Category: পরম্পরা

Get updated History and Heritage and Culture and Religion related news from the Madhyom news portal madhyom.com, West Bengal leading news portal Madhyom.com

  • Ramakrishna 457: মা! তাকে টেনে নিও, আমি আর ভাবতে পারি না!

    Ramakrishna 457: মা! তাকে টেনে নিও, আমি আর ভাবতে পারি না!

    বে মাধবী! আমার মাধব দে! (দে দে দে, মাধব দে!) আমার মাধব আমায় দে, দিয়ে বিনামূল্যে কিনে নে। মীনর জীবন, জীবন যেমন, আমার জীবন মাধব তেমন। (তুই লুকাইছিস বেখয়াল, ও মাধবী!)

    (অবলা সরলা পেয়ে!) (আমি বাঁচি না, বাঁচি না) (মাধবী, ও মাধবী, মাধব দে না) (মাধব অপহরণ)।

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ মাঝে মাঝে মাধব আখর দিতেছেন,

    (সে ময়ূর কন্দর! যেখানে আমার প্রাণনন্দন!)

    ঠাকুর সমাধিস্থ! স্পন্দহীন দেহ! অনেকক্ষণ স্থির রহিয়াছেন।

    ঠাকুর যদিও প্রকৃতিস্থ; কিন্তু এখনও ভাবাবিষ্ট। এই অবস্থায় ভাব বলিতেছেন। মাঝে মাঝে মার সঙ্গে কথা বলিতেছেন।

    শ্রী রামকৃষ্ণ (ভাবস্থ) — মা! তাকে টেনে নিও, আমি আর ভাবতে পারি না!!
    (মাস্টারের দিকে) তোমার সম্পত্তি — তার দিকে একটু মন আছে।

    (গিরিশের প্রতি) — “তুমি মালামাল, খাবার কথা, অনেক বল; তা হউক, ওসব বেরিয়ে যাওয়া‌ই ভালো। বদরোগ কাকের কাকর আছে। যত বেরিয়ে যায় ততই ভালো।

    “উচ্চারিত নামের সময়ই শব্দ হয়। কাঁঠ পোড়াবার সময় চড়চড় শব্দ করে। সব পুড়ে গেলে আর শব্দ থাকে না।

    “তুমি দিন দিন শুভ হবে। তোমার দিন দিন খুব উন্নতি হবে। লোকে দেখে অবাক হবে। আমি বেশি আসতে পারব না, — তা হউক, তোমার এমনি হবে।”

    ঠাকুর শ্রী রামকৃষ্ণের ভাব আবার ঘনীভূত হইতেছে। আবার মার সঙ্গে কথা কহিতেছেন, “মা! যে ভাল আছে তাকে ভাল করতে যাওয়া কি বাহাদুরি? মা! মরারকে বাঁচাইতে হইবে? যে খাদ্য হয়ে রয়েছে তাকে খাওলে তবে তো তোমার মহিমা!”

    ঠাকুর কিন্তু স্থির হইয়া ঠাঁই একটুখানি উচ্চঃস্বরে বলিতেছেন — “আমি দক্ষিণেশ্বর থেকে এসেছি। যাচ্ছি গো মা!!”

  • Ramakrishna 456: ঠাকুর সমাধিস্থ! স্পন্দহীন দেহ! অনেকক্ষণ স্থির রহিয়াছেন

    Ramakrishna 456: ঠাকুর সমাধিস্থ! স্পন্দহীন দেহ! অনেকক্ষণ স্থির রহিয়াছেন

    “অমুক মল্লিকের মা, খুব বড় মানুষের ঘরের মেয়ে! কেশবদের কথায় জিজ্ঞাসা করলো, ওদের কি কোন মতেও উদ্ধাৰ হবে না? নিজে আগে আগে অনেকরকম করছে কি না! তাই জিজ্ঞাসা করলো। আমি বললুম, হ্যাঁ, হবে — যদি আন্তরিক ব্যাকুল হয়ে কাঁদে, আর বলে আর করব না। শুধু হরিনাম করলে কি হবে, আন্তরিক কাঁদতে হবে।”

    ত্রয়োদশ পরিচ্ছেদ ১৮৮৫, ৬ই এপ্রিল

    দেবেন্দ্র-ভবনে ঠাকুরের কীর্ত্তনানন্দ ও সমাধিধন্দিতে এইবার খোল-করতাল লইয়া সংগীতন উঠিতেছে। কীর্ত্তনিয়া গাহিতেছেন: কি দেখিলাম রে, কেশব ভারতীর কুটিরে, অপরূপ জ্যোতিষি; শ্রীগৌরাঙ্গ মূর্তি, দুনু চক্ষে প্রেম বয়ে শতধারে। গৌর মন্মথতন্ত্র প্রায়, প্রেমাবেশে নাচে গায়, কড়ু ধরাতে লুয়া, নয়নজলে ভাসে রে, কাঁদে আর বলে হরি, স্বর্ণ-মর্ত্ত্য ভেদ করি, সিংহদ্বারে রে, আবাব ফুল লয়ে কুন্তাঞ্জলি হয়, দাস মুক্তি যাত্রে দ্বারে দ্বারে।। কিবা মূরছায়ে চটক বেস, ধরেছেন যোগীর বেস, দেখে ভক্তি প্রেমাবেশ, প্রাণ কেঁদে উঠে রে। জীবের দুঃখে কাতর হয়ে, এলেন সর্ব্ব ত্যাগিয়ে, প্রেম বিলাতে রে,

    ঠাকুর গান শুনিতে শুনিতে ভাবাবিষ্ট হইয়াছেন। কীর্তনীয়া শ্রীরামকৃষ্ণের রজোগোপীর অবস্থা বর্ণনা করিতেছেন।

    রজোগোপী মাধবীকৃষ্ণে মাঝে মাঝে অজ্ঞান করিতেছেন—

    বে মাধবী! আমার মাধব দে!
    (দে দে দে, মাধব দে!)
    আমার মাধব আমায় দে, দিয়ে বিনামূল্যে কিনে নে।
    মীনর জীবন, জীবন যেমন, আমার জীবন মাধব তেমন।
    (তুই লুকাইছিস বেখয়াল, ও মাধবী!)

    (অবলা সরলা পেয়ে!) (আমি বাঁচি না, বাঁচি না)
    (মাধবী, ও মাধবী, মাধব দে না) (মাধব অপহরণ)।

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ মাঝে মাঝে মাধব আখর দিতেছেন,

    (সে ময়ূর কন্দর! যেখানে আমার প্রাণনন্দন!)

    ঠাকুর সমাধিস্থ! স্পন্দহীন দেহ! অনেকক্ষণ স্থির রহিয়াছেন।

    ঠাকুর যদিও প্রকৃতিস্থ; কিন্তু এখনও ভাবাবিষ্ট। এই অবস্থায় ভাব বলিতেছেন। মাঝে মাঝে মার সঙ্গে কথা বলিতেছেন।

  • Ramakrishna 455: কি দেখিলাম রে, কেশব ভারতীর কুটিরে,

    Ramakrishna 455: কি দেখিলাম রে, কেশব ভারতীর কুটিরে,

    শ্রীরামকৃষ্ণ — এর কী সূক্ষ্মবুদ্ধি! ন্যাংটা এইরকম ফস করে বুঝে নিত — গীতা, ভাগবত, যেখানে যা, সে বুঝে নিত।

    [কৌমার্যব্রত্য আশ্চর্য — বেশ্যার উদ্ধার কিরূপে হয়]

    শ্রীরামকৃষ্ণ — ছেলেবেলা থেকে কামিনী-কাঞ্চন ত্যাগ, এটি খুব আশ্চর্য। খুব কম লোকের হয়! তা না হলে যেমন শিল-থেকে আম — ঠাকুরের সেবায় লাগে না — নিজে খেতে ভয় হয়।

    “আগে অনেক পাপ করেছে, তারপরে বুড়ো বয়সে হরিনাম করছে এ মন্দের ভাল।

    “অমুক মল্লিকের মা, খুব বড় মানুষের ঘরের মেয়ে! কেশবদের কথায় জিজ্ঞাসা করলো, ওদের কি কোন মতেও উদ্ধাৰ হবে না? নিজে আগে আগে অনেকরকম করছে কি না! তাই জিজ্ঞাসা করলো। আমি বললুম, হ্যাঁ, হবে — যদি আন্তরিক ব্যাকুল হয়ে কাঁদে, আর বলে আর করব না। শুধু হরিনাম করলে কি হবে, আন্তরিক কাঁদতে হবে।”

    ত্রয়োদশ পরিচ্ছেদ
    ১৮৮৫, ৬ই এপ্রিল 1885/04/06/iii

    43.13 দেবেন্দ্র-ভবনে ঠাকুরের কীর্ত্তনানন্দ ও সমাধিধন্দিতে

    এইবার খোল-করতাল লইয়া সংগীতন উঠিতেছে। কীর্ত্তনিয়া গাহিতেছেন:

    কি দেখিলাম রে, কেশব ভারতীর কুটিরে,
    অপরূপ জ্যোতিষি; শ্রীগৌরাঙ্গ মূর্তি,
    দুনু চক্ষে প্রেম বয়ে শতধারে।

    গৌর মন্মথতন্ত্র প্রায়, প্রেমাবেশে নাচে গায়,
    কড়ু ধরাতে লুয়া, নয়নজলে ভাসে রে,
    কাঁদে আর বলে হরি, স্বর্ণ-মর্ত্ত্য ভেদ করি, সিংহদ্বারে রে,
    আবাব ফুল লয়ে কুন্তাঞ্জলি হয়,
    দাস মুক্তি যাত্রে দ্বারে দ্বারে।।

    কিবা মূরছায়ে চটক বেস, ধরেছেন যোগীর বেস,
    দেখে ভক্তি প্রেমাবেশ, প্রাণ কেঁদে উঠে রে।
    জীবের দুঃখে কাতর হয়ে, এলেন সর্ব্ব ত্যাগিয়ে,
    প্রেম বিলাতে রে,

  • Ramakrishna 454: ছেলেবেলা থেকে কামিনী-কাঞ্চন ত্যাগ, এটি খুব আশ্চর্য, খুব কম লোকের হয়!

    Ramakrishna 454: ছেলেবেলা থেকে কামিনী-কাঞ্চন ত্যাগ, এটি খুব আশ্চর্য, খুব কম লোকের হয়!

    শশী তখন সবে ঠাকুরের কাছে যাওয়া-আসা শুরু করেছেন। তিনি তখন বিদ্যাসাগরের কলেজে বিএ-র প্রথম বর্ষে পড়েন। ঠাকুর তখনই তাঁর কথা বলছেন।

    শ্রী রামকৃষ্ণ ভক্তদের উদ্দেশে বলছেন— “সেই যে ছেলেটি মাঝে মাঝে আসে, কিছুদিন তার মনে টাকাকড়ির ভাব ওঠে — আমি দেখেছি। কিন্তু কতজনকে দেখেছি, যাদের মনে আদৌ সে ভাব ওঠে না। কয়েকটি ছোকরা তো বিয়েই করবে না।”

    ভক্তরা নিঃশব্দে বসে শুনছেন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (ভক্তদের প্রতি) — মন থেকে কামিনী-কাঞ্চন সব না গেলে অবতারকে চিনতে পারা কঠিন। বেগুনওলাকে হীরার দাম জিজ্ঞাসা করেছিল, সে বললে, আমি এর বদলে নয় সের বেগুন দিতে পারি, এর একটাও বেশি দিতে পারি না। (সকলের হাস্য ও ছোট নরেনের উচ্ছ্বাস)

    ঠাকুর দেখিলেন, ছোট নরেন কথার মর্ম ফস করিয়া বুঝিয়াছেন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ — এর কী সূক্ষ্মবুদ্ধি! ন্যাংটা এইরকম ফস করে বুঝে নিত — গীতা, ভাগবত, যেখানে যা, সে বুঝে নিত।

    [কৌমার্যব্রত্য আশ্চর্য — বেশ্যার উদ্ধার কিরূপে হয়]

    শ্রীরামকৃষ্ণ — ছেলেবেলা থেকে কামিনী-কাঞ্চন ত্যাগ, এটি খুব আশ্চর্য। খুব কম লোকের হয়! তা না হলে যেমন শিল-থেকে আম — ঠাকুরের সেবায় লাগে না — নিজে খেতে ভয় হয়।

    “আগে অনেক পাপ করেছে, তারপরে বুড়ো বয়সে হরিনাম করছে এ মন্দের ভাল।

    “অমুক মল্লিকের মা, খুব বড় মানুষের ঘরের মেয়ে! কেশবদের কথায় জিজ্ঞাসা করলো, ওদের কি কোন মতেও উদ্ধাৰ হবে না? নিজে আগে আগে অনেকরকম করছে কি না! তাই জিজ্ঞাসা করলো। আমি বললুম, হ্যাঁ, হবে — যদি আন্তরিক ব্যাকুল হয়ে কাঁদে, আর বলে আর করব না। শুধু হরিনাম করলে কি হবে, আন্তরিক কাঁদতে হবে।”

  • Chapra Sasthi 2025: আজ চাপড়া ষষ্ঠী, ভাদ্র মাসের শুক্ল ষষ্ঠী তিথিতে পালিত হয় এই উৎসব, কী এর মাহাত্ম্য?

    Chapra Sasthi 2025: আজ চাপড়া ষষ্ঠী, ভাদ্র মাসের শুক্ল ষষ্ঠী তিথিতে পালিত হয় এই উৎসব, কী এর মাহাত্ম্য?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আজ চাপড়া ষষ্ঠী (Chapra Sasthi 2025)। প্রতি বছর ভাদ্র মাসের শুক্লষষ্ঠীর তিথিতে পালিত হয় চাপড়া ষষ্ঠী। মূলত সন্তান-সন্ততির মঙ্গলকামনায় মায়েরা পালন করে থাকেন চাপড়া ষষ্ঠী (Chapra Sasthi)।

    বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন নিয়ম

    বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন নিয়ম মেনে পালিত হয় চাপড়া ষষ্ঠী। তবে, এই দিন সব মায়েরা মা ষষ্ঠীর পুজো করে সন্তানের মঙ্গল কামনা করে থাকেন। হিন্দু বর্ষপঞ্জিকা অনুসারে, প্রতি মাসের শুক্লাষষ্ঠী তিথিতে বিভিন্ন নামে পূজিত হন মা ষষ্ঠী। জ্যৈষ্ঠ মাসে অরণ্য ষষ্ঠী, শ্রাবণ মাসে লুন্ঠন ষষ্ঠী, ভাদ্র মাসে চাপড়া ষষ্ঠী (Chapra Sasthi 2025), আশ্বিন মাসে দুর্গা ষষ্ঠী বা বোধন ষষ্ঠী, অগ্রহায়ণ মাসে মূলা ষষ্ঠী, পৌষ মাসে পাটাই ষষ্ঠী, মাঘ মাসে শীতল ষষ্ঠী, চৈত্র মাসে অশোক ষষ্ঠী পালিত হয়।

    পুরাণে চাপড়া ষষ্ঠীর উল্লেখ

    স্কন্দ পুরাণ অনুসারে, দেবী ষষ্ঠী হলেন কার্তিকের স্ত্রী। তিনি ব্রহ্মার মানস কন্যা, নাম দেবসেনা। ভাদ্র মাসে চাপড়াষষ্ঠী ও মন্থন ষষ্ঠী। একে অক্ষয় ষষ্ঠীও বলা হয়। মূলত মায়েরা এই লৌকিক উৎসবে যোগদান করেন। তাঁরা আঁচলে কলা বেঁধে ছেলেমেয়েকে কোলে নিয়ে চাপড়া ষষ্ঠীর ব্রতকথা (Chapra Sasthi Vrat) শোনেন। তারপর কাঁঠালী কলা, পিটুলী গোলা দিয়ে পুতুল বানিয়ে পুকুরে ভাসায় গ্রামের মায়েরা, সন্তানের কল্যাণে। অনেক জায়গায় কলা গাছের কান্ডের ত্বক আর নারকেলের পাতার খিল দিয়ে নৌকা তৈরি করা হয়। নৌকায় রাখা হয় পিটুলি দিয়ে তৈরি পুতুল, রিং এর মতো দেখতে পিটুলির চাপড়া, তাতে সিঁদুরের টিপ দেওয়া হয়। পুজোর শেষে নৌকা ভাসিয়ে দেন। এই দিন চালের কিছু খেতে নেই। তার বদলে লুচি, পরোটা খাওয়ার বিধান রয়েছে। আর মটর ডালের চাপড়া বানিয়ে তাওয়ায় সেঁকে মায়েদের খেতে হয়। তালের রস দিয়ে চাপড়া পিঠে বানিয়ে দেবীকে উৎসর্গ করেন। তারপর পুজো শেষে তা বাচ্চাদের মধ্যে বিতরণ করা হয়।

    চাপড়া ষষ্ঠীর ব্রতকথা…

    কথিত আছে, কোনও এক দেশে এক বণিক বাস করত। তার তিন ছেলে তিন বউ ছিল। বণিক ও বণিকের বউ তার ছোট ছেলের সন্তানকে বেশি ভালোবাসতেন। ভাদ্র মাসের শুক্লপক্ষের একসময় চাপড়া ষষ্ঠী (Chapra Sasthi 2025) করবে বলে বণিকের বউ একটি পুকুর কাটলে সেই পুকুরের কোন জল দেখা গেল না। তারা মনের দুঃখে মা ষষ্ঠীর কাছে প্রার্থনা করে ঘুমিয়ে যেতেই রাত্রে স্বপ্নাদেশ পান যে ছোট নাতিকে কেটে যদি তার রক্ত ওই পুকুরে ছড়িয়ে দেওয়া হয়, তবে জল দেখা দেবে। অনেক কান্নাকাটি পর তারা মা ষষ্ঠীর আদেশ অনুযায়ী ছোট নাতির রক্ত সেই পুকুরে ছড়িয়ে দেয়। কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে ছোট বউ তার চাপড়া এবং পিটুলির পুতুল ভাসানোর সময় পুকুর থেকে পুনরায় তার ছেলেকে ফিরে পায় এবং এরপর থেকেই মা ষষ্ঠীর মাহাত্ম্য চারিদিকে ছড়িয়ে পড়তে থাকে এবং এই ব্রত (Chapra Sasthi) শুরু হয়।

    ভাদ্র মাসজুড়ে পর পর উৎসব

    গোটা ভাদ্র মাস জুড়ে থাকে একাধিক উৎসব। ৩ সেপ্টেম্বর পালিত হবে ললিতা সপ্তমী। এই দিন থেকে শুরু হচ্ছে মহালক্ষ্মী ব্রত। রয়েছে, জ্যেষ্ঠ গৌরী আবাহনা। ৪ সেপ্টেম্বর রবিবার পালিত হবে, রাধা অষ্টমী। পালিত হবে জ্যেষ্ঠ গৌরী পুজো। তেমনই ৫ সেপ্টেম্বর রবিবারে পালিত হবে জ্যোষ্ঠ গৌরী বিসর্জন। ৬ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার রয়েছে পার্শ্ব একাদশী। ৭ সেপ্টেম্বর বুধবার বামন জয়ন্তী, ভুবনেশ্বরী জয়ন্তী পালিত হবে। তেমনই সেদিন বৈষ্ণব পর্ব একাদশী ও কল্কি দ্বাদশী তিথি রয়েছে। ৯ সেপ্টেম্বর শুক্রবার হল গণেশ চতুর্দশী। এদিন গণেশ পুজো সমাপ্ত ও বিসর্জন হবে।

  • Ramakrishna 454: এর কী সূক্ষ্মবুদ্ধি! ন্যাংটা এইরকম ফস করে বুঝে নিত

    Ramakrishna 454: এর কী সূক্ষ্মবুদ্ধি! ন্যাংটা এইরকম ফস করে বুঝে নিত

    ভক্ত সহস্রের মধ্যে কতককে দেখেছি—কেউ কাম-ক্রোধ, লোভ-মোহ প্রভৃতির ভারে জর্জরিত; কেউ আবার সেই ভারের উপর বসে আছে, কেউ কেউ কিছুটা দূরে সরে দাঁড়িয়ে রয়েছে।

    শ্রীরামকৃষ্ণ সংসারী লোকদের অবস্থা দেখেছেন—যারা ঈশ্বরকে ভুলে গেছেন, তাদের সেই করুণ দশা তিনি অনুভব করেছেন। তাই তাঁর মন থেকে নিজেই সব ত্যাগ হয়ে গিয়েছে।

    “ও কী আশ্চর্য!” — আমি তো কত জপ-ধ্যান করেছি, তারপর গিয়ে তবে কিছুটা ফল পেয়েছিলাম। কিন্তু উনি (ঠাকুর) তো একেবারে এমন শীঘ্র কেমন করে সব ত্যাগ করলেন? কাম (কামনা) মন থেকে চলে যাওয়া কি এত সহজ ব্যাপার?

    আমার নিজের মনে পড়ে, প্রায় ছয় মাস পরে যখন বুক ভারী হয়ে এলো, আমি গাছতলায় পড়ে গিয়ে কাঁদতে লাগলাম। বললাম— “মা! যদি সত্যিই ত্যাগ হয় না, তাহলে গলায় ছুরি দেব।”

    “যদি কামিনী-কাঞ্চনের মোহ মন থেকে চলে যায়, তবে আর বাকি কী থাকে? তখনই কেবল ‘ব্রহ্মানন্দ’।”

    শশী তখন সবে ঠাকুরের কাছে যাওয়া-আসা শুরু করেছেন। তিনি তখন বিদ্যাসাগরের কলেজে বিএ-র প্রথম বর্ষে পড়েন। ঠাকুর তখনই তাঁর কথা বলছেন।

    শ্রী রামকৃষ্ণ ভক্তদের উদ্দেশে বলছেন— “সেই যে ছেলেটি মাঝে মাঝে আসে, কিছুদিন তার মনে টাকাকড়ির ভাব ওঠে — আমি দেখেছি। কিন্তু কতজনকে দেখেছি, যাদের মনে আদৌ সে ভাব ওঠে না। কয়েকটি ছোকরা তো বিয়েই করবে না।”

    ভক্তরা নিঃশব্দে বসে শুনছেন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (ভক্তদের প্রতি) —
    মন থেকে কামিনী-কাঞ্চন সব না গেলে অবতারকে চিনতে পারা কঠিন।
    বেগুনওলাকে হীরার দাম জিজ্ঞাসা করেছিল, সে বললে, আমি এর বদলে নয় সের বেগুন দিতে পারি, এর একটাও বেশি দিতে পারি না। (সকলের হাস্য ও ছোট নরেনের উচ্ছ্বাস)

    ঠাকুর দেখিলেন, ছোট নরেন কথার মর্ম ফস করিয়া বুঝিয়াছেন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ —
    এর কী সূক্ষ্মবুদ্ধি! ন্যাংটা এইরকম ফস করে বুঝে নিত — গীতা, ভাগবত, যেখানে যা, সে বুঝে নিত।

  • Ramakrishna 453: কামিনী-কাঞ্চনের ত্যাগ ও ব্রহ্মানন্দ

    Ramakrishna 453: কামিনী-কাঞ্চনের ত্যাগ ও ব্রহ্মানন্দ

    ঠাকুর একটি তরুণ ভক্তের দিকে চেয়ে আছেন এবং আনন্দে ভাসছেন। সেই ভক্তকে লক্ষ্য করে ভক্তদের উদ্দেশ্যে বলছেন — “তিনটে জিনিস একেবারেই নেই ওর — জমি, টাকা আর স্ত্রী। এই তিনটে জিনিসের উপর মন রাখলে ঈশ্বর-ভক্তি হয় না।

    আমি একবার ওকে দেখেছিলাম।”

    তারপর সেই ভক্তটির দিকে ফিরে ঠাকুর বললেন — “তোরে কি দেখেছিলাম, বল?”

    কামিনী-কাঞ্চনের ত্যাগ ও ব্রহ্মানন্দ

    ভক্ত সহস্রের মধ্যে কতককে দেখেছি—কেউ কাম-ক্রোধ, লোভ-মোহ প্রভৃতির ভারে জর্জরিত; কেউ আবার সেই ভারের উপর বসে আছে, কেউ কেউ কিছুটা দূরে সরে দাঁড়িয়ে রয়েছে।

    শ্রীরামকৃষ্ণ সংসারী লোকদের অবস্থা দেখেছেন—যারা ঈশ্বরকে ভুলে গেছেন, তাদের সেই করুণ দশা তিনি অনুভব করেছেন। তাই তাঁর মন থেকে নিজেই সব ত্যাগ হয়ে গিয়েছে।

    “ও কী আশ্চর্য!” — আমি তো কত জপ-ধ্যান করেছি, তারপর গিয়ে তবে কিছুটা ফল পেয়েছিলাম। কিন্তু উনি (ঠাকুর) তো একেবারে এমন শীঘ্র কেমন করে সব ত্যাগ করলেন? কাম (কামনা) মন থেকে চলে যাওয়া কি এত সহজ ব্যাপার?

    আমার নিজের মনে পড়ে, প্রায় ছয় মাস পরে যখন বুক ভারী হয়ে এলো, আমি গাছতলায় পড়ে গিয়ে কাঁদতে লাগলাম। বললাম—
    “মা! যদি সত্যিই ত্যাগ হয় না, তাহলে গলায় ছুরি দেব।”

    “যদি কামিনী-কাঞ্চনের মোহ মন থেকে চলে যায়, তবে আর বাকি কী থাকে? তখনই কেবল ‘ব্রহ্মানন্দ’।”

    শশী তখন সবে ঠাকুরের কাছে যাওয়া-আসা শুরু করেছেন। তিনি তখন বিদ্যাসাগরের কলেজে বিএ-র প্রথম বর্ষে পড়েন। ঠাকুর তখনই তাঁর কথা বলছেন।

    শ্রী রামকৃষ্ণ ভক্তদের উদ্দেশে বলছেন—
    “সেই যে ছেলেটি মাঝে মাঝে আসে, কিছুদিন তার মনে টাকাকড়ির ভাব ওঠে — আমি দেখেছি। কিন্তু কতজনকে দেখেছি, যাদের মনে আদৌ সে ভাব ওঠে না। কয়েকটি ছোকরা তো বিয়েই করবে না।”

    ভক্তরা নিঃশব্দে বসে শুনছেন।

  • Ganesh Chaturthi 2025: আজ দেশজুড়ে পালিত হচ্ছে গণেশ চতুর্থী, সিদ্ধিদাতার আরাধনায় জীবনে আসবে সুখ-সমৃদ্ধি

    Ganesh Chaturthi 2025: আজ দেশজুড়ে পালিত হচ্ছে গণেশ চতুর্থী, সিদ্ধিদাতার আরাধনায় জীবনে আসবে সুখ-সমৃদ্ধি

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: সিদ্ধিদাতা গণেশকে সঙ্কট মোচক বলা হয়। জীবনের সকল বাধা দূর করেন গণপতি বাপ্পা। আজ, বুধবার, ২৭ অগাস্ট গণেশ চতুর্থী (Ganesh Chaturthi 2025)। প্রতি বছর ভাদ্র মাসের শুক্লপক্ষের চতুর্থী তিথিতে দেশজুড়ে সাড়ম্বরে গণেশ চতুর্থী (Ganesh Chaturthi) উদযাপিত হয়। আজ সারা দেশে পালন করা হচ্ছে গণেশ চতুর্থী। এই দিনটি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভক্তদের বিশ্বাস, গণেশের পুজো ঘরে সুখ, সমৃদ্ধি ও শান্তি নিয়ে আসে। অনেকেই সিদ্ধিদাতা গণপতির পুজো করে কষ্ট লাঘবের চেষ্টা করেন। গণপতির কৃপায় বহু কষ্টই লাঘব হতে পারে বলে মনে করা হয়।

    চতুর্দশী তিথিতে বিসর্জনের মাধ্যমে শেষ হবে এই উৎসব। আবির্ভাব দিবস থেকে বিসর্জন— মোট ১০ দিন গণেশ ভক্তরা পুজো, উপোস, প্রার্থনা, সঙ্গীত এবং নৃত্যের মধ্যে দিয়ে দিন নির্বাহ করেন। এই উৎসব অত্যন্ত পবিত্র। ভারতের জাতীয়তাবোধের উন্মেষের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত গণেশ পুজো। পরাধীন ভারতে মহারাষ্ট্রে গণপতি উৎসব (Ganesh Chaturthi 2025) শুরু করেছিলেন লোকমান্য বাল গঙ্গাধর তিলক। হিন্দু জাতীয়তাবাদী উৎসব হিসেবে তা ব্যাপক প্রভাব ফেলতে সক্ষম হয়েছিল। বাল গঙ্গাধর তিলকের আগে ছত্রপতি শিবাজি মহারাজও সপ্তদশ শতকে গণেশ উৎসব করেছিলেন।

    গণেশ চতুর্থীর শুভ সময়

    চতুর্থী তিথি শুরু: ২৬ অগাস্ট, মঙ্গলবার দুপুর ১টা ৫৪ মিনিট থেকে
    চতুর্থীর তারিখ শেষ: ২৭ অগাস্ট, বুধবার দুপুর ৩টে ৪৪ মিনিটে
    গণেশ পুজোর মুহূর্ত: ২৭ অগাস্ট, বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা ৬ মিনিট থেকে দুপুর ১টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত
    গণেশ চতুর্থীর ব্রত পালন: ২৭ অগাস্ট

    গণেশ উৎসবের তাৎপর্য

    স্কন্দপূরাণ অনুযায়ী, শ্রী গণেশ জন্মগ্রহণ করেছিলেন ভাদ্রপদ মাসের শুক্লপক্ষের চতুর্থী তিথিতে। এদিনই মা পার্বতীর কোলে এসেছিল গণেশ। সমস্ত দেব-দেবীর মধ্যে গণেশ হলেন প্রথম পূজিত দেবতা। ভগবান শিব গণেশকে এই বর দিয়েছিলেন। যে কোনও শুভ কাজে এবং আচার-অনুষ্ঠানে প্রথমেই ভগবান গণেশের পুজো করা হয়। গণেশের পুজো করলে সমস্ত বাধা দূর হয়। তাই গণেশ চতুর্থী নামে জনপ্রিয়। এই দিনটি আবার বিনায়ক চতুর্থী নামেও পরিচিত। এটা বিশ্বাস করা হয় যে ভাদ্রপদ মাসের শুক্লপক্ষের চতুর্থী থেকে এই মাসের চতুর্দর্শী তিথি পর্যন্ত ভগবান গণেশ পৃথিবীতে ১০ দিন অবস্থান করেন। গণেশ চতুর্থীতে প্যান্ডেল এবং বাড়িতে গণেশ স্থাপন করা হয়। কথিত আছে যে এই দিনগুলিতে যে ব্যক্তি বাড়িতে বসে ভক্তি ভরে গণেশের পূজা করেন, তার জীবন থেকে মানসিক চাপ দূর হয়। সুখ ও সমৃদ্ধি আসে।

    গণেশ চতুর্থী পুজো-বিধি

    গণেশ চতুর্থীর দিন সকালে স্নান সেরে বাড়ির মন্দিরে প্রদীপ জ্বালান। এরপর পুজো ও ব্রতর সঙ্কল্প নিন। এই দিনে শুভ সময়ে গণেশের মূর্তি প্রতিষ্ঠা করা হয়। ভক্তদের তাদের ইচ্ছানুযায়ী গণপতির মূর্তি স্থাপন করা উচিত। এরপর গঙ্গাজল দিয়ে প্রতিমাকে অভিষেক করুন। এবার গণেশকে ফুল ও দূর্বা ঘাস অর্পণ করুন। দূর্বা ভগবান গণেশের খুব প্রিয়। এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে দূর্বা নিবেদন করলে ভগবান গণেশ প্রসন্ন হন এবং ভক্তদের সমস্ত কষ্ট দূর করেন। ভগবান গণেশের পূজোর সময়, তাঁকে সিঁদুর লাগান এবং তাঁর প্রিয় ভোগ মোদক বা লাড্ডু নিবেদন করুন। পুজো শেষে আরতি করে তাঁকে প্রণাম করুন এবং তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। শেষে প্রসাদ বিতরণ করুন।

    কিন্তু গণপতির পুজোরও বহু নিয়ম আছে। পুজো করার জন্য সেই নিয়মগুলি ঠিক করে পালন করতে হয়। সেই নিয়মগুল পালন না করলে গণপতির কৃপা পাওয়া থেকে এত কিছুর পরেও বঞ্চিত থেকে যেতে পারেন কেউ কেউ। শাস্ত্র অনুসারে, দূর্বা ছাড়া গণপতির পুজো অসম্পূর্ণ বলে মনে করা হয়। এছাড়াও, কথিত আছে যে সিদ্ধিদাতাকে দূর্বা নিবেদন করলে তিনি দ্রুত প্রসন্ন হন এবং ভক্তদের সমস্ত কষ্ট দূর করেন।

    ভগবান গণেশকে দূর্বা ঘাস নিবেদন করা অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয়। দূর্বা ভগবান গণেশের প্রিয়। দূর্বা সবসময় জোড়ায় জোড়ায় নিবেদন করা হয়। এমন অবস্থায় দুটি দূর্বাকে যুক্ত করে একটি গিঁট তৈরি করা হয়। এমন অবস্থায় ২২টি দূর্বা যোগ করে ১১ জোড়া তৈরি করুন। যদি তা সম্ভব না হয়, তবে সিদ্ধিদাতাকে ৩ বা ৫ গাঁট দূর্বাও নিবেদন করা যেতে পারে।

    গণেশের পুজোয় কখনই তুলসী পাতা ব্যবহার করা উচিত নয়। পুজোর সময় শুধুমাত্র সাদা বা হলুদ কাপড় পরুন। কালো রঙের কাপড় পরিধান করা থেকে বিরত থাকুন। এদিন চাঁদ দেখা উচিত নয়। বিশ্বাস, চাঁদ দেখলে কলঙ্কের শিকার হতে হয়।

  • Ramakrishna 452: আমি গাছতলায় পড়ে গিয়ে কাঁদতে লাগলাম

    Ramakrishna 452: আমি গাছতলায় পড়ে গিয়ে কাঁদতে লাগলাম

    কেউ পরে বাড়িতে পৌঁছাইয়া বলিতেছেন, “দেবেন্দ্র, আমার জন্য খাবার কিছু করো না, অমনি সামান্য শরীর তত ভালো নয়।”

    দেবেন্দ্রর বাড়িতে ভক্তদের সঙ্গে শ্রীরামকৃষ্ণ। দেবেন্দ্রর বাড়ির বৈঠকখানায় ভক্তদের মজলিস বসেছে। ঠাকুর ভক্তদের সঙ্গে সেখানে বসে আছেন। বৈঠকখানার ঘরটি একতলায়। সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছে, ঘরে আলো জ্বলছে।

    ঘরে উপস্থিত রয়েছেন — ছোট নরেন, রাম, মাস্টার, গিরিশ, দেবেন্দ্র, অক্ষয়, উপেন্দ্র প্রমুখ বহু ভক্ত।

    ঠাকুর একটি তরুণ ভক্তের দিকে চেয়ে আছেন এবং আনন্দে ভাসছেন। সেই ভক্তকে লক্ষ্য করে ভক্তদের উদ্দেশ্যে বলছেন — “তিনটে জিনিস একেবারেই নেই ওর — জমি, টাকা আর স্ত্রী। এই তিনটে জিনিসের উপর মন রাখলে ঈশ্বর-ভক্তি হয় না।

    আমি একবার ওকে দেখেছিলাম।”

    তারপর সেই ভক্তটির দিকে ফিরে ঠাকুর বললেন — “তোরে কি দেখেছিলাম, বল?”

    কামিনী-কাঞ্চনের ত্যাগ ও ব্রহ্মানন্দ

    ভক্ত সহস্রের মধ্যে কতককে দেখেছি—কেউ কাম-ক্রোধ, লোভ-মোহ প্রভৃতির ভারে জর্জরিত; কেউ আবার সেই ভারের উপর বসে আছে, কেউ কেউ কিছুটা দূরে সরে দাঁড়িয়ে রয়েছে।

    শ্রীরামকৃষ্ণ সংসারী লোকদের অবস্থা দেখেছেন—যারা ঈশ্বরকে ভুলে গেছেন, তাদের সেই করুণ দশা তিনি অনুভব করেছেন। তাই তাঁর মন থেকে নিজেই সব ত্যাগ হয়ে গিয়েছে।

    “ও কী আশ্চর্য!” — আমি তো কত জপ-ধ্যান করেছি, তারপর গিয়ে তবে কিছুটা ফল পেয়েছিলাম। কিন্তু উনি (ঠাকুর) তো একেবারে এমন শীঘ্র কেমন করে সব ত্যাগ করলেন? কাম (কামনা) মন থেকে চলে যাওয়া কি এত সহজ ব্যাপার?

    আমার নিজের মনে পড়ে, প্রায় ছয় মাস পরে যখন বুক ভারী হয়ে এলো, আমি গাছতলায় পড়ে গিয়ে কাঁদতে লাগলাম। বললাম—
    “মা! যদি সত্যিই ত্যাগ হয় না, তাহলে গলায় ছুরি দেব।”

  • Ramakrishna 451: দেবেন্দ্রর বাড়িতে ভক্তদের সঙ্গে শ্রীরামকৃষ্ণ

    Ramakrishna 451: দেবেন্দ্রর বাড়িতে ভক্তদের সঙ্গে শ্রীরামকৃষ্ণ

    ছোট নরেনের হাসিতে কী আর! ঠাকুর-ভক্তেরা সকলে হেসে উঠিতেছেন। ঠাকুর আনন্দে তাহাকে দেখাইয়া মাস্টারকে বলিতেছেন:

    “দেখো দেখো, ন্যাকা ন্যাকা হাসে, যেন কিছু জানে না — কিন্তু মনের ভিতর কিছু নাই। তিনটি মনে নাই: কামিনী, কাঞ্চন। মন থেকে একেবারে না গেলে ভগবান-লাভ হয় না।”

    ঠাকুর দেবেন্দ্রর বাড়ি যাইতেছেন দক্ষিণেশ্বরে। দেবেন্দ্রকে একদিন বলিতে ছিলেন, “একদিন মনে করেছি তোমার বাড়িতে যাব।” দেবেন্দ্র বলিয়াছিলেন, “আমিও তাই বলবার জন্য আজ এসেছি। এই রবিবারে যেতে হবে।” ঠাকুর বলিলেন, “কিন্তু তোমার আয় কম, বেশি লোক বলো না, আর গাড়িভাড়া বড় বেশি।”

    দেবেন্দ্র হাসিয়া বলিয়াছিলেন, “তাই কম হলেই বা! ঋণং কৃত্বা ঘৃতং পিবেত্।” অর্থাৎ, ধার করে ঘি খাবে, ঘি খাওয়া চাই।

    ঠাকুর এই কথা শুনিয়া হাসিতে লাগলেন, হাসি আর থামেনা।

    কেউ পরে বাড়িতে পৌঁছাইয়া বলিতেছেন, “দেবেন্দ্র, আমার জন্য খাবার কিছু করো না, অমনি সামান্য শরীর তত ভালো নয়।”

    দেবেন্দ্রর বাড়িতে ভক্তদের সঙ্গে শ্রীরামকৃষ্ণ।
    দেবেন্দ্রর বাড়ির বৈঠকখানায় ভক্তদের মজলিস বসেছে। ঠাকুর ভক্তদের সঙ্গে সেখানে বসে আছেন। বৈঠকখানার ঘরটি একতলায়। সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছে, ঘরে আলো জ্বলছে।

    ঘরে উপস্থিত রয়েছেন — ছোট নরেন, রাম, মাস্টার, গিরিশ, দেবেন্দ্র, অক্ষয়, উপেন্দ্র প্রমুখ বহু ভক্ত।

    ঠাকুর একটি তরুণ ভক্তের দিকে চেয়ে আছেন এবং আনন্দে ভাসছেন। সেই ভক্তকে লক্ষ্য করে ভক্তদের উদ্দেশ্যে বলছেন —
    “তিনটে জিনিস একেবারেই নেই ওর — জমি, টাকা আর স্ত্রী।
    এই তিনটে জিনিসের উপর মন রাখলে ঈশ্বর-ভক্তি হয় না।

    আমি একবার ওকে দেখেছিলাম।”

    তারপর সেই ভক্তটির দিকে ফিরে ঠাকুর বললেন —
    “তোরে কি দেখেছিলাম, বল?”

LinkedIn
Share