Tag: Droupadi Murmu

Droupadi Murmu

  • Draupadi Murmu: ইতিহাস রচনা করল ভারত! দ্রৌপদী হবেন ‘মহান রাষ্ট্রপতি’, শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর

    Draupadi Murmu: ইতিহাস রচনা করল ভারত! দ্রৌপদী হবেন ‘মহান রাষ্ট্রপতি’, শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ‘ইতিহাস রচনা করল ভারত।’ রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে (Presidential poll) দ্রৌপদী মুর্মুর (Draupadi Murmu) জয়ের পরই তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Modi)। ট্যুইটবার্তায় তিনি লেখেন দেশের প্রান্তিক মানুষের প্রতিনিধি দ্রৌপদী মুর্মুর এই জয় দেশবাসীকে গর্বিত করবে। এরপর ভাবী রাষ্ট্রপতি (President-elect) দ্রৌপদী মুর্মুর বাসভবনে পৌছন প্রধানমন্ত্রী।

    [tw]


    [/tw]

    প্রতিদ্বন্দী যশবন্ত সিনহাকে (Yashwant Sinha) বিপুল ভোটে হারিয়ে দেশের ১৫তম রাষ্ট্রপতি (15th President) নির্বাচিত হলেন দ্রৌপদী মুর্মু। তৃতীয় রাউন্ড ভোট গণনার শেষে দ্রৌপদী মুর্মুর পক্ষে পড়ে ৮১২টি ভোট। আর যশবন্ত সিনহা পেয়েছেন ৫২১ ভোট। ১৫ জন সাংসদের ভোট বাতিল হয়। ১৭জন বিরোধী সাংসদ তাঁদের প্রার্থীকে সমর্থন করেন বলে দাবি বিজেপির। দ্বিতীয় রাউন্ডের শেষে দ্রৌপদী মুর্মুর জয় কার্যত নিশ্চিত হয়ে যায়।

    বর্ণানুক্রমিকভাবে প্রথম ১০টি রাজ্যের গণনা শেষে দ্রৌপদী মুর্মু ১৩৪৯টি ও যশবন্ত সিনহা ৫৩৭টি ভোট পান। দু’জনের ভোটের মূল্যের ব্যবধান দাঁড়ায় প্রায় ৩ লক্ষের। তৃতীয় রাউন্ডের শেষেই জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় সমর্থন আদায় করেন নেন নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি। কারণ জয়ের জন্য প্রয়োজন ৫ লক্ষ ৪৩ হাজার ২৬১। তৃতীয় রাউন্ডের শেষে এনডিএ প্রার্থীর ভোটের মূল্য দাঁড়ায় ৫লক্ষ ৭৭ হাজার ৭৭৭। শেষমেশ দ্রৌপদীকেই জয়ী ঘোষণা করে দেন রাজ্যসভার সাধারণ সচিব পি সি মোদি।

    আরও পড়ুন: প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার কাছে নতুন হাইওয়ে চিনের! জানুন কোথা দিয়ে যাবে সেই রাস্তা

    দেশের নতুন রাষ্ট্রপতিকে শুভেচ্ছা জানাতে ফুলের তোড়া নিয়ে তাঁর বাড়িতে হাজির হন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা (JP Nadda)। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর বিশ্বাস, দ্রৌপদী হবেন ‘মহান রাষ্ট্রপতি’। প্রধানমন্ত্রীর কথায়, ‘দ্রৌপদী মুর্মুর জীবনকাহিনি, জীবনের শুরু থেকে তাঁর লড়াই, ভালো কাজ এবং দৃষ্টান্তমূলক সাফল্য প্রত্যেক ভারতীয়কে অনুপ্রেরণা জোগাবে। দেশবাসীর কাছে উনি আশার আলো। বিশেষত গরিব, প্রান্তিক এবং পিছিয়ে পড়া মানুষদের জন্য তাঁর এই জয় এক দৃষ্টান্ত।’ মোদি আরও বলেন, ‘দল নির্বিশেষে যে সাংসদ এবং বিধায়করা দ্রৌপদী মুর্মুকে সমর্থন করেছেন, তাঁদের ধন্যবাদ জানাতে চাই। গণতন্ত্রের পক্ষে এই রেকর্ড জয় অত্যন্ত ভালো।’

  • Draupadi Murmu: পরনে ইক্কত শাড়ি, সঙ্গে মুক্তোর দুল, সোনার চেন-বালা, আজ যেন ঘরোয়া নারী দ্রৌপদী মুর্মু

    Draupadi Murmu: পরনে ইক্কত শাড়ি, সঙ্গে মুক্তোর দুল, সোনার চেন-বালা, আজ যেন ঘরোয়া নারী দ্রৌপদী মুর্মু

    অগ্নিমিত্রা পাল

     

    পরিপূর্ণ ভারতীয় নারী। শাড়ি পরিহিত এক নারীর শপথ ভারতের কাছে আজ হয়ে দাঁড়াল ভারতীয়ত্বের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন। ছিমছাম সাজের শপথ আজ ইতিহাসের পাতায় জায়গা করে নিল। ইতিহাস লিখলেন দ্রৌপদী মুর্মু। দুনিয়া দেখল, এক নারীর জয়গাথা। এক আদিবাসী মেয়ের রূপকথার উত্থান। এক হার না মানা লড়াই জায়গা করে নিল রাইসিনা হিলসে। ছিমছাম সাজের আড়াল থেকে ঠিকরে বেরোচ্ছিল আত্মবিশ্বাস। পরণে ছিল ওড়িশার ইক্কত শাড়ি, শাড়িতে সবুজ ও গাঢ় লাল রঙের। যা সেখানকার সংস্কৃতিকে তুলে ধরেছে। সেজেছিলেন কানে মুক্তোর দুলে, গলায় চেন, হাতে সোনার বালা। এই সাজ ঘরোয়া নারীর। এই সাজ সহজ, সরল এক মেয়ের।

    প্রথম কোনও আদিবাসী মহিলা দেশের রাষ্ট্রপতি পদে শপথ নিলেন। এ যাবৎ যতজন রাষ্ট্রপতি হয়েছেন তাঁদের মধ্যে কনিষ্ঠতমও হলেন দ্রৌপদী মুর্মু। স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসবে এক আদিবাসী মহিলা দ্রৌপদী মুর্মু রাষ্ট্রপতির পদে বসছেন, এর থেকে বড় উদযাপন আর কিছু হতে পারে না। আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামীরা পূর্ণ স্বরাজ এর কথা বলতেন। আজ আমরা যদি ভারতের সাংবিধানিক পদগুলোর দিকে তাকাই বুঝতে পারব প্রকৃত স্বাধীনতার মানে। রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, লোকসভার স্পিকার এবং আগামী দিনের উপরাষ্ট্রপতি সবাই খুব সাধারণ ঘর থেকে উঠে এসেছেন। কেউ আদিবাসী সমাজ থেকে কেউবা আবার অনগ্রসর সমাজের প্রতিনিধি। কেউ কৃষক পরিবারের সন্তান আবার কেউ চা বিক্রেতা। নিজেদের যোগ্যতায় সবাই উঠে এসেছেন, জায়গা করে নিয়েছেন। এটাই আমার ভারত।

    গোটা দেশ তাকিয়ে ছিল এই নির্বাচনের ফলের দিকে। ওড়িশার ময়ূরভঞ্জের একটি হতদরিদ্র আদিবাসী পরিবার থেকে রাইসিনা হিলসের রাষ্ট্রপতি ভবনে পৌঁছাতে তাঁকে যে দৌড়টি দিতে হয়েছে, যাঁরা এই জীবনের সঙ্গে পরিচিত নন তাঁরা কল্পনাও করতে পারবেন না।

    এই উত্থানগুলো থেকে সমাজের মধ্যে উত্থান আকাঙ্ক্ষা জন্মায়। তার অনেকটাই কার্যকরী হয়। আজ থেকে পঞ্চাশ বছর আগে এমন প্রান্তিক সমাজ থেকে দৌপদী মুর্মুর মতো একজন যোগ্য প্রার্থী খুঁজে পাওয়া যাবে কেউ কল্পনা করতে পেরেছিল? আজ কিন্তু পারা যায়। সেটা দেখিয়ে দিলেন মোদিজি। ভারতের সিএজি হয়ে ওঠেন একজন আদিবাসী দক্ষ আইএএস অফিসার। একটি রাজ্য চালান আদিবাসী মুখ্যমন্ত্রী। এর পরেও পশ্চিমবঙ্গের একদল তথাকথিত দলিত বোদ্ধা গেল গেল করবে। যেন এক আদিবাসী মহিলা রাষ্ট্রপতি হওয়ায় সংবিধান উচ্ছন্নে যাবে, তিনি সংবিধানের বারোটা বাজিয়ে দেবেন। যেন অন্য আদিবাসী সমাজ এর ফলে উপকৃত হবে না। এটা শুধু প্রতীকী বিষয়। তাঁদের মনে করিয়ে দেওয়া ভালো, প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারি বাজপেয়ীর আমলে প্রথম আদিবাসী মন্ত্রক তৈরি হয়েছিল।

    অনাদিকাল থেকে, কংগ্রেসি আমলে যাঁরা রাষ্ট্র চালিয়েছিলেন, তাঁদের মুখগুলো ক্ষমতার অলিন্দে বসিয়ে রাখা হয়েছে। এই অলিন্দে যত প্রান্তিক সমাজ থেকে লোক ঢুকবে তত মনোপলি বন্ধ হবে। আমাদের এবং দেশের স্বপ্নগুলি ভিন্ন ভিন্ন নয়। আমাদের নিজস্ব আর রাষ্ট্রীয় সফলতাগুলি ভিন্ন ভিন্ন নয়। রাষ্ট্রের প্রগতির মধ্যেই নিহিত রয়েছে আমাদের প্রগতি। আমাদের মাধ্যমেই রাষ্ট্রের অস্তিত্ব আর রাষ্ট্রের মাধ্যমেই আমাদের অস্তিত্ব – এই ভাব, এই বোধ নতুন ভারতের নির্মাণে আমাদের ভারতবাসীর সবচেয়ে বড় শক্তি হয়ে উঠছে।

    আজ দেশ যা কিছু করছে এতে সকলের প্রচেষ্টা একসঙ্গে সামিল রয়েছে। ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ অউর সবকা প্রয়াস’ – এটা এখন গোটা দেশের মূলমন্ত্র হয়ে উঠছে, যা সাম্য এবং সামাজিক ন্যায়ের ভিত্তিতে মজবুতভাবে দাঁড়িয়ে থাকবে। আমরা একটি ভারতকে জেগে উঠতে দেখছি, যার ভাবনা এবং দৃষ্টিভঙ্গি নতুন, যার সিদ্ধান্তগুলি অত্যন্ত প্রগতিশীল।

    ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণে ভারতীয় উপমহাদেশ বিশ্বের অন্যতম প্রধান ধর্ম, দর্শন, সভ্যতা ও সংস্কৃতি সমূহের মিলনস্থল। ভিন্ন ভিন্ন নদী যেমন একই সমুদ্রে এসে পতিত হয় তেমনি ভারতের জনজীবনের মহাসমুদ্রে একেকটি নদীর ধারার মতোই এসে মিলেছে আর্য, অনার্য, গ্রীক, শক, হুন, পার্সি, আরব, তুর্কী, চৈনিক বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী। আর সঙ্গে নিয়ে এসেছে তাদের কৃষ্টি, সভ্যতা ও সংস্কৃতির অংশ। এজন্যই ভারতীয় সমাজে পরিলক্ষিত হয় সংস্কৃতি ও রুচির এমন বৈচিত্র্যময় মেলবন্ধন। সেই সংস্কৃতিকে তুলে ধরলেন দ্রৌপদী মুর্মু।

    প্রথম দিনই লক্ষ্য স্থির করে নিয়েছেন। বললেন, ” আমি দেশের যুব সম্প্রদায়কে বলতে চাই, শুধু নিজের ভবিষ্যতের কথাই ভেবো না, দেশের ভবিষ্যতের জন্য ভিত গড়ার কথাও ভাব। রাষ্ট্রপতি হিসাবে আমি সবসময়ে তোমাদের পাশে থাকব।”
    দেশের প্রান্তিক মানুষের কল্যাণই হবে আমার লক্ষ্য।”

    তিনি সকল ভারতবাসীর রাষ্ট্রপতি।

     

    (লেখিকা খ্যাতনামা ফ্যাশন ডিজ়াইনার তথা বিজেপি নেত্রী)

LinkedIn
Share