Category: Uncategorized

  • Russian Soldier: নরখাদক রুশ সেনা! হত্যা করে খাচ্ছে সহকর্মীদেরই! বিস্ফোরক দাবি ইউক্রেনের

    Russian Soldier: নরখাদক রুশ সেনা! হত্যা করে খাচ্ছে সহকর্মীদেরই! বিস্ফোরক দাবি ইউক্রেনের

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলছে ৩ বছর ধরে। সম্প্রতি ইউক্রেন (Ukraine) এক বিস্ফোরক দাবি করেছে, রাশিয়ার সেনাবাহিনীতে নরখাদকদের অন্তর্ভুক্ত করে যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহার করা হচ্ছে (Russian Soldier)। এমনকি কিছু সৈনিক সহযোদ্ধাকে হত্যা করে তাদের দেহ ভক্ষণ করছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

    ভয়ঙ্কর তথ্য প্রকাশ করল ইউক্রেনের গোয়েন্দা বিভাগ

    কিয়েভের গোয়েন্দা সংস্থার দাবি, রুশ সরকার (Russian Soldier) যুদ্ধের জন্য বিপুল সংখ্যক অপরাধী, খুনি, ধর্ষক, ডাকাত এমনকি নরখাদকদের জেল থেকে মুক্তি দিয়ে সামনের সারিতে যুদ্ধ করতে পাঠাচ্ছে। এই তালিকায় রয়েছে বহু কুখ্যাত অপরাধী, যারা অতীতে হত্যাকাণ্ড ও নরখাদকতার অভিযোগে দণ্ডিত হয়েছিল। উদাহরণস্বরূপ, ডেনিস গোরেন নামের এক অপরাধীকে ২০১২ সালে গ্রেফতার করা হয়। তার বিরুদ্ধে চারজনকে খুন ও অন্তত একজনের দেহ খাওয়ার অভিযোগে আদালত ২২ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিল। নিকোলো ওকোলোবিয়াক নামের আরেক ব্যক্তি দুই মহিলাকে হত্যা করে তাদের মাংস খাওয়ার দায়ে কারাগারে ছিল। এখন তাদের মতো আরও অনেককেই মুক্তি দিয়ে রুশ সেনায় নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ ইউক্রেনের (Ukraine)।

    সহকর্মীদেরও হত্যা করে দেহ খাচ্ছে, দাবি ইউক্রেনের

    ডেইলি মেলের এক প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, দামিত্রি মালিশেভ নামের এক অপরাধী তিনজনকে খুন করে তাদের হৃদপিণ্ড রান্না করে খেয়েছিলেন। তাকেও বর্তমানে যুদ্ধক্ষেত্রে (Russian Soldier) পাঠানো হয়েছে। একইভাবে আলেকজান্ডার মাসলেনিকভ নামে একজন ধর্ষক ও খুনিকে ২০২৪ সালে মুক্তি দিয়ে যুদ্ধে নিয়োজিত করা হয়। এইসব অপরাধীদের মানসিকতা যুদ্ধক্ষেত্রেও অপরিবর্তিত রয়েছে বলে দাবি ইউক্রেনের। ইউক্রেনের গোয়েন্দাদের আরও দাবি, অনেক ক্ষেত্রেই তারা নিজেদের সহকর্মীদেরও হত্যা করে দেহ খাচ্ছে। শুধু শত্রু নয়, নিজেদের সেনাদের মাঝেও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে এই অপরাধীদের নিয়ে।

    চলছে যুদ্ধ

    ইউক্রেনের ভূখণ্ডে রাশিয়া অব্যাহত হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় রুশ সেনার (Russian Soldier) আক্রমণে প্রায় ৪০০ জন ইউক্রেনীয় সেনা নিহত হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। এ ছাড়া রাশিয়ার দখলে গেছে সীমান্তবর্তী একাধিক এলাকা। ধ্বংস হয়েছে চারটি যুদ্ধবিমান, সাতটি সাঁজোয়া যান, একটি কামান ও তিনটি সামরিক ট্রাক। রুশ সেনার দাবি অনুযায়ী, ইউক্রেনের ৪২৫ জন সেনাকে হত্যা করা হয়েছে এবং ইউক্রেনীয় বাহিনীর প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের বড় একটি অংশ গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

  • Nigeria: নাইজেরিয়াতে ইসলামিক জঙ্গি সংগঠন ফুলানির হামলায় নিহত ১০০ খ্রিস্টান

    Nigeria: নাইজেরিয়াতে ইসলামিক জঙ্গি সংগঠন ফুলানির হামলায় নিহত ১০০ খ্রিস্টান

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আফ্রিকা মহাদেশে খ্রিস্টানদের উপর গণহত্যা চলছেই। ইসলামিক মৌলবাদীরা (Islamic Terrorists) এই মহাদেশে খ্রিস্টানদের নির্মূল করার একটি সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে একের পর এক দেশে চলছে খ্রিস্টান গণহত্যা।

    ফুলানি ইসলামিক মিলিট্যান্টস (Islamic Terrorists)

    মহাদেশটির অন্যতম ইসলামী জঙ্গি সংগঠন হল ফুলানি ইসলামিক মিলিট্যান্টস। সম্প্রতি তারাই নাইজেরিয়ার (Nigeria) ইয়েলেওতা গ্রামের উপর ভয়ংকর সন্ত্রাসী হামলা চালায় এবং হত্যা করে শতাধিক খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষকে। এই হামলা শুরু হয় গত শুক্রবার এবং চলে শনিবার পর্যন্ত। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল-এর প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, অজস্র পরিবার গৃহবন্দি অবস্থায় ছিল। বহু পরিবারকে ঘরের ভিতর থেকে তালা বন্ধ করে আটকে রাখা হয় এবং গোটা বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। গৃহবন্দি অবস্থায় থাকা এই পরিবারগুলির এভাবেই মারা যায়। কয়েক ডজন মানুষ এখনও পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছেন এবং শতাধিক মানুষ গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন। এই হামলায় গুরুতরভাবে আহত হওয়া ব্যক্তিরা প্রাথমিক চিকিৎসাও পাচ্ছেন না।

    আফ্রিকার খ্রিস্টান জনগোষ্ঠীকে নিশ্চিহ্ণ করাই উদ্দেশ্য

    এই ভয়াবহ হামলার ঘটনা ঘটে নাইজেরিয়ার (Nigeria) বেনুয়ে রাজ্যে। এই রাজ্যেই বড় সংখ্যক খ্রিস্টান বসবাস করেন। সেখানে জিহাদিরা হামলা চালিয়ে এই জনগোষ্ঠীকে নির্মূল করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। উল্লেখযোগ্য যে, এটি কোনো নতুন ঘটনা নয়। ফুলানি নামক এই জঙ্গি সংগঠনের জিহাদিরা দীর্ঘদিন ধরেই এই গণহত্যা চালিয়ে আসছে। এদের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে বোকো হারাম, আইএসডব্লিউএপি-সহ একাধিক ইসলামিক জঙ্গি সংগঠন। এই সংগঠনগুলোর লক্ষ্য হল আফ্রিকার খ্রিস্টান জনগোষ্ঠীকে নিশ্চিহ্ণ করা।

    এপ্রিল-মে মাসেও চলে হামলা, হত্যা করা হয় খ্রিস্টানদের

    এই জঙ্গিদের বিরুদ্ধে যেমন সন্ত্রাস চালানোর অভিযোগ রয়েছে, তেমনি অভিযোগ রয়েছে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের জমি দখলেরও। ২০২৫ সালের জুন মাসের ১ তারিখেই ফুলানি জিহাদিরা নাইজেরিয়ার (Nigeria) বেনুয়ে রাজ্যে হামলা চালায়, এখানে ৪৩ জন খ্রিস্টান নিহত হন। এই হামলা চলে জুন মাসের ১ ও ২ তারিখের মধ্যে। এর আগে ২৪ ও ২৫ মে, নাইজেরিয়ার প্লেটো রাজ্যে আরেকটি হামলা চালায় জঙ্গিরা, যেখানে ৫০ জন নাগরিক নিহত হন, যাদের অধিকাংশই ছিলেন খ্রিস্টান। ২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে প্লেটো স্টেট-এ আরেকটি সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হন ৪০ জন খ্রিস্টান। এই হামলা কয়েকদিন ধরে চলে। তারও আগে, মে মাসের শুরুতেই ফুলানি ইসলামিক জঙ্গি সংগঠন বেনুয়ে স্টেটে হামলা চালিয়ে (Nigeria) হত্যা করে ২০ জনকে।

  • RSS: আমেদাবাদে বিমান দুর্ঘটনা! শোক প্রকাশ আরএসএসের, উদ্ধারকাজে সামিল স্বয়ংসেবকরা

    RSS: আমেদাবাদে বিমান দুর্ঘটনা! শোক প্রকাশ আরএসএসের, উদ্ধারকাজে সামিল স্বয়ংসেবকরা

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: জাতীয় সংকটে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (RSS) সর্বদাই এগিয়ে আসে – তা প্রাকৃতিক বিপর্যয় হোক কিংবা অন্য কিছু। আমেদাবাদে বিমান দুর্ঘটনার পর রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের স্বয়ংসেবকরা সঙ্গে সঙ্গেই উদ্ধারকার্যে ঝাঁপিয়ে পড়েন। গুজরাটের কর্ণাবতীর সিভিল হাসপাতালে তাঁরা চিকিৎসকদের ও বিভিন্ন মেডিক্যাল টিমকে সহায়তা করতে থাকেন। একই সঙ্গে তাঁরা ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারগুলিকেও দেখভাল করেন এবং সবার সঙ্গে সমন্বয় গড়ে তোলেন। আরএসএস-এর এমন নিঃস্বার্থ সেবা বিমান দুর্ঘটনার পরবর্তী পরিস্থিতি সামাল দিতে অনেকটাই সহায়তা করে (Air India Plane Crash)।

    উদ্ধারকাজে অংশ নেন ১৭৫ স্বয়ংসেবক (RSS)

    প্রসঙ্গত, রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (RSS) নীতিই হল নিঃস্বার্থ সেবা। যেকোনও দুঃসময়ে তারা পাশে দাঁড়ায়। আরএসএস-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মোট ১৭৫ জন স্বয়ংসেবক এই সেবাকার্যে অংশগ্রহণ করেন। তাঁরা শুধু উদ্ধারকাজেই নয়, ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ, নিহতদের ময়নাতদন্তে সহায়তা, ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ এবং রক্তদানেও অংশ নেন (Air India Plane Crash)। এছাড়াও, ২০০০-এর বেশি মানুষকে চা, জল ও খাবার সরবরাহ করে সাহায্য করেন সংঘের স্বয়ংসেবকরা। এই সেবাকাজে আরএসএস-কে সহায়তা করে কালুপুর স্বামীনারায়ণ মন্দির।

    শোক প্রকাশ আরএসএস-র (RSS)

    অন্যদিকে, বৃহস্পতিবারের বিমান দুর্ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের অখিল ভারতীয় প্রচার প্রমুখ শ্রী সুনীল আম্বেকর। সমাজমাধ্যমের পাতায় তিনি লেখেন- “গুজরাটে আজকের এই বিমান দুর্ঘটনা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক। আমরা গভীর সমবেদনা জানাই সেই সমস্ত ক্ষতিগ্রস্তদের, যাঁরা এই দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন। ভগবানের কাছে আমাদের প্রার্থনা, এই দুঃখ সহ্য করার শক্তি যেন তিনি ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারকে দেন।” প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবারই আমেদাবাদে ভয়ংকর বিমান দুর্ঘটনা ঘটে। এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানে ২ পাইলট, ১০ কেবিন ক্রু-সহ মোট ২৫২ জন ছিলেন। বহু মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে। টেক অফের কিছুক্ষণের মধ্যেই ভেঙে পড়ে লন্ডনগামী এয়ার ইন্ডিয়া বিমান। মেডিক্যাল কলেজের হস্টেলের ছাদে ভেঙে পড়ে বিমানটি। এর ফলে,  অনেক জাক্তারি পড়ুয়াও নিহত হয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

  • Bangladesh Election: ২০২৬ এপ্রিলে বাংলাদেশ নির্বাচনের ঘোষণা, রাজনৈতিক চাপে সময় কিনছেন ইউনূস?

    Bangladesh Election: ২০২৬ এপ্রিলে বাংলাদেশ নির্বাচনের ঘোষণা, রাজনৈতিক চাপে সময় কিনছেন ইউনূস?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: শুক্রবার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূস (Md Yunus) জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন। ওই ভাষণে তিনি ঘোষণা করেন যে, ২০২৬ সালের এপ্রিল মাসের শুরুতেই বাংলাদেশের সাধারণ নির্বাচন (Bangladesh Election) অনুষ্ঠিত হবে। উল্লেখযোগ্য যে, এর আগে বাংলাদেশের বিএনপি সহ প্রায় ৫০টি রাজনৈতিক দল ২০২৫ সালের ডিসেম্বরেই নির্বাচনের দাবি করেছিল। তবে বেশিরভাগ রাজনৈতিক দলের দাবিকে উপেক্ষা করলেন ইউনূস। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, রাজনৈতিক চাপের কারণে আসলে এভাবেই সময় কিনতে চাইছেন ইউনূস। একারণেই ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের পরিবর্তে, ২০২৬ সালের এপ্রিলে নির্বাচন করানোর সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি।

    শর্ত সাপেক্ষে ছাত্রদের জাতীয় নাগরিক দলের সমর্থন ইউনূসের সিদ্ধান্তকে

    বাংলাদেশের অন্যতম সংবাদমাধ্যম প্রথম আলোয় প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, ছাত্রদের জাতীয় নাগরিক দল (এনসিপি) ইউনূসের ২০২৬ এপ্রিলের নির্বাচনের ঘোষণাকে সমর্থন করেছে। তারা জানিয়েছে, জুলাই মাসের ঘোষণা ও অন্যান্য সংস্কারমূলক কর্মসূচি যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হলে এপ্রিলেই নির্বাচন হলে অসুবিধা নেই।

    ইউনূসের সিদ্ধান্ত নিয়ে কী বলছেন ঢাকার শিক্ষাবিদ (Bangladesh Election)

    তবে ইউনূস (Md Yunus) যখন এপ্রিলে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা বলেন, তিনি কোনও নির্দিষ্ট দিনক্ষণ উল্লেখ করেননি। এনিয়েই ঢাকার বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ রেজাউল রহমান লেনিন এক ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, “বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, অচলাবস্থা এবং ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচনী আইন রয়েছে। এ কারণে মনে হয় না ইউনূস সরকার একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন (Bangladesh Election) পরিচালনা করতে পারবে।”

    বিশৃঙ্খল ও অনিশ্চয়তার পরিবেশেই ৮ মাস দেশ শাসন ইউনূসের

    উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের অগাস্ট মাসে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পতন হয়। জামাতদের ষড়যন্ত্রে দখল করা হয় গণভবন। দেশ ছাড়েন হাসিনা। আশ্রয় নেন ভারতে। এর পর মহম্মদ ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন (Bangladesh Election)। দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই তাঁর সরকারকে ঘিরে নানা বিতর্ক দেখা গেছে। দেশে বেড়েছে রাজনৈতিক অস্থিরতা, বেকারত্ব এবং ভারত-বিরোধী কার্যকলাপ। সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর লাগামছাড়া অত্যাচারের কারণে মুখ পুড়েছে ইউনূস সরকারের। প্রায় ৮ মাস এই বিশৃঙ্খল ও অনিশ্চয়তার পরিবেশের মধ্যেই ইউনূস সরকার দেশ শাসন করছে।

    সংস্কারকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে ছাত্ররা

    ইউনূসের ঘোষণার আগে তাঁর উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা জানিয়েছিলেন যে, ২০২৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের জুন মাসের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। অন্যদিকে, বাংলাদেশে বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ছাত্রদের দল এনসিপি দাবি তুলেছে, নির্বাচন কমিশনকে যেন বিএনপির প্রভাব মুক্ত হয়। তারা সংস্কারকে অগ্রাধিকার দিতে চাইছে। এরপরে নির্বাচন করাতে চায় ছাত্ররা। অন্যদিকে, বিএনপি সমেত প্রায় ৫০টি রাজনৈতিক দল দ্রুত নির্বাচন চায়।

    বিএনপির তাড়াহুড়োর কারণ (Bangladesh Election)

    বিএনপির এত তাড়া কিসের? বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, শেখ হাসিনার দল আওয়ামি লিগ এখন দুর্বল অবস্থায় রয়েছে বাংলাদেশে। একটা সময়ে আওয়ামি লিগের প্রধান প্রতিপক্ষ ছিল বিএনপি। এই সুযোগ নিয়ে বিএনপি মসনদ দখল করতে চাইছে বাংলাদেশে। বিএনপির আশঙ্কা, সময় যত পেরিয়ে যাবে সেই সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে যেতে পারে।

    সেনাপ্রধান কী বলেছিলেন?

    এদিকে বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী গত ৫ জুন অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে নির্বাচন বিলম্ব করার অভিযোগ আনেন। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম দৈনিক যুগান্তরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুধু বিএনপি নয়, দেশের প্রায় ৫০টি রাজনৈতিক দল চলতি বছরের ডিসেম্বরেই নির্বাচন চাইছে। শুধু রাজনৈতিক দল নয়, বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ জামানও ডিসেম্বর মাসেই নির্বাচনের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছিলেন, একটি নির্বাচিত সরকারই নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণে সক্ষম।

    শীতকালে বাংলাদেশে নির্বাচন নিয়ে কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?

    সম্প্রতি মহম্মদ ইউনূস তাঁর উপদেষ্টা পরিষদকে জানিয়েছিলেন যে তিনি পদত্যাগের পরিকল্পনা করছেন। এতে দেশজুড়ে রাজনৈতিক চর্চা শুরু হয়। তবে পরে তিনি সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং বিশ্লেষকরা বলছেন, ২০২৫ সালের মধ্যেই একটি নির্বাচিত সরকার গঠন হওয়া প্রয়োজন। কারণ, বাংলাদেশে শীতকালই নির্বাচনের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। এপ্রিল মাসে কালবৈশাখী ঝড়-বৃষ্টি হয়। ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে পরীক্ষা চলে, ফলে শিক্ষকরাও ব্যস্ত থাকেন। রাজনৈতিক কর্মসূচিগুলিতেও লাগাম টানা হয়। তা সত্ত্বেও ইউনূস সরকার সরাসরি ঘোষণা করেছে যে নির্বাচন এপ্রিল মাসেই অনুষ্ঠিত হবে।

  • PM Modi: ‘মন কি বাতে’ অপারেশন সিঁদুর, মোদির গলায় ‘মেড ইন্ডিয়া’র প্রশস্তি

    PM Modi: ‘মন কি বাতে’ অপারেশন সিঁদুর, মোদির গলায় ‘মেড ইন্ডিয়া’র প্রশস্তি

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ‘অপারেশন সিঁদুরে’র পর এই প্রথম হল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (PM Modi) ‘মন কি বাতে’র (Mann Ki Baat) অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠানেও প্রধানমন্ত্রীর গলায় শোনা গেল দেশীয় প্রযুক্তির প্রশস্তি। প্রত্যয়ী প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ভারতের তৈরি অস্ত্র, কৌশল এবং প্রযুক্তি ব্যবহার করেই এসেছে সাফল্য।” রবিবার ছিল ‘মন কি বাতে’র ১২২তম পর্বের সম্প্রচার। এদিন দেশবাসীর উদ্দেশে দেওয়া ‘মনের কথা’য় প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আজ সমগ্র দেশ সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ, ক্রুদ্ধ এবং দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।”

    অপারেশন সিঁদুর (PM Modi)

    তিনি বলেন, “অপারেশন সিঁদুর কেবল একটি সামরিক অভিযান নয়, এটি ভারতের সংকল্প, সাহস এবং নবজাগরণের প্রতীক। এই অভিযানে ভারতীয় সেনাবাহিনীর অসামান্য বীরত্ব গোটা দেশবাসীকে গর্বিত করেছে এবং দেশজুড়ে তেরঙ্গা যাত্রা ও জনসমাবেশের মাধ্যমে এক অনন্য দেশাত্মবোধের আবহ তৈরি হয়েছে।” প্রধানমন্ত্রী বলেন, “দেশীয় অস্ত্রে সাফল্য এসেছে, যা আমাদের সকলকে গর্বিত করেছে। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ করেছে সমগ্র দেশকে। অপারেশন সিঁদুর পাল্টে যাওয়া ভারতের ছবি (Mann Ki Baat)।” তিনি বলেন, “এই অপারেশন বিশ্বজুড়ে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের এক নয়া আত্মবিশ্বাসের সঞ্চার করেছে।” প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের বাহিনী নির্ভুলভাবে সীমান্তের ও পারে থাকা জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস করেছে। এই অভিযান শুধু একটি সামরিক অভিযান নয়, বরং আমাদের সংকল্প, সাহস এবং পরিবর্তনশীল ভারতের একটি ছবি। এই ছবিই সমগ্র ভারতবাসীর দেশপ্রেমের অনুভূতিকে তেরঙ্গার রঙে রাঙিয়েছে।”

    ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’

    অপারেশন সিঁদুর যে আদতে ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’র শক্তির পরিচায়ক, এদিন তাও মনে করিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, “অপারেশন সিঁদুরে ব্যবহৃত বেশিরভাগ অস্ত্রশস্ত্র এই দেশের মাটিতেই তৈরি। আমাদের সেনার, ইঞ্জিনিয়রদের, টেকনিশিয়ানদের, এই দেশের রক্ত-ঘামের পরিচায়ক এই (PM Modi) সাফল্য।” প্রসঙ্গত, দক্ষিণ কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে পাক মদতপুষ্ট জঙ্গিরা বেছে বেছে হত্যা করে ২৭ জন হিন্দু পর্যটককে। তার পরেই পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরে অপারেশন সিঁদুর চালায় ভারত। ওই দুই এলাকায় অন্তত ৯টি জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস করে ভারতীয় সেনা। ঘটনার জেরে সীমান্তে বাড়ে উত্তেজনা। শুরু হয় গোলাবর্ষণ। পরে (Mann Ki Baat) পাকিস্তানের অনুরোধে যুদ্ধবিরতিতে সায় দেয় ভারত (PM Modi)।

  • Ramakrishna 353: “গোপীরা সর্বভূতে শ্রীকৃষ্ণ দর্শন করেছিল, তৃণ দেখে বলে, শ্রীকৃষ্ণকে স্পর্শ করে পৃথিবীর রোমাঞ্চ হয়েছে”

    Ramakrishna 353: “গোপীরা সর্বভূতে শ্রীকৃষ্ণ দর্শন করেছিল, তৃণ দেখে বলে, শ্রীকৃষ্ণকে স্পর্শ করে পৃথিবীর রোমাঞ্চ হয়েছে”

    দক্ষিণেশ্বরে ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ ও ‘দেবী চৌধুরাণী’ পাঠ

    তৃতীয় পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৪, ২৭শে ডিসেম্বর
    ঈশ্বরদর্শনের উপায়—শ্রীমুখ-কথিত চরিতামৃত

    পূর্বকথা—ঠাকুরের ব্রহ্মজ্ঞানের অবস্থা ও সর্বভূতে ঈশ্বরদর্শন 

    “তাঁকে সর্বভূতে দর্শন (Ramakrishna) করতে লাগলুম। পূজা উঠে গেল! এই বেলগাছ! বেলপাতা তুলতে আসতুম! একদিন পাতা ছিঁড়তে গিয়ে আঁশ খানিকটা উঠে এল। দেখলাম গাছ চৈতন্যময়! মনে কষ্ট হল। দূর্বা তুলতে গিয়ে দেখি, আর-সেরকম করে তুলতে পারিনি। তখন রোখ করে তুলতে গেলুম।

    “আমি লেবু কাটতে পারি না। সেদিন অনেক কষ্টে, ‘জয় কালী’ বলে তাঁর সম্মুখে বলির মতো করে তবে কাটতে পেরেছিলুম। একদিন ফুল তুলতে গিয়ে দেখিয়ে দিলে,—গাছে ফুল ফুটে আছে, যেন সম্মুখে বিরাট—পূজা হয়ে গেছে—বিরাটের মাথায় ফুলের তোড়া! আর ফুল তোলা হল না (Kathamrita)!

    “তিনি মানুষ হয়েও লীলা করছেন। আমি দেখি, সাক্ষাৎ নারায়ণ। কাঠ ঘষতে ঘষতে আগুন বেরোয়, ভক্তির জোর থাকলে মানুষেতেই ঈশ্বর দর্শন (Ramakrishna) হয়। তেমন টোপ হলে বড় রুই কাতলা কপ্‌ করে খায়।

    প্রেমোন্মাদ হলে সর্বভূতে সাক্ষাৎকার হয়। গোপীরা সর্বভূতে শ্রীকৃষ্ণ দর্শন করেছিল। কৃষ্ণময় দেখেছিল। বলেছিল, আমি কৃষ্ণ! তখন উন্মাদ অবস্থা! গাছ দেখে বলে, এরা তপস্বী, শ্রীকৃষ্ণের ধ্যান করছে। তৃণ দেখে বলে, শ্রীকৃষ্ণকে স্পর্শ করে ওই দেখ পৃথিবীর রোমাঞ্চ হয়েছে।

    “পতিব্রতাধর্ম; স্বামী দেবতা। তা হবে না কেন? প্রতিমায় পূজা হয়, আর জীয়ন্ত মানুষে কি হয় না?”

    প্রতিমায় আবির্ভাব—মানুষে ঈশ্বরদর্শন (Ramakrishna) কখন? নিত্যসিদ্ধি ও সংসার

    “প্রতিমায় আবির্ভাব হতে গেলে তিনটি জিনিসের দরকার,—প্রথম পূজারীর ভক্তি, দ্বিতীয় প্রতিমা সুন্দর হওয়া চাই, তৃতীয় গৃহস্বামীর ভক্তি। বৈষ্ণবচরণ বলেছিল, শেষে নরলীলাতেই মনটি কুড়িয়ে আসে।

    “তবে একটি কথা একটি আছে(Kathamrita),—তাঁকে সাক্ষাৎকার না করলে এরূপ লীলাদর্শন হয় না। সাক্ষাৎকারের লক্ষণ কি জান? বালকস্বভাব হয়। কেন বালকস্বভাব হয়? ঈশ্বর নিজে বালকস্বভাব কি না! তাই যে তাঁকে দর্শন করে, তারও বালকস্বভাব হয়ে যায়।”

  • Ramakrishna 342: “প্রেম রজ্জুর স্বরূপ, প্রেম হলে ভক্তের কাছে ঈশ্বর বাঁধা পড়েন আর পালাতে পারেন না।”

    Ramakrishna 342: “প্রেম রজ্জুর স্বরূপ, প্রেম হলে ভক্তের কাছে ঈশ্বর বাঁধা পড়েন আর পালাতে পারেন না।”

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ প্রহ্লাদচরিত্রাভিনয় দর্শনে স্টার থিয়েটারে

    তৃতীয় পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৪, ১৪ই ডিসেম্বর
    ঈশ্বরদর্শনের উপায় — ব্যাকুলতা

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) গিরিশের প্রতি—তীব্র বৈরাগ্য হলে তাঁকে পাওয়া যায়। প্রাণ ব্যাকুল হওয়া চাই। শিষ্য গুরুকে জিজ্ঞাসা করেছিল, কেমন করে ভগবানকে পাব। গুরু বললেন, আমার সঙ্গে এসো,—এই বলে একটা পুকুরে লয়ে গিয়ে তাকে চুবিয়ে ধরলেন। খানিক পরে জল থেকে উঠিয়ে আনলেন ও বললেন, তোমার জলের ভিতর কিরকম হয়েছিল? শিষ্য বললে, প্রাণ আটুবাটু করছিল—যেন প্রাণ যায়! গুরু বললেন দেখ, এইরূপ ভগবানের জন্য যদি তোমার প্রাণ আটুবাটু করে তবেই তাঁকে লাভ করবে।

    “তাই বলি (Kathamrita), তিন টান একসঙ্গে হলে তবে তাঁকে লাভ করা যায়। বিষয়ীর বিষয়ের প্রতি টান, সতীর পতিতে টান, আর মায়ের সন্তানেতে টান—এই তিন ভালবাসা একসঙ্গে করে কেউ যদি ভগবানকে দিতে পারে তাহলে তৎক্ষণাৎ সাক্ষাৎকার হয়।

    “ডাক দেখি মন ডাকার মতো কেমন শ্যামা থাকতে পারে! তেমন ব্যাকুল হয়ে ডাকতে পারলে তাঁর দেখা দিতেই হবে।”

    জ্ঞানযোগ ও ভক্তিযোগের সমন্বয়—কলিকালে নারদীয় ভক্তি

    “সেদিন তোমায় যা বললুম ভক্তির (Ramakrishna) মানে কি—না কায়মনোবাক্যে তাঁর ভজনা। কায়,—অর্থাৎ হাতের দ্বারা তাঁর পূজা ও সেবা, পায়ে তাঁর স্থানে যাওয়া, কানে তাঁর ভাগবত শোনা, নামগুণকীর্তন শোনা, চক্ষে তাঁর বিগ্রহ দর্শন। মন—অর্থাৎ সর্বদা তাঁর ধ্যান-চিন্তা করা, তাঁর লীলা স্মমরণ-মনন করা। বাক্য—অর্থাৎ তাঁর স্তব-স্তুতি, তাঁর নামগুণকীর্তন—এই সব করা।

    “কলিতে নারদীয় ভক্তি—সর্বদা তাঁর নামগুণকীর্তন করা। যাদের সময় নাই, তারা যেন সন্ধ্যা-সকালে হাততালি দিয়ে একমনে হরিবোল হরিবোল বলে তাঁর ভজনা করে।

    “ভক্তির আমিতে অহংকার হয় না। অজ্ঞান করে না, বরং ঈশ্বরলাভ করিয়ে দেয়। এ ‘আমি’ আমির মধ্যে নয়। যেমন হিঞ্চে শাক শাকের মধ্যে নয়, অন্য শাকে অসুখ হয়, কিন্তু হিঞ্চে শাক খেলে পিত্তনাশ হয়, উলটে উপকার হয়, মিছরি মিষ্টের মধ্যে নয়, অন্য মিষ্ট খেলে অপকার হয়, মিছরি খেলে অম্বল নাশ (Kathamrita) হয়।

    “নিষ্ঠার পর ভক্তি। ভক্তি পাকলে ভাব হয়। ভাব ঘনীভূত হলে মহাভাব হয়। সর্বশেষে প্রেম।

    “প্রেম রজ্জুর স্বরূপ। প্রেম হলে ভক্তের কাছে ঈশ্বর বাঁধা পড়েন আর পালাতে পারেন না। সামান্য জীবের ভাব পর্যন্ত হয়। ঈশ্বরকোটি (Ramakrishna) না হলে মহাভাব প্রেম হয় না। চৈতন্যদেবের হয়েছিল।

  • Ramakrishna 339: “প্রহ্লাদকে দর্শন করিয়া ঠাকুর সস্নেহে ‘প্রহ্লাদ’ ‘প্রহ্লাদ’ এই কথা বলিতে বলিতে একেবারে সমাধিস্থ হইলেন”

    Ramakrishna 339: “প্রহ্লাদকে দর্শন করিয়া ঠাকুর সস্নেহে ‘প্রহ্লাদ’ ‘প্রহ্লাদ’ এই কথা বলিতে বলিতে একেবারে সমাধিস্থ হইলেন”

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ প্রহ্লাদচরিত্রাভিনয় দর্শনে স্টার থিয়েটারে

    প্রথম পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৪, ১৪ই ডিসেম্বর
    শ্রীরামকৃষ্ণ সমাধিমন্দিরে

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) আজ স্টার থিয়েটারে প্রহ্লাদচরিত্রের অভিনয় দেখিতে আসিয়াছেন। সঙ্গে মাস্টার, বাবুরাম ও নারায়ণ প্রভৃতি। স্টার থিয়েটার তখন বিডন স্ট্রীটে, এই রঙ্গমঞ্চে পরে এমারল্ড থিয়েটার ও ক্লাসিক থিয়েটারের অভিনয় সম্পন্ন হইত।

    আাজ রবিবার। ৩০শে অগ্রহায়ণ, কৃষ্ণা দ্বাদশী তিথি, ১৪ই ডিসেম্বর, ১৮৮৪ খ্রীষ্টাব্দ। শ্রীরামকৃষ্ণ একটি বক্সে উত্তরাস্য হইয়া বসিয়া আছেন। রঙ্গালয় আলোকাকীর্ণ। কাছে মাস্টার, বাবুরাম ও নারায়ণ বসিয়া আছেন। গিরিশ আসিয়াছেন। অভিনয় এখনও আরম্ভ হয় নাই। ঠাকুর গিরিশের সঙ্গে কথা কহিতেছেন (Kathamrita)।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (সহাস্যে)—বা! তুমি বেশ সব লিখছ!

    গিরিশ—মহাশয়, ধারণা কই, শুধু লিখে গেছি।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—না তোমার ধারণা আছে। সেই দিন তো তোমায় বললাম ভিতরে ভক্ত না থাকলে চালচিত্র আঁকা যায় না—

    “ধারণা চাই। কেশবের বাড়িতে নববৃন্দাবন নাটক দেখতে গিয়েছিলাম (Kathamrita)। দেখলাম, একজন ডিপুটি ৮০০ টাকা মাহিনা পায়, সকলে বললে, খুব পণ্ডিত, কিন্তু একটা ছেলে লয়ে ব্যতিব্যস্ত! ছেলেটি কিসে ভাল জায়গায় বসবে, কিসে অভিনয় দেখতে পাবে, এইজন্য ব্যাকুল! এদিকে ঈশ্বরীয় কথা হচ্ছে তা শুনবে না, ছেলে কেবল জিজ্ঞাসা করছে, বাবা এটা কি, বাবা ওটা কি?—তিনিও ছেলে লয়ে ব্যতিব্যস্ত। কেবল বই পড়েছে মাত্র কিন্তু ধারণা হয় নাই।”

    গিরিশ—মনে হয়, থিয়েটারগুলো আর করা কেন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—না না ও থাক, ওতে লোকশিক্ষা হবে।

    অভিনয় আরম্ভ হয়েছে। প্রহ্লাদ পাঠশালে লেখাপড়া করিতে আসিয়াছেন। প্রহ্লাদকে দর্শন করিয়া ঠাকুর সস্নেহে ‘প্রহ্লাদ’ ‘প্রহ্লাদ’ এই কথা বলিতে বলিতে একেবারে সমাধিস্থ হইলেন।

    প্রহ্লাদকে হস্তীপদতলে দেখিয়া ঠাকুর কাঁদিতেছেন। অগ্নিকুণ্ডে যখন ফেলিয়া দিল তখনও ঠাকুর কাঁদিতেছেন।

    গোলোকে লক্ষ্মীনারায়ণ বসিয়া আছেন (Kathamrita)। নারায়ণ প্রহ্লাদের জন্য ভাবিতেছেন। সেই দৃশ্য দেখিয়া ঠাকুর আবার সমাধিস্থ হইলেন।

  • Ramakrishna 335: “সীতাকে দেখে এলুম, শুধু দেহটি পড়ে রয়েছে, মন-প্রাণ তোমার পায়ে সব সমর্পণ করেছেন”

    Ramakrishna 335: “সীতাকে দেখে এলুম, শুধু দেহটি পড়ে রয়েছে, মন-প্রাণ তোমার পায়ে সব সমর্পণ করেছেন”

    দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে ভক্তসঙ্গে শ্রীরামকৃষ্ণ

    চতুর্দশ পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৪, ৯ই-১০ই নভেম্বর
    সেবকসঙ্গে

    রাত ১০টা-১১টা হইল। ঠাকুর ছোট খাটটিতে তাকিয়া ঠেসান দিয়া বিশ্রাম করিতেছেন। মণি মেঝেতে বসিয়া আছেন। মণির সহিত ঠাকুর কথা কহিতেছেন। ঘরের দেওয়ালের কাছে সেই পিলসুজের উপর প্রদীপে আলো জ্বলিতেছে।

    ঠাকুর অহেতুক কৃপাসিন্ধু। মণির সেবা লইবেন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—দেখ, আমার পাঞ্চটা কামড়াচ্ছে। একটু হাত বুলিয়া দাও তো।

    মণি ঠাকুরের পাদমূলে ছোট্ট খাটটির উপর বসিলেন ও কোলে তাঁহার পা দুখানি লইয়া আস্তে আস্তে হাত বুলাইতেছেন। ঠাকুর মাঝে মাঝে কথা কহিতেছেন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (সহাস্যে)—আজ সব কেমন কথা হয়েছে (Kathamrita)?

    মণি—আজ্ঞা খুব ভাল।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (সহাস্যে)—আকবর বাদশাহের কেমন কথা হল?

    মণি—আজ্ঞা হাঁ।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—কি বলো দেখি?

    মণি—ফকির আকবর বাদশাহের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিল। আকবর শা তখন নমাজ পড়ছিল। নমাজ পড়তে পড়তে ঈশ্বরের কাছে ধন-দৌলত চাচ্ছিল, তখন ফকির আস্তে আস্তে ঘর থেকে চলে যাবার উপক্রম করলে। পরে আকবর জিজ্ঞাসা করাতে বললে, যদি ভিক্ষা করতে হয় ভিখারীর কাছে কেন করব!

    শ্রীরামকৃষ্ণ—আর কি কি কথা হয়েছিল (Kathamrita)?

    মণি—সঞ্চয়ের কথা খুব হল।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—(সহাস্যে) — কি কি হল?

    মণি—চেষ্টা যতক্ষণ করতে হবে বোধ থাকে, ততক্ষণ চেষ্টা করতে হয়। সঞ্চয়ের কথা সিঁথিতে কেমন বলেছিলেন!

    শ্রীরামকৃষ্ণ—কি কথা?

    মণি—যে তাঁর উপর সব নির্ভর করে, তার ভার তিনি লন। নাবালকের যেমন অছি সব ভার নয়। আর-একটি কথা শুনেছিলাম যে, নিমন্ত্রণ বাড়িতে ছোট ছেলে নিজে বসবার জায়গা নিতে পারে না। তাকে খেতে কেউ বসিয়া দেয়।

    শ্রীরামকৃষ্ণ — না। ও হলো না, বাপে ছেলের হাত ধরে লয়ে গেলে সে ছেলে আর পড়ে না।

    মণি—আর আজ আপনি তিনরকম সাধুর কথা বলেছিলেন। উত্তম সাধু সে বসে খেতে পায়। আপনি ছোকরা সাধুটির কথা বললেন, মেয়েটির স্তন দেখে বলেছিল, বুকে ফোঁড়া হয়েছে কেন? আরও সব চমৎকার চমৎকার কথা বললেন, সব শেষের কথা।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (সহাস্যে)—কি কি কথা?

    মণি—সেই পম্পার কাকের কথা। রামনাম অহর্নিশ জপ করছে, তাই জলের কাছে যাচ্ছে কিন্তু খেতে পারছে না। আর সেই সাধুর পুঁথির কথা, — তাতে কেবল “ওঁ রামঞ্চঞ্চ এইটি লেখা। আর হনুমান রামকে যা বললেন —

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—কি বললেন?

    মণি—সীতাকে দেখে এলুম, শুধু দেহটি পড়ে রয়েছে, মন-প্রাণ তোমার পায়ে সব সমর্পণ করেছেন (Kathamrita)!

  • Ramakrishna 333: “রাত্রে একটু সুজির পায়েস ও একখানি কি দুখানি লুচি খান, ঠাকুর রামলালকে বলিতেছেন সুজি কি আছে?”

    Ramakrishna 333: “রাত্রে একটু সুজির পায়েস ও একখানি কি দুখানি লুচি খান, ঠাকুর রামলালকে বলিতেছেন সুজি কি আছে?”

    ত্রয়োদশ পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৪, ৯ই নভেম্বর
    ভক্তসঙ্গে সংকীর্তনানন্দে

    ভক্ত সঙ্গে–ভক্তকথাপ্রসঙ্গে 

    মণি এবং গোপালের আর যাওয়া হইল না, তাঁহারা আজ রাত্রে থাকিবেন। তাঁহারা ও আরও ২/১ জন ভক্ত মেঝেতে বসিয়া আছেন। কিয়ৎক্ষণ পরে ঠাকুর শ্রীযুক্ত রাম (Ramakrishna) চক্রবর্তীকে বলিতেছেন, “রাম, এখানে যে আর-একখানি পাপোশ ছিল। কোথায় গেল?”

    ঠাকুর (Ramakrishna) সমস্ত দিন অবসর পান নাই—একটু বিশ্রাম করিতে পান নাই। ভক্তদের ফেলিয়া কোথায় যাইবেন! এইবার একবার বর্হিদেশে যাইতেছেন। ঘরে ফিরিয়া আসিয়া দেখিলেন যে, মণি রামলালের নিকট গান লিখিয়া লইতেছেন (Kathamrita) —

    “তার তারিণি!
    এবার ত্বরিত করিয়ে তপন-তনয়-ত্রাসিত”—ইত্যাদি।

    ঠাকুর মণিকে জিজ্ঞাসা করিতেছেন, “কি লিখছো?” গানের কথা শুনিয়া বলিলেন, “এ যে বড় গান।”

    রাত্রে ঠাকুর একটু সুজির পায়েস ও একখানি কি দুখানি লুচি খান। ঠাকুর রামলালকে বলিতেছেন (Kathamrita), “সুজি কি আছে?”

    গান এক লাইন দু’লাইন লিখিয়া মণি লেখা বন্ধ করিলেন।

    ঠাকুর মেঝেতে আসনে বসিয়া সুজি খাইতেছেন।

    ঠাকুর (Ramakrishna) আবার ছোট খাটটিতে বসিলেন। মাস্টার খাটের পার্শ্বস্থিত পাপোশের উপর বসিয়া ঠাকুরের সহিত কথা কহিতেছেন। ঠাকুর নারায়ণের কথা বলিতে বলিতে ভাবযুক্ত হইতেছেন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ—আজ নারায়ণকে দেখলুম।

    মাস্টার—আজ্ঞা হাঁ, চোখ ভেজা। মুখ দেখে কান্না পেল।

    শ্রীরামকৃষ্ণ—ওকে দেখলে যেন বাৎসল্য হয়। এখানে আসে বলে ওকে বাড়িতে মারে। ওর হয়ে বলে এমন কেউ নাই। ‘কুব্জা তোমায় কু বোঝায়। রাইপক্ষে বুঝায় এমন কেউ নাই।’

    মাস্টার (সহাস্যে) — হরিপদর বাড়িতে বই রেখে পলায়ন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) —ওটা ভাল করে নাই।

    ঠাকুর চুপ করিয়াছেন। কিয়ৎক্ষণ পরে কথা কহিতেছেন (Kathamrita)।

    শ্রীরামকৃষ্ণ—দেখ, ওর খুব সত্তা। তা না হলে কীর্তন শুনতে শুনতে আমায় টানে! ঘরের ভিতর আমার আসতে হল। কীর্তন ফেলে আসা—এ কখনও হয় নাই।

LinkedIn
Share