মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: চাকরি বহাল থাকছে বত্রিশ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের। হাইকোর্টের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি ঋতব্রতকুমার মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চের র্যবেক্ষণ, দীর্ঘ ৯ বছর পর চাকরি বাতিল হলে বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়বে। বিচারপতি বলেন, “যাঁরা ৯ বছর ধরে কাজ করছেন তাঁদের পরিবারের কথাও ভাবতে হবে। যাঁরা সফল হননি তাঁদের জন্য সব ড্যামেজ করা যায় না।”
ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ
প্রাথমিক স্কুলের ৩২ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকার চাকরি বাতিল করে দিয়েছিলেন হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ২০১৪ সালের ‘টেট’-এর ভিত্তিতে ২০১৬ সালে প্রাথমিকে প্রায় ৪২ হাজার ৫০০ শিক্ষক নিয়োগ হয়েছিল। ওই নিয়োগ প্রক্রিয়াতেই বেনিয়মের অভিযোগ ওঠে। পরে ২০২৩ সালের মে মাসের ১২ তারিখ ওই মামলার রায় ঘোষণা করেছিলেন হাইকোর্টের তৎকালীন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর নির্দেশে চাকরিচ্যুত হন প্রশিক্ষণহীন ৩২ হাজার শিক্ষক। মঙ্গলবার ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, কোর্ট যখন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তখন পুরো বিষয়টি বিবেচনা করতে হয়েছে। এখানে প্রসঙ্গ উঠে এসেছে সিবিআই-এরও। বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর বক্তব্য, আদালত কোনও ‘রোমিং এনকোয়ারি’ চালাতে পারে না।
গোটা প্রক্রিয়াকে নষ্ট করা যায় না
দ্বিতীয়ত, যাঁরা এতদিন ধরে চাকরি করছিলেন, তাঁদের পড়াশোনা করানোর ধরনের উপর কোনও প্রশ্ন ওঠেনি। তৃতীয়ত, যখন এই সাক্ষাৎকার পর্ব (ইন্টারভিউ প্রসেস) চলছিল, সেই সময় যিনি পরীক্ষক ছিলেন তিনি টাকা নিয়ে অতিরিক্ত নম্বর দিয়েছেন তাঁর কোনও প্রমাণ নেই। যার ফলে গোটা সাক্ষাৎকার পর্বে যে গলদ হয়েছে সেটা একেবারে বলা যাচ্ছে না। এদিন কোর্ট এও বলেছে, মামলা যাঁরা করেছিলেন, তাঁরা কেউ চাকরি করছিলেন না। ফলে যাঁরা পাশ করেননি তাঁদের জন্য গোটা প্রক্রিয়াকে নষ্ট করা যায় না। আর সেই যুক্তিতেই ডিভিশন বেঞ্চ একক বেঞ্চের রায়কে খারিজ করল।
একগুচ্ছ অভিযোগ
প্রাথমিকে নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে একগুচ্ছ অভিযোগ ওঠে। মামলাকারীদের অভিযোগ, ২০১৬ সালের নিয়োগের আইন মানা হয়নি। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সংরক্ষণ বিধি মানা হয়নি।নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কোনও সিলেকশন কমিটি ছিল না। থার্ড পার্টি এজেন্সি প্যানেল তৈরি করেছিল। অ্যাপটিটিউট টেস্ট নেওয়া হয়নি। অ্যাপটিটিউট টেস্টের কোনও গাইডলাইনই ছিল না। অতিরিক্ত নম্বর দিয়ে চাকরি পাইয়ে দেওয়া হয়। কাট অব মার্কস নিয়ে উপযুক্ত তথ্য ছিল না বোর্ডের কাছে। শূন্যপদের অতিরিক্ত নিয়োগ হয়। এবং নূন্যতম যোগ্যতা নেই, এমন প্রার্থীরাও চাকরি পান। তবে এদিন সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশ খারিজ করে দিয়ে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি ঋতব্রতকুমার মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চ জানায় কিছু নিয়োগে অনিয়ম হয়েছে, কিন্তু তার জন্য সবার চাকরি বাতিল করা উচিত বলে মনে করে না হাইকোর্ট।
