মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ভারতকে ‘তাঁবে’ রাখতে গিয়ে নিজের পায়েই নিজে কুড়ুল মেরেছেন ৪৭তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প! দু’দফায় ভারতীয় পণ্যের ওপর মোট ৫০ শতাংশ (US GDP) শুল্ক আরোপ (Trumps Tariffs) করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। যার জেরে চিড় ধরেছে ভারত-মার্কিন সম্পর্কে। শুধু তাই নয়, ভারতকে ‘শিক্ষা’ দিতে গিয়ে নিজেই উচিত শিক্ষা পেয়ে গিয়েছেন ট্রাম্প। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, সেই কারণেই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চারবার ফোন করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। যদিও একবারও ফোন ধরেননি ‘মিস্টার প্রাইম মিনিস্টার’ নরেন্দ্র মোদি। সম্প্রতি ভারত-মার্কিন অর্থনীতিতে অতিরিক্ত শুল্কের প্রভাব নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ পেয়েছে। সেখানেই দেখা গিয়েছে, ভারতকে চাপে রাখতে গিয়ে নিজেই বিপাকে পড়েছে ট্রাম্পের দেশ।
ভারতীয় পণ্যের ওপর চড়়া শুল্ক আরোপ (Trumps Tariffs)
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের আবহেও মস্কো থেকে অপরিশোধিত জ্বালানি কেনায় ভারতীয় পণ্যের ওপর প্রথমে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে ট্রাম্প প্রশাসন। পরে ফের একপ্রস্ত শুল্ক আরোপ করা হয়। সব মিলিয়ে ভারতীয় পণ্যের ওপর মোট ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপানো হয়। ২৭ অগাস্ট সকাল ৯টা ১৫ মিনিট থেকেই এই নয়া শুল্কহার কার্যকর হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, তার জেরেই খাদের কিনারায় গিয়ে দাঁড়িয়ে গিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।
এসবিআইয়ের রিপোর্ট
স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, ভারতের ওপর চড়া শুল্ক আরোপ করার বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে মার্কিন অর্থনীতিতে। এর ফলে অতল গহ্বরে তলিয়ে যেতে পারে মার্কিন অর্থনীতি। শুধু তাই নয়, এটি মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি করলেও, বড় ধাক্কা দিতে পারে প্রবৃদ্ধিতে। এসবিআইয়ের রিসার্চের একটি নোটে বলা হয়েছে, “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আবারও মূল্যস্ফীতির চাপের ইঙ্গিত দিচ্ছে, যা মূলত সাম্প্রতিক শুল্ক আরোপ ও দুর্বল ডলারের প্রভাব থেকে উদ্ভূত। বিশেষ করে আমদানি-নির্ভর খাতগুলি যেমন ইলেকট্রনিক্স, গাড়ি এবং টেকসই ভোগ্যপণ্যে এর প্রভাব স্পষ্ট হচ্ছে (Trumps Tariffs)।”
এসবিআইয়ের রিপোর্টে বলা হয়েছে, নয়া শুল্কহারের কারণে আমেরিকার জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমতে পারে ৪০-৫০ বেসিস পয়েন্ট। শুধু তাই নয়, দুর্বল মার্কিন ডলার ও ব্যয়মূল্য বৃদ্ধির কারণেও ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাবে মুদ্রাস্ফীতিও। ওই রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, ২০২৬ সালে মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা ২ শতাংশ। তবে এই হার তার চেয়েও অনেক বেশি হতে চলেছে। এর মূল কারণ চড়া হারে শুল্ক চাপানোর প্রভাব।
জানা গিয়েছে, মার্কিন পাইকারি দামের ক্ষেত্রে গত তিন বছরের মধ্যে সব চেয়ে বড় মাসিক বৃদ্ধি রেকর্ড হয়েছে, যেখানে জুলাই মাসে লাফিয়েছে প্রায় ১ শতাংশ। বছরে ৩.৩ শতাংশ হারে বেড়েছে প্রডিউসার প্রাইস ইনডেক্স। শুল্ক-সংবেদনশীল আমদানি করা পণ্য যেমন আসবাবপত্র, পোশাক, প্রক্রিয়াজাত সামগ্রী এবং পরিষেবার ক্ষেত্রে (US GDP) সব চেয়ে তীব্র দামের বৃদ্ধি লক্ষ্য করা গিয়েছে (Trumps Tariffs)।