Category: পরম্পরা

Get updated History and Heritage and Culture and Religion related news from the Madhyom news portal madhyom.com, West Bengal leading news portal Madhyom.com

  • Ramakrishna 230: “মন যখন চতুর্থভূমিতে উঠে অনাহত পদ্মে, জীবাত্মাকে তখন শিখার ন্যায় দর্শন হয়”

    Ramakrishna 230: “মন যখন চতুর্থভূমিতে উঠে অনাহত পদ্মে, জীবাত্মাকে তখন শিখার ন্যায় দর্শন হয়”

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়িমধ্যে

    একাদশ পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ১০ই জুন

    বেলঘরের ভক্তকে শিক্ষা—ব্যাকুল হয়ে আর্জি কর—ঠিক ভক্তের লক্ষণ

    “তোমরা এত কষ্ট করে এখানে এসেছ, তোমরা ঈশ্বরকে (Ramakrishna) খুঁজে বেড়াচ্ছ। সব লোক বাগান দেখেই সন্তুষ্ট, বাগানের কর্তার অনুসন্ধান করে দু-একজন। জগতের সৌন্দর্যই দেখে, কর্তাকে খোঁজে না।”

    হঠযোগ, রাজযোগ ও বেলঘরের ভক্ত—ষড়চক্র ভেদ ও সমাধি 

    (গায়ককে দেখাইয়া)—ইনি ষড়চক্রের গান গাইলেন। সে-সব যোগের কথা। হঠযোগ আর রাজযোগ। হঠযোগী শরীরের কতকগুলো কসরৎ করে; উদ্দেশ্য—সিদ্ধাই, দীর্ঘ আয়ু হবে, অষ্টসিদ্ধি হবে; এই সব উদ্দেশ্য। রাজযোগের উদ্দেশ্য—ভক্তি, প্রেম, জ্ঞান, বৈরাগ্য। রাজযোগই ভাল।

    “বেদান্তের সপ্তভূমি, আর যোগশাস্ত্রের ষড়চক্র অনেক মেলে। বেদের প্রথম তিনভূমি, আর ওদের মূলাধার, স্বাধিষ্ঠান, মণিপুর। এই তিন ভূমিতে গুহ্য, লিঙ্গ, নাভির মনের বাস। মন যখন চতুর্থভূমিতে উঠে অর্থাৎ অনাহত পদ্মে, জীবাত্মাকে তখন শিখার ন্যায় দর্শন হয়, আর জ্যোতিঃদর্শন হয়। সাধক বলে, ‘এ কি! এ কি!’

    “পঞ্চভূমিতে মন উঠলে, কেবল ঈশ্বরের (Ramakrishna) কথাই শুনতে ইচ্ছা হয়। এখানে বিশুদ্ধচক্র। ষষ্ঠভূমি আর আজ্ঞাচক্র এক। সেখানে মন গেলে ঈশ্বরদর্শন হয়। কিন্তু যেমন লণ্ঠনের ভিতর আলো—ছুঁতে পারে না, মাঝে কাচ ব্যবধান আছে বলে।

    “জনক রাজা পঞ্চভূমি থেকে ব্রহ্মজ্ঞানের উপদেশ দিতেন। তিনি কখনও পঞ্চমভূমি, কখনও ষষ্ঠভূমিতে থাকতেন।

    “ষড়চক্র ভেদের পর সপ্তমভূমি। মন সেখানে গেলে মনের লয় হয়। জীবাত্মা পরমাত্মা (Kathamrita) এক হয়ে যায়—সমাধি হয়। দেহবুদ্ধি চলে যায়, বাহ্যশূন্য হয়; নানা জ্ঞান চলে যায়; বিচার বন্ধ হয়ে যায়।

    “ত্রৈলঙ্গ স্বামী বলেছিল, বিচারে অনেক বোধ হচ্ছে; নানা বোধ হচ্ছে। সমাধির পর শেষে একুশদিনে মৃত্যু হয়।

    “কিন্তু কুলকুণ্ডলিনী জাগরণ না হলে চৈতন্য হয় না!”

    ঈশ্বরদর্শনের লক্ষণ 

    “যে ঈশ্বরলাভ (Kathamrita)  করেছে, তার লক্ষণ আছে। সে হয়ে যায়—বালকবৎ, উন্মাদবৎ, জড়বৎ, পিশাচবৎ। আর তার ঠিক বোধ হয় ‘আমি যন্ত্র আর তিনি যন্ত্রী; তিনিই কর্তা, আর সকলেই অকর্তা।’ শিখরা যেমন বলেছিল, পাতাটি নড়ছে সেও ঈশ্বরের ইচ্ছা। রামের ইচ্ছাতেই সব হচ্ছে—এই বোধ। তাঁতী যেমন বলেছিল, রামের ইচ্ছাতেই কাপড়ের দাম এক টাকা ছয় আনা, রামের ইচ্ছাতেই ডাকাতি হল; রামের ইচ্ছাতেই ডাকাত ধরা পড়ল। রামের ইচ্ছাতেই আমাকে পুলিশে নিয়ে গেল, আবার রামের ইচ্ছাতেই আমাকে ছেড়ে দিল।”

    সন্ধ্যা আগত প্রায়। ঠাকুর একবারও বিশ্রাম করেন নাই। ভক্তসঙ্গে অবিশ্রান্ত হরিকথা হইতেছে। এইবার মণিরামপুর ও বেলঘরের ভক্তেরা ও অন্যান্য ভক্তেরা তাঁহাকে ভূমিষ্ঠ হইয়া প্রণাম করিয়া, ঠাকুরবাড়িতে (Ramakrishna)  ঠাকুরদের দর্শন করিয়া নিজ নিজ স্থানে প্রত্যাগমন করিতেছেন।

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • History Of Christmas: যীশুর জন্মের আগে থেকেই ক্রিসমাস পালনের রীতি ছিল ইউরোপে!

    History Of Christmas: যীশুর জন্মের আগে থেকেই ক্রিসমাস পালনের রীতি ছিল ইউরোপে!

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ২৫ ডিসেম্বর ক্রিসমাস উৎসব (History Of Christmas) পালিত হয়। এই পবিত্র উৎসবে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ছুটি থাকে। বাঙালির কাছে ক্রিসমাস মানে ঘুরতে যাওয়া, পিকনিক করা। ২৫ ডিসেম্বর ক্রিসমাস উৎসব পালনের রীতি বিশ্বে অনেক পুরনো। এর যেমন একটা ধর্মীয় বিষয় রয়েছে। তেমনই ক্রিসমাসে ধর্মনিরপেক্ষতার প্রকৃতিও দেখা যায়। খ্রিস্টানদের ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে এই দিনে তাঁদের উপাস্য যীশু জন্মগ্রহণ করেছিলেন। যীশু হলেন একজন ধর্মীয় নেতা, যাঁর শিক্ষা মেনে চলেন খ্রিস্টানরা। এদিন  ক্রিসমাস ট্রি সাজানো হয়। একে অপরকে উপহার বিনিময় করেন খ্রিস্টানরা। গির্জায় গিয়ে তাঁরা প্রার্থনা করেন। পরিবারের সঙ্গে খাওয়া-দাওয়ার রীতিও দেখা যায়। এদিন তাঁরা এও বিশ্বাস করেন যে সান্তাক্লজ এসে তাঁদের উপহার দিয়ে যাবেন।

    কীভাবে শুরু হয়েছিল ক্রিসমাস পালন (Christmas)?

    বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যীশুর আগমনের (History Of Christmas) কয়েক শতাব্দী আগেই প্রথমদিকে ইউরোপীয়রা শীতকালে এই দিনটি পালন করতেন। ২২ ডিসেম্বরের পর থেকেই উত্তর গোলার্ধে ধীরে ধীরে দিনের দৈর্ঘ্য বাড়তে থাকে এবং রাতের দৈর্ঘ্য কমতে থাকে। সূর্যালোকের সময় বাড়ার ফলে, এই সময়েই ইউরোপের বিভিন্ন দেশে উৎসব পালন করার রীতি দেখা যেত। অন্যদিকে, ইউরোপের অন্যতম দেশ স্ক্যান্ডিনেভিয়ায় ২১ ডিসেম্বর থেকেই বড়দিন পালনের রীতি দেখা যেত। এই সময়ে তাঁরা বাড়িতে আগুন জ্বালাতেন এবং ১২ দিন ধরে পালন করা হত বড়দিন। ডিসেম্বরে শেষে ইউরোপে যিশুখ্রিস্টের জন্মের আগে থেকেই উৎসবের এমন মেজাজ দেখা যেত। এই সময় তাঁরা গবাদি পশুকে হত্যা করে, তাদের মাংস খেত। সঙ্গে থাকত মদ এবং বিয়ার। অন্যদিকে জার্মানিতে শীতকালের মাঝামাঝি সময়ে তাদের দেবতা উডেনকে সম্মান জানাতে বড়দিন পালন করা হত, জার্মান জাতির বিশ্বাস ছিল যে ওডেন আকাশ পথে গমন করতেন এবং মানুষের ভাগ্য় নির্ধারণ করতেন।

    রোমে সাটুরনালিয়া দেবতার সম্মানে পালন করা হত উৎসব

    অন্যদিকে, রোমে এই উৎসব এক মাস (History Of Christmas) ধরে পালন করা হত। রোমান ধর্মে কৃষি দেবতা ছিলেন সাটুরনালিয়া। তাঁরই সম্মানে শীতকালের মাঝামাঝি সময়ে শুরু করে পুরো একমাস ধরে পালন চলত উৎসব। এই সময়ে ক্রীতদাসদেরও সাময়িক স্বাধীনতা দেওয়া হত। তাঁদের ছুটি দেওয়া হত। একই সঙ্গে শীতকালে রোমানরা জুভেনালিয়া নামের একটি উৎসব পালন করতেন। এই উৎসবে রোমান শিশুদের সম্মান একটি ভোজের ব্যবস্থা করা হত এবং সেখানকার উচ্চ বংশজাতরা ২৫ ডিসেম্বর সূর্যদেবতা মিত্রার জন্মদিন পালন করতেন। বিশ্বাস করা হয়, মিত্রা হলেন একজন শিশু দেবতা। যিনি একটি শিলা থেকে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। মিত্রার জন্মদিন ছিল বছরের সবচেয়ে পবিত্র দিন। তাই এটা স্পষ্ট, শুধুমাত্র যিশুখ্রিস্টের জন্মদিন হিসেবেই যে বড়দিন এমনটা নয়, বড়দিন পালনের ইতিহাস দেখলে আমরা বুঝতে পারছি যে যীশুর জন্মের আগেও বড় দিন পালনের রীতি ইউরোপে ছিল।

    প্রথমদিকে যীশুর জন্ম সেভাবে উদযাপন করা হয়নি

    প্রথমদিকে যীশুর জন্ম সেভাবে উদযাপন করা হয়নি। চতুর্থ শতাব্দীতে গির্জার সঙ্গে যুক্ত ধর্মীয় কর্তা ব্যক্তিরা প্রথম যীশুর জন্মদিনকে ছুটি হিসেবে পালন করা সিদ্ধান্ত নেন। জানা যায়, বাইবেলে যীশুখ্রিষ্টের জন্মদিন হিসেবে কোনও তারিখ উল্লেখ করা হয়নি। অন্যদিকে কিছু সূত্রে দাবি করা হয়, যে যীশুখ্রিস্টের জন্ম হয়েছিল বসন্ত কালে। তবুও পোপ জুলিয়াস-১, ২৫ ডিসেম্বর বেছে নেন যীশুখ্রিষ্টের জন্মদিন হিসেবে। এর পরবর্তীকালে এই প্রথাটি ৪৩২ সালের মধ্যে মিশরে এবং ষষ্ঠ শতাব্দীর মধ্যে ইংল্যান্ডে ছড়িয়ে পড়ে। তখন থেকেই ২৫ ডিসেম্বর যীশুখ্রীষ্টের জন্মদিন হিসেবে পালন করা হতে থাকে। অর্থাৎ শীতকালীন উৎসবের যে প্রথা সেই রীতি থেকে ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসতে থাকে ইউরোপ। শীতকালীন উৎসবটা কেন্দ্রীভূত হতে থাকে যিশুখ্রিস্টের জন্মদিন হিসেবে। এখানে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন গির্জার ধর্ম প্রচারকরা। তাঁরা সেভাবেই ২৫ ডিসেম্বর যীশুখ্রীষ্টের জন্মদিন হিসেবে ঘোষণা করেন।

    ইংল্যান্ড আমেরিকায় নিষিদ্ধ হয়েছিল ক্রিসমাস 

    অন্যদিকে, ১৭ শতকের একেবারে গোড়ার দিকে ইউরোপে ক্রিসমাস (History Of Christmas) উদযাপনের পদ্ধতি অনেকটাই বদলে যায়। ১৬৪৫ সালে ইংল্যান্ড দখল করেন অলিভার ক্রোমওয়েলের বাহিনী। এই সময় তাঁরা অবক্ষয় থেকে ইংল্যান্ডকে বাঁচানোর জন্য সে দেশের জনগণকে প্রতিশ্রুতি দেন। সেই প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবেই তাঁরা ক্রিসমাসকে বাতিল বলে ঘোষণা করেন। পরবর্তীকালে রাজা দ্বিতীয় চার্লস ইংল্যান্ডের সিংহাসনে বসলে, ফের ক্রিসমাসের প্রচলন শুরু হয়। অন্যদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম দিকে ক্রিসমাস ছুটির দিন ছিল না। ১৬৫৯ থেকে ১৬৮১ সাল পর্যন্ত সে দেশের বস্টনে বড়দিন উদযাপন নিষিদ্ধ ছিল। যে কেউ ক্রিসমাস পালন করলে তাঁকে জরিমানা পর্যন্ত করা হত। পরবর্তীকালে উনবিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে আমেরিকায় ক্রিসমাস পালন শুরু হয়।

    সান্তাক্লজের ইতিহাস

    অন্যদিকে ক্রিসমাস উৎসবের সঙ্গে জড়িত রয়েছে সান্তাক্লজ। আবার সান্তাক্লজ নামের সঙ্গে জড়িত রয়েছে, সেন্ট নিকোলাস নামে এক সন্ন্যাসীর কথা। যিনি ২৮০ খ্রিস্টাব্দে তুরস্কে জন্মগ্রহণ করেছিলেন বলে জানা যায়। সেন্ট নিকোলাস, তাঁর উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সমস্ত সম্পদ দরিদ্র এবং অসুস্থদের সাহায্য করার জন্য বিতরণ করেছিলেন। এই সময় তিনি গ্রামাঞ্চলগুলিতে ভ্রমণ করতেন ও সেখানকার বাচ্চা ছেলে, অসুস্থ রোগী এবং নাবিকদের কাছে তাঁর সমস্ত সম্পত্তি বিতরণ করে দিয়েছিলেন। সেই সময়ে ওই সেন্ট নিকোলাস সকলের অভিভাবক হিসেবে পরিচিত হতে থাকেন। পরবর্তীকালে অষ্টাদশ শতকের শেষের দিকে নিউইয়র্কে সেন্ট নিকোলাস আমেরিকার সংস্কৃতির মধ্যে প্রবেশ করেন। সেন্ট নিকোলাসকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডাচ নাগরিকরা সেন্টার ক্লাস নামে ডাকতেন। পরবর্তীকালে সেন্টার ক্লাস নাম থেকে আসে সান্তাক্লজ।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Naga sadhu: মুঘল-ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে সনাতনধর্ম রক্ষার জন্য লড়াই করেছিলেন নাগা সন্ন্যাসীরা!

    Naga sadhu: মুঘল-ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে সনাতনধর্ম রক্ষার জন্য লড়াই করেছিলেন নাগা সন্ন্যাসীরা!

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ভারতে বহিরাগত বর্বর আক্রমণকারী পাঠান, মুঘল এবং ব্রিটিশদের বিরদ্ধে প্রত্যক্ষ লড়াই করেছিলেন নাগা সাধুরা (Naga sadhu)। জুনাগড়ের অত্যাচারী নিজাম শাসক সাধুদের বিষ প্রয়োগ করে হত্যা করেছিলেন। বহু সাধু সন্ন্যাসীদের হত্যা করা হয়েছিল। কিন্তু যাঁরা বেঁচে ছিলেন তাঁরাই তৈরি করেছিলেন জুনা আখড়া। যুগে যুগে যখনই সনাতন ধর্ম (Sanatan Dharma) গভীর সঙ্কটে পড়েছে নাগারা রক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। মুসলমান আক্রমণ এবং লুটের হাত থেকে অনেক মন্দির ও মঠ রক্ষা করেছিলেন তাঁরা। আফগান পাঠান শাসক আহমেদ শাহ আবদালি মথুরা-বৃন্দাবন লুণ্ঠন করতে এলে নাগা সাধুরা বিরাট প্রতিবাদ গড়ে তোলেন। তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্রও ধারণ করেন নাগা সন্ন্যাসীরা। 

    সনাতন ধর্মের রক্ষার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে (Naga sadhu)

    ১৪৪ বছর পর এবার উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে অনুষ্ঠিত হবে মহাকুম্ভ। ইতিমধ্যেই বিশ্বের এই বৃহৎ ধর্মীয় (Sanatan Dharma) সমাবেশে অনেক আখড়ার মুনি, ঋষি, সাধু-সন্ন্যাসীরা আসতে শুরু করেছেন। ভারতীয় মার্শাল আর্টিস্ট এবং ধর্মীয় সন্ন্যাসীদের জন্য সম্প্রদায়িক ঐতিহ্য ও আধ্যাত্মিক পরম্পরা মেনে মঠ কেন্দ্রীক একটি আখড়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেখানে ভক্তদের থাকা-খাওয়া এবং প্রশিক্ষণের সুবিধার ব্যবস্থা থাকবে। এখানে কুম্ভমেলার অনুষ্ঠানের সঙ্গে মার্শাল আর্ট অনুশীলনের একটি বিরাট জায়গা ঠিক করা হয়েছে। অনেকেই প্রশিক্ষণ নেবেন আবার দিয়েও থাকবেন প্রশিক্ষণ। মূল লক্ষ্য হল হিন্দু সমাজের আত্মরক্ষা। সাধারণত নাগারা (Naga sadhu) তাঁদের গলায়, শরীরের চারপাশে রুদ্রাক্ষ এবং অন্যান্য অলঙ্কার পরিধান করেন। তাঁদের হাতে থাকে তলোয়ার, শঙ্খ এবং ত্রিশূলও। 

    সব রকম অপশক্তির সঙ্গে লড়াই করতে প্রস্তুত

    এই আখড়ার মধ্যে ভৈরব আখড়া অন্যতম। এটিকে পঞ্চ দশনম জুনা আখড়াও বলা হয় এবং এটি ১৩টি আখড়ার মধ্যে সবচেয়ে বড়। এটি নাগা সন্ন্যাসীদের (Naga sadhu) একটি প্রধান আখড়া। এখানকার সাধুরা যোদ্ধা সন্ন্যাসী। ভগবান শিবের উপাসক তাঁরা। সন্ন্যাসীদের দেহে ছাই-মাখার জন্য বিশেষ পরিচিতি রয়েছে। হিন্দু ধর্মের আধ্যাত্মিকতা এবং পরাক্রমের গৌরবময় ইতিহাস ধারণ করেন তাঁরা। নাগা সাধুরা সর্বদা তলোয়ার, ত্রিশূল, বর্শা বহন করে থাকেন। তাঁরা মুঘল থেকে ব্রিটিশ পর্যন্ত সমস্ত বহিঃশত্রুর সঙ্গে যুদ্ধ করেছেন। সনাতন হিন্দু (Sanatan Dharma) ধর্ম রক্ষার জন্য সব রকম অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করতে প্রস্তুত থাকেন এই সাধুরা। এই জুনা আখড়ায় একটি অস্ত্রাগারও রয়েছে, যেখানে ৪০০ বছরের পুরনো অস্ত্রও সংরক্ষিত রয়েছে। নাগা সাধুরা মহাকুম্ভ উদযাপনের সময় এই অস্ত্রগুলি নিয়ে আসেন এবং প্রদর্শনী করেন। 

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    ১১৪৫ সালে জুনা আখড়া প্রথম প্রতিষ্ঠিত হয়

    জুনা আখড়া হল শৈব সম্প্রদায়ের সাতটি আখড়ার একটি। ১১৪৫ সালে উত্তরাখণ্ডের কর্ণ প্রয়াগে প্রথম এই মঠ নির্মাণ হয়েছিল। আবার কেউ কেউ মনে করেন এই মঠ ১২৫৯ সালে প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। পরবর্তীকালে ১৮৬০ সালে সরকারি নথিভুক্ত হয় আখড়া। ভগবান শিব বা তাঁর রুদ্র অবতার, ভগবান দত্তাত্রেয়, জুনা আখড়ার মূর্তি। এর সদর দফতর এবং প্রধান কেন্দ্র বারাণসীতে অবস্থিত। আরও একটি মন্দিরের আশ্রম হরিদ্বারের মহামায়া মন্দিরের কাছে নির্মিত হয়েছিল। এখন এই নাগাদের (Naga sadhu) আখড়াগুলোতে প্রায় ৫ লাখ নাগা সাধু রয়েছেন। নাগা সাধুরা হিন্দু ধর্মের উত্থানকে সাহায্য করার জন্য ধর্মগ্রন্থগুলিতে যেমন পারদর্শী, ঠিক তেমনি যুদ্ধ-অস্ত্রশস্ত্রেও প্রশিক্ষিত তাঁরা। তখন থেকেই আখড়া চলছে তাঁদের। বলা হয়ে থাকে আদি শঙ্করাচার্যের নির্দেশনায় গঠিত হয়েছিল এবং পরে মুসলিম আক্রমণকারীদের বিরুদ্ধেও অনেক যুদ্ধ করেছিল এই আখড়ার সন্ন্যাসীরা।

    জুনা আখড়ার ইতিহাস

    জানা গিয়েছে, নাগা সাধুরা (Naga sadhu) গুজরাটের জুনাগড়ের নিজামের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছিলেন। নিজাম ও তাঁর বাহিনী নাগাদের দ্বারা পরাজিত হয়েছিল। তিনি সাধুদের সামরিক দক্ষতা দেখে মুগ্ধ হয়েছেন বলেও জানা গেছে। এই শাসককে সন্ন্যাসীদের সামনে মাথা নত হতে হয়েছিল এবং একটি চুক্তিতে আমন্ত্রণ জানাতে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি। জুনা আখড়ার মহারাজ মহন্ত হরি গিরি বলেন, “আখড়ার সন্ন্যাসীরা (Sanatan Dharma) একটি চুক্তির জন্য নিজামের কাছে গিয়েছিলেন। জুনাগড় সন্ন্যাসীদের হাতে তুলে দেওয়ার অজুহাতে একটি নৈশভোজের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে সেই খাবারে বিষ মিশিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটিয়েছিল শয়তান শাসক। এর ফলে শত শত সন্ন্যাসী প্রাণ হারিয়েছিলেন। যাঁরা বেঁচে ছিলেন তাঁরাই জুনা আখড়া তৈরি করেছিলেন।”

    জাহাঙ্গীরের সঙ্গে লড়াই করেছিলেন নাগারা

    একবার মুঘল শাসক জাহাঙ্গীর প্রয়াগরাজ কুম্ভমেলায় যোগ দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন বলে গুজব উঠেছিল। তখন শৈব ও বৈষ্ণব তপস্বীরা একসঙ্গে একটি দেওয়াল নির্মাণ করেন এবং তা থেকে গোপন যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছিলেন সন্ন্যাসীরা (Naga sadhu)। একজন সন্ন্যাসী জাহাঙ্গীরকে মারতে ছুরিও ব্যবহার করেছিলেন। মুঘলদের প্রতি নাগাদের ক্রোধ ছিল অদম্য। পঞ্চ দশনম জুনা আখড়ার অষ্ট কৌশল মহন্ত যোগানন্দ গিরি বলেন, “যে নাগা সন্ন্যাসীরা (Sanatan Dharma) অস্ত্র বহন করেন, তাঁরা মুঘলদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন। একই ভাবে ব্রিটিশ শাসন কালেও লড়াই করেছিলেন তাঁরা। অস্ত্রগুলিকে আমরা বিরাট সম্মানের সঙ্গে রাখি।”

    প্রয়াগরাজে মহাকুম্ভের প্রস্তুতি এখন তুঙ্গে। আর মাত্র হাতে কয়েকটা দিন বাকি। মকর সংক্রান্তি থেকে শুরু হবে পুণ্যস্নান। ইতিমধ্যে উত্তরপ্রদেশ সরকার কড়া নিরাপত্তা এবং প্রয়োজনীয় আয়োজনে কোনও খামতি রাখতে চাইছেন না। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি স্বয়ং এলাকা পরিদর্শন করে সব রকম প্রস্তুতি নিরীক্ষণ করেছেন। রাজ্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে প্রায় ৪০ কোটি ভক্ত সমাগম হবে এই রাজ্যে।

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 229: “‘সন্তানের উপর মায়ের টান, সতী স্ত্রীর স্বামীর উপর টান, আর বিষয়ীর বিষয়ের উপর টান”

    Ramakrishna 229: “‘সন্তানের উপর মায়ের টান, সতী স্ত্রীর স্বামীর উপর টান, আর বিষয়ীর বিষয়ের উপর টান”

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়িমধ্যে

    একাদশ পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ১০ই জুন

    বেলঘরের ভক্তকে শিক্ষা—ব্যাকুল হয়ে আর্জি কর—ঠিক ভক্তের লক্ষণ

    বেলঘরের ভক্ত—আপনি আমাদের কৃপা করুন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—সকলের ভিতরই তিনি রয়েছেন। তবে গ্যাস কোম্পানিকে আর্জি কর। তোমার ঘরের সঙ্গে যোগ হয়ে যাবে।

    “তবে ব্যাকুল হয়ে আর্জি (Prayer) করতে হয়। এমনি আছে, তিন টান একসঙ্গে হলে ঈশ্বরদর্শন হয়। ‘সন্তানের উপর মায়ের টান, সতী স্ত্রীর স্বামীর উপর টান, আর বিষয়ীর বিষয়ের (Kathamrita) উপর টান।’

    “ঠিক ভক্তের (Ramakrishna) লক্ষণ আছে। গুরুর উপদেশ শুনে স্থির হয়ে থাকে। বেহুলার কাছে জাতসাপ স্থির হয়ে শুনে, কিন্তু কেউটে নয়। আর-একটি লক্ষণ—ঠিক ভক্তের ধারণা শক্তি হয়। শুধু কাচের উপর ছবির দাগ পড়ে না, কিন্তু কালি মাখানো কাচের উপর ছবি উঠে, যেমন ফটোগ্রাফ; ভক্তিরূপ কালি।

    “আর-একটি লক্ষণ। ঠিক ভক্ত জিতেন্দ্রিয় হয়, কামজয়ী হয়। গোপীদের কাম হত না।

    “তা তোমরা সংসারে আছ তাহলেই বা; এতে সাধনের আরও সুবিধা, যেমন কেল্লা থেকে যুদ্ধ করা। যখন শবসাধন করে, মাঝে মাঝে শবটা হাঁ করে ভয় দেখায়। তাই চাল, ছোলাভাজা রাখতে হয়। তার মুখে মাঝে মাঝে দিতে হয়। শবটা ঠাণ্ডা হলে, তবে নিশ্চিন্ত হয়ে জপ করতে পারবে। তাই পরিবারদের ঠাণ্ডা রাখতে হয়। তাদের খাওয়া-দাওয়ার যোগাড় করে দিতে হয়, তবে সাধন-ভজনের (Kathamrita) সুবিধা হয়।

    “যাদের ভোগ একটু বাকী আছে, তারা সংসারে থেকেই তাঁকে ডাকবে। নিতাই-এর ব্যবস্থা ছিল, মাগুর মাছের ঝোল, ঘোর যুবতীর কোল, বোল হরি বোল।

    “ঠিক ঠিক ত্যাগীর আলাদা কথা; মৌমাছি ফুল বই আর কিছুতেই বসবে না। চাতকের কাছে ‘সব জল ধুর’; কোন জল খাবে না কেবল স্বাতী-নক্ষত্রের বৃষ্টির জন্য হাঁ করে আছে। ঠিক ঠিক ত্যাগী অন্য কোন আনন্দ নেবে না, কেবল ঈশ্বরের আনন্দ। মৌমাছি কেবল ফুলে বসে। ঠিক ঠিক ত্যাগী সাধু যেন মৌমাছি। গৃহীভক্ত (Ramakrishna) যেন এই সব মাছি—সন্দেশেও বসে, আবার পচা ঘায়েও বসে।

    আরও পড়ুনঃ “লজ্জা, ঘৃণা, ভয়, জাতি, কুল, শীল, শোক, জুগুপ্সা, ওই অষ্টপাশ-গুরু না খুলে দিলে হয় না”

    আরও পড়ুনঃ “ষড় চক্র ভেদ হলে মায়ার রাজ্য ছাড়িয়ে জীবাত্মা পরমাত্মার সঙ্গে এক হয়ে যায়, এরই নাম ঈশ্বরদর্শন”

    আরও পড়ুনঃ “গোপীদের কি ভালবাসা, কি প্রেম, শ্রীমতী স্বহস্তে শ্রীকৃষ্ণের চিত্র এঁকেছেন”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 228: “লজ্জা, ঘৃণা, ভয়, জাতি, কুল, শীল, শোক, জুগুপ্সা, ওই অষ্টপাশ-গুরু না খুলে দিলে হয় না”

    Ramakrishna 228: “লজ্জা, ঘৃণা, ভয়, জাতি, কুল, শীল, শোক, জুগুপ্সা, ওই অষ্টপাশ-গুরু না খুলে দিলে হয় না”

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়িমধ্যে

    দশম পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ১০ই জুন

    বেলঘরের ভক্তসঙ্গে

    “যতক্ষণ ‘আমি’ বোধ তিনি রেখেছেন ততক্ষণ সবই আছে। আর স্বপ্নবৎ বলবার জো নাই। নিচে আগুন জ্বালা আছে, তাই হাঁড়ির ভিতরে ডাল, ভাত, আলু, পটোল সব টগ্‌বগ্‌ করছে। লাফাচ্ছে, আর যেন বলছে (Kathamrita), ‘আমি আছি, আমি লাফাচ্ছি।’ শরীরটা যেন হাঁড়ি; মন বুদ্ধি—জল ইন্দ্রিয়ের বিষয়গুলি যেন—ডাল, ভাত, আলু পটোল। অহং যেন তাদের অভিমান, আমি টগ্‌বগ্‌ করছি! আর সচ্চিদানন্দ (Ramakrishna) অগ্নি।

    “তাই ভক্তিশাস্ত্রে, এই সংসারকেই ‘মজার কুটি’ বলেছে। রামপ্রসাদের গানে আছে ‘এই সংসার ধোঁকার টাটি’। তারই একজন জবাব দিয়েছিল, ‘এই সংসার মজার কুটি’। ‘কালীর ভক্ত জীবন্মুক্ত নিত্যানন্দময়।’ ভক্ত দেখে, যিনিই ঈশ্বর তিনিই মায়া হয়েছেন। তিনিই জীবজগৎ হয়েছেন। ইশ্বর-মায়া-জীব-জগৎ এক দেখে। কোন কোন ভক্ত সমস্ত রামময় দেখে। রামই সব রয়েছেন। কেউ রাধাকৃষ্ণময় (Ramakrishna) দেখে। কৃষ্ণই এই চতুর্বিংশতি তত্ত্ব (Kathamrita) হয়ে রয়েছেন। সবুজ চশমা পরলে যেমন সব সবুজ দেখে।

    “তবে ভক্তিমতে শক্তিবিশেষ। রামই (Ramakrishna) সব হয়ে রয়েছেন, কিন্তু কোনখানে বেশি শক্তি, আর কোনখানে কম শক্তি। অবতারেতে তিনি একরকম প্রকাশ, আবার জীবেতে একরকম। অবতারেরও (Kathamrita) দেহবুদ্ধি আছে। শরীরধারণে মায়া। সীতার জন্য রাম কেঁদেছিলেন। তবে অবতার ইচ্ছা করে নিজের চোখে কাপড় বাঁধে। যেমন ছেলেরা কানামাছি খেলে। কিন্তু মা ডাকলেই খেলা থামায়। জীবের আলাদা কথা। যে-কাপড়ে চোখ বাঁধা সেই কাপড়ের পিঠে আটটা ইস্কুরূপ দিয়ে বাঁধা। অষ্টপাশ। লজ্জা, ঘৃণা, ভয়, জাতি, কুল, শীল, শোক, জুগুপ্সা (নিন্দা)—ওই অষ্টপাশ। গুরু না খুলে দিলে হয় না।”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Sarada Devi: আজ সারদা মায়ের ১৭২তম আবির্ভাব তিথি,জানুন তাঁর গুরুত্বপূর্ণ উপদেশ

    Sarada Devi: আজ সারদা মায়ের ১৭২তম আবির্ভাব তিথি,জানুন তাঁর গুরুত্বপূর্ণ উপদেশ

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আজ সারদা মায়ের (Sarada Devi) ১৭২তম জন্মদিন। ১৮৫৩ সালের ২২ ডিসেম্বর, বাংলা পঞ্জিকা অনুসারে ১২৬০ সনের ৮ পৌষ, কৃষ্ণা সপ্তমী তিথিতে বাঁকুড়া জেলার জয়রামবাটী গ্রামে জন্ম হয় সারদা দেবীর। তাঁর পিতার নাম ছিল রামচন্দ্র মুখোপাধ্যায় ও মায়ের নাম ছিল শ্যামাসুন্দরী দেবী। লোককথা অনুযায়ী, সারদা দেবীর জন্মের আগে রামচন্দ্র মুখোপাধ্যায় ও শ্যামাসুন্দরী দেবী, উভয়েই দিব্যদর্শন পেয়েছিলেন, মহাশক্তি তাঁদের ঘরে কন্যারূপে জন্ম নিতে চলেছেন। তিনি ছিলেন শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের (Ramkrishna Dev) ধর্মপত্নী (Sarada Devi)। অত্যন্ত সহজ সরল ভাষায় ধর্ম ও দর্শনের কথা বলে গিয়েছেন সারদাদেবী। সকলের প্রতিই অপার করুণা ও দয়া ছিল সারদা মায়ের। সবাইকে তিনি নিজের সন্তানরূপে জ্ঞান করতেন। ১৮৭২ সালে দক্ষিণেশ্বরে স্বামীর নিকটে থাকতে আসেন সারদা দেবী। শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেব তাঁকে আধ্যাত্মিক জীবনের প্রয়োজনীয় জ্ঞান ও পরামর্শ প্রদান করেছিলেন বলে জানা যায়। শ্রীরামকৃষ্ণ সারদা দেবী ও দিব্য মাতৃকাকে অভিন্ন জ্ঞান করে তাঁকে দেবীর আসনে বসিয়ে সকল উপাচার দিয়ে পুজো করেন।

    সারদাদেবী (Sarada Devi) নিজেকে সবার মা বলে মনে করতেন

    শ্রীরামকৃষ্ণদেব প্রয়াত হলে তাঁর ধর্ম আন্দোলনকে আরও এগিয়ে নিয়ে যান সারদা দেবী। ১৯২০ সালের ২০ জুলাই কলকাতার উদ্বোধন ভবনে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। সারদাদেবী নিজেকে সবার মা বলে মনে করতেন। মায়ের কাছে সন্তানের যেমন ভেদাভেদ থাকে না, সারদা দেবীও তেমন ভক্তদের মধ্যে কোনও ভেদাভেদ করতেন না। তাঁর কাছে যারাই আসত, তাদের সবাইকেই তিনি সমান চোখে দেখতেন।

    সারদা মায়ের বাণী (Sarada Devi)

    ‘‘যদি শান্তি চাও, তাহলে কারও দোষ দেখো না। দোষ দেখবে নিজের। জগৎকে আপনার করে নাও, কেউ পর নয়, এই জগৎ তোমার।’’

    ‘‘আমি সত্যিকারের মা, গুরুপত্নী নই, পাতানো মা নই, কথার কথা মা নই, সত্যকারের জননী।’’

    ‘‘ভালোবাসা দিয়ে সবকিছু হয়, জোর করে কায়দায় ফেলে কাউকে দিয়ে কিছু করানো যায় না।’’

    ‘‘কাজ করতে হবে সব সময়। কর্ম করতে করতেই কর্মের বন্ধন কেটে যাবে, তবেই নিষ্কাম ভাব আসবে। কাজ ছেড়ে একদণ্ডও থাকা উচিত নয়।’’

    ‘‘ভাঙতে সবাই পারে, কিন্তু গড়তে পারে ক-জনে? নিন্দে ঠাট্টা সবাই করতে পারে। কিন্তু কী করে যে তাকে ভালো করতে হবে, তা ক-জনে বলতে পারে?’’

    ‘‘এই কলি যুগে শুধু সত্যের আঁট থাকলেই ভগবানকে লাভ করা যায়। ঠাকুর বলতেন, যে সত্যকথাটি ধরে আছে সে ভগবানের কোলে শুয়ে আছে।’’

    ‘‘যত বড় মহাপুরুষই হোন, দেহ ধারণ করে পৃথিবীতে এলে দেহের ভোগটি সবই নিতে হবে। তবে পার্থক্য এই যে সাধারণ লোক যায় কাঁদতে কাঁদতে, আর ওঁরা যান হেসে হেসে, মৃত্যুটা যেন ওঁদের কাছে খেলা।’’

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 227: “ষড় চক্র ভেদ হলে মায়ার রাজ্য ছাড়িয়ে জীবাত্মা পরমাত্মার সঙ্গে এক হয়ে যায়, এরই নাম ঈশ্বরদর্শন”

    Ramakrishna 227: “ষড় চক্র ভেদ হলে মায়ার রাজ্য ছাড়িয়ে জীবাত্মা পরমাত্মার সঙ্গে এক হয়ে যায়, এরই নাম ঈশ্বরদর্শন”

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়িমধ্যে

    দশম পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ১০ই জুন

    বেলঘরের ভক্তসঙ্গে

    বেলঘরে হইতে গোবিন্দ মুখোপাধ্যায় প্রমুখ ভক্তেরা আসিয়াছেন। ঠাকুর (Ramakrishna) যেদিন তাঁহার বাটীতে শুভাগমন করিয়াছিলেন, সেদিন গায়কের “জাগ জাগ জননি” এই গান শুনিয়া সমাধিস্থ হইয়াছিলেন। গোবিন্দ সেই গায়কটিকেও আনিয়াছেন। ঠাকুর গায়ককে দেখিয়া আনন্দিত হইয়াছেন ও বলিতেছেন (Kathamrita), তুমি কিছু গান কর। গায়ক গাইতেছেন:

    ১। দোষ কারু নয় গো মা,
    আমি স্বখাত-সলিলে ডুবে মরি শ্যামা।

    ২। ছুঁসনা রে শমন আমার জাত গিয়েছে।
    যদি বলিস ওরে শমন জাত গেল কিসে,
    কেলে সর্বনাশী আমায় সন্ন্যাসী করেছে।

    রাগিণী-মূলতান 

    ৩। জাগ জাগ জননী
    মূলাধারে নিদ্রাগত কতদিন গত হল কুলকুণ্ডলিনী।
    স্বকার্য সাধনে চল মা শির মধ্যে,
    পরম শিব যথা সহস্রদল পদ্মে,
    করি ষড়চক্র ভেদ ঘুচাও মনের খেদ, চৈতন্যরূপিণি।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—এই গানে ষড় চক্র ভেদের কথা আছে। ঈশ্বর বাহিরেও আছেন, অন্তরেও আছেন। তিনি ভিতরে থেকে মনের নানা অবস্থা করছেন। ষড় চক্র ভেদ হলে মায়ার রাজ্য ছাড়িয়ে জীবাত্মা পরমাত্মার সঙ্গে এক হয়ে যায়। এরই নাম ঈশ্বরদর্শন।

    “মায়া দ্বার ছেড়ে না দিলে ঈশ্বরদর্শন হয় না। রাম, লক্ষ্মণ আর সীতা একসঙ্গে যাচ্ছেন; সকলের আগে রাম, মধ্যে সীতা, পশ্চাতে লক্ষ্মণ। যেমন সীতা মাঝে মাঝে থাকাতে — লক্ষ্মণ রামকে দেখতে পাচ্ছেন না, তেমনি মাঝে মায়া থাকাতে জীব ঈশ্বরকে দর্শন করতে পাচ্ছে না। (মণি মল্লিকের প্রতি) তবে ঈশ্বরের কৃপা হলে মায়া দ্বার ছেড়ে দেন। যেমন দ্বারওয়ানরা বলে, বাবু হুকুম করে দিন—ওকে দ্বার ছেড়ে দিচ্ছি।

    “বেদান্ত মত আর পুরাণ মত। বেদান্তমতে বলে, ‘এই সংসার ধোঁকার টাটি’ অর্থাৎ জগৎ সব ভুল, স্বপ্নবৎ। কিন্তু পুরাণমত বা ভক্তিশাস্ত্রে বলে যে, ঈশ্বরই (Ramakrishna) চতুর্বিংশতি তত্ত্ব হয়ে রয়েছেন। তাঁকে অন্তরে বাহিরে পূজা কর।

    “যতক্ষণ ‘আমি’ বোধ তিনি রেখেছেন ততক্ষণ সবই আছে। আর স্বপ্নবৎ বলবার (Kathamrita) জো নাই। নিচে আগুন জ্বালা আছে, তাই হাঁড়ির ভিতরে ডাল, ভাত, আলু, পটোল সব টগ্‌বগ্‌ করছে। লাফাচ্ছে, আর যেন বলছে, ‘আমি আছি, আমি লাফাচ্ছি।’ শরীরটা যেন হাঁড়ি; মন বুদ্ধি—জল ইন্দ্রিয়ের বিষয়গুলি যেন—ডাল, ভাত, আলু পটোল। অহং যেন তাদের অভিমান, আমি টগ্‌বগ্‌ করছি! আর সচ্চিদানন্দ অগ্নি।

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 226: “বিষয়াসক্ত মন যেমন ভিজে দেশলাই, যত ঘষো জ্বলে না”

    Ramakrishna 226: “বিষয়াসক্ত মন যেমন ভিজে দেশলাই, যত ঘষো জ্বলে না”

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়িমধ্যে

    নবম পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ১০ই জুন

    শ্রীরামকৃষ্ণ মণিরামপুর ভক্তসঙ্গে

    “তাঁর নাম সর্বদাই করতে হয়। কলিতে নাম-মাহাত্ম্য (Ramakrishna)। অন্নগত প্রাণ, তাই যোগ হয় না। তাঁর নাম করে, হাততালি দিলে পাপপাখি পালিয়ে যায়।

    “সৎসঙ্গ সর্বদাই দরকার। গঙ্গার যত কাছে যাবে ততই শীতল হাওয়া পাবে; অগ্নির যত কাছে যাবে ততই উত্তাপ পাবে।

    “ঢিমে তেতলা হলে হয় না। যাদের সংসারে ভোগের ইচ্ছা আছে তারা বলে, ‘হবে, কখন না কখন ঈশ্বরকে পাবে!’

    “আমি কেশব সেনকে বলেছিলাম (Kathamrita), ছেলেকে ব্যাকুল দেখলে বাপ তিন বৎসর আগেই তার হিস্যে ফেলে দেয়।

    “মা রাঁধছে, কোলের ছেলে শুয়ে আছে। মা মুখে চুষি দিয়ে গেছে; যখন চুষি ফেলে চিৎকার করে ছেলে কাঁদে, তখন মা হাঁড়ি নামিয়ে ছেলেকে কোলে করে মাই দেয়। এই সব কথা কেশব সেনকে বলেছিলাম।

    “কলিতে বলে, একদিন একরাত কাঁদলে ইশ্বর দর্শন হয়।

    “মনে অভিমান করবে, আর বলবে, ‘তুমি আমাকে সৃষ্টি করেছ; দেখা দিতে হবে।’

    “সংসারেই থাক, আর যেখানেই থাক—ঈশ্বর (Ramakrishna) মনটি দেখেন। বিষয়াসক্ত মন যেমন ভিজে দেশলাই, যত ঘষো জ্বলে না। একলব্য মাটির দ্রোণ অর্থাৎ নিজের গুরুর মূর্তি সামনে রেখে বাণ শিক্ষা করেছিল।

    “এগিয়ে পড়;—কাঠুরে এগিয়ে গিয়ে দেখেছিল (Kathamrita), চন্দন কাঠ, রূপার খনি, সোনার খনি, আরও এগিয়ে গিয়ে দেখলে হীরে, মাণিক।

    “যারা অজ্ঞান, তারা যেন মাটির দেওয়ালের ঘরের ভিতর রয়েছে। ভিতরে তেমন আলো নাই, আবার বাহিরের কোন জিনিস দেখতে পাচ্ছে না। জ্ঞান লাভ করে যে সংসারে থাকে সে যেন কাচের ঘরের ভিতর আছে। ভিতরে আলো বাহিরেও আলো। ভিতরের জিনিসও দেখতে পায়, আর বাহিরের জিনিসও দেখতে পায়।”

    ব্রহ্ম ও জগন্মাতা এক 

    “এক বই আর কিছু নাই। সেই পরব্রহ্ম ‘আমি’ যতক্ষণ রেখে দেন, ততক্ষণ দেখান যে, আদ্যাশক্তিরূপে সৃষ্টি-স্থিতি-প্রলয় করছেন।

    “যিনিই ব্রহ্ম (Ramakrishna) তিনিই আদ্যাশক্তি। একজন রাজা বলেছিল যে, আমায় এককথায় জ্ঞান দিতে হবে। যোগী বললে, আচ্ছা তুমি এককথাতেই জ্ঞান পাবে। খানিকক্ষণ পরে রাজার কাছে হঠাৎ একজন যাদুকর এসে উপস্থিত। রাজা দেখলে, সে এসে কেবল দুটো আঙুল ঘুরাচ্ছে, আর বলছে, ‘রাজা, এই দেখ, এই দেখ।’ রাজা অবাক্‌ হয়ে দেখছে (Kathamrita)। খানিকক্ষণ পরে দেখে দুটো আঙুল একটা আঙুল হয়ে গেছে। যাদুকর একটা আঙুল ঘোরাতে ঘোরাতে বলছে, ‘রাজা, এই দেখ, এই দেখ।’ অর্থাৎ ব্রহ্ম আর আদ্যাশক্তি প্রথম দুটা বোধ হয়। কিন্তু ব্রহ্মজ্ঞান হলে আর দুটা থাকে না! অভেদ! এক! যে একের দুই নাই। অদ্বৈতম্‌।”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 225: “দুধে মাখন আছে বললেই হয় না, দুধকে দই পেতে, মন্থন করে মাখন তুলতে হয়”

    Ramakrishna 225: “দুধে মাখন আছে বললেই হয় না, দুধকে দই পেতে, মন্থন করে মাখন তুলতে হয়”

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়িমধ্যে

    নবম পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ১০ই জুন

    শ্রীরামকৃষ্ণ মণিরামপুর ভক্তসঙ্গে

    ঠাকুর (Ramakrishna) আহারান্তে ছোট খাটটিতে একটু বসিয়াছেন, এখনও বিশ্রাম করিতে অবসর পান নাই। ভক্তদের সমাগম হইতে লাগিল। প্রথমে মণিরামপুর হইতে একদল ভক্ত আসিয়া উপস্থিত হইলেন। একজন পি. ডব্লিউ. ডি. তে কাজ করিতেন, এখন পেনশন পান। একটি ভক্ত তাঁহাদিগকে লইয়া আসিয়াছেন। ক্রমে বেলঘরে হইতে একদল ভক্ত আসিলেন। শ্রীযুক্ত মণি মল্লিক প্রভৃতি ভক্তেরাও ক্রমে আসিলেন (Kathamrita)।

    মণিরামপুরের ভক্তগণ বলিতেছেন (Kathamrita), আপনার বিশ্রামের ব্যাঘাত হল।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) বলিতেছেন, “না, না, ও-সব রজোগুণের কথা—উনি এখন ঘুমুবেন!”

    চাণক মণিরামপুর—এই কথা শুনিয়া ঠাকুরের বাল্যসখা শ্রীরামের উদ্দীপন হইয়াছে। ঠাকুর বলিতেছেন, “শ্রীরামের দোকান তোমাদের ওখানে। ও-দেশে শ্রীরাম আমার সঙ্গে পাঠশালায় পড়ত। সেদিন এখানে এসেছিল।”

    মণিরামপুরের ভক্তেরা বলিতেছেন, কি উপায়ে ভগবানকে পাওয়া যায়, একটু আমাদের দয়া করে বলুন।

    মণিরামপুরের ভক্তকে শিক্ষা—সাধন-ভজন কর ও ব্যাকুল হও 

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—একটু সাধন-ভজন করতে হয়।

    “দুধে মাখন আছে বললেই হয় না, দুধকে দই পেতে, মন্থন করে মাখন তুলতে হয়। তবে মাঝে মাঝে একটু নির্জন চাই। দিন কতক নির্জনে থেকে ভক্তিলাভ করে, তারপর যেখানে থাক। জুতো পায় দিয়ে কাঁটাবনেও অনায়াসে যাওয়া যায়।

    “প্রধান কথা বিশ্বাস। ‘যেমন ভাব তেমনি লাভ, মূল সে প্রত্যয়।’ বিশ্বাস হয়ে গেলে আর ভয় নাই।”

    মণিরামপুর ভক্ত—আজ্ঞা, গুরু কি প্রয়োজন?

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—অনেকের প্রয়োজন আছে। তবে গুরুবাক্যে বিশ্বাস করতে হয়। গুরুকে ইশ্বরজ্ঞান করলে তবে হয়। তাই বৈষ্ণবেরা বলে (Kathamrita), গুরু-কৃষ্ণ-বৈষ্ণব।

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 224: “গোপীদের কি ভালবাসা, কি প্রেম, শ্রীমতী স্বহস্তে শ্রীকৃষ্ণের চিত্র এঁকেছেন”

    Ramakrishna 224: “গোপীদের কি ভালবাসা, কি প্রেম, শ্রীমতী স্বহস্তে শ্রীকৃষ্ণের চিত্র এঁকেছেন”

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়িমধ্যে

    অষ্টম পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ১০ই জুন

     দক্ষিণেশ্বরে মণিরামপুর ও বেলঘরের ভক্তসঙ্গে

     শ্রীরামকৃষ্ণ-কথিত নিজ চরিত 

    রামনামে শ্রীরামকৃষ্ণ বিহ্বল—গোপীপ্রেম 

    শেষ গানটি শুনিতে শুনিতে ঠাকুর অশ্রু বিসর্জন করিতেছেন, আর বলিতেছেন (Kathamrita), “আমি ঝাউতলায় বাহ্যে করতে গিয়ে শুনেছিলাম, নৌকার মাঝি নৌকাতে ওই গান গাচ্ছে; ঝাউতলায় যতক্ষণ বসেছিলাম খালি কেঁদেছি; আমাকে ধরে ধরে ঘরে নিয়ে এল।”

    (৩)।       শুনেছি রাম তারক ব্রহ্ম, মানুষ নয় রাম জটাধারী ৷
    পিতে কি নাশিতে বংশ, সীতে তার করেছ চুরি ॥

    অক্রূর শ্রীকৃষ্ণকে (Ramakrishna) রথে বসাইয়া মথুরায় লইয়া যাইতেছেন দেখিয়া গোপীরা রথচক্র আঁকড়াইয়া ধরিয়াছেন ও কেহ রথচক্রের সামনে শুইয়া পড়িয়াছেন। তাঁরা অক্রূরকে দোষ দিতেছেন। শ্রীকৃষ্ণ যে নিজের ইচ্ছায় যাইতেছেন তাহা জানেন না।

    (৪)।       ধোরো না ধোরা না রথচক্র, রথ কি চক্রে চলে,
    যে চক্রের চক্রী হরি, যাঁর চক্রে জগৎ চলে।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (ভক্তদের প্রতি)—গোপীদের কি ভালবাসা, কি প্রেম। শ্রীমতী স্বহস্তে শ্রীকৃষ্ণের চিত্র এঁকেছেন, কিন্তু পা আঁকেন নাই; পাছে তিনি মথুরায় চলে যান।

    “আমি এ-সব গান ছেলেবেলায় খুব গাইতাম (Kathamrita)। এক-এক যাত্রার সমস্ত পালা গেয়ে দিতে পারতাম। কেউ কেউ বলত, আমি কালীয়দমন-যাত্রার দলে ছিলাম।”

    একজন ভক্ত নূতন উড়ানি গায়ে দিয়া আসিয়াছেন। রাখালের বালক স্বভাব, কাঁচি এনে তাঁর চাদরের ছিলা কাটিতে আসিয়াছেন। ঠাকুর বলিলেন, “কেন কাটছিস? থাক না, শালের মতো বেশ দেখাচ্ছে। হাঁগা, এর কত দাম?” তখন বিলাতী চাদরের দাম কম ছিল। ভক্তটি বলিলেন, এক টাকা ছয় আনা জোড়া। ঠাকুর বলিলেন, “বল কি গো। জোড়া! এক টাকা ছয় আনা জোড়া!”

    কিয়ৎক্ষণ পরে ঠাকুর ভক্তকে বলিতেছেন, “যাও, গঙ্গা নাওগে; এঁকে তেল দে রে।”

    স্নানান্তে তিনি ফিরিয়া আসিলে, ঠাকুর তাক হইতে একটি আম্র লইয়া তাঁহাকে দিলেন। বলিতেছেন (Kathamrita), এই আমটি একে দিই; তিনটা পাশ করা। আচ্ছা, তোমার ভাই এখন কেমন?

    ভক্ত—হাঁ, তাঁর ঔষধ ঠিক পড়েছে, এখন খাটলে হয়।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—তার একটি কর্মের যোগাড় করে দিতে পার? বেশ তো তুমি মুরুব্বি হবে।

    ভক্ত—ভাল হলে সব সুবিধা হয়ে যাবে।

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

LinkedIn
Share