Tag: Mohon Bhagwat

Mohon Bhagwat

  • RSS at 100: “ভারতীয় সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করাই সঙ্ঘের প্রধান কাজ”, বললেন মোহন ভাগবত

    RSS at 100: “ভারতীয় সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করাই সঙ্ঘের প্রধান কাজ”, বললেন মোহন ভাগবত

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সঙ্ঘের (RSS at 100) শতবর্ষের অনুষ্ঠানে সরসঙ্ঘ চালক মোহন ভাগবত (Mohon Bhagwat) বলেন, “ভারতীয় সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করাই সঙ্ঘের কাজ। রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘের লক্ষ্য ক্ষমতা বা রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ নয় বরং জাতির গৌরবকে তুলে ধরা। আমরা ক্ষমতা চাই না, ভারত মাতার গৌরবের জন্য হিন্দু সমাজকে সংগঠিত করাই আমাদের কাজ।” বেঙ্গালুরুতে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘সঙ্ঘ শতবর্ষ যাত্রা: নতুন দিগন্ত’ শীর্ষক বক্তৃতামালা। আলোচনার প্রথম দিনের ভাষণ শুনতে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের প্রবুদ্ধ সমাজ, বুদ্ধিজীবী ও শিক্ষাবিদরা। এদিন সমাজ গঠনে সঙ্ঘের দৃষ্টিভঙ্গী এবং রাষ্ট্র পুনঃনির্মাণের সামজিক দায়িত্বের কথাও স্মরণ করেন আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত।

    সামাজিক দায়বদ্ধতা (RSS at 100)

    সঙ্ঘ চালক মোহন ভাগবত (Mohon Bhagwat) তাঁর ভাষণে বলেন, “রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘের (RSS at 100) প্রকৃত অর্থ কি এবং অবস্থান কেমন তা ভালো করে জানা প্রয়োজন। এই সংগঠন একটি ব্যতিক্রমী সংগঠন, বিশ্বের বাকি সংগঠনের তুলনায় সম্পূর্ণ আলাদা। এই সংগঠন কোন বিশেষ ঘটনা বা পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে তৈরি করা হয়নি। কোনও বিশেষ মত বা আদর্শের বিরোধিতার জন্যও এই সংগঠন তৈরি হয়নি। আমাদের সংগঠনের কাজ হল সমগ্র সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করা। সমাজের উন্নতি এবং জাগরণের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এই সংগঠন। ব্যক্তি নির্মাণ সমাজের নেতৃত্ব, চরিত্র গঠন, শৃঙ্খলা এবং নিষ্ঠা গড়ে সমাজের জন্য নিঃস্বার্থভাবে কাজ করাই সংঘের প্রধান কাজ। ভারত মায়ের সেবা করাই জীবনের প্রধান লক্ষ্য। তাই সামাজিক দায়বদ্ধতার জায়গায় থেকে কাজ করে আরএসএস।”

    ভারত মায়ের সুরক্ষা

    রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘের আদর্শ হল রাষ্ট্রভক্তি। ভাগবত (Mohon Bhagwat) তাই বলেন, “সঙ্ঘ (RSS at 100) কখনও ধ্বংস এবং সংঘর্ষের মতো নেতিবাচক কাজে যুক্ত হয় না। এই সংগঠন গঠনমূলক দিকের কথা ভেবেই কাজ করে। সঙ্ঘের শাখা কখনওই ব্যক্তি সুবিধা বা লাভের কথা চিন্তা করে না। ভারত মাতার জন্য সব সময় নিবেদিত প্রাণ। দেশের প্রত্যেকে শাখায় ভারত মায়ের সুরক্ষা এবং দেশ-সমাজের কল্যাণের উদ্দেশ্যের কথা ভেবেই স্বয়ং সেবকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। সঙ্ঘের প্রধান উদ্দেশ্য হল, সমগ্র হিন্দু সমাজকে সংগঠিত করা এবং সমাজকে নেতৃত্ব দেওয়া। তাই সংঘের প্রার্থনায় ভারত মায়ের কল্যাণের কথা বার বার স্মরণ করা হয়। স্বয়ং সেবকদের ভক্তির সার কথাই হল ভারত মায়ের জয় জয়কার।”

    লক্ষ্যে সঙ্ঘ অবিচল ছিল

    সঙ্ঘের প্রধান মোহন ভাগবত বলেন, “সঙ্ঘ (RSS at 100) সব সময় আর্থিক ভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার উপর জোর দিয়ে থাকে। সঙ্ঘের কাজকে সঠিক ভাবে বাস্তবায়নের জন্য বাইরে থেকে আর্থিক সাহায্যের প্রয়োজন নেই। নিজেদের কেউ স্বয়ং সম্পন্না হতে হবে। বিশ্বের এমন কোনও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন নেই যাকে আরএসএস-এর মতো কঠিন বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছে সঙ্ঘ। তিন তিন বার সঙ্ঘের কাজকে আটকাতে রাজনৈতিক ভাবে সঙ্ঘের উপর প্রতিবন্ধকতা লাগিয়েছিল। তবুও সঙ্ঘ থেমে থাকেনি। নিজের কাজ এবং লক্ষ্যে সঙ্ঘ অবিচল ছিল।”

    ডাক্তারজি একজন স্বাধীনতা সংগ্রামী

    এদিনের ভাষণে প্রথম সরসঙ্ঘ চালক ডাক্তার কেশব বলিরাম হেডগেওয়ারকেও (RSS at 100) স্মরণ করেন ভাগবত (Mohon Bhagwat)। বলেন, “ডাক্তারজি স্বাধীনতা সংগ্রামী ছিলেন। বাংলার বিপ্লবী সংগঠন অনুশীলন সমিতির একজন একনিষ্ঠ কর্মকর্তা ছিলেন। ভারত মায়ের সেবায় নিজের সর্বস্ব অর্পণ করেছিলেন। সেই সঙ্গে তিনি ছিলেন সমাজতাত্ত্বিক, দার্শনিক এবং দেশনায়ক। কেশবজি মনে প্রাণে বিশ্বাস করতেন ভারতের বিচার ব্যবস্থা এবং প্রশাসন বিষয়ে নিয়ন্ত্রণ করার অধিকার কোনও ব্রিটিশেরই নেই। বন্দে মাতরম্‌ আন্দোলনের নেতৃত্বে বিশেষভাবে সক্রিয় ছিলেন ডাক্তারজি। তিনি নাগপুরের স্কুলগুলিতে স্বদেশী আন্দোলন এবং ভারত মায়ের মুক্তির জন্য যুব সমাজকে জাগ্রত করার ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রেখেছিলেন।”

    দীর্ঘ দিনের পরাধীনতায় ভারতীয়রা আত্মপরিচয় ভুলতে বসেছিলেন। ভারতীয় সমাজের আত্ম বিস্মৃতি এবং আত্ম সচেতনতা সম্পর্কে বিশেষ বক্তব্যও রাখেন ভাগবত। তিনি বলেন, “পরাধীনতা আমাদের গ্রাস করেছে। আমরা আমাদের নিজস্ব মানুষকে ভুলে গিয়েছি। আমাদের বৈচিত্র্যগুলিকে বড় রকমের বিভেদ-বিভাজনের স্বরূপ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। পরাধীন ভারতে সমাজ জাগরণে বিবেকান্দ, স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতীর কথাও ভুলে যাওয়া উচিত নয়। আমাদের সংস্কৃতি এবং ইতিহাসের শেকড়কে ভুলে যাওয়া ঠিক নয়। এই কাজেও বিশেষ নজর রাখছে সঙ্ঘ।”

    পরাধীনতার বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন হিন্দুরা

    ভারতের ইতিহাস বিশ্লেষণ করতে গিয়ে ভাগবত (Mohon Bhagwat) বলেন, “ব্রিটিশ ভারতে যুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জনের বড় প্রচেষ্টা ছিল ১৮৫৭ সালের মহাবিদ্রোহ। গোটাদেশ একত্রিত হয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলনে নেমেছিলেন। তবে এটা মনে রাখা উচিত ব্রিটিশরাই প্রথম এদেশে প্রথম আক্রমণকারী ছিল না। ইতিপূর্বে শক, হুন, কুষাণ, যবন, মুসলমানরা আক্রমণ করেছিল। শেষে আসে ব্রিটিশরা। ফলে ব্রিটিশরা আসার আগে ভারত ঐক্যবদ্ধ ছিল না, এই তথ্য মিথ্যে। ভারত অনেক আগে থেকেই সঙ্ঘবদ্ধ এবং ঐক্যবদ্ধ ছিল। সময়ে সময়ে যাঁরা পরাধীনতার বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন তাঁরা সকলেই হিন্দু।”

LinkedIn
Share