মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: সাল ১৯৯৯! বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে জুটেছিল চোকার্স তকমা। সেই অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েই তা মুছল দক্ষিণ আফ্রিকা। অ্যালান ডোনাল্ড, শন পোলক, জ্যাক কালিস, এবি ডিভিলিয়ার্সেরা যা পারেননি, তা করলেন টেম্বা বাভুমা, এডেন মার্করাম, কাগিসো রাবাডারা। ২৭ বছর পর আরও এক বার আইসিসি ট্রফি জিতল দক্ষিণ আফ্রিকা। নির্বাসন কাটিয়ে ফেরার সাড়ে তিন দশক পর টেস্ট ক্রিকেটের সিংহাসনে বসল তারা। ১৯৯৮ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ের পর কোনও আইসিসি ট্রফি ঘরে তুলল প্রোটিয়ারা।
মার্করাম-বাভুমার লড়াকু ইনিংস
এই ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া দক্ষিণ আফ্রিকাকে জয়ের জন্য ২৮২ রানের লক্ষ্য দেয়। অস্ট্রেলিয়া তাদের প্রথম ইনিংসে ২১২ রান এবং দ্বিতীয় ইনিংসে ২০৭ রান করে। অন্যদিকে, দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম ইনিংস ১৩৮ রানেই সব উইকেট হারায়। প্রথম ইনিংসের ভিত্তিতে অস্ট্রেলিয়া ৭৪ রানের লিড পেলেও, দ্বিতীয় ইনিংসে দারুণভাবে ফিরে আসে দক্ষিণ আফ্রিকা। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকা তাদের দ্বিতীয় ইনিংসে ৭০ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায়। এখান থেকে ক্রিজ ধরে রাখেন এইডেন মার্করাম এবং অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা। তৃতীয় উইকেটে দুজনের মধ্যে ১৪৭ রানের জুটি দক্ষিণ আফ্রিকার জয়ের পথ তৈরি করে দেয়। মার্করাম ১০১ বলে ১১টি চারের সাহায্যে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। বাভুমা ৬৬ রানের অধিনায়কোচিত ইনিংস খেলেন। তারপর এই জয় ছিল সময়ের অপেক্ষা। লর্ডসে ইতিহাস গড়ে এই প্রথম বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ট্রফি জিতলো দক্ষিণ আফ্রিকা। চতুর্থ দিনে অস্ট্রেলিয়াকে ৫ উইকেটে হারালো প্রোটিয়ারা। ব্যর্থ হল না বাভুমা এবং মার্করামের লড়াই। দক্ষিণ আফ্রিকার টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে নজির গড়লেন টেম্বা বাভুমা। জয়ের নিরিখে অপরাজিত থেকে দলকে চ্যাম্পিয়ন করলেন তিনি। বাভুমার নেতৃত্বে ফাইনাল সহ ১০টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। যেখানে ৯টি জয় ও ১টি ড্র করেছে প্রোটিয়ারা।
বহু অপেক্ষার ফল
দ্বিতীয় ইনিংসে কামিন্স, স্টার্ক, হেজলউডদের তেমন সুযোগ দিলেন না বাভুমা ও মার্করাম। উল্টে যত সময় গড়াল তত কাঁধ ঝুঁলে গেল কামিন্সদের। নইলে কেন এত রক্ষণাত্মক হয়ে পড়লেন অসি অধিনায়ক। যেখানে উইকেট তোলা ছাড়া গতি নেই সেখানে বাউন্ডারিতে ফিল্ডার রাখলেন। বোঝা গেল, দক্ষিণ আফ্রিকার জয়ের পথে বিলম্ব করা ছাড়া আর কোনও পরিকল্পনা নেই তাঁর। হার মেনে নিয়েই বোধহয় চতুর্থ দিন খেলতে নেমেছিল অস্ট্রেলিয়া। তাদের শরীরী ভাষা সেটাই বুঝিয়ে দিচ্ছিল। তাই কামিন্স, স্টার্কেরা একক দক্ষতায় উইকেট তুললেও তাতে দক্ষিণ আফ্রিকার জয় আটকাতে পারলেন না। ম্যাচ শেষে গ্যালারিতে সন্তানকে জড়িয়ে ধরে দাঁড়িয়েছিলেন ডিভিলিয়ার্স, মুখে তৃপ্তির হাসি প্রাক্তন অধিনায়ক গ্রেমি স্মিথের। বোঝা যাচ্ছিল এই জয় যে তাদের কাছে বহু অপেক্ষার ফল। অধরা মাধুরী স্পর্শ করার আনন্দ।