Tag: Shubhanshu Shukla

  • Shubhanshu Shukla: মহাকাশে মাইক্রো অ্যালগি নিয়ে গবেষণায় মগ্ন শুভাংশু, ৪ তারিখ ভারতীয় পড়ুয়াদের সঙ্গে বলবেন কথা

    Shubhanshu Shukla: মহাকাশে মাইক্রো অ্যালগি নিয়ে গবেষণায় মগ্ন শুভাংশু, ৪ তারিখ ভারতীয় পড়ুয়াদের সঙ্গে বলবেন কথা

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে পৌঁছনো ৬৩৪ নম্বর মহাকাশচারী ভারতের নভশ্চর শুভাংশু শুক্লা (Shubhanshu Shukla)। গত বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টের কিছুটা পরে আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে (ভারতীয় সময়) পৌঁছেছেন তিনি। তারপর থেকে সেখানেই নানা পরীক্ষা করছেন, গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করছেন। বর্তমানে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ISRO) প্রেরিত মাইক্রো অ্যালগি পরীক্ষায় ব্যস্ত রয়েছেন শুভাংশু। মহাকাশে মাইক্রো অ্যালগির ব্যবহার ভারতের ভবিষ্যতের মহাকাশ অভিযানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। আগামী শুক্রবার, ৪ জুলাই মহাকাশ থেকেই দেশের ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে আলাপ জমানোর কথা রয়েছে শুভাংশুর।

    ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলবেন শুভাংশু

    জানা গিয়েছে, আগামী ৪ জুলাই ভারতীয় সময় দুপুর ৩টে ৪৭ নাগাদ কর্নাটকের ইউআর রাও স্যাটেলাইট সেন্টার (ইউআরএসসি)-এর সঙ্গে মহাকাশ থেকে হ্যাম রেডিওর মাধ্যমে যোগাযোগ স্থাপন করতে চলেছেন শুভাংশু (Shubhanshu Shukla)। ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর তত্ত্বাবধানে এই অনুষ্ঠানটি হবে। দেশজুড়ে বিভিন্ন স্কুলের ছাত্রছাত্রীরাও এখানে যোগ দিতে পারবেন। বর্তমান প্রজন্মকে মহাকাশ ও মহাকাশ গবেষণায় উৎসাহিত করার জন্য এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই হ্যাম রেডিও যোগাযোগ ভারতীয় বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং শিক্ষার জন্য একটি গর্বের মুহূর্ত হবে। যা বিশ্বব্যাপী মহাকাশ গবেষণায় ভারতের ক্রমবর্ধমান উপস্থিতির প্রতীক হিসাবে নজির গড়বে। বলে রাখা ভালো, নির্ধারিত রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহার করে, হ্যাম রেডিও অপারেটররা শহর, দেশ এবং এমনকী মহাকাশে থাকা মহাকাশচারীদের সঙ্গেও যোগাযোগ করতে পারে। হ্যাম রেডিও জরুরি অবস্থার সময় খুবই নির্ভরযোগ্য। যখন বিভিন্ন নেটওয়ার্ক যোগাযোগ স্থাপনে ব্যর্থ তখনও এই হ্যাম রেডিও কাজ করে।

    মাইক্রো অ্যালগি নিয়ে গবেষণায় শুভাংশু

    ‘অ্যাক্সিয়ম-৪’ অভিযানের (Axiom 4 Space Mission) পদে পদে দেশবাসীকে সঙ্গে রাখছেন গ্রুপ ক্যাপটেন শুভাংশু। আগেই জানিয়েছিলেন মহাকাশে একা বোধ করছেন না তিনি। যেহেতু তাঁর সঙ্গে রয়েছে একশো চল্লিশ কোটি ভারতবাসী। ইসরো, জৈবপ্রযুক্তি দফতর (ডিবিটি) ও নাসার মধ্যে সহযোগিতার অঙ্গ হিসেবে গবেষণা সংক্রান্ত বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করছেন শুভাংশু। দীর্ঘদিন মহাকাশে থেকে গবেষণার কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য খাদ্য ও পুষ্টিগত ক্ষেত্রে স্বনির্ভরতা প্রয়োজন। অর্থাৎ মহাকাশেই প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য ফলনের গবেষণা এগিয়ে নিয়ে যাওয়া এই মিশনের লক্ষ্য। জানা যাচ্ছে, সেই লক্ষ্যেই শুভাংশুর (Shubhanshu Shukla) কাজ হচ্ছে খাদ্য হিসেবে ব্যবহারযোগ্য মাইক্রো অ্যালগি বা অতি ক্ষুদ্র শৈবালের উপর মাইক্রোগ্র্যাভিটি ও রেডিয়েশনের প্রভাব পর্যবেক্ষণ। পুষ্টির ভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত এইসব মাইক্রো অ্যালগিকে মহাকাশে থাকাকালীন খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করার ক্ষেত্রে সম্ভাবনার দরজা খুলে দেবে এই গবেষণা। সায়ানোব্যাকটিরিয়ার বৃদ্ধি ও প্রোটিন সংশ্লেষ সংক্রান্ত পর্যবেক্ষণও করছেন শুভাংশু। মূলত প্রোটিন ও ভিটামিনে ভরপুর এইসব সায়ানোব্যাকটিরিয়াকে মহাকাশে থাকাকালীন ‘সুপারফুড’ হিসেবে ব্যবহারের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা হবে। ইউরিয়া সহ মানববর্জ্যের নাইট্রোজেন ব্যবহার করে মহাকাশে সায়ানোব্যাকটিরিয়াগুলির বৃদ্ধি ঘটানো সম্ভব কি না, মূলত সেটা খতিয়ে দেখাই এই গবেষণার উদ্দেশ্য। এই গবেষণা ভারতের গগনযান অভিযানে কাজে আসবে বলে জানিয়েছে ইসরো।

  • Shubhanshu Shukla: ‘‘পৃথিবীকে বাইরে থেকে দেখার সুযোগ পাওয়া সৌভাগ্যের বিষয়’’, মহাকাশ কেন্দ্রে পৌঁছে বার্তা শুভাংশুর

    Shubhanshu Shukla: ‘‘পৃথিবীকে বাইরে থেকে দেখার সুযোগ পাওয়া সৌভাগ্যের বিষয়’’, মহাকাশ কেন্দ্রে পৌঁছে বার্তা শুভাংশুর

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মহাকাশে শুরু হয়ে গিয়েছে শুক্লা-পক্ষ। আঠাশ ঘণ্টার জার্নি শেষে ভারতীয় সময় সন্ধে ছটার কয়েক মিনিট আগে আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে পৌঁছেছেন শুভাংশু শুক্লা, পেগি হুইটসন, স্লাওজ উজনানস্কি ও টিবর কাপু। আগামী চোদ্দদিন এটাই ওঁদের ঘর। মাধ্যাকর্ষণ-শূন্য পরিবেশে দিন কাটানো মুখের কথা নয়। বাইরে থেকে খুব সহজ মনে হলেও মাথা ঝিমঝিম করছে শুভাংশুর (Shubhanshu Shukla)। আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে পৌঁছে নিজেই সে কথা জানালেন ভারতীয় মহাকাশচারী। তবে মহাবিশ্বের হাতছানির কাছে এ কিছুই নয়, দাবি ইতিহাস সৃষ্টি করা শুভাংশুর। ভারতীয় বায়ুসেনার গ্রুপ ক্যাপ্টেন জানিয়েছেন, আগামী ১৪ দিন আইএসএস-এ বসে যে গবেষণা তাঁরা করবেন, তার তুলনায় এই অস্বস্তি কিছুই নয়।

    মহাকাশে আলাপচারিতা

    ভারতীয় সময় অনুযায়ী বুধবার বেলা ১২টা ১ মিনিট নাগাদ আমেরিকার ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে ফ্যালকন ৯ রকেটে চেপে মহাকাশের উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছিলেন শুভাংশুরা (Shubhanshu Shukla)। প্রতি ঘণ্টায় ২৬,৫০০ কিলোমিটার গতি ছিল মহাকাশযানের। ২৮ ঘণ্টা পরে বৃহস্পতিবার আইএসএস-এ পৌঁছেছেন শুভাংশু, তাঁর তিনি সঙ্গী পোল্যান্ডের স্লায়োস উজনানস্কি-উইসনিউস্কি এবং হাঙ্গেরির টিবর কাপু, আমেরিকার পেগি হুইটসন। তাঁদের অপেক্ষায় বসেছিলেন আইএসএস-এর সাত মহাকাশচারী। পৃথিবী থেকে রওনা হওয়া চার মহাকাশচারীকে নিয়ে তাঁদের উদ্বেগও ছিল। বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টে নাগাদ (ভারতীয় সময়) শুভাংশুরা আইএসএস-এ পৌঁছোতেই তাঁদের জড়িয়ে ধরেন সেখানকার মহাকাশচারীরা। তাঁরা সেখানে ইতিমধ্যেই গবেষণা চালাচ্ছেন। চার জনকে অভ্যর্থনা জানিয়ে পানীয় দেওয়া হয় হাতে। সেই মুহূর্তের কিছু ছবি, ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে সমাজমাধ্যমে। প্রকাশ করেছে ইলন মাস্কের সংস্থা স্পেস এক্স। সেখানে দেখা গিয়েছে, আইএসএস-এ হাসতে হাসতে গল্প করছেন মহাকাশচারীরা।

    শস্য ফলানোই প্রধান কাজ

    ১৯৮৪ সালে মহাকাশে পাড়ি দিয়েছিলেন রাকেশ শর্মা। তিনিই প্রথম ভারতীয়, যিনি মহাকাশে পাড়ি দিয়েছিলেন। ৪১ বছর পর ফের ইতিহাস গড়ার সুযোগ পেল ভারত। অ্যাক্সিওম-৪ মিশনের নেতৃত্বেই রয়েছেন ভারতীয় বায়ুসেনার গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশু শুক্লা। আগামী ১৪ দিন তিনি ও তাঁর সহকর্মীরা অনেক কাজ করবেন। শুভাংশুর (Shubhanshu Shukla) সঙ্গে রয়েছে ৬ ধরনের ভারতীয় শস্যবীজ। সেই শস্য ফলানোই প্রধান কাজ। আগামীদিনে মহাকাশ অভিযানে এটা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ হবে কারণ মহাকাশেই ফল-মূল উৎপাদন করা সম্ভব হলে কষ্ট করে পৃথিবী থেকে খাবার বয়ে নিয়ে যেতে হবে না। মহাকাশে উৎপাদন হলে তার জিনগত বা পুষ্টিগত কোনও পার্থক্য তৈরি হয় কি না, তাও গবেষণা করে দেখা হবে। এছাড়াও শুভাংশু শুক্লা আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ করবেন। মাইক্রোঅ্যালগি বা “ক্ষুদ্র শৈবাল” নিয়ে গবেষণা। মহাকাশে গেলে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির অভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় মানবদেহের পেশি। মহাকাশে রেডিয়েশন ও মাইক্রোগ্রাভিটির প্রভাব এই অ্যালগির উপরে কী হয়, এর পুষ্টিগুণে কোনও পার্থক্য তৈরি হয় কি না, তা গবেষণা করে দেখা হবে।

    গর্ব এবং উত্তেজনার মুহূর্ত

    আইএসএস-এ বসেই লখনউয়ের ছেলে শুভাংশু বলেন, ‘‘এটা গর্ব এবং উত্তেজনার মুহূর্ত, মহাকাশ অভিযানের ক্ষেত্রে আমাদের ব়ড় পদক্ষেপ।’’ সেই সঙ্গে তিনি আবার মনে করিয়ে দেন তাঁর কাঁধে থাকা ভারতীয় পতাকার কথা। তাঁর কথায়, ‘‘গর্বের সঙ্গে কাঁধে তেরঙা পরেছি।’’ বুধবার যাত্রা শুরুর আগেও এই কথাই শোনা গিয়েছিল তাঁর মুখে। তিনি জানিয়েছিলেন, তাঁর কাঁধে লাগানো জাতীয় পতাকা মনে করাচ্ছে যে তিনি একা নন। আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে প্রবেশ করে সেখানকার বন্ধুদেরও ধন্যবাদ জানান শুভাংশু। তিনি বলেন, ‘‘পৃথিবীর বাইরে থেকে পৃথিবীকে দেখার সুযোগ পাওয়াটা একটা সৌভাগ্যের বিষয়। যাত্রাটা অসাধারণ ছিল। অসাধারণ! মহাকাশে আসার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলাম। কিন্তু যে মুহূর্তে আমি আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে প্রবেশ করলাম, এই ক্রু সদস্যরা আমাকে এমন স্বাগত জানাল! তোমরা আক্ষরিক অর্থেই আমাদের জন্য তোমাদের ঘরের দরজা খুলে দিলে। আমি আরও ভালো বোধ করছি। এখানে আসার আগে আমার যা প্রত্যাশা ছিল তা অবশ্যই ছাপিয়ে গেছে। তাই তোমাদের অনেক ধন্যবাদ। আমি অত্যন্ত আত্মবিশ্বাসী যে আগামী ১৪ দিন বিজ্ঞান এবং গবেষণাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং একসঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতাটা অসাধারণ হবে। অনেক ধন্যবাদ।’’

    মহাকাশে বসেই গাজরের হালুয়া, আমের রস

    ১৪ দিনের এই অভিযানের গোটা সময়টা আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনেই থাকবেন চার নভশ্চর। সেখানে অন্তত ৬০টি পরীক্ষানিরীক্ষা চালাবেন তাঁরা। তবে, শুধু তো কাজ করলেই হল না, মহাকাশে খাবার খেতেও হবে শুভাংশুদের। এই খাবার খাওয়াও এক কষ্টসাধ্য কাজ, কারণ সাধারণ খাবার খাওয়া যায় না। বিশেষ পদ্ধতিতে তৈরি প্রক্রিয়াজাত খাবারই খেতে হয়। তবে ওই প্যাকেটজাত খাবার, শুকনো ফলের পাশাপাশি গাজরের হালুয়া, আমের রস ও মুগ ডালের হালুয়াও খাবেন শুভাংশু (Shubhanshu Shukla)। তাঁর জন্য এই খাবার বিশেষ প্রক্রিয়ায় তৈরি করে দিয়েছে ইসরোর ডিফেন্স ইন্সটিটিউশন অব বায়ো ডিফেন্স টেকনোলজি। এই খাবারে কোনও প্রিজারভেটিভ দেওয়া নেই। স্বাভাবিক তাপমাত্রায় ১ বছর পর্যন্ত ঠিক থাকবে এই খাবারগুলি। শুভাংশুর অভিযানের লাইভ সম্প্রচার লখনউয়ে তাঁর স্কুলে বসে দেখেন বাবা, মা, আত্মীয়, বন্ধুরা। ১৪ দিনের এই অভিযান আন্তর্জাতিক স্তরে ভারতের বৈজ্ঞানিক কৃতিত্বকে আরও মজবুত ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত করবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

  • Shubhanshu Shukla: ‘ঠিক যেন শিশু, মহাকাশে হাঁটা-খাওয়া শিখছি…’, মহাশূন্য থেকে নমস্কার জানিয়ে বার্তা শুভাংশুর

    Shubhanshu Shukla: ‘ঠিক যেন শিশু, মহাকাশে হাঁটা-খাওয়া শিখছি…’, মহাশূন্য থেকে নমস্কার জানিয়ে বার্তা শুভাংশুর

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মহাবিশ্ব, মহাকাশে ভাসছেন ভারতীয় নভশ্চর শুভাংশ শুক্লা (Shubhanshu Shukla)৷ সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ভারতীয় সময় বিকেল সাড়ে চারটেয় আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (আইএসএস) পৌঁছবে তাঁদের মহাকাশযান ক্যাপসুল ‘গ্রেস’। ইতিমধ্যে মহাকাশে প্রায় ২৪ ঘণ্টা কাটিয়ে ফেলেছেন চার নভশ্চর। সেখান থেকেই পৃথিবীর উদ্দেশে আরও এক বার বার্তা দিলেন শুভাংশু। শোনালেন মহাকাশে একটা গোটা দিন কাটিয়ে ফেলার অভিজ্ঞতা! মহাশূন্য থেকে দেশবাসীকে ‘নমস্কার’ জানান শুভাংশু। বলেছেন, মহাশূন্যে অভিকর্ষের ব্যাপক পার্থক্যের কারণে আবার এখন শিশুর মতো হাঁটতে শিখছেন ৷

    মহাকাশে কেমন লাগছে শুভাংশুর ?

    এই মিশনে দারুণ উত্তেজিত অ্যাক্সিয়ম-৪ মিশনের পাইলট শুভাংশু শুক্লা ৷ তাঁর সহ-নভশ্চরদের সঙ্গে এই যাত্রায় সঙ্গী হতে পেরে তিনি কৃতজ্ঞ ৷ আমেরিকার স্পেসএক্স সংস্থার মহাকাশ স্টেশনের লঞ্চপ্যাড থেকে তাঁদের রকেট উৎক্ষেপণের সময়ে একটা বিশাল ধাক্কা অনুভব করেছেন শুভাংশু-সহ অন্যরা ৷ এরপর একটা পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে মহাকাশের পথে যাত্রা শুরু করে রকেট ৷ তখনও অস্বস্তি হচ্ছিল শুভাংশুর ৷ এরপর সময় যত গড়িয়েছে ততই প্রবল হয়েছে মহাশূন্যের নিস্তব্ধতা ৷ আর সঙ্গে মহাকাশের ভারশূন্য অবস্থা ৷ ভারতীয় সময় অনুযায়ী বৃহস্পতিবার সকালে মহাকাশ থেকে সরাসরি পৃথিবীর সঙ্গে কথোপকথন করেছেন চার নভশ্চর। অ্যাক্সিয়ম স্পেসের এক্স হ্যান্ডলেও সেই ভিডিয়োর সরাসরি সম্প্রচার হয়েছে। সেখানেই শুভাংশু বলেন, ‘‘যখন যাত্রা শুরু হল, তখন একটা অদ্ভুত অনুভূতি হচ্ছিল। খুব ভাল সফর ছিল। মহাকাশে পৌঁছোতেই অস্বস্তি শুরু হয়। শুনলাম, গত কাল নাকি আমি পড়ে পড়ে ঘুমিয়েছি!’’

    শিশুর মতো শিখছেন

    শুভাংশু (Shubhanshu Shukla) ছাড়াও নাসার এই অভিযানে রয়েছেন পেগি হুইটসন, স্লায়োস উজ়নানস্কি-উইসনিউস্কি এবং টিবর কাপু। মহাকাশের মাধ্যাকর্ষণ-শূন্য পরিবেশে হাঁটাচলা থেকে শুরু করে সব কিছুই নতুন করে শিখতে হচ্ছে তাঁদের। দীর্ঘ ২৪ ঘণ্টার যাত্রাপথে কীভাবে মানিয়ে নিচ্ছেন নিজেকে? এর উত্তরে শুভাংশ জানান, তিনি এখন কিছুটা ভালো বোধ করছেন ৷ ভালো করে ঘুমোচ্ছেন এবং নতুন এক বিশ্বে এক কৌতূহলী শিশুর মতো ক্রমাগত শিখে চলেছেন ৷ শুভাংশু বলেন, ‘‘শিশুর মতো হাঁটতে শিখছি! শিখছি কী ভাবে হাঁটতে হয়, কী ভাবে খেতে হয়!’’ মহাকাশের পরিবর্তিত পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন শুভাংশুরা ৷ ক্যাপসুলে বন্দি থেকে প্রতি মুহূর্তে মহাশূন্যের নতুন নতুন দৃশ্য উপভোগ করছেন এবং সহ-নভশ্চরদের সঙ্গে ভুলত্রুটিগুলিও সংশোধন করছেন ৷

    ভারতের মহাকাশ কর্মসূচির সূচনা

    ইতিহাস গড়েছে ভারত। রাকেশ শর্মার পর চার দশক ডিঙিয়ে মহাকাশে পাড়ি দিয়েছেন ৩৯ বছরের ভারতীয় নভোচর শুভাংশু শুক্লা (Shubhanshu Shukla)। বুধবার দুপুরে আমেরিকার ফ্লরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে ফ্যালকন ৯ রকেটে চেপে মহাকাশ স্টেশনের উদ্দেশে পাড়ি দেন তিনি। মহাকাশ থেকে প্রথম বার্তায় আগেই শুভাংশু জানিয়েছিলেন ‘বর্ণনাতীত’ অভিজ্ঞতা। অ্যাক্সিয়ম-৪ মিশনের (Axiom-4 mission) সফল উৎক্ষেপণের পর গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশু শুক্লা পৃথিবীতে পাঠানো প্রথম বার্তায় জানান, কাঁধে করে তেরঙা নিয়ে যাচ্ছেন। অর্থাৎ চার দশক পর এক অনন্য ইতিহাসের পাতায় লিখতে চলেছেন তাঁর দেশ ভারতের নাম। মিশনের কন্ট্রোল রুমে পাঠানো প্রথম বার্তায় শুক্লা বলেন, এই অভিযান শুধু আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনের উদ্দেশে যাত্রা নয়, ভারতের মহাকাশ কর্মসূচির সূচনা।

    শুভাংশুকে প্রধানমন্ত্রী মোদির শুভেচ্ছা

    শুভাংশু (Shubhanshu Shukla) বলেন, , ‘‘নমস্কার, আমার প্রিয় দেশের মানুষ। কী মজার যাত্রা! ৪১ বছর পর আমরা আবার মহাকাশে পাড়ি দিলাম। দারুণ লাগছে! এখন আমরা পৃথিবীকে প্রতি সেকেন্ডে সাড়ে ৭ কিমি গতিতে প্রদক্ষিণ করছি। তেরঙা আমার কাঁধে রয়েছে। যা আমাকে বারবার মনে করিয়ে দিচ্ছে, আমি আপনাদের সকলের সঙ্গে আছি। আমি চাই আপনারাও সকলে আমার এই যাত্রার সঙ্গী হন। আপনাদের বুক নিশ্চই গর্বে ফুলে উঠবে। মহাকাশে ভারতের মানুষ পাঠানোর স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে। জয় হিন্দ! জয় ভারত!’’ শুভাংশুকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেন, ‘‘শুভাংশু শুক্লাই প্রথম ভারতীয় মহাকাশচারী যিনি আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে পা রাখবেন। তিনি নিজের কাঁধে ১৪০ কোটি ভারতীয়ের ইচ্ছা, আশা, আকাঙ্ক্ষার ভার বহন করছেন।’’

  • Axiom Mission 4: তৈরি হল ইতিহাস, ৪১ বছর পর মহাকাশে ফের ভারতীয়, শুভাংশুদের নিয়ে ‘ড্রাগন’-এর সফল উৎক্ষেপণ

    Axiom Mission 4: তৈরি হল ইতিহাস, ৪১ বছর পর মহাকাশে ফের ভারতীয়, শুভাংশুদের নিয়ে ‘ড্রাগন’-এর সফল উৎক্ষেপণ

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: চল্লিশ বছরের দীর্ঘ প্রতীক্ষা। ৪১ বছর পরে মহাকাশচারী পেল ভারত৷ রাকেশ শর্মার পরে দ্বিতীয়বার কোনও ভারতীয় অন্তরীক্ষে পা রাখতে চলেছেন৷ আর তাঁর নাম শুভাংশু শুক্লা (Shubhanshu Shukla)৷ স্থানীয় সময় ১২টা ১ মিনিটে আমেরিকার ফ্লরিডায় নাসার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে উড়ান দেয় শুভাংশুদের মহাকাশযান। চার সদস্যের অভিযানের কমান্ডার হিসাবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন নাসার প্রাক্তন নভশ্চর তথা অ্যাক্সিয়ম স্পেসের (Axiom Mission 4) মানব মহাকাশযানের ডিরেক্টর রেগি হুইটসন। এ ছাড়াও থাকছেন পোল্যান্ডের স্লায়োস উজনানস্কি-উইসনিউস্কি এবং হাঙ্গেরির টিবর কাপু।

    অবশেষে সফল উৎক্ষেপণ

    সাতবার বাধার পর অবশেষে সফল হল উৎক্ষেপণ। স্বপ্নের শুরু। মহাকাশ স্টেশনের পথে উড়ে গেল শুভাংশুদের মহাকাশযান। ভারতীয় সময় অনুযায়ী বুধবার বেলা ১২টা ১ মিনিট নাগাদ শুভাংশুদের নিয়ে উড়ান দেয় স্পেস এক্সের মহাকাশযান ‘ড্রাগন’। নাসার কেনেডি স্পেস সেন্টারের ৩৯এ লঞ্চ কমপ্লেক্স থেকে ‘ফ্যালকন ৯’ রকেটের সাহায্যে ড্রাগনকে মহাকাশে পাঠানো হয়। ভারতীয় সময় বৃহস্পতিবার বিকেল চারটা নাগাদ আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন) পৌঁছাবেন শুভাংশুরা। এদিন কাউন্ট ডাউন শেষ হতেই দেখা যায় মহাকাশযানটি অগ্নি উদগীরণ করতে করতে উপরে উঠছে। সেই মুহূর্তে চারপাশ হাততালি ও হর্ষধ্বনিতে ভরে যায়। ফ্যালকন-৯ ড্রাগনকে অরবিটে পৌঁছে দেওয়ার পর প্রথম স্টেজটি ফিরে আসে নির্ভুল ল্যান্ডিংয়ে। দ্বিতীয় ধাপ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ড্রাগন এগিয়ে যায়। এবার তার গন্তব্য- আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন।

    মহাকাশে কতদিন থাকবে কী করবে শুভাংশুরা

    ১৪ দিন তাঁরা আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে থাকবেন। সেখানে অন্তত ৬০টি পরীক্ষানিরীক্ষা চালাবেন তাঁরা। নাসা এবং ইসরোর যৌথ উদ্যোগে দলটি এই কাজ করবে। শুভাংশু ভারতের নিজস্ব স্পেস মিশন ‘গগনযান’-এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন এই অভিযানের মাধ্যমে। প্রথমে ঠিক ছিল, ২০২৫ সালের ২৯ মে শুভাংশুদের (Shubhanshu Shukla) অভিযান হবে। এরপর ৮ জুন, ১০ জুন, ১১ জুন, ১৯ জুন ও ২২ জুন উৎক্ষেপণের তারিখ নির্ধারিত করা হয়েছিল। কিন্তু প্রতিবারই কোনও না কোনও কারণে মহাকাশযাত্রা সম্ভব হয়নি। বারবার পিছিয়েছে অভিযান। শেষমেশ মঙ্গলবার নাসা জানায়, বুধবার ওই অভিযান হতে চলেছে। সেইমতো শুরু হয়ে যায় প্রস্তুতি। শুরু হয় প্রহর গোনার পালা। অরল্যান্ডোর এক সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, বুধবার সকালে উৎক্ষেপণের ঘণ্টাখানেক আগেও আচমকা প্রযুক্তিগত ত্রুটি দেখা দিয়েছিল মহাকাশযানে। জানা গিয়েছে, কোনও কারণে আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্য মহাকাশযানে আপলোড হচ্ছিল না। কিন্তু কিছু ক্ষণের চেষ্টায় সেই ত্রুটি সংশোধন করে নেন বিজ্ঞানীরা। তার পর নির্ধারিত সময়ে অবশেষে এদিন মহাকাশে পাড়ি দিলেন শুভাংশু সহ চার মহাকাশচারী।

    উত্তরপ্রদেশের লখনউ থেকে মহাকাশে

    নাসার ‘অ্যাক্সিয়ম-৪’ নামে (Axiom Mission 4) এই অভিযানের জন্য ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর তরফ থেকে প্রাথমিক ভাবে বেছে নেওয়া হয়েছিল দুই গগনযাত্রী শুভাংশু শুক্লা এবং প্রশান্ত বালাকৃষ্ণন নায়ারকে। উত্তরপ্রদেশের লখনউয়ের ছেলে শুভাংশু ভারতীয় বায়ুসেনার গ্রুপ ক্যাপ্টেন। মূল মহাকাশচারী হিসাবে বেছে নেওয়া হয় ৩৯ বছরের শুভাংশুকে। তাঁর বিকল্প হিসাবে রাখা হয় প্রশান্তকেও। সেই মতো গত বছরের আগস্ট থেকে অভিযানের জন্য প্রশিক্ষণ নেওয়াও শুরু করে দিয়েছিলেন দু’জনে। শুরুতে কথা ছিল, ২০২৫ সালের ২৯ মে শুভাংশুদের অভিযান হবে। কিন্তু বাদ সাধে আবহাওয়া, যান্ত্রিক ত্রুটি-সহ নানা কারণ। পরেও একাধিক বার সেই অভিযান পিছোতে বাধ্য হয় নাসা। বার সাতেক দিনক্ষণ বদলানোর পর অবশেষে বুধবার সেই অভিযান হল। মিশন সফল হলে শুভাংশু হবেন ভারতের দ্বিতীয় ব্যক্তি যিনি মহাকাশে পা রাখবেন। ১৯৮৪ সালে উইং কমান্ডার রাকেশ শর্মা প্রথম ভারতীয় হিসেবে মহাকাশে গিয়েছিলেন। তার ৪১ বছর পর ইতিহাস গড়লেন শুভাংশু।

    গর্বিত শুভাংশুর মা

    বায়ুসেনার ক্যাপ্টেন হওয়ায় এর আগে এএন-৩২, জাগুয়ার, হক, মিগ-২১, সু-৩০-সহ নানা ধরনের যুদ্ধবিমান চালানোর অভিজ্ঞতা রয়েছে শুভাংশুর (Shubhanshu Shukla)। কিন্তু মহাকাশযান এই প্রথম! এজন্য দীর্ঘ দিন ধরে স্পেসএক্স এবং ‘অ্যাক্সিয়ম স্পেস ইনকর্পোরেশন’-এর কাছে প্রশিক্ষণও নিতে হয়েছে তাঁকে। শুভাংশুর মা আশা শুক্লা ছেলের এই কৃতিত্বে আনন্দ প্রকাশ করে বলেন, “আমরা এটা ভাষায় বর্ণনা করতে পারব না… গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশু শুক্লার জন্য আমরা মোটেও ভীত নই… আমরা আনন্দিত, আমরা খুব গর্বিত।”

  • Shubhanshu Shukla: মহাকাশযানে প্রযুক্তিগত সমস্যা! ফের পিছোল শুভাংশুদের মহাকাশযাত্রা, জানাল স্পেসএক্স

    Shubhanshu Shukla: মহাকাশযানে প্রযুক্তিগত সমস্যা! ফের পিছোল শুভাংশুদের মহাকাশযাত্রা, জানাল স্পেসএক্স

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আবারও অপেক্ষা! পিছিয়ে গেল ভারতের শুভাংশু শুক্লা-সহ (Shubhanshu Shukla) চার মহাকাশচারীর মহাকাশযাত্রা। ১৯৮৪ সালে সাবেক সোভিয়েতের সয়ুজ মহাকাশযানে রাকেশ শর্মার ঐতিহাসিক মিশনের ৪১ বছর পর শুক্লা দ্বিতীয় ভারতীয় নভশ্চর হিসেবে মহাকাশে যেতে চলেছেন। তবে সেই ঐতিহাসিক মুহূর্ত আরও কিছুটা বিলম্বিত হল। বুধবার শুভাংশুর মহাকাশে উড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও অ্যাক্সিওম-৪ মিশনটি আপাতত স্থগিত করা হচ্ছে। এই নিয়ে পঞ্চম বার থমকে গেল শুভাংশুদের যাত্রা। রকেটে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ফের স্থগিত করা হল অ্যাক্সিওম-৪ মিশন (Axiom-4 launch)। ইলন মাস্কের সংস্থা স্পেসএক্সের তরফে একথা জানানো হয়েছে।

    কেন স্থগিত যাত্রা

    বুধবার ভারতীয় সময় বিকেলে আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্র (আইএসএস)-এর উদ্দেশে পাড়ি দেওয়ার কথা ছিল শুভাংশুদের। ইলন মাস্কের সংস্থা স্পেসএক্সের তৈরি ‘ড্রাগন’ মহাকাশ যানে চেপে আমেরিকার ফ্লোরিডা থেকে যাত্রা শুরুর কথা থাকলেও, এখনই তা হচ্ছে না। স্পেসএক্সের তরফে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। কেন মহাকাশযাত্রা পিছোতে হচ্ছে, তার কারণ ব্যাখ্যা করেছে মাস্কের সংস্থা। বুধবার সকালে (ভারতীয় সময়) এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করে শুভাংশুদের মহাকাশযাত্রা পিছোনোর বিষয়টি জানানো হয়। মাস্কের সংস্থার তরফে বলা হয়েছে, এই মহাকাশযাত্রার জন্য যে ফ্যালকন-৯ রকেট ব্যবহার করার কথা, তাতে প্রযুক্তিগত সমস্যা দেখা দিয়েছে। সেই কারণেই আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রে শুভাংশুদের যাত্রা আপাতত স্থগিত করা হচ্ছে। উৎক্ষেপণের নতুন তারিখ এখনও কিছু ঠিক হয়নি। সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, প্রযুক্তিগত সমস্যা মেটানোর পরেই নতুন তারিখ ঘোষণা করা হবে।

    রকেটের সমস্যা

    স্পেসএক্সের তরফে জানানো হয়েছে, উৎক্ষেপণের আগে মহাকাশযানের ‘ফায়ার বুস্টার’ পরিদর্শনের সময় দেখা যায় যে রকেটে ‘এলওএক্স’ লিক করছে। অর্থাৎ রকেটে অক্সিজেন লিক করছে। ফ্যালকন-৯ রকেটের এই সমস্যা নতুন নয়। আগের অভিযানেই অক্সিজেন লিকের সমস্যাটা নজরে আসে। এই ‘লিক’ মেরামত করতে অতিরিক্ত সময় প্রয়োজন। কেন এই অভিযান ফের পিছিয়ে দেওয়া হল, সে বিষয়ে আরও আলোকপাত করে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা জানিয়েছে, লঞ্চ প্যাডে সাত সেকেন্ডের হট টেস্টের সময় প্রোপালশন বে-তে একটি এলওএক্স (লিকুইড অক্সিজেন) লিকেজ ধরা পড়ে। তাই উৎক্ষেপণের ছাড়পত্র দেওয়া হয়নি। আগে প্রথমে লিক মেরামত করা প্রয়োজন। এরপর এই সংক্রান্ত যাবতীয় পরীক্ষা করা হবে। তারপর ওড়ার জন্য ছাড়পত্র দেওয়া হবে রকেটটিকে। এএক্স-৪ মহাকাশযানে করে ভারত, পোল্যান্ড ও হাঙ্গেরির নভশ্চররা মহাকাশে যাবেন। তিনটি দেশের জন্যই এটি আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে তাদের প্রথম মিশন।

  • Shubhanshu Shukla: ৪১ বছর পর ফের মহাকাশে যাচ্ছেন এক ভারতীয়, কেন তাৎপর্যপূর্ণ শুভাংশুর এই যাত্রা?

    Shubhanshu Shukla: ৪১ বছর পর ফের মহাকাশে যাচ্ছেন এক ভারতীয়, কেন তাৎপর্যপূর্ণ শুভাংশুর এই যাত্রা?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ৪১ বছর পরে এবার ফের মহাকাশে পাড়ি দিতে চলেছেন এক ভারতীয়। বায়ুসেনার গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশু শুক্ল (Shubhanshu Shukla)। শুক্রবার ইসরোর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভ্রাংশুকে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (International Space Station) পাঠাবে মার্কিন মহাকাশ সংস্থা, নাসা। প্রাইমারি মিশন পাইলট হিসেবে থাকছেন গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুক্ল। বায়ুসেনার আর এক কর্তা, গ্রুপ ক্যাপ্টেন প্রশান্ত বালকৃষ্ণণ নায়ার থাকবেন ব্যাকআপ মিশন পাইলট হিসেবে।

    শুভাংশু শুক্ল (Shubhanshu Shukla)

    উত্তরপ্রদেশের রাজধানী লখনউয়ের বাসিন্দা শুভাংশু। প্রায় ১৮ বছর আগে তিনি যোগ দিয়েছিলেন ভারতীয় বায়ুসেনায়। শুভাংশুর দিদি জানান, কার্গিল যুদ্ধই ছিল তাঁর বাহিনীতে যোগদানের অনুপ্রেরণা। ১৯৯৯ সালে, কার্গিল যুদ্ধের সময় শুক্লর বয়স ছিল ১৪ বছর। সেই সময় ভারতীয় সেনাদের বীরত্ব ও আত্মত্যাগের বীরগাথা পড়তে পড়তেই তিনি ঠিক করে নিয়েছিলেন সশস্ত্র বাহিনীতে যোগ দেবেন।

    অ্যাক্সিওম স্পেস

    প্রায় ৯ মাস আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে কাটানোর পর গত মার্চ মাসে পৃথিবীতে ফিরে এসেছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত নভশ্চর সুনীতা উইলিয়ামস এবং বুচ উইলমোর। এবার সেখানেই যাওয়ার কথা শুভাংশুর। গত মে মাসের ২৯ তারিখেই আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে পাড়ি দেওয়ার কথা ছিল ইন্ডিয়ান এয়ার ফোর্সের গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশুর। কিন্তু ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনে যাওয়ার সেই অভিযান স্থগিত হয়ে গিয়েছিল বলে জানিয়েছে অ্যাক্সিওম স্পেস। জানা গিয়েছে, এএক্স-৪ মিশনের এই উৎক্ষেপণ হবে মঙ্গলবার, ১০ জুন। দু’হাজার ঘণ্টারও বেশি উড়ানের অভিজ্ঞতা রয়েছে শুভাংশুর। ২০১৯ সালে ভারতের মহাকাশচারী কর্মসূচির জন্য নির্বাচিত হন তিনি। এজন্য রাশিয়া, ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন তিনি। তিনিই হবেন কনিষ্ঠতম মহাকাশচারী।

    রাত পোহালেই রচিত হবে ইতিহাস

    আবহাওয়া অনুকূল (Shubhanshu Shukla) থাকলে ১০ জুন ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার (NASA) থেকে স্পেসএক্সের ফ্যালকন ৯ রকেট উৎক্ষেপণ করা হবে। এই রকেটটি চারজন মহাকাশচারীকে নিয়ে দুসপ্তাহের যাত্রায় আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রের দিকে রওনা দেবে। এই দলেই থাকবেন শুভাংশু। এই অভিযানের নাম রাখা হয়েছে “অ্যাক্সিওম মিশন ৪” (Ax-4)। এটি পরিচালনা করছে হিউস্টন-ভিত্তিক একটি বেসরকারি সংস্থা অ্যাক্সিওম স্পেস, যারা পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে কাজের ক্ষেত্রে দ্রুতই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা অর্জন করেছে। শুভাংশু হবেন আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রে যাওয়া প্রথম ভারতীয় নভশ্চর (International Space Station)। অ্যাক্সিওম-৪ হল অ্যাক্সিওম স্পেসের চতুর্থ মানববাহী মহাকাশ মিশন, যা নাসা এবং স্পেস এক্সের সঙ্গে যৌথভাবে পরিচালিত হচ্ছে। এটি একটি বেসরকারিভাবে পরিচালিত বাণিজ্যিক মহাকাশযাত্রা, যার উদ্দেশ্য হল মানব শারীরবিদ্যা, পৃথিবী পর্যবেক্ষণ, পদার্থবিদ্যা, এবং মহাকাশ কৃষি-সহ বিভিন্ন বিষয়ে ৬০টিরও বেশি বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পন্ন করা।

    এই মিশনের গুরুত্ব

    এই মিশন নানা (Shubhanshu Shukla) কারণে গুরুত্বপূর্ণ। এটি মহাকাশে সরকারি-বেসরকারি সহযোগিতার সাফল্য প্রদর্শন করে এবং আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে মানুষের উপস্থিতিকে আরও সম্প্রসারিত করে। এই মিশন ভারতের মতো দেশ, পোল্যান্ড ও হাঙ্গেরির মতো যারা বহু দশক ধরে মানব মহাকাশ অভিযানে যোগ দিতে পারেনি, তাদের মহাকাশে নিজেদের অবস্থান পুনরুদ্ধার করার সুযোগ দেয়। শুভাংশু এএক্স-৪ মিশনের পাইলট হিসেবে একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁর স্থান মিশন কমান্ডারের পরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদে। তাঁর দায়িত্বের মধ্যে রয়েছে নেভিগেশন, ডকিং এবং জরুরি পরিস্থিতিতে পরিচালনার কৌশল। সংবাদ মাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে শুভাংশু বলেন, “আমি মহাকাশে যাচ্ছি। শুধু যন্ত্রপাতি ও উপকরণই বহন করছি না, আমি বহন করছি ১০০ কোটি হৃদয়ের আশা ও স্বপ্ন। আমি সকল ভারতীয়ের কাছে আমাদের মিশনের সাফল্যের জন্য প্রার্থনার অনুরোধ জানাই।”

    ভারতের বিনিয়োগ

    ভারত শুক্লার আসন সুরক্ষিত করতে ৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। এটি কেবল প্রতীকী পদক্ষেপ নয়, বরং একটি কৌশলগত সিদ্ধান্ত, যাতে ইসরোর গগনযান মিশন (যেটি ২০২৫–২০২৭ সালের মধ্যে সম্পন্ন হওয়ার কথা) আন্তর্জাতিক মঞ্চে (International Space Station) পরিচিতি এবং প্রয়োজনীয় প্রস্তুতির সুবিধা পায়। ইসরোর চেয়ারম্যান ভি নারায়ণ বলেন, “এই মিশন থেকে আমরা যে উপকার পাব, তা অভূতপূর্ব — প্রশিক্ষণ, সুবিধাগুলির সঙ্গে পরিচিতি এবং মহাকাশে যৌথভাবে পরীক্ষানিরীক্ষা পরিচালনার অভিজ্ঞতা — এগুলি সব দিক থেকেই অত্যন্ত মূল্যবান।”

    ভারত পরীক্ষা করবে ৭টি

    জানা গিয়েছে, এএক্স-৪ এর (Shubhanshu Shukla) ৬০টি গবেষণামূলক প্রকল্পের মধ্যে সাতটি পরীক্ষা পরিচালনা করবে ভারত। একটি পরীক্ষায় ছ’টি প্রজাতির ফসলের বীজ মাইক্রোগ্র্যাভিটি পরিবেশে কীভাবে মানিয়ে নিতে পারে, তা পর্যবেক্ষণ করা হবে। এই পরীক্ষার উদ্দেশ্য হল, মহাকাশে কৃষিকাজের সম্ভাবনা বৃদ্ধি করা, একই সঙ্গে পৃথিবীতে জলবায়ু-সহনশীল ফসলের উন্নয়নে অবদান রাখা। অন্য একটি পরীক্ষায় তিনটি মাইক্রোঅ্যালগির প্রজাতি বিশ্লেষণ করা হবে, যাতে দেখা যায় দীর্ঘমেয়াদি মহাকাশ অভিযানে সেগুলো খাদ্য, জ্বালানি বা জীবন-সহায়ক উপাদান হিসেবে ব্যবহারযোগ্য কি না। গবেষকরা টারডিগ্রেড নামক অতিক্ষুদ্র প্রাণীর সহনশীলতা নিয়েও গবেষণা করবেন। এই প্রাণীগুলি চরম প্রতিকূল পরিবেশেও বেঁচে থাকতে পারে। একটি আলাদা গবেষণায় মাধ্যাকর্ষণহীন পরিবেশে পেশির ক্ষয় নিয়ে কাজ করা হবে এবং দীর্ঘমেয়াদি মহাকাশ অভিযানে মহাকাশচারীদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যাবশ্যক পুনর্বাসন পদ্ধতিগুলি অনুসন্ধান করা হবে (International Space Station)। আর একটি পরীক্ষায় বিশ্লেষণ করা হবে কীভাবে মাইক্রোগ্র্যাভিটিতে স্ক্রিনের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়া চোখের গতি, মানসিক চাপ এবং মানসিক সজাগতার ওপর প্রভাব ফেলে (Shubhanshu Shukla)।

  • Shubhanshu Shukla: রাকেশ শর্মার পর প্রথম ভারতীয়, নাসার হাত ধরে মহাকাশে পাড়ি দিচ্ছেন শুভাংশু

    Shubhanshu Shukla: রাকেশ শর্মার পর প্রথম ভারতীয়, নাসার হাত ধরে মহাকাশে পাড়ি দিচ্ছেন শুভাংশু

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দ্বিতীয় ভারতীয় হিসেবে মহাকাশে যেতে চলেছেন শুভাংশু শুক্ল। ১৯৮৪-তে রাকেশ শর্মার পর এবার মহাকাশে পাড়ি জমাবে কোনও ভারতীয়। নাসার মহাকাশ অভিযানে যাবেন উইং কমান্ডার শুভাংশু। নাসার অ্যাক্সিয়ম মিশন ৪ অভিযানে অংশ নিতে চলেছেন তিনি। এটি একটি বেসরকারি মহাকাশ অভিযান, যা স্পেসএক্স ড্রাগন মহাকাশযানের সঙ্গে যুক্ত। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে উৎক্ষেপণ হবে।

    ইতিহাসের দরজায় ভারত

    দেখতে দেখতে ৪০ টা বছর পার হয়ে গেল। ভারতের মুকুটে পালক লাগল আবার। ভারতের গগনযান অভিযানের জন্য ইসরো ভারতীয় বায়ুসেনার গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশুকে মহাকাশচারী হিসেবে বেছে নিয়েছিল। এই মিশনের জন্য ইসরো, নাসা এবং অ্যাক্সিওম স্পেস একসঙ্গে কাজ করছে। নাসার অ্যাক্সিয়ম মিশন ৪ অভিযানে পাইলটের ভূমিকায় কাজ করবেন শুভাংশু শুক্ল। সঙ্গে থাকবেন আরও তিনজন মহাকাশচারী। অভিজ্ঞ মার্কিন মহাকাশচারী ও মিশন কমান্ডার পেগি হুইটসন, পোল্যান্ডের স্লাওসুজ উজনানস্কি-উইসনিয়েভস্কি এবং হাঙ্গেরির টিবর কাপু।

    শুভাংশুর সফর

    শুভাংশু শুক্লর জন্ম ১৯৮৫ সালের ১০ অক্টোবর। উত্তরপ্রদেশের লখনউতে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। পাইলট হিসেবে শুভাংশু মোট ২০০০ ঘণ্টা আকাশে থেকেছেন। ২০০৬ সালে তিনি ভারতীয় বায়ুসেনার অফিসার হিসেবে কমিশন পান। তিনি যুদ্ধবিমানের টেস্ট পাইলট এবং কমব্যাট লিডার। সুখোই-৩০, মিগ ২১, মগ ২৯, জাগুয়ার, হক, ডর্নিয়ার সহ বিভিন্ন ধরনের বিমান চালানোর অভিজ্ঞতা আছে তাঁর।

    ইসোরোর ঘোষণা

    এক বছর আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাঁর আমেরিকা সফরকালে ঘোষণা করেছিলেন এই অভিযানের কথা। মোদি বলেছিলেন, ভারতের একজন মহাকাশচারী খুব শীঘ্রই আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে যাবেন। সেই ঘোষণাই অবশেষে বাস্তবায়িত হতে চলেছে বলে জানিয়েছে ইসরো। তারা একটি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, আমেরিকার একটি বেসরকারি সংস্থা অ্যাক্সিয়ম স্পেস ইনকর্পোরেশনের সঙ্গে এ ব্যাপারে চুক্তি হয়েছিল তাদের। সেই চুক্তি অনুযায়ীই দু’জন ‘গগনযাত্রী’কে বেছে নিয়েছে ন্যাশনাল মিশন অ্যাসাইনমেন্ট বোর্ড। মূল মহাকাশচারী হিসাবে বেছে নেওয়া হয়েছে গ্রুপ ক্যাপটেন শুভাংশুকে। তাঁর বিকল্প হিসাবে বেছে নেওয়া হয়েছে গ্রুপ ক্যাপটেন প্রশান্ত বালাকৃষ্ণন নায়ারকে। শীঘ্রই এই অভিযানের জন্য প্রশিক্ষণ নেওয়া শুরু করবেন দু’জনে। তাঁরা আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে পাড়ি দেবেন স্পেসএক্সের রকেটে।

LinkedIn
Share