Tag: Mandirs looted Bangladesh

  • Bangladesh: লাগাতার হিন্দু নির্যাতন বাংলাদেশে! ২৪ ঘণ্টায় লুট ৬ মন্দির, নেত্রকোনায় ভিটেছাড়া হরিদাস সম্প্রদায়

    Bangladesh: লাগাতার হিন্দু নির্যাতন বাংলাদেশে! ২৪ ঘণ্টায় লুট ৬ মন্দির, নেত্রকোনায় ভিটেছাড়া হরিদাস সম্প্রদায়

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশে (Bangladesh) হিন্দুদের উপর আক্রমণের ঘটনা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। শুক্রবার ১৩ জুন, এমনই একটি ঘটনায় উত্তাল হয়ে উঠেছে সে দেশের গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়া উপজেলা। অভিযোগ উঠেছে, মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মৌলবাদীরা ছয়টি হিন্দু মন্দিরে লুটপাট চালিয়েছে (Atrocities Against Hindu)। প্রসঙ্গত, শেখ হাসিনার সরকারের পতন হয় ২০২৪ সালের অগাস্টে। তারপর থেকেই বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর অত্যাচার বাড়তে থাকে। হিন্দু মন্দির ভাঙচুর, লুট এসব যেন প্রতিদিনকার ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশে।

    কী বলছেন স্থানীয় মহিলা (Atrocities Against Hindu)?

    বাংলাদেশের (Bangladesh) বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এই সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। একইসঙ্গে একাধিক ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমেও এই ঘটনার খবর সামনে এসেছে। একটি সর্বভারতীয় সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কোটালীপাড়ার এক হিন্দু মহিলা জানান, “গত বৃহস্পতিবার, অর্থাৎ ১২ জুন, দুয়ারীপাড়ার একটি মন্দিরে লুট চালায় মৌলবাদীরা। শুক্রবার, আমাদের এলাকায় চারটি মন্দির লুট করা হয়েছে। পুজোর জন্য সংরক্ষিত সমস্ত সামগ্রী চুরি করে নিয়ে গেছে তারা।” তিনি আরও বলেন, “যদি এভাবে চলতে থাকে, তবে প্রতিবার চুরি হওয়া পুজোর সামগ্রী নতুন করে কেনা আমাদের পক্ষে সম্ভব হবে না। কারণ, পিতল ও ব্রোঞ্জের পাত্র কেনার খরচ অনেক বেশি। আমাদের পক্ষে তা বারবার সম্ভব নয়।”

    হিন্দু সমাজের উপর অত্যাচার বেড়েই চলেছে, আমরা এখন কীভাবে বাঁচব?

    ওই মহিলা প্রশাসনের কাছে ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “যেসব মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করা হয়েছে, তার বিরুদ্ধে সরকারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। আমি সরকারের কাছে আন্তরিক অনুরোধ জানাচ্ছি।” তিনি আরও অভিযোগ করেন, “হিন্দু সমাজের উপর অত্যাচার বেড়েই চলেছে। আমরা এখন কিভাবে বাঁচব? সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য। অপরাধীদের ধরার দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে। আমরা অসহায়, আমাদের পক্ষে কিছুই করা সম্ভব নয়।”

    ভোরবেলা মন্দিরে পুজো দিতে গিয়ে দেখি বিগ্রহের কানের দুল নেই, জানালেন বয়স্ক মহিলা

    অন্যদিকে এক বয়স্ক মহিলা ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে বলেন, “আমি শুক্রবার ১৩ জুন, ভোরবেলা মন্দিরে পুজো দিতে গিয়ে দেখি বিগ্রহের কানের দুল নেই।” তিনি আরও বলেন, “মন্দিরে গোপাল, রাধাকৃষ্ণ ও মনসা দেবীর মূর্তিগুলিতে সোনার অলংকার ছিল, যা সব লুট করে নেওয়া হয়েছে।” তিনি আরও জানান, “বেশিরভাগ মূর্তি পিতলের তৈরি হলেও রাধাকৃষ্ণের মূর্তিটি ছিল রুপোর। আমার ছোট ছেলে এটি উপহার হিসেবে দিয়েছিল। গত তিন-চার বছর ধরে এই মূর্তিগুলিই আমরা প্রতিদিন পুজো করি।”

    এলাকার হিন্দুরা চরম আতঙ্কে রয়েছে

    একটি অন্য সাক্ষাৎকারে, আরও এক মহিলা বলেন, “মন্দিরে রাখা সমস্ত অলংকার লুট করে নেওয়া হয়েছে। প্রথমে তারা ঘরের ভিতর ঢোকে, তারপর মন্দিরে যায়। এই মন্দির সর্বদাই খোলা থাকে। রাতে কী ঘটেছিল, আমরা বুঝতেই পারিনি। সকালে আমরা লুটপাটের খবর পাই।” এক স্থানীয় যুবক বলেন, “মন্দির থেকে প্রায় ৪০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকার ব্রোঞ্জের থালা, কলসি এবং পুজোর বিভিন্ন সামগ্রী লুট করে নেওয়া হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “এই ঘটনার পর থেকেই এলাকাবাসী চরম আতঙ্কে রয়েছে।”

    নেত্রকোনা জেলায় হিন্দুদের বাড়িঘর ভাঙচুর (Bangladesh)

    এদিকে বাংলাদেশের (Bangladesh) নেত্রকোনা জেলায় হিন্দুদের বাড়িঘর ভাঙচুর এবং লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে মৌলবাদীদের বিরুদ্ধে। জানা গিয়েছে, হরিদাস সম্প্রদায়ের একাধিক হিন্দু পরিবারকে গৃহহীন করে তাদের বাড়িঘরে হামলা চালিয়েছে মৌলবাদীরা। ঘটনাটি ঘটেছে বাংলাদেশের নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলায়।

    কী বলছে বাংলাদেশের সংবাদপত্র সময় ন্যাশনাল?

    বাংলাদেশের জনপ্রিয় সংবাদপত্র সময় ন্যাশনাল-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই এলাকায় হিন্দু পরিবারগুলি গত ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বসবাস করে আসছিলেন। অভিযোগ, মৌলবাদীরা দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে ওই পরিবারগুলিকে উৎখাতের পরিকল্পনা করছিল, যাতে তারা দেশ ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়। এই প্রেক্ষিতে মৌলবাদীরা ওই এলাকা জনাব আলি মার্কাজুন নুর আল ইসলামিয়া মাদ্রাসার সম্পত্তি বলে দাবি করে এবং সেখানে একটি সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেয়।

    কোনও অপরাধী গ্রেফতার হয়নি এখনও

    পরবর্তীতে হিন্দু পরিবারগুলি নিরাপত্তার দাবিতে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের দ্বারস্থ হলে, মৌলবাদীদের আক্রমণ আরও বেড়ে যায়। অভিযোগ, অন্তত পাঁচটি হিন্দু পরিবারের ঘরবাড়ি ভেঙে মাটিতে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে লুটপাট করা হয়েছে নগদ অর্থ এবং মূল্যবান সামগ্রী। এই ঘটনায় এক হিন্দু মহিলা (Bangladesh) বলেন, “আমরা পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলাম। কিন্তু এরপরেই রবিবার ৮ জুন, মৌলবাদীরা আমাদের আরও তিনটি বাড়িতে ভাঙচুর চালায়।” তাঁর আরও দাবি, “ওরা এখানে একটি মাদ্রাসা খুলতে চায়। প্রশাসন দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলেও এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।”

LinkedIn
Share