Category: পরম্পরা

Get updated History and Heritage and Culture and Religion related news from the Madhyom news portal madhyom.com, West Bengal leading news portal Madhyom.com

  • Ramakrishna 470: শ্রীরামকৃষ্ণ (মাস্টারের প্রতি) — “হ্যাঁগা, আমার কি অপরাধ হল?

    Ramakrishna 470: শ্রীরামকৃষ্ণ (মাস্টারের প্রতি) — “হ্যাঁগা, আমার কি অপরাধ হল?

    গিরিশ, মাস্টার প্রভৃতির প্রতি —
    “আমার বালক স্বভাব। হৃদয় বললে, মাথা, মস্তক কিছু স্থির কথা বলে, — আমাতে মাথা বলে চলল না! এমন অবস্থায় রয়েছে যে, যে ব্যক্তির কাছে থাকবে তার কথা শুনতে হবে। ছোট ছেলেদের যেমন আছে লোক না থাকলে অন্ধকার দেখে — আমারও সেইরূপ হত! হৃদয়ে কাছে না থাকিলে প্রাণ যায় যায় হত। ওই দেখো! ওই ভাবটা আসছে!… কথা কইতে কইতে উদ্দীপন হয়।”

    এই কথা বলিতে বলিতে ঠাকুর ভাবাবিষ্ট হয়েছেন। দেশ কাল বোধ চলিয়া গিয়াছে। অতি কষ্টে ভাব সংবরণ করিতে চেষ্টা করিতেছেন। ভাব বলিতেছেন, “এখনও তোমাদের দেখিতেছি, — কিন্তু বোধ হচ্ছে যেন চিরকাল তোমার বনে আছি, কখন এসেছি, কোথায় এসেছি এ-সব কিছু মনে নাই।”

    ঠাকুর কিঞ্চিৎকাল প্রকৃতিস্থ হইয়া বলিতেছেন, “জল খাব।”
    সমাধিভঙ্গের পর মন নামাযিবার জন্য ঠাকুর এই কথা প্রায় বলিয়া থাকেন। গিরিশ নতুন আসিতেছেন, জানেন না তাই জল আনিতে উদ্দত ইলিশেন। ঠাকুর বারণ করিতেছেন আর বলিতেছেন, “না বাপু, এখন খেতে পারব না।”

    অল্পক্ষণকাল চুপ করিয়া আছেন। এবার ঠাকুর কথা কইতেছেন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (মাস্টারের প্রতি) —
    “হ্যাঁগা, আমার কি অপরাধ হল? এ-সব (গুরুতর) কথা বলা?”

    মাস্টার কি বলিবেন চুপ করিয়া আছেন। তখন ঠাকুর আবার বলিতেছেন, “না, অপরাধ কেন হবে, আমি লোকের বিস্ময়স্বরূপ জন্য বলিতেছি।” কিন্তু পরে যেন কত অনুতাপ করিয়া বলিতেছেন, “ওদের সঙ্গে দেখা করিয়ে দেবে?” (অর্থাৎ পূর্বের সঙ্গে)

    মাস্টার (সঙ্কুচিতভাবে) —
    “আজ্ঞে, এক্ষুণি খবর পাঠাব।”

    শ্রীরামকৃষ্ণ (সাহসে) —
    “ওইখানে খুঁজে মিলছে।”

    ঠাকুর কি বলিতেছেন যে অল্পর দণ্ডের ভিতর পূর্ণ শেষ দণ্ড, তাই আর পর প্রায় কেহ নাই?

    ১. নাম্মামহর্ষিসঙ্গমে।
    ২. কৃষ্ণকুমারী — বলরামের বালিকা কন্যা।

  • Vishwakarma Puja: ভোক্কাট্টা! বিশ্বকর্মা পুজোয় ঘুড়ি ওড়ানো হয় কেন? কবে থেকে বাংলায় শুরু হয় এই রীতি?

    Vishwakarma Puja: ভোক্কাট্টা! বিশ্বকর্মা পুজোয় ঘুড়ি ওড়ানো হয় কেন? কবে থেকে বাংলায় শুরু হয় এই রীতি?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আজ বিশ্বকর্মা পুজো (Vishwakarma Puja)। আর বিশ্বকর্মা তথা দেবশিল্পীর পুজো মানেই দুর্গাপুজোর ফাইনাল কাউন্টডাউন শুরু। এদিন ঘুড়ি ওড়ানোর (Kite Flying) উৎসবও। নীল আকাশের বুকে কেবলই রং-বেরঙের ঘুড়ির মেলা। একটা সময় ছিল, যখন মানুষের ব্যস্ততা এত বিরামহীন ছিল না। সেই সময় কলকাতা মায় বাংলার আকাশে বিশ্বকর্মা পুজোর কয়েকদিন আগে থেকেই আকাশের দখল নিত ঘুড়ি। পুজোর দিন তো ভোর থেকেই বাচ্চা থেকে বয়স্ক— নাটাই-মাঞ্জাসুতো হাতে সকলে মেতে উঠত ঘুড়ির প্যাঁচের প্রতিযোগিতায়। সকাল থেকে বিকেল আকাশের দখল নিত ঘয়লা, পেটকাটি, চাপরাস, চাঁদিয়াল, মোমবাতি, ময়ূরপঙ্খী, বগ্গা-রা। বাতাস মুখরিত হত একটাই শব্দে— ভোক্কাট্টা! এখন সেই দিনও নেই। ব্যস্ততার আড়ালে ঢেকে গেছে উন্মাদনা ও আমেজ। আকাশজুড়ে ঘুড়ির মেলাও দেখা যায় না। ইতিউতি কোথাও এদিক-ওদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে ঘুড়ি ওড়ে (Kite Flying)।

    পুরাণ মতে…

    পুরাণ মতে, বিশ্বকর্মা হলেন দেবতাদের শিল্পী। স্বর্গে দেবতাদের যে কোনও রকম কারিগরী সহায়তার দরকার পড়লেই, মুশকিল আসান একমাত্র বিশ্বকর্মা। আর এই বিশ্বকর্মাই একবার দেবতাদের জন্য উড়ন্ত রথ তৈরি করেছিলেন। সেটা স্মরণ করতেই বিশ্বকর্মা পুজোর (Vishwakarma Puja) দিন কলকাতা তথা গোটা রাজ্যের আকাশে ঘুড়ি ওড়ানো (Kite Flying) হয়। আবার, ঋগ্বেদ অনুসারে বিশ্বকর্মা স্থাপত্য এবং যন্ত্রবিদ্যা বিদ্যার জনক। কৃষ্ণের বাসস্থান, গোটা দ্বারকা নগরী নির্মাণ করেছিলেন বিশ্বকর্মা দেবতা। যে জন্য শ্রমিক থেকে ইঞ্জিনিয়র সমাজের কাছে বিশ্বকর্মা পুজোর দিনটার গুরুত্ব চিরকাল অপরিসীম।

    বর্তমান যুগে প্রচলন…

    ইতিহাসবিদদের মতে, বর্তমান ঘুড়ির আবিষ্কার হয় চিনে। প্রায় ২৮০০ বছর আগে। মোজা এবং লু বান নামে দুই চিনা, তাঁরাও ওই উৎসব পালন আর শুভ সময়ের প্রার্থনায় বিশ্বে সর্ব প্রথম ঘুড়ি ওড়ান আকাশে। বাংলায় বিশ্বকর্মা পুজোর দিন ঘুড়ি ওড়ানো শুরু হয়েছে ১৮৫০ সাল থেকে। কলকাতা ও গ্রাম বাংলার কতিপয় বিরাট ধনী জমিদাররা ঘুড়িতে টাকা বেঁধে ওড়ানো শুরু করেন। সেই সময় আমজনতা খুব একটা ঘুড়ি ওড়াতেন না। শুধু ধনী ও বিত্তশালী মানুষজনেদের মধ্যেই ঘুড়ি ওড়ানোর (Kite Flying) চল ছিল। আবার শোনা যায়, ১৮৫৬ সালে লখনউ শহরের রাজত্ব খুইয়ে, ইংরেজদের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে কলকাতায় এসেছিলেন ওয়াজেদ আলি শাহ। কলকাতার বিচালিঘাটে এসে নামেন তিনি। এর পরে মেটিয়াব্রুজ এলাকায় গড়ে তোলেন তাঁর বাড়ি। তার সঙ্গে সঙ্গেই ঘুড়ির লড়াই পাড়ি দেয় কলকাতায়।

  • Ramakrishna 469: ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের বালকভাব ও ভাবাবেশ

    Ramakrishna 469: ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের বালকভাব ও ভাবাবেশ

    ঠাকুর চুপ করিলেন। ঠাকুর আবার বলিতেছেন — “আরও কত কী বলতে দে না! — মুখ যেন কে আটকে দেয়!”

    “সজনে তুলসী এক বংশ হত। ভেদ-বুদ্ধি দূর করিয়া দিলেন। বেলতলায় ধ্যান করিতি, দেখিল এক জন দেব মুসলমান (মোহাম্মদ) সান্নিধ্য করিয়া ভাত লইয়া সামনে এল। সান্নিধ্য হইতে শ্রেষ্ঠদের খাইয়া আমাকে দুটি দিল। মা দেখাইলেন, এক বৈ দু’ই নাই। সচিদানন্দই নানা রূপ ধরিয়া রহিয়াছেন। তিনিই জীবজগৎ সমস্তই হইয়াছেন। তিনিই অম্বর হইয়াছেন।”

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের বালকভাব ও ভাবাবেশ

    গিরিশ, মাস্টার প্রভৃতির প্রতি —
    “আমার বালক স্বভাব। হৃদয় বললে, মাথা, মস্তক কিছু স্থির কথা বলে, — আমাতে মাথা বলে চলল না! এমন অবস্থায় রয়েছে যে, যে ব্যক্তির কাছে থাকবে তার কথা শুনতে হবে। ছোট ছেলেদের যেমন আছে লোক না থাকলে অন্ধকার দেখে — আমারও সেইরূপ হত! হৃদয়ে কাছে না থাকিলে প্রাণ যায় যায় হত। ওই দেখো! ওই ভাবটা আসছে!… কথা কইতে কইতে উদ্দীপন হয়।”

    এই কথা বলিতে বলিতে ঠাকুর ভাবাবিষ্ট হয়েছেন। দেশ কাল বোধ চলিয়া গিয়াছে। অতি কষ্টে ভাব সংবরণ করিতে চেষ্টা করিতেছেন। ভাব বলিতেছেন, “এখনও তোমাদের দেখিতেছি, — কিন্তু বোধ হচ্ছে যেন চিরকাল তোমার বনে আছি, কখন এসেছি, কোথায় এসেছি এ-সব কিছু মনে নাই।”

    ঠাকুর কিঞ্চিৎকাল প্রকৃতিস্থ হইয়া বলিতেছেন, “জল খাব।”
    সমাধিভঙ্গের পর মন নামাযিবার জন্য ঠাকুর এই কথা প্রায় বলিয়া থাকেন। গিরিশ নতুন আসিতেছেন, জানেন না তাই জল আনিতে উদ্দত ইলিশেন। ঠাকুর বারণ করিতেছেন আর বলিতেছেন, “না বাপু, এখন খেতে পারব না।”

  • Ramakrishna 468: ঠাকুর আবার বলিতেছেন — “আরও কত কী বলতে দে না!

    Ramakrishna 468: ঠাকুর আবার বলিতেছেন — “আরও কত কী বলতে দে না!

    “গুরুগিরি বেশ্যাগিরির মতো। — ছাড় টাকা-কড়ি, লোকমান হওয়া, শরীরের সেবা, এই সবের জন্য আপনাকে বিক্রি করা। যে শরীর মন আমার দ্বারা ঈশ্বরের লাডু করা যায়, সেই শরীর মন আমাকেও সামান্য জিনিসের জন্য এঁটোপ করে রাখা ভাল নয়। এককালে বলেছিল, সাবির এখন যে সময়, এখন তার বেশ হয়েছে — একখানা ঘটভাড় নিয়েছে — ঘুঁটে বে গোবার বে, তক্তোপোষ, দুখানা বালিশ হয়েছে, বিছানা, মাদুর, তাকিয়া — কতলোক বসীতেছে, যাচ্ছে আসছে। অর্থাৎ সাবি এখন বেশ হয়েছে তাই সুখ ধরে না! আগে সে ভদ্রলোকের বাড়ির দাসী ছিল, এখন বেশ হয়েছে। সামান্য জিনিসের জন্য নিজের সর্বনাশ।”

    শ্রীরামকৃষ্ণের সাধনায় প্রলোভন  — ব্রহ্মজ্ঞান ও অভেদবুদ্ধি।

    শ্রীরামকৃষ্ণ ও মুসলমান ধর্ম

    “সাধনার সময় ধ্যান করতে করতে আমি আরো কত কী দেখিতাম। বেলতলায় ধ্যান করিতি, পাপপুরুষ এসে কত্তকালের লোভ দেখাইতে লাগিল। লড়িতে গোরার রূপ ধরে এসেছিল। টাকা, মান, রমণ, সুখ নানা রকম শক্তি, এই সব দিতে চাইল। আমি মাকে ডাকিতে লাগিলাম। বড় গুজরাথ। মা দেখা দিলেন, তখন আমি বললাম, মা ওকে কেটে ফেলো। মা সেই রূপ — সেই ভুবনমোহন রূপ — মনে পড়ছে। কৃষ্ণমূর্তির রূপ! কিন্তু চাঁদনীতেও যেন জ্যোতিষ্মতী মূর্তি।”

    ঠাকুর চাপ করিলেন। ঠাকুর আবার বলিতেছেন — “আরও কত কী বলতে দে না! — মুখ যেন কে আটকে দেয়!”

    “সজনে তুলসী এক বংশ হত। ভেদ-বুদ্ধি দূর করিয়া দিলেন। বেলতলায় ধ্যান করিতি, দেখিল এক জন দেব মুসলমান (মোহাম্মদ) সান্নিধ্য করিয়া ভাত লইয়া সামনে এল। সান্নিধ্য হইতে শ্রেষ্ঠদের খাইয়া আমাকে দুটি দিল। মা দেখাইলেন, এক বৈ দু’ই নাই। সচিদানন্দই নানা রূপ ধরিয়া রহিয়াছেন। তিনিই জীবজগৎ সমস্তই হইয়াছেন। তিনিই অম্বর হইয়াছেন।”

  • Ramakrishna 467: শ্রীরামকৃষ্ণের সাধনায় প্রলোভন  — ব্রহ্মজ্ঞান ও অভেদবুদ্ধি

    Ramakrishna 467: শ্রীরামকৃষ্ণের সাধনায় প্রলোভন  — ব্রহ্মজ্ঞান ও অভেদবুদ্ধি

    শ্রীরামকৃষ্ণ (গিরিশ প্রভৃতি ভক্তদের প্রতি) — যাহারা ঈশ্বরবুদ্ধি তাঁরা সিঁড়াই চায়। ব্যারাম ভাল করা, মোক্ষম লাভ, জিতানো, জলে হেঁটেই চলে যাওয়া — এই সব। যাহারা শুদ্ধভক্ত তাঁরা ঈশ্বরের পাদপদ্ম ছাড়া কিছুই চায় না। হৃদয়ে একদিন বললেম, ‘মা! মার কাছে কিছু শক্তি চাই, কিছু সিঁড়াই চাই।’ আমার বালকের স্বভাব। — কালীঘাটে জপ করিবার সময় মাকে বলিলাম, মা বলছে কিছু সিঁড়াই চাইতে। অমনি দেখিতে দিলেন সামনে এসে পেঁচাটে ফিকে উড়ু হয়ে বসলো—

    কালি ঘরে কাজ করার সময় মাকে বললাম, “মা, হৃদে বলছে কিছু সিদ্ধাই চাই।” হঠাৎ সামনে একজন বুড়ো বেশ্যা এসে উবু হয়ে বসে পড়ল। তার বয়স চল্লিশের কাছাকাছি। ধামা পোঁদ, কালো পেড়ে কাপড় পরা, এবং পড়পড় করে হাগছে। যাদের একটু সিদ্ধাই থাকে, তাদের জন্য এই পরিস্থিতি অবাক করা। অনেকের ইচ্ছা হয় গুরুগিরি করা; পাঁচজনে একসাথে মানে শীর্ষ সেবক হিসেবে আচরণ করছে। মানুষ বলে, “গুরুচরণের ভাইয়েরা আজকাল বেশ কিছু লোক আসছে-যাচ্ছে।” শীষ্য সেবক অনেক হয়েছে, ঘরে জিনিসপত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।

    কত জিনিস কত লোক এনে দিচ্ছে — সে যদি মনে করে — তার এমন শক্তি হয়েছে যে, কত লোককে খাওয়াতে পারে।

    “গুরুগিরি বেশ্যাগিরির মতো। — ছাড় টাকা-কড়ি, লোকমান হওয়া, শরীরের সেবা, এই সবের জন্য আপনাকে বিক্রি করা। যে শরীর মন আমার দ্বারা ঈশ্বরের লাডু করা যায়, সেই শরীর মন আমাকেও সামান্য জিনিসের জন্য এঁটোপ করে রাখা ভাল নয়। এককালে বলেছিল, সাবির এখন যে সময়, এখন তার বেশ হয়েছে — একখানা ঘটভাড় নিয়েছে — ঘুঁটে বে গোবার বে, তক্তোপোষ, দুখানা বালিশ হয়েছে, বিছানা, মাদুর, তাকিয়া — কতলোক বসীতেছে, যাচ্ছে আসছে। অর্থাৎ সাবি এখন বেশ হয়েছে তাই সুখ ধরে না! আগে সে ভদ্রলোকের বাড়ির দাসী ছিল, এখন বেশ হয়েছে। সামান্য জিনিসের জন্য নিজের সর্বনাশ।”

    শ্রীরামকৃষ্ণের সাধনায় প্রলোভন  — ব্রহ্মজ্ঞান ও অভেদবুদ্ধি।

    শ্রীরামকৃষ্ণ ও মুসলমান ধর্ম

    “সাধনার সময় ধ্যান করতে করতে আমি আরো কত কি দেখিতাম। বেলতলায় ধ্যান করিতি, পাপপুষ্করিণী এসে কতককম লোড দেখাতে লাগিল। লড়ায়ে গোরার রক্ত ধরে এসেছিল। টাকা, মান, রমণ সুখ নানা রকম শক্তি, এই সব দিতে

  • Ramakrishna 466: কালি ঘরে কাজ করার সময় মাকে বললাম, “মা, হৃদে বলছে কিছু সিদ্ধাই চাই

    Ramakrishna 466: কালি ঘরে কাজ করার সময় মাকে বললাম, “মা, হৃদে বলছে কিছু সিদ্ধাই চাই

    গভীর ধ্যানে ইন্দ্রিয়ের সব কাজ বন্ধ হয়ে যায়। মন বহির্মুখী থাকে না—যেন বার-বাড়িতে কপাট পড়ল। ইন্দ্রিয়ের পাঁচটি বিষয়: রূপ, রস, গন্ধ, স্পর্শ, শব্দ—বাহিরে পড়ে থাকে।

    “ধ্যানের সময় প্রথম প্রথম ইন্দ্রিয়ের বিষয় সকল সামনে আসে—গভীর ধ্যানে সে সকল আর আসে না—বাহিরে পড়ে থাকে। ধ্যান করতে করতে আমাদের কত কি দর্শন হয়। প্রত্যক্ষ দেখলাম—সামনে টাকায় কাঠি, শাল, একখানা সুন্দর টালি—তাদের মধ্যে কি সুন্দর জ্যোৎস্নার আভা—সব বাহিরের বস্তু।

    সমস্ত জিনিস বার থেকে দেখা যায়! তাদের ভিতরে দেখলাম— নাড়ীভূড়ি, রক্ত, মল, কফ, নাল, প্রস্রাব এই সব।

    [ ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ — গুরুগিরি ও বেশ্যাবৃত্তি]

    শ্রীযুক্ত গিরিশ ঠাকুরের নাম করিয়া ব্যারাম ভাল করিব — এই কথা মাঝে মাঝে বলিতেন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (গিরিশ প্রভৃতি ভক্তদের প্রতি) — যাহারা ঈশ্বরবুদ্ধি তাঁরা সিঁড়াই চায়। ব্যারাম ভাল করা, মোক্ষম লাভ, জিতানো, জলে হেঁটেই চলে যাওয়া — এই সব। যাহারা শুদ্ধভক্ত তাঁরা ঈশ্বরের পাদপদ্ম ছাড়া কিছুই চায় না। হৃদয়ে একদিন বললেম, ‘মা! মার কাছে কিছু শক্তি চাই, কিছু সিঁড়াই চাই।’ আমার বালকের স্বভাব। — কালীঘাটে জপ করিবার সময় মাকে বলিলাম, মা বলছে কিছু সিঁড়াই চাইতে। অমনি দেখিতে দিলেন সামনে এসে পেঁচাটে ফিকে উড়ু হয়ে বসলো—

    কালি ঘরে কাজ করার সময় মাকে বললাম, “মা, হৃদে বলছে কিছু সিদ্ধাই চাই।” হঠাৎ সামনে একজন বুড়ো বেশ্যা এসে উবু হয়ে বসে পড়ল। তার বয়স চল্লিশের কাছাকাছি। ধামা পোঁদ, কালো পেড়ে কাপড় পরা, এবং পড়পড় করে হাগছে। যাদের একটু সিদ্ধাই থাকে, তাদের জন্য এই পরিস্থিতি অবাক করা। অনেকের ইচ্ছা হয় গুরুগিরি করা; পাঁচজনে একসাথে মানে শীর্ষ সেবক হিসেবে আচরণ করছে। মানুষ বলে, “গুরুচরণের ভাইয়েরা আজকাল বেশ কিছু লোক আসছে-যাচ্ছে।” শীষ্য সেবক অনেক হয়েছে, ঘরে জিনিসপত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।

  • Ramakrishna 466: ধ্যানে এইরূপ একাগ্রতা হয়, অন্য কিছু দেখা যায় না, শোনাও যায় না

    Ramakrishna 466: ধ্যানে এইরূপ একাগ্রতা হয়, অন্য কিছু দেখা যায় না, শোনাও যায় না

    “ধ্যানে এইরূপ একাগ্রতা হয়, অন্য কিছু দেখা যায় না, শোনাও যায় না। স্পর্শবোধ পর্যন্ত হয় না। সাপ গায়ের উপর দিয়ে চলে যায়, জানিতে পারে না। যে ধ্যান করে সেও বুঝিতে পারে না—সাপটাও জানিতে পারে না।

    “গভীর ধ্যানে ইন্দ্রিয়ের সব কাজ বন্ধ হয়ে যায়। মন বহির্মুখী থাকে না—যেন বার-বাড়িতে কপাট পড়ল। ইন্দ্রিয়ের পাঁচটি বিষয়: রূপ, রস, গন্ধ, স্পর্শ, শব্দ—বাহিরে পড়ে থাকে।

    “ধ্যানের সময় প্রথম প্রথম ইন্দ্রিয়ের বিষয় সকল সামনে আসে—গভীর ধ্যানে সে সকল আর আসে না—বাহিরে পড়ে থাকে। ধ্যান করতে করতে আমাদের কত কি দর্শন হয়। প্রত্যক্ষ দেখলাম—সামনে টাকায় কাঠি, শাল, একখানা সুন্দর টালি—তাদের মধ্যে কি সুন্দর জ্যোৎস্নার আভা—সব বাহিরের বস্তু।

    সমস্ত জিনিস বার থেকে দেখা যায়! তাদের ভিতরে দেখলাম— নাড়ীভূড়ি, রক্ত, মল, কফ, নাল, প্রস্রাব এই সব।

    [ ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ — গুরুগিরি ও বেশ্যাবৃত্তি]

    শ্রীযুক্ত গিরিশ ঠাকুরের নাম করিয়া ব্যারাম ভাল করিব — এই কথা মাঝে মাঝে বলিতেন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (গিরিশ প্রভৃতি ভক্তদের প্রতি) — যাহারা ঈশ্বরবুদ্ধি তাঁরা সিঁড়াই চায়। ব্যারাম ভাল করা, মোক্ষম লাভ, জিতানো, জলে হেঁটেই চলে যাওয়া — এই সব। যাহারা শুদ্ধভক্ত তাঁরা ঈশ্বরের পাদপদ্ম ছাড়া কিছুই চায় না। হৃদয়ে একদিন বললেম, ‘মা! মার কাছে কিছু শক্তি চাই, কিছু সিঁড়াই চাই।’ আমার বালকের স্বভাব। — কালীঘাটে জপ করিবার সময় মাকে বলিলাম, মা বলছে কিছু সিঁড়াই চাইতে। অমনি দেখিতে দিলেন সামনে এসে পেঁচাটে ফিকে উড়ু হয়ে বসলো—

  • Ramakrishna 465: গভীর ধ্যানে ইন্দ্রিয়ের সব কাজ বন্ধ হয়ে যায়

    Ramakrishna 465: গভীর ধ্যানে ইন্দ্রিয়ের সব কাজ বন্ধ হয়ে যায়

    “গভীর ধ্যানে বাহ্যজ্ঞানশূন্য হয়। একজন ব্যাধ পাখি মারবার জন্য তাগ করছে। কাছ দিয়ে বর চলে যাচ্ছে, সমস্ত ব্যবসায়ীরা, কত কোলাহল, বাজার, গাড়ি, ঘোষা — কতক্ষণ ধরে কাছ নিয়ে চলে গেল। ব্যাধের কিন্তু লেশ নাই। সে জানিতে পারলো না যে কাছ দিয়ে বর চলে গেল।

    “একজন একলা একটি পুকুরের ধারে মাছ ধরছে। অনেকক্ষণ পরে ফাঁসাটা নড়তে লাগল, মাঝে মাঝে কাট হতে লাগল। সে তখন ছিপ হাতে করে টান মারবার উদ্যোগ করিতেছে। এমন সময় একজন পথিক কাছে এসে জিজ্ঞাসা করিতেছে, মহাশয়, অমুক বাঁড়ুজ্জেদের বাড়ি কোথায় বলতে পারেন? সে ব্যক্তি শ্ল্ধ নাই। তার হাত কাঁপিতেছে, কেবল ফাঁসার দিকে দৃষ্টি। তখন পথিক বিরক্ত হয়ে চলেগেল। সে অনেক দূরে চলে গিয়েছে, এমন সময় ফাঁসাটা ডুবে গেল, আর…

    ও ব্যক্তি টান মেরে মাছটাকে আড়ায় তুলল। তখন গাছটা দিয়ে মুখ পুঁতে, চিৎকার করে পাখিটাকে ডাকছে—ওহে—শোনা—শোনা! পাখি ফিরিতে চায় না, অনেক ডাকাডাকি পর ফিরিল। এসে বলছে, কেন মুখ্যধম, আবার ডাকছ কে? তখন সে বলল, তুমি আমায় কি বলছিলে? পাখি বললে, তখন অত্যন্ত করে জিজ্ঞাসা করলুম—আর এখন বলছ কি বললে! সে বলল, তখন যে ফানায় ডুবছিল, তাই আমি কিছুই শুনিতে পাই নাই।

    “ধ্যানে এইরূপ একাগ্রতা হয়, অন্য কিছু দেখা যায় না শোনাও যায় না। স্পর্শবোধ পর্যন্ত হয় না। সাপ গায়ের উপর দিয়ে চলে যায়, জানিতে পারে না। যে ধ্যান করে সেও বুঝিতে পারে না—সাপটাও জানিতে পারে না।

    “গভীর ধ্যানে ইন্দ্রিয়ের সব কাজ বন্ধ হয়ে যায়। মন বহির্মুখী থাকে না—যেন বার-বাড়িতে কপাট পড়ল। ইন্দ্রিয়ের পাঁচটি বিষয়: রূপ, রস, গন্ধ, স্পর্শ, শব্দ—বাহিরে পড়ে থাকে।

    “ধ্যানের সময় প্রথম প্রথম ইন্দ্রিয়ের বিষয় সকল সামনে আসে—গভীর ধ্যানে সে সকল আর আসে না—বাহিরে পড়ে থাকে। ধ্যান করতে করতে আমাদের কত কি দর্শন হয়। প্রত্যক্ষ দেখলাম—সামনে টাকায় কাঠি, শাল, একখানা সুন্দর টালি—তাদের মধ্যে কি সুন্দর জ্যোৎস্নার আভা—সব বাহিরের বস্তু।

  • Swami Vivekananda: ‘‘সিস্টার্স অ্যান্ড ব্রাদার্স অফ আমেরিকা…’’, ১৩২তম বর্ষপূর্তিতে ফিরে দেখা স্বামীজির শিকাগো ভাষণ

    Swami Vivekananda: ‘‘সিস্টার্স অ্যান্ড ব্রাদার্স অফ আমেরিকা…’’, ১৩২তম বর্ষপূর্তিতে ফিরে দেখা স্বামীজির শিকাগো ভাষণ

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আজ ১১ সেপ্টেম্বর, স্বামী বিবেকানন্দের (Swami Vivekananda) শিকাগো ভাষণের ১৩২তম বর্ষপূর্তি। ১৮৯৩ সালের এই দিনেই বিশ্বধর্ম সম্মেলনে হিন্দু ধর্মের প্রতিনিধি হিসেবে যোগদান করেন শ্রী রামকৃষ্ণের শিষ্য স্বামী বিবেকানন্দ। তাঁর শিকাগো ভাষণের শুরুতেই তিনি বলেছিলেন, ‘‘সিস্টার্স অ্যান্ড ব্রাদার্স অফ আমেরিকা…’’ এখানেই প্রায় পাঁচ মিনিট ধরে করতালি চলতে থাকে। কারণ প্রথমবারের জন্য বিশ্ববাসীকে কেউ ‘ভাই ও বোন’ বলে সম্বোধন করেন শিকাগো ধর্ম সম্মেলনে। তাঁর আগের বক্তারা প্রত্যকেই ‘লেডিস অ্যান্ড জেন্টলম্যান’ বলেই সম্বোধন করেছিলেন। স্বামী বিবেকানন্দ সেখানে তুলে ধরেন ‘বসুধৈব কুটুম্বকম’-এর কথা (Vivekananda Chicago Speech)। ভারতের সীমাহীন সভ্যতার কথা। ভারতবর্ষের সনাতন সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও পরম্পরার কথা। সেখানেই শোনান এদেশের ধর্মীয় সহিষ্ণুতার কথা। ভারতবর্ষ কোনও ধর্মের ওপর কখনও আঘাত হানেনি, সে কথাও সেখানে তুলে ধরেন স্বামীজি। বিশ্ব মঞ্চে স্বামীজির ভাষণ সেদিন আলোড়ন তৈরি করে। ভারতীয় সভ্যতার মর্যাদা ব্যাপকভাবে প্রতিষ্ঠিত করেন স্বামীজি তাঁর নিজের ভাষণের মধ্য দিয়ে। তাঁর সেদিনের ভাষণের নির্বাচিত কিছু অংশের বিশ্লেষণ নীচে করা হল।

    পৃথিবীর মধ্যে সর্বাপেক্ষা প্রাচীন সন্ন্যাসী-সমাজের পক্ষ হইতে আমি আপনাদিগকে ধন্যবাদ জানাইতেছি

    ‘‘হে আমার আমেরিকাবাসী ভগিনী ও ভ্রাতৃবৃন্দ, আজ আপনারা আমাদিগকে যে আন্তরিক ও সাদর অভ্যর্থনা করিয়াছেন, তাহার উত্তর দিবার জন্য উঠিতে গিয়া আমার হৃদয় অনির্বচনীয় আনন্দে পরিপূর্ণ হইয়া গিয়াছে। পৃথিবীর মধ্যে সর্বাপেক্ষা প্রাচীন সন্ন্যাসী-সমাজের পক্ষ হইতে আমি আপনাদিগকে ধন্যবাদ জানাইতেছি। সর্বধর্মের যিনি প্রসূতি-স্বরূপ, তাঁহার নামে আমি আপনাদিগকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করিতেছি। সকল জাতি ও সম্প্রদায়ের অন্তর্গত কোটি কোটি হিন্দু নরনারীর হইয়া আমি (Swami Vivekananda) আপনাদিগকে ধন্যবাদ দিতেছি।’’

    আমরা শুধু সকল ধর্মকেই সহ্য করিনা, সকল ধর্মকেই আমরা সত্য বলিয়া বিশ্বাস করি

    ‘‘এই সভামঞ্চে সেই কয়েকজন বক্তাকেও আমি ধন্যবাদ জানাই, যাঁহারা প্রাচ্যদেশীয় প্রতিনিধিদের সম্বন্ধে এরূপ মন্তব্য প্রকাশ করিলেন যে, অতি দূরদেশবাসী জাতিসমূহের মধ্য হইতে যাঁহারা এখানে সমাগত হইয়াছেন, তাঁহারাও বিভিন্ন দেশে পরধর্মসহিষ্ণুতার ভাব প্রচারের গৌরব দাবি করিতে পারেন। যে ধর্ম জগৎকে চিরকাল পরমতসহিষ্ণুতা ও সর্বাধিক মত স্বীকার করার শিক্ষা দিয়া আসিতেছে, আমি সেই ধর্মভুক্ত বলিয়া নিজেকে গৌরবান্বিত মনে করি। আমরা শুধু সকল ধর্মকেই সহ্য করি না, সকল ধর্মকেই আমরা সত্য বলিয়া বিশ্বাস করি। যে ধর্মের পবিত্র সংস্কৃত ভাষায় ইংরেজি ‘এক্সক্লুশন’ (ভবার্থঃ বহিষ্হকরণ, পরিবর্জন) শব্দটি অনুবাদ করা যায় না, আমি সেই ধর্মভুক্ত বলিয়া গর্ব অনুভব করি। যে জাতি পৃথিবীর সকল ধর্মের ও সকল জাতির নিপীড়িত ও আশ্রয়প্রার্থী জনগণকে চিরকাল আশ্রয় দিয়া আসিয়াছে, আমি (Swami Vivekananda) সেই জাতির অর্ন্তভুক্ত বলিয়া নিজেকে গৌরবান্বিত মনে করি।’’

    আমরাই ইহুদীদের খাঁটি বংশধরগণের অবশিষ্ট অংশকে সাদরে হৃদয়ে ধারণ করিয়া রাখিয়াছি

    ‘‘আমি আপনাদের এ কথা বলিতে গর্ব অনুভব করিতেছি যে, আমরাই ইহুদিদের খাঁটি বংশধরগণের অবশিষ্ট অংশকে সাদরে হৃদয়ে ধারণ করিয়া রাখিয়াছি; যে বৎসর রোমানদের ভয়ংঙ্কর উৎপীড়নে তাহদের পবিত্র মন্দির বিধ্বস্ত হয়, সেই বৎসরই তাহারা দক্ষিণভারতে আমাদের মধ্যে আশ্রয়লাভের জন্য আসিয়াছিলেন। জরাথুষ্ট্রের অনুগামী মহান পারসিক জাতির অবশিষ্টাংশকে যে ধর্মাবলম্বীগণ আশ্রয় দান করিয়াছিল এবং আজ পর্যন্ত যাহারা তাঁহাদিগকে প্রতিপালন করিতেছেন, আমি তাঁহাদেরই অন্তর্ভুক্ত।’’

    যত মত তত পথের কথা (Vivekananda Chicago Speech)

    ‘‘বিভিন্ন নদীর উৎস বিভিন্ন স্থানে, কিন্তু তাহারা সকলে যেমন এক সমুদ্রে তাহাদের জলরাশি ঢালিয়া মিলাইয়া দেয়, তেমনই হে ভগবান, নিজ নিজ রুচির বৈচিত্র্যবশতঃ সরল ও কুটিল নানা পথে যাহারা চলিয়াছে, তুমিই তাহাদের সকলের একমাত্র লক্ষ্য। পৃথিবীতে এযাবৎ অনুষ্ঠিত সম্মেলনগুলির মধ্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ মহাসম্মেলনে গীতা-প্রচারিত সেই অপূর্ব মতেরই সত্যতা প্রতিপন্ন করিতেছি, সেই বাণীই ঘোষণা করিতেছিঃ ‘যে যথা মাং প্রপদ্যন্তে তাংস্তথৈব ভজাম্যহম্। মম বর্ত্মানুবর্তন্তে মনুষ্যাঃ পার্থ সর্বশঃ।।’ (যে কোনও ব্যক্তি যে ভাব আশ্রয় করিয়া আসুক না কেন, আমি তাহাকে সেই ভাবেই অনুগ্রহ করিয়া থাকি। হে অর্জুন মনুষ্যগণ সর্বতোভাবে আমার পথেই চলিয়া থাকে)।’’

    সাম্পদায়িকতা, গোঁড়ামি ও এগুলির ভয়াবহ ফলস্বরূপ ধর্মোন্মত্ততা এই সুন্দর পৃথিবীকে বহুকাল অধিকার করিয়া রাখিয়াছে

    ‘‘সাম্পদায়িকতা, গোঁড়ামি ও এগুলির ভয়াবহ ফলস্বরূপ ধর্মোন্মত্ততা এই সুন্দর পৃথিবীকে বহুকাল অধিকার করিয়া রাখিয়াছে। ইহারা পৃথিবীকে হিংসায় পূর্ণ করিয়াছে, বরাবার ইহাকে নরশোণিতে সিক্ত করিয়াছে, সভ্যতা ধ্বংস করিয়াছে এবং সমগ্র জাতিকে হতাশায় মগ্ন করিয়াছে। এই-সকল ভীষণ পিশাচগুলি যদি না থাকিত, তাহা হইলে মানবসমাজ আজ পূর্বাপেক্ষা অনেক উন্নত হইত। তবে ইহাদের মৃত্যুকাল উপস্থিত; এবং আমি সর্বতোভাবে আশা করি, এই ধর্ম-মহাসমিতির সন্মানার্থ আজ যে ঘণ্টাধ্বনি নিনাদিত হইয়াছে, তাহাই সর্ববিধ ধর্মোন্মত্ততা, তরবারি অথবা লিখনীমুখে অনুষ্ঠিত সর্বপ্রকার নির্যাতন এবং একই লক্ষ্যের দিকে অগ্রসর ব্যক্তিগণের মধ্যে সর্ববিধ অসদ্ভাবের সম্পূর্ণ অবসানের বার্তা ঘোষণা করুক।’’

    খেতড়ির রাজা অজিত সিংহের সাহায্যে স্বামীজি পৌঁছান আমেরিকা

    খুব সহজে অবশ্য স্বামীজির (Swami Vivekananda) আমেরিকা সফর সম্পন্ন হয়নি। উত্তর-পূর্ব রাজস্থানে খেতড়ির রাজা অজিত সিং স্বামী বিবেকানন্দকে শিকাগো যাওয়ার জন্য ‘ওরিয়েন্ট’ জাহাজে ফার্স্ট ক্লাসের টিকিট কিনে দেন বলে জানা যায়। কিন্তু সেখানে গিয়েও তাঁকে সহ্য করতে হয়েছিল দারুণ দুঃখ-কষ্ট। তিনি শিকার হন বর্ণ-বিদ্বেষের। কারণ তৎকালীন আমেরিকায় পাশ্চাত্যের লোকেদের কাছে এই ভারত ছিল অত্যন্ত পিছিয়ে পড়া। শিকাগো পৌঁছে শেষ পর্যন্ত হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জন হেনরি রাইটের ব্যক্তিগত পরিচিতিকে কাজে লাগিয়ে বিবেকানন্দ (Swami Vivekananda) ওই সম্মেলনে বক্তৃতা দেওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন (Vivekananda Chicago Speech)।

  • Ramakrishna 464: গভীর ধ্যানে বাহ্যজ্ঞানশূন্য হয়

    Ramakrishna 464: গভীর ধ্যানে বাহ্যজ্ঞানশূন্য হয়

    “আমি সর্বপ্রকার সাধন করেছিলাম। সাধনা তিন প্রকার—সাত্ত্বিক, রাজসিক, তামসিক। সাত্ত্বিক সাধনায় তাঁকে ব্যাকুল হয়ে ডাকে বা তাঁর নামটি শুনে নিয়ে থাকে। আর কোনো ফললাভ নেই। রাজসিক সাধনে নানারকম প্রক্রিয়া—এতবার পুষ্পচর্চন করতে হবে, এত তীর্থ করতে হবে, পঞ্চগব্য করতে হবে; যজ্ঞোপবীতধার পুজা করতে হবে ইত্যাদি। তামসিক সাধন—তোমাকে আঘাত করে সাধনা। জয় কালী! কি, তুই খাস নির্নিমেষ। এই গলায় ছুরি দে। যদি দিয়া না দিস্ এ সাধনায় ফললাভ নাই। —যেমন তন্ত্রের সাধনা।

    “সে অবস্থায় (সাধনার অবস্থায়) অদ্ভুত সব দর্শন হত, আমার রমন প্রত্যক্ষ দেখলাম। আমার মতো রূপ একরকম আমার শরীরের ভিতর প্রবেশ করল। আর মড়কসম প্রতাপে পদ্মের মতো রমন করতে লাগল। ঘটল হৃদয়ে হয়েছিল—ঠাকুর বলতেন রমন কথার আর একটি পদ প্রবর্তিত হয়—আর উদ্বোধিত হয় রমন। এইরূপ মূর্তিমান, স্থাণু, অচঞ্চল, অনাহত, বিভক্ত, অখণ্ড, সহজাত সকল প্রত্যক্ষ ফুটে উঠত। আর নিচে মূর্ছা ছিল উদ্বোধক হল, প্রত্যক্ষ দেখলাম।”

    [ধ্যানযোগ সাধনা — ‘নিবৃত নিস্পন্দমিরপ্রদীপস্ফূর’]

    “সাধনার সময় আমি ধ্যান করতে করতে আবেশ করতাম প্রভূপদের শিখা—
    যখন হওয়া নাই, একটুও নড়ে না — তার আবেশ করতাম।

    “গভীর ধ্যানে বাহ্যজ্ঞানশূন্য হয়। একজন ব্যাধ পাখি মারবার জন্য তাগ করছে। কাছ দিয়ে বর চলে যাচ্ছে, সমস্ত ব্যবসায়ীরা, কত কোলাহল, বাজার, গাড়ি, ঘোষা — কতক্ষণ ধরে কাছ নিয়ে চলে গেল। ব্যাধের কিন্তু লেশ নাই। সে জানিতে পারলো না যে কাছ দিয়ে বর চলে গেল।

    “একজন একলা একটি পুকুরের ধারে মাছ ধরছে। অনেকক্ষণ পরে ফাঁসাটা নড়তে লাগল, মাঝে মাঝে কাট হতে লাগল। সে তখন ছিপ হাতে করে টান মারবার উদ্যোগ করিতেছে। এমন সময় একজন পথিক কাছে এসে জিজ্ঞাসা করিতেছে, মহাশয়, অমুক বাঁড়ুজ্জেদের বাড়ি কোথায় বলতে পারেন? সে ব্যক্তি শ্ল্ধ নাই। তার হাত কাঁপিতেছে, কেবল ফাঁসার দিকে দৃষ্টি। তখন পথিক বিরক্ত হয়ে চলেগেল। সে অনেক দূরে চলে গিয়েছে, এমন সময় ফাঁসাটা ডুবে গেল, আর…

LinkedIn
Share