মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আত্মনির্ভর ভারতের মুকুটে আর একটি পালক। বেসরকারি প্রতিরক্ষা সংস্থা সোলার অ্যারোস্পেস অ্যান্ড ডিফেন্স লিমিটেড (Solar Defence and Aerospace Limited) নির্মিত আক্রমণাত্মক ড্রোন ‘রুদ্রাস্ত্র’-র সফল (Rudrastra Drone Tested) পরীক্ষা সম্পন্ন হল রাজস্থানের পোখরানে। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এই ট্রায়ালে ভারতীয় সেনাবাহিনীর কঠোর মানদণ্ড ছাপিয়ে গেল রুদ্রাস্ত্র। এই ড্রোনটি সীমান্তের ওপারে শত্রুর লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করতে ব্যবহৃত হবে। এটি ৫০ কিলোমিটারেরও বেশি দূরত্বে অবস্থিত লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম।
পোখরানে সফল পরীক্ষা
ভারতীয় সেনাবাহিনী, দেশীয়ভাবে তৈরি ভার্টিক্যাল টেক অফ অ্যান্ড ল্যান্ডিং (VTOL) ড্রোনের সফল পরীক্ষা করেছে। রাজস্থানের পোখরান ফায়ারিং রেঞ্জে এই পরীক্ষা চালানো হয়েছিল। এই ড্রোনের নামকরণ করা হয়েছে ‘রুদ্রাস্ত্র’। সেনাবাহিনী প্রচুর পরিমাণে এই ধরনের ড্রোন কিনতে চায় কারণ এগুলি শত্রু অঞ্চলের গভীরে আক্রমণ করতে সক্ষম। হেলিকপ্টারের মতো উল্লম্বভাবে ওঠানামা করতে সক্ষম রুদ্রাস্ত্রের জন্য আলাদা রানওয়ের প্রয়োজন হয় না। ফলে দুর্গম ও অপ্রবেশযোগ্য এলাকা থেকেও সহজেই পরিচালনা করা যায়। পরীক্ষার সময়, ‘রুদ্রাস্ত্র’ ড্রোনটি মোট ১৭০ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করেছে। এর মধ্যে লক্ষ্যবস্তু এলাকার উপর দিয়ে ঘোরাফেরা করা এবং প্রায় দেড় ঘণ্টা আকাশে ভেসে থাকা অন্তর্ভুক্ত। ড্রোন থেকে ফেলা শেলটি মাটির ঠিক উপরে বাতাসে বিস্ফোরিত হয়। এটি ভূপৃষ্ঠ থেকে খুব কম উচ্চতায় বিস্ফোরিত হয় এবং সেনাবাহিনীর প্রয়োজন অনুসারে বিশাল এলাকায় নির্ধারিত লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করতে সফল হয়। পরীক্ষার সময় এটি ৫০ কিমি দূরে থাকা লক্ষ্যবস্তুতে নিখুঁতভাবে আঘাত হানে এবং নিরাপদে ঘাঁটিতে ফিরে আসে।
মহাকাব্যিক নাম, বিধ্বংসী ক্ষমতা
‘রুদ্রাস্ত্র’ নামটি প্রাচীন হিন্দু পুরাণ থেকে নেওয়া, যেখানে এটি শিবের সঙ্গে যুক্ত একটি বিধ্বংসী অস্ত্র হিসেবে বিবৃত। ড্রোনটির অস্ত্রসজ্জায় রয়েছে অত্যাধুনিক অ্যান্টি-পার্সোনেল ওয়ারহেড, যা লক্ষ্যবস্তুর উপরে বিস্ফোরিত হয়ে চারদিকে উচ্চবেগে টুকরো ছড়িয়ে দেয়, ফলে শত্রুপক্ষের মানুষ ও সরঞ্জামের ব্যাপক ক্ষতি হয়।
লাইভ ভিডিওর মাধ্যমে হামলা পর্যবেক্ষণ
রুদ্রাস্ত্র ২,০০০ থেকে ৩,৫০০ মিটার উচ্চতা থেকে আক্রমণ চালাতে পারে এবং সেই সময় লাইভ ভিডিও স্ট্রিমিংয়ের মাধ্যমে কমান্ড সেন্টারে সরাসরি হামলার দৃশ্য পাঠায়। এই ড্রোন স্বয়ংক্রিয়ভাবে নজরদারি, গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ ও নির্ভুল আঘাত হানতে সক্ষম। সেনা সূত্রে খবর, সোলার অ্যারোস্পেস অ্যান্ড ডিফেন্স লিমিটেড (SDAL) ‘রুদ্রাস্ত্র’কে সেনাবাহিনীর জন্য অনেক কাজ করার জন্য প্রস্তুত করছে। সাম্প্রতিক সময়ে ভারত ড্রোন-ভিত্তিক যুদ্ধ কৌশলে ব্যাপক বিনিয়োগ করেছে এবং তাতে বেসরকারি সংস্থাগুলোর অংশগ্রহণ বাড়ছে। আধুনিক যুদ্ধের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ভারতীয় সেনাবাহিনী দেশীয়ভাবে তৈরি অস্ত্রের উপর বেশি মনোযোগ দিচ্ছে।