Tag: JK

JK

  • JK Accession: জম্মু-কাশ্মীরের ভারতভুক্তি কোন অবদান ছিল আরএসএসের গুরুজির?

    JK Accession: জম্মু-কাশ্মীরের ভারতভুক্তি কোন অবদান ছিল আরএসএসের গুরুজির?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ব্রিটিশ কবলমুক্ত হয়ে ভারত স্বাধীনতা লাভ করেছিল ১৯৪৭ সালের ১৫ অগাস্ট। এরও দু’মাসেরও বেশি সময় পরে জম্মু-কাশ্মীর যুক্ত (JK Accession) হয়েছিল ভারতের সঙ্গে। দিনটি ছিল ২৬ অক্টোবর, ১৯৪৭।

    ভারত-ভঙ্গ (JK Accession)

    ভারতের স্বাধীনতা লাভ, দেশভাগ এবং পাকিস্তান সৃষ্টির ঘটনা এত দ্রুত ঘটে গিয়েছিল যে, এর সঙ্গে যুক্ত কারও জন্যই সময়টি সহজ ছিল না (Guruji Golwalkar)। ব্রিটিশদের জন্য তো নয়ই, নয় দেশপ্রেমিক ভারতীয়দের জন্যও, যাঁরা স্বাধীনতা লাভ করতে জান-প্রাণ এক করেছিলেন। কারণ দেশপ্রেমিক ভারতীয়দের জন্য এই ভারত-ভঙ্গ ছিল এমন এক গভীর আঘাত, যা এর আগে কখনও অনুভব করেননি তামাম ভারতবাসী। দেশভাগ, যার ফলে জন্ম হয়েছিল পাকিস্তানের, তা আজও ভারতের জন্য এক দগদগে ঘায়ের মতো। ১৯৪৭ সালের অক্টোবরে এটি ছিল একটি তাজা ও গভীর ক্ষত, বিশেষ করে জম্মু ও কাশ্মীরের ক্ষেত্রে। সেই সময় দেশীয় রাজ্য ছিল ভূস্বর্গ। এর অর্ধেকেরও বেশি ভূখণ্ড পাকিস্তানের হাতে চলে গিয়েছিল এক বিশ্বাসঘাতক হামলার মাধ্যমে। পাকিস্তান মহারাজা হরি সিংকে ধোঁকা দিয়ে বিশ্বাস করিয়েছিল যে তাদের উদ্দেশ্য সম্মানজনক ও সৎ। অগাস্ট ১৯৪৭-এ যখন মহারাজা স্ট্যান্ডস্টিল চুক্তিতে সই করেছিলেন, পাকিস্তান তখন সেই কথাই বলেছিল।

    সংঘচালক বদ্রী দাস

    পাঞ্জাব ও বাংলায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ও অস্থিরতা দেখে উদ্বিগ্ন হয়ে পণ্ডিত প্রেম নাথ ডোগরা মহারাজাকে পরামর্শ দেন যাতে তিনি দ্রুত তাঁর রাজ্যকে ভারতের সঙ্গে সংযুক্ত করেন। এই উদ্দেশ্যে তিনি জনমত গঠন করেন এবং বহু রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের স্বাক্ষরিত একটি চিঠি মহারাজার কাছে পেশ করেন। প্রতিবেশী পাঞ্জাবের সংঘচালক বদ্রী দাস স্বয়ং মহারাজার সঙ্গে দেখা করেন। তার পরেও সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছিলেন মহারাজা হরি সিং।

    হরি সিংয়ের প্রতি বৈরিতা

    কী কারণে মহারাজার এই দশা? এর উত্তর হল স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর মহারাজা হরি সিংয়ের প্রতি বৈরিতা। সেই কারণেই মহারাজা দ্রুত স্বাধীন ভারতের সঙ্গে যুক্ত হতে আগ্রহ দেখাননি। এই হিংসার শেকড় মেলে ১৯৪৬ সালের গ্রীষ্মকালের কোহালা ঘটনায়। সেই সময় নেহরু, তাঁর বন্ধু (দেশদ্রোহিতার অভিযোগে অভিযুক্ত) শেখ মহম্মদ আবদুল্লাকে রক্ষা করতে শ্রীনগরে যাওয়ার (Guruji Golwalkar) চেষ্টা করেছিলেন। সেই সময় আবদুল্লা ছিলেন গারদে। পথে বাধা দেওয়া হয় নেহরুকে। তাঁকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, হরি সিংয়ের রাজ্যে আর এগোতে পারবেন না ভারতের প্রধানমন্ত্রী। এই ঘটনাই নেহরুর মানসিকতায় গভীর ছাপ ফেলেছিল। এর পর থেকে তিনি হরি সিংকে শত্রু হিসেবেই বিবেচনা করতে শুরু করেন (JK Accession)।

    জম্মু-কাশ্মীরের ইতিহাসে স্মরণীয় দিন

    ১৭ অক্টোবর, জম্মু-কাশ্মীরের ইতিহাসে এক স্মরণীয় দিন। কারণ ১৯৪৭ সালের এই দিনেই শ্রী গুরুজি গোলওয়ালকর শ্রীনগরে মহারাজা হরি সিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন। এজন্য গুরুজি দিল্লি থেকে বিমানে শ্রীনগর গিয়েছিলেন এবং মহারাজাকে তৎক্ষণাৎ ভারতের সঙ্গে যুক্ত হতে রাজি করিয়েছিলেন। গুরুজি তিন দিন শ্রীনগরে থেকে দিল্লিতে ফেরেন ১৯ অক্টোবর। এর পর তিনি রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের অসংখ্য কর্মীর সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন। ১৯৪৭ সালে ভারতে ৫৬০টিরও বেশি দেশীয় রাজ্য ছিল। এই দেশীয় রাজ্যগুলির নিজ নিজ ভবিষ্যৎ নির্ধারণের অধিকার ছিল। তারা চাইলে ভারত কিংবা পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্ত হতে পারত। এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য কোনও নির্দিষ্ট সময়সীমাও ছিল না। তা সত্ত্বেও হরি সিংয়ের প্রতি নেহরুর বৈরী মনোভাবের কারণেই সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছিলেন ভূস্বর্গের মহারাজা। অথচ, ১৯৩০-৩১ সালেই লন্ডনে অনুষ্ঠিত দেশীয় রাজ্যগুলির গোলটেবিল বৈঠকে মহারাজা স্পষ্টভাবে ভারতের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন (JK Accession)।

    নেহরুর চালাকি!

    মনে রাখতে হবে, নেহরু মন্ত্রিসভায় স্বরাষ্ট্র দফতরের দায়িত্ব পালন করেছিলেন সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল। দেশীয় রাজ্যগুলিকে ভারতের অন্তর্ভুক্ত করার দায়িত্ব ন্যস্ত হয়েছিল তাঁর ওপরই। অথচ, জম্মু-কাশ্মীর ছিল এমন এক দেশীয় রাজ্য, যেটির ব্যাপারে নেহরু নিজেই সিদ্ধান্ত নেন যে এটি তিনি তাঁর নিজের হাতে রাখবেন (Guruji Golwalkar)। নেহরু সরাসরি এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেন। কারণ তিনি তাঁর বন্ধু শেখ আবদুল্লাকে একটি সুবিধাজনক চুক্তি দিতে চেয়েছিলেন। নেহরুর এই ব্যক্তিগত ইচ্ছাই জম্মু-কাশ্মীর সমস্যার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে দেয়। নেহরু চেয়েছিলেন হরি সিংহকে জব্দ করতে। ইচ্ছে পূরণে তিনি যেসব পদক্ষেপ করেছিলেন, তার জেরেই জম্মু-কাশ্মীর সম্পর্কিত বহু জটিল সমস্যার সৃষ্টি হয়, যার মোকাবিলা আজও করতে হচ্ছে ভারতকে। হরি সিং জানতেন, পাকিস্তানে যোগ দিলে হিন্দুরা নির্যাতনের শিকার হবেন। তাই পাকিস্তানের সঙ্গে যোগ দিতে চাননি তিনি।

    গুরুজির হাতযশ

    ক্রান্তিকাল। এহেন পরিস্থিতিতে গুরুজির সঙ্গে সাক্ষাৎ করার ১০ দিনের মধ্যেই হরি সিং স্বাক্ষর করেন ভারতভুক্তির দলিলে। তাঁর পুরো রাজ্য একীভূত হয়ে যায় ভারতের সঙ্গে (Guruji Golwalkar)। তবে বিষয়টি এখানেই শেষ হয়নি, এ রাজ্যের বিরাট একটা অংশ, যেমন গিলগিট-বালতিস্তান, পাকিস্তান অধিকৃত জম্মু-কাশ্মীর (PoJK) এবং আরও কিছু অঞ্চল তৎকালীন সরকার রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছিল। এই অঞ্চলগুলি জোর করে দখল করে ফেলেছিল পাকিস্তান। যার মাশুল ভারতীয়দের গুণতে হচ্ছে আজও (JK Accession)।

  • Pakistan Taliban War: পাক-আফগানিস্তানের সংঘাতের কারণ কী? কোন অবস্থান নেবে ভারত?

    Pakistan Taliban War: পাক-আফগানিস্তানের সংঘাতের কারণ কী? কোন অবস্থান নেবে ভারত?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: এক সপ্তাহের জন্য ভারত সফরে এসেছেন আফগানিস্তানের (Pakistan Taliban War) বিদেশমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি (Amir Muttaqi)। ৯ অক্টোবর নয়াদিল্লিতে এসে পৌঁছন তিনি। তাঁর ভারত সফর চলাকালীনই পাক যুদ্ধবিমান আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল এবং আশপাশ এলাকায় হামলা চালায়। পাল্টা জবাব দেয় আফগানিস্তানের তালিবান সরকারও। তালিবানরা ২৫টি পাক সামরিক চৌকি দখল করে, হত্যা করে ৫৮ জন সৈন্যকে। পাকিস্তান-আফগানিস্তান দ্বন্দ্বের এই আবহে দুই দেশই পরস্পরকে পাল্টা আক্রমণের হুমকি দিচ্ছে। দুই মুসলিম রাষ্ট্রের এহেন রণহুঙ্কারে উদ্বিগ্ন আরও দুই ইসলামিক রাষ্ট্র – সৌদি আরব এবং কাতার। দ্বন্দ্বের অবসানে মধ্যস্থতা করতে এগিয়ে এসেছে এই দুই দেশই।

    বিরোধের মূল কারণ (Pakistan Taliban War)

    প্রশ্ন হল, দুই মুসলিম রাষ্ট্র পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানের (Pakistan Taliban War) বিরোধের মূল কারণ কী? ভারতে কি এর কোনও প্রভাব পড়তে পারে? এসব প্রশ্নের উত্তর খোঁজার আগে আমাদের দেখে নিতে হবে পাক-আফগান সীমান্তে বর্তমান পরিস্থিতি কী? যুদ্ধের সম্ভাবনাই বা কতটা? এর উত্তর পেতে হলে আমাদের দেখে নিতে হবে আফগান বিদেশমন্ত্রীর ভারত সফরের দিনগুলিতে ঠিক কী ঘটেছিল ‘আফিমের দেশে’। ৯ অক্টোবর রাতে পাকিস্তান শুধু কাবুলেই নয়, খোস্ত, জলালাবাদ ও পাকতিকা প্রদেশেও বিমান হামলা চালায়। টার্গেট ছিল তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি)-এর প্রধান নূর ওয়ালি মেহসুদ। ১০ অক্টোবর টিটিপি পাকিস্তানে একটি পুলিশ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে হামলা চালায়। এতে এক মেজর, এক লেফটেন্যান্ট কর্নেল, ২০ জন সৈন্য এবং ৩ জন সাধারণ নাগরিক নিহত হন।

    দাবি, পাল্টা দাবি

    পরের রাতে তালিবান বাহিনী সীমান্ত বরাবর পাল্টা আক্রমণ চালায়। কাবুলে সাংবাদিক বৈঠকে তালিবান মুখপাত্র জবিহুল্লাহ মুজাহিদ দাবি করেন, এই সংঘর্ষে ৫৮ জনেরও বেশি পাক সেনা নিহত এবং ৩০ জন জখম হয়েছে। তালিবান বাহিনী অস্থায়ীভাবে ২৫টি পাকিস্তানি চৌকি দখল করেছিল। সংঘর্ষ শেষের পরে সেগুলি পাকিস্তানকে ফেরতও দিয়ে দেওয়া হয় (Amir Muttaqi)। পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নকভি জানান, পাকিস্তান কঠোর জবাব দিয়েছে। এতে ৯ জন তালিবান যোদ্ধা নিহত হয়েছে। তাঁর হুঁশিয়ারি, “পাকিস্তান চুপ করে থাকবে না, ইটের জবাব পাটকেল দিয়ে দেওয়া হবে।” আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রক জানিয়েছে, তাদের অভিযান মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। ভবিষ্যতে পাকিস্তানের কোনও সীমান্ত লঙ্ঘন হলে পূর্ণ শক্তি দিয়ে প্রতিক্রিয়া জানানো হবে (Pakistan Taliban War)। প্রসঙ্গত, ২০২১ সালে তালিবান আফগানিস্তানের রাশ হাতে নেয়। তার পর এই প্রথম পাকিস্তান সরাসরি কাবুলে ড্রোন ও জেট হামলা চালিয়েছে। অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের বিবেক মিশ্র বলেন, “সাম্প্রতিক এই পদক্ষেপের পর পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হতে পারে। তবে হামলা চলতে থাকলে সম্পূর্ণ যুদ্ধের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।”

    মুত্তাকির ভারত সফরের জেরেই কি পাকিস্তান ক্ষুব্ধ?

    মুত্তাকি ভারতে পৌঁছন ৯ অক্টোবর। সেই দিনই পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খোয়াজা আসিফ পার্লামেন্টে বক্তব্য রাখতে গিয়ে আফগানিস্তানকে সবচেয়ে বড় শত্রু আখ্যা দিয়েছিলেন। তিনি এও বলেছিলেন, “সেনাবাহিনী ও সরকারের ধৈর্য ফুরিয়ে আসছে। আফগান মাটি থেকে সন্ত্রাসবাদ আর সহ্য করা হবে না।” বস্তুত, এরই কয়েক ঘণ্টা পরে পাকিস্তান কাবুলে বিমান হামলা চালায়। পরের দিন এক (Amir Muttaqi) সাক্ষাৎকারে আসিফ অভিযোগের আঙুল তোলেন ভারতের দিকে। তাঁর অভিযোগ, “আফগানিস্তানকে ব্যবহার করে প্রতিশোধ নিচ্ছে ভারত।” তিনি দাবি করেন, “একই ধর্মের পড়শি হওয়া সত্ত্বেও আফগানিস্তান কখনও ভাইয়ের মতো আচরণ করেনি (Pakistan Taliban War)।”

    আরও খেপে যায় পাকিস্তান

    ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও মুত্তাকির বৈঠকের পর আরও খেপে যায় পাকিস্তান। কারণ যৌথ বিবৃতিতে তালিবান জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার নিন্দে করে। এর পরেই পাকিস্তান তড়িঘড়ি করে আফগান রাষ্ট্রদূতকে তলব করে প্রবল আপত্তি জানায়। এও জানিয়ে দেয়, জম্মু ও কাশ্মীর সম্পর্কিত মন্তব্য রাষ্ট্রসংঘের প্রস্তাব ও ওই অঞ্চলের আইনানুগ মর্যাদা লঙ্ঘনের শামিল।ভারতের প্রাক্তন কূটনীতিক বীণা সিক্রি বলেন, “মুত্তাকির ভারত সফর নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করছে পাকিস্তান।” জেএনইউয়ের অধ্যাপক রাজন কুমার বলেন, “পাকিস্তানের হামলার সময়সূচি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে যে মুত্তাকির ভারত সফরের সঙ্গে এর সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। এর ইঙ্গিতও স্পষ্ট। আফগানিস্তান যদি ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ায়, তবে তার মাশুল গুণতে হবে তাদের (Pakistan Taliban War)।”

    সংঘাতের ৩ কারণ

    প্রশ্ন হল, পাকিস্তান ও তালিবানের সংঘাতের প্রকৃত কারণ কী? নয়ের দশকে পাকিস্তানের পৃষ্ঠপোষকতায় জন্ম হয় তালিবানের। তালিবান যোদ্ধাদের অস্ত্র, প্রশিক্ষণ এবং সহায়তা দেয় পাক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই। ১৯৯৬ সালে কাবুল পতনের পর তালিবান সরকারকে প্রথম স্বীকৃতি দিয়েছিল যারা, তাদের মধ্যে ছিল পাকিস্তানও। ২০০১ সালে মার্কিন বাহিনী আফগানিস্তানে ঢুকলে আমেরিকার পাশে দাঁড়ায় পাকিস্তান। এর জেরে তালিবান নেতা মোল্লা ওমর পাকিস্তানকে বিশ্বাসঘাতক আখ্যা দেন। এর পর থেকেই সম্পর্কের অবনতি শুরু হয় পাকিস্তানের সঙ্গে তালিবানদের। ২০২১ সালে তালিবান ফের আফগানিস্তানের ক্ষমতায় এলে পাকিস্তান সম্পর্ক মেরামতের চেষ্টা করে। তাতে অবশ্য কোনও লাভ হয়নি। বরং, তিনটি বড় ইস্যুতে সংঘাত তীব্র হয়।

    সংঘাতের ইস্যু

    এই ইস্যুগুলি হল, টিটিপিকে (TTP) আশ্রয় দেওয়া। টিটিপি পাকিস্তানের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর জঙ্গি হুমকি, যারা ২০০৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত ১৪ হাজারেরও বেশি পাকিস্তানিকে হত্যা করেছে। পাকিস্তানের অভিযোগ, আফগান তালিবান সীমান্তের ওপারে টিটিপি জঙ্গিদের আশ্রয় ও প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। এর ওপর রয়েছে সীমান্ত বিরোধ। ২ হাজার ৬৪০ কিলোমিটার দীর্ঘ ডুরান্ড লাইনকে  (Durand Line) (১৮৯৩ সালে এই রেখা টেনেছিলেন ব্রিটিশ অফিসার মোর্টিমার ডুরান্ড) আফগানিস্তান কৃত্রিম ঔপনিবেশিক সীমারেখা হিসেবে অস্বীকার করে। এই রেখাই পশতুন ও বেলুচ সম্প্রদায়কে বিভক্ত করে রেখেছে (Amir Muttaqi)। ২০২১ সালের পর জঙ্গি অনুপ্রবেশ ঠেকাতে পাকিস্তান সীমান্তে বেড়া দিতে শুরু করে। তালিবান প্রশাসন একে সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন বলে মনে করে। আফগান শরণার্থীদের বহিষ্কারও, দুই দেশের দ্বন্দ্বের একটি বড় কারণ। সোভিয়েত আগ্রাসনের সময় থেকে পাকিস্তান লক্ষাধিক আফগান শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়ে আসছে। রাষ্ট্রসংঘের শরণার্থী সংস্থা (UNHCR) জানিয়েছে, এখনও প্রায় ১৫ লাখ আফগান পাকিস্তানে রয়েছে। ২০২৩ সালে পাকিস্তান নিরাপত্তা উদ্বেগ ও অর্থনৈতিক বোঝার কথা বলে অ-নথিভুক্ত আফগানদের বহিষ্কার করতে শুরু করে। তালিবান একে রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টি বলে অভিহিত করে। তারা কবুল করে, আফগানিস্তানের পক্ষে এই শরণার্থীদের পুনর্বাসন দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সম্পদ নেই (Pakistan Taliban War)।

    তালিবানি কৌশল

    প্রশ্ন হল, যদি সত্যিই যুদ্ধ বাঁধে, তাহলে কী হবে? বিশেষজ্ঞদের মতে, সামরিক ও কূটনৈতিকভাবে তালিবানরা পাকিস্তানের তুলনায় অনেক দুর্বল। তবে পাকিস্তানকে সামরিকভাবে চাপে ফেলতে তারা গেরিলা কৌশল অবলম্বন করতে পারে। রাজন কুমার বলেন, “অস্বীকার করলেও, তালিবান টিটিপিকে মদত দিয়ে চলেছে। তার কারণ উত্তেজনা বৃদ্ধি পেলে যাতে পাকিস্তানকে দু’টি ফ্রন্টে লড়াই করতে বাধ্য করা যায়।এদিকে, সম্প্রতি, সৌদি আরব এবং পাকিস্তান একটি প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে, যাতে বলা হয়েছে একটির ওপর আক্রমণ উভয়ের ওপর আক্রমণ হিসেবে বিবেচিত হবে। এতেই সিঁদুরে মেঘ দেখছে সৌদি আরব। তাই দ্বন্দ্ব মেটাতে এগিয়ে এসেছে তারা। এগিয়ে এসেছে মুসলিম রাষ্ট্র কাতারও (Pakistan Taliban War)।

    ভারতের ওপর প্রভাব

    প্রশ্ন হল, পাক-তালিবান সংঘাত ভারতের ওপর কী প্রভাব ফেলবে? আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের মতে, পাকিস্তান ও তালিবানের মধ্যে বাড়তে থাকা উত্তেজনা আফগানিস্তানে ভারতের প্রভাব বিস্তারের জন্য একটি সুযোগ তৈরি করছে। তবে তা দীর্ঘস্থায়ী আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য হুমকি স্বরূপ হয়ে উঠতে পারে, বিশেষ করে যখন কাশ্মীরে পাক মদতপুষ্ট সন্ত্রাসবাদের মুখোমুখি হতে হচ্ছে ভারতকে (Amir Muttaqi)। রাজন কুমারের পর্যবেক্ষণ, তালিবান ভারতের মতাদর্শগত মিত্র না হলেও, তারা নয়াদিল্লির কাছে অর্থনৈতিক, চিকিৎসা ও প্রযুক্তিগত সাহায্য চায়। তবে ভারত সম্ভবত মানবিক ও উন্নয়নমূলক সাহায্যের মধ্যেই নিজেদের সীমাবদ্ধ রাখবে, এড়িয়ে চলবে সামরিক জটিলতা (Pakistan Taliban War)।

  • India: ‘‘যারা ১৯৭১ সালে ৪ লক্ষ মহিলাকে গণধর্ষণ করেছিল…’’, রাষ্ট্রসংঘে পাকিস্তানকে ধুয়ে দিল ভারত

    India: ‘‘যারা ১৯৭১ সালে ৪ লক্ষ মহিলাকে গণধর্ষণ করেছিল…’’, রাষ্ট্রসংঘে পাকিস্তানকে ধুয়ে দিল ভারত

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে পাকিস্তানকে একেবারে ধুয়ে দিল ভারত (India)। নিরাপত্তা পরিষদে (UNSC) কাশ্মীর ইস্যু উত্থাপন করেছিল পাকিস্তান। তারই জবাব দিতে গিয়ে পাকিস্তানকে একহাত নেন ভারতের প্রতিনিধি। তামাম বিশ্বকে তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের সময় ইসলামাবাদের অনুমোদিত ৪ লাখ মহিলার ওপর সংঘটিত গণধর্ষণ অভিযানের কথা। ‘নারী, শান্তি ও নিরাপত্তা বিষয়ক’ আলোচনার সময় এই প্রতিক্রিয়া জানানো হয় ভারতের তরফে।

    পাকিস্তানের মিথ্যাপূর্ণ তথ্যের কড়া সমালোচনা (India)

    বিতর্ক সভায় অংশ নিয়ে রাষ্ট্রসংঘে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত পর্বতনেনি হরিশ পাকিস্তানের মিথ্যাপূর্ণ তথ্যের কড়া সমালোচনা করেন। আন্তর্জাতিক মঞ্চকে অপব্যবহার করে প্রচার চালানোর অভিযোগও তোলেন তিনি। হরিশ বলেন, “দুর্ভাগ্যবশত প্রতি বছরই আমাদের আমার দেশকে লক্ষ্য করে পাকিস্তানের এই ভ্রান্তিপূর্ণ বিষোদ্গার শুনতে হয়, বিশেষত জম্মু ও কাশ্মীর নিয়ে — যে ভারতীয় ভূখণ্ডের প্রতি তারা লোভাতুর দৃষ্টি দেয় সর্বক্ষণ।” তিনি বলেন, “এটাই সেই দেশ যারা ১৯৭১ সালে ‘অপারেশন সার্চলাইট’ পরিচালনা করেছিল এবং নিজেদের সেনাবাহিনী দিয়ে ৪ লক্ষ মহিলা নাগরিকের ওপর পরিকল্পিত গণধর্ষণ চালিয়ে এক গণহত্যার অভিযানে অনুমোদন দিয়েছিল। বিশ্ব পাকিস্তানের এই প্রচারের ভেতরটা স্পষ্টভাবেই দেখতে পায় (UNSC)।”

    পাকিস্তান নিজেদের জনগণকে বোমা মারে

    হরিশ পাকিস্তানকে এমন একটি দেশ হিসেবে বর্ণনা করেন, যেখানে তারা নিজেদের জনগণকে বোমা মারে এবং পরিকল্পিতভাবে গণহত্যা চালায়। তিনি আরও বলেন, “ইসলামাবাদ আন্তর্জাতিক সমাজের নজর ঘোরাতে ভুল দিকনির্দেশনা করছে, করছে অতিরঞ্জনও। এভাবেই তারা তাদের দোষ আড়াল করার চেষ্টা করছে (India)।” ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত হরিশ বলেন, যে দেশ নিজের নাগরিকদের ওপর বোমাবর্ষণ করে এবং গণহত্যা চালায়, সেই দেশ মানবাধিকারের নামে মুখ খোলার যোগ্যই নয়। রাষ্ট্রসংঘে পাকিস্তানের স্থায়ী মিশনের কাউন্সিলর সাইমা সেলিম অভিযোগ করেন, কাশ্মীরি নারীরা কয়েক দশক ধরে যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত যৌন হিংসার শিকার হয়ে আসছেন। তাঁর বক্তব্য, ভবিষ্যতে রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের (UNSC) প্রতিবেদনগুলিতে কাশ্মীরি নারীদের দুর্দশা প্রতিফলিত হওয়া উচিত।

    বিভ্রান্তিকর ও অতিরঞ্জিত বক্তব্য

    পাকিস্তানের এহেন অভিযোগ খারিজ করে দেন ভারতের রাষ্ট্রদূত। তিনি রাষ্ট্রসংঘে শান্তিরক্ষা মিশনে ভারতের দীর্ঘদিনের অবদান ও শান্তির অপরিহার্য প্রতিনিধি হিসেবে নারীদের প্রাথমিক স্বীকৃতির কথা তুলে ধরেন (UNSC)। উদাহরণ হিসেবে তিনি ছয়ের দশকে কঙ্গোয় ভারতীয় নারী চিকিৎসক আধিকারিকের নিয়োগের ঘটনাটিরও উল্লেখ করেন (India)। কাশ্মীর প্রসঙ্গে পাকিস্তানের চিরাচরিত অভিযোগেরও কঠোর প্রতিবাদ করেন হরিশ। তিনি বলেন, প্রতি বছর পাকিস্তান জম্মু ও কাশ্মীর সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর ও অতিরঞ্জিত বক্তব্য পেশ করে। কিন্তু জম্মু ও কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল, আছে এবং থাকবে। হরিশ বলেন, পাকিস্তান অধিকার নিয়ে নানা কথা বলে। অথচ নিজের দেশেই বোমাবর্ষণের কথা ভুলে যায়। তিনি মনে করিয়ে দেন, গত মাসে পাক সেনা কীভাবে খাইবার পাখতুনখোয়ায় বোমাবর্ষণ করেছিল। নারী, শিশু নির্বিশেষে ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে সেই হিংসায়। এর পরেই হরিশ বলেন, জম্মু-কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ ছিল, চিরকালই থাকবে। কারও অতিরঞ্জিত বক্তব্য এখানে ছাপ ফেলতে পারবে না (India)।

    সাইমা সালেমের বক্তব্য

    পাক কূটনীতিবিদ সাইমা সালেম সভায় অভিযোগ করেছিলেন যে, কাশ্মীরি মহিলারা কষ্টের মধ্যে রয়েছেন। তাঁর সেই বক্তব্যের জবাবে ভারতীয় প্রতিনিধি বলেন, যে দেশ নারী, শান্তি ও নিরাপত্তার নামে কুমিরের কান্না কাঁদে, তারাই সেনাবাহিনীর ইতিহাসে সব চেয়ে বর্বর যৌন নিপীড়নের ঘটনা ঘটিয়েছে (UNSC)। পাকিস্তান নারী সুরক্ষার কথা বলার আগে নিজের অতীতের দিকে তাকাক। তিনি বলেন, নারীর অধিকার ও সুরক্ষার ক্ষেত্রে তাদের রেকর্ড নিষ্কলঙ্ক ও অক্ষত। আন্তর্জাতিক মঞ্চে বারবার মিথ্যে প্রচার চালিয়ে পাকিস্তান বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে।

    প্রসঙ্গত, অপারেশন সার্চলাইটের নামে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান (অধুনা বাংলাদেশ) অত্যাচার চালিয়েছিল তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তান (অধুনা পাকিস্তান)। সেবার পাক সেনা হত্যা করেছিল তিন লাখেরও বেশি বাঙালিকে। শুধু তাই নয়, প্রায় চার লাখ মহিলাকে পাকিস্তানি সেনার ধর্ষণের শিকার হতে হয়েছিল (India)। পরবর্তীকালে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ভারতের সহায়তায় জন্ম হয়েছিল বাংলাদেশের (UNSC)।

  • Kashmir: চেনা ছন্দে ফিরল ভূস্বর্গ, দশেরায় মাতল শ্রীনগর

    Kashmir: চেনা ছন্দে ফিরল ভূস্বর্গ, দশেরায় মাতল শ্রীনগর

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: তিন দশকেরও বেশি সময় পরে ফের ঘটা করে দশেরা উৎসব পালিত হল জম্মু-কাশ্মীরের গ্রীষ্মকালীন রাজধানী শ্রীনগরে (Kashmir)। আবারও প্রাণ ফিরে পেল ভূস্বর্গ। গত ২ অক্টোবর হাজার হাজার কাশ্মীরি হিন্দু এবং ভিন্ন ধর্মাবলম্বীরাও উৎসব (Grand Dussehra) পালন করতে জড়ো হয়েছিলেন শের-ই-কাশ্মীর ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকা একটি অঞ্চলে এটি ছিল সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের এক ঐতিহাসিক পুনর্জাগরণ।

    গর্বের দশেরা (Kashmir)

    এদিনের উৎসবের মূল আকর্ষণ ছিল রাবণ, কুম্ভকর্ণ ও মেঘনাদের বিশাল মূর্তি পোড়ানো। স্টেডিয়ামের অনুশীলন মাঠে রাখা অতিকায় প্রতিমাগুলি আগুনের করাল গ্রাসে চলে গেলে ৫ হাজারেরও বেশি দর্শক করতালিতে ফেটে পড়েন। সঙ্গে ছিল ঐতিহ্যবাহী সংগীত, পটকা ফাটানো ও মিষ্টি বিতরণ। দশেরার এই উৎসব ছিল সামাজিক সম্প্রীতি ও সাংস্কৃতিক গর্বের এক বিরল মুহূর্ত। এবারের এই উৎসবে অংশ নিয়েছিলেন মুসলিম সম্প্রদায়ের সদস্যরাও। পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নেত্রী ইলতিজা মুফতিও উৎসবে যোগ দিয়েছিলেন (Kashmir)।

    কাশ্মীরি হিন্দু সংঘর্ষ সমিতি

    অনুষ্ঠানের আয়োজক কাশ্মীরি হিন্দু সংঘর্ষ সমিতি। তারা স্থানীয় প্রশাসন ও বাসিন্দাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। এদিন অনুষ্ঠানের শুরুতে ইন্দিরা নগরের একটি মন্দির থেকে ঐতিহ্যবাহী শোভাযাত্রা বের হয়, ঠিক ৩৩টি বছর আগেও যেমনটি হত।কাশ্মীরি হিন্দু রাহুল মাত্তু বলেন, “কাশ্মীরে দশেরা আমাদের সম্প্রদায়ের মানুষদের একত্রিত করে। এটি আমাদের ঐতিহ্যের সঙ্গে বন্ধনকে আরও দৃঢ় করে।” স্থানীয় বাসিন্দারাও একই কথা বলেন। তাঁরা উৎসবটির ভূমিকা তুলে ধরে বলেন, “এটি আমাদের যৌথ ঐতিহ্যকে দৃঢ় করে, আশার সঞ্চার করে।” ক্ষীরভবানীর এক বাসিন্দা বলেন, “দশেরা উদযাপন আমাদের শেকড় ও যৌথ ঐতিহ্যের কথা মনে করিয়ে দেয়। এটি আশা ও একতার এক বিশেষ মুহূর্ত।”

    উৎসবের সমাপ্তি হয় এক মনোমুগ্ধকর আতশবাজির প্রদর্শনীর মাধ্যমে। এটি শ্রীনগরের আকাশকে রঙিন করে (Grand Dussehra) তোলে। দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা বজায় রাখতে আঁটোসাঁটো নিরাপত্তার ব্যবস্থাও করেছিল প্রশাসন (Kashmir)।

  • Udhampur Encounter: উপত্যকায় নাশকতার ছক ভেস্তে দিল সেনা, উধমপুরে জঙ্গিদের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে শহিদ জওয়ান

    Udhampur Encounter: উপত্যকায় নাশকতার ছক ভেস্তে দিল সেনা, উধমপুরে জঙ্গিদের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে শহিদ জওয়ান

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: উৎসবের মরসুমে ফের রক্তাক্ত উপত্যকা। ভারতে ঢুকে ফের সন্ত্রাসবাদী হামলার চেষ্টা করেছিল জইশ-ই-মহম্মদের চার জঙ্গি। জম্মু ও কাশ্মীরের উধমপুর জেলায় (Udhampur Encounter) ফের সন্ত্রাসবাদী দমন অভিযানকে ঘিরে তীব্র গুলির লড়াই চলল। ভারতীয় সেনার তরফে জানানো হয়েছে,জঙ্গিদের উপস্থিতির খবর পেয়ে শুক্রবার রাত থেকেই উধমপুর জেলায় অভিযানে নামে সেনা। সেনার হোয়াইট নাইট কোরের তরফে সমাজমাধ্যম‌ে একটি পোস্ট করে জানানো হয়, “জঙ্গিদের সঙ্গে সংঘর্ষ চলছে।” জানানো হয়, সেনার অভিযান চলছে ডোডা-উধমপুর সীমানায়। জঙ্গিদের সঙ্গে গুলির লড়াই (এনকাউন্টার)-এ খতম হয়েছে দুই জঙ্গি। শহিদ হয়েছেন এক জওয়ান।

    পুঞ্চ সেক্টরে প্রচুর অস্ত্র উদ্ধার

    জম্মু-কাশ্মীরের উধমপুরে (Udhampur Encounter) যখন সেনার সঙ্গে জইশ জঙ্গিদের গুলির লড়াই চলছে, সেই সময় পুঞ্চ সেক্টরে সেনা অভিযানে প্রচুর অস্ত্র উদ্ধার হল। গোয়েন্দা সূত্রে খবর আসে, পুঞ্চ সেক্টরে অস্ত্র মজুত করা হচ্ছে। সেই খবর পেয়েই অভিযানে নামে সেনা। তল্লাশি চালানোর সময় চিনা হ্যান্ড গ্রেনেড, প্রচুর কার্তুজ, ম্যাগাজিন এবং স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। সেনার সন্দেহ, জম্মু-কাশ্মীরে নাশকতার জন্যই এই অস্ত্র মজুত করা হচ্ছিল। কিন্তু তার আগেই সেই অস্ত্র উদ্ধার করা হল। তবে কারা অস্ত্র মজুত করছিল, কারা এই ঘটনায় জড়িত সেই তল্লাশি শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই।

    জম্মু-কাশ্মীর জুড়ে তল্লাশি

    সেনার একটি সূত্র বলছে, যে পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে, তাতে মনে হচ্ছে জঙ্গি কার্যকলাপেই এগুলি ব্যবহার করার উদ্দেশ্য ছিল। গত কয়েক দিন ধরেই জম্মু-কাশ্মীর জুড়ে তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে পুলিশের কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স ইউনিট। সূত্রের খবর, কাশ্মীরের সাতটি জেলা— শ্রীনগর, বারামুলা, অনন্তনাগ, কুপওয়ারা, হান্দোয়ারা, পুলওয়ামা এবং শোপিয়ানে তল্লাশি জারি। গত মাসেই উত্তর কাশ্মীরের বান্দিপোরা জেলায় দুই লস্কর জঙ্গিকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তাদের কাছ থেকে প্রচুর চিনা গ্রেনেড। ব্যারেল গ্রেনেড, গ্রেনেড লঞ্চার, ১০টি একে সিরিজের রাইফেল উদ্ধার হয়েছে। তার পর থেকেই জম্মু-কাশ্মীর জুড়ে তল্লাশি অভিযান চলছে। সেই তল্লাশি অভিযানের সময়েই পুঞ্চ থেকে অস্ত্র উদ্ধার হল।

    পুলিশ ও যৌথবাহিনীর সঙ্গে গুলির লড়াই

    সেনা সূত্রে খবর, উধমপুরের ডুডু বসন্তগড়ে জঙ্গিদের উপস্থিতির খবর পাওয়া গিয়েছিল। তার পরেই অভিযানে নামে সেনার স্পেশ্যাল অপারেশন গ্রুপ (এসওজি) এবং পুলিশের যৌথ বাহিনী। উল্টো দিক থেকে জঙ্গিরা গুলি চালাতে‌ শুরু করলে পাল্টা জবাব দেয় যৌথ বাহিনীও। শনিবার সকালে উধমপুরে জঙ্গিদের সঙ্গে গুলির লড়াই শুরু হয়। গুলিবিদ্ধ হন এক জওয়ান। চিকিৎসা চলাকালীন মৃত্যু হয় তাঁর। তিন থেকে চার জন জঙ্গিকে কোণঠাসা করে ফেলে নিরাপত্তাবাহিনী। এদের প্রত্যেকেই জইশ-ই-মহম্মদ জঙ্গি গোষ্ঠীর সদস্য বলে সূত্রের খবর। উধমপুরের ডুডু- বসন্তগড়েরের পাহাড়ি এলাকায় তিন থেকে চার জন জঙ্গি লুকিয়ে রয়েছে বলে খবর পায় নিরাপত্তা বাহিনী। শুরু হয় অভিযান। সেনাবাহিনী, স্পেশাল অপারেশনস গ্রুপ (এসওজি) এবং পুলিশ যৌথভাবে অভিযান চালায়। গুলির লড়াইয়ে এক জওয়ান গুরুতর আহত হন। এখনও গুলির লড়াই চলছে। এক্স পোস্টে জম্মুর আইজিপি লেখেন, ‘এনকাউন্টার চলছে। পুলিশ ও সেনার যৌথদল ঘটনাস্থলে রয়েছে।’

    নাশকতা ঘটানোর ছক কষেছিল জঙ্গিরা

    উল্লেখ্য, গত এক বছরে এই অঞ্চলেই একাধিক গুলির লড়াইয়ের ঘটনা ঘটেছে। চলতি বছরের ২৬ জুন ডোডা-বসন্তগড়ের জঙ্গলে সংঘর্ষে খতম হয় জইশ কমান্ডার হায়দার, যিনি প্রায় চার বছর ধরে ওই এলাকায় সক্রিয় ছিলেন। এর আগে ২৫ এপ্রিল একই এলাকায় সেনা-জঙ্গি সংঘর্ষে শহিদ হয়েছিলেন এক সেনা জওয়ান। অন্যদিকে, জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স শাখা কাশ্মীর উপত্যকার সাতটি জেলায়। শ্রীনগর, বারামুলা, অনন্তনাগ, কুপওয়ারা, হ্যান্ডওয়ারা, পুলওয়ামা এবং শোপিয়ানে ব্যাপক তল্লাশি চালানো হয়। তল্লাশিতে সেনাবাহিনী ড্রোন ও ডগ স্কোয়াড ব্যবহার করছে। পুঞ্চ সেক্টরে ওই তল্লাশিতে মেলে বিপুল অস্ত্রভান্ডার। উদ্ধার হয়েছে ২০টি চিনা হাতবোমা-সহ একাধিক মারাত্মক অস্ত্র। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, এই অস্ত্রগুলি সম্প্রতি লুকিয়ে রাখা হয়েছিল এবং সেগুলি মূল ভূখণ্ডে পৌঁছে দিয়ে নাশকতা ঘটানোর ছক কষেছিল জঙ্গিরা। সময়মতো খবর পাওয়ায় বড়সড় সন্ত্রাসের ছক ভেস্তে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। এছাড়াও একাধিক ডিজিটাল ডিভাইস এবং নথি উদ্ধার করেছে নিরাপত্তা বাহিনী।

    শেষ দুই সপ্তাহে জম্মু ও কাশ্মীরে সবচেয়ে বড় অভিযান

    স্থানীয় প্রশাসনের দাবি অনুযায়ী, শেষ দুই সপ্তাহের মধ্যে জম্মু ও কাশ্মীরে এটাই সবচেয়ে বড় অভিযান। এর আগে কূলগাম অভিযান চালিয়েছিল সেনা। সেখানে জঙ্গিদের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে এক সেনা আধিকারিক-সহ মোট ২ জওয়ান শহিদ হন। পালটা জবাবে দুই জঙ্গিকে খতম করা হয়। উল্লেখ্য, ২২ এপ্রিল পহেলগাঁও হামলার পর উপত্যকা থেকে সন্ত্রাসের জাল ছিঁড়ে ফেলতে তৎপর হয়েছে সেনা। ব্যাপক ধড়-পাকড়ের পাশাপাশি জঙ্গি নিধন যজ্ঞ। এরপর শ্রীনগরে ‘অপারেশন মহাদেবে’ পহেলগাঁও হামলায় যুক্ত ৩ জঙ্গিকেই খতম করেছে ভারতীয় সেনা। পহেলগাঁও হামলার পর গত তিন মাস ধরে গা ঢাকা দিয়েছিল তারা।

  • JK Statehood Bill: মঙ্গলেই রাজ্যের মর্যাদা ফিরে পাচ্ছে জম্মু-কাশ্মীর?

    JK Statehood Bill: মঙ্গলেই রাজ্যের মর্যাদা ফিরে পাচ্ছে জম্মু-কাশ্মীর?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: রাত পোহালেই রাজ্যের মর্যাদা ফিরে পাচ্ছে জম্মু-কাশ্মীর (JK Statehood Bill)! অন্তত এমনই জল্পনায় ছয়লাপ সোশ্যাল মিডিয়া। জল্পনার কারণ রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (PM Modi) সাক্ষাৎ। তিনি রাষ্ট্রপতি ভবন ছেড়ে বেরনোর পরপরই সেখানে যান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠক করেন তিনিও। তার আগে শাহ জম্মু ও কাশ্মীরের বেশ কিছু নেতা এবং বিজেপি প্রধানের সঙ্গেও বৈঠক করেন। সূত্রের খবর, প্রধানমন্ত্রী মঙ্গলবার এনডিএর সাংসদদের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে ডেকেছেন।

    জম্মু-কাশ্মীর পাচ্ছে রাজ্যের মর্যাদা! (JK Statehood Bill)

    ২০১৯ সালের ৫ অগাস্ট জম্মু-কাশ্মীর থেকে বাতিল হয়ে গিয়েছিল ৩৭০ ধারা। রাত পোহালেই ৫ অগাস্ট, ওই ঘটনার বর্ষপূর্তি। তার আগে কেন্দ্রের এই তৎপরতার জেরে বাড়তি অক্সিজেন পেয়েছে জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্যের মর্যাদা পাওয়ার জল্পনা। জানা গিয়েছে, ৩ অগাস্ট রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়ে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন প্রধানমন্ত্রী। এই বৈঠকের বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি। অথচ, এই ধরনের বৈঠকের পর বিবৃতি প্রকাশ করে প্রেস ইনফর্মেশন ব্যুরো। এর ঠিক কয়েক ঘণ্টা পরেই রাষ্ট্রপতি ভবনে যান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে একান্ত বৈঠকও করেন তিনি। চলতি মাসের প্রথম দু’দিন ধরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বৈঠক করেন জম্মু-কাশ্মীরের বিজেপি প্রধান সৎ শর্মা এবং লাদাখের উপরাজ্যপাল কভিন্দর গুপ্তার সঙ্গে। সোমবার অল জম্মু-কাশ্মীর শিয়া অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ইমরান রেজা আনসারিও সাক্ষাৎ করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে। কেন্দ্র-শাসিত ভূস্বর্গের বাস্তব বিভিন্ন বিষয়ে শাহকে অবহিত করেন আনসারি (JK Statehood Bill)।

    কী বললেন প্রাক্তন সেনাকর্তা

    প্রাক্তন সেনাকর্তা তথা লেখক কানওয়াল জিৎ সিং ধিলোঁ বলেন, “৫ অগাস্ট কী ঘোষণা হতে পারে, তা নিয়ে ব্যাপক জল্পনা-কল্পনা চলছে।” ট্যুইট-বার্তায় তিনি লেখেন, “কাশ্মীরে যে শান্তি ফিরে এসেছে, তা অনেক মূল্যবান মানবজীবনের বিনিময়ে এসেছে। আমাদের কোনও হঠকারী সিদ্ধান্তে ঝাঁপিয়ে পড়া উচিত নয়। এখন শান্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠার যে সংহতিমূলক পর্যায় চলছে, তা স্থিতিশীল হতে দিন – আমরা যেন অস্থির হয়ে আগ বাড়িয়ে কিছু না করি।” ভূ-রাজনৈতিক বিশ্লেষক আরতি টিক্কু সিং-ও বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার জম্মু-কাশ্মীরকে রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দিতে পারে এমন গুঞ্জন জোরালোভাবে ছড়াচ্ছে।” তিনি বলেন, “আরও আশ্চর্যের বিষয় হল, গুজব চলছে যে কাশ্মীর ও জম্মুকে পৃথক করে দুটি আলাদা রাজ্যে পরিণত করা হতে পারে (PM Modi)। যদি এর যে কোনও একটি সত্যি হয়, তাহলে তার চেয়ে বড় বিপর্যয় আর কিছু হতে পারে না (JK Statehood Bill)।”

  • PM Modi: ‘‘পাকিস্তানের উদ্দেশ্য ছিল ভারতে দাঙ্গা লাগানো’’, ভূস্বর্গে দাঁড়িয়ে বললেন প্রধানমন্ত্রী

    PM Modi: ‘‘পাকিস্তানের উদ্দেশ্য ছিল ভারতে দাঙ্গা লাগানো’’, ভূস্বর্গে দাঁড়িয়ে বললেন প্রধানমন্ত্রী

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: “পহেলগাঁওয়ে (Pahalgam Incident) মানবতা ও কাশ্মীরিয়তের ওপর আঘাত হেনেছে পাকিস্তান। তাদের উদ্দেশ্য ছিল ভারতে দাঙ্গা লাগানো এবং পরিশ্রমী কাশ্মীরিদের জীবিকা ব্যাহত করা। সেই কারণেই তারা পর্যটকদের ওপর আক্রমণ চালিয়েছে।”

    প্রধানমন্ত্রীর মুখে আদিলের কথা (PM Modi)

    শুক্রবার ভূস্বর্গে দাঁড়িয়ে কথাগুলি বললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Modi)। দক্ষিণ কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে পাক মদতপুষ্ট জঙ্গিদের হামলায় মৃত্যু হয় স্থানীয় সহিস আদিল হুসেনের। এদিন কাশ্মীরের জনসভায় সেই আদিলের প্রসঙ্গও টানলেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, “কেউ ঘোড়া চালান, কেউ আবার গাইড – সকলকে শেষ করার ষড়যন্ত্র ছিল পাকিস্তানের। সন্ত্রাসবাদীদের সামনে রুখে দাঁড়ানো আদিলও তো ওখানে রোজগারের আশায় গিয়েছিল। পরিবারের মুখে দু’মুঠো খাবার তুলে দেওয়ার জন্য কাজ করত। সেই আদিলকেও মেরে দিয়েছে।” প্রধানমন্ত্রী বলেন, “পাকিস্তান কাশ্মীরের পর্যটনের ওপর হামলা করেছে। এই পর্যটন থেকে জম্মু-কাশ্মীরের গরিব মানুষদের সংসার চলে, সেই পর্যটনকে নিশানা করেছে পাকিস্তান।” তিনি বলেন, “পর্যটন থেকে রোজগার বাড়ে। পর্যটন মানুষকে জোড়ে। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমাদের যে পড়শি দেশ মানবতাবিরোধী এবং পর্যটনবিরোধী। পহেলগাঁওয়ে ২২ এপ্রিল যা হয়েছে, এটা তার উদাহরণ।” এর পরেই তিনি বলেন, “পাকিস্তান পহেলগাঁওয়ে মানবতার ওপর আঘাত করেছে।”

    মোকাবিলা করবে মোদি

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, “জম্মু-কাশ্মীরের যুব সমাজ সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে জবাব দেওয়ার জন্য তৈরি। বছরের পর বছর সন্ত্রাসবাদের কারণে জম্মু-কাশ্মীরে অনেক ক্ষতি হয়েছে। সন্ত্রাসবাদের কারণে এখানকার মানুষ স্বপ্ন দেখা ছেড়ে দিয়েছিল। সন্ত্রাসবাদকেই নিজেদের ভাগ্য বলে মেনে নিতে শুরু করেছিল। তবে আমরা সেটা পাল্টে দিতে পেরেছি। এখন জম্মু-কাশ্মীরের যুব সমাজ স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে। শুধু তা-ই নয়, তা পূরণও করছে।” তিনি বলেন, “জম্মু-কাশ্মীরের বিকাশ বন্ধ হবে না। এখানকার যুব সমাজের স্বপ্নপূরণে যদি কোনও বাধা আসে, তবে সেই বাধার বিরুদ্ধে মোকাবিলা করবে মোদি।”

    প্রধানমন্ত্রীর মুখে প্রত্যাশিতভাবেই উঠে আসে (PM Modi) অপারেশন সিঁদুরের কথা। তিনি বলেন, “৬ মে রাতে পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদীদের ওপর হামলা চলে। এখন পাকিস্তান যখনই অপারেশন সিঁদুরের নাম শুনবে, তখন তাদের সর্বনাশের কথা মনে পড়বে। পাকিস্তানি ফৌজ এবং সন্ত্রাসবাদীরা ভাবতে পারেনি পাকিস্তানের ভেতরে ঢুকে এভাবে হামলা চালাবে ভারত। ওরা যে সন্ত্রাসবাদের ইমারত তৈরি করেছিল, কয়েক মিনিটের মধ্যে তা ধ্বংসাবশেষে পরিণত হয়েছে। গোটা বিশ্ব দেখেছে, পাকিস্তান কীভাবে (Pahalgam Incident) জম্মু-কাশ্মীরের সাধারণ মানুষের ওপর হামলা চালিয়েছে (PM Modi)।”

  • Chenab Rail Bridge: ভূমিকম্প, বিস্ফোরণেও থাকবে অটল! কাশ্মীরে বিশ্বের সর্বোচ্চ রেলসেতুর উদ্বোধন মোদির

    Chenab Rail Bridge: ভূমিকম্প, বিস্ফোরণেও থাকবে অটল! কাশ্মীরে বিশ্বের সর্বোচ্চ রেলসেতুর উদ্বোধন মোদির

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পহেলগাঁও হত্যাকাণ্ডের জেরে অপারেশন সিঁদুরের পর এই প্রথম জম্মু-কাশ্মীরে (Kashmir) গেলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেখানে জম্মু-কাশ্মীরের রেয়াসি জেলায় চেনাব নদীর ওপর নির্মিত নয়া সেতুর (Chenab Rail Bridge) উদ্বোধন করলেন তিনি। নয়া এই সেতুর উদ্বোধন হওয়ায় আরও কাছাকাছি চলে এল দিল্লি এবং কাশ্মীর। চেনাব সেতু বিশ্বের সর্বোচ্চ রেলসেতু। এর পাশাপাশি এদিন তিনি উদ্বোধন করেন দেশের প্রথম কেবল রেলসেতু অঞ্জী ব্রিজেরও। তাঁর হাতেই ভূস্বর্গে যাত্রার সূচনা হতে চলেছে নয়া দুটি বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের। এরই সঙ্গে কাশ্মীরে মোট ৪৬ হাজার কোটি টাকার উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধনও করেন প্রধানমন্ত্রী।

    চেনাব সেতুর বিশেষত্ব (Chenab Rail Bridge)

    চেনাব নদীর ওপর নির্মিত এই সেতুটি উধমপুর-শ্রীনগর-বারামুল্লা রেল সংযোগ প্রকল্পের একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ তৈরি করে, যা কাশ্মীরকে দেশের বাকি অংশের সঙ্গে রেলপথের মাধ্যমে যুক্ত করে। বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেনগুলি বিশ্বমানের চেনাব সেতুর ওপর দিয়ে চলবে, যা শুরুতে কাটরাকে যুক্ত করবে শ্রীনগরের সঙ্গে। চেনাব সেতুর সঙ্গে পার্থক্য রয়েছে বিশ্বের অন্যান্য সেতুর, যে কারণে এটি বিশ্বের অন্যতম বিস্ময়। চন্দ্রভাগা নদীর ৩৫৯ মিটার উঁচুতে তৈরি (Chenab Rail Bridge) এই আর্চ রেলসেতু প্যারিসের আইফেল টাওয়ারের চেয়েও ৩৫ মিটার বেশি উঁচু। দৈর্ঘ্য ১ হাজার ৩১৫ মিটার। জম্মু ও শ্রীনগরের সংযোগকারী হিসেবে কাজ করবে এটি। যাত্রাপথে পড়বে ৩৬টি টানেল এবং ৯৪৩টি ব্রিজ।

    ভূমিকম্পেও অটল

    সেতুটির নির্মাতাদের দাবি, ভূমিকম্প টলাতে পারবে না চেনাব সেতুকে। মাত্র তিন ঘণ্টাতেই পৌঁছনো যাবে কাটরা থেকে শ্রীনগর। চেনাব সেতু কুতুব মিনারের চেয়ে পাঁচ গুণ বেশি লম্বা। এই সেতুর উচ্চতা চিনের বেপান নদীর ওপর নির্মিত ডুগ সেতুর উচ্চতার চেয়েও বেশি। চেনাব সেতু মেঘের ওপরে বিশ্বের সর্বোচ্চ খিলান। সেতুর এক পাশের পিলারের উচ্চতা প্রায় ১৩১ মিটার। ছবিতে এই সেতুর উচ্চতা এমন যে এর নীচে মেঘও দেখা যাচ্ছে। ভারতীয় রেলওয়ে ২০২১ সালের এপ্রিল মাসেই সেতুটির চূড়ান্ত খিলান বন্ধ করার কাজ শেষ করেছিল (Kashmir)। নির্মাতাদের দাবি, ভূমিকম্পে রিখটার স্কেলের মাত্রা ৮ হলেও, টলাতে পারবে না চেনাব সেতুকে। তীব্র বিস্ফোরণেও টুকরো হবে না সেতু। ১০ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার তারতম্যও সহ্য করতে পারবে এমনভাবেই ডিজাইন এবং স্ট্রাকচারাল স্টিলের ব্যবহার করা হয়েছে এই সেতুতে (Chenab Rail Bridge)।

    নির্মাতাদের দাবি

    ইঞ্জিনিয়ারদের মতে, এই অংশে সারাবছর তাপমাত্রা মারাত্মক ওঠানামা করে। যাতে ব্রিজের স্থায়িত্ব ও কাঠামো ঠিক থাকে সেই কারণে উন্নত টেকলা প্ল্যাটফর্মও ব্যবহার করা হয়েছে। এর ওপর দিয়ে ট্রেনগুলি ঘণ্টা প্রতি সর্বোচ্চ ১০০ কিলোমিটার বেগে চলবে। তবে এই ব্রিজের ওপর দিয়ে সর্বোচ্চ ২৬০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায় ট্রেন চলতে পারবে। বিশ্বমানের এই সেতুটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১ হাজার ৪৮৬ কোটি টাকা। ইঞ্জিনিয়ারদের মতে, এই প্রকল্পটি শেষ করতে নানা বাধার মুখে পড়তে হয়েছে। হিমালয়ের প্রকৃতি, মাটির ধারণ ক্ষমতা, প্রতিকূল আবহাওয়া এসবই এই সেতু নির্মাণের সময় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এই চ্যালেঞ্জগুলি অতিক্রম করেই তৈরি করা হয়েছে নয়া সেতু। জানা গিয়েছে, চেনাব সেতুতে ব্যবহৃত হয়েছে ২৮ হাজার মেট্রিক টন ইস্পাত। ঘণ্টা প্রতি ২৬৬ কিমি বেগে বাতাস বইলেও সেতুর কোনও ক্ষতি হবে না।

    ট্রায়াল রান শেষে উদ্বোধন

    জম্মুর কাটরা থেকে শ্রীনগরের কাউরি পর্যন্ত বিস্তৃত এই ব্রিজ। সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালে। কাজ সম্পূর্ণ হয় ২০২২ সালের মধ্যেই। তার পর থেকে এতদিন ধরে চলেছে ট্রায়াল রান। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসেই সফলভাবে এই সেতুর ওপর ট্রায়াল রান শেষ করে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস। নয়া লাইনে এক জোড়া বন্দে ভারত এক্সপ্রেস চালাবে রেল (Chenab Rail Bridge)। এর ফলে শ্রীনগর থেকে বৈষ্ণোদেবী মন্দিরের নিকটবর্তী কাটরা স্টেশনে পৌঁছানো যাবে মাত্র তিন ঘণ্টায় (Kashmir)।

    জাতীয় পতাকা হাতে হাঁটলেন প্রধানমন্ত্রী

    তাৎপর্যপূর্ণভাবে সেতুটির উদ্বোধন করে জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে সেটির ওপর হাঁটতেও দেখা যায় প্রধানমন্ত্রীকে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা এবং উপরাজ্যপাল মনোজ সিনহা। ছিলেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবও।প্রধানমন্ত্রী বলেন, “৪৬ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প জম্মু-কাশ্মীরের উন্নয়নের গতি বাড়াবে। চেনাব ও আঞ্জি সেতু দেশের প্রযুক্তিগত উৎকর্ষের প্রতীক।” রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব একে প্রযুক্তির বিস্ময় বলে অভিহিত করেছেন। এক্স হ্যান্ডেলে জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা লেখেন, “জম্মু ও কাশ্মীরের জন্য একটি ঐতিহাসিক দিন। অবশেষে উপত্যকা (Kashmir) রেল সংযোগের মাধ্যমে দেশের বাকি অংশের সঙ্গে যুক্ত হবে (Chenab Rail Bridge)।”

  • Kashmir: ভূস্বর্গে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠনের ৫ সহযোগীর বিরুদ্ধে পিএসএ মামলা দায়ের

    Kashmir: ভূস্বর্গে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠনের ৫ সহযোগীর বিরুদ্ধে পিএসএ মামলা দায়ের

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: জম্মু-কাশ্মীরে (Kashmir) নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠনের অন্তত পাঁচ সহযোগীর বিরুদ্ধে সোমবার কঠোর জননিরাপত্তা আইনে (PSA) মামলা করা হয়েছে। এই পাঁচজন কাশ্মীরে দেশবিরোধী কার্যকলাপে জড়িত ছিল। অভিযুক্তরা হল, নইম আহমেদ খান, ফাইজান আখতার ভাট, মেহরাজউদ্দিন ভাট, উমর হামিদ শেখ এবং সুহাইব শফি বাবা। অভিযুক্তরা সকলেই শ্রীনগরের বাসিন্দা।

    সরকারি মুখপাত্রের বক্তব্য (Kashmir)

    এক সরকারি মুখপাত্র জানান, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রস্তুত করা ডোজিয়ারের ভিত্তিতে আনুষ্ঠানিক স্থগিতাদেশ নেওয়া হয় এবং তাদের জম্মুর কাঠুয়া, উদমপুর ও কোট বালওয়াল কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, “এই ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একাধিক অপরাধমূলক মামলা নথিভুক্ত রয়েছে। তবুও তারা নিজেদের আচরণ সংশোধন করেনি এবং আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পরেও তারা নির্লজ্জভাবে রাষ্ট্রবিরোধী ও অপরাধমূলক কাজকর্মে লিপ্ত ছিল, যা দেশের স্বার্থের পরিপন্থী।”

    অপরাধমূলক কার্যকলাপ নির্মূল

    পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তেরা শ্রীনগরে এমন দেশবিরোধী কাঠামোগুলিকে লক্ষ্য করে পদ্ধতিগতভাবে ধ্বংস করছে, এই ধরনের উপাদানগুলির বিরুদ্ধে নিরবচ্ছিন্ন অভিযানের মাধ্যমে(Kashmir)। এক আধিকারিক বলেন, “এই অঞ্চলের নিরাপত্তা ও শান্তির পরিপন্থী যে কোনও অপরাধমূলক কার্যকলাপ নির্মূল করতে আমরা আইনের পূর্ণ শক্তি প্রয়োগ করে আমাদের প্রতিশ্রুতি বজায় রাখছি (PSA)।”

    পুলিশের তরফে সতর্ক করা হয়েছে, “যারা দেশের নিরাপত্তার জন্য ক্ষতিকর অবৈধ বা বিশৃঙ্খল কার্যকলাপে লিপ্ত, তাদের আমরা সাফ জানিয়ে দিচ্ছি — আইনের দীর্ঘ হাত তাদের প্রত্যাশার চেয়ে দ্রুত ধরবে এবং প্রতিটি অপরাধীকে বিচারের সম্মুখীন হতে হবে।” “জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ এই অঞ্চলের নিরাপত্তা ও শান্তির পরিপন্থী সকল অপরাধমূলক কার্যকলাপ নির্মূল করতে আইনের সর্বশক্তি প্রয়োগ করে তাদের অটল প্রতিশ্রুতি ফের একবার মনে করিয়ে দেয় তারা। তিনি বলেন, সেই সব ব্যক্তিদেরও সতর্ক করছি যারা জাতির নিরাপত্তার বিরুদ্ধে অবৈধ বা বিশৃঙ্খল কার্যকলাপে লিপ্ত রয়েছেন—আইনের দীর্ঘ হাত তাদের প্রত্যাশার চেয়ে দ্রুত ধরবে এবং প্রত্যেক অপরাধীর বিচার নিশ্চিত করা হবে,” বিবৃতিতে বলা হয়েছে (Kashmir)।

  • Pahalgam: বিশ্বমঞ্চে ভারতের বক্তব্য তুলে ধরতে প্রয়োজন শক্তিশালী সরকারি প্রচার মাধ্যমের, উঠছে দাবি

    Pahalgam: বিশ্বমঞ্চে ভারতের বক্তব্য তুলে ধরতে প্রয়োজন শক্তিশালী সরকারি প্রচার মাধ্যমের, উঠছে দাবি

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: এটাই সেই মোক্ষম সময়! এখন ভারত (India) একটি গ্লোবাল সরকারি প্রচার মাধ্যমে বিনিয়োগ করে তার সফট পাওয়ার ঘাটতিকে বিশ্ব প্রভাবের এক মজবুত ভিত্তিতে রূপান্তর করতে পারে। এটা করা হলে ভারতের কণ্ঠস্বর (Pahalgam) প্রতিধ্বনিত হত এশিয়া মহাদেশজুড়ে।

    ২৭ জন হিন্দু পর্যটককে হত্যা (Pahalgam)

    গত ২২ এপ্রিল দক্ষিণ কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে বেছে বেছে ২৭ জন হিন্দু পর্যটককে হত্যা করে পাক মদতপুষ্ট জঙ্গিরা। তার প্রেক্ষিতে গত ৭ মে পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরে জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংসে অপারেশন সিঁদুর চালায় ভারত। নয়াদিল্লির এই কৌশলগত সামরিক অভিযান সফল হয়। শুধু তাই নয়, এটি চিহ্নিত হয় সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে একটি ঐতিহাসিক জয় হিসেবে। যাদের আশ্রয় এবং প্রশ্রয়ে পশ্চিম আকাশে সন্ত্রাসবাদের কালো মেঘ জমা হয়, অপারেশন সিঁদুরের মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হয়েছে তাদেরও।

    ভারতের এই বিজয়গাথা পৌঁছে দেওয়া যায়নি তামাম বিশ্বে

    ভারতের এই বিজয়গাথা পৌঁছে দেওয়া যায়নি তামাম বিশ্বে। সমরাঙ্গনে ভারতীয় বাহিনী জয়ী হলেও, পাকিস্তানের নিরবচ্ছিন্ন প্রচারযুদ্ধ এবং পশ্চিমি গণমাধ্যমগুলির পক্ষপাতদুষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি সত্যকে বোতলবন্দি করে বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরে একটি বিকৃত চিত্র। এই জন্যই ভারতের অবশ্যই প্রয়োজন একটি রাষ্ট্র-সমর্থিত শক্তিশালী আন্তর্জাতিক সম্প্রচার মাধ্যম গড়ে তোলা। এই মাধ্যমে ভারত তার কণ্ঠস্বর পৌঁছে দেবে বিশ্ববাসীর দরবারে। এটি চালু হলে শত্রুপক্ষকে টক্কর দেওয়া যাবে সমানতালে। অপারেশন সিঁদুরে ভারতীয় সৈন্য যে বিক্রম দেখিয়েছে, তা আদৌও প্রচার করেনি বিবিসির মতো প্রচারমাধ্যমগুলিও। বরং তারা পাকিস্তানের ভিত্তিহীন বক্তব্যকে তুলে ধরেছে অতিরঞ্জিতভাবে।

    মিথ্যা খবর প্রচার!   

    ভারতের সশস্ত্র বাহিনী পাকিস্তানের সামরিক কাঠামো ও জঙ্গিঘাঁটির ওপর পরিচালিত নির্দিষ্ট হামলার চিত্র ও ভিডিও ফুটেজ-সহ সুস্পষ্ট প্রমাণ উপস্থাপন করলেও, অনেক সংবাদমাধ্যম কোনও কিছু বিচার-বিবেচনা না করেই এই সংঘাতকে “অচলাবস্থা” হিসেবে উপস্থাপন করেছে এবং একতরফাভাবে “উভয় পক্ষই দোষী”— এই সরলীকরণ করে ফেলেছে (Pahalgam)। আল জাজিরার কথাই ধরা যাক। এই সংবাদ মাধ্যমটি মিথ্যাভাবে এক ভারতীয় মহিলা পাইলটের গ্রেফতারের খবর প্রকাশ করে (India)। পরে অবশ্য দুই দেশের কর্তারাই ঘটনাটিকে মিথ্যা বলে উড়িয়ে দেন। এর পাশাপাশি মিডল ইস্ট আই এমন কিছু যাচাই না করা ভিডিও প্রচার করে যাতে দাবি করা হয় ভারত নিজেই উদ্যোগী হয়ে তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতা চেয়েছে — যা একেবারেই ভিত্তিহীন। ঘটনা হল, পাকিস্তান নিজেই চুপ করে থেকেছে ভারতের ওই দাবির পর, যেখানে নয়াদিল্লি জানিয়েছিল পাকিস্তানই ব্যাপক ক্ষতির পর যুদ্ধবিরতির অনুরোধ জানিয়েছে।

    ভারতের কৌশলগত সাফল্য তুলে ধরা হয়নি

    পশ্চিমি গণমাধ্যমগুলি পাকিস্তানের “পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করা হয়েছে” এমন দাবি যাচাই না করেই একতরফাভাবে প্রচার করেছে। সিএনএন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ফরাসি কর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে একটি যুদ্ধবিমানের ক্ষতির কথা বলেছে, আর দ্য ন্যাশনাল ইন্টারেস্ট তো এসব সন্দেহজনক দাবির ভিত্তিতে পাকিস্তানের “নিঃসন্দেহ বিজয়” ঘোষণা করেছে। অতিরঞ্জিত প্রশংসা করেছে চিনা ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তির। এইসব প্রতিবেদনে ভারতের কৌশলগত সাফল্য, যেমন নৌবাহিনীর করাচির ওপর চাপ সৃষ্টি করে পাকিস্তানকে যুদ্ধবিরতিতে বাধ্য করা — এসব গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা উপেক্ষিত থেকে গিয়েছে (Pahalgam)।

    প্রতিবেদনে পক্ষপাতিত্ব

    এই পক্ষপাতিত্ব আরও প্রকট হয়ে ওঠে যখন অনেক সংবাদমাধ্যম ভারত ও পাকিস্তানকে সমান দায়ী হিসেবে তুলে ধরেছে বিশ্বমঞ্চে। তারা ভারতকে একই বন্ধনীভুক্ত করেছে, যার মধ্যে রয়েছে পাকিস্তানও, যারা জঙ্গিগোষ্ঠীগুলির আশ্রয়দাতা হিসেবে আন্তর্জাতিক মঞ্চে সমালোচনার মুখে পড়েছে একাধিকবার (India)। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সন্ত্রাসে জড়িত থাকার কথা কবুল কিংবা পাকিস্তানের দুর্বল অর্থনৈতিক অবস্থা — যা একটি অনেক বেশি শক্তিশালী দেশের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদী সংঘর্ষে তাকে আরও বেশি দুর্বল করে তোলে — এসব বিষয় খুব কম প্রতিবেদনেই উল্লেখ করা হয়েছে।

    চিনের মিথ্যা প্রচার

    এদিকে, চিনের রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যমগুলি জে-১০সি যুদ্ধবিমানের শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে মিথ্যা তথ্য প্রচার করেছে, দাবি করেছে এটি ভারতের রাফালের চেয়ে উন্নত— এমন একটি বিভ্রান্তিকর প্রচার, যেটি দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস ও রয়টার্সের মতো আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলিতেও প্রতিধ্বনিত হয়েছে। সংবাদমাধ্যমগুলির এই ভ্রান্ত প্রচার শুধুমাত্র জনমতকেই প্রভাবিত করেনি, শেয়ার বাজারেও প্রভাব ফেলেছে। চিনের জে-১০ নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের শেয়ার বেড়েছে ৩৬ শতাংশ, আর রাফালের শেয়ার কমেছে ৫ শতাংশ (Pahalgam)। যদিও, পরবর্তীকালে, সত্য প্রকাশ পেতেই চিনা সংস্থার শেয়ার জোর ধাক্কা খায়। সেখানে রাফালের শেয়ার দর আবার দ্রুত উঠতে শুরু করে।

    ভারতের রাষ্ট্রীয় আন্তর্জাতিক সম্প্রচারমাধ্যমের লক্ষ্য

    একতরফা সাংবাদিকতা না হলে পাকিস্তানের অবাস্তব দাবিগুলিকে — যেমন ভারতের প্রমাণিত আঘাতের বিরুদ্ধে তাদের প্রমাণবিহীন “জয়ে”র দাবি বিচার করে প্রকাশ করত। তামাম বিশ্বকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিত, কোনটা সত্য, মিথ্যাই বা কোনটা (India)।ভারতের রাষ্ট্রীয় আন্তর্জাতিক সম্প্রচারমাধ্যমের লক্ষ্য হওয়া উচিত একটি বিশ্বাসযোগ্য, কর্তৃত্বপূর্ণ এবং সংস্কৃতিমূলকভাবে প্রাসঙ্গিক কণ্ঠস্বর হিসেবে বিশ্বমঞ্চে দেশের প্রতিনিধিত্ব করা। এর মূল উদ্দেশ্য হওয়া উচিত পহেলগাঁও হামলার মতো সঙ্কটকালে ভ্রান্ত তথ্যের মোকাবিলা করা, কৌশলগত স্বার্থকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া, এবং ভারতের সভ্যতাগত ভাবধারাকে বিশ্বে তুলে ধরা। এটি প্রসার ভারতীর সম্প্রসারিত কাঠামোর অধীনে পরিচালিত হতে পারে (India)। তবে এটি একটি আইনত স্বায়ত্তশাসিত সত্তা হিসেবে কাজ করবে যাতে সরাসরি রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ সীমিত থাকে (Pahalgam)।

LinkedIn
Share