তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল
সপ্তাহের শুরু থেকেই বৃষ্টি। একনাগাড়ে বর্ষার (Monsooon Season) জেরে রাজ্যের একাধিক জায়গায় জল জমছে। বৃষ্টির ভিজে আবহাওয়ায় বাড়ছে নানান রোগের দাপট। চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, একটানা বৃষ্টির জেরে শিশুদের মধ্যে নানান রোগের দাপট (Water Borne Diseases) বাড়ছে। তাই বাড়তি সতর্কতা জরুরি। জোর দিতে হবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা (Immunity Power) বাড়ানোর ওপর। না হলে পরিস্থিতি জটিল হতে পারে।
বর্ষার জেরে কোন রোগের প্রকোপ বাড়ছে?
নিউমোনিয়া বিপদ বাড়াচ্ছে!
চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, বর্ষায় নিউমোনিয়ার প্রকোপ বাড়ছে। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, শিশুদের অনেকেই দ্রুত ইনফ্লুয়েঞ্জা এবং নানান ভাইরাস ঘটিত অসুখের কবলে পড়ে। যার ফলে ফুসফুসের উপরে বাড়তি প্রভাব পড়ে। ফুসফুসের কার্যক্ষমতাও বাধা পায়। তার জেরেই ফুসফুসে জল জমার মতো বিপদ তৈরি হতে পারে। তার ফলে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও (Water Borne Diseases) বাড়ে। শ্বাসকষ্ট সহ একাধিক সমস্যা তৈরি হয়। বর্ষায় শিশুদের নিউমোনিয়া হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে। তাই এই সময়ে সর্দি-কাশি নিয়ে বাড়তি নজরদারি জরুরি। চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, সাধারণ ভাইরাস ঘটিত জ্বর, সর্দি-কাশি থেকেও বড় বিপদ হতে পারে। নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার ঘটনাও ঘটছে। তাই বারবার সর্দি-কাশি হলে এই আবহাওয়ায় একেবারেই অবহেলা করা যাবে না। বাড়তি সতর্কতা বড় বিপদের ঝুঁকি কমাতে পারে।
ডায়ারিয়া নিয়ে বাড়তি সতর্কতা জরুরি!
একটানা বৃষ্টির জেরে রাজ্যের একাধিক জায়গায় জল জমছে। পানীয় জলের সরবরাহের ক্ষেত্রেও স্বাস্থ্যবিধি কতখানি মানা হচ্ছে, সে নিয়ে আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, রাজ্যের একাধিক জায়াগায় পেটের অসুখে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। বিশেষত শিশুদের পেটের অসুখে ভোগান্তি বাড়ছে। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, ডায়ারিয়ার আশঙ্কাও দেখা দিচ্ছে। তাই এই আবহাওয়ায় পেটের অসুখ নিয়ে বাড়তি সতর্কতা জরুরি। কারণ, ডায়ারিয়া প্রাণঘাতী হতে পারে বলেও জানাচ্ছেন চিকিৎসকদের একাংশ।
টাইফয়েডের ঝুঁকি বাড়ছে!
চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, বর্ষায় জলবাহিত রোগের (Water Borne Diseases) প্রকোপ বাড়ছে। তাই এই সময়ে টাইফয়েডের ঝুঁকিও বাড়ছে। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, রাজ্যের একাধিক জেলায় শিশুরা টাইফয়েডে আক্রান্ত হচ্ছে। জল থেকেই এই রোগের প্রকোপ বাড়ছে বলেই জানাচ্ছেন তাঁরা।
জন্ডিস নিয়ে বাড়তি সতর্কতা!
বর্ষায় জলবাহিত রোগের (Water Borne Diseases) দাপট বাড়ছে। তাই জন্ডিস নিয়ে বাড়তি সতর্কতা জরুরি। এমনটাই জানাচ্ছেন চিকিৎসকদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, শিশুদের ঝুঁকি বেশি। কারণ, তাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ শক্তি (Immunity Power) তুলনামূলক কম থাকে। তাই যেকোনও জীবাণু সহজেই শরীরে বাসা বাঁধতে পারে। তাই বর্ষায় শিশুদের লিভারের নানান রোগের প্রকোপ বাড়ে। তাই হেপাটাইটিস থেকে বাঁচতে বাড়তি সতর্কতা নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
কীভাবে সন্তানকে সুস্থ রাখবেন?
চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, এই আবহাওয়ায় শিশুকে সুস্থ রাখতে কয়েকটি ঘরোয়া উপাদান সাহায্য করবে। সচেতনতা ও সতর্কতা বাড়তি বিপদের ঝুঁকি কমাবে বলেই তাঁরা মনে করছেন। বিশেষজ্ঞদের একাংশের পরামর্শ, এই আবহাওয়ায় সুস্থ থাকতে শিশুর রোগ প্রতিরোধ শক্তির (Immunity Power) দিকে বাড়তি নজরদারি জরুরি। শরীরে রোগ প্রতিরোধ শক্তি থাকলে ভাইরাস ঘটিত রোগের দাপট সহজে এড়ানো যাবে। এর ফলে একাধিক অসুখের ঝুঁকি কমবে। সর্দি-কাশি জাতীয় অসুখের দাপট কমলে নিউমোনিয়ার মতো রোগের দাপট কমানো সহজ হবে।
পুষ্টিবিদদের একাংশের পরামর্শ, এই সময়ে শিশুকে নিয়মিত এক ধরনের লেবু জাতীয় ফল খাওয়ানো জরুরি। কারণ এই ফলে পর্যাপ্ত ভিটামিন সি থাকে। ফলে, রোগ প্রতিরোধ শক্তি (Immunity Power) বাড়ে। সর্দি-কাশির প্রকোপ কমে। সকালে তুলসী পাতা ভেজানো জল খাওয়ানোর পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, তুলসী পাতা যেকোনও ভাইরাস ঘটিত অসুখের মোকাবিলা করতে সাহায্য করে। তাই তুলসী পাতা নিয়মিত খেলে ফুসফুসের অসুখের ঝুঁকি কমে।
পেটের অসুখ মোকাবিলা করতে ডায়ারিয়া, জন্ডিসের মতো জটিল রোগের বিপদ কমাতে জলের উপরে বাড়তি নজরদারির পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। তাঁদের পরামর্শ, শিশু পরিশ্রুত জল খাচ্ছে কিনা সে দিকে খেয়াল রাখা জরুরি। এই আবহাওয়ায় জলঘটিত রোগের (Water Borne Diseases) দাপট বাড়ে। তাই পরিশ্রুত জল খেলে অনেক রোগের ঝুঁকি কমানো সহজ হয়। তাঁদের পরামর্শ, এই আবহাওয়ায় বাইরের সরবৎ বা খোলা জায়গায় থাকা কাটা ফল একেবারেই খাওয়া চলবে না। এতে নানান ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস ঘটিত রোগের ঝুঁকি বাড়ে। নিয়মিত ঘরের তৈরি হালকা সহজ পাচ্য খাবার খেলে লিভার সুস্থ থাকবে। এতে শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা (Immunity Power) বাড়বে। রোগের প্রকোপ কমবে।
DISCLAIMER: এই প্রতিবেদনটি বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী লেখা। এর সঙ্গে মাধ্যম-এর কোনও সম্পর্ক নেই। মাধ্যম এর কোনও দায় নিচ্ছে না। এখানে বলা যে কোনও উপদেশ পালন করার আগে অবশ্যই কোনও চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।