Tag: ISRO

ISRO

  • ISRO: কালামের নামে নতুন রকেট ইঞ্জিনের সফল স্ট্যাটিক পরীক্ষা, বছর শেষে পাড়ি দিতে পারে মহাকাশে

    ISRO: কালামের নামে নতুন রকেট ইঞ্জিনের সফল স্ট্যাটিক পরীক্ষা, বছর শেষে পাড়ি দিতে পারে মহাকাশে

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: শুক্রবার ইসরো (ISRO) ঘোষণা করেছে যে তারা প্রথম কঠিন জ্বালানির রকেট কালাম-১২০০ এর (KALAM 1200) সফল স্ট্যাটিক পরীক্ষা করতে পেরেছে। শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টার থেকে এই  স্ট্যাটিক পরীক্ষা, সম্পন্ন হয়েছে। ইসরোর তরফ থেকে জানানো হয়েছে, কালাম-১২০০ যে ইঞ্জিন, তা ১১ মিটার লম্বা এবং এটি ৩০ টন কঠিন প্রোপেলান্ট বহন করতে সক্ষম।  ইসরো এটিকে একটি বড় মাইলফলক বলে অভিহিত করেছে এবং নিজেদের এক্স (X) হ্যান্ডলে তারা লিখেছে, স্কাইরুট এরোস্পেস প্রাইভেট লিমিটেড দ্বারা বিক্রম-অ্যাক্স ভেহিকল এর প্রথম পর্যায়ে কালাম-১২০০ সলিড মোটরের সকল স্ট্যাটিক পরীক্ষা সম্পন্ন হল, যা একটি বড় মাইলফলক।

    প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি আব্দুল কালামের নামেই এই ইঞ্জিন (ISRO)

    দেশের রকেট প্রযুক্তি গবেষণা, যুদ্ধবিমান নির্মাণ ও পরমাণু পরীক্ষায় অন্যতম অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিলেন এপিজে আবদুল কালাম। ভারতের প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা বা ডিআরডিও, শ্রীহরিকোটা উপকূলে ক্ষেপণাস্ত্রের উৎক্ষেপণ কেন্দ্রের নামকরণও করেছে আবদুল কালামের নামে। এবার একটি কঠিন জ্বালানি চালিত রকেট ইঞ্জিন তৈরি করে তার সফল স্ট্যাটিক পরীক্ষাও করল ভারতের বিজ্ঞানী ও গবেষকরা (KALAM 1200)।

    ভারতে প্রথম বেসরকারি উদ্যোগে নির্মিত রকেট হল বিক্রম-এস

    ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার ইসরোর প্রাক্তন বিজ্ঞানীরা তৈরি করেছেন একটি স্টার্টআপ সংস্থা, তার নাম স্কাইরুট এ্যারোস্পেস। তারাই সম্প্রতি সফলভাবে তৈরি করেছে কালাম-১২০০ নামের ওই রকেট ইঞ্জিনটি। চলতি বছরের শেষে এই স্কাইরুট এ্যারোস্পেস তাদের এই নতুন রকেট বিক্রম-১ কে মহাকাশে পাঠাতে পারে বলে খবর, এবং তাতেই ব্যবহৃত হবে আবদুল কালামের নামে নামাঙ্কিত এই ইঞ্জিনটি (ISRO)। এক্ষেত্রে বলা দরকার, ভারতে প্রথম বেসরকারি উদ্যোগে নির্মিত রকেট হল বিক্রম-এস — এরও নির্মাতা ছিল স্কাইরুট এ্যারোস্পেস (২০২২ সালের নভেম্বর)। প্রসঙ্গত, ১ দশক আগেই দেশের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থাগুলিকেও টেনে আনার জন্য আলাদা একটি সংস্থা করার প্রস্তাব পাস হয়েছিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে। সেই সংস্থার (ISRO) নাম দেওয়া হয়েছে ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল স্পেস প্রমোশন অ্যান্ড অথরাইজেশন সেন্টার (IN-SPACe)।

  • ISRO: লাদাখেই তৈরি হল মঙ্গল গ্রহের পরিবেশ, ইসরোর অভিনব মিশন নিয়ে বাড়ছে কৌতূহল

    ISRO: লাদাখেই তৈরি হল মঙ্গল গ্রহের পরিবেশ, ইসরোর অভিনব মিশন নিয়ে বাড়ছে কৌতূহল

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো, লাদাখে শুরু করল এক অন্য ধরনের মিশন, যার পোশাকি নাম দেওয়া হয়েছে হোপ – হিমালয়ান আউটপোস্ট ফর প্ল্যানেটারি এক্সপ্লোরেশন। গত ১ অগাস্ট থেকে শুরু হয়েছে এই মিশন, চলবে ১০ অগাস্ট পর্যন্ত। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, আগামী দিনে ভারতের চন্দ্র অভিযান এবং মঙ্গল অভিযানের প্রস্তুতির দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হলো ইসরোর (ISRO) এই মিশন। এর জন্য ইসরোর বিজ্ঞানীরা বেছে নিয়েছেন এমন একটি অঞ্চলকে, যে অঞ্চলের সঙ্গে অনেক দিক থেকেই মিল রয়েছে মঙ্গল গ্রহের। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৪ হাজার ৫৩০ মিটার উপরে অবস্থিত, এখানে বায়ুর চাপ অত্যন্ত কম রয়েছে। তার সঙ্গে রয়েছে প্রবল ঠান্ডা, আবার অতি বেগুনি রশ্মির তীব্রতাও রয়েছে।

    রাখা হয়েছে দুটি যুক্ত মডিউল বিশিষ্ট আবাসন ব্যবস্থা (ISRO)

    গবেষকরা বলছেন, এই ধরনের পরিস্থিতি হল পৃথিবীর উপগ্রহ চাঁদ কিংবা মঙ্গল গ্রহের সঙ্গে পরিবেশের একদমই সাদৃশ্যপূর্ণ। তাই ভবিষ্যতে মহাকাশচারীরা চন্দ্র বা মঙ্গল অভিযানে (Mars Mission) গেলে, তার আগের পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য একদম আদর্শ পরিবেশ। ইসরোর এই মিশনের অনেক রকমের বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এখানে রাখা হয়েছে দুটি যুক্ত মডিউল বিশিষ্ট আবাসন ব্যবস্থা, যার একটি ৮ মিটার প্রশস্ত এবং এটি ক্রুদের জন্য, অপরটি পাঁচ মিটার ইউটিলিটি ইউনিট (ISRO)। এই আবাসনে মিলছে প্রায় সমস্ত রকমেরই ব্যবস্থা। এখানে রয়েছে রান্নাঘর। ভবিষ্যতে মহাকাশচারীরা যখন যাবেন, তখন চাঁদ বা মঙ্গল গ্রহে রান্না করে খেতে হবে বৈকি। রয়েছে স্যানিটারি সুবিধাও। মানবজীবনের অত্যাবশ্যক প্রয়োজনীয়তাগুলোর ওপরও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে এই পরীক্ষামূলক আবহে। রয়েছে হাইড্রোপনিক ফার্মিংয়ের মতো আধুনিক কৃষিপদ্ধতি, যা জলবিহীন ও মাটিবিহীন কৃষিকে সম্ভব করে তোলে, তা-ও এখানে বাস্তবায়িত হয়েছে। এইভাবে ভবিষ্যতের অভিযানে খাদ্য সরবরাহের সম্ভাব্য বিকল্প পদ্ধতি নিয়ে পরীক্ষা চলছে।

    ইসরোর সঙ্গে যোগ দিয়েছে অন্যান্য সংস্থাও

    ইসরোর তরফ থেকে জানানো হয়েছে, দশ দিনের যে প্রস্তুতিপর্ব চলছে বা মিশন, সেখানে দুজন ক্রু সদস্য আবাসনের ভিতরে থাকবেন। ওই আবাসনের ভিতরে থাকার সময়, তাঁদের শারীরিক, মানসিক এবং বৌদ্ধিক পর্যায়ের কোন কোন প্রতিক্রিয়া উঠে আসছে, তা পর্যবেক্ষণ করা হবে এবং বিশ্লেষণ করা হবে। লাদাখের ওই অঞ্চলে (ISRO) গবেষণা চালাচ্ছে ইসরো। তবে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণার সঙ্গে জুড়েছে দেশের অন্যান্য সেরা প্রতিষ্ঠানগুলি। কোন কোন প্রতিষ্ঠানগুলি ইসরোর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এই প্রকল্পে কাজ করছে, তা একবার জেনে নিই। রয়েছে আইআইটি বোম্বে, আইআইটি হায়দরাবাদ, আইআইএসটি তিরুবনন্তপুরম, আরজিসিবি তিরুবনন্তপুরম এবং ইনস্টিটিউট অব স্পেস মেডিসিন।

    কী কী নিয়ে চলছে গবেষণা (ISRO)

    ইসরো সূত্রে জানানো হয়েছে যে, উপরে উল্লেখ করা এই সংস্থাগুলির গবেষকরা নানাভাবে গবেষণা চালাচ্ছেন, যেমন: ক্রুদের হেলথ মনিটরিং, গ্রহপৃষ্ঠ অপারেশন, জীবাণু সংগ্রহ, উন্নত চিকিৎসা ও প্রযুক্তির নানা বিষয়। এই হোক মিশনে যারা যাবেন, তখন তাদের যে ধরনের পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হবে, তারই একটা মহড়া এবং সেই লক্ষ্যে এই পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো হচ্ছে। এইরকম উদ্যোগ ভারতের মহাকাশ গবেষণাকে শুধু আরও আত্মনির্ভরই করবে না, বরং আন্তর্জাতিক মহাকাশ মিশনের প্রতিযোগিতায় ভারতের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী ও মর্যাদাপূর্ণ করে তুলবে বলেই ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

    ২০৪০ সালের মধ্যে চাঁদে মানুষ পাঠানোর লক্ষ্য

    এই প্রকল্পের নেতৃত্ব দিচ্ছে ইসরোর হিউম্যান স্পেস ফ্লাইট সেন্টার। জানা যাচ্ছে, ২০৪০ সালের মধ্যে চাঁদে মানব পাঠানো এবং ভবিষ্যতের মঙ্গল অভিযান সফলভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্য নিয়েছে ইসরো। এবং মহাকাশের পরিবেশের অনুকরণে গড়ে তোলা হয়েছে মিশন। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ইসরোর এই মিশনের মাধ্যমে ধাপে ধাপে তৈরি করা হচ্ছে এমন এক পরিবেশ, যা ভবিষ্যতের চাঁদ বা মঙ্গল অভিযানে অংশগ্রহণকারী মহাকাশচারীদের জন্য প্রস্তুতির মঞ্চ হিসেবে কাজ করবে। এই পরিবেশে টিকে থাকার জন্য যে ধরণের জীবনধারা, শারীরিক সক্ষমতা, মানসিক দৃঢ়তা এবং প্রযুক্তিগত দক্ষতা প্রয়োজন, তা এখানে বাস্তব পরিস্থিতির মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন করা হচ্ছে।

    কী বলছেন ইসরোর চেয়ারম্যান

    এ নিয়ে ইসরোর চেয়ারম্যান ডঃ ভি নারায়ণ বলছেন, যে হোক শুধুমাত্র আমাদের জন্য কেবল একটি ধৈর্যের পরীক্ষা নয় — এটি ভারতের ভবিষ্যতে মানব মহাকাশ অভিযানের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মিশন। এখানে সরাসরি মহাকাশচারীদের প্রশিক্ষণ এবং মিশনের ডিজাইন, তার ব্যবস্থা, প্রযুক্তি ব্যবস্থা — এই সমস্ত কিছুই খুঁটিনাটিতে পরীক্ষা করা হবে। ইসরোর চেয়ারম্যান ডঃ আরও বলছেন যে, ভবিষ্যতের জন্য আমাদের এই মহড়া চলছে। মহাকাশে মানুষ পাঠানোর আগে এধরনের মিশন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

  • NISAR: সহজ হবে দুর্যোগ মোকাবিলা! ভারত-মার্কিন যৌথ উদ্যোগে শ্রীহরিকোটা থেকে সফল উৎক্ষেপণ নাইসার-এর

    NISAR: সহজ হবে দুর্যোগ মোকাবিলা! ভারত-মার্কিন যৌথ উদ্যোগে শ্রীহরিকোটা থেকে সফল উৎক্ষেপণ নাইসার-এর

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মহাকাশে পাড়ি দিল নাইসার (NISAR)। বুধবার, বিকেল ৫টা ৪০ মিনিটে, শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টার থেকে জিএসএলভি-এমকে-২ (GSLV-MkII) রকেটের সাহায্যে এই শক্তিশালী স্যাটেলাইট মহাকাশে পাড়ি দিল। নাসা-ইসরো সিন্থেটিক অ্যাপারেচার রেডার (Nasa Isro Synthetic Aperture Radar) মহাকাশে ভারতের নয়া মাইলফলক। নিসার বিশ্বের প্রথম ডুয়াল-ফ্রিকোয়েন্সি সিন্থেটিক অ্যাপারেচার রেডার স্যাটেলাইট। এতে নাসার এল-ব্যান্ড রেডার (L-band radar) এবং ইসরোর এস-ব্যান্ড রেডার (S-band radar) দু’টো একসঙ্গে ব্যবহার করা হয়েছে। পৃথিবী থেকে ৭৪৩ কিমি দূরে সান-সিনক্রোনাস অরবিটে (এসএসও) ৯৮.৪০ ডিগ্রি কোণে প্রতিস্থাপন করা হয় জিএসএলভি-এফ১৬ (GSLV-F16) রকেট ৷ নাইসার-এর ওজন ২হাজার ৩৯৩ কেজি ৷

    প্রথম ৯০ কাজ করবে না নিসার

    ইসরো সূত্রে খবর, উৎক্ষেপণের পর প্রথম ৯০ দিন নাইসার (NISAR) তার কাঙ্ক্ষিত বৈজ্ঞানিক কাজ শুরু করবে না। এই সময়টিকে বলা হয় ‘কমিশনিং’ বা ইন-অরবিট চেকআউট (IOC) পর্ব, যেখানে স্যাটেলাইট এবং এর অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতিকে পূর্ণ প্রস্তুতির জন্য পরীক্ষা ও ক্যালিব্রেশন করা হয়। নাসা ও ইসরোর যৌথ উদ্যোগে নির্মিত এই উপগ্রহটি উৎক্ষেপণের পর তিন মাসব্যাপী কমিশনিং পর্বে থাকবে। এই সময় স্যাটেলাইটটি বিভিন্ন ধাপে বিভক্ত চেক ও টেস্টের মধ্য দিয়ে যাবে, যাতে তা নিখুঁতভাবে কাজের উপযোগী হয়ে ওঠে। এই ৯০ দিনের মধ্যে নিসার কক্ষপথে নিজেকে স্থিতিশীল করবে, সমস্ত যন্ত্রপাতি ধাপে ধাপে সক্রিয় করা হবে এবং বৈজ্ঞানিক পর্যবেক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় ক্যালিব্রেশন শেষ করা হবে। এরপরই এটি কাজ শুরু করবে। এই ধৈর্যশীল প্রস্তুতি পর্বই নাইসারকে তার নির্ভুল বৈজ্ঞানিক লক্ষ্য পূরণে সহায়তা করবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানীরা।

    কীভাবে কাজ করবে নিসার

    নাইসার (NISAR) থেকে পাওয়া সমস্ত তথ্য ওপেন-সোর্স হবে। গবেষক, বিজ্ঞানী, জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা সহজেই সমস্ত তথ্য অ্যাক্সেস করতে পারবেন। এই উপগ্রহ প্রতি ৯৭ মিনিটে একবার পৃথিবী প্রদক্ষিণ করবে। এই প্রদক্ষিণের মধ্যে দিয়ে মাত্র ১২ দিনে নাইসার পুরো পৃথিবীর স্থলভাগ ও বরফ আচ্ছাদিত অঞ্চলের একটি ম্যাপ তৈরি করে ফেলতে পারবে। যা বিজ্ঞানীদের নানা গবেষণায় কাজে আসবে। নাইসার ব্যবহার করে পৃথিবীর পরিবেশ ও বাস্তুতন্ত্র, বায়ুমণ্ডল, বনজঙ্গল, হিমবাহ, ভূকম্পন এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ পর্যবেক্ষণ করবে। ভূপৃষ্ঠে কয়েক মিলিমিটারের পরিবর্তনও ধরা পড়বে এই কৃত্রিম উপগ্রহে। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, বছরের যে কোনও মরসুমে, শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা কিংবা দিন-রাত নির্বিশেষে মহাকাশ থেকে পৃথিবীর উচ্চমানের ছবি তুলতে পারবে এই কৃত্রিম উপগ্রহ। আর সে কারণেই বিশ্বের জলবায়ুর পরিবর্তন পর্যবেক্ষণ, কৃষি এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় ‘নাইসার’ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

    ভারতের জন্য লাভজনক

    ইসরোর এই পদক্ষেপে ফের ভারতের মহাকাশ গবেষণায় এক নতুন দিক উন্মোচন করল। এই মিশনের জন্য মোট খরচ ১২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা (প্রায় ১.৫ বিলিয়ন ডলার)। এর মধ্যে ভারতের অংশ ৭৮৮ কোটি টাকা (প্রায় ৯৬ মিলিয়ন ডলার)। এর ফলে ভারতে দুর্যোগ মোকাবিলার কাজ সহজ হবে। এ ছাড়াও হিমালয়ের হিমবাহ কত দ্রুত গলছে, কৃষিতে জলের সঠিক ব্যবহার কী ভাবে করা যাবে, তা নিয়েও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলবে। নাইসার-এর প্রাপ্ত তথ্য ভারতকে আগে থেকে বন্যা, ভূমিকম্প ও ধসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করতে সাহায্য করবে। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং বলেন, ‘‘এটিই ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো) এবং নাসা-র তরফে পৃথিবীকে পর্যবেক্ষণের প্রথম যৌথ উদ্যোগ। তাই এই অভিযানকে ভারতের আন্তর্জাতিক স্তরে বৈজ্ঞানিক কর্মকাণ্ডের ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসাবে দেখা হচ্ছে।’’ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আরও বলেন, এই অভিযান কেবল একটি কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণই নয়, বরং বিজ্ঞান এবং বিশ্বকল্যাণের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ দু’টি দেশ যৌথ ভাবে কী কী করে দেখাতে পারে তার প্রতীক।

  • NISAR: ৩০ জুলাই মহাকাশে পাড়ি দেবে ইসরো-নাসার যৌথ উদ্যোগে তৈরি উপগ্রহ ‘নিসার’

    NISAR: ৩০ জুলাই মহাকাশে পাড়ি দেবে ইসরো-নাসার যৌথ উদ্যোগে তৈরি উপগ্রহ ‘নিসার’

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ইসরোর আরও এক বিরল কৃতিত্ব। ভূমিকম্প সম্পর্কে আগাম সতর্কতা দেবে শক্তিশালী পৃথিবী পর্যবেক্ষণকারী উপগ্রহ নিসার (NISAR) অর্থাৎ নাসা-ইসরো সিন্থেটিক অ্যাপারচার রেডার (NASA-ISRO Synthetic Aperture Radar)। ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো (ISRO) এবং মার্কিন গবেষণা সংস্থা নাসা (NASA) যৌথভাবে তৈরি করেছে এই কার্যকরী উপগ্রহ। আগামী ৩০ জুলাই শ্রীহরিকোটার সতীশ ধবন মহাকাশ কেন্দ্র থেকে উৎক্ষেপণ করা হবে নিসার। ইসরো নিশ্চিত করেছে, ভারতের জিওসিঙ্ক্রোনাস স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেহিকল (GSLV) ব্যবহার করে বিকেল ৫:৪০ মিনিটে এই উৎক্ষেপণ করা হবে। এটি হবে ভারত ও আমেরিকার মধ্যে সবচেয়ে ব্যয়বহুল (প্রায় ১.৫ বিলিয়ন ডলার) এবং গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী উপগ্রহ মিশন।

    বিশ্বের প্রথম দ্বৈত-ফ্রিকোয়েন্সি রেডার সহ উপগ্রহ

    নিসার উপগ্রহে রয়েছে নাসার এল-ব্যান্ড এবং ইসরোর এস-ব্যান্ড সিন্থেটিক অ্যাপারচার রেডার প্রযুক্তির সমন্বয়, যা একসঙ্গে পৃথিবীর ভূমি ও বরফ আবরণের ত্রিমাত্রিক মানচিত্র প্রস্তুত করবে অত্যন্ত নিখুঁতভাবে। এই রেডারগুলো একসঙ্গে পৃথিবীর পৃষ্ঠের সূক্ষ্ম পরিবর্তন, আগ্নেয়গিরি, ভূমিধ্বস, মেরু বরফ গলা, ভূমিকম্প ইত্যাদি নজরদারি করতে পারবে। প্রতি ১২ দিনে একবার পৃথিবীর নির্দিষ্ট অঞ্চল পর্যবেক্ষণ করবে। এটি আপাতত বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল পৃথিবী-পর্যবেক্ষণ উপগ্রহ, যা ডুয়াল এসএআর রেডার প্রযুক্তিতে সজ্জিত। এই প্রকল্পের মোট ব্যয় প্রায় ১.৫ বিলিয়ন ডলার (প্রায় ১২,৫০০ কোটি টাকা), যা এটিকে বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল আর্থ ইমেজিং স্যাটেলাইটে পরিণত করেছে।

    নিসারের বৈজ্ঞানিক লক্ষ্য ও গুরুত্ব

    নিসার যেসব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করবে, তার মধ্যে রয়েছে,

    প্রতিবেশ ব্যবস্থার পরিবর্তন ও বায়োমাসের বণ্টন।

    ভূমিকম্প, ভূমিধস ও আগ্নেয়গিরির ফলে ভূমির বিকৃতি।

    হিমবাহ ও বরফচাদরের গতি।

    মাটির আর্দ্রতা ও ভূগর্ভস্থ জলের হেরফের।

    সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ও শহরাঞ্চলের পরিবর্তন।

    এই ডেটা ব্যবহার হবে পরিবেশ বিজ্ঞান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, কৃষি পরিকল্পনা ও জলসম্পদ ব্যবস্থাপনায়। উপগ্রহটি দিন-রাত, মেঘ বা আবহাওয়ার বাধা অগ্রাহ্য করে কার্যক্ষম থাকবে।

    ভারতের প্রযুক্তিগত অগ্রগতি

    উৎক্ষেপণের পুরো প্রক্রিয়া পরিচালনা করছে ইসরো। ভারতের প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতার আরেক নিদর্শন হিসেবে এই মিশনে ১২ মিটার ব্যাসের বিশাল ভাঁজযোগ্য অ্যান্টেনা সফলভাবে সংযোজন করা হয়েছে। নিসার থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্বের গবেষক ও জরুরি পরিষেবা কর্মীদের জন্য ফ্রি ও ওপেন থাকবে। দুর্যোগের সময়ে প্রায় তাৎক্ষণিক তথ্য সরবরাহ করে প্রাণ ও সম্পদ বাঁচাতে সাহায্য করবে এই মিশন। ২০১২ সালে ইসরো এবং নাসার মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে এই অভূতপূর্ব অভিযানের সূচনা হয়েছিল। ২০১৪ সালে, দুটি সংস্থার মধ্যে একটি আনুষ্ঠানিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল, যার অধীনে একটি রেডার ভারতে এবং অন্যটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি করার কথা ছিল। আমেদাবাদের এসএসি (SAC) সেন্টারের পরিচালক ডঃ নীলেশ দেশাইয়ের মতে, এটি ভারতের প্রযুক্তিগত অগ্রগতির প্রতীক।

  • Subhanshu Sukla: ‘সারে জাঁহা সে আচ্ছা….’! মহাকাশ জয় করে ঘরে ফেরার আগে আপ্লুত শুভাংশু

    Subhanshu Sukla: ‘সারে জাঁহা সে আচ্ছা….’! মহাকাশ জয় করে ঘরে ফেরার আগে আপ্লুত শুভাংশু

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মহাকাশ থেকে পৃথিবীর দিকে তাকালে মনে হয়, ভারত ‘সারে জাঁহা সে আচ্ছা….’। আত্মবিশ্বাসী, ভয়ডরহীন, গর্বিত এবং উচ্চাকাঙ্ক্ষায় পরিপূর্ণ এই দেশ। মহাশূন্য থেকে ঘরে ফেরার আগে এমনই বললেন ভারতীয় মহাকাশচারী শুভাংশু শুক্লা (Subhanshu Sukla)। সব ঠিকঠাক থাকলে ১৫ জুলাই পৃথিবীতে ফিরবেন শুভাংশু। সঙ্গে অ্যাক্সিয়ম-৪ অভিযানের আরও তিন সদস্য- পেগি হুইটসন, টিবর কাপু ও স্লাওস উজনানস্কি। আজ, সোমবার দুপুর দু’টো নাগাদ শুরু হবে শুভাংশুদের আনডকিং প্রক্রিয়া। আনডকিং শেষ হওয়ার পর পৃথিবীর উদ্দেশে যাত্রা শুরু করবেন শুভাংশুরা। এই দু’টি প্রক্রিয়া সরাসরি দেখা যাবে নাসার ওয়েবসাইট এবং সোশাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলিতে।

    বিদায় সংবর্ধনা, মহাকাশে সংস্কৃতির আদান-প্রদান

    রবিবারই মহাকাশ থেকে পৃথিবীতে ফেরার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন ভারতীয় মহাকাশচারী শুভাংশু শুক্লা। আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে তাঁদের ফেয়ারওয়েল জানানো হয়েছে। রবিবার, ভারতীয় সময় সন্ধে সাড়ে সাতটা থেকে শুরু হয় ফেয়ারওয়েল অনুষ্ঠান। নাসার এক্সপিডিশন ৭৩-এর সাতজন সদস্য বিদায় সংবর্ধনা দেন শুভাংশু-সহ চার মহাকাশচারীকে। সেই সংবর্ধনা সরাসরি সম্প্রচার করে নাসা। আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে একে অপরকে জড়িয়ে ধরেন শুভাংশুরা। গাজরের হালুয়া-আম রস অন্যদের সঙ্গে ভাগ করে নেন শুভাংশু। পোল্যান্ডের স্লাওস উজনানস্কি ভাগ করেন পোলিশ স্যান্ডউইচ। ক্ষণিকের জন্য ঘরোষা উষ্ণতায় ভরে যায় আইএসএস।

    নাসার ওয়েবসাইটে সরাসরি সম্প্রচার

    ১৪ জুলাই ভারতীয় সময়ানুসারে বিকেল ৪টে ৩৫ মিনিটে (আমেরিকার সময় ভোর ৭টা বেজে ৫ মিনিটে) ড্রাগন আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন থেকে বিচ্ছিন্ন হবে। তারপর পৃথিবীর অভিমুখে যাত্রা করবে ড্রাগন। প্রায় ৩০ মিনিট এই যাত্রার সরাসরি সম্প্রচার করবে নাসা। তারপর নাসার সম্প্রচার বন্ধ হয়ে যাবে। শুভাংশুদের মহাকাশযান পৃথিবীতে প্রবেশের পর যখন সমুদ্রে অবতরণ করবে, তখন ফের শুরু হবে লাইভ টেলিকাস্ট। ভারতীয় সময় মঙ্গলবার বিকেল তিনটের সময় পৃথিবীতে ফিরবেন শুভাংশুরা। সেই দৃশ্যও সম্প্রচারিত হবে নাসার ওয়েবসাইটে।

    সাতদিন রিহ্যাবে শুভাংশুরা

    ক্যালিফোর্নিয়ায় উপকূলে অবতরণ করবেন শুভাংশুরা। এরপর সাতদিন রিহ্যাবে থাকবেন ভারতীয় নভশ্চর। ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো একথা জানিয়েছে। আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাব নেই। যার ফলে হাড়ের ওজন কমে যায়। দুর্বল হয়ে পড়ে পেশি। এছাড়াও একাধিক শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। পৃথিবীতে ফিরলে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাব পড়বে শরীরে। পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে বেশ কিছুটা সময় লাগবে। সেজন্যই এই রিহ্যাব। বিবৃতিতে ইসরো জানিয়েছে, ‘স্প্ল্যাসডাউনের পর ফ্লাইট সার্জনের পর্যবেক্ষণে সাতদিনের রিহ্যাবে থাকবেন গগনযাত্রী। পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির সঙ্গে মানিয়ে নিতেই এই পদক্ষেপ। যেমন হয়েছিল সুনীতা উইলিয়ামসের ক্ষেত্রেও। বর্তমানে ভিডিও কনফারেন্সিংয়রে মাধ্যমে শুভাংশুর স্বাস্থ্যের খবর রাখছেন ইসরোর ফ্লাইট সার্জনরা।’

    সারে জাঁহা যে আচ্ছা

    ১৯৮৪ সালে প্রথম ভারতীয় মহাকাশচারী রাকেশ শর্মা যে অবিস্মরণীয় মন্তব্য করেছিলেন, সেটার রেশ ধরেই ভারতীয় বায়ুসেনার গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশু বলেন, ‘আজও এখান থেকে ভারতকে দেখে মনে হচ্ছে, সারে জাঁহা যে আচ্ছা….।’ সোমবার আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্র থেকে পৃথিবীর দিকে রওনা দিতে চলেছেন ভারতীয় বায়ুসেনার গ্রুপ ক্যাপ্টেন। তার আগে অ্যাক্সিওম-৪ মিশনের মহাকাশচারীদের জন্য বিদায়ী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে তিনি জানান, আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রের অভিজ্ঞতায় পরিপূর্ণ হয়ে যাচ্ছেন। আর তিনি যা শিখেছেন, সেই অভিজ্ঞতা দেশবাসীর সঙ্গে ভাগ করে নেবেন। তাঁর কথায়, ‘এটা আমার কাছে মায়াবী মনে হচ্ছিল। আমার এই যাত্রাটা দুর্দান্ত কাটছে।’

    মহাকাশে ১৭ দিন, শুভাংশুদের জন্য ইসরোর কত খরচ

    মহাকাশে ১৭ দিনে শুভাংশু শুক্লা ৬০টিরও বেশি বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। ভারতের পক্ষ থেকে তিনি ৭টি বিশেষ পরীক্ষা করেছেন, যার মধ্যে ছিল— টার্ডিগ্রেডস, একটি ক্ষুদ্র জীব যা মহাকাশে কীভাবে বেঁচে থাকে এবং বংশবৃদ্ধি করে তা দেখার জন্য গবেষণা। মেথি ও মুগ চাষ, যা থেকে মহাকাশে খাদ্য উৎপাদনের সম্ভাবনা বাড়বে। সায়ানোব্যাকটেরিয়া, মহাশূন্যে অক্সিজেন ও জৈবজ্বালানির সম্ভাব্য উৎস খোঁজাও ছিল শুভাংশুর কাজ। মায়োজেনেসিস, মানুষের পেশীর উপর স্থানের সংস্পর্শের প্রভাব বোঝারও চেষ্টা করেন ভারতীয় মহাকাশচারী। বায়ুসেনার গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশুকে যে মহাকাশে পাঠানো হয়েছে, সেটার জন্য ইসরোর প্রায় ৫৫০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। আসলে কয়েক মাস পরেই ভারতের গগনযান মহাকাশে পাড়ি দেবে। তার আগে যাতে আরও নিখুঁতভাবে পরিকল্পনা করতে পারে ইসরো এবং গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশু মহাকাশের পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারেন, সেটার জন্যই তাঁকে মহাকাশে পাঠানো হয়েছিল।

     

     

     

  • Shubhanshu Shukla: আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে শুভাংশু শুক্লা, গতি পাচ্ছে ভারতের মহাকাশ গবেষণা

    Shubhanshu Shukla: আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে শুভাংশু শুক্লা, গতি পাচ্ছে ভারতের মহাকাশ গবেষণা

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মহাকাশে আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে অবস্থান করছেন ভারতীয় নভোচারী শুভাংশু শুক্লা (Shubhanshu Shukla)। তাঁর এই মহাকাশে পাড়ি দেওয়া ভারতের মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে এক নতুন অধ্যায় সূচনা করেছে। এই প্রেক্ষাপটে ইসরোর মহাকাশ-সংক্রান্ত প্রকল্পগুলি—যেমন গগনযান, চন্দ্রযান-৪ ও চন্দ্রযান-৫—নতুন গতি পাচ্ছে। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, শুভাংশু শুক্লার মহাকাশ অভিজ্ঞতা গগনযান মিশনের গবেষণায় অনেক সাহায্য করছে। উদাহরণস্বরূপ, মহাকাশে কোয়ারেন্টাইনে থাকা, সেখানে মানসিক চাপ কীভাবে মোকাবিলা করতে হয়, কী ধরনের ওষুধ প্রয়োগযোগ্য—এই সমস্ত দিকগুলোতে নতুনভাবে তথ্য সংগ্রহ হচ্ছে (Indian Space Innovation)।

    অ্যাক্সিয়াম-৪ মিশনে কাজ করেছেন ইসরোর ৭ বিজ্ঞানী

    একই সঙ্গে, শুভাংশু শুক্লার (Shubhanshu Shukla) আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে উপস্থিতি ভারতের অর্থনৈতিক ও বৈজ্ঞানিক উন্নয়নে গতি আনতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ, যে মহাকাশযানে করে তিনি গিয়েছেন—সেই Axiom-4 (অ্যাক্সিয়াম-৪) মিশনে কাজ করেছেন বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরা, যার মধ্যে ইসরোর বিজ্ঞানীর সংখ্যা ছিল ৭ জন। তাঁরা নতুন অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছেন ও বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণা করেছেন।

    কোন কোন দিক উঠে আসছে গবেষণায়

    মহাকাশে শুভাংশু শুক্লার (Shubhanshu Shukla) অবস্থানের ফলে ভারতের মহাকাশ গবেষণায় যে নতুন দিকগুলো উঠে আসছে, তা নিয়ে নিচে আলোচনা করা হল।

    মহাকাশে মাধ্যাকর্ষণ প্রভাব না থাকায়, সেখানে ভারতীয় ফসলের বীজ কীভাবে রোপণ করা যায়, সে বিষয়ে তাঁরা গবেষণা করেছেন ও বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন।

    এ ছাড়াও মহাকাশে মানুষের মনস্তাত্ত্বিক অবস্থা সম্পর্কেও নতুন তথ্য উন্মোচিত হয়েছে। মাধ্যাকর্ষণশূন্য পরিবেশে মানুষের শরীর ও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানায়, স্বাভাবিক থাকতে গেলে কী ধরনের থেরাপি ও ট্রিটমেন্ট দরকার হয়—সেগুলো নিয়ে গবেষণা চলছে।

    তাছাড়া, নভোচারীদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়েও গবেষণা হচ্ছে—কীভাবে তাঁরা স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট করেন, মহাকাশে মানানসই জীবনশৈলী কেমন হওয়া উচিত, সেসব বিষয়ও গবেষণার আওতায় এসেছে।

    উল্লেখযোগ্যভাবে, গত ৫ জুলাই নভোচারী শুভাংশু শুক্লা (Shubhanshu Shukla) গবেষণা করেছেন মহাকাশে মানুষের হাড় কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানায় সে বিষয়ে। এর পাশাপাশি তিনি মানবদেহের কোষ মহাকাশে কেমনভাবে বিকশিত হয় ও পুনর্গঠন হয়, তাও গবেষণার বিষয় করেছেন।

    আরও একটি উল্লেখযোগ্য গবেষণা হল—মহাকাশে চারা গাছ রোপণ। দেখা গেছে, শুভাংশু শুক্লা মেথি ও মুন (মুগ)—এই দুটি চারা গাছ রোপণ করেছেন আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে।

  • Shubhanshu Shukla: মহাকাশে মাইক্রো অ্যালগি নিয়ে গবেষণায় মগ্ন শুভাংশু, ৪ তারিখ ভারতীয় পড়ুয়াদের সঙ্গে বলবেন কথা

    Shubhanshu Shukla: মহাকাশে মাইক্রো অ্যালগি নিয়ে গবেষণায় মগ্ন শুভাংশু, ৪ তারিখ ভারতীয় পড়ুয়াদের সঙ্গে বলবেন কথা

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে পৌঁছনো ৬৩৪ নম্বর মহাকাশচারী ভারতের নভশ্চর শুভাংশু শুক্লা (Shubhanshu Shukla)। গত বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টের কিছুটা পরে আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে (ভারতীয় সময়) পৌঁছেছেন তিনি। তারপর থেকে সেখানেই নানা পরীক্ষা করছেন, গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করছেন। বর্তমানে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ISRO) প্রেরিত মাইক্রো অ্যালগি পরীক্ষায় ব্যস্ত রয়েছেন শুভাংশু। মহাকাশে মাইক্রো অ্যালগির ব্যবহার ভারতের ভবিষ্যতের মহাকাশ অভিযানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। আগামী শুক্রবার, ৪ জুলাই মহাকাশ থেকেই দেশের ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে আলাপ জমানোর কথা রয়েছে শুভাংশুর।

    ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলবেন শুভাংশু

    জানা গিয়েছে, আগামী ৪ জুলাই ভারতীয় সময় দুপুর ৩টে ৪৭ নাগাদ কর্নাটকের ইউআর রাও স্যাটেলাইট সেন্টার (ইউআরএসসি)-এর সঙ্গে মহাকাশ থেকে হ্যাম রেডিওর মাধ্যমে যোগাযোগ স্থাপন করতে চলেছেন শুভাংশু (Shubhanshu Shukla)। ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর তত্ত্বাবধানে এই অনুষ্ঠানটি হবে। দেশজুড়ে বিভিন্ন স্কুলের ছাত্রছাত্রীরাও এখানে যোগ দিতে পারবেন। বর্তমান প্রজন্মকে মহাকাশ ও মহাকাশ গবেষণায় উৎসাহিত করার জন্য এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই হ্যাম রেডিও যোগাযোগ ভারতীয় বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং শিক্ষার জন্য একটি গর্বের মুহূর্ত হবে। যা বিশ্বব্যাপী মহাকাশ গবেষণায় ভারতের ক্রমবর্ধমান উপস্থিতির প্রতীক হিসাবে নজির গড়বে। বলে রাখা ভালো, নির্ধারিত রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহার করে, হ্যাম রেডিও অপারেটররা শহর, দেশ এবং এমনকী মহাকাশে থাকা মহাকাশচারীদের সঙ্গেও যোগাযোগ করতে পারে। হ্যাম রেডিও জরুরি অবস্থার সময় খুবই নির্ভরযোগ্য। যখন বিভিন্ন নেটওয়ার্ক যোগাযোগ স্থাপনে ব্যর্থ তখনও এই হ্যাম রেডিও কাজ করে।

    মাইক্রো অ্যালগি নিয়ে গবেষণায় শুভাংশু

    ‘অ্যাক্সিয়ম-৪’ অভিযানের (Axiom 4 Space Mission) পদে পদে দেশবাসীকে সঙ্গে রাখছেন গ্রুপ ক্যাপটেন শুভাংশু। আগেই জানিয়েছিলেন মহাকাশে একা বোধ করছেন না তিনি। যেহেতু তাঁর সঙ্গে রয়েছে একশো চল্লিশ কোটি ভারতবাসী। ইসরো, জৈবপ্রযুক্তি দফতর (ডিবিটি) ও নাসার মধ্যে সহযোগিতার অঙ্গ হিসেবে গবেষণা সংক্রান্ত বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করছেন শুভাংশু। দীর্ঘদিন মহাকাশে থেকে গবেষণার কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য খাদ্য ও পুষ্টিগত ক্ষেত্রে স্বনির্ভরতা প্রয়োজন। অর্থাৎ মহাকাশেই প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য ফলনের গবেষণা এগিয়ে নিয়ে যাওয়া এই মিশনের লক্ষ্য। জানা যাচ্ছে, সেই লক্ষ্যেই শুভাংশুর (Shubhanshu Shukla) কাজ হচ্ছে খাদ্য হিসেবে ব্যবহারযোগ্য মাইক্রো অ্যালগি বা অতি ক্ষুদ্র শৈবালের উপর মাইক্রোগ্র্যাভিটি ও রেডিয়েশনের প্রভাব পর্যবেক্ষণ। পুষ্টির ভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত এইসব মাইক্রো অ্যালগিকে মহাকাশে থাকাকালীন খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করার ক্ষেত্রে সম্ভাবনার দরজা খুলে দেবে এই গবেষণা। সায়ানোব্যাকটিরিয়ার বৃদ্ধি ও প্রোটিন সংশ্লেষ সংক্রান্ত পর্যবেক্ষণও করছেন শুভাংশু। মূলত প্রোটিন ও ভিটামিনে ভরপুর এইসব সায়ানোব্যাকটিরিয়াকে মহাকাশে থাকাকালীন ‘সুপারফুড’ হিসেবে ব্যবহারের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা হবে। ইউরিয়া সহ মানববর্জ্যের নাইট্রোজেন ব্যবহার করে মহাকাশে সায়ানোব্যাকটিরিয়াগুলির বৃদ্ধি ঘটানো সম্ভব কি না, মূলত সেটা খতিয়ে দেখাই এই গবেষণার উদ্দেশ্য। এই গবেষণা ভারতের গগনযান অভিযানে কাজে আসবে বলে জানিয়েছে ইসরো।

  • Shubhanshu Shukla: ‘‘পৃথিবীকে বাইরে থেকে দেখার সুযোগ পাওয়া সৌভাগ্যের বিষয়’’, মহাকাশ কেন্দ্রে পৌঁছে বার্তা শুভাংশুর

    Shubhanshu Shukla: ‘‘পৃথিবীকে বাইরে থেকে দেখার সুযোগ পাওয়া সৌভাগ্যের বিষয়’’, মহাকাশ কেন্দ্রে পৌঁছে বার্তা শুভাংশুর

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মহাকাশে শুরু হয়ে গিয়েছে শুক্লা-পক্ষ। আঠাশ ঘণ্টার জার্নি শেষে ভারতীয় সময় সন্ধে ছটার কয়েক মিনিট আগে আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে পৌঁছেছেন শুভাংশু শুক্লা, পেগি হুইটসন, স্লাওজ উজনানস্কি ও টিবর কাপু। আগামী চোদ্দদিন এটাই ওঁদের ঘর। মাধ্যাকর্ষণ-শূন্য পরিবেশে দিন কাটানো মুখের কথা নয়। বাইরে থেকে খুব সহজ মনে হলেও মাথা ঝিমঝিম করছে শুভাংশুর (Shubhanshu Shukla)। আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে পৌঁছে নিজেই সে কথা জানালেন ভারতীয় মহাকাশচারী। তবে মহাবিশ্বের হাতছানির কাছে এ কিছুই নয়, দাবি ইতিহাস সৃষ্টি করা শুভাংশুর। ভারতীয় বায়ুসেনার গ্রুপ ক্যাপ্টেন জানিয়েছেন, আগামী ১৪ দিন আইএসএস-এ বসে যে গবেষণা তাঁরা করবেন, তার তুলনায় এই অস্বস্তি কিছুই নয়।

    মহাকাশে আলাপচারিতা

    ভারতীয় সময় অনুযায়ী বুধবার বেলা ১২টা ১ মিনিট নাগাদ আমেরিকার ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে ফ্যালকন ৯ রকেটে চেপে মহাকাশের উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছিলেন শুভাংশুরা (Shubhanshu Shukla)। প্রতি ঘণ্টায় ২৬,৫০০ কিলোমিটার গতি ছিল মহাকাশযানের। ২৮ ঘণ্টা পরে বৃহস্পতিবার আইএসএস-এ পৌঁছেছেন শুভাংশু, তাঁর তিনি সঙ্গী পোল্যান্ডের স্লায়োস উজনানস্কি-উইসনিউস্কি এবং হাঙ্গেরির টিবর কাপু, আমেরিকার পেগি হুইটসন। তাঁদের অপেক্ষায় বসেছিলেন আইএসএস-এর সাত মহাকাশচারী। পৃথিবী থেকে রওনা হওয়া চার মহাকাশচারীকে নিয়ে তাঁদের উদ্বেগও ছিল। বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টে নাগাদ (ভারতীয় সময়) শুভাংশুরা আইএসএস-এ পৌঁছোতেই তাঁদের জড়িয়ে ধরেন সেখানকার মহাকাশচারীরা। তাঁরা সেখানে ইতিমধ্যেই গবেষণা চালাচ্ছেন। চার জনকে অভ্যর্থনা জানিয়ে পানীয় দেওয়া হয় হাতে। সেই মুহূর্তের কিছু ছবি, ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে সমাজমাধ্যমে। প্রকাশ করেছে ইলন মাস্কের সংস্থা স্পেস এক্স। সেখানে দেখা গিয়েছে, আইএসএস-এ হাসতে হাসতে গল্প করছেন মহাকাশচারীরা।

    শস্য ফলানোই প্রধান কাজ

    ১৯৮৪ সালে মহাকাশে পাড়ি দিয়েছিলেন রাকেশ শর্মা। তিনিই প্রথম ভারতীয়, যিনি মহাকাশে পাড়ি দিয়েছিলেন। ৪১ বছর পর ফের ইতিহাস গড়ার সুযোগ পেল ভারত। অ্যাক্সিওম-৪ মিশনের নেতৃত্বেই রয়েছেন ভারতীয় বায়ুসেনার গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশু শুক্লা। আগামী ১৪ দিন তিনি ও তাঁর সহকর্মীরা অনেক কাজ করবেন। শুভাংশুর (Shubhanshu Shukla) সঙ্গে রয়েছে ৬ ধরনের ভারতীয় শস্যবীজ। সেই শস্য ফলানোই প্রধান কাজ। আগামীদিনে মহাকাশ অভিযানে এটা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ হবে কারণ মহাকাশেই ফল-মূল উৎপাদন করা সম্ভব হলে কষ্ট করে পৃথিবী থেকে খাবার বয়ে নিয়ে যেতে হবে না। মহাকাশে উৎপাদন হলে তার জিনগত বা পুষ্টিগত কোনও পার্থক্য তৈরি হয় কি না, তাও গবেষণা করে দেখা হবে। এছাড়াও শুভাংশু শুক্লা আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ করবেন। মাইক্রোঅ্যালগি বা “ক্ষুদ্র শৈবাল” নিয়ে গবেষণা। মহাকাশে গেলে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির অভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় মানবদেহের পেশি। মহাকাশে রেডিয়েশন ও মাইক্রোগ্রাভিটির প্রভাব এই অ্যালগির উপরে কী হয়, এর পুষ্টিগুণে কোনও পার্থক্য তৈরি হয় কি না, তা গবেষণা করে দেখা হবে।

    গর্ব এবং উত্তেজনার মুহূর্ত

    আইএসএস-এ বসেই লখনউয়ের ছেলে শুভাংশু বলেন, ‘‘এটা গর্ব এবং উত্তেজনার মুহূর্ত, মহাকাশ অভিযানের ক্ষেত্রে আমাদের ব়ড় পদক্ষেপ।’’ সেই সঙ্গে তিনি আবার মনে করিয়ে দেন তাঁর কাঁধে থাকা ভারতীয় পতাকার কথা। তাঁর কথায়, ‘‘গর্বের সঙ্গে কাঁধে তেরঙা পরেছি।’’ বুধবার যাত্রা শুরুর আগেও এই কথাই শোনা গিয়েছিল তাঁর মুখে। তিনি জানিয়েছিলেন, তাঁর কাঁধে লাগানো জাতীয় পতাকা মনে করাচ্ছে যে তিনি একা নন। আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে প্রবেশ করে সেখানকার বন্ধুদেরও ধন্যবাদ জানান শুভাংশু। তিনি বলেন, ‘‘পৃথিবীর বাইরে থেকে পৃথিবীকে দেখার সুযোগ পাওয়াটা একটা সৌভাগ্যের বিষয়। যাত্রাটা অসাধারণ ছিল। অসাধারণ! মহাকাশে আসার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলাম। কিন্তু যে মুহূর্তে আমি আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে প্রবেশ করলাম, এই ক্রু সদস্যরা আমাকে এমন স্বাগত জানাল! তোমরা আক্ষরিক অর্থেই আমাদের জন্য তোমাদের ঘরের দরজা খুলে দিলে। আমি আরও ভালো বোধ করছি। এখানে আসার আগে আমার যা প্রত্যাশা ছিল তা অবশ্যই ছাপিয়ে গেছে। তাই তোমাদের অনেক ধন্যবাদ। আমি অত্যন্ত আত্মবিশ্বাসী যে আগামী ১৪ দিন বিজ্ঞান এবং গবেষণাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং একসঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতাটা অসাধারণ হবে। অনেক ধন্যবাদ।’’

    মহাকাশে বসেই গাজরের হালুয়া, আমের রস

    ১৪ দিনের এই অভিযানের গোটা সময়টা আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনেই থাকবেন চার নভশ্চর। সেখানে অন্তত ৬০টি পরীক্ষানিরীক্ষা চালাবেন তাঁরা। তবে, শুধু তো কাজ করলেই হল না, মহাকাশে খাবার খেতেও হবে শুভাংশুদের। এই খাবার খাওয়াও এক কষ্টসাধ্য কাজ, কারণ সাধারণ খাবার খাওয়া যায় না। বিশেষ পদ্ধতিতে তৈরি প্রক্রিয়াজাত খাবারই খেতে হয়। তবে ওই প্যাকেটজাত খাবার, শুকনো ফলের পাশাপাশি গাজরের হালুয়া, আমের রস ও মুগ ডালের হালুয়াও খাবেন শুভাংশু (Shubhanshu Shukla)। তাঁর জন্য এই খাবার বিশেষ প্রক্রিয়ায় তৈরি করে দিয়েছে ইসরোর ডিফেন্স ইন্সটিটিউশন অব বায়ো ডিফেন্স টেকনোলজি। এই খাবারে কোনও প্রিজারভেটিভ দেওয়া নেই। স্বাভাবিক তাপমাত্রায় ১ বছর পর্যন্ত ঠিক থাকবে এই খাবারগুলি। শুভাংশুর অভিযানের লাইভ সম্প্রচার লখনউয়ে তাঁর স্কুলে বসে দেখেন বাবা, মা, আত্মীয়, বন্ধুরা। ১৪ দিনের এই অভিযান আন্তর্জাতিক স্তরে ভারতের বৈজ্ঞানিক কৃতিত্বকে আরও মজবুত ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত করবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

  • Shubhanshu Shukla: ‘ঠিক যেন শিশু, মহাকাশে হাঁটা-খাওয়া শিখছি…’, মহাশূন্য থেকে নমস্কার জানিয়ে বার্তা শুভাংশুর

    Shubhanshu Shukla: ‘ঠিক যেন শিশু, মহাকাশে হাঁটা-খাওয়া শিখছি…’, মহাশূন্য থেকে নমস্কার জানিয়ে বার্তা শুভাংশুর

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মহাবিশ্ব, মহাকাশে ভাসছেন ভারতীয় নভশ্চর শুভাংশ শুক্লা (Shubhanshu Shukla)৷ সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ভারতীয় সময় বিকেল সাড়ে চারটেয় আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (আইএসএস) পৌঁছবে তাঁদের মহাকাশযান ক্যাপসুল ‘গ্রেস’। ইতিমধ্যে মহাকাশে প্রায় ২৪ ঘণ্টা কাটিয়ে ফেলেছেন চার নভশ্চর। সেখান থেকেই পৃথিবীর উদ্দেশে আরও এক বার বার্তা দিলেন শুভাংশু। শোনালেন মহাকাশে একটা গোটা দিন কাটিয়ে ফেলার অভিজ্ঞতা! মহাশূন্য থেকে দেশবাসীকে ‘নমস্কার’ জানান শুভাংশু। বলেছেন, মহাশূন্যে অভিকর্ষের ব্যাপক পার্থক্যের কারণে আবার এখন শিশুর মতো হাঁটতে শিখছেন ৷

    মহাকাশে কেমন লাগছে শুভাংশুর ?

    এই মিশনে দারুণ উত্তেজিত অ্যাক্সিয়ম-৪ মিশনের পাইলট শুভাংশু শুক্লা ৷ তাঁর সহ-নভশ্চরদের সঙ্গে এই যাত্রায় সঙ্গী হতে পেরে তিনি কৃতজ্ঞ ৷ আমেরিকার স্পেসএক্স সংস্থার মহাকাশ স্টেশনের লঞ্চপ্যাড থেকে তাঁদের রকেট উৎক্ষেপণের সময়ে একটা বিশাল ধাক্কা অনুভব করেছেন শুভাংশু-সহ অন্যরা ৷ এরপর একটা পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে মহাকাশের পথে যাত্রা শুরু করে রকেট ৷ তখনও অস্বস্তি হচ্ছিল শুভাংশুর ৷ এরপর সময় যত গড়িয়েছে ততই প্রবল হয়েছে মহাশূন্যের নিস্তব্ধতা ৷ আর সঙ্গে মহাকাশের ভারশূন্য অবস্থা ৷ ভারতীয় সময় অনুযায়ী বৃহস্পতিবার সকালে মহাকাশ থেকে সরাসরি পৃথিবীর সঙ্গে কথোপকথন করেছেন চার নভশ্চর। অ্যাক্সিয়ম স্পেসের এক্স হ্যান্ডলেও সেই ভিডিয়োর সরাসরি সম্প্রচার হয়েছে। সেখানেই শুভাংশু বলেন, ‘‘যখন যাত্রা শুরু হল, তখন একটা অদ্ভুত অনুভূতি হচ্ছিল। খুব ভাল সফর ছিল। মহাকাশে পৌঁছোতেই অস্বস্তি শুরু হয়। শুনলাম, গত কাল নাকি আমি পড়ে পড়ে ঘুমিয়েছি!’’

    শিশুর মতো শিখছেন

    শুভাংশু (Shubhanshu Shukla) ছাড়াও নাসার এই অভিযানে রয়েছেন পেগি হুইটসন, স্লায়োস উজ়নানস্কি-উইসনিউস্কি এবং টিবর কাপু। মহাকাশের মাধ্যাকর্ষণ-শূন্য পরিবেশে হাঁটাচলা থেকে শুরু করে সব কিছুই নতুন করে শিখতে হচ্ছে তাঁদের। দীর্ঘ ২৪ ঘণ্টার যাত্রাপথে কীভাবে মানিয়ে নিচ্ছেন নিজেকে? এর উত্তরে শুভাংশ জানান, তিনি এখন কিছুটা ভালো বোধ করছেন ৷ ভালো করে ঘুমোচ্ছেন এবং নতুন এক বিশ্বে এক কৌতূহলী শিশুর মতো ক্রমাগত শিখে চলেছেন ৷ শুভাংশু বলেন, ‘‘শিশুর মতো হাঁটতে শিখছি! শিখছি কী ভাবে হাঁটতে হয়, কী ভাবে খেতে হয়!’’ মহাকাশের পরিবর্তিত পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন শুভাংশুরা ৷ ক্যাপসুলে বন্দি থেকে প্রতি মুহূর্তে মহাশূন্যের নতুন নতুন দৃশ্য উপভোগ করছেন এবং সহ-নভশ্চরদের সঙ্গে ভুলত্রুটিগুলিও সংশোধন করছেন ৷

    ভারতের মহাকাশ কর্মসূচির সূচনা

    ইতিহাস গড়েছে ভারত। রাকেশ শর্মার পর চার দশক ডিঙিয়ে মহাকাশে পাড়ি দিয়েছেন ৩৯ বছরের ভারতীয় নভোচর শুভাংশু শুক্লা (Shubhanshu Shukla)। বুধবার দুপুরে আমেরিকার ফ্লরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে ফ্যালকন ৯ রকেটে চেপে মহাকাশ স্টেশনের উদ্দেশে পাড়ি দেন তিনি। মহাকাশ থেকে প্রথম বার্তায় আগেই শুভাংশু জানিয়েছিলেন ‘বর্ণনাতীত’ অভিজ্ঞতা। অ্যাক্সিয়ম-৪ মিশনের (Axiom-4 mission) সফল উৎক্ষেপণের পর গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশু শুক্লা পৃথিবীতে পাঠানো প্রথম বার্তায় জানান, কাঁধে করে তেরঙা নিয়ে যাচ্ছেন। অর্থাৎ চার দশক পর এক অনন্য ইতিহাসের পাতায় লিখতে চলেছেন তাঁর দেশ ভারতের নাম। মিশনের কন্ট্রোল রুমে পাঠানো প্রথম বার্তায় শুক্লা বলেন, এই অভিযান শুধু আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনের উদ্দেশে যাত্রা নয়, ভারতের মহাকাশ কর্মসূচির সূচনা।

    শুভাংশুকে প্রধানমন্ত্রী মোদির শুভেচ্ছা

    শুভাংশু (Shubhanshu Shukla) বলেন, , ‘‘নমস্কার, আমার প্রিয় দেশের মানুষ। কী মজার যাত্রা! ৪১ বছর পর আমরা আবার মহাকাশে পাড়ি দিলাম। দারুণ লাগছে! এখন আমরা পৃথিবীকে প্রতি সেকেন্ডে সাড়ে ৭ কিমি গতিতে প্রদক্ষিণ করছি। তেরঙা আমার কাঁধে রয়েছে। যা আমাকে বারবার মনে করিয়ে দিচ্ছে, আমি আপনাদের সকলের সঙ্গে আছি। আমি চাই আপনারাও সকলে আমার এই যাত্রার সঙ্গী হন। আপনাদের বুক নিশ্চই গর্বে ফুলে উঠবে। মহাকাশে ভারতের মানুষ পাঠানোর স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে। জয় হিন্দ! জয় ভারত!’’ শুভাংশুকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেন, ‘‘শুভাংশু শুক্লাই প্রথম ভারতীয় মহাকাশচারী যিনি আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে পা রাখবেন। তিনি নিজের কাঁধে ১৪০ কোটি ভারতীয়ের ইচ্ছা, আশা, আকাঙ্ক্ষার ভার বহন করছেন।’’

  • Shubhanshu Shukla: মহাকাশযানে প্রযুক্তিগত সমস্যা! ফের পিছোল শুভাংশুদের মহাকাশযাত্রা, জানাল স্পেসএক্স

    Shubhanshu Shukla: মহাকাশযানে প্রযুক্তিগত সমস্যা! ফের পিছোল শুভাংশুদের মহাকাশযাত্রা, জানাল স্পেসএক্স

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আবারও অপেক্ষা! পিছিয়ে গেল ভারতের শুভাংশু শুক্লা-সহ (Shubhanshu Shukla) চার মহাকাশচারীর মহাকাশযাত্রা। ১৯৮৪ সালে সাবেক সোভিয়েতের সয়ুজ মহাকাশযানে রাকেশ শর্মার ঐতিহাসিক মিশনের ৪১ বছর পর শুক্লা দ্বিতীয় ভারতীয় নভশ্চর হিসেবে মহাকাশে যেতে চলেছেন। তবে সেই ঐতিহাসিক মুহূর্ত আরও কিছুটা বিলম্বিত হল। বুধবার শুভাংশুর মহাকাশে উড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও অ্যাক্সিওম-৪ মিশনটি আপাতত স্থগিত করা হচ্ছে। এই নিয়ে পঞ্চম বার থমকে গেল শুভাংশুদের যাত্রা। রকেটে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ফের স্থগিত করা হল অ্যাক্সিওম-৪ মিশন (Axiom-4 launch)। ইলন মাস্কের সংস্থা স্পেসএক্সের তরফে একথা জানানো হয়েছে।

    কেন স্থগিত যাত্রা

    বুধবার ভারতীয় সময় বিকেলে আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্র (আইএসএস)-এর উদ্দেশে পাড়ি দেওয়ার কথা ছিল শুভাংশুদের। ইলন মাস্কের সংস্থা স্পেসএক্সের তৈরি ‘ড্রাগন’ মহাকাশ যানে চেপে আমেরিকার ফ্লোরিডা থেকে যাত্রা শুরুর কথা থাকলেও, এখনই তা হচ্ছে না। স্পেসএক্সের তরফে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। কেন মহাকাশযাত্রা পিছোতে হচ্ছে, তার কারণ ব্যাখ্যা করেছে মাস্কের সংস্থা। বুধবার সকালে (ভারতীয় সময়) এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করে শুভাংশুদের মহাকাশযাত্রা পিছোনোর বিষয়টি জানানো হয়। মাস্কের সংস্থার তরফে বলা হয়েছে, এই মহাকাশযাত্রার জন্য যে ফ্যালকন-৯ রকেট ব্যবহার করার কথা, তাতে প্রযুক্তিগত সমস্যা দেখা দিয়েছে। সেই কারণেই আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রে শুভাংশুদের যাত্রা আপাতত স্থগিত করা হচ্ছে। উৎক্ষেপণের নতুন তারিখ এখনও কিছু ঠিক হয়নি। সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, প্রযুক্তিগত সমস্যা মেটানোর পরেই নতুন তারিখ ঘোষণা করা হবে।

    রকেটের সমস্যা

    স্পেসএক্সের তরফে জানানো হয়েছে, উৎক্ষেপণের আগে মহাকাশযানের ‘ফায়ার বুস্টার’ পরিদর্শনের সময় দেখা যায় যে রকেটে ‘এলওএক্স’ লিক করছে। অর্থাৎ রকেটে অক্সিজেন লিক করছে। ফ্যালকন-৯ রকেটের এই সমস্যা নতুন নয়। আগের অভিযানেই অক্সিজেন লিকের সমস্যাটা নজরে আসে। এই ‘লিক’ মেরামত করতে অতিরিক্ত সময় প্রয়োজন। কেন এই অভিযান ফের পিছিয়ে দেওয়া হল, সে বিষয়ে আরও আলোকপাত করে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা জানিয়েছে, লঞ্চ প্যাডে সাত সেকেন্ডের হট টেস্টের সময় প্রোপালশন বে-তে একটি এলওএক্স (লিকুইড অক্সিজেন) লিকেজ ধরা পড়ে। তাই উৎক্ষেপণের ছাড়পত্র দেওয়া হয়নি। আগে প্রথমে লিক মেরামত করা প্রয়োজন। এরপর এই সংক্রান্ত যাবতীয় পরীক্ষা করা হবে। তারপর ওড়ার জন্য ছাড়পত্র দেওয়া হবে রকেটটিকে। এএক্স-৪ মহাকাশযানে করে ভারত, পোল্যান্ড ও হাঙ্গেরির নভশ্চররা মহাকাশে যাবেন। তিনটি দেশের জন্যই এটি আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে তাদের প্রথম মিশন।

LinkedIn
Share