Category: পরম্পরা

Get updated History and Heritage and Culture and Religion related news from the Madhyom news portal madhyom.com, West Bengal leading news portal Madhyom.com

  • Ramakrishna 405: শ্রী রামকৃষ্ণ তারকের প্রতি, সাধু — সাবধান! কামিনী কাঞ্চন থেকে সাবধান

    Ramakrishna 405: শ্রী রামকৃষ্ণ তারকের প্রতি, সাধু — সাবধান! কামিনী কাঞ্চন থেকে সাবধান

    তারক বিবাহ করিয়াছেন। বাপ-মা ঠাকুরের কাছে আসিতে দেন না। কলকাতায় বউবাজারের কাছে বাসা আছে — সেখানেই আজকাল প্রায় থাকেন। তারককে ঠাকুর বড় ভালবাসেন। সঙ্গে ছোকরাটি একটু তমোগুণী; ধর্ম বিষয়ক, ঠাকুরের সম্বন্ধে একটু ব্যঙ্গ ভাব। তারকের বয়স আন্দাজ বিংশতি বৎসর। কারও কাছে ঠাকুরকে ভূমিষ্ঠ হইয়া প্রণাম করিলেন।

    শ্রী রামকৃষ্ণ তারকের বন্ধুর প্রতি —
    “একবার দেবালয়ে সব দেখে এসো না।”

    বন্ধু:
    “ও, সব দেখা আছে।”

    শ্রী রামকৃষ্ণ:
    “এনিই হেডমাস্টার?”

    বন্ধু:
    “ও।”

    ঠাকুর তারককে কুশল প্রশ্ন করিতেছেন, আর তাহাকে সম্বোধন করিয়া অনেক কথা কইতেছেন। তারক অনেক কথাবার্তার পর বিদায় গ্রহণ করিতে উদ্বুদ্ধ হইলেন। ঠাকুর তাহাকে নানা বিষয়ে সাবধান করিয়ে দিতেছেন।

    শ্রী রামকৃষ্ণ তারকের প্রতি: “সাধু — সাবধান! কামিনী কাঞ্চন থেকে সাবধান। মেয়ে-মানুষের মায়াতে একবার ডুবলে আর উঠবার জোর নাই। বিষালক্ষীর দোয়ায় যে একবার পড়েছে, সে আর উঠতে পারে না। আর এখানে এক-একবার আসবি।”

    তারক:
    “বাড়িতে আসতে দেয় না।”

    একজন ভক্ত:
    “যদি কারুর মা বলেন, ‘তুই দক্ষিণেশ্বরে যাস না’, যদি দিব্যি দেন, আর বলেন — ‘যদি যাস, তো আমার রক্ত খাবি!”

    শ্রী রামকৃষ্ণ বলেন — যে ‘মা’ ও কথা বলে, সে মা নয়; সে অবিদ্যারূপিণী। সেই মায়ের কথা না শুনলে কোনো দোষ নেই, কারণ সে মা ঈশ্বরলাভের পথে বাধা দেয়। ঈশ্বরের জন্য গুরুজনের বাক্য লঙ্ঘনে দোষ নেই। ভরত রামের জন্য কৈকেয়ীর কথা শোনেনি, গোপীরা কৃষ্ণ দর্শনের জন্য স্বামীদের মানা শোনেনি, প্রহ্লাদ ঈশ্বরের জন্য পিতার কথা মানেনি, বলি ভগবানের প্রীতির জন্য গুরু শুক্রাচার্যের কথা মানেনি, বিভীষণ রামকে পাওয়ার জন্য রাবণের কথা শোনেনি।

  • Ramakrishna 404: ঠাকুর ছোট খাটটিতে বসিয়া আছেন, ঘরে প্রদীপ জ্বলিতেছে

    Ramakrishna 404: ঠাকুর ছোট খাটটিতে বসিয়া আছেন, ঘরে প্রদীপ জ্বলিতেছে

    এই বলে মাস্টারের হাত ধরে তাঁর উপর ভর করে কালীঘরের সম্মুখ চাতালে উপস্থিত হলেন এবং সেখানে বসে পড়লেন। বসার পূর্বে বললেন, — “তুমি বরং ওকে ডেকে দাও।”

    মাস্টার বাবুরামকে (পরবর্তীকালে স্বামী প্রেমানন্দ) ডেকে পাঠালেন।

    ঠাকুর মা কালী দর্শন করে বৃহৎ উঠোনের মধ্যে দিয়ে নিজের ঘরে ফিরে আসছেন। মুখে উচ্চারিত হচ্ছে— — “মা… মা… রাজরাজেশ্বরী…”

    ঘরে এসে আবার ছোট খাটে বসে পড়লেন। ঠাকুরের এক অদ্ভুত অবস্থা দেখা যাচ্ছে। কোনও ধাতুর বস্তুতে তিনি হাত দিতে পারছেন না। বলেছিলেন, — “মা বুঝি ঐশ্বর্যের ব্যাপারটি মন থেকে একেবারে তুলে দিচ্ছেন। এখন কলাপাতায় আহার করি, মাটির ভাড়ে জল খাই। গাড়ু (পিতলের পাত্র) ছুঁতে পারি না। তাই ভক্তদের বলেছি মাটির ভাড়া নিয়ে আসতে। গাড়ু বা ধাতুর থালায় হাত দিলে ঝনঝন শব্দ হয়, যেন শিঙি মাছের কাঁটা বিঁধছে হাতের মধ্যে।”

    প্রসন্ন কয়েকটি ভাঁড় নিয়েছিলেন। ঠাকুর হাসিয়া বলিতেছেন, “ভাঁড়গুলি বড়-ছোট! কিন্তু ছেলেটি বেশ, আমি বলাতে আমার সামনে ন্যাংটো হয়ে দাঁড়ালো — কী ছেলে মানুষ!”

    ভক্ত ও, কামিনী-সাধু — সাবধান!

    বেলঘরের তারক একজন বন্ধুর সঙ্গে উপস্থিত হইলেন। ঠাকুর ছোট খাটটিতে বসিয়া আছেন, ঘরে প্রদীপ জ্বলিতেছে। মাস্টারও দুই-একটি ভক্তও বসিয়া আছেন।

    তারক বিবাহ করিয়াছেন। বাপ-মা ঠাকুরের কাছে আসিতে দেন না। কলকাতায় বউবাজারের কাছে বাসা আছে — সেখানেই আজকাল প্রায় থাকেন। তারককে ঠাকুর বড় ভালবাসেন। সঙ্গে ছোকরাটি একটু তমোগুণী; ধর্ম বিষয়ক, ঠাকুরের সম্বন্ধে একটু ব্যঙ্গ ভাব। তারকের বয়স আন্দাজ বিংশতি বৎসর। কারও কাছে ঠাকুরকে ভূমিষ্ঠ হইয়া প্রণাম করিলেন।

    শ্রী রামকৃষ্ণ তারকের বন্ধুর প্রতি —
    “একবার দেবালয়ে সব দেখে এসো না।”

    বন্ধু:
    “ও, সব দেখা আছে।”

    শ্রী রামকৃষ্ণ:
    “এনিই হেডমাস্টার?”

    বন্ধু:
    “ও।”

  • Ramakrishna 403: শ্রীরামকৃষ্ণের অদ্ভুত সন্ন্যাসের অবস্থা-তারক সংবাদ

    Ramakrishna 403: শ্রীরামকৃষ্ণের অদ্ভুত সন্ন্যাসের অবস্থা-তারক সংবাদ

    মোহিনী বললেন: “এখানে এলেই একটু শান্ত হন। ওখানে মাঝে মাঝে খুব হাঙ্গামা করেন। সেদিন তো মরতে গিয়েছিলেন!”

    ঠাকুর কিছুক্ষণ নীরবে চিন্তায় ডুবে রইলেন।

    মোহিনী বিনীতভাবে বললেন:

    “আপনার দু-একটা কথা বলে দিতে হবে।”

    শ্রীরামকৃষ্ণ বললেন:

    “রাঁধতে দিও না। ওতে মাথা আরও গরম হয়ে যায়। আর লোকজনের সঙ্গে রাখো—তাতে উপকার হবে।”

    শ্রীরামকৃষ্ণের অদ্ভুত সন্ন্যাসের অবস্থা-তারক সংবাদ

    সন্ধ্যা হয়েছে। ঠাকুরবাড়িতে আরতির প্রস্তুতি চলছে। শ্রীরামকৃষ্ণের ঘরে আলো জ্বালানো হয়েছে। ঠাকুর একটি ছোট খাটে বসে জগতমাতাকে প্রণাম করে কোমল সুরে তাঁর নাম জপ করছেন। ঘরে আর কেউ নেই, কেবল মাস্টার (মহেন্দ্রনাথ গুপ্ত) বসে আছেন।

    ঠাকুর উঠে দাঁড়ালেন, মাস্টারও দাঁড়ালেন। ঠাকুর ঘরের পশ্চিম ও উত্তর দিকের দরজাগুলির দিকে ইঙ্গিত করে বললেন — “ওগুলো বন্ধ করো।”

    মাস্টার দরজাগুলি বন্ধ করে বারান্দায় এসে ঠাকুরের কাছে দাঁড়ালেন।

    ঠাকুর বললেন, “একবার কালীঘরে যাব।”

    এই বলে মাস্টারের হাত ধরে তাঁর উপর ভর করে কালীঘরের সম্মুখ চাতালে উপস্থিত হলেন এবং সেখানে বসে পড়লেন। বসার পূর্বে বললেন,
    — “তুমি বরং ওকে ডেকে দাও।”

    মাস্টার বাবুরামকে (পরবর্তীকালে স্বামী প্রেমানন্দ) ডেকে পাঠালেন।

    ঠাকুর মা কালী দর্শন করে বৃহৎ উঠোনের মধ্যে দিয়ে নিজের ঘরে ফিরে আসছেন। মুখে উচ্চারিত হচ্ছে—
    — “মা… মা… রাজরাজেশ্বরী…”

    ঘরে এসে আবার ছোট খাটে বসে পড়লেন। ঠাকুরের এক অদ্ভুত অবস্থা দেখা যাচ্ছে। কোনও ধাতুর বস্তুতে তিনি হাত দিতে পারছেন না। বলেছিলেন,
    — “মা বুঝি ঐশ্বর্যের ব্যাপারটি মন থেকে একেবারে তুলে দিচ্ছেন। এখন কলাপাতায় আহার করি, মাটির ভাড়ে জল খাই। গাড়ু (পিতলের পাত্র) ছুঁতে পারি না। তাই ভক্তদের বলেছি মাটির ভাড়া নিয়ে আসতে। গাড়ু বা ধাতুর থালায় হাত দিলে ঝনঝন শব্দ হয়, যেন শিঙি মাছের কাঁটা বিঁধছে হাতের মধ্যে।”

  • Ramakrishna 402: ঠাকুর উত্তর-পূর্ব কোণের লম্বা বারান্দায় দাঁড়িয়ে একান্তে ছোট নরেনকে নানা উপদেশ দিচ্ছেন

    Ramakrishna 402: ঠাকুর উত্তর-পূর্ব কোণের লম্বা বারান্দায় দাঁড়িয়ে একান্তে ছোট নরেনকে নানা উপদেশ দিচ্ছেন

    শ্রীরামকৃষ্ণ: “কেন, মহিম তো ভক্তির কথাও কয়। সে তো ওইটা খুব বলে।”

    মাস্টার: “সব শেষে আপনি বলেন, তাই বলি।”

    শ্রীযুক্ত গিরিশ ঘোষ আজকাল ঠাকুরের কাছে নতুন করে যাতায়াত শুরু করেছেন। তিনি সর্বদা ঠাকুরের কথায় নিমগ্ন থাকেন।

    হরি- গিরিশ ঘোষ আজকাল নানা কিছু দেখেন। এখানে এসে সর্বদা ঈশ্বরের ভাবেই থাকেন। কত কিছুই না দেখেন!

    শ্রীরামকৃষ্ণ- “তা হতেই পারে। গঙ্গার ধারে গেলে অনেক কিছুই তো দেখা যায়—নৌকা, জাহাজ, কত কিছু!”

    হরি গিরিশ ঘোষ বলেন “এবার শুধু কর্ম নিয়েই থাকবো। সকালে ঘড়ি দেখে দোয়াত-কলম নিয়ে বসে যাবো, আর সারা দিন বই লেখা করবো—এই ভাবনা করেছি। কিন্তু সেটা আর হয়ে ওঠে না। আমরা গেলেই কেবল এখানকার (দক্ষিণেশ্বরের) কথা শুনতে হয়।”

    আপনি নরেন্দ্রকে পাঠাতে বলেছিলেন।

    গিরিশবাবু বললেন, “নরেন্দ্রকে আমি গাড়ি করে পৌঁছে দেব।”

    ঘড়িতে তখন পাঁচটা বাজে।

    ছোট নরেন বাড়ি যাচ্ছেন।

    ঠাকুর উত্তর-পূর্ব কোণের লম্বা বারান্দায় দাঁড়িয়ে একান্তে তাঁকে নানা উপদেশ দিচ্ছেন। পরে নরেন প্রণাম করে বিদায় নিলেন। অন্যান্য ভক্তরাও বিদায় নিচ্ছেন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ ছোট খাটে বসে মোহিনীর সঙ্গে কথা বলছেন। মোহিনীর পরিবারটি পুত্রশোকে প্রায় পাগলের মতো হয়ে গেছে—কখনও হাসেন, কখনও কাঁদেন। দক্ষিণেশ্বরে এসে ঠাকুরের কাছে কিছুটা শান্ত ভাব হয়।

    শ্রীরামকৃষ্ণ জিজ্ঞেস করলেন:

    “তোমার পরিবার এখন কেমন আছে?”

    মোহিনী বললেন:
    “এখানে এলেই একটু শান্ত হন। ওখানে মাঝে মাঝে খুব হাঙ্গামা করেন। সেদিন তো মরতে গিয়েছিলেন!”

    ঠাকুর কিছুক্ষণ নীরবে চিন্তায় ডুবে রইলেন।

    মোহিনী বিনীতভাবে বললেন:

    “আপনার দু-একটা কথা বলে দিতে হবে।”

    শ্রীরামকৃষ্ণ বললেন:

    “রাঁধতে দিও না। ওতে মাথা আরও গরম হয়ে যায়। আর লোকজনের সঙ্গে রাখো—তাতে উপকার হবে।”

  • Ramakrishna 401: কাঁকুড় ক্ষেত্রে যদি অনেক কাঁকুড় হয়ে থাকে, তাহলে মালিক দু-তিনটা বিলিয়ে দিতে পারেন

    Ramakrishna 401: কাঁকুড় ক্ষেত্রে যদি অনেক কাঁকুড় হয়ে থাকে, তাহলে মালিক দু-তিনটা বিলিয়ে দিতে পারেন

    শ্রীরামকৃষ্ণ সহাস্যে: “একটা কোলা ব্যাঙ হেলে সাপের পাল্লায় পড়েছিল। সাপ ওটাকে গিলতেও পারছে না, ছাড়তেও পারছে না। আর কোলা ব্যাঙটা যন্ত্রণায় ক্রমাগত ডাকছে। ঢোঁড়া সাপটারও যন্ত্রণা। কিন্তু গোখরো সাপের পাল্লায় যদি পড়ত, তাহলে দু’এক ডাকেই শান্তি হয়ে যেত।”

    — সকলের হাস্য।

    ছোকরা ভক্তদের প্রতি:

    “তোরা ‘ত্রৈলোক’-এর সেই বইখানা পড়িস—ভক্তি-চৈতন্যচন্দ্রিকা। তার কাছ থেকে একখানা চেয়ে নিস। বেশ চৈতন্যদেবের কথা আছে।”

    একজন ভক্ত: তিনি দেবেন কি

    শ্রীরামকৃষ্ণ (সহাস্যে): “কেন, কাঁকুড় ক্ষেত্রে যদি অনেক কাঁকুড় হয়ে থাকে, তাহলে মালিক দু-তিনটা বিলিয়ে দিতে পারেন, সকলের হাস্য। ওমনি কি দেবেন না? কী বলিস?”

    শ্রীরামকৃষ্ণ (পল্টুর প্রতি): “আসবি, এখানে একবার পল্টু সুবিধা হলে আসিস। আমি কলকাতায় যেখানে যাব, তুই যাবি?”

    পল্টু: “যাবো, চেষ্টা করব।”

    শ্রীরামকৃষ্ণ: “ওই তো পাটোয়াড়ি! চেষ্টা করব না বললে যে মিছে কথা হবে।”

    (ঠাকুর তখন হরিপদের সঙ্গে কথা বলছেন)

    শ্রীরামকৃষ্ণ (হরিপদের প্রতি): “মহেন্দ্র এমুখো কেন আসে না?”

    হরিপদ: “ঠিক বলতে পারি না।”

    শ্রীরামকৃষ্ণ: “মাস্টার আসছে, তিনি জ্ঞানযোগ করছেন।”

    হরিপদ: “না, সেদিন প্রহ্ল্লাদ চরিত্র দেখাবে বলে গাড়ি পাঠিয়ে দেবে বলছিল, কিন্তু দেয় নাই। বোধ হয় এইজন্য আসে না।”

    মাস্টার: “একদিন মহিম চক্রবর্তীর সঙ্গে দেখা ও আলাপ হয়েছিল। সেইখানে যাওয়া-আসা করেন বলেই বোধ হয়।”

    শ্রীরামকৃষ্ণ: “কেন, মহিম তো ভক্তির কথাও কয়। সে তো ওইটা খুব বলে।”

    মাস্টার: “সব শেষে আপনি বলেন, তাই বলি।”

    শ্রীযুক্ত গিরিশ ঘোষ আজকাল ঠাকুরের কাছে নতুন করে যাতায়াত শুরু করেছেন। তিনি সর্বদা ঠাকুরের কথায় নিমগ্ন থাকেন।

  • Rath Yatra 2025: আজ উল্টোরথ, তিনদিন মন্দিরে প্রবেশ করবেন না প্রভু জগন্নাথ! জানুন বিশেষ রীতি

    Rath Yatra 2025: আজ উল্টোরথ, তিনদিন মন্দিরে প্রবেশ করবেন না প্রভু জগন্নাথ! জানুন বিশেষ রীতি

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আজ, শনিবার ৫ জুলাই, উল্টো রথের (Rath Yatra 2025) পুণ্য তিথি। আট দিন পর মাসির বাড়ি গুন্ডিচা মন্দির থেকে এবার ফেরার পালা (Lord Jagannath Homecoming) প্রভুর। আষাঢ় মাসের দশমী তিথিতে শ্রীক্ষেত্র জগন্নাথ ধামে ফিরে আসবেন জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রা। গত ২৭ জুন তিন দেবদেবী মাসির বাড়ির উদ্দেশে যাত্রা করেছিলেন। আট দিন সেখানে কাটিয়ে আজ গুণ্ডিচা থেকে জগন্নাথধামের (Jagannath Dham) পথে তিন দেবদেবী। সেদিন ছিল রথযাত্রা। আজকের গন্তব্য ঠিক উল্টো। তাই ফেরাকে বলা হয় উল্টো রথযাত্রা। আজকের এই ফিরতি যাত্রার মধ্য দিয়েই সম্পন্ন হবে বার্ষিক রথযাত্রা উৎসব (Rath Yatra 2025)। তবে, সারা বিশ্ব এটিকে উল্টো রথ হিসেবে জানলেও, আসলে এর নাম ‘বহুদা যাত্রা’ (Bahuda Yatra)। মন্দিরের সামনে এসেও তিনদিন ঠাঁয় দাঁড়িয়ে থাকবেন জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রা। কিন্তু কেন? কেন তিনদিন নিজ গৃহে প্রবেশের জন্য অপেক্ষা করতে হবে প্রভুকে। এই তিনদিন কোথায় থাকবেন তাঁরা?

    তিন দিন প্রভুর অপেক্ষা

    কথিত আছে, মাসির বাড়ি থেকে ফিরে সহজে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা মূল মন্দিরে (Jagannath Temple) প্রবেশের অনুমতি পান না। কারণ তাঁরা দেবীর লক্ষ্মীকে শ্রী মন্দিরে একা রেখেই মাসির বাড়িতে (Rath Yatra 2025) গিয়েছিলেন এবং আনন্দে মেতে ছিলেন। তাই অভিমানী দেবী সটান মুখের উপর দরজা বন্ধ করে দেন। সেই থেকে টানা তিন দিন দরজার সামনেই অপেক্ষা করতে হয় তাঁদের। আর এই দিনগুলিতে হয় নানান ধরনের উৎসব।

    তিনদিন মহোৎসব (Bahuda Yatra)

    রীতি অনুযায়ী, মন্দিরের সামনে তিনদিন মহোৎসব পালন করা হয়। উল্টো রথের (Rath Yatra 2025) পরের দিন অর্থাৎ একাদশীতে ‘সুনা বেশে’ পুজো করা হয়। অর্থাৎ, সোনা দিয়ে সাজানো হয় তিন দেব-দেবীকে। তিন দেব-দেবী সোনার বেশভূষায় সজ্জিত হন রথেই। স্বর্ণালংকার পরিয়ে তাঁদের আরাধনা হয়। দ্বিতীয় দিন, দ্বাদশীতে পালন করা হয় ‘অধরপনা’ উৎসব। এই রীতি অনুযায়ী দ্বাদশীর দিন সন্ধ্যাবেলায় জগন্নাথ দেবকে সরবত খাওয়ানো হয়। তৃতীয় দিন হয় রসগোল্লা উৎসব বা ‘নীলাদ্রি ভেজ’। ত্রয়োদশীর দিন পালন করা হয় এই উৎসব। জগন্নাথ দেবকে কয়েকশো হাঁড়ি রসগোল্লা ও ৫৬ ভোগ নিবেদন করা হয়। এই উৎসবের মধ্যে দিয়ে শেষ হয় তিন দিনের সাজা। তৃতীয় দিনই মূলরত্ন বেদীতে তোলা হয় জগন্নাথ, বলরাম সুভদ্রাকে।

    ‘বহুদা যাত্রা’র মাহাত্ম্য

    পুরীর জগন্নাথ ধামের রথযাত্রা (Rath Yatra 2025) জগদ্বিখ্যাত। বলা বাহুল্য, রথযাত্রার মতো উল্টো রথেও সেখানে প্রচুর ভক্ত সমাগম হয়। পুরীর এই উৎসবের অনেক মাহাত্ম্যও রয়েছে। সুভদ্রার (দর্পদলন) রথটি মাঝখানে, তার পরে পশ্চিমে বলভদ্রের (তালধ্বজ) রথ এবং সবশেষে পূর্বে জগন্নাথের (নন্দীঘোষ) রথ। অর্থাৎ, মাঝখানে সুভদ্রা, ডানে জগন্নাথ এবং বামদিকে বলভদ্র। উল্টো রথযাত্রার (Bahuda Yatra) সময় প্রভু জগন্নাথ, বলভদ্র এবং সুভদ্রার রথগুলি মৌসিমা মন্দিরে থামে। ভগবান জগন্নাথের মাসিকে উৎসর্গ করা মৌসিমা মন্দিরে তিন দেবতাকে ‘পোদা পিঠা’ পরিবেশন করা হয়, যা ভাত, নারকেল, মসুর এবং গুড় সমন্বিত একটি অনন্য সুস্বাদু খাবার। এর পরে, জগন্নাথের রথ গজপতির প্রাসাদের সামনে লক্ষীনারায়ণ ভেতা বা লক্ষ্মীর সমাবেশের জন্য থামে। তারপর রথ টানা হয় এবং তার চূড়ান্ত গন্তব্যে পৌঁছায়।

    পুরাণ মতে…

    কথিত রয়েছে, মহারাজ ইন্দ্রদ্যুম্নর আমলে জগন্নাথদেব, বলরাম এবং সুভদ্রার মূর্তি তৈরি হয়। সেই সময়েই রথযাত্রাও চালু হয়। আবার অনেক ইতিহাসবিদ মনে করেন, রথযাত্রার ইতিহাস আলাদা। ১০৭৮ সালে তৈরি হয়েছিল পুরীর জগন্নাথ মন্দির (Jagannath Temple) । ১১৭৪ সালে মেরামতি করানোর হয়। তার পরেই নাকি তা বর্তমান জগন্নাথ মন্দিরের চেহারা নেয়। তখন শুরু হয় রথযাত্রা। কপিলা সংহিতা, ব্রহ্ম পুরাণ, পদ্ম পুরাণ ও স্কন্দ পুরাণে রথযাত্রা সম্পর্কে পাওয়া যায় তথ্য। ব্রহ্মাণ্ডপুরাণ বলছে, রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন ছিলেন শ্রীকৃষ্ণের ভক্ত। সমুদ্রে ভেসে আসা কাঠের খণ্ড দিয়ে তিনি দেবমূর্তি নির্মাণে আদেশ পান। আরও এক সূত্র বলে, তিনি বিষ্ণু মন্দির গড়ার স্বপ্নাদেশ পান। তবে এই মন্দির গড়া নিয়ে ছিল না ধারণা। আদেশ ছিল মূর্তি গড়ার সময়ে কেউ প্রবেশ করতে পারবেন না মন্দিরে। মূর্তি গড়ছিলেন স্বয়ং বিশ্বকর্মা।

  • Ramakrishna 400: আর বলছিলাম, মা যেন একবার ছুঁয়ে দেন, তাহলে লোকের চৈতন্য হয়

    Ramakrishna 400: আর বলছিলাম, মা যেন একবার ছুঁয়ে দেন, তাহলে লোকের চৈতন্য হয়

    শ্রী রামকৃষ্ণ মাস্টারের প্রতি— “এখানে অপর লোক কেউ নাই। সেদিন হরিশ কাছে ছিল। দেখলাম খোলটি ছেড়ে সচিদানন্দ বাহিরে এলো, এসে বললে ‘আমি যুগে যুগে অবতার।’ তখন ভাবলাম বুঝি মনের খেয়ালে ওইসব কথা বলছি। তারপর চুপ করে থেকে দেখলাম— তখন দেখি আপনি বলছেন, ‘শক্তির আরাধনা চৈতন্য করেছিল।’”

    ভক্তেরা সকলে অবাক হইয়া শুনিতে চান। কেউ কেউ ভাবিতে চান— সচিদানন্দ ভগবান কি শ্রী রামকৃষ্ণের রূপ ধারণ করিয়া আমাদের কাছে বসিয়া আছেন? ভগবান কি আবার অবতীর্ণ হইয়াছেন?

    শ্রী রামকৃষ্ণ কথা কহিতেছেন, মাস্টারকে সম্বোধন করিয়া আবার বলিতেছেন, “দেখলাম পূর্ণ আবির্ভাব, তবে সত্য, গুণের ঐশ্বর্য।”

    ভক্তেরা সকলে অবাক হয়ে এই সকল কথা শুনিতেছেন।

    যোগমায়া, আদ্যাশক্তি ও অবতারলীলা

    শ্রী রামকৃষ্ণ ‘মাস্টার’-এর প্রতি- “এখন মাকে বলছিলাম, আর বকতে পারি না। আর বলছিলাম, মা যেন একবার ছুঁয়ে দেন, তাহলে লোকের চৈতন্য হয়।
    যোগমায়ার এমনই মহিমা। তিনি ভেলকি লাগিয়ে দিতে পারেন। বৃন্দাবনলীলা—যোগমায়া ভেলকি লাগিয়ে দিলেন। তারই বলে সুবল, কৃষ্ণের সঙ্গে শ্রীমতির মিলন ঘটিয়ে দিচ্ছিলেন।

    যোগমায়া, যিনি আদ্যাশক্তি, তাঁর একটি আকর্ষণশক্তি আছে। আমি সেই শক্তিরই আরোপ করেছিলাম।”

    — “আচ্ছা, যারা আসে, তাদের কিছু কিছু হচ্ছে।”

    মাস্টার: “আজ্ঞে, হ্যাঁ হচ্ছে বৈকি।”

    শ্রীরামকৃষ্ণ: “কেমন করে জানলে?”

    মাস্টার সহাস্যে: “সবাই বলে—তার কাছে যারা যায়, তারা আর ফেরে না।”

    শ্রীরামকৃষ্ণ সহাস্যে:
    “একটা কোলা ব্যাঙ হেলে সাপের পাল্লায় পড়েছিল। সাপ ওটাকে গিলতেও পারছে না, ছাড়তেও পারছে না। আর কোলা ব্যাঙটা যন্ত্রণায় ক্রমাগত ডাকছে। ঢোঁড়া সাপটারও যন্ত্রণা। কিন্তু গোখরো সাপের পাল্লায় যদি পড়ত, তাহলে দু’এক ডাকেই শান্তি হয়ে যেত।”

    — সকলের হাস্য।

    ছোকরা ভক্তদের প্রতি:

    “তোরা ‘ত্রৈলোক’-এর সেই বইখানা পড়িস—ভক্তি-চৈতন্যচন্দ্রিকা।
    তার কাছ থেকে একখানা চেয়ে নিস। বেশ চৈতন্যদেবের কথা আছে।”

  • Ramakrishna 399: নিজের হৃদয়ে হাত রাখিয়া রামকৃষ্ণ বলিলেন, “এর ভিতর যদি কিছু থাকে, অজ্ঞান ও অবিদ্যা একেবারে চলে যায়

    Ramakrishna 399: নিজের হৃদয়ে হাত রাখিয়া রামকৃষ্ণ বলিলেন, “এর ভিতর যদি কিছু থাকে, অজ্ঞান ও অবিদ্যা একেবারে চলে যায়

    কাঁচা সুপারি বা কাঁচা বাদামের ভিতরের সুপারি বা বাদাম শাঁস থেকে তফাৎ করা যায় না। কিন্তু পাকা অবস্থায় সুপারি বা বাদাম আলাদা, শাঁস আলাদা হয়ে যায়। পাকা অবস্থায় রস শুকিয়ে যায়—ব্রহ্মজ্ঞান হলে বিষয় শুকিয়ে যায়।

    কিন্তু সে জ্ঞান বড় কঠিন—বললেই ব্রহ্মজ্ঞান হয় না। কেউ জ্ঞানের ভান করে, একজন বড় মিথ্যা কথা কইতো—আবার এদিকে বলতো, “আমার ব্রহ্মজ্ঞান হয়েছে।”

    কোন লোক তাকে তিরস্কার করাতে এসে বললে, “কেন, জগত তো স্বপ্নবৎ। সবই যদি মিথ্যা হয়, তবে সত্য কথাটাই কি ঠিক? মিথ্যাটাও মিথ্যা, সত্যটাও মিথ্যা!”

    শ্রী রামকৃষ্ণ ভক্তদের সঙ্গে মেঝেতে মাদুরের উপর বসিয়া আছেন। ভক্তদের বলিতেছেন, “আমার পায়ে একটু হাত বুলিয়ে দে তো।” ভক্তেরা পদসেবা করিতেছেন।
    মাস্টারের প্রতি সহাস্যে, “এই পদসেবার অনেক মানে আছে।”

    আবার নিজের হৃদয়ে হাত রাখিয়া বলিতেছেন, “এর ভিতর যদি কিছু থাকে, অজ্ঞান ও বিদ্যা একেবারে চলে যায়।”
    হঠাৎ শ্রী রামকৃষ্ণ গম্ভীর হইলেন, যেন কী গূঢ় কথা বলিবেন।

    শ্রী রামকৃষ্ণ মাস্টারের প্রতি—
    “এখানে অপর লোক কেউ নাই। সেদিন হরিশ কাছে ছিল। দেখলাম খোলটি ছেড়ে সচিদানন্দ বাহিরে এলো, এসে বললে ‘আমি যুগে যুগে অবতার।’
    তখন ভাবলাম বুঝি মনের খেয়ালে ওইসব কথা বলছি।
    তারপর চুপ করে থেকে দেখলাম— তখন দেখি আপনি বলছেন, ‘শক্তির আরাধনা চৈতন্য করেছিল।’”

    ভক্তেরা সকলে অবাক হইয়া শুনিতে চান। কেউ কেউ ভাবিতে চান— সচিদানন্দ ভগবান কি শ্রী রামকৃষ্ণের রূপ ধারণ করিয়া আমাদের কাছে বসিয়া আছেন? ভগবান কি আবার অবতীর্ণ হইয়াছেন?

    শ্রী রামকৃষ্ণ কথা কহিতেছেন, মাস্টারকে সম্বোধন করিয়া আবার বলিতেছেন, “দেখলাম পূর্ণ আবির্ভাব, তবে সত্য, গুণের ঐশ্বর্য।”

    ভক্তরা সকলে অবাক হইয়া এই সকল কথা শুনিতেছেন।

  • Ramakrishna 398: আত্মাটি যেন ভিতরে নড়নড় করে, তেমনি এই বিষয়বুদ্ধির জল শুকিয়ে গেলে আত্মজ্ঞান হয়

    Ramakrishna 398: আত্মাটি যেন ভিতরে নড়নড় করে, তেমনি এই বিষয়বুদ্ধির জল শুকিয়ে গেলে আত্মজ্ঞান হয়

    তখন ব্যাসদেব যমুনাকে সম্মোধন করিয়া বলিলেন— “যমুনা, আমি যদি কিছু না খেয়ে থাকি, তাহলে তোমার জল দুই ভাগ হয়ে যাক, আর মাঝখানে রাস্তা হোক, আমরা যেন পার হতে পারি।”

    ঠিক তেমনি হলো— যমুনার জল দুই ভাগ হয়ে গেল, মাঝখানে ওপারে যাবার পথ হলো। সেই পথ দিয়েই ব্যাসদেব ও গোপীরা সকলে পার হয়ে গেলেন।

    আমি খাই নাই—তার মানে এই যে, আমি সেই শুদ্ধাত্মা, শুদ্ধার্থ, নির্লিপ্ত প্রকৃতির পাঠ; তার ক্ষুধা-তৃষ্ণা নেই, জন্ম-মৃত্যু নাই, অজর-অমর, সুমেরুবৎ।

    যার এই ব্রহ্মজ্ঞান হয়েছে, সে জীবনমুক্ত। সে ঠিক বুঝতে পারে যে আত্মা আলাদা আর দেহ আলাদা। ভগবানকে দর্শন করলে দেখার তো বুদ্ধিই আর থাকে না। দুটি আলাদা—যেমন নারকেলের জল শুকিয়ে গেলে শাঁস আলাদা আর খোল আলাদা হয়ে যায়। আত্মাটি যেন ভিতরে নড়নড় করে, তেমনি এই বিষয়বুদ্ধির জল শুকিয়ে গেলে আত্মজ্ঞান হয়; আত্মা আলাদা আর দেহ আলাদা বোধ হয়।

    কাঁচা সুপারি বা কাঁচা বাদামের ভিতরের সুপারি বা বাদাম শাঁস থেকে তফাৎ করা যায় না। কিন্তু পাকা অবস্থায় সুপারি বা বাদাম আলাদা, শাঁস আলাদা হয়ে যায়। পাকা অবস্থায় রস শুকিয়ে যায়—ব্রহ্মজ্ঞান হলে বিষয় শুকিয়ে যায়।

    কিন্তু সে জ্ঞান বড় কঠিন—বললেই ব্রহ্মজ্ঞান হয় না। কেউ জ্ঞানের ভান করে, একজন বড় মিথ্যা কথা কইতো—আবার এদিকে বলতো, “আমার ব্রহ্মজ্ঞান হয়েছে।”

    কোন লোক তাকে তিরস্কার করাতে এসে বললে, “কেন, জগত তো স্বপ্নবৎ। সবই যদি মিথ্যা হয়, তবে সত্য কথাটাই কি ঠিক? মিথ্যাটাও মিথ্যা, সত্যটাও মিথ্যা!”

    আত্মাটি যেন ভিতরে নড়নড় করে, তেমনি এই বিষয়বুদ্ধির জল শুকিয়ে গেলে আত্মজ্ঞান হয়

  • Ramakrishna 397: জ্ঞান সদর মহল পর্যন্ত যেতে পারে, কিন্তু ভক্তি অন্দর মহলে যায়

    Ramakrishna 397: জ্ঞান সদর মহল পর্যন্ত যেতে পারে, কিন্তু ভক্তি অন্দর মহলে যায়

    (এই বলিয়া তাহার দিকে একদৃষ্টে সর্বদা তাকাইয়া রহিলেন, যেন তাহার হৃদয়ের অন্তরতম প্রদেশের সমস্ত ভাব দেখিতেছেন। মোহিনী মোহন কী ভাবিতেছিলেন—‘ঈশ্বরের জন্য সব যাওয়াই ভালো।’)

    কিয়ৎক্ষণ পরে ঠাকুর আবার বলিতেছেন—

    “ভাগবত পণ্ডিতকে একটি পাশ দিয়ে ঈশ্বর রেখে দেন—তা না হলে ভাগবত কে শুনাবে? রেখে দেন লোক শিক্ষার জন্য। মা সেইজন্য সংসারে রেখেছেন।”

    এইবার ব্রাহ্মণ যুবকটিকে সম্মোধন করিয়া বলিতেছেন—

    (জ্ঞানযোগ ও ভক্তিযোগ, ব্রহ্মজ্ঞানীর অবস্থা ও জীবন্মুক্ত)

    শ্রীরামকৃষ্ণ যুবকের প্রতি বলিতেছেন— “তুমি জ্ঞানচর্চা ছেড়ে ভক্তি নাও। ভক্তিই সার। আজ তোমার কি, তিন দিন হলো?”

    ব্রাহ্মণ যুবক হাত জোড় করে বলিল— “আজ্ঞে, হ্যাঁ।”

    শ্রীরামকৃষ্ণ বলিলেন— “বিশ্বাস করো, নির্ভর করো। তাহলেই নিজের কিছু করতে হবে না—মা কালী সব করবেন।

    জ্ঞান সদর মহল পর্যন্ত যেতে পারে, কিন্তু ভক্তি অন্দরমহলে যায়।
    শ্রদ্ধাপূর্ণ, নির্লিপ্ত—বিদ্যা ও অবিদ্যা তাঁর ভেতরেই আছে। তিনি নির্লিপ্ত।
    যেমন, বায়ুতে কখনও সুগন্ধ, কখনও দুর্গন্ধ থাকে—তবু বায়ু নিজে নির্লিপ্ত।

    ব্যাসদেব যমুনা পার হচ্ছিলেন। গোপীরাও সেখানে উপস্থিত—তারাও পার হবেন।
    দধি, দুধ, ননী বিক্রি করতে যাচ্ছেন, কিন্তু নৌকা ছিল না।
    কেমন করে পার হবেন—সকলেই ভাবিতেছেন।

    এমন সময় ব্যাসদেব বলিলেন—
    “আমার বড় ক্ষুধা পেয়েছে।”

    তখন গোপীরা তাঁকে ক্ষীর, সর, ননী—সব খাওয়াতে লাগলেন।
    ব্যাসদেব প্রায় সবই খেয়ে ফেলিলেন।

    তখন ব্যাসদেব যমুনাকে সম্মোধন করিয়া বলিলেন—
    “যমুনা, আমি যদি কিছু না খেয়ে থাকি, তাহলে তোমার জল দুই ভাগ হয়ে যাক, আর মাঝখানে রাস্তা হোক, আমরা যেন পার হতে পারি।”

    ঠিক তেমনি হলো—
    যমুনার জল দুই ভাগ হয়ে গেল, মাঝখানে ওপারে যাবার পথ হলো।
    সেই পথ দিয়েই ব্যাসদেব ও গোপীরা সকলে পার হয়ে গেলেন।

LinkedIn
Share