ভারতের মেয়েরা

    অস্ট্রেলিয়াকে সেমিফাইনালে হারিয়ে ফাইনালে ওঠা ভারতই ফেভারিট ছিল। কিন্তু লরা উলভার্টের জন্য দক্ষিণ আফ্রিকাকে কঠিনতম প্রতিপক্ষই ধরা হচ্ছিল। টসে জিতে ভারতকে ব্যাটিং করতে পাঠিয়ে প্রোটিয়া ক্যাপ্টেন চেয়েছিলেন শিশির কাজে লাগাবেন। ভারতীয় বোলারদের মুশকিলে ফেলবেন। দুটোর কোনওটাই হল না। শেফালি আর স্মৃতি মান্ধানা মিলে ভারতকে ওপেনিং জুটিতে ১০০র বেশি রান দিয়েছিলেন। স্মৃতি সেমিতে রান পাননি। ফাইনালে বড় রানের হাতছানি ছিল। কিন্তু ৪৫ করে ফেরেন। শেফালি ৭৮ বলে ৮৭ করেন। ৭টা চার ও ২টো বিশাল ছয় দিয়ে সাজিয়েছেন ইনিংস। জেমাইমা রড্রিগস সেমিফাইনালে সেঞ্চুরি করে হারিয়েছিলেন অজিদের। কিন্তু ফাইনালে ২৪ করেন। হরমনপ্রীত কৌরও ২০তে থামেন। এখান থেকেই আবার খেলা ধরেন দীপ্তি শর্মা। সিনিয়র, নির্ভরশীল, অলরাউন্ডার, ঠান্ডা মাথার— চার স্কিলেই হাফসেঞ্চুরি করে গেলেন দীপ্তি। শেষ দিকে ভারতকে দ্রুত ২৯৮এ নিয়ে গেলেন বাংলার রিচা ঘোষ। মুম্বইয়ে হ্যারি, স্মৃতি, শেফালিদের সামনে ছিলেন লরা উলভার্ট। একদিকে ভাঙন, অন্যদিকে দক্ষিণ আফ্রিকার ক্যাপ্টেন। আসা-যাওয়ার মাঝে যেন একার মুঠোয় স্বপ্ন বহন করলেন লরা। সেমিফাইনালে করেছিলেন ১৬৯। ফাইনালেও তাঁর ব্যাটে দুরন্ত সেঞ্চুরি। কিন্তু ১০১ করে ফিরলেন উলভার্ট। যখন বল গ্রিপ করতে সমস্যা হচ্ছে শিশিরের জন্য, তখনই ভারতকে দীপ্তি দিলেন অফস্পিনার। তাঁর নবম ওভারটা ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট। পর পর উলভার্ট সহ নিলেন আরও একটা উইকেট। চাপের ম্যাচে প্রোটিয়ারা বরাবরই হাল ছেড়ে দেন। ১১ ভারতীয় কন্যা যে প্রতিপক্ষকে মাথা তুলতে দেবেন না, প্রতিজ্ঞা করেই নেমেছিলেন। ঠিক করে নিয়েছিলেন, যাই হোক না কেন ইতিহাসের দরজা খুলবেনই! দীপ্তি নিলেন ৫ উইকেট। দক্ষিণ আফ্রিকা শেষ ২৪৬ রানে। ৫২ রানে জয় ভারতের।

    দেশের গর্ব আকাশ ছুঁল

    শুধু প্রধানমন্ত্রী নন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও জয়ের পরই শুভেচ্ছা জানান। ভারতীয় মহিলা টিমের এই জয় দেশের মাথায় মুকুট ওঠার মুহূর্ত বলেই বর্ণনা করেন তিনি। এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, “হ্যাটস অফ বিশ্বজয়ী টিম ইন্ডিয়া। এটা দেশের জন্য গর্বের মুহূর্ত, আমাদের টিম আইসিসি ওমেন্স ওয়ার্ল্ড কাপ তুলল, দেশের গর্বকে আকাশ ছুঁল। তোমাদের অসাধারণ দক্ষতা লক্ষ লক্ষ মেয়েদের কাছে অনুপ্রেরণার পথ তৈরি করে দিল। গোটা টিমকে শুভেচ্ছা।” লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাও টিম ইন্ডিয়াকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, “আইসিসি মহিলা বিশ্বকাপ ২০২৫ জয়ের জন্য টিম ইন্ডিয়াকে অভিনন্দন। তোমরা শুধু ট্রফি জিতে আসো না, সমগ্র জাতির হৃদয় জয় করেছো। সাহস, দক্ষতা ও বিশ্বাসের এক দুর্দান্ত প্রদর্শনী দেখিয়েছো। প্রত্যেক ভারতীয় তোমাদের নিয়ে গর্বিত।”

    মহিলা ক্রিকেটকে আরও উচ্চতায় নিয়ে যাবে

    রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেল এক্সে ভারতীয় মহিলা দলকে শুভেচ্ছা জানিয়ে লেখেন, “ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের প্রতিটি সদস্যকে আমার আন্তরিক অভিনন্দন জানাই ২০২৫ সালের আইসিসি মহিলা ক্রিকেট বিশ্বকাপ জয়ের জন্য! ইতিহাস সৃষ্টি করেছে তারা—এই প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ জয় করল ভারতীয় মহিলা দল। তারা দীর্ঘদিন ধরেই দুর্দান্ত খেলছে, আর আজ তাদের প্রতিভা ও পারফরম্যান্সের উপযুক্ত ফল তারা পেয়েছে। এই ঐতিহাসিক মুহূর্ত মহিলা ক্রিকেটকে আরও উচ্চতায় নিয়ে যাবে। আমি গভীরভাবে শুভেচ্ছা জানাই ভারতকে গর্বিত করার জন্য।” বাস্তবিকই, তিরাশিতে কপিল’স ডেভিলস বিশ্বজয়ী হওয়ার পর যেমন দেশের পুরুষ ক্রিকেটের ‘বিশ্বায়ন’ হয়েছিল। হরমনদের এই জয়, ভারতের মহিলা ক্রিকেটের অবিকল বদল ঘটাবে। ২০১৭-সালে বিশ্বকাপ ফাইনালে উঠে, ঝুলনরা বুঝিয়েছিলেন ভারতের মেয়েরা ক্রিকেট খেলতে পারে। বদল এসেছিল সমর্থকদের মনেও। এবার চ্যাম্পিয়ন। এই জয় শুধু ট্রফি নয়, এ এক যুগবদলের সূচনা। যেমন ২৫ জুন, ১৯৮৩ সালে (Kapil Dev) কপিলের দল লর্ডসে (Lord’s) ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে ভারতীয় পুরুষ ক্রিকেটের চেহারা পাল্টে দিয়েছিল, তেমনই ২০২৫ সালের এই নভেম্বরের রবিবার মহিলাদের ক্রিকেটের নতুন ভোর।

  • ICC Women’s World Cup: নয়া চ্যাম্পিয়নের অপেক্ষায় ক্রিকেট বিশ্ব! ফাইনালে ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা কঠিন লড়াই

    ICC Women’s World Cup: নয়া চ্যাম্পিয়নের অপেক্ষায় ক্রিকেট বিশ্ব! ফাইনালে ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা কঠিন লড়াই

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: কাপ আর ঠোঁটের মধ্যে রয়েছে একটু ফারাক। অপেক্ষা আর কয়েক ঘণ্টার। সেমিফাইনালে কঠিন প্রতিপক্ষকে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা (India vs South Africa)। ফাইনালে (ICC Women’s World Cup) যে দলই জিতুক মহিলাদের এক দিনের বিশ্বকাপে এবার দেখা যাবে নতুন চ্যাম্পিয়ন। মহিলাদের এক দিনের বিশ্বকাপের ফাইনালে রবিবার নবি মুম্বইয়ের ডিওয়াই পটেল স্টেডিয়ামের বাইশ গজ পরীক্ষা নেবে দু’দলের। প্রথম বার ফাইনালে উঠেছেন লরা উলভার্টেরা। প্রথম বার ট্রফি জয়ে মরিয়া হরমনপ্রীত কৌরেরাও। শক্তির বিচারে তুল্যমূল্য লড়াই হতে পারে দু’দলের।

    ঘরের মাঠে এগিয়ে ভারত

    ভারতের বিশ্বকাপ অভিযান মোটেই মধুর ছিল না। দারুণ শুরু করেও পরপর ৩টি ম্যাচ হেরে গিয়েছিল ভারত। তবে সেই দুর্দশা কাটিয়ে পারফরম্যান্সের উপর ভর করেই সেমিফাইনালে ওঠে ভারত। সেখানে তাদের মুখোমুখি হয় অস্ট্রেলিয়া। আর সেই ম্যাচ রুদ্ধশ্বাসভাবে জিতে নেয় ভারতের মেয়েরা। সেমিফাইনালে জেমাইমা দারুণ পারফর্ম করেন। তিনি ১২৭ রানে ছিলেন অপরাজিত। তার ব্যাটের উপর ভর করেই অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ম্যাচ জেতে ভারত। পৌঁছে যায় ফাইনালে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ফাইনালে এগিয়ে রয়েছে ভারত। কারণ, প্রথমত দেশের মাটিতে হচ্ছে খেলা। ফলে দর্শকরা সাপোর্টে থাকবে। পিচও চেনা। শুধু তাই নয়, অস্ট্রেলিয়াকে দারুণ হারিয়ে ফাইনালে উঠেছে হরমনপ্রীত ব্রিগেড। তার ফলে আত্মবিশ্বাস থাকবে বেশি। সেটাও ম্যাচ জেতাতে সাহায্য করবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

    অতীত রেকর্ডে কে এগিয়ে

    ওডিআইতে এর আগে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার মেয়েরা ৩৪ বার মুখোমুখি হয়েছে। তাতে ভারতের মেয়েরা জিতেছে ২০ বার। আর প্রোটিয়াদের জয় ১৩ বার। এক ম্যাচ অমীমাংসিত। এ বার দেখার রবি-রাতে কোন দল করে বাজিমাত। বিশ্বকাপে যে টিমই জিতবে, সেটি তাদের প্রথম খেতাব। ওডিআই ফর্ম্যাটে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে এগিয়ে থাকলেও, এবারের ওডিআই বিশ্বকাপে লিগ পর্যায়ের ম্যাচে হেরে গিয়েছে ভারতীয় দল। বিশাখাপত্তনমে (Visakhapatnam) সেই ম্যাচে তিন উইকেটে জয় পায় প্রোটিয়ারা। টসে হেরে প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে ৪৯.৫ ওভারে ২৫১ রানে অলআউট হয়ে যায় ভারতীয় দল। ৪৮.৫ ওভারে সাত উইকেট হারিয়ে ২৫২ রান তুলে জয় পায় দক্ষিণ আফ্রিকা। সেই ম্যাচে ৭৭ বলে ৯৪ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন রিচা ঘোষ (Richa Ghosh)। রবিবারও তিনি ভালো পারফরম্যান্স দেখিয়ে ভারতীয় দলকে চ্যাম্পিয়ন করতে তৈরি।

    ভারতের মূল শক্তি ব্যাটিং

    হরমনপ্রীতের দলের মূল শক্তি ব্যাটিং। মহিলাদের এক দিনের ক্রিকেটে বিশ্বের এক নম্বর ব্যাটার স্মৃতি মন্ধানা। বিশ্বকাপে ফর্মে আছেন ওপেনার। আটটি ম্যাচে করেছেন ৩৮৯ রান। একটি শতরান এবং দু’টি অর্ধশতরান করেছেন। তাঁর সঙ্গে ইনিংস শুরু করবেন শেফালি বর্মা। এক বছর পর এক দিনের ক্রিকেটে সুযোগ পেয়েছেন। ছন্দে রয়েছেন। অনুশীলনে বড় শট নিচ্ছেন আত্মবিশ্বাসী শেফালি। মন্ধানা-শেফালি ওপেনিং জুটি জমে গেলে পাওয়ার প্লে-তেই ম্যাচের রাশ নিয়ে নিতে পারে ভারত। শুধু ওপেনিং নয়, ভারতীয় দলের মিডল অর্ডারও বিশ্বের অন্যতম সেরা। জেমাইমা, হরমনপ্রীত ফর্মে ফিরেছেন। দীপ্তি শর্মা, রিচা ঘোষের মতো আগ্রাসী ব্যাটার নামেন পাঁচ থেকে সাত নম্বরের মধ্যে। রয়েছেন আমনজ্যোৎ কৌরের মতো ব্যাটিং অলরাউন্ডার। হরলিন দেওলের মতো ব্যাটারকে সেমিফাইনালে খেলায়নি ভারত। মুম্বইয়ের চেনা পিচে এই ব্যাটিং লাইন আপের পক্ষে বড় রান তোলা অসম্ভব নয়। এ বারের বিশ্বকাপেই তিনটি ম্যাচে ভারত ৩৩০ বা তার বেশি রান তুলেছে। ব্যাটিং নিঃসন্দেহে ভারতীয় দলের প্রধান শক্তি।

    দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিংও বেশ শক্তিশালী

    ভারতীয় দলের আর এক শক্তির জায়গা স্পিন বোলিং। রাধা যাদব, দীপ্তি, স্নেহ রানা এবং শ্রী চরণির মতো স্পিনার রয়েছেন। বিশ্বকাপে ভাল ফর্মে রয়েছেন তিন জনই। দীপ্তি ১৭ উইকেট নিয়ে এখনও পর্যন্ত প্রতিযোগিতায় যুগ্ম সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহক। চরণি ১৩টি উইকেট নিয়েছেন। চার স্পিনার মিলে আট ম্যাচে নিয়েছেন ৪১টি উইকেট। ভারতীয় বোলারেরা নিয়েছেন ৬৯টি উইকেট। অর্থাৎ, ৫৯.৪২ শতাংশ উইকেট নিয়েছেন স্পিনারেরাই। মুম্বইয়ের ২২ গজে প্রতিপক্ষের ১০ উইকেট নেওয়া তাঁদের পক্ষে কঠিন নয়। বিশ্বকাপ ফাইনালে ভারতের পারফরম্যান্স অনেকটাই নির্ভর করবে স্পিনারদের উপর। দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিংও বেশ শক্তিশালী। উলভার্টদের সবচেয়ে ইতিবাচক দিক হল, প্রথম থেকেই দ্রুতগতিতে রান তুলতে পারেন প্রোটিয়া ব্যাটারেরা। জন্টি রোডসের দেশের মহিলা দলের ফিল্ডিংও বেশ ভাল। দক্ষিণ আফ্রিকার শক্তির আর একটি জায়গা হল জোরে বোলিং।

    ভারত বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচের খুঁটিনাটি

    ম্যাচটি কখন শুরু হবে: ভারতীয় সময় অনুসারে ভারত বনাম দক্ষিণ আফ্রিকার মেয়েদের ওয়ান ডে বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচটি শুরু হবে বিকেল ৩টে নাগাদ। ম্যাচের আগে ২.৩০মিনিটে টস হবে।

    কোথায় দেখা যাবে: ভারত বনাম দক্ষিণ আফ্রিকার মেয়েদের ওয়ান ডে বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচটির লাইভ টেলিকাস্ট দেখা যাবে টিভিতে স্টার স্পোর্টস নেটওয়ার্কে। এখানে ইংরেজি, হিন্দি এবং বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষায় খেলা দেখতে পারবেন। মোবাইলে এই ম্যাচের লাইভ স্ট্রিমিং দেখা যাবে জিওহটস্টার অ্যাপ্লিকেশনে। পাশাপাশি জিও হটস্টার ওয়েবসাইটে।

  • ICC Women’s World Cup: ওয়ান্ডার উওম্যান! অস্ট্রেলিয়ার দর্প চূর্ণ, জেমাইমা-হরমনের ব্যাটে বিশ্বকাপ ফাইনালে ভারত

    ICC Women’s World Cup: ওয়ান্ডার উওম্যান! অস্ট্রেলিয়ার দর্প চূর্ণ, জেমাইমা-হরমনের ব্যাটে বিশ্বকাপ ফাইনালে ভারত

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: হাত মুঠো করে বসে রয়েছে মুম্বই, দিল্লি, বেঙ্গালুরু, চেন্নাই, কলকাতা। বদলার এমন সুযোগ, বারবার মেলে না। কিন্তু প্রতিপক্ষ যে অস্ট্রেলিয়া। সাত বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন (ICC Women’s World Cup)। স্কোর বোর্ড বলছে, শুধু কঠিন নয়, তীব্র চাপেরও। নার্ভ একবার ফেল করলে হুড়মুড়িয়ে তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা। ৩৩৯ রানের পাহাড়প্রমাণ টার্গেট। কিন্তু হার না মানা মনোভাব নিয়েই যেন এদিন মাঠে নেমেছিলেন ২৫ বছরের মেয়ে জেমাইমা রড্রিগস (Jemimah Rodrigues)। দ্বিতীয় ওভারে ব্যাট করতে নামা ২৫ বছরের মেয়ে অবলীলায় সেঞ্চুরি করে গেলেন। প্রায় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে যখন হার, সেখান থেকে টিমকে তুলে দিলেন সরাসরি ফাইনালে। নট আউট ১২৭ রানের আশ্চর্য ইনিংস খেলে। নবি মুম্বইয়ের মাঠে প্রথমে ব্যাট করে ৩৩৮ রান করেছিল অস্ট্রেলিয়া। জেমাইমা ১২৭ ও অধিনায়ক হরমনপ্রীত কৌরের ৮৯ রানে ভর করে সেই রান তাড়া করে জিতল ভারত।

    হিলিদের জয়রথ থামালেন হরমনপ্রীতেরা

    ২০১৭ সালের বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে এই অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছিল ভারত। হরমনপ্রীত কৌর সেঞ্চুরি করেছিলেন। সেই ইনিংসকেও ছাপিয়ে গেলেন জেমি। অবশ্য এই ম্যাচেও হ্যারি ৮৮ বলে ৮৯ রানের ইনিংস খেলে গিয়েছেন। জেমাইমার সঙ্গে হরমনপ্রীতের ১৫৬ বলে ১৬৭ রানের পার্টনারশিপটা না থাকলে কিন্তু জয়ের আনন্দ চোখের জলে বদলে যেত। ২০১৭ সালের বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে শেষ বার হেরেছিল অস্ট্রেলিয়া। এই ভারতের কাছেই। তার পর থেকে আর এক দিনের বিশ্বকাপে হারেনি তারা। আট বছর পর সেই ভারতের কাছেই হারল অস্ট্রেলিয়া। হিলিদের জয়রথ থামালেন হরমনপ্রীতেরা।

    স্বপ্ন দেখছিলেন জেমি

    নবি মুম্বইয়ে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন অ্যালিসা হিলি। অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক চেয়েছিলেন, বড় রান বোর্ডে তুলতে। সেই মতোই ভারতীয় বোলিংকে নিয়ে কার্যত ছেলেখেলা করেছিল অস্ট্রেলিয়া। ফোব লিচফিল্ড একাই প্রায় ম্যাচটা কেড়ে নিয়েছিলেন। ওপেন করতে নেমে মাত্র ৯৩ বলে ১১৯ রানের ইনিংস খেলেন। চার-ছক্কায় দিশেহারা হয়ে গিয়েছিলেন দীপ্তি শর্মা, রাধা যাদবরা। তিনটে লাগাতার রান আউট আর দিপ্তীর দুটো উইকেট শেষ পর্বে না থাকলে সেমিফাইনালের গল্প অন্যভাবে লিখতে হত। এলিস প্যারি ৭৭ করেন। অ্যাশলি গার্ডনার ৬৩ করেন। ৩৩৯ রানের টার্গেটের সামনে দাঁড়িয়ে ফাইনালের স্বপ্ন দেখা কঠিন! ভারত দেখেছিল। নিভে যেতে যেতে সেই স্বপ্নকে মুঠোতেও ধরল ওই জেমাইমা রড্রিগস আর হরমনপ্রীত কৌরের জন্য। সারা টুর্নামেন্টে দারুণ ছন্দে থাকলেও সেমিতে রান পাননি স্মৃতি মান্ধানা। মাত্র ২৪ করে ফেরেন। তাঁর আগে ফিরে গিয়েছেন প্রতীকা রাওয়ালের বদলে ওপেন করতে নামা শেফালি ভার্মা (১০)। শুরুতেই ধাক্কা। বাকি ম্যাচ সামলে দেওয়া যাবে, এমন স্বপ্ন হয়তো অনেকেই দেখছিলেন না। জেমি দেখেছিলেন।

    চোখের জল সামলাতে পারছিলেন না জেমি

    ২০০৩ বিশ্বকাপের সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের ভারত অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ফাইনালে ৩৬০ রান তাড়া করে জিততে পারেনি ৷ ২০২৫-এ ভারতের মেয়েরা রেকর্ড ৩৩৯ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে ম্যাচ জিততে তাঁরা সফল। ম্যাচ শেষে তখন কথা বলবেন কী, চোখের জলই সামলাতে পারছিলেন না। অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে কাঁদতে কাঁদতেই কোনও মতে মাইক্রোফোনটা হাতে নিয়ে জেমাইমা রড্রিগেজ নিজের মনের সব কথা এদিন ডিওয়াই পাটিল স্টেডিয়ামে বললেন ৷ জেমাইমা বলেন, ‘‘স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে। স্বপ্নটা এখনও শেষ হয়নি। সত্যিই গত এক মাসের কাজটা কঠিন ছিল। একা এটা করতে পারিনি। মা, বাবা, কোচ এবং আমার উপর যাঁরা বিশ্বাস রেখেছিলেন, তাঁদের প্রত্যেককে ধন্যবাদ জানাতে চাই।’’

    জানতাম জ্বলে উঠতে হবে

    ১৩৪ বলে অপরাজিত ১২৭ রানের এরকম দুর্ধর্ষ ইনিংস খেলবেন, ভাবেননি। জেমাইমা বললেন, ‘‘আমি জানতাম না যে, তিন নম্বরে ব্যাট করতে হবে। মাঠে নামার পাঁচ মিনিট আগে, আমাকে বলা হয়েছিল যে আমি তিন নম্বরে ব্যাট করছি। আজ আমার হাফ-সেঞ্চুরি বা সেঞ্চুরিটা বিষয় নয়। ভারতকে জিতিয়ে আনাই লক্ষ্য ছিল। জেমাইমা আরও বলেন, ‘‘আগে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচগুলো আমরা হেরেছি। গত বছর আমাকে এই বিশ্বকাপ থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল। কোনও কিছুই নিজের নিয়ন্ত্রণে ছিল না। এই সফরে আমি প্রায় প্রতিদিনই কেঁদেছি। মানসিক ভাবে ভাল জায়গায় ছিলাম না। একটা উদ্বেগের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলাম। জানতাম আমাকে জ্বলে উঠতে হবে।’’

    অসাধ্যসাধন করল ভারত

    জ্বলে উঠলেন জেমাইমা। অসাধ্যসাধন করল ভারত। সাত বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়াকে ৫ উইকেটে হারিয়ে মহিলাদের বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠলেন হরমনপ্রীত কৌরেরা। এক দিনের ক্রিকেটে এটি ভারতের সর্বাধিক রান তাড়া করে জয়। আমানজ্যোত কৌরের ব্যাটে ফাইনাল বাউন্ডারি আসতেই এদিন মাঠে আবেগের বাঁধ ভেঙে যায়। আজ বিশ্ব ক্রিকেট দেখল এক নতুন সূর্যোদয়। মহিলা ক্রিকেট বিশ্বকাপের ময়দানে দাপট দেখানো ‘মহা-শক্তিশালী’ অস্ট্রেলিয়া অবশেষে তাদের সিংহাসনচ্যুত হল। রবিবার ফাইনালে ভারতের সামনে দক্ষিণ আফ্রিকা। অর্থাৎ, এক দিনের বিশ্বকাপে এবার পাওয়া যাবে এক নতুন চ্যাম্পিয়ন।

     

     

     

     

LinkedIn
Share