Tag: Indian Navy

Indian Navy

  • AkashTeer: স্তম্ভিত আমেরিকা-চিন! পাক হামলার মোকাবিলায় ভারতের বৈপ্লবিক প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি ‘আকাশতীর’

    AkashTeer: স্তম্ভিত আমেরিকা-চিন! পাক হামলার মোকাবিলায় ভারতের বৈপ্লবিক প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি ‘আকাশতীর’

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বিশ্বজুড়ে ইজরায়েলের আয়রন ডোমের দিকে নজর থাকলেও, গত কয়েক দিনে ভারত যে সাহসিকতা দেখিয়েছে, তা এখন সারা বিশ্বে আলোচিত। ভারত চুপচাপ তার নিজস্ব আকাশসীমা প্রতিরক্ষা সক্ষমতা শক্তিশালী করার দিকে মনোযোগ দিয়েছে আকাশতীর (AkashTeer) প্রকল্পের মাধ্যমে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর ‘ডিকেড অব ট্রান্সফরমেশন’ এবং ‘ইয়ার অব টেক অ্যাবজর্বশন’ উদ্যোগের অধীনে আকাশতীর তৈরি করা হয়েছে, যা আধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষা হুমকির বিরুদ্ধে কার্যকরী সুরক্ষা নিশ্চিত করেছে। সাম্প্রতিক ভারত-পাক যুদ্ধে ভারতের এই বহুস্তরীয় প্রতিরক্ষা কৌশল আমেরিকা, চিন, রাশিয়া, তুরস্ক সকলকেই চমকে দিয়েছে। আকাশতীর ভারতের আত্মনির্ভর প্রতিরক্ষা প্রযুক্তির যাত্রায় একটি গুরুত্বপূর্ণ গেম-চেঞ্জার হয়ে দেখা দিয়েছে। বিশ্বের প্রথম ন্যাটো-বহির্ভূত কোনও দেশের হাতে এত উন্নত প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি দেখেছে বিশ্ববাসী। সম্পূর্ণ দেশীয়, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) দ্বারা পরিচালিত, উপগ্রহ-সংযুক্ত স্বয়ংক্রিয় কমব্যাট সিস্টেম হিসেবে আকাশতীর বিশ্বের তামাম প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকদের চমকে দিয়েছে।

    কী এই আকাশতীর?

    “আকাশতীর” একটি বহুস্তরীয়, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা পরিচালিত, স্বয়ংক্রিয় প্রতিরক্ষা এবং আক্রমণ সমন্বয় ব্যবস্থা। বিশ্ব প্রতিরক্ষা কৌশলে এক যুগান্তকারী পরিবর্তন এনেছে ভারত। ডিআরডিও (DRDO), ভারত ইলেকট্রনিক্স লিমিটেড (BEL) এবং ইসরো (ISRO)-এর যৌথ উদ্যোগে সম্পূর্ণভাবে দেশীয় প্রযুক্তিতে নির্মিত হয়েছে “আকাশতীর”। এটি হল একটি বাস্তব-সময়ে লক্ষ্য নির্ধারণ ও স্বয়ংক্রিয় প্রতিরক্ষা এবং আক্রমণ পরিচালন পদ্ধতি। এটি কোনও একক ডিভাইস নয়, বরং একটি সমন্বিত ও স্বয়ংক্রিয় প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্ক, যা নিজে থেকে বিপদ আঁচ করে যথাযথ প্রতিক্রিয়া নিয়ে বিপদকে নিষ্ক্রিয় করতে সক্ষম। আকাশতীর হলো বহুস্তরীয় সমন্বিত প্রতিরক্ষা এবং প্রতি-আক্রমণ ব্যবস্থাপনা প্রযুক্তি। যা এআই, স্যাটেলাইট নজরদারি, স্বয়ংক্রিয় সোয়ার্ম ড্রোন, রেডার এবং মোবাইল কমান্ড ইউনিট মিলিয়ে এক নতুন ধরনের “কমব্যাট ক্লাউড” গঠন করে।

    আকাশতীরের মূল বৈশিষ্ট্য

    সেনা সূত্রে খবর, ৭ তারিখ রাত থেকে ৮ তারিখ ভোরের মধ্যে ১৫টি সেনা ছাউনিতে হামলার পরিকল্পনা করেছিল পাক সেনা। সেই আক্রমণ শুধু প্রতিহতই করেনি ভারত। উল্টে যোগ্য জবাবও দিয়েছে। অপারেশন সিঁদুরের পর একের পর এক ড্রোন হামলা চালায় পাকিস্তান। যা রুখে দেয় ভারত। ভারতের চার স্তরের বায়ু প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। যা ‘আয়রন ডোম’-এর অনুরূপ বলে মনে করা হচ্ছে। এই সিস্টেমটি বিভিন্ন প্রযুক্তির সমন্বয়ে তৈরি এবং ‘আকাশতীর’ কমান্ড নেটওয়ার্ক দ্বারা পরিচালিত। আকাশতীর সিস্টেম সেনাবাহিনী ও বায়ুসেনার সমস্ত রেডার এবং স্যাটেলাইট ডেটা একটি একক নেটওয়ার্কের সাথে সংযুক্ত করেছিল। এই সমন্বিত চিত্রটি নির্ধারণ করেছিল যে কোন ব্যবস্থা কোন হুমকিকে ধ্বংস করবে। ফলস্বরূপ, পাকিস্তানের একের পর এক হামলা প্রতিহত করে ভারত।

    চার স্তরের আকাশতীর সিস্টেম

    ইসরোর উপগ্রহ নজরদারি: কার্টোস্যাট ও রিস্যাট উপগ্রহের মাধ্যমে রিয়েল-টাইম মানচিত্র এবং লক্ষ্য নির্ধারণ। বিদেশি স্যাটেলাইট ডেটার উপর নির্ভরতা ছাড়াই, নিজস্ব স্যাটেলাইট থেকে সরাসরি যুদ্ধভূমির তথ্য সংগ্রহ ভারতকে কয়েক কদম এগিয়ে দিয়েছে।

    নাবিক ব্যবস্থার ব্যবহার: ভারতের নিজস্ব জিপিএস ন্যাভিগেশন সিস্টেম, যা উপমহাদেশীয় ভূখণ্ডে অত্যন্ত কার্যকর। এই বিশেষ সিস্টেম পার্বত্য, মরুভূমি ও শহরাঞ্চলে অত্যন্ত কার্যকর।

    সোয়ার্ম ড্রোন: আকাশতীরের প্রতিটি সোয়ার্ম ড্রোন সিস্টেম— ৫-১০ কেজি পেলোড বহনে সক্ষম। চিনা ও পাকিস্তানি রেডার এড়াতে সক্ষম। স্টেলথ প্রযুক্তিতে সজ্জিত। উচ্চ গতিতে উড়তে সক্ষম। অনুপ্রবেশ করতে এবং স্বয়ংক্রিয়ভাবে শত্রুর ড্রোন ধ্বংস করতে সক্ষম। সেলফ-নেভিগেশন রয়েছে। নিজেই লক্ষ্যকে স্থির করে নিতে সক্ষম। মিশনের প্রয়োজন অনুযায়ী, মাঝপথে নিজের প্রোগ্রামে বদল আনতে সক্ষম। এগুলি বাণিজ্যিক ড্রোন নয়। বরং কৌশলগত, বুদ্ধিমান কামিকাজে ইউনিট যা শত্রুর হাই-ভ্যালু টার্গেট পর্যবেক্ষণ করে, শত্রুর আকাশসীমায় প্রবেশ করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে টার্গেট ধ্বংস করতে সক্ষম।

    এআই কমব্যাট ক্লাউড: তাৎক্ষণিক তথ্য বিশ্লেষণ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে কোনও মানুষের হস্তক্ষেপ ছাড়াই স্বয়ংক্রিয়ভাবে আক্রমণ পরিচালনা করে এই পদ্ধতি। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে শত্রুর রেডার সংকেত, ভূখণ্ড বিশ্লেষণ, আবহাওয়ার তথ্য এবং উপগ্রহ চিত্র সহ বিস্তৃত যুদ্ধের তথ্য প্রক্রিয়া করতে পারে আকাশতীর। এআই-এর দৌলতে আকাশতীর সিস্টেম স্বয়ংক্রিয়ভাবে মিশন নতুন করে সাজাতে পারে, ড্রোন রিডিরেক্ট করতে পারে এবং সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালাতে পারে, যা মার্কিন বা চিনা সিস্টেমের চেয়ে অনেক উন্নত, কারণ সেখানে মানুষের প্রয়োজন হয়।

    আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

    অপারেশন সিঁদুরের পর, ভারতের বায়ু প্রতিরক্ষা মডেল এখন বিশ্বব্যাপী আলোচিত হচ্ছে। এই মডেলটি দেখায় যে নিরাপত্তা কেবল নতুন প্রযুক্তি কেনার মাধ্যমেই আসে না, বরং সেগুলিকে একীভূত করার মাধ্যমেও আসে। কীভাবে একইসঙ্গে শত্রুর হানা রুখছে, আবার শত্রুর ডেরায় গিয়ে আঘাত হানছে আকাশতীর,তা দেখে আমেরিকা থেকে শুরু করে চিন, তুরস্ক থেকে শুরু করে পাকিস্তান— সকলেই কার্যত থ বনে গিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা এখন ভারতের এই স্তরযুক্ত প্রতিরক্ষাকে বিশ্বের জন্য একটি নতুন মানদণ্ড হিসেবে বিবেচনা করছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক বিশ্লেষক ভারতের এই প্রযুক্তি নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। তাঁরা আকাশতীরের অনুকরণে পেন্টাগনের অভ্যন্তরীণ কৌশল পুনর্বিবেচনার কথাও বলছেন। চিনের বেইডু স্যাটেলাইট ও ড্রোন বিশেষজ্ঞরা এখন আকাশতীরের অনুকরণে অ্যালগোরিদম পুনঃর্গঠনের চেষ্টা করছে। ভারতের অগ্রগতি দেখে অবিলম্বে বায়রাক্তার ড্রোনের প্রযুক্তি আপগ্রেডে ব্যস্ত তুরস্ক।

    কেন আকাশতীর অনন্য

    ভারত দীর্ঘদিন ধরে তার আকাশ প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়ানোর গুরুত্ব উপলব্ধি করেছে, বিশেষ করে আঞ্চলিক উত্তেজনা এবং অত্যাধুনিক বিমান আক্রমণের হুমকি বৃদ্ধি পাওয়ায়। আয়রন ডোমের মতোই ভারতের আকাশতীর এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলার জন্য একটি শক্তিশালী সমাধান। এটি অত্যাধুনিক রেডার, ক্ষেপণাস্ত্র নির্দেশনা এবং কমান্ড কন্ট্রোল সিস্টেমের সমন্বয়ে তৈরি। আকাশতীর বিশেষভাবে উচ্চ-গতি, কম উচ্চতার এবং স্টেলথ লক্ষ্যবস্তু শনাক্তকরণের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। আকাশতীরের রেডার সিস্টেম প্রযুক্তির ক্ষেত্রে একটি বিশাল অগ্রগতি। এটি একাধিক লক্ষ্যবস্তু বিভিন্ন উচ্চতায় শনাক্ত করতে সক্ষম, এবং অত্যাধুনিক সিগন্যাল প্রসেসিং অ্যালগোরিদমের মাধ্যমে স্টেলথ বিমান, ড্রোন এবং সুপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র পর্যন্ত শনাক্ত করতে পারে। ঐতিহ্যবাহী রেডার সিস্টেমের তুলনায়, আকাশতীরের রেডার প্রায় মাটি ঘেঁষে চলা লক্ষ্যবস্তুও শনাক্ত করতে সক্ষম, যা ভারতের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোকে ৩৬০-ডিগ্রি সুরক্ষা প্রদান করে। একশো শতাংশ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি এই পদ্ধতি কোনও বিদেশি চিপ বা সিস্টেমের উপর নির্ভরশীল নয়। এটি দেশের সরকারি সংস্থাগুলোর দুর্দান্ত সমন্বয়ে তৈরি এক প্রকল্প। ডিআরডিও, ইসরো ও ভারত ইলেক্ট্রনিক্সের যুগান্তকারী সমন্বয়ে তৈরি আকাশতীরের পূর্ণ কৌশলগত স্বাধীনতা রয়েছে। এটি একটি মোবাইল কমান্ড ইউনিট, যা জিপে রেখেও চালানো সম্ভব। আকাশতীর শুধু একটি প্রযুক্তি নয়, এটি ভারতের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আত্মনির্ভরতার প্রতীক। এটি ভারতকে আর অনুসরণকারী নয়, বরং নেতৃত্বকারী হিসেবে বিশ্বমঞ্চে প্রতিষ্ঠা করেছে।

  • India-Pakistan War: “চাইলে গুঁড়িয়ে দেওয়া যেত, ভারত নিয়ন্ত্রিত এবং পরিমিত জবাব দিয়েছে”, পাকিস্তানের উদ্দেশে বার্তা সেনার

    India-Pakistan War: “চাইলে গুঁড়িয়ে দেওয়া যেত, ভারত নিয়ন্ত্রিত এবং পরিমিত জবাব দিয়েছে”, পাকিস্তানের উদ্দেশে বার্তা সেনার

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: অপারেশন সিঁদুর (Operation Sindoor) পাক জঙ্গি দমনে করা হলেও, তার পাল্টা বারবার জবাব দিয়েছে পাকিস্তানি সেনা। ভারত (India-Pakistan War) তাদের সেনা বা নাগরিকের কোনও ক্ষতি করতে চায়নি। চেয়েছে সীমান্তে বসে থাকা জঙ্গিদের শেষ করতে। যা করেছেও। কিন্তু তার পাল্টা ভারতে হামলা চালিয়েছে পাক সেনা। যার প্রত্যাঘাত হিসেবে পাকিস্তানের একাধিক সেনা ঘাঁটি বাধ্য হয়েই উড়িয়ে দিয়েছে ভারত। রবিবার সন্ধ্যায় সাংবাদিক বৈঠকে তা স্পষ্ট করে দিল ভারত। এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে ভারতীয় সেনার ‘ডিরেক্টর জেনারেল অফ মিলিটারি অপারেশন্‌স’ লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাজীব ঘাই, বায়ুসেনার ‘ডিরেক্টর জেনারেল অফ এয়ার অপারেশন্‌স’ এয়ার মার্শাল একে ভারতী এবং নৌসেনার ‘ডিরেক্টর জেনারেল অফ নেভাল অপারেশন্‌স’ ভাইস অ্যাডমিরাল এএন প্রমোদ গত কয়েক দিনের সামরিক অভিযানের খুঁটিনাটি তথ্য তুলে ধরেন। এদিন বৈঠক শুরু হয় শিব তাণ্ডব স্তোত্র দিয়ে।

    বেয়াদপি করলে বরদাস্ত নয়

    সংঘর্ষ বিরতি (India Pakistan Ceasefire) ঘোষণার পর বিশ্বাসঘাতকতা করে বারবার হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান। রবিবার সেনার সাংবাদিক বৈঠকে কড়া ভাষায় বার্তা দিয়ে জানানো হল পাকিস্তানের পক্ষ থেকে আর কোনওরকম ভারত-পাক সমঝোতা ভঙ্গ হলে ভারতও চুপ থাকবে না। ভারতের লড়াই সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে। পাকিস্তানি সেনা বা সীমান্তের ও পারের বাসিন্দাদের সঙ্গে ভারতের কোনও লড়াই নেই। অপারেশন সিঁদুর তা গোটা বিশ্বকে বুঝিয়ে দিয়েছে। ভারত আর সন্ত্রাসবাদকে কোনও ভাবে বরদাস্ত করবে না। পাকিস্তান যে জঙ্গিদের মদত দেয় সেটা জলের মতো পরিষ্কার। এর পর পাকিস্তান কোনও রকমের বেয়াদপি করলে ভারত কোনও রকমে রেয়াত করবে না। তিন বাহিনীর কর্তারা জানান, এই সংঘাতের আবহে পাক সেনার ৩৫-৪০ জন জওয়ান নিহত হয়েছেন। পাকিস্তানের অভ্যন্তরে বেশ কিছু সামরিক ঘাঁটিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এমনকি ইসলামাবাদের কাছে চাকলালা ঘাঁটিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। করাচিতেও যে কোনও মুহূর্তে আঘাত করার মতো কৌশলগত অবস্থানে ছিল ভারতীয় নৌসেনা। তবে সংঘর্ষ বিরতি চুক্তির জন্য আপাতত চুপ রয়েছে ভারত।

    ১০০-র বেশি জঙ্গি, ৩৫-৪০ পাক সেনার মৃত্যু

    ডিজিএমও লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাজীব ঘাই জানান, পাকিস্তান নিয়ন্ত্রণরেখা (India-Pakistan War) লঙ্ঘন করে বেশ কিছু জনবহুল গ্রাম এবং মন্দির, গুরুদ্বারের মতো ধর্মীয় স্থানে আঘাত করার চেষ্টা করে। ভারতের জম্মু, উধমপুর, ভাটিন্ডা, বিভিন্ন জায়গায় হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান। হামলার কড়া প্রত্যাঘাত করেছে ভারতও। পাকিস্তান ও পিওকের ৯টি জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে চাকলালা, রফিকি-সহ বেশ কিছু অঞ্চল রয়েছে। ১০০-র বেশি জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে ইউসূফ আজহার, আব্দুল মালিক রাউফ এবং মুদস্‌সর আহমেদ। নিহত জঙ্গিদের মধ্যে আইসি ৮১৪ অপহরণ এবং পুলওয়ামা হামলায় জড়িত জঙ্গিও রয়েছে। ৩৫-৪০ পাক সেনার মৃত্যু হয়েছে। সাংবাদিক বৈঠকে ছবি ও ভিডিও দেখিয়ে জঙ্গি দমনের সাফল্য এসেছে কী ভাবে তার ব্যাখ্যা দেয় ভারতীয় সেনা।

    পাক হামলার প্রত্যাঘাত করা হয়েছে মাত্র

    তিন বাহিনীর যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে জানানো হয়, ৮-৯ মে’র রাতে পাকিস্তান বেশ কিছু ড্রোন এবং বিমান ভারতীয় আকাশসীমায় প্রবেশের চেষ্টা করে। সেগুলির লক্ষ্য ছিল ভারতীয় সামরিক ঘাঁটি। তার মধ্যে বেশির ভাগই ব্যর্থ হয়েছে। শ্রীনগর থেকে নালিয়া পর্যন্ত বিস্তীর্ণ অঞ্চলে ড্রোন, পাইলটহীন বিমান দিয়ে হামলার চেষ্টা করে পাকিস্তান। কিন্তু ভারতের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার জন্য সেগুলি নির্দিষ্ট লক্ষ্যে আঘাত হানতে পারেনি। এ ছাড়া পাকিস্তানি কিছু যুদ্ধবিমানকেও গুলি করে নামানো হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় বায়ুসেনা। তবে সেগুলি ভারতের সীমান্তে প্রবেশ করার আগেই সেগুলিকে আটকে দেওয়া গিয়েছে। ভারত স্পষ্ট করে দেয়, পাকিস্তানের এই হামলার কারণেই প্রত্যাঘাত করতে হয়েছে ভারতীয় সেনাকে।

    সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দেওয়ার ক্ষমতা ছিল

    পাক হামলার (India-Pakistan War) পরে ভারতও পাকিস্তানের বেশ কিছু বায়ুসেনা ঘাঁটি, কমান্ড সেন্টার এবং অন্য সামরিক ঘাঁটিতে আঘাত করে। প্রত্যাঘাত করা হয় পাকিস্তানের ওয়েস্টার্ন ফ্রন্টের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাতেও। পাকিস্তানের যে সামরিক ঘাঁটিগুলিতে প্রত্যাঘাত করা হয়েছে, তার মধ্যে ইসলামাবাদ সংলগ্ন এলাকাও রয়েছে। এয়ার মার্শাল ভারতী বলেন, “আমরা যে ঘাঁটিগুলিকে নিশানা করেছিলাম তার মধ্যে ছিল চাকলালা, রফিকি। উল্লেখ্য, চাকলালা ইসলামাবাদে অবস্থিত।” এ ছাড়া পাকিস্তানের রহিম ইয়ার খান, সরগোদা, জাকোকাবাদ এবং ভুলারির মতো এলাকাতেও সামরিক ঘাঁটিতে হামলা করা হয়েছে। এয়ার মার্শাল জানান, এই ঘাঁটিগুলিকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দেওয়ার ক্ষমতা ছিল ভারতের। কিন্তু ভারত নিয়ন্ত্রিত এবং পরিমিত জবাব দিয়েছে।

    ভারতীয় নৌসেনার কৌশলগত অবস্থান

    গত কয়েক দিন ধরে পাক নৌসেনাকে কৌশলগত ভাবে চাপে রেখেছিল ভারতীয় নৌসেনাও। ভাইস অ্যাডমিরাল এএন প্রমোদ জানান, পহেলগাঁও কাণ্ডের পরে নৌসেনার ডুবোজাহাজ, বিমান-সহ সমস্ত বিভাগকে সংঘাতের জন্য পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে সমুদ্রে মোতায়েন করে দেওয়া হয়েছিল। সন্ত্রাসবাদী হামলার ৯৬ ঘণ্টার মধ্যে নৌসেনা আরব সাগরে বেশ কিছু কৌশলগত অবস্থান নেয়। উত্তর আরব সাগরে এমন জায়গায় বাহিনীকে মোতায়েন করা হয়েছিল যেখান থেকে নিজেদের পছন্দ মতো সময়ে করাচি-সহ বিভিন্ন স্থানে নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার ক্ষমতা ছিল নৌসেনার। ভারতীয় নৌসেনার কৌশলগত অবস্থানের জন্য পাকিস্তানি নৌসেনাকে রক্ষণমূলক অবস্থান নিতে হয়েছিল এবং সেগুলি বেশির ভাগই নিজেদের বন্দর বা উপকূলের কাছাকাছিই রয়ে গিয়েছিল।

    প্রতিটি হামলার পাল্টার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে

    ডিজিএমও লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাজীব ঘাই জানান, প্রাথমিকভাবে ৩৬ ঘণ্টার জন্য সংঘর্ষবিরতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে, পাকিস্তান যদি কোনও রকমভাবে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে তাহলে এপার থেকেও উচিত শিক্ষা দেওয়া হবে পাক সেনাকে। এক বিন্দু জমিও ছাড়বে না ভারত। প্রতিটি হামলার পাল্টার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে ইসলামাবাদকে।

  • Rafale-M Jets: ২৬টি রাফাল-মেরিন জেট কিনছে ভারত, সীমান্তে অশান্তির মধ্যেই ফ্রান্সের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর

    Rafale-M Jets: ২৬টি রাফাল-মেরিন জেট কিনছে ভারত, সীমান্তে অশান্তির মধ্যেই ফ্রান্সের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: কথাবার্তা চূড়ান্ত হয়েই ছিল। ২৬টি ‘রাফাল মেরিন’ (Rafale-M Jets) যুদ্ধবিমান কেনার ব্যাপারে ফ্রান্সের সঙ্গে অবশেষে চুক্তি সই করে ফেলল ভারত। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে খবর, সোমবার ফ্রান্সের সঙ্গে প্রায় ৬৪ হাজার কোটি টাকার বিনিময়ে ২৬টি রাফাল-এম যুদ্ধবিমানের চুক্তি করেছে নয়াদিল্লি। ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীর ইতিহাসে সবচেয়ে মহার্ঘ প্রতিরক্ষা চুক্তি (India France Deal)। দুই দেশের সরকারের মধ্যে হওয়া এই চুক্তি অনুযায়ী, ২২টি এক আসনের নৌ-সংস্করণ এবং চারটি দুই আসনের প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান ২০৩০ সালের মধ্যেই ভারতে সরবরাহ করা হবে। শুধু তা-ই নয়, যুদ্ধবিমানের রক্ষণাবেক্ষণ, লজিস্টিক সহায়তা, কর্মীদের প্রশিক্ষণও চুক্তির আওতায় রয়েছে।

    সেনাবাহিনীর শক্তিবৃদ্ধি

    রাফাল-এম (Rafale-M Jets)  বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত নৌ-যুদ্ধবিমান, যা শুধু এখন ফ্রান্সের কাছেই রয়েছে। এ বার তা ভারতও পেতে চলেছে। পহেলগাঁও কাণ্ড নিয়ে ভারত এবং পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অবনতি হয়েই চলেছে। সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি স্থগিত করায় যুদ্ধের হুঁশিয়ারি দিয়ে চলেছে পাকিস্তান। এই পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনীর শক্তিবৃদ্ধিকে ইতিবাচক হিসাবেই দেখছেন বিশেষজ্ঞেরা। এই রাফাল বিমানগুলি বিমানবাহী রণতরী আইএনএস বিক্রান্ত থেকে পরিচালিত হবে। সেখানে বর্তমানে থাকা মিগ-২৯কে বিমানগুলিকে অবসরে পাঠানো হবে। এই যুদ্ধবিমানগুলি নৌসেনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই ২৬টি ‘রাফাল-এম’ যুদ্ধবিমান এলে জলপথ থেকেই আক্রমণ শানাতে পারবে ভারত। এই ২৬টি যুদ্ধবিমানের মধ্যে ২২টিতে এক জন পাইলট বসার জায়গা থাকছে। বাকি চারটি বিমানে দু’জন করে পাইলট বসতে পারবেন। দুই আসন বিশিষ্ট জেটগুলি কেবলমাত্র প্রশিক্ষণের জন্য। এগুলি বিমানবাহী রণতরী থেকে ওঠানামা করতে পারবে না।

    কবে আসছে নতুন রাফাল এম

    এর আগে ২০১৬ সালে ফ্রান্স থেকে ৩৬টি রাফাল যুদ্ধবিমান ভারতে আনার চুক্তি হয়। সেগুলি ভারতীয় বায়ুসেনার জন্য। রাফালের প্রথম ব্যাচটি এসে পৌঁছায় ২০২০ সালের জুলাই মাসে। এ বার দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করতে বায়ুসেনার পাশাপাশি নৌসেনার হাতেও রাফাল শ্রেণির যুদ্ধবিমান তুলে দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, রাফাল-এম ভারতে আসা শুরু করবে ২০২৮ সাল থেকে ২৯ সালের মধ্যে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে শেষ হবে গোটা ডেলিভারির কাজ। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সূত্রে জানা গেছে, ২০২৮ সালে ৯টি, ২০২৯ সালে ১২টি এবং ২০৩০ সালে বাকি ৫টি রাফাল-এম ভারতীয় নৌবাহিনীর হাতে আসবে। একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “রাফাল-এম একটি ক্যারিয়ার-নির্ভর বহুমুখী যুদ্ধবিমান, যার প্রমাণিত অভিযানক্ষমতা রয়েছে। এটি সমুদ্রে ভারতের আকাশক্ষমতা অনেকগুণ বাড়াবে।” ভারতের স্টোবার-প্রযুক্তির বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ থেকেই উড়ান কিংবা অবতরণ করতে পারবে রাফাল-এম।

    চুক্তির অধীনে কী কী

    সোমবার সাউথ ব্লকে প্রতিরক্ষামন্ত্রকের দফতরে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তিতে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেন প্রতিরক্ষা সচিব রাজেশ কুমার সিং। অন্যদিকে, ফ্রান্সের প্রতিনিধিত্ব করেন ভারতে ফরাসি রাষ্ট্রদূত থিয়েরি ম্যাতু। উপস্থিত ছিলেন নৌসেনার উপপ্রধান এবং বিমান ও অস্ত্র নির্মাণকারী সংস্থা যথাক্রমে দাসো ও এমবিডিএ- কর্তারা। ডিজিটালি উপস্থিত ছিলেন রাজনাথ সিং ও ফরাসি প্রতিরক্ষামন্ত্রী। এই চুক্তিতে ইতিমধ্যে ভারতীয় বায়ুসেনায় থাকা ৩৬টি রাফালের জন্যও অতিরিক্ত যন্ত্রাংশ সরবরাহ অন্তর্ভুক্ত। যদিও এই চুক্তিতে মোট প্রযুক্তি স্থানান্তরের কথা নেই, তবে ভবিষ্যতে ভারতীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ক্ষেপণাস্ত্র যেমন ‘অস্ত্র’ মিসাইল এবং ডিআরডিও-র তৈরি নৌবাহিনীর এনএসএম ক্ষেপণাস্ত্র রাফাল-এম যুদ্ধবিমানে সংযুক্ত করার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। চুক্তির আওতায় ভারতে একটি বিমানের ফিউসেলাজ উৎপাদন কেন্দ্র এবং ইঞ্জিন, সেন্সর ও অস্ত্রের এমআরও (মেইনটেন্যান্স, রিপেয়ার ও ওভারহল) কেন্দ্র স্থাপনের ব্যবস্থাও থাকবে।

    ‘রাফাল-এম’ যুদ্ধবিমান ছাড়াও ফ্রান্সের ডুবোজাহাজ!

    ইতিমধ্যেই ভারতীয় বায়ুসেনা শুরু করেছে এক বিরাট সামরিক মহড়া। যার নাম ‘আক্রমণ’। বিমানবাহিনী পাহাড় এবং স্থলে লক্ষ্যবস্তুতে আক্রমণের ড্রিল সারছে। দেশের মূলধারার যুদ্ধবিমানগুলি সেখানে আকাশ দাপাচ্ছে। রয়েছে সুখোই স্কোয়াড্রন। বায়ুসেনা রাফাল যুদ্ধবিমানগুলি বর্তমানে হরিয়ানার অম্বালা এবং আলিপুরদুয়ারের হাসিমারা— এই দুই ঘাঁটি থেকে পরিচালিত হয়। ‘রাফাল-এম’ যুদ্ধবিমান ছাড়াও ফ্রান্সের থেকে স্করপিন শ্রেণির ডুবোজাহাজ কেনার বিষয়ে আলোচনা চলছে ভারতের। ওই ডুবোজাহাজগুলির জন্যও কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ছাড়পত্র দিয়েছে। তবে মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা সংক্রান্ত কমিটি এখনও তাতে অনুমোদন দেয়নি। এছাড়া, এমআরএফে চুক্তির আওতায় ভারতীয় বায়ুসেনার জন্য আরও ১১৪টি রাফাল কেনার প্রাথমিক কথাবার্তাও চলছে বলে জানা গিয়েছে।

    কোথায় অন্য যুদ্ধবিমানদের মাত দেয় রাফাল

    বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, গোটা বিশ্বজুড়ে এক নামে পরিচিতি রাফালের। মাল্টি রোলিং ক্ষমতা সঙ্গে শত্রু নিক্ষেপে ধুরন্ধর। সব মিলিয়ে রাফালের দক্ষতা প্রশ্নাতীত। তার সঙ্গে রয়েছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির তৈরি অস্ত্র। যত দূরেই থাকুক শত্রু, রাফালের স্ক্যাল্প (SCALP) ক্রুজ মিসাইল তাকে নিমিষে ধ্বংস করতে সক্ষম। এছাড়াও, রাফাল কিন্তু নিজের মধ্যে বইতে পারে পরমাণু বোমাও। ওয়াকিবহাল মহল বলছে, ঘণ্টায় ২ হাজার ২২২ কিলোমিটার গতিবেগে আকাশকে চিরে দিয়ে ছুটে যেতে পারে রাফাল। যা মিনিটে পার করে দেবে পাকিস্তানকে। বুঝে উঠতেও পারবে না তারা। যখন একদিকে মাথার উপর বসে সর্বক্ষণ হুঁশিয়ারি দিয়ে যাচ্ছে চিন। তাদের আবার দোসর হচ্ছে পাকিস্তানও। সেই আবহে এদের মুখ বন্ধ করতেই রাফালকেই মোক্ষম জবাব বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

  • Rafale-M: ভারতীয় বায়ুসেনার রাফালের থেকে কতটা আলাদা হতে চলেছে নৌ-সংস্করণ রাফাল-এম?

    Rafale-M: ভারতীয় বায়ুসেনার রাফালের থেকে কতটা আলাদা হতে চলেছে নৌ-সংস্করণ রাফাল-এম?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: চলতি সপ্তাহেই ভারতীয় নৌসেনার (Indian Navy) জন্য ২৬টি রাফাল-এম যুদ্ধবিমান (Rafale-M) কেনার বিষয় চূড়ান্ত ছাড়পত্র দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার (Modi Government)। বুধবারই সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন ক্যাবিনেট কমিটি অন সিকিউরিটি বা সিসিএস (CCS)। যা জানা গিয়েছে, এই বিমান কিনতে গভর্নমেন্ট-টু-গভর্নমেন্ট ডিল (G2G Deal) হবে। ভারত ও ফ্রান্সের মধ্যে সরাসরি চুক্তি হবে। চুক্তির মূল্য আনুমানিক ৬৩ হাজার কোটি টাকা। যার দৌলতে, ২৬টি রাফাল মেরিন (Rafale-M) ফাইটার জেট পাবে ভারত। এর মধ্যে ২২টি হবে সিঙ্গল-সিটার বা এক আসন বিশিষ্ট এবং ৪টি টুইন সিটার বা দুই আসন বিশিষ্ট। শেষোক্ত চারটি প্রশিক্ষণের কাজেও ব্যবহৃত হবে। এর পাশাপাশি, যুদ্ধবিমানে ব্যবহৃত প্রয়োজনীয় আনুষাঙ্গিক সরঞ্জাম, যন্ত্রাংশ, অস্ত্র, সিমুলেটর, পাইলট প্রশিক্ষণ এবং রক্ষণাবেক্ষণের খরচও অন্তর্ভুক্ত থাকবে চুক্তির আওতায়।

    বেশি খরচে কম সংখ্যক বিমান

    এর আগে, ২০১৬ সালে একইভাবে ফ্রান্সের থেকে ভারতীয় বায়ুসেনার জন্য ৩৬টি রাফাল এফ-৩ যুদ্ধবিমান কিনেছিল ভারত। সেবারও দুই দেশের মধ্যে সরাসরি চুক্তির মাধ্যমে ৫৯ হাজার কোটি টাকায় রফা হয়েছিল। ফলে, একটা প্রশ্ন আসতে পারে, ৩৬টি বিমান কিনতে যা অর্থ ব্যয় হয়েছিল, সেই তুলনায় একই সংস্থা থেকে কম সংখ্যক একই প্রজাতির বিমান কিনতে বেশি খরচ কেন? প্রশ্নটা বৈধ। তবে, উত্তরটা লুকিয়ে রয়েছে বিমানেই। বায়ুসেনার ব্যবহৃত রাফালের (Rafale-M) সংস্করণ এবং বিশেষভাবে নৌবাহিনীর জন্য তৈরি রাফাল-এম যুদ্ধবিমানের মধ্যে অনেক মিল আছে বটে, তবে ফারাকটাও বিস্তর। বায়ুসেনার মডেলের তুলনায় এই সংস্করণে একাধিক পরিবর্তন করা হয়েছে, যাতে এটি বিমানবাহী রণতরী থেকে অপারেট করতে পারে। কীরকম? তা একটু খোলসা করে বলা যাক (Rafale vs Rafale-M)।

    রাফাল বনাম রাফাল-এম: তুল্যমূল্য বিচার (Rafale vs Rafale-M)

    বায়ুসেনায় ব্যবহৃত রাফালের তুলনায় তার নৌ-সংস্করণ (Rafale-M) বেশি ভারী। এর প্রধান কারণ, রাফাল-এম জেটের সামনের ছুঁচলো দিক (বিমানের নাক) অধিক লম্বা ও রিইনফোর্সড করা। লক্ষ্য, মাঝ-সমুদ্রে কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে বিমান ও পাইলটকে অধিক সুরক্ষা প্রদান করা। একইসঙ্গে, এই বিমানে একটি শক্তিশালী ‘আন্ডারক্যারেজ’ দেওয়া হয়েছে, যাতে বিমান বা রণতরীর ডেকের কোনও ক্ষতি না হয়।

    সাধারণ রাফাল যুদ্ধবিমান টেক-অফ ও ল্যান্ডিংয়ের জন্য নির্দিষ্ট রানওয়ে পায়। একটা রানওয়ে সাধারণত দেড় থেকে ২ কিমি লম্বা হয়। ফলে, আকাশে ওড়ার প্রয়োজনীয় শক্তি রানওয়ে থেকে পেয়ে যায় রাফাল। সেই জায়গায়, রাফাল-এম (Rafale-M) জেটকে উড়তে হবে ভারতীয় বিমানবাহী রণতরীর ডেক থেকে। আইএনএস বিক্রমাদিত্য বা আইএনএস বিক্রান্ত-এর ডেকে দৈর্ঘ্য প্রায় ২৬০ মিটার। যা রানওয়ের তুলনায় অনেকটাই ছোট।

    ছোট ডেকে টেক-অফ ও ল্যান্ডিং

    এছাড়া, ভারতীয় এয়ারক্র্যাফট ক্যারিয়ারগুলির ডেকের চরিত্র ভিন্ন। মার্কিন বিমানবাহী রণতরীগুলিতে রয়েছে ক্যাটাপুল্ট অ্যাসিস্টেড টেক-অফ বাট অ্যারেস্টেড রিকভারি (ক্যাটোবার) সিস্টেম। এখানে ডেকের ঠিক নীচে একটি স্প্রিং-কয়েল থাকে। সেই স্প্রিংকে বিমানের সামনের চাকার সঙ্গে লাগিয়ে দেওয়া হয়। এরপর স্প্রিং ছেড়ে দিলে, তা উচ্চগতিতে রিকয়েল করতে করতে বিমানকে টেনে নিয়ে গিয়ে ডেক থেকে উড়িয়ে দেয়। ফলে, বিমান যত ভারীই হোক, তাতে সমস্যা হয় না। সেখানে, ভারতের ক্যারিয়ারগুলি শর্ট টেক-অফ বাট অ্যারেস্টেড রিকভারি (স্টোবার) পদ্ধতি ব্যবহার করে। এখানে বিমানের টেক-অফ (ওড়ার) করার জন্য এক প্রান্তে স্কি-জাম্প রয়েছে। অর্থাৎ, ওপরের দিকে বাঁকানো। ফলে, বিমানকে নিজের শক্তিতে উড়তে হয়।

    রাফাল-এম (Rafale-M) একে বেশি ভারী। তার ওপর টেক-অফের জায়গা কম এবং ক্যাটবার বা আরও আধুনিক ইমালস (ইলেক্ট্রো-ম্যাগনেটিক সিস্টেম) নেই ভারতীয় রণতরীতে। ফলত, এই সমস্যার মোকাবিলা করতে রাফাল-এম জেটে বসানো হয়েছে অনেকটাই শক্তিশালী ইঞ্জিন। এই ইঞ্জিনের থ্রাস্ট ভারী রাফাল-এম জেটকে অস্ত্র নিয়ে ছোট দৈর্ঘ্যের ডেক থেকেও উড়তে সাহায্য করে।

    এছাড়া, রাফাল-এম (Rafale-M) বিমানে রয়েছে একাধিক পরিবর্তন। এতে যোগ করা হয়েছে এমন কিছু প্রযুক্তিগত উন্নতি, যা একে বায়ুসেনার ভার্সান থেকে পৃথক করেছে।

    রাফাল-এম জেটের অনন্য বৈশিষ্ট্য

    ● এতে থাকছে অ্যারেস্টার হুক। জাহাজের ডেকে অবতরণ করার জন্য। এই হুকের সাহায্যেই বিমানগুলি রণতরীর ছোট্ট ডেকে গতিতে অবতরণের পরও থেমে যেতে পারে। এছাড়া রয়েছে ক্যারিয়ার-নির্ভর মাইক্রোওয়েভ ল্যান্ডিং সিস্টেম।

    ● জায়গা বাঁচাতে এই বিমানের সঙ্গেই থাকে একটি ছোট ভাঁজযোগ্য সিঁড়ি। যার মাধ্যমে পাইলট বিমানে চড়তে বা বেরোতে পারেন।

    ● জায়গা বাঁচাতে রাফাল-এম (Rafale-M) বিমানের ডানাগুলি ভাঁজ করা যায়, যা বায়ুসেনার ভেরিয়েন্টে সম্ভব নয়।

    ● ডানার একেবারে শেষ প্রান্তে রয়েছে বিশেষ ‘টেলেমির সিস্টেম’, যা বাহ্যিক সরঞ্জামের সঙ্গে বিমানের ইনার্শিয়াল নেভিগেশন সিস্টেমের সুসংহত যোগাযোগ স্থাপন করতে সাহায্য করে।

    ● এছাড়া, এই রাফালের নৌ-ভার্সানে রয়েছে ‘থালেস আরবিই২-এম’ রেডার সিস্টেম। এটি যে কোনও সমুদ্র-অভিযানের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

    ● রাফাল-এম (Rafale-M) বিমানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে ‘থালেস স্পেকট্রা ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার সুইট’, যা নৌসেনার অভিযানে ভীষণই প্রয়োজনীয়।

    ● এখানেই শেষ নয়। রাফালের বায়ুসেনার ভার্সানের তুলনায় রাফাল-মেরিন (Rafale vs Rafale-M) সংস্করণ বিমানটি আরও বেশি ধরনের অস্ত্রবহনে সক্ষম। যার মধ্যে অন্যতম হল জাহাজ-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র। এছাড়া থাকে আকাশ থেকে ভূমিতে আঘাত হানা ক্ষেপণাস্ত্রও।

  • Rafale M: অপেক্ষার অবসান! ৬৩ হাজার কোটি টাকায় ফ্রান্স থেকে ২৬টি রাফাল-এম যুদ্ধবিমান কেনায় ছাড়পত্র কেন্দ্রের

    Rafale M: অপেক্ষার অবসান! ৬৩ হাজার কোটি টাকায় ফ্রান্স থেকে ২৬টি রাফাল-এম যুদ্ধবিমান কেনায় ছাড়পত্র কেন্দ্রের

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান। অবশেষে ভারতে আসতে চলেছে রাফাল মেরিন যুদ্ধবিমান। ভারতীয় নৌসেনার (Indian Navy) জন্য ২৬টি রাফাল-এম যুদ্ধবিমান (Rafale M) কেনার বিষয়ে চূড়ান্ত ছাড়পত্র দিয়েছে মোদি মন্ত্রিসভা (Modi Cabinet)। নিঃসন্দেহে এটি ভারতের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে বড় খবর।

    ৬৩ হাজার কোটি টাকার চুক্তি

    কেন্দ্রীয় সূত্রের খবর, বুধবারই এই চুক্তিতে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন ক্যাবিনেট কমিটি অন সিকিউরিটি বা সিসিএস (CCS)। ভারতীয় বায়ুসেনার জন্য ৩৬টি রাফাল কেনার সময় যেমন দুই সরকারের মধ্যে সরাসরি চুক্তি হয়েছিল, ঠিক তেমনভাবেই এক্ষেত্রেও ভারত ও ফ্রান্সের মধ্যে গভর্নমেন্ট-টু-গভর্নমেন্ট ডিল হবে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের এক সূত্রের দাবি, ৬৩ হাজার কোটি টাকার চুক্তির মাধ্যমে ২৬টি রাফাল মেরিন (Rafale M) ফাইটার এয়ারক্রাফ্ট পাবে ভারত। এর মধ্যে ২২টি হবে সিঙ্গল-সিটার বা এক আসন বিশিষ্ট এবং ৪টি টুইন সিটার বা দুই আসন বিশিষ্ট। শেষোক্ত চারটি প্রশিক্ষণের কাজেও ব্যবহৃত হবে।

    নৌসেনার চাহিদা অনুযায়ী পরিবর্তন

    তবে, বায়ুসেনার সংস্করণের থেকে রাফালের নৌবাহিনীর সংস্করণ কিছুটা আলাদা হবে। মূলত, নৌসেনার চাহিদা অনুযায়ী, তাতে বেশ কয়েকটি পরিবর্তন করা হয়েছে। রাফাল-এম (Rafale M) যুদ্ধবিমানের সামনের অংশটি আরও লম্বা, শক্তিশালী। এছাড়া, এয়ারক্র্যাফট ক্যারিয়ার বা বিমানবাহী রণতরী থেকে টেক-অফ ও ল্যান্ডিংয়ে সুবিধার্থে এই বিমানে একটি শক্তিশালী আন্ডারক্যারেজ দেওয়া হয়েছে, যাতে বিমান বা রণতরীর ডেকের কোনও ক্ষতি না হয়। এছাড়া, ভারতীয় বিমানবাহী রণতরীগুলিতে ব্যবহৃত শর্ট টেক-অফ বাট অ্যারেস্টেড রিকভারি (স্টোবার) বা স্কি-জাম্প পদ্ধতির জন্য এই বিমানগুলিকে তেমনভাবেই মডিফাই করা হয়েছে।

    মিগ-২৯কে-এর জায়গা নেবে রাফাল-এম

    নৌসেনার এক কর্তা জানান, রাফাল-এম যুদ্ধবিমান বিশেষভাবে বিমানবাহী রণতরী থেকে ওঠা-নামার জন্যই তৈরি করা হয়েছে এবং একবার অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পরে, এই জেটগুলি ভারতীয় নৌবহরের পরিপূরক হবে। এই জেটগুলি বর্তমানে ব্যবহৃত মিগ-২৯কে যুদ্ধবিমানগুলিকে প্রতিস্থাপন করবে। ওই কর্তা জানান, একবার রাফাল-এম (Rafale M) জেটগুলি আইএনএস বিক্রমাদিত্য এবং আইএনএস বিক্রান্তে মোতায়েন হয়ে গেলে, ভারতের জলসীমায় নৌসেনার (Indian Navy) সক্ষমতা কয়েক গুণ বেড়ে যাবে।

    চার বছর পর থেকে আসবে বিমানগুলি

    জানা গিয়েছে, এই চুক্তির মাধ্যমে ২৬টি রাফাল মেরিন ফাইটার জেট কেনার পাশাপাশি লজিস্টিক সাপোর্ট, রক্ষণাবেক্ষণ এবং প্রশিক্ষণের বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত থাকবে। চুক্তি স্বাক্ষরের চার বছর পর বিমান সরবরাহ শুরু হওয়ার কথা। অর্থাৎ, ২০২৯ সালের শেষ নাগাদ প্রথম ব্যাচ আসার সম্ভাবনা রয়েছে। সবকটি যুদ্ধবিমান (Rafale M) ২০৩১ সালের মধ্যে সরবরাহ করার কথা রয়েছে।

  • Indian Naval Diplomacy: লক্ষ্য ভারত মহাসাগরে চিনা প্রভাবের মোকাবিলা, আফ্রিকার ১০টি দেশের সঙ্গে নৌ-মহড়া ভারতের

    Indian Naval Diplomacy: লক্ষ্য ভারত মহাসাগরে চিনা প্রভাবের মোকাবিলা, আফ্রিকার ১০টি দেশের সঙ্গে নৌ-মহড়া ভারতের

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ভারত মহাসাগরে চিনের দাদাগিরি একেবারে মুখ বুজে মেনে নেবে না ভারত (Indian Naval Diplomacy)। ভারত মহাসাগরে চিনের ক্ষমতাবৃদ্ধির মোকাবিলা করতে তৈরি ভারতীয় নৌসেনা। এপ্রিলের গোড়ায় আফ্রিকা মহাদেশের ১০টি রাষ্ট্রের সঙ্গে ভারত মহাসাগরে নৌযুদ্ধের মহড়ায় অংশ নেবে ভারতীয় নৌসেনা। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ওই ১০টি দেশের অনেকগুলিই ‘চিনের সহযোগী’ বলে চিহ্নিত।

    ভারত-আফ্রিকা নৌ মহড়া

    প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রের খবর, এপ্রিলের মাঝামাঝি ভারতীয় নৌসেনা এবং তানজানিয়ার ‘পিপলস ডিফেন্স ফোর্স’ যৌথ ভাবে ভারত মহাসাগরে ‘আইকেম’ নামের ওই নৌমহড়ার আয়োজন করবে। উদ্বোধন কর্মসূচি হবে তানজানিয়ার দার-এস-সালামে। নৌযুদ্ধের পাশাপাশি বিশেষ ভাবে গুরুত্ব পাবে বাণিজ্যিক জাহাজের সুরক্ষা এবং জলদস্যুর মোকাবিলা। কমোরোস, জিবুতি, এরিট্রিয়া, কেনিয়া, মাদাগাস্কার, মরিশাস, মোজাম্বিক, সেশেলস্ এবং দক্ষিণ আফ্রিকা ওই মহড়ায় অংশগ্রহণ করবে। ঘটনাচক্রে, সম্প্রতি জিবুতিতে নৌঘাঁটি নির্মাণের কাজ শুরু করেছে চিন।

    অর্থনৈতিক ও কৌশলগত সম্পর্ক দৃঢ়করণ

    ভারত-আফ্রিকা (Indian Naval Diplomacy) বাণিজ্য ২০২৩-২৪ সালে ৮৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে, যা সামুদ্রিক নিরাপত্তার গুরুত্বকে তুলে ধরে। ভারতের বৈশ্বিক বাণিজ্যের প্রায় ৮০ শতাংশ এবং তার শক্তির আমদানি অধিকাংশই ভারত মহাসাগর দিয়ে চলে। অধিকাংশ আফ্রিকান দেশে প্রায়  ৮ বিলিয়ন ডলার লাইন অফ ক্রেডিট (LoCs) প্রদান করেছে ভারত, যার মাধ্যমে নৌ বন্দরের আধুনিকীকরণ, উপকূলীয় নজরদারি রাডার নেটওয়ার্ক স্থাপন এবং বাণিজ্য সুবিধা প্রকল্পগুলি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। ভারতের নৌবাহিনীর উপ প্রধান ভাইস অ্যাডমিরাল তারুণ সোবটি, আইকেম-কে আঞ্চলিক নিরাপত্তা এবং নৌ সহযোগিতার একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হিসেবে তুলে ধরেছেন।

    ভারত মহাসাগরের কৌশলগত গুরুত্ব

    ভারত মহাসাগর (Indian Naval Diplomacy) বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্রপথ। এই পথে বিশ্বের ৮০ শতাংশ তেল বাণিজ্য হয়। চিন ও ভারতের মতো উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোর জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ। ইউরোপ, আফ্রিকা ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে সংযোগ তৈরি করেছে এই ভারত মহাসাগর। কৃটনৈতিক মহলের অনুমান, ভারত মহাসাগরের ভূরাজনীতি ক্রমাগত পরিবর্তনশীল। এ অঞ্চলের ভবিষ্যৎ গঠনে ভারত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক শক্তিগুলো যখন প্রভাব বিস্তারের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত, তখন ভারতের উচিত সুস্পষ্ট কৌশল নিয়ে এগিয়ে যাওয়া। নৌ-শক্তি বৃদ্ধি, আঞ্চলিক অংশীদারদের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার ও বহুপাক্ষিক সামুদ্রিক উদ্যোগে সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে ভারত তার স্বার্থ সুরক্ষিত রাখতে পারে। একইসঙ্গে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতাও নিশ্চিত করতে পারে।

    চিনের সামুদ্রিক সম্প্রসারণ মোকাবিলা

    এ বার সরাসরি ‘বেজিংয়ের প্রভাব বলয়ে’ হানা দিয়েছে নয়াদিল্লি। গত কয়েক বছর ধরেই আফ্রিকার দেশগুলিতে প্রভাব বাড়িয়ে চলেছে চিন। অর্থনৈতিক এবং বাণিজ্যিক সহযোগিতার পাশাপাশি সামরিক ক্ষেত্রেও চিনের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয়েছে আফ্রিকার অনেকগুলি দেশের। ভারতের আফ্রিকার সঙ্গে সামুদ্রিক সহযোগিতা তীব্রতর হচ্ছে চিনের আগ্রাসী এবং আধিপত্যবাদী নৌ ও অর্থনৈতিক সম্প্রসারণের পরিপ্রেক্ষিতে। চিনের মারাত্মক সামুদ্রিক অবকাঠামো বিনিয়োগ, বিশেষত জিবুতি এবং কেনিয়ায়, ঋণের স্থিতিশীলতা ও জাতীয় সার্বভৌমত্ব নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। চিনের প্রথম বিদেশি সামরিক ঘাঁটি, পিপলস লিবারেশন আর্মি নেভি (PLAN)-এর ঘাঁটি, জিবুতি, বৈশ্বিক অপারেশনাল উপস্থিতি বাড়িয়েছে, যা আঞ্চলিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। ভারত তো বটেই, আমেরিকাও ভারত মহাসাগরে প্রভাব বৃদ্ধির এই খেলায় অনেকটা পিছিয়ে পড়েছিল চিনের চেয়ে। এই পরিস্থিতিতে পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম মহাদেশের ১০টি দেশকে নিয়ে ভারতের নৌমহড়া চিনের অস্বস্তি বাড়াবে বলেই অনেকে মনে করছেন।

    আফ্রিকার দৃষ্টিভঙ্গি

    আফ্রিকার দেশগুলো সাধারণভাবে ভারতের সামুদ্রিক উদ্যোগে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। চিনের থেকে ভারতের বন্ধুত্বপূর্ণ নীতিই তাদেরকে আপাতত বেশি আকৃষ্ট করেছে। যেখানে গঠনমূলক ও মজবুত অংশীদারিত্ব, স্থানীয় কর্মসংস্থানের সুযোগ এবং সক্ষমতা তৈরির উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ভারতের এই সহযোগিতামূলক দৃষ্টিভঙ্গি চিনের সমালোচিত মডেল থেকে পৃথক। চিনা মডেলে রয়েছে উচ্চ ঋণের বোঝা, পরিবেশগত প্রভাব এবং স্থানীয় সুবিধার অভাব। অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন এবং মনোহর পরিক্কর ইনস্টিটিউট অফ ডিফেন্স স্টাডিজ অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক অ্যানালাইসিস (MP-IDSA) এর মতো শীর্ষ চিন্তনক্ষত্রগুলো ভারতের অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং সহযোগিতামূলক কৌশলকে প্রশংসা করেছে, যা আফ্রিকার জন্য কৌশলগতভাবে লাভজনক এবং ভারতের আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা এবং পারস্পরিক প্রবৃদ্ধির জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

    ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা এবং ভূ-রাজনৈতিক প্রভাব

    ভারত এবং চিনের (Indian Naval Diplomacy) ভূ-রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা ক্রমেই বাড়ছে। ভারতের সহযোগিতামূলক সামুদ্রিক কূটনীতি আফ্রিকার দেশগুলোর মধ্যে এক মহৎ বিকল্প হিসেবে আরও জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। ভূ-রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা আশা করছেন, ভারতের সামুদ্রিক কূটনীতি আঞ্চলিক নিরাপত্তা কাঠামোতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে, অর্থনৈতিক সম্পর্ক শক্তিশালী করবে এবং আফ্রিকান দেশগুলিকে চিনের বিস্তৃত প্রভাবের বিকল্প একটি কৌশলগত পথ সরবরাহ করবে। ভারতীয় কৌশল, যা প্রকৃত অংশীদারিত্ব এবং পারস্পরিক প্রবৃদ্ধিতে গুরুত্ব দেয়, তা আফ্রিকায় দীর্ঘমেয়াদী ভূ-রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য সহায়ক হবে।

  • Tavasya: ভারত মহাসাগরে চিনের দাপট কমাতে সক্রিয় ভারত, নৌসেনার হাতে আসছে ‘ভীমের গদা’

    Tavasya: ভারত মহাসাগরে চিনের দাপট কমাতে সক্রিয় ভারত, নৌসেনার হাতে আসছে ‘ভীমের গদা’

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ভারত মহাসাগরীয় (Indian Navy) এলাকায় চিনের দাদাগিরি বন্ধ করতে সদা সক্রিয় রয়েছে ভারত। সেই লক্ষ্যে ভারতের নৌবাহিনী গোয়া শিপইয়ার্ড লিমিটেডের তৈরি (GSL) ‘তবস্যা’ (Tavasya) নামক দ্বিতীয় স্টেলথ ফ্রিগেটটি উদ্বোধন করল। এটি প্রজেক্ট ১১৩৫.৬ (ইয়ার্ড ১২৫৯)-এর আওতায় নির্মিত। তবস্যা ভারতের যুদ্ধজাহাজ নির্মাণে আত্মনির্ভরতার এক বড় পদক্ষেপ। ভারতীয় নৌ-সেনায় এর অন্তর্ভুক্তি এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত।

    তবস্যা-র ক্ষমতা

    ৩,৮০০ টনেরও বেশি ডিপ্লেসমেন্টের একটি জটিল এবং অস্ত্র-বহুল ফ্রিগেট হল ‘তবস্যা’ (Tavasya)। এটি নানা ধরণের আক্রমণাত্মক ও রক্ষামূলক অপারেশন চালানোর জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। যা ভারতকে ভারত মহাসাগর অঞ্চলে তার কৌশলগত আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে সাহায্য করবে। এই স্টেলথ বৈশিষ্ট্যসহ উন্নত প্রযুক্তির, উচ্চ-সহনশীল ক্ষমতা এবং পরবর্তী প্রজন্মের কমব্যাট সিস্টেমে সজ্জিত ‘তবস্যা’ ভারতের সামুদ্রিক প্রতিরক্ষা সক্ষমতাকে আরও শক্তিশালী করবে।

    ‘আত্মনির্ভর ভারত’-এ প্রতিরক্ষায় জোর

    ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনের মোকাবিলার জন্য নৌসেনাকে আধুনিক যুদ্ধের উপযোগী করে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে মোদি সরকার। ‘আত্মনির্ভর ভারত’ প্রকল্পে জোর দিয়ে সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি করা হচ্ছে বিভিন্ন যুদ্ধজাহাজ। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের উপমন্ত্রী সঞ্জয় শেঠ বলেন, “তবস্যার উদ্বোধন শুধুমাত্র ভারতের নৌবাহিনীর জন্য একটি বড় পদক্ষেপ নয়, এটি ভারতের কৌশলগত প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রেও বড় ভূমিকা নেবে।” প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর কথায়, ভারত সম্প্রতি যুদ্ধ জাহাজ রফতানিও করছে। এক্ষেত্রে গোয়া শিপইয়ার্ড লিমিটেডের অগ্রণী ভূমিকা রয়েছে।

    তবস্যা-র গুরুত্ব

    প্রাচীন ভারতীয় মহাকাব্য মহাভারতের পঞ্চপাণ্ডবের দ্বিতীয় ভীমসেনের গদার নামানুসারে জাহাজটির নামকরণ করা হয়েছিল ‘তবস্যা’ (Tavasya), যা ভারতীয় নৌবাহিনীর অদম্য মনোবল এবং ক্রমবর্ধমান শক্তির প্রতীক। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক এবং গোয়া শিপইয়ার্ড লিমিটেডের মধ্যে দুটি প্রজেক্ট ১১৩৫.৬ ফলো-অন ফ্রিগেট নির্মাণের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় ২০১৯ সালের ২৫ জানুয়ারিতে। প্রথম জাহাজ, ‘ট্রিপুট’, ২০২৪-এর ২৩ জুলাইতে উদ্বোধন করা হয়। ‘ত্রিপুট’ এবং ‘তবস্যা’ উভয়ই বহুমুখী অভিযানের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে সারফেস, সাব-সারফেস এবং এয়ার কমব্যাট। জাহাজগুলি ১২৪.৮ মিটার লম্বা, ১৫.২ মিটার চওড়া এবং প্রায় ৩,৬০০ টন ওজনের। তারা সর্বোচ্চ ২৮ নট গতি অর্জন করতে সক্ষম। উভয় ফ্রিগেটেই বিপুল সংখ্যক দেশীয় সরঞ্জাম, অস্ত্র এবং সেন্সর রয়েছে, যা ভারতের প্রতিরক্ষা ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে। উন্নত স্টিলথ বৈশিষ্ট্য, অস্ত্রশস্ত্র, সেন্সর এবং প্ল্যাটফর্ম ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে সজ্জিত, এই জাহাজগুলি ভারতীয় নৌবাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য প্রস্তুত।

  • Garden Reach Shipbuilders and Engineers: সমুদ্রে সফল পরীক্ষা, নৌসেনাকে শীঘ্র আরও ২ রণতরী দেবে গার্ডেনরিচ

    Garden Reach Shipbuilders and Engineers: সমুদ্রে সফল পরীক্ষা, নৌসেনাকে শীঘ্র আরও ২ রণতরী দেবে গার্ডেনরিচ

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ভারতীয় নৌসেনার (Indian Navy) শক্তি বাড়াতে সদা সক্রিয় গার্ডেনরিচ শিপবিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স (Garden Reach Shipbuilders and Engineers)। উন্নতমানের রণতরী তৈরিতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ কলকাতার এই সংস্থা। প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মজবুত করতে একাধিক যুদ্ধজাহাজ নৌসেনা ও উপকূলরক্ষী বাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছে গার্ডেনরিচ। এই মুহূর্তে তারা প্রস্তুত করছে আরও দুটি রণতরী। সম্প্রতি এই যুদ্ধজাহাজগুলোর সফল সামুদ্রিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়েছে বলে জানিয়েছে জাহাজ নির্মাণকারী সংস্থাটি।

    কী দিয়ে তৈরি এই যুদ্ধ জাহাজ

    জানা গিয়েছে, গত ৩ মার্চ পরীক্ষার জন্য সমুদ্রে নামে হিমগিরি (ইয়ার্ড ৩০২২) এবং অ্যান্ড্রোথ (ইয়ার্ড ৩০৩৫) নামের যুদ্ধজাহাজ। নৌসেনার ১৭এ প্রোজেক্টের আওতায় এগুলো নির্মাণ করা হচ্ছে। দেখে নেওয়া হচ্ছে রণতরী দুটির কার্যকারিতা। যার মধ্যে গতি, প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, সহনশীলতা বিশেষ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। চলছে শেষ পর্যায়ের কাজ। ইতিমধ্যে আইএনএস আর্নালা (ইয়ার্ড ৩০২৯)-এরও পরীক্ষা সফল হয়েছে। শীঘ্রই এটি নৌবাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হবে। জাহাজগুলি একেবারে দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি। এগুলির নির্মাণ করা হয়েছে বিশেষ স্টিল দিয়ে।

    কী আছে এই যুদ্ধ জাহাজে

    এই জাহাজগুলোর সব কটিতেই রয়েছে উন্নত প্রযুক্তির সরঞ্জাম, অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা। থাকছে বিমান, কপ্টার ও জাহাজ বিধ্বংসী প্রতিরোধ ব্যবস্থা। জাহাজের ডেকের ভেতর থেকেই ছোড়া যাবে ক্ষেপণাস্ত্র। প্রসঙ্গত, গত বছরের নভেম্বরে নৌসেনার (Indian Navy) জন্য চারটি নজরদারি জাহাজ বানানোর বরাত পায় গার্ডেনরিচ (Garden Reach Shipbuilders and Engineers)। এর আগে বেশ কয়েকটি নজরদারি জাহাজ (অফশোর পেট্রল ভেসেল) তৈরি করে নৌসেনা ও উপকূলরক্ষী বাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছে গার্ডেনরিচ। যেগুলো দিয়ে চলছে ‘শত্রু’ পক্ষের উপর কড়া নজরদারি। চিনের দাদাগিরি রুখতে এখানেই তৈরি হয়েছে সাবমেরিন বিধ্বংসী রণতরী। এবার ‘নিউ জেনারেশন অফশোর পেট্রল ভেসেল’ তৈরি করেছে জাহাজ নির্মাণকারী সংস্থাটি। বিপর্যয় মোকাবিলা, অনুপ্রবেশ আটকানো, জলদস্যুদের দমনের মতো নানা গুরুত্বপূর্ণ অভিযানে নামানো হবে নতুন প্রজন্মের এই জাহাজগুলোকে। পাশাপাশি উপকূলে অতন্দ্রপ্রহরীর কাজ করবে তারা।

  • India France Rafale Deal: ৬৬ হাজার কোটি টাকায় ২৬টি রাফাল-এম জেট কিনছে ভারত, চুক্তি এপ্রিলেই

    India France Rafale Deal: ৬৬ হাজার কোটি টাকায় ২৬টি রাফাল-এম জেট কিনছে ভারত, চুক্তি এপ্রিলেই

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ভারতীয় নৌসেনার জন্য ২৬টি রাফাল-এম যুদ্ধবিমান (Rafale-M jets) কেনার বিষয়টি প্রায় চূড়ান্ত। সম্প্রতি, দর কষাকষির পর্ব মিটিয়ে ফেলেছে দুই দেশের প্রতিনিধিরা। জানা যাচ্ছে, ৭.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৬৬ হাজার কোটি টাকা) বিনিময়ে ওই জেটগুলি কিনতে চলেছে ভারত। সূত্রের খবর, এই নিয়ে চূড়ান্ত চুক্তি (India France Rafale Deal) স্বাক্ষরিত হতে পারে এপ্রিল মাসেই। সেই সময় ভারত সফরে আসার কথা ফরাসি প্রতিরক্ষামন্ত্রীর। জানা যাচ্ছে, তাঁর উপস্থিতিতেই এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে চলেছে।

    মিগ-২৯ বিমানের পরিবর্তে রাফাল-এম (Rafale-M jets)

    বুড়ো হয়ে যাওয়া মিগ-২৯কে ও মিগ-২৯কেইউবি যুদ্ধবিমানগুলির পরিবর্তে এবার ভারতীয় নৌসেনার জোড়া বিমানবাহী রণতরী আইএনএস বিক্রমাদিত্য ও আইএনএস বিরাট-এ মোতায়েন করা হবে রাফাল-এম জেটগুলিকে। নতুন বিমানগুলির দায়িত্বে থাকবে নৌসেনার আইএনএএস ৩০০ ‘হোয়াইট টাইগার্স’ এবং আইএনএএস ৩০৩ ‘ব্ল্যাক প্যান্থার্স’ এভিয়েশন স্কোয়াড্রন। ২৬টি বিমানের ভেরিয়েন্টের বিস্তারিত তথ্য এখনও প্রকাশ্যে না আসলেও, কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, ২২টি বিমান হবে এক-আসন বিশিষ্ট রাফাল-এম ফাইটার, যেগুলি রণতরীতে মোতায়েন থাকবে (India France Rafale Deal)। বাকি চারটে হবে দুই-আসন বিশিষ্ট ‘রাফাল-বি’ ট্রেনার বা প্রশিক্ষণ বিমান। এই বিমানগুলিকে রণতরীতে মোতায়েন করা যায় না। মূলত, গোয়ায় অবস্থিত ভারতীয় নৌসেনার ঘাঁটি আইএনএস হানসা-র বিমান প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে এগুলি থাকবে পাইলটদের প্রশিক্ষণের জন্য। যদিও, অন্যান্য সংবাদমাধ্যমে খবরে প্রকাশিত অনুযায়ী, সবকটি বিমানই রাফাল-এম (Rafale-M jets) ভেরিয়েন্ট হবে। ফ্রান্স এবং ভারতে থাকা অত্যাধুনিক সিমুলেটরে প্রশিক্ষণ হবে। তবে, আখেরে কী হবে, তা চুক্তির সময় প্রকাশ্যে আসবে।

    ভারতে পৃথক অ্যাসেম্বলি লাইন তৈরির পরিকল্পনা

    রাফাল বিমানের নির্মাতা ফরাসি সংস্থা দাসো ভারতে একটি পৃথক অ্যাসেম্বলি লাইন বা কারখানা তৈরির ভাবনাচিন্তা করছে। এতে, ভারত ভবিষ্যতে যদি আরও রাফাল কিনতে ইচ্ছুক হয়, তাহলে এখানেই সেগুলিকে তৈরি করা সম্ভব হবে (India France Rafale Deal)। এর প্রধান কারণ হল, ভারতীয় নৌসেনার রাফাল-এম চুক্তিতে ভবিষ্যতে অতিরিক্ত বিমান কেনার সংস্থানও থাকছে। বর্তমানে নৌসেনায় ৪৫টি মিগ-২৯কে/কেইউবি যুদ্ধবিমান রয়েছে। ভারত চাইছে সবগুলিকে সরিয়ে পুরোটাই রাফাল দিয়ে মুড়ে দিতে। সেক্ষেত্রে ভারতে অ্যাসেম্বলি লাইন হলে বাড়তি সুবিধা মিলবে। একদিকে, বিমান কেনা ও রক্ষণাবেক্ষণের খরচ কমবে। অন্যদিকে, দ্রুত বিমানগুলি হাতে পাবে ভারত।

    এমআরএফএ চুক্তিতে নজর দাসোর

    প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারত যে আগামী দিনে বায়ুসেনার জন্য ১১৪টি মিডিয়াম রোল যুদ্ধবিমান (এমআরএফএ) কেনার দরপত্র পেশ করতে চলেছে, তাতে এক ধাপ এগিয়ে থাকবে দাসো। কারণ, ওই ক্যাটেগরিতে বরাত জিততে রাফালের লড়াই হবে মার্কিন এফ-১৬, সুইডেনের গ্রিপেন সাব, রাশিয়ার মিগ-৩৫ এবং ইউরোফাইটার টাইফুনের সঙ্গে। ভারতীয় বায়ুসেনা ইতিমধ্যেই ৩৬টি রাফাল ব্যবহার করে। তার ওপর নৌসেনাও কিনছে ২৬টি রাফাল (Rafale-M jets)। এবার ভারতে অ্যাসেম্বলি লাইন হয়ে গেলে, সেক্ষেত্রে, দাসো বলতে পারবে, তারা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’-কে সমর্থন করে। স্বভাবতই ১১৪টি মিডিয়াম যুদ্ধবিমানের বরাতে পাল্লা ভারি ঝুঁকে পড়বে রাফালের দিকেই (India France Rafale Deal)।

     

  • Indian Navy: নৌসেনার নতুন ‘মেঘনাদ’! রাশিয়া থেকে ভারতে আসছে ব্রহ্মস ক্ষেপণাস্ত্রবাহী স্টেলথ ফ্রিগেট ‘তমাল’

    Indian Navy: নৌসেনার নতুন ‘মেঘনাদ’! রাশিয়া থেকে ভারতে আসছে ব্রহ্মস ক্ষেপণাস্ত্রবাহী স্টেলথ ফ্রিগেট ‘তমাল’

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: শীঘ্রই বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত মাল্টি-রোল স্টেলথ গাইডেড মিসাইল ফ্রিগেট ‘তমাল’ পেতে চলেছে ভারতীয় নৌসেনা (Indian Navy)। এই যুদ্ধজাহাজটি তৈরি করেছে রাশিয়া। বলা হচ্ছে বিদেশ থেকে ভারতে আসা এটাই হবে শেষ ফ্রিগেট (Stealth Frigate Tamal)। রাবণ-পুত্র মেঘনাদের (ইন্দ্রজিৎ) মতোই আড়ালে থেকে শত্রুর উপর প্রাণঘাতী আঘাত হানতে দক্ষ তমাল। ভারত এবং রাশিয়ার যৌথ উদ্যোগে ইয়নটার শিপইয়ার্ডে নির্মিত বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত ‘স্টেলথ গাইডেড মিসাইল ফ্রিগেট’গুলির অন্যতম তমাল।

    রাশিয়ার প্রযুক্তিগত সহায়তা

    প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রের খবর, চলতি বছরের জুন মাসেই আনুষ্ঠানিক ভাবে নৌসেনায় (Indian Navy) যোগ দিয়ে সমুদ্রযুদ্ধের মহড়ায় যোগ দেবে আইএনএস তমাল। প্রসঙ্গত, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনের মোকাবিলার জন্য নৌসেনাকে আধুনিক যুদ্ধের উপযোগী করে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে মোদি সরকার। ২০১৬ সালের সমঝোতা এবং ২০১৮ সালে সই হওয়া চূড়ান্ত চুক্তি অনুযায়ী আইএনএস তলোয়ার শ্রেণির চারটি স্টেলথ ফ্রিগেট (Stealth Frigate Tamal) বানাচ্ছে রাশিয়া। চুক্তির মোট অঙ্ক ২৫০ কোটি ডলার (প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা)। এই তালিকার প্রথমটি, আইএনএস তুষিল ইতিমধ্যেই ভারতীয় নৌসেনায় যোগ দিয়েছে। এ বার পালা আইএনএস তমালের। অত্যাধুনিক এই যুদ্ধজাহাজ পরিচালনা এবং যুদ্ধকৌশলের প্রশিক্ষণে যোগ দিতে এখন রাশিয়ায় রয়েছেন ভারতীয় নৌসেনার ২০০ জন অফিসার এবং কর্মী।

    কী কী অস্ত্রে সমৃদ্ধ তমাল

    ৩০ ‘নট’ গতিবেগ সম্পন্ন তমাল একটানা ৩ হাজার কিলোমিটার দূরত্ব পথ অতিক্রম করতে সক্ষম। ব্রহ্মস সুপারসনিক (শব্দের চেয়ে বেশি গতিবেগ সম্পন্ন) ক্ষেপণাস্ত্র ছাড়াও আইএনএস তমালে (Stealth Frigate Tamal) থাকছে বিমানবিধ্বংসী কামান। পাশাপাশি থাকছে সাবমেরিন ধ্বংসকারী টর্পিডো। এ ছাড়া দু’টি রুশ কামোভ-২৮ এবং কামোভ-৩১ হেলিকপ্টার থাকছে, যা শত্রুর অবস্থান পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি হামলার কাজেও ব্যবহার করা যাবে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রের খবর, রাশিয়ায় এখন যুদ্ধজাহাজ তমালের ট্রায়াল চলছে। বিশেষ করে এর জন্য ২০০ জন ভারতীয় নৌসেনা সেন্ট পিটার্সবার্গে পৌঁছেছেন। এই ট্রায়াল চলবে প্রায় ৬ সপ্তাহ। এটি সফলভাবে সম্পন্ন হলে, তমালকে ভারতে আনার জন্য প্রস্তুত করা হবে।

LinkedIn
Share