Tag: schizophrenia

schizophrenia

  • Schizophrenia: ভারতে বেড়ে চলেছে সিজোফ্রেনিয়ার সমস্যা, বলছে কেন্দ্রের রিপোর্ট, সচেতনতার অভাবেই কি?

    Schizophrenia: ভারতে বেড়ে চলেছে সিজোফ্রেনিয়ার সমস্যা, বলছে কেন্দ্রের রিপোর্ট, সচেতনতার অভাবেই কি?

    তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল

    হঠাৎ কেউ ছায়াসঙ্গী হয়ে পিছু নিয়েছে, কিংবা সব সময়েই কেউ ক্ষতি করবে বলে ষড়যন্ত্র কষে চলেছে! এমন নানান ভয়ে শিউরে থাকেন অনেকে। বিশেষত বয়ঃসন্ধিকালে থাকা ছেলেমেয়েদের মধ্যে অনেকেই নানান কারণে উদ্বেগে থাকে। পরিবার কিংবা প্রতিবেশীদের সঙ্গে মেলামেশা করতে স্বচ্ছন্দ বোধ করে না। বরং নিজের মতো থাকতেই পছন্দ করে। অনেক সময়েই তারা নানা রকম আশঙ্কায় ভোগে। চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, এই ধরনের সমস্যা দেখা দিলে একেবারেই উড়িয়ে দেওয়া উচিত নয়। বরং পরিবারের কেউ এমন সমস্যায় ভুগলে, তাঁর দিকে বাড়তি নজরদারি প্রয়োজন। কারণ এগুলোই সিজোফ্রেনিয়ার (Schizophrenia) লক্ষণ হতে পারে।

    ভারতে বাড়ছে সমস্যা, বলছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক

    সম্প্রতি, ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তত্ত্বাবধানে এক সমীক্ষার রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, দেশ জুড়ে সিজোফ্রেনিয়ার সমস্যা বাড়ছে। মানসিক এই রোগ নিয়ে সচেতনতাও তলানিতে। তার জেরে পরিস্থিতি সামলানো আরও কঠিন হয়ে যাচ্ছে বলেই জানাচ্ছেন চিকিৎসকদের একাংশ। বিশ্ব সিজোফ্রেনিয়া সচেতনতা দিবসে (World Schizophrenia Awareness Day) তাই চিকিৎসকদের পরামর্শ, এই রোগ নিয়ে আরও বেশি সচেতনতা কর্মসূচি জরুরি। যাতে সহজেই রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা সম্ভব হয়। তাঁরা জানাচ্ছেন, সিজোফ্রেনিয়ার মূল সমস্যা এই রোগ সম্পর্কে সচেতনতার অভাব। রোগীর অধিকাংশ সময়েই সম্পূর্ণ চিকিৎসা হয় না।‌ যার জেরেই বিপদ বাড়ে‌।

    কীভাবে রোগীকে সনাক্ত করবেন?

    মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, আর পাঁচজন সাধারণ মানুষের মতোই সিজোফ্রেনিয়া (Schizophrenia) আক্রান্ত থাকেন। ফলে, বাইরের মানুষের পক্ষে খুব আলাদা ভাবে তাদের চিহ্নিত করা কঠিন। কিন্তু পরিবারের সদস্যেরা, সব সময় একসঙ্গে থাকলে রোগ সহজেই চিহ্নিত করা যেতে পারে। তাঁরা জানাচ্ছেন, বয়ঃসন্ধিকাল থেকেই সাধারণত এই সমস্যার সূত্রপাত হয়। তবে জীবনের যেকোনও পর্বেই মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, এই রোগে আক্রান্ত (World Schizophrenia Awareness Day) হলে মেলামেশা বা সামাজিক যোগাযোগের চাহিদা কমে যায়। রোগী কখনোই পরিবারের সকলের সঙ্গে একসঙ্গে বসে গল্প করা কিংবা কোনও আত্মীয়ের বাড়ি যাওয়া বা প্রতিবেশীদের সঙ্গে সময় কাটানো পছন্দ করবেন না। অতিরিক্ত নির্জনতা তাঁর পছন্দ হবে। তাই কম বয়সি ছেলেমেয়েদের মধ্যে মারাত্মক একা থাকার প্রবণতা লক্ষ্য করলে, তা নিয়ে সতর্ক থাকা জরুরি বলেই পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ।

    অকারণ নানান আশঙ্কায় ভুগলে কিংবা মনগড়া ভয় (Delusion) তৈরি হলে, তা সিজোফ্রেনিয়ার (Schizophrenia) অন্যতম কারণ বলেই জানাচ্ছেন চিকিৎসকদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, এই রোগে আক্রান্ত হলে, রোগী অনেক সময়েই নানান ভয়ের কল্পনা করেন। যাকে হ্যালোসিনেশন (Hallucination) বলা হয়। তাই পরিবারের কেউ যদি সব সময় নানান আশঙ্কার কথা জানান এবং তার সঙ্গে যদি বাস্তবের বিশেষ মিল না থাকে, তাহলে সে ব্যাপারে সতর্ক হওয়া জরুরি। দ্রুত বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া দরকার।

    কেন বাড়ছে এই রোগ?

    চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, আধুনিক জীবনে বদলে যাচ্ছে সমাজ ব্যবস্থা। সম্পর্কের সমীকরণও বদলে যাচ্ছে। আর এর ফলেই সিজোফ্রেনিয়ার (Schizophrenia) মতো রোগের প্রকোপ বাড়ছে। তাঁরা জানাচ্ছেন, পরিবারের মধ্যেও সম্পর্কের সমীকরণ বদলে যাচ্ছে। অনেক সময়েই দেখা যাচ্ছে, বাবা-মায়ের সম্পর্ক স্বাস্থ্যকর নয়। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে সুসম্পর্ক নেই। এগুলো ছেলেমেয়েদের মধ্যে মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। মানসিক চাপ তৈরি করছে। যার জন্য সিজোফ্রেনিয়ার মতো রোগের প্রকোপ বাড়ছে।

    এর পাশাপাশি, চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, সামাজিক প্রত্যাশা গত কয়েক বছরে মারাত্মক ভাবে বেড়েছে। সাফল্য কিংবা সামাজিক স্বীকৃতি নিয়ে খুব কম বয়স থেকেই মানুষের উপরে অসম্ভব চাপ তৈরি হচ্ছে। যার ফলে মানসিক স্বাস্থ্য ভেঙে পড়ছে‌। সিজোফ্রেনিয়া (Schizophrenia) আক্রান্ত বৃদ্ধির এটাও অন্যতম কারণ বলেই তাঁরা মনে করছেন। তবে অনেক সময়েই বংশানুক্রমিক রোগ হিসাবেও অনেকে সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন বলেই জানাচ্ছেন চিকিৎসকদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, অনেক সময়েই পরিবারের কেউ এই রোগে আক্রান্ত থাকলে, জিনগত ভাবে এই রোগ পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে হচ্ছে।

    কীভাবে এই রোগের মোকাবিলা সম্ভব?

    মনোরোগ বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, সচেতনতাই এই রোগ মোকাবিলার সবচেয়ে বড় হাতিয়ার। তাঁরা জানাচ্ছেন, ভারতে সিজোফ্রেনিয়ার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ, মানুষ এই রোগ সম্পর্কে সচেতন নন। তাই রোগীর ঠিকমতো চিকিৎসা হয় না। অনেক সময়েই আক্রান্তের এই মনগড়া উদ্বেগ অবহেলা হয়। ফলে নানান জটিলতা তৈরি হয়। আক্রান্তের আত্মহত্যার মতো ঘটনাও ঘটে। তাই চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, এই রোগের উপসর্গ সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা (World Schizophrenia Awareness Day) গড়ে তোলা জরুরি। পাশপাশি, রোগ চিহ্নিত হওয়ার পরে, রোগীর যাতে ঠিকমতো চিকিৎসা হয়, তা নিশ্চিত করা জরুরি। চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রে রোগীর ঠিকমতো চিকিৎসা হয় না। চিকিৎসার মাঝপথে রোগী ওষুধ নিয়মিত খাওয়া বন্ধ করে দেন। থেরাপিও বন্ধ হয়ে যায়। ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে। তাই মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, নিয়মিত যাতে আক্রান্ত ওষুধ খান, প্রয়োজনীয় থেরাপি নেন, সেটা নিশ্চিত করাই পরিবারের দায়িত্ব।

    রোগীকে কখনোই সামাজিক অনুষ্ঠান থেকে আলাদা করা যাবে না বলেই বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন। তাঁরা জানাচ্ছেন, বিয়ে কিংবা পুজো, যেকোনও আনন্দ অনুষ্ঠান, যেখানে সমাজের বহু মানুষের মেলামেশা করার সুযোগ থাকবে, সেখানে সিজোফ্রেনিয়া (Schizophrenia) আক্রান্তকে অবশ্যই নিয়ে যেতে হবে। পরিবারের দায়িত্ব, তাঁর সামাজিক যোগাযোগের ব্যবস্থা করে দেওয়া। এতে রোগ মোকাবিলা সহজ হবে‌।

     

     

    DISCLAIMER: এই প্রতিবেদনটি বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী লেখা। এর সঙ্গে মাধ্যম-এর কোনও সম্পর্ক নেই। মাধ্যম এর কোনও দায় নিচ্ছে না। এখানে বলা যে কোনও উপদেশ পালন করার আগে অবশ্যই কোনও চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

  • World Schizophrenia Day: সিজোফ্রেনিয়া আসলে কী? জেনে নিন এই রোগের অজানা কিছু তথ্য

    World Schizophrenia Day: সিজোফ্রেনিয়া আসলে কী? জেনে নিন এই রোগের অজানা কিছু তথ্য

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: শারীরিক রোগ নিয়ে আমাদের দেশের মানুষ যতটা খোলামেলা, ঠিক তার উল্টোটা হয় মানসিক সমস্যার ক্ষেত্রে। আমারা কেবল বাইরে থেকেই নিজেদের উন্নত করেছি। কিন্তু মন এখনও পড়ে পুরনো যুগে। তাইতো মানসিক রোগ নিয়ে আমাদের এখনও ট্যাবু কাটেনি। পরিবারের কেউ মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত হলে চিকিৎসা করানোর আগে সমস্যা লুকোতেই ব্যস্ত হয়ে পড়ি আমরা। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মানসিক সমস্যাকে সাধারণত কেউ তেমন গুরুত্ব দিতে চান না। যে কারণে মানসিক রোগের চিকিৎসা শুরু হয় একেবারে শেষ মুহূর্তে। আর তখন পরিস্থিতি প্রায় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। এমনই এক ভয়ানক মানসিক রোগ হল সিজোফ্রেনিয়া। বর্তমানে গোটা বিশ্বে শুধুমাত্র সিজোফ্রেনিয়াতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২ কোটির বেশি যার বেশীরভাগই মূলত অবহেলার শিকার। তাই সিজোফ্রেনিয়া সম্পর্কে সচেতনতা গড়ে তুলতে প্রতি বছর ২৪ মে বিশ্ব সিজোফ্রেনিয়া দিবস (World Schizophrenia Day) পালন করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

    কাদের হয় এই রোগ? (World Schizophrenia Day) 

    সম্প্রতি এক সমিক্ষায় জানা গিয়েছে, ভারতের মোট জনসংখ্যার প্রায় ১৪ শতাংশ মানুষ সিজোফ্রেনিয়াতে আক্রান্ত। সাধারণ মানুষের গড় আয়ুর তুলনায় সিজোফ্রেনিয়াতে আক্রান্ত রোগীর আয়ু প্রায় ১৫-২০ বছর কমে যায়। অর্থাৎ, সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত হলে রোগীর মৃত্যু সাধারণ মানুষের তুলনায় অনেকটাই আগে হয়। ২০-৪৫ বছর বয়েসি কিশোর-কিশোরী, পুরুষ-মহিলা, যে কেউ এই রোগে আক্রান্ত হতে পারেন।

    কী কারনে হয় সিজোফ্রেনিয়া? 

    ঠিক কী কারণে কেউ সিজোফ্রেনিয়ায় (World Schizophrenia Day) আক্রান্ত হন তার কোনও নির্দিষ্ট কারণ এখনও খুঁজে পাননি বিজ্ঞানীরা। তবে কোনও অভিজ্ঞতার ফলে অত্যধিক মানসিক চাপ থেকে এই রোগের সৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়াও বংশগত কারণ, মস্তিষ্কে রাসায়নিকের ভারসাম্যের অভাব, অনেক সময় ভয়াবহ ভাইরাল ইনফেকশন থেকেও হতে পারে সিজোফ্রেনিয়া। 

    সিজোফ্রেনিয়ার লক্ষণ

    সিজোফ্রেনিয়া (World Schizophrenia Day) রোগের প্রধান লক্ষণগুলি মূলত ৩ ভাবে প্রকাশ পায়—১)চিন্তার মধ্যে অসংলগ্নতা, ২)আচরনগত সমস্যা, ৩)অনুভূতি বিষয়ক সমস্যা। অর্থাৎ কোনও অবাঞ্ছিত বিষয় নিয়ে মনে অযথা সন্দেহ,ভুল জিনিসকে সত্যি ভেবে তার ওপর দৃঢ় বিশ্বাস কিংবা হটাৎ করেই জোরে হেঁসে ওঠা, আবার কোনও কারণ ছাড়াই কেঁদে ফেলা, হঠাত করেই খুব বেশি রেগে যাওয়া বা উত্তেজিত হয়ে ওঠা,কোনও কারণ ছাড়াই এক জায়গায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাড়িয়ে থাকা,আগে একেবারেই যা করতেন না, সে ধরনের আচরণ করতে থাকা। বিশেষ কোনও কিছুর গন্ধ পেতে থাকা, যদিও সেই গন্ধ অন্যেরা কেউই পাচ্ছেন না অথবা কেউ তার সঙ্গে কথা না বললেও, মনে হতে পারে কেউ যেন তার সঙ্গেই কথা-বার্তা বলছে। সিজফ্রেনিয়ার রোগীরা এ ভাবেই পশুপাখির ডাকও শুনতে পান।

    আরও পড়ুন: ৪০০ পেলেই কাশী-মথুরায় বিতর্কিত জমিতে মন্দির নির্মাণ, ফের হুঁশিয়ারি হিমন্তের

    এই রোগের প্রভাব 

    উপরে উল্লেখিত লক্ষণগুলি যদি কারও মধ্যে ৬ মাসের বেশি সময় দেখতে পাওয়া যায় তাহলে তিনি সিজোফ্রেনিয়াতে আক্রান্ত হতে পারেন। প্রাথমিক পর্যায়ে সিজোফ্রেনিয়ার চিকিৎসা না করানো হলে তা ক্রমেই বড় সমস্যা হয়ে উঠতে পারে। আমাদের দেশে মানসিক রোগ সম্পর্কে ধারণায় স্বচ্ছতার অভাব থাকায় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই চরম অবস্থায় পৌঁছে যায় সিজোফ্রেনিয়া (World Schizophrenia Day)। এই রোগে আক্রান্তের ভাবনা-চিন্তা, অনুভূতি, কাজের উপর প্রভাব ফেলে। তাই প্রাথমিক লক্ষণ দেখার সঙ্গে সঙ্গেই মনরোগ বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। সামান্য অবহেলাও মৃত্যু ডেকে আনতে পারে। তবে সময় মত চিকিৎসা করালে অনেক ক্ষেত্রেই রোগী সুস্থ হয়ে ওঠেন। 

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Schizophrenia: সিজোফ্রেনিয়া কীভাবে বুঝবেন? এই রোগে কাদের ঝুঁকি বেশি? 

    Schizophrenia: সিজোফ্রেনিয়া কীভাবে বুঝবেন? এই রোগে কাদের ঝুঁকি বেশি? 

    তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল

    মানসিক রোগ নিয়ে সচেতনতা এ দেশে কম। সিজোফ্রেনিয়ার মতো মানসিক রোগ নিয়ে সচেতনতা ও সতর্কতা দুইয়েরই অভাব যথেষ্ট। তাই অনেক সময়ই ঘটে বড় বিপদ। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, সিজোফ্রেনিয়ার (Schizophrenia) মতো রোগ সম্পর্কে সতর্ক থাকলে, অনেক বড় সমস্যা এড়ানো যায়। চলছে সিজোফ্রেনিয়া অ্যাওয়ারনেস উইক। সপ্তাহ জুড়ে মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা করছেন নানা কর্মশালা। কী বলছেন তাঁরা?

    সিজোফ্রেনিয়া (Schizophrenia) কী? 

    সিজোফ্রেনিয়া এক ধরনের মানসিক রোগ। এই রোগে আক্রান্ত হলে মানুষ বাস্তবসম্মত চিন্তা করতে পারেন না। অধিকাংশ সময়ই তাঁরা নানা অবাস্তব ভাবনাচিন্তা করে আশঙ্কিত থাকেন। নানা ঘটনা তাঁরা ভাবেন ও সেগুলিই সত্যি হিসাবে বিশ্বাস করেন। অনেক ক্ষেত্রেই তাঁদের ভাবনাচিন্তা শুধু নিজের নয়, আশপাশের মানুষের জন্যও ক্ষতিকারক (Schizophrenia) হয়ে ওঠে।

    ভারতে সিজোফ্রেনিয়া (Schizophrenia) আক্রান্তের সংখ্যা কত? 

    কেন্দ্রীয় সরকারের স্বাস্থ্য সমীক্ষা জানাচ্ছে, প্রতি ১০০০ জনের মধ্যে একজন ভারতীয় সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত। ভারতে মোট মানসিক রোগীর ৭ শতাংশ রোগী সিজোফ্রেনিয়ায় ভুগছেন। ১৫ থেকে ৩০ বছর বয়সীদের মধ্যে এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। সমীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী, মহিলাদের তুলনায় পুরুষেরাই বেশি সিজোফ্রেনিয়ায় (Schizophrenia) ভোগেন। সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্তদের মধ্যে ৫০ শতাংশ আত্মহত্যা করেন।

    সিজোফ্রেনিয়া আক্রান্তদের উপসর্গ কী? 

    মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, সিজোফ্রেনিয়া (Schizophrenia) মানসিক রোগ। তাই এই রোগে আক্রান্ত হলে মানুষের ব্যবহারগত নানা পার্থক্য স্পষ্ট নজরে পড়বে। যেমন, সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্তদের মেজাজ অকারণেই অনেক সময় খিটখিটে থাকে। পরিবারের সদস্য কিংবা প্রতিবেশীদের সঙ্গে অকারণ ঝগড়া করা, দুর্ব্যবহার করা এগুলো সিজোফ্রেনিয়ার লক্ষণ। আবার অনেক ক্ষেত্রে রোগী নিজেকে সবকিছু থেকে গুটিয়ে নেন। একদম ঘর বন্ধ হয়ে দিনের পর দিন থাকেন। মেলামেশা বন্ধ করে দেন। আসলে, আচরণে মারাত্মক বৈপরীত্য সিজোফ্রেনিয়ার অন্যতম লক্ষণ বলেই জানাচ্ছেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, কল্পনা করে নানা কথা বলার প্রবণতা থাকে সিজোফ্রেনিয়া রোগীর। কোনও ব্যক্তি সম্পর্কে কিংবা কোনও ঘটনা প্রসঙ্গে লাগাতার নানা আজগুবি কথাও বলে থাকেন। স্মৃতি হারানোর মতো ঘটনাও সিজোফ্রেনিয়া আক্রান্তের দেখা যায়। অনেক ঘটনা আক্রান্ত ভুলে যান। মানসিক অবসাদ, হ্যালোসিনেশন হল সিজোফ্রেনিয়ার অন্যতম লক্ষণ।

    মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ কী? 

    মনোরোগ চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, সিজোফ্রেনিয়ার লক্ষণ সামান্য বোঝা গেলে একেবারেই অবহেলা করা উচিত নয়। পরিবারের কেউ এই সমস্যায় ভুগলে, তাঁকে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া দরকার। কারণ, সিজোফ্রেনিয়া (Schizophrenia) রোগী শুধু নিজের নয়, অপরেরও ক্ষতি করে ফেলতে পারেন। কারণ, এই রোগীর মধ্যে যেমন আত্মহত্যা করার প্রবণতা থাকে, তেমনি এই রোগী অকারণে উত্তেজিত হয়ে পড়েন। মারাত্মক রেগে যেতে পারেন। আর তখন অন্যকে মারধর করা বা বড় কোনও ক্ষতি করে ফেলতে পারেন। তাই রোগীদের বিশেষ যত্নের প্রয়োজন।মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, অনেক ক্ষেত্রে বারবার কেউ মিথ্যা কথা বললে বা কল্পনা করে কোনও ঘটনা বললে, তাকে বকাবকি করা হয়। কেউ কাল্পনিক কোনও চরিত্রের কথা শুনতে পাচ্ছে, জানালে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয় না। কিন্তু এগুলো সিজোফ্রেনিয়ার লক্ষণ। তাই তাদের অবহেলা করা একেবারেই উচিত নয়। বরং তাদের মনোরোগ চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া জরুরি। ধারাবাহিক চিকিৎসা করলে সিজোফ্রেনিয়া রোগীও স্বাভাবিক জীবন কাটাতে পারেন বলেই জানাচ্ছে বিশেষজ্ঞ মহল।

     

    DISCLAIMER: এই প্রতিবেদনটি বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী লেখা। এর সঙ্গে মাধ্যম-এর কোনও সম্পর্ক নেই। মাধ্যম এর কোনও দায় নিচ্ছে না। এখানে বলা যে কোনও উপদেশ পালন করার আগে অবশ্যই কোনও চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

LinkedIn
Share