Tag: Trump Tariff

  • Recession in US: মন্দার মুখে মার্কিন অর্থনীতি, এগোচ্ছে ভারত! ট্রাম্পের শুল্কনীতিই দায়ী, দাবি মুডিজ-এর

    Recession in US: মন্দার মুখে মার্কিন অর্থনীতি, এগোচ্ছে ভারত! ট্রাম্পের শুল্কনীতিই দায়ী, দাবি মুডিজ-এর

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মহামন্দার মুখে দাঁড়িয়ে আমেরিকা। ভারতের অর্থনীতিকে ‘মৃত’ বলেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কিন্তু আদতে দেখা গেল আমেরিকার আর্থিক অবস্থাই শোচনীয়। কোনও রাখঢাক না করে মার্কিন আর্থিক রেটিং (US Rating Agency) সংস্থাই জানিয়ে দিল আমেরিকার বর্তমান (US Economy) পরিস্থিতি। বিশ্বের নাম করা আর্থিক রেটিং সংস্থা মুডিজ (Moodys Warning) জানিয়েছে, মন্দার মুখে মার্কিন অর্থনীতি, ট্রাম্পের (Donald Trump) সিদ্ধান্তেই বদলে এই প্রতিকূল অবস্থা তৈরি হয়েছে।

    ক্ষতি করছে ট্রাম্পের ট্যারিফ নীতি

    চলতি বছরের ৩০ জুলাই ভারতের অর্থনীতিকে ‘মৃত’ বলে কটাক্ষ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু, মাত্র দু’মাসের মাথাতেই নিজের ঘর সামলাতে যে তাঁকে হিমশিম খেতে হচ্ছে, তা বলাই বাহুল্য। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রায়শই আমেরিকানদের আশ্বস্ত করেন যে- তাঁর নেতৃত্বে মার্কিন অর্থনীতি এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে শক্তিশালী হয়েছে। কিন্তু মুডিজ-এর প্রধান অর্থনীতিবিদ মার্ক জান্ডি তাঁর দাবি নিয়ে প্রশ্ন তুলে ট্রাম্পকে বাস্তবের মুখ দেখিয়েছেন। মুডিজ-এর দাবি, দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্রমাগত এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, যা বিশ্ব অর্থনীতিতে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। ‘আমেরিকান ফার্স্ট’ স্লোগান দেওয়া ট্রাম্পের পদক্ষেপগুলি এখন প্রতিকূল প্রভাব ফেলছে মার্কিন অর্থনীতিতে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উপর শুল্ক আরোপের তার নীতি বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতি আমেরিকাকে মন্দার কবলে ফেলেছে।

    মন্দার মুখে আমেরিকা

    মার্কিন অর্থনীতির বর্তমান পরিস্থি নিয়ে মার্ক জান্ডি বলেছেন, ট্রাম্প মার্কিন জিডিপি বৃদ্ধি, বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও মুদ্রাস্ফীতির উপর নিয়ন্ত্রণকে তার অর্থনৈতিক সাফল্য হিসেবে তুলে ধরলেও বাস্তব কিন্তু অন্য কথা বলেছ। তাঁর মতে, আমেরিকা বর্তমানে চাকরি থেকে শুরু করে উপভোক্তা মূল্য সূচক সবেতেই নেতিবাচক অবস্থানে রয়েছে। নিউজউইককে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মুডিজ প্রধান অর্থনীতিবিদ বলেছেন- মার্কিন অর্থনীতির অবনতির অবস্থা সম্পর্কে কয়েক মাস আগে যে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছিল, তা এখন সত্যি হচ্ছে। তিনি অনুমান করছেন- ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ মার্কিন অর্থনীতি তীব্র মন্দার কবলে পড়বে। তিনি মনে করেন না যে- মার্কিন অর্থনীতি এই মুহূর্তে মন্দার মধ্যে রয়েছে। তবে তিনি বিশ্বাস করেন যে- এটি মন্দার দরজায় দাঁড়িয়ে আছে।

    মার্ক জান্ডি কে

    মার্ক জান্ডি সেই অর্থনীতিবিদ, যিনি ২০০৮ সালের আর্থিক সংকটের সঠিক ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন। গত কয়েক মাস ধরে, তিনি ট্রাম্প প্রশাসনের বাণিজ্য ও কর্মসংস্থান নীতি নিয়ে ক্রমাগত প্রশ্ন তুলে আসছেন। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে তালুর মতো চেনেন জান্ডি। তাঁর মতে, ট্রাম্পের পদক্ষেপগুলি আমেরিকান অর্থনীতির উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। জান্ডির দাবি, মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বা জিডিপির (গ্রস ডোমেস্টিক প্রোডাক্ট) নিরিখে আমেরিকার প্রায় এক তৃতীয়াংশ প্রদেশের সূচক রয়েছে ঋণাত্মক। এতে মার্কিন অর্থনীতিতে মন্দার ঝুঁকি কয়েক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে স্পষ্ট করেছেন তিনি। সম্প্রতি এই নিয়ে এক্স হ্যান্ডলে একটি পোস্ট করেন মার্ক। সেখানে তিনি লেখেন, ‘‘বিভিন্ন তথ্য ঘেঁটে দেখেছি, যুক্তরাষ্ট্রের এক তৃতীয়াংশ প্রদেশের জিডিপি হয় মন্দায়, নয়তো সেই রকম পরিস্থিতির মুখে দাঁড়িয়ে আছে। অন্য এক তৃতীয়াংশ কিছুটা স্থিতিশীল। বাকি এক তৃতীয়াংশের সূচক বৃদ্ধি পাচ্ছে। এক কথায় অর্থনীতি যথেষ্ট অস্থির। আমার মূল্যায়ন অনুযায়ী, আমেরিকায় মন্দা আসার মতো সহায়ক পরিস্থিতি রয়েছে।’’

    মার্কিন অর্থনীতির পক্ষে ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন

    কোনও দেশ আর্থিক মন্দার কবলে পড়েছে, এটা বোঝার একটা সুনির্দিষ্ট উপায় রয়েছে। একটি অর্থবর্ষে পর পর দু’টি ত্রৈমাসিকে যদি জিডিপির সূচক ঋণাত্মক থাকে, তা হলে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রটিকে মন্দা গ্রাস করেছে বলে ধরে নেওয়া হয়। চলতি আর্থিক বছরের (২০২৫-’২৬) প্রথম তিন মাস অর্থাৎ এপ্রিল থেকে জুনের মধ্যে শূন্যের নীচে নেমে যায় যুক্তরাষ্ট্রের জিডিপির সূচক। জুলাই-অগস্টে পরিস্থিতি সে ভাবে বদলায়নি। সেপ্টেম্বরে অবস্থার বিরাট পরিবর্তন না হলে মার্কিন অর্থনীতির পক্ষে ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন হবে বলেও মনে করছেন বিশ্লেষকদের একাংশ।

    এগোচ্ছে ভারতীয় অর্থনীতি

    আমেরিকার অর্থনীতি যেখানে বেসামাল সেখানে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, অগাস্টের একেবারে শেষে চলতি আর্থিক বছরের (পড়ুন ২০২৫-’২৬) এপ্রিল থেকে জুনে জিডিপির হার প্রকাশ করেছে ভারত সরকার। কেন্দ্রের দেওয়া সেই তথ্য অনুযায়ী, প্রত্যাশাকে ছাপিয়ে ৭.৮ শতাংশে পৌঁছে গিয়েছে সূচক। পরে ‘সেমিকন ইন্ডিয়া ২০২৫’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এই ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, ‘‘দ্রুত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশে পরিণত হবে ভারত।’’ বর্তমানে চতুর্থ স্থানে রয়েছে নয়াদিল্লির নাম। সমীক্ষক সংস্থা ‘ইওয়াই ইকোনমিক ওয়াচ’ আবার তাদের পূর্বাভাসে জানিয়েছে, আগামী ১৩ বছরের মধ্যে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হয়ে উঠবে ভারত। পাশাপাশি, তালিকায় এক নম্বর স্থানে থাকা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গদি টলমল হওয়ার ইঙ্গিতও দিয়েছেন আর্থিক বিশ্লেষকেরা।

  • US on Indian Brahmins: ভারতীয় ব্রাহ্মণদের অপমান, মোদির সমালোচনা! শুল্ক-যুদ্ধে বেকায়দায় পড়ে বিতর্কিত মন্তব্য মার্কিন বাণিজ্য উপদেষ্টার

    US on Indian Brahmins: ভারতীয় ব্রাহ্মণদের অপমান, মোদির সমালোচনা! শুল্ক-যুদ্ধে বেকায়দায় পড়ে বিতর্কিত মন্তব্য মার্কিন বাণিজ্য উপদেষ্টার

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ভারতকে চাপে ফেলতে গিয়ে বেকায়দায় পড়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দিল্লির সঙ্গে শুল্কযুদ্ধে এঁটে উঠতে না পেরে এবার বর্ণবিদ্বেষমূলক মন্তব্য করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য উপদেষ্টা পিটার নাভারো। ভারতীয় ব্রাহ্মণদের গায়ে ‘অর্থলোভী’ তকমা সেঁটে দিলেন তিনি। নয়াদিল্লিকে ‘রাশিয়ান টাকা তৈরির লন্ড্রি’ বলেও খোঁচা দিয়েছেন নাভারো। এমনকি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেও অপমানজনক কথা বলে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন ট্রাম্প ঘনিষ্ঠ মার্কিন বাণিজ্য উপদেষ্টা।

    প্রধানমন্ত্রী মোদিকে অপমান

    চলতি বছরের ১ সেপ্টেম্বর জনপ্রিয় মার্কিন গণমাধ্যম ‘ফক্স নিউজ’কে সাক্ষাৎকার দেন নাভারো। সেখানে ফের এক বার ভারতের নামে বিষোদ্গার করেন তিনি। নাভারো বলেন, ‘‘মোদি একজন মহান নেতা। কিন্তু আমি বুঝতে পারছি না কেন তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিঙের সঙ্গে একই শয্যায় যাচ্ছেন। বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশের নেতার এটা করা উচিত নয়।’’ গত ৩১ অগাস্ট চিনের তিয়েনজিন শহরে সাংহাই কো-অপারেটিভ অর্গানাইজেশন (SCO) বৈঠকে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। সেখানে জিনপিঙ ও পুতিনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক সেরেছেন তিনি। পরে পুতিন ও ড্রাগন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে খোশগল্প করতে দেখা যায় তাঁকে। সমাজমাধ্যমে ইতিমধ্যেই সেই ভিডিও ভাইরাল। এর পরেই এই তিন নেতাকে নিয়ে নাভারোর বেনজির আক্রমণের আলাদা তাৎপর্য রয়েছে, বলে মত কূটনীতিকদের। ভারত-চিন-রাশিয়াকে একসঙ্গে দেখে কিছুটা চাপে আমেরিকা, অভিমত আন্তর্জাতিক মহলের।

    বর্ণবিদ্বেষমূলক মন্তব্য

    মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নয়া শুল্কনীতির কারণে ভারত-আমেরিকার মধ্যে দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্কে চরম টানাপোড়েনের সৃষ্টি হয়েছে৷ ভারতের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছে আমেরিকা৷ ট্রাম্পের অভিযোগ, রাশিয়ার থেকে তেল কেনার কারণে এই অচলাবস্থার সূত্রপাত৷ এই আবহে ভারতকে নিশানা করে আরও এক বিচিত্র দাবি করেছেন মার্কিন বাণিজ্য উপদেষ্টা পিটার নাভারো৷ তাঁর কথায়, সাধারণ মানুষের ক্ষতি করে ভারতের ব্রাহ্মণ শ্রেণির মানুষেরা মুনাফা লুটছেন ৷রাশিয়া-ভারত-চিন সম্পর্ক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘ভারতবাসীর কাছে আমার একটাই আবেদন, দয়া করে বিষয়টি বোঝার চেষ্টা করুন৷ সাধারণ মানুষের ক্ষতি করে আপনাদের দেশে বাণিজ্যিক মুনাফা লুটছেন ব্রাহ্মণরা৷ এই বিষয়টিকে বন্ধ করতে হবে৷’’ “ব্রাহ্মণ” শব্দটি ভারতের প্রেক্ষিতে একটি বিশেষ জাতিগত ও ধর্মীয় পরিচয় বহন করে। আমেরিকায় “বস্টন ব্রাহ্মিণ” বলতে ধনী ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বোঝালেও, ভারতীয় প্রসঙ্গে এটি অত্যন্ত সংবেদনশীল। নাভারোর এই মন্তব্য জাতিবিদ্বেষমূলক হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। ভারতের বিভিন্ন বিশ্লেষক ও রাজনীতিক যেমন সঞ্জীব সান্যাল ও প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী এই মন্তব্যকে “অপমানজনক” এবং “ঔপনিবেশিক মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ” হিসেবে নিন্দা করেছেন।

    ভারত শুল্কের মহারাজা

    মার্কিন দাবি মেনে রাশিয়া থেকে ভারত তেল কেনা বন্ধ না করায় বিব্রত নাভারো বলেন, ‘‘ক্রেমলিনের জন্য নয়াদিল্লি এখন একটা টাকা তৈরির ওয়াশিং মেশিন ছাড়া আর কিছুই নয়। এর ফল ভুগছে ইউক্রেন। পূর্ব ইউরোপের দেশটাতে ক্রমাগত হামলা চালিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া।’’ তাঁর যুক্তি, ‘‘নয়াদিল্লি তো শুল্কের মহারাজা। বিদেশি পণ্যে ওরা দুনিয়ার সর্বোচ্চ শুল্ক নিয়ে থাকে। নয়াদিল্লি তাদের ঘরোয়া বাজার আমাদের সামনে খুলবে না। আমাদের পণ্য ওদের বাজারে বিক্রি করতে দেবে না।’’ নাভারোর অভিযোগ, উল্টো দিকে দিব্যি ঘরের মাটিতে তৈরি পণ্য এ দেশের বাজারে সরবরাহ করে যাচ্ছে নয়াদিল্লি। এতে আর্থিক ভাবে লোকসান হচ্ছে ওয়াশিংটনের। তবে, ভারত আগেই জানিয়ে দিয়েছে দেশের অর্থনীতি তথা দেশবাসীর মঙ্গলে যা সঠিক, তাই পদক্ষেপ করা হবে৷ এক্ষেত্রে রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কিংবা যুদ্ধাস্ত্র কেনায় দেশের আর্থিক উন্নতি ঘটলে সেই অবস্থানেই থাকবে নয়াদিল্লি ৷ সম্প্রতি, নয়াদিল্লির এই অবস্থানের জন্যই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে ‘মোদির যুদ্ধ’ বলে অভিহিত করেছিলেন মার্কিন বাণিজ্য উপদেষ্টা ৷

    দিশেহারা আমেরিকা

    এই পরিস্থিতিতে মার্কিন শুল্কের চাপে রুশ ‘উরাল ক্রুড’ কেনা বন্ধ না রেখে উল্টে তার আমদানি বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করেছে নয়াদিল্লি। অন্য দিকে ভারতের সঙ্গে তেল-বাণিজ্যকে আরও মসৃণ করতে দামের ক্ষেত্রে বড় ছাড় দিচ্ছে মস্কো। ইউরোপীয় দেশগুলিতে অবশ্য ট্রাম্পের শুল্ক-হুমকির উল্টো প্রতিক্রিয়া দেখতে পাওয়া গিয়েছে। উল্টে মোদি সরকারের নীতির ভূয়সী প্রশংসা করেছে ফ্রান্স, জার্মানি ও ইটালির মতো দেশ।

    অস্বস্তি বাড়িয়েছে ইউক্রেন

    যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে অস্বস্তি বাড়িয়েছে ইউক্রেন। রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধের মধ্যে নয়াদিল্লির থেকেই সর্বাধিক ডিজেল আমদানি করছে কিভ। শুধু তা-ই নয়, মস্কোর থেকে সস্তা দরে মোদি সরকারের খনিজ তেল আমদানি নিয়ে তাদের কোনও সমস্যা নেই বলেও জানিয়ে দিয়েছে পূর্ব ইউরোপের ওই দেশ। এ ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে ইউক্রেনীয় রাষ্ট্রদূত বলেছেন, ‘‘ভারত স্বাধীন এবং সার্বভৌম দেশ। ফলে তারা কোথা থেকে ‘তরল সোনা’ আমদানি করবে সেটা অন্য কেউ বলে দিতে পারে না। এ ব্যাপারে কারও আপত্তি থাকা উচিত নয়।’’

    শুল্ক প্রসঙ্গে ট্রাম্পের ধাক্কা

    শুল্ক ইস্যুতে অবশ্য আদালতে বড় ধাক্কা খেয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। গত ২৯ অগাস্ট একটি মামলার রায় দেয় যুক্তরাষ্ট্রের ফেডেরাল সার্কিটের আপিল কোর্ট। সেখানে বলা হয়, ট্রাম্প যে ভাবে বিভিন্ন দেশের উপর শুল্ক চাপিয়ে বিশ্ব অর্থনীতিকে ওলটপালট করতে চাইছেন, তা বেআইনি। যদিও তাঁর শুল্ক সংক্রান্ত সিদ্ধান্তের উপরে কোনও স্থগিতাদেশ দেয়নি ওই আদালত। এই রায়ের বিরুদ্ধে অবশ্য সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে প্রেসিডেন্টের। সেখানে তাঁর সিদ্ধান্তকে বেআইনি বলা হলে, শুল্ক প্রত্যাহার করতে হবে আমেরিকাকে।

  • India Russia Relation: মস্কোর বাজারে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের আহ্বান, তেলের ওপর ভারতকে আরও ৫ শতাংশ ছাড় রাশিয়ার

    India Russia Relation: মস্কোর বাজারে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের আহ্বান, তেলের ওপর ভারতকে আরও ৫ শতাংশ ছাড় রাশিয়ার

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মার্কিন চাপের কাছে নতি স্বীকার করে ভারতের সঙ্গে তেল বাণিজ্য (Oil Business) থামবে না রাশিয়া। বরং আলোচনার ভিত্তিতে ভারতীয় ক্রেতারা ৫ শতাংশ ছাড়ে রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল পাবেন। এমন মন্তব্য করলেন ভারতে নিযুক্ত রাশিয়ার ডেপুটি ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ ইয়েভগেনি গ্রিভা (Yevgeny Griva)। তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন রাশিয়ার ডেপুটি চিফ অব মিশন রোমান বাবুশকিন (Roman Babushkin)। তিনি বললেন, ‘‘ভারত-রাশিয়া সম্পর্ক নিয়ে আমাদের আস্থা আছে। আমরা নিশ্চিত, বাইরের চাপ সত্ত্বেও ভারত-রাশিয়া (India-Russia Relations) তেল বাণিজ্য চলতে থাকবে।’’

    কী বললেন গ্রিভা

    রাশিয়ার ডেপুটি ট্রেড রিপ্রেজেন্টিটিভ এভজেনি গ্রিভা বলেছেন, ‘‘ভারতে রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল কেনার ক্ষেত্রে আলোচনা সাপেক্ষে ৫ শতাংশ ছাড় পাচ্ছে ভারত।’’ গ্রিভা আরও বলেছেন, ‘‘বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যেও ভারত প্রায় একই পরিমাণ তেল আমদানি করবে।’’ দুই দেশের ছাড়ের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘‘এটি একটি বাণিজ্যিক গোপনীয়তার বিষয়। আমার মনে হয়, এই বিষয়ে সাধারণত ব্যবসায়ীদের মধ্যে আলোচনা হয়। এই চুক্তির পরিমাণ ওঠানামা করে, তবে সাধারণত এটি প্লাস-মাইনাস ৫ শতাংশ।’’

    বন্ধু রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য চলবেই

    রাশিয়া থেকে তেল কেনার জন্য ভারতের (India-Russia Relations) উপর অসন্তুষ্ট মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্পের অভিযোগ, ভারতকে তেল বিক্রির লভ্যাংশ ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ব্যবহার করছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সাম্প্রতিক সময়ে বার বার এই অভিযোগ তুলেছেন তিনি। রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্কের কারণেই যে ভারতের উপর চড়া হারে শুল্ক চাপাচ্ছে আমেরিকা, সে কথাও গোপন রাখেননি ট্রাম্প। এই আবহে গত ১ অগস্ট এক প্রতিবেদনে রয়টার্স জানায়, ইন্ডিয়ান অয়েল, হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়াম, ভারত পেট্রোলিয়াম এবং ম্যাঙ্গালোর রিফাইনারি পেট্রোকেমিক্যাল লিমিটেড রাশিয়া থেকে তেল কেনা স্থগিত রেখেছে। যদিও তার পরের দিনই নয়াদিল্লির সরকারি সূত্রকে উদ্ধৃত করে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ‘নিউ ইয়র্ক টাইম্‌স’ জানায়, রাশিয়ার থেকে তেল কেনা বন্ধ করছে না ভারত। রাশিয়ার থেকে খনিজ তেল কেনা বন্ধ রাখার দাবি উড়িয়ে দেয় ভারতের ওই সরকারি সূত্র।

    রাশিয়া থেকে তেল কেনার পরিমাণ বাড়াল ভারত

    বুধবার জানা যায়, সেপ্টেম্বর এবং অক্টোবর মাসের জন্য ভারত রাশিয়ায় বিপুল পরিমাণ তেলের বরাত দিয়েছে। তার কারণ সম্প্রতি ব্যারেল প্রতি তিন ডলার ছাড় দেওয়া হয়েছে। হিসেব অনুযায়ী, এই ছাড়ের অঙ্কটা ৫ শতাংশ হতে চলেছে। ভারত প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ ব্যারেল তেল আমদানি করে। ফলে প্রতি ব্যারেলে তিন ডলার ছাড়টাই শেষ পর্যন্ত ভারতের জন্য বিরাট অঙ্কের সাশ্রয় হবে। তারপর তো আরও কিছু ছাড় পাওয়ার কথা রয়েছে। দেশের বিদেশি মুদ্রা ভাণ্ডার থেকে ব্যয় কমবে। মুনাফার এই অঙ্কগুলি মাথায় রেখে রাশিয়া থেকে তেল কেনার পরিমাণ আরও বাড়িয়ে দিল ভারত। তবে এনিয়ে সরকারিভাবে এখনও কিছু জানানো হয়নি।

    মস্কোর মত

    সিনিয়র রাশিয়ান কর্মকর্তারা বলেছেন যে জ্বালানি বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের আরোপিত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা এড়াতে মস্কোর একটি ‘বিশেষ ব্যবস্থা’ রয়েছে। এই নিয়ে রাশিয়ার ডেপুটি ট্রেড কমিশনার ইভজেনি গ্রিভা বলেছেন, ‘বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি সত্ত্বেও, আমরা আশা করতে পারি যে ভারতে রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল আমদানির মাত্রা প্রায় একই থাকবে।’ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাশিয়ান এনার্জি জায়ান্ট রসনেফ্ট এবং একটি বিনিয়োগ কনসোর্টিয়ামের যৌথ মালিকানাধীন গুজরাটের ভাদিনার শোধনাগারে তেল সরবরাহে কোনও প্রভাব পড়েনি। ভাদিনার শোধনাগারে রসনেফ্টের ৪৯.১৩% শেয়ার রয়েছে, এটি ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম শোধনাগার। এর বার্ষিক ক্ষমতা ২০ মিলিয়ন মেট্রিক টন। এই আবহে গ্রিভা বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞার কারণে জাহাজ ও বিমা সম্পর্কিত সমস্যাগুলি মোকাবিলা করার জন্য রাশিয়ার ‘একটি ব্যবস্থা’ রয়েছে এবং অপরিশোধিত তেল সরাসরি শোধনাগারে সরবরাহ করা হয় কারণ এটি রসনেফ্টের একটি সহায়ক সংস্থা।

    ভারতের জন্য রাশিয়ার বাজার খোলা

    বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বুধবার রাশিয়ার সংস্থাগুলিকে ভারতের সঙ্গে ব্যবসা বৃদ্ধির আহ্বান জানান। মস্কোয় ভারত-রাশিয়া বিজনেস ফোরামে ভাষণ দিতে গিয়ে জয়শঙ্কর বলেন, মেক ইন ইন্ডিয়া এবং এই ধরনের অন্যান্য উদ্যোগ বিদেশি ব্যবসায়ীদের জন্য নতুন দরজা খুলে দিয়েছে। উভয় দেশকে আরও বিনিয়োগ, যৌথ উদ্যোগ এবং অন্যান্য ধরনের সহযোগিতার বিষয়ে চিন্তাভাবনা করতে হবে। রাশিয়ার থেকে তেল কেনার জন্য ভারতকে ‘শুল্ক শাস্তি’ দিয়েছে আমেরিকা। দুই দফায় মোট ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপানো হয়েছে ভারতীয় পণ্যের উপর। এই পরিস্থিতিতে ভারতের ব্য়বসায়ীদের জন্য দেশের বাজার খুলে দিয়েছে রাশিয়া। মস্কো জানিয়েছে, আমেরিকার বাজারে যদি সমস্যা হয়, সেক্ষেত্রে রাশিয়ার বাজারে পণ্য পাঠাতে পারে ভারত। রাশিয়ার ডেপুটি চিফ অফ মিশন রোমান বাবুশকিন এই ঘোষণা করেছেন। ভারতের উপর যে ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প, তাকে ‘অযৌক্তিক’ এবং ‘একতরফা’ বলে উল্লেখ করেন বাবুশকিন। তিনি বলেন, “আমেরিকার বাজারে ঢুকতে সমস্যা হলে, রাশিয়া ভারতকে রফতানিতে স্বাগত জানাচ্ছে। যারা নিষেধাজ্ঞা চাপাচ্ছে, তাদেরই ক্ষতি হচ্ছে।”

  • India US Trade Deal: আমেরিকার চাপে নতিস্বীকার নয়! প্রধানমন্ত্রী মোদির পাশেই দেশের কৃষকরা

    India US Trade Deal: আমেরিকার চাপে নতিস্বীকার নয়! প্রধানমন্ত্রী মোদির পাশেই দেশের কৃষকরা

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ভারত-আমেরিকা বাণিজ্যচুক্তির (India US Trade Deal) আবহে কৃষকদের স্বার্থের সঙ্গে আপস করবে না ভারত, জানিয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তাঁর এই দৃঢ় অবস্থানের জন্য দেশের প্রতিটি প্রান্ত থেকে কৃষক সংগঠনগুলি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রশংসা করেছেন। আন্তর্জাতিক চাপের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে আমেরিকা। ভারত-আমেরিকা বাণিজ্যচুক্তির ক্ষেত্রে অন্তরায় মূলত কৃষি এবং দুগ্ধজাত দ্রব্য নিয়ে দুই দেশের একমত হতে না-পারা।

    জিএম বীজ ব্যবহারের বিরোধিতা

    আমেরিকা সহ কয়েকটি দেশের পক্ষ থেকে ভারতের বাজারে প্রবেশাধিকার দাবি করা হয়েছে কেন্দ্রের কাছে। যারা প্রধানত জিএম (জেনেটিকালি মডিফায়েড) বীজ, যান্ত্রিক চাষ এবং বিশাল জমির উপর নির্ভর করে কৃষিকাজ করে সেই দেশগুলিই এই দাবি জানিয়েছে। এই দেশগুলির দাবি, ভারত যেন তাদের গম, ভুট্টা, চাল ও সয়াবিনের রফতানি সহজ করে। কৃষিমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান দিল্লিতে এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, “ওদের কাছে ১০,০০০ থেকে ১৫,০০০ হেক্টর জমি থাকে, ওরা জিএম বীজ ব্যবহার করে এবং উৎপাদন খরচ অনেক কম। আমাদের দেশের অধিকাংশ কৃষক ১ থেকে ৩ একর জমির মালিক, অনেকের আবার আধা একরও নেই। এ প্রতিযোগিতা কি ন্যায়সঙ্গত?”

    কৃষকের স্বার্থে আপস নয়

    কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী চৌহান জানান, ভারতে হেক্টর প্রতি উৎপাদন খরচ বিদেশি রফতানিমুখী দেশগুলোর তুলনায় অনেক বেশি। বিদেশি কৃষিপণ্য বাজারে ঢুকলে আমাদের কৃষিপণ্যের দাম ধসে পড়বে এবং কৃষকদের জীবিকা চরম সংকটে পড়বে। প্রধানমন্ত্রী মোদির সুরেই চৌহান বলেন, “কোনও পরিস্থিতিতেই কৃষকের স্বার্থে আপস করা হবে না।” আগেই কৃষকদের স্বার্থরক্ষার কথা বলে মোদি আমেরিকাকে বার্তা দিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “কৃষকদের স্বার্থ আমাদের কাছে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পেয়ে থাকে। ভারত কখনও কৃষক, গোপালক, মৎস্যজীবীদের স্বার্থের সঙ্গে আপস করবে না। আমি জানি, ব্যক্তিগত ভাবে এর জন্য আমাকে চড়া মূল্য চোকাতে হবে। কিন্তু আমি তার জন্য প্রস্তুত রয়েছি। কৃষক, পশুপালক, মৎস্যজীবীদের স্বার্থরক্ষায় ভারত প্রস্তুত।”

    প্রধানমন্ত্রীর পাশে কৃষকরা

    প্রধানমন্ত্রীর এই অবস্থান দেশের কৃষকদের মধ্যে উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছে। দেশজুড়ে কৃষক সংগঠনগুলি একে ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত হিসেবে স্বাগত জানিয়েছে এবং “কৃষক-প্রথম নীতি”-র প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছে। পাঞ্জাবের এক কৃষক নেতা বলেন, “এটা শুধু অর্থনীতির বিষয় নয়, এটা জাতীয় স্বার্থের বিষয়। বহুজাতিক কর্পোরেট সংস্থাগুলো সস্তায় বিদেশি শস্য আমদানি করে আমাদের দেশীয় কৃষিকে ধ্বংস করতে চায়।” মহারাষ্ট্রের চাষিরা মোদির পদক্ষেপকে “কৃষিগত স্বাধিকার”-এর ঘোষণা হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। তারা বলেন, পূর্ববর্তী সরকারগুলো আন্তর্জাতিক চাপে মাথা নত করেছিল, যার ফলে গ্রামীণ অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।

    স্বদেশী হোক মন্ত্র

    এই পরিস্থিতিকে ব্যবহার করে স্বাধীনতা দিবসের আগে কৃষিমন্ত্রী ‘স্বদেশী আন্দোলন’ পুনরায় জোরদার করার আহ্বান জানান। চৌহান বলেন, “এই মুহূর্তটা আমাদের জন্য পরীক্ষার। স্বদেশী হোক আমাদের মন্ত্র। যা ব্যবহার করব, তা হোক দেশে তৈরি। এতে আমাদের অর্থনীতি শক্তিশালী হবে, যুবসমাজের চাকরি বাড়বে এবং আমাদের মায়েরা-বোনেরা স্বনির্ভর হবেন।” তিনি আরও বলেন, “ভারত এখন বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি এবং শীঘ্রই তৃতীয় স্থানে পৌঁছবে — যদি আমরা সকলে মিলে স্বনির্ভরতা গড়ে তুলি।”

    কৃষককে সেবা করা ঈশ্বরকে সেবা করার সমান

    সরকারের এই কঠোর অবস্থান শুধু অর্থনৈতিক নয়, খাদ্য সুরক্ষার মান নিয়েও গভীর প্রতিশ্রুতি বহন করে। আগেও বিভিন্ন দেশ জিএম ফসল আমদানির নিয়ম শিথিল করার জন্য চাপ সৃষ্টি করেছিল। এবার ভারত স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে — দেশের কৃষিনীতি দিল্লি থেকেই নির্ধারিত হবে, বিদেশি রাজধানী থেকে নয়। ঘরোয়া ব্যবস্থাপনা প্রসঙ্গে চৌহান বলেন, “কৃষি মন্ত্রক ও সার মন্ত্রক একসঙ্গে কাজ করছে যাতে ইউরিয়া, ডিএপি ও অন্যান্য কৃষি উপকরণের সরবরাহ সময়মতো নিশ্চিত করা যায়। তাঁর আশ্বাস, “চাষিদের প্রয়োজন মেটাতে আমরা কোনও কসুর রাখবো না। খাদ্যই জীবন, আর কৃষক হলেন জীবনের দাতা। কৃষককে সেবা করা ঈশ্বরকে সেবা করার সমান। আমার প্রতিটি শ্বাসে কৃষকের অস্তিত্ব আছে। কৃষকের কল্যাণেই দেশের ভবিষ্যৎ নিহিত।”

    একপাক্ষিক চুক্তিতে নারাজ ভারত

    সবুজ বিপ্লব দেশের কৃষিক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন এনেছিল বলে মনে করেন অনেকেই। গম আমদানির ক্ষেত্রে মার্কিন নির্ভরতামুক্তও হয়েছিল ভারত। কেন্দ্রের একটি সূত্রের খবর, আমেরিকা চায় ভারত কৃষিপণ্য, দুধ এবং দুগ্ধজাত পণ্যের বাজার তাদের জন্য পুরোপুরি খুলে দিক। কিন্তু তাতে নারাজ নয়াদিল্লি। তাড়াহুড়োয় কেবল আমেরিকার সুবিধা হয়, এমন একপাক্ষিক চুক্তি করতে নারাজ ভারত।

  • US Tariff on India: ‘‘অন্যায্য, অন্যায় ও অযৌক্তিক’’! আমেরিকার ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া ভারতের

    US Tariff on India: ‘‘অন্যায্য, অন্যায় ও অযৌক্তিক’’! আমেরিকার ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া ভারতের

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: রাশিয়ার কাছে তেল কেনা বন্ধ না করায় ভারতের পণ্যে আমেরিকার বাড়তি ২৫ শতাংশ শুল্ক (US Tariff on India) আরোপের সিদ্ধান্তের নিন্দা করল বিদেশ মন্ত্রক। বুধবারই ভারতের উপর শুল্কের পরিমাণ দ্বিগুণ করে দিয়েছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফলে মোট শুল্কের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫০ শতাংশ। আমেরিকার এই পদক্ষেপ ‘অন্যায্য, অন্যায় ও অযৌক্তিক’ বলে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। পাশাপাশি স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়, ‘জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষিত করতে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ করবে ভারত।’

    কেন এই পদক্ষেপ

    মঙ্গলবারই প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে, আমেরিকা ভারতের উপর ‘খুব উল্লেখযোগ্যভাবে’ শুল্ক (US Tariff on India) বৃদ্ধি করতে চলেছে। রাশিয়ার সঙ্গে ভারত বাণিজ্য অব্যাহত রাখায় এই সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে আমেরিকা। সেইমতোই রাশিয়ার কাছে তেল কেনা বন্ধ না করায় ভারতের উপর অতিরিক্ত আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের কথা ঘোষণা করলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট। এই মর্মে এক্সকিউটিভ অর্ডারে তিনি সইও করে দিয়েছেন। এরই পাল্টা হিসেবে কড়া বিবৃতি জারি করল ভারত। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বিবৃতিটি সমাজমাধ্যমেও পোস্ট করেছেন।

    বিদেশমন্ত্রকের বিবৃতি

    বিদেশমন্ত্রকের বিবৃতি অনুযায়ী, ‘‘গত কয়েক দিন ধরে রাশিয়া থেকে ভারতের তেল আমদানিকে নিশানা করেছে আমেরিকা। আমরা এ বিষয়ে আমাদের অবস্থান ইতিমধ্যেই স্পষ্ট করেছি। আমাদের আমদানি বাজারের পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে। ভারতের ১৪০ কোটি মানুষের জ্বালানির নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য। অন্য অনেক দেশ জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষিত করতে একই পদক্ষেপ করছে। তা সত্ত্বেও বাড়তি শুল্ক আরোপের জন্য আমেরিকা বেছে নিচ্ছে ভারতকে, যা দুর্ভাগ্যজনক। এই পদক্ষেপ অন্যায্য, অযৌক্তিক এবং অন্যায়। আমরা এর প্রতিবাদ করছি। জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষিত করতে ভারত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবে।’’

    কবে থেকে কার্যকর অতিরিক্ত শুল্ক

    ভারতীয় পণ্যের উপর শুল্ক (US Tariff on India) নিয়ে মোট ন’দফা নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাম্প। বলা হয়েছে, রুশ সরকারের কাছ থেকে প্রত্যক্ষ এবং পরোভাবে তেল কিনে চলেছে ভারত সরকার। এর ফলে ভারতের উপর ২৫ শতাংশ বাড়তি শুল্ক চাপবে। এই নির্দেশিকার ২১ দিনের মাথায়, মধ্যরাত ১২টা বেজে ১ মিনিট থেকে নয়া হারে শুল্ক কার্যকর হবে আমেরিকার বাজারে এসে পৌঁছনো, গুদাম থেকে বের করা ভারতীয় পণ্যের উপর। ট্রাম্প আরও জানিয়েছেন, ভারতের উপর ইতিমধ্যে যে শুল্ক, কর, ফি, আরোপ করা হয়েছে, তার উপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপবে। ট্রাম্প জানিয়েছেন, আরও যেমন যেমন তথ্য হাতে পাবেন তিনি, এই নির্দেশিকায় তেমন তেমন রদবদলও ঘটাতে পারেন। আগেই ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল ভারতীয় পণ্যে। তা ৭ অগাস্ট থেকে কার্যকর হওয়ার কথা। বুধবারের বাড়তি ২৫ শতাংশের ফলে আগামী ২৭ অগাস্ট থেকে ভারতকে আমেরিকায় রফতানি করতে হলে ৫০ শতাংশ শুল্ক দিতে হবে। এই ঘোষণার পর আমেরিকার আরোপিত সর্বোচ্চ শুল্কের তালিকায় চলে এল ভারতের নাম। এ ছাড়া, ব্রাজিলের পণ্যের উপরেও ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।

    জাতীয় স্বার্থ দেখেই কাজ করবে দিল্লি

    ২০২২ সালে রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করেছিল। এখনও পূর্ব ইউরোপে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ চলছে। রাশিয়ার আগ্রাসনের প্রতিবাদে আমেরিকা-সহ পশ্চিমি বিশ্ব তাদের উপর একাধিক বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল। আন্তর্জাতিক বাজারে রুশ বাণিজ্য যে কারণে বড়সড় ধাক্কা খায়। সেই সময়ে রাশিয়া সস্তায় খনিজ তেল বিক্রি শুরু করে। জাতীয় স্বার্থের কথা মাথায় রেখে ভারত রাশিয়া থেকে তেল কেনা কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছিল সেই সময়। ভারত সারা বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম তেল আমদানিকারক দেশ। এই মুহূর্তে ভারত যে তেল আমদানি করে তার ৩৫ শতাংশই রাশিয়া থেকে। আমেরিকার লাগাতার হুমকির মুখেও এখনও পর্যন্ত রাশিয়ার তেল আমদানি বন্ধের কথা বলেনি নয়াদিল্লি। আগেই এ বিষয়ে অবস্থান স্পষ্ট করেছিল। বলা হয়েছিল, জাতীয় স্বার্থ এবং আন্তর্জাতিক বাজারদরের কথা মাথায় রেখে ভারত তার বাণিজ্যনীতি নির্ধারণ করে থাকে। অর্থাৎ, বাজারে কে কত দাম নিচ্ছে, সেই বিষয়টিকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়। রাশিয়া সস্তায় তেল বিক্রি করে বলেই ভারত তা কিনে থাকে। ভারত বারবার বলেছে, রাশিয়ার সঙ্গে তার বাণিজ্য, বিশেষ করে জ্বালানি আমদানি, আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় এবং কোনও একক দেশের আরোপিত নিষেধাজ্ঞার মধ্যে পড়ে না। কিন্তু আমেরিকার বক্তব্য, ভারত রাশিয়া থেকে তেল কেনার ফলে সেই টাকা ইউক্রেনে যুদ্ধ চালাতে কাজে লাগাচ্ছে মস্কো। যুদ্ধে অর্থসাহায্য হচ্ছে ভারতের দেওয়া টাকায়। এই প্রেক্ষিতে ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত ও নীতির ফলে ভারত-মার্কিন সম্পর্কে টানাপড়েনের সৃষ্টি করল বলেই, অনুমান আন্তর্জাতিক মহলের।

LinkedIn
Share