Category: পরম্পরা

Get updated History and Heritage and Culture and Religion related news from the Madhyom news portal madhyom.com, West Bengal leading news portal Madhyom.com

  • Navaratri 2023: আজ মহাসপ্তমীতে পুজো হয় মাতা কালরাত্রির, জানুন দেবীর পৌরাণিক আখ্যান

    Navaratri 2023: আজ মহাসপ্তমীতে পুজো হয় মাতা কালরাত্রির, জানুন দেবীর পৌরাণিক আখ্যান

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: নবরাত্রির (Navaratri 2023) সপ্তম দিনে আরাধিত হন মাতা কালরাত্রি। বাংলাতে প্রচলিত দুর্গাপুজোর মহাসপ্তমীর দেবী তিনি। মাতা কালরাত্রি ভীষণ দর্শনা, এলোকেশী। তাঁর চারটি হাত। ওপরের ডান হাতে আশীর্বাদ, নীচের ডান হাতে অভয় মুদ্রা। বাঁ দিকে ওপরের হাতে খড়্গ এবং নিচের বাম হাতে রয়েছে লোহার কাঁটা। দেবী ত্রিনয়নী এবং তাঁর চোখগুলি গোলাকার। দেবীর গলায় রয়েছে বজ্রের মালা। এই দেবীর বাহন গাধা এবং তাঁর নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে ভয়ঙ্কর অগ্নিশিখা নির্গত হয় বলে কথিত আছে। দেবী কালরাত্রি সম্পর্কে অজস্র পৌরাণিক আখ্যান রয়েছে। তিনি চণ্ড-মুণ্ড নামের দুই অসুরকে বধ করেছিলেন বলে জানা যায়। তাঁর অপর নাম তাই “চামুণ্ডা”। দেবী মাহাত্ম্যতে উল্লেখ রয়েছে, শুম্ভ ও নিশুম্ভ নামক দুই দানব ছিলেন। তাঁরা প্রজাপতি ব্রহ্মার কঠোর তপস্যা করলেন। খুশি হয়ে প্রজাপতি ব্রহ্মা বর দিতে আবির্ভূত হলেন। দুই দানব বর চাইলেন যে, কোনও পুরুষ যেন তাঁদের বধ করতে না পারে। ব্রহ্মা তাঁদের বর প্রদান করলেন। এরপরই দুই অসুর চরম অত্যাচার শুরু করলেন দেবতাদের উপর। এই দুজনের সঙ্গে যোগ দিল চণ্ড-মুণ্ড নামের আরও দুই অসুর। তাঁদের সঙ্গে এল রক্তবীজ। যাঁর প্রতিটি রক্তবিন্দু মাটিতে পড়লে দ্বিতীয় রক্তবীজ তৈরি হবে। প্রজাপতি ব্রহ্মার এমনটাই বরদান ছিল তাঁর উপর। এই সমস্ত অসুরদের অত্যাচারে দেবতারা অতিষ্ঠ হয়ে উঠলেন। অসুরদের ওপর ব্রহ্মার বরদান সম্পর্কেও দেবতারা অবগত ছিলেন। মুনি-ঋষিদের যজ্ঞ পণ্ড করা, ঋষিকন্যাদের নানাভাবে লাঞ্ছিত করা এসব কাজ তো চলছিলই। অসুরদের এমন আক্রমণে দেবতারা অবশেষে পরাজয় স্বীকার করতে বাধ্য হলেন। নিজেদের স্বর্গরাজ্য থেকে তাঁরা বিতাড়িত হলেন। দেবতারা হিমালয়ের কোলে শুরু করলেন দেবীর স্তব। দেবী মাহাত্ম্যতে এই স্তব সম্পূর্ণভাবে উল্লেখ রয়েছে‌। কিছুটা অংশ সংযোজিত করা হল। কমবেশি এই স্তব সকলেই আমরা জানি।

    মাতা কালরাত্রির স্তব

    যা দেবী সর্বভূতেষু বিষ্ণুমাযেতি শব্দিতা 
    নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমো নমঃ

    যা দেবী সর্বভূতেষু চেতনেত্যভিধীযতে
    নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমো নমঃ

    যা দেবী সর্বভূতেষু বুদ্ধিরূপেণ সংস্থিতা
    নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমো নমঃ

    যা দেবী সর্বভূতেষু নিদ্রারূপেণ সংস্থিতা 
    নমস্তস্যৈনমস্তস্যৈ  নমস্তস্যৈ নমো নমঃ

    যা দেবী সর্বভূতেষু ক্ষুধারূপেণ সংস্থিতা .
    নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমো নমঃ 

    পুরাণে কথিত রয়েছে, এমন সময় সেখান দিয়ে শিবজায়া দেবী পার্বতী গঙ্গাস্নানের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন (Navaratri 2023)। দেবী তাদের স্তব শুনে বললেন, “হে দেববৃন্দ, আপনারা এখানে কার স্তব করছেন?” সেই সময় ভগবতী পার্বতীর শরীর থেকে একই রকম দেখতে আর এক জন দেবী বেরিয়ে এলেন। আবির্ভূত হয়ে নব দেবী বললেন, “দেবতারা আমার স্তব করছেন।” এই দেবীই আদ্যাশক্তি জগত মাতা অম্বিকা মহামায়া। তিনি দেবী পার্বতীর কোষ থেকে সৃষ্টি হয়েছেন বলে তার এক নাম কৌষিকী। কথিত আছে এর পর নাকি দেবী পার্বতী কৃষ্ণবর্ণা হয়ে যান। যাঁকে আমরা কালরাত্রি বলি। ইনি মাতা কালিকা নামেও পরিচিত।

    অসুরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ

    পুরাণে আরও উল্লেখিত আছে, দেবী (Navaratri 2023) একদিন হিমালয়ে সিংহপৃষ্ঠে বসে মধু পান করছিলেন। এমন সময় চণ্ড আর মুণ্ড নামক দুই দানব দেবীকে দেখতে পেলেন। চণ্ড-মুণ্ড একথা গিয়ে শুম্ভ-নিশুম্ভকে জানালেন। শুম্ভ-নিশুম্ভ সেই দেবীর রূপ বর্ণনা শুনে দেবীকে লাভ করার জন্য আকুল হলেন। সুগ্রীব নামক এক অসুর দেবীর কাছে গেল শুম্ভ-নিশুম্ভের দূত হিসেবে। সুগ্রীব হিমালয়ে সেই পর্বত চূড়ায় গিয়ে দেবীকে শুম্ভ-নিশুম্ভের পরাক্রম, ঐশ্বর্যের কথা বলে বিবাহের প্রস্তাব দিল। দেবী একথা শুনে হেসে বললেন, ‘‘আমার প্রতিজ্ঞাটি শোন–যিনি আমাকে যুদ্ধে জয় করবেন, তিনিই আমার স্বামী হবেন।’’ এরপর শুম্ভ-নিশুম্ভের সেনাপতি ধুম্রলোচন ষাট হাজার সেনা নিয়ে গেলেন দেবীকে পরাজিত করতে। দেবীর তেজে ধুম্রলোচন ভস্মীভূত হলেন। দেবীর সিংহবাহিনী অসুর সেনাকে ধ্বংস করে দিল। শুম্ভ-নিশুম্ভ এরপর চণ্ড ও মুণ্ডকে পাঠাল। চণ্ড ও মুণ্ড বহু সেনা, অশ্ব, রথ, হাতি নিয়ে যুদ্ধে এসে হিমালয়ের চূড়ায় হাস্যরত দেবী অম্বিকাকে দেখতে পেলেন। দেবী চণ্ডিকা তাঁদের দেখে ভীষণ ক্রুদ্ধা হলেন। ক্রোধে তাঁর মুখমণ্ডল কৃষ্ণবর্ণা হল। তখন দেবীর কপাল থেকে এক ভীষণ দর্শনা দেবী প্রকট হলেন। তিনিই দেবী কালিকা বা কালরাত্রি। অতি ভীষণা, ভয়ঙ্করী, কোটর গতা, আরক্ত চক্ষু বিশিষ্টা। সেই ভয়ঙ্করা দেবী ভীষণ হুঙ্কার দিয়ে যুদ্ধক্ষেত্রে প্রবেশ করলেন। কতগুলি অসুরকে দেবী তাঁর চরণ ভারে পিষে বধ করলেন। কোনও কোনও অসুর দেবীর খড়্গের আঘাতে মারা গেল। যুদ্ধক্ষেত্রে এই ভাবে দেবী অসুরদের ধ্বংস করে ফেললেন। এরপর দেবী তাঁর খড়্গ তুলে ‘হং’ শব্দ করে চণ্ডের দিকে ধেয়ে গেলেন। দেবী চণ্ডের চুলের মুঠি ধরে খড়্গ দ্বারা এক কোপে চণ্ডের শিরোচ্ছেদ করে ফেললেন। চণ্ড অসুর বধ হল। চণ্ড নিহত হয়েছে দেখে ক্রোধে মুণ্ড দেবীর দিকে ধেয়ে গেল। দেবী তাঁর রক্তাক্ত খড়্গ দিয়ে আর এক কোপে মুণ্ডের শিরোচ্ছেদ করলেন। এভাবে মুণ্ড বধ হল। চণ্ড-মুণ্ড বধ হতে দেখেই দেবতারা আনন্দে দেবীর জয়ধ্বনি দিতে থাকলেন‌। দেবী মাহাত্ম্য অনুযায়ী, চণ্ড আর মুণ্ড-এর ছিন্ন মস্তক নিয়ে দেবী, মহামায়ার কাছে এসে বিকট হেসে বললেন, “এই যুদ্ধরূপ যজ্ঞে আমি আপনাকে চণ্ড ও মুণ্ড নামে দুই মহাপশুর মস্তক উপহার দিলাম। এখন আপনি নিজেই শুম্ভ ও নিশুম্ভকে বধ করবেন।” দেবী অম্বিকা তখন বললেন, “ হে দেবী, যেহেতু তুমি চণ্ড ও মুণ্ডের বধ করে মাথা দুটি আমার নিকট নিয়ে এসেছ, সেজন্য আজ থেকে তুমি জগতে ‘চামুন্ডা’ নামে বিখ্যাত হবে।’’ মাতা কালরাত্রি শুভফলের দেবী বলেও অনেকে মনে করেন। তাই মাতার আরেক নাম হল “শুভঙ্করী”। মাতা কালরাত্রির আশীর্বাদে জীবনের সমস্ত কুপ্রভাব বিনষ্ট হয় বলে ভক্তদের ধারণা। মাতার নৈবেদ্যতে গুড় নিবেদন (Navaratri 2023) করলে তিনি প্রসন্না হন বলে ভক্তদের ধারণা‌।

     

    দেশের খবরদশের খবরসব খবরসবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

  • Mangal Ghot: ঘট স্থাপনের মধ্য দিয়েই আহ্বান জানানো হয় দেবীকে! এর গুরুত্ব জানেন কি?

    Mangal Ghot: ঘট স্থাপনের মধ্য দিয়েই আহ্বান জানানো হয় দেবীকে! এর গুরুত্ব জানেন কি?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দেখতে দেখতে চলে এল দুর্গাপুজো। চারদিন ধরে মাতৃ আরাধনায় মেতে উঠবেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। হিন্দু ধর্মে যে কোনও পুজোরই বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠান রয়েছে। যেমন ঘট (Mangal Ghot) স্থাপন হল পুজোর অন্যতম অপরিহার্য অংশ। যে কোনও পুজোতেই প্রথমে ঘট স্থাপন করা হয়। বলতে গেলে ঘট স্থাপনের মাধ্যমেই ওই পুজোর আনুষ্ঠানিকতার শুরু হয়। যে পুজোর জন্য ঘট স্থাপন করা হয়, মূলত ঘট স্থাপনের মাধ্যমে ওই দেব বা দেবীকে আহ্বান জানানো হয় পুজো গ্রহণের জন্য।

    ঘট ভগবানের নিরাকার অবস্থার প্রতীক

    কোনও কোনও ক্ষেত্রে দেব এবং দেবীর জন্য দেখা যায় আলাদা আলাদা ঘট। বিশ্বাস, ঘট কোনও দেবী বা দেবতার মূর্তি বা প্রতিমা নয়। ঘট ভগবানের নিরাকার অবস্থার প্রতীক। সনাতন ধর্মের প্রত্যেক দেবদেবী এক অভিন্ন ও নিরাকার পরম ব্রহ্মেরই এক একটি সাকার রুপের প্রকাশ। শাস্ত্র মতে, ঘট হল মঙ্গলের চিহ্ন। যে কোনও পুজো, মাঙ্গলিক অনুষ্ঠান, গৃহপ্রবেশ ইত্যাদি অনুষ্ঠানে ঘট (Mangal Ghot) স্থাপন করা হয়। ঘটের মধ্যে আম্রপল্লব, বেলপাতা, ফুল ইত্যাদি দিয়ে ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশ্বরের পুজো হয়। বেলপাতা হল ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশ্বরের প্রতীক। মানবজীবনকে ঘটের সঙ্গে তুলনা করা হয়। তাতে থাকে জল। জল হল জীবনের প্রতীক। প্রাণহীন শরীর যেমন মূল্যহীন, তেমনই জলবিহীন ঘটও মূল্যহীন।

    ঘট স্থাপনের দ্বারা দেব-দেবীকে আহ্বান জানানো হয়

    এই ঘট স্থাপন এতটাই গুরুত্বপূর্ণ যে, দেব-দেবীর কোনও মূর্তি ছাড়া শুধু ওই ঘটেই পুজো সম্পন্ন করা যায়, যার নাম হলো ঘটপুজো। ঘট স্থাপন করে যে দেব-দেবীকে আহ্বান জানানো হয়, সেই দেবদেবী ওই ঘটে (Mangal Ghot) অবস্থান নেন এবং ওই ঘটে থেকেই পুজো গ্রহণ করেন। ঘটের পিছনে যে আমরা নানা ভঙ্গিমার মূর্তি স্থাপন করি, সেটা মূলত পুজোকে একটি বড় অনুষ্ঠানের রূপ দেবার জন্য, যাতে ভক্তরা ওই মূর্তি দর্শনের জন্য পুজোর স্থানে আসেন এবং নিজের কল্যাণ লাভ করেন। ঘটেই যে কোনও দেব-দেবী অবস্থান করেন। তার বড় প্রমাণ হল, পুজো শেষে পুরোহিত যখন বিসর্জন দেন, তখন তিনি মন্ত্র উচ্চারণ শেষে ঘট নাড়িয়ে তা সম্পন্ন করেন। বিসর্জন প্রকৃতপক্ষে এটাই। 

     

    দেশের খবরদশের খবরসব খবরসবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

  • Navaratri 2023: কাল মহাষষ্ঠীতে দেবীর বোধন, জেনে নিন এর পৌরাণিক তাৎপর্য

    Navaratri 2023: কাল মহাষষ্ঠীতে দেবীর বোধন, জেনে নিন এর পৌরাণিক তাৎপর্য

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: কাল মহাষষ্ঠী। কাল থেকেই আচার-অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজোর (Navaratri 2023) সূচনা হবে। মহাষষ্ঠীর দিনই দেবীকে আবাহন করা হয়, যাকে বলা হয় বোধন। প্রসঙ্গত, শরৎকালে দেবীপক্ষের ষষ্ঠীতে দুর্গাকে বোধন করে পুজো করেন রাম, এমনটাই বিশ্বাস রয়েছে ভক্তদের। দুর্গার বোধন ঘিরে এই পৌরাণিক কাহিনিও কমবেশি সকলেই জানি।

    বোধন শব্দের অর্থ কী?

    বোধন শব্দের আক্ষরিক অর্থ জাগ্রত করা। মর্ত্যে মা দুর্গার আবাহনের জন্য বোধনের রীতি প্রচলিত রয়েছে প্রাচীনকাল থেকেই। এদিনই দুর্গা প্রতিমাতে কল্পারম্ভ দিয়ে শুরু হয় মায়ের বোধন। ষষ্ঠীর সকাল থেকেই শুরু হয়ে যায় দেবীকে আবাহন করার প্রক্রিয়া। রীতি অনুযায়ী পুরোহিত দশভূজার সামনে প্রার্থনা করেন, ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত গোটা পুজোপর্বে যেন কোনও বিঘ্ন না ঘটে। এরপর ঘট ও জলে পূর্ণ একটি তামার পাত্র মণ্ডপের কোণে স্থাপন করা হয়। এই স্থানেই দুর্গা ও চণ্ডীর পুজো করা হয়। চলতে থাকে দুর্গার বোধন, অধিবাস, আমন্ত্রণের পর্ব। অশুভ শক্তি দূর করার জন্য ঘটের চারপাশে তিরকাঠিতে সুতো জড়িয়ে আমন্ত্রণ প্রক্রিয়া শুর হয়। এভাবেই শেষ হয় মহাষষ্ঠীর (Navaratri 2023) আচার।

    বোধনের তাৎপর্য

    শাস্ত্রকারদের মতে, বোধনের একটি পৌরাণিক তাৎপর্য রয়েছে। প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী এদিনই স্বর্গ থেকে মর্ত‍্যে পদার্পণ করেন দেবী দুর্গা। সঙ্গে থাকেন তাঁর চার সন্তান লক্ষ্মী, গণেশ, কার্তিক, সরস্বতী। মনে করা হয়, বোধনের পর প্রতিমার মধ্যে প্রাণ প্রতিষ্ঠিত হয়। মহাষষ্ঠীতে দেবীর বোধন আবার অকাল বোধন (Navaratri 2023) হিসেবেও খ্যাত। হিন্দু শাস্ত্র মতে, সূর্যের উত্তরায়ন দেবতাদের সকাল। উত্তরায়নের ছয় মাসকে দেবতাদের একদিন হিসেবে গণ্য করা হয়। আবার দক্ষিণায়ন শুরু হলে ছয় মাসের জন্য নিদ্রা যান সমস্ত দেব-দেবী। এই দক্ষিণায়ন হল দেবতাদের রাত। রাতে দেব-দেবীর পুজো করা হয় না। দক্ষিণায়নের ছয় মাসের মধ্যেই দুর্গাপুজো হয় বলে বোধনের মাধ্যমে আগে দেবী দুর্গাকে ঘুম থেকে তোলা হয়। প্রসঙ্গত, পৌরাণিক মতে রাবণের সঙ্গে যুদ্ধের আগে দুর্গার বোধন করেছিলেন রামচন্দ্র। এর পর দুর্গার আরাধনা করে শক্তি ও সৌভাগ্যের প্রার্থনা করেন তিনি। অকালে দুর্গাকে জাগিয়ে তোলা হয়েছিল বলেই একে অকাল বোধন বলা হয়ে থাকে। 

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।

  • Navaratri 2023: আজ মহাষষ্ঠী, জানুন মাতা কাত্যায়নী কীভাবে হয়ে উঠেছিলেন ‘মহিষাসুরমর্দিনী’

    Navaratri 2023: আজ মহাষষ্ঠী, জানুন মাতা কাত্যায়নী কীভাবে হয়ে উঠেছিলেন ‘মহিষাসুরমর্দিনী’

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: হিমালয়ের কোলে ঘন অরণ্যঘেরা এক ঋষির আশ্রম। ‘কাত্য’ গোত্রধারী ওই ঋষির নাম কাত্যায়ন (Navaratri 2023)। দীর্ঘদিন তিনি মাতা অম্বিকাকে নিজের কন্যা রূপে পাওয়ার জন্য তপস্যায় রত ছিলেন। পুরাণে কথিত আছে, দেবী তাঁর এই তপস্যায় প্রসন্ন হয়েছিলেন এবং তাঁকে এরূপ বর দিয়েছিলেন যে, ‘‘যখন দেবতাদের প্রয়োজন হবে, তখন তিনি তাঁর কন্যা রূপে অবতীর্ণ হবেন।’’ বামন পুরাণ অনুযায়ী, মহিষাসুরের কাছে স্বর্গরাজ্য হারিয়ে বিতাড়িত দেবতারা শরণাপন্ন হয়েছিলেন ত্রিদেব অর্থাৎ ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বরের। মহর্ষি কাত্যায়নের আশ্রমে এই ত্রিদেবের তেজ থেকে উদ্ভব হয়  অষ্টাদশভূজা এক নারী মূর্তির, ইনিই মাতা কাত্যায়নী। নবরাত্রির (Navaratri 2023) মহাষষ্ঠীর দিন আরাধিতা হন দেবী কাত্যায়নী। মহর্ষি কাত্যায়নের আশ্রমে সমস্ত দেবগণ নিজেদের অস্ত্র দ্বারা সাজাতে শুরু করলেন মাতা কাত্যায়ানীকে। শিব দিলেন তাঁর ত্রিশূল, ভগবান বিষ্ণু প্রদান করলেন তাঁর সুদর্শনচক্র,অগ্নি দিলেন শক্তি, বায়ু দিলেন ধনুক, সূর্য দিলেন তিরভরা তূণীর, ইন্দ্র দিলেন বজ্র, কুবের দিলেন গদা, ব্রহ্মা দিলেন অক্ষমালা ও কমণ্ডলু, কাল দিলেন খড়্গ ও ঢাল এবং বিশ্বকর্মা দিলেন কুঠার ও অন্যান্য যুদ্ধাস্ত্র। এইভাবে সমস্ত দেবতা তাঁদের অস্ত্র তুলে দিলেন দেবীর হাতে মহিষাসুর বধের নিমিত্তে।

    মহিষাসুরের সঙ্গে যুদ্ধ

    পুরাণে কথিত আছে, এরপর দেবী গেলেন মহিষাসুরের সঙ্গে যুদ্ধ করতে। মহিষাসুরের দু’জন চর দেবীকে দেখে, মহিষাসুরের নিকটে গিয়ে তাঁর রূপ বর্ণনা করলেন। দেবীর রূপে মুগ্ধ মহিষাসুর,দেবীকে লাভ করতে চাইলেন। মাতা কাত্যায়নী তখন শর্ত দিলেন যে, ‘‘তাঁকে লাভ করার পূর্বে যুদ্ধে পরাস্ত করতে হবে।’’ শুরু হল মহিষাসুরের সঙ্গে মাতা কাত্যায়নীর এক প্রবল যুদ্ধ। মাতা কাত্যায়নী ছিলেন তাঁর বাহন সিংহের উপর সওয়ার, অন্যদিকে মহিষাসুর ছিলেন মহিষের রূপে। পুরাণে আরও উল্লেখ রয়েছে, যুদ্ধ চলাকালীন মাতা কাত্যায়নী পা দিয়ে তীব্র আঘাত করেন ওই ছদ্মবেশী মহিষকে। আঘাতে মহিষাসুর ধরাতলে পতিত হলে, মাতা কাত্যায়নী তাঁকে ত্রিশূল দ্বারা বধ করেন। এভাবেই মাতা কাত্যায়নী হয়ে ওঠেন ‘মহিষাসুরমর্দিনী’। যে মহিষাসুরমর্দিনীকে (Navaratri 2023) কেন্দ্র করেই প্রতি বছর সম্পন্ন হয় দুর্গাপুজো। যে মহিষাসুরমর্দিনীর স্তব প্রত্যহ মহালয়ার ভোরবেলায় বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের কন্ঠে আমরা শুনতে পাই। পুরাণ অনুযায়ী, দেবতারা যুদ্ধ শেষে মাতার কাত্যায়নীর উদ্দেশে পুষ্পবৃষ্টি করেন। রম্ভাপুত্র মহিষাসুরের অত্যাচারে যে দেবতারা স্বর্গ থেকে বিতাড়িত হয়েছিলেন, তাঁরাই আবার স্বর্গরাজ্যের অধিকার ফিরে পেলেন মাতা কাত্যায়নীর কৃপায়।

    দেবী কাত্যায়নীর প্রথম উল্লেখ মেলে তৈত্তিরীয় আরণ্যক গ্রন্থে

    দেবী কাত্যায়নীর প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায় তৈত্তিরীয় আরণ্যক গ্রন্থে। মার্কণ্ডেয় রচিত ‘দেবী মাহাত্ম্য’-এ মাতা কাত্যায়নীর দিব্যলীলার বর্ণনা রয়েছে। এর সঙ্গে সঙ্গে দেবী ভাগবত পুরাণেও মাতা কাত্যায়নীর (Navaratri 2023) লীলা বর্ণিত হয়েছে। আবার বৈষ্ণবদের ভাগবত পুরাণেও মাতা কাত্যায়নীর পুজোর উল্লেখ পাওয়া যায়। ভাগবত পুরাণে, এটি কাত্যায়নী ব্রত নামেই পরিচিত। ব্রজের গোপীরা শ্রীকৃষ্ণকে পতি রুপে পেতে এই ব্রত উদযাপন করত। মাঘ মাস জুড়ে এই ব্রত চলত। যমুনা নদীর তীরে মাতা কাত্যায়নীর মাটির মূর্তি তৈরি করে দীপ, ফল, চন্দন, ধূপ দ্বারা মাতার আরাধনা করার পরম্পরা ছিল উত্তর ভারতে। আবার একই ভাবে মকর সংক্রান্তিতে, দক্ষিণ ভারতের তামিলনাড়ুতে পোঙ্গল উৎসবে মাতা কাত্যায়নীর পুজো চালু রয়েছে।

    কীভাবে সন্তুষ্ট হন মাতা কাত্যায়নী

    মাতা কাত্যায়নীর এই স্বরূপ শৌর্য, তেজ এবং পরাক্রমের প্রতীক বলেই বিবেচিত হয়। পুরাকালে মাতা কাত্যায়নী যেমন মহিষাসুরকে বধ করে আসুরিক শক্তি তথা অশুভ শক্তির বিনাশ করেছিলেন, ঠিক একইভাবে ভক্তদের জীবন থেকে সমস্ত অশুভ শক্তিকে তিনি বিনষ্ট করেন এবং আসুরিক যা কিছু প্রবৃত্তি সেটাও তিনি ধ্বংস করেন বলেই বিশ্বাস রয়েছে ভক্তদের। মাতার এই রূপের উপাসনা করলে সমস্ত অশুভ প্রভাব থেকে নিজেকে মুক্ত করা যায়, জীবনের সমস্ত বাধাবিঘ্ন দূর হয়, রোগ, ভয়, ব্যাধি সমস্ত কিছু মাতা হরণ করে নেন বলেই ভক্তদের ধারণা। মাতা কাত্যায়নীর ভক্তরা নৈবেদ্যতে (Navaratri 2023) মায়ের উদ্দেশে মধু নিবেদন করেন। এতে মা সন্তুষ্ট হন।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।

  • Navaratri 2023: আজ মহাপঞ্চমীর মাহাত্ম্য কী? জানুন দেবী স্কন্দমাতার পৌরাণিক আখ্যান

    Navaratri 2023: আজ মহাপঞ্চমীর মাহাত্ম্য কী? জানুন দেবী স্কন্দমাতার পৌরাণিক আখ্যান

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পুরাণ অনুযায়ী, দেবাদিদেব মহাদেবের পুত্র হলেন দেব সেনাপতি কার্তিক। তাঁর অপর নাম স্কন্দ। স্কন্দমাতা মানে হল কার্তিকের মাতা। দেবী পার্বতীর এই রূপেরই পুজো করা হয় নবরাত্রির পঞ্চমীর দিন। কার্তিকের জন্মবৃত্তান্ত এবং মাতা পার্বতীর স্কন্দমাতা হয়ে ওঠার কাহিনি জানতে হলে অপর একটি পৌরাণিক কাহিনি শুনতে হবে (Navaratri 2023)।

    অসুর-দেবতা যুদ্ধ

    পুরাকালে বজ্রাঙ্গ নামে এক অসুর রাজা ছিলেন। তিনি ছিলেন দিতির পুত্র। দেবতাদের রাজা ইন্দ্রকে বজ্রাঙ্গ সিংহাসনচ্যুত করে বন্দি করেন। দেবতাদের প্রতি বজ্রাঙ্গের এই রোষ আসলে ছিল তাঁর প্রতিশোধ। কারণ ইতিপূর্বে দিতির অসংখ্য পুত্রকে মানে বজ্রাঙ্গের নিজ ভাইদের দেবতারা হত্যা করেছিলেন। বজ্রাঙ্গের হাতে বন্দি ইন্দ্রকে মুক্ত করতে আসেন ব্রহ্মা এবং কাশ্যপ মুনি। কাশ্যপ মুনি ছিলেন বজ্রাঙ্গের পিতা, অর্থাৎ দিতির স্বামী। ব্রহ্মা এবং কাশ্যপ মুনির অনুরোধে বজ্রাঙ্গ তখনকার মতো ইন্দ্রকে (Navaratri 2023) মুক্ত করেন। 

    দৈত্য হয়েও এমন দয়ার ভাব বজ্রাঙ্গের মধ্যে দেখতে পেয়ে ব্রহ্মা তাঁকে বরদান করতে ইচ্ছাপ্রকাশ করলেন। বজ্রাঙ্গ তখন তপস্বী হওয়ার বর প্রার্থনা করলেন এবং বাকি জীবন যেন তিনি ধর্মপথে চলতে পারেন, সেই আশীর্বাদ ব্রহ্মার কাছে চাইলেন। ব্রহ্মা তাঁর মানসকন্যা বরাঙ্গীর সঙ্গে বজ্রাঙ্গের বিবাহ দিলেন। বজ্রাঙ্গ এবং বরাঙ্গী বনের মধ্যে কুটির বানিয়ে ধর্মকর্ম করতে লাগলেন। বজ্রাঙ্গ তপস্যায় রত থাকতেন এবং বরাঙ্গী গৃহস্থের কর্ম সম্পাদন করতেন।

    একদিন দেবরাজ ইন্দ্র ওই কুটিরের পাশ দিয়ে যেতে যেতে বরাঙ্গীকে দেখতে পেয়ে পুরনো অপমানের বদলা নিতে চাইলেন। কখনও বানর সেজে, কখনও ভেড়া বা কখনও সাপ হয়ে কুটির লন্ডভন্ড করতে লাগলেন। ক্রন্দনরত অবস্থায় বরাঙ্গী তাঁর স্বামী বজ্রাঙ্গকে এসব বিষয়ে বললে, বজ্রাঙ্গ ব্রহ্মাকে স্মরণ করলেন। ব্রহ্মা প্রকট হয়ে বর দিতে চাইলে বজ্রাঙ্গ বললেন, “আমাকে এমন পুত্র দিন, যে দেবতাদের উপর অত্যাচার করতে সমর্থ হবে।”‌ ব্রহ্মা বজ্রাঙ্গের মনোমতো বরদান করলেন। বরাঙ্গীর গর্ভে জন্ম হল তারক নামের অসুরের‌। 

    পরবর্তীতে তারকাসুরের উপর ব্রহ্মার বরদান ছিল যে- “একমাত্র শিবের বালকপুত্র ছাড়া, কারও হাতে তিনি হত হবেন না।” ব্রহ্মার বরদানে অজেয়, অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠেন তারকাসুর। কারণ তিনি জানতেন শিব কখনও বিবাহ করবেন না এবং ত্রিভুবনে ব্রহ্মার বরদানে তাঁকে হত্যা করতে পারে, এমন ক্ষমতা কোনও দেবতা, মানুষ বা জীবজন্তুর নেই। তারকাসুর দেবলোক নিজের দখলে আনেন। দেবরাজ ইন্দ্র সিংহাসনচ্যুত হলেন। বিতাড়িত দেবতারা বুঝতে পারলেন শিবের বিয়ে দিতে পারলে তবে তাঁর পুত্রই তারকাসুরকে বধ করতে পারবেন।

    শিব-পার্বতীর বিবাহ

    আয়োজন শুরু হল শিব-পার্বতীর বিবাহের। সেখানেও তারকাসুরের আক্রমণ হল। পার্বতী দেবী, মাতা চন্দ্রঘণ্টার রূপধারণ করে অসুরদের বিতাড়িত করলেন। এরপর সুসম্পন্ন হল শিব-পার্বতীর বিবাহ। জন্ম হল কার্তিকের। মাতা পার্বতী তখন হলেন স্কন্দমাতা অর্থাৎ কার্তিক জননী। দৈববাণী পেয়ে দেবরাজ ইন্দ্র কার্তিককে সেনাপতি নিযুক্ত করলেন। এক প্রবল যুদ্ধে কার্তিকের হাতে তারকাসুর হত হলেন। দেবতারা তাঁদের হৃত স্বর্গরাজ্য পুনরায় নিজেদের দখলে আনলেন। এমনটাই লেখা রয়েছে “স্কন্দ পুরাণে”।

    স্কন্দমাতার বিবরণ

    স্কন্দমাতার অপর নাম কার্তিকেয়। ত্রিনয়নী মাতার কোলে তাঁর শিশুপুত্রকে দেখতে পাই আমরা। এই শিশুপুত্রই হলেন স্কন্দ বা কার্তিক। স্কন্দমাতা স্নেহ, মায়া, সন্তান বাৎসল্য-এর প্রতীক। মাতার ভক্তরা মনে করেন দেবীর পুজো করলে সমস্ত মনোবাঞ্ছা পূরণ হয়, জীবনের সকল বাধাবিঘ্ন দূর হয়, অশুভ শক্তি বিনষ্ট হয়, সুখ, স্বাচ্ছন্দ্য, সমৃদ্ধিতে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে জীবন। দেবী পদ্মাসনা। তাঁর বাহন সিংহ। তাঁর দুই হাতে দুটি পদ্ম। একহাতে কার্তিককে ধরে থাকেন। অপর হাত বর-মুদ্রার ভঙ্গিতে থাকে। যার দ্বারা ভক্তদের উদ্দেশে সর্বদাই আশীর্বাদ বর্ষিত হয়। স্কন্দমাতার পুজো করলে শত্রু বিনাশ হয়, শক্তি বৃদ্ধি হয়, এমনটাই মনে করেন ভক্তরা। স্কন্দমাতার পুজোতে সাদা রঙের পোশাক পরলে মাতা প্রসন্ন হন, এমনটাই প্রচলিত ধারণা রয়েছে। দেবীর আশীর্বাদ পেতে ভক্তরা নৈবেদ্যতে কলা বা কদলী ভোগ দেন।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।

  • Navaratri 2023: মহাচতুর্থীর মাহাত্ম্য কী? জানুন দেবী কুষ্মাণ্ডার পৌরাণিক আখ্যান

    Navaratri 2023: মহাচতুর্থীর মাহাত্ম্য কী? জানুন দেবী কুষ্মাণ্ডার পৌরাণিক আখ্যান

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পুরাণে কথিত আছে, হাসির দ্বারা তিনি এ জগৎ বা বিশ্বসংসার সৃষ্টি করেছিলেন। প্রকৃতপক্ষে তাঁকেই জগজ্জননী মানেন ভক্তরা। তিনিই সূর্যের তেজ স্বরূপা। তিনিই আসুরিক শক্তির বিনাশক। নবরাত্রির চতুর্থীতে (Navaratri 2023) ভক্তদের দ্বারা পূজিতা হন দেবী কুষ্মাণ্ডা।

    দেবী কুষ্মাণ্ডার পৌরাণিক আখ্যান  

    পুরাণ অনুযায়ী, এ বিশ্ব যখন তৈরি হয়নি, প্রাণের স্পন্দন যখন কোথাও ছিল না, চারদিকে যখন ঘন অন্ধকার ছাড়া আর কিছুই ছিল ন, তখন এক মহাজাগতিক দৈব আলোকরশ্মি ক্রমশ নারী মূর্তির আকার ধারণ করতে থাকে। দৈব ক্ষমতার অধিকারী, জগতের সৃষ্টিকর্ত্রী এই নারী মাতা কুষ্মাণ্ডা নামে পরিচিত। মহাবিশ্বে প্রাণের উৎস, শক্তির উৎস, চন্দ্র, সূর্য, গ্রহ, নক্ষত্র, ছায়াপথের সৃষ্টিকর্ত্রী তিনি (Navaratri 2023)‌। তিনি সূর্যের কেন্দ্রে অবস্থান করেন। দিন ও রাত্রি তাঁর জন্যই হয়। জীবনের সমস্ত কর্মকাণ্ডের গতি তাঁর দ্বারাই নিয়ন্ত্রিত হয় বলে মনে করেন ভক্তরা।

    কুষ্মাণ্ডা শব্দের অর্থ জানেন?

    সৌরমণ্ডলকে পরিচালিত করেন দেবী কুষ্মাণ্ডা (Navaratri 2023)। তাঁর মুখমণ্ডল সূর্যের মতোই দীপ্তিমান, তেজোদীপ্ত। পণ্ডিতমহলের মতে, ‘কু’ শব্দের অর্থ কুৎসিত এবং ‘উষ্মা’ শব্দের অর্থ ‘তাপ’; ‘কুষ্মা’ শব্দের অর্থ তাই দুঃখ। দেবী জগতের সমস্ত দুঃখ এবং কষ্ট হরণ করে নিজের উদরে ধারণ করেন বলে তাঁর নাম ‘কুষ্মাণ্ডা’ মনে করা হয়। দেবাদিদেব মহাদেব যেমন সমুদ্র মন্থনের সময় সমস্ত বিষ নিজের শরীরে ধারণ করে দেবতাদের রক্ষা করেছিলেন, একই ভাবে মাতা কুষ্মাণ্ডা এ জগতের সকল অশুভ প্রভাব, দুঃখ, কষ্ট, রোগ, যন্ত্রণা, পীড়াকে হরণ করে তাঁর ভক্তদের রক্ষা করেন।

    দেবী কুষ্মাণ্ডার বিবরণ

    ভক্তরা মনে করেন, যখন এ বিশ্বে অসুরদের অত্যাচার বেড়ে গিয়েছিল, তখন আবির্ভূত হয়েছিলেন দেবী কুষ্মাণ্ডা। দেবী সিংহে সওয়ার। তিনি অষ্টভূজা। আটটি হাত সাজানো রয়েছে অস্ত্র তথা অন্যান্য সামগ্রী দ্বারা। চারটি হাতে রয়েছে-চক্র, গদা, তির ও ধনুক। অন্য চারটি হাতে রয়েছে জপমালা, পদ্ম, কলস এবং কমণ্ডলু। দেবীর হাতে অস্ত্র ছাড়াও দুটো পাত্রের উল্লেখ করা হয়েছে। একটিতে থাকে অমৃত ও অপরটিতে থাকে রক্ত। অর্থাৎ দেবী কুষ্মাণ্ডার এক হাতে সৃষ্টি ও অপর হাতে ধ্বংস। দেবীর বাহন সিংহকে ধর্মের প্রতীক বলে মনে করা হয়। ধর্মের স্থাপন (Navaratri 2023) এবং ধর্মকে বহন করে মাতা কুষ্মাণ্ডার সিংহ।

    কীভাবে সন্তুষ্ট হন দেবী কুষ্মাণ্ডা 

    মাতা কুষ্মাণ্ডার সামনে কুমড়ো বলির প্রথা চালু আছে। দেবী কুষ্মাণ্ডার ভক্তরা মায়ের উদ্দেশে যে সব সামগ্রী নিবেদন বা অর্পণ করে থাকেন, সেগুলি হল-সিঁদুর, কাজল, চুড়ি, বিন্দি, পায়ের আংটি, চিরুনি, আয়না, পায়ের পাতা, সুগন্ধি, কানের দুল, নাকের পিন, গলার মালা, লাল চুনরি ইত্যাদি। ভক্তদের বিশ্বাস, মাতা কুষ্মাণ্ডাকে মালপোয়া, দই থেকে তৈরি যে কোনও পদ এবং হালুয়া নৈবেদ্যতে ভক্তিপূর্বক অর্পণ করলে মাতা প্রসন্ন হন। তিনি তাঁর ভক্তদের জীবনকে সুখী, শান্তি, সমৃদ্ধি, যশ, আয়ু দ্বারা পরিপূর্ণ করে তোলেন। ভক্তদের ব্রহ্ম জ্ঞানও তিনিই দান করেন।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।

  • Durga Puja 2023: নন্দীবাড়িতে বৃহৎ শঙ্খ বাজানোর পর শঙ্খচিল উড়তে দেখেই শুরু হত পুজো

    Durga Puja 2023: নন্দীবাড়িতে বৃহৎ শঙ্খ বাজানোর পর শঙ্খচিল উড়তে দেখেই শুরু হত পুজো

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আরামবাগের প্রাচীনতম বনেদি বাড়ির ঐতিহ্যবাহী দুর্গাপুজোগুলির মধ্যে অন্যতম হল হাটবসন্তপুর গ্রামের নন্দীবাড়ির দুর্গাপুজো। প্রায় সাড়ে তিনশো বছর আগে এই নন্দীরা ছিলেন জমিদার। সেই সময় তাঁদের কোনও এক বংশধর পরিবারের সুখশান্তি কমনায় দালান বানিয়ে শিবদুর্গার আরাধনা (Durga Puja 2023) শুরু করেছিলেন। তখন থেকে একই ভাবে এই পুজো হয়ে আসছে। এই পুজোর বিশেষত্ব হল, এখানে হরপার্বতী অর্থাৎ শিবদুর্গার শান্ত মূর্তি পূজিত হয় এবং প্রাচীনতম বৃহৎ আকারের একটি শঙ্খ ও তামার জালা আছে সেই সময়কার, যা এখনও ব্যবহার করা হয় এই পুজোতে। কথিত আছে, ওই বৃহৎ শঙ্খ বাজানোর পর আকাশে শঙ্খচিল উড়তে দেখেই শুরু হত পুজো। এছাড়াও ওই বড় তামার জালায় নৌকায় করে গঙ্গা থেকে জল আসে পুজোর জন্য। সেই গঙ্গা জল দিয়েই চার দিন ধরে চলে পুজো।

    ভগ্নদশা প্রাচীন দুর্গাদালানের (Durga Puja 2023)

    পরিবারের সদস্যরা জানান, এখন জমিদারি প্রথা না থাকলেও আজও প্রাচীন রীতিনীতি মেনেই পূজিত হন হরপার্বতী। তবে এখানে কোনও পশু বলি হয় না। এক সময় গোটা গ্রামের মানুষ পুজোর চার দিন নিমন্ত্রিত থাকত নন্দীবড়িতে। তবে তা এখন আর হয় না। পরিবারের সদস্যরা কর্মসূত্রে অনেকেই সারা বছর বাইরে থাকলেও পুজোর সময় সবাই ফিরে আসেন এই বাড়িতে। সকলে মিলে একসাথে পুজোর (Durga Puja 2023) অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করা, একে অপরের সাথে দেখা করা, সারা বছর ধরে জমিয়ে রাখা কথা, চার দিন ধরে চলে খুব আনন্দ। দশমীতে সিঁদুর খেলায় মেতে ওঠে বাড়ির আট থেকে ৮০ সকলেই। তবে নন্দীবাড়ির বতর্মান সদস্যরা পুজোয় আধুনিকত্ব বাড়ালেও এবং ভগ্নদশা প্রাচীন দুর্গাদালানের রক্ষণাবেক্ষণের চেষ্টা করলেও বেশিরভাগটাই নষ্ট হয়ে গেছে। চুনসুরকি দেওয়া ইটের দেওয়াল। শালের কড়িকাঠের উপর চুনসুরকির বানানো ছাদে ফাটল ধরেছে অনেক জায়গাতেই। প্রাচীন ঐতিহ্যকে আগামী প্রজন্মের কাছে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন নন্দী পরিবারের সদস্যরা।

    হই হই করে কাটে পুজোর দিনগুলো (Durga Puja 2023)

    নন্দী পরিবারের সব থেকে বয়স্ক সদস্য বর্তমানে প্রশান্ত নন্দী। বয়স প্রায় ৮৬ বছর। তিনি বলেন, আমার ঠাকুরদা, দাদু, বাবা সবাই একই ভাবে পুজো করেছে, তা দেখে এসেছি। তাই আমিও সেই দায়িত্ব পালন করছি। এখন পরিবারের বেশির ভাগ সদস্যই কর্মসূত্রে বাইরে চলে গেছে। কিন্তু পুজোর (Durga Puja 2023) সময়ে সবাই ফিরে আসে। আনন্দে হই হই করে কাটে পুজোর দিনগুলো। তবে আগের মতো এখন আর সেই জৌলুস নেই। গোটা গ্রাম নিমন্ত্রণ করে খাওয়ানো হয় না। পুজোয় আধুনিকত্ব বেড়েছে, কিন্তু কোথাও যেন একটা ভাটা পড়েছে। এই এত বড় দুর্গাদালান রক্ষণাবেক্ষণের চেষ্টা করেও সম্ভব হচ্ছে না, বিভিন্ন জায়গায় ফাটল ধরেছে। ভেঙে ভেঙে পড়ছে চুনসুরকির ছাদ। আগামী দিনে হয়তো এই দুর্গাদালান ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে স্মৃতি হয়ে যাবে।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।

  • Durga Puja 2023: পুজোয় সুরুলের সরকার বাড়ি আলোকিত হয়ে ওঠে বিদ্যুৎ নয়, তেলের প্রদীপে!

    Durga Puja 2023: পুজোয় সুরুলের সরকার বাড়ি আলোকিত হয়ে ওঠে বিদ্যুৎ নয়, তেলের প্রদীপে!

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: শহরের জাঁকজমক থেকে দূরে সরে আমাদের গ্রাম বাংলায় এমন দুর্গাপুজো হয়, যেগুলি গোটা পশ্চিমবঙ্গের মানুষের নজর কাড়ে। ঠিক সেরকম একটি ঐতিহ্যবাহী পুজো হল সুরুলের রাজবাড়ি তথা সুরুলের সরকার বাড়ির পুজো (Durga Puja 2023)। এই জমিদার বাড়ির প্রত্যেকটি দেওয়ালে আছে ইতিহাসের ছোঁয়া। পুজোর কটা দিন যেন অন্য রূপে সেজে ওঠে সরকার বাড়ি। ষষ্ঠীর দিন থেকেই শুরু হয়ে যায় পুজো।

    কী এই রাজবাড়ির ইতিহাস?

    সুরুল রাজবাড়ির ইতিহাস জানতে গেলে একটা কথা প্রথমেই বলে রাখা দরকার। তা হল, এই রাজবাড়ির সমস্ত সদস্যর পদবী সরকার। কিন্তু এটি এঁদের আসল পদবী নয়। ইংরেজদের থেকে পাওয়া পদবী। এঁদের আসল পদবী ঘোষ। প্রায় অষ্টাদশ শতকের প্রথম দিকে বর্ধমানের নীলপুর থেকে সুরুলে আসেন ভরতচন্দ্র সরকার। এখানে বাসুদেব ভট্টাচার্যের বাড়িতে তিনি আশ্রয় নেন। সেখানে তাঁদের একটি পুত্রসন্তান হয়, যার নাম কৃষ্ণ হরি। এর পর থেকে সুরুলেই থাকতে শুরু করে সরকার পরিবার। কৃষ্ণ হরির পরবর্তী প্রজন্ম তাঁর ছেলে শ্রীনিবাস ইংরেজদের সাথে ব্যবসার কাজে যুক্ত ছিলেন এবং খুব সুনাম অর্জন করেছিলেন। এতে তাঁর প্রভাব ও প্রতিপত্তি বেড়েছিল। জাহাজের পাল তৈরির কাপড় এবং নীল চাষের ব্যবসার সাথে তিনি যুক্ত ছিলেন। সুরুলের সরকার বাড়ির দুর্গাপুজো (Durga Puja 2023) ভরতচন্দ্রের আমল থেকেই শুরু হয়েছিল।

    জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারের সম্পর্ক

    ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, সুরুল রাজ পরিবারের সঙ্গে জোড়াসাঁকো ঠাকুর পরিবারের খুব ভালো সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। রবীন্দ্রনাথ নিয়মিত এই সরকার বাড়িতে আসতেন। একবার মহাত্মা গান্ধীকে নিয়ে কবিগুরু এই রাজবাড়িতে একটি রাতও কাটিয়েছেন। এখনও সুরুল রাজবাড়িতে (Durga Puja 2023) তাঁর স্মৃতি ধরে রাখা হয়েছে। শোনা যায়, দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর এই রাজ পরিবারের কাছ থেকে শান্তিনিকেতনের বেশ অনেকটা জমি পেয়েছিলেন।

    কীভাবে হয় সরকার বাড়ির দুর্গাপুজো?

    সরকার পরিবারের এক সদস্য জানান, রথের দিন থেকেই প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু হয়ে যায়। প্রতিমাকে ডাকের সাজে সাজিয়ে তোলা হয়। এছাড়াও পুজোর (Durga Puja 2023) কয়েকটি দিন রাজবাড়ির সোনার গহনা দিয়ে মা দুর্গাকে সাজানো হয়। পঞ্চমীর দিন নাটমন্দির থেকে সমস্ত রাজবাড়িতে বেলজিয়াম থেকে আনা রঙিন বাতি আর ঝাড়বাতিতে সাজিয়ে তোলা হয়। আর দেবীর হাতে থাকে প্রায় ৩০০ বছরের পুরনো অস্ত্রশস্ত্র। এখানে আরও একটি বিশেষত্ব হল, পুজোর দিনগুলিতে কোনও ইলেকট্রিক লাইট ব্যবহার না করে গোটা রাজবাড়িকে তেলের প্রদীপে আলোকিত করা হয়। এখানে সপ্তমী, অষ্টমী এবং নবমী–তিন দিনই বলি হয়। সপ্তমীতে চালকুমড়ো, অষ্টমীতে পাঁঠা, আর নবমীতে চালকুমড়ো ও আখ বলি দেওয়া হয়। এখানে দুর্গা প্রতিমা ছাড়াও নারায়ণের পুজো করা হয়। আর নারায়ণ যেহেতু বলি প্রথার বিরুদ্ধে, তাই বলির সময় নারায়ণকে সরিয়ে অন্য মন্দিরে রেখে আসা হয়। অন্য সময়ে তাঁর নিজের স্থানে ফিরিয়ে আনা হয়। গোটা গ্রাম এই পুজোর কয়েকটা দিন এই  রাজবাড়িতে মেতে থাকে। রোজ সন্ধ্যায় মন্দিরের সামনে নাটমন্দিরে যাত্রার আসর বসে। দেশ-বিদেশ থেকে সরকার পরিবারের বর্তমান প্রজন্মরা পুজোর কয়েকটা দিন এখানে আসেন। এভাবেই প্রায় ৩০০ বছরের বেশি দিন ধরে একই ঐতিহ্য বহন করে নিয়ে চলেছে এই সরকার বাড়ি বা সুরুল রাজবাড়ির পুজো।

     

    দেশের খবরদশের খবরসব খবরসবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

  • Raja Surath: বাংলায় প্রথম দুর্গাপুজো কোন রাজা প্রচলন করেছিলেন জানেন?

    Raja Surath: বাংলায় প্রথম দুর্গাপুজো কোন রাজা প্রচলন করেছিলেন জানেন?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পুরাণ অনুযায়ী, সমাধি নামক বৈশ্যের সঙ্গে মিলে রাজা সুরথ (Raja Surath) বসন্তকালে ঋষি মেধসের আশ্রমে দেবী দুর্গার আরাধনা করেন। যা পরে বাসন্তী পুজো নামে প্রসিদ্ধ হয়। দেবী দুর্গার প্রথম পূজারি হিসাবে চণ্ডীতে রাজা সুরথের উল্লেখ রয়েছে। পরে রাবণ বধের উদ্দেশ্যে শ্রীরামচন্দ্র অকাল বোধন করেন এবং তখন থেকে দুর্গাপুজো শরৎকালে শুরু হয়।

    রাজা সুরথের কাহিনি

    রাজা সুরথকে (Raja Surath) চিত্রগুপ্তবংশী রাজা (চিত্রগুপ্তের বংশধর) হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে দুর্গা সপ্তশতী দেবী মাহাত্ম্য এবং মার্কণ্ডেয় পুরাণে। সুরথ সুশাসক ও যোদ্ধা হিসেবে বেশ খ্যাত ছিলেন। কোনও যুদ্ধে নাকি তিনি কখনও হারেননি। কিন্তু প্রতিবেশী রাজ্য একদিন তাঁকে আক্রমণ করে এবং সুরথ পরাজিত হন। এই সুযোগে তাঁর সভাসদরাও লুটপাট চালায়। কাছের মানুষের এমন আচরণে স্তম্ভিত হয়ে যান সুরথ। বনে ঘুরতে ঘুরতে তিনি মেধাসাশ্রমে পৌঁছোন। ঋষি তাঁকে সেখানেই থাকতে বলেন। কিন্তু রাজা শান্তি পান না। এর মধ্যে একদিন তাঁর সমাধির সঙ্গে দেখা হয়। তিনি জানতে পারেন, সমাধিকেও তাঁর স্ত্রী এবং ছেলে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। তবুও তিনি স্ত্রী-ছেলের ভালোমন্দ এখনও ভেবে চলেছেন।

    বোলপুরেই কি দেবীর পুজো করেছিলেন রাজা সুরথ?

    তাঁরা দুজনেই (সুরথ ও সমাধি) তখন ভাবলেন, যাদের কারণে তাদের সব কিছু হারিয়েছে, তাদের ভালো আজও তাঁরা কামনা করছেন। ঋষিকে একথা বলায়, তিনি বলেন সবই মহামায়ার ইচ্ছা। এরপর ঋষি মহামায়ার কাহিনি বর্ণনা করেন। ঋষির উপদেশেই রাজা কঠিন তপস্যা শুরু করেন। কথিত রয়েছে এরপরেই রাজা সুরথ (Raja Surath) ও সমাধি বৈশ্য নিজেদের হারানো সব কিছু ফিরে পান। পরে মহামায়ার আশীর্বাদ পেতেই বসন্ত কালের শুক্ল পক্ষে রাজা সুরথ দেবীর পুজো শুরু করেন। মার্কণ্ডেয় পুরাণ বা শ্রী শ্রী চণ্ডী পুরাণ মতে বলিপুরের রাজা, যা বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলায় শান্তিনিকেন বোলপুর, সেখানকার রাজা সুরথ প্রথম দুর্গাপুজো করেন। তিনি মা দুর্গার মহিষাসুরমর্দিনী রূপকে পুজো করে। এই রূপেই দেবী দুর্গা বঙ্গে অধিক পূজিতা।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

  • Navaratri 2023: নবদুর্গার তৃতীয় রূপ মাতা চন্দ্রঘণ্টা, কেন এমন নামকরণ জানেন?

    Navaratri 2023: নবদুর্গার তৃতীয় রূপ মাতা চন্দ্রঘণ্টা, কেন এমন নামকরণ জানেন?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মহিষাসুরের দখলে তখন সম্পূর্ণ স্বর্গরাজ্য। দেবতা, মুনি, ঋষি কেউই রম্ভাপুত্রের ভয়ঙ্কর অত্যাচারে টিকতে পারছেন না। দেবতারা পরাস্ত এবং বিতাড়িত। ব্রহ্মার বরদানে মহিষাসুরকে প্রতিহত করার কেউ নেই। মহিষাসুর জানতেন, ব্রহ্মার আশীর্বাদে কোনও পুরুষ তাঁকে হত্যা করতে পারবে না। বিতাড়িত দেবতা, মুনি, ঋষিরা শরণাপন্ন হলেন ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহেশ্বরের। মহিষাসুরের অত্যাচারের কাহিনি শোনার পর ক্রোধান্বিত হলেন ত্রিদেব অর্থাৎ ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বর। ক্রোধাগ্নির প্রচণ্ড তেজ সম্মিলিত হয়ে মহর্ষি কাত্যায়ন ঋষির আশ্রমে সৃষ্টি হল এক নারীর। তিনি মা দুর্গা। নবরাত্রির (Navaratri 2023) ন’দিনে মা দুর্গার নয়টি রূপ ধারণ করে অসুরদের সঙ্গে প্রচণ্ড যুদ্ধ করেছিলেন। নবরাত্রির তৃতীয় দিনে পূজিতা হন মাতা চন্দ্রঘণ্টা। পৌরাণিক সাহিত্যের ভাষায়-
    পিণ্ডজপ্রবরারূঢা চন্দকোপাস্ত্রকৈর্য়ুতা ।
    প্রসাদং তনুতে মহ্য়ং চন্দ্রঘণ্টেতি বিশ্রুতা ।।

    মাতা চন্দ্রঘণ্টা নামকরণ কেন?

    প্রবল তেজসম্পন্না দেবী চন্দ্রঘণ্টা (Navaratri 2023), ঘণ্টা বাজিয়ে অসুরদের সতর্ক করেন। এখনকার ভাষায় ওয়ার্নিং বলা যেতে পারে। তাই দেবীর নাম চন্দ্রঘণ্টা। কালিকাপুরাণে দেবীর এমন নামকরণের উল্লেখ পাওয়া যায়। কাত্যায়ন মুনির আশ্রমে, ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বরের তেজ থেকে সৃষ্ট নারীমূর্তিকে যখন সমস্ত দেবতা একে একে অস্ত্র দ্বারা সজ্জিত করছিলেন, তখন দেবতাদের রাজা ইন্দ্র তাঁর বাহন ঐরাবৎ হাতির গলার ঘণ্টা থেকে একটি ঘণ্টা নিয়ে দেবীর একটি হাতে দিলেন।

    দেবী চন্দ্রঘণ্টার পৌরাণিক আখ্যান (Navaratri 2023)

    পুরাণে উল্লেখ রয়েছে, অসুরদের সঙ্গে প্রবল যুদ্ধ চলাকালীন মাতা চন্দ্রঘণ্টার এই তীব্র ঘণ্টানাদ বিকট শব্দ সৃষ্টি করেছিল। ঘণ্টার শব্দেই দৈত্যদের প্রাণ ভয়ে খাঁচাছাড়া অবস্থা হয়েছিল। অসুরদের অশুভ শক্তিকে হরণ করার জন্যই মাতা চন্দ্রঘণ্টা ঘণ্টা বাজিয়েছিলেন। ভক্তদের বিশ্বাস রয়েছে কল্যাণকারী মাতা তাঁদের জীবন থেকে সমস্ত পাপবোধ, ভয়, শত্রুতা, বাধান, বিঘ্ন হরণ করে নেন। 
    পৌরাণিক কাহিনিতে আরও উল্লেখ রয়েছে, দেবী চন্দ্রঘণ্টা আসলে হিমালয়কন্যা ও শিবের স্ত্রী মাতা পার্বতী। শিব-পার্বতীর বিবাহ পণ্ড করতে তারকাসুর দৈত্য, দানবদের মিলিত এক বাহিনী (Navaratri 2023) নিয়ে আক্রমণ করে। এই অবস্থায় বিবাহকে নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে দেবী পার্বতী, মাতা চন্দ্রঘণ্টার রূপ ধারণ করেন। তিনি ছিলেন বাঘের পিঠে সওয়ার। চন্দ্রের মতো বিশালাকার ঘন্টা তিনি বাজাতে থাকেন। ঘণ্টার তীব্র আওয়াজে ভীত হয়ে দানবরা রণেভঙ্গ দেয়।

    মাতা চন্দ্রঘণ্টা কোন ভোগে সন্তুষ্ট হন? 

    ভক্তদের বিশ্বাস, মাতা চন্দ্রঘণ্টা জীবনের সকল বাধাবিঘ্ন দূর করে চলার পথকে সুগম করে তোলেন। এই দেবীর পছন্দের রং কমলা বলেই মনে করেন ভক্তরা (Navaratri 2023)। তাই এই নির্দিষ্ট রঙের পোশাক পরিধান করে মাতা চন্দ্রঘণ্টার আরাধনা করলে সুফল বা শুভ ফল মেলে বলে ভক্তদের ধারণা। মাতার উদ্দেশে তাঁর ভক্তরা সাধারণত দুগ্ধজাত ভোগ নিবেদন করেন মায়ের নৈবেদ্যতে, এটা সাধারণত মিষ্টি, ক্ষীর বা রাবড়ি হয়। ভক্তদের বিশ্বাস, এতে মাতা চন্দ্রঘণ্টা প্রসন্ন হন।

     

    দেশের খবরদশের খবরসব খবরসবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

LinkedIn
Share