Category: পরম্পরা

Get updated History and Heritage and Culture and Religion related news from the Madhyom news portal madhyom.com, West Bengal leading news portal Madhyom.com

  • Kali Puja 2023: কালী প্রতিমার বুকে পা দিয়ে পুজো করেন পূজারী! কোথায় জানেন?

    Kali Puja 2023: কালী প্রতিমার বুকে পা দিয়ে পুজো করেন পূজারী! কোথায় জানেন?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মন্ত্র ছাড়াই শুধুমাত্র রীতি মেনে ৬১ বছর ধরে মা কালীর আরাধনা (Kali Puja 2023) চলছে আরামবাগের রতনপুরে। পুজোর প্রতিষ্ঠাতা তথা পূজারী কালীশঙ্কর সাঁতরা। তিনি দাবি করেন, এখানে মন্ত্রপাঠ ছাড়াই পুজো হয়। ৯ বছর বয়স থেকে কালী মূর্তি তৈরি করে পুজো করছেন। দেবীকে স্মরণ করে মুখে যে কথা বা গান আসে, সেটাই মন্ত্র। কালী প্রতিমার বুকে পা দিয়ে পুজো করেন পূজারী। দেবীর কাছে ভক্তের মনোবাঞ্ছা পৌঁছে দিতে কাচের উপরে মাথা ঠোকেন। আরামবাগ-সহ জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বহু ভক্ত এখানে পুজো দেখতে আসেন। ভিড় সামলাতে রাখতে হয় পুলিশি ব্যবস্থা।

    কী এই পুজোর ইতিহাস? (Kali Puja 2023)

    পুজোর প্রতিষ্ঠাতা তথা পূজারী কালীশঙ্কর সাঁতরা জানান, পুজোর সমস্ত আচারই দৈব আদেশে পাওয়া। তিনি জানান, ৯ বছর থেকে কালী মূর্তি তৈরি করে পুজো করছেন। বর্গক্ষত্রিয় পরিবারের হওয়ায় তিনি কোনও মন্ত্রও জানেন না। মাকে স্মরণ করে মুখে যা আসবে, সেটাই মন্ত্র। যুবক বয়সে তিনি এক বার ১২ ফুট উচ্চতার কালীমূর্তি তৈরি করেন। রং করার সময় ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। অজ্ঞাত মহিলা কণ্ঠ তাঁকে জাগিয়ে রঙের কাজ শেষ করতে বলে। কিন্তু চক্ষুদানের সময়ে মূর্তির মুখের নাগাল পাচ্ছিলেন না। তখন দুঃখে মাথা ঠুকছিলেন। ফের সেই মহিলা কণ্ঠ তাঁকে চৌকিতে উঠে মূর্তির বুকে পা দিয়ে কাজ করতে নির্দেশ দেয়। সেই থেকেই তিনি প্রতিমার বুকে পা দিয়েই পুজো করেন। পুজোর মন্ত্র এবং ভক্তের আকুতি দেবীর কাছে পৌঁছাতে কাচের উপর মাথা ঠোকা, নাচও মায়ের আদেশেই বলে তিনি জানান। বছর কুড়ি হয়ে গেল কালীশঙ্কর আর মাটির প্রতিমা (Kali Puja 2023) গড়েন না। আরামবাগ শহর থেকে ১২ কিলোমিটার দক্ষিণে রতনপুরের মন্দিরে এখন স্থাপিত হয়েছে ৬ ফুট উচ্চতার পাথরের দক্ষিণাকালী মূর্তি। তবে মূর্তির বুকে পা দিয়ে পুজো করার প্রথা বদলায়নি।

    ভাত, খিচুড়ি, লুচি ভোগের ব্যবস্থা (Kali Puja 2023)

    স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বহু আগে একটি তালপাতার ছাউনি করে এই কালীপুজো শুরু হয়েছিল। ভক্তদের দানের অর্থে এখন সেই জায়গায় প্রায় চার বিঘা জমির উপরে তৈরি হয়েছে মন্দির। নিত্য পুজো হয়। প্রতি সপ্তাহে মঙ্গলবার এবং শনিবার ভক্তদের ভিড় বেশি হয়। তবে বিশেষ পুজো (Kali Puja 2023) ধূমধাম হয় কার্তিক মাসে। এখানে পাঁঠা বলি হয়। ভাত, খিচুড়ি, লুচি ভোগের ব্যবস্থা থাকে ভক্তদের জন্য। 

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।

  • Kali Puja 2023: উলুবেড়িয়ার খলিসানিতে বুড়িমার পুজোর পরে শুরু হয় দীপান্বিতা কালীপুজো

    Kali Puja 2023: উলুবেড়িয়ার খলিসানিতে বুড়িমার পুজোর পরে শুরু হয় দীপান্বিতা কালীপুজো

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: কেউ বলেন অন্তত সাড়ে তিনশো, কেউ বলেন চারশো পার হয়ে গেছে। উলুবেড়িয়ার খলিসানির বুড়িমার কালীপুজোর প্রতিষ্ঠা কবে, তার লিখিত কোনও নথি নেই। কেউ বলেন কালীপ্রসন্ন ভট্টাচার্য আবার কেউ বলেন কালীকুমার নামে স্থানীয় এক ব্রাহ্মণ এখানে প্রথম ঘটে ও পরে মূর্তিতে পুজো শুরু করেন। সেই ঘট আর মূর্তি কালের নিয়মে হারিয়ে গেছে। রয়ে গেছে পুজোর রীতি, মানে অনাড়ম্বর উপাসনা (Kali Puja 2023)।

    বুড়িমা আদতে কালী (Kali Puja 2023)

    কথিত আছে, দেবীকে স্বপ্নে দেখেন আমতার বাসিন্দা কালীপ্রসন্ন। সেইমতো তিনি খলিসানিতে এসে শ্মশানের মধ্যে বেলগাছের নিচে মাটির ঘট দেখতে পান। স্বপ্নে তেমনই দেখেছিলেন। ওই ঘটের জায়গাতেই পুজো শুরু করেন তিনি। মূর্তি থাকলেও মূল পুজো তাই ঘটেই হয়। এখানে বলির প্রথা এখনও রয়েছে, তবে কখনও নরবলি হয়েছে কিনা, সেকথা জানা যায় না।
    কালীপ্রসন্ন যখন এখানে ঘট প্রতিষ্ঠা করে পুজো শুরু করেন, তখন এটি ছিল শ্মশান। চারদিকে গাছ। ডাকাতের আস্তানা। তাই কালীপ্রসন্ন প্রতিষ্ঠিত দেবীর পুজো এক সময় ডাকাতদের পুজো হয়ে ওঠে। সময়ের সঙ্গে বন পাতলা হতে থাকে। ডাকাতরাও আর ডাকাত থাকে না। শুধু রয়ে যান দেবী। তাঁর মাহাত্ম্য গ্রাম ছাড়িয়ে দূরদূরান্তে ছড়িয়ে পড়ে। ভক্তদের বিশ্বাস, দেবী জাগ্রত। এখানে পুজো দিলে মনস্কামনা পূর্ণ হয়। রোগ-ব্যাধি সেরে যায়। মূল পুজো হয় কার্তিক ও পৌষ মাসে (Kali Puja 2023), আর নিত্যপুজো তো হয়ই।

    অনেকে আসেন মানত করতে (Kali Puja 2023)

    দীপান্বিতা অমাবস্যায় এই মন্দিরে সবচেয়ে বেশি ভক্ত সমাগম ঘটে। অনেকে আসেন মানত করতে। মনস্কামনা পূর্ণ হলে আবার আসেন পুজো দিতে। খলিসানির আশেপাশে এখন অনেক জায়গাতেই কালীপুজো হয়। তবে অন্য কোথাও পুজো দেওয়ার আগে ভক্তরা এই মন্দিরে আসেন পুজো দিতে। দেবী এখানে দক্ষিণাকালী। এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ১২ বছর অন্তর দেবীর বিগ্রহ পরিবর্তন করা হয়। নিরঞ্জন হয় মন্দির সংলগ্ন পুকুরে। তারপর মহালয়ায় তাতে নতুন করে প্রাণপ্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রাণপ্রতিষ্ঠার পরে এই প্রথম দীপান্বিতা অমাবস্যা, তাই এবারে অন্যবারের তুলনায় ভিড় (Kali Puja 2023) আরও বেশি হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

     

    দেশের খবরদশের খবরসব খবরসবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

  • Kali Puja 2023: সাতের দশকের ‘রবিনহুড’! ফাটাকেষ্টর কালীপুজোর গল্প আজও ঘোরে মুখে মুখে

    Kali Puja 2023: সাতের দশকের ‘রবিনহুড’! ফাটাকেষ্টর কালীপুজোর গল্প আজও ঘোরে মুখে মুখে

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: তাঁকে ঘিরেই তৈরি হয়েছিল ‘এমএলএ ফাটাকেষ্ট’ সিনেমা। এই ফিল্মে মিঠুন চক্রবর্তীর সংলাপ-‘‘মারব এখানে, লাশ পড়বে শ্মশানে’’ আজও সমানভাবে জনপ্রিয় হয়ে রয়েছে। জানেন, কে ছিলেন এই ‘ফাটাকেষ্ট’? এর উত্তর জানতে আমাদের যেতে হবে সাতের দশকে নকশাল আন্দোলনে উত্তাল কলকাতায়। প্রতিদিনই তখন হত্যালীলা চলছে, সারা রাজ্যের অলিগলি থেকে কলকাতার রাজপথে তখন রক্তের দাগ। কোথাও বৃষ্টির ফোঁটার মতো গুলিবর্ষণ হয়, তো কোথাও মুড়ি-মুড়কির মতো বোমাবাজি চলে। কলেজ স্ট্রিটের দেওয়ালে তখন নকশালদের দেওয়াল লিখন ‘ফাটাকেষ্টর মুণ্ডু চাই’। তৎকালীন সময় থেকেই জনশ্রুতি রয়েছে, ‘নকশালদের ছোড়া বোমা নাকি তাঁর পায়ের কাছে পড়েও ফাটেনি, ওই বোমা তিনি উল্টোদিকে শট মারেন ঠিক ফুটবলের ধাঁচে’। তিনি যে ফাটাকেষ্ট। বোমা নিয়ে ফুটবল খেলা তো তাঁরই সাজে।

    কলেজ স্ট্রিটের ‘মসীহা’ ফাটাকেষ্ট

    এলাকার মসীহা বলুন অথবা রবিনহুড। অমিতাভ বচ্চন অভিনীত ‘শাহেনশা’ চরিত্র তাঁর সঙ্গে অনেকাংশে মেলে, এমনটাই বিশ্বাস ছিল তাঁর ফ্যানদের। কলেজ স্ট্রিটের রাস্তা ধরে এলাকার মেয়েরা ‘নাইট শো’ দেখে নিশ্চিন্তে রাতে একাকী ফিরতে পারতেন যখন দেখতেন, তাঁদের পাহারার জন্য ‘ফাটাকেষ্ট’ বারোয়ারি মন্দিরের মেঝেতে তোয়ালে বিছিয়ে রাত্রিযাপন করছেন।

    কালীমায়ের ভক্ত ফাটাকেষ্ট

    আসল নাম কৃষ্ণচন্দ্র দত্ত। ‘নব যুবক সংঘ’-এর কালীপুজোর উদ্যোক্তা। নকশাল আমলে কলেজ স্ট্রিটে দুই মস্তানের সঙ্গে ব্যাপক ছুরির লড়াই হয় ‘কালীভক্ত’ কৃষ্ণচন্দ্র দত্তের। লড়াইয়ে জিতলেও শরীরে ব্যাপক ছুরিকাঘাতের কারণে ক্ষত সৃষ্টি হয় তাঁর। ভর্তি হন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে। সুস্থ হয়ে পাড়ায় ফিরলে তাঁর নাম হয় ‘ফাটাকেষ্ট’। কলেজ স্ট্রিটের এই ‘মসীহা’-র এমন অদ্ভূত নামকরণের কারণ তাঁর মুখমণ্ডল জুড়ে থাকা বসন্তের দাগ বলেও মনে করেন অনেকে। ছোটখাট চেহারা, সুঠাম দেহের অধিকারী ফাটাকেষ্টর কলেজ স্ট্রিটের কালীপুজো প্রসিদ্ধ হয়ে রয়েছে সেই ছয়ের দশক থেকেই। কালীমায়ের ভক্ত কৃষ্ণচন্দ্র দত্ত ওরফে ফাটাকেষ্ট ‘তন মন ধন’ দিয়ে মায়ের আরাধনা করতেন। তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থশঙ্কর রায় পুজোর উদ্বোধন করতেন। সারা এলাকা জুড়ে চোখ ধাঁধানো আলোকসজ্জা থাকত, বিভিন্ন থিম দ্বারা সাজানো হত মায়ের মণ্ডপ। বিশালকায় মায়ের মূর্তির দর্শন করতে কাতারে কাতারে মানুষজন আসতেন।

    প্রচলিত বিশ্বাস মতে, নব যুবক সঙ্ঘের কালীপুজোয় একবার এক মহিলার ভর হয় কালীমূর্তির সামনে। ওই মহিলা তখন বলতে থাকেন ‘‘ছোট গ্লাসের জলে আমার চেষ্টা মেটে না, আমাকে বড় গ্লাসে জল দিতে পারিস না তোরা?’’ তখন দেখা গেল মাতৃ প্রতিমার নৈবেদ্যতে রাখা জলের পাত্রটি সত্যিই ছোট। এই ঘটনার পরে বড় গ্লাসে দেবী কালীকে জলদানের রীতি রয়েছে ফাটাকেষ্টর কালীপুজোতে।

    সিনেজগতের হুজ-হু’দের চাঁদের হাট

    কালীপুজোর প্রাক মুহূর্তে একবার পরিচালক দুলাল গুহর ছবির কাজে কলকাতায় এসেছিলেন অমিতাভ বচ্চন, সদ্য মুক্তি পেয়েছিল ‘নমক হালাল’ সিনেমা। বাচ্চা থেকে বুড়ো অবধি তখন মোহাচ্ছন্ন নমক হালাল-এর সংলাপে। ফাটাকেষ্টর ঘনিষ্ঠ ছিলেন পরিচালক দুলাল গুহ। মূলত তাঁরই অনুরোধে সেবার নব যুবক সঙ্ঘের কালীপুজো উদ্বোধন করেন অমিতাভ বচ্চন। মঞ্চ বাঁধা হয় তাঁর জন্য। কলকাতার প্রাণকেন্দ্রে তখন অমিতাভ বচ্চন বলছেন সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত ‘নমক হালাল’ সিনেমার একের পর এক বিখ্যাত সংলাপ। শুধু তাই নয়। ফাটাকেষ্টর কালীপুজোতে তিনি মায়ের জন্য গড়িয়ে দিয়েছিলেন হীরের নাকছাবি। 

    ফাটাকেষ্টর পুজোয় হাজির অমিতাভ বচ্চন ও বিনোদ খান্না (ছবি-সংগৃহীত)

    দেশ-বিদেশ খ্যাত অসংখ্য সেলেব্রিটি যুক্ত থেকেছেন ফাটাকেষ্টর কালীপুজোর উদ্বোধনে। এই তালিকায় যে যে নামগুলো ছিল একবার চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক। সিনেমা জগতের তারকা বিনোদ খান্না, শত্রুঘ্ন সিনহা থেকে সঙ্গীত জগতের হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, রাহুল দেব বর্মন, আশা ভোঁসলে, ক্রীড়া জগতের বিশ্ববিখ্যাত গোলকিপার লেভ ইয়াসিন-প্রতি বছর কালীপুজো উদ্বোধনে চাঁদের হাট বসতো নব যুবক সঙ্ঘে। প্রয়াণের আগের বছর অবধি ওই পুজোতে এসেছেন স্বয়ং উত্তম কুমার অবধি।

    ফাটাকেষ্টর পুজোয় মহানায়ক উত্তম কুমার (ছবি-সংগৃহীত)

    জগৎজোড়া খ্যাতির নেপথ্য কী?

    ১৯৯২ সালে প্রয়াত হন কৃষ্ণচন্দ্র দত্ত ওরফে ফাটাকেষ্ট। কয়েক বছর আগেও তাঁর কালীপুজোর উদ্বোধন করে গেছেন প্রয়াত প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। উত্তর কলকাতায় সীতারাম ঘোষ স্ট্রিটের এই কালীপুজো আজও একটা ‘মিথ’। নবযুবক সঙ্ঘের কালী পুজোর জগৎজোড়া খ্যাতির নেপথ্যে ছিল কালী মায়ের ভক্ত, ছোটখাট চেহারার ওই দাপুটে মানুষটি। যাঁর কথায় নাকি এলাকার বাঘে-গরুতে একসঙ্গে জল খেত বলেই বিশ্বাস করেন ওই এলাকার বাসিন্দারা।

     

    দেশের খবরদশের খবরসব খবরসবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

  • Kali Puja 2023: আড়ম্বর নয়, ভক্তি এবং নিয়মনিষ্ঠাই বয়রা কালীবাড়ির পুজোর অন্যতম বৈশিষ্ট্য

    Kali Puja 2023: আড়ম্বর নয়, ভক্তি এবং নিয়মনিষ্ঠাই বয়রা কালীবাড়ির পুজোর অন্যতম বৈশিষ্ট্য

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: শুধু উত্তর দিনাজপুর নয়, বলতে গেলে গোটা উত্তরবঙ্গের প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী কালীপুজোগুলির মধ্যে আজও উজ্জ্বল উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জের বয়রা কালীবাড়ির পুজো। আড়ম্বর নয়, ভক্তি এবং নিয়মনিষ্ঠাই এই পুজোর (Kali Puja 2023) অন্যতম বৈশিষ্ট্য। প্রাচীনত্ব এবং দেবীর অলৌকিক মহিমার টানেই পুজোর রাতে বহু মানুষ ভিড় করেন এখানে।

    বয়রা গাছের নিচে পুজোর প্রচলন (Kali Puja 2023)

    উল্লেখ্য, উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ শহরে অবস্থিত বয়রা কালীবাড়ির কালীপুজো অনেক প্রাচীন। এই কালীবাড়ির পুজোর বয়স কত, তার হিসেব অজানা সকলের। কথিত আছে, প্রবীণ এক সাধক বয়রা গাছের নিচে প্রথম কালীপুজোর প্রচলন করেন। শোনা যায়, এখানে দুটি নদী ছিল। একটির নাম রুহিতর এবং অপরটির নাম শ্রীমতি। এই দুটি নদী দিয়ে বড় বড় নৌকা করে বাণিজ্য করতে আসতেন দূর দূরান্ত থেকে অনেক বণিক। রুহিতর নদীটি এখন মজে গিয়েছে ও শ্রীমতি নদীটিরও প্রায় একই অবস্থা। এখানে বণিকরা এসে বিশ্রাম করতেন এবং সেই জায়গাটি ছিল জঙ্গলে ভর্তি। পাশে একটি ছোট ঘর ছিল। বর্তমানে সেই জায়গাটির নাম গুদরি বাজার। মূলত সেই ঘরটিতেই স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতায় গড়ে ওঠে দেবীর নতুন মন্দির। এরপর কালিয়াগঞ্জ থানার পুলিশ আধিকারিক সুকুমার ঘোষ মন্দিরটির সংস্কার করেন। এরপর থেকে দেবীর অলৌকিক ক্ষমতার কথা লোকমুখে ছড়িয়ে পড়ে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে। মন্দিরে বসানো হয় দেবীর অষ্টধাতুর মূর্তিও। আর বর্তমানে কালীপুজোর দিন থেকেই হাজার হাজার মানুষের সমাগম হয় এই মন্দির প্রাঙ্গণে (Kali Puja 2023)। শুধু জেলা নয়, জেলার বাইরে থেকেও লোক সমাগম হয় এই মন্দির প্রাঙ্গণে।

    মানত করেন অনেকেই (Kali Puja 2023)

    শাস্ত্রমতে দেবী পূজিতা হন এখানে। এই কালীবাড়ির অলৌকিক ক্ষমতার নানা গল্পকথা ছড়িয়ে রয়েছে সর্বত্র। নিজ নিজ মনস্কামনা পূরণে কালীপুজোর রাতে ভক্তদের প্রার্থনা আর মন্ত্রোচ্চারণে সরগরম হয়ে ওঠে এই মন্দির প্রাঙ্গণ। পুজো কমিটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই কালীপুজো দীর্ঘদিনের প্রাচীন। মানুষ ভক্তি আর নিষ্ঠা মেনেই মায়ের মন্দিরে পুজো দেন। পুজোর কটা দিন দূরদূরান্ত থেকে বহু মানুষ এখানে বেড়াতে আসেন। পুজো দেন মায়ের কাছে। মানত করেন অনেকেই। কালীপুজোর আর বেশি দেরি নেই৷ তবে দৈনিক মায়ের পুজো হয়। প্রচুর মানুষ প্রতিদিন এখানে পুজো দিতে আসেন। ভক্তি আর নিষ্ঠা মেনে এখানে পূজিতা হন বয়রা মা (Kali Puja 2023)।

     

    দেশের খবরদশের খবরসব খবরসবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

  • Kali Puja 2023: শুধু জবা নয়, হরিপালের ‘সবুজ কালী’র পুজো হয় জুঁই ফুল দিয়ে!

    Kali Puja 2023: শুধু জবা নয়, হরিপালের ‘সবুজ কালী’র পুজো হয় জুঁই ফুল দিয়ে!

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: হুগলি জেলার অন্তর্গত হরিপাল থানার শ্রীপতিপুর পশ্চিম গ্রাম। এখানকার ৭৩ বছরের সিদ্ধেশ্বরী কালীমাতার মন্দির ও অধিকারী বাড়ির ইতিহাস বেশ চমকপ্রদ। শারদ উৎসব শেষ। সামনে দীপাবলি। চারদিকে ধুমধাম করে হবে কালীপুজো (Kali Puja 2023)। সাধারণত নিকষ কালো অথবা শ্যামলা গায়ের মায়ের প্রতিমা দেখতে অভ্যস্ত আমরা। কিন্তু মা কালীর গায়ের রং সবুজ! তাও হয় নাকি? এই প্রতিমা দেখতে গেলে আসতে হবে হুগলির হরিপালের ওই ছোট্ট সুন্দর গ্রামে। হুগলি জেলার সুপ্রাচীন বর্ধিষ্ণু গ্রাম হরিপাল। এই অঞ্চলে একটি ছোট জনপদ শ্রীপতিপুর গ্রাম। এই গ্রামের অধিকারী পরিবারে দীর্ঘদিন যাবৎ পূজিতা মা সবুজ কালী। এখানে সব চেয়ে আকর্ষণীয় ব্যপার হল, মা কালীর গায়ের রং কচি কলাপাতার মতো সবুজ। বেশ জাগ্রত বলে খ্যাত এই সবুজ মা। আর এই মা কালীকে ঘিরে রয়েছে এক সুদীর্ঘ ইতিহাস।

    ৭৩ বছর আগে প্রতিষ্ঠা (Kali Puja 2023)

    ১৩৫৭ সালে এই মূর্তি প্রতিষ্ঠা করেন বটকৃষ্ণ অধিকারী মহাশয়। তিনি এই শ্রীপতিপুরেরই বাসিন্দা ছিলেন। বৈষ্ণবসুলভ আচরণ ছোট থেকেই জন্মসূত্রে পেয়েছিলেন অধিকারী মশাই। তৎকালীন ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায় পাশ করার পর কয়েক বছর ভিন রাজ্যে চাকরি করেন। তারপর ভাগ্যচক্রে আবারও গ্রামে এসে চাষাবাদ শুরু করেন। অতঃপর পরিবারের আদেশ অনুযায়ী জনৈক আঙুরবালা দেবীর সঙ্গে বিবাহসূত্রে আবদ্ধ হন। কিন্তু সংসারে তাঁর মতি ছিল না। মাঠে-ঘাটে, শ্মশানে ঘুরে বেড়াতেন। এরকম কয়েক বছর চলার পর জানা যায়, কোনও এক মাঠে তিনি গরুর খুঁট বাঁধছিলেন, সেই মুহূর্তে তাঁর পিছন থেকে এক সাদা বস্ত্র পরিহিত সন্ন্যসী এসে বলেন, অমুক স্থানে অমুক সময়ে তোমার দীক্ষা হবে। এর পরের ঘটনা সবটাই গুপ্ত।

    কী জানালেন পরিবারের সদস্যরা?

    কথা হচ্ছিল বটকৃষ্ণর সুযোগ্য নাতি দেবজ্যোতি অধিকারীর সঙ্গে। তিনি জানান, এরপর বটকৃষ্ণ শ্মশানে সাধনা করতে করতে সিদ্ধিলাভ করেন, এবং স্বপ্নাদৃষ্ট হয়ে মা কালীর মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। কিন্তু গোঁড়া বৈষ্ণব পরিবারে জন্ম। তাঁর বাড়িতে কেউ তিলক সেবা রাধাগোবিন্দের নাম না করে জলস্পর্শ করেন না। সেই বৈষ্ণব বাড়িতে কালীপুজো! তৎকালীন সমাজের মাতব্বররা রে রে করে উঠলেন। বললেন নৈব নৈব চ। কিন্তু সমস্ত বাধা অতিক্রম করে তিনি বাড়িতে কালীর ঘট স্থাপন করলেন। বেশ কিছুদিন পর আবার তিনি স্বপ্ন দেখেন, মায়ের মূর্তি স্থাপনের। এবার তিনি দেখেন, অদ্ভুত এক স্বপ্ন। কৃষ্ণ ও কালী একই অঙ্গে বিরাজ করছেন। গাত্রবর্ণ যার সবুজ। একদম কচি কলাপাতার মতো। এভাবেই প্রতিষ্ঠিত হল সবুজ কালী। রটন্তী পূজার দিন প্রতিষ্ঠা করেন এই সবুজ কালী মাকে (Kali Puja 2023)।

    প্রতিটি অমাবস্যাতেই আসেন বহু ভক্ত (Kali Puja 2023)

    এখানে মা পরম বৈষ্ণব। সারা বছর এই বৈষ্ণব বাড়িতে পূজিতা হন মা সবুজ কালী। পাশাপাশি অদ্ভুত কিছু নিয়ম আছে এখানে। গুপ্ত তন্ত্র মতে পুজো হয়। মা পঞ্চমুন্ডির আসনের ওপর পূজিত হন। যেহেতু বৈষ্ণব বাড়ি, তাই বলি প্রথার চল নেই। এখানে দেবী পরম বৈষ্ণব। কপালে তিলক কাটা হয়। যদিও মায়ের ভোগ আমিষ। বিশেষত ইলিশ মাছের ভোগ মায়ের প্রিয়। সাধারণত মাকালীর প্রিয় রং লাল বলে জবা ফুল দিয়ে পুজো করা হয়। যদিও এই সবুজ কালীর পুজোর ফুল জুঁই। আরেকটি বৈশিষ্ট্য হল বাঁশি। এখনও মাকে বাঁশি বাজিয়ে শোনান সেবাইতরা। মঙ্গলারতির মাধ্যমে পুজো হয়। প্রতিটি অমাবস্যাতেই বহু ভক্ত আসেন এই মায়ের (Kali Puja 2023) দর্শনে। মায়ের কাছে প্রার্থনা করে অনেকেই সুফল পেয়েছেন বলে বিশ্বাস গ্রামবাসীদের।

     

    দেশের খবরদশের খবরসব খবরসবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

  • Kali Puja 2023: কার্তিক মাসে ঘরে ঘরে কেন জ্বালানো হয় আকাশ প্রদীপ? জানুন মাহাত্ম্য

    Kali Puja 2023: কার্তিক মাসে ঘরে ঘরে কেন জ্বালানো হয় আকাশ প্রদীপ? জানুন মাহাত্ম্য

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: লতা মঙ্গেশকরের কণ্ঠে ‘আকাশ প্রদীপ জ্বলে দূরের তারার পানে চেয়ে’ গানটি বাঙালির এক নস্টালজিয়া। এই ‘আকাশ প্রদীপ’ (Akash Pradip) কয়েক বছর  আগেও কার্তিক মাসে বাংলার ঘরে ঘরে জ্বলে উঠত। এখন অবশ্য আধুনিকতার ছোঁয়ায় লোকাচার যেন হারিয়ে যাচ্ছে। তবুও গ্রাম বাংলায় কার্তিক মাসের হালকা শীতের চাদর মোড়ানো সন্ধ্যায় সন্ধান পাওয়া যায় ‘আকাশ প্রদীপ’-এর।

    পুরাণ কী বলছে?

    পুরাণ মতে, দীর্ঘ চার মাসের যোগনিদ্রা শেষে, কার্তিক মাসে (Kartik Masa) জেগে ওঠেন ভগবান বিষ্ণু (Lord Vishnu)। তাঁকে প্রসন্ন রাখতে, ভক্তরা কার্তিক মাসের প্রথম দিন থেকে সংক্রান্তির দিন পর্যন্ত প্রতিদিন সন্ধ্যাবেলায় মাটির প্রদীপে ঘি বা তেল দিয়ে জ্বালিয়ে রাখেন। বাড়ির সব থেকে উঁচু স্থানে উত্তর অথবা পূর্ব দিকে মুখ করে রেখে এই প্রদীপ জ্বালানো হয়। লাঠির ডগায় ছাদের উপরেও এই প্রদীপ দিতে দেখা যায়। বর্তমান সময়ে প্রদীপের বদলে বৈদ্যুতিক বাতিও দেন অনেকে। বিশ্বাস, ভক্তদের আকাশ প্রদীপ (Akash Pradip) অর্পণে সন্তুষ্ট হয়ে ভগবান বিষ্ণু তাঁদের মনস্কামনা পূরণ করেন। সুখ, শান্তি, সমৃদ্ধিতে ভরে ওঠে ভক্তদের জীবন। আরোগ্য ও আশীর্বাদ প্রদান করেন ভগবান বিষ্ণু।

    রয়েছে আরও বিশ্বাস…

    অন্য একটি বিশ্বাস মতে, আশ্বিন মাসের মহালয়ার দিন পূর্বপুরুষদের উদ্দেশে তর্পণ করা হয়। তার পরের একটি মাস তাঁরা আনন্দ উৎসবে সামিল হন এবং পরলোকের উদ্দেশে গমন করেন কালীপুজোর (Kali Puja 2023) অমাবস্যায়। এই প্রদীপ জ্বেলে আবাহন করা হয় পিতৃলোকে, প্রেতলোকে অবস্থান করা পূর্বপুরুষদেরও। যাতে তাঁরা আকাশ প্রদীপের আলোয় পথ চিনে আশীর্বাদ দিতে আসতে পারেন উত্তরসূরীদের।

    হিন্দু ধর্মে প্রদীপের তাৎপর্য

    প্রদীপ হিন্দু ধর্মের যে কোনও অনুষ্ঠানের সব থেকে অপরিহার্য এবং গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। ধর্মীয় আচার, রীতি সবকিছুই সম্পন্ন হয় প্রদীপের দ্বারা। ভগবান বিষ্ণুর বন্দনা করতে তাই বেছে নেওয়া হয়েছে আকাশ প্রদীপ (Akash Pradip)। ভগবান বিষ্ণুর উদ্দেশে সমর্পিত এই প্রদীপের ধরন আলাদা আলাদা হয় এবং তা ভক্তদের নানা মনোবাঞ্ছা পূরণের লক্ষ্যে জ্বালানো হয়। একনজরে আমরা দেখে নিই আকাশ প্রদীপের ধরনগুলি।

    ১. দ্বিমুখী প্রদীপ: ভগবানের অসীম কৃপা লাভ, আশীর্বাদ লাভ এবং দীর্ঘজীবনের অধিকারী হওয়া যায় দ্বিমুখী প্রদীপ জ্বালালে। এটাই ভক্তদের বিশ্বাস।

    ২. ত্রিমুখী প্রদীপ: লোকবিশ্বাস, এই প্রদীপ জ্বালালে শত্রুর কু-নজর থেকে ভগবান বিষ্ণু ভক্তদের রক্ষা করেন।

    ৩. চতুর্মুখী প্রদীপ: সন্তানের দীর্ঘজীবন কামনা করে মা-বাবারা এই প্রদীপ জ্বালেন।

    কার্তিক মাসব্যাপী সন্ধ্যার সময় অনেক গৃহে তুলসীতলায় প্রদীপ জ্বালানোর রীতি রয়েছে‌। পুকুরে বা নদীতেও অনেক সময় প্রদীপ ভাসানো হয় ভগবানের আশীর্বাদ এবং কৃপা লাভের উদ্দেশ্যে। আকাশ প্রদীপ দেওয়ার মন্ত্রটি হলো-‘‘আকাশে সলক্ষ্মীক বিষ্ণোস্তোষার্থং দীয়মানে প্রদীপঃ শাকব তৎ।’’ আকাশে লক্ষ্মীর সঙ্গে অবস্থান করছেন যে বিষ্ণু, তাঁর উদ্দেশে দেওয়া হল এই প্রদীপ (Kali Puja 2023)।

    দেহের প্রতীক প্রদীপ

    ঘটের মতো প্রদীপকেও অনেক পণ্ডিত দেহেরই প্রতীক বলে মনে করেন। আকাশ প্রদীপও (Akash Pradip) নশ্বর শরীরের মতো ক্ষিতি, অপ, তেজ, মরুৎ ও ব্যোম-এই পঞ্চভূতে তৈরি। ক্ষিতি অর্থাৎ মাটি, কায়া তৈরি করে। অপ অর্থাৎ জলে আকার পায়। তেজ অর্থাৎ আগুন, আত্মার মতোই স্থিত হয় তার অন্তরে। মরুৎ অর্থাৎ হাওয়া আগুনকে জ্বলতে সাহায্য করে। আর ব্যোম অর্থাৎ অনন্ত শূন্য জেগে থাকে প্রদীপের গর্ভে।

     

    দেশের খবরদশের খবরসব খবরসবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

  • Kali Puja 2023: রানি রাসমণি প্রতিষ্ঠিত দক্ষিণেশ্বর কালীমন্দিরের ইতিহাস জানুন

    Kali Puja 2023: রানি রাসমণি প্রতিষ্ঠিত দক্ষিণেশ্বর কালীমন্দিরের ইতিহাস জানুন

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বছরের বিভিন্ন সময়ে অমাবস্যা তিথিতে কালীপুজো দেখা যায়। তবে কার্তিক মাসের দীপান্বিতা কালীপুজো (Kali Puja 2023) সবথেকে প্রসিদ্ধ। আয়োজন, জাঁকজমক, ধুমধাম সবদিক থেকেই বেশ জনপ্রিয় দ্বীপান্বিতা কালীপুজো।  জাগ্রত কালী মন্দিরগুলিতে কার্তিকী অমাবস্যায় ভক্তদের ব্যাপক ভিড় লক্ষ্য করা যায়। কালী আরধনা বা কালী সাধনা বললেই উঠে আসে দক্ষিণেশ্বরের ভবতারিণী মন্দির। কামারপুকুরের গদাধর চট্টোপাধ্যায় এখানেই রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব হয়েছিলেন। কথিত আছে, হুগলি নদীর তীরে অবস্থিত এই দক্ষিণেশ্বরের মন্দিরকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠা করেন রানি রাসমণি, সেটা ছিল ১৮৫৫ সালের ৩১ মে।

    দক্ষিণেশ্বর কালীমন্দিরের অধিষ্ঠাত্রীদেবী ‘ভবতারিণী’ 

    এখানে কালী মন্দিরের অধিষ্ঠাত্রী দেবী ভবতারিণী নামে প্রসিদ্ধ। জনশ্রুতি রয়েছে, রানি রাসমণি মা কালীর স্বপ্নাদেশ পেয়েই এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন এবং মন্দির প্রতিষ্ঠা কালে রানিকে সব থেকে বেশি সাহায্য করেছিলেন রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের দাদা রামকুমার চট্টোপাধ্যায়। পরবর্তীকালে রামকুমার চট্টোপাধ্যায় দক্ষিণেশ্বরের কালীমন্দিরের (Kali Puja 2023) প্রধান পুরোহিত হন। রামকুমারের হাত ধরেই কামারপুকুরের গদাধর চট্টোপাধ্যায়ের প্রবেশ ঘটে। দক্ষিণেশ্বরের মন্দিরের দায়িত্বভার গ্রহণ করার পরে রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের আকর্ষণে এক মহাতীর্থে পরিণত হয় ভবতারিণী মন্দির।

    তরুণ নরেনের রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের সঙ্গে সাক্ষাৎ

    এখানেই আগমন ঘটে নরেন্দ্রনাথ দত্তের যিনি পরবর্তীকালে স্বামী বিবেকানন্দ হবেন। তরুণ নরেন্দ্রনাথ দত্ত সাংসারিক অনটনে ভুগছেন তখন। এমনই সময় রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব তাঁকে পাঠালেন ভবতারিণীর সামনে। অর্থ কষ্ট মেটানোর প্রার্থনা করতে বললেন রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব। ভবতারিণীর সামনে নরেন্দ্রনাথ দত্ত চাইলেন বিবেক, বৈরাগ্য, জ্ঞান এবং ভক্তি। দক্ষিণেশ্বরে কালীমন্দির (Kali Puja 2023) চত্বরে একাধিক দেবদেবীর মন্দিরও রয়েছে। দ্বাদশ শিবমন্দির নামে পরিচিত রয়েছে বারটি আটচালার মন্দির। মন্দিরের উত্তর দিকে রয়েছে রাধাকান্ত মন্দির, দক্ষিণে রয়েছে নাটমন্দির। উত্তর-পশ্চিম কোণে রয়েছে রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের বাসগৃহ। বছরের সারাবছর ধরেই ভক্তদের ভিড় লেগেই থাকে মন্দিরে। তবে কালীপুজো এবং কল্পতরু উৎসবে বিপুল জনসমাগম ঘটে এখানে।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।

  • Kali Puja 2023: চুল্লির আগুনে পুড়ছে শব, কেওড়াতলায় “শ্মশানে জাগিছে শ্যামা মা..”

    Kali Puja 2023: চুল্লির আগুনে পুড়ছে শব, কেওড়াতলায় “শ্মশানে জাগিছে শ্যামা মা..”

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বৈদ্যুতিক চুল্লিতে পুড়ছে শবদেহ। পাশেই তন্ত্রমতে পুজো হচ্ছে শ্মশানকালীর (Kali Puja 2023)। ফি বছর কালীপুজোর রাতে এ ছবি দেখা যায় কালীঘাটের কেওড়াতলা মহাশ্মশানে। এক সময় এখানে দেহ দাহ হত কাঠের চুল্লিতে। পরে হয়েছে বৈদ্যুতিক চুল্লি। চুল্লি জ্বলে প্রায় সারাদিনই। কালীপুজোর রাতেও এর বিরাম থাকে না। এই আবহেই এখানে হয় মাতৃ আরাধনা।

    মাতৃমূর্তি করুণাময়ী

    কেওড়াতলায় মাতৃমূর্তি করুণাময়ী। ১৬ ফুট উচ্চতার মাতৃমূর্তি লোলজিহ্বা নয়, হাস্যময়ী। অসুর মুণ্ডমালিনী নয়। দেবীর দুই হাত। ডান হাতে নৈবেদ্যরূপী মাংস, অন্য হাতে মদ। অনেকেই এখানে দেবীকে মদ্য মানত করেন। সেই পানপাত্র থেকে মদ্যের একটা অংশ নিয়ে পুরোহিত দেবীর হাতে থাকা পাত্রে রাখেন। বাকিটা প্রসাদ করে তুলে দেওয়া হয় মানতকারীর হাতে। কালীপুজোয় বলিদান সিদ্ধ। তাই বলিদানের রীতি শুরু থেকেই রয়েছে এখানে। ভক্তদের (Kali Puja 2023) মানত করা ছাগ বলি হয়। ভক্তদের বিশ্বাস, কেওড়াতলার মা কালী কাউকে শূন্য হাতে ফেরান না।

    রাতভর চলল পুজো-হোম-বলিদান

    এখানে শ্মশানকালী পুজোর একটি ইতিহাস রয়েছে। গভীর জঙ্গলে আকীর্ণ এই এলাকায় এক সময় ছিল শুধুই শ্মশান। মূলত দেহ দাহ করতেই লোকজন আসতেন এখানে। এই জায়গাটিকেই সাধনস্থল হিসেবে বেছে নিলেন জনৈক চন্দ্রমোহন ভট্টাচার্য ও মতিলাল ভট্টাচার্য। এক অমাবস্যার রাতে এখানে এসে হাজির হন ভিনদেশি এক তান্ত্রিক। হাতে লৌহনির্মিত একটি ছোট্ট কালীমূর্তি। সাধনারত দুই ব্রহ্মণকে তিনি বললেন, “আজকের এই রাত্রির লগ্ন মাতৃপূজার শুভক্ষণ। আমি এখানে দেবীর আরাধনা করতে চাই। আপনারা আমায় সহযোগিতা করুন।” তখনই ব্রাহ্মণরা আয়োজন করলেন মাতৃ আরাধনার। স্থানীয় জনবসতি থেকে জোগাড় হল পুজোর উপকরণ। রাতভর চলল পুজো-হোম-বলিদান। তন্ত্রমতে সাঙ্গ হল দেবী আরাধনা।  

    আরও পড়ুুন: পুরীর জগন্নাথদেবের মহাপ্রসাদের মূল্য একলাফে বেড়ে ৩ গুণ! ভক্তমহলে অসন্তোষ

    আকাশে ভোরের আলো ফোটার আগেই দেবীমূর্তি নিয়ে কোথায় যেন চলে গেলেন তান্ত্রিক। তবে তাঁর পদাঙ্ক অনুসরণ করে আজও হচ্ছে পুজো। যেহেতু তান্ত্রিক তাঁর দেবীমূর্তি নিয়ে চলে গিয়েছেন, তাই এখন মৃণ্ময়ী প্রতিমা গড়ে হয় পুজো। তবে পুজোর নিয়ম অনুসরণ করা হয় সেই তান্ত্রিকের মতোই। জনশ্রুতি এই (Kali Puja 2023) যে, দ্বীপান্বিতা অমাবস্যার রাতে যখন মায়ের আরাধনা হয়, তখনও জ্বলতে থাকে চিতা। কালীপুজোর রাতে এখানে এলে মনে পড়ে কাজী নজরুল ইসলামের সেই কথা কটি, “শ্মশানে জাগিছে শ্যামা মা…।”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।

  • Kali Puja 2023: দেবীর বাঁ পা সিংহের উপর, ডান-পা পদ্মফুলে! জানুন হাজার হাত কালীর মাহাত্ম্য

    Kali Puja 2023: দেবীর বাঁ পা সিংহের উপর, ডান-পা পদ্মফুলে! জানুন হাজার হাত কালীর মাহাত্ম্য

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: হাওড়ার কালীপুজোগুলির মধ্যে অন্যতম শিবপুরের হাজার হাত কালী মন্দিরের পুজো (Kali Puja 2023)। শিবপুরের মন্দিরতলা এলাকায় এই কালী ঠাকুরের নাম অনুসারে এলাকার নাম হয়েছে হাজার হাত কালীতলা। কালীপুজোর দিন বিশেষ পুজো হয় এখানে। হাজার হাত কালীর এক অদ্ভুত রূপ। দেবীর বাঁ হাতে খড়্গ, ডান হাতে পঞ্চশূল, বাঁ পা সিংহের উপরে ও ডান-পা পদ্মফুলের উপরে। দুটি পা দু-দিকে থাকার অর্থ, মা সব সময় জলেও রয়েছেন, স্থলেও রয়েছেন। আর ডান হাতে পঞ্চশূল দিয়ে মা সকলকে রক্ষা করছেন। আর যদি কেউ ভুল করে বা ভুল পথে যায়, তাহলে মা তাঁকে খড়্গ দেখিয়ে সচেতন করার বার্তাও দিচ্ছেন। মা কালীর এই রূপ সচরাচর দেখা যায় না।

    তন্ত্র মতে পূজিত হয়ে আসছেন দেবী (Kali Puja 2023)

    তবে দক্ষিণ ভারতে বিশেষ জনপ্রিয় হাজার হাত কালী। হাওড়ার শিবপুরে হাজার হাত কালীতলায় প্রায় ২৫ ফুট উঁচু মায়ের এই মূর্তি রয়েছে। শোনা যায়, এখনও পর্যন্ত কেউ মায়ের হাজারটি হাত গুনতে পারেননি। গোনা বারণও রয়েছে। প্রচলিত লোককথা অনুযায়ী, স্থানীয় মুখোপাধ্যায় বাড়ির ছেলে তান্ত্রিক আশুতোষ মুখোপাধ্যায়কে মা চণ্ডী স্বপ্নাদেশ দিয়ে কালীর এই রূপ দেখান এবং মন্দির তৈরির আদেশ দেন। সেই স্বপ্নাদেশ মোতাবেক তিনি মন্দির প্রতিষ্ঠা করে দেবীর এই রূপের পুজো (Kali Puja 2023) করতে ব্যাকুল হয়ে ওঠেন। তবে এই মন্দির নির্মাণের বিপুল ব্যয়ভার বহন করার সাধ্য ছিল না তান্ত্রিক আশুতোষ মুখোপাধ্যায় বা তাঁর পরিবারের। আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের এই ইচ্ছাপূরণের জন্য এগিয়ে আসেন স্থানীয় ধনী হালদার পরিবার। তাদের চেষ্টায় ১৮৭০ সালে স্থাপিত হয় হাজার হাত কালী মন্দির এবং দেবীর এই বিশেষ রূপ এখানে প্রতিষ্ঠিত করা হয়। সেই থেকে তন্ত্র মতে পূজিত হয়ে আসছেন দেবী।

    কিছু প্রার্থনা করলে সেটি পূর্ণ হয় (Kali Puja 2023)

    বলিপ্রথা এখানে নেই এবং প্রাচীন প্রথা মেনে আজও মুখোপাধ্যায় পরিবারের সদস্যরা এখানে পুজো করে আসছেন। মায়ের পুজো ও মঙ্গলারতিতে যাতে কোনও রকম অসুবিধা না হয়, সেজন্য আশুতোষ মুখোপাধ্যায় মায়ের মন্দিরের নামে বেশ কিছু সম্পত্তি রেখে গিয়েছেন। সেই সম্পত্তি থেকেই আয় যা আসে, তা থেকে মায়ের পুজো করা হয় ও মন্দিরের সংস্কার করা হয়। দৈনন্দিন পুজোর পাশাপাশি বুদ্ধপূর্ণিমা ও দীপাবলিতে এখানে বিশেষ পুজো হয়। দেওয়া হয় বিশেষ ভোগ। সেই উপলক্ষ্যে প্রচুর জনসমাগম হয়। কালীপুজোর দিনে পুণ্যার্থীদের ভিড় এতটাই হয় যে, পরিস্থিতি সামাল দিতে নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করতে হয়। বিশ্বাস, মায়ের কাছে কিছু প্রার্থনা করলে সেটি পূর্ণ হয়। কালীপুজোর দিন খিচুড়ি, পায়েস পোলাও, রাইস, মাছ, মিষ্টি সহ একাধিক নানা প্রকারের ভোগ দেওয়া হয় দেবীকে। ৩ সময় পুজো হয় ভোরবেলা, দুপুরবেলা ও রাত্রিবেলা। ফল-মিষ্টি দিয়ে পুজো (Kali Puja 2023) করা হয় মাকে।

     

    দেশের খবরদশের খবরসব খবরসবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

  • Kali Puja 2023: আত্রেয়ী নদীতে নিজে থেকেই নাকি ভেসে উঠেছিল বুড়া কালীমাতার বিগ্রহ!

    Kali Puja 2023: আত্রেয়ী নদীতে নিজে থেকেই নাকি ভেসে উঠেছিল বুড়া কালীমাতার বিগ্রহ!

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার শতাব্দীপ্রাচীন ও জাগ্রত কালীপুজোর (Kali Puja 2023) মধ্যে অন্যতম হল বালুরঘাট তহবাজার এলাকার বুড়া কালীমাতার পুজো। এখনও সেই পুরনো রীতি-রেওয়াজ মেনেই হয় বালুরঘাট বুড়া কালীমাতার পুজো। তবে কালের স্রোত ও সময়ের সঙ্গে বর্তমানে পুজোর কিছু নিয়ম পরিবর্তিত হয়েছে। শতাব্দীপ্রাচীন হলেও এই পুজোকে কেন্দ্র করে জেলাবাসীর মনে অগাধ বিশ্বাস রয়েছে। কালীপুজোর দিন এই পুজোকে ঘিরে দর্শনার্থীদের ঢল চোখে পড়ার মতো। এছাড়াও প্রতি সপ্তাহে মঙ্গলবার ও শনিবার বুড়া কালীবাড়িতে পুজো দেওয়ার জন্য লম্বা লাইন পড়ে ভক্তদের।

    সারা গায়ে সোনা থেকে রুপোর অলঙ্কার (Kali Puja 2023)

    লোকমুখে শোনা যায়, কয়েকশো বছর আগে বর্তমান বালুরঘাট বুড়া কালীমাতার মন্দিরের পাশ দিয়ে নাকি আত্রেয়ী নদী বইতো। এমনকি লোক মুখে শোনা যায়, মন্দির ও বাজারের জায়গায় ছিল ঘন জঙ্গল। শতাব্দীপ্রাচীন পুজো হলেও এই পুজোর সঠিক বয়স কত, তা কেউ বলতে পারে না। এক সময় আত্রেয়ী নদীতে নিজে থেকেই নাকি ভেসে ওঠে বুড়া কালীমাতার বিগ্রহ বা শিলাখণ্ড। এক তান্ত্রিক সেই সময় নাকি ওই বিগ্রহকে তুলে নিয়ে এসে পুজো দেন। তার পর থেকেই নাকি এই পুজো শুরু হয়। টিনের ঘেরা দিয়ে বুড়া কালীমাতার পুজো শুরু হয়। বর্তমানে বিশাল আকারের মন্দিরে পূজিতা হন বুড়া কালীমাতা। পুজোর দিন মায়ের মূর্তির (Kali Puja 2023) সারা গা সোনা থেকে রূপার অলঙ্কারে সুসজ্জিত থাকে। পুজোকে ঘিরে দিন কয়েক হাজার ভক্তদের সমাগম হয় পুজো প্রাঙ্গনে। পুজোতে এখন পাঁঠা বলি, শোল মাছ বলি হয়। তবে জনশ্রুতি আছে, আগে নাকি ২০ কিলো ওজনের শোল মাছ বলি দেওয়া হত। এই পুজোকে ঘিরে শুধুমাত্র দক্ষিণ দিনাজপুরবাসীর নয়, পাশের জেলা উত্তর দিনাজপুর ও মালদা, শিলিগুড়ি থেকেও প্রচুর ভক্ত বা দর্শনার্থী আসে। বর্তমানে বুড়া কালী মন্দির থেকে অনেকটা পশ্চিমে সরে গেছে আত্রেয়ী নদী।

    রানি রাসমণি এই মন্দিরে পুজো দিতে আসতেন? (Kali Puja 2023)

    জনশ্রুতি আছে, একটা সময় নাকি কলকাতার রানি রাসমণি এই মন্দিরে পুজো দিতে আসতেন। বজরায় করে এসে তিনি আত্রেয়ী নদী থেকে জল নিয়ে এসে মায়ের পুজো দিয়ে আবার ফিরে যেতেন কলকাতায়। তবে এর সত্যতা এখনও প্রমাণিত হয়নি। এই বিষয়ে পুজা কমিটির সম্পাদক গোপাল পোদ্দার বলেন, আমরা শুনেছি আত্রেয়ী নদীর ধারে নিজে থেকেই নাকি ভেসে ওঠে বুড়া কালীমাতার শিলাখণ্ড। সেই সময় ওই শিলাখণ্ড তুলে নিয়ে এসে পুজো দেন এক তান্ত্রিক। তার পর থেকেই শুরু হয় মায়ের পুজো (Kali Puja 2023)। প্রতি বছর দীপান্বিতা অমাবস্যায় মায়ের পুজো হয়। পুজোর দিন বহু ভক্ত আসেন পুজো দিতে।

     

    দেশের খবরদশের খবরসব খবরসবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

LinkedIn
Share