Tag: madhyom news

madhyom news

  • Ramakrishna 378: নেতি নেতি করে ছাদে পৌঁছে যখন দেখি, ছাদও যে জিনিসে তৈরি, ইঁট, চুন, সুরকি সেই জিনিসে তৈরি

    Ramakrishna 378: নেতি নেতি করে ছাদে পৌঁছে যখন দেখি, ছাদও যে জিনিসে তৈরি, ইঁট, চুন, সুরকি সেই জিনিসে তৈরি

    দোলযাত্রা দিবসে শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) দক্ষিণেশ্বরে ভক্ত সংঘে

    (দোলযাত্রা দিবসে শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তিযোগ)

    মহিমাচরণ, রাম, মনমোহন, নরেন্দ্র, মাস্টার প্রভৃতি

    আজ দোলযাত্রা। শ্রী শ্রী মহাপ্রভুর জন্মদিন ১৯ ফাল্গুন, পূর্ণিমা, রবিবার ১লা মার্চ ১৮৮৫। শ্রীরামকৃষ্ণ ঘরের মধ্যে ছোট খাটটিতে বসিয়া সমাধিস্থ। ভক্তরা মেঝেতে বসিয়া আছেন। এক দৃষ্টে তাহাকে দেখিতেছেন মহিমাচরণ রাম মনমোহন, নবাই, চৈতন্য, মাস্টার প্রভৃতি অনেকে বসিয়া আছেন।

    ভক্তেরা এক দৃষ্টে দেখিতেছেন। সমাধি ভঙ্গ হইল ভাবের পূর্ণমাত্রা। ঠাকুর মহিমাচরণকে বলিতেছেন বাবু, হরি ভক্তির কথা।

    নারদ পঞ্চরাত্রে আছে। নারদ তপস্যা করেছিলেন। দৈববাণী হল, হরিকে যদি আরাধনা করা যায়, তাহলে তপস্যার কি প্রয়োজন? আর হরিকে যদি না আরাধনা করা হয়, তাহলেই বা তপস্যার কি প্রয়োজন? হরি যদি অন্তরে বাহিরে থাকেন (Ramakrishna) তাহলেই বা তপস্যার কি প্রয়োজন? আর যদি অন্তরের বাহিরে না থাকেন তাহলেই বা তপস্যার কি প্রয়োজন? অতএব হে ব্রহ্মণ বিরত হও। বৎস তপস্যার কি প্রয়োজন? জ্ঞান সিন্ধু শংকরের কাছে গমন করো। বৈষ্ণবেরা যে হরি ভক্তির কথা বলে গেছেন, সেই সুপক্কা ভক্তি লাভ কর। এই ভক্তি এই ভক্তি-কাটারই দ্বারা ভব নিগড় ছেদন হবে।

    (ঈশ্বর কোটি শুকদেবের সমাধি ভঙ্গ, হনুমান, প্রহ্লাদ)

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)- জীবকোটি ও ঈশ্বরকোটি। জীবকোটির ভক্তি বৈধভক্তি। এত উপাচারে পূজা করতে হবে। এত উপাচারে জপ করতে হবে। এত পুরশ্চরণ করতে হবে। এই বৈধ ভক্তির পর জ্ঞান। তারপর লয় ফেরেনা।
    ঈশ্বরকোটির আলাদা পথ। যেমন অনুলোম বোলুম। নেতি নেতি করে ছাদে পৌঁছে যখন দেখি, ছাদও যে জিনিসে তৈরি, ইঁট, চুন, সুরকি সেই জিনিসে তৈরি। তখন কখন ছাদেও থাকতে পারে, আবার উঠানামাও করতে পারে।

  • Ramakrishna 377: রসুনের বাটি পুড়িয়ে নিলে আর গন্ধ থাকে না, নতুন হাঁড়ি হয়ে যায়

    Ramakrishna 377: রসুনের বাটি পুড়িয়ে নিলে আর গন্ধ থাকে না, নতুন হাঁড়ি হয়ে যায়

    গিরিশের অবতার বাদ- শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) কি অবতার

    খানিকক্ষণ শুনিয়া অন্যমনস্ক হইলেন। মাস্টারের সহিত আস্তে আস্তে কথা কহিতেছেন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (মাস্টারের প্রতি)-আচ্ছা গিরিশ ঘোষ যা বলছে অর্থাৎ অবতার তা কি সত্য?

    মাস্টার- আজ্ঞা ঠিক কথা। তা নাহলে সবার মনে লাগছে কেন?

    শ্রীরামকৃষ্ণ- দেখ এখন একটি অবস্থায় আসছে, আগেকার অবস্থা উল্টে গেছে। ধাতুর দ্রব্য ছুঁতে পারছি না।

    মাস্টার অবাক হইয়া শুনিতেছেন (Kathamrita)।

    শ্রীরামকৃষ্ণ- এই যে নতুন অবস্থা, এর একটি খুব গুচ্ছ মানে আছে।

    ঠাকুর ধাতু স্পর্শ করিতে পারিতেছেন না। অবতার বুঝি মায়া ঐশ্বর্য কিছু ভোগ করেন নাই। তাই কি ঠাকুরের এসব কথা বলিতেছেন?

    শ্রীরামকৃষ্ণ (মাস্টারের প্রতি)- আচ্ছা তোমার অবস্থা কিছু বদলাচ্ছে দেখছো?

    মাস্টার- আজ্ঞা কই

    শ্রীরামকৃষ্ণ- কার্যে (Ramakrishna)

    মাস্টার- এখন কাজ বাড়ছে, যত লোক জানতে পারছে।

    শ্রীরামকৃষ্ণ- দেখছো আগে যা বলতাম এখন চলছে।

    ঠাকুর কিয়ৎকাল চুপ করিয়া থাকিয়া হঠাৎ বলছেন, আচ্ছা পল্টুর ভালো ধ্যান হয় না কেন?

    (গিরিশ কি রসুন গোলা বাটি?)

    এইবার ঠাকুরের দক্ষিণেশ্বর যাইবার উদ্যোগ হইতেছেন। ঠাকুর কোন ভক্তের কাছে গিরিশের সম্বন্ধে বলেছিলেন রসুন গোলা বাটি হাজার ধোও রসুনের গন্ধ কি একেবারে যায়? গিরিশও তাই মনে মনে অভিমান করিয়াছেন। যাইবার সময় গিরিশ ঠাকুরকে কিছু নিবেদন করিতেছেন।

    গিরিশ (শ্রীরামকৃষ্ণের প্রতি)- রসুনের গন্ধ কি যাবে?

    শ্রী রামকৃষ্ণ- যাবে

    গিরিশ- তবে বললেন যাবে

    শ্রীরামকৃষ্ণ- অত আগুন জ্বললে গন্ধ-ফন্দ পালিয়ে যায়। রসুনের বাটি পুড়িয়ে নিলে আর গন্ধ থাকে না। নতুন হাঁড়ি হয়ে যায়। যে বলে আমার হবে না তার হয় না। মুক্ত অভিমানী, মুক্তই হয়। আর বদ্ধ অভিমানী, বদ্ধই হয়। যে জোর করে বলে আমি মুক্ত হয়েছি, সে মুক্তই হয়। যে রাত দিন আমি বদ্ধ আমি বদ্ধ বলে সে বদ্ধই হয়ে যায়।

  • Ramakrishna 376: শ্রী রামকৃষ্ণ (নরেন্দ্রর উদ্দেশ্যে), এটি ব্রহ্ম জ্ঞানে হয়, তুই যা বলছিলি সবই বিদ্যা

    Ramakrishna 376: শ্রী রামকৃষ্ণ (নরেন্দ্রর উদ্দেশ্যে), এটি ব্রহ্ম জ্ঞানে হয়, তুই যা বলছিলি সবই বিদ্যা

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)- তুই একটু গান গা

    নরেন্দ্র গান গাহিতেছেন

    চিদানন্দ সিন্ধুনীর প্রেমানন্দের লহরী
    মহাভাবিক রাসলীলা কী মাধুরী মরি মরি,
    বিবিধ বিলাস রঙ্গপ্রসঙ্গ কত অভিনব ভাব তরঙ্গ,
    ডুবিছে উঠেছে করিছে রঙ্গ নবীন রুপ ধরি।

    (হরি হরি বলে)
    মহাযোগে সমুদায় একাকার হইল।
    বেশ কাল ব্যবধান ভেদাভেদ ঘুছিল
    (আশা পুরিল রে আমার সকল সাধ মিটে গেল)
    এখন আনন্দে মাতিয়া দু বাহু তুলিয়া বল রে মন হরি হরি।

    নরেন্দ্র যখন গান গাহিতেছেন, মহাযোগে সব একাকার হইল। তখন শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) বলিতেছেন- এটি ব্রহ্ম জ্ঞানে হয় তুই যা বলছিলি সবই বিদ্যা।

    নরেন্দ্র যখন গান গাহিতেছেন, আনন্দে মাতিয়া দু বাহু তুলিয়া বল রে মন হরি হরি। তখন শ্রীরামকৃষ্ণ নরেন্দ্রকে বলিতেছেন- ওইটি দুবার করে বল।
    গান হইয়া গেলে আবার ভক্তর সঙ্গে কথা হইতেছে।

    গিরিশ- দেবেন্দ্রবাবু আসেন নাই। তিনি অভিমান করে বললেন, আমাদের ভেতরে এত ক্ষীরের পোর নাই কলাইয়ের পোর আমরা এসে কি করব।

    শ্রী রামকৃষ্ণ বিস্মিত হইয়া- কই আগে তো উনি ওরকম করতেন না।

    ঠাকুর জলসেবা করিতেছেন, নরেন্দ্রকেও খাইতে দিলেন

    যতীনদেব- (শ্রীরামকৃষ্ণের প্রতি)- নরেন্দ্র খাও, নরেন্দ্র খাও বলছেন। আমরা শালারা ভেসে এসেছি।

    যতীনকে ঠাকুর খুব ভালোবাসেন (Kathamrita)
    । তিনি দক্ষিণেশ্বরে গিয়া মাঝে মাঝে দর্শন করেন। কখনও কখনও রাত্রে সেখানে গিয়ে থাকেন। তিনি শোভাবাজারের রাজাদের বাড়ির (রাধাকান্ত দেব বাড়ির) ছেলে।

    শ্রী রামকৃষ্ণ (নরেন্দ্রের প্রতি সহাস্য)- ওরে যতীন তোর কথাই বলছে।

    ঠাকুর হাসিতে হাসিতে যতীনের থুতি ধরে আদর করিতে করিতে বলিলেন, সেখানে যা, গিয়ে খাস অর্থাৎ দক্ষিণেশ্বরে যাস। ঠাকুর আবার বিবাহ বিভ্রাট অভিনয় শুনবেন। বক্সে গিয়ে বসলেন। ঝির কথাবার্তা শুনে হাসিতে লাগিলেন।

  • Ramakrishna 375: আমাদের কথাটিই ভালো, আমার বলা ভালো নয়

    Ramakrishna 375: আমাদের কথাটিই ভালো, আমার বলা ভালো নয়

    অভিনয় হইতেছে। কর্ণ ও পদ্মাবতী করাত দুই দিকে দুইজনে ধরিয়া বৃষকেতুকে বলিদান করিলেন। পদ্মাবতী কাঁদিতে কাঁদিতে মাংস রন্ধন করিলেন। বৃদ্ধ ব্রাহ্মণ অতি আনন্দ করিতে করিতে কর্ণকে বলিতেছেন এইবার এসো আমরা একসঙ্গে বসে রান্না মাংস খাই। কর্ণ বলিতেছেন, তা আমি পারব না পুত্রের মাংস খেতে পারব না।

    একজন ভক্ত সহানুভূতি ব্যঞ্জক অস্ফুট আর্তনাদ করিলেন। ঠাকুর সেই সঙ্গে দুঃখ প্রকাশ করলেন। অভিনয় সমাপ্ত (Kathamrita) হইলে ঠাকুর রঙ্গমঞ্চের বিশ্রাম ঘরে গিয়ে উপস্থিত হইলেন। গিরিশ, নরেন্দ্র প্রভৃতি ভক্তেরা বসিয়া আছেন। শ্রীরামকৃষ্ণ প্রবেশ করিয়া নরেন্দ্রের কাছে গিয়ে দাঁড়াইলেন ও বলিলেন আমি এসেছি।

    সানাইয়ের শব্দে ভাবাবিষ্ট ঠাকুর।

    এখনও ঐক্যতান বাদ্যের শব্দ শোনা যাইতেছে। (Kathamrita)

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) (ভক্তদের প্রতি)- এই বাজনা শুনে আমার আনন্দ হচ্ছে। সেখানে দক্ষিণেশ্বরে সানাই বাজত। আমি ভাবিবিষ্ট হয়ে যেতাম। একজন সাধু আমার অবস্থা দেখে বলতো এসব ব্রহ্ম জ্ঞানের লক্ষণ

    গিরিশ ও আমি আমার

    কনসার্ট থামিয়া গেলে শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) আবার কথা কইতেছেন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (গিরিশের প্রতি)- একি তোমার থিয়েটার না তোমাদের?

    গিরিশ- আজ্ঞে আমাদের।

    শ্রীরামকৃষ্ণ- আমাদের কথাটিই ভালো (Ramakrishna)। আমার বলা ভালো নয়। কেউ কেউ বলে আমি নিজেই এসেছি। এসব হীন বুদ্ধি অহংকারে লোকে বলে।

    শ্রীরামকৃষ্ণ নরেন্দ্র প্রভৃতি সংঘে

    নরেন্দ্র- সবই থিয়েটার

    শ্রী রামকৃষ্ণ- হাঁ হাঁ ঠিক। তবে কোথাও বিদ্যার খেলা, কোথাও অবিদ্যার খেলা।

    নরেন্দ্র -সবই বিদ্যার (Ramakrishna)

    শ্রী রামকৃষ্ণ- হাঁ হাঁ, তবে অতি ব্রহ্ম জ্ঞানে হয়। ভক্তি ভক্তের পক্ষে দুই আছে বিদ্যা মায়া অবিদ্যা মায়া।

  • Ramakrishna 374: যে বাটিতে রসুন গুলেছে, সে বাটি হাজার ধোও রসুনের গন্ধ যায় না

    Ramakrishna 374: যে বাটিতে রসুন গুলেছে, সে বাটি হাজার ধোও রসুনের গন্ধ যায় না

    সন্ধ্যা সমাগমে ঠাকুরের প্রার্থনা- তেজচন্দ্র

    সন্ধ্যা হইল ঘরে বাতি জ্বালা হইয়াছে (Ramakrishna)। শ্রী রামকৃষ্ণ ঠাকুরদের নাম করিতেছেন। গান গাহিতেছেন ও প্রার্থনা করিতেছেন। বলিতেছেন, হরিবোল, হরিবোল, হরিবোল। আবার রাম, রাম, রাম, আবার নিত্যলীলা। ওমা উপায় বল মা। শরণাগত, শরণাগত, শরণাগত।

    গিরিশকে ব্যস্ত দেখিয়া ঠাকুর একটু চুপ করিলেন। তেজচন্দ্রকে বলিতেছেন, তুই একটু কাছে এসে বোস (Kathamrita)। তেজচন্দ্র কাছে বসলেন। কিয়তক্ষণ পরে মাস্টারকে ফিসফিস করিয়া বলিতেছেন, আমায় যেতে হবে।

    শ্রীরামকৃষ্ণ- আমি ওদের অত টানি কেন? ওরা নির্মল, আঁধার বিষয়বুদ্ধি ঢোকেনি। থাকলে উপদেশ ধারণ করতে পারেনা (Ramakrishna)। নতুন হাঁড়িতে দুধ রাখা হয়, দই পাতা হাঁড়িতে দুধ রাখলে দুধ নষ্ট হয়।

    যে বাটিতে রসুন গুলেছে, সে বাটি হাজার ধোও রসুনের গন্ধ যায় না।

    শ্রী রামকৃষ্ণ (Ramakrishna) (স্টার থিয়েটারে)

    বৃষকেতু অভিনয় দর্শনে, নরেন্দ্র প্রভৃতি সঙ্গে

    ঠাকুর শ্রী রামকৃষ্ণ বৃষকেতু অভিনয় দর্শন করিবেন। বিডন স্ট্রিটে যেখানে পরে মনমোহন থিয়েটার হয়। পূর্বে সেইমঞ্চে স্টার থিয়েটার অভিনয় হইত। থিয়েটারে আসিয়া বক্সে দক্ষিণাস্য হইয়া বসিয়া আছেন।

    ঠাকুর শ্রী রামকৃষ্ণ- (মাস্টারের প্রতি) নরেন্দ্র এসেছে?

    মাস্টার- আজ্ঞে হ্যাঁ (Ramakrishna)

    অভিনয় হইতেছে। কর্ণ ও পদ্মাবতী করাত দুই দিকে দুইজনে ধরিয়া বৃষকেতুকে বলিদান করিলেন। পদ্মাবতী কাঁদিতে কাঁদিতে মাংস রন্ধন করিলেন। বৃদ্ধ ব্রাহ্মণ অতি আনন্দ করিতে করিতে কর্ণকে বলিতেছেন এইবার এসো আমরা একসঙ্গে বসে রান্না মাংস খাই। কর্ণ বলিতেছেন, তা আমি পারব না পুত্রের মাংস খেতে পারব না।

  • Ramakrishna 373: অভ্যাসযোগ! রোজ তাঁকে ডাকা অভ্যাস করতে হয়

    Ramakrishna 373: অভ্যাসযোগ! রোজ তাঁকে ডাকা অভ্যাস করতে হয়

    ঠাকুর এখন ভাবাবস্থায় আছেন। কাছে গ্লাস করা জল ছিল, পান করিলেন। তিনি আপনা আপনি বলিতেছেন, ওইভাবে তো জল খেয়ে নিলুম।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)- শ্রীযুক্ত অতুল- ব্যাকুলতা

    এখনও সন্ধ্যা হয় নাই। ঠাকুর গিরিশের (Kathamrita) ভ্রাতা শ্রীযুক্ত অতুলের সহিত কথা কহিতেছেন। অতুল ভক্ত সঙ্গের সম্মুখেই বসিয়া আছেন। একজন ব্রাহ্মণ প্রতিবেশীও বসিয়া আছেন। অতুল হাইকোর্টের উকিল।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (অতুলের প্রতি)- আপনাদের এই বলা, আপনারা দুই করবে সংসারও করবে, ভক্তি যাতে হয় তাও করবে।

    (ব্রাহ্মণ প্রতিবেশী)- ব্রাহ্মণ না হলে কি সিদ্ধ হয়?

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)- কেন কলিতে শূদ্রের ভক্তির কথা আছে। শবরী, রুইদাস, গুহক চন্ডাল এসব আছে।

    নারায়ণ (সহাস্যে)- ব্রাহ্মণ শূদ্র সব এক।

    ব্রাহ্মণ- এক জন্মে কি হয়?

    শ্রীরামকৃষ্ণ- তাঁর দয়া হলে কিনা হয়। হাজার বছরের অন্ধকার ঘরে আলো আনলে কি, একটু একটু করে অন্ধকার চলে যায়, একেবারে আলো হয়।

    (অতুলের প্রতি)- তীব্র বৈরাগ্য চাই। (Ramakrishna) যেন খাপ খোলা তরোয়াল। সে বৈরাগ্য হলে আত্মীয় কালসাপ মনে হয়, গৃহ পাতুকুয়া মনে হয়।

    আর আন্তরিক ব্যাকুল হয়ে তাঁকে ডাকতে হয়। আন্তরিক ডাক তিনি শুনবেনই শুনবেন।

    সকলে চুপ করিয়া আছেন। ঠাকুর যাহা বলিলেন এক মনে শুনিয়া সেই সকল চিন্তা করিতেছেন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (অতুলের প্রতি)- কেন এমন আঁট বুঝি হয় না, ব্যাকুলতা।

    অতুল- মন কই থাকে?

    শ্রীরামকৃষ্ণ- অভ্যাসযোগ! রোজ তাঁকে ডাকা অভ্যাস করতে হয়।  একদিনে হয় না (Kathamrita), রোজ ডাকতে ডাকতে ব্যাকুলতা আসে।

  • Ramakrishna 372: শ্রীরামকৃষ্ণ (গিরিশের প্রতি) মাকে তাই বলেছিলাম, মা ওকে শান্ত করে দাও

    Ramakrishna 372: শ্রীরামকৃষ্ণ (গিরিশের প্রতি) মাকে তাই বলেছিলাম, মা ওকে শান্ত করে দাও

    গিরিশের শান্ত ভাব কলিতে শূদ্রের ভক্তি ও মুক্তি

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)- আর আছে স্বপ্নসিদ্ধ আর কৃপাসিদ্ধ।

    এই বলিয়া ঠাকুর ভাবে বিভোর হইয়া গান গাহিতেছেন-

    শ্যামা ধন কি সবাই পায়,
    অবোধ মন বোঝেনা একি দায়। (Kathamrita)
    শিবেরই অসাধ্য সাধন মন মজানো রাঙা পায়।।
    ইন্দ্রাদি সম্পদ সুখ তুচ্ছ হয় যে ভাবে মায়।
    সদানন্দ সুখে ভাসে শ্যামা যদি ফিরে চায়।।
    যোগীন্দ্র মুনীন্দ্র ইন্দ্র যে চরণ ধ্যানে না পায় ।
    নির্গুণে কমলাকান্ত তবু সে চরণ চায়।।

    ঠাকুর কিয়ৎতক্ষণ ভাবাবিষ্ট হইয়া রহিয়াছেন।

    কিছুদিন পূর্বে ষ্টার থিয়েটারে গিরিশ অনেক কথা বলিয়াছিলেন এখন শান্ত ভাব।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (গিরিশের প্রতি)- তোমার এই ভাব বেশ ভালো, শান্ত ভাব। মাকে তাই বলেছিলাম, মা ওকে শান্ত করে দাও। যা তা আমায় না বলে।

    গিরিশ (মাস্টারের প্রতি) আমার জিব কে যেন চেপে ধরেছে। আমায় কথা কইতে দিচ্ছে না।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)- এখনও ভাবস্থ। বাহিরের ব্যক্তি বস্তু ক্রমে ক্রমে সব ভুলে যাচ্ছেন। একটু প্রকৃতিস্থ হইয়া মনকে নাবাচ্ছেন। ভক্তদের আবার দেখিতেছেন। (মাস্টার দৃষ্টে) এরা সব সেখানে যায়। তা যায় তো যায়, মা সব জানে।

    (প্রতিবেশী ছোকরার প্রতি) কি গো তোমার কি বোধ হয়? মানুষের কি কর্তব্য?

    সকলে চুপ করিয়া আছেন (Ramakrishna)। ঠাকুরকে বলিতেছেন, ঈশ্বর লাভই জীবনের উদ্দেশ্য।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (নারায়ণের প্রতি) তুই পাস করবি নি, ওরে পাশমুক্ত শিব পাশবদ্ধ জীব (Kathamrita)।

    ঠাকুর এখন ভাবাবস্থায় আছেন। কাছে গ্লাস করা জল ছিল, পান করিলেন। তিনি আপনা আপনি বলিতেছেন, ওইভাবে তো জল খেয়ে নিলুম।

  • Ramakrishna 371: তাঁকে দর্শন করবার কিন্তু লক্ষণ আছে, সমাধি হয়, সমাধি পাঁচ প্রকার

    Ramakrishna 371: তাঁকে দর্শন করবার কিন্তু লক্ষণ আছে, সমাধি হয়, সমাধি পাঁচ প্রকার

    বিদ্যাশক্তির স্নেহ দয়া ভক্তি লজ্জায় এইসব থাকে। সে সকলের সেবা করে বাৎসল্যভাবে। আর স্বামীর যাতে ভগবানে ভক্তি হয় তার সাহায্য করে। বেশি খরচ করে না পাছে স্বামীকে বেশি খাটতে হয়। ঈশ্বর চিন্তার অবসর না হয় (Ramakrishna)

    আবার পুরুষ মেয়ের অন্যান্য লক্ষণ আছে। খারাপ লক্ষণ। ট্যারা, চোখ ওঠর, বিড়াল চোখ। বাছুরেগাল (Kathamrita)।

    গিরিশ (সহাস্যে) ভক্তির তমঃ আপনিই তো শেখান।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (সহাস্যে) (Ramakrishna) তাঁকে দর্শন করবার কিন্তু লক্ষণ আছে, সমাধি হয়। সমাধি পাঁচ প্রকার। প্রথম পিঁপড়ের গতি। মহাবায়ু ওঠে পিঁপড়ের মতো। দ্বিতীয় মিনের গতি। তৃতীয় তির্যক গতি (Kathamrita)। চতুর্থ পাখির গতি। পাখি যেমন এডাল থেকে ও ডালে যায়। পঞ্চম কপিবৎ। বানরের মতো লাফ দিয়ে মাথায় উঠে গেল। আর সমাধি হল। আবার দু’রকমের সমাধি আছে। স্থিত সমাধি একেবারে বাহ্যশূন্য। অনেকক্ষণ, হয়তো অনেকদিন রহিল। দ্বিতীয় উন্মনা সমাধি। হঠাৎ মনটা চারিদিক থেকে কুড়িয়ে এনে ঈশ্বরকে যোগ করে দেওয়া হলো।

    (উন্মনা সমাধি ও মাস্টারের প্রতি) (Kathamrita)

    তুমি ওটা বুঝেছ?

    মাস্টার- আজ্ঞে হ্যাঁ (Kathamrita)

    গিরিশ- তাঁকে কি সাধন করে পাওয়া যায়?
    শ্রী রামকৃষ্ণ (Ramakrishna)- নানারকমে তাঁকে লোকে লাভ করেছে। কেউ অনেক তপস্যা সাধন ভজন করে, সাধন সিদ্ধ। কেউ জন্মাবতী সিদ্ধ। যেমন নারদ, শুকদেবাদী। এদের বলে নিত্য সিদ্ধ (Kathamrita)। আবার আছে হঠাৎ সিদ্ধ। হঠাৎ লাভ করেছে। যেমন হঠাৎ কোনও আশা ছিল না, কেউ নন্দ পশুর মত বিষয় পেয়ে গিয়েছে।

  • Ramakrishna 370: মেয়েদের কথা শুনছি, শুনতে শুনতে আনন্দ হচ্ছে, এও এক রকম রমণ

    Ramakrishna 370: মেয়েদের কথা শুনছি, শুনতে শুনতে আনন্দ হচ্ছে, এও এক রকম রমণ

    সন্ন্যাসীর কঠিন নিয়ম গৃহস্থাদির নিয়ম ও গিরিশ

    সন্ন্যাসীর ভক্ত স্ত্রীলোকের সঙ্গে বসা বা আলাপ করা ভালো নয়। নিজের ক্ষতি। আর অন্য লোকেরও ক্ষতি। অন্য লোকের শিক্ষা হয় না। লোকশিক্ষা হয় না (Kathamrita)। সন্ন্যাসীর দেহ ধারণ লোক শিক্ষার জন্য।

    মেয়েদের সঙ্গে বসা কি বেশিক্ষণ আলাপ, তাকেও রমন বলেছে। রমন আট প্রকার। মেয়েদের কথা শুনছি, শুনতে শুনতে আনন্দ হচ্ছে। এও এক রকম রমণ। মেয়েদের কথা বলছি এও একরকম রমণ। মেয়েদের সঙ্গে নির্জনে চুপিচুপি কথা কচ্ছে ও এক রকম রমণ (Kathamrita)। মেয়েদের কোনও জিনিস কাছে রেখে দিয়েছি, আনন্দ হচ্ছে ও এক রকম। স্পর্শ করা একরকম। তাই গুরু পত্নী যুবতী হলে পাদ স্পর্শ করতে নাই। সন্ন্যাসীদের এইসব নিয়ম (Ramakrishna 370)।

    সংসারীদের আলাদা কথা। দু একটি ছেলে হলে ভাই-ভগ্নির মতো থাকবে। তাদের অন্য সাত রকম রমণে দোষ নাই। গৃহস্থের ঋণ আছে, দেবঋণ, পিতৃঋণ আবার মাগঋণও আছে। একটি দুটি ছেলে হওয়া আর সতী হলে প্রতিপালন করা (Ramakrishna 370)।

    সংসারীরা বুঝতে পারে না কে ভালো স্ত্রী, কে মন্দ স্ত্রী! কে বিদ্যাশক্তি কে অবিদ্যা শক্তি। ভালো স্ত্রী বিদ্যাশক্তি। তার কাম ক্রোধ এসব কম। ঘুম কম। স্বামীর মাথা ঠেলে দেয়। বিদ্যাশক্তির স্নেহ দয়া ভক্তি লজ্জায় এইসব থাকে। সে সকলের সেবা করে বাৎসল্যভাবে। আর স্বামীর যাতে ভগবানে ভক্তি হয় তার সাহায্য করে। বেশি খরচ করে না পাছে স্বামীকে বেশি খাটতে হয়। ঈশ্বর চিন্তার অবসর না হয় (Ramakrishna 370)।

    আবার পুরুষ মেয়ের অন্যান্য লক্ষণ আছে। খারাপ লক্ষণ। ট্যারা, চোখ ওঠর, বিড়াল চোখ। বাছুরেগাল (Kathamrita)।

  • Ramakrishna 369: যতক্ষণ আমিটা তিনি রেখে দিয়েছেন, ততক্ষণ একটি ভাব আশ্রয় করে তাঁকে ডাকতে হয়

    Ramakrishna 369: যতক্ষণ আমিটা তিনি রেখে দিয়েছেন, ততক্ষণ একটি ভাব আশ্রয় করে তাঁকে ডাকতে হয়

    নানাভাবে পূজা ও গিরিশ- আমার মাতৃ ভাব

    শ্রী রামকৃষ্ণ (Ramakrishna)

    যতক্ষণ আমিটা তিনি রেখে দিয়েছেন, ততক্ষণ একটি ভাব আশ্রয় করে তাঁকে ডাকতে হয় (Kathamrita)। শান্ত দাস্য বাৎসল্য- এইসব।

    আমি দাসী ভাবে এক বছর ছিলাম। রম্যময়ীর দাসী (Ramakrishna)। মেয়েদের কাপড় ওড়না এইসব পড়তাম। আবার নথ পড়তাম। মেয়ের ভাব থাকলে কাম জয় হয়।

    সেই আদ্যা শক্তির পূজা করতে হয়। তাঁকে প্রসন্ন করতে হয়। তিনি মেয়েদের রূপ ধারণ করে রয়েছেন। তাই আমার মাতৃভাব অতি শুদ্ধ ভাব (Kathamrita)। তন্ত্রে বামাচারের কথা আছে। কিন্তু সে ভালো নয়, পতন হয়। ভোগ রাখলেই ভয়। মাতৃ ভাব যেন নির্জলা একাদশী। কোনও ভোগের গন্ধ নাই। আর আছে ফলমূল খেয়ে একাদশী, আর লুচি ছক্কা খেয়ে একাদশী। আমার নির্জলা একাদশী। আমি মাতৃভাবে ষোড়শীর পূজা করেছিলাম। দেখলাম স্তন, মাতৃ স্তন, যোনি, মাতৃযোনি। এই মাতৃ ভাব (Ramakrishna) সাধনের শেষ কথা তুমি মা। আমি তোমার ছেলে এই শেষ কথা।

    সন্ন্যাসীর কঠিন নিয়ম- গৃহস্থের নিয়ম ও গিরিশ (Ramakrishna)

    সন্ন্যাসী নির্জলা একাদশী, সন্ন্যাসী যদি ভোগী রাখে তাহলেই ভয়। কামিনী কাঞ্চন ভোগ (Ramakrishna)। যেমন থুথু ফেলে আবার থুতু খাওয়া। টাকা করে মান সম্মান ইন্দ্রিয় সুখ- এইসব ভোগ। সন্ন্যাসীর ভক্ত স্ত্রীলোকের সঙ্গে বসা বা আলাপ করা ভালো নয়। নিজের ক্ষতি। আর অন্য লোকেরও ক্ষতি। অন্য লোকের শিক্ষা হয় না। লোকশিক্ষা হয় না (Kathamrita)। সন্ন্যাসীর দেহ ধারণ লোক শিক্ষার জন্য।

LinkedIn
Share