Tag: DRDO

DRDO

  • Agni-Prime Missile Launch: ট্রেন থেকে অগ্নি-প্রাইম ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ! বিশ্বকে তাক লাগাল ভারত

    Agni-Prime Missile Launch: ট্রেন থেকে অগ্নি-প্রাইম ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ! বিশ্বকে তাক লাগাল ভারত

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: সামরিক ক্ষেত্রে ঐতিহাসিক সাফল্য অর্জন করল ভারত। এই প্রথমবার ট্রেন থেকে ২ হাজার কিলোমিটার পাল্লার অগ্নি-প্রাইম ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের (Agni-Prime Missile Launch) সফল পরীক্ষা সম্পন্ন করল দেশের প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা (ডিআরডিও)। ওড়িশার চাঁদিপুরে অবস্থিত আব্দুল কালাম দ্বীপ থেকে একটি রেল মোবাইল লঞ্চার (Rail-Based Mobile Launcher) থেকে ক্ষেপণাস্ত্রটিকে উৎক্ষেপণ করা হয়। এর ফলে, বিশ্বের হাতে গোনা গুটিকয়েক সেই সব দেশের তালিকায় ঢুকে পড়ল ভারত, যাদের হাতে এই বিশেষ ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ প্রযুক্তি রয়েছে। এই উৎক্ষেপণের ফলে ভারতের সাফল্যে মুকুটে যে আরও একটা সাফল্যের পালক জুড়ল, তা বলাই যায়।

    কী বললেন রাজনাথ সিং?

    এই সফল ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের কথা জানান প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। এর জন্য ডিআরডিওকে অভিনন্দন জানিয়েছেন তিনি দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে মজবুত করার আরও একটি প্রক্রিয়া সফল হল। এর জন্য গোটা দেশ গর্বিত। এক্স প্ল্যাটফর্মে পোস্ট করে তিনি লেখেন, “অগ্নি-প্রাইম ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষার জন্য ডিআরডিও, স্ট্র্যাটেজিক ফোর্সেস কমান্ড (SFC) এবং ভারতীয় সেনাকে অভিনন্দন। এই সফল উৎক্ষেপণ (Agni-Prime Missile Launch) ভারতকে সেই সমস্ত নির্বাচিত দেশগুলির দলে জায়গা করে দিল, যারা মোবাইল রেল নেটওয়ার্ক থেকে ক্যানিস্টারাইজড লঞ্চ সিস্টেম তৈরির ক্ষমতা রাখে।” রাজনাথ আরও বলেন, “আগামীদিনে কী কী পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে সে কথা মাথায় রেখেই এই ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করা হয়েছে৷ বিভিন্ন উন্নত সরঞ্জাম বা প্রযুক্তির মাধ্যমে সেভাবেই এটিকে ডিজাইন করা হয়েছে৷”

    রেল লঞ্চার সিস্টেম ঠিক কী?

    এটি এক ধরনের বিশেষ ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ ব্যবস্থা। ক্ষেপণাস্ত্র বহন ও উৎক্ষেপণকারী ক্যানিস্টারকে (সিলিন্ডার সদৃশ যার মধ্যে বসানো থাকে ক্ষেপণাস্ত্রটি) একটি পণ্যবাহী ট্রেনের পিছনে বগির মতো জুড়ে দেওয়া হয়। কোনও ভাবেই বাইরে থেকে বোঝা সম্ভব নয় যে, এটি একটি ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ ব্যবস্থা (Agni-Prime Missile Launch। দেখতে সাধারণ পণ্যবাহী ট্রেনের মতোই মনে হতে পারে। ফলে, একে রেলপথে যে কোনও জায়গায় নিয়ে গিয়ে দাঁড় করিয়ে সেখান থেকেই উৎক্ষেপণ করা যায়। এতদিন পর্যন্ত কেবলমাত্র স্থায়ী লঞ্চপ্যাড থেকেই ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ বা নিক্ষেপ করা সম্ভব হত। কিন্তু, এখন থেকে রেল মোবাইল লঞ্চার (Rail-Based Mobile Launcher) ব্যবস্থাও ভারতের হাতের মুঠোয় চলে এল। এর ফলে, শত্রু ঠাওর করতে পারবে না, কোথায় রয়েছে ক্ষেপণাস্ত্র। শত্রুপক্ষের নজর সহজে এড়ানো যাবে। চলতে চলতেই ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালাতে পারে এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা।

    অগ্নি-প্রাইম ক্ষেপণাস্ত্রের বিশেষত্ব কী?

    অগ্নি-প্রাইম ক্ষেপণাস্ত্রের বিশেষ বৈশিষ্ট্যের মধ্যে রয়েছে ২০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করার ক্ষমতা। এই মিসাইলের আরেকটি বিশেষত্ব হল, এটি যে কোনও স্থান থেকে নিক্ষেপ (Rail-Based Mobile Launcher) করা সম্ভব। একে দেশের যে কোনও সীমান্তে দ্রুত স্থানান্তর করা সম্ভব, কারণ এটি রেল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যেতে সক্ষম। ক্যানিস্টারাইজড সিস্টেমে ক্ষেপণাস্ত্রটিকে এমন ভাবে তৈরি করা হয়েছে, যাতে এটিকে খুব সহজেই স্টোরেজ করা যেতে পারে। এছাড়া, ক্ষেপণাস্ত্রটির উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্যের মধ্যে রয়েছে এর রেডার ফাঁকি দেওয়া এবং অত্যাধুনিক নেভিগেশন সিস্টেমের মাধ্যমে শত্রুর অবস্থানকে সঠিকভাবে নিশানা করার ক্ষমতা। অত্যাধুনিক ইনর্শিয়াল নেভিগেশন সিস্টেম ছাড়াও এই ক্ষেপণাস্ত্রে (Agni-Prime Missile Launch) রয়েছে অপটিক্যাল জিপিএস এবং দেশীয় নাবিক স্যাটেলাইট নেভিগেশন সিস্টেম, যা লক্ষ্যবস্তুতে নির্ভুলভাবে আঘাত করতে সক্ষম। এই ক্ষেপণাস্ত্রটি দুই ধরনের জ্বালানি ব্যবহার করে। এই মিসাইল অগ্নি-১ এবং অগ্নি-২ ক্ষেপণাস্ত্রের তুলনায় হালকা, আরও আধুনিক এবং প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত।

  • DRDO: রুখবে আকাশ পথে হামলা! ওড়িশা উপকূলে সফল ইন্টিগ্রেটেড এয়ার ডিফেন্স ওয়েপনস সিস্টেমের পরীক্ষা

    DRDO: রুখবে আকাশ পথে হামলা! ওড়িশা উপকূলে সফল ইন্টিগ্রেটেড এয়ার ডিফেন্স ওয়েপনস সিস্টেমের পরীক্ষা

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ওড়িশার উপকূলে সফলভাবে পরীক্ষা করা হল দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, যার নাম ইন্টিগ্রেটেড এয়ার ডিফেন্স ওয়েপন সিস্টেম (IADWS)। এই পরীক্ষাকে (Air Defence Weapon System) দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থার ক্ষেত্রে এক বড় অগ্রগতি বলে মনে করা হচ্ছে। প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা (DRDO) রবিবার সকালে সোশ্যাল মিডিয়ায় এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্টে এই সফল পরীক্ষার কথা জানায়। তারা জানায়, শনিবার গভীর রাত ১২টা ৩০ মিনিট নাগাদ ওড়িশার উপকূলে এই উন্নত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পরীক্ষামূলকভাবে উৎক্ষেপণ করা হয়।

    IADWS হল একটি বহুস্তরীয় বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা

    IADWS হল একটি বহুস্তরীয় বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, যা বিভিন্ন ধরনের শত্রু বিমান ও আকাশপথে (Air Defence Weapon System) আক্রমণের হুমকি প্রতিহত করতে সক্ষম। এতে রয়েছে ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র, উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন লেজার-নির্ভর নির্দেশিত অস্ত্র ব্যবস্থা, উন্নত রাডার, লঞ্চার, লক্ষ্য নির্ধারণ ও নির্দেশিকা ইউনিট, ক্ষেপণাস্ত্র, এবং কমান্ড-এন্ড-কন্ট্রোল ব্যবস্থা—যা সম্মিলিতভাবে একটি শক্তিশালী বিমান প্রতিরক্ষা চক্র গড়ে তোলে (DRDO)। ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর প্রায় সাড়ে তিন মাস পর এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সফল পরীক্ষা দেশীয় প্রযুক্তির (Air Defence Weapon System) ওপর ভারতের আত্মনির্ভরতার প্রতিফলন।

    প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং কী বলছেন?

    প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং এই সাফল্যের জন্য ডিআরডিও (DRDO), ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং এর সঙ্গে যুক্ত সকলকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, “আইএডিডব্লুএস-এর সফল পরীক্ষার জন্য আমি ডিআরডিও (DRDO), ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং এর সঙ্গে যুক্ত বাকি সকলকে অভিনন্দন জানাই। এই অনন্য পরীক্ষা আমাদের দেশের বহুস্তরীয় বিমান প্রতিরক্ষা সক্ষমতার স্পষ্ট প্রমাণ। এই সিস্টেম প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে আরও জোরদার করবে এবং আকাশপথে শত্রু হামলার মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।” এই উন্নত প্রযুক্তি ভারতের আকাশপথকে (Air Defence Weapon System) আরও নিরাপদ করে তুলবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

  • Akash Prime Air Defence System: চিনের কাছে লাদাখে ১৫ হাজার ফুট উচ্চতায় সফল পরীক্ষা, এবার পাকিস্তানের হামলা রুখবে আকাশ প্রাইম

    Akash Prime Air Defence System: চিনের কাছে লাদাখে ১৫ হাজার ফুট উচ্চতায় সফল পরীক্ষা, এবার পাকিস্তানের হামলা রুখবে আকাশ প্রাইম

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: অপারেশন সিঁদুরের সময়ে জাত চিনিয়েছে ভারতের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম। রাশিয়া থেকে আনা এস ৪০০ ও দেশে তৈরি আকাশ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম জুটি একেবারে আটকে দেয় পাকিস্তানের ড্রোন-মিসাইলকে। এরই মধ্যে বুধবার এয়ার ডিফেন্স টেকনোলজিতে আরও একধাপ এগিয়ে গেল ভারত। দেশি এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের আরও শক্তিশালী সংস্করণ আনল ডিআরডিও। লাদাখে সফল পরীক্ষা হল ‘আকাশ প্রাইম এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের’ (Akash Prime Air Defence System)। লাদাখের অতি উচ্চ পার্বত্য এলাকায় সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযু্ক্তিতে তৈরি আকাশ প্রাইম ভূমি থেকে আকাশ ক্ষেপণাস্ত্রের সফল উৎক্ষেপণ হলো।

    প্রতিকূল পরিবেশে সফল পরীক্ষা

    হাই-অল্টিটিউডে ভারতের প্রকৌশল কী ভাবে কাজ করবে সেটা দেখার জন্যই বুধবার ট্রায়াল দেয় ভারতীয় সেনা। ১৫০০০ ফুট উচ্চতায় আর্মি এয়ার ডিফেন্স এবং ডিআরডিও-র সিনিয়র অফিসারদের উপস্থিতিতে এর সফল পরীক্ষা হয়েছে। ডিআরডিও কর্তারা জানিয়েছেন, দ্রুতবেগে ওড়া লক্ষ্যবস্তুতে ২ বার নিখুঁত আঘাত করেছে এই নয়া যন্ত্র। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি ভারতের স্বনির্ভর প্রতিরক্ষা পরিকাঠামো উন্নত করার লক্ষ্যে একটি বড় অগ্রগতি। পরীক্ষার সময় আকাশ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য দুটি উচ্চ-গতির এয়ার টার্গেটে সরাসরি হিট করে, যা এই সিস্টেমের ব্যতিক্রমী ও নির্ভুল পারদর্শিতা দর্শায়। এই পরীক্ষা একটি বিরল পরিবেশে উচ্চ ভূখণ্ডে করা হয়। যেখানে বেসিক অপারেশনও চ্যালেঞ্জিং হতে পারত। এই পরীক্ষার সাফল্য প্রমাণ করেছে অত্যন্ত প্রতিকূল আবহাওয়া পরিস্থিতির মধ্যেও এই সিস্টেম কাজ করতে পারবে।

    কোথায় কাজ করবে আকাশ প্রাইম

    ভারতীয় সেনার তৃতীয় ও চতুর্থ আকাশ রেজিমেন্টে ঢোকানো হবে আকাশ প্রাইম। যা দেশের সামগ্রিক বিমান প্রতিরক্ষা ঢালকে উন্নত করবে। এই এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম অপারেশন সিঁদুরের সময়ে পাকিস্তানের জেট থেকে মিসাইল কিংবা তুরস্কের দেওয়া আধুনিক ড্রোন- সবই অকেজো করেছে। ফলে ভারতের নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম নিয়ে বহু আলোচনা হয়েছে। এই আবহে ভারতের নিরাপত্তা আরও সুসংহত করতে দেশীয় প্রযুক্তির উপরেও জোর দিচ্ছে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। আকাশ প্রাইম মিসাইলটিতে রয়েছে অত্যাধুনিক ‘রেডিও ফ্রিকুয়েন্সি সিকার’। এই যন্ত্রের মাধ্যমে লক্ষ্যবস্তুকে সহজেই খুঁজে বের করতে সক্ষম হয় ক্ষেপণাস্ত্রটি। এটি অতিউচ্চতায় কম তামপাত্রায় কাজ করতে সক্ষম। পরীক্ষার সময় রাডার, ইলেক্ট্রো-অপটিক্যাল টার্গেটিং সিস্টেম ও টেলিমেট্রি স্টেশন-সহ পরীক্ষার জায়গায় রেঞ্জ স্টেশগুলি ক্ষেপণাস্ত্রের গতিপথ ও ফ্লাইটের ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে।

    কেন এই পরীক্ষাটি গুরুত্বপূর্ণ

    লাদাখের মতো উঁচু এবং কঠিন অঞ্চলে ১৫,০০০ ফুটেরও বেশি উচ্চতায় পরীক্ষা করা সহজ নয়। পাতলা বাতাস এবং ঠান্ডা আবহাওয়াতেও মিসাইলটির নির্ভুল আঘাত ভারতের প্রযুক্তিগত দক্ষতার প্রমাণ। এই সিস্টেমটি সম্পূর্ণরূপে ভারতে তৈরি, যা আত্মনির্ভর ভারতের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করে। এই সিস্টেম শত্রুর দ্রুতগতির বিমান এবং ড্রোনকে বাধা দিতে সক্ষম, যা সীমান্তের নিরাপত্তার জন্য অপরিহার্য। এই পরীক্ষার পর আকাশ প্রাইম শীঘ্রই ভারতীয় সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এই সিস্টেমটি কেবল সীমান্তে নয়, দেশের অভ্যন্তরে সংবেদনশীল স্থানগুলির সুরক্ষার জন্যও ব্যবহার করা হবে। প্রতিরক্ষা কর্তারা বলছেন যে এই সিস্টেমটি ভারতের এয়ার ডিফেন্স নেটওয়ার্ককে আরও শক্তিশালী করবে, বিশেষ করে চিন এবং পাকিস্তানের মতো প্রতিবেশী দেশগুলির হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে।

    দেশে তৈরি অস্ত্রের উপর জোর

    ভারত ইউএভি এবং সি-ইউএএস ডোমেন সম্পর্কিত প্রতিরক্ষা প্রযুক্তিতে স্বনির্ভরতা বাড়াচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ উপাদানগুলির জন্য আমদানি নির্ভরতা কমাতে, বুধবার প্রতিরক্ষা মন্ত্রক একটি কর্মশালা ও প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। ইউএভি (UAV) এবং সি-ইউএএস (C-UAS) ডোমেনে বর্তমানে আমদানি করা গুরুত্বপূর্ণ উপাদানগুলির স্বদেশীকরণের জন্য এটি একটি বড় পদক্ষেপ। প্রদর্শনীটি নয়াদিল্লির মানেকশ সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। হেডকোয়ার্টার্স ইন্টিগ্রেটেড ডিফেন্স স্টাফ (HQ IDS) এবং সেন্টার ফর জয়েন্ট ওয়ারফেয়ার স্টাডিজ (CENJOWS) এর সহযোগিতায় এই অনুষ্ঠানের লক্ষ্য ছিল আনম্যানড এরিয়াল ভেহিকেলস (UAVs) এবং কাউন্টার-আনম্যানড এরিয়াল সিস্টেমস (C-UAS) -এ ব্যবহৃত গুরুত্বপূর্ণ উপাদানগুলির জন্য বিদেশি অরিজিনাল ইকুইপমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স (OEMs) -এর উপর ভারতের নির্ভরতা কমানো।

  • Agni-5 Bunker Buster: মার্কিন এমওপি বনাম অগ্নি বাঙ্কার-বাস্টার, মারণশক্তির বিচারে এগিয়ে কে? অঙ্ক কষে তুলনা

    Agni-5 Bunker Buster: মার্কিন এমওপি বনাম অগ্নি বাঙ্কার-বাস্টার, মারণশক্তির বিচারে এগিয়ে কে? অঙ্ক কষে তুলনা

    সুশান্ত দাস

    মার্কিন জিবিইউ-৫৭এ ম্যাসিভ অর্ডন্যান্স পেনিট্রেটর (GBU 57A MOP) নাকি ভারতের অগ্নি-৫ বাঙ্কার বাস্টার (Agni-5 Bunker Buster)— কে বেশি শক্তিশালী? কার মারণ ক্ষমতা বেশি? ভারতের সুপার-অস্ত্র কি সত্যি আমেরিকাকেও ছাপিয়ে যাবে? আবেগ নয়, একেবারে অঙ্ক দিয়ে ব্যাখ্যা এবং বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ করা হল, দুই শক্তিশালী বোমার ক্ষমতাকে (Agni-5 Bunker Buster vs GBU 57A MOP)।

    জনমানসে ‘বিবি’ নিয়ে বিরাট কৌতুহল

    যবে থেকে সংবাদমাধ্যমে খবর প্রচার হতে শুরু করেছে যে, ভারত নিজস্ব এবং সম্পূর্ণ স্বদেশীয় বিধ্বংসী বাঙ্কার বাস্টার (সংক্ষেপে ‘বিবি’ উল্লেখ করা হয়) তৈরি করছে, তখন থেকেই জনমানসে বিরাট একটা কৌতুহল তৈরি হয়েছে। কাগজ থেকে চ্যানেল, বা পোর্টাল হোক বা সোশ্যাল— সর্বত্র এই নিয়ে জোর চর্চা। শুধু তাই নয়। সদ্য ইরানের পরমাণু কেন্দ্রে মার্কিন বোমারু বিমান বি-২ থেকে নিক্ষিপ্ত বাঙ্কার বাস্টার জিবিইউ-৫৭এ বোমা নাকি ভারতের অগ্নি বাঙ্কার-বাস্টার, কোনটা বেশি শক্তিশালী তা নিয়ে আলোচনার শেষ নেই। কিন্তু, সেই সব আলোচনা, তর্ক-বিতর্ক একটা বিষয়তেই সীমাবদ্ধ। তা হল ওজন দিয়ে তুলনা। আবার সেটাও সঠিকভাবে করা হচ্ছে না। ফলে, যুক্তির থেকে সেখানে অগ্রণী ভূমিকা নিচ্ছে আবেগ। অঙ্কের থেকে বেশি প্রাধান্য পাচ্ছে দেশপ্রেম। কিন্তু, এই দুই ভিন্ন বোমার তুল্যমূল্য বিচার করতে হলে আগে জানতে হবে কতটা বিস্ফোরক আছে? হিসেব করতে হবে বেগ। তার পর গণনা করতে হবে কতটা শক্তি উৎপন্ন করছে এই বোমাগুলি। সেই সব করে তুলনা টানা সম্ভব হবে।

    তুল্যমূল্য বিশ্লেষণ শুরুর আগে, প্রথমেই বলে রাখা দরকার, এই দুই বোমা, অর্থাৎ জিবিইউ-৫৭এ এবং অগ্নি বাঙ্কার বাস্টার— একেবারে ভিন্ন চরিত্রের। এর প্রধান কারণ হল, মার্কিন ম্যাসিভ অর্ডন্যান্স পেনিট্রেটর আদতে একটি বোমা। অন্যদিকে, অগ্নি বাঙ্কার বাস্টার একটি মডিফায়েড ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র।

    বোমা বনাম ক্ষেপণাস্ত্র

    প্রথমে দেখে নেওয়া যাক জিবিইউ-৫৭এ বোমা ঠিক কীভাবে কাজ করে। বোমারু বিমানে চাপিয়ে অনেক উচ্চতায় নিয়ে গিয়ে সেখান থেকে একে স্রেফ ড্রপ বা ফেলে দেওয়া হয়। অর্থাৎ, একে বিমানে বহন করে লক্ষ্যের কাছে পর্যন্ত পৌঁছে নির্দিষ্ট উচ্চতা থেকে ফেলা হয়। এর পিছনে কোনও রকেট/মিসাইল ইঞ্জিন নেই। ফলে, লাগে না কোনও জ্বালানির। স্রেফ মাধ্যাকর্ষণ শক্তির ওপর ভর করে এটি মাটিতে আছড়ে পড়ে। নির্দিষ্ট লক্ষ্যে যাতে এটি পৌঁছতে পারে, তার জন্য ছোট ডানা (ফিন) এবং পিছনে প্রপেলার আছে, যা একে দিশা দেয়। ফলে, বাতাসে কার্যত ভেসে এটি দ্রুত গতিতে নামতে থাকে। ভারী হওয়ায় এটি বিপুল গতি উৎপন্ন করে, যা পড়তে পড়তে ক্রমশ বাড়তে থাকে। একটি জিবিইউ-৫৭এ বোমায় বিস্ফোরক থাকে ২,৩০০ কেজির মতো। তবে, গোটা বোমার ওজন যা নেমে আসে, তা প্রায় ১৩,৫০০ কেজির মতো।

    অন্যদিকে, এবার দেখে নেওয়া যাক ভারতের অগ্নি বাঙ্কার বাস্টার ঠিক কেমন। অগ্নি বাঙ্কার বাস্টার একটি মডিফায়েড ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। ভারতের অগ্নি-৫ হল পরমাণু অস্ত্রবহণে সক্ষম ভারতের সবচেয়ে শক্তিশালী আন্তর্মহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র বা ইন্টার-কন্টিনেন্টাল ব্যালিস্টিক মিসাইল (আইসিবিএম)। এর পাল্লা ৫ হাজার কিলোমিটার। কিন্তু, ভারতের ডিআরডিও- বিজ্ঞানীরা ওই ক্ষেপণাস্ত্রে বদল ঘটিয়ে এর একটি বাঙ্কার বাস্টার ভেরিয়েন্ট তৈরি করেছে। এই ক্ষেপণাস্ত্রে দুই প্রধান বদল করা হয়েছে। এর ওয়ারহেড বা বিস্ফোরকের পরিমাণ বাড়িয়ে পাল্লা বা দূরত্ব কমানো হয়েছে। যেখানে অগ্নি-৫ আইসিবিএমের ওয়ারহেড ৩ থেকে ৪ হাজার কেজি, সেখানে অগ্নি বাঙ্কার বাস্টার সংস্করণটির ওয়ারহেডে ৭,৫০০ কেজি সাধারণ বা অপারমাণবিক বিস্ফোরক বহন করা যায়। ফলে, এর পাল্লা ৫০০০ থেকে কমে ২৫০০ করা হয়েছে।

    অগ্নি-৫ সিরিজের ক্ষেপণাস্ত্রগুলির ওজন (নিক্ষেপের সময়) ৫০ থেকে ৫৬ হাজার কেজি। কারণ, এতে কঠিন জ্বালানি থাকে। থাকে থ্রি-স্টেজ বা তিন-স্তরের রকেট, যা ক্ষেপণাস্ত্রটিকে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের বাইরে পৌঁছে দেয়। সেখান থেকে এটি আবার প্যারাবোলিক কার্ভ বা পরাবৃত্তীয় বক্ররেখা পথ অনুসরণ করে ফিরে আসে এবং নির্দিষ্ট লক্ষ্যে আছড়ে পড়ে। তবে, নিচে নামার সময় গোটা ক্ষেপণাস্ত্র থাকে না। বায়ুমণ্ডলের ওপরের স্তরে পৌঁছে রকেটের মতো এরও স্টেজ সেপারেশন হয়। অর্থাৎ, নামার আগে স্টেজ সেপারেশন হওয়ার সময় এই ক্ষেপণাস্ত্রের মাথার (ওয়ারহেড থাকে যেখানে) অংশ বাকি অংশের থেকে আলাদা হয়ে যায়। অগ্নি সিরিজের সব সংস্করণের কার্যপদ্ধতি একই রকম। ধরে নেওয়া যেতে পারে, সাড়ে সাত হাজার বিস্ফোরক সমেত বাঙ্কার-বাস্টার সংস্করণটির ওজন সেই সময় দাঁড়াবে আনুমানিক ১০ থেকে ১২ হাজার কেজি।

    তফাত গড়ে দেয় বেগ

    এতো গেল ওজনের কথা। এবার আসা যাক, দ্বিতীয় তথা অধিক গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টরের বিষয়ে। তা হল বেগ। সংবাদমাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, এই বোমা যখন নেমে আসে তখন এর বেগ প্রায় মাক ৩। অর্থাৎ বাতাসে শব্দের গতির ৩ গুণ। অন্যদিকে, অগ্নি-৫ যখন নামে তখন তার বেগ দাঁড়ায় মাক ২০। অর্থাৎ, শব্দের গতির ২০ গুণ! স্পষ্ট, আছড়ে পড়ার সময় প্রবল হাইপারসনিক মোড-এ চলে যায়। আর, এই বেগই ফারাক গড়ে দেয়। সাধারণ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের পক্ষে একে কোনওভাবে আটকানোর ক্ষমতা নেই। এমনকী, এস-৪০০ বা তার সমগোত্রীয় ক্ষেপণাস্ত্রের পক্ষেও একে রোখা দুঃসাধ্য।

    দুটি ফ্যাক্টর— অর্থাৎ ওজন বা ভর এবং বেগ — এই দুইয়ের তুল্যমূল্য পরিসংখ্যান তো মিলল। কিন্তু, মারণক্ষমতা! সেটা পেতে ভর এবং বেগের প্রয়োজন হবে। তার আগে, এটা বুঝে নেওয়া যাক, একটি কনভেনশনাল বা অপারমাণবিক অস্ত্রের ক্ষমতা নির্ভর করে সে কতটা শক্তি উৎপন্ন করতে সক্ষম। যা আবার নির্ভর করে ভর ও বেগের সমীকরণের ওপর। কাইনেটিক এনার্জি (কেই) বা গতিশক্তির একক হচ্ছে জুল। আর এই গতিশক্তিকে ধরে বের করতে হয় মারণ ক্ষমতা। গণিতের ফর্মুলা অনুযায়ী, কোনও বস্তুর গতিশক্তি বের করতে হলে, প্রথমে বস্তুটির মাস বা ভরের অর্ধেক বের করতে হবে। সেই সংখ্যাকে বস্তুর ভেলোসিটি বা বেগের বর্গফলের সঙ্গে গুণ করতে হবে। যে সংখ্যা প্রাপ্ত হবে, সেটাই ওই বস্তুর কাইনেটিক এনার্জি বা গতিশক্তি। এখানে ভর ধরা হবে কিলোগ্রামের হিসেবে, আর বেগ মাপা হবে মিটার প্রতি সেকেন্ড হিসেবে। অর্থাৎ, গতিশক্তি = ১/২ * m * v²। এখানে, m = বস্তুর ভর, v = বস্তুর বেগ। 

    আসল তুলনা, কার শক্তি কতটা?

    প্রথমে জিবিইউ-৫৭এ এমওপি-র গতিশক্তি দেখে নেওয়া যাক। ওজন – ১৩৫০০ কেজি বা ১৩.৫ টন। বেগ – মাক ৩ বা প্রতি সেকেন্ডে ১০২৯ মিটার (বাতাসে শব্দের গতি = ৩৪৩ মিটার/সেকেন্ড। যাকে ‘মাক ১’ বলা হয়)। ফলে, এর কাইনেটিক এনার্জি বা গতিশক্তি দাঁড়াবে: ৬৭৫০ * ১০৫৮৮৪১ = ৭১৪৭১৭৬৭৫০ জুল বা ৭.১৪ গিগাজুল। যা ১.৭ টন টিএনটির সমতুল্য। ফলে, জিবিইউ-৫৭এ এমওপি-র ইমপ্যাক্ট পাওয়ার (বিস্ফোরণের প্রতিঘাতে তৈরি হওয়া শক্তি) বা মারণ ক্ষমতা হল ৭.১ + ১৩.৫ = ২০.৬ টন টিএনটির সমতুল্য।

    এবার দেখে নেওয়া যাক, অগ্নি-৫ বাঙ্কার বাস্টারের গতিশক্তি। ওজন – ১০০০০ কেজি বা ১০ টন। বেগ – মাক ২০ বা প্রতি সেকেন্ডে ৬৮৬০ মিটার। ফলে, এর কাইনেটিক এনার্জি বা গতিশক্তি আনুমানিক: ৫০০০ * ৪৭০৫৯৬০০ = ২৩৫২৯৮০০০০০০ জুল বা ২৩৫ গিগাজুল। যা ৫৬ টন টিএনটির সমতুল্য। ফলে, অগ্নি-৫ বাঙ্কার বাস্টারের মারণ ক্ষমতা হল ৫৬ + ১০ = ৬৬ টন টিএনটির সমতুল্য।

    তিনগুণ বেশি মারণ ক্ষমতা ভারতের অগ্নি-র

    পরিসংখ্যানে স্পষ্ট, মার্কিন এমওপি-কে একেবারে কার্যত উড়িয়ে দেবে ভারতের অগ্নি-৫ বাঙ্কার বাস্টার। আবেগ নয়, একেবারে অঙ্ক কষে বলা হচ্ছে, ভারতের অগ্নি বাঙ্কার বাস্টার মার্কিন এমওপি-র তুলনায় কতটা বেশি শক্তিশালী হতে চলেছে। যে কারণে, ডিআিডিও জোরালো দাবি, ভারতের বাঙ্কার বাস্টার মাটির ৮০ থেকে ১০০ মিটার গভীর পর্যন্ত শক্ত কংক্রিটের নিচে লুকানো শত্রুপক্ষের বাঙ্কার, কমান্ড সেন্টার, ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটি বা পারমাণবিক পরিকাঠামো ধ্বংস করতে সক্ষম। এখন ভারত কবে এই বাঙ্কার বাস্টারের পরীক্ষা করে, সেটাই দেখার।

  • Smart Anti Airfield Weapon: শত্রুর সীমান্তে না গিয়েই ১০০ কিমি দূরে বিমানঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিতে পারবে ভারতের ‘স্মার্ট দেশি বোমা’

    Smart Anti Airfield Weapon: শত্রুর সীমান্তে না গিয়েই ১০০ কিমি দূরে বিমানঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিতে পারবে ভারতের ‘স্মার্ট দেশি বোমা’

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দেশের মুকুটে যুক্ত হল প্রতিরক্ষা প্রযুক্তির আরও এক গর্বের সংযোজন। ভারতের প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা (DRDO) সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি করেছে স্মার্ট অ্যান্টি-এয়ারফিল্ড অস্ত্র (Smart Anti Airfield Weapon)। এর ওজন ১২৫ কেজি। ১.৮৫ মিটার লম্বা এই গ্লাইড বোমা, ১০০ কিলোমিটার দূর থেকে শত্রুপক্ষের রানওয়ে ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামো ধ্বংস করতে সক্ষম।

    বিমানঘাঁটি অচল করতে বিশেষভাবে নির্মিত

    স্মার্ট অ্যান্টি-এয়ারফিল্ড অস্ত্রের (SAAW) মধ্যে রয়েছে ৮০ কেজির উচ্চ বিস্ফোরক ক্ষমতাসম্পন্ন ওয়ারহেড, যা রানওয়ে, ট্যাক্সিওয়ে, বাঙ্কার এবং জ্বালানির ডিপোগুলি অচল করে দিতে পারে। এটি রকেট চালিত নয় বরং গ্লাইড করে লক্ষ্যবস্তুতে পৌঁছয়, ফলে উৎপাদন খরচ অনেক কম। এই স্মার্ট বোমাটিতে ইনারশিয়াল নেভিগেশন সিস্টেম (INS) ও স্যাটেলাইট সিগন্যাল (GPS ও NavIC) সংযুক্ত করা হয়েছে, যা লক্ষ্যভ্রান্তি মাত্র সাত মিটারের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখে। নতুন সংস্করণে যুক্ত হয়েছে ইলেক্ট্রো-অপটিক্যাল ও ইমেজিং-ইনফ্রারেড সিকার, যার ফলে চূড়ান্ত পর্যায়ে নিশানার ভুলত্রুটি তিন মিটারের নিচে নেমে আসে।

    ঝুঁকির বাইরে থেকেই আঘাত

    এই বোমা ১০০ কিলোমিটার দূরত্ব থেকে আক্রমণ চালাতে পারে। এর ফলে যুদ্ধবিমানগুলি শত্রু অঞ্চলের এয়ার ডিফেন্স জোনে প্রবেশ না করে বাইরে থেকেই আঘাত হনতে পারে। কম ওজনের কারণে এটি বিভিন্ন ধরণের ভারতীয় যুদ্ধবিমানে ব্যবহার করা যায়, ওড়ার ক্ষমতাতেও কোনও প্রভাব ফেলে না। ২০১৬ সাল থেকে জাগুয়ার, মিরাজ, মিগ-২৯, এসইউ-৩০, এলসিএ তেজস, হক (Jaguar, Mirage 2000, MiG‑29, Su‑30 MKI, LCA Tejas, Hawk) সহ বিভিন্ন বিমানে এটি সফলভাবে পরীক্ষিত হয়েছে। এমনকি হ্যাল-এর ভবিষ্যতের ড্রোন যুদ্ধে ব্যবহৃত হবে এমন ক্যাটস ওয়ারিয়র (CATS Warrior) প্ল্যাটফর্মের জন্যও এটি উপযুক্ত।

    উৎপাদন ও রফতানি

    ২০১৩ সালে অনুমোদনের পর ২০২১ সালের ডিসেম্বর থেকে এর উৎপাদন শুরু হয়। প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বায়ুসেনা হাতে এর প্রথম সংস্করণ তুলে দেন। চলতি মাসেই স্যাটেলাইট-নির্ভর সংস্করণ কেনার প্রস্তাব পাঠিয়েছে ভারতীয় বায়ুসেনা (IAF)। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের অনুমোদন মিললেই অর্ডার চূড়ান্ত হবে। এই স্মার্ট দেশি বোমা উৎপাদনের দায়িত্বে রয়েছে ভারত ডাইনামিক্স লিমিটেড। এই অস্ত্র বিদেশে রফতানির কথাও ভাবা হচ্ছে।

  • AMCA: ‘অ্যামকা’ প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত হোন, বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থার কাছে আহ্বান কেন্দ্রের

    AMCA: ‘অ্যামকা’ প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত হোন, বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থার কাছে আহ্বান কেন্দ্রের

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: প্রতিরক্ষায় আরও শক্তি বাড়াচ্ছে দেশ ৷ চিন, আমেরিকা, রাশিয়াকে টেক্কা দিতে এবার পঞ্চম প্রজন্মের স্টেলথ্ যুদ্ধবিমান তৈরি করতে চলেছে ভারত। দেশীয় ‘অ্যামকা’ (AMCA) প্রকল্পকে বাস্তব রূপ দেওয়ার বিষয়ে জোরকদমে এগোচ্ছে অ্যারোনটিক্যাল ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি (ADA)। ভারতের নিজস্ব প্রযুক্তিতে নির্মিত পঞ্চম প্রজন্মের স্টেলথ যুদ্ধবিমান তৈরির পথে সম্প্রতি এক বড় পদক্ষেপ করল তারা। দেশের অত্যাধুনিক মিডিয়াম কমব্যাট এয়ারক্র্যাফ্ট (AMCA) তৈরির লক্ষ্যে বিশ্বের বিভিন্ন কোম্পানির কাছে ‘এক্সপ্রেশন অফ ইন্টারেস্ট’ (EOI) প্রকাশের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

    কী বলা হল বিজ্ঞপ্তিতে

    মোদি জমানায় আত্মনির্ভর ভারত যে ‘অ্যামকা’ (FGFA) তৈরি করছে, তা এখন সময়ের অপেক্ষা। সরকার সবুজ সঙ্কেত দিতেই দেশীয় পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান তৈরির প্রকল্পকে বাস্তব রূপ দিতে জোরকদমে এগোচ্ছে প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা ডিআরডিও। সরকারের অ্যামকা প্রোগ্রাম অনুমোদনের মাত্র তিন সপ্তাহের মধ্যেই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হল। এডিএ-র বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, এই ‘এক্সপ্রেশন অফ ইন্টারেস্ট’-এর মূল উদ্দেশ্য হল এমন ভারতীয় সংস্থাগুলিকে চিহ্নিত করা, যারা প্রযুক্তিগতভাবে সক্ষম এবং পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমানের নকশা, প্রোটোটাইপ নির্মাণ, ফ্লাইট টেস্টিং এবং সার্টিফিকেশনের মতো জটিল কাজ সফলভাবে সম্পন্ন করতে পারে। প্রার্থী সংস্থা একক সংস্থা, যৌথ উদ্যোগ বা কনসর্টিয়াম হতে পারে — তবে তা ভারতীয় নাগরিকদের মালিকানাধীন ও নিয়ন্ত্রিত হতে হবে এবং ভারতীয় আইনের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হতে হবে।

    দেশে উৎপাদন পরিকাঠামো থাকা আবশ্যক

    অ্যারোনটিক্যাল ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি (ADA) জানিয়েছে, প্রার্থী সংস্থাগুলির মধ্যে ডিজাইন গ্রহণ, উন্নয়ন ও ইঞ্জিনিয়ারিং, উৎপাদন, সমন্বয়, গঠন, পরীক্ষা, গুণমান ব্যবস্থাপনা এবং গ্রাহক সহায়তার মতো ক্ষেত্রে প্রমাণযোগ্য অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা থাকতে হবে। সংস্থার নিজস্ব উৎপাদন কেন্দ্র অথবা কোনও স্ট্র্যাটেজিক সহযোগিতার মাধ্যমে দেশে উৎপাদন পরিকাঠামো থাকা আবশ্যক। নথিতে উল্লেখিত যোগ্যতা ও মূল্যায়ন সূচকের ভিত্তিতে অংশগ্রহণকারী সংস্থাগুলিকে বাছাই করা হবে। চুক্তির মেয়াদ হবে সর্বোচ্চ আট বছর — এই সময়ের মধ্যেই বিমানটির উন্নয়ন, প্রোটোটাইপ, পরীক্ষা এবং সার্টিফিকেশন সম্পন্ন করতে হবে। আগামী জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে এই সংক্রান্ত প্রাক-আলোচনার সভা হবে। ‘এক্সপ্রেশন অফ ইন্টারেস্ট’ সংক্রান্ত নথি জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ১৬ অগাস্ট ২০২৫।

    প্রথম অ্যামকা প্রোটোটাইপ ২০২৯ সালের মধ্যে

    আপাতভাবে ২০৩৫ সালের আগে ‘অ্যামকা’ হাতে পাচ্ছে না বায়ুসেনা। কারণ, এটা কারও অজানা নয় যে, যে কোনও যুদ্ধবিমান তৈরি করতে অন্ততপক্ষে ১০-১৫ বছর লাগেই। ফলে, ভারতকে আরও দশটা বছর অপেক্ষা করতেই হবে স্বদেশীয় পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমানের জন্য। বর্তমানে নির্ধারিত রোডম্যাপ অনুযায়ী, প্রথম অ্যামকা প্রোটোটাইপ ২০২৯ সালের মধ্যে আকাশে ওড়ার কথা। পুরো উন্নয়ন পর্ব ২০৩৪ সালের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা, এবং সিরিজ উৎপাদন শুরু হতে পারে ২০৩৫ থেকে। ততদিনে হ্যাল (HAL) তেজস মার্ক-১এ এবং তেজস মার্ক-২ বিমানগুলির চলতি অর্ডারের উৎপাদন শেষ করবে।

    দুটি ধাপে তৈরি করা হবে অ্যামকা

    প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত সংস্থাকে একটি পৃথক উৎপাদন কেন্দ্র গড়ে তুলতে হবে, যাতে ভবিষ্যতের বাণিজ্যিক উৎপাদনের প্রয়োজন মেটানো যায়। এই প্রকল্পে বিড জমা দেওয়ার সম্ভাব্য সংস্থাগুলির মধ্যে রয়েছে টাটা অ্যাডভান্সড সিস্টেমস, লারসেন অ্যান্ড টুব্রো, আদানি ডিফেন্স অ্যান্ড অ্যারোস্পেস এবং মহিন্দ্রা গ্রুপ। হ্যাল-ও এই প্রতিযোগিতায় থাকবে, তবে বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে তবেই অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে। তেজস এলসিএ-র মতো, অ্যামকাও দুটি ধাপে তৈরি করা হবে। মার্ক-১ সংস্করণে থাকবে মার্কিন জিই এফ-৪১৪ ইঞ্জিন— যেটি তেজস মার্ক-২ জেটেও ব্যবহৃত হবে। ভবিষ্যতের অ্যামকা মার্ক-২ সংস্করণে ব্যবহার করা হবে সম্পূর্ণ দেশীয়ভাবে নির্মিত ইঞ্জিন, যা ষষ্ঠ প্রজন্মের যুদ্ধবিমানে রূপান্তরিত হবে। এই প্রকল্পের সফলতা ভারতকে বিশ্বে উন্নত বিমান প্রযুক্তির ক্ষেত্রে এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিতে পারে। এই প্রকল্প ভারতের প্রতিরক্ষা শক্তিকে আরও দৃঢ় করবে, বলেই বিশ্বাস বিশেষজ্ঞ মহলের।

    অ্যামকার মাধ্যমে এলিট ক্লাসে ভারত

    ফিফথ্ জেনারেশনের এই যুদ্ধবিমানে থাকবে দু’টি ইঞ্জিন ৷ সেই সঙ্গে, থাকবে ইলেকট্রনিক পাইলটিং সিস্টেম ৷ ২৭ টন ওজনের এই যুদ্ধবিমানে অনেক বেশি যুদ্ধাস্ত্র বহন করা যাবে ৷ অ্যামকা-র প্রধান বৈশিষ্ট হল, সম্পূর্ণ কনফিগারড্ মিসাইল বহন করা যাবে এই যুদ্ধবিমানে ৷ এই প্রকল্পের মাধ্যমে দেশে বিপুল কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে বলে আশা করা হচ্ছে ৷ এতদিন পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান হাতে ছিল আমেরিকা, রাশিয়া, চিনসহ গুটিকয়েক প্রথম সারির শক্তিসম্পন্ন দেশের কাছে। ভারত এই পঞ্চম প্রজন্মের জেট ফাইটার তৈরির দিকে এগনোয় বিশ্বে এলিট শক্তি বলে যে দেশগুলিকে সমীহ করা হয়, সেই সারিতে চলে আসছে। পঞ্চম প্রজন্মের এই জেট বিমান শত্রু রেডারের চোখে ধুলো দিতে পারদর্শী। শব্দের চেয়ে দ্রুতগামী এই বিমানে আরও বেশ কিছু অত্যাধুনিক প্রযুক্তি যুক্ত করা হবে। সুখোই এসইউ-৩০এমকেআই ফাইটার জেটের উত্তরসূরী হতে চলেছে এই ফাইটার জেট। সূত্রে জানা গিয়েছে, এই যুদ্ধবিমানের ঢালাও উৎপাদন শুরু হবে ২০৩৫ সালের ভিতর। একবার এই বিমান ভারতীয় বায়ুসেনার হাতে চলে আসতে শুরু করলে আকাশের উপর দেশের কর্তৃত্ব অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে।

  • Sukhoi Su-57: খেলা ঘুরিয়ে দিল ‘সোর্স কোড’! অ্যামকা হাতে পেতে আরও ১০ বছর, বন্ধু পুতিনের সু-৫৭ প্রস্তাবেই ‘হ্যাঁ’ ভারতের?

    Sukhoi Su-57: খেলা ঘুরিয়ে দিল ‘সোর্স কোড’! অ্যামকা হাতে পেতে আরও ১০ বছর, বন্ধু পুতিনের সু-৫৭ প্রস্তাবেই ‘হ্যাঁ’ ভারতের?

    সুশান্ত দাস

    দেশীয় ‘অ্যামকা’ (AMCA) প্রকল্পকে বাস্তব রূপ দেওয়ার বিষয়ে জোরকদমে এগনোর সিদ্ধান্ত নিলেও পাশাপাশি আপৎকালীন ভিত্তিতে কম সংখ্যায় বিদেশ থেকে পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান (FGFA) কেনার ব্যাপারে অত্যন্ত গভীর ভাবনাচিন্তা করছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। আর এই ক্ষেত্রেও ‘বন্ধু’ রাশিয়াকেই ভরসা ভারতের। যে কারণে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এফ-৩৫ প্রস্তাব ফিরিয়ে রাশিয়ার তৈরি সুখোই ‘সু-৫৭’ (Sukhoi Su-57) স্টেলথ যুদ্ধবিমানকেই বাছতে চলেছে ভারত। অন্তত প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের অন্দরে এমন কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে।

    অ্যামকা হাতে পেতে আরও এক দশক!

    মোদি জমানায় আত্মনির্ভর ভারত যে ‘অ্যামকা’ (FGFA) তৈরি করছে, এটা নিশ্চিত। সরকার সবুজ সঙ্কেত দিতেই দেশীয় পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান তৈরির প্রকল্পকে বাস্তব রূপ দিতে জোরকদমে এগোচ্ছে প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা ডিআরডিও। তবে, একটা বিষয় পরিষ্কার। আপাতভাবে ২০৩৫ সালের আগে ‘অ্যামকা’ হাতে পাচ্ছে না বায়ুসেনা। কারণ, মাত্র গত বছরই ‘অ্যামকা’-য় সম্মতি জানিয়েছে কেন্দ্র। আর এটা কারও অজানা নয় যে, যে কোনও যুদ্ধবিমান তৈরি করতে অন্ততপক্ষে ১০-১৫ বছর লাগেই। ফলে, ভারতকে আরও দশটা বছর অপেক্ষা করতেই হবে স্বদেশীয় পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমানের জন্য।

    পাকিস্তানকে পঞ্চম প্রজন্মের ‘জে-৩৫এ’ দিচ্ছে চিন

    কিন্তু, এই দশ বছরে বদলে যাবে অনেক কিছুই। ভারতীয় বায়ুসেনার বর্তমানে মাত্র ৩১টা স্কোয়াড্রন রয়েছে। যেখানে থাকার কথা ৪২। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে এই সংখ্যা আরও কমবে। কারণ, মিগ-২১বি, জাগুয়ার, মিরাজ-২০০০ সহ বহু যুদ্ধবিমান অবসর নেবে। অবিলম্বে এই শূন্যস্থান পূরণ করতে হবে ভারতকে। এমআরএফএ-র আওতায় ১১৪টি  যুদ্ধবিমান কেনার বিষয়টিও চূড়ান্ত রূপ নেয়নি। আবার, তেজসের কাজও অনেক বিলম্ব হচ্ছে। ইঞ্জিন আমদানি সমস্যায় জেরবার নির্মাণকারী সংস্থা হ্যাল। যে কারণে, ডেডলাইনের অনেক পেছনে চলছে মার্ক-১এ এবং মার্ক-২ সংস্করণের কাজ। অন্যদিকে, ‘অপারেশন সিঁদুর’-এ (Operation Sindoor) জোর ধাক্কা খাওয়ার পর ভারতের বিরুদ্ধে নতুন করে প্রস্তুতি নিচ্ছে পাকিস্তান। আর এক্ষেত্রে তাদের সবচেয়ে বড় সহায়কের ভূমিকায় অবতীর্ণ সেই চিন, যারা পাকিস্তানের সব ঋতুর বন্ধু। ইতিমধ্যেই, ইসলামাবাদকে নিজেদের পঞ্চম প্রজন্মের ‘জে-৩৫এ’ মাল্টিরোল যুদ্ধবিমান দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে, তাও আবার অর্ধেক দামে! ফলে, এটা ভারতের কাছে বড় সমস্যা হতে পারে, যদি ভারতের কাছেও পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান (FGFA) না থাকে। সব মিলিয়ে, ভারতের হাতে সময় বেশি নেই।

    ভারতের পাশে দাঁড়াল বন্ধু রাশিয়া

    এই সময়ে ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছে বন্ধু রাশিয়া। গত ফেব্রুয়ারি মাসে হোয়াইট হাউসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সামনে ভারতকে তাদের পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান ‘এফ-৩৫এ’ দেওয়ার প্রস্তাব পেশ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রায় সেই একই সময়ে ভারতকে তাদের পঞ্চম প্রজন্মের ‘সু-৫৭ই’ (সু-৫৭-এর এক্সপোর্ট ভেরিয়েন্ট) যুদ্ধবিমানের প্রস্তাব দেয় রাশিয়াও। মস্কোর প্রস্তাব আরও ভালো ছিল, কারণ তারা ভারতকে সম্পূর্ণ প্রযুক্তি হস্তান্তর করতেও রাজি হয়। মস্কো জানায়, চাইলে ভারত নিজেদের দেশেই যৌথভাবে এই বিমান তৈরি করতে পারে। এমনকি, ভারতের কাবেরি ইঞ্জিন নির্মাণে প্রযুক্তিগত সহায়তা করতেও রাজি বলে জানায় মস্কো।  এখানেই শেষ নয়। চলতি মাসের গোড়ায় নিজেদের প্রস্তাবকে আরও আকর্ষণীয় করে রাশিয়া। পুতিনের দেশ জানিয়ে দেয়, তারা ভারতকে ‘সু-৫৭’ (Sukhoi Su-57) ফাইটার জেটের বহুমূল্য সোর্স কোড দিতেও রাজি।

    রাশিয়ার অভাবনীয় প্রস্তাবে ঘুরেছে খেলা!

    প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের দাবি, রাশিয়ার এই প্রস্তাব এক কথায় বৈপ্লবিক, অভাবনীয়। কারণ, যে কোনও যুদ্ধবিমানের কেন্দ্রে থাকে ‘সোর্স কোড’। অত্যন্ত সংবেদনশীল তথ্য। এক কথায়, যুদ্ধবিমানের মাথার ঘিলু। রাফাল যুদ্ধবিমানের সোর্স কোড নিয়ে ফ্রান্সের সঙ্গে খিটমিট লেগেছে ভারতের। কেউই নিজেদের যুদ্ধবিমানের সোর্স কোড (Source Code) হস্তান্তর করতে দিতে চায় না। এদিকে, সোর্স কোড না পাওয়ায় রাফাল যুদ্ধবিমানে ব্রহ্মস সহ একাধিক ক্ষেপণাস্ত্রকে ইন্টিগ্রেট বা অন্তর্ভুক্ত করতে পারছে না ভারত। কারণ, ক্ষেপণাস্ত্রের সঙ্গে যুদ্ধবিমানের মেলবন্ধন ঘটাতে সোর্স কোড খুলে তাতে মডিফাই করতে হয়। অন্যদিকে, আমেরিকা ভারতকে এফ-৩৫ বেচতে চাইলেও, যুদ্ধবিমানের প্রযুক্তি দেওয়া তো দূরের কথা, পূর্ণ কর্তৃত্বও দিতে রাজি নয়। অর্থাৎ, বিমানের নিয়ন্ত্রণ থাকবে পেন্টাগনের হাতে। ভারত শুধু ওড়াবে। সেখানে ভারতকে তাদের স্টেলথ পঞ্চম প্রজন্মের সু-৫৭ (Sukhoi Su-57)  ফাইটার জেটের সোর্স কোড সমেত গোটা প্রযুক্তি দিতে রাজি রাশিয়া।

    প্লেটে ‘সোর্স কোড’ সাজিয়ে পেশ ভারতকে

    প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে, অত্যাধুনিক পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমানের (FGFA) সোর্স কোড দিতে রাজি হওয়াটা কোনও ভাবেই ছোট বিষয় নয়। মনে করিয়ে দেওয়া যাক, ২০১১ সালে ভারত ও রাশিয়া যৌথভাবে পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান নিয়ে কাজ শুরু করেছিল। প্রোজেক্টের নাম ছিল ‘পিএকে-এফএ টি-৫০’। তখন ‘সু-৫৭’ (Sukhoi Su-57) দিনের আলো দেখেনি। বলা যেতে পারে, বর্তমান ‘সু-৫৭’র পূর্বসূরি ছিল ‘টি-৫০’। কিন্তু, প্রযুক্তি হস্তান্তর সহ একাধিক বিষয়ে মনোমালিন্য হওয়ায় ২০১৭ সালে ওই প্রকল্পে থেকে পিছিয়ে আসে ভারত। সেই থেকে ব্রহ্মপুত্র ও মস্কোভা নদী দিয়ে অনেক জল গড়িয়েছে। এবার এত বছর পর, সেই পঞ্চম প্রজন্মের ফাইটার জেটের সোর্স কোড প্লেটে সাজিয়ে ভারতকে প্রস্তাব দিচ্ছে ক্রেমলিন। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে, সোর্স কোড পেলে রুশ যুদ্ধবিমানে ‘অস্ত্র’, ‘রুদ্রম’ সহ বিভিন্ন দেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র অতি সহজেই অন্তর্ভুক্ত করতে পারবে ভারত। অন্তর্ভুক্ত করা যাবে দেশীয় উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন গ্যালিয়াম নাইট্রাইড-বেসড্ আয়েসা রেডার  (GaN-based AESA radar) — পোশাকী নাম বীরূপাক্ষ ও সর্বাধুনিক এভিয়োনিক্সও। ফলে, এটিও হয়ে উঠবে সু-৩০ এমকেআই যুদ্ধবিমানের মতো সু-৫৭ আই। অর্থাৎ, ভারতীয় সংস্করণ, যা বিশ্বে আর কারও কাছে থাকবে না।

    মার্কিন ‘এফ-৩৫’! নৈব নৈব চ…

    রাশিয়ার থেকে সোর্স কোড সহ অত্যাধুনিক পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমানের (FGFA) প্রযুক্তি হস্তান্তরের প্রস্তাব পাওয়ার পর থেকে সুখোই সু-৫৭ (Sukhoi Su-57) কেনা নিয়ে নতুন করে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে নয়াদিল্লি। বলা বাহুল্য, রাশিয়া তাদের স্পর্শকাতর প্রযুক্তি ভারতের সঙ্গে ভাগ করতে রাজি হওয়ার পর থেকেই বরাতের লড়াইয়ে অনেকটাই পিছিয়ে গিয়েছে ওয়াশিংটন। কারণ, আমেরিকা কখনই তাদের এফ-৩৫ বিমানের সোর্স কোড ভাগ করা তো দূরে থাক, অন্য প্রযুক্তিও ভাগ করবে না। উপরন্তু, আমেরিকা থেকে কেনা একাধিক সামরিক সরঞ্জাম হাতে পেতে দেরি হচ্ছে ভারতের। মউ স্বাক্ষরিত হওয়ার ২ বছর পরেও, ভারত এখনও তেজস মার্ক-২ যুদ্ধবিমানের জন্য জেনারেল ইলেক্ট্রিকের থেকে এফ৪১৪ জেট ইঞ্জিন হাতে পায়নি। ২০২৪ সালের মাঝামাঝি শুরু হওয়ার কথা ছিল বোয়িংয়ের অ্যাপাচে এএইচ-৬৪ই হেলিকপ্টার। একটাও এখনও হাতে আসেনি ভারতের। কেন্দ্রীয় কর্তাদের অভিযোগ, ইচ্ছাকৃতভাবে ঢিলেমি করছে মার্কিন প্রশাসন। এই সব নিয়ে আমেরিকার ওপর ক্ষুব্ধ ভারত। ফলে, স্বাভাবিকভাবেই ভারত যে ‘এফ-৩৫’ নেবে না, তা বলাই বাহুল্য। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে খবর, ভারত এক প্রকার ‘এফ-৩৫’-কে ইতিমধ্যই খারিজ করে দিয়েছে। এখন শুধু সরকারি ঘোষণার অপেক্ষা।

  • I-STAR Spy Planes: ১০ হাজার কোটি টাকায় ভারতীয় বায়ুসেনা পাচ্ছে ৩টি ‘আই-স্টার’ গুপ্তচর বিমান, কী বিশেষত্ব?

    I-STAR Spy Planes: ১০ হাজার কোটি টাকায় ভারতীয় বায়ুসেনা পাচ্ছে ৩টি ‘আই-স্টার’ গুপ্তচর বিমান, কী বিশেষত্ব?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পাকিস্তানের বিরুদ্ধে চলমান ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর আবহেই ভারতীয় বায়ুসেনাকে (Indian Air Force) আরও শক্তিশালী করতে উদ্যোগী হল মোদি সরকার। সেই মর্মে মার্কিন রেথিয়ন ‘আই-স্টার’ গুপ্তচর বিমানের (I-STAR Spy Planes) ধাঁচে বায়ুসেনার জন্য তিনটি অত্যাধুনিক গোয়েন্দা বিমান কেনার জন্য ১০ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাব বিবেচনা করতে চলেছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক।

    এলিট গ্রুপে প্রবেশ করবে ভারত

    জানা যাচ্ছে, এই বিমানগুলি এলে আকাশ থেকে ভূমির নির্ভুল, পরিষ্কার ছবি হাতে চলে আসবে বায়ুসেনার। সেই চিত্র ব্যবহার করে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে রেডার স্টেশন, এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ও কমান্ড পোস্টের মত শত্রুর গুরুত্বপূর্ণ সামরিক লক্ষ্যবস্তুকে আরও নিখুঁত ভাবে টার্গেট করে হামলা চালাতে পারবে ভারত। সূত্রের খবর, বর্তমানে এই প্রস্তাব প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের উচ্চ-পর্যায়ের কমিটির চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। মন্ত্রিসভার সবুজ সঙ্কেত মিললেই এই বিমান (I-STAR Spy Planes) কেনার প্রক্রিয়া শুরু হবে। একবার তা হয়ে গেলেই, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইজরায়েলের মতো হাতে গোনা কয়েকটি দেশের এলিট তালিকায় স্থান করে নেবে ভারত। যা খবর, চলতি মাসের শেষের দিকে এর অনুমোদন মিলতে পারে।

    ডিআরডিও-র তৈরি প্রযুক্তি আই-স্টার

    আই-স্টার (I-STAR Spy Planes) শব্দগুচ্ছের পুরো অর্থ হল— ইন্টেলিজেন্স, সার্ভেল্যান্স, টার্গেট অ্যাকুইজিশন অ্যান্ড রিকনেস্যান্স। তবে ভারত যে প্রযুক্তি ব্যবহার করতে চলেছে তার একটা বড় অংশ দেশীয়। এই প্রযুক্তি তৈরি করেছে ভারতীয় প্রতিরক্ষা গবেষণা সংস্থা ডিআরডিও-র অধিনস্থ সেন্টার ফর এয়ারবোর্ন সিস্টেম (ক্যাবস্)। এই প্রযুক্তি মোতায়েন করা হতে পারে বিদেশি বোম্বার্ডিয়ার বা বোয়িং বিমানে। যে কারণে, একাধিক বিদেশি বিমান প্রস্তুতকারী সংস্থার সঙ্গে প্রাথমিক স্তরের আলোচনা এগিয়ে রাখা হচ্ছে। এমনকি, ইতিমধ্যে বিদেশি নির্মাতাদের কাছ থেকে উন্মুক্ত দরপত্রও ডাকা হয়েছে বলে খবর। জানা যাচ্ছে, এই বিশেষ গুপ্তচর বিমানের (I-STAR Spy Planes) মাধ্যমে শত্রুর সামরিক বিষয়ে নজরদারি চালিয়ে গোয়েন্দা তথ্য, থেকে শুরু করে লক্ষ্য অর্জন এবং রেকি করতে পারবে ভারত। এক কথায়, এই বিমানগুলি ভারতীয় বায়ুসেনার (Indian Air Force) নজরদারি ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলবে। এগুলো এয়ার-টু-গ্রাউন্ড ইন্টেলিজেন্স সরবরাহ করবে। এর ফলে শত্রু লক্ষ্যবস্তুতে নির্ভুলভাবে আক্রমণ করা সম্ভব হবে।

    দেশের প্রতিরক্ষা কাঠামোর আধুনিকীকরণ

    প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের দাবি, আই-স্টার সিস্টেমে (I-STAR Spy Planes) এমন সক্ষমতা থাকবে যা দিন-রাত উভয় সময়েই এবং দুর্গম ভূখণ্ডেও শত্রুদের অবস্থান নির্ভুলভাবে শনাক্ত, খুঁজে বের করতে ও ট্র্যাক করতে সাহায্য করবে। এই বিমানগুলি অধিক উচ্চতা এবং নিরাপদ দূরত্ব থেকেও কাজ করতে পারবে। যার ফলে শত্রু দেশের আকাশসীমায় প্রবেশ না করেই গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ ও লক্ষ্যবস্তু নির্ধারণ করা সম্ভব হবে। একবার চালু হলে, এই বিমানগুলি যুদ্ধক্ষেত্রের একটি গতিশীল এবং রিয়েল-টাইম চিত্র সরবরাহ করবে। যা সামরিক কমান্ডারদের (Indian Air Force) দ্রুত এবং সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করবে। এটি দেশের প্রতিরক্ষা কাঠামোকে আধুনিকীকরণ করবে এবং ভবিষ্যতের নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জগুলির মোকাবিলায় ভারতকে আরও প্রস্তুত করে তুলবে বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞরা। শীঘ্রই এক বিশেষ প্রতিরক্ষা সক্ষমতার অধিকারী (I-STAR Spy Planes) হতে চলেছে ভারত, অন্তত তেমনটাই বলছেন বিশেষজ্ঞরা।

  • BSF: সুন্দরবন অঞ্চলে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত নজরদারিতে জোর! ডিআরডিও-র দ্বারস্থ বিএসএফ

    BSF: সুন্দরবন অঞ্চলে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত নজরদারিতে জোর! ডিআরডিও-র দ্বারস্থ বিএসএফ

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: এবার প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থার (ডিআরডিও) সাহায্য চাইল বিএসএফ (BSF)। অবৈধ অনুপ্রবেশ ও সীমান্তপার জঙ্গি নেটওয়ার্কের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযানের প্রেক্ষিতে এই পদক্ষেপ করেছে বিএসএফ (DRDO)। ভারতের সুন্দরবনের সঙ্গে যুক্ত ১১৩ কিলোমিটার গুরুত্বপূর্ণ ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে নজরদারি ব্যবস্থাপনার সাহায্য চেয়েছে বিএসএফ। এর মধ্যে রয়েছে, ড্রোন, রেডার এবং স্যালেটাইটও। অপারেশন সিঁদুরের পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নর্থ ব্লকে উচ্চ পর্যায়ের উপকূল নিরাপত্তা পর্যালোচনা বৈঠকে এ নিয়ে সবিস্তার আলোচনা হয়। এই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন সীমান্ত ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব।

    পহেলগাঁও হামলা (BSF)

    প্রসঙ্গত, এপ্রিল মাসে পহেলগাঁও হামলার পর অবৈধ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের শনাক্ত করে ৩০ দিনের মধ্যে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়। অপারেশন সিঁদুরের পর থেকে তাতে আরও গতি এসেছে। সরকারিভাবে না হলেও, বেসরকারিভাবে এই অভিযানের নাম অপারেশন পুশ-ব্যাক। এই অভিযানের অংশ হিসেবে বিএসএফ সীমান্তে নজরদারি জোরদার করেছে এবং এখন সংবেদনশীল এলাকা, বিশেষ করে সুন্দরবন, যা দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ অনুপ্রবেশের জন্য পরিচিত রুট, সেখানে ফাঁক পূরণের জন্য উচ্চমানের নজরদারি প্রযুক্তির ওপর আরও বেশি করে নির্ভর করার চেষ্টা করছে (BSF)।

    কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের বক্তব্য

    কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের এক কর্তা বলেন, “বিএসএফ প্রায় ১১৩ কিলোমিটার এলাকা প্রযুক্তিগত নজরদারির আওতায় আনার প্রস্তাব দিয়েছে। তারা ইতিমধ্যেই ইসরো এবং ডিআরডিওর সঙ্গে পরামর্শ করে একটি সম্ভাব্য সমীক্ষা পরিচালনা করেছে এবং সব চেয়ে কার্যকর সমাধানগুলি শনাক্ত করার জন্য ডিআরডিওকে মাঠ পরিদর্শন করতে বলেছে। তবে গুজরাটের খাঁড়ি এলাকায় একই ধরনের প্রকল্পের বর্তমান কাজ শেষ করার পরেই ডিআরডিও (DRDO) সুন্দরবনের জায়গাটা নেবে বলে আশা করা হচ্ছে।

    বিএসএফ

    বর্তমানে বিএসএফ সুন্দরবন সেক্টরের প্রায় ১২৩ কিলোমিটার এলাকায় নজরদারি চালায়। এর সিংহভাগই খাল এবং ঘন ম্যানগ্রোভ বনে ভরা কঠিন ভূখণ্ড। গোয়েন্দা সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যের পর প্রযুক্তি নির্ভর পদ্ধতির চাহিদা বেড়েছে যে জঙ্গি গোষ্ঠীগুলি ভারতের নদী এবং সমুদ্র সীমানা, বিশেষ করে সুন্দরবনের মধ্যে দিয়ে অনুপ্রবেশকারীরা ভারতে ঢুকে পড়ার পথ খুঁজছে। প্রত্যন্ত দ্বীপপুঞ্জজুড়ে বিস্তৃত এবং জোয়ারের জলপথ দ্বারা আড়াআড়ি এই অঞ্চলটি প্রচলিত টহলদারির জন্য অনন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করে।

    বিএসএফের শক্তি

    বর্তমানে বিএসএফ আটটি ভাসমান সীমান্ত ফাঁড়ি এবং ৯৬চি অন্যান্য টহলদারি জাহাজের সাহায্যে নজরদারি চালায়। সাতটি নজর মিনার নির্মাণের জন্য জমি এবং আরও বন-পোস্টের সহ-অবস্থানের অনুমতি দেওয়ার জন্য এটি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছে। এটি এমন একটি মডেল যেখানে বিএসএফ কর্মীরা বনকর্তাদের সঙ্গে পরিকাঠামো ভাগ করে নেয় (BSF)। ইতিমধ্যেই এই ধরনের তিনটি পোস্ট রয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের এক কর্তা বলেন, “অগ্রগতি কিছুই হচ্ছে না। বারবার সমীক্ষা করা সত্ত্বেও, বন ও রাজ্য রাজস্ব বিভাগের কর্তারা অংশগ্রহণ করেননি, যার ফলে প্রক্রিয়াটি স্থবির হয়ে পড়েছে।” মে মাসে বৈঠক হয়েছিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের, সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিএসএফের শীর্ষ কর্তা (DRDO) দলজিৎ সিং চৌধুরীও। ওই বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রতিনিধিরা বলেছিলেন যে তাঁরা সাতটি জায়গা সমীক্ষা করেছেন। এর মধ্যে দুটি জায়গায় জমি দিতে রাজি হয়েছে। তিনি বলেন, “আরও তিনটি বিএসএফ পোস্টের জন্য তাঁরা অপেক্ষায় রয়েছেন বন বিভাগের ছাড়পত্রের। উভয় পক্ষকেই প্রয়োজনে বিকল্প জায়গা অনুসন্ধান ও প্রতিটি জায়গায় যৌথভাবে সম্ভাব্যতা মূল্যায়ন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।”

    সুন্দরবনে নজরদারি

    সুন্দরবনে নজরদারির ক্ষেত্রে এই পদক্ষেপটি এমন একটা সময়ে এসেছে যখন নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে যে জরুরি ভিত্তিতে পূর্ব সীমান্ত বন্ধ করা না হলে অবৈধ অভিবাসন এবং জঙ্গিদের অনুপ্রবেশ রোধের চেষ্টা ব্যাহত হতে পারে (BSF)। বৃহত্তর সীমান্ত কৌশলের অংশ হিসেবে কেন্দ্র ইতিমধ্যেই অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করেছে, নির্বাসন প্রচেষ্টা জোরদার করেছে এবং বিভিন্ন সংস্থায় গোয়েন্দা সমন্বয় বৃদ্ধি করেছে। বছরভর টুকটাক অনুপ্রবেশ চলতে থাকলেও, গত অগাস্টে প্রধানমন্ত্রী পদে ইস্তফা দিয়ে শেখ হাসিনা দেশ ছাড়তেই বাংলাদেশে শুরু হয় হিন্দু নিধন যজ্ঞ। এই ডামাডোলের বাজারে প্রত্যাশিতভাবেই বাড়তে শুরু করে বাংলাদেশ থেকে ভারতে অনুপ্রবেশের প্রবণতা। এই পরিস্থিতিতে ভারত ও বাংলাদেশ সীমান্তে নজরদারি বাড়িয়েছে বিএসএফ। একই সঙ্গে চলছে অপারেশন পুশ-ব্যাকও। এমন আবহেই ডিআরডিওর (DRDO) কাছে উন্নত প্রযুক্তির সাহায্য চেয়ে বিএসএফ যে সীমান্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা আরও পোক্ত করতে চাইছে, তা বলাই বাহুল্য (BSF)।

  • Chinese PL-15E missile: প্লিজ একবার দাও! ভারতের হেফাজতে থাকা আস্ত চিনা ক্ষেপণাস্ত্র হাতে পেতে লাইন বিশ্বের হেভিওয়েটদের

    Chinese PL-15E missile: প্লিজ একবার দাও! ভারতের হেফাজতে থাকা আস্ত চিনা ক্ষেপণাস্ত্র হাতে পেতে লাইন বিশ্বের হেভিওয়েটদের

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ‘অপারেশন সিঁদুর’ (Operation Sindoor) চলাকালীন পাকিস্তানের নিক্ষেপ করা চিনা নির্মিত ‘পিএল-১৫ই’ ক্ষেপণাস্ত্র (Chinese PL-15E missile) সফলভাব ইন্টারসেপ্ট বা মাঝপথেই ধ্বংস করেছে ভারত। সেই ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষ এসে পড়ে ভারতের ভূমিতে, যা বর্তমানে রয়েছে কেন্দ্রের হেফাজতে। এখন, এই ধ্বংসাবশেষ হয়ে উঠেছে বিশ্বের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। তাবড় তাবড় দেশ এখন এই চিনা ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষ নিজেদের হেফাজতে নিয়ে পরীক্ষা চাইছে। সেই কারণে, সকলে এক এক করে এখন ভারতের দ্বারস্থ হচ্ছে। আমেরিকা থেকে শুরু করে ফ্রান্স, জাপান থেকে শুরু করে ‘পঞ্চ অক্ষী’ জোট— কে নেই সেই তালিকায়!

    ‘পিএল-১৫ই’ বিভিআরএএএম ক্ষেপণাস্ত্র (Chinese PL-15E missile)

    ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর (Operation Sindoor) সময়, পাকিস্তানের একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন সফলভাবে ধ্বংস করে দেয় ভারতের ইন্টিগ্রেটেড এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম। ধ্বংস হওয়া পাকিস্তানের নিক্ষিপ্ত সেই ক্ষেপণাস্ত্রের তালিকায় ছিল চিনা নির্মিত ‘পিএল-১৫ই’ বিয়ন্ড ভিজ্যুয়াল রেঞ্জ এয়ার টু এয়ার ক্ষেপণাস্ত্র (BVRAAM)। তালিকায় ছিল তুরস্কের ‘বায়রাক্তার টিবি-২’ কামিকাজে ড্রোন। আকাশে ধ্বংস হওয়ার পর এগুলির বহু অংশ ভারতের ভূমিতে এসে পড়ে। এমনকি, একটি গোটা চিনা ক্ষেপণাস্ত্র উদ্ধার হয় পঞ্জাবের হোসিয়ারপুর থেকে। ওই ক্ষেপণাস্ত্রটিকে ছোড়া হয়েছিল পাক ফাইটার জেট থেকে। কিন্তু ইন্টারসেপ্ট হওয়ায় গোঁত্তা খেয়ে তা ভারতে পড়ে। কিন্তু, কোনও বিস্ফোরণ না হওয়ায় ক্ষেপণাস্ত্রটিকে (Chinese PL-15E missile) প্রায় গোটা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

    প্লিজ, একবার ক্ষেপণাস্ত্রটা দাও!

    এই খবর চাউর হতে বেশি সময় লাগেনি। চিনা ক্ষেপণাস্ত্রটির ধ্বংসাবশেষ দ্রুত নিজেদের হেফাজতে নেয় ভারতীয় সেনা। বর্তমানে তা রয়েছে ডিআরডিও-র পরীক্ষাগারে। ক্ষেপণাস্ত্রটিকে বিশ্লেষণ করছে ভারতীয় বিজ্ঞানীরা। একটা আস্ত চিনা ‘পিএল-১৫ই’ ক্ষেপণাস্ত্র (Chinese PL-15E missile) ভারতের হাতে এসে পড়েছে, এটা জানতে পেরেই বহু দেশের সামনে একটা বড় সুযোগের দ্বার খুলে গিয়েছে। চিনের অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্রকে পরীক্ষা করে প্রযুক্তি বোঝার সুযোগ পেতে তাদের তর সইছে না। সেই কারণে, তারা এক এক করে ভারতের দ্বারস্থ হচ্ছে। সকলের আবদার অনেকটা যেন এরকমই— প্লিজ, একবার ক্ষেপণাস্ত্রটা দাও।

    চিনা ক্ষেপণাস্ত্রের দুর্বলতা বের করছে ভারত?

    এই ‘পিএল-১৫ই’ (Chinese PL-15E missile) হল চিনের ‘পিএল-১৫’ মূল ক্ষেপণাস্ত্রের রফতানি সংস্করণ, যা পাকিস্তান সহ বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ ব্যবহার করে। চিনের এভিয়েশন ইন্ডাস্ট্রি কর্পোরেশন দ্বারা নির্মিত এই আকাশ-থেকে-আকাশ মিসাইলটির পাল্লা ১৪৫ কিমি। এতে ডুয়াল-পালস রকেট মোটর এবং অ্যাক্টিভ রেডার গাইডেন্স রয়েছে। এই ক্ষেপণাস্ত্রে অত্যাধুনিক সিকার এবং ইলেকট্রনিক কাউন্টার-মেজার রয়েছে। এটি চিনা আস্ত্রাগারের একটি গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। বর্তমানে ডিআরডিও-র (DRDO) পরীক্ষাকেন্দ্রে এই ক্ষেপণাস্ত্রের কাটাছেঁড়া চলছে। এর ফলে, ভবিষ্যতের যুদ্ধে উপকৃত হতে পারে ভারত। এই ক্ষেপণাস্ত্রের প্রোপালশন সিস্টেম, গাইডেন্স প্রযুক্তি এবং ইলেকট্রনিক যুদ্ধের উপাদানগুলির অধ্যয়ন করে ভারত তার দুর্বলতা বের করে ফেলতে পারে। অচিরে এতে ভারতের নিজস্ব ক্ষেপণাস্ত্র উন্নয়ন কর্মসূচিতে উল্লেখযোগ্যভাবে সহায়তা করবে। চিন যে ভারতের সবচেয়ে বড় শত্রু, এটা একটা শিশুও জানে। ফলে, শত্রুর সামরিক প্রযুক্তি হাতে পাওয়া মানে ভবিষ্যতের যুদ্ধে এগিয়ে থাকা।

    চিনের প্রতিদ্বন্দ্বীদের কাছে সুবর্ণ সুযোগ

    কিন্তু, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের এত আগ্রহ কেন? এর অন্যতম কারণ হল, চিনের অ্যাডভান্সড ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি সম্পর্কে অন্য দেশের কাছে সীমিত তথ্য থাকা। বেজিং বরাবরই গোপনীয়তা বজায় রাখে। যে কারণে, আমেরিকা থেকে শুরু করে জাপান— বিশ্বে চিনের প্রতিদ্বন্দ্বীদের কাছে এটা একটা সুবর্ণ সুযোগ। ভারতের হাতে এসে পড়া চিনা ‘পিএল-১৫ই’ ক্ষেপণাস্ত্র (Chinese PL-15E missile) তাই এখন বিশ্বের কাছে ‘হট-কেক’। ফ্রান্স এবং জাপানের মতো দেশগুলি ক্ষেপণাস্ত্রটির অভ্যন্তরীণ গঠন এবং রেডার এড়িয়ে যাওয়ার বৈশিষ্ট্যগুলি বুঝতে আগ্রহী বলে জানা গিয়েছে। আবার আমেরিকা, যুক্তরাজ্য, নিউজিল্যান্ড, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়াকে নিয়ে গঠিত ‘ফাইভ আইজ’ গোয়েন্দা জোটও ধ্বংসাবশেষ হাতে পেতে নয়াদিল্লির সাথে আলোচনা করছে বলেও জানা গিয়েছে।

    ভারতের হাতে এখন তুরুপের তাস

    ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর (Operation Sindoor) সময় হাতে আসা এই ধ্বংসাবশেষ আদৌ কারোর সঙ্গে ভাগ করা হবে কিনা, সেই বিষয়ে ভারত এখনও পর্যন্ত কাউকে কিছুই জানায়নি। বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, তাড়াহুড়ো নয়, কৌশলগত ও কূটনৈতিক স্বার্থকে মাথায় রেখে সব দিক পর্যালোচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নেবে ভারত। তাঁদের মতে, এই ক্ষেপণাস্ত্র ভারতের হাতে তুরুপের তাস হয়ে উঠতে পারে। ভারতে এর বিনিময়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি হস্তান্তর করিয়ে নিতে পারে।

    অন্যদিকে, প্রমাদ গুণছে চিন…

    এদিকে, ভারতের হাতে তাদের আস্ত একখান অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র এসে পড়ায় সিঁদুরে মেঘ দেখছে চিন। বেজিং ভালোই বুঝতে পারছে, প্রতিপক্ষ ভারত এখন ক্ষেপণাস্ত্রের (Chinese PL-15E missile) নাড়িভুঁড়ি বের করে পোস্ট-মর্টেম করছে এবং সব রহস্য বের করছে। এর পর, ভারত যদি ওই ক্ষেপণাস্ত্র অন্য দেশকে দেয়, তাহলে বিপদ বাড়বে বৈকি। এই ক্ষেপণাস্ত্র বিশ্লেষণ করে চিনের জন্য পাল্টা দাওয়াই-এর ব্যবস্থা করে ফেলবে ভারত সহ গোটা বিশ্ব। এতে, চিনের উন্নত প্রযুক্তির ধার অনেকটাই ভোঁতা হতে পারে।

LinkedIn
Share