Tag: us army

us army

  • US Army in Chattogram: চট্টগ্রামে মার্কিন সেনার উপস্থিতি, সামরিক তৎপরতা বৃদ্ধি! ভারতের নজরে বাংলাদেশ

    US Army in Chattogram: চট্টগ্রামে মার্কিন সেনার উপস্থিতি, সামরিক তৎপরতা বৃদ্ধি! ভারতের নজরে বাংলাদেশ

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশের চট্টগ্রামের (US Army in Chattogram) শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সম্প্রতি অবতরণ করেছে ‘বিদেশি’ সামরিক বিমান। এদিকে কয়েকদি আগেই নাকি চট্টগ্রামে ১২০ জন মার্কিন সামরিক বাহিনীর সদস্য যান। তারা চট্টগ্রামের অভিজাত হোটেল ব়্যাডিসন ব্লু-তে আছেন। এই সব মিলে জল্পনা বর্তমানে তুঙ্গে। এই নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে চর্চাও চলছে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের একটি সি-১৩০জে সুপার হারকিউলিস পরিবহন বিমান চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেছে। এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইয়োকোটা ঘাঁটি (জাপান) থেকে পরিচালিত একটি ট্যাকটিক্যাল ট্রান্সপোর্ট এয়ারক্রাফট। একইসাথে চট্টগ্রামের জহুরুল হক বিমানঘাঁটিতে শুরু হয়েছে ‘অপারেশন প্যাসিফিক অ্যাঞ্জেল ২৫-৩’ নামে একটি যৌথ সামরিক মহড়া, যেখানে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনী।

    চট্টগ্রামে যৌথ মহড়ায় নজর রাখছে ভারত

    এই মহড়া ও সাম্প্রতিক তৎপরতাগুলোর প্রেক্ষাপটে প্রশ্ন উঠছে—ভারতের জন্য কি এই মহড়া উদ্বেগের কারণ? ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের সন্নিকটে চট্টগ্রামে মার্কিন সেনা উপস্থিতি কী আঞ্চলিক কৌশলগত ভারসাম্য পরিবর্তন করতে পারে? গত ১০ সেপ্টেম্বর মার্কিন বিমান বাহিনীর একটি সি-১৩০ জে সুপার হারকিউলিস বিমান শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেছিল। এরই সঙ্গে জানা গিয়েছে, প্রায় ১২০ জন মার্কিন সেনা এবং বিমান বাহিনীর কর্মকর্তা চট্টগ্রামে পৌঁছেছেন। এসব সৈন্যরা রেডিসন ব্লু হোটেলে অবস্থান করে, যেখানে তাদের নাম রেজিস্টারে লেখা হয়নি। এই অপারেশনটি ‘অপারেশন প্যাসিফিক অ্যাঞ্জেল ২৫-৪’-এর অংশ। ১৫ থেকে ১৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কার বিমান বাহিনীর মধ্যে পরিচালিত হচ্ছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, কেন এই মহড়ার বিষয়টি গোপন রাখার চেষ্টা হয়েছিল?

    কি ঘটছে চট্টগ্রামে?

    ‘অপারেশন প্যাসিফিক অ্যাঞ্জেল ২৫-৩’ মূলত একটি মানবিক সহায়তা ও সামরিক সহযোগিতা ভিত্তিক মহড়া, যা ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত এই মহড়ায় যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের ২৪২ জন সামরিক সদস্য অংশ নিচ্ছেন। এর মধ্যে ৯২ জন মার্কিন ও ১৫০ জন বাংলাদেশি সেনা সদস্য রয়েছেন। মহড়ায় অংশ নিচ্ছে তিনটি সি-১৩০জে পরিবহণ বিমান (দুটি যুক্তরাষ্ট্রের), একটি এমআই-১৭ হেলিকপ্টার (বাংলাদেশ বিমান বাহিনী)। এছাড়াও, আমেরিকার চার্জ দ্যা’ফেয়ার ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন মহড়াস্থল পরিদর্শন করেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন ইউএস প্যাসিফিক এয়ার ফোর্সেসের (PACAF) প্রতিনিধি ও ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

    ভারত-মায়ানমার সম্পর্ক

    এর আগে, ৮-১০ সেপ্টেম্বর হাওয়াইতে অনুষ্ঠিত ‘ল্যান্ড ফোর্সেস টকস’-এ ইউএস আর্মি প্যাসিফিক কমান্ড এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করার বিষয়ে আলোচনা করেছিল। এদিকে বঙ্গোপসাগরে চট্টগ্রামের অবস্থান তাৎপর্যপূর্ণ। সেখানে চিনের প্রভাব বাড়ছে। কিছু প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে যে যুক্তরাষ্ট্র মায়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলিকে (যেমন আরাকান আর্মি) সমর্থন করতে চায়। এই বিদ্রোহীরা জুন্তা সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। এদিকে বাংলাদেশের সেন্ট মার্টিন দ্বীপেও আমেরিকার নজর রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। অন্যদিকে, মায়ানমারের সামরিক জুন্তার সঙ্গে ভারতের ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। ২০২১ সালের অভ্যুত্থানের পর থেকে প্রতিবেশী দেশের সামরিক বাহিনী ক্ষমতায় রয়েছে। এদিকে মায়ানমারকে নিজেদের ‘অ্যাক্ট ইস্ট পলিসি’র একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ বলে মনে করে ভারত সরকার। বিশেষ করে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির সঙ্গে যোগাযোগের জন্য। কালাদান মাল্টি-মোডাল ট্রানজিট প্রজেক্ট (মিজোরাম থেকে সিত্তে বন্দর পর্যন্ত) এর মতো প্রকল্পগুলি জুন্তার সমর্থনের উপর নির্ভর করে। কিন্তু মায়ানমারে আরাকান আর্মি ও অন্যান্য বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে গৃহযুদ্ধ চলছে। এই অর্থে, এই গোটা বিষয়টি খুব সংবেদনশীল।

    উত্তরপূর্ব ভারতে অশান্তির আশঙ্কা

    এর আগে গত ১৪ সেপ্টেম্বর মিশর বিমান বাহিনীর একটি পরিবহণ বিমান চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে এবং এর একদিন পরেই মার্কিন সেনারা বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর পতেঙ্গা বিমান ঘাঁটি পরিদর্শন করেন। উল্লেখ্য, বাংলাদেশের চট্টগ্রাম থেকে মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশে মানবিক করিডোর তৈরি করার পরিকল্পনা করছিল মহম্মদ ইউনুসের সরকারের। তবে এই করিডোরের মাধ্যমে উত্তরপূর্ব ভারতে অশান্তি ছড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছিল। এদিকে এই করিডোরের মাধ্যমে বাংলাদেশ নিজেদের সার্বভৌমত্বের সঙ্গে আপস করতে পারে বলে আশঙ্কা শুরু হয়েছিল তাদের দেশের অভ্যন্তরেই। যার জেরে রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টি করা হয়েছিল ইউনুস সরকারের ওপর। তারপর বেশ কয়েক মাস বিষয়টি নিয়ে কোনও উচ্চবাচ্য করা হয়নি ইউনুস সরকারের তরফ থেকে। এমনকী বলা হয়েছিল, এই করিডোরের বিষয়ে সরকার চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্তই নেয়নি।

    আমেরিকার লক্ষ্য কি শুধুই চিন-বিরোধিতা?

    বিশ্লেষকদের মতে, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের কৌশল মূলত চিনকে প্রতিহত করা। তবে এর প্রভাব দক্ষিণ এশিয়ার ভৌগোলিক ভারসাম্যেও পড়ছে। বাংলাদেশে মার্কিন প্রভাব বৃদ্ধির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ভারত মহাসাগরে ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় তার সামরিক উপস্থিতি বাড়াতে চাইছে—যা একদিকে চিনের প্রভাব ঠেকানোর চেষ্টা, অন্যদিকে ভারতকেও নির্দিষ্ট ছকেই রাখতে চাওয়ার ইঙ্গিত। উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের অগাস্টে বাংলাদেশে বড় ধরনের রাজনৈতিক পরিবর্তন ঘটে। শেখ হাসিনার সরকার ছাত্র-আন্দোলনের মুখে পড়ে সরে যেতে বাধ্য হয়। এর পিছনে আমেরিকার হাত রয়েছে, বলে অভিযোগ করেন হাসিনা। বলা হয়, শেখ হাসিনা ‘সেন্ট মার্টিন’ দ্বীপ মার্কিন ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহারের অনুমতি না দেওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র অসন্তুষ্ট ছিল।

    বদলে যাওয়া ভূরাজনীতি

    শেখ হাসিনা সরে যাওয়ার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে সামরিক সহযোগিতা দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ‘টাইগার লাইটনিং ২০২৫’ নামের একটি ছয় দিনের যৌথ মহড়া জুলাই মাসে সিলেটের জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্টে অনুষ্ঠিত হয়। এতে যুক্তরাষ্ট্রের নেভাডা ন্যাশনাল গার্ড এবং বাংলাদেশের প্যারা কমান্ডো ব্রিগেড অংশ নেয়। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের মতে, চট্টগ্রাম অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমবর্ধমান উপস্থিতি ভারতের জন্য একটি কৌশলগত সতর্ক সংকেত হতে পারে। চট্টগ্রাম ভারতের ত্রিপুরা, মিজোরাম ও মায়ানমার সীমান্তের কাছাকাছি। আমেরিক যদি এই অঞ্চলকে লজিস্টিক হাব বা গোয়েন্দা তৎপরতার কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলে, তাহলে তা ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় নিরাপত্তায় প্রভাব ফেলতে পারে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র ও চিন—উভয় দেশই মায়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াচ্ছে, যা ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বিদ্রোহী তৎপরতা ও শরণার্থী সঙ্কটকে জটিল করে তুলতে পারে। এখনো পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের যৌথ তৎপরতা মানবিক ও প্রশিক্ষণমূলক দাবি করা হলেও, ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিষয়টি সরলভাবে দেখার সুযোগ নেই।

  • Operation Sindoor: “পাকিস্তানের যে কোনও জায়গায় আক্রমণ করতে পারে ভারত”, দাবি প্রাক্তন মার্কিন সেনাকর্তার

    Operation Sindoor: “পাকিস্তানের যে কোনও জায়গায় আক্রমণ করতে পারে ভারত”, দাবি প্রাক্তন মার্কিন সেনাকর্তার

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: “ভারত আক্রমণাত্মক ও প্রতিরক্ষামূলক উভয় ক্ষেত্রেই শ্রেষ্ঠত্ব দেখিয়েছে। এর মাধ্যমে এই বার্তা দেওয়া হয়েছে যে, পাকিস্তানের যে কোনও জায়গায়, যে কোনও সময় আক্রমণ করতে পারে ভারত।” অপারেশন সিঁদুরের (Operation Sindoor) প্রেক্ষিতে কথাগুলি বললেন মার্কিন সেনার প্রাক্তন রণকৌশলবিদ (US Army Warfare Expert)।

    অপারেশন সিঁদুর (Operation Sindoor)

    পহেলগাঁও হত্যাকাণ্ডের জেরে পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরে জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস করতে অপারেশন সিঁদুর চালায় ভারত। পড়শি দেশের বেশ কয়েকটি জঙ্গিঘাঁটিকে দুরমুশ করে দিয়েছে ভারত। নয়াদিল্লির এই অপারেশন উচ্চ প্রশংসিত হয়েছে তামাম বিশ্বে। এই অভিযানের মাধ্যমে ভারত কেবল পাকিস্তানের জঙ্গিঘাঁটিই ধ্বংস করেনি, পাকিস্তানি বায়ুসেনার প্রায় এক ডজন বিমানঘাঁটিও ধ্বংস করেছে। তার পরেই অপারেশন সিঁদুরের প্রশংসায় পঞ্চমুখ যুদ্ধবিশারদরা।

    মার্কিন সমর বিশেষজ্ঞের বক্তব্য

    সংবাদ মাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে মার্কিন সমর বিশেষজ্ঞ অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল জন স্পেন্সার বলেন, “যে চিনা বায়ু প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ব্যবহার করে পাকিস্তান, তা ভারতের ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্রের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দাঁড়াতেই পারবে না।” স্পেন্সার বলেন, “পাকিস্তানের গভীরে আক্রমণের বিরুদ্ধে ভারত সফলভাবে আত্মরক্ষা করতে সক্ষম হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে পাকিস্তানি ড্রোন আক্রমণ এবং উচ্চ গতির ক্ষেপণাস্ত্র।”

    স্পেন্সার বর্তমানে মডার্ন ওয়ারফেয়ার ইনস্টিটিউটের আরবান ওয়ারফেয়ার স্টাডিজের চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, “পাকিস্তানের ব্যবহৃত চিনা বায়ু প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করার জন্য ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্রের ক্ষমতা ভারতের উন্নত সামরিক সক্ষমতার (Operation Sindoor) প্রমাণ। চিনা বায়ু প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং ক্ষেপণাস্ত্রগুলি ভারতের তুলনায় দুর্বল। ভারতের ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র চিনা ও পাকিস্তানি উভয় বায়ু প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করতে সক্ষম হয়েছিল।” এর পরেই তিনি বলেন, “ভারতের বার্তা স্পষ্ট ছিল। এটি যে কোনও সময় পাকিস্তানের যে কোনও জায়গায় আঘাত হানতে পারে।”

    প্রসঙ্গত, ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর সব চেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র। এটি ভূপৃষ্ঠের যে কোনও জায়গা থেকে এবং সমুদ্রের সাবমেরিন থেকে, আকাশে যুদ্ধবিমান থেকে এবং স্থলে লঞ্চার থেকে নিক্ষেপ করা যেতে পারে (US Army Warfare Expert)। এটিই বিশ্বের একমাত্র ক্ষেপণাস্ত্র যা চারটি উৎক্ষেপণ প্ল্যাটফর্ম থেকে নিক্ষেপ করার ক্ষমতা রাখে (Operation Sindoor)।

  • Area 51: আমেরিকার ‘Area 51’ কি ভিনগ্রহের প্রাণীদের নিয়ে গুপ্ত গবেষণাস্থল? কী রহস্য লুকিয়ে?

    Area 51: আমেরিকার ‘Area 51’ কি ভিনগ্রহের প্রাণীদের নিয়ে গুপ্ত গবেষণাস্থল? কী রহস্য লুকিয়ে?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: এলিয়েন বা ভিনগ্রহের প্রাণীদের নিয়ে উৎসাহ নেই, এরকম মানুষ খুব কমই আছে। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে এই ভিনগ্রহের প্রাণীদের নিয়ে বিভিন্ন তথ্য উঠে এসেছে। কিছু দেশ এই ভিনগ্রহের প্রাণীদের অস্তিত্ব নিয়ে সদর্থক মতামত প্রকাশ করেছে, কেউ কেউ আবার ইউএফও দেখতে পাওয়ার দাবিও করেছেন। এই ধরনের বহু তথ্য ইন্টারনেট ঘাঁটলে আমরা দেখতে পাই। তবে যে বিষয় নিয়ে এই প্রতিবেদন, সেটি হল আমেরিকার ‘Area 51’ বলে একটি স্থান, যেখানে কয়েক বছর থেকে স্থানীয়রা দাবি করে আসছেন, সেখানে কিছু গুপ্ত গবেষণা করা হয় ভিনগ্রহের প্রাণীদের নিয়ে। অনেকে সেখানে ইউএফও দেখার দাবিও করেছেন। আর সেগুলি আমেরিকান সেনা বরাবর সাধারণের থেকে লুকিয়ে এসেছে বলে অভিযোগ। এগুলি মিথ না মিথ্যা, তা নিয়েও অনেক জলঘোলা হয়েছে।

    কী এই Area 51, যা নিয়ে আমেরিকাবাসী ও বিশ্ববাসীর এত উৎসাহ?

    এরিয়া 51 হল আমেরিকার নেভাডা টেস্ট অ্যান্ড ট্রেনিং রেঞ্জের অন্তর্গত মরুভূমির গ্রুম হ্রদের তীরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিমান বাহিনীর (ইউএসএএফ) একটি উচ্চ শ্রেণিবদ্ধ অপারেশন ঘাঁটি। এটি নানারকম সামরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা, গবেষণা ও প্রশিক্ষণের কেন্দ্র। এটি একটি বিরাট গোপন সামরিক বিমানঘাঁটি, যেখানে সাধারণ মানুষের প্রবেশ নিষেধ। এই এরিয়া 51-এর মূল উদ্দেশ্য হল, পরীক্ষামূলক উড়োজাহাজ তৈরি, অস্ত্রশস্ত্রের সিস্টেমের পরীক্ষা প্রভৃতি।

    Area 51 কেন বরাবর মানুষের চর্চার বিষয়? কী এমন হয় সেখানে?

    এই স্থানটি সবসময় চর্চায় উঠে আসার মূল কেন্দ্রবিন্দু হল, এই এরিয়া 51 কে ঘিরে গড়ে ওঠা ভিনগ্রহের প্রাণীদের সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য। এরিয়া ৫১ এর জল্পনা শুরু হয় ১৯৪৭ সালে রোসোয়েল নামক এক জায়গায় একটি বিমান দুর্ঘটনার পর থেকেই। বিমান দুর্ঘটনার পর বিমানের ভেঙে যাওয়া অনেক টুকরো সেখান থেকে উদ্ধার করা হয় এবং সেই টুকরোগুলি সাধারণ মানুষের হাতে আসে। পরে তাঁরা বুঝতে পারেন, সেই টুকরোগুলি সাধারণ কোনও বিমানের অংশ নয়। অনেকে তখন থেকে মনে করেন, সেগুলি ছিল কোনও স্পেসশিপ-এর টুকরো, যার চালক ছিল ভিনগ্রহের কোনও প্রাণী। এমনও শোনা যায়, সেখান থেকে জীবিত ভিনগ্রহের প্রাণীটিকে উদ্ধার করে ইউএস আর্মি এবং সেটিকে Area 51 এ নিয়ে যায়। সেখানে সেই এলিয়েনটিকে নিয়ে নানা গবেষণা তাঁরা করেন। এখনও সেখানেই নাকি রাখা আছে সেই ভিনগ্রহের প্রাণীটি। 

    Area 51 এর বিজ্ঞানীরা সেই এলিয়েনটিকে গবেষণার মাধ্যমে তাঁদের ব্যবহৃত প্রযুক্তিকে রপ্ত করতে চাইছেন, যা আমাদের পৃথিবীর সামরিক শক্তিকে হয়তো আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে। কিন্তু এসব রটে যাওয়ার পরেই ইউএস আর্মি মুখ খোলে এবং জানায়, সেখানে কোনও স্পেসশিপের দুর্ঘটনা ঘটেনি। যেসব টুকরো সেখান থেকে পাওয়া গেছে, সেগুলি একটি বড় ওয়েদার বেলুনের। এখানে এলিয়েন থিওরিকে জুড়ে দেওয়া সম্পূর্ণ রটনা মাত্র। অন্যদিকে সম্পূর্ণ বিষয়টি গোপন করা হয় বলে দাবি তুলতে থাকে সাধারণ মানুষ। এরপর থেকেই এরকম নানা ঘটনা এই এরিয়া 51  কে কেন্দ্র করে ঘটতে থাকে।

    অনেকবার শিরোনামে উঠে আসে এই Area 51, কিন্তু কেন?

    এই Area 51 কে নিয়ে বিভিন্ন রটনার পরিপ্রেক্ষিতে এবার মুখ খোলে আমেরিকান সরকার। সরকারের তরফে জানানো হয়, গুপ্তচর সংস্থা সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি ১৯৫৫ সালে যুদ্ধ বিমানের পরীক্ষার জন্য প্রথম এই জায়গাটিকে ঘাঁটি হিসেবে তৈরি করে এবং এই প্রজেক্টের নাম দেওয়া হয় ‘অ্যাকোয়াটোন’। ‘লকহিড ইউ-২’ নামক এক ইঞ্জিনের গবেষণা ও পরীক্ষা এখানে করা হয়, যা সাধারণ যুদ্ধ বিমানের থেকে আরও বেশি উচ্চতায় উড়তে সক্ষম। এর পরেও ‘ড্রাগন লেডি’ নামক এক যুদ্ধ  বিমানের পরীক্ষামূলক উড়ান এই Area 51 থেকেই লোকচক্ষুর আড়ালে করা হয়। ১৯৫৫ সালে এই যুদ্ধ বিমানের পরীক্ষামূলক উড়ান শুরু হওয়ার পর থেকেই স্পেসশিপ দেখতে পাওয়ার অভিযোগ উঠতে থাকে। সাধারণ মানুষের তরফ থেকে দাবি উঠতে থাকে, কোনও সাধারণ যুদ্ধবিমান এত উচ্চতায় উড়তে পারে না। জানা যায়, বিমানটি ৪৫ হাজার ফুট উচ্চতায় উঠতে সক্ষম। মানুষ দাবি করতে থাকে, এত উচ্চতায় উড়তে সক্ষম কোনও বিমান সাধারণ বিমান নয়, এটি একটি স্পেসশিপ যা এরিয়া ৫১ সবসময় সাধারণ মানুষের কাছ থেকে লুকিয়ে এসেছে। এত উচ্চতায় ওড়ার ঘটনা আবার ভিনগ্রহীদের অস্তিত্বের যুক্তিকে তুলে আনে। মার্কিন সেনাবাহিনী অবশ্য আজও এই বিষয়ে কোনও তথ্য জনসমক্ষে জানায়নি। ভিনগ্রহীদের উপস্থিতিকে তারা গুজব বলেই দাবি করে এসেছে চিরকাল।

    কী দেখেছেন পাশের গ্রামের বাসিন্দারা?

    আবার এই Area 51 এর পাশেই একটি গ্রাম আছে, যেখানকার বাসিন্দারা দাবি করেন, এই স্থানে অনেকরকম অসংগতিপূর্ণ জিনিস দেখা যায়। রাতের আকাশে অনেক লাইটকে একসঙ্গে উড়তে এবং নিচে নেমে আসতে দেখেছেন তাঁরা। তাঁরাও বিশ্বাস করেন, এর ভিতর এমন কিছু একটা হয়, যেটা সরকার ও ইউএস আর্মির পক্ষ থেকে সবসময় সাধারণ মানুষের কাছে লুকিয়ে রাখা হয়েছে। এরিয়া ৫১ এর জায়গায় প্রায় কয়েক কিলোমিটার দূরে সাধারণ মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ করে সতর্কবার্তা দিয়ে রেখেছে কর্তৃপক্ষ, যেখানে ছবি তোলা নিষেধ ও আগে যাওয়া নিষেধ বলে লেখা আছে। অন্যথায় শাস্তি পর্যন্ত হতে পারে বলে উল্লেখ করা আছে। এলিয়েন থিওরি বা স্পেসশিপ থিওরি সত্যি হোক বা মিথ্যা, এই এরিয়া ৫১ আজও সক্রিয় এবং অনেক সাধারণ মানুষের কৌতূহলের স্থান হিসাবেই বিবেচিত।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

LinkedIn
Share