Tag: New GST

  • Diwali in India: চিনা জিনিসে না! “আপনার দীপাবলি, ভারতীয় দীপাবলি”, দেশীয় পণ্যের রেকর্ড বিক্রির আশা

    Diwali in India: চিনা জিনিসে না! “আপনার দীপাবলি, ভারতীয় দীপাবলি”, দেশীয় পণ্যের রেকর্ড বিক্রির আশা

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: সারা দেশে চলছে উৎসবের মরসুম। নবরাত্রি, দশেরা, দুর্গাপুজোর পর এবার কালীপুজো, দিওয়ালির (Diwali in India) পালা। এই সময় দেশ জুড়ে কেনাকাটা বাড়ে। একে অপরকে উপহার দেওয়া থেকে শুরু করে ঘর সজানোর পালা। আলোয় আলোয় সেজে ওঠে শহর থেকে গ্রাম, অলি-গলি থেকে রাজপথ। এই বছর দীপাবলির উৎসবে ভারতের বাজারে দেশীয় পণ্যের জয়যাত্রা চোখে পড়ার মতো। কনফেডারেশন অফ অল ইন্ডিয়া ট্রেডার্স (CAIT)-এর সাধারণ সম্পাদক তথা চাঁদনি চক-এর সাংসদ প্রবীণ খান্ডেলওয়াল জানিয়েছেন, এবারের দীপাবলিতে ভারতে তৈরি জিনিসের (Vocal for Local) বিক্রি ৪.৭৫ লাখ কোটি টাকায় পৌঁছতে পারে — যা হবে এক নতুন মাইলস্টোন।

    ভোকাল ফর লোকাল

    প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সম্প্রতি বলেছেন, ‘বর্তমানে আমাদের (ভারতে) দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন বিদেশি পণ্য জুড়ে গিয়েছে। এর থেকে মুক্তি পেতে হবে। আমাদের ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ পণ্য কিনতে হবে। প্রতিটি বাড়িকে স্বদেশি পণ্যের প্রতীক বানাতে হবে, প্রতিটি দোকানকে স্বদেশি পণ্যে সাজাতে হবে।’ ২২ সেপ্টেম্বর (সোমবার) থেকে ভারত জুড়ে চালু হয়েছে পণ্য ও পরিষেবা করের (জিএসটি) নতুন কাঠামো। এরপরই গর্বের সঙ্গে স্বদেশি পণ্য (Vocal for Local) কেনাবেচা করার আহ্বান জানান মোদি। প্রতিটি রাজ্যে স্বদেশি পণ্যের উৎপাদনের গতি আরও বৃদ্ধি করার জন্যও রাজ্য সরকারগুলোকে পরামর্শ দেন তিনি। বিনিয়োগের জন্য পরিবেশ তৈরি করারও পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী। মোদি বলেন, ‘কেন্দ্র ও রাজ্য একসঙ্গে এগোলে, তবেই আত্মনির্ভর ভারতের স্বপ্ন পূরণ হবে।’ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘ভোকাল ফর লোকাল’ আহ্বান এবং সাম্প্রতিক জিএসটি হ্রাসের ফলেই দীপাবলিতে ভারতে তৈরি জিনিস বিক্রি বাড়বে বলে জানান প্রবীণ খান্ডেলওয়াল। প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানই দেশীয় পণ্য বিক্রির মূল চালিকা শক্তি, বলে জানান খান্ডেলওয়াল। তিনি বলেন, দেশীয় পণ্যের প্রতি মানুষের আস্থা ও উৎসাহ এতটাই বেড়েছে যে, চিনা পণ্যের চাহিদা প্রায় নেই বললেই চলে।

    গত চার বছরের বিক্রির ধারাবাহিক বৃদ্ধি

    ২০২১: ১.২৫ লাখ কোটি টাকা

    ২০২২: ২.৫০ লাখ কোটি টাকা

    ২০২৩: ৩.৭৫ লাখ কোটি টাকা

    ২০২৪ : ৪.২৫ লাখ কোটি টাকা

    ২০২৫: ৪.৭৫ লাখ কোটি টাকা (লক্ষ্যমাত্রা)

    ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ পণ্যের চাহিদা

    প্রবীণ খান্ডেলওয়াল জানান, দিল্লিতেই রেকর্ড পণ্য বিক্রির প্রত্যাশা করা হচ্ছে। দীপাবলী উপলক্ষে রাজধানীতে ৭৫ হাজার কোটি টাকারও বেশি পণ্য বিক্রি হতে পারে বলে আশা। বাজারে দেশীয় পণ্যের প্রতি মানুষের আগ্রহ চোখে পড়ার মতো। এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, “এই বছর বিক্রি বাড়ার পিছনে দুটি বড় কারণ হল মোদিজির স্বদেশি আহ্বান এবং জিএসটি হ্রাস। এই জিএসটি হ্রাস যেন উৎসবের উপহার হয়ে এসেছে ব্যবসায়ী ও ভোক্তা উভয়ের জন্য।” এই সম্মেলন স্থলেই একটি ক্ষুদ্র প্রদর্শনীতে ৩০টি স্টলে নারী উদ্যোক্তাদের তৈরি দেশীয় পণ্য প্রদর্শিত হয়। যার গুণগত মান ছিল খুবই ভাল। এই সব পণ্যের মূল্যও ছিল সাধ্যের মধ্যে।

    ‘ভারতীয় পণ্য – আমাদের গর্ব’ অভিযান

    প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেছেন, ‘ভারত যখন উন্নয়নের শিখরে ছিল, তখন দেশের অর্থব্যবস্থার মূল ভিত্তি ছিল ক্ষুদ্র-মাঝারি-কুটির শিল্প। ভারতে তৈরি পণ্যের মান অত্যন্ত ভালো হতো। সেই গৌরবময় অধ্যায়কে পুনরুদ্ধার করতে হবে। দেশীয় পণ্যের মান এমন হবে, যা গোটা বিশ্বে ভারতের গৌরব বৃদ্ধি করবে। সেই লক্ষ্য নিয়েই দেশবাসীকে এগোতে হবে। দেশের স্বাধীনতা আন্দোলন যেমন স্বদেশি মন্ত্রে শক্তি পেয়েছে, তেমনই দেশের উন্নতিতেও স্বদেশি মন্ত্রই শক্তি জোগাবে।’ জাতির উদ্দেশে মোদি জানিয়েছিলেন, দেশকে আত্মনির্ভর করার জন্যই জিএসটি হ্রাস করা হয়েছে। এর ফলে দেশবাসীর সঞ্চয় বৃদ্ধি পাবে এবং অনেক পণ্য সস্তা হয়ে যাবে। দেশবাসী নিজেদের পছন্দমতো জিনিস সহজেই কিনতে পারবেন। কনফেডারেশন অফ অল ইন্ডিয়া ট্রেডার্স (CAIT)-এর তরফে সম্প্রতি সারা দেশে একটা প্রচার অভিযান শুরু করা হয়েছে। যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘ভারতীয় সামগ্রী – আমাদের স্বাভিমান’। এর অংশ হিসেবে এই দীপাবলিকে উদযাপন করা হবে ‘আপনার দীপাবলি – ভারতীয় দীপাবলি’ হিসেবে।

    চিনা পণ্যের চাহিদায় ধস

    ২০২০ সালে গালওয়ান উপত্যকার সংঘর্ষের পর থেকেই ভারতীয় বাজারে চিনা পণ্যের প্রতি নেতিবাচক মনোভাব তৈরি হয়েছে। আমদানিকারকরা আর চিন থেকে দীপাবলি সংক্রান্ত পণ্য খুব বেশি আনে না। দেশ তৈরি নানান আলোক বাতি দিয়েই সেজে ওঠে বাড়ি-ঘর, পথ-ঘাট। বাজারে চিনা সামগ্রীর অনুপস্থিতি এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এই পরিবর্তন শুধুমাত্র বাণিজ্যিক নয়, এটি ভারতীয়দের মধ্যে ক্রমবর্ধমান আত্মবিশ্বাস ও দেশীয় অর্থনীতির প্রতি আস্থার প্রতিফলন, বলেই অনুমান বিশেষজ্ঞদের। এবারের দীপাবলি (Diwali in India) শুধু আলোর উৎসব নয়, দেশীয় শিল্প ও আত্মনির্ভর ভারতের এক নতুন সূচনা, বলে মনে করা হচ্ছে।

LinkedIn
Share