Tag: india Pakistan relation

  • IWT: পাকিস্তানের সঙ্গে জল চুক্তি স্থগিত, নয়া জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ছে ভারত! চলছে একাধিক বিকল্পের পরীক্ষা

    IWT: পাকিস্তানের সঙ্গে জল চুক্তি স্থগিত, নয়া জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ছে ভারত! চলছে একাধিক বিকল্পের পরীক্ষা

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত করে দিয়েছে ভারত। দক্ষিণ কাশ্মীরের পাহেলগাঁওকাণ্ডের জেরে এই পদক্ষেপ করেছে (IWT) ভারত। এতে একদিকে যেমন বিপাকে পড়েছে পাকিস্তান। তেমনি অন্যদিকে, আখেরে লাভ হয়েছে ভারতের। সিন্ধু অববাহিকার তিন পশ্চিমাঞ্চলীয় নদী সিন্ধু, ঝিলাম এবং চেনাবের জল আরও ভালোভাবে ব্যবহারের জন্য একাধিক বিকল্প সম্ভাবনা পরীক্ষা করে দেখছে ভারত। এর মধ্যে চেনাব (চন্দ্রভাগা) নদী থেকে রাভি (ইরাবতী) নদীতে জল স্থানান্তরের জন্য ১০-১২ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি সুড়ঙ্গ নির্মাণের প্রস্তাবও রয়েছে। ইন্ডাস ওয়াটার্স ট্রিটি (আইডব্লিউটি) অনুযায়ী, ভারত পূর্বাঞ্চলীয় নদীগুলো –শতদ্রু, ইরাবতী এবং বিয়াসের (বিপাশা) জল ব্যবহারের দাবিদার। আর পাকিস্তান পেয়ে থাকে পশ্চিমাঞ্চলীয় নদীগুলির জল ব্যবহারের অধিকার।

    ভারতের অধিকার (IWT)

    পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত হয়ে যাওয়ার পরে এখন সব জলের ওপর কায়েম হয়েছে ভারতের অধিকার। চেনাব নদীতে একটি টানেল নির্মাণের প্রস্তাবটি উঠে এসেছে দুটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে। এই বৈঠক দুটির একটি হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে, অন্যটি হয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সভাপতিত্বে। দুই বৈঠকেই আলোচনা হয়েছে তিনটি পশ্চিমাঞ্চলীয় নদীর জল কীভাবে কাজে লাগানো যায়, তা নিয়ে। বৈঠকগুলিতে উপস্থিত ছিলেন পিএমও, স্বরাষ্ট্র, বিদ্যুৎ এবং জলশক্তি মন্ত্রক-সহ বিভিন্ন মন্ত্রকের পদস্থ কর্তারা।

    জোড়া বৈঠক

    বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন এমন এক পদস্থ কর্তা সংবাদ মাধ্যমে বলেন, “এটি বিবেচনাধীন একটি বিকল্প। চেনাবে টানেল নির্মাণের প্রযুক্তিগত ও সম্ভাব্যতা সমীক্ষা চালানোর নির্দেশ জলশক্তি মন্ত্রককে দেওয়া হয়েছে। কেবলমাত্র যদি এটি সম্ভবপর বলে প্রমাণিত হয়, তবেই আমরা প্রকল্পটি এগিয়ে নেব। সমীক্ষা শেষ হলে কী পরিমাণ জল এবং কোন জায়গা থেকে সরবরাহ করা যাবে – এসব তথ্যই স্পষ্ট হয়ে যাবে।” তিনি বলেন, “চেনাবে জলবিদ্যুৎ প্রকল্পগুলির কাজ দ্রুত শেষ করার বিষয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। বর্তমানে জম্মু-কাশ্মীরে কিশতোয়ার জেলায় অবস্থিত চারটি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র ৮৫০ মেগাওয়াট রাতলে, ১ হাজার মেগাওয়াট পাকাল দুল, ৬২৪ মেগাওয়াট কিরু এবং ৫৪০ মেগাওয়াট কওয়ারের কাজ বিভিন্ন পর্যায়ে বাস্তবায়িত হচ্ছে। আর এক সরকারি কর্তা বলেন, “পশ্চিমাঞ্চলীয় নদীগুলিতে চারটি প্রস্তাবিত জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে নেওয়ার জন্য বিদ্যুৎ মন্ত্রককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে (IWT)।

    সুড়ঙ্গ ও জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ

    এগুলির মধ্যে রয়েছে জম্মু ও কাশ্মীরে অবস্থিত ১ হাজার ৮৫৬ মেগাওয়াটের সাওয়ালকোট, ৯৩০ মেগাওয়াটের কীরথাই-২ হাজার ২৬০ মেগাওয়াটের দুলহাস্তি পর্যায়-২ এবং ২৪০ মেগাওয়াটের উরি ১ পর্যায় -২ প্রকল্প।” সুড়ঙ্গ ও জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ যে দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প, তা স্বীকার করে নেন বৈঠকে উপস্থিত কর্তারা। তিনি বলেন, “এগুলিতে সময় লাগবে। তবে বর্তমানেই পশ্চিমাঞ্চলীয় নদীগুলিতে আমাদের পরিকাঠামোর ক্ষমতা বাড়ানো শুরু করা উচিত বলে মনে করা হয়েছে।” স্বল্পমেয়াদে ভারত পূর্বাঞ্চলীয় ও পশ্চিমাঞ্চলীয় নদীগুলিতে যে জলাধারগুলি রয়েছে, সেগুলিতে ড্রাউনডাউন ফ্লাশিং বা পলি অপসারণ পদ্ধতি পরিচালনার কথাও বিবেচনা করছে। সিন্ধু জল চুক্তি অনুযায়ী জলাধারে ড্রাউনডাউন ফ্লাশিং নিষিদ্ধ। ফ্লাশিং না করলে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে জলাধারে পলি জমে দীর্ঘমেয়াদে সেগুলি অকার্যকর হয়ে পড়ে। ওই কর্তা বলেন, “যেহেতু আইডব্লিউটি বর্তমানে স্থগিত রয়েছে, ভারত পূর্বাঞ্চলীয় নদীগুলির জলাধারেও ড্রাউনডাউন ফ্লাশিং করতে পারবে, যা চুক্তি অনুযায়ী অনুমোদিত নয় (IWT)।”

    ইন্ডাস জল চুক্তি

    ১৯৬০ সালে বিশ্বব্যাঙ্কের মধ্যস্ততায় ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয় ইন্ডাস জল চুক্তি। এই চুক্তি অনুযায়ী, ভারতকে ইরাবতী, বিয়াস ও শতদ্রুর পূর্বাংশের জল ব্যবহারের সম্পূর্ণ অধিকার দেওয়া হয়েছে, যা সিন্ধু নদ ব্যবস্থার মোট জলের প্রায় ২০ শতাংশ। অন্যদিকে, পাকিস্তানকে পশ্চিমাংশের সিন্ধু, ঝিলাম ও চেনাব নদীর জল ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়েছে, যা সিন্ধু নদের প্রায় ৮০ শতাংশ জল বহন করে। এই চুক্তি অনুসারে, ভারত এই তিনটি পশ্চিমাঞ্চলীয় নদীর জল “অ-খরচযোগ্য” উদ্দেশ্যে ব্যবহার করতে পারে। যেমন, নদীর প্রবাহভিত্তিক জলবিদ্যুৎ উৎপাদন, কৃষি ও গৃহস্থালির কাজে এই জল ব্যবহার করা যেতে পারে। “রান-অফ-দ্য-রিভার” প্রকল্প বলতে বোঝায় এমন বিদ্যুৎকেন্দ্র যেখানে জলাধার নির্মাণ ছাড়াই সরাসরি নদীর প্রবাহ ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়।

    জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রভূত সম্ভাবনা

    ভারত পূর্বের নদীগুলির নিজের ভাগের প্রায় ৯৫ শতাংশ জল বাঁধের নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ব্যবহার করলেও, পশ্চিমের নদীগুলির জল ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো এখনও গড়ে ওঠেনি। পশ্চিমের তিন নদীতে ভারতের নির্মিত প্রধান জলবিদ্যুৎ প্রকল্পগুলির মধ্যে রয়েছে বাগলিহার, সলাল ও কিশনগঙ্গা (IWT)। এক সরকারি আধিকারিকের মতে, “বর্তমানে আইডাব্লুটি স্থগিত থাকায় ভারত এই সুযোগে পশ্চিমের নদীগুলিতে থাকা জলবিদ্যুৎ প্রকল্পগুলিকে দ্রুত শেষ করে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও জল সংরক্ষণের নতুন পরিকাঠামো গড়ে তুলতে চাইছে।” প্রসঙ্গত, বর্তমানে পশ্চিমের নদীগুলি থেকে ভারত যে জল ব্যবহার করতে পারে, তা দিয়ে ১৮ হাজার ৫৬৯ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে (IWT)।

  • Pahalgam Attack: পহেলগাঁও হামলার পাল্টা ভারতের ‘জল-বোমা’! বানের জলে ভাসছে পাকিস্তান

    Pahalgam Attack: পহেলগাঁও হামলার পাল্টা ভারতের ‘জল-বোমা’! বানের জলে ভাসছে পাকিস্তান

    সুশান্ত দাস

    পহেলগাঁও হামলার (Pahalgam Attack) প্রেক্ষিতে ভারত সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি স্থগিত করে দেওয়ায় অনেকে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন এসব করে কী লাভ? তাঁদের মতে, পাকিস্তানকে শিক্ষা দিতে হলে সেখানে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করতে হবে। এসব জল বন্ধ করে (Water Treaty) লাভের লাভ কিছুই হবে না।

    ভারতের মাস্টারস্ট্রোক! (Pahalgam Attack)

    তাঁদের প্রশ্নগুলোকে সম্মান দিয়েও প্রশ্নকর্তাদের উদ্দেশে কিছু কথা। জল চুক্তি স্থগিত করার বিষয়টি এত হালকাভাবে নিলে হবে না। এই চুক্তির অনেক ভূ-রাজনৈতিক তাৎপর্য রয়েছে বিশেষ করে ভারত ও পাকিস্তানের। এটা ভারতের একটা মাস্টারস্ট্রোক। কেন? এটা এমন একটা অদৃশ্য অস্ত্র, যা যে কোনও পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্রের মতোই শক্তিশালী। এর প্রভাব মারাত্মক। কীভাবে? এটা জানতে হলে আগে একটু ইতিহাস আওড়ে নেওয়া যাক। ১৯৬০ সালে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সিন্ধু জল চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তিতে সিন্ধু এবং এর উপনদীগুলির জল দুই দেশের মধ্যে ন্যায্যভাবে ভাগ করার কথা বলা হয়েছিল। চুক্তির অধীনে, পূর্বাঞ্চলীয় ৩ নদী- বিয়াস (বিপাশা), রাভি (ইরাবতী) এবং সাতলেজ (শতদ্রু)র জল ভারতকে এবং পশ্চিমাঞ্চলীয় ৩ নদী- চেনাব (চন্দ্রভাগা), সিন্ধু (ইন্ডাস) এবং ঝিলাম (বিতস্তা)-র জল পাকিস্তানকে বরাদ্দ করা হয়েছিল।

    পাকিস্তানে সিন্ধু নদের গুরুত্ব

    এতদিন ধরে এই চুক্তি লাগু থাকার ফলে, সিন্ধুর জলের ওপর কার্যত দাঁড়িয়ে পাকিস্তানের কৃষি। পরিসংখ্যান বলছে, পাকিস্তানের ৮০ শতাংশ কৃষিজমিতে জল সরবরাহ হয় এই চুক্তির মাধ্যমেই। গম, চাল, আখ, তুলো চাষের জন্য এই জল ব্যবহার হয়। পাকিস্তানের সেচের জন্য প্রয়োজনীয় জলের ৯০ শতাংশেরও বেশি আসে সিন্ধু নদ থেকে। এর পাশাপাশি, পাকিস্তানের তারবেলা এবং মাংলার জলবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রও চলে সিন্ধুর জলেই। ফলে, পাকিস্তানের জিডিপির ২৫ শতাংশ নির্ভর করে এই সিন্ধুর জলের ওপরেই (Water Treaty)। এবার ভারত এই চুক্তি স্থগিত করায় কৃষি থমকে (Pahalgam Attack) যাবে। এমনিতেই, পাকিস্তানে খাদ্যসঙ্কট চূড়ান্ত। তার ওপর কৃষি লাটে উঠলে দেশজুড়ে হাহাকার দেখা দেবে। এমনিতেই পাকিস্তানে প্রতিদিন কয়েক ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ থাকে না। তার ওপর বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হলে চরম অন্ধকার নেমে আসবে। সেটাও শরিফ সরকার বিলক্ষণ জানে।

    মসজিদের মাইকে সাইরেন

    এখানেই শেষ নয় কিন্তু। চুক্তি স্থগিত হওয়ার কারণে এবার ভারত আর তথ্য সরবরাহ করবে না। সিন্ধু, ঝিলাম এবং চেনাব- এই তিন নদীর ওপরে কোনও বড় বাঁধ নেই। তথ্য আদান প্রদান বন্ধ হওয়ায় আবহাওয়া সংক্রান্ত কোনও আপডেট আর পাকিস্তানের কাছে যাবে না। যেমন বন্যার পূর্বাভাস, সেচ ব্যবস্থা -এ সংক্রান্ত তথ্য প্রতি বছরের জুলাই থেকে অক্টোবর মাসের মধ্যে পৌঁছে যেত পাকিস্তানে। সেই মতো ব্যবস্থা গড়ে উঠত পাকিস্তানে। বন্যা-খরার আগাম মোকাবিলাও পাকিস্তান করতে পারত ভারতের দেওয়া তথ্যের ওপরে ভিত্তি করেই। এবার সেসব কিছুই বন্ধ হল। এর প্রভাব কী হতে চলেছে, তার প্রমাণ মিলেছে শনিবারই। এদিন দুপুরবেলা পাক অধিকৃত কাশ্মীরের মুজাফফরাবাদে বিপদঘণ্টি (Pahalgam Attack) বেজে ওঠে। চারদিকে হই-হই পড়ে যায়। প্রতিটা মসজিদের মাইকে সাইরেন বেজে ওঠে। জানা যায়, আচমকা ঝিলম নদীর জলস্তর হু-হু করে বাড়তে শুরু করে দিয়েছে। সেকি কাণ্ড! ভরা গ্রীষ্মে প্লাবিত ঝিলম! বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইতে শুরু করে দিয়েছে জল। চকোঠি সীমান্ত থেকে মুজাফফরাবাদ শহর পর্যন্ত, নদীর জল দ্রুত বৃদ্ধি পেতে থাকে। যা দেখে স্থানীয়দের আত্মারাম খাঁচা হয়ে যায়। নদী তীরবর্তী সমস্ত গ্রাম – হাতিয়ান বালা, ঘড়ি দুপাট্টা, মাঝোই – সর্বত্র ত্রাহি ত্রাহি রব পড়ে যায়। দ্রুত খালি করা হয় গ্রাম। পরিবারগুলি নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার জন্য দৌড়াদৌড়ি শুরু করে দেয় (Water Treaty)।

    প্রমাদ গুণছে পাকিস্তান

    সিন্ধু চুক্তি স্থগিত হওয়ার পর থেকেই পাকিস্তান প্রমাদ গুণতে শুরু করে দিয়েছিল। তবে, তারা যেখানে খরার আশঙ্কা করে প্রস্তুতি নিচ্ছিল, সেখানে প্লাবন চলে এল। যাকে বলে, আউট অফ সিলেবাস কোশ্চেন! এর চেয়ে আরও বড় প্রভাব দেখা যায় পাকিস্তানের অন্য প্রান্তে। পহেলগাঁও হত্যার পরের দিনই হামলার দায় নিয়েছিল লস্কর-এ-তৈবার ছায়া সংগঠন দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট। ঝিলম প্লাবিত হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই আগের দায় ঝেড়ে ফেলে তারা (Pahalgam Attack)। অর্থাৎ, মৌচাকে ঢিল পড়েছে! ফলে, যাঁরা বলছিলেন সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের কথা, এটাও একটা সার্জিক্যাল স্ট্রাইক। তফাতের মধ্যে এখানে অস্ত্র আগুন নয়, এখানে অস্ত্র জল। ভারতের পূবদিকের প্রতিবেশীর নোবেলজয়ী সর্বেসর্বা, তিনি খবর শুনছেন তো! নয়তো কোনওদিন তারাও বানের জলে ভেসে (Pahalgam Attack) যেতে পারে…

  • Pahalgam Attack: “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই হামলার কড়া জবাব দেবেন,” প্রত্যয়ী নাড্ডা

    Pahalgam Attack: “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই হামলার কড়া জবাব দেবেন,” প্রত্যয়ী নাড্ডা

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: “জম্মু-কাশ্মীরে যেভাবে কাপুরুষোচিত হামলা হয়েছে, তাতে গোটা দেশ ক্ষুব্ধ। তারা আশা করছে যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই হামলার কড়া জবাব দেবেন।” শনিবার এমনই মন্তব্য করলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপির (BJP) সভাপতি জেপি নাড্ডা। তিনি বলেন, “ভারত পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার (Pahalgam Attack) জন্য দোষীদের যোগ্য জবাব দেবে। এই সপ্তাহের শুরুতে ওখানে প্রাণ হারিয়েছেন ২৬ জন।”

    হামলার কড়া জবাব (Pahalgam Attack)

    শ্রীমন্ত দাগদুশেঠ গণপতির কাছে প্রার্থনা করার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে নাড্ডা বলেন, “সমগ্র দেশ আশা করে যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই হামলার কড়া জবাব দেবেন।” প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার দক্ষিণ কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ের বৈসরন এলাকায় পর্যটকদের নিশানা করে জঙ্গিরা। জঙ্গিরা বেছে বেছে হিন্দু পর্যটকদের গুলি করে হত্যা করে। এক নেপালি সহ মোট ২৮জনের মৃত্যু হয়। এঁদের মধ্যে এক জঙ্গির হাত থেকে বন্দুক কেড়ে নিতে গিয়ে খুন হন স্থানীয় এক কাশ্মীরি মুসলিম যুবক। ওই ঘটনায় জখমও হয়েছেন বেশ কয়েকজন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তাঁরা। এই প্রসঙ্গেই এদিন নাড্ডা বলেন, “দেশ যেন দৃঢ়তার সঙ্গে এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করে এবং হামলায় দোষীদের যোগ্য জবাব দেয়।” সেজন্য আশীর্বাদ চেয়েছেন তিনি। বিজেপি সভাপতি বলেন, “আমি নিশ্চিত যে গণেশজির আশীর্বাদ, তাঁর প্রজ্ঞা এবং শক্তিতে দেশ এই কঠিন সময় পার করবে এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে দোষীদের উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে।”

    ইজরায়েল স্টাইলের প্রতিশোধ!

    এদিকে, বিজেপি নেতা রমেশ বিধুরি (Pahalgam Attack) বলেন, “হামাস-স্টাইলের হামলা ঘটলে ইজরায়েল স্টাইলের প্রতিশোধ নেওয়া হবে। জঙ্গি এবং জিহাদিরা যদি ধর্মহীন হয়, তাহলে তারা ধর্ম জিজ্ঞেস করে মানুষ হত্যা করছে কেন? ১৪০ কোটি ভারতবাসী এই প্রশ্ন সেই তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীদের কাছে করতে চায়।” তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন (BJP), তাদের এমন শাস্তি দেওয়া হবে, যার কথা তারা কল্পনাও করতে পারবে না (Pahalgam Attack)।”

  • Pahalgam Attack: সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত করে পাকিস্তানকে মাত দিলেন মোদি!

    Pahalgam Attack: সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত করে পাকিস্তানকে মাত দিলেন মোদি!

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দক্ষিণ কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার (Pahalgam Attack) প্রতিবাদে গত ২৩ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (PM Modi) নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত করে দেয়। পহেলগাঁওয়ের ওই জঙ্গি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন এক নেপালি সহ মোট ২৮ জন। হামলার পরিকল্পনা করেছিল ‘দ্য রেজিস্টেন্স ফ্রন্ট’ নামে একটি সংগঠন। এটি হাফিজ সৈয়দের নেতৃত্বাধীন ‘লস্কর-ই-তৈবা’র একটি ছায়া সংগঠন। হাতে নয়, পহেলগাঁওকাণ্ডের পর ভারত যে তাদের ‘জলে’ মারবে, তা বোধহয় কল্পনাও করেননি পাকিস্তানের কর্তাব্যক্তিরা। মোদি সরকারের সিদ্ধান্তে তাঁরা যারপরনাই অবাক। প্রশ্ন হল, কেন?

    মুম্বই হামলা (Pahalgam Attack)

    এ প্রশ্নের উত্তর পেতে হলে ফিরে যেতে হবে ২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর। ওই দিন শুরু হয় মুম্বই হামলা, চলে টানা তিন দিন। লস্কর-ই-তৈবার ১০ জন সদস্যের তাণ্ডবে নিহত হন ১৬৬ জন। তখন কেন্দ্রের ক্ষমতায় মনমোহন সিংয়ের সরকার। সেই ঘটনার পরেও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কোনও কঠোর পদক্ষেপ করা হয়নি। সিন্ধু জল চুক্তি যে স্থগিত করা যায়, এবং এভাবেও যে পাকিস্তানকে ‘শিক্ষা’ দেওয়া যায়, তা স্বপ্নেও ভাবেননি কংগ্রেসের মাতব্বররা। যার কারণে আক্ষরিক অর্থেই পেয়ে বসেছিল পাকিস্তান। ইসলামাবাদের ধারণা হয়েছিল, এবারও ভারত কঠোর কোনও পদক্ষেপ করবে না, কেবল প্রতিবাদ এবং দোষারোপ করেই রণে ভঙ্গ দেবে। পাকিস্তানের অনেকেই ভাবছিল, ১৬৬ জনকে গুলি করে খুন করার পরেও যখন ভারত জোরালো কোনও পদক্ষেপ করেনি, তখন মাত্র ২৭ জন হিন্দু হত্যায় কী আর করতে পারে! তারা বুঝতেই পারেনি, মোদির নীতি আর মনমোহনের নীতিতে আকাশ-পাতাল ফারাক।

    সংসদে হামলা

    মুম্বই হামলার সাত বছর আগে ২০০১ সালের ১৩ ডিসেম্বর সংসদে হামলার পর সিন্ধু জল চুক্তি বাতিলের হুমকি দিয়েছিল বিজেপির অটল বিহারী বাজপেয়ীর সরকার। সেই হামলার নেপথ্যেও ছিল পাক মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈবা। সেই ঘটনায় জড়িত থাকার দায়ে আফজল গুরুকে ফাঁসি দেওয়া (Pahalgam Attack) হয়েছিল। সিন্ধু জল চুক্তি (IWT) স্বাক্ষরিত হয় ১৯৬০ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর, পাকিস্তানের করাচিতে। চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিলেন ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু এবং পাকিস্তানের তরফে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি আয়ুব খান। চুক্তির সময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্বব্যাঙ্কের কর্তারা।

    নেহরুকে সতর্ক করেছিলেন বাজপেয়ী

    ১৯৬০ সালের ৩০ নভেম্বর সংসদে নেহরুর পাকিস্তানকে দেওয়া এই নয়া ‘উপহার’ নিয়ে বিতর্ক হয়। সেই সময় ছত্রিশ বছর বয়সি বলরামপুরের সাংসদ অটল বিহারী বাজপেয়ী তাঁর ভাষণে তথ্য, পরিসংখ্যান এবং যুক্তিজাল বিস্তার করে নেহরু সরকারকে কার্যত তুলোধনা করেন। সেই সময়ই বাজপেয়ী নেহরুকে এই বলে সতর্ক করেছিলেন যে, পাকিস্তানের প্রতি এই উদারতার খেসারত দিতে হবে ভারতের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে। মোদি সরকার চুক্তিটি স্থগিত করায়, নেহরু জমানায় নেওয়া কিছু আত্মঘাতী পদক্ষেপ এখন হয়তো উল্টে যাবে, অন্তত আংশিকভাবে হলেও।

    পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পাঁচ পদক্ষেপ

    পহেলগাঁওকাণ্ডের পরে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পাঁচটি পদক্ষেপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তাঁর প্রথম সিদ্ধান্তটি হল সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত রাখা। এটি মোদির তরফে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী কৌশলগত পদক্ষেপ (Pahalgam Attack)। পাকিস্তানের ওপর চাপ সৃষ্টির জন্য মোদি সরকারের কূটনৈতিক নীতির একটি মূল স্তম্ভ হিসাবে আইডব্লিউটিকে ব্যবহার করা তাঁর ধারাবাহিক কৌশল। এই প্রথম নয়, বরং এটি মোদির পঞ্চমবারের মতো প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে অপ্রত্যাশিত সময়ে আইডব্লিউটি ‘হাতিয়ার’ ব্যবহার (PM Modi)।

    আইডব্লিউটি অস্ত্র প্রয়োগ

    প্রশ্ন হল, আগের চারটি তাহলে কখন ছিল? এটা বোঝার জন্য মোদির তিনটি মেয়াদজুড়ে কাজকর্ম পর্যালোচনা করা প্রয়োজন। তাঁর প্রথম মেয়াদে মোদি পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষভাবে দুবার এই চুক্তির উল্লেখ করেন। দ্বিতীয় মেয়াদে ২০২৩ সালের ২৫ জানুয়ারি সরাসরি আর একবার এটি ব্যবহার করা হয়। বর্তমানে তৃতীয় মেয়াদে ২০২৪ সালের অগাস্ট ও এবার ২০২৫ সালের এপ্রিলে এটি ব্যবহার করা হল (Pahalgam Attack)। বুধবার পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী তাঁর তিনটি মেয়াদে পঞ্চমবারের মতো আইডব্লিউটি অস্ত্র প্রয়োগ করলেন। এই পাঁচটির মধ্যে কমপক্ষে তিনবারই বড় ধরনের জঙ্গি হামলার প্রেক্ষাপটে এই চুক্তির প্রসঙ্গ উঠেছে। বুধবারের পদক্ষেপটি আইডব্লিউটির ক্ষেত্রে মোদি সরকারের পঞ্চম গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। আগের ঘটনাগুলিতেও প্রধানমন্ত্রী স্পষ্টভাবে এই চুক্তির কথা উল্লেখ করেছিলেন। এটি একটি ক্রমবর্ধমান কৌশল, যেখানে প্রতিটি পদক্ষেপ আগেরটির চেয়ে এক ধাপ উচ্চতর (PM Modi)।

    প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে উরি সেক্টরে পাকিস্তানি হামলার পর প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, “রক্ত এবং জল একই সঙ্গে বইতে পারে না” (Pahalgam Attack)।

  • India’s ‘Aakraman’ Exercise: পহেলগাঁওয়ে ভয়াবহ হামলা, পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনার মাঝেই ভারতের ‘আক্রমণ’ মহড়া কিসের ইঙ্গিত?

    India’s ‘Aakraman’ Exercise: পহেলগাঁওয়ে ভয়াবহ হামলা, পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনার মাঝেই ভারতের ‘আক্রমণ’ মহড়া কিসের ইঙ্গিত?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসবাদী হামলার পর ভারত-পাকিস্তান (Indi – Pakistan) উত্তেজনা যখন চরমে, তখনই ভারতীয় বায়ুসেনা (IAF) শুরু করেছে এক বড় সামরিক মহড়া। যার নাম ‘আক্রমণ’। নামেই পরিষ্কার এই মহড়ার (India’s ‘Aakraman’ Exercise) উদ্দেশ্য ও বিধেয়। দেশের মধ্যাঞ্চলে শুরু হওয়া এই মহড়ার অংশ নিয়েছে বায়ুসেনার (Indian Air Force) তুখোড় যুদ্ধবিমানের বহর, যার নেতৃত্বে রয়েছে রাফাল ও সুখোই-৩০ এমকেআই স্কোয়াড্রন।

    নিয়মিত প্রস্তুতির অঙ্গ

    রাফাল স্কোয়াড্রন দুটি, আম্বালা ও হাসিমারা বায়ুসেনা ঘাঁটিতে মোতায়েন রয়েছে, সেখান থেকে বিমানগুলি এই মহড়ায় অংশ নিচ্ছে। পূর্বাঞ্চল থেকেও বেশ কিছু বিমান ও সেনা-সরঞ্জাম এই মহড়ার জন্য স্থানান্তরিত করা হয়েছে। বায়ুসেনার এক অফিসার জানিয়েছেন, “এটি নিয়মিত প্রস্তুতির অঙ্গ হলেও, পহেলগাঁওয়ে হামলার পর মহড়ার সময়সূচি তাৎপর্যপূর্ণ। রাফাল ও সুখোই বিমানগুলি নির্ভুল ভুমি-আক্রমণ ও ইলেকট্রনিক যুদ্ধাভিযান অনুশীলন করছে।” যদিও ভারত সরকার বলছে এটি একটি নিয়মিত প্রশিক্ষণ, তবে ইতিহাস বলছে অন্য কথা। অতীত বলছে, ২০২০ সালে লাদাখ সংঘাতের আগে চিন সীমান্তে একাধিক সামরিক মহড়া চালিয়েছিল। তার মাসখানেকের মধ্যেই গালওয়ান উপত্যকায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়, যাতে ২০ জন ভারতীয় সেনা শহিদ হন। চিনেরও প্রায় চল্লশিের বেশি সৈন্য নিহত হয়। আবার ২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের ঠিক আগে, তারা Zapad নামে বিশাল সামরিক মহড়া চালিয়েছিল, যেখানে ২ লক্ষ সেনা, ৮০টির বেশি বিমান, ১৫টি যুদ্ধজাহাজ অংশ নিয়েছিল। এইসব নজির ইঙ্গিত দেয় যে, ভারতের ‘আক্রমণ’ মহড়া নিছক ট্রেনিং নয়, বরং একটি কৌশলগত বার্তা—যেটি যেমন দেশের অভ্যন্তরীণ প্রতিরক্ষা প্রস্তুতির প্রতিফলন, তেমনি শত্রু পক্ষের কাছে একটি সতর্ক সংকেত।

    কেমন চলছে অনুশীলন

    এই মহড়ায় অংশ নিচ্ছে মিগ-২১, এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, AWACS (এয়ারবোর্ন ওয়ার্নিং অ্যান্ড কন্ট্রোল সিস্টেম), মিড-এয়ার রিফুয়েলার ও গরুড় কমান্ডোরা। মহড়ার অনুশীলনে সমতল এলাকা থেকে শুরু করে পার্বত্য অঞ্চলে আক্রমণের অনুশীলন করা হচ্ছে, যা বাস্তব অভিযানের অনুরূপ। সূত্রের খবর, ইস্টার্ন সেক্টর থেকে সেন্ট্রাল সেক্টরে অনেক বায়ুসেনার সরঞ্জাম পাঠানো হয়েছে। যেখানে এই মহড়ার আওতায় দূরদূরান্তে গিয়ে শত্রুর অবস্থানে সুনির্দিষ্ট বোমাবর্ষণ করা হচ্ছে। পাইলটরা বাস্তব যুদ্ধের পরিস্থিতিতে অনুশীলন করছেন, যাতে তাঁরা যুদ্ধের মতো পরিস্থিতিতে কাজ করার অভিজ্ঞতা পেতে পারেন।

    আরব সাগরে নৌ মহড়া শুরু

    মহড়ার ঠিক আগেই পাকিস্তান আরব সাগরে নৌ-মহড়া শুরু করে এবং ২৪ ও ২৫ এপ্রিল তারিখে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার জন্য এনওটিএএম (Notice to Airmen/Mariners) জারি করে। একই সময় ভারতীয় নৌবাহিনী আরব সাগরে গাইডেড মিসাইল ডেস্ট্রয়ার আইএনএস সুরাটের মাধ্যমে সফলভাবে একটি মিড-রেঞ্জ সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল (MR-SAM) উৎক্ষেপণ করে, যা তাদের প্রস্তুতি ও সক্ষমতার প্রমাণ দেয়।

    দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির অঙ্গীকার 

    পাকিস্তান ইতিমধ্যেই ভারতের বিরুদ্ধে নানা পাল্টা পদক্ষেপ করেছে—ভারতীয় উড়োজাহাজের জন্য আকাশসীমা বন্ধ, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থগিত এবং সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিতকে ‘যুদ্ধ ঘোষণার সমতুল্য’ বলে মনে করা হচ্ছে। তবে নয়াদিল্লি যে এ বার কঠোর অবস্থান নিয়েছে তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। তা স্পষ্ট করতে বিহারে এক সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বৃহস্পতিবার বলেন, “২৬ এপ্রিলের পহেলগাঁও হামলায় যারা নিহত হয়েছেন, তাদের রক্ত বৃথা যাবে না। ভারত প্রতিটি জঙ্গি ও তাদের মদতদাতাদের খুঁজে বার করবে এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেবে।”

    সক্রিয় প্রতিরোধে বিশ্বাস 

    পহেলগাঁওয়ে হামলায় সাতজন জঙ্গি শরিক ছিল, যাদের অধিকাংশই পাকিস্তানের লস্কর-ই-তৈবার (LeT) সাথে যুক্ত। তারা বডি-ক্যামেরা ও স্টিল কোর গোলাবারুদসহ একে-৪৭ নিয়ে পর্যটকদের লক্ষ্য করে হামলা চালায়, বিশেষত হিন্দু পুরুষদের টার্গেট করে। এরপরই ভারতের সামরিক মহড়া এবং কূটনৈতিক কৌশল থেকে স্পষ্ট—দেশ এখন আর প্রতিক্রিয়ার নীতিতে নয়, বরং সক্রিয় প্রতিরোধে বিশ্বাস করছে। ‘আক্রমণ’ মহড়া সেই বার্তাই বহন করছে। কেন্দ্রীয় সেক্টরে বর্তমানে যুদ্ধ মহড়া চলছে। এই মহড়ায় বিমান বাহিনীর পাইলটরা পাহাড়ি ও স্থল লক্ষ্যবস্তুতে হামলার অনুশীলন করছেন।

    থর মরুভূমিতে যুদ্ধ-প্রস্তুতি

    ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “২৫-২৬ এপ্রিল রাতে, পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর একাধিক পোস্ট থেকে কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ রেখা জুড়ে অপ্রীতিকরভাবে ছোট আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি চালানো হয়। ভারতীয় সেনারা ছোট আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে উপযুক্তভাবে জবাব দিয়েছে। এই ঘটনায় কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।” এই আবহে শুরু হয়েছে বায়ুসেনার আক্রমণ মহড়া, চলছে নৌসেনার প্রস্তুতি। একইসঙ্গে রাজস্থানে যুদ্ধ-প্রস্তুতি শুরু করেছে ভারতীয় সেনা। জয়পুরে সপ্তশক্তি কামান নিয়ে রাজস্থানের থর মরুভূমিতে পাক বর্ডারের কাছে যুদ্ধ-প্রস্তুতি। পাকিস্তানের সীমা অতিক্রম করে স্ট্রাইক ? এই যুদ্ধ-প্রস্তুতির মাধ্যমে। প্রতিপক্ষের সীমা অতিক্রম করে কীভাবে স্ট্রাইক করা যায়, তার জন্যই ভারতের এই যুদ্ধ-প্রস্তুতি। এই যুদ্ধ-প্রস্তুতিতে প্যারা-এসএফ কম্যান্ডোর সঙ্গে ট্যাঙ্ক ও স্পেশাল আর্মড ভেহিক্যালসের ব্যবহার করা হয়েছে। শত্রুদের এলাকা কব্জা করতে এই ট্যাঙ্কের ব্যবহার করা হয়, সূত্রের খবর। এরপর প্যারা কম্যান্ডো অপারেশনের পর ফিরে আসে।

  • India-Pak Simla Agreement: যুদ্ধের পথে পাকিস্তান! সিমলা চুক্তি স্থগিত, এখনও কেন গুরুত্বপূর্ণ এই সন্ধি?

    India-Pak Simla Agreement: যুদ্ধের পথে পাকিস্তান! সিমলা চুক্তি স্থগিত, এখনও কেন গুরুত্বপূর্ণ এই সন্ধি?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে ২৬ জন পর্যটকের প্রাণ কেড়ে নেওয়া ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক নতুন করে তলানিতে পৌঁছেছে। ভারতের কঠোর পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান বৃহস্পতিবার ঘোষণা করেছে যে, তারা ১৯৭২ সালের সিমলা চুক্তি (Simla Agreement) সহ ভারতের সঙ্গে সমস্ত দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্থগিত করা হচ্ছে।

    সিমলা চুক্তি কী

    ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে যুদ্ধের পর ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে সিমলা চুক্তি (India-Pak Simla Agreement) স্বাক্ষরিত হয়। ওই চুক্তি মূলত একটি শান্তিচুক্তি, যার আওতায় নিয়ন্ত্রণরেখার দুই তরফে শান্তি বজায় রাখতে অঙ্গীকারবদ্ধ হয় দুই দেশ। ১৯৭২ সালের ২ জুলাই, হিমাচলপ্রদেশের সিমলায় ভারতের তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী এবং পাকিস্তানের তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী জুলফিকর ভুট্টোর মধ্যে চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়। ভারত-পাকিস্তান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ভিত্তিপ্রস্তর হিসেবে গণ্য হয় এই চুক্তি। এর ফলে যুদ্ধ ভুলে দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক সৌজন্য বজায় রাখার পাশাপাশি, সীমান্ত সংলগ্ন অঞ্চলে শান্তি টিকিয়ে রাখতে সম্মত হয় দুই দেশ।

    চুক্তিতে কী ছিল

    ● দুই দেশের পারস্পরিক সম্পর্কে মধ্যস্থতা করবে রাষ্ট্রপুঞ্জ।

    ● যাবতীয় সংঘাত, মতানৈক্য শান্তিপূর্ণ পদ্ধতিতে মেটাবে দুই দেশ, পারস্পরিক বোঝাপড়াকে প্রাধান্য দেওয়া হবে।

    ● কোনও পক্ষ শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতিতে বিঘ্ন ঘটাবে না, কোনও সংগঠন বা গোষ্ঠী শান্তি ও সম্প্রীতি ভঙ্গ করতে চাইলে, তা রুখবে।

    ● প্রতিবেশী দেশ হিসেবে শান্তিপূর্ণ অবস্থান, পরস্পরের আঞ্চলিক অখণ্ডতা ও সার্বভৌমিকতাকে সম্মান জানাবে দুই দেশ। একে অপরের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলাবে না।

    ● রাষ্ট্রপুঞ্জের বিধি মেনে কেউ কাউকে হুমকি দেবে না, কেউ কারও আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং রাজনৈতিক স্বাধীনতার উপর বলপ্রয়োগ করবে না।

    ● ওই চুক্তি মেনে যুদ্ধের সময় পাকিস্তানের যে ১৩০০০ বর্গকিলোমিটার জায়গা ভারত দখল করেছিল, তা ফিরিয়ে দেওয়া হয়। যদিও কৌশলগত ভাবে গুরুত্বপূর্ণ টুরটুক এবং চালুঙ্কা ধরে রাখে ভারত।

    ● আর এই সিমলা চুক্তির পরই স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয় পাকিস্তান, যার নেপথ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ভারত।

    চুক্তির পরবর্তী প্রভাব 

    চুক্তিটি (India-Pak Simla Agreement) একটি কূটনৈতিক কাঠামো তৈরি করলেও ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক চিরস্থায়ী শান্তি দেখেনি। সিয়াচেন সংঘর্ষ (১৯৮৪), কারগিল যুদ্ধ (১৯৯৯) এবং নিয়মিত সীমান্ত উত্তেজনা প্রমাণ করে যে, সিমলা চুক্তির প্রতিশ্রুতি অনেক ক্ষেত্রেই বাস্তবায়িত হয়নি। ভারত আজও সিমলা চুক্তিকে আন্তর্জাতিক ফোরামে তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতা প্রত্যাখ্যানের ভিত্তি হিসেবে ব্যবহার করে। পাকিস্তান কখনো কখনো কাশ্মীর ইস্যুতে আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ চায়, যা এই চুক্তির ব্যাখ্যা নিয়ে মতানৈক্য সৃষ্টি করে।

    চুক্তির স্থগিতকরণ কতটা গুরুত্বপূর্ণ

    পাকিস্তানের তরফ থেকে সিমলা চুক্তি স্থগিতের ঘোষণা দক্ষিণ এশিয়ার কূটনীতিতে একটি বড় ধাক্কা। এটি একদিকে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশঙ্কা তৈরি করছে, অন্যদিকে দীর্ঘদিন ধরে স্থিতিশীলতার প্রতীক হিসেবে থাকা একটি ঐতিহাসিক চুক্তির কার্যকারিতা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। যদিও চুক্তিটি অনেক সময়েই উপেক্ষিত হয়েছে, তবু এটি দুই দেশের সম্পর্কের মৌলিক কাঠামো হিসেবে গণ্য ছিল। বর্তমান পরিস্থিতিতে এই চুক্তির ভবিষ্যৎ ও উপযোগিতা নিয়ে ফের একবার আলোচনা শুরু হয়েছে।

  • Pahalgam Terror Attack: পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার তীব্র নিন্দা আরব মুলুকের, কে কী বলল?

    Pahalgam Terror Attack: পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার তীব্র নিন্দা আরব মুলুকের, কে কী বলল?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দক্ষিণ কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের ওপর জঙ্গি হামলার (Pahalgam Terror Attack) তীব্র নিন্দা করেছে আরব বিশ্বের (Arab World) বিভিন্ন দেশ। মঙ্গলবারই দু’দিনের সৌদি আরব সফরে গিয়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেদিনই দুপুরে পহেলগাঁওয়ে বেছে বেছে হিন্দু পর্যটকদের গুলি করে হত্যা করা হয়। জঙ্গি হামলায় এক নেপালি-সহ মোট ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে আরব বিশ্বের বিভিন্ন দেশ।

    কুয়েতের প্রতিক্রিয়া (Pahalgam Terror Attack)

    কুয়েতের ক্রাউন প্রিন্স, সাবাহ খালেদ আল হামাদ আল সাবাহ পহেলগাঁওয়ে মর্মান্তিক প্রাণহানির জন্য বুধবারই রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে। দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন আহতদের। সৌদি আরবের বিদেশমন্ত্রকও এই হামলার নিন্দা করে জারি করেছে বিবৃতি। তাতে বলা হয়েছে, “সব ধরনের হিংসা, চরমপন্থা এবং অসামরিক নাগরিকদের টার্গেটে পরিণত করার ক্ষেত্রে সৌদি আরব তার দৃঢ় অবস্থান নিশ্চিত করে।” বিবৃতিতে এও বলা হয়েছে, “ভুক্তভোগীদের পরিবার ও ভারত প্রজাতন্ত্রের সরকার ও জনগণের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা ও সহানুভূতি প্রকাশ করা হচ্ছে।”

    সৌদি আরবের প্রতিক্রিয়া

    প্রধানমন্ত্রীর সৌদি আরব সফরের সময় দুই দেশই সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে তাদের ঐক্যবদ্ধ অবস্থান জানিয়ে দিয়েছে। বিদেশমন্ত্রকের তরফে জারি করা এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “উভয় পক্ষ ২০২৫ সালের ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের পহলেগাঁওয়ে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে, যেখানে নিরীহ অসামরিক নাগরিকদের প্রাণহানি ঘটেছে।” বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “যে কোনও কারণেই হোক না কেন, কোনও জঙ্গি কর্মকাণ্ডের কোনও যুক্তিসঙ্গত কারণ থাকতে পারে না। উভয় পক্ষই সন্ত্রাসবাদকে কোনও নির্দিষ্ট জাতি, ধর্ম বা সংস্কৃতির সঙ্গে যুক্ত করার যে কোনও প্রচেষ্টা প্রত্যাখ্যান করেছে এবং জোর দিয়ে বলেছে যে সন্ত্রাসবাদ এবং সকল ধরণের সহিংস চরমপন্থা মানবতার জন্য সবচেয়ে গুরুতর হুমকির মধ্যে রয়েছে (Pahalgam Terror Attack)।”

    জঙ্গি হামলার কড়া নিন্দা করেছে সংযুক্ত আরব আমিরশাহিও। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে তারা জানিয়েছে, “সংযুক্ত আরব আমিরশাহি এই অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা করছে এবং আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করার লক্ষ্যে সকল ধরণের হিংসা ও সন্ত্রাসবাদকে স্থায়ীভাবে প্রত্যাখ্যান করছে (Arab World)।” সংযুক্ত আরব আমিরশাহি ভারত সরকার ও জনগণের পাশাপাশি নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনাও জানিয়েছে এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছে (Pahalgam Terror Attack)।

  • Pahalgam Attack: পহেলগাঁওকাণ্ডের জের, পাকিস্তানকে ‘ভাতে’ মারতে পাঁচ পদক্ষেপ ভারতের

    Pahalgam Attack: পহেলগাঁওকাণ্ডের জের, পাকিস্তানকে ‘ভাতে’ মারতে পাঁচ পদক্ষেপ ভারতের

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পহেলগাঁওকাণ্ডের (Pahalgam Attack) পর এবার পাকিস্তানকে আক্ষরিক অর্থেই ভাতে মারতে উদ্যোগী হল ভারত। মঙ্গলবার দুপুরে পহেলগাঁওয়ে গুলি করে খুন করা হয়েছে এক নেপালি-সহ ২৮ জনকে। এঁদের মধ্যে ২৭ জনই হিন্দু। পর্যটকরা হিন্দু কিনা তা জেনেই, তার পরে (Indus Waters Treaty) গুলি করে জঙ্গিরা। পাক-মদতপুষ্ট এই জঙ্গিদের খোঁজে উপত্যকাজুড়ে চলছে তল্লাশি।

    কূটনৈতিক ও কৌশলগত পদক্ষেপ (Pahalgam Attack)

    পর্যটকদের ওপর হামলার কারণে এবার মোদি সরকার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক ও কৌশলগত পদক্ষেপ ঘোষণা করেছে। নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রিসভার কমিটি কর্তৃক অনুমোদিত এই পদক্ষেপগুলির জেরে পাকিস্তান যে ঘোর বিপাকে পড়বে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বুধবার রাতে নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষ হয় রাত ৯টা নাগাদ। তার পরেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন বিদেশ সচিব বিক্রম মিস্রি। তিনিই জানান, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে নেওয়া পাঁচটি পদক্ষেপের কথা। বিদেশ সচিব জানান, জম্মু-কাশ্মীরে সম্প্রতি সফলভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপত্যকায় উন্নতি হচ্ছে। অর্থনৈতিক অগ্রগতি হচ্ছে। সেই আবহে এই হামলা।

    প্রথম পদক্ষেপ – সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত

    ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যে পাঁচটি প্রধান পদক্ষেপ করেছে, তার মধ্যে সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল ভারত ১৯৬০ সালের সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত করার সিদ্ধান্ত। বিশ্বব্যাঙ্কের মধ্যস্থতায় ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে এই চুক্তি হয়েছিল। এই চুক্তি অনুযায়ী, ভারত পূর্বাঞ্চলীয় নদীগুলির – রবি, বিয়াস ও শতদ্রুর জল নিয়ন্ত্রণ করে। অন্যদিকে, পাকিস্তান পশ্চিমাঞ্চলীয় নদীগুলির সিন্ধু, ঝিলাম ও চেনাব নদীর ওপর অধিকার কায়েম রাখে। তবে এই তিন নদীর সীমিত জল ব্যবহারের অধিকার ভারতের রয়েছে। ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে একাধিক যুদ্ধ এবং উত্তেজনার আবহেও এই চুক্তি টিকে ছিল দশকজুড়ে। এই চুক্তিটি আপাতত স্থগিত করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। শর্ত হল, পাকিস্তানকে বিশ্বাসযোগ্য ও অপরিবর্তনীয়ভাবে সীমান্ত-পার সন্ত্রাসবাদে সমর্থন জোগানো বন্ধ করতে হবে। ১৯৬০ সালে স্বাক্ষরিত হয়েছিল সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি। ভারত সরকারের সিদ্ধান্ত হল, যত দিন না পাকিস্তান আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসের প্রতি তার সমর্থন প্রত্যাহার করছে, ততদিন এই চুক্তি স্থগিত থাকবে (Pahalgam Attack)।

    দ্বিতীয় পদক্ষেপ – আটারি চেক পোস্ট বন্ধ

    ভারত-আটারি ইন্টিগ্রেটেড চেক পোস্ট বন্ধ করে দিয়েছে। এর ফলে এই পথে সব ধরনের সীমান্ত পারাপার বন্ধ হয়েছে। এতে মানুষ ও পণ্য চলাচলও স্থগিত করা হয়েছে। যারা ইতিমধ্যেই বৈধ নথিপত্র নিয়ে সীমান্ত পার হয়ে ভারতে এসেছেন, তাঁদের ২০২৫ সালের ১ মে-র মধ্যে ফিরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে। এই প্রধান স্থলবন্দর বন্ধের উদ্দেশ্য হল, ভবিষ্যতে সীমান্ত পারাপার আরও সীমিত করা এবং পাকিস্তানের প্রতি কঠোর বার্তা পাঠানো (Indus Waters Treaty)।

    তৃতীয় পদক্ষেপ – পাকিস্তানিদের সার্ক ভিসা বাতিল

    তৃতীয় পদক্ষেপ হিসেবে সার্ক ভিসা অব্যাহতি প্রকল্পের অধীনে কোনও পাকিস্তানিকে আর ভারতে ঢুকতে দেওয়া হবে না। আগে এই ভিসায় ভারতে আসার জন্য পাকিস্তানিদের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সেই সব অনুমতিই বাতিল করে দেওয়া হচ্ছে। এই ভিসা প্রকল্পের অধীনে যে সব পাক নাগরিক এখনও ভারতে রয়েছেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাঁদের ভারত ছাড়তে হবে। প্রসঙ্গত, সার্ক ভিসা অব্যাহতি প্রকল্প হল সার্কের সদস্য দেশগুলির মধ্যে স্বাক্ষরিত একটি বিশেষ চুক্তি, যার মাধ্যমে ব্যক্তিগত ভিসা ছাড়াও বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, মলদ্বীপ এবং শ্রীলঙ্কা – এই সাত দেশের মধ্যে যাতায়াত করতে পারেন নাগরিকরা। পাকিস্তানের ক্ষেত্রে তুলে নেওয়া হচ্ছে এই অনুমতি (Pahalgam Attack)।

    চতুর্থ পদক্ষেপ – দূতাবাস কর্তাদের নির্দেশ

    চতুর্থ পদক্ষেপ হিসেবে ইসলামাবাদে উপস্থিত ভারতীয় দূতাবাস থেকে প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা, নৌ উপদেষ্টা এবং বায়ু উপদেষ্টাকে ফিরিয়ে নিচ্ছে ভারত। তুলে নেওয়া হচ্ছে তাঁদের সহকারিদেরও। একই সঙ্গে নয়াদিল্লিতে অবস্থিত পাকিস্তানি দূতাবাসে প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা, নৌ উপদেষ্টা এবং বায়ু উপদেষ্টাকে ‘পার্সোনা নন গ্রাতা’ অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হচ্ছে। ভারত ছাড়ার জন্য তাঁদের এক সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়েছে (Indus Waters Treaty)।

    পঞ্চম পদক্ষেপ – দূতবাসে কর্মী সংকোচন

    পঞ্চম পদক্ষেপ হিসেবে পাকিস্তানে থাকা ভারতীয় দূতাবাসের সদস্য সংখ্যা ৫৫ থেকে কমিয়ে ৩০ করা হচ্ছে। চলতি বছরের ১ মে থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হবে (Pahalgam Attack)।

    প্রসঙ্গত, এদিনের ক্যাবিনেট কমিটি অন সিকিউরিটির সভায় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল-সহ সরকারের পদস্থ কর্তারা। এই সভায়ই বর্তমান নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যালোচনা ও জঙ্গি হামলার বিরুদ্ধে ভারতের প্রতিক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করা হয়। পহেলগাঁওয়ে হামলার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করতে ভারতীয় সেনা ও পুলিশ ব্যাপক অভিযান শুরু করেছে। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, সাতজন জঙ্গির একটি দল এই হামলা চালায় (Indus Waters Treaty)। এদের মধ্যে কয়েকজন পাকিস্তানিও ছিল (Pahalgam Attack)।

  • Two Nation Theory: দ্বিজাতি তত্ত্বের আড়ালে ঐক্যবদ্ধ মুসলিম ব্লক গঠনের চেষ্টা পাক সেনা প্রধানের! তুলোধনা ভারতের

    Two Nation Theory: দ্বিজাতি তত্ত্বের আড়ালে ঐক্যবদ্ধ মুসলিম ব্লক গঠনের চেষ্টা পাক সেনা প্রধানের! তুলোধনা ভারতের

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পাক সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আসিম মুনির দ্বি-জাতি তত্ত্বের (Two Nation Theory) প্রচার করছেন। পাকিস্তানিরা হিন্দুদের থেকে “ভিন্ন”– এমন মন্তব্যও করছেন। তাঁর এহেন বক্তব্য প্রমাণ করে যে তিনি একটি গভীরভাবে হতাশ এবং একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রের জেনারেল হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। সংবাদ মাধ্যমে এমনই প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন ভারত সরকারের এক শীর্ষ কর্তা। তিনি জানিয়েছেন, মুনিরের সাম্প্রতিক হিন্দুবিরোধী বক্তব্যকে অভ্যন্তরীণ রাজনীতি, আঞ্চলিক উত্তেজনা এবং ভারতের ওয়াকফ আইন সংশোধনের সময়ের প্রেক্ষাপটে দেখা উচিত। তিনি ভারতের বিরুদ্ধে একটি ঐক্যবদ্ধ মুসলিম ব্লক গঠন করতে চাইছেন, যেখানে মৌলবাদী, চরমপন্থী ও জঙ্গিদের আক্রমণ চালানোর আহ্বান জানানো হচ্ছে।

    পাক সেনা প্রধানের লক্ষ্য (Two Nation Theory)

    ওই কর্তা বলেছেন, ‘‘মুনিরের বক্তব্যের লক্ষ্যই হল লস্কর ও জইশের মতো পাকিস্তানের দেশি জঙ্গি গোষ্ঠীগুলিকে ভারত ও হিন্দু শক্তির বিরুদ্ধে সক্রিয় করতে উদ্বুদ্ধ করা। তাঁর মতে, মুনিরের কাহিনিটি হিন্দু-মুসলিম সভ্যতাগত পার্থক্যকে তুলে ধরার ওপর নির্ভরশীল এবং এই বিভাজনে পাকিস্তানকে নেতৃত্বের অবস্থানে স্থাপন করা হয়েছে। ভারতকে মুসলিমদের নিপীড়ক হিসেবে তুলে করে তিনি ভারতের বৈশ্বিক অবস্থানকে দুর্বল করতে চাইছেন। এই কৌশলটি ভারতকে একটি গুরুত্বপূর্ণ হুমকি হিসেবে উপস্থাপন করে বালুচিস্তানের বিদ্রোহের মতো অভ্যন্তরীণ সংকট থেকে মনোযোগ সরানোর কাজেও ব্যবহৃত হচ্ছে।’’

    কাশ্মীর দখলকে অবৈধ!

    কেন্দ্রের ওই কর্তার মতে, ‘ভারত কাশ্মীর দখল করেছে’ দাবি করে মুনির পাকিস্তানের সামরিক অবস্থানকে বিশ্বব্যাপী মুসলিম সংহতির সঙ্গে একাত্ম করেছেন, যা গাজায় প্যালেস্তাইনিদের প্রতি তাঁর সমর্থনেরই প্রতিফলন। ওই কর্তার মতে, ‘‘এটি এমন সময়ে এসেছে যখন পাকিস্তানের শাসনব্যবস্থার ব্যর্থতা ক্রমেই প্রকাশ্যে আসছে। মুনির নিজেকে বিশ্বব্যাপী মুসলিম স্বার্থের রক্ষক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছেন (India)।’’

    ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ণ করা

    ভারত সরকারের ওই কর্তা আরও জানান, ভারতের সংশোধিত ওয়াকফ আইন এবং বর্তমানে ঘটে চলা বিক্ষোভের সময় কৌশলগতভাবে মুনির এই বক্তব্য রাখছেন, যাতে সাম্প্রদায়িক বিভাজনের (Two Nation Theory) ন্যারেটিভগুলিকে শক্তিশালী করে ভারতকে মুসলিমবিরোধী হিসেবে দেগে দেওয়া যায়। তিনি বলেন, ‘‘ওয়াকফ ইস্যুর টানাপোড়েনকে কাজে লাগিয়ে মুনিরের লক্ষ্য, ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ণ করা, এবং এর পাশাপাশি ভারত ও বাংলাদেশে ইসলামপন্থী গোষ্ঠীগুলিকে উৎসাহিত করা। অভ্যন্তরীণভাবে, তিনি (মুনির) এমন এক পরিস্থিতিতে নিজের অবস্থান পাকাপোক্ত করতে চাইছেন যেখানে নির্বাচিত সরকারের মেয়াদের সঙ্গেই সেনাপ্রধানের দায়িত্বকাল শেষ হয়। তাঁর এই বক্তব্য উগ্রবাদী ভোটার ও ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলোর কাছে সামরিক বাহিনীর ভূমিকাও শক্তিশালী করছে। মুনিরের বক্তব্য বৃহত্তর ভূ-রাজনৈতিক কৌশলের অংশ, যেখানে বাংলাদেশের সঙ্গে চাল আমদানি ফের শুরু ও উচ্চপর্যায়ের সফর বজায় রেখে সম্পর্ক জোরদারের চেষ্টা চলছে নিরন্তর।’’

    জাতির জন্মকাহিনি

    প্রসঙ্গত, বুধবার ইসলামাবাদে (Two Nation Theory) পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূতদের সম্মেলনে ভাষণ দিতে গিয়ে মুনির বলেন, “প্রতিটি পাকিস্তানি নাগরিকের উচিত তাদের সন্তানদের কাছে জাতির জন্মকাহিনি বর্ণনা করা। তিনি বলেন, “আপনাদের সন্তানদের কাছে পাকিস্তানের গল্প বলতে হবে, যাতে তারা ভুলে না যায় কীভাবে আমাদের পূর্বপুরুষরা জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে নিজেদের হিন্দুদের থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন মনে করতেন।” তিনি বলেন, “আমাদের দেশের রাষ্ট্রদূতদের ভুলে যাওয়া উচিত নয় যে তাঁরা একটি উন্নততর ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির ধারক। আপনাদের অবশ্যই আপনার সন্তানদের কাছে পাকিস্তানের গল্প বলা উচিত। আমাদের পূর্বপুরুষরা ভাবতেন যে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আমরা হিন্দুদের থেকে আলাদা। আমাদের ধর্ম, আমাদের রীতিনীতি, ঐতিহ্য, চিন্তাভাবনা এবং উচ্চাকাঙ্খা পৃথক। এটাই ছিল দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তি (India)।”

    “পাকিস্তানের নিয়তি”

    বালুচিস্তানে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করে সেনাপ্রধান এ অঞ্চলকে “পাকিস্তানের নিয়তি” বলে আখ্যায়িত করেন। তিনি বলেন, “জঙ্গিদের আগামী দশ প্রজন্মও বালুচিস্তান ও পাকিস্তানের ক্ষতি করতে পারবে না।” তিনি বলেন, “কাশ্মীর হল ইসলামাবাদের গলার শিরা। তাই পাকিস্তানিরা কখনওই তাকে ভুলতে পারবে না।” বালুচ বিদ্রোহীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “বালুচিস্তান পাকিস্তানের গর্ব! তোমরা এত সহজেই এটা কেড়ে নেবে?” তিনি বলেন, “আপনাদের কি মনে হয় জঙ্গিরা পাকিস্তানের ভাগ্য নির্ধারণ করবে? ভারতের সেনার সংখ্যা ১৩ লাখের (India) বেশি। তবুও আমরা তাদের পরোয়া করি না। জঙ্গিরা তো কোন ছার (Two Nation Theory)!”

  • India Pakistan Relation: ‘পাকিস্তানের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ শান্তির পথে সবচেয়ে বড় বাধা’, বলল বিদেশ মন্ত্রক

    India Pakistan Relation: ‘পাকিস্তানের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ শান্তির পথে সবচেয়ে বড় বাধা’, বলল বিদেশ মন্ত্রক

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ভারতীয় ভূখণ্ডে অবৈধ ও জোর করে দখলে রাখা এলাকা ছেড়ে দিক পাকিস্তান (India Pakistan Relation)। তাহলেই সীমান্তে শান্তি ফিরবে। পাকিস্তানের কাশ্মীর সম্পর্কিত মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে, বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এই কথা বলেন। তাঁর দাবি, পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদে সহায়তা প্রদান শান্তি ও নিরাপত্তার পথে সবচেয়ে বড় বাধা। পাকিস্তানই সন্ত্রাসবাদের আখড়া! সন্ত্রাসবাদের যে বীজ পাকিস্তান বপন করেছে, তার ফল তাদেরকে ভুগতে হচ্ছে, বলে জানান রণধীর।

    পাকিস্তানের বিশ্বাসঘাতকতা

    সম্প্রতি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক মার্কিন পডকাস্টে পাকিস্তানের (India Pakistan Relation) সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করার প্রচেষ্টার কথা শেয়ার করেন। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী পদে প্রথম শপথ গ্রহণের সময় তখনকার পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকে আমন্ত্রণ করেছিলেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী মোদি উল্লেখ করেন যে, শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য তাঁর প্রতিটি প্রচেষ্টা শত্রুতা ও বিশ্বাসভঙ্গের শিকার হয়েছে। তিনি বলেন, “আমি ব্যক্তিগতভাবে শান্তির উদ্দেশ্যে লাহোরে গিয়েছিলাম। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর, আমি বিশেষভাবে পাকিস্তানকে আমার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম, যেন আমরা একটি নতুন অধ্যায় শুরু করতে পারি। তবুও, শান্তির প্রতি আমার প্রতিটি মহৎ প্রচেষ্টা শত্রুতা ও বিশ্বাসভঙ্গের মুখে পড়েছিল।” কিন্তু এই পডকাস্ট প্রচারের পর পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রক ভারতের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনে। পাক বিদেশমন্ত্রকের দাবি, ভারত রেষারেষি করছে। পাক-ভূমে সন্ত্রাসকে মদত দিচ্ছে দিল্লি। পাকিস্তান দাবি করেছে যে, বালোচ বিদ্রোহীরা জাফর এক্সপ্রেস ট্রেন হামলার সঙ্গে জড়িত ছিল এবং তারা আফগানিস্তানের রিং লিডারদের সঙ্গে যোগাযোগে ছিল। ভারত এই ঘটনার মজা নিয়েছে।

    গুজব ছড়ানোর প্রয়াস

    পাকিস্তানের (India Pakistan Relation) বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র শাফকত আলি খান দাবি করেছিলেন, “ভারত পাকিস্তানে সন্ত্রাসী কার্যকলাপে জড়িত। বিশেষত, জাফর এক্সপ্রেস হামলায়, সন্ত্রাসীরা তাদের হ্যান্ডলারদের এবং রিং লিডারদের সঙ্গে আফগানিস্তানে যোগাযোগ করেছিল।” ভারত এই অভিযোগ সম্পূর্ণ খারিজ করেছে। দিল্লির তরফে রণধীর জয়সওয়াল বলেন, “আমরা পাকিস্তানের মিথ্যা অভিযোগগুলো অস্বীকার করছি। পৃথিবী জানে, বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসবাদের উৎস কোথায়। পাকিস্তানকে অন্যদের ওপর দোষ চাপানোর বদলে নিজেদের ভেতরে দেখতে হবে।” বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, ‘‘পাকিস্তানের দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং বিদ্বেষে ভরা। ভারত-বিরোধী প্রচার চালানোর এটি একটি নবতম পন্থা। সারা বিশ্ব জানে, পাকিস্তান দীর্ঘ দিন ধরে সন্ত্রাসবাদ, সংগঠিত অপরাধ এবং অবৈধ আন্তর্দেশীয় কার্যকলাপের কেন্দ্রস্থল। পাকিস্তান যেমন বীজ বপন করবে, তেমন ফসলই পাবে।’’

    কাশ্মীর নিয়ে ভুল তথ্য প্রচার

    রণধীর দাবি করেন, পাকিস্তান (India Pakistan Relation) গুজব না ছড়িয়ে বরং জোর করে ভারতের যে যে জায়গা তারা দখল করে রেখেছে তার ওপর থেকে সরে যাক। পাক দখলীকৃত জায়গা দিল্লিকে ফিরিয়ে দিলেই, ভারত সেখানে উন্নয়নের জোয়ার আনবে। সম্প্রতি কাশ্মীর প্রসঙ্গে বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর বলেছেন, ‘আমরা সবাই সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতার কথা বলি। বিশ্বের বিভিন্ন নিয়মের মধ্যে যা সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে অন্য কোনও দেশের এলাকায় সবথেকে দীর্ঘ অবৈধ উপস্থিতির সাক্ষী রয়েছে ভারতের কাশ্মীর।’ কাশ্মীর প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপুঞ্জ এবং পশ্চিমী বিশ্বের ভূমিকায় অসন্তুষ্ট জয়শঙ্কর বলেন, ‘আমরা ইউনাইটেড নেশনসে গিয়েছি। কাশ্মীরের একাংশ দখলের ঘটনাকে বিতর্ক বলে দাবি করা হচ্ছে। তাহলে অপরাধী কে? ব্রিটেন, কানাডা, বেলজিয়াম, অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকা? আমাকে ক্ষমা করবেন। ওই বিষয়ে আমার এই রকম অনেক প্রশ্ন আছে।’ এর পরই রাষ্ট্রপুঞ্জের ভূমিকা শক্তিশালী করে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘আমরা চাই শক্তিশালী রাষ্ট্রপুঞ্জ। কিন্তু শক্তিশালী রাষ্ট্রপুঞ্জের দরকার নিরপেক্ষতা। শক্তিশালী গ্লোবাল অর্ডারে কিছু বেসিক স্ট্যান্ডার্ড বজায় রাখতে হবে। অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা যেমন দরকার, তেমন আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলারও প্রয়োজন।’

    ভারতকে দোষারোপের কারণ নেই

    বিদেশমন্ত্রীর দাবিকে মান্যতা দিয়ে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, ভারত (India Pakistan Relation) এবং অন্যান্য অনেক দেশ প্রকাশ্যে পাকিস্তানকে এই বলে বারবার সতর্ক করেছে যে, সন্ত্রাস এবং হিংসার সংস্কৃতির কারণে তারা নিজেদেরই ক্ষতি করছে। পাকিস্তানের নিজস্ব কর্মকাণ্ডের জন্য ভারতকে দোষারোপ করা কোনও যুক্তিযুক্ত সমাধান হতে পারে না বলেও মন্তব্য করেছে বিদেশ মন্ত্রক। দিল্লির দাবি, অন্যের দিকে আঙুল তোলা এবং অভ্যন্তরীণ সমস্যার জন্য বহিরাগত শক্তিকে দোষারোপ করার পরিবর্তে পাকিস্তানের আত্মসমালোচনা করা উচিত।

LinkedIn
Share