Tag: Kaushiki Amavasya

Kaushiki Amavasya

  • Kaushiki Amavasya: আজ কৌশিকী অমাবস্যার নিশিপালন, এই বিশেষ তিথিতে সিদ্ধিলাভ করেছিলেন সাধক বামাক্ষ্যাপা

    Kaushiki Amavasya: আজ কৌশিকী অমাবস্যার নিশিপালন, এই বিশেষ তিথিতে সিদ্ধিলাভ করেছিলেন সাধক বামাক্ষ্যাপা

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ভাদ্র মাসের শুরুতেই যে অমাবস্যা, সেটাই কৌশিকী অমাবস্যা (Kaushiki Amavasya) নামে পরিচিত। আজ, শুক্রবার ২২ অগাস্ট (বাংলা ১৪৩২ সালের ৫ ভাদ্র) কৌশিকী অমাবস্যা। এদিন তিথি শুরু হবে বেলা ১১টা ৫৫ মিনিট থেকে। সেই হিসেবে শুক্রবারই অমাবস্যার নিশিপালন। অমাবস্যা তিথি শেষ হবে শনিবার ২৩ অগাস্ট। সেদিন সকাল ১২টা ২২ মিনিটে অমাবস্যা ছাড়ছে। কথিত আছে, এই কৌশিকী আমাবস্যার রাতে তারাপীঠের মহাশ্মশানের শ্বেতশিমূল গাছের নীচে সাধনা করে মা তারার দর্শন পেয়ে সাধনায় সিদ্ধিলাভ করেছিলেন সাধক বামাক্ষ্যাপা। সেই উপলক্ষে প্রতি বছর এই দিনটিতে কয়েক লক্ষ পুণ্যার্থীর ভিড় হয় তারাপীঠে। তারই শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে জোরকদমে। কৌশিকী অমাবস্যা উপলক্ষে তারাপীঠে লক্ষাধিক ভক্তের সমাগম হয়। অপ্রতিকর ঘটনা আটকাতে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। নিরাপত্তায় নিযুক্ত থাকবেন পুলিশের ৫০০ আধিকারিক-সহ ১৫০০ জন পুলিশকর্মী এবং ২০০০ সিভিক কর্মী।

    পৌরাণিক কাহিনি

    এই পুজোর সঙ্গে জড়িত আছে নানা পৌরাণিক কাহিনি। মার্কণ্ডেয় পুরাণ সূত্র থেকে জানা যায়, মহাপরাক্রমী দৈত্য ভ্রাতৃদ্বয় শুম্ভ ও নিশুম্ভ ব্রহ্মাদেবের পরম ভক্ত ছিলেন। সাধনায় তুষ্ট ভগবান ব্রহ্মা ওদের বর দিয়ে বলেন, তোমরা ত্রিভুবনে অবধ্য হবে। তবে কখনও যদি কোনও অযোনিসম্ভবা নারীর সঙ্গে তোমাদের সংঘাত ঘটে তবে ওই নারীর দ্বারাই তোমরা নিহত হবে। এই কথাগুলি স্মরণে রেখো। ব্রহ্মার বরে বলীয়ান শুম্ভ নিশুম্ভ ভাবল ত্রিভুবনে এমন কোনও নারীই জন্মাতে পারে না যে মাতৃগর্ভজাত নয়। অতএব তারা অমর, এই বিষয়ে কোনও সন্দেহের অবকাশ নেই। এরপর দানব ভ্রাতৃদ্বয় প্রথমেই স্বর্গরাজ্য আক্রমণ করল। ভীত দেবকুল তখন শুম্ভ-নিশুম্ভর হাত থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য দেবাদিদেব মহাদেবের শরণাপন্ন হয়।

    দেবী কৌশিকীর জন্ম…

    মহাদেব (Lord Shiva) ঠাট্টার ছলে ঘোর কৃষ্ণবর্ণা পার্বতীকে (Goddess Parvati) ডেকে বলেন, ‘হে কালিকে, তুমি এই বিপদ থেকে দেবতাদের রক্ষা করো।’ জনসমক্ষে পতিমুখে কালিকে সম্বোধন শুনে দেবী পার্বতী অত্যন্ত মর্মাহত হন। তৎক্ষণাৎ মানস সরোবরে গিয়ে নিজেকে অভিষিক্ত করে নিজ গাত্রের সকল কৃষ্ণবর্ণ কোষগুলিকে পরিত্যাগ করে এক অসামান্যা সুবর্ণ রূপ ধারণ করে পুনঃপ্রকটিতা হন। অন্যদিকে, পার্বতীর ফেলা শরীরকোষ থেকে আর এক দেবী আবির্ভুত হন। সেই দেবী কৌশিকী নামে পরিচিত। দেবী কৌশিকীর আবির্ভাবের পর দেবী ভগবতী কৃষ্ণবর্ণ ধারণ করেন এবং দেবী কালিকা বা কালী নামে পরিচয় লাভ করেন। দেবী কৌশিকী অযোনিসম্ভবা ছিলেন, সেই কারণে কৌশিকী দেবীই শুম্ভ ও নিশুম্ভকে বধ করেন। যুদ্ধকালীন সময়ে দেবী কৌশিকীর শরীর থেকে হাজারও যোদ্ধা সৃষ্ট হয় এবং তারাই সমগ্র অসুরকুলকে বিনাশ করে দেয়। এই ঘটনাটি ভাদ্র অমাবস্যায় ঘটায়, পরবর্তীকালে এটি কৌশিকী অমাবস্যা নামে ধরাধামে খ্যাত হয়।

    বিশ্বাস, তন্ত্রমত ও শাস্ত্র মতে পুজো

    ভাদ্র মাসের এই কৌশিকী অমাবস্যা তিথি যে সকল মানুষ ধর্ম, তন্ত্র, মন্ত্র, সাধনা এবং ঈশ্বর বিশ্বাসী তাদের কাছে বিশেষ করে গুরুত্বপূর্ণ। কৌশিকী অমাবস্যার সঙ্গে তারাপীঠের অঙ্গাঅঙ্গি সম্পর্ক। বিশ্বাস, তন্ত্রমতে ও শাস্ত্র মতে ভাদ্রমাসের এই বিশেষ তিথিতে নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে দেবীর পুজো করলে মেলে সুফল। তন্ত্রশাস্ত্র মতে গুপ্ত সাধনা ও কঠিন সাধনার বলে অনেকেই এই বিশেষ দিনে কাঙ্খিত ফল পান। কৌশিকী অমাবস্যার পবিত্র লগ্নে তারাপীঠ মন্দিরে, বিশেষ উপাচারে পুজো করা হয় তারা মায়ের৷ তন্ত্র মতে, এই রাতকে ‘তারা রাত্রি’ও বলা হয়। বিশ্বাস, এক বিশেষ মুহূর্তে স্বর্গ ও নরক দুইয়ের দরজা মুহূর্তের জন্য খোলে ও সাধক নিজের ইচ্ছা মতো ধনাত্মক অথবা ঋণাত্মক শক্তি সাধনার মধ্যে আত্মস্থ করেন ও সিদ্ধিলাভ করেন।

    বামাক্ষ্যাপাকে দর্শন দিয়েছিলেন মা তারা

    আবার কৌশিকী অমাবস্যার এই তিথিতে তন্ত্র সাধনার এক বিশেষ রাতে। কথিত আছে, ওই অমাবস্যা তিথিতেই সাধক বামাক্ষ্যাপাকে দেবী কৌশিকী ‘তারা’ নামে তারাপীঠ (Tarapith) মহাশ্মশানে দর্শন দিয়েছিলেন। অমাবস্যার এই বিশেষ তিথিতে সাধক বামাক্ষ্যাপা (Sadhak Byamakhyapa) তারাপীঠের মহাশ্মশানের শ্বেতশিমূল গাছের তলায় মা তারার (Tara Maa) আরাধনা করে সিদ্ধিলাভ করেছিলেন। লোকমুখে প্রচলিত কাহিনি সূত্রে শোনা যায়, দেবী কৌশিকী ‘তারা’ নামে ওই বিশেষ অমাবস্যায় তারাপীঠ মহাশ্মশানে বিরাজিতা থাকেন। সেই কারণে তারাপীঠ মহাশ্মশানে ওই দিন লক্ষ লক্ষ ভক্তের সমাবেশ ঘটে। ভক্তগণের বিশ্বাস, ওই দিন মাকে পুজো করলে মা ভক্তগণের মনোবাঞ্ছা পূর্ণ করে দেন।

    দ্বারকা নদীতে স্নান করলে পুণ্যলাভ হয়

    দেবী কৌশিকী এবং তারা মা অভিন্ন বলে বিশ্বাস ভক্তদের। অনেকেই বিশ্বাস করেন, এই দিন মা তারার পুজো দিলে এবং দ্বারকা নদীতে স্নান করলে পুণ্যলাভ হয় এবং কুম্ভস্নান করা হয়। বিশেষ এই তিথিতে তারাপীঠে তারা মায়ের পুজো করলে সকল মনের ইচ্ছে পূরণ হয়। এই বিশ্বাসে আজও ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ ওই দিনটিতে তারাপীঠে ছুটে আসেন। কৌশিকী অমাবস্যার দিন বাড়ি রাখুন পরিচ্ছন্ন। পুরনো ছেঁড়া কোনও জামাকাপড় থাকলে তা ফেলে দিন। সন্ধ্যের পর বাড়ির তুলসী মঞ্চে তিলের প্রদীপ জ্বালালে তা সংসারে কোনও নেতিবাচক শক্তি প্রবেশ করতে দেয় না। এই তিথি কেবলমাত্র হিন্দুশাস্ত্রে নয়, বৌদ্ধ শাস্ত্রেও বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।

  • Kaushiki Amavasya 2024: কৌশিকী অমাবস্যা শুরু, তারাপীঠে দেবীর ভোগে আজ থাকছে বিশেষ পদ

    Kaushiki Amavasya 2024: কৌশিকী অমাবস্যা শুরু, তারাপীঠে দেবীর ভোগে আজ থাকছে বিশেষ পদ

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আজ সোমবার ২ সেপ্টেম্বর ভোর ৫টা ৫মিনিটেই শুরু হয়েছে কৌশিকী অমাবস্যা (Kaushiki Amavasya 2024)। সারা বছর ধরেই তারাপীঠে (Tarapith) ভক্তদের ভিড় দেখা যায়, তবে কৌশিকী আমাবস্যায় যেন আলাদাই জমজমাট হয়ে ওঠে তারাপীঠ। আগামিকাল, অর্থাৎ মঙ্গলবার ৩ সেপ্টেম্বর সকাল ৬টা ২৯ পর্যন্ত এই অমাবস্যার তিথি থাকবে বলে জানা গিয়েছে। সোমবার ভোর চারটের সময় দেবীকে স্নান করানো হয়েছে। এর পরই হয় মঙ্গল আরতি হয়। মঙ্গলবারে ভোর ৫টা ৫ মিনিটেই ভক্তদের জন্য খুলে দেওয়া হয় গর্ভগৃহের দরজা। কৌশিকী অমাবস্যার কারণে গতকাল অর্থাৎ রবিবার রাত থেকেই ভক্তরা লাইনে দাঁড়িয়ে পড়েন। উৎসব উপলক্ষে পূর্ব রেল (Indian Railways) চালাচ্ছে বিশেষ ট্রেনও।

    ভোগে কী কী ব্যঞ্জন থাকছে?

    তারাপীঠে মা তারাকে এদিন (Kaushiki Amavasya 2024) বিশেষ ভোগ নিবেদন করা হবে। যার মধ্যে থাকবে পোলাও, খিচুড়ি, অন্ন, দু’রকম ভাজা, শোল মাছ ভাজা, একাধিক তরকারি, অন্যান্য মাছ, বলির পাঁঠার মাংস, পায়েস, মিষ্টি, চাটনি ইত্যাদি। সন্ধ্যার ভোগে মা তারাকে অর্পণ করা হবে লুচি, সুজি, ভাজা ও নানান রকমের মিষ্টান্ন। সোমবার কৌশিকী অমাবস্যার রাতের ভোগে মা তারাকে অর্পণ করা হবে খিচুড়ি, মাছ ভাজা ও বলি দেওয়া পাঁঠা মাংস। উৎসব উপলক্ষে গোটা তারাপীঠ সেজে উঠেছে ফুল ও আলোর মালায়। গোটা মন্দির চত্বর মুড়ে ফেলা হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে।

    ছুটবে বিশেষ ট্রেন (Kaushiki Amavasya 2024)

    কৌশিকী অমাবস্যায় পুণ্যার্থীদের তারাপীঠের উদ্দেশে যাতায়াতের সুবিধার জন্য বিশেষ ট্রেন চালানোর (Indian Railways) কথা ঘোষণা করেছে পুর্ব রেল। আজ সোমবার ২ সেপ্টেম্বর থেকে বুধবার ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত হাওড়া থেকে রামপুরহাট ও রামপুরহাট থেকে হাওড়া পর্যন্ত এই বিশেষ ট্রেন চলবে বলে পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে। এ বিশেষ ট্রেনটি সোমবার থেকে বুধবার পর্যন্ত হাওড়া স্টেশন থেকে ভোর ৫টা ৪৫ মিনিটে ছাড়বে। রামপুরহাট পৌঁছাবে ঠিক সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে। তারপর ওই ট্রেন রামপুরহাট থেকে বেলা ১১টা ৩২ মিনিটে ছাড়বে এবং হাওড়া পৌঁছাবে ৩টা ৫৫ মিনিটে। বিশেষ ট্রেন যাওয়া আসার সময় যে সমস্ত স্টেশনগুলিতে দাঁড়াবে সেগুলি হল শেওড়াফুলি, ব্যান্ডেল, বর্ধমান, গুসকরা, বোলপুর, সাঁইথিয়া। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র এক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানিয়েছেন যে তারাপীঠে পুণ্যার্থীদের (Kaushiki Amavasya 2024) যেন কোনও ধরনের অসুবিধা না হয় সে কথা ভেবেই রেলের তরফে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Kaushiki Amavasya: কৌশিকী অমাবস্যা তিথি পড়ছে কখন? এই দিনের মাহাত্ম্য, তাৎপর্যই বা কী?

    Kaushiki Amavasya: কৌশিকী অমাবস্যা তিথি পড়ছে কখন? এই দিনের মাহাত্ম্য, তাৎপর্যই বা কী?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: হিন্দু ধর্মে (Hinduism) বিভিন্ন তিথিতে মা কালীর (Goddess Kali) বিভিন্ন রূপের পুজো করা হয়। দেবীর আরাধনা সর্বজনবিদিত। ভাদ্র মাসের শুরুতেই যে অমাবস্যা, সেটাই কৌশিকী অমাবস্যা (Kaushiki Amavasya) নামে পরিচিত। 

    এবছর কৌশিকী অমাবস্যা পড়েছে ২৬ অগাস্ট। শেষ হবে ২৭ অগাস্ট। গুপ্ত প্রেস পঞ্জিকা মতে, কৌশিকি অমাবস্যা শুরু হচ্ছে ২৬ অগাস্ট শুক্রবার দুপুর ১২ টা ১ মিনিট ৩২ সেকেন্ড থেকে। পরের দিন শনিবার দুপুর ১টা ২৩ মিনিট ৪৭ সেকেন্ড নাগাদ ছেড়ে যাচ্ছে অমাবস্যা। 

    এই পুজোর সঙ্গে জড়িত আছে নানা পৌরাণিক কাহিনি। মার্কণ্ডেয় পুরাণ সূত্র থেকে জানা যায়, মহাপরাক্রমী দৈত্য ভ্রাতৃদ্বয় শুম্ভ ও নিশুম্ভ ব্রহ্মাদেবের পরম ভক্ত ছিলেন। সাধনায় তুষ্ট ভগবান ব্রহ্মা (Lord Brahma) ওদের বর দিয়ে বলেন, তোমরা ত্রিভুবনে অবধ্য হবে। তবে কখনও যদি কোনও অযোনিসম্ভবা নারীর সঙ্গে তোমাদের সংঘাত ঘটে তবে ওই নারীর দ্বারাই তোমরা নিহত হবে। 

    আরও পড়ুন: কেন গ্রাম বাংলায় পালিত হয় মনসা পুজো, এর তাৎপর্য জানেন কি?

    এই কথাগুলি স্মরণে রেখো। ব্রহ্মার বরে বলীয়ান শুম্ভ নিশুম্ভ ভাবল ত্রিভুবনে এমন কোনও নারীই জন্মাতে পারে না যে মাতৃগর্ভজাত নয়। অতএব তারা অমর, এই বিষয়ে কোনও সন্দেহের অবকাশ নেই। এরপর দানব ভ্রাতৃদ্বয় প্রথমেই স্বর্গরাজ্য আক্রমণ করল। ভীত দেবকুল তখন শুম্ভ নিশুম্ভর হাত থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য দেবাদিদেব মহাদেবের শরণাপন্ন হয়।

    মহাদেব (Lord Shiva) ঠাট্টার ছলে ঘোর কৃষ্ণবর্ণা পার্বতীকে (Goddess Parvati) ডেকে বলেন, ‘হে কালিকে, তুমি এই বিপদ থেকে দেবতাদের রক্ষা করো।’ জনসমক্ষে পতিমুখে কালিকে সম্বোধন শুনে দেবী পার্বতী অত্যন্ত মর্মাহত হন। তৎক্ষণাৎ মানস সরোবরে গিয়ে নিজেকে অভিষিক্ত করে নিজ গাত্রের সকল কৃষ্ণবর্ণ কোষগুলিকে পরিত্যাগ করে এক অসামান্যা সুবর্ণ রূপ ধারণ করে পুনঃপ্রকটিতা হন। 

    অন্যদিকে, পার্বতীর ফেলা শরীরকোষ থেকে আর এক দেবী আবির্ভুত হন। সেই দেবী কৌশিকী নামে পরিচিত। দেবী কৌশিকীর আবির্ভাবের পর দেবী ভগবতী কৃষ্ণবর্ণ ধারণ করেন এবং দেবী কালিকা বা কালী নামে পরিচয় লাভ করেন। দেবী কৌশিকী অযোনিসম্ভবা ছিলেন, সেই কারণে কৌশিকী দেবীই শুম্ভ ও নিশুম্ভকে বধ করেন। যুদ্ধকালীন সময়ে দেবী কৌশিকীর শরীর থেকে হাজারও যোদ্ধা সৃষ্ট হয় এবং তারাই সমগ্র অসুরকুলকে বিনাশ করে দেয়। এই ঘটনাটি ভাদ্র অমাবস্যায় ঘটায়, পরবর্তীকালে এটি কৌশিকী অমাবস্যা নামে ধরাধামে খ্যাত হয়। 

    ভাদ্র মাসের এই কৌশিকী অমাবস্যা তিথি যে সকল মানুষ ধর্ম, তন্ত্র, মন্ত্র, সাধনা এবং ঈশ্বর বিশ্বাসী তাদের কাছে বিশেষ করে গুরুত্বপূর্ণ। কৌশিকী অমাবস্যার সাথে তারাপীঠের অঙ্গাঅঙ্গি সম্পর্ক। বিশ্বাস, তন্ত্রমতে ও শাস্ত্র মতে ভাদ্রমাসের এই বিশেষ তিথিতে নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে দেবীর পুজো করলে মেলে সুফল। তন্ত্রশাস্ত্র মতে গুপ্ত সাধনা ও কঠিন সাধনার বলে অনেকেই এই বিশেষ দিনে কাঙ্খিত ফল পান। কৌশিকী অমাবস্যার পবিত্র লগ্নে তারাপীঠ মন্দিরে, বিশেষ উপাচারে পুজো করা হয় তারা মায়ের৷ তন্ত্র মতে, এই রাতকে ‘তারা রাত্রি’ও বলা হয়। বিশ্বাস, এক বিশেষ মুহূর্তে স্বর্গ ও নরক দুইয়ের দরজা মুহূর্তের জন্য খোলে ও সাধক নিজের ইচ্ছা মতো ধনাত্মক অথবা ঋণাত্মক শক্তি সাধনার মধ্যে আত্মস্থ করেন ও সিদ্ধিলাভ করেন।

    আরও পড়ুন: পুজোয় মঙ্গল ঘট কেন স্থাপন করা হয়, জানেন?

    আবার কৌশিকী অমাবস্যার এই তিথিতে তন্ত্র সাধনার এক বিশেষ রাতে। কথিত আছে, ওই অমাবস্যা তিথিতেই সাধক বামাক্ষ্যাপাকে দেবী কৌশিকী ‘তারা’ নামে তারাপীঠ (Tarapith) মহাশ্মশানে দর্শন দিয়েছিলেন। অমাবস্যার এই বিশেষ তিথিতে সাধক বামাক্ষ্যাপা (Sadhak Byamakhyapa) তারাপীঠের মহাশ্মশানের শিমূল গাছের তলায় মা তারার (Tara Maa) আরাধনা করে সিদ্ধিলাভ করেছিলেন। লোকমুখে প্রচলিত কাহিনি সূত্রে শোনা যায়, দেবী কৌশিকী ‘তারা’ নামে ওই বিশেষ অমাবস্যায় তারাপীঠ মহাশ্মশানে বিরাজিতা থাকেন। সেই কারণে তারাপীঠ মহাশ্মশানে ওই দিন লক্ষ লক্ষ ভক্তের সমাবেশ ঘটে। ভক্তগণের বিশ্বাস, ওই দিন মাকে পূজা করলে মা ভক্তগণের মনোবাঞ্ছা পূর্ণ করে দেন।

    দেবী কৌশিকী এবং তারা মা অভিন্ন বলে বিশ্বাস ভক্তদের। অনেকেই বিশ্বাস করেন, এই দিন মা তারার পুজো দিলে এবং দ্বারকা নদীতে স্নান করলে পুণ্যলাভ হয় এবং কুম্ভস্নান করা হয়। বিশেষ এই তিথিতে তারাপীঠে তারা মায়ের পুজো করলে সকল মনের ইচ্ছে পূরণ হয়। এই বিশ্বাসে আজও ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ ওই দিনটিতে তারাপীঠে ছুটে আসেন।

    কৌশিকী অমাবস্যার দিন বাড়ি রাখুন পরিচ্ছন্ন। পুরনো ছেঁড়া কোনও জামাকাপড় থাকলে তা ফেলে দিন। সন্ধ্যের পর বাড়ির তুলসী মঞ্চে তিলের প্রদীপ জ্বালালে তা সংসারে কোনও নেতিবাচক শক্তি প্রবেশ করতে দেয় না। এই তিথি কেবলমাত্র হিন্দুশাস্ত্রে নয়, বৌদ্ধ শাস্ত্রেও বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।

     

     

LinkedIn
Share