Tag: Illegal Bangladeshi Muslims

  • Illegal Bangladeshi Muslims: নিঃশব্দে বাংলাদেশ সীমান্তে ‘অপারেশন পুশব্যাক’ চালাচ্ছে ভারত, কী ঘটছে সেখানে?

    Illegal Bangladeshi Muslims: নিঃশব্দে বাংলাদেশ সীমান্তে ‘অপারেশন পুশব্যাক’ চালাচ্ছে ভারত, কী ঘটছে সেখানে?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পহেলগাঁও হত্যাকাণ্ডেরে জেরে পড়শি দেশকে সবক শেখাতে দেশের পশ্চিমপ্রান্তে ‘অপারেশন সিঁদুর’ চালিয়েছিল ভারত (Deportation)। সরকারি কর্তাদের অবশ্য দাবি, জারি রয়েছে ‘অপারেশন সিঁদুর’। ভারত পাকিস্তানের জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করতেই চালিয়েছিল ‘অপারেশন সিঁদুর’। পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরের বিভিন্ন জায়গায় জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস করে দিয়েছে ভারত (Illegal Bangladeshi Muslims)। তার পরেই বাংলাদেশি মৌলবাদীদের একাংশ ভারতের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরাতে থাকে।

    ‘অপারেশন পুশব্যাক’ (Illegal Bangladeshi Muslims)

    বাংলাদেশের এক মৌলবীকে আত্মঘাতী জঙ্গি বাহিনী পাঠিয়ে কলকাতা দখল করার হুমকি দিতেও শোনা যায়। তার পরেই গোপনে ‘অপারেশন পুশব্যাক’ চালু করেছে ভারত। এর আগে নানা সময় ভারতে অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশিদের ফেরত নিয়ে ঢাকাকে অনুরোধ করেছিল ভারত। কিন্তু ঢাকা সেই বাংলাদেশিদের ফেরত নিতে অস্বীকার করে। অনেক ক্ষেত্রে তারা যে বাংলাদেশি তাও অস্বীকার করতে শুরু করে বাংলাদেশ সরকার। এর পরেই দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে যেসব বাংলাদেশি মুসলমানকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যারা অবৈধভাবে সীমান্ত পেরিয়ে ছড়িয়ে পড়েছিল দেশের বিভিন্ন প্রান্তে, তাদের ধরে ধরে পুশব্যাক করানো হচ্ছে বাংলাদেশে।

    মুখে কুলুপ কেন্দ্রের

    জানা গিয়েছে, অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেছিল এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে বসবাস করছিল, এমন বহু বাংলাদেশি মুসলমানকে ৬ মে থেকে গোপনে সড়ক ও বিমানপথে পশ্চিমবঙ্গ, অসম, মেঘালয় এবং ত্রিপুরার আন্তর্জাতিক সীমান্তবর্তী বিভিন্ন স্থানে নিয়ে গিয়ে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। প্রসঙ্গত, এই প্রথমবার ভারত একতরফাভাবে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী মুসলমানদের স্বদেশে ফেরত পাঠানো শুরু করেছে। যদিও এ ব্যাপারে মুখে কুলুপ এঁটেছে কেন্দ্রীয় সরকার। শুধু তাই নয়, সরকারের তরফে অস্বীকারও করা হয়েছে ‘অপারেশন পুশব্যাক’কেও।

    পুশব্যাক করতে সময় লাগত বছরের পর বছর

    এতদিন ভারত ১৯৭৫ সালের ভারত-বাংলাদেশে যৌথ সীমান্ত নির্দেশিকা, ২০১১ সালের সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা এবং বিএসএফ এবং বিজিবির কর্তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অনুপ্রবেশকারীদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হত। এই প্রক্রিয়ায় পুশব্যাক করতে সময় লাগত বছরের পর বছর। এই দীর্ঘসূত্রিতার বোঝার দায় বইতে হত ভারতকে। অনেক ক্ষেত্রে আবার বাংলাদেশিরা তাদের দেশের নাগরিকদের ফেরত নিতেও অস্বীকার করত। তার ফলে ভারতের বেশ কয়েকটি রাজ্যে ভিড় বাড়তে থাকে অবৈধ মুসলমান অনুপ্রবেশকারীদের। তারা এদেশে যে কেবল রোজগারের ধান্ধায় আসত, তা নয়, নানা অসামাজিক কাজকর্মেও জড়িয়ে পড়ত। কেউ কেউ তো আবার জঙ্গি সংগঠনের স্লিপার সেল হিসেবেও কাজ করত! যেহেতু বাংলাদেশ তাদের নাগরিকদের ফেরাতে অস্বীকার করত, তাই ভারত এবার ঢাকঢোল না পিটিয়েই শুরু করে ‘অপারেশন পুশব্যাক’। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের এক পদস্থ কর্তা সংবাদ মাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে বলেন, “বাংলাদেশ বারবার এই অনুপ্রবেশকারীদের তাদের নাগরিক হিসেবে স্বীকার করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে এবং ফেরত নিতে চায়নি।” তিনি বলেন, “এটি অত্যন্ত হতাশাজনক (Deportation)।”

    তুষ্টিকরণের রাজনীতি

    গত ২২ এপ্রিল দক্ষিণ কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে পাক মদতপুষ্ট জঙ্গিরা বেছে বেছে হত্যা করে ২৭ জন হিন্দু পর্যটককে। তার পরেই কেন্দ্রীয় সরকার সব রাজ্যকে ভারতে অবৈধভাবে বসবাসকারী পাকিস্তানি ও বাংলাদেশিদের শনাক্ত করতে ও তাদের গ্রেফতারের নির্দেশ দেয় (Illegal Bangladeshi Muslims)। কেন্দ্রীয় সরকারের এই নির্দেশ পেয়ে গা ঝাড়া দিয়ে ওঠে বিভিন্ন রাজ্য সরকার। অসম, গুজরাট, দিল্লি, হরিয়ানা, কর্নাটক, অন্ধ্রপ্রদেশ এবং ওড়িশার মতো বেশ কয়েকটি রাজ্যে গ্রেফতার করা হয় বহু বাংলাদেশি এবং রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীকে। তুষ্টিকরণের রাজনীতিতে অভ্যস্ত কয়েকটি রাজ্যে আবার অনুপ্রবেশকারী মুসলমানদের ধরতে গা ছাড়া ভাবও দেখা গিয়েছে।

    দুর্গম ও অনাবাদী এলাকা দিয়ে পুশব্যাক

    ধৃত এই অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে ভারত ‘অপারেশন পুশব্যাক’ চালু করে। এর পরেই বিএসএফের শীর্ষ কর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয় সীমান্তের এমন কিছু অংশ চিহ্নিত করতে, যেখান দিয়ে এই পুশব্যাক নির্বিঘ্নে চালানো যাবে। নির্দেশ পেয়েই কোমর বেঁধে মাঠে নেমে পড়ে বিএসএফ। তারা বেছে নেয় ভারতের সীমান্তবর্তী কিছু দুর্গম ও অনাবাদী এলাকা যেখানে বিজিবি নিয়মিত টহল দেয় না। এরপর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সেই তালিকা ছোট করে কিছু নির্বাচিত অংশে এই পুশব্যাক অভিযান অনুমোদন করে। এর মধ্যে রয়েছে অসম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও পশ্চিমবঙ্গের কিছু সীমান্ত অঞ্চল, যার মধ্যে সুন্দরবনও রয়েছে।

    বাংলাদেশি মুসলমানকে ফেরত

    জানা গিয়েছে, গত ৬ মে ত্রিপুরা সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে ৬৬ জন বাংলাদেশি মুসলমানকে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের চট্টগ্রাম বিভাগের খাগড়াছড়ি জেলায় ফেরত পাঠানো হয়েছে (Illegal Bangladeshi Muslims)। বাংলাদেশি সূত্র অনুযায়ী, ১৫ জনকে মাতিরাঙ্গার তাইডং সীমান্ত দিয়ে, ২৭ জনকে গোমতীর শান্তিপুর সীমান্ত দিয়ে এবং ২৪ জনকে পানছড়ির রূপসেনপাড়া সীমান্ত দিয়ে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এই সব এলাকাই খাগড়াছড়ি জেলার। সেদিন যাদের ফেরত পাঠানো হয়, তাদের অনেকেই গুজরাটে গ্রেফতার হয়েছিল। তাদের বিমানপথে ত্রিপুরায় এনে বিএসএফের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পরে ফেরত পাঠানো হয় বাংলাদেশে। ওই ৬৬ জনকে বিজিবি হেফাজতে নেয় এবং তাদের পরিচয় যাচাই করে নিশ্চিত হয় যে তারা বাংলাদেশি নাগরিক (Deportation)।

    বিজিবি তাদের পরিচয় যাচাই করে

    এর ঠিক পরের দিনই বিজিবি ফের শনাক্ত করে ১৫ জন বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীকে। তাদের পাঠানো হয় সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জে। বিজিবি তাদের পরিচয় যাচাই করে জানতে পারে যে তারা বাংলাদেশের নড়াইল ও চট্টগ্রাম জেলার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা। ১৫ জনের এই দলটি গত কয়েক বছর ধরে অসমে অবৈধভাবে বসবাস করছিল। ভারতীয় নাগরিকত্বের নথিও সংগ্রহ করে ফেলেছিল। দু’সপ্তাহ আগে অসম পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে এবং তাদের বাড়িঘর ভেঙে দেয়। বিজিবি যে এই ১৫ জনকে হেফাজতে নিয়েছিল, তারা প্রায় ৩০০ জনের দলের একটা অংশ। এরপর থেকে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের বিভিন্ন অংশ দিয়ে বিপুল সংখ্যক অনুপ্রবেশকারী মুসলমানকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

    নাটকীয় ঘটনা

    ‘অপারেশন পুশব্যাকে’র নাটকীয় ঘটনাটি ঘটে ৯ মে ভোরে। সেদিন ৭৮ জন অবৈধ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীকে নৌকায় করে নিয়ে গিয়ে রেখে আসা হয় বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের একটি দুর্গম দ্বীপ মন্দরবারিয়ায়। পরে বাংলাদেশের কোস্ট গার্ড তাদের হেফাজতে নেয় এবং পুলিশকে হস্তান্তর করে। যাচাই করে দেখা যায়, তারা সত্যিই বাংলাদেশি নাগরিক, যারা ভারতে অনুপ্রবেশ করেছিল (Illegal Bangladeshi Muslims)। মন্দরবারিয়া দ্বীপে নিয়ে যাওয়া অনুপ্রবেশকারীদের কাউকে কাউকে গুজরাট ও দিল্লি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তারা জাল ভারতীয় নথিপত্র সংগ্রহ করেছিল। তাদের মধ্যে কেউ কেউ ভারতীয় মহিলাদের বিয়ে করেছিল, তাদের সন্তানও রয়েছে (Deportation)।

    মোদির বার্তা

    স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের একটি সূত্রের খবর, এই পুশব্যাক চালিয়ে যাওয়া হবে। কোনও দেশই বিপুল সংখ্যক বিদেশি, যারা অবৈধভাবে প্রবেশ করে বসবাস করছে, তাদের উপস্থিতি মেনে নিতে পারে না। যদি তাদের স্বদেশ তাদের নিজের নাগরিক হিসেবে স্বীকার করতে অস্বীকার করে এবং তাদের ফেরত নিতে না চায়, তাহলে অন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হয়। এ প্রসঙ্গে ওই সূত্র এপ্রিলের শুরুতে ব্যাঙ্ককে বিমস্টেকে শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মহম্মদ ইউনূসের কথোপকথনের টানেন। তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী মোদি ইউনূসকে স্পষ্ট ও দৃঢ়ভাবে জানিয়ে দিয়েছিলেন যে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত লঙ্ঘনযোগ্য নয়। ভারত সীমান্ত অতিক্রম করে সংঘটিত অপরাধ ও অনুপ্রবেশ সহ্য করবে না এবং এসব মোকাবিলায় কঠোর পদক্ষেপ করবে। অপারেশন পুশব্যাক অবৈধ অনুপ্রবেশকারী ও সীমান্ত লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর নীতির প্রকাশ।”

    ঢাকাকে স্পষ্ট বার্তা দিল্লির

    বাংলাদেশের সন্দেহ ভারত গত এক (Deportation) সপ্তাহে কয়েক হাজার মানুষকে চুপিসারে বাংলাদেশে ফেরত পাঠিয়েছে এবং তারা সকলেই নিজেদের পুরনো গ্রামে ফিরে গিয়েছে (Illegal Bangladeshi Muslims)। ভারতের অপারেশন পুশব্যাক নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলতে না পারলেও, রাগে গরগর করছে বিজিবি। বাহিনীর ডিজি মেজর জেনারেল মহম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকির দাবি, ভারত যা করছে, তা অমানবিক। সীমান্তে নজরদারি বাড়ালেও, বিজিবি প্রধান স্বীকার করে নিয়েছেন, একে আটকানো সম্ভব নয়। একইসঙ্গে তিনি এও জানান যে, ভারত যেহেতু রাষ্ট্রসংঘের ১৯৫১ বা ১৯৬৭ সালের রেফিউজি কনভেনশনের স্বাক্ষর করেনি, তাই তা ভারতের ওপর কার্যকর হবে না। ফলে, বাংলাদেশ যদি রাষ্ট্রসংঘে ভারতের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেও, তাতে লাভের লাভ কিছু হবে না। ঢাকার দাবি, তারা ভারতের বিদেশমন্ত্রককে চিঠি দিয়ে বৈঠকে বসার আহ্বান জানিয়েছে। যদিও, ভারত কোনও প্রকার চিঠি পাওয়ার কথা অস্বীকার করেছে। কেন্দ্রীয় সূত্রের মতে, ঢাকাকে স্পষ্ট করে দিল্লি জানিয়ে দিয়েছে যে, অপারেশন পুশব্যাক চলবে।

LinkedIn
Share