Tag: madhyom news

madhyom news

  • Ramakrishna 90: “কর্ম ত্যাগ করবে কেন? ঈশ্বরের চিন্তা, তাঁর নামগুণগান, নিত্যকর্ম—এসব করতে হবে”

    Ramakrishna 90: “কর্ম ত্যাগ করবে কেন? ঈশ্বরের চিন্তা, তাঁর নামগুণগান, নিত্যকর্ম—এসব করতে হবে”

    শ্রীযুক্ত কেশবচন্দ্র সেনের সহিত ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের নৌকাবিহার, আনন্দ  কথোপকথন

    নবম পরিচ্ছেদ

    তস্মাদসক্তঃ সততং কার্যং কর্ম সমাচার

    অসক্তো হ্যাচরন্কর্ম পরমাপ্নোতি পুরুষঃ।।

    গীতা/১৯/

    কেশবাদি ব্রাহ্মদিগকে কর্মযোগ সমন্ধে উপদেশ

    শ্রীরামকৃষ্ণ (কেশবাদি ভক্তের প্রতি)—তোমরা বল জগতের উপকার করা। জগৎ কি এতটুকু গা! আর তুমি কে, যে জগতের উপকার করবে? তাঁকে সাধনের দ্বারা সাক্ষাৎকার কর। তাঁকে (Ramakrishna) লাভ কর। তিনি শক্তি দিলে তবে সকলের হিত করতে পার। নচেৎ নয়।

    একজন ভক্ত—যতদিন না লাভ হয়, ততদিন সব কর্ম (Kathamrita) ত্যাগ করব?

    শ্রীরামকৃষ্ণ—না; কর্ম ত্যাগ করবে কেন? ঈশ্বরের চিন্তা, তাঁর নামগুণগান, নিত্যকর্ম—এ-সব করতে হবে।

    ব্রাহ্মভক্ত—সংসারের কর্ম? বিষয়কর্ম?

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—হ্যাঁ, তাও করবে, সংসারযাত্রা জন্য যেটুকু দরকার। কিন্তু কেঁদে নির্জনে তাঁর কাছে প্রার্থনা করতে হবে, যাতে ওই কর্মগুলি নিষ্কামভাবে করা যায়। আর বলবে, হে ঈশ্বর, আমার বিষয়কর্ম কমিয়ে দাও, কেন না ঠাকুর দেখছি যে, বেশি কর্ম জুটলে তোমায় ভুলে যাই। মনে করছি, নিষ্কামকর্ম করছি, কিন্তু সকাম হয়ে পড়ে হয়তো দান সদাব্রত বেশি করতে গিয়ে লোকমান্য হতে ইচ্ছা হয়ে পড়ে।

    পূর্বকথাশম্ভু মল্লিকের সহিত দানাদি কর্মকাণ্ডের কথা

    শম্ভু মল্লিকের হাসপাতাল, ডাক্তারখান, স্কুল, রাস্তা, পুস্করিণীর কথা বলেছিল। আমি বললাম (Kathamrita) যেটা পড়ল, না করলে নয়, সেটাই নিষ্কাম হয়ে করতে হয়। ইচ্ছা করে বেশি কাজ জড়ানো ভালো নয়—ঈশ্বরকে ভুলে যেতে হয়। কালীঘাটে দানই করতে লাগল; কালীদর্শন আর হলো না। (হাস্য) আগে জো-সো করে, ধাক্কাধুক্কি খেয়েও কালীদর্শন করতে হয়, তারপর দান যত কর আর না কর। ইচ্ছা হয় খুব কর। ঈশ্বরলাভের জন্যই কর্ম। শম্ভুকে তাই বললুম, যদি ঈশ্বর সাক্ষাৎকার হন, তাঁকে কি বলবে কতগুলো হাসপাতাল, ডিসস্পেন্সারি করে দাও? (হাস্য) ভক্ত কখনও তা বলে না বরং বলবে, ঠাকুর (Ramakrishna)! আমায় পাদপদ্মে স্থান দাও, নিজের সঙ্গে সর্বদা রাখ, পাদপদ্মে শুদ্ধাভক্তি দাও।

    আরও পড়ুনঃ “আমি কর্তা, আমি কর্তা—এই বোধ থেকেই যত দুঃখ, অশান্তি”

    আরও পড়ুনঃ “বিবেক, বৈরাগ্যরূপ হলুদ মাখলে তারা আর তোমাকে ছোঁবে না”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “পশ্চিমে বিবাহের সময় বরের হাতে ছুরি থাকে, বাংলাদেশে জাঁতি থাকে”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 89: “আমি কর্তা, আমি কর্তা—এই বোধ থেকেই যত দুঃখ, অশান্তি”

    Ramakrishna 89: “আমি কর্তা, আমি কর্তা—এই বোধ থেকেই যত দুঃখ, অশান্তি”

    শ্রীযুক্ত কেশবচন্দ্র সেনের সহিত ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের নৌকাবিহার, আনন্দ  কথোপকথন

    অষ্টম পরিচ্ছেদ

    পিতাহসি লোকস্য চরাচরস্য ত্বমস্য পূজ্যশ্চ গুরুর্গরীয়ান্

    ত্বৎসমোহস্ত্যভ্যধিকঃ কুতোহন্যো, লোকত্রয়েহপ্যপ্রতিমপ্রভাব।।

    গীতা১১/৪৩/

    পূর্বকথাভাবচক্ষে হালদারপুকুর দর্শন (Ramakrishna)

    ও-দেশে হালদার-পুকুর বলে (Kathamrita) একটা পুকুর আছে। পাড়ে রোজ সকালবেলা বাহ্যে করে রাখত। যারা সকালবেলায় আসে, খুব গালাগাল দেয়। আবার তার পরদিন সেইরূপ। বাহ্যে আর থামে না (সকলের হাস্য) লোকে কোম্পানিকে জানালে। তারা একটা চাপরাসী পাঠিয়ে দিলে। সে যখন একটা কাগজ মেরে দিলে, বাহ্যে করিও না তখন সব বন্ধ!(সকলের হাস্য)

    লোকশিক্ষা দেবে তার চাপরাস চাই। না হলে হাসির কথা হয়ে পড়ে। আপনারই হয় না, আবার অন্যলোক। কানা কানাকে পথ দেখিয়ে যাচ্ছে। (হাস্য) হিতে-বিপরীতে। ভগবানলাভ হলে অর্ন্তদৃষ্টি হয়, কার কি রোগ বোঝা যায়। উপদেশ দেওয়া যায়।

    অহংকারবিমূঢ়াত্মা কর্তাহম্ইতি মন্যতে

    আদেশ না থাকলে আমি লোকশিক্ষা (Kathamrita) দিচ্ছি এই অহংকার হয়। অহংকার হয় অজ্ঞানে। অজ্ঞানে বোধ হয়, আমি কর্তা। ঈশ্বর (Kathamrita) কর্তা, ঈশ্বর সব করছেন, আমি কিছু করছি না—এ-বোধ হলে তো সে জীবন্মুক্ত। আমি কর্তা, আমি কর্তা—এই বোধ থেকেই যত দুঃখ, অশান্তি।

    নবম পরিচ্ছেদ

    তস্মাদসক্তঃ সততং কার্যং কর্ম সমাচার।

    অসক্তো হ্যাচরন্‌ কর্ম পরমাপ্নোতি পুরুষঃ।।

    গীতা—৩/১৯/

    কেশবাদি ব্রাহ্মদিগকে কর্মযোগ সমন্ধে উপদেশ

    শ্রীরামকৃষ্ণ (কেশবাদি ভক্তের প্রতি)—তোমরা বল জগতের উপকার করা। জগৎ কি এতটুকু গা! আর তুমি কে, যে জগতের উপকার করবে? তাঁকে সাধনের দ্বারা সাক্ষাৎকার কর। তাঁকে (Ramakrishna) লাভ কর। তিনি শক্তি দিলে তবে সকলের হিত করতে পার। নচেৎ নয়।

    একজন ভক্ত—যতদিন না লাভ হয়, ততদিন সব কর্ম (Kathamrita) ত্যাগ করব?

    শ্রীরামকৃষ্ণ—না; কর্ম ত্যাগ করবে কেন? ঈশ্বরের চিন্তা, তাঁর নামগুণগান, নিত্যকর্ম—এ-সব করতে হবে।

    আরও পড়ুনঃ “বিবেক, বৈরাগ্যরূপ হলুদ মাখলে তারা আর তোমাকে ছোঁবে না”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “পশ্চিমে বিবাহের সময় বরের হাতে ছুরি থাকে, বাংলাদেশে জাঁতি থাকে”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 88: “কলকাতার হুজুগ তো জানো! যতক্ষণ কাঠে জ্বাল, দুধ ফোঁস করে ফোলে”

    Ramakrishna 88: “কলকাতার হুজুগ তো জানো! যতক্ষণ কাঠে জ্বাল, দুধ ফোঁস করে ফোলে”

    শ্রীযুক্ত কেশবচন্দ্র সেনের সহিত ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের নৌকাবিহার, আনন্দ  কথোপকথন

    অষ্টম পরিচ্ছেদ

    পিতাহসি লোকস্য চরাচরস্য ত্বমস্য পূজ্যশ্চ গুরুর্গরীয়ান্

    ত্বৎসমোহস্ত্যভ্যধিকঃ কুতোহন্যো, লোকত্রয়েহপ্যপ্রতিমপ্রভাব।।

    গীতা১১/৪৩/

    কেশবকে শিক্ষাগুরুগিরি ব্রাহ্মসমাজেগুরু এক সচ্চিদানন্দ

    সকলে আনন্দ করিতেছেন। ঠাকুর (Ramakrishna) কেশবকে বলিতেছেন, তুমি প্রকৃতি দেখে শিষ্য কর না, তাই এইরূপ ভেঙে ভেঙে যায়।

    মানুষগুলি দেখতে সব একরকম, কিন্তু ভিন্ন প্রকৃতি। কারু ভিতর সত্ত্বগুণ বেশি, কারু রজোগুণ বেশি, কারু তমোগুণ। পুলিগুলি দেখতে সব একরকম। কিন্তু কারু ভিতর ক্ষীরের পোর, কারু ভিতর নারিকেলের ছাঁই, কারু ভিতর কলায়ের পোর। (সকলের হাস্য)

    আমার কি ভাব জানো? আমি খাই-দাই, আর মা সব জানে। আমার তিন কথাতে গায়ে কাঁটা বেঁধে গুরু, কর্তা আর বাবা।

    গুরু (Ramakrishna) এক সচ্চিদ্দানন্দ। তিনিই শিক্ষা দিবেন। আমার সন্তানভাব। মানুষ গুরু মেলে লাখ লাখ। সকলেই গুরু হতে চায়। শিষ্য কে হতে চায়?

    লোকশিক্ষা (Kathamrita) দেওয়া বড় কঠিন। যদি তিনি সাক্ষাৎকার হন আর আদেশ দেন, তাহলে হতে পারে। নারদ শুকদেবাদির আদেশ হয়েছিল। শঙ্করের আদেশ হয়েছিল। আদেশ না হলে কে তোমার কথা শুনবে? কলকাতার হুজুগ তো জানো! যতক্ষণ কাঠে জ্বাল, দুধ ফোঁস করে ফোলে। কাঠ টেনে নিলে কোথাও কিছু নাই। কলকাতার লোক হুজুগে। এই এখানটায় কুয়া খুঁড়ছে।–বলে জল চাই। সেখানে পাথর হল তো ছেড়ে দিলে! আবার এক জায়গায় খুঁড়তে আরম্ভ করলে। সেখানে বালি মিলে গেল; ছেড়ে দিলে! আর-এক জায়গায় খুঁড়তে আরম্ভ হল! এইরকম!

    আবার মনে-মনে আদেশ হলে হয় না। তিনি (Ramakrishna) সত্য-সত্যই সাক্ষাৎকার হন, আর কথা কন। তখন আদেশ হতে পারে। সে-কথা জোর কত? পর্বত টলে যায়। শুধু লেকচার? দিন কতক লোকে শুনবে, তারপর ভুলে যাবে। কথা (Kathamrita) অনুসারে সে কাজ করবে না।

    আরও পড়ুনঃ “বিবেক, বৈরাগ্যরূপ হলুদ মাখলে তারা আর তোমাকে ছোঁবে না”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “পশ্চিমে বিবাহের সময় বরের হাতে ছুরি থাকে, বাংলাদেশে জাঁতি থাকে”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 88: “কারু ভিতর ক্ষীরের পোর, কারু ভিতর নারিকেলের ছাঁই, কারু ভিতর কলায়ের পোর”

    Ramakrishna 88: “কারু ভিতর ক্ষীরের পোর, কারু ভিতর নারিকেলের ছাঁই, কারু ভিতর কলায়ের পোর”

    শ্রীযুক্ত কেশবচন্দ্র সেনের সহিত ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের নৌকাবিহার, আনন্দ  কথোপকথন

    সপ্তম পরিচ্ছেদ

    সংনিয়ম্যেন্দ্রিনিদ্রয়গ্রামং সর্বত্র সমবুদ্ধয়ঃ।

    তে প্রাপনুবন্তি মামেব সর্বভূতিহিতে রতাঃ।।

    গীতা- ১২/৪/

    শ্রীযুক্ত কেশব সেনের সহিত নৌকাবিহার—সর্বভূতহিতে রতাঃ

    ভাট পড়িয়াছে। আগ্নেয়পোত কলিকাতাভিমুখে দ্রুতিগতিতে চলিতেছে। তাই পোল পার হইয়া কোম্পানির বাগানের দিকে আরও খানিকটা বেড়াইয়া আসিতে কাপ্তেনকে হুকুম (Kathamrita) হইয়াছে। কতদূর জাহাজ গিয়াছিল, অনেকেরই জ্ঞান নাই—তাঁহার মগ্ন হইয়া শ্রীরামকৃষ্ণের (Ramakrishna) কথা শুনিতেছেন। কোন দিক দিয়া সময় যাইতেছে, হুঁশ নাই।

    এইবার মুড়ি নারকেল খাওয়া হইতেছে। সকলেই কিছু কিছু কোঁচড়ে লইলেন ও খাইতেছেন। আনন্দের হাট। কেশব মুড়ি আয়োজন করে এনেছেন। এই অবসরে ঠাকুর দেখিলেন বিজয় ও কেশব দুইজনেই সঙ্কুচিতভাবে বসিয়া আছেন। তখন ঠাকুর যেন দুইজন অবোধ ছেলেকে ভাব করিয়া দিবেন। সর্বভূতহিতে রতাঃ

    শ্রীরামকৃষ্ণ (কেশবের প্রতি)—ওগো! এই বিজয় এসেছেন। তোমাদের ঝগড়া-বিবাদ—যেন শিব ও রামের যুদ্ধ। (হাস্য) রামের গুরু শিব। যুদ্ধও হল, দুজনে ভাবও হল। কিন্তু শিবের ভূতপ্রেতগুলো আর রামের বানরগুলো ওদের ঝগড়া কিচকিচ আর মেটে না! (উচ্চ হাস্য)

    আপনার লোক তা এরূপ থাকে। লব কুশ জে রামের সঙ্গে যুদ্ধ করেছিলেন। আবার জানো মায়ে-ঝিয়ে আলাদা মঙ্গলবার করে। মার মঙ্গল, আর মেয়ের মঙ্গল যেন দুটো আলাদা। কিন্তু এর মঙ্গলে ওর মঙ্গল হয়, ওর মঙ্গলে এর মঙ্গল হয়। তেমনি তোমাদের এর একটি সমাজ আছে। আবার ওর একটি দরকার। (সকলের হাস্য) তবে এ-সব চাই। যদি বল ভগবান নিজে লীলা (Kathamrita) করেছেন, সেখানে জটিলে-কুটিলে কি দরকার? জটিলে-কুটিলে না থাকলে লীলা পোষ্টাই হয় না! (সকলের হাস্য) জটিলে-কুটিলে না থাকলে রগড় হয় না। (উচ্চহাস্য)

    রামানুজ বিশিষ্টাদ্বৈতবাদী। তাঁর গুরু ছিলেন অদ্বৈত্যবাদী। শেষে দুজনে অমিল। গুরুশিষ্য (Ramakrishna) পরস্পর মত খণ্ডন করতে লাগল। এরূপ হয়েই থাকে। যাই হোক, তবু আপনার লোক।

    অষ্টম পরিচ্ছেদ

    পিতাহসি লোকস্য চরাচরস্য ত্বমস্য পূজ্যশ্চ গুরুর্গরীয়ান্‌।

    ন ত্বৎসমোহস্ত্যভ্যধিকঃ কুতোহন্যো, লোকত্রয়েহপ্যপ্রতিমপ্রভাব।।

    গীতা—১১/৪৩/

    কেশবকে শিক্ষা—গুরুগিরি ও ব্রাহ্মসমাজে—গুরু এক সচ্চিদানন্দ

    সকলে আনন্দ করিতেছেন। ঠাকুর (Ramakrishna) কেশবকে বলিতেছেন, তুমি প্রকৃতি দেখে শিষ্য কর না, তাই এইরূপ ভেঙে ভেঙে যায়।

    মানুষগুলি দেখতে সব একরকম, কিন্তু ভিন্ন প্রকৃতি। কারু ভিতর সত্ত্বগুণ বেশি, কারু রজোগুণ বেশি, কারু তমোগুণ। পুলিগুলি দেখতে সব একরকম। কিন্তু কারু ভিতর ক্ষীরের পোর, কারু ভিতর নারিকেলের ছাঁই, কারু ভিতর কলায়ের পোর। (সকলের হাস্য) ভিন্ন প্রকৃতি।

    আরও পড়ুনঃ “বিবেক, বৈরাগ্যরূপ হলুদ মাখলে তারা আর তোমাকে ছোঁবে না”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “পশ্চিমে বিবাহের সময় বরের হাতে ছুরি থাকে, বাংলাদেশে জাঁতি থাকে”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 87: “সংসার-সমুদ্রে কামক্রোধাদি কুমির আছে, হলুদ গায়ে মেখে নামলে ভয় থাকেনা”

    Ramakrishna 87: “সংসার-সমুদ্রে কামক্রোধাদি কুমির আছে, হলুদ গায়ে মেখে নামলে ভয় থাকেনা”

    শ্রীযুক্ত কেশবচন্দ্র সেনের সহিত ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের নৌকাবিহার, আনন্দ ও কথোপকথন

    ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ

    সর্বধর্মান পরিত্যাজ্য মামেকং শরণং ব্রজ।

    অহং ত্বাং সর্বপাপেভ্যো মোক্ষয়িষ্যামি মা শুচঃ।।

    গীতা—১৮৬৬

    ব্রাহ্মসমাজ ও জনক রাজা-গৃহস্থের উপায়—নির্জনে বাস ও বিবেক 

    কিন্তু ফস করে জনক রাজা হওয়া যায় না। জনক রাজা নির্জনে অনেক তপস্যা করেছিলেন। সংসারে থেকেও এক-বার নির্জনে বাস করতে হয়। সংসারের বাহিরে একলা গিয়ে যদি ভগবানের (Ramakrishna) জন্য তিনদিনও কাঁদা যায় সেও ভাল। এমনকি অবসর পেয়ে একদিনও নির্জনে তাঁর চিন্তা যদি করা যায়, সেও ভাল। লোক মাগছাগলের জন্য একঘটি কাঁদে, ঈশ্বরের জন্যে কে কাঁদছে বল? নির্জনে থেকে মাঝে মাঝে ভগবানের জন্যে সাধন করতে হয়! সংসারের ভিতর কর্মের মধ্যে থেকে, প্রথমাবস্থায় মন স্থির করতে অনেক ব্যাঘাত হয়। ফুটপাতের গাছ, যখন চারা থাকে, বেড়া না দিলে ছাগল-গরুতে খেয়ে ফেলে। প্রথমাবস্থায় বেড়া, গুঁড়ি হলে আর বেড়ার দরকার থাকে না। গুঁড়িতে হাতি বেঁধে দিলেও কিছু হয় না।

    রোগটি(Kathamrita) হচ্ছে বিকার। আবার যে-ঘরে বিকারের রোগী, সেই ঘরে জলের জালা আর আচার তেঁতুল। যদি বিকারের রোগী আরাম করতে চাও, ঘর থেকে ঠাই নাড়া করতে হবে। সংসারী জীব বিকারের রোগী; বিষয়—জলের জালা; বিষয়ভোগতৃষ্ণা-জলতৃষ্ণা। আচার তেঁতুল মনে করলেই মুখে জল সরে, কাছে আনতে হয় না; এরূপ জিনিসও ঘরে রয়েছে; যোষিৎসঙ্গ। তাই নির্জনে চিকিৎসা দরকার।

    বীবেক-বৈরাগ্য লাভ করে সংসার করতে হয়। সংসার-সমুদ্রে কামক্রোধাদি কুমির আছে। হলুদ গায়ে মেখে জলে নামলে কুমিরের ভয় থাকেনা। বিবেক-বৈরাগ্য—হলুদ। সদসৎ বিচারের নাম বিবেক। ঈশ্বরই সৎ, নিত্যবস্তু। আর সব অসৎ, অনিত্য; দুদিনের জন্য। এই বোধ আর ঈশ্বরে অনুরাগ। তাঁর উপর টান—ভালবাসা। গোপীদের কৃষ্ণের (Ramakrishna) উপর যেরূপ টান ছিল। একটা গান শোন;

    আর উপায়—ঈশ্বর অনুরাগ—গোপীদের মতো টান বা স্নেহ

    বংশী বাজিল ওই বিপিনে।

    (আমার তো না গেলে নয়) (শ্যাম পথে দাঁড়ায় আছে)

    তোরা যাবি কি না যাবি বল গো।।

    তোদের শ্যাম কথার কথা।

    আমার শ্যাম অন্তরের ব্যাথা (সই)

    তোদের বাজে বাঁশী কানের কাছে।

    বাঁশী আমার বাজে হৃদয়মাঝে।

    শ্যামে বাঁশী বাজে, বেরাও রাই।

    তোমা বিনা কুঞ্জের শোভা নাই।

    ঠাকুর (Ramakrishna) অশ্রুপূর্ণ নয়নে এই গান গাইতে গাইতে (Kathamrita) কেশবাদি ভক্তেদের বললেন, রাধাকৃষ্ণ মনো আর নাই মানো, এই টানটুকু নাও, ভগবানের জন্য কিসের এইরূপ ব্যাকুলতা হয়, চেষ্টা কর। ব্যাকুলতা থাকলেই তাঁকে লাভ করা যায়।

    আরও পড়ুনঃ “মা এই নাও তোমার পাপ, এই নাও তোমার পুণ্য, আমায় শুদ্ধাভক্তি দাও”

    আরও পড়ুনঃ “বিবেক, বৈরাগ্যরূপ হলুদ মাখলে তারা আর তোমাকে ছোঁবে না”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “পশ্চিমে বিবাহের সময় বরের হাতে ছুরি থাকে, বাংলাদেশে জাঁতি থাকে”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 86: “মা এই নাও তোমার পাপ, এই নাও তোমার পুণ্য, আমায় শুদ্ধাভক্তি দাও”

    Ramakrishna 86: “মা এই নাও তোমার পাপ, এই নাও তোমার পুণ্য, আমায় শুদ্ধাভক্তি দাও”

    ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ

    সর্বধর্মান পরিত্যাজ্য মামেকং শরণং ব্রজ।

    অহং ত্বাং সর্বপাপেভ্যো মোক্ষয়িষ্যামি মা শুচঃ।।

    গীতা—১৮৬৬।

    ভগবানের (Ramakrishna) নাম করলে মানুষের দেহ-মন সব শুদ্ধ হয়ে যায়।

    কেবল পাপ আর নরক এই সব কথা (Kathamrita) কেন? একবার বল যে, অন্যায় কর্ম যা করেছি আর করব না। আর তাঁর নামে বিশ্বাস কর।

    ঠাকুর প্রমোন্মত্ত হইয়া নামমাহাত্ম্য গাইতেছেন;

    আমি দুর্গা দুর্গা বলে মা যদি মরি।

    আখেরে এ-দীনে, না তারো কেমনে জানা যাবে গো শঙ্করী।।

    আমি মার কাছে কেবল ভক্তি চেয়েছিলাম। ফুল হাতে করে মার পদপদ্মে দিয়েছিলাম, বলেছিলাম, মা এই নাও তোমার পাপ, এই নাও তোমার পুণ্য, আমায় শুদ্ধাভক্তি দাও, এই নাও তোমার জ্ঞান, এই নাও তোমার অজ্ঞান, আমায় শুদ্ধাভক্তি দাও, এই নাও তোমার শুচি, এই নাও তোমার অশুচি, আমায় শুদ্ধাভক্তি দাও, এই নাও তোমার ধর্ম, এই নাও তোমার অধর্ম, এই নাও তোমার অধর্ম, আমায় শুদ্ধাভক্তি দাও।

    ব্রাহ্মভক্তদের (Ramakrishna) প্রতি—একটি রামপ্রসাদের গান (Kathamrita) শোন;

    আয় মন, বেড়াতে যাবি।

    কালী-কল্পতরুমূলে রে (মন) চারি ফল কুড়ায়ে পাবি।।

    প্রবৃত্তি নিবৃত্তি জায়া, (তার) নিবৃত্তিরে সঙ্গে লবি।

    ওরে বিবেক নামে তার বেটা, তত্ত্ব-কথা তায় সুধাবি।।

    শুচি অশুচি লয়ে দিব্য ঘরে কবে শুবি।

    যখন দুই সতীনে পিরিত হবে, তখন শ্যামা মাকে পাবি।।

    অহংকার অবিদ্যা তোর, পিতামাতায় তাড়িয়ে দিবি।

    যদি মোহগর্তে টেনে লয়, ধৈর্যখোঁটা ধরে রবি।।

    ধুর্মাধর্ম দুটি অজা, তুচ্ছখোঁটায় বেঁধে থুবি।

    যদি না মানে প্রবোধ, জ্ঞান-সিন্ধু মাঝে ডুবাইবি।।

    প্রসাদ বলে, এমন হলে কালের কাছে জবাব দিবি।

    তবে বাপু বাছা বাপের ঠাকুর, মনের মতো মন হবি।।

    সংসারে ঈশ্বরলাভ (Ramakrishna) হবে না কেন? জনকের হয়েছিল। এ-সংসারে ‘ধোঁকার টাটি’ প্রসাদ বলেছিল। তাঁর পাদপদ্মে ভক্তিলাভ করলে—

    এই সংসারই মাজার কুটি, আমি খাই-দাই আর মজা লুটি।

    জনক রাজা মহাতেজা, তার কিসের ছিল ত্রুটি।

    সে যে এদিকে ওদিকে দুদিক রেখে, খেয়েছিল দুধের বাটি। (সকলের হাস্য)

    ব্রাহ্মসমাজ ও জনক রাজা-গৃহস্থের উপায়—নির্জনে বাস ও বিবেক  

    আরও পড়ুনঃ “বিবেক, বৈরাগ্যরূপ হলুদ মাখলে তারা আর তোমাকে ছোঁবে না”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “পশ্চিমে বিবাহের সময় বরের হাতে ছুরি থাকে, বাংলাদেশে জাঁতি থাকে”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 85: “যে ব্যক্তি আমি বদ্ধ আমি বদ্ধ বার বার বলে, সে শালা বদ্ধই হয়ে যায়!”

    Ramakrishna 85: “যে ব্যক্তি আমি বদ্ধ আমি বদ্ধ বার বার বলে, সে শালা বদ্ধই হয়ে যায়!”

    শ্রীযুক্ত কেশবচন্দ্র সেনের সহিত ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের নৌকাবিহার, আনন্দ  কথোপকথন

    ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ

    সর্বধর্মান পরিত্যাজ্য মামেকং শরণং ব্রজ।

    অহং ত্বাং সর্বপাপেভ্যো মোক্ষয়িষ্যামি মা শুচঃ।।

    গীতা—১৮৬৬।

    ব্রাহ্মদিগকে উপদেশ—খ্রিষ্টধর্ম, ব্রহ্মসমাজ ও পাপবাদ

    শ্রীরামকৃষ্ণ (ব্রাহ্মভক্তদের প্রতি)—মনেতেই বদ্ধ, মনেতেই মুক্ত। আমি মুক্ত পুরুষ; সংসারেই থাকি বা অরণ্যেই থাকি, আমার বন্ধন কি? আমি ঈশ্বরের (Ramakrishna) সন্তান; রাজাধিরাজের ছেলে; আমায় আবার বাঁধে কে? যদি সাপে কামড়ায়, ‘বিষ নাই’ জোর করে বললে বিষ ছেড়ে যায়! তেমনি আমি বদ্ধ নই, আমি মুক্ত এই কথাটি (Kathamrita) রোখ করে বলতে বলতে তাই হয়ে যায়। মুক্তই হয়ে যায়।

    পূর্বকথা—শ্রীরামকৃষ্ণের (Ramakrishna) বাইবেল শ্রবণ—কৃষ্ণকিশোরের বিশ্বাস

    খ্রিষ্টানদের একখানা বই একজন দিলে, আমি পড়ে শুনাতে বললুম। তাতে কেবল পাপ আর পাপ। (কেশবের প্রতি) তোমাদের ব্রাহ্মসমাজেও কেবল পাপ। যে ব্যক্তি আমি বদ্ধ আমি বদ্ধ বার বার বলে, সে শালা বদ্ধই হয়ে যায়! যে রাতদিন আমি পাপী, আমি পাপী এই করে, সে তাই হয়ে যায়।

    ঈশ্বরের (Ramakrishna) নামে এমন বিশ্বাস হওয়া চাই—কি আমি তাঁর নাম করেছি, আমার এখনও পাপ থাকবে! আমার আবার পাপ কি? কৃষ্ণকিশোর পরম হিন্দু, সদাচারনিষ্ঠ ব্রাহ্মণ, সে বৃন্দাবনে গিছল। একদিন ভ্রমণ করতে করতে তার জলতৃষ্ণা পেয়েছিল। একটা কুয়ার কাছে গিয়ে দেখলে, একজন লোক দাঁড়িয়ে রয়েছে। তাকে বললে (Kathamrita), ওরে তুই একঘটি জল আমায় দিতে পারিস? তুই কি জাত? সে বললে(Kathamrita), ঠাকুর মহাশয়, আমি হীন জাত—মুচি। কৃষ্ণকিশোর বললে, তুই বল, শিব। নে, এখন জল তুলে দে।

    আরও পড়ুনঃ “আমি মুক্ত পুরুষ; সংসারেই থাকি বা অরণ্যেই থাকি, আমার বন্ধন কি?”

    আরও পড়ুনঃ “বিবেক, বৈরাগ্যরূপ হলুদ মাখলে তারা আর তোমাকে ছোঁবে না”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “পশ্চিমে বিবাহের সময় বরের হাতে ছুরি থাকে, বাংলাদেশে জাঁতি থাকে”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 84: “আমি মুক্ত পুরুষ; সংসারেই থাকি বা অরণ্যেই থাকি, আমার বন্ধন কি?”

    Ramakrishna 84: “আমি মুক্ত পুরুষ; সংসারেই থাকি বা অরণ্যেই থাকি, আমার বন্ধন কি?”

    শ্রীযুক্ত কেশবচন্দ্র সেনের সহিত ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের নৌকাবিহার, আনন্দ  কথোপকথন

    পঞ্চম পরিচ্ছেদ

    ত্রিভির্গুণয়ৈর্ভাবৈরেভিঃ সর্বমিদং জগৎ।

    মোহিততং নাভিজানাতি মামেভ্যঃ পরমব্যয়ম্‌।।

    (গীতা—৭১৩)

    সত্য বলছি, তোমার সংসার করছ এতে দোষ নাই। তবে ঈশ্বরের (Ramakrishna) দিকে মন রাখতে হবে। তা না হলে হবে না। একহাতে কর্ম কর, আর-একহাতে ঈশ্বরকে ধরে থাক। কর্ম শেষ হলে দুইহাতে ঈশ্বরকে ধরবে।

    মন নিয়ে কথা (Kathamrita)। মনেতেই বদ্ধ, মনেতেই মুক্ত। মন যে-রঙ ছোপবে সেই রঙে ছুপবে। যেমন ধোপাঘরের কাপড়। লালে ছোপও লাল, নীলে ছোপাও নীল, সবুজ রঙে ছোপাও সবুজ। যে-রঙে ছোপাও সেই রঙেই ছুপবে। দেখ না, যদি একটু ইংরেজী পড়, তো অমনি মুখেই ইংরেজী কথা এসে পড়ে। ফুট-ফাট, ইট-মিট। (সকলের হাস্য) আবার পায়ে বুটজুতা, শিস দিয়ে গান করা; এই সব এসে জুটবে। আবার যদি পণ্ডিত সংস্কৃত পড়ে অমনি শালোক ঝড়বে। মনকে যদি কুসঙ্গে রাখ তো সেরকম কথাবার্তা, চিন্তা হয়ে যাবে। যদি ভক্তের সঙ্গে রাখ, ঈশ্বরচিন্তা, হরি কথা–এই সব হবে।

    মন নিয়েই সব। একপাশে পরিবার, একপাশে সন্তান। একজনকে একভাবে, সন্তানকে আর-একভাবে আদর করে। কিন্তু একই মন।

    ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ

    সর্বধর্মান পরিত্যাজ্য মামেকং শরণং ব্রজ।

    অহং ত্বাং সর্বপাপেভ্যো মোক্ষয়িষ্যামি মা শুচঃ।।

    গীতা—১৮।৬৬।

    ব্রাহ্মদিগকে উপদেশ—খ্রিষ্টধর্ম, ব্রহ্মসমাজ ও পাপবাদ

    শ্রীরামকৃষ্ণ (ব্রাহ্মভক্তদের প্রতি)—মনেতেই বদ্ধ, মনেতেই মুক্ত। আমি মুক্ত পুরুষ; সংসারেই থাকি বা অরণ্যেই থাকি, আমার বন্ধন কি? আমি ঈশ্বরের (Ramakrishna) সন্তান; রাজাধিরাজের ছেলে; আমায় আবার বাঁধে কে? যদি সাপে কামড়ায়, বিষ নাই জোর করে বললে বিষ ছেড়ে যায়! তেমনি আমি বদ্ধ নই, আমি মুক্ত এই কথাটি (Kathamrita) রোখ করে বলতে বলতে তাই হয়ে যায়। মুক্তই হয়ে যায়।

    আরও পড়ুনঃ “তোমরা খুব সেয়ানা, কেউ দশে আছো; কেউ ছয়ে আছো, কেউ পাঁচে আছো”  

    আরও পড়ুনঃ “বিবেক, বৈরাগ্যরূপ হলুদ মাখলে তারা আর তোমাকে ছোঁবে না”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “পশ্চিমে বিবাহের সময় বরের হাতে ছুরি থাকে, বাংলাদেশে জাঁতি থাকে”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 83: “তোমরা খুব সেয়ানা, কেউ দশে আছো; কেউ ছয়ে আছো, কেউ পাঁচে আছো”

    Ramakrishna 83: “তোমরা খুব সেয়ানা, কেউ দশে আছো; কেউ ছয়ে আছো, কেউ পাঁচে আছো”

    শ্রীযুক্ত কেশবচন্দ্র সেনের সহিত ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের নৌকাবিহার, আনন্দ  কথোপকথন

    পঞ্চম পরিচ্ছেদ

    ত্রিভির্গুণয়ৈর্ভাবৈরেভিঃ সর্বমিদং জগৎ।

    মোহিততং নাভিজানাতি মামেভ্যঃ পরমব্যয়ম্‌।।

    (গীতা—৭১৩।)

    তিনি (Ramakrishna) লীলাময়ী! এ-সংসার তাঁর লীলা। তিনি ইচ্ছাময়ী, আনন্দময়ী। লক্ষের মধ্যে একজনকে মুক্তি দেন।

    ব্রাহ্মভক্ত—মহাশয়, তিনি তো মনে (Kathamrita) করলে সকলকে মুক্ত করতে পারেন। কেন তবে আমাদের সংসারে বদ্ধ করে রেখেছেন?

    শ্রীরামকৃষ্ণ—তাঁর ইচ্ছা। তাঁর ইচ্ছা যে, তিনি এইসব নিয়ে খেলা করেন। বুড়ীকে আগে থাকতে ছুঁলে দৌড়াদৌড়ি করতে হয় না। সকলেই যদি ছুঁয়ে ফেলে, খেলা কেমন করে হয়? সকলেই ছুঁয়ে ফেললে বুড়ি অসন্তুষ্ট হয়। খেলা চললে বুড়ীর আহ্লাদ। তাই লক্ষের দুটো-একটা কাটে, হেসে দাও মা হাত-চাপড়ি। (সকলের আনন্দ)

    তিনি মনকে আঁখি ঠেরে ইশারা করে বলে দিয়েছেন, যা এখন সংসার করগে যা। মনের কি দোষ? তিনি যদি আবার দয়া করে মনকে ফিরিয়ে দেন, তাহলে বিষয়বুদ্ধির হাত থেকে মুক্তি হয়। তখন আবার তাঁর পাদপদ্মে মন হয়।

    ঠাকুর (Ramakrishna) সংসারীর ভাবে মার কাছে অভিমান করে গাইতেছেন (Kathamrita);

    আমি ওই খেদ খেদ করি।

    তুমি মাতা থাকতে আমার জাগা ঘরে চুরি।।

    মনে করি তোমার নাম করি, কিন্তু সময়ে পাসরি।

    আমি বুঝেছি জেনেছি, আশয় পেয়েছি এ-সব তোমারি চাতুরি।।

    কিছু দিলে না, পেলে না, নিলে না, খেলে না, সে দোষ কি আমারি।

    যদি দিতে পেতে, নিতে খেতে, দিতাম খাওয়াতাম তোমারি।।

    যশ, অপজশ, সুরস, কুরস সকল রস তোমারি।

    ওগো রসে থেকে রসভঙ্গ, কেন কর রসেশ্বরী।।

    প্রসাদ বলে, মন দিয়েছ, মনেরি আঁখি ঠারি।

    (ওমা) তোমার সৃষ্টি দৃষ্টি-পোড়া, মিষ্টি বলে ঘুরি।।

    তাঁরই মায়াতে ভুলে মানুষ সংসারী হয়েছে। প্রসাদ বলে মন দিয়েছে, মনেরি আঁখি ঠারি।

    কর্মযোগ সম্বন্ধে শিক্ষা—সংসার ও নিষ্কামকর্ম

    ব্রাহ্মভক্ত—মহাশয়, সব ত্যাগ না করলে ঈশ্বরকে (Ramakrishna) পাওয়া যাবে না?

    শ্রীরামকৃষ্ণ (সহাস্যে)—নাগো! তোমাদের সব ত্যাগ করতে হবে কেন? তোমার রসে-বসে বেশ আছ। সা-রে-মা-তে! (সকলের হাস্য) তোমরা বেশ আছ। নক্স খেলা জানো? আমি বেশি কাটিয়ে জ্বলে গেছি। তোমরা খুব সেয়ানা। কেউ দশে আছো; কেউ ছয়ে আছো, কেউ পাঁচে আছো। বেশি কাটাও নাই, তাই আমার মতো জ্বলে যাও নাই। খেলা চলছে—এ তো বেশ। (সকলের হাস্য)

    আরও পড়ুনঃ “মাকড়সা ভিতর থেকে জাল বার করে, আবার নিজে সেই জালের উপর থাকে”

    আরও পড়ুনঃ “বিবেক, বৈরাগ্যরূপ হলুদ মাখলে তারা আর তোমাকে ছোঁবে না”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “পশ্চিমে বিবাহের সময় বরের হাতে ছুরি থাকে, বাংলাদেশে জাঁতি থাকে”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 82: “মাকড়সা ভিতর থেকে জাল বার করে, আবার নিজে সেই জালের উপর থাকে”

    Ramakrishna 82: “মাকড়সা ভিতর থেকে জাল বার করে, আবার নিজে সেই জালের উপর থাকে”

    শ্রীযুক্ত কেশবচন্দ্র সেনের সহিত ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের নৌকাবিহার, আনন্দ ও কথোপকথন

    চতুর্থ পরিচ্ছদের

    তমেব সূক্ষ্ম ত্বং স্থূলা ব্যক্তাব্যক্তস্বরূপিণী।

    নিরাকারপি সাকারা কস্তাং বেদিতুমর্হতি।।

    (মহানির্বাণতন্ত্র, চতুর্থোল্লাস, ১৫)

    বেদ ও তন্ত্র সমন্বয়—আদ্যাশক্তি ঐশ্বর্য

    (সহাস্যে)—হ্যাঁ গো! গিন্নিদের ওই রকম একটা হাঁড়ি থাকে। ভিতরে সমুদ্রের ফেনা, নীল বড়ি, ছোট-ছোট পুঁটলি বাঁধা শশাবিচি, কুমড়াবিচি, লাউবিচি—এই সব রাখে, দরকার হলে বার করে। মা ব্রহ্মময়ী সৃষ্টি-নাশের পর ওই রকম সব বীজ কুড়িয়ে রাখেন। সৃষ্টির পর আদ্যাশক্তি জগতের ভিতরেই থাকেন! জগৎপ্রসব করেন, আবার জগতের মধ্যে থাকেন। বেদে আছে ঊর্ণনাভির কথা; মাকড়সা আর তার জাল। মাকড়সা ভিতর থেকে জাল বার করে, আবার নিজে সেই জালের উপর থাকে। ঈশ্বর (Ramakrishna) জগতের আধার আধেয় দুই।

    কালীব্রহ্ম—কালী নির্গুণা ও সগুণা

    কালী কি কালো? দূরে তাই কালো, জানতে পারলে কালো নয়।

    আকাশ দূর থেকে নীলবর্ণ। কাছে দেখ, কোন রঙ নাই। সমুদ্রের জল দূরে থেকে নীল কাছে গিয়ে হাতে তুলে দেখ, কোন রঙ নাই।

    এই কথা (Ramakrishna) বলিয়ে প্রেমোন্মত্ত হইয়া শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) গান ধরিলেনঃ

    মা কি আমার কালো রে।

    কালোরূপে দিগম্বরী, হৃদপদ্ম করে আলো রে।।

    পঞ্চম পরিচ্ছেদ

    ত্রিভির্গুণয়ৈর্ভাবৈরেভিঃ সর্বমিদং জগৎ।

    মোহিততং নাভিজানাতি মামেভ্যঃ পরমব্যয়ম্‌।।

    (গীতা—৭।১৩।)

    শ্রীরামকৃষ্ণ (কেশবাদির প্রতি)—বন্ধন আর মুক্তি—দুয়ের কর্তাই তিনি। তাঁর মায়াতে সংসারী জীব কামিনি-কাঞ্চনে বদ্ধ, আবার তাঁর দয়া হেলেই মুক্ত। তিনি (Ramakrishna) ভববন্ধনের বন্ধনহারিণী।

    এই বালিয়া (Ramakrishna) গন্ধর্বনিন্দিতকণ্ঠে রামপ্রসাদদের গান গাহিতেছেন;

    শ্যামা মা উড়াচ্ছে ঘুড়ি (ভবসংসার বাজার মাঝে)।

    (ওই যে) আশা-বায়ু ভরে উড়ে, বাঁধা তাহে মায়া দড়ি।।

    কাক গণ্ডি মণ্ডি গাঁথা, পঞ্জরাদি নানা নাড়ী।

    ঘুড়ি স্বগুণে নির্মাণ করা, কারিগরি বাড়াবাড়ি।।

    বিষয়ে মেজেছ মাঞ্জা, কর্কশ হয়েছে দড়ি।

    ঘুড়ি লক্ষের দুটা-একটা কাটে, হেসে দাও মা হাত-চাপড়ি।।

    প্রসাদ বলে, দক্ষিণা বাতাসে ঘুড়ি যাবে উড়ি।

    ভবসংসার সমুদ্রপারে পড়বে গিয়ে তাড়াতাড়ি।।

    আরও পড়ুনঃ “পৃথিবী ছিল না, নিবিড় আঁধার, তখন কেবল মা নিরাকার মহাকালী—মহাকালের সঙ্গে বিরাজ করছিল”

    আরও পড়ুনঃ “বিবেক, বৈরাগ্যরূপ হলুদ মাখলে তারা আর তোমাকে ছোঁবে না”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “পশ্চিমে বিবাহের সময় বরের হাতে ছুরি থাকে, বাংলাদেশে জাঁতি থাকে”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

LinkedIn
Share