Category: পরম্পরা

Get updated History and Heritage and Culture and Religion related news from the Madhyom news portal madhyom.com, West Bengal leading news portal Madhyom.com

  • Ramakrishna 112: “শ্রীরামকৃষ্ণ সংসারী বদ্ধজীবের কথা বলিতেছেন, তারা যেন গুটিপোকা…”

    Ramakrishna 112: “শ্রীরামকৃষ্ণ সংসারী বদ্ধজীবের কথা বলিতেছেন, তারা যেন গুটিপোকা…”

    সার্কাস রঙ্গালয়ে—গৃহস্থের ও অন্যান্য কর্মীদের কঠিন সমস্যা ও শ্রীরামকৃষ্ণ

    প্রথম পরিচ্ছেদ

    সংসারী বদ্ধজীব

    জাতিভেদ সমন্ধে কথা পড়িল। ঠাকুর (Ramakrishna) বলিলেন (Kathamrita), এক উপায়ে জাতিভেদ উঠে যেতে পারে। সে উপায়—ভক্তি। ভক্তের জাতি নাই। ভক্তি হলেই দেহ, মন, আত্মা—সব শুদ্ধ হয়। গৌর, নিতাই হরিনাম দিতে লাগলেন, আর আচণ্ডালে কোল দিলেন। ভক্তি থাকতে চণ্ডাল, চণ্ডাল নয়। অস্পৃশ্য জাতি ভক্তি থাকলে শুদ্ধ, পবিত্র হয়। অনেকগুলি ভক্ত সমবেত হইয়াছেন, তাঁহাদের সহিত ঈশ্বরীয় অনেক কথা হইতেছে। মুখে অন্য কথা কিছুই নাই, কেবল ঈশ্বরীয় কথা।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) সংসারী বদ্ধজীবের কথা বলিতেছেন (Kathamrita)। তারা যেন গুটিপোকা, মনে করলে কেটে বেরিয়ে আসতে পারে; কিন্তু অনেক যত্ন করে গুটি তৈয়ার করেছে, ছেড়ে আসতে পারে না; তাতেই মৃত্যু হয়। আবার যেন ঘুনির মধ্যে মাছ; যে-পথে ঢুকেছে, সেই পথ দিয়ে বেরিয়ে আসতে পারে, কিন্তু জলের মিষ্ট শব্দ আর অন্য অন্য মাছের সঙ্গে ক্রীড়া, তাই ভুলে থাকে, বেরিয়ে আসবার চেষ্টা করে না। ছেলেমেয়ের আধ-আধ কথাবার্তা যেন জলকল্লোলের মধুর শব্দ। মাছ অর্থাৎ জীব, পরিবারবর্গ। তবে দু-একটা দৌড়ে পালায়, তাদের বলে মুক্তজীব।

    ঠাকুর (Ramakrishna) গান গাহিতেছেন

    এমনি মহামায়ার মায়া রেখচ কি কুহক করে।

    ব্রহ্মা বিষ্ণু অচৈতন্য জীবে কি জানিতে পারে।

    বিল করে ঘুনি পাতে মীন প্রবেশ করে তাতে।

    গতায়াতের পথ আছে তবু মীন পালাতে নারে।।

     

    আরও পড়ুনঃ “গৌর, নিতাই হরিনাম দিতে লাগলেন, আর আচণ্ডালে কোল দিলেন”

    আরও পড়ুনঃ “বিবেক, বৈরাগ্যরূপ হলুদ মাখলে তারা আর তোমাকে ছোঁবে না”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “পশ্চিমে বিবাহের সময় বরের হাতে ছুরি থাকে, বাংলাদেশে জাঁতি থাকে”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Janmashtami 2024: শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমীতে ‘দহি হান্ডি’ উৎসবের আধ্যাত্মিক ও সামাজিক তাৎপর্য কী জানেন

    Janmashtami 2024: শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমীতে ‘দহি হান্ডি’ উৎসবের আধ্যাত্মিক ও সামাজিক তাৎপর্য কী জানেন

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: হিন্দু ক্যালেন্ডার অনুসারে ভাদ্র মাসে কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমীতে পালিত হয় ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী (Janmashtami 2024)। সারা ভারত জুড়ে উত্সাহের সঙ্গে পালিত হয় এই উৎসব। কৃষ্ণ হলেন ভগবান বিষ্ণুর অষ্টম অবতার। এই বছর জন্মাষ্টমী পালিত হবে সোমবার, ২৬ অগাস্ট। দহি হান্ডি উতসব পালিত হবে মঙ্গলবার, ২৭ অগাস্ট। জন্মাষ্টমীর সঙ্গে যুক্ত অনেক রীতিনীতির মধ্যে একটি হল দহি হান্ডি (Dahi Hand) উৎসব। গুজরাট, মহারাষ্ট্র সহ একাধিক রাজ্যে পালিত হয় এই উৎসব। আসুন জেনে নিই এই উৎসবের তাৎপর্য।

    কৃষ্ণের তরুণ বয়সের প্রতীক (Janmashtami 2024)

    জন্মাষ্টমীর (Janmashtami 2024) দহি হান্ডি (Dahi Hand) উৎসব হল কৃষ্ণের তরুণ বয়সের প্রতীক। হাঁড়িতে দই রেখে সেই হাঁড়ি ভাঙা। সংক্ষেপে এমন উৎসবের নামই হল দহি-হান্ডি উৎসব। এই উপলক্ষে একরকম প্রতিযোগিতাও চলে। যারা অংশ গ্রহণ করে, তারা মজার ছলে কৌতুকপূর্ণ এবং দুষ্টু প্রকৃতির ভাবনাগুলিকে ফুটিয়ে তোলে। হিন্দু পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে, কৃষ্ণ মাখন বেশ পছন্দ করতেন, প্রায়শই কৃষ্ণ গোকুলের গ্রামবাসীদের বাড়ি থেকে মাখন চুরি করতেন। মাখনের প্রতি ভালবাসা এতটাই তীব্র যে, বন্ধুদের সঙ্গে মিলে মানুষের পিরামিড তৈরি করতেন। একটি মাটির পাত্রে অর্থৎ হান্ডিতে মাখন এবং দই রেখে উঁচু থেকে ঝুলিয়ে রাখা হতো। এরপর মানুষের পিরামিড বেয়ে উঠে হান্ডি ভাঙা হয়। এই খেলা বেশ জনপ্রিয় ছিল। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যুগের পরিবর্তনে, মাখন চুরির কৌতুকপূর্ণ খেলাটি মহারাষ্ট্র, গুজরাট এবং ভারতের অন্যান্য অংশে অত্যন্ত উত্সাহের সঙ্গে পালিত হয়। এই উৎসবে হাজার হাজার কৃষ্ণভক্ত যোগদান করে থাকেন।

    দহি হান্ডির তাৎপর্য

    দহি হান্ডি (Janmashtami 2024) উদযাপনের গভীর প্রতীকী অর্থ রয়েছে। হান্ডি ভাঙার অর্থ হল মন্দের উপর ভালোর জয়কে চিহ্নিত করা। সামাজিক রীতিনীতির অনমনীয়তার উপর কৃষ্ণের ঐশ্বরিক বিজয়কে কৌতুকের সঙ্গে প্রতিধ্বনিত করা। এই উত্সবে মানুষের দলগত কাজ, ঐক্য এবং সাহসের মূল্যবোধের উপরও জোর দেওয়া হয়। কারণ যুবকদের দল, কৃষ্ণের নাম গোবিন্দ নামে পরিচিত হয়। মাটির পাত্র ভাঙার জন্য মানব পিরামিডের নির্মাণ করা হয়।

    দল এবং একতা

    শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমীতে (Janmashtami 2024) দহি হান্ডির ঐতিহ্যের মধ্যে সহযোগিতা এবং সম্মিলিত প্রচেষ্টার গুরুত্বকে বিশেষ ভাবে প্রদর্শন করা হয়। গোবিন্দরা অর্থাৎ স্থানীয় যারা যোগদান করে, তারা একত্রে কাজ করে একটি সাধারণ লক্ষ্য অর্জনের প্রচেষ্টা করে থাকে। এই সবটাই একতার মধ্যে থাকা শক্তির প্রতীক। সাহস ও অধ্যবসায় ছাড়া উঁচুতে রাখা মাটির পাত্র ভাঙা সহজ কাজ নয়। পিরামিডগুলি বেশ লম্বা হতে পারে এবং কাজটির জন্য প্রচুর শারীরিক শক্তি, ভারসাম্য এবং সংকল্পের প্রয়োজন হয়। ফলে সাহস এবং অধ্যবসার মাধ্যমে কীভাবে প্রতিবন্ধকতাকে কাটিয়ে শক্তি সঞ্চয় করা যায়, সেটাই প্রমাণ করা হয় এই খেলায়। কৃষ্ণ (Janmashtami 2024) স্বয়ং সমস্যা থেকে জয় পেতে শক্তির প্রতীক ছিলেন।

    আধ্যাত্মিক তাৎপর্য

    এই উৎসবের (Janmashtami 2024) গভীরে রয়েছে আধ্যাত্মিক উচ্চতার রূপক। হান্ডি অহংকে প্রতিনিধিত্ব করে, যা ভাঙা কঠিন। তাই ভাঙার স্তরে পৌঁছানোর জন্য গোবিন্দকে আত্ম-উপলব্ধির মধ্যে দিয়ে মানব মনকে যাত্রা করাতে হয়। আবার মাটির পাত্রের মধ্যে থাকা দই ঐশ্বরিক আনন্দের মাধুর্যকে নির্দেশ করে, যা একজন ব্যক্তি অহং-কে ভেঙে দেয়। ফলে নিজের আত্মাকে উপলব্ধি করা এবং পরিচালনার জন্য মনকে অনুভব করা প্রয়োজন।

    আধুনিক সময়ে কৃষ্ণের জন্মাষ্টমী

    সমসাময়িক সময়ে, দহি হান্ডি (Janmashtami 2024) একটি উৎসবমুখর পরিবেশে একটি প্রতিযোগিতামূলক ক্রীড়ায় পরিণত হয়েছে। অনেক রাজ্যে দহি হান্ডি প্রতিযোগিতার আয়োজন হয়ে থাকে। যেখানে গোবিন্দদের দল সর্বোচ্চ পিরামিড গঠনের জন্য প্রতিযোগিতা করে এবং বিজয় সুনিশ্চিত করে পুরস্কার অর্জন করে থাকে। প্রতিযোগিতাটি সঙ্গীত, নৃত্য এবং “গোবিন্দ আলা রে” গানের সাথে একটি প্রাণবন্ত আনন্দময় পরিবেশ তৈরি করে থাকে। ভক্তরাও দারুণ উপভোগ করে থাকেন। জন্মাষ্টমীর ধর্মীয় উৎসব এখন একটি সামাজিক মাত্রাও অর্জন করেছে। আয়োজকদের দেওয়া পুরস্কারের অর্থ প্রায়ই জনকল্যাণ প্রকল্পের জন্য ব্যবহার করা হয়। শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী এবং দহি হান্ডি প্রথা শুধু ধর্মীয় উৎসব (Dahi Hand) নয়, তার থেকেও চেয়েও বেশি পরিমাণে সামজিক উৎসবে পরিণত হয়েছে। মানুষের জীবন, আনন্দ এবং আধ্যাত্মিক জ্ঞানের প্রবহমান ধারাকে নিশ্চিত করে।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Janmashtami 2024: তালক্ষীর থেকে তালের বড়া, জন্মাষ্টমীতে গোপালকে দেওয়া হয় ৫৬ ভোগ! কেন জানেন?

    Janmashtami 2024: তালক্ষীর থেকে তালের বড়া, জন্মাষ্টমীতে গোপালকে দেওয়া হয় ৫৬ ভোগ! কেন জানেন?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: রাখি বন্ধনের ঠিক ৮ দিন পরে সারা ভারতে কৃষ্ণ জন্মাষ্টমী উত্‍সব (Janmashtami 2024) পালন করা হয়। দক্ষিণ ভারতে পালন করা হয় গোকুলাষ্টমী। ভাদ্রপদ মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে দেশজুড়ে মহাধূমধাম করে জন্মাষ্টমী পালিত হয়। দেশের প্রতিটি কৃষ্ণ মন্দির সেজে ওঠে এই দিন। ঘরে ঘরে আরাধনা করা হয় যশোদা-কা নন্দলালার। “হরে-কৃষ্ণ নাম”-এ মেতে ওঠে নবদ্বীপ থেকে মায়াপুর, মথুরা-বৃন্দাবন। লুচি, মালপোয়া, মোহনভোগ, তালের বড়া, তাল ক্ষীর সাজিয়ে শ্রী কৃষ্ণের প্রার্থনায় মেতে ওঠেন আট থেকে আশি। গোপালকে নিবেদন করা হয় মাখন, মিছরি, ননী-ক্ষীর-সহ ছাপান্ন ভোগ (Shri Krishna Chapanna Bhog)।

    জন্মাষ্টমীতে কৃষ্ণের আরাধনা

    দ্বাপর যুগে মর্ত্যে আবির্ভাব ঘটে বিষ্ণুর অষ্টম (Janmashtami 2024) অবতার শ্রী কৃষ্ণের। সনাতন ধর্মে, পাপভার থেকে পৃথিবীকে মুক্তি দিতে ও সাধু-সন্ন্যাসীদের পরিত্রাণের জন্য মর্ত্যে আর্বিভূত হয়েছিলেন শ্রীকৃষ্ণ। ভাদ্রমাসের রোহিনী নক্ষত্র অবস্থিত অষ্টমী তিথিকে শ্রীকৃষ্ণের আর্বিভাব তিথি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব তিথি জন্মাষ্টমী হিসেবে পরিচিত। এদিন ধুমধাম করে সারা দেশে কৃষ্ণ পুজো করা হয়ে থাকে। শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে রাধা, বলরাম ও সুভদ্রার পুজোও করা হয়। শ্রীকৃষ্ণের জন্ম হয়েছিল মথুরায়। তবে তিনি বেড়ে ওঠেন গোকুলে। সেজন্য মথুরা ও বৃন্দাবনে এই উত্‍সব সবচেয়ে বড় করে হয়।

    কেন ছাপান্ন ভোগ

    জন্মাষ্টমী উপলক্ষে গোপালকে ৫৬ ভোগ (Shri Krishna Chapanna Bhog) দেওয়া হয়। জন্মাষ্টমীতে (Janmashtami 2024) গোপালকে ৫৬ ভোগ অর্পণ করে তাঁর প্রসাদ গ্রহণ করা অত্যন্ত শুভ মনে করা হয়। ৫৬ ভোগে ভগবান কৃষ্ণ প্রসন্ন হন ও ভক্তদের সমস্ত মনস্কামনা পূর্ণ করেন, এমনটাই বিশ্বাস ভক্তদের। ৫৬ রকমের ভোগ অর্পণ করা হয় গোপালকে। ভাত, ডাল, লুচি থেকে তালের বড়া, ক্ষীর, মালপোয়া, লস্যি কী থাকে না! আর মাখন, মিছরি ছাড়া তো গোপালের ভোগই অসম্পূর্ণ।

    পৌরাণিক কাহিনি

    জন্মাষ্টমীর (Janmashtami 2024) দিন বালগোপালকে ৫৬ রকম পদ সাজিয়ে পরিবেশন করা হয়। হিন্দুশাস্ত্র মতে, দেব-দেবীদের পুজোর সময় সাধারণ বিজোড় সংখ্যায় নৈবেদ্য সাজানো হয়ে থাকে। কিন্তু কৃষ্ণকে দেওয়া ৫৬ ভোগ (Shri Krishna Chapanna Bhog)। পৌরাণিক কাহিনি মতে, বৃন্দাবনবাসীরা ইন্দ্রকে নানারূপে মহার্ঘ ভোগ নিবেদন করে সন্তুষ্ট রাখতেন। হিন্দুশাস্ত্র মতে, ইন্দ্র হলেন বৃষ্টি ও ব্রজের দেবতা। তাঁর আশীর্বাদেই সঠিক সময়ে পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত বর্ষণ হয়। তাই চাষীরা ইন্দ্রদেবকে তুষ্ট করতে দামি ও প্রচুর ভোগ রান্না করে নিবেদন করতেন। কিন্তু, গরিব চাষীদের পক্ষে দামি ভোগ নিবেদন করা দুঃসাধ্য হয়ে ওঠে। চাষীদের কষ্ট দূর করতে এগিয়ে আসেন শ্রীকৃষ্ণ। এভাবে ভোগ নিবেদন না করে ইন্দ্রকে নিজের ভোগ অবস্থা বুঝে নিবেদন করার পরামর্শ গরিব চাষীদের দেন কৃষ্ণ। তাঁর কথা শুনে চাষীরা সেই কাজই করেন। এদিকে, ভোগের সামগ্রীতে ঘাটতি দেখে ইন্দ্র অত্যন্ত রেগে যান। তাঁর ক্রোধে প্রচণ্ড বৃষ্টি ও বজ্রপাত হতে থাকে। ক্রোধের কারণে বৃন্দাবনে হতে থাকে মেঘভাঙা বৃষ্টি। তারপর থেকেই মানুষের জীবন হয়ে ওঠে বিপন্ন। বিপদে পড়ে শ্রীকৃষ্ণের দ্বারস্থ হয় সকলে। বন্যা পরিস্থিতি থেকে বাঁচতে গ্রামবাসীরা গোবর্ধন পর্বতের দিকে চলে যায়। সেখানে গিয়ে সকলেই দেখেন, শ্রীকৃষ্ণ পর্বতকে নিজের কড়ে আঙুল তুলে রেখে দিয়েছেন। সেই পর্বতের তলায় আশ্রয় নেন সকল গ্রামবাসীরা। টানা সাতদিন ধরে বৃষ্টিপাত হলে বন্যা পরিস্থিতি আরও জোরালো হয়ে ওঠে। সাতদিন টানা কৃষ্ণঠাকুর কড়ে আঙুলে পর্বতকে ধরে থাকেন। সাতদিন ধরে একচুলও নড়েননি তিনি। এমনকী, এককণা খাবারও মুখে তোলেননি। এরপর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় মাতা যশোদা এবং ব্রজবাসীরা মিলে সাত দিন ও অষ্টপ্রহর হিসেবে ৫৬ ধরনের খাবার প্রস্তুত (Shri Krishna Chapanna Bhog) করে কৃষ্ণের কাছে পরিবেশন করেন। তারপর থেকে প্রত্যেক জন্মাষ্টমীতে (Janmashtami 2024) তাঁর জন্য ছাপ্পান্ন ধরনের ভোগ প্রস্তুত করা হয়। কথিত আছে, শ্রীকৃষ্ণকে প্রসন্ন করতে এই ছাপ্পান্ন ভোগ নিবেদন করলে ভক্তদের মনোবাসনা পূর্ণ হয়ে থাকে।

    আরও পড়ুন: তালের বড়া, ক্ষীর কিংবা পিঠে! জন্মাষ্টমীর ভোগে এমন নানা পদের ছড়াছড়ি

    ৫৬ ভোগে কী কী থাকে? (Shri Krishna Chapanna Bhog)

    ভাত (ভক্ত), ডাল (সুপ), চাটনি (প্রলেহ), কঢ়ী (সদিকা), দই-সব্জির কঢ়ী (দধিশাকজা), সিখরন (সিখরিণী), শরবৎ (অবলেহ), বাটী (বালকা), মোরব্বা (ইক্ষু খেরিণী), শর্করা যুক্ত (ত্রিকোণ), বড়া (বটক), মঠরী (মধু শীর্ষক), ফেনি (ফেণিকা), পুরী বা লুচি (পরিষ্টশ্চ), খজলা (শতপত্র), ঘেওয়ার (সধিদ্রক), মালপুয়া (চক্রাম), চোলা (চিল্ডিকা), জিলিপি (সুধাকুন্ডলিকা), মেসু (ধৃতপূর), রসগোল্লা (বায়ুপূর), চন্দ্রকলা (পগী হুই), মহারায়তা (দই), থুলি (স্থূলী), লবঙ্গপুরী (কর্পূরনাড়ী), খুরমা (খণ্ড মণ্ডল), ডালিয়া (গোধূম), পরিখা, সুফলঢয়া (মৌরী যুক্ত), বিলসারু (দধিরূপ), লাড্ডু (মোদক), শাক, অধানৌ আচার (সৌধান), মোঠ (মণ্ডকা), পায়েস (ক্ষীর), দই, গাওয়া ঘি, মাখন (হৈয়ঙ্গপীনম), মালাই (মন্ডূরী), রাবড়ি (কূপিকা), পাপড় (পর্পট), সীরা (শক্তিকা), লস্যি (লসিকা), সুবত, মোহন (সংঘায়), সুপারি (সুফলা), এলাচ (সিতা), ফল, তাম্বুল, মোহন ভোগ, লবণ, কষায়, মধুর, তিক্ত, কটূ, অম্ল।

    কীভাবে প্রস্তুত করবেন ছাপান্ন ভোগ

    জন্মাষ্টমীর (Janmashtami 2024) ভোরে উঠেই এই ভোগ রান্না তৈরি করা শুরু করে দেওয়া উচিত। শুদ্ধাচারে হলুদ বস্ত্র পরে এই ভোগ রান্না করা ভাল। অনেকে এই সময় মুখে কাপড় বেঁধে এই রান্না করেন।  ছাপান্ন ভোগে শস্য, ফল, শুকনো ফল, মিষ্টি, পানীয়, নোনতা, আচার প্রভৃতিও নিবেদন করা হয়। নিয়ম অনুসারে ৫৬ ভোগে (Shri Krishna Chapanna Bhog) থাকে ১৬ ধরনের জলখাবার, ২০টি মিষ্টি এবং ২০ ধরনের শুকনো ফল। যার মধ্যে দুধের তৈরি খাবার সবার আগে পরিবেশন করতে হয়। 

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Janmashtami 2024: এ বারের জন্মাষ্টমী ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কত তম জন্মতিথি, জানেন?

    Janmashtami 2024: এ বারের জন্মাষ্টমী ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কত তম জন্মতিথি, জানেন?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আজ জন্মাষ্টমী (Janmashtami 2024)। চলতি বছরের জন্মাষ্টমী হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে অনেকটাই বিশেষ। বাংলার ১৪৩১ সাল বা ইংরেজির ২০২৪ সালে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের (Lord Shri Krishna) ৫২৫০তম জন্মাষ্টমী পালন করা হচ্ছে।

    শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব কবে?

    বিভিন্ন হিন্দু শাস্ত্র থেকে জানা যায়, ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ১২৫ বছর মর্ত্যলোকে ছিলেন। পুরাণ অনুসারে, মাঘ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে ভগবান ইহধাম ত্যাগ করেন। হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা মনে করেন, সেই দিনই কলি প্রবেশ করে। জানা যায়, ওই দিন ছিল শুক্রবার। অর্থাৎ হিসেব করে দেখলে খ্রিস্টপূর্ব ৩১০১ সালে কলিযুগ শুরু হয়, বর্তমানে চলছে ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ। অঙ্কের হিসেবে কলির বয়স দাঁড়াচ্ছে ৩১০১ + ২০২৪= ৫১২৫ বছর। শ্রীকৃষ্ণের (Lord Shri Krishna) অর্ন্তধানের দিন কলি যুগের সূচনা বলে মনে করা হয়। আগেই বলা হয়েছে, শ্রীকৃষ্ণ ১২৫ বছর ধরাধামে ছিলেন। তা হলে শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব  ৫১২৫ + ১২৫= ৫২৫০ বছর পূর্বে হয়েছিল বলে বোঝা যাচ্ছে।

    জন্মাষ্টমী ২০২৪-এর তিথি (Janmashtami 2024)

    পণ্ডিতরা বলছেন, এবছর জন্মাষ্টমীতে অষ্টমী তিথি একদিনেই পড়েছে। অন্যান্যবার তা আলাদা-আলাদা দিনে হত। সেই কারণে চলতি বছরে সন্ন্যাসী ও গৃহস্থরা একই দিনে শ্রীকৃষ্ণের (Lord Shri Krishna) আরাধনা করতে পারবেন। পঞ্জিকা অনুসারে দেখা যাচ্ছে, এই বছর জন্মাষ্টমী পালিত হচ্ছে আজ, ২৬ অগাস্ট সোমবার। অষ্টমী তিথি পড়ে গিয়েছে আজ ভোররাত ৩টে ৪০ মিনিটে। তা থাকবে আজ গভীর রাত ২টো ২০ মিনিট (ইংরেজি মতে, ২৭ অগাস্ট, মঙ্গলবার) পর্যন্ত।

    কৃষ্ণের জন্মের সময় যে শুভ যোগ ছিল, এ বছরও সেই একই যোগ!

    আসলে জন্মাষ্টমী হল ভগবান শ্রীকৃষ্ণের শুভ জন্মতিথি, এ তো আমরা সবাই জানি। ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে রোহিণী নক্ষত্র যোগে কৃষ্ণ মথুরায় কংসের কারাগারে মাতা দেবকীর অষ্টম সন্তান রূপে জন্মগ্রহণ করেন। কংসের কারাগারে কৃষ্ণের জন্মের সময় যে যোগ ছিল, এই বছর জন্মাষ্টমীতেও একই শুভ যোগ দেখা যাচ্ছে। এই বছরও জন্মাষ্টমী তিথিতে রয়েছে রোহিনী নক্ষত্র। ২৬ অগাস্ট বেলা ৩টে ৫৫ মিনিটে রোহিনী নক্ষত্র শুরু হচ্ছে এবং তা থাকবে ২৭ অগাস্ট ভোর ৩টে ৩৮ মিনিট পর্যন্ত। জ্যোতিষীরা বলছেন, এবছর জন্মাষ্টমীর (Janmashtami 2024) তিথিতে চাঁদ রয়েছে বৃষ রাশিতে। শ্রীকৃষ্ণের জন্মের সময়ও চাঁদ বৃষ রাশিতেই ছিল বলে জানা যায়।

    জন্মাষ্টমীতে পুজোর শুভ সময়

    পণ্ডিতরা বলছেন, জন্মাষ্টমীতে সারাদিনই কৃষ্ণের আরাধনা আপনি করতে পারেন। তবে আজ গোপালের পুজো করার জন্য বিশেষ শুভ সময় রয়েছে বলে জানাচ্ছেন পণ্ডিতরা। এই নির্দিষ্ট সময়ে পুজো করলে তা কার্যকরী হয় বলে মনে করা হয়। জন্মাষ্টমীতে সকালের পুজো সকাল ৫টা ৫৬ মিনিট থেকে ৭টা ৩৭ মিনিটের মধ্যে করে নেওয়া ভালো। এর পর বিকেলের পুজো করতে পারেন বিকেল ৩টে ৩৬ মিনিট থেকে সন্ধে ৬টা ৪৯ মিনিটের মধ্যে। তবে জন্মাষ্টমীর নিশীথ কালের পুজো রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে ১২টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত করা অত্যন্ত শুভ বলে জানাচ্ছেন পণ্ডিতরা।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

     

  • Ramakrishna 111: “গৌর, নিতাই হরিনাম দিতে লাগলেন, আর আচণ্ডালে কোল দিলেন”

    Ramakrishna 111: “গৌর, নিতাই হরিনাম দিতে লাগলেন, আর আচণ্ডালে কোল দিলেন”

    সার্কাস রঙ্গালয়ে—গৃহস্থের ও অন্যান্য কর্মীদের কঠিন সমস্যা ও শ্রীরামকৃষ্ণ

    প্রথম পরিচ্ছেদ

    আগে সাধান, তারপর সংসার; অভ্যাসযোগ

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) মাস্টারকে বলিতেছেন, দেখলে, বিবি কেমন একপায়ে ঘোড়ার উপর দাঁড়িয়ে আছে, আর বনবন করে দৌড়ুচ্ছে! কত কঠিন, অনেকদিন ধরে অভ্যাস করেছে, তবে তো হয়েছে! একটু অসাবধান হলেই হাত-পা ভেঙে যাবে, আবার মৃত্যুও হতে পারে। সংসার করা ওইরূপ কঠিন। অনেক সাধন-ভজন করলে ঈশ্বরের কৃপায় কেউ কেউ পেরেছে। অধিকাংশ লোক পারে না। সংসার করতে গিয়ে আরও বদ্ধ হয়ে যায়, আরও ডুবে যায়, মৃত্যুযন্ত্রণা হয়! কেউ কেউ, যেমন জনকাদি অনেক তপস্যার বলে সংসার করেছিলেন (Kathamrita)। তাই সাধন-ভজন খুব দরকার, তা না হলে সংসারে ঠিক থাকা যায় না।

    বলরাম-মন্দিরে শ্রীরামকৃষ্ণ

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) গাড়িতে উঠিলেন। গাড়ি বাগবাজারে বসুপাড়ায় বলরামের বাটীর দ্বারে উপস্থিত হইল, ঠাকুর ভক্তসঙ্গে দোতলায় বৈঠকখানায় গিয়ে বসিলেন। সন্ধ্যার বাতি জ্বালা হইয়াছে। ঠাকুর সার্কাসের গল্প (Kathamrita) করিতেছেন। অনেকগুলি ভক্ত সমবেত হইয়াছেন, তাঁহাদের সহিত ঈশ্বরীয় অনেক কথা হইতেছে। মুখে অন্য কথা কিছুই নাই, কেবল ঈশ্বরীয় কথা।

    জাতিভেদ সমন্ধে কথা (Kathamrita) পড়িল। ঠাকুর (Ramakrishna) বলিলেন, এক উপায়ে জাতিভেদ উঠে যেতে পারে। সে উপায়—ভক্তি। ভক্তের জাতি নাই। ভক্তি হলেই দেহ, মন, আত্মা—সব শুদ্ধ হয়। গৌর, নিতাই হরিনাম দিতে লাগলেন, আর আচণ্ডালে কোল দিলেন। ভক্তি থাকতে চণ্ডাল, চণ্ডাল নয়। অস্পৃশ্য জাতি ভক্তি থাকলে শুদ্ধ, পবিত্র হয়।

    আরও পড়ুনঃ “সব লোক দেখছি নিম্নদৃষ্টি, পেটের জন্য সব যাচ্ছে, ঈশ্বরের দিকে দৃষ্টি নাই!”

     আরও পড়ুনঃ “বিবেক, বৈরাগ্যরূপ হলুদ মাখলে তারা আর তোমাকে ছোঁবে না”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “পশ্চিমে বিবাহের সময় বরের হাতে ছুরি থাকে, বাংলাদেশে জাঁতি থাকে”

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 110: “সব লোক দেখছি নিম্নদৃষ্টি, পেটের জন্য সব যাচ্ছে, ঈশ্বরের দিকে দৃষ্টি নাই!”

    Ramakrishna 110: “সব লোক দেখছি নিম্নদৃষ্টি, পেটের জন্য সব যাচ্ছে, ঈশ্বরের দিকে দৃষ্টি নাই!”

    সার্কাস রঙ্গালয়ে—গৃহস্থের ও অন্যান্য কর্মীদের কঠিন সমস্যা ও শ্রীরামকৃষ্ণ

    প্রথম পরিচ্ছেদ

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) শ্যামপুকুর বিদ্যাসাগর স্কুলের দ্বারে গাড়ি করিয়া আসিয়া উপস্থিত। বেলা তিনটা হইবে। গাড়িতে মাস্টারকে তুলিয়া লইলেন। রাখাল ও আরও দু-একটি ভক্ত গাড়িতে আছেন। আজ বুধবার ১৫ই নভেম্বর ১৮৮২ খ্রিষ্টাব্দ, কার্তিক শুক্লা পঞ্চমী। গাড়ি ক্রমে চিৎপুর রাস্তা দিয়া গড়ের মাঠের দিকে যাইতেছে।

    শ্রীরামকৃষ্ণ আনন্দময়—মাতালের ন্যায়—গাড়ির একবার এধার একবার ওধার মুখ বাড়াইয়া বালকের ন্যায় দেখিতেছেন। মাস্টারকে বলিতেছেন (Kathamrita), দেখ, সব লোক দেখছি নিম্নদৃষ্টি। পেটের জন্য সব যাচ্ছে, ঈশ্বরের দিকে দৃষ্টি নাই!

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) আজ গড়ের মাঠে উইলসনের সার্কাস দেখিতে যাইতেছেন। মাঠে পৌঁছিয়া টিকিট কেনা হইল। আট আনার অর্থাৎ শেষশ্রেণীর টিকিট। ভক্তেরা ঠাকুরকে লইয়া উচ্চস্থানে উঠিয়া এক বেঞ্চির উপরে বসিলেন। ঠাকুর আনন্দে বলিতেছেন, বাঃ এখান থেকে বেশ দেখা যায়।

    রঙ্গস্থলে নানারূপ খেলা অনেকক্ষণ ধরিয়া দেখা হইল। গোলাকার রাস্তায় ঘোড়া দৌড়িতেছে। ঘোড়ার পৃষ্টে একপায়ে বিবি দাঁড়াইয়া। আবার মাঝে মাঝে সামনে বড় বড় লোহার রিং (চক্র)। রিং-এর কাছে আসিয়া ঘোড়া যখন রিং-এর নিচে দৌড়াতেছে, বিবি ঘোড়ার পৃষ্ঠ হইতে লম্ফ দিয়া রিং-এর মধ্যে দিয়া পুনরায় ঘোড়ার পৃষ্ঠে আবার একপায়ে দাঁড়াইয়া! ঘোড়া পুনঃপুনঃ বনবন করিয়া ওই গোলাকার পথে দৌড়াইতে লাগিল, বিবিও আবার ওইরূপ পৃষ্ঠে দাঁড়াইয়া!

    সার্কাস সমাপ্ত হইল। ঠাকুর (Ramakrishna) ভক্তসঙ্গে নামিয়া আসিয়া ময়দানে গাড়ির কাছে আসিলেন। শীত পড়িয়াছে। গায়ে সবুজ বনাত দিয়া মাঠে দাঁড়াইয়া কথা (Kathamrita) কহিতেছেন, কাছে ভক্তেরা দাঁড়াইয়া আছেন। একজন ভক্তের হাতে বেটুয়াটি (মশলার ছোট থলেটি) রহিয়াছে। তাহাতে মশলা বিশেষতঃ কাবাব চিনি আছে।

    আরও পড়ুনঃ “ভীস্মদেব, সত্যবাদী, জিতেন্দ্রিয়, জ্ঞানী, তিনিও দেহত্যাগের সময় মায়াতে কাঁদছেন”

    আরও পড়ুনঃ “বিবেক, বৈরাগ্যরূপ হলুদ মাখলে তারা আর তোমাকে ছোঁবে না”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “পশ্চিমে বিবাহের সময় বরের হাতে ছুরি থাকে, বাংলাদেশে জাঁতি থাকে”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Mahadev: শিবপুজোর জন্য সোমবার কেন বিশেষ দিন? কীভাবে করবেন মহাদেবের আরাধনা?

    Mahadev: শিবপুজোর জন্য সোমবার কেন বিশেষ দিন? কীভাবে করবেন মহাদেবের আরাধনা?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: প্রতি সোমবারেই ভক্তরা দেবাদিদেব মহাদেবের উদ্দেশে পুজো অর্পণ করেন। ভক্তদের বিশ্বাস, মহাদেবের (Mahadev) আশীর্বাদে দূর হয় জীবনের যাবতীয় সমস্যা ও বাধা বিঘ্ন। জীবনে নেমে আসে সুখ-শান্তি-সমৃদ্ধি। এমনিতে দেবাদিদেব মহাদেবের পুজো সব বারেই করা যায়, তবে সোমবার কেন বিশেষ দিন? পৌরাণিক কাহিনি অনুযায়ী, চন্দ্রদেবতা সোমবারে দেবাদিদেব মহাদেবকে পুজো করেন। খুশি হয়ে শিব (Shiva Puja) চন্দ্র দেবতাকে বরদান করেছিলেন। আবার শিবকে পতি রূপে পাওয়ার জন্য দেবী পার্বতী ১৬টি সোমবার ব্রত করেছিলেন বলে জানা যায়। তাই সোমবার শিব পুজোর জন্য বিশেষ দিন হয়ে রয়েছে। সোমবারে (Mahadev) ভগবান শিবের পুজো অত্যন্ত ফলদায়ক ও শুভ বলে মনে করা হয়।

    পূর্ণিমা অনুযায়ী আজ শ্রাবণ মাসের শেষ সোমবার

    হিন্দু ধর্মে শ্রাবণ মাসের বিশেষ মাহাত্ম্য রয়েছে। সনাতন ধর্মে এই মাসটি শিবকে (Shiva Puja) সমর্পিত করা হয়েছে। এই মাসে নিয়ম মেনে শিবের আরাধনা করলে মহাদেবের কৃপায় সমস্ত মনস্কামনা পূরণ হয়। এ বছর শ্রাবণ মাসে দুর্লভ সংযোগ পাওয়া গিয়েছে। দুটি পদ্ধতিতে শ্রাবণ মাসের গণনা করা হয়। সংক্রান্তি অনুযায়ী ও পূর্ণিমা অনুযায়ী। পূর্ণিমা তিথি অনুযায়ী গত ২২ জুলাই থেকে শ্রাবণ মাস শুরু হয়েছিল এবং শেষ হচ্ছে আজ সোমবার অর্থাৎ ১৯ অগাস্ট। অন্য দিকে সংক্রান্তি অনুযায়ী ১৬ জুলাই সূর্য কর্কট রাশিতে প্রবেশ করেছে। এমন পরিস্থিতিতে সংক্রান্তির পরের দিন অর্থাৎ ১৭ জুলাই থেকে শ্রাবণ মাসের সূচনা ধরা হয় এবং তা শেষ হয় গত ১৭ অগাস্ট। অর্থাৎ পূর্ণিমা অনুযায়ী দেখলে এ বছর ৫টি সোমবার থাকছে। আবার সংক্রান্তি অনুযায়ী গণনা করলে ৪টি সোমবার পাওয়া যায়। পূর্ণিমা অনুযায়ী তাই আজ শ্রাবণ মাসের শেষ সোমবার। শ্রাবণ মাসের সোমবার পালনের সময় বিশেষ কিছু রীতি পালন করলে সন্তুষ্ট হন মহাদেব (Mahadev), এমনটাই বলছেন বিশেষজ্ঞরা। রয়েছে বিশেষ কিছু পুজোর পদ্ধতিও। শ্রাবণ মাসের সোমবার পালন নিয়ে জ্যোতিষীরা বলছেন, যদি কারও কুণ্ডলীতে বিবাহের যোগ না থাকে বা বিবাহে বাধা আসে, তাহলে শ্রাবণ মাসের সোমবার পালনে সে বাধা কেটে যায়।

    সোমবার শিব (Mahadev) পুজোর পদ্ধতি

    সোমবার ভগবান শিবের বিশেষ পুজো করা হয়। ভক্তদের বিশ্বাস, দেবাদিদেব মহাদেব অত্যন্ত ভক্তবৎসল এবং নিষ্ঠা ও ভক্তি সহযোগে পুজো করলেই তিনি তুষ্ট হয়ে যান। শাস্ত্র বিশারদরা বলেন, শুধু বেলপাতা, ফুল, ফল, জলেই তুষ্ট হন মহাদেব।  তবে তার সঙ্গে শিবলিঙ্গে কিছু বিশেষ জিনিস নিবেদন করলে ভগবান সহজেই প্রসন্ন হন। সোমবার শিবলিঙ্গে কী কী নিবেদন করলে তিনি তুষ্ট হবেন?

    শিবলিঙ্গের পুজো করার আগে শ্রী গণেশ, ভগবান বিষ্ণু, নবগ্রহ এবং দেবী পার্বতীর পুজো করার বিধান দিচ্ছেন পণ্ডিতরা। শিবলিঙ্গে বেলপত্র, ফুল ইত্যাদি উৎসর্গ করুন। কাঁচা দুধ দিয়ে শিবলিঙ্গের অভিষেক করুন, এরপর পঞ্চমেব, পঞ্চামৃত, মিষ্টি, ফল, ধাতুরা, ভাং ইত্যাদি নিবেদন করুন এবং সব শেষে শিবের আরতি করুন।
            
    শিবের রুদ্রাভিষেক করলেও ভালো ফল মেলে। ভক্তরা নিজেদের ইচ্ছাপূরণের জন্য বিভিন্ন জিনিস দিয়ে ভগবান শিবের রুদ্রাভিষেক করেন।  ঘি দিয়ে শিবলিঙ্গের অভিষেক করলে সন্তানের সুখ হয়। অন্যদিকে গঙ্গাজল দিয়ে অভিষেক করলে দুঃখ ও পাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় বলে বিশ্বাস। 
            
    অন্যদিকে, আখের রস দিয়ে শিবলিঙ্গের অভিষেক করা খুবই শুভ বলে মনে করা হয়। এতে মহাদেব সহজেই খুশি হন এবং ভক্তের সমস্ত ইচ্ছা পূরণ করেন বলেই বিশ্বাস রয়েছে।
            
    শিব মন্দিরে প্রদীপ দান করলেও দেবাদিদেব মহাদেব ভক্তদের ওপর আশীর্বাদ বর্ষণ করেন, এমনটাই বিশ্বাস রয়েছে ভক্তদের। বিশ্বাস করা হয়, এদিন কাঁচা চালের সঙ্গে কালো তিল মিশিয়ে দান করলে পিতৃদোষ দূর হয়। 
            
    শিবলিঙ্গে প্রিয় জিনিসগুলি অর্পণ করার পর ‘ওম নমঃ শিবায়’ মন্ত্রটি ১০৮ বার জপ করার বিধান দিচ্ছেন পণ্ডিতরা, এতে শুভ ফল পাওয়া যায়। আবার শিব মন্দিরে রুদ্রাক্ষ নিবেদন করলে দাম্পত্য জীবন খুবই সুখের হয় বলে ভক্তদের বিশ্বাস রয়েছে।

    শিবপুজোর আরও খুঁটিনাটি

    অবশ্যই সকালে স্নান করে শিবলিঙ্গের পুজো করা উচিত। 
            
    শিবলিঙ্গে (Mahadev) জাফরান অর্পণ করলে ভক্তদের জীবনে সুখ-শান্তি আসে বলে মনে করা হয়। অন্যদিকে চিনি দিয়ে শিবলিঙ্গে অভিষেক করলে সমৃদ্ধি বৃদ্ধি পায় এবং দারিদ্র্য দূর হয়।
            
    ভোলেনাথ সুগন্ধিও খুব পছন্দ করেন বলে ভক্তদের বিশ্বাস রয়েছে। শিবলিঙ্গে সুগন্ধি লাগালে মনের চিন্তা শুদ্ধ হয় বলে ধারণা। শিবলিঙ্গে দুধ অর্পণ করলে স্বাস্থ্য ভালো থাকে এবং মনের সমস্ত ইচ্ছা পূরণ হয়।

    শিব পুরাণ অনুসারে, শিবলিঙ্গের পুজো জীবনের অনেক সমস্যার স্থায়ী সমাধান করে। এছাড়া মানসিক ও শারীরিক কষ্ট থেকেও মুক্তি পাওয়া যায় শিব পুজোর মাধ্যমে। শিবলিঙ্গ সম্পর্কে একটি পৌরাণিক কাহিনী রয়েছে যে, কলিযুগে কুষমান্ড ঋষির পুত্রই সর্বপ্রথম শিবলিঙ্গের পুজো শুরু করেন।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Raksha Bandhan 2024: আজ রাখি বন্ধন, কখন বাঁধবেন ভাইয়ের হাতে রাখি?

    Raksha Bandhan 2024: আজ রাখি বন্ধন, কখন বাঁধবেন ভাইয়ের হাতে রাখি?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আজ রাখি বন্ধন (Raksha Bandhan 2024), হিন্দু ধর্মের অন্যতম বড় উৎসব। প্রতি বছর ভাই-বোনের সম্পর্কের এই পবিত্র উৎসব পালিত হয় শ্রাবণ পূর্ণিমার দিনে। ভাইয়ের দীর্ঘায়ু-সুখী-সমৃদ্ধ জীবনের জন্য প্রার্থনা করা হয়। ভাইয়েরা তাঁদের বোনদের সারা জীবন রক্ষা করার আশ্বাসও দেন। প্রচলিত রীতি অনুযায়ী, ভাই বা দাদাকে রাখি বাঁধার আগে আরতি করা হয় এবং তারপর কপালে তিলক লাগানো হয়। এর পর ভাই দিদির পা স্পর্শ করেন অথবা বোন দাদার পা স্পর্শ করেন।

    কখন শুরু হল তিথি (Raksha Bandhan 2024)? 

    হিন্দু ক্যালেন্ডার অনুসারে, শ্রাবণ মাসের পূর্ণিমা তিথি আজ অর্থাৎ ১৯ অগাস্ট সোমবার ভোর ৩:০৪ মিনিট থেকে শুরু গিয়েছে এবং রাত ১১:৫৫ মিনিটে শেষ হবে।

    রাখি বাঁধার শুভক্ষণ কখন

    এ বছর রাখি (Raksha Bandhan 2024) বাঁধার শুভ সময় হল দুপুর ১:৪৬ থেকে ৪:১৯ মিনিট পর্যন্ত, প্রায় ২ ঘন্টা ৩৭ মিনিট। এর পাশাপাশি সন্ধ্যা ০৬:৫৬ মিনিট থেকে ০৯:০৭ মিনিট পর্যন্তও থাকবে শুভ সময়, প্রায় ২ ঘন্টা ১১ মিনিট। এবার রাখি বন্ধনে (Hindu Festival) ভদ্রা থাকবে সকালে। ভদ্রা থাকবে সকাল ০৫ টা ৫৩ মিনিট থেকে দুপুর ০১ টা ৩২ মিনিট পর্যন্ত। এই সময়ে রাখি বাঁধতে বারণ করছেন জ্যোতিষীরা। তাঁদের মতে, ভদ্রা যেখান থেকেই হোক না কেন, এটি অশুভ ফল দেয়। ভদ্রা শেষ হওয়ার জন্য অপেক্ষা করা উচিত। 

    সারা দেশেই পালিত হবে উৎসব 

    রাখি বন্ধনের (Raksha Bandhan 2024) হরেক নাম রয়েছে। কোথাও রক্ষাবন্ধন উত্‍সব, কোথাও আবার শ্রাবণী পূর্ণিমা, আবার কোথাও অবনী আবিত্তম, কোথাও আবার পবিত্রতা বলেও অভিহিত করা হয়। কিছু জায়গায়, বোনেরা ভাইয়ের কব্জিতে রাখি বাঁধার আগে নারকেলের ওপর তিলক লাগান এবং কলবা অর্থাৎ সুতো বাঁধেন। তারপর সেই নারকেলটি প্রথমে ভাইয়ের হাতে দেন এবং তারপরই ভাইয়ের কব্জিতে রাখি বেঁধে দেন। ভাই-বোনের সম্পর্কের অটুট বন্ধন রাখতে (Hindu Festival) ও সম্মান জানাতে এই উত্‍সব পালন করা হয়ে থাকে।

    রাখি নিয়ে প্রচলিত পৌরাণিক কাহিনি

    মহাভারত অনুসারে, শ্রীকৃষ্ণের নিজের বোন ছিলেন সুভদ্রা। কিন্তু তিনি দ্রৌপদীকেও নিজের বোনের মতো স্নেহ করতেন। একবার শ্রীকৃষ্ণের হাত কেটে যায় এবং সেখান থেকে রক্তপাত শুরু হয়। তখন সেখানে সুভদ্রা এবং দ্রৌপদী দুজনেই উপস্থিত ছিলেন। সুভদ্রা তখন সেই রক্ত বন্ধ করবার জন্য কাপড় খুঁজছিলেন। কিন্তু দ্রৌপদী একটুও দেরী না করে নিজের পরিহিত মূল্যবান রেশমী শাড়ি ছিঁড়ে শ্রীকৃষ্ণের সেই কেটে যাওয়া স্থানটি বেঁধে দেন তাড়াতাড়ি রক্তপাত বন্ধ করার জন্য। এবং শ্রীকৃষ্ণ তখন দ্রৌপদীকে বলেন, তার বেঁধে দেওয়া কাপড়ের প্রতিটি সুতোর প্রতিদান দেবেন তিনি। এরপর শ্রীকৃষ্ণ দ্রৌপদীকে রাজসভায় বস্ত্রহরণের চরম কলঙ্কের হাত থেকে রক্ষা করেন।

    মোট ৬টি শুভ ও বিরল যোগ

    চলতি বছরে রাখি পূর্ণিমার দিন মোট ৬টি শুভ ও বিরল যোগ রয়েছে, বলে জানাচ্ছেন জ্যোতিষীরা। যার ফলে রাখি পূর্ণিমার দিন অত্যন্ত শুভ হতে চলেছে। রাখির দিন রাজ পঞ্চক, শ্রাবণ সোমবার, শ্রাবণ পূর্ণিমার উপবাস ও স্নান, অন্যদিকে সবার্থ সিদ্ধি যোগ, রবি যোগ ও শোভন যোগ গঠিত হতে চলেছে।

    শ্রাবণ পূর্ণিমা ও রাখি (Raksha Bandhan 2024) পূর্ণিমা একসঙ্গেই পালিত হচ্ছে এবছর 

    শ্রাবণ পূর্ণিমা ও রাখি পূর্ণিমা একসঙ্গেই পালিত হচ্ছে এবছর। ভক্তি ভরে এদিন পুজো ও দান করলে ব্যাপক পুণ্যলাভ হয় বলেই ভক্তদের বিশ্বাস। এদিন নিয়ম মেনে বাড়িতে সত্যনারায়ণের পুজো করতে পারেন।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna: বাঙালির নবজাগরণকে দিশা দিয়েছিলেন, আজ ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের প্রয়াণ দিবস

    Ramakrishna: বাঙালির নবজাগরণকে দিশা দিয়েছিলেন, আজ ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের প্রয়াণ দিবস

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আজ, ১৬ অগাস্ট শুক্রবার, রামকৃষ্ণ (Ramakrishna) পরমহংসদেবের প্রয়াণ বার্ষিকী। ১৮৮৬ সালের এই দিনেই পরলোক গমন করেন তিনি। প্রসঙ্গত, কামারপুকুরের ব্রাহ্মণ পরিবারের সন্তান গদাধর চট্টোপাধ্যায় পরবর্তীকালে বিখ্যাত হন রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব (Ramakrishna Death Anniversary) নামে। ১৮৩৬ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি তিনি জন্মগ্রহণ করেন হুগলি জেলার কামারপুকুরে। তাঁর পিতার নাম ছিল ক্ষুদিরাম চট্টোপাধ্যায়, মাতার নাম ছিল চন্দ্রমণি দেবী। প্রসঙ্গত, বাবা-মায়ের চতুর্থ সন্তান ছিলেন রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব। উনিশ শতকে বাঙালি নবজাগরণে অন্যতম বড় ভূমিকা পালন করেন তিনি। বাঙালিকে নতুন দিশা দেখিয়েছিলেন, আধ্যাত্মিক-সামাজিক ক্ষেত্রে। তাঁর প্রধান শিষ্য ছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ।

    ৫২ বছর বয়সে কাশীপুর উদ্যান বাটিতে প্রয়াত হন রামকৃষ্ণ (Ramakrishna) পরমহংসদেব

    মাত্র ৫২ বছর বয়সে কাশীপুর উদ্যান বাটিতে প্রয়াত হন রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব। তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় কাশীপুর শ্মশানে। প্রসঙ্গত, গলার ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েই তিনি মারা যান বলে জানা যায়। ঠাকুরের শেষ দিনগুলি সম্পর্কে বৈকুণ্ঠ নাথ সান্যাল লিখছেন, ‘‘ঠাকুর সেই সময় মন্তব্য করতেন, ভিতরে এত খিদে যে হাড়ি হাড়ি খিচুড়ি খাই মনে হচ্ছে। কিন্তু মহামায়া কিছুই খেতে দিচ্ছেন না।’’ শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) পরমহংসদেবের পরলোক গমন সম্পর্কে স্বামী অভেদানন্দ তাঁর একটি লেখায় বর্ণনা করেছেন যে মৃত্যুর দিন তিনি একপাশে গড়িয়ে পড়েন ঠাকুর। নরেন্দ্রনাথ দত্ত অর্থাৎ স্বামী বিবেকানন্দ তখন ঠাকুরের পা লেপ দিয়ে ঢেকে দেন এবং ছুটে সিঁড়িতে নেমে আসেন কারণ এই দৃশ্য স্বামী বিবেকানন্দ সহ্য করতে পারছিলেন না। পরে দেখা যায় রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের নাড়ি সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ভক্তরা মনে করতে থাকেন যে তিনি হয়ত সমাধিতে চলে গিয়েছেন কিন্তু ডাক্তার মহেন্দ্রলাল সরকার ১৬ অগাস্ট সকালে এসে জানান যে ঠাকুর পরলোক গমন করেছেন।

    গল্পের রাজা ঠাকুর (Ramakrishna)

    গৃহস্থ মানুষকে সহজ-সরল ভাষায় ধর্মবিষয়ে উপদেশ দান করতেন ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ। তাঁকে বলা হত গল্পের রাজা। মানী-গুণী পণ্ডিত ব্যক্তি থেকে প্রত্যেকেই তাঁর কাছে হাজির হতেন বাণী শোনার জন্য। রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের বাণী নিয়েই পরবর্তীকালে লিপিবদ্ধ হয় কথামৃত। তাঁর কিছু বিখ্যাত বাণী হল—

    – লোভী মানুষের মন অনেকটা নর্দমায় বেড়ে ওঠা কীটের মতো, তাকে যতই ভালো জায়গায় রাখো না কেন সে তো ফিরে নর্দমাতে যাবেই।

    – যদি তুমি মনের মধ্যে অহংকারের কালো মেঘ পুষে রাখো, স্বয়ং ঈশ্বর তোমাকে আলোর পথ দেখাতে পারবেন না। 

    – জীবনে শান্তি পেতে মনের ময়লাগুলোকে ধুয়ে ফেলতে হবে। মনে যতক্ষণ কাম-ক্রোধ-লোভের বাস সেখানেই সর্বনাশ।

    – যেমন মুক্ত পেতে হলে ঝিনুকের প্রয়োজন, ঠিক তেমনি পরম ঈশ্বরকে পেতে হলে সত্‍ কর্ম ও ঈশ্বরে ভক্তির প্রয়োজন।

    – তোমার ধর্ম আমার ধর্ম বলে লড়াই করে কী লাভ? যখন তোমার আমার সবার গন্তব্য সেই এক জনেরই কাছে।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 109: “ভীস্মদেব, সত্যবাদী, জিতেন্দ্রিয়, জ্ঞানী, তিনিও দেহত্যাগের সময় মায়াতে কাঁদছেন”

    Ramakrishna 109: “ভীস্মদেব, সত্যবাদী, জিতেন্দ্রিয়, জ্ঞানী, তিনিও দেহত্যাগের সময় মায়াতে কাঁদছেন”

    সিঁথি ব্রাহ্মসমাজ-দর্শন ও শ্রীযুক্ত শিবনাথ প্রভৃতি ব্রাহ্মভক্তদিগের সহিত কথোপকথন ও আনন্দ

    সপ্তম পরিচ্ছেদ

    অদৃষ্টপূর্বং হৃষিতোহস্মি দৃষ্টা, ভয়েন চ প্রব্যথিতং মনো মে।

    তদেব মে দর্শয় দেব রূপং, প্রসীদ দেবশ জগন্নিবাস।।

    গীতা—১১/৪৫/

    ব্রাহ্মসামজের প্রার্থনাপদ্ধতি ও ঈশ্বরের ঐশ্বর্য-বর্ণন

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—হ্যাঁ, আমি শুনেছি জন্মান্তর আছে। ঈশ্বরের কার্য আমরা ক্ষুদ্রবুদ্ধিতে কি বুঝব? অনেকে বলে গেছে, তাই অবিশ্বাস করতে পারি না। ভীস্মদেব দেহত্যাগ করবেন, শরশয্যায় শুয়ে আছেন, পাণ্ডবেরা শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে সব দাঁড়িয়ে। তাঁরা দেখলেন যে, ভীস্মদেবের চক্ষু দিয়ে জল পড়ছে। অর্জুন শ্রীকৃষ্ণকে বললেন, ভাই, কি আশ্চর্য! পিতামহ, যিনি স্বয়ং ভীস্মদেব, সত্যবাদী, জিতেন্দ্রিয়, জ্ঞানী, অষ্টবসুর এক বসু, তিনিও দেহত্যাগের সময় মায়াতে কাঁদছেন। শ্রীকৃষ্ণ ভীস্মদেবকে এ-কথা বলাতে (Kathamrita) তিনি বললেন, কৃষ্ণ, তুমি বেশ জানো, আমি সেজন্য কাঁদছি না! যখন ভাবছি যে, যে পাণ্ডবদের স্বয়ং ভগবান নিজে সারথি, তাদের দুঃখ-বিপদের শেষ নাই, তখন এই মনে করে কাঁদছি যে, ভগবানের কার্য কিছু বুঝতে পারলাম না।

    কীর্তনানন্দে—ভক্তসঙ্গে

    সমাজগৃহে এইবার সন্ধ্যাকালীন উপসনা হইল। রাত্রি প্রায় সাড়ে আটটা। সন্ধ্যার চারপাঁচ দণ্ডের পর রাত্রী জ্যোৎস্নাময়ী হইল। উদ্যানের বৃক্ষরাজি লতাপল্লব শরচ্চন্দ্রের বিমলকিরণের যেন ভাসিতে লাগিল। এদিকে সমাজগৃহে সংকীর্তন আরম্ভ হইয়াছে। ভগবান শ্রীরামকৃষ্ণ হরিপ্রেমে মাতোয়ারা হইয়া নাচিতেছেন। সকলেই ভাবে (Kathamrita) মত্ত, যেন শ্রীভগবানের সাক্ষাৎকার লাভ করিয়াছেন! হরিনামের রোল উত্তোরত্তর উঠিতেছে। চারিদিকে গ্রামবাসীরা হরিনাম শুনিতেছেন, আর মনে মনে উদ্যানস্বামী ভক্ত বেণীমাধবকে কতই ধন্যবাদ দিতেছেন।      

    কীর্তনান্তে শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) ভূমিষ্ঠ হইয়া জন্মগতাকে প্রণাম করিতেছেন। প্রণাম করিতে করিতে বলিতেছেন, ভগবত-ভক্ত-ভগবান, জ্ঞানীর চরণে প্রণাম, সাকারবাদী ভক্তের চরণে, নিরাকারবাদী ভক্তের চরণে প্রণাম; আগেকার ব্রহ্মজ্ঞানীদের ইদানিং ব্রহ্মজ্ঞানীদের চরণে প্রণাম।

    আরও পড়ুনঃ “বিবেক, বৈরাগ্যরূপ হলুদ মাখলে তারা আর তোমাকে ছোঁবে না”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “পশ্চিমে বিবাহের সময় বরের হাতে ছুরি থাকে, বাংলাদেশে জাঁতি থাকে”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

LinkedIn
Share