Tag: UCC

UCC

  • Kiren Rijiju: “আদিবাসী সম্প্রদায়গুলিকে অভিন্ন দেওয়ানি বিধির বাইরে রাখা হবে”, বললেন রিজিজু

    Kiren Rijiju: “আদিবাসী সম্প্রদায়গুলিকে অভিন্ন দেওয়ানি বিধির বাইরে রাখা হবে”, বললেন রিজিজু

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: “ভারতের আদিবাসী সম্প্রদায়গুলিকে প্রস্তাবিত অভিন্ন দেওয়ানি বিধির (UCC) বাইরে রাখা হবে। তাদের ঐতিহ্যবাহী রীতিনীতি এবং জীবনধারা যাতে অক্ষত থাকে, তাই এই ব্যবস্থা।” ফের একবার কথাগুলি বললেন কেন্দ্রীয় সংসদীয় বিষয়ক এবং সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজু (Kiren Rijiju)।

    ভুল প্রচার করা হচ্ছে (Kiren Rijiju)

    নয়াদিল্লিতে বনবাসী কল্যাণ আশ্রম আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছিলেন তিনি। সেখানেই তিনি সাফ জানিয়ে দেন, সরকারের উদ্দেশ্য সম্পর্কে ভুল প্রচার করা হচ্ছে। সরকারের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে গিয়ে রিজুজু বলেন, “আমাদের সরকার ও দল (বিজেপি) সংবিধান অনুযায়ী দেশে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি আনার কথা ভাবছে। যখন ফৌজদারি আইন সবার জন্য সমান, তখন দেওয়ানি আইনও কেন সমান হবে না? কিন্তু আমরা স্পষ্ট বলেছি যে, আদিবাসীদের এর থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে। আদিবাসীদের নিজেদের মতো করে বাঁচার স্বাধীনতা দেওয়া হোক।” তিনি জানিয়ে দেন, ইউসিসি সংবিধানের পঞ্চম ও ষষ্ঠ তফশিলভুক্ত অঞ্চলে কিংবা উত্তর-পূর্বের আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় কার্যকর হবে না।

    ইউসিসির পরিধি সম্পর্কে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে

    রিজিজু বলেন, “কিছু গোষ্ঠী এবং ব্যক্তি ইউসিসির পরিধি সম্পর্কে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। তবে সরকার আদিবাসী পরিচয় ও প্রথা রক্ষার ব্যাপারে অটল।” বর্তমানে ভারতের আইন কমিশন একটি অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালুর প্রস্তাব পরীক্ষা করছে। এই বিধির লক্ষ্য হল ভারতের বহুবিধ ধর্মভিত্তিক ব্যক্তিগত আইন, যেমন বিবাহ, তালাক, উত্তরাধিকার, দত্তক গ্রহণ এবং ভরণপোষণের বদলে সব নাগরিকের জন্য একটি একক আইন কাঠামো প্রতিষ্ঠা করা (Kiren Rijiju)। প্রসঙ্গত, চলতি বছরের শুরুতে উত্তরাখণ্ড প্রথম রাজ্য হিসেবে ইউসিসি প্রয়োগ করে। পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি যার নেতৃত্বে ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রঞ্জনা প্রকাশ দেশাই একটি বিস্তৃত খসড়া আইন প্রস্তুত করে। ৩৯২টি ধারা এবং সাতটি সূচি নিয়ে গঠিত এই খসড়াটি ফেব্রুয়ারি ২০২৪ সালে জমা দেওয়া হয় এবং দ্রুতই রাজ্য মন্ত্রিসভা ও গভর্নরের অনুমোদন পায় (UCC)।

    উত্তরাখণ্ডের ইউসিসিতে মুসলিম ব্যক্তিগত আইনের অধীনে হালাল, ইদ্দত এবং তাৎক্ষণিক তালাকের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এটি সাম্প্রতিক দশকগুলিতে অন্যতম সবচেয়ে ব্যাপক সংস্কার হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে (Kiren Rijiju)।

  • Amit Shah: হয়েছে রাম মন্দির, বাতিল ৩৭০ ধারা, এই আবহে ইউসিসি নিয়ে বড় ঘোষণা শাহের

    Amit Shah: হয়েছে রাম মন্দির, বাতিল ৩৭০ ধারা, এই আবহে ইউসিসি নিয়ে বড় ঘোষণা শাহের

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: রাম মন্দির হয়েছে। বাতিল ৩৭০ ধারা। বাকি আছে ইউসিসি হতে। আমরা তাও করব। এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমনই মন্তব্য করতে শোনা গেল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে (Amit Shah)। একইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, জম্মু-কাশ্মীরকে (Jammu And Kashmir) খুব তাড়াতাড়ি রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়া হবে এবং এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। একটি সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমন কথাই জানালেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, রাজ্যের মর্যাদা খুব তাড়াতাড়ি ফিরিয়ে দেওয়া হবে জম্মু-কাশ্মীরে। কিন্তু সেটা কবে হবে? তা এইভাবে প্রকাশ্য মঞ্চে বসে বলা সম্ভব নয়।

    ইউসিসি নিয়ে কী বললেন শাহ (Amit Shah)?

    এদিন অভিন্ন দেওয়ানি বিধির বিষয়েও ফের একবার বলতে শোনা যায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে (Amit Shah)। তিনি বলেন, ‘‘এটা আসবেই। এটা ছিল সংবিধান সভার সিদ্ধান্ত (ইউসিসি চালু করার)। কংগ্রেস হয়তো ভুলে গেছে কিন্তু আমরা তা ভুলে যাইনি। আমরা বলেছিলাম আমরা ৩৭০ ধারা বাতিল করব। আমরা তা করেছি। আমরা বলেছিলাম আমরা অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণ করব। আমরা তাও করেছি। এখন ইউসিসি হতে বাকি। আমরা তাও করব।’’ হাইকোর্টের বিচারপতি যশবন্ত বর্মার দিল্লির বাসভবনে বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থ উদ্ধারের অভিযোগে শাহ বলেন, ভারতের প্রধান বিচারপতি বিষয়টি নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

    স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কথায় উঠে আসে জম্মু-কাশ্মীরের ভোটের প্রসঙ্গ

    প্রসঙ্গত, গত বছরই জম্মু-কাশ্মীরের বিধানসভা নির্বাচন হয়। সে প্রসঙ্গও এদিন সাংবাদিকদের সামনে উল্লেখ করেন অমিত শাহ। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটা ছিল প্রথমবারের জন্য জম্মু-কাশ্মীরে ভোট, ৪০ বছরে যেখানে কোনও জায়গাতে ফের ভোট নিতে হয়নি। কখনও কাঁদানে গ্যাসও ছুড়তে হয়নি। একটা গুলিও চলেনি। তারপরেও ৬০ শতাংশের বেশি মানুষ উৎসাহের সঙ্গে ভোট দিয়েছেন জম্মু-কাশ্মীরে। এটা একটা বড় পরিবর্তন এসেছে বলেই জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী (Amit Shah)।

  • Uttarakhand: ইউসিসি রেজিস্ট্রেশনে ব্যাপক সাড়া উত্তরাখণ্ডে, সরকারি ওয়েবসাইটগুলিতে বেড়েই চলেছে ভিড়

    Uttarakhand: ইউসিসি রেজিস্ট্রেশনে ব্যাপক সাড়া উত্তরাখণ্ডে, সরকারি ওয়েবসাইটগুলিতে বেড়েই চলেছে ভিড়

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: গত ২৭ জানুয়ারি উত্তরাখণ্ডে (Uttarakhand) কার্যকর হয় অভিন্ন দেওয়ানি বিধি (UCC Registration)। তারপর থেকে এনিয়ে সারা রাজ্যের মানুষের মধ্যে বিপুল আগ্রহ তৈরি হয়েছে বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে। অভিন্ন দেওয়ানি বিধির নিয়মে কী কী পরিবর্তন এসেছে, সে সংক্রান্ত সবকিছু জানতে বিপুলসংখ্যক মানুষ বিভিন্ন সরকারি দফতরের ওয়েবসাইটগুলিতে প্রবেশ করছেন বলে জানা গিয়েছে। শুধু তাই নয়, অভিন্ন অভিন্ন অনুযায়ী একত্রবাসের ক্ষেত্রেও একাধিক নিয়মে বদল আনা হয়েছে এবং রেজিস্ট্রি করার পরে পরে লিভ-ইন করা যাবে উত্তরাখণ্ডে।

    সরকারি ওয়েবসাইটগুলিতে ব্যাপক ভিড়

    এই সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য জানতে সে রাজ্যের মানুষ ব্যাপকভাবে প্রবেশ করছেন সরকারি ওয়েবসাইটগুলিতে। উত্তরাখণ্ডের (Uttarakhand) আধিকারিকরা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন যে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি পোর্টালে যাঁরা প্রবেশ করছেন এই সংখ্যা ব্যাপক। ২৭ জানুয়ারি অভিন্ন দেওয়ানি বিধি কার্যকর হওয়ার পর থেকে ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১,০০৬ জন এই পোর্টালে প্রবেশ করেছেন এবং তাঁরা নিজেদের বিবাহকে রেজিস্ট্রি করেছেন।

    কী বললেন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী?

    ইউনিফর্ম সিভিল কোড নিয়ে বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী পুস্কর সিং ধামি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, যে সমস্ত মানুষ অভিন্ন দেওয়ানি বিধির বিরোধিতা করছিলেন, তাঁরাও বর্তমানে বুঝতে পারছেন যে এই নিয়ম বিধির আমাদের রাজ্যের জন্য ঠিক কতটা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা এই আইন কারও বিরুদ্ধে আনিনি, কাউকে হয়রানি করতেও আনিনি। এই আইন আনা হয়েছে উত্তরাখণ্ড (Uttarakhand) জনগণের সুবিধার জন্য।

    প্রতিদিন ওয়েবসাইটে শত শত মানুষ বিবাহ রেজিস্ট্রি করছেন

    প্রসঙ্গত, উত্তরাখণ্ডের (Uttarakhand) মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি হলেন প্রথম ব্যক্তি যিনি ইউসিসি পোর্টালে গিয়ে নিজের বিবাহকে নিবন্ধন করিয়েছেন। তারপর থেকেই প্রতিদিন কয়েকশো মানুষ তাঁদের বিবাহ নিবন্ধন করিয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে। অন্যদিকে এখনও পর্যন্ত ওই পোর্টালে কোনওরকমের বিবাহ বিচ্ছেদের বিষয় কেউ নিবন্ধন করেনি বলে জানিয়েছে উত্তরাখণ্ড প্রশাসন। উত্তরাখণ্ডের অভিন্ন দেওয়ানি বিধিকে দেখার পরেই গুজরাতে বিজেপির সরকার কমিটি তৈরি করেছে। মনে করা হচ্ছে খুব তাড়াতাড়ি গুজরাতেও চালু হবে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি।

  • UCC: কথা রাখলেন ধামি, উত্তরাখণ্ডে কার্যকর হল অভিন্ন দেওয়ানি বিধি

    UCC: কথা রাখলেন ধামি, উত্তরাখণ্ডে কার্যকর হল অভিন্ন দেওয়ানি বিধি

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: উত্তরাখণ্ডে (Uttarakhand) কার্যকর হল অভিন্ন দেওয়ানি বিধি (UCC)। উত্তরাখণ্ডই দেশের প্রথম রাজ্য যেখানে লাগু হল অভিন্ন দেওয়ানি বিধি। সোমবার দুপুরে ইউসিসি পোর্টালের উদ্বোধন করেন সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উত্তরাখণ্ড সফরের আগেই অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করে দিল ধামি সরকার।

    অভিন্ন দেওয়ানি বিধি (UCC)

    ২০২৫ সালের শুরুতেই অভিন্ন দেওয়ানি বিধি লাগু হওয়ার কথা আগেই জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী ধামি। এই বিধি অনুযায়ী, সব ধর্মের মানুষের জন্য জমি, সম্পত্তি, উত্তরাধিকার, বিয়ে এবং বিবাহবিচ্ছেদ সংক্রান্ত এক ও অভিন্ন আইন প্রচলন হবে। উত্তরাখণ্ডে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে ইউসিসি পোর্টালের উদ্বোধন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং। এই অনুষ্ঠানের পরেই উত্তরাখণ্ডে কার্যকর হয়ে গেল ইউসিসি (UCC)। এর পাশাপাশি, এবার থেকে উত্তরাখণ্ডে কোনও যুগল লিভ-ইন করতে চাইলে বাধ্যতামূলকভাবে অনুমতি নিতে হবে পুলিশ বা জেলা আধিকারিকের।

    মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা

    পোর্টাল উদ্বোধনের পর মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন, ২৭ জানুয়ারি রাজ্যে অভিন্ন দেওয়ানি বিধির দিন হিসেবে পালিত হবে। ইউসিসি কমিটির চেয়ারম্যান তথা প্রাক্তন মুখ্যসচিব শত্রুঘ্ন সিং বলেন, বিধিটি কার্যকর করার জন্য বহু গবেষণা করা হয়েছে। কমিটির তিনজন সদস্য রাজ্যের প্রতিটি জেলা ঘুরে দেখেন। এরপর আইন কমিশনের রিপোর্ট-সহ বাকি রিপোর্ট পড়ে দেখার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছনোর আগে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষেরও মতামত নেওয়া হয়েছে (UCC)।

    ২০২২ সালে হয় উত্তরাখণ্ড বিধানসভার নির্বাচন। ওই নির্বাচনে বিজেপি জিতলে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি কার্যকরের প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। নির্বাচনে জয়ী হয় বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রী হন ধামি। তার পরেই নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে ২৭ মে উত্তরাখণ্ডে অভিন্ন দেওয়ানি বিধির জন্য একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা হয়। বিধি কার্যকরের জন্য আইনি প্রক্রিয়া খতিয়ে দেখতে একটি কমিটি গঠন করা হয় সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি রঞ্জনাপ্রকাশ দেশাইয়ের নেতৃত্বে। গত বছর ২০২৪ সালের ২ ফেব্রুয়ারি রিপোর্ট দেয় সেই কমিটি। ৮ মার্চ বিধানসভায় পাশ হয় বিলটি। পরে পাঠানো হয় রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের জন্য। রাষ্ট্রপতির অনুমতি মিললে ১৩ মার্চ এ (Uttarakhand) ব্যাপারে বিজ্ঞপ্তি জারি করে উত্তরাখণ্ড সরকার (UCC)।

     

  • Uttarakhand: ‘এক দেশ এক আইন’, ২৬ জানুয়ারি উত্তরাখণ্ডে চালু হচ্ছে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি, কী কী পরিবর্তন?

    Uttarakhand: ‘এক দেশ এক আইন’, ২৬ জানুয়ারি উত্তরাখণ্ডে চালু হচ্ছে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি, কী কী পরিবর্তন?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আগামী ২৬ জানুয়ারি সারাদেশে পালিত হবে প্রজাতন্ত্র দিবস। ওই দিনই এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ করতে চলেছে ভারতের একটি অঙ্গরাজ্য। উত্তরাখণ্ডে (Uttarakhand) ওই দিন থেকে চালু হতে চলেছে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি। প্রসঙ্গত, ভারতের প্রথম রাজ্য হতে চলেছে উত্তরাখণ্ড। যেখানে ইউনিফর্ম সিভিল কোড বাস্তবায়িত হতে চলেছে। তাই চলতি বছরের প্রজাতন্ত্র দিবস উত্তরাখণ্ডের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই দিনটি একটি মাইলস্টোন হিসেবে থেকে যাবে, সে রাজ্যের ইতিহাসে।

    ২০২২ সালে বিজেপির নির্বাচনী আশ্বাস ছিল ইউসিসি (Uttarakhand) 

    ২০২২ সালে বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় উত্তরাখণ্ডে (Uttarakhand)। সেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার তৈরি করে বিজেপি। নির্বাচনের পূর্বে গেরুয়া শিবির উত্তরাখণ্ডের জনগণকে আশ্বাস দিয়েছিল যে, ক্ষমতায় এলে সেখানে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করা হবে। এবার নিজেদের দেওয়া সেই আশ্বাসই পূরণ করতে চলেছে উত্তরাখণ্ডের বিজেপি সরকার। অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু হলে, রাজ্যের সমস্ত নাগরিকদের জন্য একই আইন চালু হবে। এই অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু হলে কী কী সুবিধা মিলবে এবং এর প্রভাবই বা কী? সে নিয়েই এই প্রতিবেদনে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হল।

    উত্তরাখণ্ডে (Uttarakhand) কী কী পরিবর্তন আনবে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি?

    ● অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু হলে উত্তরাখণ্ডের সমস্ত ধর্মের জন্য যে ব্যক্তিগত আইন বা পার্সোনাল ‘ল’ গুলি রয়েছে, যেমন- বিবাহ, বিবাহ বিচ্ছেদ, উত্তরাধিকার আইন, দত্তক আইন, ভরণপোষণ সংক্রান্ত আইন- এই সমস্ত কিছুকেই সংস্কার করা হবে এবং ব্যক্তিগত আইনে বিভিন্ন ধর্মের মধ্যে যে বৈষম্য রয়েছে সেগুলিকেও নির্মূল করা হবে।

    ● উত্তরাখণ্ড সরকার সূত্রে জানা গিয়েছে, সমস্ত বিবাহ ও বিবাহ বিচ্ছেদ এবং একত্রবাস এই সমস্ত কিছুকে নিবন্ধন বা রেজিস্ট্রি করা হবে। তথ্য রাখা হবে একটি পোর্টালে। যে পোর্টালটি পরিচালনা করবে উত্তরাখণ্ড সরকার। এ সংক্রান্ত বিভিন্ন এলাকাভিত্তিক কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে।

    ● যদি কোনও পুরুষ-মহিলা একত্রবাস করতে চান, তাহলে সেক্ষেত্রে একত্রবাসের এক মাস আগে তা রেজিস্ট্রি করাতে হবে। যদি কেউ এই নিয়মকে লঙ্ঘন করেন, তাহলে তাঁদের তিন মাস পর্যন্ত কারাদণ্ড অথবা দশ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হবে।

    ● উত্তরাখণ্ডের এই আইনের মাধ্যমে মহিলাদের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠিত হতে চলেছে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

    ● প্রসঙ্গত, এই আইনের মাধ্যমেই উত্তরাখণ্ডের জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল মহিলা তাঁদের পৈতৃক সম্পত্তিতে সমান উত্তরাধিকার পাবেন।

    ● এই আইনের মাধ্যমে নিষিদ্ধ হবে বহুবিবাহ প্রথাও। একের বেশি বিয়ে কোনওভাবেই করা যাবে না। যদি তা কেউ করেন তবে তা আইনত দণ্ডনীয়  অপরাধ বলে বিবেচ্য হবে।

    ● এই আইনের মাধ্যমে একত্রবাসের ফলে যদি কোনও শিশু জন্ম নেয়, তাহলে ওই শিশুকে বৈধ বলেই বিবেচনা করা হবে এবং জন্ম নেওয়া শিশু সমানভাবে উত্তরাধিকার পাবে অর্থাৎ তার পৈতৃক সম্পত্তিতে সমান অধিকার পাবে।

    ● একত্রবাস যদি কেউ শেষ করতে চায়, তাহলে ওই একত্রবাসের সঙ্গী এবং সঙ্গিনীকেই সেটি রেজিস্ট্রি করে জানাতে হবে এবং আইনি স্বীকৃতি নিতে হবে। মনে করা হচ্ছে, এর ফলে লিভ-ইন সম্পর্কের ক্ষেত্রে নারীদের অধিকার সুরক্ষিত হবে।

    ● বহুবিবাহ এবং ইদ্দত এরফলে নিষিদ্ধ হতে চলেছে। প্রসঙ্গত, যে সমস্ত মুসলিম মহিলাদের তালাক দেওয়া হয়, তাঁদেরকে একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করানো হয়, এটাকেই বলা হয় ইদ্দত। এই সমস্ত কিছুই এবার বন্ধ হতে চলেছে ইউনিফর্ম সিভিল কোডের মাধ্যমে।

    আইনি প্রক্রিয়া হতে চলেছে সরল

    ● উত্তরাখণ্ডের নাগরিকরা (Uniform Civil Code) অভিন্ন দেওয়ানি বিধি কার্যকর হলেই, অনলাইনের মাধ্যমে নিজেদের উইল, যে কোনও আপিল বা অভিযোগ জানাতে পারবেন। সমস্ত আইনি প্রক্রিয়া সহজ করা হবে।

    ● গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাগুলিতে পঞ্চায়েত কর্মীরাই সাব-রেজিস্টার হিসেবে কাজ করবেন। তাঁরাও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে চলেছেন অভিন্ন দেওয়ানি বিধির বাস্তবায়নে।

    ● বিভিন্ন নথি যাচাই করার জন্য আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর সাহায্য নেবে উত্তরাখণ্ড সরকার।

    ● একই সঙ্গে গড়ে তোলা হবে কমন সার্ভিস সেন্টার। জানা গিয়েছে, ঘরে ঘরে গিয়ে পরিষেবা প্রদান করবে সরকার।

    ● অভিন্ন দেওয়ানি বিধিকে রাজ্যজুড়ে ব্যাপকভাবে কার্যকর করতে দশ হাজার কর্মীকে প্রশিক্ষণ করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে উত্তরাখণ্ড সরকার।

    শীর্ষ আদালতের বিচারপতির নেতৃত্বে কমিটি গড়ে সরকার

    প্রসঙ্গত, ২০২২ সালে নির্বাচনে বিজেপি বিপুল জয় পেতেই শুরু হয় উত্তরাখণ্ডে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি (Uniform Civil Code) বাস্তবায়ন করার প্রস্তুতি। ২০২২ সালের বিধানসভা নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি অনুসারে, রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি রঞ্জনা প্রকাশ দেশাইয়ের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে। এরপরে ২ লাখ ৫০ হাজারেরও বেশি স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করে ওই কমিটি। ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে কমিটি ৪০০ পাতার একটি বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দেয়। প্রসঙ্গত এ সংক্রান্ত প্রস্তাব বিধানসভাতে আগেই উত্থাপন করে বিজেপি।

    ২০২৪ সালে ১৩ মার্চ বিলে সই রাষ্ট্রপতির

    ২০২৪ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি উত্তরাখণ্ড বিধানসভায় উত্থাপন করা হয় ইউনিফর্ম সিভিল কোডের বিল। বিরোধীরা ব্যাপক বাধা সৃষ্টি করে। হইহট্টগোল শুরু করে। বিজেপি সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে ঠিক তার পরের দিনই বিলটিকে পাস করানো হয়। ২০২৪ সালে ১৩ মার্চ ওই বিল রাষ্ট্রপতি সই করেন। তখন থেকেই এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মাহিলফলক হিসেবে চিহ্নিত হয়। এর পরেই ইউসিসির বাস্তবায়নের জন্য জোর কদমে মাঠে নামে উত্তরাখণ্ডের বিজেপি সরকার। এবার ২০২৫ সালের প্রজাতন্ত্র দিবসে সে রাজ্যে বাস্তবায়িত হতে চলেছে ইউসিসি।

    চালু হতে পারে অন্যান্য বিজেপি শাসিত রাজ্যে

    প্রসঙ্গত, বিজেপি এই কারণে উত্তরাখণ্ডকে একটি মডেল রাজ্য হিসেবে সর্বত্র প্রচার চালাচ্ছে। কারণ ভারতবর্ষের প্রথম কোনও রাজ্যে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করতে পারল উত্তরাখণ্ড সরকার। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা ইতিমধ্যেই ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করতে শুরু করেছেন। তাঁরা জানাচ্ছেন যে— অসম, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ সহ বেশ কয়েকটি বিজেপি শাসিত রাজ্যে চালু হতে চলেছে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি। অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মাও অভিন্ন দেওয়ানি বিধিকে খোলাখুলি ভাবে সমর্থন করেছেন। অন্যদিকে, ইউসিসির বাস্তবায়ন কেন গুরুত্বপূর্ণ!এ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে মন্তব্য করেছেন উত্তরপ্রদেশের বিজেপি রাজ্য সভাপতি কেশবপ্রসাদ মৌর্য।

    লিঙ্গ বৈষম্য দূর হবে, প্রতিষ্ঠিত হবে নারী অধিকার

    বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা আরও জানিয়েছেন, বিভিন্ন রাজ্যগুলিতে যদি এভাবেই ইউসিসি বাস্তবায়িত হয়, তাহলে জাতীয় পর্যায়ে এর বাস্তবায়ন সম্ভব হয়ে উঠবে। অভিন্ন দেওয়ানি বিধি কেন গুরুত্বপূর্ণ, এ কথা যখন বিজেপি নেতারা বলছেন তখনই তাঁরা উত্তরাখণ্ডকে একটি মডেল হিসেবে তুলনা করছেন। বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞই উত্তরাখণ্ডের অভিন্ন দেওয়ানি বিধির প্রশংসা করছেন। কারণ তাঁরা মনে করছেন যে এর ফলে লিঙ্গবৈষম্য দূর হয়। এর ফলে ন্যায়বিচার আরও সহজে আসে এবং জাতীয় ঐক্যের ভিত্তি প্রশস্ত হবে। অন্যদিকে, বেশ কিছু মৌলবাদী অভিন্ন দেওয়ানি বিধির প্রয়োগের খবর সামনে আসতেই রীতিমতো তেড়েফুঁড়ে উঠে পড়েছেন। কারণ তাঁদের মতে, এর ফলে বহুবিবাহ এবং বিবাহ বিচ্ছেদের ওপর ইউসিসি প্রভাব ফেলবে। কিন্তু এই সময় দেখা যাচ্ছে নারী অধিকার সংগঠন এবং মানবাধিকারের ওপর যে সমস্ত সংগঠন কাজ করে, সেগুলি ইউসিসির বিধানগুলিকে স্বাগত জানিয়েছে। কারণ, এর ফলে সমানভাবে উত্তরাধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। বহুবিবাহ নিষিদ্ধ হবে এবং লিভ-ইন সম্পর্কে মহিলারা সুরক্ষিত থাকবেন।

    সমস্ত রাজ্যের নজর উত্তরাখণ্ডের ওপর 

    এখন দেখার গ্রামীণ এলাকাগুলিতে এই ইউসিসি কীভাবে কার্যকর হয়! যদিও উত্তরাখণ্ড (Uttarakhand) সরকার, রাজ্যের সমস্ত পঞ্চায়েতগুলিকেই ইউসিসি কার্যকর করার দায়িত্ব ইতিমধ্যে অর্পণ করেছে। অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করার প্রস্তুতি যখন উত্তরাখণ্ডজুড়ে চলছে, তখন ভারতের অন্যান্য অংশগুলিও এর ওপরে গভীরভাবে লক্ষ্য রাখছে। কারণ অভিন্ন দেওয়ানি বিধি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আইনি অধ্যায়। এই আইন সফল হবে নাকি ব্যর্থ! সেই ধারনাই গড়ে উঠবে আগামী ২৬ জানুয়ারির পর থেকে। উত্তরাখণ্ডে এই আইন শুধুমাত্র বিজেপির নির্বাচনী আশ্বাসকেই বাস্তবায়িত করছে না, একইসঙ্গে প্রত্যেক নাগরিকের জন্য সমান অধিকারকে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছে।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Uttarakhand: ‘এক দেশ এক আইন’, ২৬ জানুয়ারি উত্তরাখণ্ডে চালু হচ্ছে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি, কী কী পরিবর্তন?

    Uttarakhand: ‘এক দেশ এক আইন’, ২৬ জানুয়ারি উত্তরাখণ্ডে চালু হচ্ছে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি, কী কী পরিবর্তন?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আগামী ২৬ জানুয়ারি সারাদেশে পালিত হবে প্রজাতন্ত্র দিবস। ওই দিনই এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ করতে চলেছে ভারতের একটি অঙ্গরাজ্য। উত্তরাখণ্ডে (Uttarakhand) ওই দিন থেকে চালু হতে চলেছে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি। প্রসঙ্গত, ভারতের প্রথম রাজ্য হতে চলেছে উত্তরাখণ্ড। যেখানে ইউনিফর্ম সিভিল কোড বাস্তবায়িত হতে চলেছে। তাই চলতি বছরের প্রজাতন্ত্র দিবস উত্তরাখণ্ডের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই দিনটি একটি মাইলস্টোন হিসেবে থেকে যাবে, সে রাজ্যের ইতিহাসে।

    ২০২২ সালে বিজেপির নির্বাচনী আশ্বাস ছিল ইউসিসি (Uttarakhand) 

    ২০২২ সালে বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় উত্তরাখণ্ডে (Uttarakhand)। সেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার তৈরি করে বিজেপি। নির্বাচনের পূর্বে গেরুয়া শিবির উত্তরাখণ্ডের জনগণকে আশ্বাস দিয়েছিল যে, ক্ষমতায় এলে সেখানে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করা হবে। এবার নিজেদের দেওয়া সেই আশ্বাসই পূরণ করতে চলেছে উত্তরাখণ্ডের বিজেপি সরকার। অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু হলে, রাজ্যের সমস্ত নাগরিকদের জন্য একই আইন চালু হবে। এই অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু হলে কী কী সুবিধা মিলবে এবং এর প্রভাবই বা কী? সে নিয়েই এই প্রতিবেদনে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হল।

    উত্তরাখণ্ডে (Uttarakhand) কী কী পরিবর্তন আনবে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি?

    ● অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু হলে উত্তরাখণ্ডের সমস্ত ধর্মের জন্য যে ব্যক্তিগত আইন বা পার্সোনাল ‘ল’ গুলি রয়েছে, যেমন- বিবাহ, বিবাহ বিচ্ছেদ, উত্তরাধিকার আইন, দত্তক আইন, ভরণপোষণ সংক্রান্ত আইন- এই সমস্ত কিছুকেই সংস্কার করা হবে এবং ব্যক্তিগত আইনে বিভিন্ন ধর্মের মধ্যে যে বৈষম্য রয়েছে সেগুলিকেও নির্মূল করা হবে।

    ● উত্তরাখণ্ড সরকার সূত্রে জানা গিয়েছে, সমস্ত বিবাহ ও বিবাহ বিচ্ছেদ এবং একত্রবাস এই সমস্ত কিছুকে নিবন্ধন বা রেজিস্ট্রি করা হবে। তথ্য রাখা হবে একটি পোর্টালে। যে পোর্টালটি পরিচালনা করবে উত্তরাখণ্ড সরকার। এ সংক্রান্ত বিভিন্ন এলাকাভিত্তিক কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে।

    ● যদি কোনও পুরুষ-মহিলা একত্রবাস করতে চান, তাহলে সেক্ষেত্রে একত্রবাসের এক মাস আগে তা রেজিস্ট্রি করাতে হবে। যদি কেউ এই নিয়মকে লঙ্ঘন করেন, তাহলে তাঁদের তিন মাস পর্যন্ত কারাদণ্ড অথবা দশ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হবে।

    ● উত্তরাখণ্ডের এই আইনের মাধ্যমে মহিলাদের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠিত হতে চলেছে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

    ● প্রসঙ্গত, এই আইনের মাধ্যমেই উত্তরাখণ্ডের জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল মহিলা তাঁদের পৈতৃক সম্পত্তিতে সমান উত্তরাধিকার পাবেন।

    ● এই আইনের মাধ্যমে নিষিদ্ধ হবে বহুবিবাহ প্রথাও। একের বেশি বিয়ে কোনওভাবেই করা যাবে না। যদি তা কেউ করেন তবে তা আইনত দণ্ডনীয়  অপরাধ বলে বিবেচ্য হবে।

    ● এই আইনের মাধ্যমে একত্রবাসের ফলে যদি কোনও শিশু জন্ম নেয়, তাহলে ওই শিশুকে বৈধ বলেই বিবেচনা করা হবে এবং জন্ম নেওয়া শিশু সমানভাবে উত্তরাধিকার পাবে অর্থাৎ তার পৈতৃক সম্পত্তিতে সমান অধিকার পাবে।

    ● একত্রবাস যদি কেউ শেষ করতে চায়, তাহলে ওই একত্রবাসের সঙ্গী এবং সঙ্গিনীকেই সেটি রেজিস্ট্রি করে জানাতে হবে এবং আইনি স্বীকৃতি নিতে হবে। মনে করা হচ্ছে, এর ফলে লিভ-ইন সম্পর্কের ক্ষেত্রে নারীদের অধিকার সুরক্ষিত হবে।

    ● বহুবিবাহ এবং ইদ্দত এরফলে নিষিদ্ধ হতে চলেছে। প্রসঙ্গত, যে সমস্ত মুসলিম মহিলাদের তালাক দেওয়া হয়, তাঁদেরকে একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করানো হয়, এটাকেই বলা হয় ইদ্দত। এই সমস্ত কিছুই এবার বন্ধ হতে চলেছে ইউনিফর্ম সিভিল কোডের মাধ্যমে।

    আইনি প্রক্রিয়া হতে চলেছে সরল

    ● উত্তরাখণ্ডের নাগরিকরা (Uniform Civil Code) অভিন্ন দেওয়ানি বিধি কার্যকর হলেই, অনলাইনের মাধ্যমে নিজেদের উইল, যে কোনও আপিল বা অভিযোগ জানাতে পারবেন। সমস্ত আইনি প্রক্রিয়া সহজ করা হবে।

    ● গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাগুলিতে পঞ্চায়েত কর্মীরাই সাব-রেজিস্টার হিসেবে কাজ করবেন। তাঁরাও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে চলেছেন অভিন্ন দেওয়ানি বিধির বাস্তবায়নে।

    ● বিভিন্ন নথি যাচাই করার জন্য আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর সাহায্য নেবে উত্তরাখণ্ড সরকার।

    ● একই সঙ্গে গড়ে তোলা হবে কমন সার্ভিস সেন্টার। জানা গিয়েছে, ঘরে ঘরে গিয়ে পরিষেবা প্রদান করবে সরকার।

    ● অভিন্ন দেওয়ানি বিধিকে রাজ্যজুড়ে ব্যাপকভাবে কার্যকর করতে দশ হাজার কর্মীকে প্রশিক্ষণ করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে উত্তরাখণ্ড সরকার।

    শীর্ষ আদালতের বিচারপতির নেতৃত্বে কমিটি গড়ে সরকার

    প্রসঙ্গত, ২০২২ সালে নির্বাচনে বিজেপি বিপুল জয় পেতেই শুরু হয় উত্তরাখণ্ডে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি (Uniform Civil Code) বাস্তবায়ন করার প্রস্তুতি। ২০২২ সালের বিধানসভা নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি অনুসারে, রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি রঞ্জনা প্রকাশ দেশাইয়ের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে। এরপরে ২ লাখ ৫০ হাজারেরও বেশি স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করে ওই কমিটি। ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে কমিটি ৪০০ পাতার একটি বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দেয়। প্রসঙ্গত এ সংক্রান্ত প্রস্তাব বিধানসভাতে আগেই উত্থাপন করে বিজেপি।

    ২০২৪ সালে ১৩ মার্চ বিলে সই রাষ্ট্রপতির

    ২০২৪ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি উত্তরাখণ্ড বিধানসভায় উত্থাপন করা হয় ইউনিফর্ম সিভিল কোডের বিল। বিরোধীরা ব্যাপক বাধা সৃষ্টি করে। হইহট্টগোল শুরু করে। বিজেপি সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে ঠিক তার পরের দিনই বিলটিকে পাস করানো হয়। ২০২৪ সালে ১৩ মার্চ ওই বিল রাষ্ট্রপতি সই করেন। তখন থেকেই এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মাহিলফলক হিসেবে চিহ্নিত হয়। এর পরেই ইউসিসির বাস্তবায়নের জন্য জোর কদমে মাঠে নামে উত্তরাখণ্ডের বিজেপি সরকার। এবার ২০২৫ সালের প্রজাতন্ত্র দিবসে সে রাজ্যে বাস্তবায়িত হতে চলেছে ইউসিসি।

    চালু হতে পারে অন্যান্য বিজেপি শাসিত রাজ্যে

    প্রসঙ্গত, বিজেপি এই কারণে উত্তরাখণ্ডকে একটি মডেল রাজ্য হিসেবে সর্বত্র প্রচার চালাচ্ছে। কারণ ভারতবর্ষের প্রথম কোনও রাজ্যে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করতে পারল উত্তরাখণ্ড সরকার। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা ইতিমধ্যেই ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করতে শুরু করেছেন। তাঁরা জানাচ্ছেন যে— অসম, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ সহ বেশ কয়েকটি বিজেপি শাসিত রাজ্যে চালু হতে চলেছে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি। অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মাও অভিন্ন দেওয়ানি বিধিকে খোলাখুলি ভাবে সমর্থন করেছেন। অন্যদিকে, ইউসিসির বাস্তবায়ন কেন গুরুত্বপূর্ণ!এ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে মন্তব্য করেছেন উত্তরপ্রদেশের বিজেপি রাজ্য সভাপতি কেশবপ্রসাদ মৌর্য।

    লিঙ্গ বৈষম্য দূর হবে, প্রতিষ্ঠিত হবে নারী অধিকার

    বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা আরও জানিয়েছেন, বিভিন্ন রাজ্যগুলিতে যদি এভাবেই ইউসিসি বাস্তবায়িত হয়, তাহলে জাতীয় পর্যায়ে এর বাস্তবায়ন সম্ভব হয়ে উঠবে। অভিন্ন দেওয়ানি বিধি কেন গুরুত্বপূর্ণ, এ কথা যখন বিজেপি নেতারা বলছেন তখনই তাঁরা উত্তরাখণ্ডকে একটি মডেল হিসেবে তুলনা করছেন। বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞই উত্তরাখণ্ডের অভিন্ন দেওয়ানি বিধির প্রশংসা করছেন। কারণ তাঁরা মনে করছেন যে এর ফলে লিঙ্গবৈষম্য দূর হয়। এর ফলে ন্যায়বিচার আরও সহজে আসে এবং জাতীয় ঐক্যের ভিত্তি প্রশস্ত হবে। অন্যদিকে, বেশ কিছু মৌলবাদী অভিন্ন দেওয়ানি বিধির প্রয়োগের খবর সামনে আসতেই রীতিমতো তেড়েফুঁড়ে উঠে পড়েছেন। কারণ তাঁদের মতে, এর ফলে বহুবিবাহ এবং বিবাহ বিচ্ছেদের ওপর ইউসিসি প্রভাব ফেলবে। কিন্তু এই সময় দেখা যাচ্ছে নারী অধিকার সংগঠন এবং মানবাধিকারের ওপর যে সমস্ত সংগঠন কাজ করে, সেগুলি ইউসিসির বিধানগুলিকে স্বাগত জানিয়েছে। কারণ, এর ফলে সমানভাবে উত্তরাধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। বহুবিবাহ নিষিদ্ধ হবে এবং লিভ-ইন সম্পর্কে মহিলারা সুরক্ষিত থাকবেন।

    সমস্ত রাজ্যের নজর উত্তরাখণ্ডের ওপর 

    এখন দেখার গ্রামীণ এলাকাগুলিতে এই ইউসিসি কীভাবে কার্যকর হয়! যদিও উত্তরাখণ্ড (Uttarakhand) সরকার, রাজ্যের সমস্ত পঞ্চায়েতগুলিকেই ইউসিসি কার্যকর করার দায়িত্ব ইতিমধ্যে অর্পণ করেছে। অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করার প্রস্তুতি যখন উত্তরাখণ্ডজুড়ে চলছে, তখন ভারতের অন্যান্য অংশগুলিও এর ওপরে গভীরভাবে লক্ষ্য রাখছে। কারণ অভিন্ন দেওয়ানি বিধি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আইনি অধ্যায়। এই আইন সফল হবে নাকি ব্যর্থ! সেই ধারনাই গড়ে উঠবে আগামী ২৬ জানুয়ারির পর থেকে। উত্তরাখণ্ডে এই আইন শুধুমাত্র বিজেপির নির্বাচনী আশ্বাসকেই বাস্তবায়িত করছে না, একইসঙ্গে প্রত্যেক নাগরিকের জন্য সমান অধিকারকে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছে।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Uttarakhand: ‘এক দেশ এক আইন’, ২৬ জানুয়ারি উত্তরাখণ্ডে চালু হচ্ছে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি, কী কী পরিবর্তন?

    Uttarakhand: ‘এক দেশ এক আইন’, ২৬ জানুয়ারি উত্তরাখণ্ডে চালু হচ্ছে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি, কী কী পরিবর্তন?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আগামী ২৬ জানুয়ারি সারাদেশে পালিত হবে প্রজাতন্ত্র দিবস। ওই দিনই এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ করতে চলেছে ভারতের একটি অঙ্গরাজ্য। উত্তরাখণ্ডে (Uttarakhand) ওই দিন থেকে চালু হতে চলেছে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি। প্রসঙ্গত, ভারতের প্রথম রাজ্য হতে চলেছে উত্তরাখণ্ড। যেখানে ইউনিফর্ম সিভিল কোড বাস্তবায়িত হতে চলেছে। তাই চলতি বছরের প্রজাতন্ত্র দিবস উত্তরাখণ্ডের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই দিনটি একটি মাইলস্টোন হিসেবে থেকে যাবে, সে রাজ্যের ইতিহাসে।

    ২০২২ সালে বিজেপির নির্বাচনী আশ্বাস ছিল ইউসিসি (Uttarakhand) 

    ২০২২ সালে বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় উত্তরাখণ্ডে (Uttarakhand)। সেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার তৈরি করে বিজেপি। নির্বাচনের পূর্বে গেরুয়া শিবির উত্তরাখণ্ডের জনগণকে আশ্বাস দিয়েছিল যে, ক্ষমতায় এলে সেখানে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করা হবে। এবার নিজেদের দেওয়া সেই আশ্বাসই পূরণ করতে চলেছে উত্তরাখণ্ডের বিজেপি সরকার। অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু হলে, রাজ্যের সমস্ত নাগরিকদের জন্য একই আইন চালু হবে। এই অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু হলে কী কী সুবিধা মিলবে এবং এর প্রভাবই বা কী? সে নিয়েই এই প্রতিবেদনে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হল।

    উত্তরাখণ্ডে (Uttarakhand) কী কী পরিবর্তন আনবে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি?

    ● অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু হলে উত্তরাখণ্ডের সমস্ত ধর্মের জন্য যে ব্যক্তিগত আইন বা পার্সোনাল ‘ল’ গুলি রয়েছে, যেমন- বিবাহ, বিবাহ বিচ্ছেদ, উত্তরাধিকার আইন, দত্তক আইন, ভরণপোষণ সংক্রান্ত আইন- এই সমস্ত কিছুকেই সংস্কার করা হবে এবং ব্যক্তিগত আইনে বিভিন্ন ধর্মের মধ্যে যে বৈষম্য রয়েছে সেগুলিকেও নির্মূল করা হবে।

    ● উত্তরাখণ্ড সরকার সূত্রে জানা গিয়েছে, সমস্ত বিবাহ ও বিবাহ বিচ্ছেদ এবং একত্রবাস এই সমস্ত কিছুকে নিবন্ধন বা রেজিস্ট্রি করা হবে। তথ্য রাখা হবে একটি পোর্টালে। যে পোর্টালটি পরিচালনা করবে উত্তরাখণ্ড সরকার। এ সংক্রান্ত বিভিন্ন এলাকাভিত্তিক কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে।

    ● যদি কোনও পুরুষ-মহিলা একত্রবাস করতে চান, তাহলে সেক্ষেত্রে একত্রবাসের এক মাস আগে তা রেজিস্ট্রি করাতে হবে। যদি কেউ এই নিয়মকে লঙ্ঘন করেন, তাহলে তাঁদের তিন মাস পর্যন্ত কারাদণ্ড অথবা দশ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হবে।

    ● উত্তরাখণ্ডের এই আইনের মাধ্যমে মহিলাদের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠিত হতে চলেছে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

    ● প্রসঙ্গত, এই আইনের মাধ্যমেই উত্তরাখণ্ডের জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল মহিলা তাঁদের পৈতৃক সম্পত্তিতে সমান উত্তরাধিকার পাবেন।

    ● এই আইনের মাধ্যমে নিষিদ্ধ হবে বহুবিবাহ প্রথাও। একের বেশি বিয়ে কোনওভাবেই করা যাবে না। যদি তা কেউ করেন তবে তা আইনত দণ্ডনীয়  অপরাধ বলে বিবেচ্য হবে।

    ● এই আইনের মাধ্যমে একত্রবাসের ফলে যদি কোনও শিশু জন্ম নেয়, তাহলে ওই শিশুকে বৈধ বলেই বিবেচনা করা হবে এবং জন্ম নেওয়া শিশু সমানভাবে উত্তরাধিকার পাবে অর্থাৎ তার পৈতৃক সম্পত্তিতে সমান অধিকার পাবে।

    ● একত্রবাস যদি কেউ শেষ করতে চায়, তাহলে ওই একত্রবাসের সঙ্গী এবং সঙ্গিনীকেই সেটি রেজিস্ট্রি করে জানাতে হবে এবং আইনি স্বীকৃতি নিতে হবে। মনে করা হচ্ছে, এর ফলে লিভ-ইন সম্পর্কের ক্ষেত্রে নারীদের অধিকার সুরক্ষিত হবে।

    ● বহুবিবাহ এবং ইদ্দত এরফলে নিষিদ্ধ হতে চলেছে। প্রসঙ্গত, যে সমস্ত মুসলিম মহিলাদের তালাক দেওয়া হয়, তাঁদেরকে একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করানো হয়, এটাকেই বলা হয় ইদ্দত। এই সমস্ত কিছুই এবার বন্ধ হতে চলেছে ইউনিফর্ম সিভিল কোডের মাধ্যমে।

    আইনি প্রক্রিয়া হতে চলেছে সরল

    ● উত্তরাখণ্ডের নাগরিকরা (Uniform Civil Code) অভিন্ন দেওয়ানি বিধি কার্যকর হলেই, অনলাইনের মাধ্যমে নিজেদের উইল, যে কোনও আপিল বা অভিযোগ জানাতে পারবেন। সমস্ত আইনি প্রক্রিয়া সহজ করা হবে।

    ● গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাগুলিতে পঞ্চায়েত কর্মীরাই সাব-রেজিস্টার হিসেবে কাজ করবেন। তাঁরাও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে চলেছেন অভিন্ন দেওয়ানি বিধির বাস্তবায়নে।

    ● বিভিন্ন নথি যাচাই করার জন্য আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর সাহায্য নেবে উত্তরাখণ্ড সরকার।

    ● একই সঙ্গে গড়ে তোলা হবে কমন সার্ভিস সেন্টার। জানা গিয়েছে, ঘরে ঘরে গিয়ে পরিষেবা প্রদান করবে সরকার।

    ● অভিন্ন দেওয়ানি বিধিকে রাজ্যজুড়ে ব্যাপকভাবে কার্যকর করতে দশ হাজার কর্মীকে প্রশিক্ষণ করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে উত্তরাখণ্ড সরকার।

    শীর্ষ আদালতের বিচারপতির নেতৃত্বে কমিটি গড়ে সরকার

    প্রসঙ্গত, ২০২২ সালে নির্বাচনে বিজেপি বিপুল জয় পেতেই শুরু হয় উত্তরাখণ্ডে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি (Uniform Civil Code) বাস্তবায়ন করার প্রস্তুতি। ২০২২ সালের বিধানসভা নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি অনুসারে, রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি রঞ্জনা প্রকাশ দেশাইয়ের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে। এরপরে ২ লাখ ৫০ হাজারেরও বেশি স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করে ওই কমিটি। ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে কমিটি ৪০০ পাতার একটি বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দেয়। প্রসঙ্গত এ সংক্রান্ত প্রস্তাব বিধানসভাতে আগেই উত্থাপন করে বিজেপি।

    ২০২৪ সালে ১৩ মার্চ বিলে সই রাষ্ট্রপতির

    ২০২৪ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি উত্তরাখণ্ড বিধানসভায় উত্থাপন করা হয় ইউনিফর্ম সিভিল কোডের বিল। বিরোধীরা ব্যাপক বাধা সৃষ্টি করে। হইহট্টগোল শুরু করে। বিজেপি সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে ঠিক তার পরের দিনই বিলটিকে পাস করানো হয়। ২০২৪ সালে ১৩ মার্চ ওই বিল রাষ্ট্রপতি সই করেন। তখন থেকেই এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মাহিলফলক হিসেবে চিহ্নিত হয়। এর পরেই ইউসিসির বাস্তবায়নের জন্য জোর কদমে মাঠে নামে উত্তরাখণ্ডের বিজেপি সরকার। এবার ২০২৫ সালের প্রজাতন্ত্র দিবসে সে রাজ্যে বাস্তবায়িত হতে চলেছে ইউসিসি।

    চালু হতে পারে অন্যান্য বিজেপি শাসিত রাজ্যে

    প্রসঙ্গত, বিজেপি এই কারণে উত্তরাখণ্ডকে একটি মডেল রাজ্য হিসেবে সর্বত্র প্রচার চালাচ্ছে। কারণ ভারতবর্ষের প্রথম কোনও রাজ্যে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করতে পারল উত্তরাখণ্ড সরকার। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা ইতিমধ্যেই ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করতে শুরু করেছেন। তাঁরা জানাচ্ছেন যে— অসম, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ সহ বেশ কয়েকটি বিজেপি শাসিত রাজ্যে চালু হতে চলেছে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি। অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মাও অভিন্ন দেওয়ানি বিধিকে খোলাখুলি ভাবে সমর্থন করেছেন। অন্যদিকে, ইউসিসির বাস্তবায়ন কেন গুরুত্বপূর্ণ!এ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে মন্তব্য করেছেন উত্তরপ্রদেশের বিজেপি রাজ্য সভাপতি কেশবপ্রসাদ মৌর্য।

    লিঙ্গ বৈষম্য দূর হবে, প্রতিষ্ঠিত হবে নারী অধিকার

    বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা আরও জানিয়েছেন, বিভিন্ন রাজ্যগুলিতে যদি এভাবেই ইউসিসি বাস্তবায়িত হয়, তাহলে জাতীয় পর্যায়ে এর বাস্তবায়ন সম্ভব হয়ে উঠবে। অভিন্ন দেওয়ানি বিধি কেন গুরুত্বপূর্ণ, এ কথা যখন বিজেপি নেতারা বলছেন তখনই তাঁরা উত্তরাখণ্ডকে একটি মডেল হিসেবে তুলনা করছেন। বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞই উত্তরাখণ্ডের অভিন্ন দেওয়ানি বিধির প্রশংসা করছেন। কারণ তাঁরা মনে করছেন যে এর ফলে লিঙ্গবৈষম্য দূর হয়। এর ফলে ন্যায়বিচার আরও সহজে আসে এবং জাতীয় ঐক্যের ভিত্তি প্রশস্ত হবে। অন্যদিকে, বেশ কিছু মৌলবাদী অভিন্ন দেওয়ানি বিধির প্রয়োগের খবর সামনে আসতেই রীতিমতো তেড়েফুঁড়ে উঠে পড়েছেন। কারণ তাঁদের মতে, এর ফলে বহুবিবাহ এবং বিবাহ বিচ্ছেদের ওপর ইউসিসি প্রভাব ফেলবে। কিন্তু এই সময় দেখা যাচ্ছে নারী অধিকার সংগঠন এবং মানবাধিকারের ওপর যে সমস্ত সংগঠন কাজ করে, সেগুলি ইউসিসির বিধানগুলিকে স্বাগত জানিয়েছে। কারণ, এর ফলে সমানভাবে উত্তরাধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। বহুবিবাহ নিষিদ্ধ হবে এবং লিভ-ইন সম্পর্কে মহিলারা সুরক্ষিত থাকবেন।

    সমস্ত রাজ্যের নজর উত্তরাখণ্ডের ওপর 

    এখন দেখার গ্রামীণ এলাকাগুলিতে এই ইউসিসি কীভাবে কার্যকর হয়! যদিও উত্তরাখণ্ড (Uttarakhand) সরকার, রাজ্যের সমস্ত পঞ্চায়েতগুলিকেই ইউসিসি কার্যকর করার দায়িত্ব ইতিমধ্যে অর্পণ করেছে। অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করার প্রস্তুতি যখন উত্তরাখণ্ডজুড়ে চলছে, তখন ভারতের অন্যান্য অংশগুলিও এর ওপরে গভীরভাবে লক্ষ্য রাখছে। কারণ অভিন্ন দেওয়ানি বিধি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আইনি অধ্যায়। এই আইন সফল হবে নাকি ব্যর্থ! সেই ধারনাই গড়ে উঠবে আগামী ২৬ জানুয়ারির পর থেকে। উত্তরাখণ্ডে এই আইন শুধুমাত্র বিজেপির নির্বাচনী আশ্বাসকেই বাস্তবায়িত করছে না, একইসঙ্গে প্রত্যেক নাগরিকের জন্য সমান অধিকারকে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছে।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Amit Shah: জনজাতিদের বাদ দিয়েই ঝাড়খণ্ডে চালু হবে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি, ঘোষণা শাহের

    Amit Shah: জনজাতিদের বাদ দিয়েই ঝাড়খণ্ডে চালু হবে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি, ঘোষণা শাহের

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: “ক্ষমতায় এলেই ঝাড়খণ্ডে চালু করা হবে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি (Uniform Civil Code)। তবে বাদ রাখা হবে জনজাতিদের। তাঁরা এর আওতায় পড়বেন না।” ভোটমুখী ঝাড়খণ্ডে প্রচারে গিয়ে এমনই প্রতিশ্রুতি দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)।

    শাহি প্রতিশ্রুতি (Amit Shah)

    ঝাড়খণ্ড বিধানসভার আসন সংখ্যা ৮১। নির্বাচন হবে দু’দফায় – ১৩ ও ২০ নভেম্বর। ফল প্রকাশ হবে ২৩ নভেম্বর। প্রথম দফায় যে আসনগুলিতে নির্বাচন হবে, সেগুলিতেই প্রচারে গিয়েছিলেন শাহ। শনিবার রাতে রাঁচিতে পৌঁছন তিনি। রবিবার এক সভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “সরকারে এলে ঝাড়খণ্ডে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করবে বিজেপি। কিন্তু আমি আশ্বাস দিচ্ছি, জনজাতিদের এর আওতার বাইরে রাখা হবে। জেএমএম (ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা) সরকার মিথ্যা প্রচার করছে যে, ইউসিসি এলে জনজাতিদের অধিকার ক্ষুণ্ণ হবে। এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।” শাহ বলেন, “ক্ষমতায় এসেই ঝাড়খণ্ডে ৫ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে বিজেপি।”

    শয়তানদের ঠাঁই হবে গারদে

    অনুপ্রবেশ সমস্যার বিরুদ্ধেও সরব হয়েছেন তিনি। শাহের দাবি, স্থানীয় প্রশাসনের প্রশ্রয়েই ঝাড়খণ্ডে অনুপ্রবেশ বন্ধ হয়নি। এই বিষয়ে ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনকেও কটাক্ষ করেন অমিত শাহ। তিনি বলেন, “এ রাজ্যে হিন্দুরা আক্রান্ত হচ্ছেন। তুষ্টিকরণের রাজনীতি তুঙ্গে। দেশের মধ্যে সব চেয়ে দুনীতিগ্রস্ত রাজ্য ঝাড়খণ্ড।” কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী (Amit Shah) বলেন, “প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসে সিবিআই এবং এসআইটি তদন্ত হবে। শয়তানদের ঠাঁই হবে গারদে।” তিনি বলেন, “ক্ষমতায় এলে রাজ্যে ১০টি নতুন মেডিক্যাল কলেজ স্থাপন করা হবে। ৭০ বছরের বেশি বয়সিদের আয়ুষ্মান জীবন ধারা যোজনায় কভারেজ ফি ৫ লাখ থেকে বাড়িয়ে করা হবে ১০ লাখ। প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে বেডও বাড়ানো হবে।”

    আরও পড়ুন: কানাডায় ফের হিন্দু মন্দিরে হামলা খালিস্তানপন্থীদের, চাপে পড়ে নিন্দামন্দ করলেন ট্রুডো!

    শাহের বক্তৃতায় অনিবার্যভাবে এসেছে নকশাল প্রসঙ্গ। তিনি বলেন, “২০২৬ সালের মধ্যে দেশ থেকে নকশালদের মুছে ফেলা হবে। এটাই সেই সময় যখন দলিত-বিরোধী, দরিদ্র বিরোধী এবং যুব-বিরোধী হেমন্ত সরকারকে ঝাড়খণ্ড থেকে তাড়াতে হবে (Uniform Civil Code)। সস্তা রাজনৈতিক লাভের জন্য এরাই অক্সিজেন জোগাচ্ছে নকশালদের (Amit Shah)।”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

      

  • UCC: দেশে একটাই দেওয়ানি বিধি থাকুক, চাইছেন অধিকাংশ মুসলিম মহিলাই! উঠে এল সমীক্ষায়

    UCC: দেশে একটাই দেওয়ানি বিধি থাকুক, চাইছেন অধিকাংশ মুসলিম মহিলাই! উঠে এল সমীক্ষায়

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দেশে একটাই দেওয়ানি বিধি (UCC) থাকুক। অন্তত এমনটাই চান এ দেশের সিংহভাগ মুসলমান মহিলা। সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায়ই উঠে এসেছে এই তথ্য। জানা গিয়েছে, দেশের ৬৭ শতাংশ মুসলমান মহিলা চান গোটা দেশের জন্য একটাই অভিন্ন দেওয়ানি বিধি থাকুক। যাঁরা এই মত পোষণ করেছেন, তাঁদের মধ্যে ৬৮ শতাংশ মহিলাই গ্র্যাজুয়েট কিংবা তারও বেশি ডিগ্রিধারী।

    বহু বিবাহ সমর্থনযোগ্য নয় 

    ৭৬ শতাংশ মুসলমান মহিলা বহু বিবাহের সঙ্গে সহমত পোষণ করেন না। মুসলমান পুরুষদের চারটি বিয়ে করার অধিকারও থাকা উচিত নয় বলেই মনে করেন তাঁরা। যাঁরা এমন মত ব্যক্ত করেন, তাঁদের মধ্যে গ্র্যাজুয়েট কিংবা তারও বেশি শিক্ষাগত যোগত্যার অধিকারী ৭৯ শতাংশ মহিলা। সমীক্ষায় যাঁরা যোগ দিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে ৭৪ শতাংশ মহিলা মনে করেন বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যাওয়া নারী এবং পুরুষের দ্বিতীয়বার বিয়ে করার অনুমতি দেওয়া প্রয়োজন। কোনওরকম বিধিনিষেধ (UCC) ছাড়াই এটা হতে দেওয়া দরকার বলে মনে করেন ওই মুসলিম মহিলারা। দত্তক নেওয়ার পক্ষেও সায় দিয়েছেন সিংহভাগ মুসলিম মহিলা।

    বিয়ের বয়স 

    ৬৯ শতাংশ মুসলিম মহিলা মনে করেন যাঁরা প্রবীণ হয়েছেন, তাঁরা তাঁদের সম্পত্তি ইচ্ছে মতো দান করতে পারেন। এ মতের স্বপক্ষে যাঁরা সায় দিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে ৭৩ শতাংশ মহিলাই গ্র্যাজুয়েট কিংবা তারও বেশি শিক্ষাগত যোগ্যতার অধিকারী। বিয়ের বয়স মহিলা এবং পুরুষ উভয় ক্ষেত্রেই ২১ হওয়া প্রয়োজন বলেও মনে করেন সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারী ৭৯ শতাংশ মুসলিম মহিলা। এঁদের মধ্যে গ্র্যাজুয়েট কিংবা তারও বেশি শিক্ষিতের হার ৮২ শতাংশ।

    আরও পড়ুুন: ‘কালীঘাটের কাকু’র কণ্ঠস্বরের নমুনা পরীক্ষা করতে ইডি-কে অনুমতি হাইকোর্টের

    সমীক্ষায় প্রাপ্ত তথ্য থেকে একথা স্পষ্ট যে, ভারতের সিংহভাগ মুসলমান মহিলাই চাইছেন, অবিলম্বে চালু হোক অভিন্ন দেওয়ানি বিধি (UCC) । এই বিধি লাগু হলে বিবাহ বিচ্ছেদ সহ নানা ক্ষেত্রে জাতি-ধর্ম-নির্বিশেষে একটাই আইন চালু হবে। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি অভিন্ন দেওয়ানি বিধির পক্ষে সওয়াল করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি স্বয়ং। দিল্লির এক বিজেপি নেতার দাবি, সংসদের বাদল অধিবেশনেই আসতে পারে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বিল।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

     
     
  • UCC: অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে এত বিতর্ক কেন? কী আছে এতে?

    UCC: অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে এত বিতর্ক কেন? কী আছে এতে?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: সমগ্র ভারতবর্ষে এখন একটি বিষয় নিয়ে সব থেকে বেশি চর্চা ও সমালোচনা চলছে। আর সেটি হল UCC বা ইউনিফর্ম সিভিল কোড, যাকে বাংলায় অভিন্ন দেওয়ানি বিধিও বলা হয়। এই আইন বাস্তবায়ন করার জন্য অনেক বিতর্কের সৃষ্টি হচ্ছে সমগ্র ভারতবর্ষ জুড়ে। আসলে এই অভিন্ন দেওয়ানি বিধি অনুযায়ী ধর্ম, জাতি, বর্ণ নির্বিশেষে ভারতবর্ষের সমস্ত নাগরিককে একটি অভিন্ন আইনের ছত্রচ্ছায়ায় আনা হবে। প্রত্যেক ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গের জন্য একই আইন প্রণয়ন হবে। আর এই সিভিল কোড যদি একবার কার্যকর হয়, তাহলে বিবাহ, বিবাহ বিচ্ছেদ, সন্তান দত্তক, সম্পত্তি ভাগ প্রভৃতি বিষয়ে সকল নাগরিকদের জন্য একই নিয়ম কার্যকর হবে। সংবিধানের ৪৪ নং ধারায় এই আইন নিয়ে স্পষ্ট আলোচনা করা হয়েছে। এই ৪৪ নং ধারায় বলা হয়েছে “রাষ্ট্র ভারতের সমগ্র অঞ্চল জুড়ে নাগরিকদের জন্য একটি অভিন্ন দেওয়ানি বিধি সুরক্ষিত করার চেষ্টা করবে।”

    ভারতীয় ইতিহাসে অভিন্ন নাগরিক আইন (UCC) সম্পর্কিত কিছু মামলা

    ভারতের সর্বপ্রথম ১৯৮৫ সালে মহম্মদ আহমেদ খান বনাম শাহবানু বেগমের মামলায় সুপ্রিম কোর্ট সংসদকে এই অভিন্ন নাগরিক আইন গঠনের উপদেশ দেয়। এই মামলাটি ছিল ফৌজদারি কার্যবিধির ১২৫ ধারা অনুযায়ী তিন তালাক পাওয়ার পর স্বামীর কাছে থেকে ভরণপোষণের সমস্ত অধিকার পাওয়া সংক্রান্ত। কিন্তু ১৯৮৬ সালে মুসলিম মহিলা আইন নিয়ে এসেই এই সুপ্রিম কোর্টের মামলাটিকে সম্পূর্ণ রূপে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। এই আইন অনুসারে একজন মুসলিম মহিলা তালাক পাওয়ার পর তাঁর কোনও ভরণপোষণের দায়িত্ব চাওয়ার অধিকার ছিল না। অবশেষে ২০১৭ সালে তিন তালাক বা তালাক-ই-বিদাতকে অসাংবিধানিক বা আইন-বিরুদ্ধ বলে ঘোষণা করা হয়। আবার আরেকটি মামলা চর্চায় এসেছিল ১৯৯৫ সালে, যা হল সরলা মুদ্গাল মামলা। এটি ব্যক্তিগত আইনের মধ্যে দ্বি-বিবাহ ও বিবাহ সম্পর্কিত মতবিরোধের বিষয়গুলিকে সামনে নিয়ে এসেছিল।

    UCC -র পক্ষে যুক্তি কী?

    আমাদের ভারতবর্ষ এক বৈচিত্র্যময় দেশ এবং এখানে অনেক ধর্ম ও জাতির মানুষ বসবাস করে এবং প্রত্যেকের ব্যক্তিগত আচার আচরণ ভিন্ন ভিন্ন। এর ফলে অভিন্ন নাগরিক আইন বা ইউনিফর্ম সিভিল কোড (UCC) সমগ্র দেশকে একত্রিত করতে সাহায্য করবে। স্বাধীনতার সময় এই একত্রিত করার কাজ অনেকটা সম্পূর্ণ হলেও UCC এর মাধ্যমে এই একতা আরও বেশি জোরালো হবে বলে ধারণা। সমগ্র ভারতবর্ষের বিভিন্ন ধর্ম, জাতি ও বর্ণের মানুষকে এক ছাদের তলায় নিয়ে আসার জন্য এই ইউনিফর্ম সিভিল কোড যথাযথ। কোনও বৈষম্য ছাড়াই সমতার ধারণা আরও শক্তিশালী করা অর্থাৎ সকলকে এক করা এর উদ্দেশ্য। মানব জাতিকে আরও শক্তিশালী করে তোলা সম্ভব এই আইনের মাধ্যমে।

    UCC বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বাধা কোথায়?

    ধর্ম, বর্ণ, ঐতিহ্য প্রথা সমগ্র ভারতে অঞ্চল অনুসারে ভিন্ন। অনেক ধর্মীয় সংখ্যালঘু মনে করেন যে এতে তাঁদের ব্যক্তিগত ধর্মীয় স্বাধীনতার ওপর সীমারেখা টানা হচ্ছে। ফলে এটি (UCC) ধর্মের স্বাধীনতাকে লঙ্ঘন করছে। ভারতবর্ষে এই নিয়ে ইতিমধ্যে অনেক বিতর্কে সৃষ্টি হয়েছে। ইউনিফর্ম সিভিল কোডের মাধ্যমে ভারতের সমগ্র জাতি, বর্ণ ও ধর্মের মানুষকে একত্রিত করা সম্ভব। কিন্তু অপরদিকে বেশ কিছু মৌলিক অধিকারের সঙ্গে এর কয়েকটি অমিল রয়েছে। সংবিধানের ২৫ নম্বর ধারায় বিচারবুদ্ধির স্বাধীনতা, ধর্মীয় বিশ্বাস প্রকাশ্যে তুলে ধরার স্বাধীনতা, ধর্মীয় রীতি পালন করার স্বাধীনতা, ধর্মের প্রচারের অধিকার প্রভৃতিকে লঙ্ঘন করছে এই আইন, এমনটাই বলছেন এর বিরোধীরা।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

LinkedIn
Share