Tag: India Maritime Week 2025

  • PM Modi: “ভারতের সামুদ্রিক শিল্পের মাইলফলক বছর ২০২৫”, বললেন প্রধানমন্ত্রী

    PM Modi: “ভারতের সামুদ্রিক শিল্পের মাইলফলক বছর ২০২৫”, বললেন প্রধানমন্ত্রী

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: “২০২৫ সাল ভারতের সামুদ্রিক শিল্পের জন্য একটি মাইলফলক বছর হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।” বুধবার মুম্বইয়ে গ্লোবাল মেরিটাইম লিডার্স কনক্লেভে ভাষণ দিতে গিয়ে কথাগুলি বলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Modi)। ‘ইন্ডিয়া মেরিটাইম উইক ২০২৫’-এর (India Maritime Week 2025) তৃতীয় দিন ছিল বুধবার। এদিন ওই অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী। উপস্থিত ছিলেন আন্তর্জাতিক প্রতিনিধি, নৌবাহিনীর ক্যাডেট এবং শিল্পক্ষেত্রের শীর্ষ ব্যক্তিরাও। প্রধানমন্ত্রী এই অনুষ্ঠানকে ভারতের সামুদ্রিক যাত্রার এক গৌরবময় মুহূর্ত হিসেবে উল্লেখ করেন। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে সামুদ্রিক শিল্পে ভারত যে ব্যাপক উন্নতি করেছে, এদিন বক্তৃতা দিতে গিয়ে তারও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

    দেশীয় সবুজ হাইড্রোজেন উৎপাদন কেন্দ্র (PM Modi)

    তিনি বলেন, “২০২৪–২৫ অর্থবর্ষে ভারতের প্রধান বন্দরগুলি আমাদের ইতিহাসে সর্বাধিক পরিমাণ পণ্য পরিবহণ করেছে। শুধু তাই নয়, কাণ্ডলা বন্দরই দেশের প্রথম বন্দর যেখানে মেগাওয়াট-স্কেলের দেশীয় সবুজ হাইড্রোজেন উৎপাদন কেন্দ্র চালু হয়েছে।” প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এই অনুষ্ঠানটি ২০১৬ সালে শুরু হয়েছিল। আজ এটি একটি সত্যিকারের বৈশ্বিক সম্মেলনে পরিণত হয়েছে।”  তিনি বলেন, “৮৫টিরও বেশি দেশের অংশগ্রহণ ভারতের ক্রমবর্ধমান সামুদ্রিক শক্তি সম্পর্কে বিশ্বের কাছে একটি শক্তিশালী বার্তা পাঠাচ্ছে।” প্রধানমন্ত্রী নৌপরিবহণ খাতে একাধিক বৃহৎ প্রকল্পের উদ্বোধন এবং কোটি কোটি টাকার সমমূল্যের মউ স্বাক্ষর করার কথাও ঘোষণা করেন। উপস্থিত দর্শকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “এই অনুষ্ঠানে আপনাদের উপস্থিতি ভারতের সামুদ্রিক সক্ষমতার প্রতি বিশ্বের আস্থার প্রতিফলন।”

     কী বললেন প্রধানমন্ত্রী?

    এদিন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু বন্দর কর্তৃপক্ষের গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন সম্পর্কের প্রসঙ্গও টানেন (PM Modi)। এখানে ভারত মুম্বই কন্টেইনার টার্মিনালের দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এই সম্প্রসারণের ফলে বন্দরের পণ্য পরিচালনার ক্ষমতা দ্বিগুণ হয়েছে, যা একে ভারতের সবচেয়ে বড় কন্টেইনার বন্দর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে (India Maritime Week 2025)।” তিনি জানান, এই সাফল্য এসেছে ভারতের বন্দর পরিকাঠামো খাতে এ পর্যন্ত হওয়া সবচেয়ে বড় বৈদেশিক প্রত্যক্ষ বিনিয়োগের (FDI) মাধ্যমে। প্রধানমন্ত্রী এই প্রকল্পে অংশীদারিত্বের জন্য সিঙ্গাপুরকে ধন্যবাদ জানান। তিনি জানান, পুরানো, ঔপনিবেশিক যুগের জাহাজ চলাচল সম্পর্কিত আইনগুলি পরিবর্তন করে আধুনিক ও ভবিষ্যতমুখী আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। এটি একবিংশ শতাব্দীর প্রয়োজন অনুযায়ী সাজানো হয়েছে। তিনি বলেন, “এই নতুন আইনগুলি রাজ্য সামুদ্রিক বোর্ডগুলিকে ক্ষমতা দিয়েছে, অগ্রাধিকার দিচ্ছে নিরাপত্তা ও মজবুত উন্নয়নকে, উৎসাহিত করছে বন্দর ব্যবস্থাপনায় ডিজিটাল প্রযুক্তির সমন্বয়কে।”

    মোটা অঙ্কের বিনিয়োগ

    প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে উঠে এসেছে সামুদ্রিক শিল্পে মোটা অঙ্কের বিনিয়োগের কথাও। তিনি জানান, প্রায় ২৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (২.২ লাখ কোটি টাকা) মূল্যের নয়া বিনিয়োগ হতে চলেছে। এটি ভারতের সামুদ্রিক সক্ষমতায় এক বিশাল উত্থানের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলেও জানান তিনি। প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণ শুরু করেন এই বলে যে, তিরুবনন্তপুরমে অবস্থিত ভিঝিঞ্জাম আন্তর্জাতিক সমুদ্রবন্দর, যা ভারতের প্রথম গভীর সমুদ্র ট্রানশিপমেন্ট হাব, এ বছর সম্পূর্ণরূপে কাজ শুরু করেছে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় কনটেইনার জাহাজ এমএসসি-ইরিনা সেখানে নোঙরও করেছে।

    ভারত কনটেইনার শিপিং লাইন

    তিনি জানান, শিপিং কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া ২০৪৭ সালের মধ্যে তাদের বহরে ২১৬টি জাহাজ যুক্ত করবে। এর মধ্যে থাকবে বাল্ক ক্যারিয়ার, ট্যাঙ্কার এবং অফশোর ভেসেলসও। প্রধানমন্ত্রী এদিন উদ্বোধন করেন ভারতের নিজস্ব ভারত কন্টেইনার শিপিং লাইন, যার বহরে থাকবে ৫১টি কন্টেইনার জাহাজ। এই খাতে বিনিয়োগ করা হবে ৬০ হাজার কোটি টাকা। তেল ও গ্যাস খাতের সরকারি সংস্থাগুলি ৪৭ হাজার ৮০০ কোটি টাকার ৫৯টি নতুন জাহাজ কেনার অর্ডারও দিয়েছে। একটি নতুন গ্রিন টাগ প্রোগ্রামও চালু করা হয়েছে (India Maritime Week 2025)। এই প্রোগ্রামে ১২ হাজার কোটি টাকায় ১০০টি পরিবেশবান্ধব টাগবোট কেনা হবে। ভারতের বন্দরগুলি আরও মজবুত করতেই এই ব্যবস্থা। ড্রেজিং কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া ৩ হাজার ৭৭৫ কোটি টাকায় ১১টি ড্রেজারও কিনবে (PM Modi)।

    এদিনের অনুষ্ঠানে বন্দর, জাহাজ ও জলপথ বিষয়ক মন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোওয়াল প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিভঙ্গির প্রশংসা করে বলেন, “এই সম্মেলন হল দৃষ্টি, শিক্ষা, নীতি ও উদ্ভাবনের এক মিলনক্ষেত্র।” মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীসও ভাষণ দেন এদিন। তিনি বলেন, “ইন্ডিয়া মেরিটাইম উইক এখন এমন এক মঞ্চে পরিণত হয়েছে, যেখানে বিশ্বের নবীন উদ্ভাবনগুলি ভারতের বন্দর ও জলপথের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে।” প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ (India Maritime Week 2025) জানিয়ে তিনি বলেন, “ভারতের সামুদ্রিক ক্ষেত্রকে নতুনভাবে কল্পনা করে তিনি এক অভূতপূর্ব পরিবর্তনের সূচনা করেছেন (PM Modi)।”

  • India Maritime Week: ২০৪৭-এর মধ্যেই লক্ষ্যপূরণ! বিশ্বে বৃহৎ জাহাজ নির্মাণকারী দেশ হওয়ার পথে ভারত

    India Maritime Week: ২০৪৭-এর মধ্যেই লক্ষ্যপূরণ! বিশ্বে বৃহৎ জাহাজ নির্মাণকারী দেশ হওয়ার পথে ভারত

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বিশ্বের শীর্ষ পাঁচটি জাহাজ নির্মাতা দেশের অন্যতম হয়ে উঠতে চলেছে ভারত। ২০৪৭ সালের মধ্যেই এই সাফল্য মিলবে। “বিকশিত ভারত ২০৪৭” লক্ষ্য সামনে রেখে কেন্দ্র সরকার এবার জোর দিচ্ছে স্বনির্ভর সামুদ্রিক খাতে বিনিয়োগ ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে। ভারতের বন্দর, জাহাজ চলাচল ও জলপথ মন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল সোমবার (২৭ অক্টোবর) মুম্বইয়ে আয়োজিত ইন্ডিয়া মেরিটাইম উইক ২০২৫ (IMW 2025) অনুষ্ঠানে ঘোষণা করেন যে, দেশীয় জাহাজ বহর এবং জাহাজ নির্মাণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করাই সরকারের মূল লক্ষ্য।

    ১০ লক্ষ কোটি টাকার সমঝোতা চুক্তি

    জাহাজ ও জলপথ মন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল বলেন, “আমাদের নিজস্ব জাহাজ না থাকার কারণে প্রতি বছর বিদেশি শিপিং কোম্পানিগুলিকে ৭০-৭৫ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করতে হয়। আমরা নিজেদের ফ্লিট এবং ভারতীয় পতাকাবাহী জাহাজ বাড়িয়ে প্রতি বছর প্রায় ৪-৫ লক্ষ কোটি টাকা সাশ্রয় করতে পারব। এটাই আমাদের স্বনির্ভর হওয়ার লক্ষ্য।” এই অনুষ্ঠানে মোট ১০ লক্ষ কোটি টাকার সমঝোতা চুক্তি (MoU) স্বাক্ষরিত হয়েছে, যার মধ্যে ১.৫৫ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে জাহাজ নির্মাণ খাতে বিনিয়োগের জন্য। সোনোয়াল জানান, গত এক দশকে ভারতের বন্দরগুলির বার্ষিক পণ্য প্রক্রিয়াকরণ ক্ষমতা ১,৩৫০ মিলিয়ন টন থেকে বেড়ে ২,৭০০ এমটিপিএ (MTPA) হয়েছে। আগামী ২০৪৭ সালের মধ্যে এই ক্ষমতা ১০,০০০ এমটিপিএ-তে উন্নীত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। পাশাপাশি ক্রুজ পর্যটনে দশগুণ বৃদ্ধি এবং উপকূল ও অভ্যন্তরীণ জলপথে কার্গো পরিবহণের অংশীদারি ১২ শতাংশে উন্নীত করার পরিকল্পনা রয়েছে। অনুষ্ঠানে আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প ও অংশীদারিত্বের ঘোষণা করা হয়।

    ভারত ও নেদারল্যান্ডসের মধ্যে সামুদ্রিক সহযোগিতা চুক্তি

    কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানান, সরকার সামুদ্রিক খাতের বাজেট ছয়গুণ বাড়িয়েছে। তিনি বলেন, ১০ বিলিয়ন ডলারের বধভন বন্দর প্রকল্প এবং ৫ বিলিয়ন ডলারের গ্রেট নিকোবর প্রকল্প ভারতের বৈশ্বিক সামুদ্রিক ক্ষমতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। একই সঙ্গে এদিন ভারত ও নেদারল্যান্ডসের মধ্যে একটি সামুদ্রিক সহযোগিতা চুক্তি (Maritime Cooperation MoU) স্বাক্ষরিত হয়েছে। এর আওতায় রটারডাম ও ভারতের প্রধান বন্দরগুলির মধ্যে একটি সবুজ ও ডিজিটাল সি করিডর (Green and Digital Sea Corridor) গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে। তাছাড়া আদানি পোর্টস, জেএসডব্লিউ ইনফ্রাস্ট্রাকচার, গোয়া শিপইয়ার্ড এবং আবু ধাবি পোর্টস গ্রুপসহ বেশ কয়েকটি দেশি-বিদেশি সংস্থার সঙ্গে সবুজ জাহাজ নির্মাণ, আর্থিক বিনিয়োগ ও বন্দর সম্প্রসারণ সংক্রান্ত একাধিক ব্যবসায়িক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে এই সম্মেলনে। বিশেষজ্ঞ মহলের অভিমত, ভারতের সামুদ্রিক খাতের এই বিশাল উদ্যোগ দেশকে শুধু আত্মনির্ভরতার পথে নয়, বরং বৈশ্বিক জাহাজ নির্মাণের মানচিত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে পৌঁছে দিতে চলেছে।

  • Amit Shah: গ্রেট নিকোবর প্রকল্প ভারতের সামুদ্রিক বাণিজ্যকে ত্বরান্বিত করবে, দাবি অমিত শাহের

    Amit Shah: গ্রেট নিকোবর প্রকল্প ভারতের সামুদ্রিক বাণিজ্যকে ত্বরান্বিত করবে, দাবি অমিত শাহের

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: গ্রেট নিকোবর প্রকল্প (Great Nicobar Project) ভারতের বৈশ্বিক সামুদ্রিক বাণিজ্যকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে। মুম্বইতে সোমবার ‘ইন্ডিয়া মেরিটাইম উইক—২০২৫’ সম্মেলনে (India Maritime Week 2025) উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এমনই অভিমত ব্যক্ত করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। ইন্ডিয়ান মেরিটাইম উইক ২০২৫ সম্মেলনে জাহাজ মন্ত্রকের ডাকে সাড়া দিয়েছে দেশের সমুদ্র তীরবর্তী বিভিন্ন রাজ্য। এই অনুষ্ঠানেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, নানা বিরোধিতা সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় সরকার গ্রেট নিকোবর আইল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট বাস্তবায়নে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

    প্রধানমন্ত্রী মোদির মহাসাগার নীতি

    শাহ জানান, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (PM Modi) সামুদ্রিক নীতি বর্তমানে মহাসাগার-এ (‘MAHASAGAR’: Mutual and Holistic Advancement for Security and Growth Across Regions)–এ রূপান্তরিত হয়েছে, যা ভারতের বৈশ্বিক উপস্থিতির প্রতীক। তাঁর কথায়, “মোদিজির দৃষ্টিভঙ্গি হল ‘সাগর’কে ‘মহাসাগর’-এ রূপ দেওয়া, যাতে ২০৪৭ সালের মধ্যে ভারত বিশ্বনেতা হয়ে ওঠে। এই লক্ষ্যে সরকার বাজেট ছয়গুণ বৃদ্ধি করেছে—৪০ মিলিয়ন ডলার থেকে আজ ২৩০ মিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে।”

    সাগরমালা প্রকল্পের গুরুত্ব

    স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী (Amit Shah) আরও জানান, সাগরমালা প্রকল্পের অধীনে ৮৩৯টি প্রকল্প চিহ্নিত করা হয়েছে, যার মোট মূল্য প্রায় ৭০ বিলিয়ন ডলার। ইতিমধ্যেই ১৭ বিলিয়ন ডলার মূল্যের ২৭২টি প্রকল্প সম্পন্ন হয়েছে। শাহ বলেন, “৫ বিলিয়ন ডলারের গ্রেট নিকোবর প্রকল্প (Great Nicobar Project) এখন নির্মাণাধীন, যা ভারতের সামুদ্রিক বাণিজ্যে বিপুল গতি আনবে।” তিনি জানান, ২০০ মিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগে কোচি শিপইয়ার্ডে দেশের সবচেয়ে বড় ডক নির্মিত হচ্ছে। পাশাপাশি, গুজরাটে গড়ে উঠছে একটি মেরিটাইম হেরিটেজ কমপ্লেক্স। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আন্তর্জাতিক আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে পুরনো ভারতীয় আইন সংস্কার করা হয়েছে। ২০২৫ সালে সংসদ ১১৭ বছরের পুরনো ইন্ডিয়ান পোর্টস বিল সংশোধন করে আধুনিক প্রেক্ষাপটে আনা হয়েছে।” শাহের কথায়, “মেজর পোর্ট অথরিটিজ অ্যাক্ট, ২০২১-এর মাধ্যমে বন্দরগুলিকে আরও স্বায়ত্তশাসন দেওয়া হয়েছে। ২০১৬ সালের ন্যাশনাল ওয়াটারওয়েজ অ্যাক্ট অনুযায়ী ১০৬টি নতুন জলপথ ঘোষণা করা হয়েছে।”

    ব্লু ইকোনমির উন্নয়ন-ই লক্ষ্য

    অমিত শাহ বলেন, “মোদি সরকার ব্লু ইকোনমির উন্নয়ন, উপকূলীয় নিরাপত্তা ও জেলেদের সুরক্ষার জন্য ধারাবাহিক পদক্ষেপ নিয়েছে। গত এক দশকে উপকূলীয় নৌপরিবহণ বেড়েছে ১১৮ শতাংশ, কার্গো হ্যান্ডলিং বেড়েছে ১৫০ শতাংশ। টার্ন-অ্যারাউন্ড টাইম বা জাহাজ পরিষেবার সময়সীমা এখন বৈশ্বিক মানের কাছাকাছি।” তিনি আরও বলেন, “ভারতের লক্ষ্য একটি গ্রিন মেরিটাইম ফিউচার তৈরি করা—যেখানে উন্নয়ন ও প্রকৃতির মধ্যে ভারসাম্য বজায় থাকবে। ছোট দ্বীপ রাষ্ট্র ও গ্লোবাল সাউথের বহু দেশ সাগরের ওপর নির্ভরশীল; তাদের অস্তিত্বের প্রশ্নেও ভারত দায়বদ্ধ। তাই আমরা এক সবুজ, সমৃদ্ধ ও যৌথ মহাসাগর গড়ে তোলার পথে এগোচ্ছি।”

    ভারতের সমুদ্র অর্থনীতি নিয়ে আলোচনা

    ইন্ডিয়া মেরিটাইম উইক ২০২৫ (India Maritime Week 2025) সোমবার মুম্বইয়ে শুরু হয়েছে। পাঁচ দিন ধরে এই বিশেষ অনুষ্ঠানটি চলবে। পরিবহণ, জাহাজ চলাচল ও জলপথ মন্ত্রক এবং ইন্ডিয়ান পোর্টস অ্যাসোসিয়েশন–এর যৌথ উদ্যোগে এই অনুষ্ঠানটি আয়োজিত হয়েছে। এই বৃহৎ অনুষ্ঠানে ভারতের সমুদ্র অর্থনীতি, স্থিতিশীল সামুদ্রিক উন্নয়ন এবং বাণিজ্য সম্প্রসারণের ভবিষ্যৎ রূপরেখা তুলে ধরা হবে। দেশ ও বিদেশের নৌ পরিবহণ ক্ষেত্রের শীর্ষস্থানীয় নেতৃত্ব, নীতিনির্ধারক, বিনিয়োগকারী, উদ্ভাবক এবং বিভিন্ন অংশীদাররা এতে যোগ দিচ্ছেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পরিবহন, জাহাজ চলাচল ও জলপথ মন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল, এবং প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীস, উপমুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে ও অজিত পওয়ার, গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল, গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সাওয়ান্ত, এবং ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী মোহন চরণ মাঝি।

    আন্দামানের উন্নয়নে এই প্রকল্পে ভূমিকা 

    বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ততম সমুদ্রপথ মালাক্কা প্রণালীর কাছে অবস্থিত গ্রেট নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ (জিএনআই) ভারতের সামুদ্রিক নিরাপত্তা ও সংযোগমূলক কর্মসূচিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত গুরুত্ব বহন করে। ভারতীয় নৌবাহিনীর আইএনএস বাজ (গ্রেট নিকোবর) ঘাঁটি থাকার কারণে এই অঞ্চলটি পূর্ব ভারত মহাসাগরে প্রতিরক্ষা ও নজরদারিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। এর অবস্থানগত সুবিধা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে বৃহত্তর অর্থনৈতিক যোগাযোগ গড়ে তোলে। এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে ভারত সরকার জিএনআই-তে ৮০,০০০ কোটি টাকার একটি মেগা প্রকল্প অনুমোদন করেছে। নীতি আয়োগের নেতৃত্বে হলিস্টিক ডেভেলপমেন্ট অফ আইল্যান্ডস প্রোগ্রাম-এর (দ্বীপপুঞ্জের সামগ্রিক উন্নয়ন কর্মসূচির) অংশ হিসেবে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জকে একটি সামুদ্রিক, বাণিজ্য ও পর্যটন কেন্দ্রে রূপান্তরিত করতে চলেছে সরকার। এর মধ্যে রয়েছে গ্যালাথিয়া উপসাগরে একটি ট্রান্সশিপমেন্ট টার্মিনাল, একটি বিমানবন্দর, একটি গ্রিনফিল্ড টাউনশিপ, একটি পর্যটন প্রকল্প ও একটি গ্যাস-চালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্র। সরকার এই প্রকল্পকে (Great Nicobar Project) “ভারতের সামুদ্রিক উন্নয়নের চালিকা শক্তি” বললেও পরিবেশবিদদের একাংশের মতে এই প্রকল্পে ১৩০ বর্গকিলোমিটারেরও বেশি অরণ্য ধ্বংস হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যা নিকোবরিজ ও শম্পেন উপজাতির জীবনযাত্রাকে বিপন্ন করতে পারে। কিন্তু কেন্দ্রের দাবি, আন্দামানের উন্নয়নে ও কৌশলগত প্রতিরক্ষা উদ্যোগের ক্ষেত্রে এই প্রকল্প বড় ভূমিকা নেবে।

LinkedIn
Share