Tag: India Oil Price

  • India Oil Price: হরমুজ প্রণালী বন্ধ করল ইরান, বাড়বে তেলের দাম! ‘ভারতে প্রভাব পড়বে না’, ফের জানাল কেন্দ্র

    India Oil Price: হরমুজ প্রণালী বন্ধ করল ইরান, বাড়বে তেলের দাম! ‘ভারতে প্রভাব পড়বে না’, ফের জানাল কেন্দ্র

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ইজরায়েল-আমেরিকা সহ গোটা বিশ্বকে শিক্ষা দিতে হরমুজ প্রণালী বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিল ইরান। বিশ্বের মোট তেল সরবরাহের (India Oil Price) ২৫ শতাংশেরও বেশি এই সমুদ্রপথ দিয়ে পরিবাহিত হয়। তাই ইরান এই সিদ্ধান্ত নেওয়ায় বিশ্বজুড়ে জ্বালানি সরবরাহের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তবে চিন্তা নেই ভারতের। পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরী জানিয়েছেন, ভারত তার তেলের উৎস বহুমুখীকরণ করেছে। ভারতে তেলের সরবরাহ এখন পুরোপুরি হরমুজ প্রণালী নির্ভরশীল নয়।

    হরমুজ প্রণালীর ভূরাজনৈতিক গুরুত্ব

    হরমুজ প্রণালী ওমান ও ইরানের মাঝখানে অবস্থিত। এটি উপসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলিকে ওমান উপসাগর ও আরব সাগরের সঙ্গে যুক্ত করে। এই প্রণালীটি প্রায় ৩০ মাইল চওড়া এবং সম্পূর্ণভাবে ইরানের নিয়ন্ত্রণাধীন নয়। দক্ষিণাংশটি ওমানের অধীনে। ফলে এটি পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া সহজ নয়। ইরানের সংসদে পাশ হয়েছে হরমুজ প্রণালী বন্ধের সিদ্ধান্ত। এখন এই সরু প্রণালী দিয়ে যাতায়াত বন্ধ কেবল সময়ের অপেক্ষা। সরু জলপথ হলেও এর গুরুত্ব অনেক। বিশ্বের প্রায় ৩০ শতাংশ তেল সরবরাহই হয় এই প্রণালী পথ ধরে।

    হু হু করে বাড়বে তেলের দাম

    ইরান-ইজরায়েলের যুদ্ধে ঢুকে পড়ছে আমেরিকা। রাতের অন্ধকারে ইরানের তিনটি পরমাণু ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে আমেরিকা। আর এরপরই রবিবার ইরানের সংসদ যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার জবাবে হরমুজ প্রণালী বন্ধের প্রস্তাব অনুমোদন করে। যদিও এই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত নয়—এটি কার্যকর হতে গেলে ইরানের সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের অনুমোদন প্রয়োজন। কিন্তু আপাতত ইরানের এই সিদ্ধান্তে গোটা বিশ্বেই কার্যত হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। সকলেরই আশঙ্কা একটাই, এবার বিশ্বজুড়ে তেলের সঙ্কট দেখা যাবে। হু হু করে বাড়বে তেলের দাম।

    ভারতের কি অবস্থা

    ইরানের হরমুজ প্রণালী বন্ধের হুমকি দেওয়ার পর থেকেই ভারত তেলের দাম ওঠানামার উপরে বিশেষ নজর রাখছে। রবিবার কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরী বলেন, “বিগত দুই সপ্তাহ ধরেই মধ্য প্রাচ্যের পরিস্থিতির উপরে নজর রাখা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী মোদিজির নেতৃত্বে বিগত কয়েক বছরে আমরা তেলের আমদানি আরও বিভাজিত করেছি। বর্তমানে আমদানি করা তেলের একটা বড় অংশই হরমুজ প্রণালী থেকে আসে না।” এই সংঘাতের জেরে কি ভারতেও তেলের দাম বাড়বে? এই প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, “আমাদের ওয়েল মার্কেটিং কোম্পানিগুলির কাছে বেশ কয়েক সপ্তাহের জ্বালানি মজুত রয়েছে। একাধিক অন্য রুট থেকেও তেল ও শক্তি সরবরাহ হচ্ছে। যাতে সাধারণ মানুষ জ্বালানি পান, তার জন্য আমরা প্রয়োজনীয় সমস্ত পদক্ষেপ করব।”

    বেশিদিন হরমুজ প্রণালী বন্ধ সম্ভব নয়

    বিশ্লেষকদের মতে, হরমুজ প্রণালী সামরিকভাবে বন্ধ করার চেষ্টা করলে আন্তর্জাতিক প্রতিরোধের মুখে পড়তে হবে ইরানকে। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর ফিফথ ফ্লিট বাহরিনে মোতায়েন রয়েছে। এই অঞ্চলে তাদের স্থায়ী উপস্থিতি রয়েছে। শুধু যুক্তরাষ্ট্রই নয়, অন্যান্য আন্তর্জাতিক শক্তিও এই জলপথে নিয়মিত নজরদারি চালায়। তবে অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি ইরান এক সপ্তাহের জন্যও হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দেয়, তবে তার অভিঘাত গোটা বিশ্বের অর্থনীতিকে নাড়িয়ে দেবে। ইতিমধ্যেই মার্কিন হামলার পরই আন্তর্জাতিক বাজারে চড়তে শুরু করেছে অশোধিত তেলের দাম। একদিকে যখন ব্রেন্ট ব্যারেল প্রতি ৭৭ ডলার ছাপিয়ে গিয়েছে, তেমনই মার্কিন ডব্লুটিআই পৌঁছেছে ৭৪.০৪ ডলারে। হরমুজ প্রণালী বন্ধের পর তেলের দাম ৪০০ ডলার প্রতি ব্যারেল ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

    নয়াদিল্লির কূটনৈতিক মাস্টারস্ট্রোক

    বিশ্বে সবথেকে বেশি পরিমাণ অশোধিত তেল আমদানি করে ভারত— প্রতিদিন ৫১ লক্ষ ব্যারেল। নজর করার মতো বিষয় হল, জুন মাসে উল্লেখযোগ্যভাবে রাশিয়ার থেকে সাম্প্রতিককালের সবচেয়ে বেশি পরিমাণ অশোধিত তেল আমদানি করা হয়েছে। ১৯ লক্ষ ৬০ হাজার ব্যারেল থেকে বেড়ে অঙ্কটা দাঁড়িয়েছে প্রায় ২০ লক্ষ ব্যারেলে। আমদানির ক্ষেত্রে দ্বিতীয় দেশ আমেরিকা। আগে প্রতিদিন ২ লক্ষ ৮০ হাজার ব্যারেল মার্কিন ডব্লুটিআই তেল আমদানি করত ভারত। জুন মাসে সেটাই দাঁড়িয়েছে ৪ লক্ষ ৩৯ হাজার ব্যারেলে। এটা অবশ্যই নয়াদিল্লির একটা কূটনৈতিক মাস্টারস্ট্রোক। কেন? যে দেশগুলির থেকে ভারত তেল আমদানি করে, তাদের মধ্যে তৃতীয় এবং চতুর্থ স্থানে আসে ইরাক এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহি। হরমুজ প্রণালী বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা থেকে প্রথমেই রাশিয়া এবং আমেরিকার থেকে আমদানির বহর বাড়িয়ে নিয়েছিল নয়াদিল্লি। কারণ, এই দু’টি দেশকেই ভারতীয় উপমহাদেশে তেল সরবরাহের সময় হরমুজ প্রণালী ব্যবহার করতে হয় না। বরং তারা ইয়েমেন ও আফ্রিকার জিবুতি সংলগ্ন বাব-আল-মান্দেব প্রণালী ব্যবহার করে আরব সাগরের রুট নিয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে হরমুজ বন্ধ হলে প্রথম ধাক্কা নয়াদিল্লি খাবে না।

LinkedIn
Share