Tag: India Pakistan Conflicts

  • S Jaishankar: ‘প্রয়োজনে পাকিস্তানের ভিতরে ঢুকেই মারব’! সন্ত্রাস দমনে কঠোর ভারত, বুঝিয়ে দিলেন জয়শঙ্কর

    S Jaishankar: ‘প্রয়োজনে পাকিস্তানের ভিতরে ঢুকেই মারব’! সন্ত্রাস দমনে কঠোর ভারত, বুঝিয়ে দিলেন জয়শঙ্কর

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: সন্ত্রাস দমনে ‘ভৌগোলিক সীমারেখায়’ বাঁধা থাকবে না ভারত। সন্ত্রাসবাদীরা যদি পাকিস্তানের গভীরে গিয়েও লুকিয়ে থাকে, তাহলেও প্রত্যাঘাত হবে। পাকিস্তান নয়, লড়াই সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে। আর সন্ত্রাসবাদ নির্মূল করার জন্য ভবিষ্যতে আরও প্রবল প্রত্যাঘাতের পথে হাঁটতে পারে ভারত। বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লেন এবং ভাইস প্রেসিডন্ট কাজা কাল্লাসের সঙ্গে বৈঠকের পরে এ কথা জানিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।

    সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ভারতের প্রতিক্রিয়া

    সন্ত্রাস দমনে কোনও ভূমিকা না নেওয়ায় পাকিস্তানকে ফের সরাসরি আক্রমণ করলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। মঙ্গলবার ব্রাসেলস সফরে গিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভাইস প্রেসিডন্ট কাজা কাল্লাসের সঙ্গে একটি যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে পাকিস্তানকে ‘টেররিস্তান’ বলে আক্রমণ করেন জয়শঙ্কর। তিনি আরও বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিকে ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্ব হিসেবে না দেখে, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ভারতের প্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখা উচিত। এ বিষয়টিকে ‘ভারত বনাম পাকিস্তান’ না ভেবে ‘ভারত বনাম সন্ত্রাসিস্তান’ হিসেবেই দেখা উচিত।’ এই মন্তব্য করে তিনি সরাসরি পাকিস্তানকে একটি ‘সন্ত্রাসপ্রেমী রাষ্ট্র’ বলে আখ্যা দেন এবং সন্ত্রাস ও পারমাণবিক হুমকির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে জিরো টলারেন্স নীতিতে চলার আহ্বান জানান। জয়শঙ্কর বলেন, ‘‘সন্ত্রাসবাদ দমনে বিশ্বব্যাপী সহযোগিতার প্রয়োজন।’’ এর পাশাপাশি পারমাণবিক হুমকির বিরুদ্ধে সম্মিলিত প্রতিরোধের আহ্বান জানান তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, সকল প্রকার সন্ত্রাসবাদের প্রতি সহনশীলতা থাকা উচিত নয়। এটাও অপরিহার্য যে আমরা কখনওই পারমাণবিক ব্ল্যাকমেলের কাছে নতি স্বীকার করি না। গোটা বিশ্ব এটি একটি চ্যালেঞ্জ, এবং এই বিষয়ে শক্তিশালী আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং বোঝাপড়া থাকা অপরিহার্য।’’

    পাকিস্তানের একদম ভিতরে ঢুকে আঘাত

    বিদেশমন্ত্রী মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, ‘‘যদি সন্ত্রাসবাদীদের তরফে কোনও উস্কানিমূলক পদক্ষেপ করা হয়, তবে ভারত এর পর পাকিস্তানের একদম ভিতরে ঢুকে আঘাত হানবে।’’ গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসবাদী হামলায় ২৬ জনের মৃত্যুর জবাবে ৭ মে ভারতীয় সেনা পাকিস্তান এবং পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে ন’টি সন্ত্রাসবাদী পরিকাঠামোয় হামলা চালিয়েছিল। ইউরোপীয় কমিশনের দুই শীর্ষ আধিকারিকের কাছে জয়শঙ্কর সন্ত্রাস দমনের বিষয়ে নয়াদিল্লির অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। এক সাক্ষাৎকারে জয়শঙ্কর বলেন, ‘ভারত আর এই ধরনের হামলা সহ্য করবে না। যদি এপ্রিলের মতো বর্বরতা আবার হয়, তাহলে তার কঠিন জবাব দেওয়া হবে। সেই জবাব হবে শুধু জঙ্গি গোষ্ঠী নয়, জঙ্গি নেতৃত্বের বিরুদ্ধেও।’ তিনি সাফ জানান, ভারতের জবাব ‘ভৌগোলিক সীমারেখায়’ বাঁধা থাকবে না। তাঁর ভাষায়, ‘ওরা যদি পাকিস্তানের গভীরে গিয়েও লুকিয়ে থাকে, আমরাও গভীরে ঢুকেই আঘাত করব।’ ভারতের আত্মরক্ষার অধিকার পুনর্ব্যক্ত তিনি বলেন, ‘‘যে কোনও সময়, যে কোনও জায়গায়, যদি তারা আমাদের জনগণের ক্ষতি করে থাকে, তাহলে আমদের অধিকার রয়েছে তাদের জবাব দেওয়ার।’’

    পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় নীতির অংশ সন্ত্রাস

    জয়শঙ্কর বলেন, ‘পাকিস্তান সেই রাষ্ট্র যারা রাষ্ট্রীয় নীতির অংশ হিসেবে সন্ত্রাসকে ব্যবহার করে।’ প্রশ্ন আসে, তাহলে কি উত্তেজনার পেছনে থাকা কারণগুলো এখনও জিইয়ে রয়েছে? জয়শঙ্করের জবাব, ‘আপনি যদি সন্ত্রাসের প্রতি প্রতিশ্রুতিকে সংঘাতের উৎস বলেন, তবে হ্যাঁ, সেটা এখনও আছে।’ ভারতের পাল্টা আক্রমণ নিয়েও মন্তব্য করেন জয়শঙ্কর। তিনি জানান, ‘আমার মতে, রাফালের কার্যকারিতা হোক বা ভারতের সামরিক ক্ষমতার প্রমাণ, পাকিস্তানের যে আটটি মূল বিমানঘাঁটি ধ্বংস হয়েছে, তা গুগল স্যাটেলাইট চিত্রেও স্পষ্ট।’ জয়শঙ্কর আরও জোর দিয়ে বলেন, সন্ত্রাসবাদ একটি বিশ্বব্যাপী সমস্যা। কিন্তু ভারতের সমস্যা হল পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদকে রাষ্ট্রীয় নীতি হিসেবে প্রকাশ্যে ব্যবহার করে। তিনি বলেন, ‘‘ইউরোপে সন্ত্রাসবাদ ঘটে, কিন্তু কোনও প্রতিবেশী ইউরোপীয় দেশ সন্ত্রাসবাদকে ঘোষিত রাষ্ট্রীয় নীতি হিসেবে ব্যবহার করে না।’’

    ছ’দিনের ইউরোপ সফরে জয়শঙ্কর

    ২২ এপ্রিলের সন্ত্রাসবাদী হামলার পর ভারতের কূটনৈতিক উদ্যোগে ৩৩টি দেশের রাজধানীতে সাতটি বহুদলীয় প্রতিনিধি দল পাঠানো হয়, যাঁরা পাকিস্তানের সন্ত্রাসে মদতের তথ্য সহ ভারতের সংযত কিন্তু দৃঢ় প্রতিক্রিয়ার বিষয়ে আন্তর্জাতিক মহলকে অবগত করেন। এর পরে সোমবার ছ’দিনের ইউরোপ সফরে গিয়েছেন জয়শঙ্কর। ফ্রান্স, বেলজিয়াম, লুক্সেমবার্গ-সহ বিভিন্ন দেশের মন্ত্রী এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নেরর শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করাই এই সফরের লক্ষ্য। সন্ত্রাস দমনে আন্তর্জাতিক সক্রিয়তা বৃদ্ধির পাশাপাশি জয়শঙ্কর-উরসুলা বৈঠকে ভারতের সঙ্গে অংশীদারিত্বকে আরও গভীর করার বিষয়ে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে বলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে।

  • S-400 Missiles: রাশিয়ার কাছ থেকে অতিরিক্ত এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র কিনতে চলেছে ভারত, সম্মতি মস্কোর

    S-400 Missiles: রাশিয়ার কাছ থেকে অতিরিক্ত এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র কিনতে চলেছে ভারত, সম্মতি মস্কোর

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: অপারেশন সিঁদুর চলাকালীন পাকিস্তানের পাল্টা হানা প্রতিহত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে এস-৪০০ ট্রায়াম্ফ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম। এই আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার অভাবনীয় সাফল্যের পর রাশিয়া থেকে আরও বেশ কয়েকটি এস-৪০০ (S-400 Missiles) কিনতে ইচ্ছে প্রকাশ করেছে ভারত। রাশিয়ার (India-Russia Relation) কাছে এই বিষয়ে আবেদন করা হয়েছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের এক উচ্চপদস্থ সূত্রের খবর, মস্কো ইতিমধ্যে এই অনুরোধে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে।

    এস-৪০০ সিস্টেম-এর সাফল্য

    ভারতীয় সেনাবাহিনীর কাছে থাকা রাশিয়ার তৈরি এস-৪০০ (S-400 Missiles) সিস্টেমগুলি সাম্প্রতিক ভারত-পাক সংঘাতের সময় পাকিস্তানের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোনগুলিকে নিষ্ক্রিয় করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। অভিযানের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের মতে, পশ্চিম সীমান্তের ওপার থেকে আকাশপথে হুমকি মোকাবিলায় এই সিস্টেমগুলি নির্ভুল এবং কার্যকারিতা প্রমাণ করেছে। সুদর্শন চক্রের কর্মক্ষমতায় অভিভূত হয়ে ভারত নিজেদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় আরও এস-৪০০ সিস্টেম জুড়তে চায়। সেই জন্য মস্কোর কাছে আবেদন করা হয়েছে।

    এস-৪০০ এর বিশেষত্ব

    মাটি থেকেই আকাশে নিক্ষেপযোগ্য দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র এস-৪০০ (S-400 Missiles)। আকাশে বিভিন্ন ধরনের লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করার ক্ষমতা রয়েছে এটির। যার মধ্যে রয়েছে স্টেলথ ফাইটার জেট, বোমারু বিমান, ক্রুজ এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং এমনকি ড্রোনকেও ধ্বংস করতে সক্ষম। এতে দু’টি ব়েডার সিস্টেম রয়েছে। যা আকাশে ৬০০ কিলোমিটার দূরত্ব পর্যন্ত এবং একসঙ্গে ৮০টি লক্ষ্যবস্তু শনাক্ত করতে পারে। যে কোনও স্থানে নিয়ে গিয়ে মাত্র ১৫ মিনিটের মধ্যে সিস্টেমটিকে চূড়ান্ত রূপ দেওয়া যায়। মাত্র তিন মিনিটের মধ্যে সেটি ব্যবহারের জন্য তৈরি হয়ে যায়। লক্ষ্যবস্তু শনাক্ত করার জন্য এতে একটি জ্যামার-রোধী প্যানোরামিক ব়্যাডার সিস্টেম রয়েছে। বিভিন্ন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র সহ ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের জন্য ৪টি ব্যারেল বা স্টেশন রয়েছে এটিতে। ভারত ও রাশিয়ার পাশাপাশি চিন, তুরস্ক এবং বেলারুশও এই সিস্টেমটি ব্যবহার করে।

    এস-৪০০ চুক্তির খুঁটিনাটি

    ২০১৮-এর অক্টোবরে পাঁচটি এস-৪০০ স্কোয়াড্রনের জন্য রাশিয়ার (India-Russia Relation) সঙ্গে চুক্তি করে ভারত। ভ্লাদিমির পুতিনের দিল্লি সফরের সময় প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকার চুক্তি সই হয়েছিল। ইতিমধ্যেই রাশিয়া থেকে তিনটি স্কোয়াড্রন এস-৪০০ (S-400 Missiles) ভারতে এসে পৌঁছেছে। বাকি দু’টি ২০২৬ সালের মধ্যেই চলে আসবে ভারতের হাতে। ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধ চলার কারণে শেষ দুটি স্কোয়াড্রনের সরবরাহে দেরি হচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চাপকে উপেক্ষা করেই ভারত ২০১৮ সালে রাশিয়ার সঙ্গে এস-৪০০ চুক্তি সই করেছিল, যার মূল্য ছিল প্রায় ৩৫,০০০ কোটি টাকা। এই চুক্তি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের উপস্থিতিতে নয়াদিল্লিতে সম্পন্ন হয়। যদিও যুক্তরাষ্ট্র ২০১৭ সালের ক্যাটসা (CAATSA/ Countering America’s Adversaries Through Sanctions Act) আইনের আওতায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিল, ভারত সেসব চাপকে পাত্তা না দিয়ে কৌশলগত স্বায়ত্তশাসনের ওপর জোর দেয়। ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে রাশিয়া প্রথম এস-৪০০ ইউনিট সরবরাহ করে এবং বর্তমানে তিনটি স্কোয়াড্রন পাকিস্তান ও চিনের সীমান্তে মোতায়েন রয়েছে।

    রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতের মন্তব্যে জল্পনা

    বুধবার একটি অনুষ্ঠানে ভারতের সামরিক পদক্ষেপের প্রশংসা করেন রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ডেনিস অ্যালিপভ। বিশেষ করে অপারেশন সিঁদুরে ব্রহ্মোস মিসাইল ও এস-৪০০ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের (S-400 Missiles) সফল ব্যবহারের তিনি প্রশংসা করেন। তিনি জানান, এই অস্ত্রগুলি আরও কেনার বিষয়ে আলোচনা চলছে। ডেনিস অ্যালিপভের কথায়, ভারত-রাশিয়া যৌথ উদ্যোগে তৈরি ব্রহ্মোস মিসাইল এবং অন্যান্য অস্ত্রগুলির কার্যকারিতা অত্যন্ত সন্তোষজনক। তাঁর মতে, “এই সমস্ত অস্ত্র ডিজাইন ও তৈরি হচ্ছে রাশিয়ার সঙ্গে মিলেই। ভবিষ্যতে আরও যৌথ প্রকল্প শুরু হবে এবং কিছু ইতিমধ্যেই কার্যকর হয়েছে।”

    মোদির নেতৃত্বে শক্তিশালী ভারত

    রাশিয়ার (India-Russia Relation) রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যে ভারতের নেতৃত্বের প্রতি পূর্ণ আস্থা প্রকাশ পায়। তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দক্ষতা নিয়ে কারোর সন্দেহ নেই। তাঁর শক্তিশালী নেতৃত্বে ভারত বৈশ্বিক মঞ্চে আরও এগিয়ে যাচ্ছে।” পহেলগাঁও হামলার প্রসঙ্গ টেনে ডেনিস অ্যালিপভ বলেন, “সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের পদক্ষেপ যথার্থ। প্রেসিডেন্ট পুতিন এই বিষয়ে নরেন্দ্র মোদিকে বার্তা পাঠিয়েছেন এবং সহানুভূতি জানিয়েছেন। অপরাধীদের চিহ্নিত করে শাস্তি দেওয়াই একমাত্র পথ।” রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতের মন্তব্যে পরিষ্কার, অপারেশন সিঁদুরের সাফল্যের পর ভারত আরও অত্যাধুনিক সামরিক সরঞ্জাম কেনার পথে হাঁটছে। এতে রাশিয়া ভারতের পাশে রয়েছে। ভবিষ্যতেও আরও ‘সুদর্শন চক্র’ বা এস-৪০০-এর (S-400 Missiles) মতো আধুনিক অস্ত্র মস্কো থেকে দিল্লি আসতে পারে।

  • India Pakistan Conflicts: দিল্লিতে বড় নাশকতার ছক! পাকিস্তানে পালানোর আগেই গ্রেফতার আইএসআই স্লিপার সেলের ২ এজেন্ট

    India Pakistan Conflicts: দিল্লিতে বড় নাশকতার ছক! পাকিস্তানে পালানোর আগেই গ্রেফতার আইএসআই স্লিপার সেলের ২ এজেন্ট

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পহেলগাঁওয়ের আগেই দেশের রাজধানী দিল্লিতেই সন্ত্রাস হামলার পরিকল্পনা করেছিল পাকিস্তানের (India Pakistan Conflicts) গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই। দিল্লি থেকে আইএসআই-এর দুই এজেন্টের গ্রেফতারিতে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। জানা গিয়েছে, ধৃতদের মধ্যে এক জনের নাম আনসারুল মিয়া আনসারি। ওই ব্যক্তি ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর গোপন তথ্য পাচার করত পাকিস্তানে। দিল্লিতে বড়সড় সন্ত্রাসবাদী হামলা চালানোর পরিকল্পনা ছিল তাদের। তার আগেই গোয়েন্দারা তাদের ধরে ফেলে।

    সেনার বিভিন্ন দফতর, ঘাঁটির তথ্য পাচারই লক্ষ্য

    পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত এই পাকিস্তানি এজেন্টদের সম্পর্কে জানুয়ারি মাসেই খবর এসেছিল। গোপন সূত্রে খবর মিলেছিল, আইএসআই গুপ্তচর নেপালের পথ ধরে ভারতে অনুপ্রবেশ করার চেষ্টা করবে। ভারতীয় সেনার বিভিন্ন দফতর, ঘাঁটির তথ্য, ছবি ও জিওলোকেশন পাকিস্তানে পাচার করাই তাদের লক্ষ্য ছিল। দিল্লিতে স্লিপার সেল হিসাবে কাজ করছিল এরা। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, পহেলগাঁও হামলার আগেই দিল্লিতে হামলা চালানোর পরিকল্পনা করছিল পাকিস্তানের স্লিপার সেলের সদস্যরা।

    কে এই আনসারুল

    সূত্রের খবর, ধৃত আনসারুল নেপালি বংশোদ্ভূত। পাকিস্তানের হয়ে চরবৃত্তির (Pak Agents Arrested) অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দিল্লির একটি হোটেল থেকে তাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ বছরের জানুয়ারি থেকে রাজধানী জুড়ে বিশেষ অভিযানে নামে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এবং দিল্লি পুলিশের বিশেষ সেল। সেই অভিযানের সময়েই আনসারুলের হদিস পান গোয়েন্দারা। তার পরই তাকে গ্রেফতার করা হয়। সূত্রের খবর, আইএসআই-এর মদতে পাকিস্তান থেকে নেপাল হয়ে ভারতে প্রবেশ করেছিল আনসারি। পাকিস্তানে পালানোর চেষ্টাও করে। কিন্তু তার আগেই তাকে ধরে ফেলে পুলিশ।

    কীভাবে ভারতে প্রবেশ করে আনসারুল

    গোয়েন্দা সূত্রের খবর, কাতারে ট্যাক্সিচালকের কাজ করত আনসারি। সেই সময় পাক ‘হ্যান্ডলার’-এর সঙ্গে তার যোগাযোগ হয়। কাতার থেকে তার পর পাকিস্তানে যায় আনসারি। সেখানে চরবৃত্তির প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর তাকে ভারতে পাঠায় আইএসআই। জেরায় আনসারি জানিয়েছে, কোথায় কোথায় তাদের জাল বিছিয়ে রেখেছে আইএসআই। তা-ই নয়, প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করে সেগুলি পাকিস্তানে পাচার করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তাকে। আনসারির কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া নথি এবং ‘ডিজিটাল ডিভাইস’-এর ফরেন্সিক পরীক্ষা করানো হয়েছে। সূত্রের খবর, সেখান থেকে ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি উদ্ধার হয়েছে।

    রাঁচিতে ধৃত আনসারুলের সঙ্গী 

    আনসারিকে জেরা করে আরও এক সন্দেহভাজন আখলাক আজমকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রাঁচি থেকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর তাকে গ্রেফতার করা হয়। আজমই আনসারিকে নিরাপত্তা সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য জোগাড়ে মদত দিত। দু’জনের মোবাইলে পাকিস্তানের হ্যান্ডলারদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখার প্রমাণ পেয়েছেন তদন্তকারীরা। ভারতের বিভিন্ন স্থানে সক্রিয় পাক-সমর্থিত সন্ত্রাসবাদী সংগঠন এবং তাদের লজিস্টিক সহায়তা প্রদানকারী স্লিপার সেল সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের কাজ করে চলেছেন গোয়েন্দারা। এই গোটা চক্রের সঙ্গে পাক হাইকমিশনের আধিকারিক মুজাম্মিল এবং এহসান-উর-রহিম ওরফে দানিশও যুক্ত থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এমনিতেই দানিশ এবং পাক হাইকমিশনের অন্যান্য আধিকারিকরা যে ভারতে গুপ্তচর বা এজেন্ট নিয়োগ করছিল, তা মোটামুটি স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। আনসারি এবং আজমের বিরুদ্ধে সম্প্রতি আদালতে চার্জশিট ফাইল করেছে দিল্লি পুলিশ।

    পাক-চরের খোঁজে অপারেশন মীরজাফর

    ভারতীয় সেনার অপারেশন সিঁদুরে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরের জঙ্গিঘাঁটি। দেশের বাইরের শত্রুদের শায়েস্তা করেছে সেনা। গোয়েন্দাদের নজরে এবার দেশের ভিতরে থাকা শত্রুরা। যেমন- ট্রাভেল ভ্লগার জ্যোতিরানি মালহোত্রা। পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিহানার পরেই শুরু হয় ‘অপারেশন মীরজাফর’। খুঁজে বের করা হয় একের পর এক বিভীষণদের। গোয়েন্দাদের দাবি, ভারত থেকে অনেকেই পাকিস্তানে তথ্য পাঠিয়েছে। দিল্লির পাকিস্তানি দূতাবাস থেকেও এই চরদের সাহায্য করা হয়৷ দিল্লি পাঞ্জাব, হরিয়ানা, রাজস্থান, জম্মু-কাশ্মীর, উত্তরপ্রদেশ-সহ আরও কিছু রাজ্যে পাক চর রয়েছে বলেও সন্দেহ ৷ পাঞ্জাব এবং হরিয়ানা থেকে এখনও পর্যন্ত ১৪ জন পাক চরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। হরিয়ানার থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে ছয় পাক চরকে।

    ‘হানি ট্র্যাপ’ থেকে ‘মানি ট্র্যাপ’

    হরিয়ানার হিসার থেকে গ্রেফতার করা হয় ট্রাভেল ভ্লগার জ্যোতিরানি মালহোত্রাকে ৷ ক্যাথল থেকে দেবেন্দ্র সিং ধিলোঁ-কে ৷ নুহ্ থেকে গ্রেফতার আরমান এবং তারিফ ৷ পঞ্চকুলা থেকেও একজনকে গ্রেফতার করা হয় ৷ পাঞ্জাব থেকে এখনও পর্যন্ত আট পাক চরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ভাতিন্ডা সেনা ছাউনি থেকে মুচি সুনীল কুমার এবং দর্জি রকাব ৷ অমৃতসর থেকে পলক মসিহ্ এবং সুরজ মসিহ্ ৷ মালের কোটলা থেকে গাজালা এবং ইয়ামিন ৷ গুরুদাসপুর থেকে সুখপ্রীত সিং এবং করণবীর সিং৷ ‘হানি ট্র্যাপ’ থেকে ‘মানি ট্র্যাপ’। ভারতের ভিতরের খবর জানতে নানা কৌশল নেয় পাকিস্তান। গোয়েন্দাদের দাবি, ধৃতরা পাক যোগের কথা স্বীকার করেছে। ভারতের বিভিন্ন বিমানঘাঁটি এবং প্রতিরক্ষা সম্পর্কিত তথ্য তারা পাকিস্তানে পাচার করেছে। এর জন্য টাকা পেয়েছে।

  • Pak Spy Jyoti Malhotra: দেশ-বিরোধী তথ্য পাচার, কীভাবে পাক এজেন্টদের সঙ্গে যোগ? জেরায় সব বলল জ্যোতি

    Pak Spy Jyoti Malhotra: দেশ-বিরোধী তথ্য পাচার, কীভাবে পাক এজেন্টদের সঙ্গে যোগ? জেরায় সব বলল জ্যোতি

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পাকিস্তানকে ভারত-বিরোধী তথ্য পাচারের কথা স্বীকার করল জ্যোতি মালহোত্রা (Pak Spy Jyoti Malhotra)। পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় জ্যোতি জানিয়েছে, পাকিস্তানি গুপ্তচর সংস্থার এজেন্টদের সঙ্গে তার নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। একইসঙ্গে পাকিস্তানের হাই কমিশনের আধিকারিক দানিশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কথাও স্বীকার করেছে সে। তবে দেশ-বিরোধী তথ্য পাচার করার জন্য সে অনুতপ্ত নয়, বলেও জানিয়েছে জ্যোতি। জিজ্ঞাসাবাদের সময় একেবারে ‘শান্ত’ থেকেছে সে। তার চোখে মুখে অনুশোচনার কোন ছাপ পর্যন্ত নেই বলেও জানিয়েছেন তদন্তকারী সংস্থার ঘনিষ্ঠ সূত্র।

    জ্যোতিকে জেরায় উঠে এল বিস্ফোরক তথ্য

    পুলিশি জেরায় জ্যোতি (Pak Spy Jyoti Malhotra) জানিয়েছে, ‘ট্রাভেল উইথ জো’ নামে ইউটিউব চ্যানেল চালাচ্ছিল সে। ২০২৩ সালে পাকিস্তানে যাওয়ার জন্য ভিসার প্রয়োজন পড়েছিল। সেই ভিসা জোগাড় করতেই পাকিস্তান হাই কমিশনে গিয়েছিল জ্যোতি। সে সময়ে দানিশ ওরফে এহসার দারের সঙ্গে আলাপ হয় তার। ভারত-পাক সংঘর্ষ পরিস্থিতিতে গত ১৩ মে দানিশকে পাক হাই কমিশন থেকে বহিষ্কার করে ভারত। জ্যোতি জানিয়েছে, দানিশের সাহায্যেই দু’বার পাকিস্তান ভ্রমণ করেছিল সে। সেখানে দানিশের পরিচিত আলি হাসান তার থাকা-খাওয়ার বন্দোবস্ত করেছিল। এই আলি হাসান জ্যোতিকে পাকিস্তানি গুপ্তচর সংস্থার এজেন্টদের সঙ্গে আলাপ করাতে নিয়ে যায়। সেখানে শাকির এবং রানা শেহবাজের সঙ্গে পরিচয় হয় বলে স্বীকার করে জ্যোতি। শাকিরের নম্বর ‘জট রন্ধওয়া’ নামে সেভ করেছিল জ্যোতি। যাতে কোনওভাবেই কেউ তাকে সন্দেহ করতে না পারে। ভারতে আসার পর হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম এবং স্ন্যাপ চ্যাটে পাক গুপ্তচর এজেন্টদের সঙ্গে লাগাতার যোগাযোগ করতে শুরু করে জ্যোতি। তবে গ্রেফতারির আশঙ্কায় জ্যোতি সমস্ত চ্যাট ডিলিট করে দেয়। সেই চ্যাটগুলি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে ভারতীয় তদন্তকারীরা। সেগুলি উদ্ধার হলে বিস্ফোরক তথ্য সামনে উঠে আসতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

    কোনও অনুশোচনা নেই জ্যোতির

    অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট এবং ভারতীয় ন্যায় সংহিতার অধীনে গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে জ্যোতির (Pak Spy Jyoti Malhotra) বিরুদ্ধে। পাক এজেন্টদের সঙ্গে যোগাযোগ স্বীকারের পরও জ্যোতি তদন্তকারীদের বলে, “আমার কোনও অনুশোচনা নেই।” তদন্তের সাথে জড়িত একজন কর্মকর্তা বলেন, “জ্যোতি মনে করে সে কোনও ভুল করেননি। সে বিশ্বাস করে যে যা করেছে তা ন্যায্য।” তদন্তকারী আধিকারিকরা তদন্তে জানতে পেরেছে জ্যোতি তিনজন পাকিস্তানি গোয়েন্দা কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ রেখেছিল। জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁও কাণ্ডের সঙ্গে তার কোনরকমের যোগসূত্র রয়েছে কিনা তাও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। এক সিনিয়র অফিসারের কথায়, “আমরা খতিয়ে দেখছি যে তার পহেলগাঁও ভ্রমণের সঙ্গে গুপ্তচরবৃত্তির কোনও যোগসূত্র ছিল কিনা অথবা সেই সময় কোনও তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছিল বা অন্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিল কিনা”। বর্তমানে জ্যোতি পাঁচ দিনের পুলিশ রিমান্ডে আছে। জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ), গোয়েন্দা ব্যুরো (আইবি) এবং হরিয়ানা পুলিশের একটি যৌথ দল তাকে জেরা করছে। তদন্তকারীরা আরও তথ্যের জন্য তার ইলেকট্রনিক ডিভাইস, আর্থিক লেনদেন, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, ট্রাভেল হিস্ট্রি খতিয়ে দেখেছেন। বৃহস্পতিবার হিসার আদালতে পেশ করা হবে জ্যোতি মালহোত্রাকে।

  • Asim Munir: ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি! ফিল্ড মার্শাল পদে উন্নীত আসিম মুনির, ফের স্বৈরতন্ত্রের পথে পাকিস্তান?

    Asim Munir: ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি! ফিল্ড মার্শাল পদে উন্নীত আসিম মুনির, ফের স্বৈরতন্ত্রের পথে পাকিস্তান?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ভারত বিদ্বেষ ও পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি পাঠিয়ে ২৬টি নিরীহ প্রাণ কেড়ে নেওয়ার পুরস্কার! না কি পাকিস্তানে (Pakistan) ফের গণতন্ত্রের অবসান! অর্থনৈতিক সঙ্কটে জর্জরিত পাকিস্তান আবারও সামরিক শাসনের পথে? সেনাপ্রধান থেকে ফিল্ড মার্শাল পদে উন্নীত হলেন আসিম মুনির (Asim Munir)। প্রয়াত প্রাক্তন সেনাশাসক আয়ুব খানের পর পাক সেনার দ্বিতীয় অফিসার হিসেবে মুনির ‘পাঁচ তারা জেনারেল’ পদ পেলেন। এই পদোন্নতি মূলত প্রতীকী। তবুও মুনিরকে এই পদে বসানোয় পাকিস্তানের রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। এই ঘটনা পাক মুলুকে অতীত সামরিক শাসনের স্মৃতি ফিরিয়ে এনেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পদক্ষেপ পাকিস্তানের ভঙ্গুর গণতন্ত্রে সেনাবাহিনীর আধিপত্য আরও সুদৃঢ় করতে পারে।

    কেন এই পদে মুনির

    মঙ্গলবার পাক সেনাপ্রধান আসিম মুনিরকে (Asim Munir) ফিল্ড মর্শাল পদে বসালেন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। এটাই পাকিস্তানের সর্বোচ্চ সামরিক পদ। বস্তুত, ফিল্ড মার্শাল পদে উন্নীত হওয়ায় জল, স্থল এবং নৌ-তিন সেনারই নিয়ন্ত্রণ চলে এল মুনিরের হাতে। এমনিতে মুনির শাহবাজ শরিফের ঘনিষ্ঠ। ইমরান খানকে সরিয়ে শাহবাজ শরিফকে পাক প্রধানমন্ত্রীর মসনদে বসানোর নেপথ্যেও এই মুনিরের হাত রয়েছে বলে শোনা যায়। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, ভারতের সঙ্গে সাম্প্রতিক সামরিক সংঘাতে পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীকে ‘সফলভাবে’ নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য মুনিরের পদোন্নতি হয়েছে। ভারতের সঙ্গে সংঘাতে সেনাপ্রধান হিসাবে তাঁর ‘অনুকরণীয় ভূমিকা’ পালনের জন্য এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে শরিফ মন্ত্রিসভা। উল্লেখযোগ্যভাবে, পাকিস্তান সাম্প্রতিক সংঘাতে জয়ের দাবি করলেও, ভারত আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মঞ্চে প্রমাণ-সহ ইসলামাবাদের মিথ্যাচার ফাঁস করেছে।

    ইতিহাসের ছায়া, আয়ুব খান ও সামরিক শাসনের শুরু

    ১৯৫৯ সালে যখন তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল আয়ুব খান নিজেকে ফিল্ড মার্শাল ঘোষণা করেন, তখন পাকিস্তান প্রবেশ করেছিল সামরিক শাসনের এক নতুন অধ্যায়ে। মাত্র এক দশকেই দেশটির সাতজন প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন, কেউই পূর্ণ মেয়াদ শেষ করতে পারেননি। ১৯৫৮ সালে রাষ্ট্রপতি ইস্কান্দার মির্জা সংসদ ভেঙে মার্শাল ল’ ঘোষণা করেন এবং আয়ুব খানকে চিফ মার্শাল ল’ অ্যাডমিনিস্ট্রেটর হিসেবে নিযুক্ত করেন। কিন্তু খুব অল্প সময়েই আয়ুব খান তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে নিজেই রাষ্ট্রপতির পদ দখল করেন। আয়ুবের ‘ফিল্ড মার্শাল’ উপাধি গ্রহণ ছিল কৌশলগত—তিনি চেয়েছিলেন সামরিক ও অসামরিক উভয় নেতৃত্বের ঊর্ধ্বে নিজের অবস্থান নিশ্চিত করতে। তাঁর শাসনকাল (১৯৫৮-১৯৬৯) ছিল কঠোর নিয়ন্ত্রণ, গণমাধ্যমের উপর সেন্সরশিপ এবং একটি স্বৈরতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার প্রতিচ্ছবি।

    বর্তমান প্রেক্ষাপট, আসিম মুনির ও আঞ্চলিক উত্তেজনা

    ২০২৫ সালে আসিম মুনিরের (Asim Munir) এই পদোন্নতি এসেছে এক জটিল পরিস্থিতিতে। সম্প্রতি পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পর পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরে জঙ্গি ঘাঁটিগুলি শেষ করার জন্য ভারত শুরু করে ‘অপারেশন সিঁদুর’। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান সেনাবাহিনী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে ভারত তাদের বিমান ঘাঁটি ও সামরিক পোস্টগুলিতে হামলা চালায়। এই পরিস্থিতিতে ভারত-বিরোধী পাক জেনারেল মুনির, জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর প্রতি সহানুভূতি দেখান। তিনি সম্প্রতি ‘দুই জাতি তত্ত্ব’ উল্লেখ করে ভারতের প্রতি কড়া বার্তা দেন। ফিল্ড মার্শালের পদ, যদিও এখন আর কার্যকরী সেনা পদ নয়, তবে এর প্রতীকী ও ঐতিহাসিক গুরুত্ব অনেক। অনেকেই বলছেন, এটি সেনাবাহিনীর আরও কর্তৃত্ব প্রদর্শনের সংকেত। যা পাকিস্তানের গণতন্ত্রকে প্রশ্নের মুখে ফেলতে পারে।

    বিচারবিভাগীয় ক্ষমতা

    পহেলগাঁও হামলার পরই অবশ্য বিভিন্নভাবে মুনিরের ক্ষমতা বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। গত ৯ মে সেনাপ্রধানের হাত শক্ত করতে একটি তাৎপর্যপূর্ণ রায় দেয় পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট। জানিয়ে দেওয়া হয়, এবার থেকে সেনা আদালতে সাধারণ নাগরিকদের মামলারও শুনানি করা যাবে। যার অর্থ, দেশের বিচারব্যবস্থা এবং সামরিক শক্তি পুরোটাই এখন মুনিরের হাতে।

    রাজনৈতিক ও প্রতীকী তাৎপর্য

    পাকিস্তানের (Pakistan) রাজনীতি দীর্ঘদিন ধরে সেনাবাহিনীর প্রভাবাধীন। পাক সরকার, বিশেষ করে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ, প্রায়শই সামরিক চাপের মুখে পড়েছেন। এই প্রেক্ষাপটে মুনিরের পদোন্নতি অনেককেই ভাবিয়ে তুলেছে। পাকিস্তানের বিরোধী দলের এক শীর্ষ নেতার কথায়, “এটা একটি বিপজ্জনক বার্তা। ‘ফিল্ড মার্শাল’ কেবল একটি পদ নয়—এটা অবারিত ক্ষমতার প্রতীক। পাকিস্তান আরেকটি স্বৈরাচারী অধ্যায় সহ্য করতে পারবে না।” পহেলগাঁও হামলার পর শুরু হওয়া সংঘর্ষ দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে উত্তেজনা নতুন মাত্রায় নিয়ে গিয়েছে। ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ সাম্প্রতিক ইতিহাসে অন্যতম বড় আক্রমণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। মুনিরের পদোন্নতি ও তাঁর কট্টর অবস্থান এই উত্তেজনাকে আরও উস্কে দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। জেনারেল আসিম মুনিরের ‘ফিল্ড মার্শাল’ পদোন্নতি পাকিস্তানের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ বাঁক। আয়ুব খানের মতো, তাঁর পদোন্নতি এমন এক সময় এসেছে যখন দেশ রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং কূটনৈতিক সংকটে রয়েছে।

  • Bhargavastra: ওড়িশায় সফল পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ, শত্রুর সোয়ার্ম ড্রোন হামলা রুখতে আসছে ‘ভার্গবাস্ত্র’

    Bhargavastra: ওড়িশায় সফল পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ, শত্রুর সোয়ার্ম ড্রোন হামলা রুখতে আসছে ‘ভার্গবাস্ত্র’

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধের আবহে দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ‘ভার্গবাস্ত্র’-এর (Bhargavastra) সফল পরীক্ষা করল ভারত (India)। ভার্গবাস্ত্র হল এক কম খরচের ড্রোন-প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা যা আকাশপথে শত্রুদের সোয়ার্ম ড্রোন হামলা দক্ষভাবে প্রতিহত করবে। সদ্য শেষ হওয়া সংঘাতে প্রধানত ড্রোন হামলাকেই হাতিয়ার করেছিল পাকিস্তান। সেই কারণে ভারতের এই নতুন প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সফল পরীক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভার্গবাস্ত্র নিয়ে এক কথায়, ইসলামাবাদকে (Islamabad) বার্তা দিয়ে রাখল নয়াদিল্লি (New Delhi)।

    কীভাবে তৈরি ভার্গবাস্ত্র

    দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ‘ভার্গবাস্ত্র’ মঙ্গলবার সফল ভাবে পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করা হয়। এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলি ভারতের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করবে বলে মনে করা হচ্ছে। সম্প্রতি ভারত-পাক সংঘাতের আবহে পাকিস্তান থেকে ড্রোন দিয়ে হামলা চালানো হয়েছিল। তার বেশির ভাগই প্রতিহত করেছে ভারত। এই অবস্থায় মঙ্গলবার ওড়িশার গোপালপুর উপকূলে দেশীয় ‘মাইক্রো মিসাইল’গুলি পরীক্ষা করা হয় এবং সেগুলি প্রতিটি মাপকাঠিতেই সফল হয়েছে বলে খবর। ড্রোন ধ্বংসকারী ছোট মাপের এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলি তৈরি করেছে ‘সোলার ডিফেন্স অ্যান্ড এরোস্পেস লিমিটেড’ (এসডিএল)। নির্মাতা সংস্থা ‘সোলার গ্রুপ’ জানিয়েছে, ‘মাইক্রো মিসাইলের’ উপর ভিত্তি করে এই ড্রোন ধ্বংসকারী ব্যবস্থাটি তৈরি করা হয়েছে।

    তৈরির খরচ খুব বেশি নয়

    এটি তৈরির খরচ খুব বেশি নয়, ‘হার্ড কিল মোড’-এর সাহায্যে ঝাঁকে ঝাঁকে ড্রোন আক্রমণ ঠেকিয়ে দিতে পারবে এই সিস্টেম। ১৩ মে ওড়িশার গোপালপুরে সিওয়ার্ড ফায়ারিং রেঞ্জে ভার্গবাস্ত্রের পরীক্ষা হয়। আর্মি এয়ার ডিফেন্স-এর শীর্ষ আধিকারিকদের উপস্থিতিতে তিনটি ট্রায়ালে সমস্ত লক্ষ্য পূরণ করেছে ভার্গবাস্ত্র সিস্টেমের মাইক্রো রকেটগুলি। প্রথম দুটি ট্রায়ালে একটি করে রকেট উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল। তৃতীয় ট্রায়াল হয়েছে স্যালভো মোডে অর্থাৎ এক্ষেত্রে দুই সেকেন্ডের ব্যবধানে দুটি রকেট ছোড়া হয়। চারটি রকেটই নিজেদের অভীষ্ট্য লক্ষ্য পূরণ করতে সক্ষম হয়েছে। ফলে আকাশপথে হামলায় ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা অনেকটা শক্তিশালী করল ভার্গবাস্ত্র।

    ভার্গবাস্ত্রের কার্যকারিতা

    প্রায় আড়াই কিলোমিটার দূর পর্যন্ত সন্দেহজনক ড্রোনের গতিবিধি শনাক্ত করার ক্ষমতা রয়েছে ‘ভার্গবাস্ত্রের’। যে কোনও ছোট মাপের ড্রোন শনাক্ত করে সেগুলি ধ্বংস করার ক্ষমতা রয়েছে এগুলির। মনুষ্যবিহীন আকাশযান (UAV) হামলায় দারুণ কার্যকর ভার্গবাস্ত্র। এতে রয়েছে দ্বি-স্তরীয় আক্রমণ পদ্ধতি। আগামী দিনে ড্রোন হানার মোকাবিলা করতে এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দেশকে অনেকাংশে সাহায্য করবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

LinkedIn
Share