Tag: Pahalgam

Pahalgam

  • Pahalgam Attack: পাকিস্তানেই অস্তিত্বের সঙ্কটে পাক সেনা, তাই কি নজর ঘোরাতেই পহেলগাঁও হামলা?

    Pahalgam Attack: পাকিস্তানেই অস্তিত্বের সঙ্কটে পাক সেনা, তাই কি নজর ঘোরাতেই পহেলগাঁও হামলা?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দক্ষিণ কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় (Pahalgam Attack) নিহত হয়েছেন অন্তত ২৮ জন। জখমও হয়েছেন বেশ কয়েকজন। মঙ্গলবার পর্যটকদের ভিড়ে মিশেছিল জঙ্গিরা (Pakistan)। পরে স্বমূর্তি ধারণ করে এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে সন্ত্রাসবাদীরা। গুলি চালানোর আগে পর্যটকদের ধর্মীয় পরিচয়ও জানতে চায় জঙ্গিরা। সূত্রের খবর, এদিন যাঁদের হত্যা করা হয়েছে, তাঁরা সকলেই হিন্দু। বৈসরন এলাকার এই হত্যালীলা সাম্প্রতিক বছরগুলিতে এই অঞ্চলের সব চেয়ে ভয়াবহ অসামরিক হামলা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। শ্রীনগর থেকে ৯০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই জায়গাটি পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয়। মঙ্গলবার পর্যটকদের ওপর হামলার দায় স্বীকার করে বিবৃতি দিয়েছে ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ নামে একটি সংগঠন। এটি পাকিস্তানভিত্তিক নিষিদ্ধ সংগঠন লস্কর-ই-তৈবার একটি প্রক্সি গোষ্ঠী।

    হতাশার বহিঃপ্রকাশ! (Pahalgam Attack)

    ওয়াকিবহাল মহলের মতে, পাহেলগাঁওয়ে এই হামলা একটি বৃহত্তর ও আরও উদ্বেগজনক ধারার অংশ। কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা লোপ হওয়ার পরে নির্বাচনও হয়েছে সুষ্ঠুভাবে। ক্ষমতায় এসেছে ওমর আবদুল্লার নেতৃত্বে গণতান্ত্রিক সরকার। এর পরেই কৌশল বদলায় পাকিস্তান। তারা কাশ্মীর থেকে তাদের ফোকাস ঘোরায় শান্ত এবং হিন্দু অধ্যুষিত জম্মুর পার্বত্য জেলাগুলিতে। গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে নিশ্চিন্তে বসবাস করছিলেন রাজৌরি, রেয়াসি এবং পুঞ্চের বাসিন্দারা। এই জায়গাগুলিকেই ফোকাস করে পাক মদতপুষ্ট জঙ্গিরা। এভাবে তারা যেমন একদিকে ভারতের প্রতিক্রিয়া পরীক্ষা করতে চেয়েছে, তেমনি অন্যদিকে ভারতের দুর্বলতাও খুঁজতে চেয়েছে। এসব অঞ্চলের ভূপ্রাকৃতিক সুবিধাও নিয়েছে তারা। শুধু তাই নয়, নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন ও অনুপ্রবেশের নিরন্তর চেষ্টাও চালিয়ে গিয়েছে পাক সেনা। সম্প্রতি জে সেক্টরে তারা এলওসি অতিক্রম করেছিল। যদিও ভারতীয় সেনা তাদের পিছু হঠতে বাধ্য করে। পাক সেনাদের এহেন কাজকর্ম একাধিক ফ্রন্টে ভারতের কৌশলগত অবস্থানের একটি পরীক্ষাও বটে।

    পাকিস্তানের মুখে চুনকালি

    উনিশ সালে (Pahalgam Attack) ভূস্বর্গ থেকে লুপ্ত করা হয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা। তার পর থেকেই ধীরে ধীরে ভারতের কাশ্মীরের ওপর থেকে পাক সেনার নিয়ন্ত্রণ আলগা হতে থাকে। অথচ মোদি সরকার যখন ৩৭০ ধারা বাতিল করে, তখন থেকে কূটনৈতিক, সামরিক কিংবা বাকযুদ্ধে প্রতিক্রিয়া জানানোর ঢের চেষ্টা করেছে পাকিস্তান (Pakistan)। যদিও প্রতিটি ক্ষেত্রেই তাদের মুখে পড়েছ চুনকালি। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা ছিল নির্বিকার। ওআইসি কেবল আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানিয়েই খালাস। ৩৭০ ধারা লোপ পাওয়ার পর কাশ্মীরে বয়ে গিয়েছে শুধুই উন্নয়নের জোয়ার। শান্তির ভূস্বর্গে ক্রমেই নামছিল পর্যটকদের ঢল। অর্থনীতি চাঙা হয়েছিল ভূস্বর্গের। অবাধে হয়েছে নির্বাচন। জম্মু-কাশ্মীরের রাশ গিয়েছে গণতান্ত্রিক উপায়ে নির্বাচিত একটি সরকারের হাতে। রাওয়ালপিন্ডি এক সময় যে স্বাভাবিকতার প্রতীকগুলিকে উপহাস করত, সেগুলিই ক্রমে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে কাশ্মীরে। তাই স্থানীয় কাশ্মীরিদের খেপিয়ে তোলার সুযোগও হাতছাড়া হয়েছে পাক সেনার।

    পাক সেনার ইন্ধন

    এহেন প্রেক্ষাপটে (Pahalgam Attack) ইন্ধন জুগিয়েছে পাক সেনা প্রধান জেনারেল আসিম মুনিরের ঘোষণা (Pakistan)। তিনি কাশ্মীরকে ‘পাকিস্তানের জীবনরেখা’ বলে উল্লেখ করেছেন। জিয়া আমলের পর থেকে এমন শব্দবন্ধ ব্যবহার করেননি কোনও পাক রাজনীতিক। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, এটি কোনও কৌশলগত সংকেত নয়, বরং পাকিস্তানের গলায় হতাশার সুর স্পষ্ট, যে নিজের চোখের সামনে তার নিজের আদর্শিক পরিচয়ের মূলস্তম্ভকে হাতছাড়া হতে দেখছে। পাক সেনার বক্তব্য যতই জোরালো হচ্ছে, ততই স্পষ্ট হয়ে উঠছে রাওয়ালপিন্ডি আর কাশ্মীরের ডিসকোর্স নির্ধারণ করছে না, বরং পরোক্ষে তাদের পরাজয়েরই মোকাবিলা করছে।

    কেন প্ররোচনা?

    আপাতদৃষ্টিতে মনে হতে পারে, একের পর এক সমস্যায় যখন জর্জরিত পাকিস্তান, তখন পাক সেনার এহেন প্ররোচনা (কাশ্মীরে অনুপ্রবেশ কিংবা হামলার ছক) অযৌক্তিক বলে মনে হতে পারে। উপজাতীয় অঞ্চলে তেহরিক-ই-তালিবান-পাকিস্তান তাদের ওপর আধিপত্য বজায় রাখছে। বালোচ বিদ্রোহীরা সৈন্যদের আস্ত একটি ট্রেনকে পণবন্দি করেছিল। পড়শি দেশ আফগানিস্তানের সঙ্গেও পাকিস্তানের সম্পর্ক এখন তলানিতে। দৃশ্যতই দেশটি বর্তমানে গভীর সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। তাহলে দেশের এই দুঃসময়ে ভারতের কাশ্মীর নিয়ে মাতল কেন পাকিস্তান? এর (Pahalgam Attack) এক এবং একমাত্র উত্তর হল, দেশে যখনই ভয়ঙ্কর কোনও সমস্যা দেখা দেয়, তখন পাকিস্তানিরা যাতে সরকার কিংবা সেনার বিরুদ্ধে তাঁদের ক্ষোভ উগরে না দেন, তাই ভারতকে চিরশত্রু হিসেবে তাক করা। কাশ্মীর নিয়ে আলোচনা, হামলা চালানো, প্রতিশোধের ঝুঁকি নেওয়া – এসবই বিভ্রান্তি তৈরি করতে পাক সেনার পুরানো চাল। এদিক থেকে বিচার করলে কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের ওপর হামলাও যুক্তিসঙ্গত হয়ে ওঠে। কারণ ‘ভারত-কার্ড’ খেলে দিয়ে পাক সেনা দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ করার পাশাপাশি আদতে দেশের অভ্যন্তরীণ (Pakistan) সমস্যা থেকে জনগণের দৃষ্টিভঙ্গী ঘোরানোরই চেষ্টা করেছে (Pahalgam Attack)।

  • Pahalgam Terror Attack: ‘এটা মুসলিম নয়, গুলি করো’! নাম জেনে, বিবস্ত্র করিয়ে ধর্মীয় পরিচয় দেখে বেছে বেছে হিন্দু পুরুষদের হত্যা

    Pahalgam Terror Attack: ‘এটা মুসলিম নয়, গুলি করো’! নাম জেনে, বিবস্ত্র করিয়ে ধর্মীয় পরিচয় দেখে বেছে বেছে হিন্দু পুরুষদের হত্যা

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পাহাড়ের উপর ছোট্ট সবুজ স্বপ্নিল উপত্যকা বৈসরনে তখন প্রায় জনা চল্লিশেক পর্যটকের ভিড়৷ হঠাৎ জঙ্গল থেকে বেরিয়ে এল সশস্ত্র জঙ্গিরা ৷ তাদের হাতে অত্যাধুনিক অস্ত্র৷ সাধারণ পর্যটকদের ঘিরে তাঁদের লক্ষ্য করে নির্দ্বিধায় এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করল জঙ্গিরা৷ বন্দুকের নলের সামনে দাঁড় করিয়ে নাম জিজ্ঞাসা হয় করা হয় পর্যটকদের। বলা হয় ‘কালমা’ পড়তে। না পড়তে পারলেই নিশ্চিত করা হয় হিন্দুত্ব। চলে গুলি। এভাবেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন একের পর এক পর্যটক৷ আহতদের কেউ সাহায্যের জন্য চিৎকার করছেন ৷ কেউ বা আতঙ্কে কথাই বলতে পারছেন না! কারও রক্তে ভেজা নিথর দেহ পড়ে রয়েছে সবুজ ঘাসের উপর ৷ মঙ্গলবার এমনই ভয়ঙ্কর জঙ্গি হামলার সাক্ষী থাকল জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁও (Pahalgam Terror Attack) জেলার বৈসরন উপত্যকা ৷

    নিশানায় হিন্দু পর্যটকরা

    কাশ্মীরের (Kashmir Terrorist Attack) পহেলগাঁওয়ে (Pahalgam) ভয়াবহ জঙ্গি হামলার পর আতঙ্কে কাঁপছে গোটা উপত্যকা। বৈসরণে যে পৈশাচিক হামলা চালায় জঙ্গিরা, প্রতক্ষদর্শীদের মুখে তার বিবরণ শুনে মানুষ কেঁপে উঠতে শুরু করেছে। বৈসরণে জঙ্গিরা যেভাবে হামলা চালায়, সেখানে নাম শুনে, পরিচয় পত্র দেখে তবেই পর্যটকদের (Kashmir Tourist) মারা হয়েছে বলে জানান প্রতক্ষ্যদর্শীরা। নাম জিজ্ঞেস করে, যাঁরা মুসলিম নন, সেই সমস্ত পর্যটকদের বেছে বেছে গুলি করা হয়েছে। প্রিয়জনকে হারিয়ে তাই কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা যায় এক তরুণীকে। তিনি স্পষ্ট জানান, তাঁর স্বামীর নাম জিজ্ঞেস করে তবেই গুলি করার কথা বলে জঙ্গিরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ছবি ভাইরাল (Viral) হতে শুরু করেছে যেখানে এক তরুণী হানিমুনে গিয়েছিলেন কাশ্মীরে। জঙ্গি হামলা হলে ওই তরুণীকে সদ্য বিবাহিত স্বামীর মৃতদেহ পাশে নিয়ে বসে থাকতে দেখা যায়। যে ছবি দেখে গোটা দেশের মানুষের চোখে জল। জঙ্গিরা নাম জিজ্ঞাসা করে, পরিচয় পত্র দেখে ইচ্ছে করে তাঁর স্বামীকে চোখের সামনে গুলি করে দেয় বলে জানান ওই তরুণী।

    ‘এটা মুসলিম নয়, গুলি করো

    ভাইরাল একটি ভিডিওয় (Pahalgam Terror Attack) এক মহিলা বলেন, “আমরা ভেলপুরি খাচ্ছিলাম, তখনই ওরা এসে আমার স্বামীকে গুলি করে। একজন বলে উঠল, ‘এটা মুসলিম নয়’ – তারপরই ওকে গুলি করে মেরে ফেলল।” এক প্রতক্ষ্যদর্শীর কথায়, সন্ত্রাসীরা মানুষের ধর্ম নিশ্চিত করতে তাদের ‘কালমা’ পড়তে বলে – ইসলাম ধর্মে কালমা হলো ইমানের ঘোষণা। যারা এটি পড়তে পারেননি, তাদের অমুসলিম মনে করে হত্যা করা হয়। এছাড়াও, কিছু ক্ষেত্রে জঙ্গিরা লোকজনকে বিবস্ত্র করে ‘খৎনা’ আছে কি না তা পরীক্ষা করে, এবং যাদের মধ্যে খৎনা পাওয়া যায়নি, তাদের গুলি করে হত্যা করা হয়। জঙ্গিদের পরনে ছিল সেনাবাহিনীর পোশাক। তাই প্রথমে তাদের বোঝা যায়নি, বলেও জানান পর্যটকরা। কাশ্মীরে মঙ্গলবার জঙ্গি হামলায় এখনও পর্যন্ত বাংলার ৩ জন-সহ ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহত দক্ষিণ কলকাতার বৈষ্ণবঘাটা লেনের বাসিন্দা বিতান অধিকারী। কাশ্মীরে জঙ্গি হামলায় নিহত বেহালার বাসিন্দা সমীর গুহ। প্রাণ গিয়েছে হায়দরাবাদে কর্মরত আইবি অফিসার পুরুলিয়ার বাসিন্দা মণীশ রঞ্জনের। জঙ্গিদের গুলিবৃষ্টিতে নিহতদের মধ্যে ২ জন বিদেশি নাগরিকও রয়েছেন। পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় আহত অন্তত ২০ জন ।

    ‘মোদিকে গিয়ে বোলো

    ফিরে এল বিবেক অগ্নিহোত্রী ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’ (The Kashmir Files)-এর স্মৃতি। ১৯৯০ সালের পয়লা জানুয়ারি সমগ্র কাশ্মীরে (Kashmir) যে পাঁচ হাজার হিন্দু পণ্ডিত ব্রাহ্মণদের গণহত্যা সংঘটিত হয়েছিল, তার উপর ভিত্তি করেই এই ছবি। এখানে দেখা যায় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে জেহাদিদের হিংস্র স্লোগান “কাশ্মীর শুধু কাশ্মীরি মুসলমানদের, এখানে থাকতে হলে আজাদিকে সমর্থন করো, নইলে কাশ্মীর হবে হিন্দু পুরুষহীন, শুধু হিন্দু মহিলারা থাকবেন।” এদিনও যেন তাই হল। জম্মু-কাশ্মীরে কর্নাটক থেকে সপরিবারে ছুটি কাটাতে গিয়েছিলেন মঞ্জুনাথ রাও। মঙ্গলবার পহেলগাঁওয়ের (Pahalgam Terror Attack) বৈসরন উপত্যকায় জঙ্গিদের গুলিতে মৃত্যু হয় মঞ্জুনাথের। অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচেছেন স্ত্রী পল্লবী এবং তাঁদের পুত্র। কর্নাটকের শিবমোগ্গার বাসিন্দা পল্লবীর দাবি, অতর্কিত তাঁদের আক্রমণ করে তিন থেকে চার জন। জঙ্গিহানার বিবরণ দিতে গিয়ে পল্লবী বলেন, ‘‘স্বামী-ছেলের সঙ্গে কাশ্মীর বেড়াতে এসেছিলাম। দুপুর দেড়টা নাগাদ আমরা ছিলাম পহেলগাঁওয়ে। আচমকা তিন-চার জন বন্দুক হাতে আমাদের দিকে এগিয়ে আসে। নাম জিজ্ঞাসা করে গুলি চালায় ওরা।’’ পল্লবীর দাবি, আততায়ীরা বেছে বেছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের খুন করছিল। চোখের সামনে স্বামীকে লুটিয়ে পড়তে দেখে পল্লবী আততায়ীদের বলে তারা যেন তাঁকেও মেরে দেন। কিন্তু সেটা করেনি জঙ্গিরা। পল্লবীর কথায়, ‘‘আমি ওদের কাঁদতে কাঁদতে বললাম, স্বামীকে মেরে দিয়েছ। আমাকেও মেরে ফেলো। ওদের একজন বলল, ‘না, তোমায় মারব না। এইটা মোদিকে (প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি) গিয়ে বোলো।’’

  • Pahalgam Terror Attack: নিরীহ হিন্দু নাগরিকদের বেছে বেছে নিশানা! গত আড়াই দশকে বার বার ইসলামিক সন্ত্রাসের শিকার কাশ্মীর

    Pahalgam Terror Attack: নিরীহ হিন্দু নাগরিকদের বেছে বেছে নিশানা! গত আড়াই দশকে বার বার ইসলামিক সন্ত্রাসের শিকার কাশ্মীর

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: “কাশ্মীরী পণ্ডিতোঁ, কাশ্মীর ছোড়ো”  ভূস্বর্গ কাশ্মীরে সন্ত্রাসের একটাই ধর্ম, সন্ত্রাসীদের একটাই ধর্ম। ইসলামিক সন্ত্রাসীদের একটাই স্বর “জেহাদি হও, না হয় মরো, নইলে কাশ্মীর ছাড়ো।” কখনও এলোপাথাড়ি গুলি, কখনও গ্রেনেড, আবার কখনও গাড়িবোমা! শুধু পহেলগাঁও নয়, গত ২৫ বছরে বারবার রক্তাক্ত হয়েছে ভূস্বর্গ (Jammu Kashmir)। মঙ্গলবার ফের এক ভয়ঙ্কর জঙ্গি হামলার সাক্ষী থাকল জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁও (Pahalgam Terror Attack)। যেখানে সবুজে ঘেরা বৈসরণ উপত্যকায় সাধারণ পর্যটকদের লক্ষ্য করে নির্দ্বিধায় এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করল জঙ্গিরা৷ বেছে বেছে নিশানা করা হল নিরীহ হিন্দু নাগরিকদের৷ এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় ২৬ জন পর্যটকের মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে অনুমান।

    গত সিকি শতকে বারবার রক্তাক্ত ভূস্বর্গ

    কাশ্মীর (Jammu Kashmir) উপত্যকায় বারবার সন্ত্রাসবাদের শিকার হয়েছেন হিন্দু তথা অমুসলিমরা। সাধারণ মানুষ, তীর্থযাত্রী, নিরাপত্তা কর্মী, শ্রমিক—সবাইকে একত্রে ক্ষতবিক্ষত করেছে ইসলামিক জঙ্গিরা। গত দুই দশকের নৃশংস হামলাগুলো প্রমাণ করে, এই সহিংসতার প্রকৃতি নিছক নিষ্ঠুরতা, ভয় দেখানো, আতঙ্ক সৃষ্টি।

    শিখদের উপর হামলা

    ২০০০ সালের ২১ মার্চ, অনন্তনাগের ছত্তিসিংপোড়া গ্রামে ঢুকে পড়ে জঙ্গিরা। হামলা চালানো হয় সংখ্যালঘু শিখদের উপর। মারা যান ৩৬ জন মানুষ। ওই বছরের অগাস্টে নুনওয়ান বেসক্যাম্পের কাছে হামলা হয়। ঘটনায় ২৪ জন অমরনাথ তীর্থযাত্রী সহ মোট ৩২ জন মারা যান।

    বিধানসভা ভবনে আত্মঘাতী হামলা

    ২০০১ সালের ১ অক্টোবর, শ্রীনগরে জম্মু ও কাশ্মীর (Jammu Kashmir) রাজ্য বিধানসভা ভবনে আত্মঘাতী হামলায় প্রাণ হারান ৩৬ জন, যার মধ্যে ছিলেন নিরাপত্তা কর্মী এবং নিরীহ সাধারণ নাগরিক। রাজনৈতিক পরিকাঠামোর কেন্দ্রবিন্দুকে লক্ষ্য করে এই হামলা ছিল নজিরবিহীন। ওই বছরই অনন্তনাগের শেশনাগ বেসক্যাম্পে ফের অমরনাথ যাত্রীদের লক্ষ্য করে হামলা চালায় জঙ্গিরা। এবার প্রাণ হারান ১৩জন।

    অমরনাথ যাত্রীদের উপর হামলা

    এর ঠিক এক বছর পরে, ২০০২ সালে, চন্দনওয়ারি বেস ক্যাম্পে অমরনাথ যাত্রার সময় এক জঙ্গি হামলায় নিহত হন ১১ জন তীর্থযাত্রী। ধর্মীয় আস্থার জায়গাকেও রেহাই দেয়নি জঙ্গিরা। ২০০২ সালেরই ২৩ নভেম্বর, দক্ষিণ কাশ্মীরের লোয়ার মুন্ডায় জম্মু-শ্রীনগর হাইওয়েতে একটি শক্তিশালী আইইডি বিস্ফোরণে প্রাণ যায় ১৯ জনের। নিহতদের মধ্যে ছিলেন ৯ জন নিরাপত্তা কর্মী, ৩ জন নারী ও ২ জন শিশু।

    কাশ্মীরি পণ্ডিতদের উপর হামলা

    ২০০৩ সালের মার্চ মাসে পুলওয়ামার নন্দিমার্গ গ্রামে পাকিস্তানের মদতপুষ্ট জঙ্গিদের বর্বর হামলায় নিহত হন ২৪ জন কাশ্মীরি পণ্ডিত, যাদের মধ্যে ১১ জন নারী ও ২ জন শিশু ছিলেন। এই হত্যাকাণ্ড কাশ্মীরি পণ্ডিত সম্প্রদায়ের উপত্যকা ছাড়ার প্রক্রিয়াকে আরও গতি দেয়।

    পুলওয়ামার এক জনবহুল বাজারে হামলা

    ২০০৫ সালের ১৩ জুন পুলওয়ামার এক জনবহুল বাজারে বিস্ফোরক বোঝাই গাড়ি বিস্ফোরিত হলে প্রাণ যায় ১৩ জনের। নিহতদের মধ্যে ছিলেন ২ জন স্কুল পড়ুয়া ও ৩ জন সিআরপিএফ জওয়ান। আহত হন ১০০-র বেশি মানুষ।

    পর্যটক বোঝাই বাসে হামলা

    ২০০৬ সালের ২৬ মে, শ্রীনগরের উপকণ্ঠে জাকুরার বাটাপোরা এলাকায় সন্ত্রাসীবাদীরা একটি পর্যটক বোঝাই বাসে গ্রেনেড ছুড়লে চার জন পর্যটক নিহত এবং ছ’জন আহত হয়েছিলেন। নিহতেরা ছিলেন গুজরাটের বাসিন্দা। ঘটনাচক্রে, সে সময় গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন নরেন্দ্র মোদি। সে বছরেরই ১১ জুলাই শ্রীনগরেরই লালচকে পর্যটক বোঝাই বাসে ফের গ্রেনেড হামলা হয়েছিল। ওই ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছিলেন এক জন। সে দিন শ্রীনগরের বিভিন্ন প্রান্তে পাঁচটি হামলায় মোট আট জনের মৃত্যু হয়েছিল। ২০০৬ সালেরই জুনে কুলগামে ৯ জন বিহারী ও নেপালি শ্রমিককে হত্যা করে জঙ্গিরা, স্পষ্ট করে দেয়, এই সন্ত্রাস কেবল রাজনৈতিক নয়, বরং সমাজ-অর্থনীতিক কাঠামোকে ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা।

    মানবিকতা নেই, নেই কোনও ধর্মীয় বোধ

    ২০১৭ সালের ১০ জুলাই, কুলগামে ফের অমরনাথ যাত্রার বাসে হামলা হয়। নিহত হন ৮ জন তীর্থযাত্রী। দক্ষিণ কাশ্মীরের বোয়েতাং অঞ্চলে ঘটে এই ঘটনা। বছর গড়ালেও হুমকি কাটেনি। বারবার রক্তাক্ত হয়েছে ভূস্বর্গ (Jammu Kashmir)। ভিনরাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিকেরা খুন হয়েছেন হামেশাই। অমরনাথ, বৈষ্ণোদেবী বা অন্যান্য ধর্মস্থানে আগত পুণ্যার্থীরাও বার বার হামলার শিকার হয়েছেন। প্রায় দু’দশকের ব্যবধানে কাশ্মীর উপত্যকার ফের মঙ্গলবার এত বড় হামলার (Pahalgam Terror Attack) শিকার হলেন পর্যটকেরা। এই ধারাবাহিক হামলাগুলোর দিকে তাকালে স্পষ্ট হয়, সন্ত্রাসবাদের কোনও মানবিকতা নেই, নেই কোনও ধর্মীয় বোধ। ধর্মের নামে যারা হত্যা চালায়, তারা মানবতা থেকেই বিচ্যুত। তারা কাশ্মীরের ভালো চায় না। কাশ্মীরীদের রুজি-রুটি পর্যটন সেখানেই ধাক্কা দিল জঙ্গিরা। আসলে সন্ত্রাসের লক্ষ্যই হল জন্নত-এ-কাশ্মীরকে জাহান্নামে পরিণত করা।

  • Amarnath Yatra 2022: অপেক্ষার আর মাত্র তিনদিন! অমরনাথ যাত্রা ঘিরে নিরাপত্তা তুঙ্গে

    Amarnath Yatra 2022: অপেক্ষার আর মাত্র তিনদিন! অমরনাথ যাত্রা ঘিরে নিরাপত্তা তুঙ্গে

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মাত্র তিন দিনের অপেক্ষা। দীর্ঘ দু বছর পর শুরু হতে চলছে বার্ষিক অমনাথ যাত্রা ( Amarnath Yatra)। এই তীর্থযাত্রায় কোনও রকম নাশকতামূলক কাজ রুখতে সচেষ্ট কেন্দ্র। সে কারণে সমগ্র জম্মু-কাশ্মীরকে (Kashmir) নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে। শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে বলে জানালেন এক নিরাপত্তা আধিকারিক।

    সেনা সূত্রে খবর, অমরনাথ যাত্রার তীর্থযাত্রীদের উপর হামলা রুখতে ও সন্ত্রাসবাদীদের অনুপ্রবেশের প্রচেষ্টা প্রতিরোধ করতে উপত্যকার বিভিন্ন প্রান্তে অভিযান চালানো হয়েছে। সীমান্তে কোনও সুড়ঙ্গ রয়েছে কিনা তা সনাক্ত করতেও চালানো হয়েছে তল্লাশি। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ, সিআরপিএফ (CRPF) এবং বিএসএফ (BSF) যৌথভাবে সাম্বা, কাঠুয়া এবং জম্মু জেলার সামনের গ্রামে অনুসন্ধান অভিযান চালিয়েছে। 

    অমরনাথ যাত্রীদের ( Amarnath Yatra) যাত্রা সুরক্ষিত রাখার জন্য সীমান্ত ও হাইওয়ে গ্রিড শক্তিশালী করতে অতিরিক্ত চেকপোস্টও স্থাপন করা হয়েছে। উল্লেখ্য, ৪৩ দিনের যাত্রাটি দুটি পাহাড়ি রুট থেকে শুরু হওয়ার কথা। একটি হল দক্ষিণ কাশ্মীরের অনন্তনাগের পহেলগামের (Pahalgam) নুনওয়ান থেকে গুহা মন্দির পর্যন্ত ৪৮ কিলোমিটার পথ এবং দ্বিতীয়টি হল মধ্য কাশ্মীরের গান্ডারবাল জেলার বালতাল (Baltal) থেকে ১৪ কিলোমিটার ছোট পথ। দুই বছরের ব্যবধান কাটিয়ে আগামী ৩০ জুন থেকে অমরনাথ যাত্রা শুরু হবে। শেষ হবে রাখী পূর্ণিমার দিন ১১ আগস্ট।

    অমরনাথ যাত্রা উপলক্ষে জম্মু ও কাশ্মীরে নিয়োজিত নিরাপত্তা কর্মী, বিশেষ করে সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সকে হাই-টেক গ্যাজেটে দিয়ে সজ্জিত করা হয়েছে। নিরাপত্তার কারণে এই বিশেষ গ্যাজেটের নাম গোপন রাখা হয়েছে। তাছাড়াও তীর্থযাত্রায় নজরদারির জন্য ড্রোনের সংখ্যাও বাড়ানো হচ্ছে বলে সেনা সূত্রে খবর। ২৪ ঘণ্টা সিসিটিভি এবং ড্রোনের নজরদারি চলবে। ১১ এপ্রিল থেকেই শুরু হয়েছে অমরনাথ যাত্রার জন্য নাম নথিভুক্তকরণ প্রক্রিয়া। ১৩ বছরের নীচে, ৭৫ বছরের বেশি বয়সী এবং কোনও গর্ভবতী মহিলাকে যাত্রার অনুমতি দেওয়া হয়নি। যাত্রার জন্য মেডিক্যাল ফিট সার্টিফিকেট এবং আধার কার্ড অবশ্যই লাগবে।

LinkedIn
Share