Category: পরম্পরা

Get updated History and Heritage and Culture and Religion related news from the Madhyom news portal madhyom.com, West Bengal leading news portal Madhyom.com

  • kalpataru Utsav: ‘কল্পতরু উৎসব’-এর মাহাত্ম্য জানুন

    kalpataru Utsav: ‘কল্পতরু উৎসব’-এর মাহাত্ম্য জানুন

    শুভ্র চট্টোপাধ্যায়: নতুন বছরের পয়লা দিন বলে কথা। তারপর আবার রবিবার। শীতের আমেজ বাঙালি উপভোগ করবে পিকনিকের আনন্দে। এ আর নতুন কী! তবে ফি বছর ১ জানুয়ারির গুরুত্ব বাঙালির কাছে অন্যভাবেও রয়েছে, এদিন কল্পতর উৎসব (kalpataru Utsav)। এদিনই বিশ্ব বিখ্যাত হিন্দু ধর্মের প্রচারক স্বামী বিবেকানন্দের গুরু, ঠাকুর শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব তাঁর শিষ্যদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, “তোমাদের চৈতন্য হউক”। 

    ঠাকুরের সংক্ষিপ্ত জীবনী

    পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার আরামবাগ মহকুমার কামারপুকুর গ্রামে ১৮৩৬ সালের ১৮ই ফেব্রুয়ারি এক দরিদ্র বৈষ্ণব ক্ষুদিরাম চট্টোপাধ্যায় এবং চন্দ্রমণি দেবীর সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়। কথিত আছে সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার আগে গয়া তীর্থ ভ্রমণে গিয়ে ক্ষুদিরাম চট্টোপাধ্যায়, গদাধর বিষ্ণুকে স্বপ্নে দর্শন করেন। তাই নিজের চতুর্থ সন্তানের নাম তিনি রাখলেন গদাধর চট্টোপাধ্যায়। দাদা রামকুমার চট্টোপাধ্যায়ের হাত ধরে ১৮৫৫ সালে গদাধর চট্টোপাধ্যায়ের কলকাতায় আগমন ঘটে। কারণ মাহিষ্য সমাজের জমিদার পত্নী রানী রাসমণি দক্ষিণেশ্বরে কালীমন্দির প্রতিষ্ঠা করেছেন। রানীমা প্রধান পুরোহিতের দায়িত্বভার অর্পণ করেছেন কামারপুকুরের রামকুমারের হাতে। তরুণ গদাধর দাদাকে পূজা-অর্চনাতে সাহায্য করবেন। ১ বছরের মধ্যে ছন্দপতন। আকস্মিকভাবেই ১৮৫৬ সালে মৃত্যু হল রামকুমার চট্টোপাধ্যায়ের। তাঁর স্থলাভিষিক্ত হলেন গদাধর চট্টোপাধ্যায়। দক্ষিণেশ্বর কালীমন্দিরের প্রধান পুরোহিতের দায়িত্বভার গ্রহণ করলেন তিনি। মন্দিরের ঠিক উত্তর-পশ্চিম কোনে তরুণ পুরোহিতের জন্য একটি ছোট্ট ঘর বরাদ্দ করা হল। শোনা যায় এরপরেই রানী রাসমনির জামাতা মথুর বাবু গদাধর চট্টোপাধ্যায়ের নামকরণ রামকৃষ্ণ করেন, তবে এ নিয়ে বিভিন্ন মত রয়েছে, কেউ কেউ বলেন যে তাঁর এই নামকরণ করেন ঠাকুরের অন্যতম গুরু তোতাপুরী। প্রথাগত শিক্ষা তাঁর কিছুই ছিলনা সেভাবে। কিন্তু মুখে মুখে বলে দিতেন হিন্দু শাস্ত্রের সমস্ত গূঢ়তত্ত্ব, অতি সরলভাষায়, একেবারে গল্পের ছলে। এজন্য তাঁকে গল্পের রাজাও বলা হয়। পরবর্তীকালে তাঁর এই বাণী সংকলিত হয় কথামৃত নামক গ্রন্থে। এরমধ্যে ঠাকুরের বিবাহ সম্পন্ন হয় কামারপুকুরের তিন মাইল উত্তর-পশ্চিমে জয়রামবাটী গ্রামের রামচন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের কন্যা সারদাদেবীর সঙ্গে। সেটা ১৮৫৯ সালে। এতদিনে বঙ্গীয় শিক্ষিত সমাজ তাঁকে গুরুর আসনে বসিয়ে ফেলেছে। শিষ্য তালিকায় স্থান পেয়েছেন কেশব চন্দ্র সেন সমেত অন্যান্য গন্যমান্যরা। 

    ১ জানুয়ারী ১৮৮৬

     শরীরে মারণ রোগ বাসা বাঁধলে, ডাক্তার মহেন্দ্রলাল সরকারের নির্দেশে তিনি নিজেকে গৃহবন্দী রাখেন প্রায় এক মাস। ১৮৮৬ খ্রিস্টাব্দের ১ জানুয়ারি কাশীপুর উদ্যান বাড়িতে উপস্থিত রয়েছেন প্রায় ৩০ জন মতো গৃহী ভক্ত। সকলে হাতে ফুল নিয়ে উপস্থিত। আজ ঠাকুরের দর্শন পাওয়া যাবে। ঘড়ির কাঁটায় তখন ঠিক দুপুর তিনটে। দোতলা ঘর থেকে তিনি নেমে এলেন বাগানে। পরনে সেই চিরাচরিত পোশাক। লাল পেড়ে ধুতি। উপস্থিত গৃহী ভক্তরা তাঁদের হাতে রাখা ফুল ঠাকুরের চরণে অঞ্জলি দিতে থাকেন। কথিত আছে, ঠাকুর তখন নাট্যকার গিরিশ ঘোষকে বলেন, “হ্যাঁ গো,তুমি যে আমার নামে এত কিছু চারিদিকে বলো, তো আমি আসলে কী”? গিরিশ ঘোষ উত্তর দিলেন, “তুমিই নররূপ ধারী পূর্ণব্রহ্ম ভগবান, আমার মত পাপী তাপীদের মুক্তির জন্যই তোমার মর্ত্যে আগমন”। সবাই তখন ঠাকুরের চরণ স্পর্শ করল এবং ঠাকুর বললেন, “তোমাদের চৈতন্য হউক”।

    কিন্তু এদিনের উৎসবকে কল্পতরু (kalpataru Utsav) কেন বলা হয়?

    এর জন্য অবশ্য আমাদের পুরাণে ফিরতে হবে। হরিবংশ ইত্যাদি পুরাণে ‘কল্পতরু’র (kalpataru Utsav) উল্লেখ রয়েছে। দেবতা এবং অসুরদের মধ্যে সমুদ্র মন্থন হয়েছিল, পুরাণ অনুযায়ী সমুদ্র মন্থনকালে অমৃত, লক্ষ্মীদেবী, ঐরাবত ইত্যাদির সঙ্গে উঠে আসে একটি বৃক্ষ-ও। যাকে পারিজাত বৃক্ষ বলা হতো। পরবর্তীতে দেবরাজ ইন্দ্রের বিখ্যাত নন্দনকাননের স্থান পায় এই পারিজাত বৃক্ষ এবং সেখান থেকে স্ত্রী সত্যভামার আবদারে শ্রীকৃষ্ণ পৃথিবীতে নিয়ে আসেন এই বৃক্ষ। এই পারিজাত বৃক্ষকে-ই ‘কল্পতরু’ বলা হয়েছে। অর্থাৎ সেই বৃক্ষ, যার কাছে যা চাওয়া হয় তাই পাওয়া যায়। কল্পতরু উৎসবের (kalpataru Utsav) দিন ঠাকুরের ভক্তরা তাঁকে অবতার রূপে মেনে নেন। কথিত আছে, সেদিন উপস্থিত সমস্ত ভক্তের মনোবাঞ্ছা ঠাকুরের কৃপায় পূরণ হয়েছিল। ভক্তদের বিশ্বাস রয়েছে, এই দিন ঠাকুর রামকৃষ্ণদেব সকলের মনের ইচ্ছা পূরণ করেন।

     

      দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।    

  • Mathematics in Ancient India: প্রাচীন ভারতের গণিত চর্চা

    Mathematics in Ancient India: প্রাচীন ভারতের গণিত চর্চা

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আগের দুটি পর্বে আমরা প্রাচীন ভারতের বেদ এবং ঋষিদের ভূমিকা, প্রাচীন ভারতের বিজ্ঞান চর্চা নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা করেছি। বিশ্বের গণিত কোষকে প্রাচীন ভারত নানাভাবে সমৃদ্ধ করেছে। আজকে আমরা প্রাচীন ভারতের কয়েকজন বিখ্যাত গণিতজ্ঞ এবং গণিত ক্ষেত্রে তাঁদের অবদান (Mathematics in Ancient India) নিয়ে আলোচনা করব।

    প্রথম পর্ব: সনাতন ধর্মে ঋষি এবং বেদের ভূমিকা জানুন

    ১) মহর্ষি বৌধায়ন

    বৃত্তের অঙ্ক আমরা সবাই করেছি। বৃত্তের ক্ষেত্রফল নির্ণয় হোক বা বৃত্তের পরিধি নির্ণয়, গণনাতে π অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা জানি π এর মান ২২/৭। কিন্তু জানেন কী আনুষ্ঠানিকভাবে π আবিষ্কারের আগে ভারতবর্ষের এক গণিতজ্ঞ (Mathematics in Ancient India) এটা সম্পর্কে ধারণা দিয়ে গিয়েছিলেন তাঁর বইতে। এই বিখ্যাত গনিতজ্ঞের নাম ছিল মহর্ষি বৌধায়ন। তাঁর লেখা বৌধায়ন সুল্বা সূত্র গ্রন্থে এসম্পর্কে তিনি বিস্তৃত ব্যাখ্যা করেছেন। মূলত জ্যামিতির উপরে লেখা এই বইতে তিনি অসংখ্য উপপাদ্য সংকলন করেছেন। 

    দ্বিতীয় পর্ব: আলোর গতিবেগ, মহাকর্ষ বল, পৃথিবী ও সূর্যের দূরত্ব নির্ণয়ের বিষয়ে বেদে কী বলা আছে জানেন?

    মহর্ষি বৌধায়ন জ্যামিতিতে পিথাগোরাসের উপপাদ্যের বিকল্প প্রমাণ দিতে পেরেছিলেন। পিথাগোরাসের জন্মেরও কয়েকশত বছর আগে বৌধায়ন এই পিথাগোরাসের উপপাদ্যের মত একটি উপপাদ্য লেখেন।

    এছাড়াও বৌধায়ন ‘২’-সংখ্যাটির বর্গমূল বের করার চেষ্টা করেছিলেন; যার মান পেয়েছিলেন ১.৪১৪২১৬, যা দশমিকের পর পাঁচ অঙ্ক পর্যন্ত সঠিক ছিল।

    ২) মহর্ষি আর্যভট্ট

    মহর্ষি আর্যভট্ট প্রাচীন ভারতের সবচেয়ে বিখ্যাত গণিতবিদদের (Mathematics in Ancient India) মধ্যে একজন। ভারতের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহের নাম তাঁর প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য জানিয়ে  “আর্যভট্ট” রাখা হয়।
    আর্যভট্টের অন্যতম ভাষ্যকার প্রথম ভাস্করের ভাষ্য অনুযায়ী মহান এই গণিতজ্ঞের জন্ম হয়েছিল অশ্মকা নামের একটি জায়গায়। প্রাচীন বৌদ্ধ এবং হিন্দু রীতিতে এই জায়গাটিকে নর্মদা এবং গোদাবরী নদীর মধ্যবর্তী স্থানে দক্ষিণ গুজরাত এবং উত্তর মহারাষ্ট্রের আশেপাশের একটি জায়গা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। একাধারে আর্যভট্ট ছিলেন সুমহান গণিতজ্ঞ, জ্যোতির্বিজ্ঞানী, জ্যোতিষী এবং একজন পদার্থবিজ্ঞানী। তাঁর আবিষ্কার এবং গবেষণা সমস্ত কিছু সংকলিত হয়ে রয়েছে “The Aryabhattiya” এই বইতে। এখানে লিপিবদ্ধ রয়েছে আধুনিক গণিতের বিভিন্ন তত্ত্ব, দশমিক পদ্ধতি, সংখ্যাতত্ত্ব, ত্রিকোণমিতি, জ্যামিতি এবং জ্যোতির্বিদ্যার বিভিন্ন বিষয়। 
    গণিতের (Mathematics in Ancient India) উপর তাঁর কাজকে তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়।
    প্রথমভাগ হল, গণিত (Mathematics)
    দ্বিতীয়ভাগ হল, কাল-ক্রিয়া (Time Calculation)
    তৃতীয়ভাগ হল, গোল (Sphere) 

    প্রথমভাগ অর্থাৎ গণিতে তিনি সংকলিত করেছেন দশমিক পদ্ধতিগুলি এবং তার সঙ্গে π এর মানও তিনি নির্ণয় করেছেন। আর্যভট্ট π এর মান নির্ণয় করেছিলেন, ৩.১৪১৬ । আধুনিক গণিতজ্ঞরা π এর মান নির্ণয় করেছেন ৩.১৪১৫৯ যা কিনা প্রাচীন ভারতীয় গণিতজ্ঞ (Mathematics in Ancient India) আর্যভট্টের গণনার মানের একেবারে কাছাকাছি।

    দ্বিতীয়ভাগ অর্থাৎ কাল-ক্রিয়াতে জ্যোতির্বিজ্ঞানের বিভিন্ন তত্ত্বকে তিনি লিপিবদ্ধ করেছেন। এখানেই সংকলিত রয়েছে সূর্যকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন গ্রহের নিজ কক্ষপথে পরিভ্রমণের গতি সংক্রান্ত তত্ত্ব।

     তৃতীয়ভাগ অর্থাৎ গোল, এখানে রয়েছে প্রায়োগিক ত্রিকোণমিতি এবং জ্যামিতির বিভিন্ন তত্ত্ব।
    আর্যভট্ট শূন্য আবিষ্কার করেছিলেন, যেটি গণিতের ক্ষেত্রে প্রাচীন ভারতের একটি বড় অবদান (Mathematics in Ancient India)।

    ৩) মহর্ষি ব্রহ্মগুপ্ত

    প্রাচীন ভারতের অন্যতম খ্যাতনামা গণিতজ্ঞ (Mathematics in Ancient India) ছিলেন মহর্ষি ব্রহ্মগুপ্ত। শূন্যের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য তিনি লিপিবদ্ধ করে গেছেন। প্রাচীন ভারতের জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চার অন্যতম কেন্দ্র “astronomical observatory of Ujjain”-এর তিনিই ছিলেন প্রধান। সমগ্র জীবনে তিনি চারটি বই লিখেছিলেন, জ্যোতির্বিজ্ঞান এবং গণিতের বিভিন্ন তত্ত্ব নিয়ে। তার মধ্যে অন্যতম বিখ্যাত বইটি হল ব্রহ্ম-ষ্পুত্র-সিদ্ধান্ত।
    তিনি উল্লেখ করে গেছেন যে এক বছর মানে হল ৩৬৫ দিন ৬ ঘন্টা ১২ মিনিট ৯ সেকেন্ড। প্রাচীন এই গণিতজ্ঞ গণনা করেছিলেন পৃথিবীর পরিধি। গণনায় মান এসেছিল ৩৬০০০ কিলোমিটার বা ২২,৫০০ মাইল। ধনাত্মক এবং ঋণাত্মক সংখ্যা সম্পর্কেও তিনি ধারণা দিতে পেরেছিলেন।

    ৪) মহর্ষি দ্বিতীয় ভাস্করাচার্য

    মহর্ষি দ্বিতীয় ভাস্করাচার্য একজন খ্যাতনামা প্রাচীন ভারতীয় গণিতজ্ঞ (Mathematics in Ancient India) এবং জ্যোতির্বিজ্ঞানী ছিলেন। যিনি ব্রহ্মগুপ্তের সংখ্যাতত্ত্বের উপর কাজ করেছিলেন। তাঁর কাজ সংকলিত আছে ছটি খন্ডে। এগুলি হল
    লীলাবতী- Mathematics
    বীজগণিত- Algebra
    গণিত অধ্যায়- Mathematical Astronomy
    গোল অধ্যায়- Sphere
    কর্ণকুটুহল- Calculation of Astronomical on dots
    ভাসানভাষ্য- সিদ্ধান্ত শিরোমণির উপর ভাস্করাচার্যের নিজের বক্তব্য লিপিবদ্ধ রয়েছে এই গ্রন্থে।
    বিবরণ- এটিও তাঁর বক্তব্য একটি সংকলন।
    সিদ্ধান্ত শিরোমনি গ্রন্থে তিনি বিভিন্ন গ্রহের অবস্থান সম্পর্কে আলোচনা করেছেন।
    অন্যদিকে তাঁর রচিত সূর্যসিদ্ধান্ত গ্রন্থটিতে তিনি অভিকর্ষ বল সম্পর্কে আলোচনা করেছেন।

    প্রাচীন ভারতের বিভিন্ন গণিতজ্ঞ (Mathematics in Ancient India) সারা বিশ্বের গণিত চর্চা কে সমৃদ্ধ করেছেন। শূন্য আবিষ্কার,ত্রিকোণমিতি, বীজগণিত, জ্যামিতি, জ্যোতিষ বিজ্ঞানের বিভিন্ন তত্ত্ব, অ্যালগরিদম ইত্যাদির দ্বারা। প্রাচীন ভারতের গণিত চর্চায় (Mathematics in Ancient India) আরও যে নামগুলি উল্লেখ করতেই হবে সেগুলি হল হলায়ুধ, ভদ্রবাহ, মহাবীর, জয়দেব, হেমচন্দ্র, বীরসেনা ইত্যাদি।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ। 

     

     

  • Veer Bal Diwas: আজ ‘বীর বাল দিবস’, জানুন দশম শিখ গুরুর চারপুত্রের বীরত্বগাথার কাহিনী

    Veer Bal Diwas: আজ ‘বীর বাল দিবস’, জানুন দশম শিখ গুরুর চারপুত্রের বীরত্বগাথার কাহিনী

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: শিখদের নবম গুরু তেগবাহাদুরের মুন্ডচ্ছেদ করেছিলেন মুঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেব। বিধর্মীদের কাছে আত্মসমর্পণ অথবা মৃত্যুর মধ্যে মৃত্যুকেই সেদিন বেছে নিয়েছিলেন বীর তেগ বাহাদুর সিং। গুরু তেগ বাহাদুরের মৃত্যুর পর তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন গুরু গোবিন্দ সিং তখন তার বয়স মাত্র ৯ বছর।

    একদিকে গুরু গোবিন্দ সিং ছিলেন নেতা, যোদ্ধা, কবি ও দার্শনিক। শিখদের পঞ্চ ‘ক’ অর্থাৎ কেশ, কাঙা, কারা, কৃপান ও কাচ্চেরার ঐতিহ্যের প্রচলনের পাশাপাশি শিখধর্মের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ গুরু গ্রন্থসাহিবকে শিখদের পরবর্তী ও চিরস্থায়ী গুরু হিসেবে ঘোষণাও করেন গোবিন্দ সিংই। গুরু গোবিন্দ সিংয়ের চার পুত্রের অসীম সাহসিকতা এবং বীরত্বগাথার (Veer Bal Divas) কথাই আজ আমরা জানব, যাঁদের  হত্যা করেছিল মোঘলরা। তাঁর চার পুত্রের নাম অজিত সিং, জুঝর সিং, জোরাওয়ার সিং এবং ফতেহ সিং। তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করতেই ২৬ ডিসেম্বর দিনটি ‘বীর বাল দিবস’ (Veer Bal Diwas) হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। গত ৯ জানুয়ারি এ কথা ঘোষণা করেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

    শোনা যায় মুঘলরা অতর্কিতে শিখদের একটি দুর্গ আক্রমণ করে। যেখানে গুরু গোবিন্দ সিং এর পরিবার থাকতো। গুরু গোবিন্দ সিং মুঘলদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে চাইলেও তাঁর বাহিনী তাঁকে চলে যেতে বলে। এর পর গুরু গোবিন্দ সিংয়ের পরিবারসহ অন্যান্য শিখরা ওই দুর্গ ছেড়ে চলে যান। সবাই যখন সরসা নদী পার হচ্ছিলেন, তখন জলের স্রোত এতটাই প্রবল হয়ে ওঠে যে, পুরো পরিবার আলাদা হয়ে যায়। বিচ্ছেদের পর গুরু গোবিন্দ সিং এবং দুই বড় সাহেবজাদা বাবা অজিত সিং এবং বাবা জুঝর সিং চমকৌরে পৌঁছাতে সক্ষম হন। মাতা গুজরি এবং দুই ছোট সাহেবজাদা বাবা জোরওয়ার সিং, বাবা ফতেহ সিং এবং গুরু সাহেব গাঙ্গু অন্যদের থেকে আলাদা হয়ে গিয়েছিলেন। এর পরে গাঙ্গু তাঁদের সবাইকে তাঁর বাড়িতে নিয়ে যান কিন্তু এই খবর কোনওভাবে মুঘলদের কাছে চলে যায়। এর পরে উজির খান মাতা গুজরি ও ছোট সাহেবজাদাকে বন্দি করেন।

    কয়েক লক্ষ মুঘলের সঙ্গে ৪০ জন শিখের প্রবল যুদ্ধ

    ২২ ডিসেম্বর চামকৌরের যুদ্ধ শুরু হয় যেখানে শিখ এবং মুঘল বাহিনী মুখোমুখি হয়। মাত্র ৪০ জন শিখের সঙ্গে কয়েক লক্ষ মোঘলের এক অসম যুদ্ধ। কিন্তু কী অসম্ভব বীরত্বের সাক্ষী থাকল সেদিনের চমকৌর।  গুরু গোবিন্দ সিং শিখদের উৎসাহ দেন এবং তাঁদের দৃঢ়তার সঙ্গে যুদ্ধ করতে বলেন। পরের দিনও এই যুদ্ধ চলতে থাকে। শিখদের যুদ্ধে শহিদ হতে দেখে  গুরু গোবিন্দ সিং-এর দুই পুত্র বাবা অজিত সিং এবং বাবা জুঝর সিং উভয়েই গুরু সাহেবের কাছে একে একে যুদ্ধে যাওয়ার অনুমতি চান। গুরু সাহেব তাঁদের অনুমতি দেন। একের পর এক মুঘলকে হত্যা করতে থাকেন দুই সাহেবজাদা। প্রবল যুদ্ধে তাঁরা বীরগতি (Veer Bal Diwas) লাভ করেন। কয়েক লক্ষ বাহিনীর সঙ্গে মাত্র কয়েকজনের এই যুদ্ধ ইতিহাসে অমর হয়ে আছে।

    হর্ষরণ কাউরের আত্মবলিদান

    কথিত আছে যে ২৪ ডিসেম্বর গুরু গোবিন্দ সিং এই যুদ্ধে প্রবেশ করতে চান। কিন্তু অন্য শিখরা তাঁকে আবারও বাধা দেন। বাধ্য হয়ে গুরু সাহেব সেখান থেকে চলে যান। এরপর গুরু গোবিন্দ সিং একটি গ্রামে পৌঁছান, সেখানে তিনি হর্ষরণ কৌরের সঙ্গে দেখা করেন। যুদ্ধে শহিদ হওয়া শিখ ও সাহেবজাদাদের কথা জানতে পেরে তিনি গোপনে চমকৌরে পৌঁছে শহিদদের শেষকৃত্য করতে শুরু করেন। কথিত আছে, মুঘলরা চায়নি যে বীরগতি প্রাপ্তদের শেষকৃত্য এভাবে হোক। তারা চেয়েছিল শকুন মৃতদেহ খেয়ে ফেলুক। মুঘল সৈন্যরা তখন হরশরণ কৌরকে দেখার সঙ্গে সঙ্গে তাঁকেও আগুনে পুড়িয়ে দেয় এবং তিনিও শহিদ হন।

    বাবা জোরওয়ার সিং এবং বাবা ফতেহ সিং-এর আত্মবলিদান

    ২৬ ডিসেম্বর সিরহিন্দের নওয়াজ ওয়াজির খান মাতা গুজরি এবং সাহেবজাদা বাবা জোরওয়ার সিং এবং বাবা ফতেহ সিং উভয়কেই বন্দি করেন। উজির খান উভয় সাহেবজাদাকে তাঁর দরবারে ডাকেন এবং তাঁদের ধর্মান্তরিত করার হুমকি দেন। কিন্তু উভয় সাহেবজাদাই ‘জো বোলে সো নিহাল, সত শ্রী আকাল’ স্লোগান দিতে দিতে ধর্মান্তরিত হতে অস্বীকার করেন। উজির খান আবার হুমকি দেন, একদিনের মধ্যে ধর্মান্তরিত না হলে মরতে হবে। কথিত আছে যে, পরের দিন বন্দি মাতা গুজরি উভয় সাহেবজাদাকে পরম ভালোবাসায় প্রস্তুত করে আবার উজির খানের দরবারে পাঠান। এখানে আবার উজির খান তাঁদের ধর্মান্তরিত হতে বলেন, কিন্তু সাহেবজাদারা অস্বীকার করেন এবং আবার স্লোগান দিতে থাকেন। এ কথা শুনে উজির খান ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন এবং উভয় সাহেবজাদাকে প্রাচীরের মধ্যে জীবন্ত কবর দেওয়ার নির্দেশ দেন এবং বাকি দুই সাহেবজাদা এভাবেই বীরগতি (Veer Bal Divas) প্রাপ্ত হন। এই খবর মাতা গুজরির কাছে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে তিনিও জীবন বিসর্জন দিয়েছিলেন।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।

     

  • Vedic Civilization: আলোর গতিবেগ, মহাকর্ষ বল, পৃথিবী ও সূর্যের দূরত্ব নির্ণয়ের বিষয়ে বেদে কী বলা আছে জানেন?

    Vedic Civilization: আলোর গতিবেগ, মহাকর্ষ বল, পৃথিবী ও সূর্যের দূরত্ব নির্ণয়ের বিষয়ে বেদে কী বলা আছে জানেন?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বিখ্যাত ভারতীয় গণিতজ্ঞ শ্রীনিবাস আয়েঙ্গার রামানুজন বলেছিলেন, “অঙ্কের সেই সূত্রটির কোনও গুরুত্ব আমার কাছে নেই যে সূত্রটি থেকে আমি আধ্যাত্মিক বিচার না পাই।” আগের পর্বে আমরা আলোচনা করেছি, এই আধ্যাত্মিক বিচারই হল বেদের ভিত্তি। বৈদিক সভ্যতায় (Vedic Civilization) ৬০টিরও বেশি বিষয় পড়ানো হত যেগুলো সম্পর্কে বিস্তৃত ব্যাখ্যা করা হয়েছে পূর্ববর্তী পর্বে। মহাকাশ বিজ্ঞান, চিকিৎসা বিজ্ঞান, প্রযুক্তিবিদ্যা এসব কিছুই বৈদিক সভ্যতার (Vedic Civilization) পঠন-পাঠনের অন্যতম বিষয় ছিল। যুক্তিবাদী বৈদিক সভ্যতা সবকিছুকেই যুক্তির কষ্টিপাথরে যাচাই করেছে। ঋকবৈদিক যুগের বিভিন্ন শ্লোকে উল্লেখ রয়েছে আলোর গতিবেগ নির্ণয় সূত্র, মহাকর্ষ বল এবং অভিকর্ষ বল সম্পর্কে। অর্থাৎ স্যার আইজ্যাক নিউটনের আবিষ্কারের অনেক আগেই মহাকর্ষ বল সম্পর্কে বৈদিক ঋষিদের ধারণা ছিল একথা দৃঢ়ভাবে বলা যায়। ডালটনের পরমাণুবাদ সপ্তম এবং অষ্টম শ্রেণীর থেকেই পড়ানোর রীতি রয়েছে ভারতের বিভিন্ন বোর্ডের সিলেবাসে এবং ডালটনের পরমাণুবাদের ব্যাখার আগে প্রতিটি লেখক যে ভূমিকাটি দেন সেখানে তাঁরা ভারতীয় দার্শনিক কনাদের কথা উল্লেখ করেন। পদার্থের ক্ষুদ্রতম কণা সম্পর্কে ধারণাও ভারতীয় দার্শনিকরা দিয়ে গেছেন। সে সময়ে প্রযুক্তি এত উন্নত ছিল না, রিসোর্সের অনেক অভাব ছিল তারপরেও এই সমস্ত ধারণা বেদে লিপিবদ্ধ করা রয়েছে বিভিন্ন শ্লোকের মাধ্যমে। যে সমস্ত বৈজ্ঞানিক ধারণা বেদে রয়েছে তারমধ্যে কিছু বৈজ্ঞানিক ধারণা সম্পর্কে আজকে আমরা জানব।

    প্রথম পর্ব: সনাতন ধর্মে ঋষি এবং বেদের ভূমিকা জানুন

    ১) আলোর গতিবেগ নিয়ে বেদের ব্যাখা

    স্কুল পাঠ্য বইতে আমরা সকলেই পড়েছি আলোকবিজ্ঞান। এই অধ্যায়ে পড়েছি যে আলোর গতিবেগ প্রতি সেকেন্ডে ১৮৬২৮২.৩৯৭ মাইল। কিন্তু জানেন কী প্রাচীন ভারতীয় সভ্যতায় আলোর গতিবেগ গণনা করা হয়েছিল। গণনার হিসাব বর্তমান বিজ্ঞানীদের গণনার খুব কাছাকাছি এসেছিল। বৈদিক সভ্যতা অনুযায়ী আলোর গতিবেগ হল প্রতি সেকেন্ডে ১৮৫৭৯৩.৭৫ মাইল। কীভাবে আলোর গতিবেগ নির্ণয় করা হল, এবার আমরা জানবো।

    আলোকের গতিবেগ সম্বন্ধে বৈদিক ঋষিরা বলেছিলেন:

    “যোজনম্‌ সহস্ত্রে দোয়ে, দোয়ে শতে, দোয়ে চঃ যোজনে।
    একিনম্‌ নিমির্ষাদ্ধেন কর্মেনঃ নমস্তুতে।।” (ঋকবেদ ১.৫০.০৪)
     
    আসুন এবার শ্লোকটিকে আমরা ব্যাখ্যা করি।
    ঋকবৈদিক যুগে (Vedic Civilization) সময় এবং দূরত্বের বিভিন্ন একক ছিল। এগুলি হল নিমেষ, মুহূর্ত, কলা, কষ্ঠ, যোজন ইত্যাদি।
    ১ দিবারাত্রি = ৩০ মুহূর্ত = ২৪ ঘণ্টা
    ১ মুহূর্ত = ৩০ কাল    = ২৪/৩০ ঘণ্টা
    ১ কাল = ৩০ কষ্ঠ = ২৪/৩০×৩০= ১.৬ মিনিট
    ১ কষ্ঠ = ১৫ নিমেষ = ১.৬ ÷ ১৫ = ৩.২ সেকেন্ড
    ১ নিমেষ = ৩.২ ÷ ১৫ = ০.২১৩৩৩… সেকেন্ড

    যোজন মানে ৯ মাইল। এখন যদি গণনা করা হয় তাহলে এই শ্লোক অনুযায়ী, 
    (২২০২×৯) ÷ (০.২১৩৩৩/২ সেকেন্ড)=  ১৮৬২৮২.৩৯৭ মাইল/সেকেন্ড।

    ২) সূর্য থেকে পৃথিবীর দূরত্ব নির্ণয়ের ক্ষেত্রে কী বলা আছে হনুমান চালিশায়

    আধুনিককালের বিজ্ঞানীরা গণনার মাধ্যমে নির্ণয় করতে পেরেছেন পৃথিবী থেকে সূর্যের দূরত্ব। অপসূর হয় ৪ জুলাই এবং অনুসূর হয় ৩ জানুয়ারি। অনুসূরের সময় সূর্য থেকে পৃথিবীর দূরত্ব সব থেকে কম হয় এবং অপসূরের সময় সবথেকে বেশি থাকে। অপসূরের সময় সূর্য থেকে পৃথিবীর দূরত্ব হয় ১৫ কোটি ২০ লক্ষ কিলোমিটার। অনুসূরের সময় দূরত্ব হয় ১৪ কোটি ৭০ কিলোমিটার। জানেন কী পৃথিবী থেকে সূর্যের দূরত্বের কথা হনুমান চালিশাতেও রয়েছে। প্রতি মঙ্গলবার বজরংবলীর পূজা আমরা করি। হনুমান চালিশা নিয়মিতভাবে পাঠ করি এবং সেখানকার ১৮ তম শ্লোকটি হল,

    যুগ সহস্র যোজন পর ভানু।
    লীল্যো তাহি মধুর ফল জানু।। 

    আসুন এবার গাণিতিক প্রয়োগ করে বিষয়টি স্পষ্ট করি।

    ১ যুগ = ১২০০০ বছর
    ১ সহস্র = ১০০০
    ১ যোজন = ৯ মাইল
    যুগ সহস্র যোজন = ১২০০০ × ১০০০ × ৯  = ১০৮,০০০,০০০ মাইল 
                              
    ১ মাইল = ১.৬ কিলোমিটার।
    ১০৮,০০০,০০০ × ১.৬  = ১৭২,৮০০,০০০ কিলোমিটার

    এবার NASA প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী পৃথিবী থেকে সূর্যের গড় দূরত্ব কত জানেন? দূরত্বটি হল প্রায় ১৪,৯৬,০০০ কিলোমিটার।

    ৩) অভিকর্ষ ও মহাকর্ষ বল সম্পর্কে বেদের ব্যাখা

    স্যার আইজ্যাক নিউটনের বাগানে বসে আপেল পরা দেখার অনেক আগেই মহাকর্ষ বল এবং অভিকর্ষ বল সম্পর্কে ধারণা দিতে পেরেছিলেন প্রাচীন ভারতীয় ঋষিরা। পৃথিবী সব বস্তুকে নিজের দিকে আকর্ষণ করে এটাই হল অভিকর্ষ বল এবং মহাবিশ্বের যেকোনো দুটি বস্তু কণা তাদের কেন্দ্র সংযোগকারী সরলরেখা বরাবর পরস্পর পরস্পরকে নিজের কেন্দ্রের দিকে আকর্ষণ করে এটাই হলো মহাকর্ষ বল। অর্থাৎ মহাবিশ্বের প্রত্যেকটি বস্তু একে অপরকে আকর্ষণ করে। এবার বেদে এই বিষয়ে কী বলা হচ্ছে জানা যাক।  

    “আকৃষ্ণেণ রজসা , বর্তমানো নিবেশয়ন্নমৃতং মর্তং চ।
    হিরণ্যেন সবিতা রথেনা দেবো যাতি ভুবনানি পশ্যান।।” 

    শ্লোকটির অনুবাদ করলে দাঁড়ায়, শূন্যে প্রদক্ষিণরত সূর্য তার আকর্ষণ শক্তির প্রভাবে পরিবারের সকল জাগতিক বস্তুকে অর্থাৎ কিনা সৌরজগতের প্রত্যেকটি গ্রহসমূহকে যথাস্থানে রাখে। কথিত আছে, এক গণিতবিদ প্রাচীনকালে তীর নিক্ষেপ দেখছিলেন এবং ভাবছিলেন যে তীরগুলি মাটিতেই কেন পড়ছে? তারপর তিনি বেদের এই শ্লোকটি সম্পর্কে অধ্যয়ন করেন এবং পরবর্তীকালে সিদ্ধান্ত শিরোমনি গ্রন্থে লেখেন, 

    “আকৃষ্টিশক্তিশ্চ মহীতয়া যৎ স্বস্থং গুরুং স্বাভিমুখং স্বশক্ত্যা”

    এর অর্থ হল, পৃথিবী সমস্ত গুরু বস্তুকে তার নিজের দিকে আকর্ষণ করে। এটাই তো অভিকর্ষ বলের সংজ্ঞা।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ। 

     

  • Sanatan Dharma: সনাতন ধর্মে ঋষি এবং বেদের ভূমিকা জানুন

    Sanatan Dharma: সনাতন ধর্মে ঋষি এবং বেদের ভূমিকা জানুন

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: সপ্তসিন্ধু তীরে খ্রিস্টের জন্মের ২৫০০ বছর আগে বেদকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিল এক সভ্যতা। বিভিন্ন সাহিত্যে, নাটকে কণ্ব মুনির আশ্রমে শকুন্তলার বেড়ে ওঠার গল্পতো খুবই জনপ্রিয়। প্রাচীন বৈদিক সভ্যতার সামাজিক জীবন আমাদের সামনে এইভাবেই চিত্রায়িত হয়।

    সনাতন ধর্মে (Sanatan Dharma) ঋষিদের ভূমিকা

    গৈরিক বসন পরিহিত গলায় রুদ্রাক্ষের মালা সমেত শ্বেত শুভ্র লম্বা দাড়ি, ঋষি শব্দ শুনলেই আমাদের মনে এমন এক পুরুষের চিত্র ভেসে ওঠে। ঋষি মানে মন্ত্রদ্রষ্টা। যাঁরা সংস্কার দান করেন। সংস্কৃতিকে ধারণ করে থাকবেন এবং জীবন বোধ সম্পর্কে শিক্ষা দেবেন। প্রত্যেক বৈদিক ঋষিই ছিলেন এক একজন মহান যোগী যাঁরা ঘন অরণ্যে অথবা পর্বতের গুহায় তপস্যা করতেন। সর্বোচ্চ এবং শাশ্বত সত্যকে জানার তপস্যা। তপস্যায় তাঁরা যে জ্ঞান উপলব্ধি করতেন , সেই জ্ঞানই পরবর্তীকালে বেদ এবং বিভিন্ন মন্ত্রে অন্তর্ভুক্ত হত। 

    প্রাচীন ভারতীয় ঋষিরা মহাকাশ বিজ্ঞান এবং প্রকৃতি সম্পর্কেও অনেক যুক্তিনির্ভর তথ্য দিয়েছেন। যেগুলি বর্তমানে সময়োপযোগী বলে প্রমাণিত হয়েছে। এগুলি ছাড়াও  চিকিৎসা বিজ্ঞান, জ্যোতির্বিজ্ঞান, গণিত, সাহিত্য, প্রযুক্তিবিদ্যা, শিল্পবিদ্যা, আধ্যাত্মিক বিদ্যা এসব বিষয়ের চর্চাও প্রাচীন ভারতীয় ঋষিদের মধ্যে ছিল বলে জানা যায়। শূন্যের আবিষ্কারক আর্যভট্ট, জ্যোতির্বিজ্ঞানী বরাহমিহির, চিকিৎসাশাস্ত্রে চরক, সুশ্রুত ইতিহাস প্রসিদ্ধ নাম।

    বৈদিক সভ্যতায় যে সমস্ত বিষয় ঋষিরা চর্চা করতেন সেগুলিকে সাধারণত বলা হত আধ্যাত্মিক বিজ্ঞান, এটাই সনাতন ধর্মের (Sanatan Dharma) মূল তত্ত্ব বলা যেতে পারে। ভারতীয় পরম্পরা এবং ভারতীয় আধ্যাত্মিকতার যে ধারা, সেটিকে ভারতীয় মুনি ঋষিরাই প্রজন্মের পর প্রজন্ম বহন করে গেছেন। প্রাচীন ভারতীয় ঋষিরা সংস্কৃত ভাষায় কথা বলতেন। সংস্কৃত ছন্দের মাধুর্যে উচ্চারিত হত বৈদিক শ্লোক। সারা পৃথিবীতে যখন লিখিত শব্দ অজ্ঞাত ছিল তখন কিন্তু ভারতীয় মুনি ঋষিদের স্মৃতিশক্তির কারণেই  ঋষিদের জ্ঞান এক প্রজন্ম থেকে আর এক প্রজন্মের মধ্যে প্রবাহিত হতো। একেই বলা হয় গুরু শিষ্য পরম্পরা। 

    প্রাচীন ভারতীয় সভ্যতায় কোন কোন বিষয় পড়ানো হত

    আধুনিককালে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যা কিছু পড়ানো হয় প্রাচীন ভারতীয় বৈদিক সভ্যতায় (Sanatan Dharma) এর থেকে কম কিছু পড়ানো হতো না। সে সময়ে চতুরাশ্রমের কথাতো আমরা সকলেই জানি। ব্রহ্মচর্য, গার্হস্থ্য, বানপ্রস্থ এবং সন্ন্যাস। ব্রহ্মচর্য পালনকালে শিষ্যরা গুরুগৃহে থেকে বিদ্যা আহরণ করতো। এই সময়ে শিষ্যকে বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান দান করতেন গুরু। কোন কোন বিষয় তখন গুরুগৃহে পড়ানো হত গুরুকুলে, তার একটি তালিকা একনজরে দেখা যাক। প্রথমে জেনে নিই বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তির বিষয়ে কী কী পড়ানো হত।

    ১) অগ্নিবিদ্যা (Metallurgy)

    ২) বায়ুবিদ্যা (aviation)

    ৩) জলবিদ্যা (Navigation)

    ৪) অন্তরীক্ষবিদ্যা (Space Science)

    ৫) পৃথিবীবিদ্যা (Environment and Ecology)

    ৬) সূর্যবিদ্যা (Solar System Studies)

    ৭) চন্দ্রলোক বিদ্যা (Lunar Studies)

    ৮) মেঘ বিদ্যা (Weather Forecast) 

    ৯) পদার্থ-বিদ্যুৎবিদ্যা (Battery)

    ১০) সৌরশক্তি-বিদ্যা (Solar Energy)

    ১১) দিনরাত্রি-বিদ্যা (Day Night Studies)

    ১২) সৃষ্টিবিদ্যা (Space Research)

    ১৩) মহাকাশ বিজ্ঞান (Cosmic Science)

    ১৪) ভূগোলবিদ্যা (Geography)

    ১৫) কালবিদ্যা (Time)

    ১৬) ভূগর্ভ-বিদ্যা (Geology and Mining)

    ১৭) রত্ন এবং ধাতুবিদ্যা (Gemology and Metal)

    ১৮) আকর্ষণবিদ্যা (Gravity)

    ১৯) আলোকবিদ্যা (Optics)

    ২০) যোগাযোগ-বিদ্যা (Communication)

    ২১) বিমানবিদ্যা (Aviation)

    ২২) জলযান-বিদ্যা (Water Hydraulics Vessels)

    ২৩) অস্ত্রবিদ্যা (Arms and Ammunition)

    ২৪) জীবজন্তু বিজ্ঞান (Zoology Botany)

    ২৫) পদার্থবিদ্যা (Material science)

    বাণিজ্য সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় পড়ানোর রীতিও প্রাচীন ভারতীয় বৈদিক সভ্যতায় (Sanatan Dharma) প্রচলিত ছিল। এরকম ৩৫ টি বিষয় প্রাচীন ভারতীয় বৈদিক সভ্যতাতে পড়ানো হতো যেগুলি আমরা জানবো এবার এক নজরে।

    ১) বাণিজ্য (Commerce)

    ২) ভেষজ (Pharmacy)

    ৩) শল্যকর্ম বা চিকিৎসা (Diagonis and Surgery) 

    ৪) কৃষি (Agriculture)

    ৫) পশুপালন (Animal Husbandry)

    ৬) পাখি পালন (Birdkeeping)

    ৭) পশু প্রশিক্ষণ (Animal Training)

    ৮) যান যন্ত্রকার (Mechanics)

    ৯) রথকার (Vehicle Designing)

    ১০) রত্নকার (James Designing)

    ১১) সুবর্ণকার (Jewellery Designing)

    ১২) বস্ত্রকার (Textile)

    ১৩) কুম্ভকার (Pottery)

    ১৪) লৌহকার (Metallurgy)

    ১৫) তক্ষক (Toxicology)

    ১৬) রঙ্গসাজ (Dying)

    ১৭) রজ্জুকর (Logistics)

    ১৮) বাস্তুকার (Architect)

    ১৯) পাকবিদ্যা (Cooking)

    ২০) সারথ্য (Driving)

    ২১) নদীজল প্রবন্ধক (Water Management)

    ২২) সুচিকার (Data Entry)

    ২৩) গোশালা (Animal Husbandry)

    ২৪) নদী জল প্রবন্ধক (Water Management)

    ২৫) বাগানপাল (Horticulture)

    ২৬) বনপাল (Forestry)

    ২৭) বদ্যি (Paramedical)

    ২৮) অর্থশাস্ত্র (Economics)

    ২৯) তর্কশাস্ত্র (Logic)

    ৩০) ন্যায়শাস্ত্র  (Law)

    ৩১) নৌকাশাস্ত্র (Ship Building) 

    ৩২) রসায়ন শাস্ত্র  (Chemical Science)

    ৩৩) ব্রহ্মবিদ্যা (Cosmology)

    ৩৪) অথর্ববেদ (Atharvved)

    ৩৫) ব্যবচ্ছেদ (Postmortem)
     
    বেদ এবং স্মৃতির ভাগ

    প্রাচীন ভারতীয় পরম্পরায় (Sanatan Dharma) বৈদিক সাহিত্যের দুটি ভাগ ছিল। একটি শ্রুতি এবং অপরটি স্মৃতি। গুরুর মুখ থেকে শিষ্যরা শুনে শুনে বেদ মুখস্ত করতো তাই বেদের অপর নাম শ্রুতি এবং এই পরম্পরা এক প্রজন্ম থেকে অপর প্রজন্মে প্রবাহিত হত। শ্রুতির মধ্যে চারটি বেদ রয়েছে ঋগ্বেদ, যজুর্বেদ, সামবেদ, অথর্ববেদ। প্রতিটি বেদ আবার কতগুলি ভাগে বিভক্ত যেমন বেদাঙ্গ, উপবেদ, সংহিতা,  ব্রাহ্মণ, আরণ্যক এবং উপনিষদ। 

    প্রতিটি বেদাঙ্গের আবার ছ’টি ভাগ রয়েছে যেমন ব্যাকরণ, জ্যোতিষ, নিরুক্ত, শিক্ষা, ছন্দ ও কল্প। প্রতিটি উপবেদের আবার চারটি ভাগ রয়েছে অর্থভেদ, ধনুর্বেদ, গন্ধর্ববেদ এবং আয়ুর্বেদ। 

    স্মৃতির মধ্যে পড়ছে ১৮ টি পুরাণ, তন্ত্রবিদ্যা, শ্রীমদ্ভাগবত গীতা সমেত বিভিন্ন ধর্মশাস্ত্র-গুলি তার পাশাপাশি ঐতিহাসিক যে গ্রন্থ, মহাকাব্য রামায়ণ এবং মহাভারতও স্মৃতির মধ্যে পড়ছে।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।

     

  • Itu Puja: ইতুপুজোর লৌকিক গল্পটি জানুন

    Itu Puja: ইতুপুজোর লৌকিক গল্পটি জানুন

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ইকোসিস্টেম শব্দটির সঙ্গে আমরা কমবেশি সকলেই পরিচিত। প্রকৃতির বিভিন্ন উপাদান এবং মানুষের সহাবস্থান পদ্ধতির নামই হল ইকোসিস্টেম। এদেশে প্রকৃতি পুজোর রীতিও অনেক প্রাচীন। নদী, গাছ, পর্বত, অগ্নি, বায়ু, সূর্য প্রভৃতির পুজো বৈদিক আমল থেকেই চলে আসছে। অবাঙালিদের মধ্যে সূর্য পুজো , ছট পুজো নামে পরিচিত। বাঙালিদের সূর্য পুজোর ব্রতকথা ইতুপুজো (Itu Puja) নামে প্রসিদ্ধ। অগ্রহায়ণ মাসের প্রতি রবিবার ইতু পুজো হয়। গ্রামবাংলায় এই পুজোর রীতি বেশি প্রচলিত। 

    মাটির সরার মধ্যে মাটি দিয়ে ঘট বসানো হয়। প্রতি হিন্দুবাড়িতে তুলসী তলা থাকেই। এখানেই ইতুর (Itu Puja) ঘট স্থাপন করা হয়। একমাস ধরে ইতুর ঘটে জল দেন বাড়ির মহিলারা। মাটির সরাতে দেওয়া হয় পাঁচ কলাই। মাটিতে পঞ্চশস্যও ছড়িয়ে দেন অনেকে। অগ্রহায়ণ সংক্রান্তির দিন ইতুর ব্রত উদযাপন করে নদী বা পুকুরে ইতু ভাসিয়ে দেওয়া হয়। বিশ্বাস রয়েছে ইতুব্রত রাখলে সংসার সুখ, শান্তি, সমৃদ্ধিতে ভরে ওঠে।

    ইতুপুজোর (Itu Puja) লৌকিক গল্প

    অষ্টচাল অষ্টদূর্বা কলসপত্র ধরে ।
    ইতুকথা একমনে  শুন প্রাণ ভরে।।

    গ্রামবাংলার মাতৃজাতির কাছে এই লাইনদুটি বেশ জনপ্রিয়। প্রত্যেক বাঙালি ব্রতকথায় কোনও না কোনও লৌকিক গল্প থাকে।  ইতুব্রতেও (Itu Puja) রয়েছে এমন একটি গল্প। আসুন জানা যাক।

    কোনো এককালে, এক দরিদ্র ব্রাহ্মণ তার স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে অভাবের সংসারে দিনযাপন করত। ব্রাহ্মণের পেশা ছিল  ভিক্ষাবৃত্তি। ব্রাহ্মণ পিঠে খেতে খুব ভালবাসতো। ভিক্ষা করে চাল, নারকেল, গুড় এনে দিল তার স্ত্রীকে। তৈরি পিঠে যেন কাউকে না দেওয়া হয়, তার স্ত্রীকে এই শর্ত দিয়ে ব্রাহ্মণ  লুকিয়ে পড়ল। পিঠে ভাজার শব্দ শুনতে শুনতে ব্রাহ্মণ দড়িতে একটা করে গিঁট দিতে থাকল। এরপর তার স্ত্রী,  ব্রাহ্মণ কে পিঠে খেতে দিলে ব্রাহ্মণ দড়ির গুনে দেখে দুটো পিঠে কম। ব্রাহ্মণের রাগ দেখে তার স্ত্রী বলল, দুই মেয়েকে দুটো পিঠে দিয়েছি । এই শুনে বাহ্মণ তার দুই মেয়েকে তাদের মাসির বাড়ি রেখে আসবে বলে। মেয়ে দুটির নাম উমনো আর ঝুমনো।

    পরের দিন ভোর বেলা উমনো আর ঝুমনোকে সঙ্গে করে বাহ্মণ বাড়ি থেকে বের হয়। সারা দিন হাঁটতে হাঁটতে তারা এক জঙ্গলের মধ্যে পৌঁছায়, সেখানেই রাত্রি হয়। ব্রাহ্মণ তাদের ঘুম পাড়িয়ে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। জঙ্গলের মধ্যে একাকী উমনো আর ঝুমনোর ঘুম ভাঙলে তারা খুব কাঁদতে থাকে। এক বট গাছের কাছে গিয়ে হাত জোড় করে দুজনে বলে “হে বট বৃক্ষ! মা আমাদের দশ মাস দশ দিন গর্ভে স্থান দিয়েছেন। তুমি আজ রাতের জন্য তোমার কোটরে স্থান দাও।”

    এরপর বটবৃক্ষ দু ফাঁক হয়ে গেলে তারা দুই বোনে বট গাছের কোটরে রাত কাটায়। পরের দিন সকালে তারা বটগাছকে প্রণাম করে হাঁটতে শুরু করে। কিছুদূর যাওয়ার পরে তারা দেখে, মাটির সরা করে কতগুলো মেয়ে পুজো করছে। উমনো আর ঝুমনো পুজোর বিষয়ে তাদেরকে জিজ্ঞেস করলে মেয়েরা জানায়, এর নাম ইতুপুজো (Itu Puja)। মেয়েরা আরও বলে, আগের দিন উপোষ করে থাকলে তবেই ইতুপুজো করা যায়। এই কথা শুনে উমনো ঝুমনো বলে কাল থেকে তারা কিছুই খায়নি। তারাও কার্তিক মাসের সংক্রান্তিতে ইতুপুজো (Itu Puja) শুরু করে দেয়। তাদের ভক্তি দেখে ইতু ভগবান অর্থাৎ সূর্যদেব বর প্রার্থনা করতে বলে। তারা তাদের পিতার অভাব যেন দূর হয়,এই বর  প্রার্থনা করে। সূর্যদেব তাদের আশীর্বাদ করেন। তারপর তারা অগ্রহায়ণ মাসের প্রতি রবিবারে ভক্তি সহকারে ইতুপুজো (Itu Puja) করে এবং  সূর্য দেবের কাছ থেকে আশীর্বাদ পেতে থাকে।

    আরও পড়ুন: নবান্ন উৎসবের তাৎপর্য জানুন

    ওই দিকে আশ্চর্য্যভাবে ব্রাহ্মণের  ঘর ধন সম্পদে ভরে ওঠে। কিন্তু তার স্ত্রীর মুখে হাসি উধাও। মেয়েদের কথা ভেবে চোখের জল পড়ে তার। সত্যিই একদিন উমনো আর ঝুমনো বাড়ি ফিরে আসে। ব্রাহ্মণের স্ত্রী মেয়েদের দেখে খুব আনন্দিত হয়। বাড়ি ফিরে তারা ইতুপুজোর (Itu Puja) কথা বলে,আর সূর্য দেবের আশীর্বাদেই যে তাদের পরিবারের উন্নতি হয়েছে সেটাও তারা বলে। তা শুনে ব্রাহ্মণের স্ত্রীও ইতুপূজা (Itu Puja) শুরু করে দেয়। তখন থেকেই দিকে দিকে এই ইতুপূজার (Itu Puja) মাহাত্ম্য ছড়িয়ে পড়ে।

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।  

  • Nabanna: নবান্ন উৎসবের তাৎপর্য জানুন

    Nabanna: নবান্ন উৎসবের তাৎপর্য জানুন

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: “নবান্ন” (Nabanna) শব্দের অর্থ “নতুন অন্ন”। নবান্ন উৎসব হল নতুন আমন ধান কাটার পর সেই ধান থেকে প্রস্তুত চালের প্রথম রান্না উপলক্ষে আয়োজিত উৎসব। গ্রাম বাংলায় শব্দটি যে খুবই জনপ্রিয় তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। তাইতো রাজ্য সরকার পরিচালনার ভবনের নাম নবান্ন। আবার বিরোধী দলগুলোর আন্দোলনের সৌজন্যে খবরের শিরোনামে প্রায়ই দেখা যায় নবান্ন অভিযান। গ্রাম বাংলার লোকাচার,  নবান্নতে (Nabanna) সাধারণত পুজো হয় দেবী অন্নপূর্ণার। হিন্দুশাস্ত্র তৈত্তিরীয়োপনিষদের ব্রহ্মানন্দবল্লীতে জীবদেহের পঞ্চকোষের উল্লেখ আছে। তার মধ্যে প্রধান হল অন্নময় কোষ। আমাদের এই স্থূল শরীরকেই বলা হয়েছে অন্নকোষ। বৃহদারণ্যকে বলা হচ্ছে, “অন্নে হীমানি সর্বাণি ভূতাণি বিষ্টানি”। সমস্ত চরাচর জগত এই অন্নেই প্রতিষ্ঠিত। অন্ন এবং প্রাণই ব্রহ্ম। আর ধান শুধু কৃষকের নয়, আপামর বাঙালির কাছে পূজিতা লক্ষ্মীর প্রতীক রূপে। কার্তিকের সংক্রান্তির দিন মাঠের ঈশান কোণ থেকে নতুন ধান মুঠো করে আনা হয় কৃষকের গৃহে, এই রীতি বহু প্রাচীন। অঘ্রাহায়ণের শুভদিনে ধান সম্পূর্ণ পেকে গেলে হয় নবান্ন উৎসব। এই দিন গৃহদেবতাকে নতুন ধানের চাল কুটে পায়েস বানিয়ে নিবেদন করা হয়। পিঠাপুলিও হয় কোথাও কোথাও। ধানের গোলা, মড়াই ঘিরে আলপনা দেওয়া হয়। তারপর সেই অন্নপ্রসাদ গ্রহণ করা হয়। যে-কোনও শস্যই আগে ইষ্ট বা গৃহদেবতাকে নিবেদন করার রীতি আছে বাংলায়। আর ধান তো প্রধান শস্য আমাদের। যাইহোক, আগে নবান্নের (Nabanna) পরেই ধান কাটার রীতি ছিল। পৌষে পৌষলক্ষ্মী ভরা ধান্যে অধিষ্ঠান করেন, এটাই ভক্তদের বিশ্বাস।

    আরও পড়ুন: শিব-পার্বতীর পুত্র কীভাবে হলেন দেব সেনাপতি কার্তিক, জেনে নিন সেই গল্প

     গ্রাম বাংলায় কী কী হয় নবান্ন (Nabanna) উৎসবের দিন ? 

    এই সময়কালে গ্রামবাংলায় বড়ি দেওয়ার আচারও দেখা যায় কোথাও কোথাও। যেমন মেদিনীপুরের গয়না বড়ি খুবই বিখ্যাত। কর্তাবড়ি আর গিন্নিবড়ি বানিয়ে তেল-সিঁদুর, ধান-দুর্বা দিয়ে মায়েরা পূজা করেন। এছাড়াও আগেকার দিনে বিভিন্ন জিনিস ‘জিইয়ে’ রাখা হত এই সময়। কচি বাধাকপি, আমলকি, মাছ এবং আরও নানান জিনিস এই সময় নুন দিয়ে জারিয়ে জল বের করে শুকিয়ে শিকেয় তুলে রাখা হত। ভক্তদের বিশ্বাস,দেবী অন্নপূর্ণার পুজো করলে কখনও অন্নের অভাব হয়না। নবান্ন উৎসবে নতুন গুড় সহ নতুন চালের তৈরি খাবার বানিয়ে কলাপাতায় করে খাওয়ার রীতি দেখা যায়। প্রতিবেশী ও আত্মীয় এবং সেই সঙ্গে কাক-কে দেওয়া হয় ওই চাল মাখা। এটি একটি বিশেষ লৌকিক প্রথা। লোক বিশ্বাস অনুযায়ী, কাকের মাধ্যমে ওই খাদ্য পূর্ব-পুরুষদের কাছে পৌঁছে যায়। এই নৈবেদ্যকে বলে “কাকবলী”। 
    অগ্রহায়ণ মাস এলেই মাঠজুড়ে ধানকাটার ব্যস্ততা চোখে পড়ে। ধান ভাঙার গান ভেসে বেড়ায় আকাশে বাতাসে, এখন অবশ্য যান্ত্রিকতার ছোঁয়ায় ঢেঁকিতে ধান ভানার শব্দ খুব একটা শোনা যায় না। অথচ খুব বেশি দিন আগের কথা নয়, ঢেঁকি ছাঁটা চাল দিয়েই হতো ভাত খাওয়া। খড়ের পালা, মাটির বাড়িতে গোবরের গোলা দিয়ে নিকানো উঠান,  তারমাঝে আল্পনা! নবান্ন (Nabanna) উৎসবে প্রতিটি গ্রামে এ যেন চেনা দৃশ্য। এখন অবশ্য আধুনিকতার ছোঁয়ায় অনেক কিছুই বদলেছে। তার পরও নতুন চালের ভাত নানা ব্যঞ্জনে মুখে দেয়া হয় আনন্দঘন পরিবেশ। তৈরি করা হয় ক্ষীর- পায়েসসহ নানা উপাদান।

    কবিতায় নবান্ন (Nabanna)

    নবান্ন নিয়ে অনেক কবিতা, গল্প,নাটক ইত্যাদি রয়েছে। বিভিন্ন সাহিত্যিকের লেখায় উঠে এসেছে বাংলার গ্রামীণ চিত্র। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষায় ”ঘ্রাণেভরা অঘ্রাণে শুভ নবান্ন (Nabanna)।” কবি যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তর ভাবনায় “ক্ষমাকর সখা বন্ধ করিনু তুচ্ছ ধানের গল্প।”  কবি জীবনানন্দ দাশের কবিতায় উঠে এসেছে এই “নবান্ন”,

    “আবার আসিব ফিরে ধান সিঁড়িটির তীরে,এই বাংলায়

    মানুষ নয়, হয়তো বা শঙ্কচিল শালিখের বেশে,

    হয়তো ভোরের কাক হয়ে এই কার্তিকের নবান্নের (Nabanna) দেশে”।

    নবান্ন উৎসবের সাথে মিশে আছে বাঙালিয়ানার হাজার বছরের ইতিহাস, ঐতিহ্য আর সংস্কৃতির নানা বর্ণময় দিক। প্রাচীনকাল থেকেই বাঙালি জাতি নবান্নকে কেন্দ্র করে উৎসবে মেতে ওঠে। তৈরি হয় এক সামাজিক মেলবন্ধন। নবান্ন উৎসবে গ্রামগঞ্জে আয়োজন করা হয় অন্নপূর্ণা পুজো । শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে সমস্ত বয়সের মানুষজন এই উৎসবে মাতে। এখন আর শুধু গ্রামেই নয়, শহরের মানুষও এখন নবান্নের স্বাদ নিয়ে থাকে। এই নবান্ন চাল বাটা, নারকেল কোরা, নলেন গুড়, ফলের কুচি, সন্দেশ মাখা ইত্যাদি উপকরণ দিয়ে তৈরি হয়। এসব উপকরণগুলিকে সামান্য দুধের সঙ্গে  ভালো করে মিশিয়ে নিয়ে তৈরি হয় নবান্ন । হিন্দু বিশ্বাস অনুযায়ী, নতুন ধান উৎপাদনের সময় পিতৃপুরুষরা অন্ন প্রার্থনা করে থাকেন। এই কারণে হিন্দুরা পার্বণ বিধি অনুযায়ী নবান্নে শ্রাদ্ধানুষ্ঠান করে থাকেন। শাস্ত্রমতে, নবান্ন শ্রাদ্ধ না করে নতুন অন্ন গ্রহণ করলে পাপের ভাগী হতে হয়। বাঙালির আপন উৎসব নবান্ন (Nabanna)। 

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।  

     
  • Kali Puja 2022: জানেন কালীপুজোর আগের দিন চোদ্দ রকমের শাক কেন খাওয়া হয় ?

    Kali Puja 2022: জানেন কালীপুজোর আগের দিন চোদ্দ রকমের শাক কেন খাওয়া হয় ?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: হিন্দু ধর্মের উৎসব মানে বাহ্যিক দিক থেকে আলোক সজ্জা, মন্ডপ সজ্জা, থিমের জমজমাট পুজোতো রয়েছেই, তারসাথে জড়িয়ে রয়েছে বিভিন্ন আচার এবং অনুষ্ঠান। যেমন ধরুন খাওয়া দাওয়ার আচার। সরস্বতী পুজোর পরদিন গোটা সেদ্ধ খাওয়ার প্রথা রয়েছে অধিকাংশ বাড়িতে। আবার কিছু ব্রত রয়েছে যেগুলো তে গৃহস্থ কত্রীরা শুধু মাত্র ময়দার তৈরী খাবার খান। প্রতিটি খাওয়া দাওয়ার আচার, পরিবার এবং স্বজনদের মঙ্গল কামনার উদ্দেশ্যেই পালিত হয়। রাজ্য জুড়ে ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে কালীপুজো উৎসব (Kali Puja)। দীপান্বিতা কালীপুজো। জানেন কি আশ্বিন মাসের কৃষ্ণ পক্ষের চতুর্দশী তিথিতে অর্থাৎ কালীপুজোর আগের দিন অনেক বাড়িতেই চোদ্দ শাক খাওয়ার রীতি রয়েছে? এখন প্রশ্ন হলো, চৌদ্দ শাক খাওয়ার এই আচারের পিছনে কোন ধর্মীয় বিশ্বাস কাজ করছে ? কথিত আছে, মৃত্যুর পরে মানুষ পঞ্চভূতে বিলীন হয়ে যায়। এরপর এই বিশেষ দিনেই নাকি পূর্ব পুরুষদের আগমন ঘটে মর্ত্যলোকে।  হিন্দুশাস্ত্র মতে,  আকাশ, জল, বায়ু, অগ্নি, মাটি— প্রকৃতির এই পাঁচ উপাদানের মধ্যেই ছড়িয়ে রয়েছেন আমাদের পিতৃপুরুষেরা। বিশ্বাস মতে, চৌদ্দ শাক খাওয়ার রীতি পালনের মধ্যে দিয়েই তাঁদের ছুঁয়ে থাকা যায়। অশুভ শক্তির বিনাশ ঘটাতে প্রকৃতি থেকে সংগ্রহ করা চোদ্দ রকম শাক জলে ধুয়ে, সেই জল বাড়ির চারিদিকে ছিটিয়ে দেওয়া হয়। পূর্বের সাত পুরুষকে উৎসর্গ করে পরবর্তী সাতপুরুষের জন্য খাওয়া হয় শাক। তাই মোট চোদ্দ রকমের  শাক খাওয়ার রীতি প্রচলিত রয়েছে। এই শাক গুলি হলো , জয়ন্তী, শাঞ্চে, হিলঞ্চ, ওল, পুঁই, বেতো, সর্ষে, কালকাসুন্দে, নিম, পলতা, শুলকা, গুলঞ্চ, ভাঁটপাতা ও শুষণী। এই প্রচলিত রীতি গুলির  পিছনে বিজ্ঞান সম্মত কারণ  রয়েছে বলে অনেকের ধারণা। এদেশের সমস্ত আচার এবং অনুষ্ঠান বিজ্ঞান সম্মত হয় এবং প্রকৃতির সাথে সম্পর্কযুক্ত হয়। শরৎকালের শেষ এবং হেমন্তকালে শুরুতে অনেক রকমের রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। ভেষজ গুণে সমৃদ্ধ শাক দেয় বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা।  এবার একনজরে দেখে নেওয়া যাক, এই চোদ্দ রকমের শাক গুলির কি কি গুণ রয়েছে। জয়ন্তী— উদরাময়, জ্বর, বহুমূত্র নিয়ন্ত্রণ করে।

    শাঞ্চে— রক্তের পরিমাণ বৃদ্ধি করে।

    হিংচে— পিত্তনাশক।

    ওল— অর্শ, রক্ত আমাশা, বাত, চর্মরোগ কমায়।

    পুঁই— হজমে সহায়ক।

    বেতো— কৃমিনাশক।

    সর্ষে— যকৃৎ, চোখ যত্নে রাখে।

    কালকাসুন্দে— অর্শ, কাশি দূর করে।

    নিম— যে কোনও চর্মরোগ নাশ করে।

    পলতা— শ্বাসযন্ত্র ভাল রাখে।

    শুলকা— হৃদ্‌যন্ত্র ভাল রাখে।

    গুলঞ্চ— উচ্চ রক্তচাপ, যকৃৎ যত্নে রাখে।

    ভাঁটপাতা— ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়ক।

    শুষণী— স্মৃতিবর্ধক

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।

  • Kali Puja: কালীপুজোর দিন পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন মন্দিরে কী কী ভোগ দেওয়া হয় মাকে, জানেন?

    Kali Puja: কালীপুজোর দিন পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন মন্দিরে কী কী ভোগ দেওয়া হয় মাকে, জানেন?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আজ কালীপুজা (Kali Puja)। দুর্গাপুজা শেষ হওয়ার পরেই কালী পুজোর প্রস্তুতি পুরোদমে শুরু হয়ে যায়। মা দুর্গা চলে গেলে সবার মন খারাপ থাকলেও আবার সবাই শ্যামা মায়ের অপেক্ষায় বসে থাকে। আর আজ সেই অপেক্ষার অবসান হল। প্রসঙ্গত, মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র প্রথম কালীপুজো আরম্ভ করেন। তারপর থেকেই সারা বাংলায় ধুমধাম করে শ্যামাপুজোর আরাধনা করা হয়।

    কার্ত্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিতে দীপান্বিতা কালীপুজা (Kali Puja) বিশেষ জাঁকজমক সহকারে পালিত হয়। দুর্গাপুজার পাশাপাশি কালী পুজোতেও বিভিন্ন আচার-নিয়ম থাকে। আর কালীপুজোর বিশেষ আকর্ষণই হল মায়ের ভোগ। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে শ্যামা মায়ের মন্দির। আর সেই এক এক মন্দিরের এক এক রকমের ভোগ মাকে ভোগ হিসেবে নিবেদন করা হয়। কলকাতার সবচেয়ে বিখ্যাত কালীমন্দিরটি হল কালীঘাট মন্দির। এটি একটি সতীপীঠ। এছাড়া দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়ি, আদ্যাপীঠ, ঠনঠনিয়া কালীবাড়ি, ফিরিঙ্গি কালীবাড়ি ইত্যাদি কলকাতা অঞ্চলের বিখ্যাত কয়েকটি কালী মন্দির। অন্যদিকে উত্তরবঙ্গের সেবকেশ্বরী কালী মন্দিরও বেশ বিখ্যাত। কালী পুজোর সময় মায়ের যে ভোগ হয় তা অন্যান্য পুজোর থেকে বেশ কিছুটা আলাদা। একনজরে দেখে নিন, কোন মন্দিরে মাকে কী কী ভোগ দেওয়া হয়।

    আরও পড়ুন: তারা মায়ের অন্নভোগের বিশেষত্বই হল পোড়া শোলমাছ মাখা! জানেন কী কী থাকে তারাপীঠে মায়ের ভোগে?

    কালীঘাট মন্দির

    সতীর একান্নপীঠের অন্যতম এই কালীঘাট (Kalighat)। সকালে মা-কে আমিষ পদ ভোগে দেওয়া হয়। সেই ভোগের মধ্যে রয়েছে বেগুনভাজা, পটলভাজা, কপি, আলু ও কাঁচকলা ভাজা, ঘিয়ের পোলাও, ঘি ডাল, শুক্তো, শাকভাজা, মাছের কালিয়া, পাঁঠার মাংস ও চালের পায়েস। তবে রাতে মা-কে নিরামিষ ভোগ নিবেদন করা হয়। লুচি, বেগুনভাজা, আলু ভাজা, দুধ, ছানার সন্দেশ আর রাজভোগ থাকে কালীঘাটের ভোগে।

    সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দির

    আনুমানিক ১৭০৩ সালে উদয়নারায়ণ ব্রহ্মচারী নামে এক তান্ত্রিক সন্ন্যাসী সেই সময় জঙ্গলের মধ্যে পঞ্চমুণ্ডির আসনে ও ঘটে পুজো (Kalipuja) শুরু করেন। কালীপুজোর রাতে ভোগ দেওয়া হয় লুচি, পটলভাজা, ধোঁকা বা আলুভাজা, আলুর দম ও মিষ্টি।

    দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দির

    ভোরে দেবী ভবতারিণীর বিশেষ আরতি দক্ষিণেশ্বরের পুজোর (Kalipuja) বিশেষ আকর্ষণ। আর ভোগে নিবেদন করা হয় সাদাভাত, ঘি, পাঁচরকমের ভাজা, শুক্তো, তরকারি, পাঁচরকমের মাছের পদ, চাটনি, পায়েস ও মিষ্টি।

    তারাপীঠ মন্দির

    কালী পুজোর (Kalipuja) দিন খুব সকালে ডাবের জল দিয়ে শুরু হয় মায়ের ভোগ। সকালের ভোগে থাকে পাঁচ রকম বা ন’রকমের ভাজা, সাদা অন্ন, পায়েস ও মিষ্টি। আমিষ ভোগের মূল উপাদান হল শোল মাছ। ভোগের পাতে এই মাছ না থাকলে ভোগ গ্রহণ করেন না মা তাঁরা। কালীপুজোর দিন তাঁরা মা-এর ভোগ হিসেবে থাকে পোলাও, খিচুড়ি, সাদা ভাত, পাঁচরকম ভাজা, পাঁচ মিশালি তরকারি, মাছ, চাটনি, পায়েস এবং মিষ্টি। এখানকার অন্নভোগের বিশেষত্বই হল পোড়া শোলমাছ মাখা।

    সেবকেশ্বরী কালী মন্দির

    শিলিগুড়ি থেকে গ্যাংটক যাওয়ার পথে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে এই কালী মন্দির। কালীপুজোর (Kalipuja) দিনগুলোতে এই সেবকেশ্বরী কালীমন্দিরে ভক্তদের ঢল নামে। সেবক পাহাড়ের নির্জনতায় হয় কালী মায়ের আরাধনা। অনেকেরই বিশ্বাস, দেবী অত্যন্ত জাগ্রতা। এখানে মা-এর ভোগে থাকে সাদা ভাত, পাঁচরকম ভাজা, তরকারি, পায়েস, লুচি, দই, মিষ্টি। আর এখানে ভোগের আকর্ষণ হল বোয়াল মাছ। এদিন এই মাছ দেবীর ভোগ হিসাবে নিবেদন করা হয়।

  • Akshaya Tritiya 2022: কেন উৎযাপিত হয় অক্ষয় তৃতীয়া? জানুন এই শুভদিনের মাহাত্ম্য ও তাৎপর্য 

    Akshaya Tritiya 2022: কেন উৎযাপিত হয় অক্ষয় তৃতীয়া? জানুন এই শুভদিনের মাহাত্ম্য ও তাৎপর্য 

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: অক্ষয় তৃতীয়ার (Akshaya Tritiya) দিনটিকে হিন্দু ধর্মে (Hinduism) একটি অত্যন্ত শুভ দিন হিসাবে বিবেচনা করা হয়। বৈশাখ মাসের (Baisakha) শুক্লপক্ষের তৃতীয়া তিথিতে এই উৎসব পালিত হয়। এই দিনটি শুভ এবং এদিনে শুভ কাজ করা যেতে পারে। এটি আখা তীজ নামেও পরিচিত। 

    এবার অক্ষয় তৃতীয়া ২০২২ সালের ৩ মে (বাংলার ১৯ বৈশাখ)  পড়ছে। এই দিনে দেবী লক্ষ্মীর পূজার বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। শুধু তাই নয়, এই দিনে সোনা কেনা শুভ বলে মনে করা হয়। আসুন জেনে নিই কেন আমরা অক্ষয় তৃতীয়া উদযাপন করি, এর তারিখ এবং শুভ সময়।

    অক্ষয় তৃতীয়ার শুভ সময়

    অক্ষয় তৃতীয়ার তারিখ শুরু হয় – ৩ মে সকাল ৫ টা বেজে ১৯ মিনিটে
    অক্ষয় তৃতীয়া তিথি সমাপ্তি – ৪ মে সকাল ৭ টা বেজে ৩৩ মিনিটে।
    রোহিণী নক্ষত্র- ৩ মে বেলা ১২ টা বেজে ৩৪ মিনিট থেকে শুরু হবে এবং ৪ মে সকাল ৩ টে বেজে ১৮ মিনিটে শেষ হবে।

    অক্ষয় তৃতীয়ার তাৎপর্য

    অক্ষয় তৃতীয়া হল বৈশাখ মাসের শুক্ল পক্ষের তৃতীয়া তিথি। এই তিথি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। 
    অক্ষয় শব্দের অর্থ যা ক্ষয়প্রাপ্ত হয় না। বৈদিক বিশ্বাসানুসারে এই পবিত্র তিথিতে কোন শুভকার্য সম্পন্ন
    হলে তা অনন্তকাল অক্ষয় হয়ে থাকে। 

    যদি ভালো কাজ করা হয় তার জন্যে আমাদের লাভ হয় অক্ষয় পূণ্য আর যদি খারাপ কাজ করা হয় তবে লাভ হয় অক্ষয় পাপ। এদিন পূজা, জপ, ধ্যান, দান, অপরের মনে আনন্দ দেয়ার মত কাজ করা উচিত। যেহেতু এই তৃতীয়ার সব কাজ অক্ষয় থাকে তাই প্রতিটি পদক্ষেপ ফেলতে হয় সতর্কভাবে।

    অক্ষয় তৃতীয়া দিনটি শুভ ও দাবীমূলক কাজের জন্য শুভ। বিবাহের পাশাপাশি জামাকাপড়, সোনা-রুপোর গয়না, যানবাহন, সম্পত্তি ইত্যাদির কেনাকাটাও এই দিনে শুভ বলে মনে করা হয়। এই দিনে দান-খয়রাতেরও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এটা করলে ধন-সম্পদ ও শস্যের অনেক বৃদ্ধি হয়।

    অক্ষয় তৃতীয়ার মাহাত্ম্য

    ১) এটা বিশ্বাস করা হয় যে ভগবান পরশুরাম, ভগবান বিষ্ণুর ষষ্ঠ অবতার, অক্ষয় তৃতীয়ার দিনে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। এই দিনে অক্ষয় তৃতীয়ার সঙ্গে পরশুরাম জয়ন্তীও পালিত হয়।
    ২) একইসঙ্গে এমনও বিশ্বাস আছে যে এই দিনে মা গঙ্গা ভগীরথের কঠোর তপস্যায় প্রসন্ন হয়ে পৃথিবীতে অবতরণ করেছিলেন।
    ৩) এটাও বিশ্বাস করা হয় যে এই দিনে মা অন্নপূর্ণার জন্ম হয়েছিল। তাই এই দিনে রান্নাঘর ও খাদ্যশস্যের পুজো করা উচিত।
    ৪) অক্ষয় তৃতীয়ার দিন, ভগবান শঙ্কর কুবের-কে মা লক্ষ্মীর পূজা করতে বলেছিলেন। তাই এই দিনে দেবী লক্ষ্মীর পূজা করার বিধান রয়েছে।

     

LinkedIn
Share