Tag: DRDO

DRDO

  • Smart Anti Airfield Weapon: শত্রুর সীমান্তে না গিয়েই ১০০ কিমি দূরে বিমানঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিতে পারবে ভারতের ‘স্মার্ট দেশি বোমা’

    Smart Anti Airfield Weapon: শত্রুর সীমান্তে না গিয়েই ১০০ কিমি দূরে বিমানঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিতে পারবে ভারতের ‘স্মার্ট দেশি বোমা’

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দেশের মুকুটে যুক্ত হল প্রতিরক্ষা প্রযুক্তির আরও এক গর্বের সংযোজন। ভারতের প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা (DRDO) সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি করেছে স্মার্ট অ্যান্টি-এয়ারফিল্ড অস্ত্র (Smart Anti Airfield Weapon)। এর ওজন ১২৫ কেজি। ১.৮৫ মিটার লম্বা এই গ্লাইড বোমা, ১০০ কিলোমিটার দূর থেকে শত্রুপক্ষের রানওয়ে ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামো ধ্বংস করতে সক্ষম।

    বিমানঘাঁটি অচল করতে বিশেষভাবে নির্মিত

    স্মার্ট অ্যান্টি-এয়ারফিল্ড অস্ত্রের (SAAW) মধ্যে রয়েছে ৮০ কেজির উচ্চ বিস্ফোরক ক্ষমতাসম্পন্ন ওয়ারহেড, যা রানওয়ে, ট্যাক্সিওয়ে, বাঙ্কার এবং জ্বালানির ডিপোগুলি অচল করে দিতে পারে। এটি রকেট চালিত নয় বরং গ্লাইড করে লক্ষ্যবস্তুতে পৌঁছয়, ফলে উৎপাদন খরচ অনেক কম। এই স্মার্ট বোমাটিতে ইনারশিয়াল নেভিগেশন সিস্টেম (INS) ও স্যাটেলাইট সিগন্যাল (GPS ও NavIC) সংযুক্ত করা হয়েছে, যা লক্ষ্যভ্রান্তি মাত্র সাত মিটারের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখে। নতুন সংস্করণে যুক্ত হয়েছে ইলেক্ট্রো-অপটিক্যাল ও ইমেজিং-ইনফ্রারেড সিকার, যার ফলে চূড়ান্ত পর্যায়ে নিশানার ভুলত্রুটি তিন মিটারের নিচে নেমে আসে।

    ঝুঁকির বাইরে থেকেই আঘাত

    এই বোমা ১০০ কিলোমিটার দূরত্ব থেকে আক্রমণ চালাতে পারে। এর ফলে যুদ্ধবিমানগুলি শত্রু অঞ্চলের এয়ার ডিফেন্স জোনে প্রবেশ না করে বাইরে থেকেই আঘাত হনতে পারে। কম ওজনের কারণে এটি বিভিন্ন ধরণের ভারতীয় যুদ্ধবিমানে ব্যবহার করা যায়, ওড়ার ক্ষমতাতেও কোনও প্রভাব ফেলে না। ২০১৬ সাল থেকে জাগুয়ার, মিরাজ, মিগ-২৯, এসইউ-৩০, এলসিএ তেজস, হক (Jaguar, Mirage 2000, MiG‑29, Su‑30 MKI, LCA Tejas, Hawk) সহ বিভিন্ন বিমানে এটি সফলভাবে পরীক্ষিত হয়েছে। এমনকি হ্যাল-এর ভবিষ্যতের ড্রোন যুদ্ধে ব্যবহৃত হবে এমন ক্যাটস ওয়ারিয়র (CATS Warrior) প্ল্যাটফর্মের জন্যও এটি উপযুক্ত।

    উৎপাদন ও রফতানি

    ২০১৩ সালে অনুমোদনের পর ২০২১ সালের ডিসেম্বর থেকে এর উৎপাদন শুরু হয়। প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বায়ুসেনা হাতে এর প্রথম সংস্করণ তুলে দেন। চলতি মাসেই স্যাটেলাইট-নির্ভর সংস্করণ কেনার প্রস্তাব পাঠিয়েছে ভারতীয় বায়ুসেনা (IAF)। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের অনুমোদন মিললেই অর্ডার চূড়ান্ত হবে। এই স্মার্ট দেশি বোমা উৎপাদনের দায়িত্বে রয়েছে ভারত ডাইনামিক্স লিমিটেড। এই অস্ত্র বিদেশে রফতানির কথাও ভাবা হচ্ছে।

  • AMCA: ‘অ্যামকা’ প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত হোন, বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থার কাছে আহ্বান কেন্দ্রের

    AMCA: ‘অ্যামকা’ প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত হোন, বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থার কাছে আহ্বান কেন্দ্রের

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: প্রতিরক্ষায় আরও শক্তি বাড়াচ্ছে দেশ ৷ চিন, আমেরিকা, রাশিয়াকে টেক্কা দিতে এবার পঞ্চম প্রজন্মের স্টেলথ্ যুদ্ধবিমান তৈরি করতে চলেছে ভারত। দেশীয় ‘অ্যামকা’ (AMCA) প্রকল্পকে বাস্তব রূপ দেওয়ার বিষয়ে জোরকদমে এগোচ্ছে অ্যারোনটিক্যাল ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি (ADA)। ভারতের নিজস্ব প্রযুক্তিতে নির্মিত পঞ্চম প্রজন্মের স্টেলথ যুদ্ধবিমান তৈরির পথে সম্প্রতি এক বড় পদক্ষেপ করল তারা। দেশের অত্যাধুনিক মিডিয়াম কমব্যাট এয়ারক্র্যাফ্ট (AMCA) তৈরির লক্ষ্যে বিশ্বের বিভিন্ন কোম্পানির কাছে ‘এক্সপ্রেশন অফ ইন্টারেস্ট’ (EOI) প্রকাশের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

    কী বলা হল বিজ্ঞপ্তিতে

    মোদি জমানায় আত্মনির্ভর ভারত যে ‘অ্যামকা’ (FGFA) তৈরি করছে, তা এখন সময়ের অপেক্ষা। সরকার সবুজ সঙ্কেত দিতেই দেশীয় পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান তৈরির প্রকল্পকে বাস্তব রূপ দিতে জোরকদমে এগোচ্ছে প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা ডিআরডিও। সরকারের অ্যামকা প্রোগ্রাম অনুমোদনের মাত্র তিন সপ্তাহের মধ্যেই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হল। এডিএ-র বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, এই ‘এক্সপ্রেশন অফ ইন্টারেস্ট’-এর মূল উদ্দেশ্য হল এমন ভারতীয় সংস্থাগুলিকে চিহ্নিত করা, যারা প্রযুক্তিগতভাবে সক্ষম এবং পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমানের নকশা, প্রোটোটাইপ নির্মাণ, ফ্লাইট টেস্টিং এবং সার্টিফিকেশনের মতো জটিল কাজ সফলভাবে সম্পন্ন করতে পারে। প্রার্থী সংস্থা একক সংস্থা, যৌথ উদ্যোগ বা কনসর্টিয়াম হতে পারে — তবে তা ভারতীয় নাগরিকদের মালিকানাধীন ও নিয়ন্ত্রিত হতে হবে এবং ভারতীয় আইনের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হতে হবে।

    দেশে উৎপাদন পরিকাঠামো থাকা আবশ্যক

    অ্যারোনটিক্যাল ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি (ADA) জানিয়েছে, প্রার্থী সংস্থাগুলির মধ্যে ডিজাইন গ্রহণ, উন্নয়ন ও ইঞ্জিনিয়ারিং, উৎপাদন, সমন্বয়, গঠন, পরীক্ষা, গুণমান ব্যবস্থাপনা এবং গ্রাহক সহায়তার মতো ক্ষেত্রে প্রমাণযোগ্য অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা থাকতে হবে। সংস্থার নিজস্ব উৎপাদন কেন্দ্র অথবা কোনও স্ট্র্যাটেজিক সহযোগিতার মাধ্যমে দেশে উৎপাদন পরিকাঠামো থাকা আবশ্যক। নথিতে উল্লেখিত যোগ্যতা ও মূল্যায়ন সূচকের ভিত্তিতে অংশগ্রহণকারী সংস্থাগুলিকে বাছাই করা হবে। চুক্তির মেয়াদ হবে সর্বোচ্চ আট বছর — এই সময়ের মধ্যেই বিমানটির উন্নয়ন, প্রোটোটাইপ, পরীক্ষা এবং সার্টিফিকেশন সম্পন্ন করতে হবে। আগামী জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে এই সংক্রান্ত প্রাক-আলোচনার সভা হবে। ‘এক্সপ্রেশন অফ ইন্টারেস্ট’ সংক্রান্ত নথি জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ১৬ অগাস্ট ২০২৫।

    প্রথম অ্যামকা প্রোটোটাইপ ২০২৯ সালের মধ্যে

    আপাতভাবে ২০৩৫ সালের আগে ‘অ্যামকা’ হাতে পাচ্ছে না বায়ুসেনা। কারণ, এটা কারও অজানা নয় যে, যে কোনও যুদ্ধবিমান তৈরি করতে অন্ততপক্ষে ১০-১৫ বছর লাগেই। ফলে, ভারতকে আরও দশটা বছর অপেক্ষা করতেই হবে স্বদেশীয় পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমানের জন্য। বর্তমানে নির্ধারিত রোডম্যাপ অনুযায়ী, প্রথম অ্যামকা প্রোটোটাইপ ২০২৯ সালের মধ্যে আকাশে ওড়ার কথা। পুরো উন্নয়ন পর্ব ২০৩৪ সালের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা, এবং সিরিজ উৎপাদন শুরু হতে পারে ২০৩৫ থেকে। ততদিনে হ্যাল (HAL) তেজস মার্ক-১এ এবং তেজস মার্ক-২ বিমানগুলির চলতি অর্ডারের উৎপাদন শেষ করবে।

    দুটি ধাপে তৈরি করা হবে অ্যামকা

    প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত সংস্থাকে একটি পৃথক উৎপাদন কেন্দ্র গড়ে তুলতে হবে, যাতে ভবিষ্যতের বাণিজ্যিক উৎপাদনের প্রয়োজন মেটানো যায়। এই প্রকল্পে বিড জমা দেওয়ার সম্ভাব্য সংস্থাগুলির মধ্যে রয়েছে টাটা অ্যাডভান্সড সিস্টেমস, লারসেন অ্যান্ড টুব্রো, আদানি ডিফেন্স অ্যান্ড অ্যারোস্পেস এবং মহিন্দ্রা গ্রুপ। হ্যাল-ও এই প্রতিযোগিতায় থাকবে, তবে বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে তবেই অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে। তেজস এলসিএ-র মতো, অ্যামকাও দুটি ধাপে তৈরি করা হবে। মার্ক-১ সংস্করণে থাকবে মার্কিন জিই এফ-৪১৪ ইঞ্জিন— যেটি তেজস মার্ক-২ জেটেও ব্যবহৃত হবে। ভবিষ্যতের অ্যামকা মার্ক-২ সংস্করণে ব্যবহার করা হবে সম্পূর্ণ দেশীয়ভাবে নির্মিত ইঞ্জিন, যা ষষ্ঠ প্রজন্মের যুদ্ধবিমানে রূপান্তরিত হবে। এই প্রকল্পের সফলতা ভারতকে বিশ্বে উন্নত বিমান প্রযুক্তির ক্ষেত্রে এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিতে পারে। এই প্রকল্প ভারতের প্রতিরক্ষা শক্তিকে আরও দৃঢ় করবে, বলেই বিশ্বাস বিশেষজ্ঞ মহলের।

    অ্যামকার মাধ্যমে এলিট ক্লাসে ভারত

    ফিফথ্ জেনারেশনের এই যুদ্ধবিমানে থাকবে দু’টি ইঞ্জিন ৷ সেই সঙ্গে, থাকবে ইলেকট্রনিক পাইলটিং সিস্টেম ৷ ২৭ টন ওজনের এই যুদ্ধবিমানে অনেক বেশি যুদ্ধাস্ত্র বহন করা যাবে ৷ অ্যামকা-র প্রধান বৈশিষ্ট হল, সম্পূর্ণ কনফিগারড্ মিসাইল বহন করা যাবে এই যুদ্ধবিমানে ৷ এই প্রকল্পের মাধ্যমে দেশে বিপুল কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে বলে আশা করা হচ্ছে ৷ এতদিন পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান হাতে ছিল আমেরিকা, রাশিয়া, চিনসহ গুটিকয়েক প্রথম সারির শক্তিসম্পন্ন দেশের কাছে। ভারত এই পঞ্চম প্রজন্মের জেট ফাইটার তৈরির দিকে এগনোয় বিশ্বে এলিট শক্তি বলে যে দেশগুলিকে সমীহ করা হয়, সেই সারিতে চলে আসছে। পঞ্চম প্রজন্মের এই জেট বিমান শত্রু রেডারের চোখে ধুলো দিতে পারদর্শী। শব্দের চেয়ে দ্রুতগামী এই বিমানে আরও বেশ কিছু অত্যাধুনিক প্রযুক্তি যুক্ত করা হবে। সুখোই এসইউ-৩০এমকেআই ফাইটার জেটের উত্তরসূরী হতে চলেছে এই ফাইটার জেট। সূত্রে জানা গিয়েছে, এই যুদ্ধবিমানের ঢালাও উৎপাদন শুরু হবে ২০৩৫ সালের ভিতর। একবার এই বিমান ভারতীয় বায়ুসেনার হাতে চলে আসতে শুরু করলে আকাশের উপর দেশের কর্তৃত্ব অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে।

  • Sukhoi Su-57: খেলা ঘুরিয়ে দিল ‘সোর্স কোড’! অ্যামকা হাতে পেতে আরও ১০ বছর, বন্ধু পুতিনের সু-৫৭ প্রস্তাবেই ‘হ্যাঁ’ ভারতের?

    Sukhoi Su-57: খেলা ঘুরিয়ে দিল ‘সোর্স কোড’! অ্যামকা হাতে পেতে আরও ১০ বছর, বন্ধু পুতিনের সু-৫৭ প্রস্তাবেই ‘হ্যাঁ’ ভারতের?

    সুশান্ত দাস

    দেশীয় ‘অ্যামকা’ (AMCA) প্রকল্পকে বাস্তব রূপ দেওয়ার বিষয়ে জোরকদমে এগনোর সিদ্ধান্ত নিলেও পাশাপাশি আপৎকালীন ভিত্তিতে কম সংখ্যায় বিদেশ থেকে পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান (FGFA) কেনার ব্যাপারে অত্যন্ত গভীর ভাবনাচিন্তা করছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। আর এই ক্ষেত্রেও ‘বন্ধু’ রাশিয়াকেই ভরসা ভারতের। যে কারণে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এফ-৩৫ প্রস্তাব ফিরিয়ে রাশিয়ার তৈরি সুখোই ‘সু-৫৭’ (Sukhoi Su-57) স্টেলথ যুদ্ধবিমানকেই বাছতে চলেছে ভারত। অন্তত প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের অন্দরে এমন কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে।

    অ্যামকা হাতে পেতে আরও এক দশক!

    মোদি জমানায় আত্মনির্ভর ভারত যে ‘অ্যামকা’ (FGFA) তৈরি করছে, এটা নিশ্চিত। সরকার সবুজ সঙ্কেত দিতেই দেশীয় পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান তৈরির প্রকল্পকে বাস্তব রূপ দিতে জোরকদমে এগোচ্ছে প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা ডিআরডিও। তবে, একটা বিষয় পরিষ্কার। আপাতভাবে ২০৩৫ সালের আগে ‘অ্যামকা’ হাতে পাচ্ছে না বায়ুসেনা। কারণ, মাত্র গত বছরই ‘অ্যামকা’-য় সম্মতি জানিয়েছে কেন্দ্র। আর এটা কারও অজানা নয় যে, যে কোনও যুদ্ধবিমান তৈরি করতে অন্ততপক্ষে ১০-১৫ বছর লাগেই। ফলে, ভারতকে আরও দশটা বছর অপেক্ষা করতেই হবে স্বদেশীয় পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমানের জন্য।

    পাকিস্তানকে পঞ্চম প্রজন্মের ‘জে-৩৫এ’ দিচ্ছে চিন

    কিন্তু, এই দশ বছরে বদলে যাবে অনেক কিছুই। ভারতীয় বায়ুসেনার বর্তমানে মাত্র ৩১টা স্কোয়াড্রন রয়েছে। যেখানে থাকার কথা ৪২। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে এই সংখ্যা আরও কমবে। কারণ, মিগ-২১বি, জাগুয়ার, মিরাজ-২০০০ সহ বহু যুদ্ধবিমান অবসর নেবে। অবিলম্বে এই শূন্যস্থান পূরণ করতে হবে ভারতকে। এমআরএফএ-র আওতায় ১১৪টি  যুদ্ধবিমান কেনার বিষয়টিও চূড়ান্ত রূপ নেয়নি। আবার, তেজসের কাজও অনেক বিলম্ব হচ্ছে। ইঞ্জিন আমদানি সমস্যায় জেরবার নির্মাণকারী সংস্থা হ্যাল। যে কারণে, ডেডলাইনের অনেক পেছনে চলছে মার্ক-১এ এবং মার্ক-২ সংস্করণের কাজ। অন্যদিকে, ‘অপারেশন সিঁদুর’-এ (Operation Sindoor) জোর ধাক্কা খাওয়ার পর ভারতের বিরুদ্ধে নতুন করে প্রস্তুতি নিচ্ছে পাকিস্তান। আর এক্ষেত্রে তাদের সবচেয়ে বড় সহায়কের ভূমিকায় অবতীর্ণ সেই চিন, যারা পাকিস্তানের সব ঋতুর বন্ধু। ইতিমধ্যেই, ইসলামাবাদকে নিজেদের পঞ্চম প্রজন্মের ‘জে-৩৫এ’ মাল্টিরোল যুদ্ধবিমান দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে, তাও আবার অর্ধেক দামে! ফলে, এটা ভারতের কাছে বড় সমস্যা হতে পারে, যদি ভারতের কাছেও পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান (FGFA) না থাকে। সব মিলিয়ে, ভারতের হাতে সময় বেশি নেই।

    ভারতের পাশে দাঁড়াল বন্ধু রাশিয়া

    এই সময়ে ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছে বন্ধু রাশিয়া। গত ফেব্রুয়ারি মাসে হোয়াইট হাউসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সামনে ভারতকে তাদের পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান ‘এফ-৩৫এ’ দেওয়ার প্রস্তাব পেশ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রায় সেই একই সময়ে ভারতকে তাদের পঞ্চম প্রজন্মের ‘সু-৫৭ই’ (সু-৫৭-এর এক্সপোর্ট ভেরিয়েন্ট) যুদ্ধবিমানের প্রস্তাব দেয় রাশিয়াও। মস্কোর প্রস্তাব আরও ভালো ছিল, কারণ তারা ভারতকে সম্পূর্ণ প্রযুক্তি হস্তান্তর করতেও রাজি হয়। মস্কো জানায়, চাইলে ভারত নিজেদের দেশেই যৌথভাবে এই বিমান তৈরি করতে পারে। এমনকি, ভারতের কাবেরি ইঞ্জিন নির্মাণে প্রযুক্তিগত সহায়তা করতেও রাজি বলে জানায় মস্কো।  এখানেই শেষ নয়। চলতি মাসের গোড়ায় নিজেদের প্রস্তাবকে আরও আকর্ষণীয় করে রাশিয়া। পুতিনের দেশ জানিয়ে দেয়, তারা ভারতকে ‘সু-৫৭’ (Sukhoi Su-57) ফাইটার জেটের বহুমূল্য সোর্স কোড দিতেও রাজি।

    রাশিয়ার অভাবনীয় প্রস্তাবে ঘুরেছে খেলা!

    প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের দাবি, রাশিয়ার এই প্রস্তাব এক কথায় বৈপ্লবিক, অভাবনীয়। কারণ, যে কোনও যুদ্ধবিমানের কেন্দ্রে থাকে ‘সোর্স কোড’। অত্যন্ত সংবেদনশীল তথ্য। এক কথায়, যুদ্ধবিমানের মাথার ঘিলু। রাফাল যুদ্ধবিমানের সোর্স কোড নিয়ে ফ্রান্সের সঙ্গে খিটমিট লেগেছে ভারতের। কেউই নিজেদের যুদ্ধবিমানের সোর্স কোড (Source Code) হস্তান্তর করতে দিতে চায় না। এদিকে, সোর্স কোড না পাওয়ায় রাফাল যুদ্ধবিমানে ব্রহ্মস সহ একাধিক ক্ষেপণাস্ত্রকে ইন্টিগ্রেট বা অন্তর্ভুক্ত করতে পারছে না ভারত। কারণ, ক্ষেপণাস্ত্রের সঙ্গে যুদ্ধবিমানের মেলবন্ধন ঘটাতে সোর্স কোড খুলে তাতে মডিফাই করতে হয়। অন্যদিকে, আমেরিকা ভারতকে এফ-৩৫ বেচতে চাইলেও, যুদ্ধবিমানের প্রযুক্তি দেওয়া তো দূরের কথা, পূর্ণ কর্তৃত্বও দিতে রাজি নয়। অর্থাৎ, বিমানের নিয়ন্ত্রণ থাকবে পেন্টাগনের হাতে। ভারত শুধু ওড়াবে। সেখানে ভারতকে তাদের স্টেলথ পঞ্চম প্রজন্মের সু-৫৭ (Sukhoi Su-57)  ফাইটার জেটের সোর্স কোড সমেত গোটা প্রযুক্তি দিতে রাজি রাশিয়া।

    প্লেটে ‘সোর্স কোড’ সাজিয়ে পেশ ভারতকে

    প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে, অত্যাধুনিক পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমানের (FGFA) সোর্স কোড দিতে রাজি হওয়াটা কোনও ভাবেই ছোট বিষয় নয়। মনে করিয়ে দেওয়া যাক, ২০১১ সালে ভারত ও রাশিয়া যৌথভাবে পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান নিয়ে কাজ শুরু করেছিল। প্রোজেক্টের নাম ছিল ‘পিএকে-এফএ টি-৫০’। তখন ‘সু-৫৭’ (Sukhoi Su-57) দিনের আলো দেখেনি। বলা যেতে পারে, বর্তমান ‘সু-৫৭’র পূর্বসূরি ছিল ‘টি-৫০’। কিন্তু, প্রযুক্তি হস্তান্তর সহ একাধিক বিষয়ে মনোমালিন্য হওয়ায় ২০১৭ সালে ওই প্রকল্পে থেকে পিছিয়ে আসে ভারত। সেই থেকে ব্রহ্মপুত্র ও মস্কোভা নদী দিয়ে অনেক জল গড়িয়েছে। এবার এত বছর পর, সেই পঞ্চম প্রজন্মের ফাইটার জেটের সোর্স কোড প্লেটে সাজিয়ে ভারতকে প্রস্তাব দিচ্ছে ক্রেমলিন। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে, সোর্স কোড পেলে রুশ যুদ্ধবিমানে ‘অস্ত্র’, ‘রুদ্রম’ সহ বিভিন্ন দেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র অতি সহজেই অন্তর্ভুক্ত করতে পারবে ভারত। অন্তর্ভুক্ত করা যাবে দেশীয় উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন গ্যালিয়াম নাইট্রাইড-বেসড্ আয়েসা রেডার  (GaN-based AESA radar) — পোশাকী নাম বীরূপাক্ষ ও সর্বাধুনিক এভিয়োনিক্সও। ফলে, এটিও হয়ে উঠবে সু-৩০ এমকেআই যুদ্ধবিমানের মতো সু-৫৭ আই। অর্থাৎ, ভারতীয় সংস্করণ, যা বিশ্বে আর কারও কাছে থাকবে না।

    মার্কিন ‘এফ-৩৫’! নৈব নৈব চ…

    রাশিয়ার থেকে সোর্স কোড সহ অত্যাধুনিক পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমানের (FGFA) প্রযুক্তি হস্তান্তরের প্রস্তাব পাওয়ার পর থেকে সুখোই সু-৫৭ (Sukhoi Su-57) কেনা নিয়ে নতুন করে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে নয়াদিল্লি। বলা বাহুল্য, রাশিয়া তাদের স্পর্শকাতর প্রযুক্তি ভারতের সঙ্গে ভাগ করতে রাজি হওয়ার পর থেকেই বরাতের লড়াইয়ে অনেকটাই পিছিয়ে গিয়েছে ওয়াশিংটন। কারণ, আমেরিকা কখনই তাদের এফ-৩৫ বিমানের সোর্স কোড ভাগ করা তো দূরে থাক, অন্য প্রযুক্তিও ভাগ করবে না। উপরন্তু, আমেরিকা থেকে কেনা একাধিক সামরিক সরঞ্জাম হাতে পেতে দেরি হচ্ছে ভারতের। মউ স্বাক্ষরিত হওয়ার ২ বছর পরেও, ভারত এখনও তেজস মার্ক-২ যুদ্ধবিমানের জন্য জেনারেল ইলেক্ট্রিকের থেকে এফ৪১৪ জেট ইঞ্জিন হাতে পায়নি। ২০২৪ সালের মাঝামাঝি শুরু হওয়ার কথা ছিল বোয়িংয়ের অ্যাপাচে এএইচ-৬৪ই হেলিকপ্টার। একটাও এখনও হাতে আসেনি ভারতের। কেন্দ্রীয় কর্তাদের অভিযোগ, ইচ্ছাকৃতভাবে ঢিলেমি করছে মার্কিন প্রশাসন। এই সব নিয়ে আমেরিকার ওপর ক্ষুব্ধ ভারত। ফলে, স্বাভাবিকভাবেই ভারত যে ‘এফ-৩৫’ নেবে না, তা বলাই বাহুল্য। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে খবর, ভারত এক প্রকার ‘এফ-৩৫’-কে ইতিমধ্যই খারিজ করে দিয়েছে। এখন শুধু সরকারি ঘোষণার অপেক্ষা।

  • I-STAR Spy Planes: ১০ হাজার কোটি টাকায় ভারতীয় বায়ুসেনা পাচ্ছে ৩টি ‘আই-স্টার’ গুপ্তচর বিমান, কী বিশেষত্ব?

    I-STAR Spy Planes: ১০ হাজার কোটি টাকায় ভারতীয় বায়ুসেনা পাচ্ছে ৩টি ‘আই-স্টার’ গুপ্তচর বিমান, কী বিশেষত্ব?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পাকিস্তানের বিরুদ্ধে চলমান ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর আবহেই ভারতীয় বায়ুসেনাকে (Indian Air Force) আরও শক্তিশালী করতে উদ্যোগী হল মোদি সরকার। সেই মর্মে মার্কিন রেথিয়ন ‘আই-স্টার’ গুপ্তচর বিমানের (I-STAR Spy Planes) ধাঁচে বায়ুসেনার জন্য তিনটি অত্যাধুনিক গোয়েন্দা বিমান কেনার জন্য ১০ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাব বিবেচনা করতে চলেছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক।

    এলিট গ্রুপে প্রবেশ করবে ভারত

    জানা যাচ্ছে, এই বিমানগুলি এলে আকাশ থেকে ভূমির নির্ভুল, পরিষ্কার ছবি হাতে চলে আসবে বায়ুসেনার। সেই চিত্র ব্যবহার করে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে রেডার স্টেশন, এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ও কমান্ড পোস্টের মত শত্রুর গুরুত্বপূর্ণ সামরিক লক্ষ্যবস্তুকে আরও নিখুঁত ভাবে টার্গেট করে হামলা চালাতে পারবে ভারত। সূত্রের খবর, বর্তমানে এই প্রস্তাব প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের উচ্চ-পর্যায়ের কমিটির চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। মন্ত্রিসভার সবুজ সঙ্কেত মিললেই এই বিমান (I-STAR Spy Planes) কেনার প্রক্রিয়া শুরু হবে। একবার তা হয়ে গেলেই, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইজরায়েলের মতো হাতে গোনা কয়েকটি দেশের এলিট তালিকায় স্থান করে নেবে ভারত। যা খবর, চলতি মাসের শেষের দিকে এর অনুমোদন মিলতে পারে।

    ডিআরডিও-র তৈরি প্রযুক্তি আই-স্টার

    আই-স্টার (I-STAR Spy Planes) শব্দগুচ্ছের পুরো অর্থ হল— ইন্টেলিজেন্স, সার্ভেল্যান্স, টার্গেট অ্যাকুইজিশন অ্যান্ড রিকনেস্যান্স। তবে ভারত যে প্রযুক্তি ব্যবহার করতে চলেছে তার একটা বড় অংশ দেশীয়। এই প্রযুক্তি তৈরি করেছে ভারতীয় প্রতিরক্ষা গবেষণা সংস্থা ডিআরডিও-র অধিনস্থ সেন্টার ফর এয়ারবোর্ন সিস্টেম (ক্যাবস্)। এই প্রযুক্তি মোতায়েন করা হতে পারে বিদেশি বোম্বার্ডিয়ার বা বোয়িং বিমানে। যে কারণে, একাধিক বিদেশি বিমান প্রস্তুতকারী সংস্থার সঙ্গে প্রাথমিক স্তরের আলোচনা এগিয়ে রাখা হচ্ছে। এমনকি, ইতিমধ্যে বিদেশি নির্মাতাদের কাছ থেকে উন্মুক্ত দরপত্রও ডাকা হয়েছে বলে খবর। জানা যাচ্ছে, এই বিশেষ গুপ্তচর বিমানের (I-STAR Spy Planes) মাধ্যমে শত্রুর সামরিক বিষয়ে নজরদারি চালিয়ে গোয়েন্দা তথ্য, থেকে শুরু করে লক্ষ্য অর্জন এবং রেকি করতে পারবে ভারত। এক কথায়, এই বিমানগুলি ভারতীয় বায়ুসেনার (Indian Air Force) নজরদারি ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলবে। এগুলো এয়ার-টু-গ্রাউন্ড ইন্টেলিজেন্স সরবরাহ করবে। এর ফলে শত্রু লক্ষ্যবস্তুতে নির্ভুলভাবে আক্রমণ করা সম্ভব হবে।

    দেশের প্রতিরক্ষা কাঠামোর আধুনিকীকরণ

    প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের দাবি, আই-স্টার সিস্টেমে (I-STAR Spy Planes) এমন সক্ষমতা থাকবে যা দিন-রাত উভয় সময়েই এবং দুর্গম ভূখণ্ডেও শত্রুদের অবস্থান নির্ভুলভাবে শনাক্ত, খুঁজে বের করতে ও ট্র্যাক করতে সাহায্য করবে। এই বিমানগুলি অধিক উচ্চতা এবং নিরাপদ দূরত্ব থেকেও কাজ করতে পারবে। যার ফলে শত্রু দেশের আকাশসীমায় প্রবেশ না করেই গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ ও লক্ষ্যবস্তু নির্ধারণ করা সম্ভব হবে। একবার চালু হলে, এই বিমানগুলি যুদ্ধক্ষেত্রের একটি গতিশীল এবং রিয়েল-টাইম চিত্র সরবরাহ করবে। যা সামরিক কমান্ডারদের (Indian Air Force) দ্রুত এবং সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করবে। এটি দেশের প্রতিরক্ষা কাঠামোকে আধুনিকীকরণ করবে এবং ভবিষ্যতের নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জগুলির মোকাবিলায় ভারতকে আরও প্রস্তুত করে তুলবে বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞরা। শীঘ্রই এক বিশেষ প্রতিরক্ষা সক্ষমতার অধিকারী (I-STAR Spy Planes) হতে চলেছে ভারত, অন্তত তেমনটাই বলছেন বিশেষজ্ঞরা।

  • BSF: সুন্দরবন অঞ্চলে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত নজরদারিতে জোর! ডিআরডিও-র দ্বারস্থ বিএসএফ

    BSF: সুন্দরবন অঞ্চলে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত নজরদারিতে জোর! ডিআরডিও-র দ্বারস্থ বিএসএফ

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: এবার প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থার (ডিআরডিও) সাহায্য চাইল বিএসএফ (BSF)। অবৈধ অনুপ্রবেশ ও সীমান্তপার জঙ্গি নেটওয়ার্কের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযানের প্রেক্ষিতে এই পদক্ষেপ করেছে বিএসএফ (DRDO)। ভারতের সুন্দরবনের সঙ্গে যুক্ত ১১৩ কিলোমিটার গুরুত্বপূর্ণ ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে নজরদারি ব্যবস্থাপনার সাহায্য চেয়েছে বিএসএফ। এর মধ্যে রয়েছে, ড্রোন, রেডার এবং স্যালেটাইটও। অপারেশন সিঁদুরের পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নর্থ ব্লকে উচ্চ পর্যায়ের উপকূল নিরাপত্তা পর্যালোচনা বৈঠকে এ নিয়ে সবিস্তার আলোচনা হয়। এই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন সীমান্ত ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব।

    পহেলগাঁও হামলা (BSF)

    প্রসঙ্গত, এপ্রিল মাসে পহেলগাঁও হামলার পর অবৈধ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের শনাক্ত করে ৩০ দিনের মধ্যে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়। অপারেশন সিঁদুরের পর থেকে তাতে আরও গতি এসেছে। সরকারিভাবে না হলেও, বেসরকারিভাবে এই অভিযানের নাম অপারেশন পুশ-ব্যাক। এই অভিযানের অংশ হিসেবে বিএসএফ সীমান্তে নজরদারি জোরদার করেছে এবং এখন সংবেদনশীল এলাকা, বিশেষ করে সুন্দরবন, যা দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ অনুপ্রবেশের জন্য পরিচিত রুট, সেখানে ফাঁক পূরণের জন্য উচ্চমানের নজরদারি প্রযুক্তির ওপর আরও বেশি করে নির্ভর করার চেষ্টা করছে (BSF)।

    কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের বক্তব্য

    কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের এক কর্তা বলেন, “বিএসএফ প্রায় ১১৩ কিলোমিটার এলাকা প্রযুক্তিগত নজরদারির আওতায় আনার প্রস্তাব দিয়েছে। তারা ইতিমধ্যেই ইসরো এবং ডিআরডিওর সঙ্গে পরামর্শ করে একটি সম্ভাব্য সমীক্ষা পরিচালনা করেছে এবং সব চেয়ে কার্যকর সমাধানগুলি শনাক্ত করার জন্য ডিআরডিওকে মাঠ পরিদর্শন করতে বলেছে। তবে গুজরাটের খাঁড়ি এলাকায় একই ধরনের প্রকল্পের বর্তমান কাজ শেষ করার পরেই ডিআরডিও (DRDO) সুন্দরবনের জায়গাটা নেবে বলে আশা করা হচ্ছে।

    বিএসএফ

    বর্তমানে বিএসএফ সুন্দরবন সেক্টরের প্রায় ১২৩ কিলোমিটার এলাকায় নজরদারি চালায়। এর সিংহভাগই খাল এবং ঘন ম্যানগ্রোভ বনে ভরা কঠিন ভূখণ্ড। গোয়েন্দা সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যের পর প্রযুক্তি নির্ভর পদ্ধতির চাহিদা বেড়েছে যে জঙ্গি গোষ্ঠীগুলি ভারতের নদী এবং সমুদ্র সীমানা, বিশেষ করে সুন্দরবনের মধ্যে দিয়ে অনুপ্রবেশকারীরা ভারতে ঢুকে পড়ার পথ খুঁজছে। প্রত্যন্ত দ্বীপপুঞ্জজুড়ে বিস্তৃত এবং জোয়ারের জলপথ দ্বারা আড়াআড়ি এই অঞ্চলটি প্রচলিত টহলদারির জন্য অনন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করে।

    বিএসএফের শক্তি

    বর্তমানে বিএসএফ আটটি ভাসমান সীমান্ত ফাঁড়ি এবং ৯৬চি অন্যান্য টহলদারি জাহাজের সাহায্যে নজরদারি চালায়। সাতটি নজর মিনার নির্মাণের জন্য জমি এবং আরও বন-পোস্টের সহ-অবস্থানের অনুমতি দেওয়ার জন্য এটি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছে। এটি এমন একটি মডেল যেখানে বিএসএফ কর্মীরা বনকর্তাদের সঙ্গে পরিকাঠামো ভাগ করে নেয় (BSF)। ইতিমধ্যেই এই ধরনের তিনটি পোস্ট রয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের এক কর্তা বলেন, “অগ্রগতি কিছুই হচ্ছে না। বারবার সমীক্ষা করা সত্ত্বেও, বন ও রাজ্য রাজস্ব বিভাগের কর্তারা অংশগ্রহণ করেননি, যার ফলে প্রক্রিয়াটি স্থবির হয়ে পড়েছে।” মে মাসে বৈঠক হয়েছিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের, সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিএসএফের শীর্ষ কর্তা (DRDO) দলজিৎ সিং চৌধুরীও। ওই বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রতিনিধিরা বলেছিলেন যে তাঁরা সাতটি জায়গা সমীক্ষা করেছেন। এর মধ্যে দুটি জায়গায় জমি দিতে রাজি হয়েছে। তিনি বলেন, “আরও তিনটি বিএসএফ পোস্টের জন্য তাঁরা অপেক্ষায় রয়েছেন বন বিভাগের ছাড়পত্রের। উভয় পক্ষকেই প্রয়োজনে বিকল্প জায়গা অনুসন্ধান ও প্রতিটি জায়গায় যৌথভাবে সম্ভাব্যতা মূল্যায়ন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।”

    সুন্দরবনে নজরদারি

    সুন্দরবনে নজরদারির ক্ষেত্রে এই পদক্ষেপটি এমন একটা সময়ে এসেছে যখন নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে যে জরুরি ভিত্তিতে পূর্ব সীমান্ত বন্ধ করা না হলে অবৈধ অভিবাসন এবং জঙ্গিদের অনুপ্রবেশ রোধের চেষ্টা ব্যাহত হতে পারে (BSF)। বৃহত্তর সীমান্ত কৌশলের অংশ হিসেবে কেন্দ্র ইতিমধ্যেই অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করেছে, নির্বাসন প্রচেষ্টা জোরদার করেছে এবং বিভিন্ন সংস্থায় গোয়েন্দা সমন্বয় বৃদ্ধি করেছে। বছরভর টুকটাক অনুপ্রবেশ চলতে থাকলেও, গত অগাস্টে প্রধানমন্ত্রী পদে ইস্তফা দিয়ে শেখ হাসিনা দেশ ছাড়তেই বাংলাদেশে শুরু হয় হিন্দু নিধন যজ্ঞ। এই ডামাডোলের বাজারে প্রত্যাশিতভাবেই বাড়তে শুরু করে বাংলাদেশ থেকে ভারতে অনুপ্রবেশের প্রবণতা। এই পরিস্থিতিতে ভারত ও বাংলাদেশ সীমান্তে নজরদারি বাড়িয়েছে বিএসএফ। একই সঙ্গে চলছে অপারেশন পুশ-ব্যাকও। এমন আবহেই ডিআরডিওর (DRDO) কাছে উন্নত প্রযুক্তির সাহায্য চেয়ে বিএসএফ যে সীমান্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা আরও পোক্ত করতে চাইছে, তা বলাই বাহুল্য (BSF)।

  • Chinese PL-15E missile: প্লিজ একবার দাও! ভারতের হেফাজতে থাকা আস্ত চিনা ক্ষেপণাস্ত্র হাতে পেতে লাইন বিশ্বের হেভিওয়েটদের

    Chinese PL-15E missile: প্লিজ একবার দাও! ভারতের হেফাজতে থাকা আস্ত চিনা ক্ষেপণাস্ত্র হাতে পেতে লাইন বিশ্বের হেভিওয়েটদের

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ‘অপারেশন সিঁদুর’ (Operation Sindoor) চলাকালীন পাকিস্তানের নিক্ষেপ করা চিনা নির্মিত ‘পিএল-১৫ই’ ক্ষেপণাস্ত্র (Chinese PL-15E missile) সফলভাব ইন্টারসেপ্ট বা মাঝপথেই ধ্বংস করেছে ভারত। সেই ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষ এসে পড়ে ভারতের ভূমিতে, যা বর্তমানে রয়েছে কেন্দ্রের হেফাজতে। এখন, এই ধ্বংসাবশেষ হয়ে উঠেছে বিশ্বের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। তাবড় তাবড় দেশ এখন এই চিনা ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষ নিজেদের হেফাজতে নিয়ে পরীক্ষা চাইছে। সেই কারণে, সকলে এক এক করে এখন ভারতের দ্বারস্থ হচ্ছে। আমেরিকা থেকে শুরু করে ফ্রান্স, জাপান থেকে শুরু করে ‘পঞ্চ অক্ষী’ জোট— কে নেই সেই তালিকায়!

    ‘পিএল-১৫ই’ বিভিআরএএএম ক্ষেপণাস্ত্র (Chinese PL-15E missile)

    ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর (Operation Sindoor) সময়, পাকিস্তানের একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন সফলভাবে ধ্বংস করে দেয় ভারতের ইন্টিগ্রেটেড এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম। ধ্বংস হওয়া পাকিস্তানের নিক্ষিপ্ত সেই ক্ষেপণাস্ত্রের তালিকায় ছিল চিনা নির্মিত ‘পিএল-১৫ই’ বিয়ন্ড ভিজ্যুয়াল রেঞ্জ এয়ার টু এয়ার ক্ষেপণাস্ত্র (BVRAAM)। তালিকায় ছিল তুরস্কের ‘বায়রাক্তার টিবি-২’ কামিকাজে ড্রোন। আকাশে ধ্বংস হওয়ার পর এগুলির বহু অংশ ভারতের ভূমিতে এসে পড়ে। এমনকি, একটি গোটা চিনা ক্ষেপণাস্ত্র উদ্ধার হয় পঞ্জাবের হোসিয়ারপুর থেকে। ওই ক্ষেপণাস্ত্রটিকে ছোড়া হয়েছিল পাক ফাইটার জেট থেকে। কিন্তু ইন্টারসেপ্ট হওয়ায় গোঁত্তা খেয়ে তা ভারতে পড়ে। কিন্তু, কোনও বিস্ফোরণ না হওয়ায় ক্ষেপণাস্ত্রটিকে (Chinese PL-15E missile) প্রায় গোটা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

    প্লিজ, একবার ক্ষেপণাস্ত্রটা দাও!

    এই খবর চাউর হতে বেশি সময় লাগেনি। চিনা ক্ষেপণাস্ত্রটির ধ্বংসাবশেষ দ্রুত নিজেদের হেফাজতে নেয় ভারতীয় সেনা। বর্তমানে তা রয়েছে ডিআরডিও-র পরীক্ষাগারে। ক্ষেপণাস্ত্রটিকে বিশ্লেষণ করছে ভারতীয় বিজ্ঞানীরা। একটা আস্ত চিনা ‘পিএল-১৫ই’ ক্ষেপণাস্ত্র (Chinese PL-15E missile) ভারতের হাতে এসে পড়েছে, এটা জানতে পেরেই বহু দেশের সামনে একটা বড় সুযোগের দ্বার খুলে গিয়েছে। চিনের অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্রকে পরীক্ষা করে প্রযুক্তি বোঝার সুযোগ পেতে তাদের তর সইছে না। সেই কারণে, তারা এক এক করে ভারতের দ্বারস্থ হচ্ছে। সকলের আবদার অনেকটা যেন এরকমই— প্লিজ, একবার ক্ষেপণাস্ত্রটা দাও।

    চিনা ক্ষেপণাস্ত্রের দুর্বলতা বের করছে ভারত?

    এই ‘পিএল-১৫ই’ (Chinese PL-15E missile) হল চিনের ‘পিএল-১৫’ মূল ক্ষেপণাস্ত্রের রফতানি সংস্করণ, যা পাকিস্তান সহ বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ ব্যবহার করে। চিনের এভিয়েশন ইন্ডাস্ট্রি কর্পোরেশন দ্বারা নির্মিত এই আকাশ-থেকে-আকাশ মিসাইলটির পাল্লা ১৪৫ কিমি। এতে ডুয়াল-পালস রকেট মোটর এবং অ্যাক্টিভ রেডার গাইডেন্স রয়েছে। এই ক্ষেপণাস্ত্রে অত্যাধুনিক সিকার এবং ইলেকট্রনিক কাউন্টার-মেজার রয়েছে। এটি চিনা আস্ত্রাগারের একটি গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। বর্তমানে ডিআরডিও-র (DRDO) পরীক্ষাকেন্দ্রে এই ক্ষেপণাস্ত্রের কাটাছেঁড়া চলছে। এর ফলে, ভবিষ্যতের যুদ্ধে উপকৃত হতে পারে ভারত। এই ক্ষেপণাস্ত্রের প্রোপালশন সিস্টেম, গাইডেন্স প্রযুক্তি এবং ইলেকট্রনিক যুদ্ধের উপাদানগুলির অধ্যয়ন করে ভারত তার দুর্বলতা বের করে ফেলতে পারে। অচিরে এতে ভারতের নিজস্ব ক্ষেপণাস্ত্র উন্নয়ন কর্মসূচিতে উল্লেখযোগ্যভাবে সহায়তা করবে। চিন যে ভারতের সবচেয়ে বড় শত্রু, এটা একটা শিশুও জানে। ফলে, শত্রুর সামরিক প্রযুক্তি হাতে পাওয়া মানে ভবিষ্যতের যুদ্ধে এগিয়ে থাকা।

    চিনের প্রতিদ্বন্দ্বীদের কাছে সুবর্ণ সুযোগ

    কিন্তু, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের এত আগ্রহ কেন? এর অন্যতম কারণ হল, চিনের অ্যাডভান্সড ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি সম্পর্কে অন্য দেশের কাছে সীমিত তথ্য থাকা। বেজিং বরাবরই গোপনীয়তা বজায় রাখে। যে কারণে, আমেরিকা থেকে শুরু করে জাপান— বিশ্বে চিনের প্রতিদ্বন্দ্বীদের কাছে এটা একটা সুবর্ণ সুযোগ। ভারতের হাতে এসে পড়া চিনা ‘পিএল-১৫ই’ ক্ষেপণাস্ত্র (Chinese PL-15E missile) তাই এখন বিশ্বের কাছে ‘হট-কেক’। ফ্রান্স এবং জাপানের মতো দেশগুলি ক্ষেপণাস্ত্রটির অভ্যন্তরীণ গঠন এবং রেডার এড়িয়ে যাওয়ার বৈশিষ্ট্যগুলি বুঝতে আগ্রহী বলে জানা গিয়েছে। আবার আমেরিকা, যুক্তরাজ্য, নিউজিল্যান্ড, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়াকে নিয়ে গঠিত ‘ফাইভ আইজ’ গোয়েন্দা জোটও ধ্বংসাবশেষ হাতে পেতে নয়াদিল্লির সাথে আলোচনা করছে বলেও জানা গিয়েছে।

    ভারতের হাতে এখন তুরুপের তাস

    ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর (Operation Sindoor) সময় হাতে আসা এই ধ্বংসাবশেষ আদৌ কারোর সঙ্গে ভাগ করা হবে কিনা, সেই বিষয়ে ভারত এখনও পর্যন্ত কাউকে কিছুই জানায়নি। বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, তাড়াহুড়ো নয়, কৌশলগত ও কূটনৈতিক স্বার্থকে মাথায় রেখে সব দিক পর্যালোচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নেবে ভারত। তাঁদের মতে, এই ক্ষেপণাস্ত্র ভারতের হাতে তুরুপের তাস হয়ে উঠতে পারে। ভারতে এর বিনিময়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি হস্তান্তর করিয়ে নিতে পারে।

    অন্যদিকে, প্রমাদ গুণছে চিন…

    এদিকে, ভারতের হাতে তাদের আস্ত একখান অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র এসে পড়ায় সিঁদুরে মেঘ দেখছে চিন। বেজিং ভালোই বুঝতে পারছে, প্রতিপক্ষ ভারত এখন ক্ষেপণাস্ত্রের (Chinese PL-15E missile) নাড়িভুঁড়ি বের করে পোস্ট-মর্টেম করছে এবং সব রহস্য বের করছে। এর পর, ভারত যদি ওই ক্ষেপণাস্ত্র অন্য দেশকে দেয়, তাহলে বিপদ বাড়বে বৈকি। এই ক্ষেপণাস্ত্র বিশ্লেষণ করে চিনের জন্য পাল্টা দাওয়াই-এর ব্যবস্থা করে ফেলবে ভারত সহ গোটা বিশ্ব। এতে, চিনের উন্নত প্রযুক্তির ধার অনেকটাই ভোঁতা হতে পারে।

  • Hypersonic Cruise Missile: স্ক্র্যামজেট ইঞ্জিনের পরীক্ষায় সাফল্য, হাইপারসনিক মিসাইলের নতুন যুগে প্রবেশ করল ভারত

    Hypersonic Cruise Missile: স্ক্র্যামজেট ইঞ্জিনের পরীক্ষায় সাফল্য, হাইপারসনিক মিসাইলের নতুন যুগে প্রবেশ করল ভারত

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ভারতের প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা (DRDO) হাইপারসোনিক প্রযুক্তির ক্ষেত্রে এক বিশাল সাফল্য অর্জন করল। শুক্রবার ডিআরডিও জানিয়েছে, নতুন প্রজন্মের হাইপারসোনিক মিসাইল (Hypersonic Cruise Missile) সিস্টেমের জন্য তৈরি স্ক্র্যামজেট ইঞ্জিনের দীর্ঘমেয়াদি পরীক্ষা সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এই পরীক্ষায় ইঞ্জিনটি একটানা ১০০০ সেকেন্ড (প্রায় ১৭ মিনিট) চালানো হয়। যা পূর্বে জানুয়ারি ২০২৫-এর পরীক্ষায় মাত্র ১২০ সেকেন্ড পর্যন্ত সীমাবদ্ধ ছিল। এই সাফল্যের মাধ্যমে ভারত এখন হাইপারসোনিক ক্রুজ মিসাইল প্রযুক্তিতে আরও একধাপ এগিয়ে গেল।

    কী এই হাইপারসোনিক ক্রুজ মিসাইল?

    হাইপারসোনিক ক্রুজ মিসাইল (HCM) এমন একধরনের অস্ত্র যা ন্যূনতম মাক ৬ বা শব্দের গতি থেকে ছয়গুণেরও বেশি বেগে দীর্ঘ সময় ধরে চলতে সক্ষম। এই মিসাইলে ব্যবহৃত হয় এয়ার ব্রিদিং স্ক্র্যামজেট ইঞ্জিন, যার মাধ্যমে বায়ুর মধ্যেই ইঞ্জিন জ্বালানী পায় এবং উচ্চ গতিতে জ্বলন (combustion) সম্পন্ন হয়। এই পরীক্ষার মাধ্যমে স্ক্র্যামজেট ইঞ্জিনের দীর্ঘমেয়াদী কার্যক্ষমতা ও টেস্ট ফ্যাসিলিটির ডিজাইন সফলভাবে যাচাই করা হয়েছে। ডিআরডিও জানিয়েছে, এই পরীক্ষার ফলে এখন পুরোপুরি ফ্লাইট-যোগ্য কমবাস্টার টেস্টিংয়ের পথ খুলে গেল।

    কেন তাৎপর্যপূর্ণ এই পরীক্ষা?

    বিশ্বের যেখানে আজও স্ক্র্যামজেট প্রযুক্তি সীমিত কয়েক মিনিটের পরীক্ষায় আবদ্ধ, সেখানে ভারত ১০০০ সেকেন্ডের এক বিরাট মাইলফলক স্পর্শ করল। ডিআরডিও-র ল্যাবে এই দীর্ঘসময় ধরে সফলভাবে অ্যাকটিভ কুলড্ স্ক্র্যামজেট কমবাস্টর গ্রাউন্ড টেস্ট করে এমন একটি রেকর্ড স্থাপন করল, যা বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ স্ক্র্যামজেট ইঞ্জিন অপারেশন হিসেবেই ধরা হচ্ছে। এই সাফল্য শুধু একটি ইঞ্জিন টেস্ট নয়, বরং এটি হতে চলেছে ভারতের হাইপারসনিক প্রপালশনের পরবর্তী বড় প্রকল্প— প্রোজেক্ট বিষ্ণু-র মূল ভিত্তি।

    প্রোজেক্ট বিষ্ণু-র গুরুত্ব কোথায়?

    এই ১০০০ সেকেন্ডের স্ক্র্যামজেট টেস্টের ফলস্বরূপ ভারত যা পেতে চলেছে তা সত্যিই বৈপ্লবিক—

    ● বিশাল হাইপারসনিক রেঞ্জ:
    ভারত এখন ২০০০–৩০০০ কিমি রেঞ্জের হাইপারসনিক ল্যান্ড অ্যাটাক ও জাহাজ-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করতে পারবে, যেগুলো কয়েক মিনিটেই লক্ষ্যে আঘাত হানতে সক্ষম।

    ● বিমানবাহী রণতরী ধ্বংসের ক্ষমতা:
    এতদূর থেকে ছোঁড়া হাইপারসনিক অ্যান্টি-শিপ মিসাইল সহজেই বিমানবাহী রণতরী সহ গোটা ব্যাটল গ্রুপকে ধ্বংস করতে পারবে — শত্রুপক্ষ প্রতিরোধ করার আগেই লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস।

    ● ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে টেক্কা:
    এত উচ্চ গতিতে (মাক ৬-৮), এই মিসাইলগুলো পাশ্চাত্য দেশগুলির থাড, এস-৪০০ বা এইজিসের মতো শীর্ষস্থানীয় ডিফেন্স সিস্টেমও অতিক্রম করে ফেলতে পারবে — প্রতিরোধ কার্যত অসম্ভব।

    ● প্রতিক্রিয়ার সময় পাবে না শত্রু:
    স্যাটেলাইট বা রেডারে ডিটেকশন হলেও প্রতিক্রিয়া জানানোর সময় পাওয়া যাবে না, কারণ এই গতি ও রেঞ্জে প্রতিক্রিয়ার সময় খুবই কম।

    ● যুদ্ধে গেমচেঞ্জার:
    এতদূর থেকে, এত দ্রুত, এত শক্তিশালী আঘাত ভারতের কাছে থাকলে — যেকোনও যুদ্ধক্ষেত্রে বা জলসীমায় ভারত গেমচেঞ্জার হয়ে উঠবে।

    প্রোজেক্ট বিষ্ণু-র সম্ভাব্য রেঞ্জ

    যদি আমরা প্রোজেক্ট বিষ্ণু-র জন্য মাক ৬ গতি ধরি (যা স্ক্র্যামজেটের বেসিক ন্যূনতম), তাহলে ১০০০ সেকেন্ড ধরে এই গতি ধরে রাখলে দাঁড়ায় সেকেন্ড প্রতি ২.০৫৮ কিমি। অর্থাৎ, ১০০০ সেকেন্ড ধরে ইঞ্জিন চললে, এর পাল্লা দাঁড়াবে ২০৫৮ কিমি। অর্থাৎ, শুধুমাত্র স্ক্র্যামজেট ফেজেই এর সম্ভাব্য কার্যক্ষমতা হতে পারে ২০০০ কিমি পার করে দেবে ক্ষেপণাস্ত্র। আর যদি মাক ৭ বা মাক ৮ হয়, তাহলে এই পাল্লা বেড়ে হবে ২৫০০-৩০০০ কিমি।

    প্রতিরক্ষামন্ত্রীর অভিনন্দন

    এই পরীক্ষাটি হায়দরাবাদের প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থার (DRDO) পরীক্ষাগার ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ল্যাবরেটরিতে (ডিআরডিএল)সম্পন্ন হয়েছে। এটি ডিআরডিও, বিভিন্ন শিল্প সংস্থা ও শিক্ষাবিদদের সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফল। ভারতের প্রতিরক্ষা প্রযুক্তিতে এই অগ্রগতি ভবিষ্যতের হাইপারসোনিক অস্ত্র উন্নয়ন কর্মসূচির জন্য মজবুত ভিত গড়ে তুলবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং এই অসাধারণ সাফল্যের জন্য ডিআরডিও, শিল্প অংশীদার এবং শিক্ষাবিদদের প্রশংসা করেছেন। তিনি জানান, এই সাফল্য জাতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ হাইপারসনিক অস্ত্র প্রযুক্তি বাস্তবায়নে সরকারের দৃঢ় অঙ্গীকারের ফল। এই পরীক্ষাটি দীর্ঘমেয়াদী স্ক্র্যামজেট কম্বাস্টারের নকশার পাশাপাশি পরীক্ষার সুবিধার বৈধতা দেয়। এটি শিল্প ও একাডেমিয়ার সাথে ডিআরডিও ল্যাবগুলির দ্বারা প্রদত্ত একটি সমন্বিত প্রচেষ্টার ফলাফল। এই সাফল্য দেশের হাইপারসনিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র (Hypersonic Cruise Missile) উন্নয়ন কর্মসূচির জন্য একটি শক্তিশালী ভিত্তি তৈরি করে।

  • India’s First Laser Weapon: এক লহমায় ধ্বংস এক ঝাঁক ড্রোন! পাকিস্তান-চিনের ঘুম উড়িয়ে দেশীয় লেজার অস্ত্রের সফল পরীক্ষা ভারতের

    India’s First Laser Weapon: এক লহমায় ধ্বংস এক ঝাঁক ড্রোন! পাকিস্তান-চিনের ঘুম উড়িয়ে দেশীয় লেজার অস্ত্রের সফল পরীক্ষা ভারতের

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: নতুন প্রজন্মের অস্ত্রের দুনিয়ায় পা রাখল ভারত। লেজার অস্ত্রের (India’s First Laser Weapon) সফল পরীক্ষা চালিয়েছে দেশের প্রতিরক্ষা গবেষণা সংস্থা ডিআরডিও। ডিফেন্স রিসার্চ ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন-এর এই অস্ত্র মনে করাচ্ছে জর্জ লুকাসের তৈরি বিখ্যাত সিরিজ স্টার ওয়ারস-এর (Star Wars) যোদ্ধাদের। যেখানে যোদ্ধাদের অত্যাধুনিক তলোয়ার থেকে প্রতি নিয়ত বেরোচ্ছে আলোক রশ্মি। যা মাঝখান থেকে চিরে দিতে পারে একটা আস্ত বিমানকেও। এবার প্রায় একই রকম শক্তি নিজের হাতে তুলতে চলেছে ভারতীয় সেনা। শত্রু রাষ্ট্রের যুদ্ধবিমান থেকে গুপ্তচর ড্রোন, যে কোনও কিছু নিমিষে ধ্বংস করে দিতে পারে ডিআরডিও-র তৈরি এই লেজার অস্ত্র।

    ৩০ কিলোওয়াট লেজার অস্ত্রের ট্রায়াল রান সফল

    ডিআরডিও সূত্রে খবর, রবিবার অন্ধ্রপ্রদেশের কুর্নুলে এক দল গবেষক এই সদ্য নির্মিত ৩০ কিলোওয়াটের লেজার অস্ত্রের ট্রায়াল রান করায়। যাতে সফল হয়েছে তারা। জানা গিয়েছে, এই অত্যাধুনিক অস্ত্র তৈরির মাধ্যমেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চিন ও রাশিয়ার সঙ্গে জুড়ে গেল ভারতের নাম। সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে তৈরি এই নতুন মার্ক-২(এ)  ডিইডব্লু সিস্টেমটি দূর পর্যন্ত যে কোনও শত্রু ড্রোনের আক্রমণকে প্রতিহত করতে পারে। সেই ড্রোন এক ঝটকায় উড়িয়েও দিতে পারে। তারা আরও জানিয়েছে, এই অস্ত্র থেকে নির্গত লেজার বা আলোকরশ্মি ৫ কিলোমিটারের মধ্যে থাকা যে কোনও ড্রোন বা হেলিকপ্টারকে আকাশপথেই ধ্বংস করে দিতে সক্ষম। যা স্থল ও নৌসেনা উভয়েই নিজেদের সুবিধার্থে ব্যবহার করতে পারবেন।

    সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে তৈরি লেজার অস্ত্র

    প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে খবর, অন্ধ্রপ্রদেশের কুর্নুলের ন্যাশনাল ওপেন এয়ার রেঞ্জে লেজার (India’s First Laser Weapon) হাতিয়ারের পরীক্ষা করা হয়। ইতিমধ্যেই সেই ভিডিও সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এটি প্রকৃতপক্ষে একটি ‘ডিরেক্ট এনার্জি ওয়েপন সিস্টেম’ বা ডিইডব্লিউ। বর্তমান বিশ্বের হাতে গোনা কয়েকটি দেশের কাছে আছে এই হাতিয়ার। এটি তৈরির মূল কৃতিত্ব ডিআরডিওর ‘সেন্টার ফর হাই এনার্জি সিস্টেমস অ্যান্ড সায়েন্সেস’-এর (সিএইচইএসএস)। লেজার হাতিয়ারের গবেষণায় হারদরাবাদের একাধিক ল্যাবরেটরি এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাহায্য পেয়েছে ডিআরডিও। পরে নকশা অনুযায়ী অস্ত্রটিকে তৈরি করে একটি দেশীয় প্রতিরক্ষা সংস্থা। ট্রাক আকৃতির গাড়ির উপর ‘মার্ক-টু(এ) লেজার’কে বসানো হয়েছে। যুদ্ধের সময়ে একে একাধিক রণাঙ্গনে মোতায়েন করতে পারবে ফৌজ।

    ‘ড্রোন ঘাতক’ লেজার অস্ত্র

    প্রতিরক্ষা গবেষণা সংস্থা সূত্রে খবর, শত্রুর নজরদারি সেন্সর, অ্যান্টেনা বা রাডার ব্যবস্থাকে ধ্বংস করতে পারবে ‘মার্ক-টু(এ)’। চোখের পলক ফেলার আগে নিখুঁত নিশানায় সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে হামলা চালাতে পারবে এই সমরাস্ত্র। লেজার হাতিয়ারটি ৩০ কিলোওয়াট শক্তি সম্পন্ন। তবে এর পাল্লার বিষয়টি গোপন রেখেছে প্রতিরক্ষা গবেষণা সংস্থা। ডিআরডিওর তরফে অত্যাধুনিক অস্ত্রটিকে ‘ড্রোন ঘাতক’-এর তকমা দেওয়া হয়েছে। প্রতিরক্ষা গবেষণা সংস্থাটির কর্তা-ব্যক্তিদের দাবি, ‘মার্ক-টু(এ)’র সবচেয়ে বড় সুবিধা হল, এর নামমাত্র খরচ। এক-দু’লিটার পেট্রলের দামে কয়েক সেকেন্ডের জন্য লেজার রশ্মি ছুড়তে পারবে এই হাতিয়ার।

    ৩০-কিলোওয়াট লেজার অস্ত্রের গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য

    ● এই লেজার অস্ত্র ড্রোন, হেলিকপ্টার ও ক্ষেপণাস্ত্রের মতো আকাশপথের হুমকি ৫ কিলোমিটার দূর থেকেই ধ্বংস করতে পারে।

    ● শত্রুর যোগাযোগ ব্যবস্থা ও স্যাটেলাইট সিগন্যাল জ্যাম করতে সক্ষম।

    ● স্থল ও সমুদ্র – দুই জায়গায়ই এটি ব্যবহারযোগ্য।

    ● ৩৬০ ডিগ্রি সেন্সর দ্বারা সজ্জিত, যা টার্গেটিং-এ নির্ভুলতা নিশ্চিত করে।

    ● সহজেই বিমান, রেল, সড়ক বা জলপথে মোতায়েন করা যায়।

    ● বিভিন্ন সামরিক প্রয়োজনে এর ডিজাইনকে মানিয়ে নেওয়া যায়।

    বদলে যাবে আকাশ প্রতিরক্ষার সংজ্ঞা

    প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকেরা মনে করেন, ‘আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা’র (এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম) সংজ্ঞা বদলে দেবে ডিআরডিওর তৈরি অত্যাধুনিক এই অস্ত্র (India’s First Laser Weapon)। এর দু’রকম ব্যবহারের কথা বলেছেন সাবেক সেনাকর্তারা। দীর্ঘ দিন ধরেই ড্রোনের সাহায্যে জম্মু-কাশ্মীর এবং পঞ্জাবে হাতিয়ার ও মাদক চোরাচালান চালিয়ে আসছে পাকিস্তান। বাহিনীতে ‘মার্ক-টু(এ)’ চলে এলে সেই সূচক অনেকাংশেই নেমে আসবে, তা বলাই বাহুল্য। এ ছাড়া যুদ্ধ বা সীমান্ত সংঘর্ষের সময়ে শত্রুর ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে আসা ড্রোনকে পুড়িয়ে শেষ করতে পারবে নতুন লেজার হাতিয়ার। তবে ভারতীয় সেনা কবে থেকে এটি ব্যবহার করবে, তা স্পষ্ট করেনি প্রতিরক্ষা মন্ত্রক।

    ডিআরডিও-র পরের লক্ষ্য ‘সূর্য’

    ডিআরডিও-র পরের লক্ষ্য এরই আরও উন্নত সংস্করণ ‘সূর্য’, ৩০০ কিলোওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন। যার সীমা ২০ কিমি। এটি এখন গবেষণার পর্যায়ে রয়েছে। ২০২৭ সালের মধ্যে ‘সূর্য’কে সামনে আনার চেষ্টায় রয়েছে ডিআরডিও। নতুন লেজার (India’s First Laser Weapon) হাতিয়ারটির সঙ্গে ‘সূর্য’-র কোনও মিল রয়েছে কি না, সেটা জানা যায়নি। তবে ‘সূর্য’র মাধ্যমে লেজার, মাইক্রোওয়েভ বা পার্টিকল বিমের (কণা রশ্মি) মতো কেন্দ্রীভূত শক্তিকে শত্রুর উপর সরাসরি প্রয়োগ করা যাবে বলে জানা গিয়েছিল। ‘সূর্য’ নিয়ে গবেষণার কাজে নিয়োজিত রয়েছে ডিআরডিওর লেজার সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি সেন্টার। প্রতিরক্ষা গবেষণা সংস্থাটির দাবি, ২০২৭ সালের মধ্যে হাতিয়ারটির প্রোটোটাইপ তৈরি করার কাজ পুরোপুরি শেষ করতে পারবে তারা। তবে এর জন্য একাধিক বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে অংশীদারিত্বের পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।

  • ASTRA MK-III: চিন-আমেরিকাকে টেক্কা! ভারত তৈরি করছে বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত এয়ার-টু-এয়ার মিসাইল ‘গাণ্ডীব’

    ASTRA MK-III: চিন-আমেরিকাকে টেক্কা! ভারত তৈরি করছে বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত এয়ার-টু-এয়ার মিসাইল ‘গাণ্ডীব’

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আরও শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র আনছে ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (DRDO)। ভারতের সর্বশেষ এবং সবচেয়ে উন্নত এয়ার-টু-এয়ার মিসাইল, অস্ত্র মার্ক-থ্রি-র (ASTRA MK-III) নতুন নামকরণ করা হল ‘গাণ্ডীব’। মহাভারতের অর্জুনের ধনুকের নাম ছিল গাণ্ডীব। শত্রুকে নিশানা এর লক্ষ্য ছিল নির্ভুল। ঠিক সেই রকম ভাবেই অস্ত্র মার্ক-থ্রি আধুনিক আকাশ যুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ হবে বলে আশা ডিআরডিও-র। এই মিসাইলটি আকাশ-যুদ্ধের দৃশ্যপটকে নতুন সংজ্ঞা দিতে সক্ষম হবে, বিশেষত “বিয়ন্ড ভিজুয়াল রেঞ্জ” (BVR) যুদ্ধে নতুন দিশা দেখাবে। ডিআরডিও-র নজরদারিতে এখনও এই ক্ষেপণাস্ত্রের আধুনিকীকরণ চলছে।

    ভারতের জন্য গেম-চেঞ্জার

    বর্তমানে, ভারতীয় বায়ুসেনার রাফাল যুদ্ধবিমানগুলি ফরাসি এমবিডিএ নির্মিত মিটিওর বিভিআর মিসাইল দ্বারা সজ্জিত। যার বিয়ন্ড ভিজুয়াল রেঞ্জ পরিসীমা ২০০ কিলোমিটার। তবে, গাণ্ডীব মিসাইলটি তার প্রতিদ্বন্দ্বীদের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে আরও দীর্ঘ পরিসীমা প্রদান করবে। এর সর্বোচ্চ পরিসীমা ৩৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। মিসাইলটি ২০ কিলোমিটার উচ্চতায় ৩৪০ কিলোমিটার এবং ৮ কিলোমিটার উচ্চতায় ১৯০ কিলোমিটার পর্যন্ত শত্রু বিমান লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। যা এই মিসাইলটিকে ভারতের সামরিক শক্তির ভারসাম্য পরিবর্তনকারী এক বিপ্লবী অস্ত্র হিসেবে গড়ে তুলবে।

    চিন-আমেরিকাকে টেক্কা

    বলে রাখা ভালো, বর্তমানে বিশ্বে আর কোনও বিভিআর এয়ার টু এয়ার মিসাইলের পাল্লা এত বেশি নয়। গাণ্ডীব ক্ষেপণাস্ত্রের (Gandiva Missile) চূড়ান্ত অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে, ভারত বিশ্বের অন্যতম দীর্ঘ-পরিসীমার বিয়ন্ড ভিজুয়াল রেঞ্জ এয়ার-টু-এয়ার মিসাইলের অধিকারী হবে। এর ফলে, ভারত চিনের পিএল-১৫ (PL-15) ক্ষেপণাস্ত্রকে অতিক্রম করবে, যার পরিসীমা ৩০০ কিলোমিটার। যুক্তরাষ্ট্রের এআইএম-১৭৪ ও বিভিআরএএএম (AIM-174 BVRAAM) মিসাইলকেও টেক্কা দেবে যার পরিসীমা ২৪০ কিলোমিটার। গাণ্ডীব ভারতীয় বিমান বাহিনীর (IAF) সুখোই-৩০এমকেআই (Su-30MKI) এবং লাইট কমব্যাট এয়ারক্রাফট তেজস যুদ্ধবিমানে স্থাপন করা হবে। গাণ্ডীব একটি ডুয়াল-ফুয়েল ডাকটেড র‌্যামজেট ইঞ্জিন দ্বারা চালিত। এটিকে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে অথবা ২০ কিলোমিটার উচ্চতা থেকে উৎক্ষেপণ করা যাবে। এটি বিভিন্ন ধরনের শত্রু বিমান যেমন ফাইটার, বম্বার, সামরিক পরিবহণ বিমান, রিফুয়েলিং প্লেন, এবং এয়ারবর্ন ওয়ার্নিং অ্যান্ড কন্ট্রোল সিস্টেম বিমানকে ধ্বংস করতে সক্ষম।

  • NASM-SR Missile: ডিআরডিও-র মুকুটে নয়া পালক, প্রথম নেভাল অ্যান্টি-শিপ মিসাইলের পরীক্ষা সফল

    NASM-SR Missile: ডিআরডিও-র মুকুটে নয়া পালক, প্রথম নেভাল অ্যান্টি-শিপ মিসাইলের পরীক্ষা সফল

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ভারতীয় প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা (ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন বা DRDO) দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি স্বল্পপাল্লার জাহাজ বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রের (NASM-SR Missile) সফল পরীক্ষা করল। বুধবার ভারতীয় নৌসেনার হেলিকপ্টার থেকে ছোড়া এনএএসএম-এসআর নামের ওই ক্ষেপণাস্ত্র নির্ভুল নিশানায় লক্ষ্যভেদে সফল হয়েছে বলে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে। ওড়িশার উপকূলে ইন্টিগ্রেটেড টেস্ট রেঞ্জ (ITR) চাঁদিপুর থেকে এই ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা করা হয়। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং এই সফল পরীক্ষার জন্য ডিআরডিও, নৌসেনা এবং শিল্প জগতকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।

    এই প্রকল্পেরশুরু

    বছর দেড়েক আগে নৌসেনার ‘সি কিং ৪২বি’ হেলিকপ্টার থেকে প্রথম এনএএসএম-এসআর (NASM-SR Missile) ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করা হয়েছিল। এবার নির্ভুল লক্ষ্যে আঘাত নিশ্চিত করতে ‘টার্মিনাল গাইডেন্স’-এর জন্য একটি দেশীয় ইমেজিং ইনফ্রা-রেড (আইআইআর) চিহ্নিতকরণ ব্যবস্থা ব্যবহার করা হয়েছে। ২০১৮ সালে তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারামন এনএএসএম-এসআর ক্ষেপণাস্ত্র প্রকল্পের সূচনা করেছিলেন। অস্ত্র এবং প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের ক্ষেত্রে বিদেশি নির্ভরতা কমাতে নরেন্দ্র মোদি সরকার যে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচি নিয়েছে এই ক্ষেপণাস্ত্র সেই ‘লক্ষ্য’ অর্জনের পথে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

    ক্ষেপণাস্ত্রটির বিশেষত্ব কী?

    এনএএসএম-এসআর ক্ষেপণাস্ত্রটিতে (NASM-SR Missile) রয়েছে ম্যান-ইন-লুপ বৈশিষ্ট্য। এর ফলে, নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে একেবারে শেষ মুহূর্তে দিশা পরিবর্তন করতে সক্ষম এই ক্ষেপণাস্ত্রটি। যার জেরে এটি আরও মারণ ক্ষমতাসম্পন্ন। ডিআরডিও (DRDO) সূত্রে জানানো হয়েছে, পরীক্ষায় ক্ষেপণাস্ত্রটি বিয়ারিং-অনলি লক-অন আফটার লঞ্চ মোডে উৎক্ষেপণ করা হয়। যে কোনও একটি লক্ষ্যকে বেছে নেওয়ার জন্য কাছাকাছি বেশ কয়েকটি লক্ষ্যবস্তু ছিল। পরীক্ষার সময়ে প্রথমে নির্দিষ্ট অনুসন্ধান পরে একটি বড় লক্ষ্যবস্তুকে নিশ্চিত করা হয়। পরে টার্মিনাল পর্যায়ে, পাইলট একটি ছোট লুকনো লক্ষ্যবস্তুকে ফাইনাল লক্ষ্য হিসাবে বেছে নেয়। মিসাইল তবু নির্ভুলভাবে সেই ছোট লক্ষ্যে আঘাত হেনে ধ্বংস করে দেয়।

    এই ক্ষেপণাস্ত্রে কী কী সিস্টেম রয়েছে?

    মিড-কোর্স গাইডেন্সের জন্য দেশীয় ফাইবার অপটিক জাইরোস্কোপ ভিত্তিক ইনর্শিয়াল নেভিগেশন সিস্টেম (INS) এবং রেডিও অল্টিমিটার ব্যবহার করা হয়েছে এই ক্ষেপণাস্ত্র (NASM-SR Missile) তৈরিতে। এছাড়াও, এটি সমন্বিত অ্যাভিওনিক্স মডিউল, ইলেক্ট্রো-মেকানিক্যাল অ্যাকুয়েটর এবং অ্যারোডাইনামিক এবং জেট ভ্যান দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। এতে থার্মাল ব্যাটারি, পিসিবি ওয়ারহেড এবং সলিড প্রপালশন সিস্টেম রয়েছে, যার মধ্যে ইন-লাইন ইজেক্টেবল বুস্টার এবং লং-বার্ন সাসটেইনার রয়েছে। এই মিসাইলটি ডিআরডিও (DRDO), রিসার্চ সেন্টার ইমারত (Research Centre Imarat, RCI), ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ল্যাবরেটরি (DRDL), হাই এনার্জি মেটেরিয়ালস রিসার্চ ল্যাবরেটরি (HEMRL) এবং টার্মিনাল ব্যালিস্টিক রিসার্চ ল্যাবরেটরি (TBRL) দ্বারা প্রস্তুত করা হয়েছে।

LinkedIn
Share