Category: পরম্পরা

Get updated History and Heritage and Culture and Religion related news from the Madhyom news portal madhyom.com, West Bengal leading news portal Madhyom.com

  • Hindu Rituals: সন্ধ্যা দেওয়া হয় কেন? এর ঐতিহ্য, বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাই বা কী?

    Hindu Rituals: সন্ধ্যা দেওয়া হয় কেন? এর ঐতিহ্য, বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাই বা কী?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: হিন্দু সংস্কৃতিতে সন্ধ্যা হলে গৃহস্থবাড়িতে তুলসী তলায় দেওয়া হয় সন্ধে, প্রদীপ। পুজোর অংশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হতে থাকে নৈবেদ্য, বস্ত্র, ধূপ এবং প্রদীপ। এছাড়াও পুজোর সময় অন্ধকার দূর করার জন্য চারিদিকে প্রদীপ জ্বালানো হতো। সদর দরজার সামনে প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখা হতো। কোন পথিকের প্রয়োজন হলে যেন তিনি আশ্রয় গ্রহণ করতে পারেন। বর্তমানেও গ্রামাঞ্চলের দিকে কিছু কিছু স্থানে সদর দরজায় প্রদীপ জ্বালানোর নিয়ম রয়েছে এখনও।

    সন্ধ্যা কথাটা এসেছে সন্ধি থেকে। একটি দিনকে কয়েক ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। যখন দুই কাল এর সন্ধি হয় তাই সন্ধ্যা। এটি দুই সময়ই প্রযোজ্য। যখন দিন থেকে রাত হয় আর যখন রাত থেকে দিন। এই সময়গুলিকে মানুষের জন্য গুরত্বপূর্ণ মানা হয়, কারণ তখন শক্তির পরিবর্তন ঘটে। আমাদের উপর শক্তির প্রভাব থাকেই। হিন্দু মতে ব্রহ্মাণ্ড পাঁচটি তত্ত্ব দিয়ে তৈরি, আর পাঁচটি তত্ত্বের সমন্বয়ে সবকিছু সুচারু রূপে চলে। তাই নিত্য পদ্ধতিতে কিছু উপাদান ব্যবহার হয় যা দিয়ে এই তত্ত্বগুলিকে সঞ্চারিত করা হয়। 

    ধূপকাঠি দিয়ে বায়ু তত্ত্বকে সঞ্চারিত করা হয়। প্রদীপ দিয়ে অগ্নি তত্ত্ব, জল দিয়ে জলতত্ত্ব, ফল ও ফুল দিয়ে পৃথিবী তত্ত্বকে সঞ্চারিত করা হয়। একাগ্রচিত্তে মন্ত্র উচ্চারণে বা জপ করে আকাশ তত্ত্ব সঞ্চারিত হয়। শঙ্খ ও কাঁসর বাজানো হয় কারণ এই শব্দে পরিবেশে, বাতাসে বিদ্যমান অনেক রকম জীবাণুর অবসান হয়। এই সবকিছুর সমন্বয়ে আরাধনা করতে হয়, সেই নিরাকার পরম ব্রহ্মের।

    সন্ধে দেবার সময় হচ্ছে সূর্যাস্তের ঠিক কয়েক মুহূর্ত পরে গোধূলির সময় রাতের ঠিক আগে। ‘সন্ধ্যা’কে সময় জ্ঞানে মানা হয় অর্থাৎ দুটো সময়ের সন্ধিক্ষণকে বোঝানো হয় — রাতের শেষ ও দিনের শুরুতে ‘প্রাত সন্ধ্যা’ , মধ্যাহ্নের শেষ ও অপরাহ্নের শুরুতে ‘মধ্যাহ্ন সন্ধ্যা’, দিনের শেষ ও রাতের শুরুতে ‘স্বায়ংসন্ধ‍্যা’। এই তিন সময়ে উপবিত ধারী ব্রাহ্মণগণ গায়ত্রীকে আহ্বাহন করে সন্ধ্যা আহ্নিক ক্রিয়া করে থাকেন। সনাতন পন্থীরাও এই তিন সময়ে যার যার ইষ্ট মন্ত্র জপ-ধ্যান করেন। অনেকে মন্ত্র জপ করে সন্ধ্যা দেয়।বহু দিন আগের প্রথা। এখন বর্তমান সমাজে সন্ধ্যা দেওয়ার প্রথা উঠেই গেছে।কিন্তু আমাদের ও উচিত আগের সকল প্রথাকে মেনে চলা।

     

  • Hindu Rituals: ঘরের সামনে ঝুলছে লেবু লঙ্কা! আছে আশ্চর্য এক বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা

    Hindu Rituals: ঘরের সামনে ঝুলছে লেবু লঙ্কা! আছে আশ্চর্য এক বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বর্তমান সমাজে লেবু-লঙ্কা ঝোলানো কে নিছক কুসংস্কার বলে চালিয়ে দেয় অনেকেই। কোনওদিন আমরা জানতে চাইনা যে, কেন এই রীতি ছিল বহু বছর আগে থেকে? চলুন জেনে নেওয়া যাক—

    ভারতীয় সংস্কৃতির প্রচলিত বিশ্বাস যে বাড়িতে প্রবেশের পথে লেবু ও লঙ্কা ঝুলিয়ে রাখলে ভাল হয়। দীর্ঘদিন ধরেই সারা দেশ জুড়ে এই প্রথা চলে আসছে। এগুলি আমাদের বাড়িতে নেতিবাচক শক্তি প্রবেশে ও ইতিবাচক প্রভাবকে ত্বরান্বিত করতে প্রভাবশালী উপাদান হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। 

    বলা হয় যে, অশুভ শক্তি, অন্যের কুদৃষ্টি দূরে রাখতে লেবু-লঙ্কার তুলনা হয় না। কিন্তু এর নেপথ্যেও যে বৈজ্ঞানিক ও বাস্তুশাস্ত্রসম্মত কারণ রয়েছে, যে কারণে এটি ঘর ও দোকানের বাইরে টাঙানো হয়, তা হয় তো অনেকেই জানেন না। 

    বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে স্বীকার করতেই হয় যে, লেবু-লঙ্কা অত্যন্ত উপকারী, কেন না লেবু স্বভাবগুণে টক এবং লঙ্কা খুবই তিক্ত, লেবুর টক এবং লঙ্কার তীব্রতার মিশ্রিত সুগন্ধ মাছি বা অন্যান্য কীটপতঙ্গ প্রতিরোধে সহায়তা করে। 

    আরও পড়ুন: শঙ্খ তিনবার বাজানো হয়, কেন জানেন? কী বলা হয়েছে শাস্ত্রে?

    তাই দরজার বাইরে লেবু-লঙ্কা টাঙিয়ে রাখলে তা মশা এবং অনেক পতঙ্গকেই আমাদের ঘরে প্রবেশ করতে না দিয়ে আমাদের অসুস্থ হওয়া থেকে রক্ষা করে এবং সুস্বাস্থ্য বজায় রাখে। এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে বাড়িতে লেবু এবং লঙ্কা ঝুলিয়ে রাখলে তা মানুষকে খারাপ দৃষ্টি থেকে রক্ষা করে। 

    এও বিশ্বাস করা হয় যে লেবুর টক স্বাদ এবং লঙ্কার তীব্র স্বাদ দুষ্ট মানুষের দৃষ্টির ঘনত্বকে ব্যাহত করে। আসলে, আমরা যখন লঙ্কা, লেবুর মতো জিনিস দেখি, তখন এগুলি আমাদের মনের মধ্যে স্বাদ অনুভব করাতে শুরু করে, যার কারণে দুষ্ট মনোভাবসম্পন্ন মানুষ দীর্ঘক্ষণ এ জাতীয় কোনও বিষয়বস্তুর দিকে তীক্ষ্ণ নজর দিতে পারে না এবং সঙ্গে সঙ্গে সেখান থেকে তাদের মনোযোগ সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়।

    আরও পড়ুন: সন্ধ্যা দেওয়া হয় কেন? এর ঐতিহ্য, বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাই বা কী?

    বাস্তুশাস্ত্র অনুসারে যে বাড়িতে লেবু গাছ থাকে সেখানে নেতিবাচক শক্তি বিরাজ করতে পারে না। এর প্রভাবে আমাদের ঘরে সুখ-সমৃদ্ধি বজায় থাকে। লেবু এবং লঙ্কার মধ্যে এমন কীটনাশক গুণ রয়েছে, যা আমাদের বাড়ির আশেপাশে ঝুলিয়ে রাখলে পরিবেশ বিশুদ্ধ রাখে। 

    বাস্তুশাস্ত্র অনুযায়ী এমনটা মনে করা হয় যে, লেবু চারপাশে ছড়িয়ে থাকা নেতিবাচক শক্তিকে শোষণ করে এবং পরিবেশে ইতিবাচক শক্তি সঞ্চারিত করতে সহায়তা করে। আমরা এখনও অনেক কিছু কুসংস্কার বলে মনে করি তা সঠিক ভাবে গণনা করলে হয়ত দেখা যাবে তার মধ্যে অনেক কিছু অজানা তথ্য, গুণ লুকিয়ে আছে।

  • Durga Puja: মহাঅষ্টমীতে কুমারী পুজো কেন করা হয়? কী এর তাৎপর্য?

    Durga Puja: মহাঅষ্টমীতে কুমারী পুজো কেন করা হয়? কী এর তাৎপর্য?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দুর্গাপূজার অষ্টমী মানেই সকালে স্নান করে নতুন জামাকাপড় পড়ে অঞ্জলী দেওয়া। তবে এই দিন আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ রীতি হল কুমারী পুজো। ১৯০১ সালে স্বামী বিবেকানন্দ কলকাতার বেলুড় মঠে প্রথম কুমারী পূজা শুরু করেন। সেই থেকেই প্রতিবছর বেলুড়ে মহা ধুমধাম করে এই পুজোর প্রথা চলে আসছে। তবে চলুন জেনে নেওয়া যাক দুর্গাপুজোয় কেন করা হয় কুমারী পুজো।

    কুমারী পুজোর কারণ

    শাস্ত্রানুযায়ী কুমারী পুজোর উৎপত্তি হয় কোলাসুর-কে বধ করার মধ্যে দিয়ে। গল্পে বলা আছে, কোলাসুর নামে এক অসুর স্বর্গ ও মর্ত্য-এর অধিকার নেওয়ার ফলে দেবতাগণ মহাকালীর শরণাপন্ন হন। দেবগণের ডাকে সাড়া দিয়ে দেবী পুর্নজন্ম-এ কুমারীরূপে কোলাসুর-কে বধ করেন, এর ফলে মর্ত্যে কুমারীপুজোর প্রচলন শুরু হয়। বর্ণনা অনুযায়ী কুমারী পুজোতে কোনও জাতি, ধর্মভেদ নেই। তবে সাধারণত ব্রাক্ষন কন্যা-কেই পুজো করা হয়

    এছাড়াও সেকালের ঋষি-মুনিরা প্রকৃতিকে নারীর সমান মনে করতেন। তাই কুমারী পুজোর মাধ্যমে প্রকৃতিকে পূজা করতেন তাঁরা। কারণ, তাঁরা মনে করতেন মানুষের মধ্যেই রয়েছে ঈশ্বর। বিশেষ করে যাদের মন সৎ, যারা নিষ্পাপ তাদের মধ্যেই ভগবানের প্রকট সবথেকে বেশি। এই গুণ কেবলমাত্র কুমারীদের মধ্যে থাকতে পারে, এই ভেবে তাদের দেবীরূপে পুজো করা হয়।

    আবার শাস্ত্রমতে, এক থেকে ষোল বছর বয়স পর্যন্ত ঋতুমতী না হওয়া বালিকাদেরই কুমারী রূপে পূজা করা হয়। নতুন বস্ত্র, ফুলের মালা, মুকুট, পায়ে আলতা, কপালে সিঁদুরের টিপ ও তিলক পরিয়ে কুমারীদের সাজিয়ে তোলা হয়। বয়সভেদে কুমারীর নাম রয়েছে ভিন্ন। তবে কুমারী পূজার জন্য সাধারণত পাঁচ থেকে সাত বছরের কন্যাকে পূজা করা হয়। এক বছরের মেয়ে ‘সন্ধ্যা’, সাত বছরের মেয়ে ‘মালিনী’, বারো বছরের কন্যা ‘ভৈরবী’ এবং ষোলে বছরের মেয়েক ‘অম্বিকা’ নামে ডাকা হয়।

    তাৎপর্য

    সনাতন ধর্মে, সম্মানের দিক থেকে নারীকে শ্রেষ্ঠ আসনে বসানো হয়েছে। তাই নারীকে সম্মান ও শ্রদ্ধা করতে এই পুজো করা হয়। শত্রুদের ধ্বংস, সকল কর্মের শুভ ফল পেতেও এই পুজো হয়ে থাকে। কুমারী পূজা সম্মান, লক্ষ্মী, বিদ্যা এবং তেজ নিয়ে আসে।

  • Ratanti Kali Puja: কেন হয় রটন্তী কালীপুজো? কী বা তার ইতিহাস?

    Ratanti Kali Puja: কেন হয় রটন্তী কালীপুজো? কী বা তার ইতিহাস?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: হিন্দুধর্মে মা কালীর আরাধনা সর্বজনবিদিত। বিভিন্ন তিথিতে দেবীর বিভিন্ন রূপের পুজো করা হয়। মাঘ মাসের কৃষ্ণ চতুর্দশীতে রটন্তী কালীপুজো হয়।

    কথিত আছে, শ্রীরাধা বনে শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে লীলা করতেন বলে তাঁর শাশুড়ি জটিলা এবং ননদিনী কূটিলা শ্রীরাধার নামে কলঙ্ক রটিয়ে ছিলেন এবং তা প্রমাণ করার জন্য একদিন গোপনে তারা আয়ান ঘোষকে সঙ্গে নিয়ে শ্রীরাধার পিছু নেন। আয়ান ঘোষের আরাধ্যা দেবী ছিলেন কালী। 

    অন্তর্যামী শ্রীকৃষ্ণ জটিলা-কূটিলার গোপন অভিপ্রায় জানতে পেরে স্বয়ং কালীরূপ ধারণ করেছিলেন। শ্রীরাধাও কালীরূপী শ্রীকৃষ্ণকে কদম্ব বৃক্ষের মূলে ফল, ফুল দিয়ে পুজো করেছিলেন। এদৃশ্য দেখে জটিলা, কূটিলা ও আয়ান ঘোষের ভূল ভাঙে এবং শ্রীরাধা যে স্বয়ং আদ্যাশক্তি তা বুঝতে পেরেছিলেন। এই ঘটনাটি স্মরণ করেই ভক্তজন রটন্তী কালীপুজো করে থাকেন।

    শাস্ত্রমতে আবার শোনা যায়, যখন শ্রীকৃষ্ণের প্রেমলীলায় রাধা মত্ত ছিলেন, সেই সময়ে একদিন দুপুরে গোপীনিরা তাঁর বাঁশির আওয়াজ শুনে চমকে উঠেছিলেন। গোপিনীরা বনের দিকে ছুটে গিয়ে দেখলেন সামনে ইষ্টমূর্তি। শ্রীরাধাই যে স্বয়ং আদ্যাশক্তি তা সেদিন বুঝতে পেরেছিলেন তাঁরা। সেই দিনকে স্মরণ করেই বিশেষ তিথিতে হয় রটন্তী কালীপুজো।

    রটন্তী’ শব্দটি এসেছে ‘রটনা’ শব্দ থেকে। যার অর্থ প্রচার হওয়া। মনে করা হয়, এই বিশেষ দিনেই দেবীর মহিমা চতুর্দিকে রটে যায়। মুক্তকেশী মায়ের মহিমা এই তিথিতেই সর্বস্তরে রটিত হয়ে থাকে। আবার লোক কথা অনুসারে শোনা যায়, এদিনই দেবী ছিন্নমস্তার আবির্ভাব হয়েছিল। দেবী পার্বতী তাঁর সহচরীদের খিদে মেটানোর জন্যে নিজ মুণ্ডুচ্ছেদ করে ত্রিধারায় রক্তবারি প্রকট করেছিলেন।

     

  • Sawan 2022: শুরু হয়েছে পবিত্র শ্রাবণ মাস, শিবপুজোর নিয়ম জানেন তো?

    Sawan 2022: শুরু হয়েছে পবিত্র শ্রাবণ মাস, শিবপুজোর নিয়ম জানেন তো?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: হিন্দু (Hindu) শাস্ত্রে শ্রাবণ মাসের (Shravan Maas) গুরুত্ব অপরিসীম। শ্রাবণকে (Sawan 2022) বলা হয় দেবাদিদেব শিবের (Lord Shiva) মাস। মহাদেব (Mahadev) পুজিত হন এই মাসে। ভগবান শিবের উপাসনা করার শ্রেষ্ঠ সময় কাল-প্রদোষ বলে মনে করা হয়। পুণ্যার্থীরা শ্রাবণের প্রতি সোমবার, (Sawan Sombaar) শিবের জন্যে ব্রত পালন করেন। সাধারণত মাসভর চলে নানা ধর্মীয় রীতি পালন। 

    শিব মন্দির ছাড়াও, বাড়িতে বাড়িতেও পুজো হয় মহাদেবের। ‘হর হর মহাদেব’ (Har Har Mahadev) উচ্চারণ করে দেশের ভিন্ন প্রান্তে ভোলেবাবার মাথায় জল ঢালতে ভক্তদের সমাগম হয়। শিবের পুজায় গঙ্গাজল দিয়ে শিবকে অভিষেককে ‘রুদ্রাভিষেক’ (Rudravishek) বলে। একেই শ্রেষ্ঠ বলে বিবেচনা করা হয়। শাস্ত্রে বলা হয়েছে জলাভিষেক করলে পুজোর সমস্ত মনোবাঞ্ছা পূরণ হয়। 

    মনে করা হয়, শ্রাবণ মাস শিবের অত্যন্ত প্রিয় মাস। তাই তাঁকে সন্তুষ্ট করে ভক্তরা কোনও ত্রুটি রাখেন না। উপবাস করে শিবের মাথায় গঙ্গার জল বা দুধ ঢালেন শিবভক্তরা। বিশ্বাস করা হয়, এই মাসে ভক্তি মনে মহাদেবকে ডাকলে তিনি তুষ্ট হন ও মনোবাঞ্ছা পূরণ করেন। 

    আরও পড়ুন: এবছর কবে কামিকা একাদশী? এদিনের মাহাত্ম্য জানেন কি?

    বিশ্বাস, পবিত্র এই মাসে শিবের আরাধনায় সকল সমস্যা থেকে মুক্তি মেলে। শিবের কৃপা পেতে মেনে চলতে হবে বিশেষ নিয়ম। শ্রাবণ মাসের প্রথম দিন এই নিয়ম মেনে শিব পুজো করতে হবে। তাতে জীবনের সকল দুর্ভোগ কেটে যাবে, তেমনই সর্ব ক্ষেত্রে উন্নতি ঘটবে। জেনে নিন কীভাবে আরাধনা করবেন শিবের। 

    এবছর শ্রাবণ মাসে মোট পাঁচটি সোমবার পড়েছে—

    * ১৮ জুলাই ২০২২ – প্রথম সোমবার
    * ২৫ জুলাই ২০২২- দ্বিতীয় সোমবার
    * ১ অগস্ট ২০২২- তৃতীয় সোমবার
    * ৮ অগস্ট ২০২২ – চতুর্থ সোমবার
    * ১৫ অগস্ট ২০২২ – পঞ্চম সোমবার

    শ্রাবণ মাসে শিব পুজোর পদ্ধতি- 

    শ্রাবণ মাসে বিশেষ নিয়ম মেনে শিবের আরাধনা করুন। প্রতিদিন, বিশেষ করে সোমবারে সকালে তাড়াতাড়ি উঠে স্বচ্ছ পোশাক পরে নিন। বাড়ির মন্দিরে প্রদীপ জ্বালান। শিবের আরতি করুন এবং ভোগ নিবেদন করুন। মনে রাখবেন যে শুধুমাত্র সাত্ত্বিক জিনিস ঈশ্বরের কাছে নিবেদন করা হয়। ডান হাতে জল নিয়ে শ্রাবণ মাসের সোমবারের ব্রতর সংকল্প করুন। এর পর সমস্ত দেবতাদের ওপর গঙ্গাজল অর্পণ করুন। ওম নমঃ শিবায় মন্ত্র জপ করে শিব শঙ্করের অভিষেক করুন। 

    আরও পড়ুন: পুজোয় মঙ্গল ঘট কেন স্থাপন করা হয়, জানেন?

    ভোলানাথকে সাদা ফুল, সাদা চন্দন, ভাঙ, ধুতুরা, গরুর দুধ, পঞ্চামৃত, সুপুরি, বিল্ব পত্র (বেলপাতা) ও জল অর্পণ করুন। পুজো সামগ্রী অর্পণ করার সময় ওম নমঃ শিবায় মন্ত্র জপ করতে ভুলবেন না। শ্রাবণ সোমবারের পুজোয় সোমবার ব্রতকথা অবশ্যই পাঠ করা উচিত। শেষে আরতি করতে ভুলবেন না। প্রসাদ হিসেবে শিবকে ঘি ও চিনির ভোগ অর্পণ করুন। তার পর সেই প্রসাদ বিতরণ করুন ও নিজেও তা গ্রহণ করুন।

    শাস্ত্র মতে, বিল্বের মূলে স্বয়ং শিব বসবাস করে। এই নিয়ম মেনে পুজো করতে সকল জটিলতা থেকে মুক্তি মিলবে। শ্রাবণ মাসে এই নিয়ম মেনে পুজো করুন। সকল দুর্ভোগ থেকে মুক্তি মিলবে। সারা বছরই অনেকে শিব পুজো করে থাকেন। সোমবার করে দেবাদিদেব মহাদেবের বিশেষ পুজো করা হয়। শাস্ত্র মতে, যে কোনও সোমবার পুজো করলে মহাদেব তুষ্ট হন।

    কি কি নিবেদন করলে মিলবে সুফল? 

    বিশেষভাবে শিবলিঙ্গে (Shivling) রৌপ্য বা পিতলের পদ্ম দিয়ে দুধ নিবেদন করা উচিত। এ ছাড়া জল, বিল্ব পাতা , আকন্দ ফুল, ধুতুরা যা শিবের প্রিয় ফুল, গাঁজা, চন্দন, মধু, ছাই নিবেদন করুন। এছাড়া শিবলিঙ্গে অর্পণ করুন— চিনি, জাফরান, গব্য ঘি।

  • Ganga Dussehra 2022: এবছর গঙ্গা দশেরা কবে? জানুন তারিখ-সময়, তাৎপর্য

    Ganga Dussehra 2022: এবছর গঙ্গা দশেরা কবে? জানুন তারিখ-সময়, তাৎপর্য

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: গঙ্গা দশেরা হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম একটি উৎসব যা পবিত্র মা গঙ্গার পৃথিবীতে অবতরণকে চিহ্নিত করে। নির্জলা একাদশীর এক দিন আগে উৎসব শুরু হয় এবং ১০ দিন ধরে চলে। এই সময়ে ভক্তরা দেবীর আরাধনা করেন। এটি ‘গঙ্গাবতরণ’ নামেও পরিচিত, যা গঙ্গদেবীর অবতরণকে বোঝানো হয়।

    হিন্দু পুরাণ অনুসারে, ভগীরথের পূর্বপুরুষদের আত্মাকে অভিশাপ থেকে মুক্ত করতে জ্যৈষ্ঠ মাসের দশমী তিথিতে দেবী গঙ্গা পৃথিবীতে অবতরণ করেছিলেন। এইভাবে, গঙ্গা দশেরা জ্যৈষ্ঠ মাসে, শুক্লপক্ষ বা পূর্ণিমা পক্ষে  হয়।

    গঙ্গা দশেরার তারিখ এবং সময়:

    হিন্দু ক্যালেন্ডার ২০২২ অনুসারে, গঙ্গা দশেরা ৯ জুন রবিবারে শুরু হবে।

    দশমী তিথি শুরু হবে: ৯ জুন সকাল ৮টা ২১ মিনিটে।

    দশমী তিথি শেষ হবে: ১০ জুন সকাল ৭টা ২৫ মিনিটে।

    হস্ত নক্ষত্র শুরু হবে: ৯ জুন ভোর ৪টা ৩১ মিনিটে।

    হস্ত নক্ষত্র শেষ হবে: ১০ জুন ভোর ৪টা ২৬ মিনিটে।

    গঙ্গা দশেরা পূজার নিয়ম:

    এই দিনে ভক্তরা পবিত্র গঙ্গা নদীতে স্নান করেন এবং প্রার্থনা করেন। বিশ্বাস করা হয় যে পবিত্র নদীতে স্নান করলে অতীত এবং বর্তমানের সমস্ত পাপ ধুয়ে যায় এবং সমস্ত পাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। লোকেরা আরও বিশ্বাস করেন যে গঙ্গা জলের উপকারিতাও রয়েছে এবং এটি বিভিন্ন রোগ নিরাময় করে।

    গঙ্গা দশেরার তাৎপর্য:

    পৃথিবীতে মা গঙ্গা বা দেবী গঙ্গার অবতরণকে চিহ্নিত করতে গঙ্গা দশেরা পালন করা হয়। দুঃখ-কষ্ট থেকে মুক্তি পেতে ভক্তরা এই দিনে দেবী গঙ্গার পূজা করেন। এটি গৃহপ্রবেশের জন্য একটি শুভ দিন এবং যানবাহন বা নতুন ব্যবসা শুরু করা ও ব্যয়বহুল জিনিস কেনার জন্য একটি শুভ দিন বলে মনে করা হয়। প্রতি বছর ভক্তরা গঙ্গাস্নানে যান এবং গঙ্গা আরতিতে অংশগ্রহণ করেন।

    কেন উৎযাপিত হয় বুদ্ধ পূর্ণিমা? জানুন এই শুভদিনের মাহাত্ম্য ও তাৎপর্য

  • Hindu Rituals: শঙ্খের উৎপত্তি কোথায়? কোন শঙ্খের মূল্য সবচেয়ে বেশি?

    Hindu Rituals: শঙ্খের উৎপত্তি কোথায়? কোন শঙ্খের মূল্য সবচেয়ে বেশি?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক:  শঙ্খ প্রাচীন শিল্প। হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারো সভ্যতা আবিষ্কারের সময় শঙ্খশিল্পের বিভিন্ন কারুকাজের নিদর্শন পাওয়া যায়।

    শাঁখ বা শঙ্খ শব্দটি এসেছে দুটি সংস্কৃত শব্দ ‘শম’ ও ‘খম’ থেকে। ‘শম’ শব্দের অর্থ শুভ এবং ‘খম’ শব্দের অর্থ জল। এই শব্দের মিলনে সৃষ্টি হয়েছে ‘শঙ্খম’ শব্দটি। হিন্দু ধর্মে যে কোনও পুজোয় শাঁখ বাজানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ। এছাড়া সব শুভ কাজেও শঙ্খধ্বনি অতি জরুরি। প্রতিদিন তুলসীতলায় সন্ধে দিয়ে শাঁখ বাজানোর রীতি রয়েছে।

    সাধারণত শঙ্খ পাওয়া যায় ভারত মহাসাগর ও বঙ্গোপসাগরে। আরব সাগরেও কিছু প্রাপ্তি ঘটে। প্রাপ্তির ওপর ভিত্তি করে শঙ্খেরবিভিন্ন নামকরণ করা হয়। বিভিন্ন জাতের শঙ্খ রয়েছে। এদের মধ্যে উন্নতমানের হচ্ছে কন্যাকুমারী, রামেশ্বরী, কেপি, জাজি, পাটি, মতি সালামত, ওমেনি, দোয়ালি, সারভি কি, তিতকুটি, ধলা ইত্যাদি। ‘মতি সালামত’ সর্বশ্রেষ্ঠ। কারণ এর মধ্যে মুক্তা পাওয়া যায়।

    আরও পড়ুন: সন্ধ্যা দেওয়া হয় কেন? এর ঐতিহ্য, বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাই বা কী?

    শঙ্খের মুখ, লেজ ও পিঠ আছে। সাধারণত বাম দিকে শঙ্খের মুখ থাকে। যদি শঙ্খের মুখ ডান দিকে থাকে তবে তার মূল্য অনেক। এটাকে নারায়ণের হাতের শঙ্খের অনুরূপ মনে করা হয়। এ দক্ষিণমুখী শঙ্খকে সৌভাগ্যের লক্ষণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ শঙ্খ দিয়ে পূজা করলে ঘরে সৌভাগ্য আসে, বিপদ-আপদ দূর হয়।

    হিন্দু সংস্কৃতির সঙ্গে শঙ্খের যোগ আজকের নয়। সেই কোন প্রাচীন কাল থেকে পুজো-অর্চনার কাজে লেগে আসছে এই প্রাকৃতিক উপাদানটি। দুর্গাপূজার অন্যতম অনুষঙ্গ শঙ্খ। পুরোহিতের মন্ত্র, ঢাকের আওয়াজ, শঙ্খধ্বনি এই শব্দগুলো সনাতন পূজার পরিচিত অনুষঙ্গ। এগুলো ছাড়া পূজাই হয় না।

    শঙ্খ প্রতিটা হিন্দু বাঙালি বাড়িতে থাকে, প্রতিটা বাঙালি বাড়িতে সকাল ও সন্ধ্যায় শঙ্খ বাজানো একটা রীতি।

    আরও পড়ুন: কেন হয় রটন্তী কালীপুজো? কী বা তার ইতিহাস?

  • Hindu Rituals: শঙ্খ তিনবার বাজানো হয়, কেন জানেন? কী বলা হয়েছে শাস্ত্রে?

    Hindu Rituals: শঙ্খ তিনবার বাজানো হয়, কেন জানেন? কী বলা হয়েছে শাস্ত্রে?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: হিন্দু সংস্কৃতির সঙ্গে শঙ্খের যোগ আজকের নয়। সেই কোন প্রাচীন কাল থেকে পুজো-অর্চনার কাজে লেগে আসছে এই প্রাকৃতিক উপাদানটি। দুর্গাপুজোর অন্যতম অনুষঙ্গ শঙ্খ। পুরোহিতের মন্ত্র, ঢাকের আওয়াজ, শঙ্খধ্বনি এই শব্দগুলো সনাতন পুজো মণ্ডপের পরিচিত অনুষঙ্গ। এগুলো ছাড়া পুজোই হয় না। শঙ্খ প্রতিটা হিন্দু বাঙালি বাড়িতে থাকে, প্রতিটা বাঙালি বাড়িতে সকাল ও সন্ধ্যায় শঙ্খ বাজানো একটা রীতি।

    হিন্দু শাস্ত্রে বলা হয়েছে, নিত্যপুজোর পরে যদি নিয়ম করে তিনবার শঙ্খ বাজানো যায়, তাহলে গৃহস্থের অন্দরে অশুভ শক্তির প্রভাব কমতে থাকে এবং শুভ শক্তির মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। ফলে কোনও খারাপ ঘটনা ঘটার আশঙ্কা যেমন কমে, তেমনি ভাগ্যও ফিরে যায়। ফলে জীবন সুখ -শান্তিতে এবং আনন্দে ভরে উঠতে সময় লাগে না।

    আরও পড়ুন: শঙ্খের উৎপত্তি কোথায়? কোন শঙ্খের মূল্য সবচেয়ে বেশি?

    শাস্ত্রে বলা হয় বাড়িতে শঙ্খ তিনবার বাজানো উচিত। তিনবারের বেশি শঙ্খ বাজানো উচিত নয়। এর কারণ হিসেবে শাস্ত্রে বলা হয় যে, ৩ বার শঙ্খ বাজালে ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশ এই তিন দেবতার সঙ্গে সমস্ত দেবদেবীরা আমন্ত্রিত হন। কিন্তু তিনবারের বেশি শঙ্খ বাজালে দেবের সঙ্গে দানব বা অসুরকে নিমন্ত্রণ পাঠানো হয়।

    হিন্দু ধর্ম শাস্ত্রে বলা হচ্ছে যে, সমুদ্র মন্থনের সময় অসুররা চারবার শঙ্খধ্বনি করে “বলি অসুর”-কে নিমন্ত্রণ পাঠিয়ে জাগ্ৰত করেছিল। তাই, তিনবারের বেশি শঙ্খ বাজালে সৃষ্টি, স্থিতি ও বিনাশের দেবতা মহাদেব, বিষ্ণু, ব্রহ্মার পাশাপাশি আসুরি শক্তিও নিমন্ত্রণ পেয়ে আপনার গৃহে প্রবেশ করে। দেবতার পাশাপাশি অসুরকে নিমন্ত্রণের ফলস্বরূপ আপনার ও আপনার পরিবারের উপর নেমে আসতে পারে এইসব দেবতাদের অভিশাপ। তাই শাস্ত্রে তিনবার করেই শঙ্খ বাজানোর পরামর্শ দেওয়া হয়।

    আরও পড়ুন: সন্ধ্যা দেওয়া হয় কেন? এর ঐতিহ্য, বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাই বা কী?

     

  • Jamai Sasthi 2022:  মেয়ের মঙ্গল কামনাতেই জামাইষষ্ঠী! জানুন এর নেপথ্য কথন

    Jamai Sasthi 2022: মেয়ের মঙ্গল কামনাতেই জামাইষষ্ঠী! জানুন এর নেপথ্য কথন

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। প্রতি মাসেই কোনও না কোনও উৎসব পালন করা হয়। নববর্ষ, অক্ষয় তৃতীয়ার পরই আসে জামাইষষ্ঠী। প্রতি বছর জ্যৈষ্ঠ মাসের শুক্লপক্ষে ষষ্ঠী তিথিতে জামাইষষ্ঠী পালন করা হয়। এবছর ৫ জুন, রবিবার ঘরে ঘরে পালিত হবে জামাইষষ্ঠী। ব্যস্ত সময়ে আদরের জামাইকে নিজে হাতে পঞ্চব্যঞ্জন রেঁধে খাওয়ানোর সুযোগ খুব কমই পান শাশুড়ি মায়েরা। এবছর রবিবার, ছুটির দিন তাই এমন সুযোগ কোনও ভাবেই হাতছাড়া করতে চান না অনেকে। তবে জামাইষষ্ঠী নাম হলেও আদতে মেয়ের মঙ্গল কামনাতেই এই উসৎব পালন করা হয়। এর পিছনে রয়েছে প্রাচীন ইতিহাস। 

    ভারত তথা দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে এক সময়ে সংস্কার ছিল যে মেয়ের বিয়ের পর তার বাবা বা মা-মেয়ের বাড়িতে ততদিন পর্যন্ত যেতে পারবেন না, যত দিন না তিনি সন্তানের জন্ম দেন। এতে সমস্যা হল — সন্তানধারণে সমস্যা বা সন্তান মৃত্যুর (শিশুমৃত্যু) ফলে কন্যার পিতামাতাকে দীর্ঘদিন অপেক্ষা করতে হত কন্যার বাড়ি যাওয়ার জন্য৷ তাই উপায়? সমাজের বিধানদাতা জৈষ্ঠ্য মাসের শুক্লা ষষ্ঠীকে বেছে নিলেন জামাইষষ্ঠী হিসাবে৷ যেখানে মেয়ে জামাইকে নিমন্ত্রণ করে সমাদর করা হবে ও কন্যার মুখ দর্শন করা যাবে৷ আর সেইসঙ্গে মা ষষ্ঠীর পুজো করে তাঁকে খুশি করতে হবে যাতে কন্যা শীঘ্র সন্তানের মুখ দর্শন করতে পারে ৷ 

    ষষ্ঠী-পালন সাধারণত করে থাকেন মেয়েরা৷ তাঁদের কাছে এর তাৎপর্য অন্যরকম ৷ কথিত আছে — এক পরিবারে দুটি বউ ছিল৷ ছোট বউ ছিল খুব লোভী৷ বাড়ির মাছ বা অন্যান্য ভাল খাবার রান্না হলেই সে লুকিয়ে লুকিয়ে খেয়ে নিত আর শাশুড়ির কাছে অভিযোগ করত ‘সব কালো বেড়ালে খেয়ে নিয়েছে।’ বেড়াল মা ষষ্ঠীর বাহন ৷ তাই বেড়াল, মা ষষ্ঠীর কাছে অভিযোগ জানাল৷ মা ষষ্ঠী রেগে গেলেন৷ যার জেরে ছোট বউ-এর একটি করে সন্তান হয় আর মা ষষ্ঠী তার প্রাণ হরণ করেন৷ এইভাবে ছোট বউয়ের সাত পুত্র ও এক কন্যাকে মা ষষ্ঠী ফিরিয়ে নেন৷ ফলে স্বামী, শাশুড়ি ও অন্যান্যরা মিলে তাকে ‘অলক্ষণা’ বলে গালিগালাজ করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়৷ অথচ বড় বউ পুত্রকন্যাদের নিয়ে সুখে ঘর করতে থাকে৷

    ছোট বউ মনের দুঃখে বনে চলে যান ও একাকী কাঁদতে থাকেন৷ শেষে মা ষষ্ঠী বৃদ্ধার ছদ্মবেশে তার কাছে এসে কান্নার কারণ জানতে চান৷ সে তার দুঃখের কথা বলে৷ তখন মা ষষ্ঠী তার পূর্বের অন্যায় আচরণের কথা বললে সে মাফ চায়৷ ষষ্ঠী তাকে ক্ষমা করেন। এরপর বলেন— ভক্তিভরে ষষ্ঠীর পুজো করলে সাতপুত্র ও এক কন্যার জীবন ফিরে পাবে৷ তখন ছোট বউ সংসারে ফিরে এসে ঘটা করে মা ষষ্ঠীর পুজো করে ও ক্রমে ক্রমে তার পুত্র কন্যাদের ফিরে পায়৷ এর থেকে দিকে দিকে ষষ্ঠী পুজোর মাহাত্ম্য ছড়িয়ে পড়ে৷ এটাই জামাই ষষ্ঠী বা অরণ্যষষ্ঠী ব্রতকথার মূল গল্প৷

    জামাইষষ্ঠী মূলত লোকায়ত প্রথা। ষষ্ঠীদেবীর পার্বণ থেকেই এই প্রথার উদ্ভব। প্রতি বছর জ্যৈষ্ঠ মাসের ষষ্ঠী তিথিতে প্রথম প্রহরে ষষ্ঠীদেবীর পুজোর আয়োজন করা হয়। ষষ্ঠীদেবী মাতৃত্বের প্রতীক। জামাইষষ্ঠীর দিন জামাইয়ের হাতে হলুদ মাখানো সুতো বেঁধে দেওয়া হয় মা ষষ্ঠীর আর্শীবাদ রূপে। এরপর দীর্ঘায়ু কামনায় তেল-হলুদের ফোঁটা কপালে দিয়ে তালপাতার পাখা দিয়ে বাতাস করা হয়। ধান-দূর্বা দিয়ে আশীর্বাদ করা হয়। সঙ্গে একটি থালায় সাজিয়ে দেওয়া হয় পাঁচটি বিভিন্ন রকমের গোটা ফল আর মিষ্টি। এ তো গেল পুজোর রীতিনীতি।

    জামাইষষ্ঠীর আসল চমক হল জামাইয়ের জন্য শাশুড়ি মায়ের নিজের হাতে রান্না করা পঞ্চব্যাঞ্জন। বিভিন্ন ধরনের মাছ, মাংস, মিষ্টির এলাহি আয়োজন। এখন অবশ্য উপহার দেওয়া-নেওয়ারও একটা পর্ব থাকে। নিয়মকানুন, রীতিনীতি, খাওয়া-দাওয়া, উপহার আদান-প্রদানের ভিড়ে এই উৎসবে মিশে থাকে সারা বছর ব্যস্ততার কারণে মেয়ে জামাইকে কাছে না পাওয়া মায়ের আবেগও। জামাইও শ্বশুরবাড়ি ঢোকার সময় দই-মিষ্টি আনতে ভোলেন না। প্রণামী হিসেবে শাশুড়িকে বস্ত্রাদি দেওয়ার রীতিও রয়েছে। সাহিত্যে এদিনে শ্যালক-শ্যালিকা নিয়ে জামাইয়ের থিয়েটার দেখা, সন্ধেবেলা জামাই ঠকানোর রঙ্গতামাশার কথাও আছে।

  • Rath Yatra 2022: পুরীর মন্দির ঘিরে রয়েছে এই অলৌকিক গল্পগুলি, জানতেন কি?

    Rath Yatra 2022: পুরীর মন্দির ঘিরে রয়েছে এই অলৌকিক গল্পগুলি, জানতেন কি?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের জগন্নাথদেবের (Lord Jagannath) মন্দির অত্যন্ত পবিত্র। বিশেষ করে বিষ্ণু ও কৃষ্ণ উপাসকদের নিকট এটি একটি তীর্থস্থান। জগন্নাথ মন্দির  (Jagannath Temple) ওড়িশার সৈকতশহর পুরীর (Puri) পূর্ব সমুদ্র উপকূলে অবস্থিত। 

    রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন স্বপ্নাদেশ পালনার্থে প্রাথমিকভাবে মন্দিরটি নির্মাণের পর, জগন্নাথ মন্দিরটি দ্বাদশ শতাব্দীতে পুনঃনির্মাণ করেন গঙ্গা রাজবংশের রাজা অনন্তবর্মণ চোদাগঙ্গা। কিন্তু মন্দিরটির কাজ সমাপ্ত করেন তার বংশধর অঙ্গভিমা দেব। যদিও মন্দিরের নির্মাতাদের নিয়ে ইতিহাসবিদদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। 

    ১০.৭ একর জমিতে ২০ ফুট প্রাচীর দিয়ে ঘেরা জগন্নাথ মন্দির। ভোগমন্দির, নটমন্দির, জগমোহনা এবং দেউল নামে চারটি বিশেষ কক্ষ আছে মন্দিরে। ভোগমন্দিরে খাওয়া দাওয়া হয়, নটমন্দিরে আছে নাচ-গানের ব্যবস্থা, জগমোহনায় ভক্তরা পূজাপাঠ করেন এবং দেউলে পূজনীয় বিগ্রহগুলো স্থাপিত। 

    আরও পড়ুন: প্রতিবছর রথযাত্রার আগে জ্বর আসে জগন্নাথদেবের, কেমন করা হয় চিকিৎসা?

    প্রধান মন্দিরের কাঠামো মাটি থেকে কিছুটা উঁচুতে নির্মিত এবং দুটি আয়তাকার দেওয়াল দ্বারা আবৃত। বহিঃপ্রাঙ্গণকে মেঘনাদ প্রাচীর বলা হয় (২০০মিটার/১৯২ মিটার) এবং অভ্যন্তরীণ ঘাঁটিটি কুর্মাবেদ নামে পরিচিত (১২৬ মিটার/৯৫ মিটার)। মন্দিরে চারটি প্রবেশদ্বার রয়েছে- সিংহদ্বার, হষ্বদ্বার, খঞ্জদ্বার এবং হস্তীদ্বার। 

    জগন্নাথ মন্দিরের আশেপাশে প্রায় তিরিশটি ছোট-বড় মন্দির লক্ষ্য করা যায়। মন্দিরের দেউলে রয়েছে জগন্নাথ, জগন্নাথের দাদা বলরাম এবং বোন সুভদ্রাদেবীর সুসজ্জিত মূর্তি। তাঁদের বিগ্রহের পাশাপাশি সুদর্শন, শ্রীদেবী, ভূদেবী এবং মাধব দেবতাও আরাধ্য হন। 

    প্রতিদিন ভোরে কিশোর ছেলেরা কিছু নির্দিষ্ট পূজাবিধি অনুসরণ করে মন্দিরের ৬৫ মিটার (২১০ ফুট) উঁচুতে উঠে চক্রের উপর পতাকাগুলো লাগায়। গ্রীষ্ম, বর্ষা সবসময়ই তারা প্রস্তুত পতাকা স্থাপনে। আগের দিনের পুরনো পতাকাগুলো জনগণের মাঝে নিলামে বিক্রয় করা হয়। 

    জগন্নাথ মন্দিরের রান্নাঘরকেও পৃথিবীর সবচেয়ে বড় রান্নাঘর মনে করা হয়। এখানে প্রায় ছাপান্ন রকম উপকরণ দিয়ে মহাপ্রসাদ তৈরি করা হয়। প্রত্যেকদিন এখানে প্রচুর পরিমাণ রান্না করা হয়, কিন্তু দেখা গেছে আজ পর্যন্ত মন্দিরের খাবার কখনওই নষ্ট হয়নি।

    আরও পড়ুন: পুরীর রথযাত্রার তিন রথের আলাদা মাহাত্ম্য আছে, জানেন কি?

    জগন্নাথ মন্দিরের অস্বাভাবিকতা এবং লোকবিশ্বাস—

    জগন্নাথ মন্দিরের ওপরের অংশটিতে রত্নমূর নামের একটি বৃহৎ অদ্ভুত চৌম্বক শক্তি রয়েছে, যেটি মন্দিরটিকে যেকোনও রকমের ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করে বলে মনে করা হয়।

    কথিত আছে, মন্দিরের উপর দিয়ে কিছু যেতে পারে না। কোনো পাখিকেও কখনও মন্দিরের ওপর দিয়ে উড়ে যেতে দেখা যায়নি।
    এমনটা শোনা যায় যে, সূর্যের অবস্থান যে দিকেই থাকুক, মাটিতে মন্দিরের চূড়ার কোনও ছায়া পড়ে না।

    পুরীর সমুদ্রের কাছেই স্থাপিত জগন্নাথ মন্দির। কিন্তু মন্দির চত্বরে ঢোকার সাথে সাথেই সমুদ্রের কোনও শব্দ পাওয়া যায় না। এর নেপথ্যে একটি পৌরাণিক গল্প রয়েছে। কথিত, সুভদ্রাদেবী চেয়েছিলেন মন্দিরের ভেতরে যেন সবসময় শান্তি বিরাজ করে, তাই কোনও প্রকার শব্দ মন্দিরের শান্তি বিঘ্নিত করতে পারে না।

    মন্দিরের চূড়ায় যে ধ্বজা বা পতাকা রয়েছে, তা প্রতিদিন ভোরে লাগানো হয়। পতাকাটি সবসময় হাওয়ার বিপরীতে উড়তে দেখা যায়।

LinkedIn
Share