Tag: SSC

SSC

  • Abhijit Gangopadhyay: আবার একটা জালিয়াতি! এসএসসি পরীক্ষা নিয়ে আশঙ্কা অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের

    Abhijit Gangopadhyay: আবার একটা জালিয়াতি! এসএসসি পরীক্ষা নিয়ে আশঙ্কা অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: স্কুল সার্ভিস কমিশনের (SSC) পরীক্ষার স্বচ্ছতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন প্রাক্তন বিচারপতি ও বর্তমান বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Abhijit Gangopadhyay)। তাঁর স্পষ্ট মন্তব্য, ‘‘আবার একটা জালিয়াতি হতে চলেছে—এটা আগে থেকেই আন্দাজ করা সম্ভব।’’ প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে শনিবার রাতে অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশ করতে বাধ্য হয় স্কুল সার্ভিস কমিশন (SSC)। সেখানে ১৮০৬ জনের নাম দেখা যায়। এনিয়ে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলছেন, এই সংখ্যাটা অনেক বেশি হওয়া উচিত। অন্তত পাঁচ থেকে ছয় হাজার।

    কী বললেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Abhijit Gangopadhyay)

    অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যে ভাবে রাজ্য সরকার পরীক্ষার্থীদের নিয়ে ছেলেখেলা করতে শুরু করেছে, সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে প্রবঞ্চনা শুরু করে দিয়েছে, তাতে আমার তো মনে হয় না বিষয়টা স্বচ্ছ ভাবে হবে। এই পরীক্ষা স্কুল সার্ভিস কমিশনের হাত থেকে নিয়ে নেওয়া উচিত বা একটা সুপারভাইজারি বডি তৈরি করে এই কাজটা করা উচিত।’’ তিনি আরও বলেন, “সুপ্রিম কোর্ট যে স্বচ্ছতার জন্য লিস্ট বের করতে বলেছিল, সেটা হল না। রাজ্য কত রকমের ভাঁওতাবাজি চালাবে? সুপ্রিম কোর্টকেও ভাঁওতা দিচ্ছে।”এই তালিকার উপর কোনওভাবে নির্ভর করা যাবে না বলে মনে করেন তিনি।

    কী কী পদ্ধতিতে দুর্নীতি হয়েছিল?

    এই প্রসঙ্গে বিজেপি সাংসদ (Abhijit Gangopadhyay) বুঝিয়ে দিয়েছেন, ঠিক কী কী ভাবে দুর্নীতি হয়েছে। তিনি বলেন, “ওএমআর শিটে নম্বর বদল হয়েছে। একদল পরীক্ষাতেই বসেনি, চাকরি পেয়ে গিয়েছে। লিস্ট মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরও সুপারিশ করে নিয়োগ পত্র দেওয়া হয়েছে একদলকে। এছাড়া এসএসসি যতজনকে সুপারিশ করেছিল, তার থেকে বেশি লোককে নিয়োগ করা হয়েছে। সেই সব তালিকা এখানে নেই।” তাঁর মতে, অযোগ্যদের সংখ্যা অন্তত পাঁচ থেকে ছ’হাজার (SSC)।

    স্বচ্ছতার সঙ্গে বের হয়নি তালিকা

    তালিকায় ওই দাগি শিক্ষক-শিক্ষিকারা কোন স্কুলে কাজ করত, সেটাও দেওয়া হয়নি। তাই অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Abhijit Gangopadhyay) বলছেন, “সুপ্রিম কোর্ট যে স্বচ্ছতার জন্য লিস্ট বের করতে বলেছিল, সেটা হল না। রাজ্য কত রকমের ভাঁওতাবাজি চালাবে? সুপ্রিম কোর্টকেও ভাঁওতা দিচ্ছে।” এই তালিকার উপর কোনওভাবে নির্ভর করা যাবে না বলে মনে করেন তিনি। এছাড়া, অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় আরও বলেন, ‘‘আবারও দুর্নীতির আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।’’ তাঁর দাবি, পরীক্ষার সময় ওএমআর সরবরাহ এবং আলাদা সিল কভারে সেগুলি নিয়ে যাওয়ার কাজটা স্কুল সার্ভিস কমিশন ছাড়া অন্য কোনও অথরিটিকে দিয়ে করাতে হবে। বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টকে দেখতে বলেছেন তিনি।

    কলকাতা হাইকোর্টে তাঁর রায়েই বাতিল হয় ২৬ হাজার চাকরি

    ২০১৬ সালের শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে কলকাতা হাই কোর্টে মামলার শুনানি করেছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর রায়ের ভিত্তিতেই প্রায় ২৬ হাজার চাকরি বাতিল হয়। পরবর্তীতে সুপ্রিম কোর্টও সেই রায় বহাল রাখে এবং নির্দেশ দেয়, অযোগ্যদের বাদ দিয়ে নতুন করে নিয়োগ পরীক্ষা আয়োজন করতে হবে। এই নির্দেশ অনুযায়ীই ৭ ও ১৪ সেপ্টেম্বর নতুন করে পরীক্ষা আয়োজন করছে এসএসসি। কিন্তু বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বক্তব্য, এই সংস্থা (SSC) আগেও ভরসা রাখতে পারেনি—তাই পরীক্ষার দায়িত্ব এসএসসি-এর হাত থেকে সরিয়ে নেওয়া উচিত বলে তিনি মনে করছেন।

  • SSC: নেতা-নেত্রী থেকে বিধায়কের বউমা! এসএসসির দাগি তালিকায় তৃণমূলের রমরমা

    SSC: নেতা-নেত্রী থেকে বিধায়কের বউমা! এসএসসির দাগি তালিকায় তৃণমূলের রমরমা

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এসএসসি দাগি প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করতে বাধ্য হয় তৃণমূল সরকার (Trinamool Congress)। তালিকা প্রকাশ্যে আসতেই স্পষ্ট হয়ে যায়, তা একপ্রকার দখল করে নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। কে নেই সেই তালিকায়! বিধায়কের পুত্রবধূ থেকে শুরু করে নেতা-নেত্রীদের আত্মীয়। যেমন ধরুন, বিধানসভার মুখ্য সচেতক নির্মল ঘোষের পুত্রবধূ শম্পা ঘোষ রয়েছেন তালিকার ১২৬৯ নম্বরে। একইভাবে ‘অযোগ্য’ তালিকায় (SSC) নাম আছে রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কুহেলি ঘোষের। তাঁর নাম রয়েছে ৬৪৭ নম্বরে। তালিকার পাতা উল্টাতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে, উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গ— রাজ্যের প্রায় প্রতিটি জেলার চিত্র একই রকম। সব জায়গাতেই তৃণমূল ঘনিষ্ঠদের নাম উঠে এসেছে। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূল কংগ্রেসকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেছে বিজেপি।

    বিজেপির আক্রমণ (SSC)

    এই ইস্যুতে তৃণমূলকে তীব্র আক্রমণ শানিয়েছেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, ‘‘একটা চাকরিও কোনও নির্বাচিত সরকার অবৈধভাবে দিতে পারে না। অথচ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার গোটা ভারতবর্ষের সামনে অবৈধভাবে চাকরি দিয়েছে। আজ যাঁরা দাগি বলে চিহ্নিত হলেন, তাঁদের থেকেও মহাদাগি হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।’’ শুভেন্দুর আরও দাবি, ‘‘এই দাগিদের মধ্যে ৯০ শতাংশ টাকা দিয়ে চাকরি পেয়েছেন, আর ১০ শতাংশ নেতা-মন্ত্রীদের সুপারিশে পিছনের দরজা দিয়ে প্রবেশ করেছেন। কারও গয়নাগাটি, কারও জমি বিক্রি হয়েছে, আবার কারও গরু-বাছুর পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে চাকরি পাওয়ার জন্য (SSC)।’’ কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদারের পাল্টা খোঁচা, ‘‘অযোগ্যরা এবার তালিকা প্রকাশ করুন, কোন কোন তৃণমূল নেতাকে কত টাকা দিয়েছেন।’’

    তালিকায় তৃণমূলের রমরমা (SSC)

    এসএসসি-র ‘অযোগ্য’ তালিকায় একের পর এক তৃণমূল (Trinamool Congress) ঘনিষ্ঠদের নাম উঠে আসায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে রাজ্যে। তালিকার ১৩৬০ নম্বরে আছেন শতাব্দী বিশ্বাস, যিনি নিউ বারাকপুর পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান স্বপ্না বিশ্বাসের কন্যা। অযোগ্য তালিকায় নাম উঠেছে হুগলির খানাকুলের তৃণমূল নেতা এবং জেলা পরিষদের প্রাক্তন সদস্য বিভাস মালিক এবং তাঁর স্ত্রী সন্তোষী মালিকের। তাঁদের নাম যথাক্রমে ৩১৬ ও ১৩৩২ নম্বরে। হুগলি জেলা পরিষদের প্রাক্তন শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ শাহিনা সুলতানা, এবং খানাকুল-১ পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সহ-সভাপতি নইমুল হক ওরফে রাঙার স্ত্রী নমিতা আদককেও ‘দাগি’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে এসএসসি। বারাসাত ১ ব্লক সভাপতি মহম্মদ ইশা হক সর্দারের ছেলে মহম্মদ নাজিবুল্লা রয়েছেন তালিকার ৭৯১ নম্বরে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পিংলা ব্লকের ১০ নম্বর জলচক অঞ্চলের তৃণমূল সভাপতি অজয় মাঝি আছেন ‘অযোগ্য’ শিক্ষকদের তালিকার ৩৯ নম্বরে। রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ও মেখলিগঞ্জের বিধায়ক পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারী রয়েছেন তালিকার ১০৪ নম্বরে। চোপড়ার বিধায়ক হামিদুল রহমানের কন্যা রোশনারা বেগমকেও চিহ্নিত করা হয়েছে ‘অযোগ্য’ হিসেবে। তালিকায় নাম রয়েছে কবিতা বর্মণের, যিনি ২০১৮ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত উত্তর দিনাজপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি ছিলেন। মালদার মোথাবাড়ির তৃণমূল নেতা সামসুদ্দিন আহমেদের নামও রয়েছে এই তালিকায়। নাম রয়েছে হিঙ্গলগঞ্জের যোগেশগঞ্জ এলাকার তৃণমূল নেত্রী সন্ধ্যা মণ্ডলের মেয়ে প্রিয়াঙ্কা মণ্ডল।

  • SSC: ‘সুপ্রিম ধাক্কা’য় শেষমেশ দাগি অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশ এসএসসির

    SSC: ‘সুপ্রিম ধাক্কা’য় শেষমেশ দাগি অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশ এসএসসির

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: একেই বোধহয় বলে ঠেলার নাম বাবাজি! ‘সুপ্রিম ধাক্কা’য় শেষমেশ দাগি অযোগ্যদের (Tainted Candidates) তালিকা প্রকাশ করল এসএসসি (SSC)। বৃহস্পতিবারই দেশের শীর্ষ আদালত নির্দেশ দিয়েছিল, আগামী সাত দিনের মধ্যেই দাগি অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশ করতে হবে। তারপর তড়িঘড়ি শনিবার কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয় তালিকা। এই তালিকায় নাম রয়েছে মোট ১ হাজার ৮০৪ জনের। প্রকাশ করা হয়েছে তাঁদের রোল নম্বরও।

    নাটকীয় পরিস্থিতি (SSC)

    এদিন দাগি অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশ ঘিরেও নাটকীয় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় এসএসসির দফতরে। প্রথমে একটি তালিকা প্রকাশ করার পরে পরেই তা প্রত্যাহার করে নেয় কমিশন। খানিক পরেই এসএসসির চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদারও পৌঁছে যান কমিশনের দফতরে। সেখানে আধিকারিকদের সঙ্গে একটি বৈঠক হয়। তারপর ফের নতুন করে দাগি অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশ করে এসএসসি কর্তৃপক্ষ। প্রসঙ্গত, আগামী ৭ ও ১৪ সেপ্টেম্বর নিয়োগ পরীক্ষা রয়েছে এসএসসির। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জয় কুমার ও বিচারপতি সতীশচন্দ্র শর্মার ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, দাগি অযোগ্য প্রার্থীরা পরীক্ষায় বসতে পারবেন না। এই অবস্থায় বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের নামের তালিকা সাত দিনের মধ্যে প্রকাশ করতে হবে কমিশনকে। সেই মতো প্রকাশ হল তালিকা। তালিকায় প্রথম নাম অবনীনাথ মণ্ডলের। তবে ওই তালিকায় প্রার্থীরা কোনও স্কুলে চাকরি করেন কিংবা কোন বিষয়ের শিক্ষক, তা বলা হয়নি বলে অভিযোগ।

    সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ

    বৃহস্পতিবারই সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ ছিল, দাগি অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশ করতে বলেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। আমরা সেই নির্দেশে হস্তক্ষেপ করিনি। তার পরেও কেন তালিকা প্রকাশ হল না? এদিন দাগি অযোগ্যদের যে তালিকা প্রকাশ হয়েছে, তাতে আলাদাভাবে উল্লেখ করা নেই যে এঁদের মধ্যে নবম-দশম, একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে কতজন নিয়োগপত্র পেয়েছিলেন, তা আলাদাভাবে উল্লেখ করা নেই। উল্লেখ্য, এর আগে কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছিল, ১৮০ জন দাগি অযোগ্য নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় আবেদন করেছিলেন। তাঁরা কারা (SSC), সেই তথ্যও জানানো হয়নি কমিশনের তালিকায়। দাগিদের তালিকা প্রকাশের পরে যোগ্য শিক্ষকদের প্রতিনিধি সুমন বিশ্বাস বলেন, “এই তালিকা আগে প্রকাশ করা হলে, এত করুণ অবস্থা হত না। আমাদের জীবন্ত লাশ হয়ে ঘুরতে হত না। আমরা সুপ্রিম কোর্টে যাব।”

    এদিন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, “আদালত যা বলছে, আমরা সেটা মেনেই চলছি। বিরোধীরা (Tainted Candidates) কী বলছে কিংবা আগে কী হয়েছে, সেগুলো নিয়ে বলার কিছু নেই (SSC)।”

  • Supreme Court: “দাগি প্রার্থী পরীক্ষায় বসলেই ফল ভুগতে হবে এসএসসিকে,” সাফ জানাল সুপ্রিম কোর্ট

    Supreme Court: “দাগি প্রার্থী পরীক্ষায় বসলেই ফল ভুগতে হবে এসএসসিকে,” সাফ জানাল সুপ্রিম কোর্ট

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: “একজনও দাগি প্রার্থী পরীক্ষায় বসলে ফল ভুগতে হবে এসএসসিকে (SSC)।” বৃহস্পতিবার এমনই মন্তব্য করল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। অযোগ্যদেরও পরীক্ষায় বসতে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এসএসসি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। তার জেরেই এদিন কমিশনকে ভর্ৎসনা করে দেশের শীর্ষ আদালত। এসএসসির আইনজীবীর উদ্দেশে বিচারপতি সঞ্জয় কুমার বলেন, “যদি অভিযোগকারীর আইনজীবী প্রমাণ করতে পারেন যে আবারও অযোগ্য প্রার্থীদের নির্বাচিত করা হয়েছে, তাহলে আপনাদের কড়া সমালোচনার মুখোমুখি হতে হবে।”

    প্রার্থী নির্বাচন প্রক্রিয়া কলঙ্কিত হয়েছিল (Supreme Court)

    এর পরেই তিনি বলেন, “আপনাদের কাছে অযোগ্য (এঁরাই তৃণমূলের বিভিন্ন নেতাকে টাকা দিয়ে চাকরি কিনেছিলেন বলে অভিযোগ।) প্রার্থীদের তালিকা রয়েছে। আপনারা যদি ওই প্রার্থীদের ছাড় দেন, তাহলে তার ফল ভুগতে হবে।” বিচারপতির প্রশ্ন, “অযোগ্য প্রার্থীদের জন্য কেন হাইকোর্টে গিয়েছে এসএসসি? যদি না কিছু মন্ত্রী চান যে ওই প্রার্থীরা থাকুন, তাহলে কোনও যুক্তিই এর জন্য যথেষ্ট নয়।” শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, “প্রার্থী নির্বাচন প্রক্রিয়া কলঙ্কিত হয়েছিল, কারণ কিছু মন্ত্রী চেয়েছিলেন তাঁদের প্রার্থীরা থাকুক। ত্রুটিপূর্ণ বাছাই প্রক্রিয়ার জন্য বোর্ড, এসএসসি এবং রাজ্য সরকার দায়ী।” বিচারপতি বলেন, “আপনাদের জন্যই যোগ্যরা চাকরি হারিয়েছেন। তাঁদের জীবন নষ্ট হয়ে গিয়েছে। তাঁরা রাস্তায় নেমেছেন। আপনারাই বিশৃঙ্খলা তৈরি করেছেন, আর আমাদের দোষারোপ করা হচ্ছে, এটা কি ঠিক?” বিচারপতি বলেন, “এসএসসির কাজের ওপর কড়া নজর রাখছে সুপ্রিম কোর্ট। নির্দেশ নিয়ে কারচুপি করা হলেই হস্তক্ষেপ করবে সুপ্রিম কোর্ট।”

    অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশের নির্দেশ

    এর আগের শুনানিতে বিচারপতি বলেছিলেন, “স্বচ্ছতার স্বার্থেই পুরো প্যানেল বাতিল করা হয়েছিল। এখন দাগিরাও আবেদন করছেন, এটা যদি সত্যি হয়, তাহলে তা হবে দুর্ভাগ্যজনক।” এর পরেই এসএসসিকে (SSC) সতর্ক করে শীর্ষ আদালত সাফ জানিয়ে দেয়, এটা যেন কোনওভাবেই না হয়। বৃহস্পতিবার শুনানির সময় বিচারপতিদের প্রশ্নের মুখে পড়ে কমিশন (Supreme Court)। প্রশ্ন তোলা হয়, “কেন এখনও অযোগ্যদের নাম প্রকাশ করেনি এসএসসি? কেন অযোগ্যদের জন্য হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল কমিশন? এর পরেই সঞ্জয় কুমারের নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, আগামী সাত দিনের মধ্যেই প্রকাশ করতে হবে অযোগ্যদের তালিকা। আদালত অবশ্য এও জানিয়েছেন, পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ীই পরীক্ষা হবে ৭ ও ১৪ সেপ্টেম্বর। এসএসসির তরফে আইনজীবী তৃণমূলের কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে নির্দেশ দেওয়া হয়, সাত দিনের মধ্যেই যাতে তালিকা প্রকাশ করা হয়, সে ব্যাপারে।

    আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, “সুপ্রিম কোর্ট সাতদিনের সময় সীমা দিয়েছে। তবে আমি আপনাদের বলতে পারি ওরা এখনও সততার সঙ্গে সেই লিস্ট পাবলিশড করবে না। কারণ ওরা জানে, যাঁদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে, তাঁদের (SSC) নাম প্রকাশ্যে এলে ঘোর বিপদ। তাই কোনও কাজই ওরা সততার সঙ্গে করবে না (Supreme Court)।”

  • ssc Scam: ‘দাগি’ বা চিহ্নিত অযোগ্য প্রার্থীদের পাশে কেন বারবার দাঁড়াচ্ছে মমতা সরকার?

    ssc Scam: ‘দাগি’ বা চিহ্নিত অযোগ্য প্রার্থীদের পাশে কেন বারবার দাঁড়াচ্ছে মমতা সরকার?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ‘দাগি’ বা চিহ্নিত অযোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগ প্রক্রিয়া (ssc Scam) থেকে অবিলম্বে বাদ দিতে হবে—এই মর্মে সোমবার গুরুত্বপূর্ণ রায় দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্য নির্দেশ দিয়েছেন, যদি কোনও অযোগ্য প্রার্থী ইতিমধ্যেই আবেদন করে থাকেন, তবে সেই আবেদন বাতিল করতে হবে। আদালত আরও স্পষ্ট করে দিয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকা মেনেই নিয়োগের পুরো প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে। তবে ৩০ মে এসএসসি যে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল, তার ভিত্তিতেই নিয়োগ এগোতে পারে—এই অংশে আদালত হস্তক্ষেপ করেনি।

    রাজ্য সরকারের জন্য বড় ধাক্কা (ssc Scam)

    এই রায় কার্যত রাজ্য সরকারের জন্য বড় ধাক্কা। কারণ, নতুন নিয়োগপ্রক্রিয়ায় অযোগ্যদের সরাসরি বাদ দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে দিয়েছেন বিচারপতি। কোর্টের রায় সামনে আসতেই অনেক প্রাক্তন চাকরিপ্রার্থী প্রশ্ন তুলেছেন—”যোগ্যদের বঞ্চিত রেখে রাজ্য কেন বারবার অযোগ্যদের পাশেই দাঁড়াতে চাইছে?” প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিল হয়। এরপর শিক্ষা দফতর নতুন নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করে। কিন্তু অভিযোগ ওঠে, ২০২5 সালের SSC-র বিজ্ঞপ্তি সুপ্রিম কোর্টের রায়কে অমান্য করছে।

    অযোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগপ্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের অধিকার নেই

    চিহ্নিত অযোগ্যদের নিয়োগ পরীক্ষায় (ssc Scam) অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়, যদিও সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্টভাবে তাদের অংশগ্রহণে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতের দ্বারস্থ হন যোগ্য প্রার্থীরা। তাঁদের দাবি, SSC সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা লঙ্ঘন করেছে এবং অযোগ্যদের সুযোগ দিয়ে যোগ্যদের সঙ্গে চরম অবিচার করা হয়েছে। বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্য এই মামলায় রায় দেন, SSC-র সিদ্ধান্ত অনুচিত এবং অযোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগপ্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের অধিকার নেই। মামলাকারীদের আরও অভিযোগ, প্রায় ৪৪ হাজার শূন্যপদের যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে, সেটি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ এবং ২০১৬ সালের চাকরির নিয়মাবলি অনুসরণ না করেই জারি করা হয়েছে। তাঁরা দাবি করেন, ওই বছরের বাছাই প্রক্রিয়া ২০১৬ সালের নিয়মেই সম্পন্ন হওয়া উচিত এবং আবেদনকারীরাও সে সময়কার প্রার্থী হতে হবে। বয়সের ছাড় সংক্রান্ত নিয়মও মানা হয়নি বলে আদালতে অভিযোগ করেছেন মামলাকারীরা।

    অযোগ্যদের পাশে রাজ্য

    তাঁরা এ-ও বলেন, ২০১৬ সালের নিয়োগে বিস্তর দুর্নীতি হয়েছিল, যার জেরে সুপ্রিম কোর্ট নতুন করে নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছিল। তাই নতুন প্রক্রিয়াও যেন পুরনো নিয়মনীতির আলোকে চলে—এমনটাই তাঁদের জোর দাবি।সোমবার আদালতে এসএসসি ও রাজ্য তাদের অবস্থান তুলে ধরে জানায়, সুপ্রিম কোর্টের রায়ে কোথাও সরাসরি উল্লেখ নেই যে অযোগ্য প্রার্থীদের আবেদন করার অধিকার নেই।

    কমিশনের কাছ থেকে এমন ব্যাখ্যা গ্রহণযোগ্য নয়, জানান বিচারপতি

    তবে এই যুক্তিতে সন্তুষ্ট হয়নি আদালত। বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্য স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “কমিশনের কাছ থেকে এমন ব্যাখ্যা গ্রহণযোগ্য নয়।ফলত, আদালতের নির্দেশ—চিহ্নিত অযোগ্যদের নিয়োগপ্রক্রিয়া থেকে অবিলম্বে বাদ দিতে হবে। এই অবস্থায় স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে—রাজ্য সরকার বারবার কেন অযোগ্যদের পক্ষে অবস্থান নিচ্ছে?

    ৩০ মে এসএসসি নতুন বিজ্ঞপ্তি জারি করে

    প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে চাকরি হারিয়েছেন ২৬ হাজারেরও বেশি শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী। এরপরই চিহ্নিত অযোগ্যদের বাদ দিয়ে নতুন পরীক্ষা নেওয়ার নির্দেশ দেয় দেশের সর্বোচ্চ আদালত। সেই অনুযায়ী ৩০ মে এসএসসি নতুন বিজ্ঞপ্তি জারি করে, যা চ্যালেঞ্জ করে ৯টি পৃথক মামলা হয়। সোমবার সেই মামলার শুনানিতে, রাজ্য ও এসএসসি ফের অযোগ্যদের পক্ষেই সওয়াল করে, যা আদালতের বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

  • Books Written by Mamata: বইয়ের রয়্যালটিতেই তাঁর চলে! তাই কি সরকারের টাকায় মমতার বই কিনছে সরকারি স্কুলগুলি?

    Books Written by Mamata: বইয়ের রয়্যালটিতেই তাঁর চলে! তাই কি সরকারের টাকায় মমতার বই কিনছে সরকারি স্কুলগুলি?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মমতা (Books Written by Mamata) গর্ব করে দাবি করেছিলেন, মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তিনি নাকি এক টাকাও বেতন নেন না। তাঁর যা আয়, সবটাই নাকি ছবি এঁকে, গল্প-কবিতার বই লিখে। সেগুলি বেচে যে রয়্যালটি হয়, তাতেই তাঁর চলে যায়। চিটফান্ড বিতর্কের পর এখন অবশ্য আঁকার প্রসঙ্গ এড়িয়ে যান। এবার থেকে রাজ্যের স্কুলগুলির লাইব্রেরিতে থাকবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা বই। স্কুলে-স্কুলে পৌঁছল সেই তালিকাও। মুখ্যমন্ত্রীর লেখা ১৯টি বই এবার রাখতেই হবে রাজ্য সরকার পরিচালিত স্কুলের গ্রন্থাগারে। শিক্ষা দফতরের এমনই নির্দেশ। বইয়ের তালিকাও দিয়ে দেওয়া হয়েছে। এমনকী, কোন প্রকাশনার বই, তাও উল্লেখ করা রয়েছে নির্দেশিকায়। (মমতার ১৯টি সহ) সবমিলিয়ে স্কুলের লাইব্রেবিতে মোট ৫১৫টি বই রাখতে হবে। এর জন্য স্কুলগুলিকে ১ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হয়েছে বই কেনার জন্য। রাজ্য পরিচালিত ও সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলের সংখ্যা প্রায় ২০২৬। যদি ধরা যায় সকলে এক লক্ষ করে পাবে, তাহলে সরকারি কোষাগারে খরচ ২০ কোটি। এখন প্রশ্ন সরকারি টাকায় মুখ্যমন্ত্রী মমতার লেখা বই কিনবে রাজ্য সরকারি ও সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলি। সেই টাকা পাবে প্রকাশনা সংস্থাগুলি। সেই প্রকাশনা থেকে রয়্যালটি বাবদ টাকা পাবেন বইয়ের লেখিকা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাহলে, কোথাকার টাকা কোথায় গেল? আর মমতা যদিই বা সেই টাকা আবার পার্টি ফান্ডে দান করেন, তাহলে কী দাঁড়াল, বুঝতেই পারছে সকলে। তাই ইতিমধ্যেই এ নিয়ে শুরু হয়েছে চরম বিতর্ক।

    কী রয়েছে নির্দেশিকায়

    জানা যাচ্ছে, মুখ্যমন্ত্রীর (Books Written by Mamata) লেখা ‘মা’ থেকে ‘কথাঞ্জলী’, সব বই রাখতে হবে সরকারি স্কুলের গ্রন্থাগারে। এমনই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, ৫১৫টি বই স্কুলকে কিনে রাখতে হবে গ্রন্থাগারে। এই ৫১৫টি বইয়ের মধ্যে ১৯টি বই মুখ্যমন্ত্রীর। ইতিমধ্যেই গ্রন্থাগারের জন্য স্কুলে-স্কুলে গিয়েছে ১ লক্ষ টাকা। তারপর পৌঁছে গেল বইয়ের তালিকাও। বিকাশ ভবন সূত্রে খবর, প্রথমে মমতার লেখা বই পৌঁছবে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে। বইয়ের প্রথম সেট পৌঁছবে আলিপুরদুয়ার, দার্জিলিং, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং, মালদহ, শিলিগুড়ি, উত্তর দিনাজপুরে। এরপর দ্বিতীয় সেট পৌঁছবে, বাঁকুড়া, বীরভূম, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়ার স্কুলগুলিতে। তৃতীয় সেট পৌঁছবে, হুগলি, দক্ষিণ দিনাজপুর, নদিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুরে। এরপর চতুর্থ সেট পৌঁছবে, ব্যারাকপুর, হাওড়া, কলকাতা, মুর্শিদাবাদ, পশ্চিম বর্ধমান ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। সব শেষে বই পৌঁছবে, উত্তর ২৪ পরগনা, পূর্ব বর্ধমান ও পূর্ব মেদিনীপুরে। রাজ্যের ২,০২৬টি স্কুলের পাঠাগারে বই কিনতে ২০ কোটি ২৬ লক্ষ টাকা অনুমোদন করেছে স্কুলশিক্ষা দফতর। সেই হিসেবে প্রতিটি বিদ্যালয়ের জন্য বরাদ্দ ১ লক্ষ টাকা। স্কুলগুলিতে বইয়ের তালিকাও পাঠানো হয়েছে।

    মুখ্যমন্ত্রীর লেখা কোন কোন বই তালিকায় আছে?

    ১) কন্যার চোখে কন্যাশ্রী।
    ২) বিকেলটা হারিয়ে গিয়েছে।
    ৩) আমার পাহাড়।
    ৪) আমার জঙ্গল।
    ৫) চোখের তারা।
    ৬) জীবন সংগ্রাম।
    ৭) কুৎসাপক্ষ।
    ৮) এক পলকে, এক ঝলকে।
    ৯) সোজাসাপটা।
    ১০) কথায় কথায়।
    ১১) পরিবর্তন।
    ১২) নন্দীমা।
    ১৩) অনশন কেন?
    ১৪) জাগো বাংলা।
    ১৫) একান্তে।
    ১৬) আন্দোলনের কথা।
    ১৭) অশুভ সংকেত।
    ১৮) অনুভূতি।
    ১৯) সেরা মমতা একত্র।

    কোন প্রকাশনা থেকে কিনবেন

    শুধু বইয়ের নাম নয়, রাজ্যের নির্দেশিকায় আরও বলা হয়েছে, বইগুলি কোন কোন প্রকাশনা সংস্থা থেকে কিনতে হবে, তাও নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। এই প্রকাশকদের মধ্যে রয়েছে কিছু নামকরা সংস্থা, যারা মুখ্যমন্ত্রীর বই প্রকাশ করে। এই নিয়মের ফলে ক্রয় প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা বজায় থাকবে বলে সরকারের দাবি। তবে, কিছু শিক্ষক ও স্কুল কর্তৃপক্ষ মনে করছেন, নির্দিষ্ট প্রকাশকদের থেকে বই কেনার বাধ্যবাধকতা স্কুলের স্বাধীনতাকে কিছুটা সীমাবদ্ধ করছে। শিক্ষাবিদ ও সমালোচকরা এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে আরও বলেছেন লাইব্রেরিতে বই নির্বাচনের ক্ষেত্রে আরও বৈচিত্র্য থাকা উচিত ছিল। শুধুমাত্র একজন ব্যক্তির লেখা বইয়ের উপর এতটা জোর দেওয়া শিক্ষার্থীদের জ্ঞানের পরিধি সীমিত করতে পারে। তাঁরা প্রশ্ন তুলেছেন, বিশ্বসাহিত্য, বিজ্ঞান, ইতিহাস বা অন্যান্য বিষয়ের বইয়ের পরিবর্তে মুখ্যমন্ত্রীর বইয়ের উপর এতটা গুরুত্ব দেওয়া কতটা যুক্তিসঙ্গত।

    শিক্ষক মহলের তীব্র বিরোধিতা

    শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারী বলেছেন, “আমরা নজিরবিহীন এই নির্দেশের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অবিলম্বে এই শর্ত তুলে নিতে হবে। পরাধীন ভারতে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ভাইস চ্যান্সেলর থাকাকালীন আশুতোষ মুখোপাধ্যায়কে অর্থ দেওয়ার পাশাপাশি শিক্ষার স্বাধিকার হরণের শর্ত দিয়েছিল ইংরেজ শাসক। আশুতোষ মুখোপাধ্যায় তা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। (অথচ) আজ আমরা স্বাধীন দেশে শাসকের একইরকম পদধ্বনি শুনছি। এ অত্যন্ত লজ্জার। লাইব্রেরির মতো পবিত্র জায়গায় সরকারি অনুদানের সঙ্গে কোনও শর্ত চাপিয়ে দেওয়ার সম্পূর্ণ বিরুদ্ধে আমরা। পাশাপাশি এই শর্ত প্রত্যাহার করার দাবি জানাচ্ছি।” বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, “সরকারি পয়সায় আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর লেখা বই বিভিন্ন বিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে পাঠানো হচ্ছে শুনে অবাক হলাম। এটা বিস্ময়কর ঘটনা। এটা মনে করতে পারছি না আমাদের রাজ্যের কোনও মুখ্যমন্ত্রী এর আগে কিংবা অন্য রাজ্যের কোনও মুখ্যমন্ত্রী পদে বহাল থাকাকালীন এই ধরনের ঘটনা পূর্বে ঘটিয়েছেন কি না। আমরা এটা ক্ষমতার অপব্যবহার বলে মনে করি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুমোদন ছাড়াই যদি শিক্ষা দফতর এই সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে মুখ্য়মন্ত্রীর উচিত শিক্ষা-দফতরকে নির্দেশ দেওয়া যাতে তাঁর লেখা বই গ্রন্থাগারে না যায়।”

  • Calcutta High Court: বড় ধাক্কা মমতা সরকারের, চাকরিহারাদের দেওয়া যাবে না ভাতা, রায় হাইকোর্টের

    Calcutta High Court: বড় ধাক্কা মমতা সরকারের, চাকরিহারাদের দেওয়া যাবে না ভাতা, রায় হাইকোর্টের

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: গত মে মাসেই চাকরিহারা গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি কর্মীদের ভাতা দেওয়ার (SSC) সিদ্ধান্ত নিয়েছিল মমতা সরকার। শুক্রবার এ নিয়ে হাইকোর্টের রায় সামনে এল। বড় ধাক্কা খেল রাজ্য সরকার। এদিনই হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা (Calcutta High Court) তাঁর রায়ে জানিয়েছেন, ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অথবা আদালত যতদিন না পরবর্তী নির্দেশ দিচ্ছে, ততদিন পর্যন্ত এই চাকরিহারা গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি কর্মীদের ভাতা দিতে পারবে না রাজ্য সরকার। উচ্চ আদালত এদিন আরও জানিয়েছে, চার সপ্তাহের মধ্যে রাজ্যকে হলফনামা জমা দিতে হবে এ বিষয়ে। রাজ্যের হলফনামা জমা দেওয়ার পনেরো দিনের মধ্যে পাল্টা হলফনামা জমা দেবেন মামলাকারীরা।

    গ্রুপ সি কর্মীদের ২৫ হাজার টাকা ও গ্রুপ ডি কর্মীদের ২০ হাজার টাকার ভাতার ঘোষণা

    প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের এসএসসি প্যানেলে থাকা প্রায় ২৬ হাজার জনের চাকরি বাতিল করার নির্দেশ দেয় দেশের শীর্ষ আদালত। এই ২৬ হাজার জনের মধ্যেই রয়েছেন গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি কর্মীরাও। গত মাসেই রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নেয়, চাকরিহারা গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি কর্মীদের প্রতি মাসে ভাতা দেওয়া হবে। গ্রুপ সি কর্মীদের প্রতি মাসে ২৫ হাজার টাকা এবং গ্রুপ ডি কর্মীদের প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে মমতা সরকার। তবে শুক্রবার তাতে স্থগিতাদেশ জারি করল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)।

    আগের শুনানিতেই এনিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা

    প্রসঙ্গত, ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেই কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয় (Calcutta High Court)। যারা মামলা করেন, তারা হাইকোর্টে জানান যে, চাকরিহারা গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি কর্মীদের ভাতা দেওয়া হলে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরিপন্থী হবে। প্রসঙ্গত, আগের শুনানিতেই বিচারপতি অমৃতা সিনহা ভাতার টাকার অঙ্ক নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, টাকার পরিমাণ ২৫ হাজার এবং ২০ হাজার করা হল কেন? কিসের ভিত্তিতে এই অঙ্ক নির্ধারণ করা হল? বিচারপতি অমৃতা সিনহা আরও প্রশ্ন তুলেছিলেন, যাঁরা এই টাকা পাবেন তাঁদের থেকে রাজ্য প্রতিদানে কী পাবে? তিনি বলেছিলেন, তাঁরা ঘরে বসে থাকবেন আর টাকা পাবেন? সুপ্রিম কোর্টে একটার পর একটা রিভিউ পিটিশন হতে থাকবে আর এরা টাকা পেতে থাকবেন? প্রসঙ্গত, গত শুক্রবারই মামলার শুনানি শেষ হয়, কিন্তু সেদিন রায়দান স্থগিত রেখেছিলেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। এই শুক্রবার তিনি রায় ঘোষণা করলেন এবং গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি কর্মীদের ভাতা দেওয়ার উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করলেন।

  • Supreme Court: ত্রিপুরায় চাকরির প্যানেল বাতিলের মাশুল গুণতে হয়েছিল বামেদের, বাংলায়ও কি পালাবদল আসন্ন?

    Supreme Court: ত্রিপুরায় চাকরির প্যানেল বাতিলের মাশুল গুণতে হয়েছিল বামেদের, বাংলায়ও কি পালাবদল আসন্ন?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) রায়ে চাকরি হারিয়েছিলেন ১০ হাজার ৩২৩ জন। তার জেরে কুর্সি খোয়াতে হয়েছিল ত্রিপুরার (Tripura) বাম সরকারকে। সেই সময় মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন মানিক সরকার। কেলেঙ্কারি হয়েছিল তাঁর আমলেই, দু’দফায়। তারই মাশুল গুণতে হয়েছিল বামেদের। পরের বছর বিধানসভা নির্বাচনে ত্রিপুরায় ধুয়ে-মুছে সাফ হয়ে যায় বামেরা।

    দুর্নীতির পাঁকে আকণ্ঠ ডুবে তৃণমূল! (Supreme Court)

    পশ্চিমবঙ্গেও সেই দুর্নীতির গন্ধ। যে পাঁকে আকণ্ঠ ডুবে গিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল সরকার। গরু পাচার, বালি পাচার, এসএসসিতে নিয়োগ কেলেঙ্কারি – একের পর এক দুর্নীতিতে নাম জড়িয়েছে তৃণমূলের কেষ্ট-বিষ্টুদের। সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ‘ঢাকি সমেত’ বিসর্জন হয়ে গিয়েছে ২৬ হাজার চাকরি। ২০১৬ সালের নিয়োগ প্যানেল বাতিল করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। গদি খোয়ানোর আশঙ্কায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে বসে দেশের শীর্ষ আদালতকে যা-নয়-তা-ই বলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কয়েকজন তাঁবেদারও আস্থা হারিয়েছেন দেশের বিচারব্যবস্থার ওপর! রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, যে কেলেঙ্কারির জেরে গদিচ্যুত হতে হয়েছিল ত্রিপুরার বাম সরকারকে, সেই একই ‘পাপে’ আগামী বিধানসভা নির্বাচনে ক্ষমতা হারাতে হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে। আর যদি তা হয় তাহলে দেশের আর কোথাওই অস্তিস্ত্ব থাকবে না তৃণমূলের।

    ত্রিপুরায় পালাবদল

    ‘শিবের গীত’ বন্ধ করে ফেরা যাক খবরে। ত্রিপুরায় তখন বাম শাসন। রাজ্যের যে দিকেই চোখ যায়, সর্বত্রই লালে লাল। মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে সিপিএমের মানিক সরকার। ২০১০ ও ২০১৩ সালে দু’দফায় স্কুল শিক্ষার বিভিন্ন স্তরে শিক্ষক পদে ১০ হাজার ৩২৩ জনকে নিয়োগ করেছিল মানিকের সরকার। অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ওই নিয়োগ নিয়ে মামলা হয় ত্রিপুরা হাইকোর্টে। গোটা প্যানেল বাতিল করে দিয়েছিল ত্রিপুরা হাইকোর্ট। উচ্চ আদালতের সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে (Tripura) সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় ত্রিপুরার বাম সরকার। ২০১৭ সালে সুপ্রিম কোর্ট বহাল রাখে হাইকোর্টের রায়ই। তার পরের বছরই ছিল ত্রিপুরার বিধানসভা নির্বাচন। সেই ভোটেই কার্যত ত্রিপুরা থেকে মুছে যায় বামেরা। লাল রং বদলে ত্রিপুরা হয়ে যায় পদ্মময়। সরকার গঠন করে বিজেপি।

    নিয়োগ কেলেঙ্কারি

    প্রসঙ্গত, ২০১০-’১৩ সালের মধ্যে কেবল মৌখিক (Supreme Court) পরীক্ষার ভিত্তিতে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলে নিয়োগ করেছিল ত্রিপুরার তৎকালীন বাম সরকার। নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে কয়েকজন প্রার্থী হাইকোর্টে যান। রায় দিতে গিয়ে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি দীপক গুপ্ত ও বিচারপতি স্বপন দেবনাথের ডিভিশন বেঞ্চ সামগ্রিক নিয়োগ পদ্ধতিকেই অবৈধ ঘোষণা করে নতুন ও স্বচ্ছ পদ্ধতি তৈরি করে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের নির্দেশ দেয়। হাইকোর্ট এও জানিয়েছিল, নিয়োগ করতে হবে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার ভিত্তিতে।

    তৃণমূলের লাফালাফি

    ত্রিপুরা হাইকোর্টের সেই রায়ের পর লাফালাফি করতে শুরু করে দেয় তৃণমূল। সর্বভারতীয় দল হওয়ার লক্ষ্যে তখন ত্রিপুরায় পায়ের নীচে মাটি খুঁজে বেড়াচ্ছে তৃণমূল। সেরকম একটা সময়ে চাকরি বাতিলের মতো একটা হাতিয়ার হাতে পেয়ে যারপরনাই উল্লিসিত হয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। ঘাসফুল শিবিরের তৎকালীন (Tripura) চেয়ারম্যান বলেছিলেন, “ধর্মের কল বাতাসে নড়ে। রাজ্যে শিক্ষা দফতরের নিয়োগ নীতি আদতে শাসক দলের দুর্নীতিকে এতদিন ধরে প্রশ্রয় দিয়েছে। আজ আদালতে সেটাই প্রমাণিত হল।”

    বাংলায় মুখ আমশি!

    ত্রিপুরায় একলপ্তে ১০ হাজারেরও বেশি শিক্ষকের নিয়োগ বাতিলে হওয়ার পর তৃণমূল যেমন উল্লসিত হয়েছিল, তেমনি বাংলায় ২৬ হাজারের চাকরি যেতে মুখ আমশি হয়ে গিয়েছে ঘাসফুল শিবিরের নেতাদের! ত্রিপুরার ক্ষেত্রে তারা বলেছিল, ধর্মের কল বাতাসে নড়ে। আর বাংলায় তারা বিজেপি এবং আলাদতের ‘ষড়যন্ত্রের’ (ষড়যন্ত্র শব্দটি অবশ্য উল্লেখ করেননি তৃণমূল নেতারা, তবে তাঁদের আকার-ইঙ্গিতে তেমনই অনুযোগের জল্পনা) গন্ধ পাচ্ছে। খোদ মুখ্যমন্ত্রী চাকরি হারা ‘যোগ্য’ শিক্ষকদের ক্ষোভ প্রশমিত করতে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে সভা করেছিলেন। সেখানে ‘আমরা যোগ্য’ লেখা কার্ড ঝুলিয়ে অনেককে ঘুরতে দেখা গিয়েছে। সেই সভায় তিনি এবং তাঁর স্তাবকদের দল কুম্ভীরাশ্রু বিসর্জন করেন এবং আদালতের নির্দেশের সমালোচনা করেন বলে অভিযোগ।

    কাজ করতে পারে প্রাতিষ্ঠানিক বিরোধিতা!

    উত্তর-পূর্বের (Supreme Court) পাহাড়ি রাজ্য ত্রিপুরার বিজেপি নেতাদের দাবি, তাঁদের রাজ্যে বাম সরকার পতনে যেভাবে অনুঘটকের ভূমিকা পালন করেছিল ১০ হাজার ৩২৩ জনের চাকরি বাতিল, সেই একই ঘটনা ঘটবে তৃণমূল শাসিত পশ্চিমবঙ্গেও। ত্রিপুরা বিজেপির অন্যতম মুখপাত্র সুব্রত চক্রবর্তী বলেন, “বাংলা আর ত্রিপুরার মাটি আলাদা।” তবে একটা মৌলিক মিল রয়েছে। তা হল, দুই রাজ্যেই দীর্ঘ বামশাসনের পরে মানুষ সরকার বদলে দিয়েছিলেন। কিন্তু তৃণমূল যেভাবে দুর্নীতি করেছে, তাতে মানুষের ক্ষোভ হিমালয়সমান জায়গায় পৌঁছেছে। চাকরি বাতিল-সহ যা যা হচ্ছে, তাতে সামনের ভোটে তাদের বিদায় আসন্ন।”

    কী বলছেন ত্রিপুরার বাম নেতা?

    ত্রিপুরার (Tripura) বাম সরকারের প্রাক্তন মন্ত্রী ভানুলাল সাহা আবার ত্রিপুরার সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের বিষয়টিকে এক করে দেখতে চাননি। তিনি বলেন, “ত্রিপুরা আর বাংলার বিষয়ের মধ্যে ফারাক রয়েছে। আমাদের রাজ্যে প্রক্রিয়াগত ত্রুটি হয়েছিল। কিন্তু বাংলায় টাকা-পয়সার বিনিময়ে নিয়োগ হয়েছে। দুটো বিষয় এক নয়।” ত্রিপুরা সিপিএমের প্রবীণ নেতাদের একাংশের দাবি, শুধু চাকরি বাতিলের জন্য বাম সরকারের পতন হয়নি। দীর্ঘদিন সরকারে থাকার ফলে কাজ করেছিল প্রতিষ্ঠান বিরোধিতাও। বছর ঘুরলেই বাংলায়ও বিধানসভা নির্বাচন। তখন মমতা সরকারের ১৫ বছর পূর্ণ হয়ে যাবে। তাই নিদারুণ উদ্বেগে রয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, সেই কারণেই সুপ্রিম কোর্টের রায় শোনার পর সঙ্গে সঙ্গে নবান্নে তলব করা হয় শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে। শিক্ষামন্ত্রী এবং সরকারি আমলাদের নিয়ে দীর্ঘ বৈঠকের পর সাংবাদিক সম্মেলন করে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছিলেন, আদালতের নির্দেশ মেনেই তিন মাসের মধ্যে রাজ্য সরকার নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে। সেই সঙ্গে তিনি এও বলেছিলেন, এই মামলায় তো তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রীকে (পার্থ চট্টোপাধ্যায়) জেলে রেখে দেওয়া হয়েছে অনেক দিন হয়ে গেল! একজনের অপরাধে কতজনের শাস্তি হয়?

    বলির পাঁঠা করা হল পার্থকে!

    রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, তৃণমূল সুপ্রিমোর এহেন বক্তব্যের পর স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন ওঠে, তাহলে কি নিয়োগ কেলেঙ্কারিতে বলির পাঁঠা করা হল পার্থকে? তাঁর দলের যেসব নেতা কিংবা তাঁদের (Supreme Court) নিয়োজিত এজেন্টরা টাকার বিনিময়ে চাকরি ‘বিক্রি’ করেছিলেন, পার্থকে বলি দিয়ে তাঁদের গায়ের কেলেঙ্কারির কালি মুছে ফেলতে চেয়েছেন মমতা! রাজনৈতিক মহলের অন্য অংশের মতে, আগামী বছর রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে ড্যামেজ কন্ট্রোল করার নানা চেষ্টা করবে তৃণমূল সরকার। সিভিক ভলান্টিয়ারদের মতো হয়তো ‘সিভিক শিক্ষক’ও নিয়োগ করে ফেলতে পারে মমতার সরকার! কিংবা ‘শ্রী’যুক্ত কোনও ভাতা দেওয়ার ব্যবস্থাও করতে পারে রাজ্য সরকার। মোট কথা, যেন-তেন প্রকারে ফের ক্ষমতায় ফিরতে চাইবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। একবার ক্ষমতায় আসার পর যে ‘রসে’র সন্ধান পেয়েছেন তৃণমূল নেতারা, সেই রসের ভাগ যাতে দীর্ঘদিন ঝোলায় পড়ে, সেই ব্যবস্থা করতে প্রাণপাত করবেন তৃণমূল নেতারা।

    তবে গণতন্ত্রে তো (Supreme Court) শেষ কথা বলে জনতা জনার্দন। তারা কী বলে, সেটাই দেখার (Tripura)!

  • SSC Jobless Teachers: ‘এই সরকারকে আমরাই টেনে নামাব’, রণহুঙ্কার চাকরিহারাদের! শিক্ষকদের উপর নির্মম লাঠিচার্জ পুলিশের

    SSC Jobless Teachers: ‘এই সরকারকে আমরাই টেনে নামাব’, রণহুঙ্কার চাকরিহারাদের! শিক্ষকদের উপর নির্মম লাঠিচার্জ পুলিশের

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: চাকরিহারাদের উপর্যুপরি বিক্ষোভে উত্তাল বাংলা। কলকাতা থেকে জেলা, সর্বত্র চাকরিহারাদের প্রবল বিক্ষোভ (Teachers Protest) চলল দিকে-দিকে। মঙ্গলবারের পর বুধবারেও জেলায়-জেলায় চলল প্রতিবাদ-বিক্ষোভ। রাজ্যজুড়ে গণ-আন্দোলন চাকরিহারাদের (SSC Jobless Teachers)। এর মধ্যেই প্রতিবাদ দেখাতে গিয়ে পুলিশের বর্বরোচিত আক্রমণের শিকার হলেন চাকরিহারারা। বুধবার রাজ্য জুড়ে ডিআই অফিস ঘেরাও অভিযানে নামেন চাকরিহারারা। আর তাতেই ধরা পড়ে বিপন্নতার ছবি। পেটের অন্ন কেড়ে নিয়ে তাদের উপরেই লাঠি চালাল পুলিশ-প্রশাসন। এরপর আর নিজেদের শান্ত রাখতে পারেননি চাকরিহারারা। রণংদেহী মূর্তি নেন তাঁরা। এক চাকরিহারা বললেন, ‘‘মিলিয়ে নেবেন, এ সরকার টিকবে না, লিখে দিলাম। সরকারকে আমরাই টেনে নামাব।’’

    কসবায় ধুন্ধুমার

    কসবায় চাকরিহারা (SSC Jobless Teachers) মিছিল করে ডিআই অফিসের উদ্দেশে আসছিলেন। ডিআই অফিসের কাছে আসতেই পুলিশি বাধার মুখে পড়তে হয় তাঁদের। কসবার ডিআই অফিসের তালা ভেঙে ডিআই অফিসের ভেতরে ঢুকতে চাইছিলেন চাকরিহারারা। স্কুল পরিদর্শকের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন চাকরিহারারা। তবে শিক্ষকরা ডিআই অফিসে ঢোকার চেষ্টা করতেই তাঁদের আটকে দেয় পুলিশ। শুরু হয় পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি। পুলিশ টেনে হিঁচড়ে চাকরিহারাদের সরানোর চেষ্টা করে। পড়ে যান বেশ কয়েকজন। ওই অবস্থাতেই লাঠিপেটা করা হয় বলে অভিযোগ। বেশ কয়েকজন লাঠির আঘাতে গুরুতর চোট পান। মহিলাদেরও লাঠিচার্জ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। প্রতিবাদে (Teachers Protest) ডিআই অফিসের সামনেই শুয়ে পড়ে প্রতিবাদ জানাতে থাকেন চাকরিহারারা। এক চাকরিহারা অচৈতন্য হয়ে পড়েন। পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এক চাকরিহারা ক্ষোভে ফেটে বলেন, “মিলিয়ে নেবেন, এ সরকার টিকবে না, লিখে দিলাম। সরকারকে আমরাই টেনে নামাব। আমরাই তো সমাজের মুখ।” তিনি প্রশ্ন তুললেন, “একজন শিক্ষিকাকে নীচে নামিয়ে মাটিতে ফেলে পিটিয়ে মারছে পুলিশ! এটা কীসের আইন? কোথাকার আইন? আইন শেখেনি ওরা? লজ্জা নেই, হাসছে।” চাকরিহারাদের দাবি, “আমাদের একটাই দাবি, মিরর ইমেজ প্রকাশ করা হোক। এসএসসির কাছে আছে, কিন্তু সেই মিরর ইমেজ প্রকাশ করা হচ্ছে না।”

    শিক্ষকদের নির্মমভাবে লাঠিপেটা পুলিশের

    চাকরিহারা শিক্ষকদের (SSC Jobless Teachers) অভিযোগ, কসবার ডিআই অফিসের সামনে চাকরিহারা শিক্ষকদের নির্মমভাবে লাঠিপেটা করে পুলিশ। কখনও ঘাড়ধাক্কা তো কখনও সপাং-সপাং করে লাঠি চালায় তারা। আবার কখনও বুট পরা পায়ে সজোরে লাথি। রক্তাক্ত হয়ে লুটিয়ে পড়েন একাধিক শিক্ষক। আহত হন ২ শিক্ষক, অভিযোগ চাকরিহারাদের। লাঠিচার্জে আহত শিক্ষকদের বক্তব্য, পুলিশ কেন এভাবে অমানবিক ভাবে তাদের ওপর লাঠিচার্জ করল? তারা শুধুমাত্র নিজেদের অধিকারের দাবি জানাতে এসেছিলেন। পুলিশ নিজে হেলমেট পরে শিক্ষকদের লাথি, কিল মেরেছে, গলা ধাক্কা দিয়েছে। কসবায় এক শিক্ষক বলেন, ‘‘পেটে আগুন জ্বলছে। সারা বাংলায় এবার আগুন জ্বলবে।’’ অপর এক শিক্ষিকা বলেন, “ওখানে উনি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন আর এখন পুলিশ লাঠিপেটা করছে। আমাদের ন্যায্য দাবি চাইতে এসেছি।” আর এক শিক্ষিকা বলেন, “আমাদের ক্লাসরুমে থাকার কথা ছিল। সেই জায়গায় আমাদের রাস্তায় থাকতে হচ্ছে। আপনাদের সন্তানদেরই তো পড়াই। আমাদের লাথি মারছেন!”

    সরকারি নির্দেশেই লাঠিপেটা!

    পুলিশের মারে আর্তনাদ বিক্ষোভকারীদের (Teachers Protest)। “এরা পুলিশ নয়, এরা পার্টির দালাল। এরা পার্টির দালাল, কোন অর্ডারে এরা মেরেছে…আমরা কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচি করিনি। আমরা শিক্ষক, যোগ্য শিক্ষক।” বারবার চিৎকার করেও লাভ হয় না। লাঠি উঁচিয়ে তেড়ে এসে ঘা দেওয়া হয় সজোরে। সহকর্মীকে সাহায্য করতে এগিয়ে গেলেন যাঁরা, তাঁরাও রেহাই পেলেন না। এক মহিলা চাকরিহারার (SSC Jobless Teachers) আর্তনাদ “সেনসিটিভ জায়গা দেখে দেখে লাঠি মারছে। ভীষণ রকম অসভ্য, বর্বরের মতো আচরণ! এটা কি সরকারি নির্দেশ ছাড়া হয়। উনি ওখানে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন, আর এখানে লাঠিচার্জ করার নির্দেশ দিচ্ছেন!” পুলিশের মার খেয়ে তখন রক্ত ঝরছে। গলা ভেঙে গিয়েছে। চোখে ক্ষোভের আগুন। এক চাকরিহারার চিৎকার “লাঠিপেটা করে কী হবে, গুলি করুন গুলি, কপালে গুলি করে মেরে দিন।” কেউ চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর যদি দম থাকে, আমাদের সঙ্গে ইন্ডোর স্টেডিয়ামে ভাসা ভাসা বক্তব্য নয়, ওয়ান টু ওয়ান বক্তব্য করতে বলবেন, আমাদের সঙ্গে। উনি কতটা আইন জানেন, আমি তাই দেখব। আমাদের সমস্ত কিছু শেষ। এবার ওঁরা আমাদেরকে যদি না তুলে ধরেন তাহলে আমাদের আর কিচ্ছু হাতে নেই। সব হারিয়ে ফেলেছি। রাস্তায় এসে দাঁড়িয়েছি।”

    কসবা কাণ্ডের প্রতিবাদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের

    বুধবার চাকরিহারাদের ভবিষ্যত নিয়ে বিকাশভবনে গিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে চিঠি দেওয়ার কথা ছিল প্রাক্তন বিচারপতি তথা বর্তমান বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের। মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা সেই চিঠি ব্রাত্য বসুর হাতে তুলে দেওয়ার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু কসবায় বিক্ষোভরত শিক্ষকদের উপর পুলিশি হামলার প্রতিবাদে সেই চিঠি ছিঁড়ে ফেলেন তিনি। অভিজিৎ জানিয়েছেন, বিক্ষোভরত চাকরিহারাদের উপর পুলিশের লাঠিচার্জের প্রতিবাদে বিকাশভবন যাবেন না তিনি। তার আগে, বুধবার এসএসসি দফতরে গিয়ে চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ কথা বলেন অভিজিৎ। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিজেপি নেতা কৌস্তভ বাগচী।

    জেলায় জেলায় চাকরিহারাদের বিক্ষোভ

    বুধবার, জেলায় জেলায় ডিআই অফিস ঘেরাওয়ের ডাক দেন চাকরিহারা শিক্ষকরা (SSC Jobless Teachers)। বিভিন্ন জেলায় শিক্ষকরা ডিআই অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখান। তাতে দিকে দিকে ধুন্ধুমার কাণ্ড। হুগলি, বীরভূম সহ একাধিক জেলাতেও শিক্ষকদের আন্দোলনে তুলকালাম পরিস্থিতি। কোচবিহার, বারাসত কৃষ্ণনগর, শিলিগুড়ি, মুর্শিদাবাদ, সর্বত্র এই অশান্তির আগুন ক্রমশ ছড়াচ্ছে। যোগ্য শিক্ষকদের চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে ডিআই অফিসে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ অভিযান ও ডি আই কে ডেপুটেশন যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চের। বুধবার বেলা ১২টা নাগাদ মুর্শিদাবাদ ডিআই অফিসের সামনে জড়ো হয় জেলার চাকরিহারা বঞ্চিত শিক্ষকরা। এদিন শিক্ষক শিক্ষিকারা ডিআই অফিসে এসেই অফিসের মূল গেটে চেন ও তালা ঝুলিয়ে দেয়। তারা বিক্ষোভ অভিযান শুরু করে। এরপরে তারা ডিআই অফিসের সামনে রাস্তায় বসে বিক্ষোভ আন্দোলন করে।

    শিলিগুড়ি থেকে নদিয়া পথে শিক্ষকরা

    হুগলিতে ডিআই অফিসে গিয়ে গেটে তালা মারেন শিক্ষকরা (SSC Jobless Teachers)। শিলিগুড়িতেও ডিআই অফিসে তালা ঝোলানো হয়েছে। মালদাতেও চাকরিহারাদের ডিআই অফিস অভিযানকে কেন্দ্র করে ধুন্ধুমার কাণ্ড বাধে। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়। বালুরঘাটেও পথে নামেন চাকরিহারারা। সকালে রঘুনাথপুর এলাকা থেকে বিক্ষোভ (Teachers Protest) মিছিল শুরু করেন তাঁরা। তবে সেই মিছিল ডিআই অফিসের সামনে যেতেই পুলিশি বাধার মুখে পড়েন বিক্ষোভকারীরা। পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকে ডিআই অফিসের সামনে জড়ো হন চাকরিহারা শিক্ষকরা। তার পর তাঁরা অফিসের মূলগেটে তালা ঝুলিয়ে সেখানেই রাস্তার উপর বসে বিক্ষোভ দেখান। পশ্চিম মেদিনীপুরে ডিআই অফিসের সামনেও বিক্ষোভ দেখান চাকরিহারারা। অভিযোগ, সেখানেও জেলা স্কুল পরিদর্শককে অফিসে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। নদিয়াতেও একই ছবি ধরা পড়েছে। কৃষ্ণনগরে জেলা স্কুল পরিদর্শকের দফতরের সামনেও বিক্ষোভ দেখান চাকরিহারারা। টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তা অবরোধ করে দফায় দাফায় বিক্ষোভ চলে।

    বিজেপির লালবাজার অভিযানেও ধুন্ধুমার

    কসবায় চাকরিহারাদের (SSC Jobless Teachers) ওপর পুলিশের লাঠিচার্জের প্রতিবাদে বিজেপি বিধায়কদের ‘লালবাজার অভিযান’ ঘিরেও চলে তুলকালাম। বিজেপি বিধায়কদের প্রবল বিক্ষোভ ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে লালবাজার চত্বর। রাস্তায় বসে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছিলেন বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ, অগ্নিমিত্রা পালরা। তাঁজদের প্রিজন ভ্যানে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। শঙ্কর ঘোষ একসময় রাস্তায় শুয়ে পড়েছিলেন। তাঁকে চ্যাংদোলা করে পুলিশ তুলে নিয়ে গিয়েছে। বিজেপি বিধায়কদের সঙ্গে এদিন তুমুল ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায় পুলিশকর্মীদের। কসবার ঘটনার প্রতিবাদ করতে গিয়ে আটক হন বিজেপি বিধায়করা।

  • Mamata SSC Jobless Meet: যোগ্য কারা? কীভাবে আলাদা করা হল অযোগ্যদের? মমতার বৈঠক নিয়ে প্রশ্ন বিজেপির

    Mamata SSC Jobless Meet: যোগ্য কারা? কীভাবে আলাদা করা হল অযোগ্যদের? মমতার বৈঠক নিয়ে প্রশ্ন বিজেপির

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: এসএসসি নিয়োগ কেলেঙ্কারির জেরে বাতিল হয়েছে ২০১৬ সালের নিয়োগ প্যানেল। তার পরেই রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে পুঞ্জীভূত হতে থাকে অসন্তোষের আগুন। সেই আগুনের আঁচ যাতে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে না পড়ে, তাই সোমবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে চাকরি হারানো শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীদের সঙ্গে বৈঠকে বসলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata SSC Jobless Meet)। এই বৈঠকের উদ্দেশ্য নিয়েই প্রশ্ন তুললেন বিজেপির (BJP) রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার।

    সুকান্তর বক্তব্য

    তিনি বলেন, “যোগ্য-অযোগ্যদের মিলিয়ে দিতেই এই বৈঠক ডাকা হয়েছে। সরকার চাইলে যোগ্য-অযোগ্যদের অনেক আগেই আলাদা করতে পারত।” তিনি বলেন, “প্রথম থেকেই তৃণমূল পরিচালিত রাজ্য সরকারের উদ্দেশ্য হচ্ছে দুধ আর জলকে মিলিয়ে দিতে হবে। আজকের মিটিংয়ের উদ্দেশ্যও তাই। কোনওভাবেই যেন আলাদা করা না যায়। গন্ডগোলটা তো ওখানেই হচ্ছে। যোগ্যদের সঙ্গে অযোগ্যদেরও ডাকা হয়েছে (Mamata SSC Jobless Meet)। এই অযোগ্যরা তৃণমূল নেতাদের টাকা দিয়ে চাকরি পেয়েছে।” মন্ত্রী বলেন, “সরকার চাইলে কারা টাকা দিয়ে চাকরি পেয়েছে আর কারা মেধার ভিত্তিতে চাকরি পেয়েছে, সেই তালিকা আদালতের সামনে আনতে পারত। সরকার এখনও তা আনেনি। তাদের উদ্দেশ্য, হয় ব্যাপারটাকে ঘেঁটে দাও, যোগ্য-অযোগ্যদের মিলিয়ে দাও, যাতে কেউ ধরা না পড়ে। অথবা পুরো প্যানেলটাই বাতিল হয়ে যাক, যাতে কারও ঘাড়ে দোষ না পড়ে। যোগ্য-অযোগ্য আলাদা করলেই বিপদ। তাহলে যারা টাকা দিয়েছে, তারা টাকা ফেরত চাইবে।”

    গেট পাস নিয়ে গুচ্ছ প্রশ্ন

    এদিন নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামের বৈঠকে যোগ দিতে দেখাতে হয়েছে গেট পাস। তাতে লেখা ‘আমরা যোগ্য’। কোন নিরিখে যাদের গেট পাস দেওয়া হয়েছে তারা যোগ্য, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। যেমন প্রশ্ন উঠছে, এই গেট পাস কে ইস্যু করেছে? কারাই বা দিয়েছে? গেট পাস দেওয়া হয়েছে ৭ হাজার ১৪৪জনকে। অথচ চাকরি খুইয়েছেন প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মী। বিরোধীদের প্রশ্ন, তাহলে হাইকোর্ট যাদের অযোগ্য বলে দাগিয়ে দিয়েছিল, তারাই কি এদিনের বৈঠকে (Mamata SSC Jobless Meet) ডাক পেয়েছিলেন? পেয়েছিলেন ‘আমরা যোগ্য’ লেখা গেট পাস? রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “এরা কেউ প্রকৃত মেধাযুক্ত শিক্ষক-শিক্ষিকা বা শিক্ষাকর্মী নয়। এরাই চব্বিশে ভোট করেছে, ভোট লুটের কাজও করেছে। ডায়মন্ড হারবারে তো টেন্টেড শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের দিয়ে ভোট করানো হয়েছে। ওখানে সাত লক্ষ ভোট পাওয়া নিয়ে তো আমি আরটিআই-ও করেছিলাম। কিন্তু এখনও উত্তর মেলেনি। এবার আমি ভোটে আদালতে যাব।”

    তৃণমূল পার্টি অফিস থেকে পাস বিলি!

    শুভেন্দুর (BJP) দাবি, “তৃণমূল পার্টি অফিস থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে চাকরিহারাদের সভার পাস বিলি হয়েছে।” এদিন বিধানসভার বাইরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী যোগ্যদের বৈঠকে ডেকেছিলেন। কিন্তু এদিন মাত্র ৭ হাজার পাস বিলি হয়েছে। তার মানে ১৮ হাজারকে অযোগ্য ঘোষণা করেছেন মমতা।” রাজ্যের বিরোধী দলনেতার দাবি, এই কেলেঙ্কারির সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবারও জড়িত। তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী নন, উনি তৃণমূল নেত্রী। মুখ্যমন্ত্রী বৈঠক ডাকলে ২৬ হাজার জনকেই বৈঠকে ডাকতেন। মুখ্যমন্ত্রী মানবিক নন। উনি ৭ হাজার জনের জন্য পাস জারি করেছেন। কাদাপাড়ায় তৃণমূল দফতর থেকে পাস বিলি করা হয়েছে। এরা সবাই তৃণমূলের গুন্ডা।” শুভেন্দু বলেন, “৭ হাজার পাস বিলি করে বলছে আমরা যোগ্যদের ডেকেছি (Mamata SSC Jobless Meet)। তার মানে ১৮ হাজার অযোগ্য। এই তালিকাটা কেন সুপ্রিম কোর্টে দিয়ে দিল না?”

    দম্ভ না দেখালে ২৬ হাজারের এই পরিণতি হত না! 

    রাজ্যের বিরোধী দলনেতা বলেন, “অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ২০২২ সালে সাড়ে পাঁচ হাজার অবৈধ বলেছিলেন। সেদিন যদি দম্ভ-ঔদ্ধত্য না দেখিয়ে স্বীকার করে নিত, তাহলে আজ ২৬ হাজারের এই পরিণতি হত না।” তিনি বলেন (BJP), “কলকাতা হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করতে সুপ্রিম কোর্টে করের ২০০ কোটি টাকা খরচ করেছে। এই টাকা খরচ করা হয়েছে এই সাড়ে ৫ হাজার অযোগ্যকে বাঁচাতে। সেই টাকা তুলেছে ভাইপো। সেটা বলে দিয়েছে সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র। যিনি লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের এমডি। এই সংস্থারই অন্যতম ডিরেক্টর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাই অমিত বন্দ্যোপাধ্যায়।”

    প্রসঙ্গত, যোগ্যদের ভিড়ে যে অযোগ্যরাও লুকিয়ে রয়েছে, এদিন তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর কথায়ও। তিনি বলেন, “আগে যোগ্যদের বিষয়টি মিটে যাক। তারপর যাদের অযোগ্য বলা হচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে কী কী তথ্য আছে আমি দেখব। সব কাগজপত্র তদন্ত করে দেখব। সত্যি যদি তারা অযোগ্য বলে প্রমাণিত হয়, তখন (BJP) আর আমার কিছু করার থাকবে না (Mamata SSC Jobless Meet)।”

LinkedIn
Share