Tag: ramakrishna

ramakrishna

  • Ramakrishna 177: “বাঘ যেমন জানোয়ার খেয়ে ফেলে, তেমনি ‘অনুরাগ বাঘ’ কাম ক্রোধ খেয়ে ফেলে”

    Ramakrishna 177: “বাঘ যেমন জানোয়ার খেয়ে ফেলে, তেমনি ‘অনুরাগ বাঘ’ কাম ক্রোধ খেয়ে ফেলে”

    শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে ও বলরাম-মন্দিরে

    সপ্তদশ পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ৮ই এপ্রিল

    শ্রীরামলাল প্রভৃতির গান ও শ্রীরামকৃষ্ণের সমাধি

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) গান গাহিতে বলিলেন। রামলাল ও কালীবাড়ির একটি ব্রাহ্মণ কর্মচারী গাহিতেছেন। সঙ্গতের মধ্যে একটি বাঁয়ার ঠেকা—

    (১)—হৃদি-বৃন্দাবনে বাস যদি কর কমলাপতি ৷
    ওহে ভক্তিপ্রিয়, আমার ভক্তি হবে রাধাসতী ॥
    মুক্তি কামনা আমারি, হবে বৃন্দে গোপনারী,
    দেহ হবে নন্দের পুরী, স্নেহ হবে মা যশোমতী ॥
    আমার ধর ধর জনার্দন, পাপভার গোবর্ধন,
    কামাদি ছয় কংসচরে ধ্বংস কর সম্প্রতি ॥
    বাজায়ে কৃপা বাঁশরি, মনধেনুকে বশ করি,
    তিষ্ঠ হৃদিগোষ্ঠে পুরাও ইষ্ট এই মিনতি ॥
    আমার প্রেমরূপ যমুনাকুলে, আশাবংশীবটমূলে,
    স্বদাস ভেবে সদয়ভাবে, সতত কর বসতি ॥
    যদি বল রাখাল-প্রেমে, বন্দী থাকি ব্রজধামে,
    জ্ঞানহীন রাখাল তোমার, দাস হবে হে দাশরথি ॥

    (২)—নবনীরদবরণ কিসে গণ্য শ্যামচাঁদ রূপ হেরে,
    করেতে বাঁশি অধরে হাসি, রূপে ভুবন আলো রে ॥
    জড়িত পীতবসন, তড়িত জিনি ঝলমল,
    আন্দোলিত চরণাবধি হৃদিসরোজে বনমাল,
    নিতে যুবতী-জাতিকুল, আলো করে যমুনাকুল,
    নন্দকুল চন্দ্র যত চন্দ্র জিনি বিহরে ॥
    শ্যামগুণধাম পশি, হাম হদিমন্দিরে,
    প্রাণ মন জ্ঞান সখি হরে নিল বাঁশির স্বরে,
    গঙ্গানারায়ণের যে দুঃখ সে-কথা বলিব কারে,
    জানতে যদি যেতে গো সখী যমুনায় জল আনিবারে ॥

    (৩)—শ্যামাপদ-আকাশেতে মন ঘুড়িখান উড়তেছিল;
    কলুষের কুবাতাস পেয়ে গোপ্তা খেয়ে পড়ে গেল।

    ঈশ্বরলাভের উপায় অনুরাগ—গোপীপ্রেম—অনুরাগ বাঘ 

    শ্রীরামকৃষ্ণ (ভক্তদের প্রতি)—বাঘ যেমন কপকপ করে জানোয়ার খেয়ে ফেলে, তেমনি “অনুরাগ বাঘ” কাম ক্রোধ এই সব রিপুদের খেয়ে ফেলে। ঈশ্বরে একবার অনুরাগ হলে কামক্রোধাদি থাকে না। গোপীদের ওই অবস্থা হয়েছিল। কৃষ্ণে অনুরাগ (Ramakrishna)।

    “আবার আছে ‘অনুরাগ অঞ্জন’। শ্রীমতী বলছেন, ‘সখি, চতুর্দিক কৃষ্ণময় দেখছি!’ তারা বললে (Kathamrita), ‘সখি, অনুরাগ-অঞ্জন চোখে দিয়েছ তাই ওইরূপ দেখছ।’ এরূপ আছে যে, ব্যাঙের মুণ্ডু পুড়িয়ে কাজল তৈয়ার করে, সেই কাজল চোখে দিলে চারিদিক সর্পময় দেখে!

    “যারা কেবল কামিনী-কাঞ্চন নিয়ে আছে—ঈশ্বরকে (Kathamrita) একবারও ভাবে না, তারা বদ্ধজীব। তাদের নিয়ে কি মহৎ কাজ হবে? যেমন কাকে ঠোকরানো আম, ঠাকুর সেবায় লাগে না, নিজের খেতেও সন্দেহ।

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “সচ্চিদানন্দলাভ হলে সমাধি হয়, তখন কর্মত্যাগ হয়ে যায়”

    আরও পড়ুনঃ “তিনি দাঁড়াইলে ঠাকুর বলিলেন, বলরাম! তুমি? এত রাত্রে?”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 176: পাখি দাঁড়ে বসে তবে রাম রাম বলে, বনে উড়ে গেলে আবার ক্যাঁ ক্যাঁ করবে

    Ramakrishna 176: পাখি দাঁড়ে বসে তবে রাম রাম বলে, বনে উড়ে গেলে আবার ক্যাঁ ক্যাঁ করবে

    শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে ও বলরাম-মন্দিরে

    ষোড়শ পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ৮ই এপ্রিল

    দক্ষিণেশ্বরে শ্রীরামকৃষ্ণ ও ব্রাহ্মগণ—প্রেমতত্ত্ব

    নাম-মাহাত্ম্য—উপায়—মায়ের নাম 

    আন্তরিক ভক্তি (Ramakrishna) ও দেখানো ভক্তি—ঈশ্বর মন দেখেন 

    কেন ঈশ্বরদর্শন হয় না? অহংবুদ্ধির জন্য 

    যতক্ষণ অহংকার ততক্ষণ অজ্ঞান। অহংকার থাকতে মুক্তি নাই।

    গরুগুলো হাম্‌মা হাম্‌মা করে, আর ছাগলগুলো ম্যা ম্যা করে। তাই ওদের কত যন্ত্রণা। কসায়ে কাটে; জুতো, ঢোলের চামড়া তৈয়ার করে। যন্ত্রণার শেষ নাই। হিন্দিতে ‘হাম্‌’ মানে আমি, আর ‘ম্যায়’ মানেও আমি। ‘আমি’ ‘আমি’ করে বলে কত কর্মভোগ। শেষে নাড়ীভুঁড়ি থেকে ধুনুরীর তাঁত তৈয়ার করে। তখন ধুনুরীর হাতে ‘তুঁহু তুঁহু’ বলে, অর্থাৎ ‘তুমি তুমি’। তুমি তুমি বলার পর তবে নিস্তার! আর ভুগতে হয় না।

    হে ঈশ্বর (Ramakrishna), তুমি কর্তা আর আমি অকর্তা, এরই নাম জ্ঞান।

    নিচু হলে তবে উঁচু হওয়া যায়। চাতক পাখির বাসা নিচে, কিন্তু ওঠে খুব উঁচুতে। উঁচু জমিতে চাষ হয় না। খাল জমি চাই, তবে জল জমে! তবে চাষ হয়!

    গৃহস্থলোকের সাধুসঙ্গ প্রয়োজন—যথার্থ দরিদ্র কে? 

    একটু কষ্ট করে সৎসঙ্গ করতে হয়। বাড়িতে কেবল বিষয়ের কথা। রোগ লেগেই আছে। পাখি দাঁড়ে বসে তবে রাম রাম বলে। বনে উড়ে গেলে আবার ক্যাঁ ক্যাঁ করবে।

    টাকা থাকলেই বড় মানুষ হয় না। বড় মানুষের বাড়ির একটি লক্ষণ যে, সব ঘরে আলো থাকে। গরিবেরা তেল খরচ করতে পারে না, তাই তত আলো বন্দোবস্ত করে না। এই দেহমন্দির অন্ধকারে রাখতে নাই, জ্ঞানদীপ জ্বেলে দিতে হয়।

    জ্ঞানদীপ জ্বেলে ঘরে ব্রহ্মময়ীর (Kathamrita) মুখ দেখ না।

    প্রার্থনাতত্ত্ব—চৈতন্যের লক্ষণ 

    সকলেরই জ্ঞান হতে পারে। জীবাত্মা আর পরমাত্মা। প্রার্থনা কর—সেই পরমাত্মার সঙ্গে সব জীবেরই যোগ হতে পারে। গ্যাসের নল সব বাড়িতেই খাটানো আছে। গ্যাস কোম্পানির কাছে গ্যাস পাওয়া যায়। আরজি কর, করলেই গ্যাস বন্দোবস্ত করে দেবে—ঘরেতে আলো জ্বলবে। শিয়ালদহে আপিস আছে। (সকলের হাস্য)

    কারুর চৈতন্য (Ramakrishna) হয়েছে। তার কিন্তু লক্ষণ আছে। ঈশ্বরীয় কথা (Kathamrita) বই আর কিছু শুনতে ভাল লাগে না। আর ঈশ্বরীয় কথা বই আর কিছু বলতে ভাল লাগে না। যেমন সাত সমুদ্র, গঙ্গা, যমুনা, নদী—সব তাতে জল রয়েছে, কিন্তু চাতক বৃষ্টির জল চাচ্ছে। তৃষ্ণাতে ছাতি ফেটে যাচ্ছে, তবু অন্য জল খাবে না।

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “সচ্চিদানন্দলাভ হলে সমাধি হয়, তখন কর্মত্যাগ হয়ে যায়”

    আরও পড়ুনঃ “তিনি দাঁড়াইলে ঠাকুর বলিলেন, বলরাম! তুমি? এত রাত্রে?”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Kali Puja 2024: মা তাঁর ভয়ঙ্কর রূপ দেখিয়েছিলেন সাধক বামাক্ষ্যাপাকে! জানুন তারাপীঠের মাহাত্ম্যকথা

    Kali Puja 2024: মা তাঁর ভয়ঙ্কর রূপ দেখিয়েছিলেন সাধক বামাক্ষ্যাপাকে! জানুন তারাপীঠের মাহাত্ম্যকথা

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: শক্তিপীঠ, সিদ্ধপীঠ তারাপীঠ (Tarapith)। কালীপুজোয় (Kali Puja 2024) জমজমাট থাকে বীরভূমের তারাপীঠ। অনেকে ভাবেন এটি সতীপীঠ কিন্তু তারাপীঠ সতীপীঠ নয়। কথিত আছে, একবার দেবীর মাতৃরূপ দর্শন চান বশিষ্ঠ মুনি৷ দেবীও নিরাশ করেননি৷ এখানেই তাঁকে মাতৃরূপে দর্শন দেন দেবী। এখানেই তপস্যা করে সিদ্ধিলাভ করেন তারামায়ের ভক্ত বামাক্ষ্যাপা। ফলে এটি সিদ্ধপীঠ হিসেবেও পরিচিত। তাই অমাবস্যায় রীতি মেনে পুজো হয় এখানেও।

    কালীপুজোয় কেমন হয় তারামায়ের ভোগ (Kali Puja 2024)?

    সকালে স্নানের পর (Tarapith) দেবীর শিলাব্রহ্মময়ী মূর্তিকে রাজবেশে সাজিয়ে তোলা হয়। পরানো হয় চুনরি। এরপর পঞ্চ উপাচারে মঙ্গলারতি এবং নিত্যপুজো সম্পন্ন হয়। কালীপুজোর (Kali Puja 2024) দিন খুব সকালে ডাবের জল দিয়ে শুরু হয় মায়ের ভোগ। সকালের ভোগে থাকে পাঁচ রকম বা ন’রকমের ভাজা, সাদা অন্ন, পায়েস ও মিষ্টি। এখানে মাকে পঞ্চব্যঞ্জন সহযোগে ভোগ নিবেদন করা হয়৷ আমিষ ভোগের মূল উপাদান হল শোল মাছ। ভোগের পাতে এই মাছ না থাকলে ভোগ গ্রহণ করেন না মা তারা। কালীপুজোর দিন ভোগ হিসেবে থাকে পোলাও, খিচুড়ি, সাদা ভাত, পাঁচরকম ভাজা, পাঁচ মিশালি তরকারি, মাছ, চাটনি, পায়েস এবং মিষ্টি। এখানকার অন্নভোগের বিশেষত্বই হল পোড়া শোলমাছ মাখা।

    সন্তানকে না খাইয়ে ভোগ গ্রহণ করেন না তারা মা

    দীপান্বিতা (Kali Puja 2024) অমাবস্যা উপলক্ষ্যে নিয়ম-নিষ্ঠা মেনে হয় বিশেষ সন্ধ্যারতি। এরপর নিবেদন করা হয় লুচি, পায়েস, সুজি দিয়ে শীতল ভোগ। তারামায়ের যেভাবে ভোগ পুজো হয়, সেই একই ভাবে পুজো করা হয় শ্মশান কালীকে। শ্মশানেই রয়েছে মায়ের আসল শিলা পাদুকা। তার পাশে বামদেবের সমাধি। তারাপীঠের নিয়ম অনুযায়ী, সন্তানকে খাইয়ে তবেই তারা মা ভোগ গ্রহণ করেন। তাই বামদেবের ভোগ আগে দেওয়া হয়। ভোগের তালিকায় রয়েছে প্রেত ভোগও। ডাকিনী-যোগিনীদের উদ্দেশে দেওয়া এই ভোগ শ্মশানেই দেওয়া হয়। রাতে এক বারই এই ভোগের আয়োজন থাকে। বামদেবের খুব প্রিয় কুকুর ছিল শিবা। তার জন্যও থাকে বিশেষ ভোগের আয়োজন।

    তারা মা ভয়ঙ্কর রূপ দেখান সাধক বামাক্ষ্যাপাকে

    বামাক্ষ্যাপা শৈশবেই গৃহত্যাগ করে কৈলাশপতি বাবা নামে এক সন্ন্যাসীর শিষ্যত্ব গ্রহণ করেছিলেন। কৈলাশপতি বাবা তারাপীঠে থাকতেন। বামাক্ষ্যাপা তারাপীঠের (Kali Puja 2024) দ্বারকা নদের তীরে যোগ ও তন্ত্রসাধনা করেন। নিকটবর্তী মল্লরাজাদের মন্দিরময় গ্রাম মালুটি যা ঝাড়খণ্ডে অবস্থিত, সেখানে যোগ সাধনা করতে যান। একই ভাবে দ্বারকার তীরে মৌলাক্ষী দেবীর মন্দিরে সাধনাকালে প্রায় ১৮ মাস অবস্থান করেন। এরপর নিজে ধর্মীয় গুরু হয়ে ওঠেন। ভক্তরাও বিশ্বাস করেন তিনি অলৌকিক শক্তির অধিকারী। তবে বাঁধাধরা নিয়ম কানুন মানতেন না তিনি। দেবতার নৈবেদ্য থেকে প্রসাদ খেয়ে নিতেন পুজোর আগেই। কথিত আছে নাটোরের মহারানিকে স্বপ্নে দেবী তারা মা আদেশ দিয়েছিলেন। তাতে বলা হয়, বামাকে যেন আগে প্রসাদ খাওয়ানো হয়। এরপর থেকে বামাক্ষ্যাপাকে পুজোর আগেই মন্দিরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়। আরও কথিত হয়, দেবী তারা মা তাঁর ভয়ঙ্কর রূপ দেখান সাধক বামাক্ষ্যাপাকে এবং সেই সময় তাঁকে কোলে তুলে নেন মা। এই তারাপীঠ শ্মশান এবং দুমকা জেলার মালুটি গ্রামে সাধাক বামাক্ষ্যাপার স্মৃতিমন্দির স্থাপন করা হয়েছে।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 175: “মনের গুণে হনুমান সমুদ্র পার হয়ে গেল, আমি রামের দাস, রামনাম করেছি, আমি কি না পারি!”

    Ramakrishna 175: “মনের গুণে হনুমান সমুদ্র পার হয়ে গেল, আমি রামের দাস, রামনাম করেছি, আমি কি না পারি!”

    শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে ও বলরাম-মন্দিরে

    ষোড়শ পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ৮ই এপ্রিল
    দক্ষিণেশ্বরে শ্রীরামকৃষ্ণ ও ব্রাহ্মগণ—প্রেমতত্ত্ব

    নাম-মাহাত্ম্য—উপায়—মায়ের নাম 

    আন্তরিক ভক্তি ও দেখানো ভক্তি—ঈশ্বর মন দেখেন 

    যেমন ভাব তেমনি লাভ। দুজন বন্ধু পথে যাচ্ছে। এক যায়গায় ভাগবত পাঠ হচ্ছিল। একজন বন্ধু বললে, ‘এস ভাই, একটু ভাগবত শুনি।’ আর-একজন একটু উঁকি মেরে দেখল। তারপর সে সেখান থেকে চলে গিয়ে বেশ্যালয়ে গেল। সেখানে খানিকক্ষণ পরে তার মনে বড় বিরক্তি এল। সে আপনা-আপনি বলতে লাগল, ‘ধিক্‌ আমাকে! বন্ধু আমার হরি কথা শুনছে, আর আমি কোথায় পড়ে আছি!’ এদিকে যে ভাগবত (Ramakrishna) শুনছে, তারও ধিক্কার হয়েছে। সে ভাবছে, ‘আমি কি বোকা! কি ব্যাড় ব্যাড় করে বকছে, আর আমি এখানে বসে আছি! বন্ধু আমার কেমন আমোদ-আহ্লাদ করছে।’ এরা যখন মরে গেল, যে ভাগবত শুনেছিল, তাকে যমদূত নিয়ে গেল; যে বেশ্যালয়ে গিছিল, তাকে বিষ্ণুদূত বৈকুণ্ঠে নিয়ে গেল।

    ভগবান (Kathamrita) মন দেখেন। কে কি কাজে আছে, কে কোথায় পড়ে আছে তা দেখেন না। ভাবগ্রাহী জনার্দন।

    কর্তাভজারা মন্ত্র দিবার সময় বলে এখন ‘মন তোর’। অর্থাৎ এখন সব তোর মনের উপর নির্ভর করছে।

    তারা বলে, যার ঠিক মন, তার ঠিক করণ, তার ঠিক লাভ।

    মনের গুণে হনুমান সমুদ্র পার হয়ে গেল। আমি রামের দাস, আমি রামনাম (Ramakrishna) করেছি, আমি কি না পারি!’ এই বিশ্বাস

    কেন ঈশ্বরদর্শন হয় না? অহংবুদ্ধির জন্য 

    যতক্ষণ অহংকার ততক্ষণ অজ্ঞান। অহংকার থাকতে মুক্তি নাই।

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “সচ্চিদানন্দলাভ হলে সমাধি হয়, তখন কর্মত্যাগ হয়ে যায়”

    আরও পড়ুনঃ “তিনি দাঁড়াইলে ঠাকুর বলিলেন, বলরাম! তুমি? এত রাত্রে?”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 174: “দুর্গানাম, কৃষ্ণনাম, শিবনাম, যে নাম বলে ঈশ্বরকে ডাক না কেন?… বিকার কাটবেই কাটবে”

    Ramakrishna 174: “দুর্গানাম, কৃষ্ণনাম, শিবনাম, যে নাম বলে ঈশ্বরকে ডাক না কেন?… বিকার কাটবেই কাটবে”

    শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে ও বলরাম-মন্দিরে

    ষোড়শ পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ৮ই এপ্রিল
    দক্ষিণেশ্বরে শ্রীরামকৃষ্ণ ও ব্রাহ্মগণ—প্রেমতত্ত্ব

    নাম-মাহাত্ম্য—উপায়—মায়ের নাম 

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—তাঁর নাম কল্লে সব পাপ কেটে যায়! কাম, ক্রোধ, শরীরে সুখ-ইচ্ছা—এ-সব পালিয়ে যায়।

    একজন ভক্ত—তাঁর নাম করতে ভাল কই লাগে?

    শ্রীরামকৃষ্ণ—ব্যাকুল হয়ে তাঁকে প্রার্থনা কর, যাতে তাঁর নামে রুচি হয়। তিনিই মনোবাঞ্ছা (Kathamrita) পূর্ণ করবেন—

    এই বলিয়া ঠাকুর দেবদুর্লভ কণ্ঠে গাহিতেছেন। জীবের দুঃখে কাতর হইয়া মার কাছে হৃদয়ের বেদনা জানাইতেছেন। প্রাকৃত জীবের অবস্থা নিজে আরোপ করিয়া মার কাছে জীবের দুঃখ জানাইতেছেন:

    দোষ কারু নয় গো মা, আমি স্বখাত সলিলে ডুবে মরি শ্যামা ৷
    ষড়রিপু হল কোদণ্ডস্বরূপ, পুণ্যক্ষেত্র মাঝে কাটিলাম কূপ,
    সে কূপে বেড়িল কালরূপ জল, কাল-মনোরমা ॥
    আমার কি হবে তারিণী, ত্রিগুণধারিণী—বিগুণ করেছে স্বগুণে,
    কিসে এ-বারি নিবারি, ভেবে দাশরথির অনিবার বারি নয়নে ৷
    ছিল বারি কক্ষে, ক্রমে এল বক্ষে, জীবনে জীবন কেমনে হয় মা রক্ষে,
    আছি তোর অপিক্ষে, দে মা মুক্তিভিক্ষে, কটাক্ষেতে করে পার ॥

    আবার গান গাহিতেছেন। জীবের বিকাররোগ! তাঁর নামে রুচি হলে বিকার কাটবে:

    এ কি বিকার শঙ্করী, কৃপা-চরণতরী পেলে ধন্বন্তরি!
    অনিত্য গৌরব হল অঙ্গদাহ, আমার আমার একি হল পাপ মোহ;
    (তায়) ধনজনতৃষ্ণা না হয় বিরহ, কিসে জীবন ধরি ॥
    অনিত্য আলাপ, কি পাপ প্রলাপ, সতত সর্বমঙ্গলে;
    মায়া-কাকনিদ্রা তাহে দাশরথির নয়নযুগলে;
    হিংসারূপ তাহে সে উদরে কৃমি, মিছে কাজে ভ্রমি, সেই হয় ভ্রমি,
    রোগে বাঁচি কি না বাঁচি ত্বন্নামে অরুচি দিবা শর্বরী ॥

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—ত্বন্নামে অরুচি! বিকারে যদি অরুচি হল, তাহলে আর বাঁচবার পথ থাকে না। যদি একটু রুচি থাকে, তবে বাঁচবার খুব আশা। তাই নামে রুচি। ঈশ্বরের নাম করতে হয়; দুর্গানাম, কৃষ্ণনাম, শিবনাম, যে নাম বলে ঈশ্বরকে ডাক না কেন? যদি নাম করতে অনুরাগ দিন দিন বাড়ে, যদি আনন্দ হয় তাহলে আর কোন ভয় নাই, বিকার কাটবেই কাটবে। তাঁর কৃপা (Kathamrita) হবেই হবে।

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 173: “অনুরাগের ঐশ্বর্য কি কি? বিবেক, বৈরাগ্য, জীবে দয়া সাধুসেবা, ঈশ্বরের নামগুণকীর্তন”

    Ramakrishna 173: “অনুরাগের ঐশ্বর্য কি কি? বিবেক, বৈরাগ্য, জীবে দয়া সাধুসেবা, ঈশ্বরের নামগুণকীর্তন”

    শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে ও বলরাম-মন্দিরে

    ষোড়শ পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ৮ই এপ্রিল
    দক্ষিণেশ্বরে শ্রীরামকৃষ্ণ ও ব্রাহ্মগণ—প্রেমতত্ত্ব

    কিয়ৎক্ষণ পরে কলিকাতা হইতে কয়েকটি পুরাতন ব্রাহ্মভক্ত আসিয়া উপস্থিত হইলেন। তন্মধ্যে একজন—শ্রীযুক্ত ঠাকুরদাস (Ramakrishna) সেন। ঘরে অনেকগুলি ভক্তের সমাগম হইয়াছে। ঠাকুর ছোট খাটটিতে বসিয়া আছেন। সহাস্যবদন, বালকমূর্তি। উত্তরাস্য হইয়া বসিয়াছেন। ব্রাহ্মভক্তদের সঙ্গে আনন্দে আলাপ করিতেছেন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (ব্রাহ্ম ও অন্যান্য ভক্তদের প্রতি)—তোমরা ‘প্যাম’ ‘প্যাম’ কর; কিন্তু প্রেম কি সামান্য জিনিস গা? চৈতন্যদেবের ‘প্রেম’ হয়েছিল। প্রেমের দুটি লক্ষণ। প্রথম—জগৎ ভুল হয়ে যাবে (Kathamrita)। এত ঈশ্বরেতে ভালবাসা যে বাহ্যশূন্য! চৈতন্যদেব “বন দেখে বৃন্দাবন ভাবে, সমুদ্র দেখে শ্রীযমুনা ভাবে।”

    দ্বিতীয় লক্ষণ—নিজের দেহ যে এত প্রিয় জিনিস, এর উপরও মমতা থাকবে না, দেহাত্মবোধ একেবারে চলে যাবে।

    ঈশ্বরলাভের (Ramakrishna) কতকগুলি লক্ষণ আছে। যার ভিতর অনুরাগের ঐশ্বর্য প্রকাশ হচ্ছে তার ঈশ্বরলাভের আর দেরি নাই।

    অনুরাগের ঐশ্বর্য কি কি? বিবেক, বৈরাগ্য, জীবে দয়া সাধুসেবা, সাধুসঙ্গ, ঈশ্বরের নামগুণকীর্তন, সত্যকথা—এই সব।

    এই সকল অনুরাগের লক্ষণ দেখলে ঠিক বলতে পারা যায়, ঈশ্বর দর্শনের আর দেরি নাই। বাবু কোন খানসামার বাড়ি যাবেন, এরূপ যদি ঠিক হয়ে থাকে, খানসামার বাড়ির অবস্থা দেখে ঠিক বুঝতে পারা যায়! প্রথমে বন-জঙ্গল কাটা হয়, ঝুলঝাড়া হয়; ঝাঁটপাট দেওয়া হয়। বাবু নিজেই সতরঞ্চি, গুড়গুড়ি এই সব পাঁচরকম জিনিস পাঠিয়ে দেন। এই সব আসতে দেখলেই লোকের বুঝতে বাকি থাকে না, বাবু এসে পড়লেন বলে।”

    একজন ভক্ত—আজ্ঞে, আগে বিচার করে কি ইন্দ্রিয়নিগ্রহ করতে হয়?

    শ্রীরামকৃষ্ণ(Ramakrishna)—ও এক পথ আছে। বিচারপথ। ভক্তিপথেও অন্তরিন্দ্রিয় নিগ্রহ আপনি হয়। আর সহজে হয়। ঈশ্বরের উপর যত ভালবাসা আসবে, ততই ইন্দ্রিয়সুখ আলুনী লাগবে।

    যেদিন সন্তান মারা গেছে, সেই শোকের উপর স্ত্রী-পুরুষের দেহ-সুখের দিকে কি মন থাকতে পারে?

    একজন ভক্ত—তাঁকে ভালবাসতে (Kathamrita) পারছি কি?

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 172: “ওদের দেশে বড় জলকষ্ট। তুমি সেখানে একটা পুষ্করিণী কাটাও না কেন”

    Ramakrishna 172: “ওদের দেশে বড় জলকষ্ট। তুমি সেখানে একটা পুষ্করিণী কাটাও না কেন”

    শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে ও বলরাম-মন্দিরে

    পঞ্চদশ পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ৮ই এপ্রিল

    গৃহস্থ ও কর্মযোগ

    ঠাকুরবাড়িতে (Ramakrishna) শ্রীশ্রীভবতারিণী, শ্রীশ্রীরাধাকান্ত ও দ্বাদশ শিবের পূজা শেষ হইল। ক্রমে ভোগারতির বাজনা বাজিতেছে। চৈত্রমাস দ্বিপ্রহর বেলা। ভারী রৌদ্র। এই মাত্র জোয়ার আরম্ভ হইয়াছে। দক্ষিণদিক হইতে হাওয়া উঠিয়াছে। পূতসলিলা ভাগীরথী এইমাত্র উত্তরবাহিনী হইয়াছেন। ঠাকুর আহারান্তে কক্ষমধ্যে একটু বিশ্রাম করিতেছেন। রাখালের দেশ বসিরহাটের কাছে। দেশে গ্রীষ্মকালে বড় জলকষ্ট।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (মণি মল্লিকের প্রতি)—দেখ রাখাল বলছিল, ওদের দেশে বড় জলকষ্ট (Kathamrita)। তুমি সেখানে একটা পুষ্করিণী কাটাও না কেন। তাহলে কত লোকের উপকার হয়। (সহাস্যে) তোমার তো অনেক টাকা আছে, অত টাকা নিয়ে কি করবে? তা শুনেছি, তেলিরা নাকি বড় হিসাবী। (ঠাকুরের ও ভক্তগণের হাস্য)

    মণিলাল মল্লিকের বাড়ি কলিকাতা সিন্দুরিয়াপটি। সিন্দুরিয়াপটির ব্রাহ্মসমাজের সাংবাৎসরিক উৎসব উপলক্ষে তিনি অনেককে নিমন্ত্রণ করিয়া থাকেন। উৎসবে শ্রীরামকৃষ্ণকে নিমন্ত্রণ করিয়া থাকেন। মণিলালের বরাহনগরে একখানি বাগান আছে। সেখানে তিনি প্রায় একাকী আসিয়া থাকেন ও সেই সঙ্গে ঠাকুরকে দর্শন করিয়া যান। মণিলাল যথার্থ হিসাবী লোক বটে! সমস্ত গাড়িভাড়া করিয়া বরাহনগরে প্রায় আসেন না; ট্রামে চাপিয়া প্রথমে শোভাবাজারে আসেন, সেখানে শেয়ারের গাড়িতে চাপিয়া বরাহনগরে আসেন। অর্থের অভাব নাই; কয়েক বৎসর পরে গরিব ছাত্রদের ভরণপোষণের জন্য এককালে প্রায় পঁচিশ হাজার টাকা বন্দোবস্ত করিয়া দিয়াছিলেন।

    মণিলাল চুপ (Kathamrita) করিয়া রহিলেন। কিয়ৎক্ষণ পরে এ-কথা ও-কথার পর, কথার পিঠে বলিলেন, “মহাশয় পুষ্করিণীর কথা বলছিলেন। তা বললেই হয়, তা আবার তেলি-ফেলি বলা কেন?”

    ভক্তেরা (Ramakrishna) কেহ কেহ মুখ টিপিয়া হাসিতেছেন। ঠাকুরও হাসিতেছেন।

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 171: “শ্রীমুখে ঈশ্বরকথা বই আর কিছুই নাই, মন সর্বদা অন্তর্মুখ, ঈশ্বর সত্য আর সমস্ত অনিত্য”

    Ramakrishna 171: “শ্রীমুখে ঈশ্বরকথা বই আর কিছুই নাই, মন সর্বদা অন্তর্মুখ, ঈশ্বর সত্য আর সমস্ত অনিত্য”

    শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে ও বলরাম-মন্দিরে

    চতুর্দশ পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ৮ই এপ্রিল

    শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে—মণিলাল ও কাশীদর্শন

     

    সিদ্ধের পক্ষে “ঈশ্বর কর্তা”—অন্যের পক্ষে পাপপূণ্য—ফ্রি উইল 

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—ভাস্করানন্দের সঙ্গে তোমার কথা হল?

    মণিলাল—আজ্ঞে হাঁ, অনেক কথা হল। তার মধ্যে পাপপুণ্যের কথা হল! তিনি বললেন, পাপ পথে যেও না, পাপচিন্তা ত্যাগ করবে, ঈশ্বর এই সব চান। যে-সব কাজ কল্লে পুণ্য হয়, এমন সব কর্ম কর।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—হাঁ ও একরকম আছে, ঐহিকদের জন্য। যাদের চৈতন্য হয়েছে, যাদের ঈশ্বর সৎ আর-সব অসৎ অনিত্য বলে বোধ হয়ে গেছে, তাদের আর-একরকম ভাব। তারা জানে যে, ঈশ্বরই একমাত্র কর্তা, আর সব অকর্তা। যাদের চৈতন্য হয়েছে তাদের বেতালে পা পড়ে না, হিসাব করে পাপ ত্যাগ করতে হয় না, ঈশ্বরের উপর এত ভালবাসা যে, যে-কর্ম তারা করে সেই কর্মই সৎকর্ম! কিন্তু তারা জানে, এ-কর্মের কর্তা আমি নই, আমি ঈশ্বরের দাস। আমি যন্ত্র, তিনি যন্ত্রী। তিনি যেমন করান, তেমনি করি, যেমন বলান তেমনি বলি, তিনি যেমন চালান, তেমনি চলি।

    “যাদের চৈতন্য হয়েছে, তারা পাপপুণ্যের পার। তারা দেখে ঈশ্বরই সব করছেন। এক জায়গায় একটি মঠ ছিল। মঠের সাধুরা রোজ মাধুকরী (ভিক্ষা) করতে যায়। একদিন একটি সাধু ভিক্ষা করতে করতে দেখে যে, একটি জমিদার একটি লোককে ভারী মারছে, সাধুটি বড় দয়ালু; সে মাঝে পড়ে জমিদারকে মারতে বারণ করলে। জমিদার তখন ভারী রেগে রয়েছে, সে সমস্ত কোপটি সাধুটির গায়ে ঝাড়লে। এমন প্রহার করলে যে, সাধুটি অচৈতন্য হয়ে পড়ে রইল। কেউ গিয়ে মঠে খপর দিলে, তোমাদের একজন সাধুকে জমিদার ভারী মেরেছে। মঠের সাধুরা দৌড়ে এসে দেখে, সাধুটি অচৈতন্য হয়ে পড়ে রয়েছে! তখন তারা পাঁচজনে ধরাধরি করে তাকে মঠের ভিতর নিয়ে গিয়ে একটি ঘরে শোয়ালে। সাধু অজ্ঞান, চারিদিকে মঠের লোকে ঘিরে বিমর্ষ হয়ে বসে আছে, কেউ কেউ বাতাস কচ্ছে। একজন বললে, মুখে একটু দুধ দিয়ে দেখা যাক। মুখে দুধ দিতে দিতে সাধুর চৈতন্য হল। চোখ মেলে দেখতে লাগল। একজন বললে, ‘ওহে দেখি, জ্ঞান হয়েছে কি না? লোক চিনতে পারছে কিনা?’ তখন সে সাধুকে খুব চেঁচিয়ে জিজ্ঞাসা করলে, ‘মহারাজ! তোমাকে কে দুধ খাওয়াচ্ছে?’ সাধু আস্তে আস্তে বলছে, ‘ভাই! যিনি আমাকে মেরেছিলেন, তিনিই দুধ খাওয়াচ্ছেন।’

    “ঈশ্বরকে জানতে না পারলে এরূপ অবস্থা হয় না।”

    মণিলাল—আজ্ঞে আপনি যে-কথা বললেন, সে বড় উচ্চ অবস্থা! ভাস্করানন্দের সঙ্গে এই সব পাঁচরকম কথা হয়েছিল।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—কোনও বাড়িতে থাকেন?

    মণিলাল—একজনের বাড়িতে থাকেন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ—কত বয়স?

    মণিলাল—পঞ্চান্ন হবে।

    শ্রীরামকৃষ্ণ—আর কিছু কথা হল?

    মণিলাল—আমি জিজ্ঞাসা করলুম, ভক্তি কিসে হয়? তিনি বললেন, “নাম কর, রাম রাম বোলো!”

    শ্রীরামকৃষ্ণ — এ বেশ কথা।

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “পঞ্চবার আঠার ষোল, যুগে যুগে এলাম ভাল…শেষে কচে বারো পড়ে মাগো, পঞ্জা-ছক্কায় বন্দী হলাম”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 170: “শ্রীমুখে ঈশ্বরকথা বই আর কিছুই নাই; মন সর্বদা অন্তর্মুখ… ঈশ্বর সত্য, আর সমস্ত অনিত্য”

    Ramakrishna 170: “শ্রীমুখে ঈশ্বরকথা বই আর কিছুই নাই; মন সর্বদা অন্তর্মুখ… ঈশ্বর সত্য, আর সমস্ত অনিত্য”

    শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে ও বলরাম-মন্দিরে

     চতুর্দশ পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ৮ই এপ্রিল

    শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে — মণিলাল ও কাশীদর্শন

    আইস ভাই, আজ আবার ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণকে (Ramakrishna) দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে দর্শন করিতে যাই। তিনি ভক্তসঙ্গে কিরূপ বিলাস করিতেছেন, ঈশ্বরের ভাবে সর্বদা কিরূপ সমাধিস্থ আছেন দেখিব। কখন সমাধিস্থ, কখন কীর্তনানন্দে মাতোয়ারা আবার কখন বা প্রাকৃত লোকের ন্যায় ভক্তের সহিত কথা কহিতেছেন, দেখিব। শ্রীমুখে ঈশ্বরকথা বই আর কিছুই নাই; মন সর্বদা অন্তর্মুখ, ব্যবহার পঞ্চমবর্ষীয় বালকের ন্যায়। প্রতি নিঃশ্বাসের সহিত মায়ের নাম করিতেছেন। একেবারে অভিমানশূন্য পঞ্চমবর্ষীয় বালকের ন্যায় ব্যবহার। পঞ্চমবর্ষীয় বালক বিষয়ে আসক্তিশূন্য, সদানন্দ, সরল ও উদার প্রকৃতি। এক কথা (Kathamrita)—“ঈশ্বর সত্য, আর সমস্ত অনিত্য”, দুইদিনের জন্য। চল, সেই প্রেমোন্মত্ত বালককে দিখিতে যাই। মহাযোগী! অনন্ত সাগরের তীরে একাকী বিচরণ করিতেছেন। সেই অনন্ত সচ্চিদানন্দ-সাগরমধ্যে কি যেন দেখিতেছেন! দেখিয়া প্রেমে উন্মত্ত হইয়া বেড়াইতেছেন।

    আজ রবিবার, ৮ই এপ্রিল, ১৮৮৩ খ্রীষ্টাব্দ, ২৬শে চৈত্র, প্রাতঃকাল। এই যে ঠাকুর বালকের ন্যায় বসিয়া আছেন। কাছে বসিয়া একটি ছোকরা ভক্ত—রাখাল।

    মাস্টার আসিয়া ভূমিষ্ঠ হইয়া প্রণাম করিলেন। ঠাকুরের (Ramakrishna) ভ্রাতুষ্পুত্র রামলাল আছেন, কিশোরী ও আরও কয়েকটি ভক্ত আসিয়া জুটিলেন। পুরাতন ব্রাহ্মভক্ত শ্রীযুক্ত মণিলাল মল্লিক আসিয়া উপস্থিত হইলেন এবং ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণকে প্রণাম করিলেন।

    মণি মল্লিক কাশীধামে গিয়াছিলেন। তিনি ব্যবসায়ী লোক, কাশিতে তাঁহাদের কুঠি আছে।

    শ্রীরামকৃষ্ণ—হ্যাঁগা, কাশীতে গেলে, কিছু সাধু-টাধু দেখলে?

    মণিলাল—আজ্ঞে হাঁ, ত্রৈলঙ্গ স্বামী, ভাস্করানন্দ—এঁদের সব দেখতে গিছলাম।

    শ্রীরামকৃষ্ণ—কিরকম সব দেখলে বল?

    মণিলাল—ত্রৈলঙ্গ স্বামী সেই ঠাকুরবাড়িতেই আছেন, মণিকর্ণিকার ঘাটে বেণীমাধবের কাছে। লোকে বলে, আগে তাঁর উচ্চ অবস্থা ছিল। কত আশ্চর্য আশ্চর্য কার্য করতে পারতেন। এখন অনেকটা কমে গেছে।

    শ্রীরামকৃষ্ণ—ও-সব বিষয়ী লোকের নিন্দা।

    মণিলাল—ভাস্করানন্দ সকলের সঙ্গে মেশেন, ত্রৈলঙ্গ স্বামীর মতো নয়—একেবারে কথা বন্ধ (Kathamrita)।

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “পঞ্চবার আঠার ষোল, যুগে যুগে এলাম ভাল…শেষে কচে বারো পড়ে মাগো, পঞ্জা-ছক্কায় বন্দী হলাম”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 169: “যতনে হৃদয়ে রেখো আদরিণী শ্যামা মাকে… আর যেন কেউ নাহি দেখে”

    Ramakrishna 169: “যতনে হৃদয়ে রেখো আদরিণী শ্যামা মাকে… আর যেন কেউ নাহি দেখে”

    শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে ও বলরাম-মন্দিরে

    ত্রয়োদশ পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ৭ই এপ্রিল

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ নরেন্দ্রাদি ভক্তসঙ্গে কীর্তনানন্দে

    গান—বিশ্বভুবনরঞ্জন ব্রহ্ম পরম জ্যোতিঃ ৷
    অনাদিদেব জগৎপতি প্রাণের প্রাণ ॥

    গান—ওহে রাজরাজেশ্বর, দেখা দাও।
    চরণে উৎসর্গ দান, করিতেছি এই প্রাণ,
    সংসার-অনলকুণ্ডে ঝলসি গিয়াছে তাও।
    কলুষ-কলঙ্কে তাহে আবরিত এ-হৃদয়;
    মোহে মুগ্ধ মৃতপায়, হয়ে আছি আমি দয়াময়,
    মৃতসঞ্জীবনী দৃষ্টে, শোধন করিয়ে লও।

    গান—গগনের থালে রবিচন্দ্র দীপক জ্বলে।
    তারকামণ্ডল চমকে মোতি রে।
    ধূপ মলয়ানিল, পবন চামর করে,
    সকল বনরাজি ফুটন্ত জ্যোতিঃ রে।
    কেমন আরতি হে ভবখণ্ডন তব আরতি,
    অনাহত শব্দ বাজন্ত ভেরী রে।

    গান—চিদাকাশে হল পূর্ণ প্রেমচন্দ্রোদয় হে।

    নরেন্দ্রের গান (Kathamrita) সমাপ্ত হইল। ঠাকুর (Ramakrishna) ভবনাথকে গান গাহিতে বলিতেছেন। ভবনাথ গাহিতেছেন:

    দয়াঘন তোমা হেন কে হিতকারী!
    সুখে-দুঃখে সব, বন্ধু এমন কে, পাপ-তাপ-ভয়হারী।

    নরেন্দ্র (সহাস্যে)—এ (ভবনাথ) পান-মাছ ত্যাগ করেছে।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (ভবনাথের প্রতি, সহাস্যে)—সে কি রে! পান-মাছে কি হয়েছে? ওতে কিছু দোষ হয় না! কামিনী-কাঞ্চন ত্যাগই ত্যাগ। রাখাল কোথায়?

    একজন ভক্ত—আজ্ঞা, রাখাল ঘুমুচ্ছেন।

    ঠাকুর (সহাস্যে)—একজন মাদুর বগলে করে যাত্রা শুনতে এসেছিল। যাত্রার দেরি দেখে মাদুরটি পেতে ঘুমিয়ে পড়ল। যখন উঠল তখন সব শেষ হয়ে গেছে! (সকলের হাস্য)

    তখন মাদুর বগলে করে বাড়ি ফিরে গেল। (হাস্য)

    রামদয়াল বড় পীড়িত। আর এক ঘরে শয্যাগত। ঠাকুর সেই ঘরের সম্মুখে গিয়া, কেমন আছেন জিজ্ঞাসা করিলেন।

    পঞ্চদশী, বেদান্ত শাস্ত্র ও শ্রীরামকৃষ্ণ—সংসারী ও শাস্ত্রার্থ 

    বেলা ৪টা হইবে। বৈঠকখানাঘরে নরেন্দ্র, রাখাল, মাস্টার, ভবনাথ প্রভৃতি ভক্তসঙ্গে ঠাকুর বসিয়া আছেন। কয়েকজন ব্রাহ্মভক্ত আসিয়াছেন। তাঁহাদের সঙ্গে কথা (Kathamrita) হইতেছে।

    ব্রাহ্মভক্ত—মহাশয়ের পঞ্চদশী দেখা আছে?

    শ্রীরামকৃষ্ণ(Ramakrishna)—ও-সব একবার প্রথম প্রথম শুনতে হয়,—প্রথম প্রথম একবার বিচার করে নিতে হয়। তারপর—

    “যতনে হৃদয়ে রেখো আদরিণী শ্যামা মাকে,
    মন তুই দেখ আর আমি দেখি, আর যেন কেউ নাহি দেখে।

    সাধনাবস্থায় ও-সব শুনতে হয়। তাঁকে লাভের পর জ্ঞানের অভাব থাকে না। মা রাশ ঠেলে দেন।

    সোনা গলাবার সময় খুব উঠে পড়ে লাগতে হয়। একহাতে হাপর—একহাতে পাখা—মুখে চোঙ্গ—যতক্ষণ না সোনা গলে। গলার পর, যাই গড়নেতে ঢালা হল—অমনি নিশ্চিন্ত।

    শাস্ত্র শুধু পড়লে হয় না। কামিনী-কাঞ্চনের মধ্যে থাকলে শাস্ত্রের মর্ম বুঝতে দেয় না। সংসারের আসক্তিতে জ্ঞান লোপ হয়ে যায়।

    সাধ করে শিখেছিলাম কাব্যরস যত ৷
    কালার পিরীতে পড়ে সব হইল হত ॥(সকলের হাস্য)

    ঠাকুর ব্রাহ্মভক্তদের সহিত শ্রীযুক্ত কেশবের কথা বলিতেছেন:

    “কেশবের যোগ ভোগ। সংসারে থেকে ঈশ্বরের (Ramakrishna) দিকে মন আছে।”

    একজন ভক্ত কন্‌ভোকেসন্‌ (বিশ্ববিদ্যালয়ের পণ্ডিতদের বাৎসরিক সভা) সম্বন্ধে বলিতেছেন —দেখলাম লোকে লোকারণ্য!

    শ্রীরামকৃষ্ণ—অনেক লোক একসঙ্গে দেখলে ঈশ্বরের উদ্দীপন (Kathamrita) হয়। আমি দেখলে বিহ্বল হয়ে যেতাম।

     

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “পঞ্চবার আঠার ষোল, যুগে যুগে এলাম ভাল…শেষে কচে বারো পড়ে মাগো, পঞ্জা-ছক্কায় বন্দী হলাম”

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

LinkedIn
Share