Tag: ramakrishna

ramakrishna

  • Ramakrishna 102: “ব্যক্তি সদা-সর্বদা ঈশ্বরচিন্তা করে সেই জানতে পারে তাঁর স্বরূপ কি?”

    Ramakrishna 102: “ব্যক্তি সদা-সর্বদা ঈশ্বরচিন্তা করে সেই জানতে পারে তাঁর স্বরূপ কি?”

    সিঁথি ব্রাহ্মসমাজ-দর্শন ও শ্রীযুক্ত শিবনাথ প্রভৃতি ব্রাহ্মভক্তদিগের সহিত কথোপকথন ও আনন্দ

    পঞ্চম পরিচ্ছেদ

    ভক্ত্যা ত্বনন্যায়া শক্য অহমেবংবিধোহর্জুন।

    জ্ঞাতুং দ্রষ্টাং চ তত্ত্বেন প্রবেষ্টুং চ পরন্তপ।।

    গীতা—১১/৫৪/

    ঈশ্বরদর্শন—সকরা না নিরাকার

    ব্রাহ্মভক্ত—মহাশয়! ঈশ্বরের স্বরূপ নিয়ে এত মত কেন? কেউ বলে সাকার—কেউ বলে নিরাকার—আবার সাকারবাদী নিকট নানারূপের কথা শুনতে (Kathamrita) পাই। এত গণ্ডগোল কেন?

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—যে ভক্ত যেরূপ দেখে, সে সেইরূপ মনে করে। বাস্তবিক কোনও গণ্ডগোল নাই। তাঁকে কোনরকমে যদি একবার লাভ করতে পারা যায়, তাহলে তিনি সব বুঝিয়ে দেন। সে পাড়াতেই গেলে না—সব খবর পাবে কেমন করে?

    একটা গল্প শোনঃ

    একজন বাহ্যে গিছিল। সে দেখলে যে গাছের উপর একটি জানোয়ার রয়েছে। সে এসে আর একজনকে বললে, দেখ অমুক গাছে একটি সুন্দর লাল রঙের জানোয়ার দেখে এলাম। লোকটি উত্তর করলে, আমি যখন বাহ্যে গিছিলাম আমিও দেখেছি—তা সে লাল রঙ হতে যাবে কেন? সে জে সবুজ রঙ! আর-একজন বললে (Kathamrita), না না—আমি দেখেছি হলদে! এইরূপে আরও কেউ কেউ বললে, না জরদা, বগুনী, নীল ইত্যাদি। শেষে ঝগড়া। তখন তারা গাছতলায় গিয়ে দেখে, একজন লোক বসে আছে। তাকে জিজ্ঞাসা করাতে সে বললে, আমি এই গাছতলায় থাকি, আমি সে জানোয়ারটিকে বেশ জানি—তোমার যা যা বলছ, সব সত্য—সে কখন লাল, কখন সবুজ, কখন হলদে, কখন নীল আরও সব কত কী হয়! বহুরূপী। আবার কখন দেখি, কোন রঙই নাই। কখন সগুণ, কখন নির্গুণ।

    অর্থাৎ যে ব্যক্তি সদা-সর্বদা ঈশ্বরচিন্তা (Ramakrishna) করে সেই জানতে পারে তাঁর স্বরূপ কি? সে ব্যক্তিই জানে যে, তিনি নানারূপে দেখা দেন, নানাভাবে দেখা দেন—তিনি সগুণ, আবার তিনি নির্গুণ। যে গাছতলায় থাকে, সেই জানে যে বহুরূপীর নানা রঙ—আবার কখন কখন কোন রঙই থাকে না। অন্য লোক কেবল তর্ক ঝগড়া করে কষ্ট পায়।

    আরও পড়ুনঃ “মহাশয় ঈশ্বরকে কি দেখা যায়? যদি দেখা যায়, দেখতে পাই না কেন?”

    আরও পড়ুনঃ “বিবেক, বৈরাগ্যরূপ হলুদ মাখলে তারা আর তোমাকে ছোঁবে না”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “পশ্চিমে বিবাহের সময় বরের হাতে ছুরি থাকে, বাংলাদেশে জাঁতি থাকে”

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 101: “মহাশয় ঈশ্বরকে কি দেখা যায়? যদি দেখা যায়, দেখতে পাই না কেন?”

    Ramakrishna 101: “মহাশয় ঈশ্বরকে কি দেখা যায়? যদি দেখা যায়, দেখতে পাই না কেন?”

    সিঁথি ব্রাহ্মসমাজ-দর্শন ও শ্রীযুক্ত শিবনাথ প্রভৃতি ব্রাহ্মভক্তদিগের সহিত কথোপকথন ও আনন্দ

    চতুর্থ পরিচ্ছেদ

    যতো বাচো নিবর্তন্তে। অপ্রাপ্য মনসা সহ।

    (তৈত্তিরীয় উপনিষদ/)

    ব্রহ্মের স্বরূপ মুখে বলা যায় না

    আমি কিন্তু যায় না

    আমি মলে ঘুচিবে জঞ্জাল (হাস্য)। হাজার বিচার কর, আমি যায় না। তোমার পক্ষে ভক্ত আমি এ-অভিমান ভাল।

    ভক্তের (Ramakrishna) পক্ষে সগুণ ব্রহ্ম। অর্থাৎ তিনি সগুণ—একজন ব্যক্তি হয়ে, রূপ হয়ে দেখা দেন। তিনি প্রার্থনা শুনেন। তোমরা যে প্রার্থনা কর, তাঁকেই কর (Kathamrita)। তোমরা বেদান্তবাদী নও, জ্ঞানী নও—তোমরা ভক্ত। সাকাররূপ মনো আর না মানো, এসে যায় না। ঈশ্বর একজন ব্যক্তি বলে বোধ থাকলেই হল—যে ব্যক্তি প্রার্থনা শুনেন, সৃষ্টি-স্থিতি-প্রলয় করেন, যে ব্যক্তি অনন্তশক্তি।

    পঞ্চম পরিচ্ছেদ

    ভক্ত্যা ত্বনন্যায়া শক্য অহমেবংবিধোহর্জুন।

    জ্ঞাতুং দ্রষ্টাং চ তত্ত্বেন প্রবেষ্টুং চ পরন্তপ।।

    গীতা—১১/৫৪/

    ঈশ্বরদর্শন—সকরা না নিরাকার?

    একজন ব্রাহ্মভক্ত জিজ্ঞাসা (Kathamrita) করিলেন, মহাশয় ঈশ্বরকে কি দেখা যায়? যদি দেখা যায়, দেখতে পাই না কেন?

    রামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—হাঁ, অবশ্য দেখা যায়—সাকাররূপ দেখা যায়, আবার অরূপ দেখা যায়। তা তোমায় বুঝাব কেমন করে?

    ব্রাহ্মভক্ত—কি উপায়ে দেখা যেতে পারে?

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—ব্যাকুল হয়ে তাঁর জন্য কাঁদতে পার?

    লোকে ছেলের জন্য, স্ত্রীর জন্য টাকার জন্য একঘটি কাঁদে। কিন্তু ঈশ্বরের জন্য কে কাঁদছে? যতক্ষণ ছেলে চুষি নিয়ে ভুলে থাকে, মা রান্নাবান্না বাড়ির কাজ সব করে। ছেলের যখন চুষি আর ভাল লাগে না—চুষি ফেলে চিৎকার করে কাঁদে, তখন, মা ভাতের হাঁড়ি নামিয়ে দুড়দুড় করে এসে ছেলেকে কোলে লয়।

    আরও পড়ুনঃ “একটা লুনের পুতুল সমুদ্র মাপতে গিছিল…যাই নেমেছে অমনি গলে মিশে গেল”

    আরও পড়ুনঃ “বিবেক, বৈরাগ্যরূপ হলুদ মাখলে তারা আর তোমাকে ছোঁবে না”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “পশ্চিমে বিবাহের সময় বরের হাতে ছুরি থাকে, বাংলাদেশে জাঁতি থাকে”

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 100: “একটা লুনের পুতুল সমুদ্র মাপতে গিছিল…যাই নেমেছে অমনি গলে মিশে গেল”

    Ramakrishna 100: “একটা লুনের পুতুল সমুদ্র মাপতে গিছিল…যাই নেমেছে অমনি গলে মিশে গেল”

    চতুর্থ পরিচ্ছেদ

    যতো বাচো নিবর্তন্তে। অপ্রাপ্য মনসা সহ।

    (তৈত্তিরীয় উপনিষদ/)

    ব্রহ্মের স্বরূপ মুখে বলা যায় না

    কিরকম জান? যেন সচ্চিদান্নদ-সমুদ্র-কুল-কিনারা নাই—ভক্তিহিমে স্থানে স্থানে জল বরফ হয়ে যায়-বরফ আকারে জমাট বাঁধে। অর্থাৎ ভক্তের কাছে তিনি ব্যক্তভাবে, কখন কখন সাকার রূপ ধরে থাকেন। জ্ঞান সূর্য উঠলে সে বরফ গলে যায়, তখন আর ঈশ্বরকে ব্যক্তি বলে বোধ হয় না।–তাঁর রূপও দর্শন হয় না। কি তিনি মুখে বলা (Kathamrita) যায় না। কে বলবে? তিনিই নাই। তাঁর আমি আর খুঁজে পান না।

    বিচার করতে করতে আমি-টামি আর কিছুই থাকে না। পেঁয়াজের প্রথমে লাল খোসা। তুমি ছাড়ালে, তারপর সাদা পুরু খোসা। এইরূপ বরাবর ছাড়াতে ছাড়াতে ভিতরে কিছু খুঁজে পান না।

    সেখানে নিজের আমি খুঁজে পাওয়া যায় না—আর খুঁজেই বাঁ কে?—সেখানে ব্রহ্মের স্বরূপ (Ramakrishna) বোধে বোধ কিরূপ হয়, কে বলবে!

    একটা লুনের পুতুল সমুদ্র মাপতে গিছিল। সমুদ্রে যাই নেমেছে অমনি গলে মিশে গেল। তখন খবর কে দিবেক?

    পর্ণ জ্ঞানের লক্ষণ—পূর্ণ জ্ঞান হলে মানুষ চুপ হয়ে যায়। তখন আমি রূপ লুনের পুতুল সচ্চিদানন্দরূপ সাগরে গলে এক হয়ে যায়, আর একটুও ভেদবুদ্ধি থাকে না।

    বিচার করা যতক্ষণ না শেষ হয়, লোকে ফড়ফড় করে তর্ক করে। শেষ হলে চুপ হয়ে যায়। কলসী পূর্ণ হলে, কলসীর জল পুকুরের জল এক হলে আর শব্দ থাকে না। যতক্ষণ না কলসী পূর্ণ হয় ততক্ষণ শব্দ। আগেকার লোকে বলত (Kathamrita), কালাপানিতে জাহাজ গেলে ফেরে না।

    আমি কিন্তু যায় না

    আমি মলে ঘুচিবে জঞ্জাল (হাস্য)। হাজার বিচার কর, আমি যায় না। তোমার পক্ষে ভক্ত আমি এ-অভিমান ভাল।

    আরও পড়ুনঃ “জ্ঞান সূর্য উঠলে সে বরফ গলে যায়, তখন আর ঈশ্বরকে ব্যক্তি বলে বোধ হয় না”

    আরও পড়ুনঃ “বিবেক, বৈরাগ্যরূপ হলুদ মাখলে তারা আর তোমাকে ছোঁবে না”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “পশ্চিমে বিবাহের সময় বরের হাতে ছুরি থাকে, বাংলাদেশে জাঁতি থাকে”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 99: “জ্ঞান সূর্য উঠলে সে বরফ গলে যায়, তখন আর ঈশ্বরকে ব্যক্তি বলে বোধ হয় না”

    Ramakrishna 99: “জ্ঞান সূর্য উঠলে সে বরফ গলে যায়, তখন আর ঈশ্বরকে ব্যক্তি বলে বোধ হয় না”

    সিঁথি ব্রাহ্মসমাজ-দর্শন ও শ্রীযুক্ত শিবনাথ প্রভৃতি ব্রাহ্মভক্তদিগের সহিত কথোপকথন ও আনন্দ

    তৃতীয় পরিচ্ছেদ

    ক্লৈব্যং মাস্ম গমঃ পার্থ নৈতিৎ ত্বয্যুপপদ্যতে

         ক্ষুদ্রং হৃদয়দৌর্বল্যং ত্যক্তোত্তিষ্ঠ পরন্তপ।।

    গীতা—২/৩/

    বৈদ্যের মতো আচার্যও (Ramakrishna) তিনপ্রকার। ধর্মোপদেশ দিয়ে শিষ্যদের আর কোন খবর লয় না–সে আচার্য অধম। যিনি শিষ্যদের মঙ্গলের জন্য তাদের বরাবর বুঝান, যাতে তারা উপদেশগুলি (Kathamrita) ধারণা করতে পারে, অনেক অনুনয়-বিনয় করেন, ভালোবাসা দেখান– তিনি মধ্যম থাকের আচার্য। আর যখন শিষ্যেরা কোনও মতে শুনছে না দেখে কোন আচার্য জোর পর্যন্ত করেন, তাঁরে বলি উত্তম আচার্য।

    চতুর্থ পরিচ্ছেদ

    যতো বাচো নিবর্তন্তে। অপ্রাপ্য মনসা সহ।

    (তৈত্তিরীয় উপনিষদ—২/৪)

    ব্রহ্মের স্বরূপ মুখে বলা যায় না

    একজন ব্রাহ্মভক্ত জিজ্ঞাসা করিলেন, ঈশ্বর সাকার না নিরাকার?

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—তাঁর ইতি করা যায় না। তিনি নিরাকার আবার সাকার। ভক্তের জন্য তিনি সাকার। যারা জ্ঞানী অর্থাৎ জগৎকে যাদের স্বপ্নবৎ মনে হয়েছে, তাঁদের পক্ষে তিনি নিরাকার। ভক্ত জানে আমি একটি জিনিস, জগৎ একটি জিনিস। তাই ভক্তের কাছে ঈশ্বর ব্যক্তি হয়ে দেখা দেন। জ্ঞানী—যেমন বেদান্তবাদী—কেবল নেতি নেতি বিচার করে। বিচার করে জ্ঞানীর বোধে বোধে হয় যে, আমি মিথ্যা, জগৎও মিথ্যা—স্বপ্নবৎ। জ্ঞানী ব্রহ্মকে বোধ বোধ করে। তিনি যে কি, মুখে বলতে পারে না।

    কিরকম জান? যেন সচ্চিদানন্দ-সমুদ্র-কুল-কিনারা নাই—ভক্তিহিমে স্থানে স্থানে জল বরফ হয়ে যায়-বরফ আকারে জমাট বাঁধে। অর্থাৎ ভক্তের কাছে তিনি ব্যক্তভাবে, কখন কখন সাকার রূপ ধরে থাকেন। জ্ঞান সূর্য উঠলে সে বরফ গলে যায়, তখন আর ঈশ্বরকে ব্যক্তি বলে বোধ হয় না।–তাঁর রূপও দর্শন হয় না। কি তিনি মুখে বলা (Kathamrita) যায় না। কে বলবে? তিনিই নাই। তাঁর আমি আর খুঁজে পান না।

    আরও পড়ুনঃ “বিবেক, বৈরাগ্যরূপ হলুদ মাখলে তারা আর তোমাকে ছোঁবে না”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “পশ্চিমে বিবাহের সময় বরের হাতে ছুরি থাকে, বাংলাদেশে জাঁতি থাকে”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 98: “তাঁর কাছে জোর কর, তিনি তো পর নন, তিনি আপনার লোক”

    Ramakrishna 98: “তাঁর কাছে জোর কর, তিনি তো পর নন, তিনি আপনার লোক”

    সিঁথি ব্রাহ্মসমাজ-দর্শন ও শ্রীযুক্ত শিবনাথ প্রভৃতি ব্রাহ্মভক্তদিগের সহিত কথোপকথন ও আনন্দ

    তৃতীয় পরিচ্ছেদ

    ক্লৈব্যং মাস্ম গমঃ পার্থ নৈতিৎ ত্বয্যুপপদ্যতে

      ক্ষুদ্রং হৃদয়দৌর্বল্যং ত্যক্তোত্তিষ্ঠ পরন্তপ।।

    গীতা—২/৩/

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—ভক্তির তমঃ যার হয়, তার বিশ্বাস জ্বলন্ত। ঈশ্বরের কাছে সে রূপ ভক্ত জোর করে। যেন ডাকাতি করে ধন কেড়ে লওয়া। মারো কাটো বাঁধো! এইরূপ ডাকাত-পড়া ভাব।

    ঠাকুর ঊর্ধব দৃষ্টি, তাঁহার প্রেমরসাভিসিক্ত কণ্ঠে গাহিতেছেনঃ (Kathamrita)

    গয়া গঙ্গা প্রভাসাদি কাশী কাঞ্চী কেবা চায়।

    কালী কালী কালী বলে আমার অজপা যদি ফুরায়।।

    ত্রিসন্ধ্যা যে বলে কালী, পূজা সন্ধ্যা সে কি চায়।

    সন্ধ্যা তার সন্ধানে ফেরে, কভু সন্ধি নাহি পায়।।

    দয়া ব্রত দান আদি, আর কিছু না মনে লয়।

    মদনের যাগযজ্ঞ, ব্রহ্মময়ীর রাঙা পায়।।

    কালীনামের এত গুণ, কেবা জানতে পারে তায়।

    দেবাদিদেব মহাদেব, যাঁর পঞ্চমুখে গুণ গায়।।

    ঠাকুর ভাবোন্মত্ত, যেন অগ্নিমন্ত্রে দীক্ষিত হইয়া গাহিতেছেনঃ

    নামমাহাত্ম্য ও পাপ—তিন প্রকার আচার্য

    আমি দুর্গা দুর্গা বলে মা যদি মরি।

    আখেরে এ-দীনে, না তারো কেমনে, জানা (Kathamrita) যাবে গো শঙ্করী।

    কি! আমি তাঁর না করেছি—আমার আবার পাপ! আমি তাঁর ছেলে। তাঁর ঐশ্বর্যের অধিকারী! এমন রোখ হওয়া চাই!

    তমোগুণকে মোড় ফিরিয়ে দিলে ঈশ্বরলাভ (Ramakrishna) হয়। তাঁর কাছে জোর কর, তিনি তো পর নন, তিনি আপনার লোক। আবার দেখ, এই তমোগুণকে পরের মঙ্গলের জন্য ব্যবহার করা যায়। বৈদ্য তিনপ্রকার। উত্তম বৈদ্য, মধ্যম বৈদ্য, অধম বৈদ্য। যে বৈদ্য এসে নাড়ী টিপে ঔষধ খেও হে এই কথা বলে চলে যায়, সে-অধম বৈদ্য—রোগী খেলে কিনা এ-খবর সে লয় না। যে বৈদ্য রোগীকে ঔষধ খেতে অনেক করে বুঝায়—যে মিষ্ট কথাতে বলে, ওহে ঔষধ না খেলে কেমন করে ভাল হবে। লক্ষ্মীটি খাও, আমি নিজে ঔষধ মেড়ে দিচ্ছি খাও—সে মধ্যম বৈদ্য। আর যে বৈদ্য, রোগী কোনও মতে খেলে না দেখে বুকে হাঁটু দিয়ে, জোর করে ঔষুধ খাইয়ে দেয়—সে উত্তম বৈদ্য। এই বৈদ্যের তমোগুণ, এ-গুণে রোগীর মঙ্গল হয়, অপকার হয় না।

     

    আরও পড়ুনঃ “সংসারীর তমোগুণের লক্ষণ—নিদ্রা, কাম, ক্রোধ, অহংকার”

    আরও পড়ুনঃ “বিবেক, বৈরাগ্যরূপ হলুদ মাখলে তারা আর তোমাকে ছোঁবে না”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “পশ্চিমে বিবাহের সময় বরের হাতে ছুরি থাকে, বাংলাদেশে জাঁতি থাকে”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ranaghat: ব্রহ্মডাঙা থেকে রানাঘাট! নামকরণের পিছনে লুকিয়ে রয়েছে রোমহর্ষক কাহিনি

    Ranaghat: ব্রহ্মডাঙা থেকে রানাঘাট! নামকরণের পিছনে লুকিয়ে রয়েছে রোমহর্ষক কাহিনি

    হরিহর ঘোষাল

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: শিয়ালদা-কৃষ্ণনগর লাইন দিয়ে ট্রেনে যেতে যেতে সকলেরই নজরে পড়ে রানাঘাট (Ranaghat) স্টেশন। এই স্টেশনের বুক চিড়ে প্রথম ট্রেন গেদে হয়ে কুষ্টিয়া (বাংলাদেশ) চলে গিয়েছিল। বহু ইতিহাসের সাক্ষী এই শহর। নদিয়া জেলার অন্যতম প্রাচীন জনপদ রানাঘাট। বহু মনীষীর স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে এই রানাঘাটে। স্বাধীনতা সংগ্রামে অন্যতম ভূমিকা পালন করেছিলেন রানাঘাটেরই বীর সন্তানেরা। রানাঘাট রত্নগর্ভা এক বনেদি শহর। লিককের পথ ধরে তাই অনায়াসেই বলা যায়, “যার আছে পুঁজিপাট, সে থাকে রানাঘাট”। পুঁজি মানে অর্থের পুঁজি শুধু নয়, শিক্ষা সংস্কৃতি, কৃষ্টি, আভিজাত্য, ইত্যাদি সব কিছুতে পুঁজিপতি মানুষ আছেন নদিয়ার (Nadia) রানাঘাটে।

    ব্রহ্মডাঙা থেকে রানাঘাট! (Ranaghat)

    রানাঘাট শহরের নাম নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে। তবে, কোনটা প্রামাণ্য, তা সঠিকভাবে জানা যায়নি। একটি সূত্রে পাওয়া গিয়েছে, এক সময় রানাঘাটের নাম ছিল ব্রহ্মডাঙা। মুঘল সম্রাট আকবরের রাজস্ব সচিব রানা টোডরমল তৎকালীন ব্রহ্মডাঙায় জমি জরিপের কাজে এসেছিলেন বলে ব্রহ্মডাঙার নাম রানাঘাট হয়ে গিয়েছিল। ইতিহাসবিদ প্রিঙ্গিলের দাবি, অষ্টাদশ শতাব্দীতে রণ বা রানা নামে এক দুধর্ষ ডাকাত এই এলাকাকে তাঁর ঘাঁটিতে পরিণত করেন। সেই ডাকাত রানার নামেই রানাঘাট। এই তথ্যটিকে বেশির ভাগ মানুষ সঠিক বলে মনে করেন। আবার নদিয়ার মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্রর দ্বিতীয় রানির বাড়ি রানাঘাট সংলগ্ন নোকাড়ি গ্রামে ছিল। তাই রানির ঘাট থেকেও রানাঘাট হতে পারে।

    রানাঘাটে রবীন্দ্রনাথ

    জানা গিয়েছে, কবি নবীনচন্দ্র সেন রানাঘাটের (Ranaghat) মহকুমা শাসক থাকাকালীন ১৮৯৪ সালের ৪ সেপ্টেম্বর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর স্বয়ং তাঁর বাংলোয় এসেছিলেন। সেই স্মৃতি আঁকড়ে ফি-বছর ওই তারিখে এখনও কবিমিলন  উৎসব হয় রানাঘাটের মহকুমা শাসকের বাংলোয়। রবীন্দ্রনাথের প্রথম সঙ্গীত-শিক্ষাগুরু বিষ্ণুচরণ চক্রবর্তী রানাঘাটের কায়েতপাড়ায় জন্মেছিলেন। রাজা রামমোহন রায় তাঁকে ব্রাহ্মসমাজের গায়ক হিসেবেও নিয়েছিলেন। বিদ্যাসাগরের পৃষ্ঠপোষকতায় পন্ডিত কালীময় ঘটকের ‘চরিতাষ্টক’ বই এক সময় স্কুলের পাঠ্যপুস্তক হয়েছিল। কালীময়ের শিক্ষাজীবন শুরু হয়েছিল এখানকার ‘গুরুমশাই’ পাঠশালায়। নদিয়া বিষয়ক প্রামাণ্য একটি বই ‘নদিয়া কাহিনী’। এই আকর গ্রন্থটির লেখক কুমুদনাথ মল্লিক রানাঘাটের সুসন্তান। এখনকার কবি জয় গোস্বামীর নিজের শহর রানাঘাট। সব মিলিয়ে গুণী মানুষের ভিড় ও বনেদিয়ানায় সমৃদ্ধ এ শহর।

    রানাঘাটে রামকৃষ্ণ!

    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঠাকুর রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব একবার রানাঘাটের (Ranaghat) চূর্ণী তীরবর্তী কলাইঘাটায় এসেছিলেন। রানি রাসমণির জামাতা মথুরচন্দ্র বিশ্বাসকে নিয়ে তিনি আদিবাসী অধ্যূষিত কলাইঘাটা বটতলায় যান। স্বাভাবিকভাবেই গ্রামবাসীরা ঠাকুরকে দেখতে সেখানে সমবেত হন। তিনি শিশুদের হতদরিদ্র রূপ দেখে ব্যথিত হন। ঠাকুর মথুরচন্দ্রকে বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত এদের অন্ন এবং পোশাকের ব্যবস্থা না হচ্ছে, বটগাছের নীচে তিনি বসে থাকবেন। মথুরবাবু ঠাকুরের কথামতো অসহায় শিশুদের জন্য অন্নবস্ত্রের ব্যবস্থা করেন। ঠাকুর তাতে খুশি হয়ে মথুরবাবুর সঙ্গে কলকাতায় ফিরে আসেন। রামকৃষ্ণ ভক্তরা এই তীর্থস্থানে একটি রামকৃষ্ণ স্মৃতিভবন নির্মাণের চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু কিছু মানুষের বিরোধিতায় সেটা সফল হয়নি। বর্তমানে কলাইঘাটার প্রায় বিপরীত দিকে অবকাশ পার্কের কাছে রামকৃষ্ণ ভক্তবৃন্দের অনুরোধে রানাঘাট পুরসভার উদ্যোগে ভবন তৈরি করা হয়েছে। নাম দেওয়া হয়েছে, রামকৃষষ্ণালয়।

     রানাঘাট পুরসভার অতীত-বর্তমান

    ১৮৬৪ খ্রিস্টাব্দের ২১ সেপ্টেম্বর রানাঘাট (Ranaghat) পুরসভার প্রতিষ্ঠা হয়। শুরুতে ১৪ জন কমিশনার ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ৯ জনই মনোনীত। পদাধিকার বলে ৫ জন পুরসভার কার্যনির্বাহক সমিতির সদস্য হন। পুরসভার গৃহীত উপবিধি অনুমোদন করতেন লেফটেন্যান্ট গভর্নর। এখন পুরসভার কাউন্সিলররা সাধারণ মানুষের ভোটে নির্বাচিত হন। রানাঘাট মহকুমার মধ্যে শান্তিপুর পুরসভা রানাঘাটের থেকেও পুরানো। জেলার প্রথম পুরসভা শান্তিপুর ১৮৫৩ সালে তৈরি হয়। এর ১১ বছর পর রানাঘাট পুরসভার প্রতিষ্ঠা।

    রানাঘাটের রসগোল্লা

    রসগোল্লার উদ্ভাবক কে? বিরোধ শুধু বাংলা-ওড়িশায় নয়, বিরোধ বাংলার মধ্যেও। বাগবাজারের নবীনচন্দ্র দাসকেই রসগোল্লার উদ্ভাবক বলে ধরা হয়। ১৮৬৮ সালে নবীনচন্দ্র রসগোল্লা তৈরি করেন। কিন্তু অনেকের মতে, রসগোল্লার আসল উদ্ভাবকের নাম হারাধন মণ্ডল। হারাধন মণ্ডল শান্তিপুরের ফুলিয়ার মানুষ। রানাঘাটের পালচৌধুরীদের হালুইকর ছিলেন। তিনিই রসের মধ্যে ছানার ডেলা ফেলে একটি অভিনব মিষ্টান্ন প্রস্তুত করেন। পালচৌধুরীরা তার নাম দেয় রসগোল্লা। রসগোল্লা ছাড়া, রানাঘাটে অনেক কাল ধরে চলে আসা মিষ্টান্ন দ্রব্যের মধ্যে রয়েছে পান্তুয়া, গজা, অমৃতি প্রভৃতি।

     রানাঘাটের সংস্কৃতি

    রানাঘাট শহরে এক সময় প্রতিটি বাড়িতে সন্ধ্যাপ্রদীপ প্রজ্বলনের মতো সঙ্গীতের রেওয়াজ হত। মার্গ সঙ্গীতের পীঠস্থান ছিল রানাঘাট। মূলত, পালচৌধুরী পরিবারের পৃষ্ঠপোষকতায় এবং পালচৌধুরীদের সভাগায়ক নগেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের উদ্যোগে দেশ-বিদেশের উচ্চাঙ্গ শিল্পীদের মিলনমেলায় পরিণত হত। শ্রীজান বাঈ, দিলজান, ইমন বাঈ, লালাকুন্দ, আহম্মদ খাঁ সাহেবের মতো উত্তর ভারতের সেরা গায়কেরা এই আসরে নিয়মিত আসতেন। এই ভাবেই নগেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য তাঁর দুই প্রখ্যাত শিষ্য নগেন্দ্রনাথ দত্ত ও নির্মলকুমার চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে রানাঘাট ঘরানার জন্ম দেন। নিধুবাবু প্রবর্তিত বাংলা টপ্পা ধারার সঙ্গে লখনউ ঘরানার মিলনে এক বিশেষ টপ্পা ধারার সৃষ্টি হয়। এই ঘরানার পরবর্তী বিখ্যাত শিল্পী ছিলেন শিবকুমার চট্টোপাধ্যায় এবং ডাঃ অঞ্জলি মুখোপাধ্যায়। নগেন্দ্রনাথ দত্তের শিষ্য ছিলেন ভীষ্মদেব চট্টোপাধ্যায়।

     রানা ডাকাতের কালীমন্দির

    রানাঘাটের দ্রষ্টব্য স্থানগুলি হল-পালচৌধুরীদের পূর্বতন ভদ্রাসনের প্রাচীরের মধ্যে একই ভিতের উপর প্রতিষ্টিত জোড়া শিবমন্দির। মন্দিরে টেরাকোটার কাজ আছে। চূর্ণী নদীর তীরে বড়বাজারে জগন্নাথ-সুভদ্রা-বলরামের মন্দির। জমিদার রতন পালচৌধুরীর বিধবা পত্নী উজ্জ্বলমণি দাসীর প্রচেষ্টায় ৯৫ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মিত নিস্তারিণী মন্দির, রানা ডাকাতের প্রতিষ্ঠিত সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দির রয়েছে। সেখানে পুরানো ঐতিহ্য মেনেই পুজো হয়। এছাড়া রানাঘাট শহরের স্কুলমোড়ে প্রতিষ্ঠিত চিন্ময়ী ও মৃন্ময়ী মন্দির, ব্রজবল্লভ মন্দির জহুরা কালীবাড়ি এবং রাধাবল্লভ মন্দির রয়েছে।

    এশিয়ার প্রথম রবীন্দ্র ভবন রানাঘাটে!

    এশিয়ার প্রথম রবীন্দ্র ভবন তৈরি হয়েছিল এই শহরে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম-সহ বিশিষ্ট মনীষীদের পদধূলিতে ধন্য হয়েছে এই শহর। সঙ্গীত, নাটকের পাশাপাশি খেলাধুলাও সুনাম কুড়িয়েছে রানাঘাট। এই শহরের প্রথিতযশা মানুষদের মধ্যে রয়েছেন রবীন্দ্র জীবনীকার প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ পণ্ডিত কালীময় ঘটক, নদিয়া (Nadia) কাহিনীর রচিয়তা রায়বাহাদুর কুমুদনাথ মল্লিক,কলকাতার প্রাক্তন মেয়র সন্তোষকুমার বোস, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন সহ উপাচার্য ভবতোষ চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ। 

    রানাঘাটে সংবাদপত্র

    ব্রিটিশদের সময় রানাঘাটে সংবাদপত্র প্রকাশিত হতে শুরু করে। কবি গিরিজানাথ মুখোপাধ্যায়ের হাত ধরে ১৮৯৯ সালে প্রকাশিত হয় ‘বার্তাবহ’। রানাঘাট রেল স্টেশন কাছে গিরিজানাথের পত্রিকা অফিসে বসত সাহিত্য-আড্ডা। নানা সময়ে এই শহর থেকে পল্লিচিত্র, অশনি, ছাত্রবাণী, ফ্ল্যাশ, খেলাধূলা, শ্রমিক ও সমাজ, টর্চ, সীমান্তবাণী, বাংলা বাজার, ঝড়, ফ্লিক, চ্যালেঞ্জ, সবুজসোনা, চুর্ণী, নদিয়া গৌরব, রাতু-সহ বিভিন্ন পত্রপত্রিকা প্রকাশ পেয়েছিল।

    স্বাধীনতা সংগ্রামে রানাঘাট

    বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ নন্দিনী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসেও জড়িয়ে রয়েছে রানাঘাটের নাম। নীলবিদ্রোহ, স্বদেশি আন্দোলন, অসহযোগ আন্দোলন, ভারত ছাড়ো আন্দোলনেও যোগ দিয়েছিলেন রানাঘাটের মানুষ। অসহযোগ আন্দোলনে শিবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, কেশবচন্দ্র মিত্র, নেপালচন্দ্র বন্দোপাধ্যায়, রেণুমাধব দাস, শিশিরকুমার বসু, চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুন্ঠনে সহায়রাম দাস, ভারত ছাড়ো আন্দোলনে অসীমকুমার মজুমদার, বিমলকুমার চট্টোপাধ্যায়, নৃসিংহ চৌধুরী, কুমারেশ বিশ্বাস, মহ হবিবুল্লহ, মহম্মদ কালু শেখ, শ্রীধর মুখোপাধ্যায়,পটল মুস্তাফি-সহ অনেকেই রয়েছেন সেই তালিকায়।” সব মিলিয়ে এক উজ্জ্বল ঐতিহ্য রয়েছে রানাঘাটের। আর সেই ঐতিহ্যকে সমানে আগলে চলেন রানাঘাটবাসী।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 97: “সংসারীর তমোগুণের লক্ষণ—নিদ্রা, কাম, ক্রোধ, অহংকার”

    Ramakrishna 97: “সংসারীর তমোগুণের লক্ষণ—নিদ্রা, কাম, ক্রোধ, অহংকার”

    সিঁথি ব্রাহ্মসমাজ-দর্শন ও শ্রীযুক্ত শিবনাথ প্রভৃতি ব্রাহ্মভক্তদিগের সহিত কথোপকথন ও আনন্দ

    দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ

    মাঞ্চ যোহথব্যভিচারেণ ভক্তিযোগেন সবতে।

    স গুণান্‌ সমতীত্যৈতান্‌ ব্রহ্মভূয়ায় কল্পতে।।

    গীতা—১৪/২৬

    নিতাই কোনরকমে হরিনাম করিয়ে নিতেন। চৈতন্যদেব বলেছিলেন (Kathamrita), ঈশ্বরের নামে ভারী মাহাত্ম্য (Ramakrishna)। শীঘ্র ফল না হতে পারে, কিন্তু কখন না কখন এর ফল হবেই হবে। যেমন কেউ বাড়ির কার্নিসের উপর বীজ রেখে গিয়েছিল; অনেকদিন পরে বাড়ি ভূমিসাৎ হয়ে গেল, তখন সেই বীজ মাটিতে পড়ে গাছ হল ও তার ফলও হল।

    মানুষ্যপ্রকৃতি ও গুণত্রয়—ভক্তির সত্ত্ব, রজঃ, তমঃ

    যেমন সংসারীদের মধ্যে স্বত, রজঃ, তমঃ তিন গুণ আছে; তেমনি ভক্তিরও স্বত্ব, রজঃ, তমঃ তিন গুণ আছে।

    সংসারীর স্বত্বগুণ কিরকম জানো? বাড়িতে এখানে ভাঙা, ওখানে ভাঙা—মেরামত করে না। ঠাকুরদালানে (Ramakrishna) পায়রাগুলো হাগছে, উঠানে শেওলা পড়েছে হুঁশ নাই। আসবাবগুলো পুরানো, ফিটফাট করবার চেষ্টা নাই। কাপড় যা তাই একখানা হলেই হল। লোকটি খুব শান্ত, শিষ্ট, দয়ালু, অমায়িক, কারু কোনও অনিষ্ট করে না।

    সংসারীর রজোগুণের লক্ষণ আবার আছে। ঘড়ি, ঘড়ির চেন, হাতে দুই-তিনটা আঙটি। বাড়ির আসবাব খুব ফিটফাট। দেওয়ালে কুইনের ছবি, রাজপুত্রের ছবি, কোন বড় মানুষের ছবি। বাড়িটি চুনকাম করা, যেন কোনখানে একটু দাগ নাই। নানারকমের ভাল পোশাক। চাকরদেরও পোশাক। এমনি এমনি সব।

    সংসারীর তমোগুণের লক্ষণ—নিদ্রা, কাম, ক্রোধ, অহংকার এই সব।

    আর ভক্তির (Ramakrishna) সত্ত্ব আছে। যে ভক্তের স্বত্বগুণ আছে, সে ধ্যানকরে অতি গোপনে। সে হয়তো মশারির ভিতর ধ্যান করে—সবাই জানছে, ইনি শুয়ে আছেন, বুঝি রাত্রে ঘুম নাই, তাই উঠতে দেরি হচ্ছে। এদিকে শরীরের উপর আদর কেবল পেটচলা পর্যন্ত; শাকান্ন পেলেই হল। খাবার ঘটা নাই। পোশাকের আড়ম্বর নাই। বাড়ির আসবাবের জাঁকজমক নাই। আর সত্ত্বগুণী ভক্ত কখনও তোষামোদ করে ধন লয় না।

    ভক্তির রজঃ থাকলে সে ভক্তের হয়তো তিলক আছে, রুদ্রাক্ষের মালা আছে। সেই মালার মধ্যে মধ্যে আবার একটি সোনার দানা। (সকলের হাস্য) যখন পূজা করে, গরদের কাপড় পরে পূজা করে।

    আরও পড়ুনঃ “ঈশ্বরের নামে ভারী মাহাত্ম্য, শীঘ্র ফল না হতে পারে, কিন্তু…”

    আরও পড়ুনঃ “বিবেক, বৈরাগ্যরূপ হলুদ মাখলে তারা আর তোমাকে ছোঁবে না”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “পশ্চিমে বিবাহের সময় বরের হাতে ছুরি থাকে, বাংলাদেশে জাঁতি থাকে”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 96: “ঈশ্বরের নামে ভারী মাহাত্ম্য, শীঘ্র ফল না হতে পারে, কিন্তু…”

    Ramakrishna 96: “ঈশ্বরের নামে ভারী মাহাত্ম্য, শীঘ্র ফল না হতে পারে, কিন্তু…”

    সিঁথি ব্রাহ্মসমাজ-দর্শন ও শ্রীযুক্ত শিবনাথ প্রভৃতি ব্রাহ্মভক্তদিগের সহিত কথোপকথন ও আনন্দ

    দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ

    মাঞ্চ যোহথব্যভিচারেণ ভক্তিযোগেন সবতে।

    স গুণান্‌ সমতীত্যৈতান্‌ ব্রহ্মভূয়ায় কল্পতে।।

    গীতা—১৪/২৬।

    ভক্ত-সম্ভাষণে

    সহাস্যবদনে ঠাকুর শ্রীযুক্ত শিবনাথ আদি ভক্তগণের দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করিতে লাগিলেন। বলিতেছেন (Kathamrita), এই যে শিবনাথ! দেখ তোমরা ভক্ত, তোমাদের দেখে বড় আনন্দ হয়। গাঁজাখোরের স্বভাব, আর-একজন গাঁজাখোরকে দেখলে ভারী খুশি হয়। হয়তো তার সঙ্গে কোলাকুলি করে।(শিবনাথ ও সকলের হাস্য)

    সংসারী লোকের অভাব—নামমাহাত্ম্য

    যাদের দেখি ঈশ্বরে (Ramakrishna) মন নাই, তাদের আমি বলি, আমার একটু ওইখানে গিয়ে বস। অথবা বলি, যাও বেশ বিল্ডিং (রাসমণির কালীবাটির মন্দির সকল) দেখ গে। (সকলের হাস্য)

    আবার দেখেছি যে, ভক্তদের সঙ্গে হাবাতে লোক এসেছে। তাদের ভারী বিষয়বুদ্ধি। ঈশ্বরীয় কথা ভাল লাগে না। ওরা হয়তো আমার সঙ্গে অনেকক্ষণ ধরে ঈশ্বরীয় কথা বলছে। এদিকে এরা আর বসে থাকতে পারে না, ছটফট করছে। বারবার কানে কানে ফিসফিস করে বলছে, কখন যাবে—কখন যাবে। তারা হয়তো বললে, দাঁড়াও না হে, আর-একটু পরে যাব। তখন এরা বিরক্ত হয়ে বলে, তবে তোমরা কথা কও, আমরা নৌকায় গিয়ে বসি।(সকলের হাস্য)

    সংসারী লোকদের যদি বল (Kathamrita) যে সব ত্যাগ করে ঈশ্বরের পাদপদ্মে মগ্ন হও, তা তারা কখনও শুনবে না। তাই বিষয়ী লোকদের টানবার জন্য গৌর নিতাই দুই ভাই মিলে পরামর্শ করে এই ব্যবস্থা করেছিলেন—মাগুর মাছের ঝোল, যুবতী মেয়ের কোল, বোল হরি বোল। প্রথম দুইটির লোভে অনেকে হরিবোল বলতে যেত। হারিনাম-সুধার একটি আস্বাদ পেলে বুঝতে পারত যে, মাগুর মাছের ঝোল আর কিছুই নয়, হরিপ্রেমে যে অশ্রু পড়ে তাই যুবতী মেয়ে কিনা-পৃথিবী। যুবতী মেয়ের কোল কিনা—ধুলায় হরিপ্রেমে গড়াগড়ি।

    নিতাই কোনরকমে হরিনাম করিয়ে নিতেন। চৈতন্যদেব বলেছিলেন, ঈশ্বরের নামে ভারী মাহাত্ম্য (Ramakrishna)। শীঘ্র ফল না হতে পারে, কিন্তু কখন না কখন এর ফল হবেই হবে। যেমন কেউ বাড়ির কার্নিসের উপর বীজ রেখে গিয়েছিল; অনেকদিন পরে বাড়ি ভূমিসাৎ হয়ে গেল, তখন সেই বীজ মাটিতে পড়ে গাছ হল ও তার ফলও হল।

    আরও পড়ুনঃ “বিবেক, বৈরাগ্যরূপ হলুদ মাখলে তারা আর তোমাকে ছোঁবে না”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “পশ্চিমে বিবাহের সময় বরের হাতে ছুরি থাকে, বাংলাদেশে জাঁতি থাকে”

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 95: “তিনি আসিয়াছেন, চারিদিকের লোক তাঁহাকে মণ্ডলাকারে ঘেরিতেছে”

    Ramakrishna 95: “তিনি আসিয়াছেন, চারিদিকের লোক তাঁহাকে মণ্ডলাকারে ঘেরিতেছে”

    সিঁথি ব্রাহ্মসমাজ-দর্শন ও শ্রীযুক্ত শিবনাথ প্রভৃতি ব্রাহ্মভক্তদিগের সহিত কথোপকথন ও আনন্দ

    প্রথম পরিচ্ছেদ

    উৎসবমন্দিরে শ্রীরামকৃষ্ণ

    অপরাহ্ণে বাগানটি বহুলোক সমাকীর্ণ হইয়াছে। কেহ লতামণ্ডপচ্ছায়ায় কাষ্ঠাসনে উপবিষ্ট। কেহ বা সুন্দর বাপীতটে বন্ধু সমভিব্যবহারে বিচরণ করিতেছেন। অনেকেই সমাজগৃহে শ্রীরামকৃষ্ণের (Ramakrishna) আগমন প্রতীক্ষায় পূর্ব হইতেই উত্তম আসন অধিকার করিয়া বসিয়া আছেন। উদ্যানের প্রবেশদ্বারে পানের দোকান। প্রবেশ করিয়া বোধ হয় পূজাবাড়ি—রাত্রিকালে যাত্রা হইবে। চতুর্দিক আনন্দে পরিপূর্ণ। শরতের নীল আকাশে আনন্দ প্রতিভাসিত হইতেছে। উদ্যানের বৃক্ষলতাগুল্মমধ্যে প্রভাত হইতে আনন্দের সমীকরণ বহিতেছে। আকাশ, জীবজন্তু, বৃক্ষলতা, যেন একতানে গান (Kathamrita) করিতেছেঃ

    আজি কি হরষ সমীর বহে প্রাণে—ভগবৎ মঙ্গল কিরণে!

    সকলেই যেন ভগবদ্দর্শন-পিপাসু। এমন সময়ে শ্রীশ্রীপরমহংসদেবের (Ramakrishna) গাড়ি আসিয়া সমাজগৃহের সম্মুখে উপস্থিত হইল।

    সকললেই গাত্রোত্থান করিয়া মহাপুরুষের অভ্যর্থনা করিতেছেন। তিনি আসিয়াছেন। চারিদিকের লোক তাঁহাকে মণ্ডলাকারে ঘেরিতেছে।

    সমাজগৃহের প্রধান প্রকোষ্ঠমধ্যে বেদী রচনা হইয়াছে। সে-স্থান লোকে পরিপূর্ণ। সম্মুখে দালান, সেখানে পরমহংসদেব (Ramakrishna) সমাসীন, সেখানেও লোক। আর দালানের দুই পার্শ্বস্থিত দুই ঘর—সে ঘরেও লোক—ঘরের দ্বারদেশে উদগ্রীব হইয়া লোকে দণ্ডায়মান। দালানে উঠিবার সোপানপরম্পরা একপ্রান্ত হইতে অপরপ্রান্ত পর্যন্ত বিস্তৃত। সেই সোপানও লোকে লোককীর্ণ; সোপানের অনতিদূরে ২/৩ টি বৃক্ষ পার্শ্বে লতামণ্ডপ—সেখানে কয়েকখানি কাষ্ঠাসন। তথা হইতেও উদগ্রীব ও উৎকীর্ণ হইয়া মহাপুরুষের দিকে দৃষ্টিপাত করিতেছে। সারিসারি ফুল ও পুস্পের বৃক্ষ, মধ্যে পথ। বৃক্ষ সকল সমীকরণে ঈষৎ হেলিতেছে দুলিতেছে, যেন আনন্দভরে মস্তক অবনত করিয়া তাঁহাকে অভ্যর্থনা করিতেছে।  

    ঠাকুর পরমহংসদেবের হাসিতে হাসিতে (Kathamrita) আসন গ্রহণ করিলেন। এখন সব চক্ষু এককালে তাঁহার আনন্দমূর্তির উপর পতিত হইল। যেমন, যতক্ষণ নাট্যশালার অভিনয় আরাম্ভ না হয়, ততক্ষণ দর্শকবৃন্দের মধ্যে কেহ হাসিতেছে, কেহ বিষয়কর্মের কথা কহিতেছে, কেহ একাকী অথবা বন্ধুসঙ্গে পাদচারণ করিতেছে, কেহ পান খাইতেছে, কেহ বা তামাক খাইতেছে, কিন্তু যাই ড্রপসিন উঠিয়া গেল, অমনি সকলে সব কথাবার্তা বন্ধ করিয়া অনন্যমন হইয়া একদৃষ্টে নাট্যরঙ্গ দেখিতে থাকে! অথবা যেমন, নানা পুষ্প-পরিভ্রমণকারী ষট্‌পদবৃন্দ পদ্মের সন্ধান পাইলে অন্য কুসুম ত্যাগ করিয়া পদ্মমধু পান করিতে ছুটিয়া আসে!

    আরও পড়ুনঃ “সেই মধুর সংকীর্তন শুনিতে ও দেবদুর্লভ হরিপ্রেমময় নৃত্য দেখিতে পাইবেন”

    আরও পড়ুনঃ “বিবেক, বৈরাগ্যরূপ হলুদ মাখলে তারা আর তোমাকে ছোঁবে না”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “পশ্চিমে বিবাহের সময় বরের হাতে ছুরি থাকে, বাংলাদেশে জাঁতি থাকে”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 94: “সেই মধুর সংকীর্তন শুনিতে ও দেবদুর্লভ হরিপ্রেমময় নৃত্য দেখিতে পাইবেন”

    Ramakrishna 94: “সেই মধুর সংকীর্তন শুনিতে ও দেবদুর্লভ হরিপ্রেমময় নৃত্য দেখিতে পাইবেন”

    সিঁথি ব্রাহ্মসমাজ-দর্শন ও শ্রীযুক্ত শিবনাথ প্রভৃতি ব্রাহ্মভক্তদিগের সহিত কথোপকথন ও আনন্দ

    প্রথম পরিচ্ছেদ

    উৎসবমন্দিরে শ্রীরামকৃষ্ণ

    শ্রীশ্রীপরমহংসদেব (Ramakrishna) সিঁথির ব্রাহ্মসমাজ-দর্শন করিতে আসিয়াছেন। ২৮শে অক্টোবর ইং ১৮৮২ খ্রিষ্টাব্দ শনিবার। (১২ই কার্তিক) কৃষ্ণা দ্বিতীয়া তিথি।

    আজ এখানে মহোৎসব। ব্রাহ্মসমাজের ষাণ্মাসিক। তাই ভগবান শ্রীরামকৃষ্ণের (Ramakrishna)  এখানে নিমন্ত্রণ। বেলা ৩টা-৪টার সময় তিনি কয়েকজন ভক্তসঙ্গে গাড়ি করিয়া দক্ষিণেশ্বরের কালীবাটি হইতে শ্রীযুক্ত বেণীমাধব পালের মনোহর উদ্যানবাটিতে উপস্থিত হইলেন। এই উদ্যানবাটিতে ব্রাহ্মসমাজের (Kathamrita) অধিবেশন হইয়া থাকে। ব্রাহ্মসমাজকে তিনি বড় ভালবাসেন। ব্রাহ্মভক্তগণও তাঁহাকে অতিশয় ভক্ত-শ্রদ্ধা করেন। ইহার পূর্বদিন অর্থাৎ শুক্রবার বৈকালে কত আনন্দ করিতে করিতে সশিষ্য কেশবচন্দ্র সেনের সহিত ভাগীরথী-বক্ষে কালীবাড়ি হইতে কলিকাতা পর্যন্ত ভক্তসঙ্গে ষ্টীমার করিয়া বেড়াইতে আসিয়াছিলেন।

    সিঁথি পাইকপাড়ার নিকট। কলিকাতা হইতে দেড় ক্রোশ উত্তরে। উদ্যানবাটীটি মনোহর বলিয়াছি। স্থানটি অতি নিভৃত, ভগবানের উপাসনার পক্ষে বিশেষ উপযোগী। উদ্যানস্বামী বৎসরে দুইবার মহোৎসব করিয়া থাকেন। এবার শরৎকালে আরও একবার বসন্তে। এই মহোৎসব উপলক্ষে তিনি কলিকাতার ও সিঁথির নিকটবর্তী গ্রামের অনেক ভক্তদিগকে নিমন্ত্রণ করিয়া থাকেন। তাই আজ কলিকাতা হইতে শিবনাথ প্রভৃতি ভক্তগণ আসিয়াছেন। তাঁহাদের মধ্যে অনেকেই প্রাতঃকালে উপাসনায় যোগদান করিয়াছেন, আবার সন্ধ্যাকালীন উপাসনা হইবে ও তাঁহার আনন্দমূর্তি দেখিতে পাইবেন, তাঁহার হৃদয়মুগ্ধকারী কথামৃত (Kathamrita) পান করিতে পাইবেন, তাহার সেই মধুর সংকীর্তন শুনিতে ও দেবদুর্লভ হরিপ্রেমময় নৃত্য দেখিতে পাইবেন।

    আরও পড়ুন: “কেশবকে ঠাকুর দেখাইতেছেন হিন্দু, মুসলমান, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ সকল ধর্মের সমন্বয়”

    আরও পড়ুনঃ “বিবেক, বৈরাগ্যরূপ হলুদ মাখলে তারা আর তোমাকে ছোঁবে না”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “পশ্চিমে বিবাহের সময় বরের হাতে ছুরি থাকে, বাংলাদেশে জাঁতি থাকে”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

LinkedIn
Share