Category: পরম্পরা

Get updated History and Heritage and Culture and Religion related news from the Madhyom news portal madhyom.com, West Bengal leading news portal Madhyom.com

  • Ramakrishna 213: “গুরুর কৃপা হলে আর কোন ভয় নাই! তিনি জানিয়ে দেবেন, তুমি কে, তোমার স্বরূপ কি”

    Ramakrishna 213: “গুরুর কৃপা হলে আর কোন ভয় নাই! তিনি জানিয়ে দেবেন, তুমি কে, তোমার স্বরূপ কি”

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়িমধ্যে

    তৃতীয় পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ৪ঠা জুন

    মণিলাল প্রভৃতি সঙ্গে — ঠাকুর “অহেতুক কৃপাসিন্ধু”

    গুরুকৃপায় মুক্তি ও স্বরূপদর্শন—ঠাকুরের অভয়দান 

    এইবার ঠাকুর ভক্তদের অভয় (Kathamrita) দিতেছেন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) (মাস্টারের প্রতি)—কেউ কেউ মনে করে, আমার বুঝি জ্ঞানভক্তি হবে না, আমি বুঝি বদ্ধজীব। গুরুর কৃপা হলে কিছুই ভয় নাই। একটা ছাগলের পালে বাঘ পড়েছিল। লাফ দিতে গিয়ে, বাঘের প্রসব হয়ে ছানা হয়ে গেল। বাঘটা মরে গেল, ছানাটি ছাগলের সঙ্গে মানুষ হতে লাগল। তারাও ঘাস খায়, বাঘের ছানাও ঘাস খায়। তারাও “ভ্যা ভ্যা” করে, সেও “ভ্যা ভ্যা” করে। ক্রমে ছানাটা খুব বড় হল। একদিন ওই ছাগলের পালে আর-একটা বাঘ এসে পড়ল। সে ঘাসখেকো বাঘটাকে দেখে অবাক্‌! তখন দৌড়ে এসে তাকে ধরলে। সেটাও “ভ্যা ভ্যা” করতে লাগলে। তাকে টেনে হিঁচড়ে জলের কাছে নিয়ে গেল। বললে, “দেখ, জলের ভিতর তোর মুখ দেখ—ঠিক আমার মতো দেখ। আর এই নে খানিকটা মাংস—এইটে খা।” এই বলে তাকে জোর করে খাওয়াতে লাগল। সে কোন মতে খাবে না—“ভ্যা ভ্যা” করছিল। রক্তের আস্বাদ পেয়ে খেতে আরম্ভ করলে। নূতন বাঘটা বললে, “এখন বুঝিছিস, আমিও যা তুইও তা; এখন আয় আমার সঙ্গে বনে চলে আয়।”

    “তাই গুরুর কৃপা হলে আর কোন ভয় নাই! তিনি জানিয়ে দেবেন, তুমি কে, তোমার (Ramakrishna) স্বরূপ কি।

    “একটু সাধন করলেই গুরু বুঝিয়ে দেন, এই এই। তখন সে নিজেই বুঝতে পারবে, কোন্‌টা সৎ, কোন্‌টা অসৎ। ঈশ্বরই সত্য, এ-সংসার অনিত্য।”

    কপট সাধনাও ভাল—জীবন্মুক্ত সংসারে থাকতে পারে 

    “এক জেলে রাত্রে এক বাগানে জাল ফেলে মাছ চুরি করছিল। গৃহস্থ জানতে পেরে, তাকে লোকজন দিয়ে ঘিরে ফেললে। মশাল-টশাল নিয়ে চোরকে খুঁজতে এল। এদিকে জেলেটা খানিকটা ছাই মেখে, একটা গাছতলায় সাধু হয়ে বসে আছে। ওরা অনেক খুঁজে দেখে, জেলে-টেলে কেউ নেই, কেবল গাছতলায় একটি সাধু ভস্মমাখা ধ্যানস্থ। পরদিন পাড়ায় খবর হল, একজন ভারী সাধু ওদের বাগানে এসেছে। এই যত লোক ফল ফুল সন্দেশ মিষ্টান্ন দিয়ে সাধুকে প্রণাম করতে এল। অনেক টাকা-পয়সাও সাধুর সামনে পড়তে লাগল। জেলেটা ভাবল কি অশ্চর্য! আমি সত্যকার সাধু নই, তবু আমার উপর লোকের এত ভক্তি। তবে সত্যকার সাধু হলে নিশ্চয়ই ভগবানকে পাব, সন্দেহ নাই।

    “কপট সাধনাতেই এতদূর চৈতন্য হল। সত্য সাধন হলে তো কথাই নাই। কোন্‌টা সৎ কোন্‌টা অসৎ বুঝতে (Kathamrita) পারবে। ঈশ্বরই সত্য, সংসার অনিত্য।”

    একজন ভক্ত ভাবিতেছেন, সংসার অনিত্য? জেলেটো তো সংসারত্যাগ করে গেল। তবে যারা সংসারে আছে, তাদের কি হবে? তাদের কি ত্যাগ করতে হবে? শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)  অহেতুক কৃপাসিন্ধু—অমনি বলিতেছেন (Kathamrita), “যদি কেরানিকে জেলে দেয়, সে জেল খাটে বটে, কিন্তু যখন জেল থেকে তাকে ছেড়ে দেয়, তখন সে কি রাস্তায় এসে ধেই ধেই করে নেচে বেড়াবে? সে আবার কেরানিগিরি জুটিয়ে লেয়, সেই আগেকার কাজই করে। গুরুর কৃপায় জ্ঞানলাভের পরেও সংসারে জীবনন্মুক্ত হয়ে থাকা যায়।”

    এই বলিয়া ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) সংসারী লোকদের অভয় দিলেন।

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 212: “রক্তের আস্বাদ পেয়ে খেতে আরম্ভ করলে, নূতন বাঘটা বললে, বুঝিছিস, আমিও যা তুইও তা..বনে চলে আয়”

    Ramakrishna 212: “রক্তের আস্বাদ পেয়ে খেতে আরম্ভ করলে, নূতন বাঘটা বললে, বুঝিছিস, আমিও যা তুইও তা..বনে চলে আয়”

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়িমধ্যে

    তৃতীয় পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ৪ঠা জুন

    মণিলাল প্রভৃতি সঙ্গে — ঠাকুর “অহেতুক কৃপাসিন্ধু”

    আহারের পর ঠাকুর একটু বিশ্রাম করিতেছেন। গাঢ় নিদ্রা নয়, তন্দ্রার ন্যায়। শ্রীযুক্ত মণিলাল মল্লিক (পুরাতন ব্রহ্মজ্ঞানী) আসিয়া ঠাকুরকে (Ramakrishna) প্রণাম করিলেন ও আসন গ্রহণ করিলেন। ঠাকুর তখনও শুইয়া আছেন। মণিলাল এক-একটি কথা কহিতেছেন। ঠাকুরের অর্ধনিদ্রা অর্ধজাগরণ অবস্থা। এক-একবার উত্তর দিতেছেন (Kathamrita)।

    মণিলাল—শিবনাথ নিত্যগোপালকে সুখ্যাতি করেন। বলেন, বেশ অবস্থা।

    ঠাকুর তখনও শুইয়া—চক্ষে যেন নিদ্রা আছে। জিজ্ঞাসা করিতেছেন, “হাজরাকে ওরা কি বলে?” ঠাকুর উঠিয়া বসিলেন। মণিলালকে ভবনাথের ভক্তির কথা বলিতেছেন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ(Ramakrishna)—আহা, তার কি ভাব! গান না করতে করতে চক্ষে জল আসে। হরিশকে দেখে একেবারে ভাব। বলে, এরা বেশ আছে। হরিশ বাড়ি ছেড়ে এখানে মাঝে মাঝে থাকে কিনা।

    মাস্টারকে জিজ্ঞাসা করিতেছেন, “আচ্ছা ভক্তির কারণ কি? ভবনাথ এ-সব ছোকরার কেন উদ্দীপন হয়?”

    মাস্টার চুপ করিয়া আছেন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ—কি জানো? মানুষ সব দেখতে একরকম, কিন্তু কারুর ভিতর ক্ষীরের পোর! যেমন পুলির ভিতর কলাইয়ের ডালের পোরও থাকতে পারে, ক্ষীরের পোরও থাকতে পারে, কিন্তু দেখতে একরকম। ঈশ্বর জানবার ইচ্ছা, তাঁর উপর প্রেমভক্তি — এরই নাম ক্ষীরের পোর।

    গুরুকৃপায় মুক্তি ও স্বরূপদর্শন—ঠাকুরের অভয়দান 

    এইবার ঠাকুর ভক্তদের অভয় দিতেছেন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) (মাস্টারের প্রতি)—কেউ কেউ মনে করে, আমার বুঝি জ্ঞানভক্তি হবে না, আমি বুঝি বদ্ধজীব। গুরুর কৃপা হলে কিছুই ভয় নাই। একটা ছাগলের পালে বাঘ পড়েছিল। লাফ দিতে গিয়ে, বাঘের প্রসব হয়ে ছানা হয়ে গেল। বাঘটা মরে গেল, ছানাটি ছাগলের সঙ্গে মানুষ হতে লাগল। তারাও ঘাস খায়, বাঘের ছানাও ঘাস খায়। তারাও “ভ্যা ভ্যা” করে, সেও “ভ্যা ভ্যা” করে (Kathamrita)। ক্রমে ছানাটা খুব বড় হল। একদিন ওই ছাগলের পালে আর-একটা বাঘ এসে পড়ল। সে ঘাসখেকো বাঘটাকে দেখে অবাক্‌! তখন দৌড়ে এসে তাকে ধরলে। সেটাও “ভ্যা ভ্যা” করতে লাগলে। তাকে টেনে হিঁচড়ে জলের কাছে নিয়ে গেল। বললে, “দেখ, জলের ভিতর তোর মুখ দেখ—ঠিক আমার মতো দেখ। আর এই নে খানিকটা মাংস—এইটে খা।” এই বলে তাকে জোর করে খাওয়াতে লাগল। সে কোন মতে খাবে না—“ভ্যা ভ্যা” করছিল। রক্তের আস্বাদ পেয়ে খেতে আরম্ভ করলে। নূতন বাঘটা বললে, “এখন বুঝিছিস, আমিও যা তুইও তা; এখন আয় আমার সঙ্গে বনে চলে আয়।”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Mahaparinirvan Diwas: আম্বেদকরের কাছে ভারতীয় আধ্যাত্মবাদই সামজিক সাম্যতার মূলসূত্র, মার্কসবাদ নয়, কেন জানেন?

    Mahaparinirvan Diwas: আম্বেদকরের কাছে ভারতীয় আধ্যাত্মবাদই সামজিক সাম্যতার মূলসূত্র, মার্কসবাদ নয়, কেন জানেন?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আজ ৬ ডিসেম্বর বাবা সাহেব আম্বেদকরের (Dr. Ambedkar) মহাপ্রয়াণ দিবস (Mahaparinirvan Diwas)। তিনি ভারতের সংবিধানের খসড়া রচনা করে পিছিয়ে থাকা বর্গের মানুষের অধিকার এবং কর্তব্য নিয়ে দীর্ঘ সংগ্রাম করেছিলেন। সামাজিক বৈষম্য, ন্যায় বিচার, জাতপাত, অস্পৃশ্যতার বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন করেছিলেন। আজের দিনকে তাই সামাজিক সমতা দিবসও বলা হয়। তাঁকে পণ্ডিত নেহেরু পরিচালিত কংগ্রেস সরকার সেই মান্যতা কোনও দিন দেয়নি। তবে তিনি হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করলেও, ভারতীয় সংস্কৃতিকে ত্যাগ করেননি, বৌদ্ধ ধর্মকে গ্রহণ করেছিলেন। একই ভাবে পাশ্চাত্য মার্কসবাদ এবং কমিউনিজেমের মিথ্যাচার, বৈষম্য, বিভাজন, লিঙ্গ বৈষম্যের, পুঁজিবাদ, শ্রেণী শত্রুর মতো ভাবনার বিরুদ্ধে নিজের স্পষ্ট মত রেখেছিলেন।

    ভারতীয় সভ্যতার একটা গড়ন রয়েছে (Mahaparinirvan Diwas)

    বাবা সাহেব (Mahaparinirvan Diwas) খুব নিবিড় ভাবে বুঝতে সক্ষম হয়েছিলেন যে ভারতের সংস্কৃতি, সমাজতত্ত্ব, দর্শন, আধাত্মবাদকে পাশ্চাত্য ভাবনার আদলে দেখলে চলবে না। প্রাচ্য এবং পাশ্চাত্যের ভূ-খণ্ডের স্থান-কাল-পাত্র এক রকম নয়। মার্কসের শ্রেণী সংগ্রাম, ঐতিহাসিক বস্তুবাদ, দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ, পুঁজি, উদ্বৃত্ত মূল্য, শ্রেণী শোষণের এবং দুনিয়ার মজদুর এক হও – এই সব ভাবনা দিয়ে ভারতীয় সমাজ-সংস্কৃতি এবং জীবন অভিপ্রায়কে বোঝা সম্ভব নয়। পুঁজিবাদকে উৎখাত করতে শ্রেণী সংগ্রাম, বিপ্লবের ভাবনা ইউরোপে কাজ করলেও ভারতবর্ষের সমাজ মনের পরিবর্তন এই ভাবে সম্ভব নয়। ভারতীয় জতি, বর্ণ, ধর্মের নানা সাংস্কৃতিক স্তরের মাত্রা রয়েছে। ভারতীয় সভ্যতার নিজেস্ব কিছু মানদণ্ড রয়েছে তাকে নজর না রেখে পাশ্চাত্য ভাবনাকে চাপিয়ে দেওয়াকে কোনও দিন ঠিক বলে মনে করতেন না বাবা সাহেব (Dr. Ambedkar)। কারণ ভারতীয় সভ্যতার নিজেস্ব গড়ন রয়েছে। ভারতীয় সমাজের সমস্যাকে সমাধান করতে ভারতীয় দৃষ্টিভঙ্গির প্রয়োজন।

    কমিউনিজেম সামজিক বৈষম্যের জন্মদেয়

    মার্কসবাদী তাত্ত্বিকেরা বৌদ্ধ ধর্মের সঙ্গে মিলিয়ে সমাজের সাম্যতাকে ব্যাখ্যা করে থাকেন। কিন্তু বাবা সাহেব (Dr. Ambedkar) মানতেন যে বৌদ্ধ ধর্মের সাম্য, করুণা, অহিংসার সঙ্গে কমিউনিজেম বা মার্কসবাদের তেমন কোনও সামঞ্জস্য নেই। কারণ মার্কসবাদ যেভাবে সামাজিক অর্থনীতি, শ্রমিক, পুঁজিবাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব নির্মাণ করে শ্রেণীশোষণকে হাতিয়ার করে বিপ্লববাদের জন্ম দিয়ে পরিবর্তন আনতে চায়, তাতে কতকগুলি আরও গভীর সমস্যার জন্ম দেয়। সমাজের সর্বহারা তত্ত্বের মধ্যে দিয়ে এক বর্গের মানুষের সঙ্গে অপর আরেক বর্গের মানুষের মধ্যে বিরাট প্রভেদ সৃষ্টি হয়। এই আর্থিক পরিবর্তন এবং বিপ্লবের সঙ্গে বৌদ্ধধর্মের অহিংসা, সাম্য এবং করুণার কোনও সম্পর্ক নেই। কামিউনিজেম দ্বারা সামাজিক বর্ণ বৈষম্য, জাতি বৈষম্য এবং আর্থিক বৈষম্য আরও বৃদ্ধি পায়। হিংসা বাড়ে, বিপ্লবের নামে যুদ্ধ সংগ্রাম হয়। সমাধানের কোনও রাস্তা আসে না। অপর দিকে বৌদ্ধ ধর্ম অনেক বেশি শান্তিপূর্ণ সামাজিক অবস্থানের কথা বলে। নির্বাণ (Mahaparinirvan Diwas) বা মুক্তি বা সংযম ব্যক্তি নির্ভর, তা ব্যক্তি থেকে সমাজের মুক্তির কথা বলে।

    আধ্যাত্মবাদের মধ্যে কীভাবে লুকিয়ে রয়েছে সাম্যবাদ

    বাবা সাহেব (Dr. Ambedkar) বৌদ্ধ ধর্মের প্রাসঙ্গিকতাকে ভারতের জন্য আদর্শ বলে মনে করেছিলেন। কারণ এই ধর্ম অশান্তি নয় সম্প্রীতি এবং অহিংসার কথা বেশি বলে। সামাজিক ন্যায় বিচার সহানুভূতি দিয়ে আন্তরিক কাঠামোকে নির্মাণ করা প্রয়োজন। সাম্য এবং ভাতৃত্বনীতির উপর মূল্যবোধের কাঠামোকে নির্মাণ করতে হবে। তিনি বৌদ্ধ ধর্ম সম্পর্কে বলেছিলেন, “বৌদ্ধধর্ম হল একটি সর্ব শ্রেষ্ঠ উপহার, যা ভারত বিশ্ববাসীকে দিয়েছে। এই ধর্ম আমাদের শেখায় যে অসমতার নিরাময় হিংসার দ্বারা নয়, পরস্পরের মধ্যে শান্তি, ভালোবাসা এবং বোঝাপড়ার মাধ্যমে সম্ভব।” ফলে বৌদ্ধ ধর্মই পারে একমাত্র সামাজিক ভাবে জাতপাতের শৃঙ্খলকে ভেঙে ফেলতে। সত্যকারের সাম্যবাদী সমাজ গঠনের চাবিকাঠি ভারতীয় দর্শন এবং আধ্যাত্মবাদের মধ্যে কীভাবে লুকিয়ে রয়েছে, তার অন্বেষণ করেছেন তিনি। তাই বাবা সাহেব নির্বাণের (Mahaparinirvan Diwas) আগের মুহূর্ত পর্যন্ত মার্কসবাদকে গ্রহণ করেননি। গ্রহণ করেছেন ভারতীয় ধর্ম দর্শন এবং সংস্কৃতিকে।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 211: “রামলীলা দেখতে গেলুম…সাক্ষাৎ সীতা, রাম, লক্ষ্মণ, হনুমান, বিভীষণ, তাদের সব পূজা করতে লাগলুম”

    Ramakrishna 211: “রামলীলা দেখতে গেলুম…সাক্ষাৎ সীতা, রাম, লক্ষ্মণ, হনুমান, বিভীষণ, তাদের সব পূজা করতে লাগলুম”

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়িমধ্যে

    দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ৪ঠা জুন

    পূর্বকথা—শ্রীরামকৃষ্ণের প্রেমোন্মাদ ও রূপদর্শন

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—উঃ, কি অবস্থাই গেছে! প্রথম যখন এই অবস্থা হল দিনরাত কোথা দিয়ে যেত, বলতে পারিনা। সকলে বললে, পাগল হল। তাই তো এরা বিবাহ দিলে। উন্মাদ অবস্থা;—প্রথম চিন্তা হল, পরিবারও এইরূপ থাকবে, খাবে-দাবে। শ্বশুরবাড়ি গেলুম, সেখানে খুব সংকীর্তন। নফর, দিগম্বর বাঁড়ুজ্যের বাপ এরা এল! খুব সংকীর্তন। এক-একবার ভাবতুম, কি হবে। আবার বলতুম, মা, দেশের জমিদার যদি আদর করে, তাহলে বুঝব সত্য। তারাও সেধে এসে কথা (Kathamrita) কইত।

    পূর্বকথা—সুন্দরীপূজা ও কুমারীপূজা—রামলীলা-দর্শন—গড়ের মাঠে বেলুনদর্শন—সিওড়ে রাখাল-ভোজন—জানবাজারে মথুরের সঙ্গে বাস 

    “কি অবস্থাই গেছে। একটু সামান্যতেই একেবারে উদ্দীপন হয়ে যেত। সুন্দরীপূজা কল্লুম! চৌদ্দ বছরের মেয়ে। দেখলুম, সাক্ষাৎ মা। টাকা দিয়ে প্রণাম কল্লুম।

    “রামলীলা দেখতে গেলুম। একেবারে দেখলুম, সাক্ষাৎ সীতা, রাম, লক্ষ্মণ, হনুমান, বিভীষণ। তখন যারা সেজেছিল, তাদের সব পূজা করতে লাগলুম।

    “কুমারীদের এনে তখন পূজা করতুম। দেখতুম, সাক্ষাৎ মা।

    “একদিন বকুলতলায় দেখলুম, নীল বসন পরে একটি মেয়ে দাঁড়িয়ে, বেশ্যা। দপ্‌ করে একেবারে সীতার উদ্দীপন। ও মেয়েকে ভুলে গেলুম; কিন্তু দেখলুম, সাক্ষাৎ সীতা লঙ্কা থেকে উদ্ধার হয়ে রামের (Ramakrishna) কাছে যাচ্ছেন। অনেকক্ষণ বাহ্যশূন্য হয়ে সমাধি অবস্থা হয়ে রইল।

    “আর-একদিন গড়ের মাঠে বেড়াতে গিছলুম। বেলুন উঠবে—অনেক লোকের ভিড়। হঠাৎ নজরে পড়ল, একটি সাহেবের ছেলে গাছে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। ত্রিভঙ্গ হয়ে। যাই দেখা, অমনি শ্রীকৃষ্ণের উদ্দীপন। সমাধি হয়ে গেল।

    “সিওড়ে রাখাল-ভোজন করালুম। তাদের হাতে হাতে সব জলপান দিলুম (Kathamrita)! দেখলুম, সাক্ষাৎ ব্রজের রাখাল। তাদের জলপান থেকে আবার খেতে লাগলুম!

    “প্রায় হুঁশ থাকত না। সেজোবাবু জানবাজারের বাড়িতে নিয়ে দিন কতক রাখলে। দেখতে লাগলুম, সাক্ষাৎ মার দাসী হয়েছি। বাড়ির মেয়েরা আদবেই লজ্জা করত না, যেমন ছোট ছেলেকে বা মেয়েকে দেখলে কেউ লজ্জা করে না। আন্দির সঙ্গে—বাবুর মেয়েকে জামাই-এর কাছে শোয়াতে যেতুম।

    “এখনও একটু তাতেই উদ্দীপন হয়ে যায়। রাখাল জপ করতে করতে বিড় বিড় করত। আমি দেখে স্থির থাকতে পারতুম না। একেবারে ইশ্বরের উদ্দীপন হয়ে, বিহ্বল হয়ে যেতুম।”

    ঠাকুর প্রকৃতিভাবের কথা আরও বলিতে লাগিলেন। আর বললেন, “আমি একজন কীর্তনীয়াকে মেয়ে-কীর্তনীর ঢঙ সব দেখিয়েছিলুম। সে বললে (Kathamrita)  ‘আপনার এ-সব ঠিক ঠিক। আপনি এ-সব জানলেন কেমন করে’।”

    এই বলিয়া ঠাকুর (Ramakrishna) ভক্তদের মেয়ে-কীর্তনীয়ার ঢঙ দেখাইতেছেন। কেহই হাস্য সংবরণ করিতে পারিলেন না।

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Baranagar: দক্ষিণেশ্বরে মা  ভবতারিণীর আগে তৈরি হয়েছিল কৃপাময়ী কালী মন্দির, জানুন ইতিহাস

    Baranagar: দক্ষিণেশ্বরে মা ভবতারিণীর আগে তৈরি হয়েছিল কৃপাময়ী কালী মন্দির, জানুন ইতিহাস

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বরানগর-মালপাড়ার (Baranagar) কুঠিঘাট অঞ্চলের কৃপাময়ী কালীবাড়ি দেবী দর্শনে আসেন বহু ভক্ত। এই মন্দিরও দেখার মতো। তবে, এই মন্দির কে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তা এখনকার প্রজন্মের কাছে অজানা। এই প্রতিবেদনে কালীবাড়ি তৈরির ইতিহাস তুলে ধরা হল।

    মন্দির কে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন? (Baranagar)

    শোভাবাজার (Baranagar) অঞ্চলের বাসিন্দা জয়নারায়ণ মিত্র (Joy Mitra Kalibari) ছিলেন সে যুগের এক স্বনামধন্য বিত্তবান বাবু মানুষ। বাড়িতে দোল- দুর্গোৎসবের মতো অনুষ্ঠান হত মহা সমারোহে। তাঁর অর্থ-বিত্ত নিয়ে অনেক গল্প আছে। নাম উহ্য রেখে হুতোম পেঁচার নকশাতেও জয় মিত্রের দুর্গাপুজোর এই বর্ণনা আছে। যাইহোক, ১৮৫৫ সালে দক্ষিণেশ্বরে রানি রাসমণির ভবতারিণী কালীমন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তারও আগে ১৮৪৮  সালে বরানগর কুঠিঘাট (Kuthi Ghat) এলাকায় এই কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি কালী ভক্ত ছিলেন। তাই, গঙ্গার ধারে মন্দির স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেন। কৃপাময়ী কালীর বিগ্রহ যুক্ত একটা নবরত্ন মন্দির ও বারোটা আটচালা শিবমন্দির নিয়ে এই মন্দির-চত্বর নির্মাণ করা হয়। প্রতিষ্ঠাতার নাম অনুসারে এই কৃপাময়ী কালীর মন্দিরটি ‘জয় মিত্রের মন্দির’ নামেই পরিচিত। খুবই প্রাচীন এই মন্দিরে আগে বিভিন্ন পুজোয় খুব সমারোহ হত। এখনও বারোমাস নিত্যপুজো এবং কালীপুজো হলেও আগের সে রমরমা আর নেই। বস্তুত মূল কোনও কালী মন্দিরের সঙ্গে চার-ছয়-আট-বারো বা তারও বেশি আটচালা শিবমন্দির যুক্ত যে সমস্ত ‘টেম্পল-কমপ্লেক্স’ সমগ্র দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে দেখা যায়, এটাও তার ব্যাতিক্রম নয়। কিন্তু প্রয়োজনীয় রক্ষণাবেক্ষণ না হওয়ায় এক সময়ে জীর্ণতার ছাপ লেগেছিল এই মন্দিরগুলোর গায়ে। তবে কয়েক বছর আগে বিপুল অর্থব্যয় করে সংস্কার করার ফলে সৌন্দর্য অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে কৃপাময়ী কালী মন্দিরের।

    ঠাকুর রামকৃষ্ণ আসতেন এই মন্দিরে!

    স্থাপত্যশৈলীর বিচারে কৃপাময়ী মন্দির ‘নবরত্ন’ শ্রেণির। রত্ন’ শব্দটি মন্দির নির্মাণ শিল্পে কথাটি চূড়ার সমার্থক। ঢালু ছাদ ও বাঁকানো কার্নিসযুক্ত মন্দির শীর্যের ওপর চুড়া বসিয়ে এই রীতির মন্দির নির্মিত হয়। কৃপাময়ী কালীর নবরত্ন শৈলীর মন্দির (Baranagar)  হলেও এর স্থাপত্য অন্যান্য নবরত্ন মন্দিরের থেকে কিছুটা অন্য রকম। এখানে চিরাচরিত বাঁকানো চালের শৈলী লঙ্ঘন করে দোতলা দালান মন্দিরের প্রতি তলে চারটে করে মোট আটটা রত্ন বা চূড়া বসিয়ে এবং একেবারে শীর্ষদেশে আকারে বড় আরও একটা রত্ন বসিয়ে নবরত্ন মন্দিরের চেহারা দেওয়া হয়েছে। ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ, স্বামী বিবেকানন্দ এই মন্দিরে একাধিকবার এসেছেন বলে জানা যায়।

    মন্দিরের শিবলিঙ্গগুলির কী নাম?

    মন্দিরের (Baranagar) ঠিক সামনে একটা বড় নাটমন্দির ছিল। কিন্তু তার ছাদ ভেঙে পড়েছে বহুকাল আগে। টিকে ছিল শুধু গোলাকার থামগুলি। সম্প্রতি অবশ্য নতুন করে নির্মিত হয়েছে নাটমন্দির। কিন্তু তা পুরনো স্থাপত্যের সঙ্গে একেবারেই বেমানান। নবরত্ন মন্দিরের পাশে প্রতি সারিতে ছটা করে, মুখোমুখি দুসারি মোট বারোটা আটচালা শিবমন্দির রয়েছে। গর্ভগৃহে রক্ষিত শিবলিঙ্গগুলি ‘অমরনাথ’, ‘বৈদ্যনাথ’, ‘পশুপতিনাথ’, ‘চন্দ্রনাথ’, ‘ভুবনেশ্বর’ প্রভৃতি বিভিন্ন নামে পরিচিত। 

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 210: “সমাধিস্থ লোকের মন যখন নিচে আসে, সত্ত্বগুণী লোকের সঙ্গে বিলাস করে”

    Ramakrishna 210: “সমাধিস্থ লোকের মন যখন নিচে আসে, সত্ত্বগুণী লোকের সঙ্গে বিলাস করে”

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়িমধ্যে

    প্রথম পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ৪ঠা জুন

    দক্ষিণেশ্বরে ফলহারিণী—পূজাদিবসে ভক্তসঙ্গে

    মণিলাল, ত্রৈলোক্য বিশ্বাস, রাম চাটুজ্যে, বলরাম, রাখাল 

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—তা এইবার যা হয়েছে। দেখো যেন অন্যবার এরূপ না হয়! যেমন নিয়ম আছে, সেইরকমই বরাবর হওয়া ভাল।

    ত্রৈলোক্য যথোচিত উত্তর দিয়া চলিয়া গেলেন। কিয়ৎক্ষণ পরে বিষ্ণুঘরের পুরোহিত শ্রীযুক্ত রাম চাটুজ্যে আসিলেন।

    ঠাকুর(Ramakrishna)—রাম! ত্রৈলোক্যকে বললুম, যাত্রা হয় নাই, দেখো যেন এরূপ আর না হয় তা এ-কথাটা (Kathamrita) বলা কি ভাল হয়েছে?

    রাম চাটুজ্যে—মহাশয়, তা আর কি হয়েছে! বেশই বলেছেন। যেমন নিয়ম আছে, সেইরকমই তো বরাবর হওয়া উচিত।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (বলরামের প্রতি)—ওগো, আজ তুমি এখানে খেও।

    আহারের কিঞ্চিৎ পূর্বে ঠাকুর নিজের অবস্থার বিষয় ভক্তদের অনেক বলিতে লাগিলেন। রাখাল, বলরাম, মাস্টার, রামলাল, এবং আরও দু-একটি ভক্ত বসিয়াছিলেন।

    হাজরার উপর রাগ—ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ ও মানুষে ইশ্বরদর্শন 

    শ্রীরামকৃষ্ণ(Ramakrishna)—হাজরা আবার শিক্ষা দেয়, তুমি কেন ছোকরাদের জন্য অত ভাব? গাড়ি করে বলরামের বাড়ি যাচ্ছি, এমন সময় পথে মহা ভাবনা হল। বললুম “মা, হাজরা বলে, নরেন্দ্র আর সব ছোকরাদের জন্য আমি অত ভাবি কেন; সে বলে, ঈশ্বরচিন্তা ছেড়ে এ-সব ছোকরাদের জন্য চিন্তা করছ কেন?” এই কথা বলতে বলতে একেবারে দেখালে যে, তিনিই মানুষ হয়েছেন। শুদ্ধ আধারে স্পষ্ট প্রকাশ হন। সেইরূপ দর্শন করে যখন সমাধি একটু ভাঙল, হাজরার উপর রাগ করতে লাগলুম। বললুম(Kathamrita), শালা আমার মন খারাপ করে দিছল। আবার ভাবলুম, সে বেচারীরই বা দোষ কি, সে জানবে কেমন করে?

    নরেন্দ্রের সহিত শ্রীরামকৃষ্ণের প্রথম দেখা 

    “আমি এদের জানি, সাক্ষাৎ নারায়ণ (Ramakrishna)। নরেন্দ্রের সঙ্গে প্রথম দেখা হল। দেখলুম, দেহবুদ্ধি নাই। একটু বুকে হাত দিতেই বাহ্যশূন্য হয়ে গেল। হুঁশ হয়ে বলে উঠল, ‘ওগো, তুমি আমার কি করলে? আমার যে মা-বাপ আছে!’ যদু মল্লিকের বাড়িতেও ঠিক ওইরকম হয়েছিল। ক্রমে তাকে দেখবার জন্য ব্যাকুলতা বাড়তে লাগল, প্রাণ আটু-পাটু করতে লাগল। তখন ভোলানাথকে বললুম, হ্যাঁগা, আমার মন এমন হচ্ছে কেন? নরেন্দ্র বলে একটি কায়েতের ছেলে, তার জন্য এমন হচ্ছে কেন? ভোলানাথ বললে(Kathamrita), ‘এর মানে ভারতে আছে। সমাধিস্থ লোকের মন যখন নিচে আসে, সত্ত্বগুণী লোকের সঙ্গে বিলাস করে। সত্ত্বগুণী লোক দেখলে তবে তার মন ঠাণ্ডা হয়।’ এই কথা শুনে তবে আমার মনের শান্তি হল। মাঝে মাঝে নরেন্দ্রকে দেখব বলে বসে বসে কাঁদতুম।”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 209: “তুমি স্বর্গ, তুমি মর্ত মা, তুমি সে পাতাল, তোমা হতে হরি ব্রহ্মা, দ্বাদশ গোপাল”

    Ramakrishna 209: “তুমি স্বর্গ, তুমি মর্ত মা, তুমি সে পাতাল, তোমা হতে হরি ব্রহ্মা, দ্বাদশ গোপাল”

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়িমধ্যে

    প্রথম পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ৪ঠা জুন

    দক্ষিণেশ্বরে ফলহারিণী—পূজাদিবসে ভক্তসঙ্গে

    মণিলাল, ত্রৈলোক্য বিশ্বাস, রাম চাটুজ্যে, বলরাম, রাখাল 

    আজ জৈষ্ঠ কৃষ্ণা চতুর্দশী। সাবিত্রী চতুর্দশী। আবার অমাবস্যা ও ফলহারিণী-পূজা। ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) দক্ষিণেশ্বর-কালীবাড়িতে নিজ মন্দিরে বসিয়া আছেন। ভক্তেরা তাঁহাকে দর্শন করিতে আসিতেছেন। সোমবার, ইংরেজী ৪ঠা জুন, ১৮৮৩ খ্রীষ্টাব্দ।

    মাস্টার পূর্বদিন রবিবারে আসিয়াছেন। ওই রাত্রে কাত্যায়নীপূজা। ঠাকুর প্রেমাবিষ্ট হইয়া নাটমন্দিরে মার সম্মুখে দাঁড়াইয়া, বলিতেছেন(Kathamrita), “মা, তুমিই ব্রজের কাত্যায়নী:

    তুমি স্বর্গ, তুমি মর্ত মা, তুমি সে পাতাল।
    তোমা হতে হরি ব্রহ্মা, দ্বাদশ গোপাল।
    দশ মহাবিদ্যা মাতা দশ অবতার।
    এবার কোনরূপে আমায় করিতে হবে পার।”

    ঠাকুর গান করিতেছেন ও মার সঙ্গে কথা কহিতেছেন। প্রেমে একেবারে মাতোয়ারা! নিজের ঘরে আসিয়া চৌকির উপর বসিলেন।

    রাত্রি দ্বিপ্রহর পর্যন্ত ওই রাত্রে মার নাম হইতে লাগিল।

    সোমবার সকালে বলরাম এবং আরও কয়েকটি ভক্ত আসিলেন। ফলহারিনী-পূজা উপলক্ষে ত্রৈলোক্য প্রভৃতি বাগানের বাবুরা সপরিবারে আসিয়াছেন।

    বেলা নয়টা। ঠাকুর সহাস্যবদন—গঙ্গার উপর গোল বারান্দাটিতে বসিয়া আছেন। কাছে মাস্টার। ক্রীড়াচ্ছলে ঠাকুর রাখালের মাথাটি কোলে লইয়াছেন! রাখাল শুইয়া। ঠাকুর কয়েকদিন রাখালকে সাক্ষাৎ গোপাল দেখিতেছেন।

    ত্রৈলোক্য সম্মুখ দিয়া মা-কালীকে দর্শন করিতে যাইতেছেন। সঙ্গে অনুচর ছাতি ধরিয়া যাইতেছে। ঠাকুর (Ramakrishna) রাখালকে বললেন(Kathamrita), “ওরে, ওঠ্‌ ওঠ্‌।”

    ঠাকুর বসিয়া আছেন। ত্রৈলোক্য নমস্কার করিলেন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (ত্রৈলোক্যের প্রতি)— হ্যাঁগা, কাল যাত্রা হয় নাই?

    ত্রৈলোক্যে—হাঁ, যাত্রার তেমন সুবিধা হয় নাই।

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 208: “আলাপ কল্লে আমরা কি শেষে দ্বিচারিণী হব! আমাদের পীতধড়া, মোহনচূড়া-পরা সেই প্রাণবল্লভ কোথায়!”

    Ramakrishna 208: “আলাপ কল্লে আমরা কি শেষে দ্বিচারিণী হব! আমাদের পীতধড়া, মোহনচূড়া-পরা সেই প্রাণবল্লভ কোথায়!”

    ভক্তসঙ্গে শ্রীরামকৃষ্ণ

    দশম পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ২রা জুন

    মুক্তি ও ভক্তি—গোপীপ্রেম—গোপীরা মুক্তি চান নাই 

    “এই প্রেমাভক্তিতে দুটি জিনিস আছে। ‘অহংতা’ আর ‘মমতা’। যশোদা ভাবতেন, আমি না দেখলে গোপালকে কে দেখবে, তাহলে গোপালের অসুখ করবে। কৃষ্ণকে (Ramakrishna) ভগবান বলে যশোদার বোধ ছিল না। আর ‘মমতা’—আমার জ্ঞান, আমার গোপাল। উদ্ধব বললেন, ‘মা! তোমার কৃষ্ণ সাক্ষাৎ ভগবান, তিনি জগৎ চিন্তামণি। তিনি সামান্য নন।’ যশোদা বললেন (Kathamrita), ‘ওরে, তোদের চিন্তামণি নয়, আমার গোপাল কেমন আছে জিজ্ঞাসা করছি।—চিন্তামণি না, আমার গোপাল।’

    “গোপীদের কি নিষ্ঠা! মথুরায় দ্বারীকে অনেক কাকুতি-মিনতি করে সভায় ঢুকল। দ্বারী কৃষ্ণের কাছে তাদের লয়ে গেল। কিন্তু পাগড়ি-বাঁধা শ্রীকৃষ্ণকে দেখে তারা হেঁটমুখ হয়ে রইল। পরস্পর বলতে লাগল, ‘এ পাগড়ি-বাঁধা আবার কে! এঁর সঙ্গে আলাপ কল্লে আমরা কি শেষে দ্বিচারিণী হব! আমাদের পীতধড়া, মোহনচূড়া-পরা সেই প্রাণবল্লভ (Ramakrishna) কোথায়!’

    “দেখেছ, এদের কি নিষ্ঠা! বৃন্দাবনের ভাবই আলাদা। শুনেছি, দ্বারকার কাছে লোকেরা অর্জুনের কৃষ্ণকে পূজা করে। তারা রাধা চায় না।”

    গোপীদের নিষ্ঠা—জ্ঞানভক্তি ও প্রেমাভক্তি 

    ভক্ত—কোন্‌টি ভাল, জ্ঞানমিশ্রিতা ভক্তি, না প্রেমাভক্তি?

    শ্রীরামকৃষ্ণ—ঈশ্বরে খুব ভালবাসা না হলে প্রেমাভক্তি হয় না। আর ‘আমার’ জ্ঞান। তিন বন্ধু বন দিয়ে যাচ্ছে, বাঘ এসে উপস্থিত। একজন বললে, “ভাই! আমরা সব মারা গেলুম!” একজন বললে, “কেন? মারা যাব কেন? এর ঈশ্বরকে ডাকি।” আর-একজন বললে (Kathamrita), “না, তাঁকে আর কষ্ট দিয়ে কি হবে? এস, এই গাছে উঠে পড়ি।”

    “যে লোকটি বললে, ‘আমরা মারা গেলুম’, সে জানে না যে ঈশ্বর রক্ষাকর্তা আছেন। যে বললে, ‘এস, আমার ঈশ্বরকে (Ramakrishna) ডাকি’, সে জ্ঞানী; তার বোধ আছে যে, ইশ্বর সৃষ্টি-স্থিতি-প্রলয় সব করেছেন। আর যে বললে (Kathamrita), ‘তাঁকে কষ্ট দিয়ে কি হবে, এস, গাছে উঠি,’ তার ভিতরে প্রেম জন্মেছে, ভালবাসা জন্মেছে। তা প্রেমের স্বভাবই এই—আপনাকে বড় মনে করে, আর প্রেমের পাত্রকে ছোট মনে করে। পাছে তার কষ্ট হয়। কেবল এই ইচ্ছা যে, যাকে সে ভালবাসে তার পায়ে কাঁটাটি পর্যন্ত না ফোটে।”

    ঠাকুর (Ramakrishna) ও ভক্তদিগকে রাম উপরে লইয়া গিয়া নানাবিধ মিষ্টান্ন দিয়া সেবা করিলেন। ভক্তেরাও মহানন্দে প্রসাদ পাইলেন।

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 207: “আমরা মুক্তি—এ-সব কথা বুঝি না, আমরা আমাদের প্রাণের কৃষ্ণকে দেখিতে চাই”

    Ramakrishna 207: “আমরা মুক্তি—এ-সব কথা বুঝি না, আমরা আমাদের প্রাণের কৃষ্ণকে দেখিতে চাই”

    ভক্তসঙ্গে শ্রীরামকৃষ্ণ

    দশম পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ২রা জুন

    মুক্তি ও ভক্তি—গোপীপ্রেম—গোপীরা মুক্তি চান নাই 

    কথক বলিলেন, যখন উদ্ধব শ্রীবৃন্দাবনে আগমন করিলেন, রাখালগণ ও ব্রজগোপিগণ তাঁহাকে দর্শন করিবার জন্য ব্যাকুল হইয়া ছুটিয়া আসিলেন। সকলেই জিজ্ঞাসা (Kathamrita) করিলেন, “শ্রীকৃষ্ণ কেমন আছেন। তিনি কি আমাদের ভুলে গেছেন? তিনি কি আমাদের নাম করেন?” এই বলিয়া কেহ কাঁদিতে লাগিলেন, কেহ কেহ তাঁহাকে লইয়া বৃন্দাবনের নানা স্থান দেখাইতে লাগিলেন ও বলিতে লাগিলেন, “এই স্থানে শ্রীকৃষ্ণ (Ramakrishna) গোবর্ধন ধারণ করিয়াছিলেন, এখানে ধেনুকাসুর বধ, এখানে শকটাসুর বধ করিয়াছিলেন। এই মাঠে গরু চড়াইতেন, এই যমুনাপুলিনে তিনি বিহার করিতেন। এখানে রাখালদের লইয়া ক্রীড়া করিতেন; এইসকল কুঞ্জে গোপীদের সহিত আলাপ করিতেন।” উদ্ধব বলিলেন, “আপনারা কৃষ্ণের জন্য অত কাতর হইতেছেন কেন? তিনি সর্বভূতে আছেন। তিনি সাক্ষাৎ ভগবান। তিনি ছাড়া কিছুই নাই।” গোপীরা বলিলেন, “আমরা ও-সব বুঝিতে পারি না। আমরা লেখাপড়া কিছুই জানি না। কেবল আমাদের বৃন্দাবনের কৃষ্ণকে জানি, ইনি এখানে নানা ক্রীড়া করিয়া গিয়াছেন।” উদ্ধব বলিলেন, “তিনি সাক্ষাৎ ভগবান, তাঁকে চিন্তা করিলে আর এ-সংসারে আসিতে হয় না, জীব মুক্ত হয়ে যায়।” গোপীরা বলিলেন, “আমরা মুক্তি—এ-সব কথা বুঝি না। আমরা আমাদের প্রাণের কৃষ্ণকে দেখিতে চাই।”

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) এই সকল কথা এক মনে শুনিতে লাগিলেন ও ভাবে বিভোর হইলেন। বলিলেন(Kathamrita), “গোপীরা ঠিক বলেছেন।” এই বলিয়া তাঁহার সেই মধুরকন্ঠে গান গাহিতে লাগিলেন:

    আমি মুক্তি দিতে কাতর নই,
        শুদ্ধাভক্তি দিতে কাতর হই (গো)।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (কথকের প্রতি)—গোপীদের ভক্তি প্রেমাভক্তি; অব্যভিচারিণী ভক্তি, নিষ্ঠাভক্তি। ব্যভিচারিণী ভক্তি কাকে বলে জানো? জ্ঞানমিশ্রা ভক্তি। যেমন, কৃষ্ণই সব হয়েছেন। তিনিই পরব্রহ্ম, তিনিই রাম, তিনিই শিব, তিনিই শক্তি। কিন্তু ও জ্ঞানটুকু প্রেমাভক্তির সঙ্গে মিশ্রিত নাই। দ্বারকায় হনুমান এসে বললে, “সীতা-রাম দেখব।” ঠাকুর রুক্মিণীকে বললেন, “তুমি সীতা হয়ে বস, তা না হলে হনুমানের কাছে রক্ষা নাই।” পাণ্ডবেরা যখন রাজসূয় যজ্ঞ করেন, তখন যত রাজা সব যুধিষ্ঠিরকে সিংহাসনে বসিয়া প্রণাম করতে লাগল। বিভীষণ বললেন, “আমি এক নারায়ণকে (Ramakrishna) প্রণাম করব, আর কারুকে করব না।” তখন ঠাকুর নিজে যুধিষ্ঠিরকে ভুমিষ্ঠ হয়ে প্রণাম করতে লাগলেন। তবে বিভীষণ রাজমুকুটসুদ্ধ সাষ্টাঙ্গ হয়ে যুধিষ্ঠিরকে প্রণাম করে।

    “কিরকম জানো(Kathamrita)? যেমন বাড়ির বউ! দেওর, ভাশুর, শ্বশুর, স্বামী—সকলকে সেবা করে, পা ধোবার জল দেয়, গামছা দেয়, পিঁড়ে পেতে দেয়, কিন্তু এক স্বামীর সঙ্গেই অন্যরকম সম্বন্ধ।

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 206: “কত শবদেহ জ্বলিতেছে, কত ভস্মাবশেষ…সেই অন্ধকার রজনীতে শ্মশান কি ভয়ঙ্কর হইয়াছে”

    Ramakrishna 206: “কত শবদেহ জ্বলিতেছে, কত ভস্মাবশেষ…সেই অন্ধকার রজনীতে শ্মশান কি ভয়ঙ্কর হইয়াছে”

    ভক্তসঙ্গে শ্রীরামকৃষ্ণ

    দশম পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ২রা জুন

    রাজা হরিশ্চন্দ্রের কথা ও ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ (Kathamrita) 

    রাজা হরিশ্চন্দ্রের কথা (Kathamrita) চলিতে লাগিল। বিশ্বামিত্র বলিলেন, “মহারাজ! আমাকে সসাগরা পৃথিবী দান করিয়াছ, অতএব ইহার ভিতর তোমার স্থান নাই। তবে ৺কাশীধামে তুমি থাকিতে পার। সে মহাদেবের স্থান। চল, তোমাকে, তোমার সহধর্মিণী শৈব্যা ও তোমার পুত্র সহিত সেখানে পৌঁছাইয়া দিই। সেইখানে গিয়া তুমি দক্ষিণা যোগাড় করিয়া দিবে।” এই বলিয়া রাজাকে লইয়া ভগবান (Ramakrishna) বিশ্বামিত্র ৺কাশীধাম অভিমুখে যাত্রা করিলেন। কাশীতে পৌঁছিয়া সকলে ৺বিশ্বেশ্বর-দর্শন করিলেন।

    ৺বিশ্বেশ্বর-দর্শন কথা হইবামাত্র, ঠাকুর একেবারে ভাবাবিষ্ট; ‘শিব’ ‘শিব’ এই কথা অস্পষ্ট উচ্চারণ করিতেছেন।

    রাজা হরিশ্চন্দ্র দক্ষিণা দিতে পারিলেন না—কাজে কাজেই শৈব্যাকে বিক্রয় করিলেন। পুত্র রোহিতাশ্ব শৈব্যার সঙ্গে রহিলেন। কথকঠাকুর শৈব্যার প্রভু ব্রাহ্মণের বাড়ি রোহিতাশ্বের পুষ্পচয়ন কথা ও সর্পদংশন কথাও বলিলেন। সেই তমসাচ্ছন্ন কালরাত্রে সন্তানের মৃত্যু হইল। সৎকার করিবার কেহ নাই। বৃদ্ধ ব্রাহ্মণ প্রভু শয্যা ত্যাগ করিয়া উঠিলেন না—শৈব্যা একাকী পুত্রের শবদেহ ক্রোড়ে করিয়া শ্মশানাভিমুখে আসিতে (Kathamrita) লাগিলেন। মাঝে মাঝে মেঘগর্জন ও অশনিপাত—নিবিড় অন্ধকার যেন বিদীর্ণ করিয়া এক-একবার বিদ্যুৎ খেলেতেছিল। শৈব্যা ভয়াকুলা শোকাকুলা,—রোদন করিতে করিতে আসিতেছেন।

    হরিশ্চন্দ্র দক্ষিণার টাকা সমস্ত হয় নাই বলিয়া চণ্ডালের কাছে নিজেকে বিক্রয় করিয়াছেন। তিনি শ্মশানে চণ্ডাল হইয়া বসিয়া আছেন। কড়ি লইয়া সৎকার কার্য সম্পাদন করিবেন। কত শবদেহ জ্বলিতেছে, কত ভস্মাবশেষ হইয়াছে। সেই অন্ধকার রজনীতে শ্মশান কি ভয়ঙ্কর হইয়াছে। শৈব্যা সেই স্থানে আসিয়া রোদন করিতেছেন—সে ক্রন্দন-বর্ণনা শুনিলে কাহার না হৃদয় বিদীর্ণ হয়, কোন্‌ দেহধারী জীবের হৃদয় বিগলিত না হয়? সমবেত শ্রোতাগণ হাহাকার করিয়া কাঁদিতেছেন।

    ঠাকুর (Kathamrita) কি করিতেছেন? স্থির হইয়া শুনিতেছেন—একেবারে স্থির—একবার মাত্র চক্ষের কোণে একটি বারিবিন্দু উদ্‌গত হইল, সেইটি মুছিয়া ফেলিলেন। অস্থির হইয়া হাহাকার করিলেন না কেন?

    শেষে বিশ্বামিত্রের আগমন, রোহিতাশ্বের জীবনদান, সকলে ৺বিশ্বেশ্বর-দর্শন ও হরিশ্চন্দ্রের পুনরায় রাজ্যপ্রাপ্তি বর্ণনা করিয়া, কথকঠাকুর কথা সাঙ্গ করিলেন। ঠাকুর বেদীর সম্মুখে বসিয়া অনেকক্ষণ হরিকথা শ্রবণ করিলেন। কথা সাঙ্গ হইলে তিনি বাহিরের ঘরে গিয়া বসিলেন। চতুর্দিকে ভক্তমণ্ডলী, কথকঠাকুরও (Ramakrishna) কাছে আসিয়া বসিলেন। ঠাকুর কথককে বলিতেছেন, “কিছু উদ্ধব-সংবাদ বল।”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

LinkedIn
Share