Category: রাজ্য

Get West Bengal News, Bengali Breaking News, Latest News in Bengali only from মাধ্যম | Madhyom, Bengali News Portal for সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ বাংলা সংবাদ, বাংলা খবর

  • Kolkata Protest Rally: বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর অত্যাচার, প্রতিবাদে পথে নামলেন এপারের হিন্দুরা

    Kolkata Protest Rally: বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর অত্যাচার, প্রতিবাদে পথে নামলেন এপারের হিন্দুরা

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশের হিন্দুদের ওপর অত্যাচারের (Bangladesh Crisis) প্রতিবাদে পথে নামলেন (Protest Rally) কলকাতার সাধারণ মানুষ। যাদবপুরের ৮বি বাসস্ট্যান্ড থেকে বিভিন্ন হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের কর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষ এই কর্মসূচিতে পা মেলালেন। ছিল না কোনও দলের পতাকা। শুধুমাত্র ওপারের হিন্দুদের অধিকারের তাগিদে এই কর্মসূচি আয়োজিত হয়।

    ওপারের কান্নায় এপারের চোখ ভিজল (Protest Rally)

    অন্যদিকে, অপর একটি মিছিল (Protest Rally) শিয়ালদা থেকে বাংলাদেশ হাইকমিশনে পৌঁছয়। বাংলাদেশের হিন্দুদের উপর ক্রমবর্ধমান অত্যাচারের (Bangladesh Crisis) প্রতিবাদে এই মিছিলের পা মিলান হাজারো প্রতিবাদী মানুষ। প্রতিবাদীরা মানববন্ধন তৈরি করেন। ওপার বাংলায় প্রাণ হারানো হিন্দুদের স্মরণে মোমবাতি জ্বালান। মুসলিম মৌলবাদীদের হাত থেকে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুদের বাঁচানোর দাবিও তোলেন তাঁরা। এদিনের অনুষ্ঠানের উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক মোহিত রায়, লেখক সন্দীপ বাগচী সহ অনেক বিশিষ্ট বর্গ।

    বামপন্থী ও সেলিব্রিটিরা চুপ কেন (Bangladesh Crisis)

    বর্তমানে যে সময় এই আন্দোলন চলছে, তখন বাংলাদেশে সেনা নিজেদের হাতে শাসন ক্ষমতা তুলে নিয়েছে। একটি অন্তবর্তী সরকার গঠনের চেষ্টা চলছে। তাঁরাও কতদূর কী করতে পারবেন তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। গাজা থেকে প্যালেস্টাইন, ইসলামিক দুনিয়ায় কোনও অত্যাচারের অভিযোগ হলে, যারা প্রতিবাদে মুখরিত হন, সেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কিংবা টলিউডের তরফে এখনও বাংলাদেশের হিন্দুদের অত্যাচারের (Bangladesh Crisis) বিষয়ে কোনও (Protest Rally) প্রতিক্রিয়া নেই। সেলিব্রেটি এবং বামপন্থীদের ‘সিলেক্টিভ’ প্রতিবাদ নিয়ে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছে নেটদুনিয়া। বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনকে যাঁরা সমর্থন জানিয়েছিলেন, সেই সমস্ত বামপন্থী এবং অভিনয় জগতের সেলিব্রেটিরাও বাংলাদেশে হিন্দুদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেখার দৃশ্য দেখেও যেন দেখতে পারছেন না। যাঁরা #alleyesonrafah লিখে ফেসবুক ভরিয়ে দিচ্ছিলেন, তাঁদের #alleyesonbangladesh লেখার সময় কি পাচ্ছেন না?

     

     

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • West Bengal: মমতার ‘মিথ্যাচার’ ফাঁস! পাঁচ বছরে রাজ্য পেয়েছে ৫.৩৬ লক্ষ কোটি টাকা!

    West Bengal: মমতার ‘মিথ্যাচার’ ফাঁস! পাঁচ বছরে রাজ্য পেয়েছে ৫.৩৬ লক্ষ কোটি টাকা!

    শুভ্র চট্টোপাধ্যায়

    কেন্দ্রের মোদি সরকার রাজ্যকে (West Bengal) বঞ্চনা করছে, এমন অভিযোগ তুলে প্রায়ই সরব হতে দেখা যায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। কিন্তু পরিসংখ্যান বলছে একেবারে উল্টো কথা। দেখা যাচ্ছে, বিগত পাঁচ বছরে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে ৫.৩৬ লক্ষ কোটি টাকা পশ্চিমবঙ্গকে দিয়েছে কেন্দ্র। অর্থাৎ মোদি সরকারের তথ্য সিলমোহর দিচ্ছে মমতার মিথ্যাচার ও কেন্দ্রের উন্নয়নকেই, এমনটাই বলছে অভিজ্ঞ মহল।

    গ্রামোন্নয়নে বিপুল টাকা! (West Bengal)

    পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, খাদ্যে ৮০ হাজার কোটি টাকা এবং সারের ক্ষেত্রে ৩০ হাজার কোটি টাকার কেন্দ্রীয় ভর্তুকিতে উপকৃত হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গবাসী (West Bengal)। পরিসংখ্যানে আরও দেখা যাচ্ছে, বিগত ৫ বছরে ৯৩ হাজার ১৭১ কোটি টাকা পশ্চিমবঙ্গকে দেওয়া হয়েছে গ্রামীণ উন্নয়নে। ২০২১-২২ অর্থবর্ষে কেন্দ্রীয় সরকার পশ্চিমবঙ্গকে ১০০ দিনের কাজের ক্ষেত্রে দিয়েছে ১১,৭৯২ কোটি টাকা, যা একটি অর্থবর্ষে দেওয়া দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পরিমাণ অর্থ। উল্লেখ্য, গ্রামীণ উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রতিবারই সর্বোচ্চ পরিমাণ টাকা পেয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। এর পাশাপাশি স্বচ্ছ ভারত মিশনে বিগত পাঁচ বছরে দেওয়া হয়েছে ২,১৫১ কোটি টাকা। নগর উন্নয়নে দেওয়া হয়েছে ১৩ হাজার ৪৬৯ কোটি টাকা। শুধুমাত্র শহরের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার অধীনে ঘরের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে ৪ লাখ ৮৯ হাজার ৯৫৯টি। 

    জনজাতি উন্নয়ন

    পশ্চিমবঙ্গে বসবাসকারী জনজাতিদের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য কেন্দ্র বিগত ৬ বছরে বাংলাকে দিয়েছে ৮৩৪ কোটি টাকা। এছাড়াও কেন্দ্রীয় সরকার জনজাতি পড়ুয়াদের বৃত্তি প্রদান করেছে ২১ কোটি টাকারও বেশি। কেন্দ্রীয় সরকারের স্বীকৃত স্টার্ট আপ বিগত ৫ বছরে পশ্চিমবঙ্গে তৈরি হয়েছে, ৪ হাজার ২৬টি, এর মধ্যে মহিলা পরিচালিত স্টার্ট আপের সংখ্যা অর্ধেকেরও বেশি। অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী কৌশল বিকাশ যোজনায় পশ্চিমবঙ্গকে দেওয়া হয়েছে ৪১৫ কোটি টাকা।

    স্বাস্থ্যক্ষেত্রেও ঢেলে অনুদান  

    স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, বিগত পাঁচ বছরে ১২ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। গত পাঁচ বছরে ইএসআইসি হাসপাতাল তৈরি হয়েছে দার্জিলিং, উত্তর ২৪ পরগনা, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। আয়ুষ্মান যোজনার অধীনে হেলথ অ্যাকাউন্ট তৈরি হয়েছে ৩.২৪ কোটি। প্রধানমন্ত্রী জন ঔষধি প্রকল্পের মাধ্যমে অতি সুলভে উন্নতমানের ঔষধ প্রদানের কাজ চলছে বাংলায়। রাজ্যে এমন জন ঔষধি দোকান রয়েছে ৩৫৯টি। এই জন ঔষধির মাধ্যমে রাজ্যের মানুষের সাশ্রয় হয়েছে বিগত পাঁচ বছরে ১,১৪৬ কোটি টাকা। সম্প্রতি, ২০২৪ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি কল্যাণীতে অবস্থিত এইম্‌সটি জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। অন্যদিকে কেন্দ্রের অনুমোদিত কর্মসূচি হিসেবে পশ্চিমবঙ্গে (West Bengal) ১১টি মেডিক্যাল কলেজ স্থাপনের বিষয়ে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে এই কলেজগুলি হবে বীরভূম (রামপুরহাট), কোচবিহার, ডায়মন্ড হারবার, পুরুলিয়া এবং রায়গঞ্জে (উত্তর দিনাজপুর)। দ্বিতীয় পর্যায়ে এই কলেজগুলি হবে বারাসত, উলুবেড়িয়া, আরামবাগ, ঝাড়গ্রাম এবং তমলুকে।

    বিপুল অর্থ কৃষিক্ষেত্রের উন্নয়নে

    কৃষি ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, বিগত পাঁচ বছরে তিরিশ হাজার কোটি টাকার বেশি ভর্তুকি শুধুমাত্র সারে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। ৮,৪৯২ কোটি টাকা মোদি সরকার রাজ্যকে দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী কিষাণ যোজনার অধীনে। এর পাশাপাশিকিষাণ ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ১০ হাজার ৯৭২ কোটি টাকা মূল্যের ঋণ ধার্য করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্পদ যোজনায় ২৩০ কোটি টাকার সহায়ক অনুদান দেওয়া হয়েছে। বিগত ৬ বছরে ২৮৩ কোটি টাকা পশ্চিমবঙ্গকে দিয়েছে মোদি সরকার পশপালন ক্ষেত্রের উন্নয়নে। এর পাশাপাশি নীল বিপ্লব ও প্রধানমন্ত্রী মৎস্য সম্পদ যোজনায় ৭৮ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে।

    নারীশক্তির উন্নয়নে বিপুল টাকা

    নারীশক্তি উন্নয়নে পশ্চিমবঙ্গকে বিপুল অনুদান দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। পরিসংখ্যান বলছে, বিগত ৬ বছরে নারীশক্তির বিকাশে পশ্চিমবঙ্গকে মোদি সরকার দিয়েছে ৫,৭৪৪ কোটি টাকা। ১৭১ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে মিশন বাৎসল্য যোজনায়। অন্যদিকে মিশন সক্ষম অঙ্গনওয়াড়ি ও পুষ্টি যোজনায় বাংলা পেয়েছ ৫,২৩৯ কোটি টাকা। মিশন শক্তি যোজনায় কেন্দ্র রাজ্যকে দিয়েছে ৩৩৪ কোটি টাকা। জল জীবন মিশনের দ্বারা প্রতি বাড়িতে পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্র। এই প্রকল্পে বিগত ছয় বছরে পশ্চিমবঙ্গকে দেওয়া হয়েছে ১৯,৫৯৫ কোটি টাকা। অন্যদিকে সুকন্যা সমৃদ্ধি যোজনার অধীনে রাজ্য থেকে ১৪ লাখেরও বেশি অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ (West Bengal) থেকে অটল পেনশন যোজনায় যুক্ত হয়েছেন ৪৮ লাখেরও বেশি মানুষ।

    ৭ লাখেরও বেশি আবেদন বিশ্বকর্মা যোজনায়, কেন্দ্রীয় বরাদ্দ বেলুর মঠেও

    পশ্চিমবঙ্গ থেকে প্রধানমন্ত্রী বিশ্বকর্মা যোজনায় আবেদনপত্র সংগৃহীত হয়েছে ৭ লাখ ৩৫ হাজার ৬৬৪টি, যার মধ্যে মহিলা আবেদনকারী সংখ্যা ২ লাখ ১২ হাজার ৫৩০ জন। কেন্দ্রীয় সরকারের স্ফূর্তি যোজনায় ১৯টি নির্বাচিত গোষ্ঠী পেয়েছে ৪৫.৪৫ কোটি টাকার কেন্দ্রীয় সহায়তা। এর পাশাপাশি ধর্মীয় স্থানের উন্নতিতেও নজর দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। বেলুড় মঠের উন্নয়ন প্রকল্পে কেন্দ্র সরকার বরাদ্দ করেছে ৩০.০৩ কোটি টাকা। অন্যদিকে দুর্গাপুজোকে ইউনেস্কোর ‘ইন্ট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজ অফ হিউম্যানিটির’ তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।

    উপকূল এলাকার বাসিন্দাদের জীবনের মানোন্নয়ন, উন্নয়ন পরিকাঠামো ক্ষেত্রেও

    উপকূল এলাকার বাসিন্দাদের উন্নয়নের জন্য কেন্দ্র স্বদেশ দর্শন প্রকল্পে রাজ্যকে দিয়েছে ৬৭.৯ কোটি টাকা। এর মাধ্যমে উপকূল এলাকার বাসিন্দাদের বিভিন্ন সুযোগসুবিধা বাড়ানো হবে। পরিকাঠামো ক্ষেত্রেও দেখা যাচ্ছে রাজ্যকে বিপুল অর্থ বরাদ বরাদ্দ করেছে কেন্দ্রের মোদি সরকার। সড়ক পরিকাঠামো প্রকল্পে বরাদ্দ করা হয়েছে ১৫,৬৭৫ কোটি টাকা। ২,২১৬ কিলোমিটারেরও বেশি জাতীয় মহাসড়ক নির্মিত হয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। এর মধ্যে ভারতমালা পরিযোজনায় বারাণসী-রাঁচি-কলকাতা এবং খড়্গপুর-শিলিগুড়ি গ্রিনফিল্ড করিডর নির্মিত হচ্ছে। ভারতমালা পরিযোজনার প্রথম পর্যায়ের আওতায় পশ্চিমবঙ্গে (West Bengal) আনুমানিক ৩২,৯৩৭ কোটি টাকার মূলধনী ব্যয়ে ৮৭৪ কিলোমিটার জাতীয় সড়ক নির্মাণের কাজ অনুমোদন করা হয়েছে। রেলওয়ে পরিকাঠামো উন্নয়নে বরাদ্দ করা হয়েছে ১৯,৪৮৩ কোটি টাকা।

    সাগরমালা প্রকল্পে ১৬,৩০০ কোটি টাকা

    সাগরমালা প্রকল্পে দেওয়া হয়েছে ১৬,৩০০ কোটি টাকা। পশ্চিমবঙ্গের সামুদ্রিক পরিকাঠামো নির্মাণেও বিপুল টাকা দিয়েছে কেন্দ্র। বর্তমানে ৫৫৪৫.১ কোটি টাকা মূল্যের ৩৯টি প্রকল্পের কাজ চলছে সামুদ্রিক পরিকাঠামোর উন্নয়নে। এর মধ্যে রয়েছে হলদিয়া থেকে বারাণসী পর্যন্ত জাতীয় জলপথ তৈরি করার প্রকল্পও। যার দৈর্ঘ্য হল ১,৩৯০ কিলোমিটার। পণ্য সম্ভার পরিবহণে শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি বন্দরেরও ক্ষমতা বেড়েছে। অন্যদিকে ৩৭৪.৫৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ফরাক্কায় নতুন নেভিগেশন লক গেট-এর উন্নয়নের কাজ সম্পূর্ণ করা হয়েছে।

    ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও শিক্ষার উন্নয়নেও বিপুল টাকা

    রাজ্যের ঐতিহ্য সংরক্ষণেও ব্যাপক জোর দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। বিগত পাঁচ বছরে ৫৮.১০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে গুরু-শিষ্য পরম্পরা প্রচারের ক্ষেত্রে। অন্যদিকে ৩৪.৩০ কোটি টাকা আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংস্থাকে। বিজ্ঞানের প্রচারের জন্য ১৫.৬২ কোটি টাকা রাজ্যকে দিয়েছে কেন্দ্র। রাজা রামমোহন রায় লাইব্রেরি ফাউন্ডেশনে প্রদান করা হয়েছে ৫.০৪ কোটি টাকা। অন্যদিকে সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে তরুণ শিল্পীদের বৃত্তি দেওয়া হয়েছে ৩.০৯ কোটি টাকা। বারাকপুরে গান্ধী স্মারক সংগ্রহালয়ের উন্নতি প্রকল্পে প্রদান করা হয়েছে ১৬.৩২ লাখ টাকা। শিক্ষার ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে ৬৪৯ কোটি টাকা কেন্দ্র রাজ্যকে দিয়েছে সমগ্র শিক্ষা প্রকল্পে। তফসিলি পড়ুয়াদের ৬৯ লাখ বৃত্তি দেওয়া হয়েছে। কৃষি প্রতিষ্ঠানগুলির জন্য কেন্দ্রীয় সরকার দিয়েছে ১,৯১৬ কোটি টাকা।

    এতকিছুর পরেও মমতা বলছেন, রাজ্য বঞ্চিত!!

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Bangladesh Crisis: বাংলাদেশে ভাঙা পড়েছে বঙ্গবন্ধুর মূর্তি, ‘মানা যায় না’, বলছে ভাষা-শহিদের পরিবার

    Bangladesh Crisis: বাংলাদেশে ভাঙা পড়েছে বঙ্গবন্ধুর মূর্তি, ‘মানা যায় না’, বলছে ভাষা-শহিদের পরিবার

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: অশান্ত বাংলাদেশ (Bangladesh Crisis) । দগ্ধে পুড়ছেন ভাষা শহিদের পরিবার। হুগলির কোন্নগরের গঙ্গাপারের সেই বাড়িটিতেই যত্নে রাখা রয়েছে সফিউর রহমানের ছবি। যে সফিউর ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি উর্দু আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বাংলা ভাষার জন্য রক্ত দিয়েছিলেন ঢাকার রাজপথে। যে ১৪ জন সে দিন শহিদ হয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে হুগলির (Hooghly) কোন্নগরের সফিউর অন্যতম। তাঁরই ছবি আঁকড়ে রয়েছেন তাঁর খুড়তুতো ভাই আহসানুর রহমান এবং বোন সেতারা খাতুন।

    কোন্নগরের পড়াশুনা করেছিলেন সফিউর (Bangladesh Crisis)

    পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সফিউর জন্মেছিলেন কোন্নগরেই। পড়াশোনা কোন্নগর উচ্চ বিদ্যালয়ে। তার পরে প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে বিএসসি পাশ করে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে এমবিবিএস পড়া। ১৯৪৭ সালে স্বাধীন হয়েছিল ভারত। দেশভাগের সেই পর্বেই সফিউরের বাবা মাহবুবর রহমান পরিবার নিয়ে চলে যান ঢাকায় (Bangladesh Crisis) । তিনি ছিলেন বিচারক। ঢাকা হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টে কর্মরত ছিলেন। দাদা সফিউর রহমানও বাবার সঙ্গেই চলে গিয়েছিলেন ঢাকায়। পরবর্তীতে দাদা জড়িয়ে পড়েন ভাষা আন্দোলনের সঙ্গে।

    আরও পড়ুন: ‘‘হিন্দুদের ওপর, মন্দিরে হামলায় উদ্বিগ্ন’’, বাংলাদেশ নিয়ে প্রতিক্রিয়া ইজরায়েলের

    যত্নে রাখা রয়েছে সফিউর রহমানের ছবি

    হুগলির কোন্নগরের আহসানুরদের বাড়ির নোনা-ধরা দেওয়ালের গায়ে অনেক ইতিহাস। তাতে জুড়ে আছে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন। জুড়ে আছেন অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ত্রৈলোক্যনাথ মিত্র। ৩০০ বছরের পুরনো বাড়িটির গায়ে অভাবে অযত্নের ছাপও স্পষ্ট। গঙ্গাপারের সেই বাড়িটিতেই যত্নে রাখা রয়েছে সফিউর রহমানের ছবি। শহিদ সফিউরের ছবি হাতে নিয়েই বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন তাঁরা। পরিবারের অসাম্প্রদায়িক ঐতিহ্য বোঝাতে গিয়ে আহসানুর বলেন, কোন্নগরের বিশিষ্ট পণ্ডিত ত্রৈলোক্যনাথ মিত্রের বাড়ির দুর্গাপুজোয় পঞ্চমীর দিন কর্তা হয়ে যেতেন রহমান পরিবারের লোকজন। অদূরেই অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাগানবাড়ি। সে জমিও এককালে ছিল রহমান পরিবারের হাতে। শরিকি ঝামেলায় কিছু বদলায়নি। এখনও এই জীর্ণ বাড়িতে (Hooghly) বিদ্যুতের বিল আসে শহিদ সফিউরের বাবা মাহবুবর রহমানের নামে। ৬ বিঘা ১ কাঠা ১০ ছটাক জায়গা রহমান পরিবারের।

    …তাই বলে বঙ্গবন্ধুর মূর্তি ভাঙা হবে?

    খুড়তুতো ভাই আহসানুর বলেন, “মুজিবর রহমান যে দলেরই হোন, বাংলাদেশের মানুষের এটা জানা উচিত যে তিনি স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জনক। সরকার পছন্দ না হলে আন্দোলন করুক। কিন্তু, তাঁর স্মৃতিতে হামলা, মেনে নেব কী করে! জানি, হাসিনা স্বেচ্ছাচার চালিয়েছেন। জানি, মানুষের কোনও গণতান্ত্রিক অধিকার ছিল না। কিন্তু তাই বলে বঙ্গবন্ধুর মূর্তি ভাঙা হবে?” মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মুছে দিতে চাইছে কারা? কারা ভাষা শহিদদের অসম্মান করছে? প্রশ্নের জবাবে আহসানুর বলেন, “দেখে মনে হচ্ছে, ওই আন্দোলনে মৌলবাদীরা ঢুকে পড়েছে। সেটাই সবচেয়ে ভয়ের। শেখ হাসিনা যে ভাবে সরকার চালিয়েছেন, তাতে তাঁর শাস্তি প্রাপ্যই ছিল।”

    কেন ঘা পড়ল ভাষা শহিদদের স্মৃতিস্তম্ভে? কেন মলিন করে দেওয়া হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস? ভাষা শহিদের পরিবারের মতে, “মুক্তিযুদ্ধকে বাদ দিয়ে কখনও বাংলাদেশের কথা ভাবা যায় না! একটা অংশ ইতিহাস মুছতে চাইছে। আশা করি, বাংলাদেশ এই অশুভ সময় কাটিয়ে উঠবে। মাতৃভাষার অধিকার দাবি করে প্রাণ দিয়েছিলেন আমার দাদা। পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে জন্ম নিয়েছিল স্বাধীন বাংলাদেশ (Bangladesh Crisis) রাষ্ট্র। সেখানে আজ ভাঙা হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর মূর্তি। এ দৃশ্যও দেখতে হল।”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Buddhadeb Bhattacharjee: প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য

    Buddhadeb Bhattacharjee: প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: প্রয়াত পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য (Buddhadeb Bhattacharjee)। পশ্চিমবঙ্গে ৩৪ বছরের বামফ্রন্ট (CPM) শাসনের দ্বিতীয় তথা শেষ মুখ্যমন্ত্রীর মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। বৃহস্পতিবার সকালে এই খবর জানান তাঁর সন্তান সুচেতন ভট্টাচার্য। তিনি জানান, প্রাতঃরাশ সেরে সকালে বিশ্রাম নেওয়ার সময়ই অসুস্থ বোধ করেন বুদ্ধদেব। এদিন সকাল ৮টা ২০ মিনিটে পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতেই তিনি প্রয়াত হন। খবর পেয়ে সুচেতন সেখানে পৌঁছেছেন। তাঁর মৃত্যুতে শোকাহত রাজনৈতিক মহল।

    শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন

    গত কয়েকদিন ধরেই শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। এদিন সকাল থেকে শ্বাসকষ্ট বেড়েছিল। অক্সিজেন দেওয়া হলেও শেষরক্ষা হয়নি। দীর্ঘ দিন ধরেই গুরুতর শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা (সিওপিডি)-তে ভুগছিলেন বুদ্ধদেব (Buddhadeb Bhattacharjee)। অসুস্থতার কারণে শেষ কয়েক বছর কার্যত গৃহবন্দিই ছিলেন। শেষবার দলীয় কর্মসূচিতে দেখা গিয়েছিল ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। ভগ্ন শরীর নিয়েই কোনওক্রমে ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ড পর্যন্ত এসেছিলেন। কিন্তু মঞ্চে উঠতে পারেননি। একাধিক বার হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয় তাঁকে। ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে প্রবল শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন বুদ্ধদেব। সেই সময়েও কয়েক দিন ভেন্টিলেশনে রাখতে হয় তাঁকে। সেখান থেকে বিপন্মুক্ত হয়ে বাড়ি ফেরেন। গত বছরের ৯ অগাস্ট হাসপাতাল থেকে বিপন্মুক্ত হয়ে বাড়ি ফিরেছিলেন বুদ্ধদেব। ২৯ জুলাই আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে ভর্তি করানো হয়েছিল দক্ষিণ কলকাতার আলিপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালে। বেশ কয়েক দিন তাঁকে ভেন্টিলেশন (ইনভেসিভ) সাপোর্টে রাখেন চিকিৎসকেরা। 

    আরও পড়ুন: ‘‘কুস্তির কাছে আমি হেরে গেলাম’’, ক্ষমা চেয়ে অবসর ঘোষণা বিনেশ ফোগাটের

    রাজনৈতিক জীবন

    ২০০০ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত টানা ১১ বছর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী (Buddhadeb Bhattacharjee) ছিলেন তিনি। ২০০৬ সালে ২৩৫ আসনে জিতে ক্ষমতায় ফেরা মুখ্যমন্ত্রীকে পাঁচ বছর পরই শোচনীয় পরাজয়ের মুখে পড়তে হয়। ২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গে অবসান হয় সাড়ে ৩৪ বছরের একটানা বাম শাসনের (CPM) । তাঁর আমলের শেষ পাঁচ বছরে কৃষি থেকে সরে শিল্পায়নকে আঁকড়ে ধরতে গিয়েই বুদ্ধদেবের পায়ের তলার জমি সরে যায়। ২০১১ সালে যাদবপুর কেন্দ্রে হারার পর থেকেই সেভাবে দলের সক্রিয় কোনও কর্মসূচিতে দেখা যায়নি তাঁকে। শারীরিক সমস্যার জন্য ১১ বছর ধরে ঘরবন্দি ছিলেন বাংলার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর প্রয়াণের সঙ্গেই শেষ হল বাংলার রাজনৈতিক ইতিহাসের একটি অধ্যায়।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ranaghat: ব্রহ্মডাঙা থেকে রানাঘাট! নামকরণের পিছনে লুকিয়ে রয়েছে রোমহর্ষক কাহিনি

    Ranaghat: ব্রহ্মডাঙা থেকে রানাঘাট! নামকরণের পিছনে লুকিয়ে রয়েছে রোমহর্ষক কাহিনি

    হরিহর ঘোষাল

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: শিয়ালদা-কৃষ্ণনগর লাইন দিয়ে ট্রেনে যেতে যেতে সকলেরই নজরে পড়ে রানাঘাট (Ranaghat) স্টেশন। এই স্টেশনের বুক চিড়ে প্রথম ট্রেন গেদে হয়ে কুষ্টিয়া (বাংলাদেশ) চলে গিয়েছিল। বহু ইতিহাসের সাক্ষী এই শহর। নদিয়া জেলার অন্যতম প্রাচীন জনপদ রানাঘাট। বহু মনীষীর স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে এই রানাঘাটে। স্বাধীনতা সংগ্রামে অন্যতম ভূমিকা পালন করেছিলেন রানাঘাটেরই বীর সন্তানেরা। রানাঘাট রত্নগর্ভা এক বনেদি শহর। লিককের পথ ধরে তাই অনায়াসেই বলা যায়, “যার আছে পুঁজিপাট, সে থাকে রানাঘাট”। পুঁজি মানে অর্থের পুঁজি শুধু নয়, শিক্ষা সংস্কৃতি, কৃষ্টি, আভিজাত্য, ইত্যাদি সব কিছুতে পুঁজিপতি মানুষ আছেন নদিয়ার (Nadia) রানাঘাটে।

    ব্রহ্মডাঙা থেকে রানাঘাট! (Ranaghat)

    রানাঘাট শহরের নাম নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে। তবে, কোনটা প্রামাণ্য, তা সঠিকভাবে জানা যায়নি। একটি সূত্রে পাওয়া গিয়েছে, এক সময় রানাঘাটের নাম ছিল ব্রহ্মডাঙা। মুঘল সম্রাট আকবরের রাজস্ব সচিব রানা টোডরমল তৎকালীন ব্রহ্মডাঙায় জমি জরিপের কাজে এসেছিলেন বলে ব্রহ্মডাঙার নাম রানাঘাট হয়ে গিয়েছিল। ইতিহাসবিদ প্রিঙ্গিলের দাবি, অষ্টাদশ শতাব্দীতে রণ বা রানা নামে এক দুধর্ষ ডাকাত এই এলাকাকে তাঁর ঘাঁটিতে পরিণত করেন। সেই ডাকাত রানার নামেই রানাঘাট। এই তথ্যটিকে বেশির ভাগ মানুষ সঠিক বলে মনে করেন। আবার নদিয়ার মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্রর দ্বিতীয় রানির বাড়ি রানাঘাট সংলগ্ন নোকাড়ি গ্রামে ছিল। তাই রানির ঘাট থেকেও রানাঘাট হতে পারে।

    রানাঘাটে রবীন্দ্রনাথ

    জানা গিয়েছে, কবি নবীনচন্দ্র সেন রানাঘাটের (Ranaghat) মহকুমা শাসক থাকাকালীন ১৮৯৪ সালের ৪ সেপ্টেম্বর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর স্বয়ং তাঁর বাংলোয় এসেছিলেন। সেই স্মৃতি আঁকড়ে ফি-বছর ওই তারিখে এখনও কবিমিলন  উৎসব হয় রানাঘাটের মহকুমা শাসকের বাংলোয়। রবীন্দ্রনাথের প্রথম সঙ্গীত-শিক্ষাগুরু বিষ্ণুচরণ চক্রবর্তী রানাঘাটের কায়েতপাড়ায় জন্মেছিলেন। রাজা রামমোহন রায় তাঁকে ব্রাহ্মসমাজের গায়ক হিসেবেও নিয়েছিলেন। বিদ্যাসাগরের পৃষ্ঠপোষকতায় পন্ডিত কালীময় ঘটকের ‘চরিতাষ্টক’ বই এক সময় স্কুলের পাঠ্যপুস্তক হয়েছিল। কালীময়ের শিক্ষাজীবন শুরু হয়েছিল এখানকার ‘গুরুমশাই’ পাঠশালায়। নদিয়া বিষয়ক প্রামাণ্য একটি বই ‘নদিয়া কাহিনী’। এই আকর গ্রন্থটির লেখক কুমুদনাথ মল্লিক রানাঘাটের সুসন্তান। এখনকার কবি জয় গোস্বামীর নিজের শহর রানাঘাট। সব মিলিয়ে গুণী মানুষের ভিড় ও বনেদিয়ানায় সমৃদ্ধ এ শহর।

    রানাঘাটে রামকৃষ্ণ!

    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঠাকুর রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব একবার রানাঘাটের (Ranaghat) চূর্ণী তীরবর্তী কলাইঘাটায় এসেছিলেন। রানি রাসমণির জামাতা মথুরচন্দ্র বিশ্বাসকে নিয়ে তিনি আদিবাসী অধ্যূষিত কলাইঘাটা বটতলায় যান। স্বাভাবিকভাবেই গ্রামবাসীরা ঠাকুরকে দেখতে সেখানে সমবেত হন। তিনি শিশুদের হতদরিদ্র রূপ দেখে ব্যথিত হন। ঠাকুর মথুরচন্দ্রকে বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত এদের অন্ন এবং পোশাকের ব্যবস্থা না হচ্ছে, বটগাছের নীচে তিনি বসে থাকবেন। মথুরবাবু ঠাকুরের কথামতো অসহায় শিশুদের জন্য অন্নবস্ত্রের ব্যবস্থা করেন। ঠাকুর তাতে খুশি হয়ে মথুরবাবুর সঙ্গে কলকাতায় ফিরে আসেন। রামকৃষ্ণ ভক্তরা এই তীর্থস্থানে একটি রামকৃষ্ণ স্মৃতিভবন নির্মাণের চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু কিছু মানুষের বিরোধিতায় সেটা সফল হয়নি। বর্তমানে কলাইঘাটার প্রায় বিপরীত দিকে অবকাশ পার্কের কাছে রামকৃষ্ণ ভক্তবৃন্দের অনুরোধে রানাঘাট পুরসভার উদ্যোগে ভবন তৈরি করা হয়েছে। নাম দেওয়া হয়েছে, রামকৃষষ্ণালয়।

     রানাঘাট পুরসভার অতীত-বর্তমান

    ১৮৬৪ খ্রিস্টাব্দের ২১ সেপ্টেম্বর রানাঘাট (Ranaghat) পুরসভার প্রতিষ্ঠা হয়। শুরুতে ১৪ জন কমিশনার ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ৯ জনই মনোনীত। পদাধিকার বলে ৫ জন পুরসভার কার্যনির্বাহক সমিতির সদস্য হন। পুরসভার গৃহীত উপবিধি অনুমোদন করতেন লেফটেন্যান্ট গভর্নর। এখন পুরসভার কাউন্সিলররা সাধারণ মানুষের ভোটে নির্বাচিত হন। রানাঘাট মহকুমার মধ্যে শান্তিপুর পুরসভা রানাঘাটের থেকেও পুরানো। জেলার প্রথম পুরসভা শান্তিপুর ১৮৫৩ সালে তৈরি হয়। এর ১১ বছর পর রানাঘাট পুরসভার প্রতিষ্ঠা।

    রানাঘাটের রসগোল্লা

    রসগোল্লার উদ্ভাবক কে? বিরোধ শুধু বাংলা-ওড়িশায় নয়, বিরোধ বাংলার মধ্যেও। বাগবাজারের নবীনচন্দ্র দাসকেই রসগোল্লার উদ্ভাবক বলে ধরা হয়। ১৮৬৮ সালে নবীনচন্দ্র রসগোল্লা তৈরি করেন। কিন্তু অনেকের মতে, রসগোল্লার আসল উদ্ভাবকের নাম হারাধন মণ্ডল। হারাধন মণ্ডল শান্তিপুরের ফুলিয়ার মানুষ। রানাঘাটের পালচৌধুরীদের হালুইকর ছিলেন। তিনিই রসের মধ্যে ছানার ডেলা ফেলে একটি অভিনব মিষ্টান্ন প্রস্তুত করেন। পালচৌধুরীরা তার নাম দেয় রসগোল্লা। রসগোল্লা ছাড়া, রানাঘাটে অনেক কাল ধরে চলে আসা মিষ্টান্ন দ্রব্যের মধ্যে রয়েছে পান্তুয়া, গজা, অমৃতি প্রভৃতি।

     রানাঘাটের সংস্কৃতি

    রানাঘাট শহরে এক সময় প্রতিটি বাড়িতে সন্ধ্যাপ্রদীপ প্রজ্বলনের মতো সঙ্গীতের রেওয়াজ হত। মার্গ সঙ্গীতের পীঠস্থান ছিল রানাঘাট। মূলত, পালচৌধুরী পরিবারের পৃষ্ঠপোষকতায় এবং পালচৌধুরীদের সভাগায়ক নগেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের উদ্যোগে দেশ-বিদেশের উচ্চাঙ্গ শিল্পীদের মিলনমেলায় পরিণত হত। শ্রীজান বাঈ, দিলজান, ইমন বাঈ, লালাকুন্দ, আহম্মদ খাঁ সাহেবের মতো উত্তর ভারতের সেরা গায়কেরা এই আসরে নিয়মিত আসতেন। এই ভাবেই নগেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য তাঁর দুই প্রখ্যাত শিষ্য নগেন্দ্রনাথ দত্ত ও নির্মলকুমার চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে রানাঘাট ঘরানার জন্ম দেন। নিধুবাবু প্রবর্তিত বাংলা টপ্পা ধারার সঙ্গে লখনউ ঘরানার মিলনে এক বিশেষ টপ্পা ধারার সৃষ্টি হয়। এই ঘরানার পরবর্তী বিখ্যাত শিল্পী ছিলেন শিবকুমার চট্টোপাধ্যায় এবং ডাঃ অঞ্জলি মুখোপাধ্যায়। নগেন্দ্রনাথ দত্তের শিষ্য ছিলেন ভীষ্মদেব চট্টোপাধ্যায়।

     রানা ডাকাতের কালীমন্দির

    রানাঘাটের দ্রষ্টব্য স্থানগুলি হল-পালচৌধুরীদের পূর্বতন ভদ্রাসনের প্রাচীরের মধ্যে একই ভিতের উপর প্রতিষ্টিত জোড়া শিবমন্দির। মন্দিরে টেরাকোটার কাজ আছে। চূর্ণী নদীর তীরে বড়বাজারে জগন্নাথ-সুভদ্রা-বলরামের মন্দির। জমিদার রতন পালচৌধুরীর বিধবা পত্নী উজ্জ্বলমণি দাসীর প্রচেষ্টায় ৯৫ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মিত নিস্তারিণী মন্দির, রানা ডাকাতের প্রতিষ্ঠিত সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দির রয়েছে। সেখানে পুরানো ঐতিহ্য মেনেই পুজো হয়। এছাড়া রানাঘাট শহরের স্কুলমোড়ে প্রতিষ্ঠিত চিন্ময়ী ও মৃন্ময়ী মন্দির, ব্রজবল্লভ মন্দির জহুরা কালীবাড়ি এবং রাধাবল্লভ মন্দির রয়েছে।

    এশিয়ার প্রথম রবীন্দ্র ভবন রানাঘাটে!

    এশিয়ার প্রথম রবীন্দ্র ভবন তৈরি হয়েছিল এই শহরে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম-সহ বিশিষ্ট মনীষীদের পদধূলিতে ধন্য হয়েছে এই শহর। সঙ্গীত, নাটকের পাশাপাশি খেলাধুলাও সুনাম কুড়িয়েছে রানাঘাট। এই শহরের প্রথিতযশা মানুষদের মধ্যে রয়েছেন রবীন্দ্র জীবনীকার প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ পণ্ডিত কালীময় ঘটক, নদিয়া (Nadia) কাহিনীর রচিয়তা রায়বাহাদুর কুমুদনাথ মল্লিক,কলকাতার প্রাক্তন মেয়র সন্তোষকুমার বোস, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন সহ উপাচার্য ভবতোষ চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ। 

    রানাঘাটে সংবাদপত্র

    ব্রিটিশদের সময় রানাঘাটে সংবাদপত্র প্রকাশিত হতে শুরু করে। কবি গিরিজানাথ মুখোপাধ্যায়ের হাত ধরে ১৮৯৯ সালে প্রকাশিত হয় ‘বার্তাবহ’। রানাঘাট রেল স্টেশন কাছে গিরিজানাথের পত্রিকা অফিসে বসত সাহিত্য-আড্ডা। নানা সময়ে এই শহর থেকে পল্লিচিত্র, অশনি, ছাত্রবাণী, ফ্ল্যাশ, খেলাধূলা, শ্রমিক ও সমাজ, টর্চ, সীমান্তবাণী, বাংলা বাজার, ঝড়, ফ্লিক, চ্যালেঞ্জ, সবুজসোনা, চুর্ণী, নদিয়া গৌরব, রাতু-সহ বিভিন্ন পত্রপত্রিকা প্রকাশ পেয়েছিল।

    স্বাধীনতা সংগ্রামে রানাঘাট

    বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ নন্দিনী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসেও জড়িয়ে রয়েছে রানাঘাটের নাম। নীলবিদ্রোহ, স্বদেশি আন্দোলন, অসহযোগ আন্দোলন, ভারত ছাড়ো আন্দোলনেও যোগ দিয়েছিলেন রানাঘাটের মানুষ। অসহযোগ আন্দোলনে শিবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, কেশবচন্দ্র মিত্র, নেপালচন্দ্র বন্দোপাধ্যায়, রেণুমাধব দাস, শিশিরকুমার বসু, চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুন্ঠনে সহায়রাম দাস, ভারত ছাড়ো আন্দোলনে অসীমকুমার মজুমদার, বিমলকুমার চট্টোপাধ্যায়, নৃসিংহ চৌধুরী, কুমারেশ বিশ্বাস, মহ হবিবুল্লহ, মহম্মদ কালু শেখ, শ্রীধর মুখোপাধ্যায়,পটল মুস্তাফি-সহ অনেকেই রয়েছেন সেই তালিকায়।” সব মিলিয়ে এক উজ্জ্বল ঐতিহ্য রয়েছে রানাঘাটের। আর সেই ঐতিহ্যকে সমানে আগলে চলেন রানাঘাটবাসী।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Bangladesh Crisis: অশান্ত বাংলাদেশ, অনুপ্রবেশের সম্ভাবনা প্রবল! জল-স্থল সীমান্তে সতর্ক বিএসএফ

    Bangladesh Crisis: অশান্ত বাংলাদেশ, অনুপ্রবেশের সম্ভাবনা প্রবল! জল-স্থল সীমান্তে সতর্ক বিএসএফ

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: অগ্নিগর্ভ বাংলাদেশ (Bangladesh Crisis)। চারিদিকে শুধুই হাহাকার আর কান্নার রোল। অন্যদিকে, একদলের উন্মত্ত উল্লাস। সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার সীমাহীন। সোনার বাংলা ভূলুণ্ঠিত। শুধু সংখ্যালঘুরাই নয়, আক্রান্ত হচ্ছেন আওয়ামি লিগের নেতা-কর্মীরাও। প্রাণভয়ে অনেকে পালিয়ে আসছেন সীমান্তপারে। বাংলাদেশের এই চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রেক্ষিতে তাই ভারতীয় সীমান্তে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যবস্থা নিল বিএসএফ। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে জলসীমানা অনেকটা। তাই কড়া নজরদারি চালানো হচ্ছে জলসীমায়। বাংলাদেশ সীমান্ত বরাবর ডাঙাতেও হাই অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। বিএসএফের (BSF) পক্ষ থেকে বাড়ানো হয়েছে নজরদারি। কাঁটাতার ঘেরা সীমান্তে রাত-টহলের জন্য নাইট ভিশন ক্যামেরার সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। বেড়েছে জওয়ানের সংখ্যাও।

    সুন্দরবনে জলসীমায় কড়া পাহাড়া

    বাংলাদেশের (Bangladesh Crisis) বর্তমান পরিস্থিতিতে সুন্দরবনের ভারত-বাংলাদেশ জলসীমানায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সুন্দরবনের নদী ও সমুদ্রে হাই অ্যলার্ট জারি করা হয়েছে। এখন বাংলাদেশ ও ভারতের জলসীমানায় ২৪ ঘণ্টা টহল দিচ্ছে জলে-স্থলে চলতে পারা ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনীর হোভারক্রাফ্ট। এদিন বেলায় ফ্রেজারগঞ্জ ঘাঁটিতে পৌঁছে গিয়েছে বিশেষ এই হোভারক্রাফ্ট। উপকূলরক্ষী বাহিনীর জওয়ানরা হোভারক্রাফ্টে চেপে বঙ্গোপসাগরে ভারত-বাংলাদেশ জলসীমানায় টহলদারি শুরু করেছেন। অনেক সময়ে বাংলাদেশ থেকে জলদস্যু বা মৎস্যজীবীরা জলসীমানা পেরিয়ে চলে আসে এ পারে‌। ট্রলারে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ আটকাতে এই হোভারক্রাফ্ট অনেকটাই কাজে আসবে বলে মনে করা হচ্ছে। উপকূলরক্ষী বাহিনীর পাশাপাশি সুন্দরবনের উপকূল এলাকার প্রতিটি থানাই জলপথে পেট্রোলিং চালাচ্ছে। এ দিন সকাল থেকে ফ্রেজারগঞ্জ উপকূল থানার স্পিডবোট এবং এফআইবি বোট নদী এবং সমুদ্রে টহল দিয়েছে।

    গ্রামবাসীদের দল

    সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ রুখতে এবার একজোট হলেন গ্রামবাসীরাও। গ্রামে গ্রামে টিম করে সচেতনতা প্রচার চালাচ্ছে বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স। জেল ভাঙা জামাত জঙ্গিরা যে কোনও সময় সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ঢুকতে পারে, এমন প্রচারও চালাচ্ছে বিএসএফ (BSF)। মূলত বাংলাদেশের এই পরিস্থিতির মধ্যে যাতে কোনও ভাবে অনুপ্রবেশ না ঘটে সেই বিষয়ে গুরুত্ব দিতেই, নদিয়া,  জলপাইগুড়ি, কোচবিহারের সীমান্তবর্তী এলাকায় গ্রামবাসীদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএসএফ। গেদে ৩২ নম্বর ব্যাটেলিয়ানের উদ্যোগে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সঙ্গে নদিয়ায় বৈঠকে বসেন পঞ্চায়েত প্রধান সদস্য-সহ অন্যান্য প্রতিনিধিরা। কোনও অপরিচিত মানুষ দেখলে গ্রামবাসীদের কী কর্তব্য সেটাও বুঝিয়ে দিয়েছে সেনা-আধিকারিকরা।

    গ্রামবাসীদের করণীয়

    বুধবার সীমান্তবর্তী একাধিক গ্রামে গিয়ে অনুপ্রবেশ (Bangladesh Crisis) রুখতে গ্রামবাসীদের কী করণীয় তা বুঝিয়ে বলেন বিএসএফ (BSF) আধিকারিকরা। গ্রামবাসীদের তাঁরা বলেন, ‘‘অচেনা কাউকে গ্রামে দেখলে বিএসএফ বা পুলিশকে জানাবেন। রাতে খুব দরকার না হলে বাড়ির বাইরে বেরোবেন না। আর বেরোলেও সীমান্তের কাটাতারের দিকে যাবেন না।’’ তবে বাংলাদেশের পরিস্থিতির কোনও প্রভাব সীমান্তের এপারে পড়ার সম্ভাবনা দেখছেন না গ্রামগুলির বাসিন্দারা। তাঁরা জানিয়েছেন, বিএসএফ ও পুলিশের পাহারায় নিরাপদে রয়েছেন তাঁরা।

    উত্তরবঙ্গে সতর্কতা

    উত্তরবঙ্গের ফুলবাড়ি সীমান্তে সরদারপাড়া, ধদাগছ, লক্ষ্মীস্থান, নারায়ণজোতসহ প্রায় ১২টি সীমান্তবর্তী গ্রাম রয়েছে। সেখান থেকে অনুপ্রবেশের আশঙ্কা করছে বিএসএফ (BSF)। এব্যাপারে গ্রামবাসীদের সতর্ক করেছেন বিএসএফ আধিকারিকরা। বুধবার গ্রামে গ্রামে গিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। বিএসএফের নর্থবেঙ্গল ফ্রন্টিয়ারের আইজি সুর্যকান্ত শর্মা বলেন, “সম্প্রতি বাংলাদেশে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। অনুপ্রবেশ, অপ্রীতিকর ঘটনা রুখতে আমরা প্রস্তুত রয়েছি। সীমান্তে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। সীমান্তবর্তী এলাকাতেও গ্রামবাসীদের সতর্ক করা হচ্ছে যাতে কোনও সন্দেহজনক কাওকে বা অপরিচিত কাউকে দেখলে সঙ্গে সঙ্গে আমাদের বা পুলিশকে জানানো হয়।” দক্ষিণ দিনাজপুর থেকে কোচবিহার পর্যন্ত উত্তরের পাঁচ জেলার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের প্রায় চার হাজার কিলোমিটার সীমান্তের মধ্যে ৯৩৬ কিলোমিটার নর্থবেঙ্গল ফ্রন্টিয়ারের অধীনে। সীমান্তে নজরদারির জন্য চারটি সেক্টরে মোট ১৮টি বিএসএফ ব্যাটেলিয়ন মোতায়েন করা হয়েছে।

    আরও পড়ুন: অগ্নিগর্ভ বাংলাদেশ, ভারতের উদ্বেগের একাধিক কারণ

    সীমান্তের কাছেই সেনা

    বিএসএফ (BSF) সূত্রে খবর, উত্তরবঙ্গে ১০৯ কিলোমিটার খোলা সীমান্ত রয়েছে। সেই ফাঁকা সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশের আশঙ্কা করছেন এলাকার বাসিন্দাদের অনেকে। বিএসএফের তরফে ফাঁকা সীমান্তে জওয়ানদের নজরদারি দ্বিগুণ করা হয়েছে। চ্যাংরাবান্ধা এবং ফুলবাড়ির মতো সীমান্ত থেকে এক দেড় কিলোমিটার দূরে রাখা হয়েছে সেনাবাহিনীকে। সীমান্ত পরিস্থিতির অবনতি হলে তড়িঘড়ি যাতে সেনাকে কাজে লাগানো যেতে পারে, সেজন্য প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে বিএসএফের উত্তরবঙ্গের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক (পিআরও) অমিত ত্যাগী জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘নিয়ম মেনে অনেকেই ওপার বাংলা থেকে ভারতে আসছেন। অনিয়মে কাউকেই ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। সীমান্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে। প্রয়োজনে সেনাবাহিনীকেও নামানো হবে। তবে কাঁটাতারহীন কিছু এলাকায় জওয়ানদের তরফেই অস্থায়ী বেড়া দেওয়া রয়েছে।’’

    সতর্ক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক

    সোমবার বাংলাদেশে (Bangladesh Crisis) হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে চূড়ান্ত নৈরাজ্য শুরু হয়েছে সীমান্তের ওপারে। বিদায়ী শাসকদল আওয়ামি লিগ নেতা ও হিন্দুসহ অন্যান্য সংখ্যালঘুদের ওপর পাশবিক অত্যাচার চলছে সীমান্তের ওপারে। এই পরিস্থিতিতে সীমান্তে সর্বোচ্চ পর্যায়ের সতর্কতা জারি করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। সীমান্ত পাহারায় মোতায়েন করা হয়েছে বাড়তি বিএসএফ জওয়ান। তবে তাতেও জল – জঙ্গলে ভরা সীমান্তে অনুপ্রবেশের আশঙ্কা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। টহলদারির পাশাপাশি সীমান্তে নজরদারির জন্য ড্রোন ওড়াচ্ছে বিএসএফ (BSF)। অনুপ্রবেশ রুখতে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত সেনা জওয়ান।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Bangladesh Crisis: অশান্ত বাংলাদেশ! ঘরে ফিরতে না পেরে চরম উদ্বেগে ভারতে আসা বাংলাদেশিরা

    Bangladesh Crisis: অশান্ত বাংলাদেশ! ঘরে ফিরতে না পেরে চরম উদ্বেগে ভারতে আসা বাংলাদেশিরা

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশে (Bangladesh Crisis) ক্ষমতাচ্যুত হয়েছেন শেখ হাসিনা। দেশ ছেড়েছেন তিনি। অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি এখন ওপার বাংলায়। চরম আতঙ্কে আর উদ্বেগে রয়েছেন কলকাতায় আসা বাংলাদেশি নাগরিকরা (Bangladeshis in India)। ঘন ঘন পরিবারের লোকজনের সঙ্গে তাঁরা যোগাযোগ করছেন। অনেকে আবার অস্থির পরিস্থিতির মধ্যেও দেশে ফেরার তোড়জোড় শুরু করেছেন। অনেকে আবার বাড়ি না ফিরতে পেরে চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।

     ভারতে চরম উদ্বেগে রয়েছেন বাংলাদেশি পড়ুয়ারা (Bangladesh Crisis)

    গুজরাটের বরোদায় মহারাজা সয়াজিরাও বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশ থেকে পড়তে এসেছেন এক পড়়ুয়া। স্নাতকোত্তর পারফর্মিং আর্টস বিভাগের ওই ছাত্র বলেন, “মাসখানেক ধরেই দেশের অবস্থা খারাপ। তবে, সোমবারের পর থেকে দেশের (Bangladesh Crisis) পরিস্থিতি নিয়ে বার বার খোঁজ নিচ্ছি। দেশে আমাদের এলাকায় আক্রমণের মুখে পড়ছেন মূলত আওয়ামি লিগের সমর্থকরা। আমাদের এলাকার লোকজন চরম আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। বাড়ি ফেরার পরিস্থিতি এখন নেই। ফলে, ফোনেই পরিবারের লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছি। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বাংলাদেশি ছাত্রী বলেন, ‘‘আমার বাড়ি ফরিদপুরে। বাড়িতে ফোন করে জানতে পারি, প্রায় একশো জনের বাইকবাহিনী আমাদের পাড়ায় ঘুরছে, ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটেছে। আতঙ্কে সারা রাত ঘুমোতে পারিনি। আমার কলেজ শিক্ষক বাবাকে জামাতপন্থী এক সহকর্মী জানিয়েছেন, ভয় পাবেন না। প্রয়োজনে বাবার সহকর্মীর বাড়িতে গিয়ে পরিবার থাকতে পারে বলে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন। আমার বাবাকে ওই সহকর্মী আরও জানিয়েছেন, পরিস্থিতি ঠিক না হওয়া পর্যন্ত আপাতত কয়েক দিন তিনি যেন তাঁর সঙ্গেই কলেজে যাতায়াত করেন।’’

    আরও পড়ুন: বাংলাদেশে ইস্কনের মন্দির ভাঙচুর, ছত্রখান বিগ্রহও

    চিকিৎসা করাতে এসে বিপাকে বাংলাদেশিরা!

    স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যে বাংলাদেশ (Bangladesh Crisis) থেকে কলকাতায় চিকিৎসা করাতে এসেছেন প্রায় ৩০০-রও কাছাকাছি মানুষ। যার মধ্যে কিছুজন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। শীঘ্রই তাদের মধ্যে কাউকে ছুটিও দেওয়া হবে। যদি চিকিৎসাধীনদের কোনও সমস্যা হয়, তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ওপারে তাঁদের পড়শীদের সঙ্গে কথা বলানোর ব্যবস্থা করছে। তবে, স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, ভিসা শেষ হয়ে গেলে অন্যান্য দেশের মতো হাইকমিশন সেই ব্যবস্থা নেয়। বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম রয়েছে। দিদির চিকিৎসা করাতে সপ্তাহখানেক আগে যশোর থেকে কলকাতা এসেছেন সুরসিনা খাতুন। বর্তমানে চিকিৎসা করানো হয়ে গিয়েছে। কিন্তু, বাড়ি কি করে ফিরবেন তা নিশ্চিত নয়। তিনি বলেন, “চিকিৎসার জন্য এদেশে এসেছিলাম। এখন বাড়ি কী করে ফিরব বুঝতে পারছি না। বর্তমানে দেশে ব্যক্তিগত গাড়ি চলছে বলে শুনেছি। তবে যা পরিস্থিতি হল, তা ভালো না বলেই মনে হচ্ছে। শেখ হাসিনা দেশ ও জাতিকে ধ্বংস করে পদত্যাগ করলেন।” ফরিদপুর থেকে কলকাতায় চিকিৎসা করাতে আসা আরেক বাংলাদেশি (Bangladeshis in India) বাবুল হোসেন। তিনি বলেন, “বাড়ির লোকের সঙ্গে কথা হয়েছে। ওরা বলছে দেশের অবস্থা ভালো নয়, চিকিৎসা করে তাড়াতাড়ি যাতে আমি ফিরে যেতে পারি, তার অনুরোধ করছে। বাস, ট্রেন সব বন্ধ। বিমানে যাওয়ার ইচ্ছা রয়েছে।”

    সীমান্তে মোতায়েন সেনা

    এদিন সকাল থেকেই বিএসএফের সঙ্গে শিলিগুড়ির ফুলবাড়ি সীমান্তে নজরদারি চালাতে দেখা যায় সেনা আধিকারিকদের। সীমান্তের নিরাপত্তায় দু’কোম্পানি সেনা মোতায়েন করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। তবে ওপার বাংলার (Bangladesh Crisis) পরিস্থিতি দ্রুত ঠিক হোক, এটাই চাইছেন সেখানকার সাধারণ নাগরিকরা। প্রতিদিন ফুলবাড়ি সীমান্ত দিয়ে দুই বাংলার মধ্যে সাধারণ মানুষ ও পণ্য সামগ্রীর ট্রাকের যাতায়াত লেগে থাকে। বাংলাদেশে অশান্তির কারণে বর্তমানে তা অনেকটাই ফিকে। সীমান্তের পরিবেশ থমথমে। বন্ধ বেশিরভাগ দোকানপাট।  

    আতঙ্ক নিয়ে বাড়়ি ফিরছেন বাংলাদেশিরা

    আতঙ্কের মধ্যেই ভারত ছেড়ে পরিবারের টানে বাংলাদেশে ফিরছেন এপারে থাকা বাংলাদেশিরা (Bangladeshis in India)। বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁওয়ের বাসিন্দা মুস্তাক আলি বলেন, “এলাকার অবস্থা উত্তপ্ত। বাড়ির লোকজনদের জন্য চিন্তা হচ্ছে। তাই, বাড়ি ফিরতে চাইছি।” আরেক বাসিন্দা রিঙ্কি সেন বলেন, “আমাদের দেশে (Bangladesh Crisis) এখনও খুবই খারাপ অবস্থা। ওখানে পরিবার রয়েছে। ফলে, এখানে থাকলে বেশি চিন্তা হচ্ছে। তাই, বাড়ি ফেরার জন্য সীমান্তে এসেছি। সীমান্ত পার হলেই বাড়ি ফিরতে পারব কি না জানি না। যানবাহন সবই বন্ধ। তবুও, বাড়ি ফিরব। যা হওয়ার ওখানেই হবে। আতঙ্ক নিয়েই যাচ্ছি।”   

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Dilip Ghosh: ‘‘এটা তূণমূলেরও ভবিষ্যৎ’’,  বাংলাদেশ প্রসঙ্গে মমতাকে নিশানা দিলীপের

    Dilip Ghosh: ‘‘এটা তূণমূলেরও ভবিষ্যৎ’’, বাংলাদেশ প্রসঙ্গে মমতাকে নিশানা দিলীপের

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশ ইস্যুতে কথা বলেতে গিয়ে তৃণমূলকে নিশানা করলেন প্রাক্তন সাংসদ দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। বিজেপির প্রবীণ এই নেতার দাবি, বাংলাদেশে এখন যারা অরাজকতা করছে, হিংসা চালাচ্ছে, তাদেরই মতো একদল ভারতে ঢুকে সিএএ পাস হওয়ার পর দিকে দিকে আগুন জ্বালিয়েছিল। লুট করেছিল। বাংলাদেশে (Bangladesh Crisis) যারা তাণ্ডব চালাচ্ছে তারাই পশ্চিমবঙ্গের একাংশ দখল করে রেখেছে। বুধবার সকালে দুর্গাপুরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এমনই দাবি করলেন রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাঘের পিঠে চড়েছেন। যেদিন নামবেন সেদিন সবার আগে ওনার ঘাড় মটকাবে। 

    তৃণমূলকে হুঁশিয়ারি

    দিলীপ (Dilip Ghosh) বলেন,  ‘বাংলাদেশে (Bangladesh Crisis) যারা নৈরাজ্য চালাচ্ছে, তারাই ভোটের পরে পশ্চিমবঙ্গে ঢুকেছিল।’ তাঁর দাবি, ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের ফল বেরনোর পরে ভোট পরবর্তী হিংসা চালিয়েছিল এরাই। বিজেপি কর্মীদের উপর হামলা করেছিল, খুন করেছিল। এদের মতোই লোকজন বিজেপির নেতা-কর্মীদের উপর তৃণমূলের হয়ে হামলা চালিয়েছিল বলে দাবি দিলীপের। বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি বললেন, ‘এরাই এখানে তৃণমূলকে দখল করে নিয়েছে। মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় ভাবছেন, এরা তাঁর পক্ষেই আছে, তাই মুখ বন্ধ রেখেছেন।’ দিলীপের সাবধানবাণী, ‘এক দিদি গিয়েছেন, আরেক দিদি হয়ত সেই রাস্তায় হাঁটতে চলেছেন। তৃণমূল ভবিষ্যৎ দেখে রাখুক, এই আগুন থেকে তারাও বাঁচবে না।’  

    আরও পড়ুন: কোনও দেশেই আশ্রয় চাননি হাসিনা, দাবি পুত্র জয়ের! ভারতেই থাকবেন?

    প্রসঙ্গ বাংলাদেশ

    বাংলাদেশ (Bangladesh Crisis) প্রসঙ্গে এদিন দিলীপ (Dilip Ghosh) বলেন, ‘কোনও ইসলামিক দেশে গণতন্ত্র সফল হয় না, এটা তার প্রমাণ। কিছু গণ্ডগোল হলেই ওখানে হিন্দুদের ওপরে অত্যাচার হয়। তারা পালিয়ে আসেন। আবার সেটা হচ্ছে। কিন্তু তাদের হয়ে কেউ কথা বলছে না। কেউ জামাতিদের কথা বলছে, কেউ স্বৈরতন্ত্রের কথা বলছে।’ বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে দিলীপ ঘোষের মত, ‘যারা সমাজ বিরোধী তারা কোনও দলের নয়। না হলে, তারা কী করে সংসদ ভবন লুট করতে পারে? প্রধানমন্ত্রীর বাড়ি লুট করতে পারে? সেগুলো তো সব দেশেরই জিনিস।’

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Bangladesh: বঙ্গবন্ধুর খুনি সহ অজস্র বাংলাদেশি অপরাধীর আশ্রয়স্থল পশ্চিমবঙ্গ কেন? উঠছে প্রশ্ন

    Bangladesh: বঙ্গবন্ধুর খুনি সহ অজস্র বাংলাদেশি অপরাধীর আশ্রয়স্থল পশ্চিমবঙ্গ কেন? উঠছে প্রশ্ন

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশের (Bangladesh) প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অন্যতম খুনি আব্দুল মাজেদ ২০২০ সালে ঢাকা সংলগ্ন মিরপুর থেকে গ্রেফতার হওয়ার আগে ২২ বছর কলকাতায় লুকিয়ে ছিলেন। মাজেদের কাছে জাল ভারতীয় নথি পাওয়া যায়। পশ্চিমবঙ্গের রাজধানীতে লুকিয়ে থাকাকালীন টের পায়নি বাম কিংবা পরবর্তী মমতা প্রশাসন। মাজেদ তাঁর গ্রেফতারের সময় স্বীকার করেন, যে তিনি পশ্চিমবঙ্গে (West Bengal) লুকিয়ে ছিলেন। তবে, আত্মগোপনে থাকাকালীন তাঁর কার্যকলাপ সম্পর্কে বিস্তারিত জানাননি মাজেদ।

    কী ঘটেছিল ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট (Bangladesh)

    বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার সময় বাংলাদেশ (Bangladesh) সেনাবাহিনীতে ক্যাপ্টেন পদমর্যাদার আধিকারিক ছিলেন আব্দুল মাজেদ। ১৯৭৫ সালের ১৪ অগাস্ট, মেজর সৈয়দ ফারুক রহমান, খন্দকার আবদুর রশিদ, শরিফুল হক ডালিম, মহিউদ্দিন আহমেদ, রাশেদ চৌধুরী, নুর চৌধুরী, আব্দুল মাজেদ সহ বেশ কয়েকজন সেনা আধিকারিক বেঙ্গল ল্যান্ড ল্যান্সার অস্ত্রাগার থেকে অস্ত্র লুট করে সেনা অভ্যুত্থান ঘটান। সেই সময় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর দুটি ব্যাটালিয়ন এই অভ্যুত্থানে যুক্ত ছিল বলে অভিযোগ। পরের দিন, অর্থাৎ ১৫ অগাস্ট, বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্য-সহ মোট ৩৬ জন নিহত হন। বঙ্গবন্ধু ও তাঁদের পরিবারের সকলকে হত্যার পর তাঁরা বঙ্গভবনে সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নতুন সরকারের গঠন ঘোষণা করেন। সেই সরকারের প্রধান খন্দকার মুস্তাক আহমেদকে ঘোষণা করা হয়। এরপর জেলবন্দি আওয়ামি লীগের চার নেতা আবুল হাসনাত, মোহাম্মদ কামরুজ্জামান, মোহাম্মদ মনসুর আলী, সৈয়দ নজরুল ইসলাম এবং তাজউদ্দীন আহমেদকেও তাঁরা হত্যা করা হয়।

    বঙ্গবন্ধু সহ বাকিদের হত্যা মামলার বিচার প্রক্রিয়া

    ১৯৯৮ সালে শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা মামলায় ঢাকার দায়রা জজ আদালত ১৫ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড দেয়। ২০০১ সালে, হাইকোর্ট তিনজনকে বেকসুর খালাস করে। ২০০৯ সালে পলাতক অবস্থাতেই মাজেদের মৃত্যুদণ্ড ফের কার্যকর করার নির্দেশ দেওয়া হয়। ২০১০ সালে, মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়ার কথা স্বীকার করা পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। যদিও সেই সময় পলাতক থাকার কারণে আবদুল মাজেদ শাস্তি কার্যকর করা যায়নি। তিনি সেই সময় আত্মগোপন করে কলকাতায় ছিলেন। ২৩ বছর ধরে কলকাতায় আত্মগোপন করার পর ২০২০ সালে তিনি লুকিয়ে বাংলাদেশে (Bangladesh) আসেন মুজিব হত্যাকারী আবদুল মাজেদ। এরপরেই খবর পেয়ে বাংলাদেশের ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেররিজম এন্ড ট্রানজ্যাকশনাল ক্রাইম বিভাগ তাঁকে ২০২০ সালের ৭ এপ্রিল মিরপুর সংলগ্ন এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের পর তাঁকে ঢাকা সেন্ট্রাল জেলে পাঠানো হয়। ২০২০ সালের ১২ এপ্রিল আবদুল মাজেদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়।

    অপরাধীদের আশ্রয়দাতা কারা?

    আবদুল মাজেদ একা নন। অতীতে, আরও অনেক ঘাতক ও দাগী অপরাধী বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে গিয়েছেন। নুর চৌধুরী নামে একজন কানাডায় এবং রাশেদ চৌধুরী নামে একজন যুক্তরাষ্ট্রে গেছেন। দুজনেই বাংলাদেশে মোস্ট ওয়ান্টেড ছিলেন এবং তাঁদের বিচার এখনও হয়নি। এদের মধ্যে নুর চৌধুরী চৌধুরী সেই ব্যক্তি যিনি বঙ্গবন্ধুকে গুলি করেছিলেন।

    পদ্মশ্রী লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) কাজি সাজ্জাদ আলি জহিরের মতে, বাংলাদেশ (Bangladesh) সেনাবাহিনীতে দায়িত্ব পালন করা একজন অফিসার, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকাকালীন, কূটনৈতিক চ্যানেল এবং সর্বোচ্চ স্তরে বৈঠকের মাধ্যমে হত্যাকারীদের ফেরানোর আবেদন করেছিলেন। কানাডা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাঁদের প্রত্যর্পণের আর্জি প্রত্যাখান করে দেয়। উভয় দেশের সরকারগুলি এই দুজনকে রক্ষা করে চলেছে। কানাডা এবং আমেরিকা দুষ্কৃতীদের আশ্রয়দাতা হয়ে উঠেছে। ভারতের শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী সহ সন্ত্রাসবাদী, খুনি এবং এই জাতীয় অন্যান্য অপরাধীদের জন্য আশ্রয়স্থল কানাডা।

    ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’-দের আশ্রয়স্থল পশ্চিমবঙ্গ

    অন্যদিকে, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যও বাংলাদেশের অপরাধীদের আস্তানায় পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশে বহু মোস্ট ওয়ান্টেড অপরাধীদের অনেকেই পশ্চিমবঙ্গে (West Bengal) এসে আশ্রয় নেয়। অনেক ক্ষেত্রে তারা গ্রেফতার হয়। অনেকেই পালিয়ে যায়। চলতি বছর আনোয়ারুল আজিম আনার নিউটাউনে খুন হন। তাঁকে খুন করে দুষ্কৃতীরা বাংলাদেশ এবং আমেরিকায় পালিয়ে যায়। অথচ ঘুণাক্ষরেও টের পায়নি রাজ্যের পুলিশ। পরে বাংলাদেশ পুলিশ বিষয়টি জানালে ময়দানে নামে সিআইডি।

    এর আগে, বাম আমলে ২০০৭ সালে, প্রায় ৮ জন বাংলাদেশি মোস্ট ওয়ান্টেড দুষ্কৃতীকে পশ্চিমবঙ্গ থেকে সিআইডি গ্রেফতার করেছিল। এর মধ্যে খুনি, ধর্ষক, চোরাকারবারি এমনকী স্থানীয় অপরাধীরাও অন্তর্ভুক্ত ছিল। এর মধ্যে একজন হ্যারিস আহমেদ যিনি বাংলাদেশে (Bangladesh) ৪০টি হত্যা মামলা ও কয়েক ডজন তোলাবাজি মামলায় ওয়ান্টেড ছিলেন। জাল পরিচয়পত্র ব্যবহার করে সে পশ্চিমবঙ্গে লুকিয়ে ছিল এবং সেই সময় একটি পোশাকের দোকান চালাত।

    আরও পড়ুন: কোনও দেশেই আশ্রয় চাননি হাসিনা, দাবি পুত্র জয়ের! ভারতেই থাকবেন?

    বাংলা থেকে ফোনে তার তোলাবাজি ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছিল। পর ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকার সহ সাতজনকে অপহরণ করে খুন মামলায় মূল অভিযুক্ত সহ নূর হোসেন সহ তিন জন অস্ত্র সহ কলকাতা বিমানবন্দর সংলগ্ন কৈখালি এলাকা থেকে গ্রেফতার হয়। পরে বাংলাদেশের (Bangladesh) অনুরোধে তাদের ফেরত পাঠানো হয়। এহেন অনেক উদাহরণ রয়েছে বাংলাদেশি অপরাধীদের পশ্চিমবঙ্গে ঠাঁই নেওয়ার।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

     

     

     

  • Bangladesh Crisis: ‘‘বঙ্গবন্ধুর মূর্তি ভেঙে ঠিক করেনি, পরে আফসোস করবে’’, বলছেন বাংলাদেশিরা

    Bangladesh Crisis: ‘‘বঙ্গবন্ধুর মূর্তি ভেঙে ঠিক করেনি, পরে আফসোস করবে’’, বলছেন বাংলাদেশিরা

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মূর্তির মাথার ওপরে প্রস্রাব করছে এক ব্যক্তি। সোশ্যাল মিডিয়ায় এমনই একটি ভিডিও (সত্যতা যাচাই করেনি মাধ্যম) ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। ভিডিওতে দেখা গিয়েছে যে বঙ্গবন্ধুর মূর্তির ওপরে উঠে গিয়েছে এক ব্যক্তি। সেইসময় একজন আবার বঙ্গবন্ধুর মূর্তির কাঁধে উঠে দাঁড়িয়ে লাফাচ্ছে। কয়েকজন আবার মূর্তির হাত বেয়ে উঠছে। ওই ব্যক্তি যেখানে প্রস্রাব করছিল, সেখান দিয়েই উঠছিল এক ব্যক্তি। আর নীচে প্রচুর লোকজন দাঁড়িয়েছিল। বাংলাদেশের (Bangladesh Crisis) পতাকাও উড়তে দেখা গিয়েছে। যদিও ওই ভিডিওটি কবে তোলা হয়েছে, তা স্পষ্ট নয়। দাবি করা হয়েছে যে ভিডিওটি ঢাকার কোথাও তোলা হয়েছে। তবে, এই ছবি দেখে অনেকে প্রশ্ন করছেন, এ কেমন প্রতিবাদের ভাষা? যে দেশের অধিকার নিয়ে এত লাফালাফি সেই দেশটাই তো তৈরি হত না যদি বাংলাদেশের পিতা মুজিবুর রহমান না থাকতেন। মৃত্যুর ৫০ বছর পর এটাই কি প্রাপ্য ছিল বঙ্গবন্ধুর? ছিঃ ছিঃ করছে দুনিয়া।

    বঙ্গবন্ধুর মূর্তি ভেঙে ঠিক করেনি, পরে আফসোস করবে (Bangladesh Crisis)

    কলকাতায় থাকা এক বাংলাদেশি যেমন দাবি করেছেন যে, পড়ুয়ারা বঙ্গবন্ধুর মূর্তি ভাঙছেন না। জামাতের লোকজনরা সেই কাজটা করছে। একজন আবার দাবি করেছেন যে, বঙ্গবন্ধুর হয়ত অনেক দোষ-ত্রুটি থাকতে পারে। কিন্তু সেই মানুষটার জন্যই স্বাধীনতা লাভ করেছিল বাংলাদেশ (Bangladesh Crisis), তা ভুলে গেলে চলবে না। বঙ্গবন্ধুর মূর্তি ভাঙার ঘটনাকে সমর্থন করলেন না এদেশে আসা বাংলাদেশি নাগরিকরা। চিকিৎসা করাতে ভারতে আসা সহিদুল ইসলাম নামে এক বাংলাদেশি বলেন, ‘‘শেখ মুজিবুর রহমানের মূর্তি ভেঙে ওরা ঠিক করেনি। পরে আফসোস করবে।’’ তাঁর মতে, ক্ষোভ ধরে রাখতে পারেনি বলেই হয়ত মুজিবর রহমানের মূর্তি ভাঙা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘সোমবার থেকে আতঙ্ক কেটে গিয়েছে। পরিস্থিতি ভালো হচ্ছে। এটাই চেয়েছিলাম। আমি কোনও দল করি না। কিন্তু, দেশটা ভালোভাবে চলুক এটাই চেয়েছিলাম।’’

    আরও পড়ুন: বাংলাদেশে ইস্কনের মন্দির ভাঙচুর, ছত্রখান বিগ্রহও

    পরিবারের লোকজনের খোঁজ নেই

    সোমবার থেকে বাংলাদেশের (Bangladesh Crisis) যে পরিস্থিতি তাতে বাড়ির সদস্যদের খোঁজ পাচ্ছেন না মহম্মদ নূর ইসলামরা। তাই মঙ্গলবার সকাল হতেই কোচবিহারের চ্যাংড়াবান্ধা সীমান্ত দিয়ে দেশে ফিরছেন তাঁরা। তাঁদের বচোখেমুখে আক্ষেপ, হতাশা স্পষ্ট। তাঁরা বলেন, ‘‘মূর্তি ভাঙার কোনও উদ্দেশ্য ছিল না। বঙ্গবন্ধুর মূর্তি ভাঙাটাও ঠিক হয়নি। বাংলাদেশে গন্ডগোল চলছে। বাড়ির লোকেরা কেমন আছে আমরা জানি না। যোগাযোগ হচ্ছে না। বাধ্য হয়ে তড়িঘড়ি বাংলাদেশে চলে যাচ্ছি। দেখা যাক ফিরতে পারি কি না।’’ লালমণির হাটের এক বাসিন্দা আবু হাসনাত শিলিগুড়ির বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে এসেছিলেন। কিন্তু, বাংলাদেশে অশান্তির জেরে বাড়ির লোকেদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না তিনি। তাই দ্রুত বাড়ি ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

    সীমান্তজুড়ে হাই অ্যালার্ট জারি!

    বাংলাদেশে (Bangladesh Crisis) অশান্তির জেরে প্রভাব পড়েছে এদেশেও। ইতিমধ্যে ৪০০ কিলোমিটার সীমান্তজুড়ে হাই অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। চ্যাংড়াবান্ধা দিয়ে ভারত-বাংলাদেশ ও ভুটান-বাংলাদেশের মধ্যে পণ্য পরিবহণ বন্ধ। তবে বাংলাদেশের বহু মানুষ ভারতে চিকিৎসা করাতে এসে আটকে পড়েছেন। দুই দেশের মধ্যে পণ্য পরিবহণ বন্ধ থাকলেও বাসিন্দাদের যাতায়াত চলছে। চ্যাংড়াবান্ধা এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মনোজকুমার কানু বলেন, “আমাদের বহু ট্রাক বাংলাদেশে আটকে রয়েছে। বাংলাদেশের কাস্টমস পণ্যবাহী ট্রাক পাঠাতে বলেছে। তবে, আমরা বলেছি, আগে আমাদের ট্রাকগুলো বাংলাদেশে আটকে আছে সেগুলো ফিরে আসবে। তারপর আমরা পণ্য পাঠাব।”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

LinkedIn
Share