Category: পরম্পরা

Get updated History and Heritage and Culture and Religion related news from the Madhyom news portal madhyom.com, West Bengal leading news portal Madhyom.com

  • Antpur: স্বামী বিবেকানন্দ সন্ন্যাসের শপথ নিয়েছিলেন এখানেই, চলুন ঘুরে আসি হুগলির আঁটপুর

    Antpur: স্বামী বিবেকানন্দ সন্ন্যাসের শপথ নিয়েছিলেন এখানেই, চলুন ঘুরে আসি হুগলির আঁটপুর

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: এক সময় এই অঞ্চলের নাম ছিল “বিষখালি”। তৎকালীন বর্ধমান জেলার রেসিডেন্সির দেওয়ান আঁটর খাঁ-র নামে এই প্রাচীন জনপদের নতুন নামকরণ করা হয় “আঁটপুর” (Antpur)।বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুরের মতোই টেরাকোটার শিল্পশৈলীতে গড়া মন্দিরের জন্য বিখ্যাত এই আঁটপুর। এই মন্দিরগুলির মধ্যে সর্বাপেক্ষা উল্লেখযোগ্য হল রাধাগোবিন্দ জিউ-এর মন্দির। ১৭৮৬-১৭৮৭ সালে বর্ধমানের মহারাজের দেওয়ান কৃষ্ণরাম মিত্র এই মন্দিরটি নির্মাণ করেন। ১০০ ফুট উচ্চতার চারচালার ছাদ ও চারটি খিলানযুক্ত স্তম্ভের উপর দাঁড়িয়ে থাকা মন্দিরটির সর্বত্র টেরাকোটার অপূর্ব শিল্পকর্ম রয়েছে। গর্ভগৃহে রয়েছে কষ্টি পাথরের শ্রীকৃষ্ণ মূর্তি। মন্দিরটির চারকোণা গম্বুজ আকৃতির। দোলমঞ্চটিও অসাধারণ শিল্পসমৃদ্ধ।

    বিবেকানন্দের স্মৃতিধন্য ধুনি মন্দির (Antpur)

    এই মন্দিরের কাছেই বাণেশ্বর, জলেশ্বর, ফুলেশ্বর, রামেশ্বর মন্দির। সবকটিতেই রয়েছে অপূর্ব সুন্দর টেরাকোটার কাজ। এর কাছেই সারদা ভবন। আছে শ্রীরামকৃষ্ণ এবং মা সারদার স্মৃতি বিজড়িত এবং শ্রীরামকৃষ্ণর সাক্ষাৎ পার্ষদ স্বামী প্রেমানন্দ, অর্থাৎ বাবুরাম ঘোষেদের দুর্গাবাড়ি। স্বামী বিবেকানন্দের সঙ্গে তাঁর আট গুরুভাই এখানেই গৃহত্যাগ করে সন্ন্যাসের জন্য শপথ গ্রহণ করেন। সেই ঘটনাকে স্মরণ করে এখানে গড়ে উঠেছে ধুনি মন্দির। এক যাত্রাতেই দেখে নেওয়া যায় গৌড়ীয় বৈষ্ণব তীর্থ দ্বাদশ গোপালের অন্যতম পরমেশ্বর দাস ঠাকুরের শ্রীপাট আনরবাটি। মন্দিরে নিত্যানন্দ প্রভুর সেবিত খড়দহের আদি শ্রী শ্রী শ্যামসুন্দরের বিগ্রহ পূজিত হচ্ছেন। রাধাকৃষ্ণ ও বলরাম রূপে পূজিত হচ্ছেন শ্রী চৈতন্য এবং নিত্যানন্দ মহাপ্রভু। আছে প্রায় ৩০০ বছরেরও বেশি প্রাচীন একটি বকুল গাছ। হাতে সময় থাকলে দেখে নেওয়া যায় আঁটপুর (Antpur) থেকে ৬ কিমি দূরে রাজবলহাটে ১৭২৪  সালে নির্মিত আটচালা বিশিষ্ট রাধাকান্ত মন্দির, কবি হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্মভিটে প্রভৃতিও। এখানকার রাজবল্লভী মা তো খুবই জাগ্রত।

    কীভাবে যাবেন? (Antpur)

    আঁটপুর যাওয়ার জন্য হাওড়া স্টেশন থেকে তারকেশ্বর লোকাল ট্রেনে এসে নামতে হবে হরিপাল স্টেশনে। হরিপাল থেকে বাসে বা গাড়িতে মিনিট ৩০-৪০ এর পথ আঁটপুর। হাওড়া থেকে বাসে জাঙ্গিপাড়া এসে সেখান থেকে রিকশাতেও আসা যায় আঁটপুর (Antpur)। আর আঁটপুর থেকে বাসে বা গাড়িতে মিনিট পনেরোর পথ রাজবলহাট। কলকাতা থেকে সকালে বেরিয়ে সারাদিন আঁটপুর ঘুরে আবার সন্ধ্যার মধ্যেই ফিরে আসা যায় কলকাতায় ।

     

    দেশের খবরদশের খবরসব খবরসবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

  • Chhat Puja 2023: আজ থেকে ছটপুজো! জানেন এর মাহাত্ম্য, রীতি-নীতি?

    Chhat Puja 2023: আজ থেকে ছটপুজো! জানেন এর মাহাত্ম্য, রীতি-নীতি?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: লোকবিশ্বাসের মহান উৎসব হল ছট। কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের ষষ্ঠী তিথিতে ছট উৎসব পালিত হয়। চতুর্থী তিথিতে স্নানের মাধ্যমে শুরু হয় ছট আরাধনা। এই পুজোয় সূর্য দেবতার বোন ঊষা, প্রকৃতি, জল, বায়ু এবং ষষ্ঠী মাকে অর্ঘ্য উৎসর্গ করা হয়। ছট আরাধনার সময় বহু শতাব্দী ধরে সূর্যদেবকে অর্ঘ্য নিবেদনের প্রথা রয়েছে। শুধু বিহারে নয় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এই উৎসব পালনের রীতি রয়েছে। হিন্দু সংস্কৃতিতে এই পুজোর গুরুত্ব অপরিসীম।

    পৌরাণিক কাহিনী

    ছট উৎসবে ছটি মাতা অর্থাত্‍ ষষ্ঠী দেবীর পূজা করা হয়। ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণেও এর উল্লেখ রয়েছে। প্রথম মনু স্বয়ম্ভুর পুত্র রাজা প্রিয়ব্রতের কোন সন্তান ছিল না। এ কারণে তিনি মন খারাপ করতেন। মহর্ষি কাশ্যপ রাজাকে পুত্র লাভের জন্য যজ্ঞ করতে বললেন। মহর্ষির আদেশ অনুসারে রাজা যজ্ঞ করলেন। এর পরে, রানী মালিনী একটি পুত্রের জন্ম দেন, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত শিশুটি মৃত জন্মগ্রহণ করে। এতে রাজা ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা গভীরভাবে শোকাহত হন। তারপর আকাশ থেকে একটি রথ মাটিতে অবতরণ করল যাতে মাতা ষষ্ঠী বসেছিলেন। রাজা তাঁর কাছে প্রার্থনা করলে তিনি নিজের পরিচয় দিয়ে বললেন – আমি ব্রহ্মার মানস কন্যা ষষ্ঠী দেবী। আমি পৃথিবীর সকল শিশুকে রক্ষা করি এবং নিঃসন্তান দম্পতিদের সন্তান লাভের বর দিই। এর পরে, দেবী মৃত শিশুর দিকে তার হাত বাড়িয়ে, তাকে আশীর্বাদ করেছিলেন, যা তাকে জীবিত করেছিল। দেবীর এই কৃপায় রাজা খুব খুশি হলেন এবং তিনি ষষ্ঠী দেবীর পূজা প্রচলন করলেন। এর পরেই ধীরে ধীরে এই পূজা সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে বলে মনে করা হয়।

    উৎসবের রীতি

    এই উৎসবের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল সন্ধ্যা অর্ঘ্য। এটি ছট পুজোর গুরুত্বপূর্ণ পর্ব যা তৃতীয় দিনে পড়ে। এই দিনে পরিবারের সকল সদস্যরা ঘাটে যায় এবং অস্তগামী সূর্যকে অর্ঘ্য নিবেদন করা হয়। এদিন ফল, ঠেকুয়া, চালের লাড্ডু ইত্যাদি সাজিয়ে কোমর-গভীর জলে প্রদক্ষিণ করে অর্ঘ্য নিবেদনের রীতি রয়েছে। হিন্দুমতে, ছটপুজোর সামগ্রীতে রয়েছে ভিন্ন সব জিনিস। বিবাহিত দম্পতির দীর্ঘায়ু, তাদের সন্তানদের সুখী জীবন এবং গৃহে সুখ-সমৃদ্ধি কামনায় ছট উপবাস পালন করা হয়।

    আরও পড়ুন: ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’! দীঘা ও সুন্দরবন উপকূলে সতর্কতা

    সূর্য আরাধনা কখন

    হিন্দু ধর্মে সূর্য পূজার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। তিনিই একমাত্র দেবতা যাকে সরাসরি দেখা যায়। বেদে সূর্যকে জগতের আত্মা বলা হয়েছে। সূর্যের আলোর অনেক রোগ ধ্বংস করার ক্ষমতা রয়েছে। সূর্যের শুভ প্রভাবে ব্যক্তি স্বাস্থ্য, গতি এবং আত্মবিশ্বাস লাভ করে। এই বছর, ছট পুজোর অস্তচলগামী অর্ঘ্য ১৯ নভেম্বর রবিবার দেওয়া হবে, আর ঊষা অর্ঘ্য দেওয়া হবে, ২০ নভেম্বর সোমবার। এই দিনে সূর্যোদয় হবে সকাল ০৬ টা ৪৭ মিনিটে। এর পরে, ভক্তরা প্রসাদ গ্রহণ করবেন। 

     

    দেশের খবরদশের খবরসব খবরসবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

  • Kartik Puja: নবদম্পতির বাড়িতে কেন কার্তিক ফেলা হয়? জানুন দেব সেনাপতির পৌরাণিক কাহিনী

    Kartik Puja: নবদম্পতির বাড়িতে কেন কার্তিক ফেলা হয়? জানুন দেব সেনাপতির পৌরাণিক কাহিনী

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: নবদম্পতির বাড়ির সামনে কার্তিক (Kartik Puja) রেখে এসেছে, এমন বন্ধু আমাদের পরিচিত মহলে নিশ্চয়ই রয়েছে। স্বয়ং মহাদেব-পুত্র তাঁদের বাড়িতে এসেছেন বলে কথা! গৃহকর্তা বা কর্ত্রীকে তাই পরপর চার বছর এই পুজো করতে হয়। কিন্তু বাড়ির সামনে কার্তিক ঠাকুরই বা কেন রাখা হয়? নিছক মজার উদ্দেশ্যেই নবদম্পতির বাড়ির সামনে কার্তিক ঠাকুর রাখা হয় না। এর মধ্যে লোকাচার রয়েছে। কী সেই লোকাচার? নবদম্পতির কোলে যেন কার্তিকের মতো পুত্র আসে। হঠাৎ কার্তিকের মতো পুত্রের আকাঙ্খা কেন? এর জন্য আমাদের জানতে হবে একটি পৌরাণিক আখ্যান।

    কার্তিকের পৌরাণিক কাহিনী

    পুরাণ অনুযায়ী, দেবাদিদেব মহাদেবের পুত্র হলেন দেব সেনাপতি কার্তিক (Kartik Puja)। তাঁর অপর নাম স্কন্দ। স্কন্দমাতা মানে হল কার্তিকের মাতা। দেবী পার্বতীর এই রূপেরই পুজো করা হয় নবরাত্রির পঞ্চমীর দিন। পৌরাণিক আখ্যান অনুযায়ী, বজ্রাঙ্গ নামে এক অসুর রাজা ছিলেন। তিনি ছিলেন দিতির পুত্র। দেবতাদের রাজা ইন্দ্রকে বজ্রাঙ্গ সিংহাসনচ্যুত করে, বন্দি করেন। দেবতাদের প্রতি বজ্রাঙ্গের এই রোষ আসলে ছিল তাঁর প্রতিশোধ। কারণ ইতিপূর্বে দিতির অসংখ্য পুত্রকে মানে বজ্রাঙ্গের নিজ ভাইদের দেবতারা হত্যা করেছিল। বজ্রাঙ্গের হাতে বন্দি ইন্দ্রকে মুক্ত করতে আসেন ব্রহ্মা এবং কাশ্যপ মুনি। কাশ্যপ মুনি ছিলেন বজ্রাঙ্গের পিতা, অর্থাৎ দিতির স্বামী। ব্রহ্মা এবং কাশ্যপ মুনির অনুরোধে বজ্রাঙ্গ তখনকার মতো ইন্দ্রকে মুক্ত করেন। 

    দৈত্য হয়েও এমন দয়ার ভাব বজ্রাঙ্গের মধ্যে দেখতে পেয়ে ব্রহ্মা তাঁকে বরদান করতে ইচ্ছাপ্রকাশ করলেন। বজ্রাঙ্গ তখন তপস্বী হওয়ার বর প্রার্থনা করলেন এবং বাকি জীবন যেন তিনি ধর্ম পথে চলতে পারেন, সেই আশীর্বাদ ব্রহ্মার কাছে চাইলেন। ব্রহ্মা তাঁর মানসকন্যা বরাঙ্গীর সঙ্গে বজ্রাঙ্গের বিবাহ দিলেন। বজ্রাঙ্গ এবং বরাঙ্গী বনের মধ্যে কুটির বানিয়ে ধর্মকর্ম করতে লাগলেন। বজ্রাঙ্গ তপস্যায় রত থাকতেন এবং বরাঙ্গী গৃহকর্ম সম্পাদন করতেন।

    একদিন দেবরাজ ইন্দ্র ওই কুটিরের পাশ দিয়ে যেতে যেতে বরাঙ্গীকে দেখতে পেয়ে পুরনো অপমানের বদলা নিতে চাইলেন। কখনও বানর সেজে, কখনও ভেড়া বা কখনও সাপ হয়ে কুটির লন্ডভন্ড করতে লাগলেন। ক্রন্দনরত অবস্থায় বরাঙ্গী তাঁর স্বামী বজ্রাঙ্গকে এসব বিষয়ে বললে, বজ্রাঙ্গ ব্রহ্মাকে স্মরণ করলেন। ব্রহ্মা প্রকট হয়ে বর দিতে চাইলে বজ্রাঙ্গ বললেন, ‘‘আমাকে এমন পুত্র দিন, যে দেবতাদের উপর অত্যাচার করতে সমর্থ হবে।’’ ব্রহ্মা বজ্রাঙ্গের মনোমত বরদান করলেন। বরাঙ্গীর গর্ভে জন্ম হল তারক নামের অসুরের‌।

    পরবর্তীতে তারকাসুরের উপর ব্রহ্মার বরদান ছিল যে- ‘‘একমাত্র শিবের বালকপুত্র ছাড়া, কারও হাতে তিনি হত হবেন না।’’ ব্রহ্মার বরদানে অজেয়, অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠেন তারকাসুর। কারণ তিনি জানতেন শিব কখনও বিবাহ করবেন না এবং ত্রিভুবনে ব্রহ্মার বরদানে তাঁকে হত্যা করতে পারে এমন ক্ষমতা কোনও দেবতা, মানুষ বা জীবজন্তুর নেই। তারকাসুর দেবলোক নিজের দখলে আনেন। দেবরাজ ইন্দ্র সিংহাসনচ্যুত হলেন। বিতাড়িত দেবতারা বুঝতে পারলেন শিবের বিয়ে দিতে পারলে তবে তাঁর পুত্রই তারকাসুরকে বধ করতে পারবেন।

    আয়োজন শুরু হল শিব-পার্বতীর বিবাহের। সেখানেও তারকাসুরের আক্রমণ হল। সেই সময় মাতা চন্দ্রঘন্টার রূপ ধারণ করে পার্বতী দেবী অসুরদের বিতাড়িত করেন। এরপর সুসম্পন্ন হয় শিব-পার্বতীর বিবাহ। জন্ম হয় কার্তিকের (Kartik Puja)। মাতা পার্বতী তখন হন স্কন্দমাতা অর্থাৎ কার্তিক জননী। দৈববাণী পেয়ে দেবরাজ ইন্দ্র কার্তিককে সেনাপতি নিযুক্ত করলেন। এক প্রবল যুদ্ধে কার্তিকের হাতে তারকাসুর হত হলেন। দেবতারা তাঁদের হৃত স্বর্গরাজ্য পুনরায় নিজেদের দখলে আনলেন। এমনটাই লেখা রয়েছে ‘স্কন্দপুরাণে’। শিব-পার্বতীর পুত্রের জন্মই হয়েছিল তারকাসুরের বধ এবং স্বর্গ রাজ্যে দেবতাদের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার জন্য। তাই প্রতিটি সন্তান যেন ‘কার্তিক’ এর মতো হয় এই কামনায় বাড়ি বাড়ি পুজো হয় কার্তিকের।

    বাংলায় কার্তিক পুজো বেশ জনপ্রিয়

    বাংলায় কার্তিক পুজো (Kartik Puja) প্রায় সর্বত্রই হয়, এর মধ্যে হুগলির বাঁশবেড়িয়া এবং পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার কার্তিক পুজো  ব্যাপক জনপ্রিয়। এই দুই জায়গায় কার্তিক পুজোকে কেন্দ্র করে উৎসবে মাতেন লাখ লাখ মানুষ। সুসজ্জিত আলোর মালা, মণ্ডপসজ্জার কারুকার্য, বিভিন্ন হিন্দু দেব-দেবীদের বিশালাকার প্রতিমার সঙ্গে থাকে নানা রকমের বাজনা। চলতি বছরে কাটোয়ার একাধিক পুজো মণ্ডপে আগের দিন থেকেই ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। নিউ আপনজন, জনকল্যাণের মতো ক্লাবগুলিতে এবারও থিমের পুজো লক্ষ্য করা যাবে। কাটোয়ার কার্তিক পুজো রাজ্যজুড়ে জনপ্রিয় কার্তিক লড়াই নামে। ১৭৫০ নাগাদ ধুমধাম করে কাটোয়াতে কার্তিক পুজোর সূত্রপাত হয় বলে জানা যায়। অন্যদিকে বাঁশবেড়িয়াতেও কার্তিক পুজোর বেশ ধুমধাম চোখে পড়ছে। যেমন, চলতি বছরে ৪৮ বর্ষে পদার্পণ করছে বাঁশবেড়িয়ায় অনির্বাণের জামাই কার্তিক পুজো। বিগত বছরগুলিতে একের পর এক দারুণ থিম নিয়ে এসেছে এই অনির্বাণ। আর এবার তাদের থিম নয়া সংসদ ভবন।

     

    দেশের খবরদশের খবরসব খবরসবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

  • Birsa Munda: আজ জনজাতি গৌরব দিবস, জানুন বিরসা মুন্ডার ব্রিটিশ বিরোধী সশস্ত্র সংগ্রামের ইতিহাস

    Birsa Munda: আজ জনজাতি গৌরব দিবস, জানুন বিরসা মুন্ডার ব্রিটিশ বিরোধী সশস্ত্র সংগ্রামের ইতিহাস

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ঝাড়খণ্ড রাজ্যের খুন্তি জেলার প্রত্যন্ত গ্রাম উলিহাতু। মেরেকটে আড়াইশো পরিবারের বাস গ্রামে। মোট জনসংখ্যা ১,১২৬। এমন গ্রামের সংখ্যা ভারতে নেহাত কম নয়। গুনতে গেলে কয়েক লাখে থামতে হবে। তবে হঠাৎ উলিহাতু নিয়ে আলোচনা কেন? কী এমন বিশেষত্ব রয়েছে এই গ্রামে ? উত্তর হল, ছোট্ট প্রত্যন্ত এই গ্রাম এক দেশ বিখ্যাত যোদ্ধার জন্মভূমি। যাঁকে তার অনুগামীরা ‘ধরতি আবা’ বলতেন। অর্থাৎ কিনা স্বয়ং ভগবান। যাঁকে দমানোর জন্য ব্রিটিশ সেনাবাহিনীকে পর্যন্ত মাঠে নামতে হয়েছিল। তিনি মুন্ডা বিদ্রোহের অবিসংবাদী নেতা ভগবান বিরসা মুন্ডা (Birsa Munda)। মুন্ডা শব্দটি সংস্কৃত থেকে উৎপত্তি হয়েছে যার প্রকৃত অর্থ ‘গ্রাম প্রধান’।

    ১৮৭৫ সালে জন্মগ্রহণ করেন বিরসা, মুখস্থ ছিল রামায়ণ-মহাভারত

    ১৮৭৫ সালের ১৫ নভেম্বর এক গরীব পরিবারে জন্ম হয় বিরসা মুন্ডার (Birsa Munda)। পার্থিব জীবন মাত্র ২৫ বছরের ছিল কিন্তু তিনি আজও বেঁচে রয়েছেন শোষণ, বঞ্চনা, অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রতীক হিসেবে। জীবিত অবস্থাতেই তিনি ‘ভগবান বিরসা মুন্ডা’ নামে খ্যাতি লাভ করেন। কোটি কোটি ভারতবাসীর হৃদয়ে শ্রদ্ধার আসনে তিনি আসীন। ভারতের জনজাতি এলাকাগুলিতে খ্রিস্টান মিশনারীদের ধর্মান্তকরণ ব্রিটিশ আমল থেকেই চালু রয়েছে। ছোট্ট প্রত্যন্ত গ্রামে বিরসা মুন্ডাকে খ্রিস্টান ধর্মের উপাসনা করার জন্য জোর করা হলে, তিনি গ্রামের খ্রিস্টান স্কুল ত্যাগ করেন। বিরসা মুন্ডা হিন্দুধর্মের প্রতি গভীর শ্রদ্ধাশীল ছিলেন বলে জানা যায়। নিজগৃহের বিভিন্ন দেবতার প্রতি তাঁর পরম ভক্তি ছিল। মাত্র ১৫ বছর বয়সে তিনি বৈষ্ণব ধর্মগুরু আনন্দ পাঁড়ের কাছে দীক্ষা নেন। খাদ্যাভাসে ছিলেন নিরামিষাশী। কণ্ঠস্থ ছিল রামায়ণ-মহাভারত।

    অত্যাচারের বিরুদ্ধে লড়ার জন্য সেনাবাহিনী গঠন

    ১৮৯৪ সালে ভয়াবহ খরা দেখা দিল। নির্দয় ব্রিটিশ সরকার তবুও কর সংগ্রহ করছিল সাধারণ মানুষের উপর অত্যাচার করে। ওই বছরেই ব্রিটিশ সরকার অরণ্য আইন বলবৎ করে। অরণ্যের উপর জনজাতিদের অধিকার খর্ব হয়। এই অত্যাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য সংকল্পবদ্ধ হন তরুণ বিরসা মুন্ডা (Birsa Munda)। স্থানীয় মানুষজনকে সামরিক প্রশিক্ষণ দিয়ে সেনাবাহিনী তৈরির কাজ শুরু করেন। ১৮৯৫ সালেই ‘কর মুক্ত’ আন্দোলন করার অপরাধে তাঁকে জেলে পাঠানো হয়। দুই বছর জেলে থাকার পরে ১৮৯৭ সালে তিনি মুক্তি পান। পুনরায় শুরু হয় বিরসা মুন্ডার নেতৃত্বে ঐতিহাসিক আন্দোলন। ছোটনাগপুরে শুরু হয় তীর ধনুক নিয়ে আন্দোলন।

    ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ

    ১৮৯৮ সালে টাঙ্গা নদীর তীরে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে বিরসা মুন্ডার যুদ্ধ শুরু হয়। যুদ্ধে ব্রিটিশদের পরাজিত করতে সমর্থ হন তিনি। যুদ্ধজয়ের পর তিনি বলেন, ‘‘প্রথমবার আমরা জয়লাভ করেছি। কিন্তু এর বিরূপ প্রভাব শত শত মানুষ ভোগ করেছে। শত শত মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নির্যাতন করা হয়েছে। এত নির্যাতনের পরেও থামেনি মানুষের সংগ্রাম।’’ ১৯০০ সালে ডোবাড়ি পাহাড়ে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে ভয়াবহ সংঘর্ষে অনেক নারী ও শিশু নিহত হন। বিরসা মুন্ডাকে ধরতে তাঁর মাথার দাম ৫০০ টাকা নির্ধারণ করে ব্রিটিশ সরকার। নিরস্ত্র বিরসাকে জঙ্গলের মধ্যে ঘুমন্ত অবস্থায় গ্রেফতার করে ব্রিটিশ সরকার। কথিত আছে, কারাগারে থাকাকালীন খাবারে বিষ মিশিয়ে বিরসা মুন্ডাকে (Birsa Munda) হত্যা করা হয়‌। ১৯০০ সালের ৯ জুন স্বর্গযাত্রা করেন ভগবান বিরসা মুন্ডা।

    বিরসার জন্মদিন ‘জনজাতি গৌরব দিবস’

    ঝাড়খণ্ড, বিহার, ছত্তিসগড়, পশ্চিমবঙ্গ এবং ওড়িশাতে আজও পর্যন্ত লাখ লাখ মানুষ ‘বিরসা মুন্ডা’কে ‘ভগবান বিরসা মান্দা’ হিসাবে পূজা করে থাকেন। এমন একজন ঐশ্বরিক ব্যক্তিত্ব যিনি তরুণ প্রজন্মের প্রেরণার কেন্দ্র ,- যিনি ভারতের সম্পদ, তিনি ব্রাত্য থেকেছে বরাবর। তাঁর প্রাপ্য সম্মান পাননি। স্বাধীনতার পর থেকেই। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কয়েক বছর আগে ‘মন কি বাতে’, ‘ভগবান বিরসা মুন্ডা’র দুঃসাহসিক গল্প স্মরণ করেন এবং ঘোষণা করেন, তাঁর জন্ম-জয়ন্তী, প্রতি বছর ‘জনজাতি গৌরব দিবস’ হিসাবে উদযাপন করা হবে।

     

    দেশের খবরদশের খবরসব খবরসবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

  • Bhai Phonta: ‘ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা’! ভাইফোঁটা কেন পালিত হয়? জানুন নেপথ্য-কাহিনি

    Bhai Phonta: ‘ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা’! ভাইফোঁটা কেন পালিত হয়? জানুন নেপথ্য-কাহিনি

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: জলযোগে লুচি, আলুর দম, ফুলকপির তরকারি সঙ্গে বিভিন্ন রকমের মিষ্টি। দুপুরে মাংস অথবা মাছ-ভাত। ভাইফোঁটা মানেই যে কোনও বাঙালি বাড়ির পাতে এগুলো থাকবেই‌। সাধারণত কালীপুজোর দুদিন পর সম্পন্ন হয় ভাইফোঁটা (Bhai Phonta)। এদিন সকাল থেকেই বাঙালি বাড়িতে ব্যস্ততা তুঙ্গে ওঠে‌‌। একদিকে জলযোগের আয়োজন তো অন্যদিকে সাজগোজ। ভাই-দাদারা পাঞ্জাবি পরবে তো দিদি-বোনেরা শাড়ি। হিন্দু ধর্মের যে কোনও পুজো বা ব্রত সম্পন্ন হয় পরিবার, আত্মীয় স্বজনদের মঙ্গল কামনার উদ্দেশ্যে। ভাইফোঁটা হলো ভাই ও বোনের মঙ্গল কামনার ব্রত। উভয়ের জীবনেই যেন সুখ, শান্তি, সমৃদ্ধি বিরাজ করে, সেই প্রার্থনাই ভাই-বোনেরা একে অপরের উদ্দেশ্যে করে থাকে এই বিশেষ তিথিতে।

    পঞ্জিকা অনুযায়ী, এই উৎসব কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়াতে উদযাপিত হয়। মাঝে মধ্যে এটি শুক্লপক্ষের প্রথম দিনেও উদযাপিত হয়ে থাকে। বাঙালির ঘরোয়া এই উৎসবে অন্যান্য পুজোর মতো রীতি, আচার বা মন্ত্রোচ্চারণ সেভাবে নেই বললেই চলে। ছড়ার মতো পাঠ করা হয়—

    ‘‘ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা, যমের দুয়ারে পড়ল কাঁটা—
    যমুনা দেয় যমকে ফোঁটা, আমি দিই আমার ভাইকে ফোঁটা॥’’

    বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন নামে পরিচিত

    ভাইফোঁটা যেন বাঙালির নিজস্ব উৎসব। সবকিছুতেই বাঙালি মোড়ক। তবে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ভাইফোঁটার বিভিন্ন নাম রয়েছে। উত্তর ও পশ্চিম ভারতের এই উৎসব ‘ভাই দুজ’ নামে পরিচিত। সেখানে ভাইফোঁটা পাঁচ-দিনব্যাপী দীপাবলি উৎসবের শেষদিন। আবার, মহারাষ্ট্র, গোয়া ও কর্ণাটকে ভাইফোঁটাকে বলে ‘ভাই বিজ’। নেপালে ও পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং পার্বত্য অঞ্চলে এই উৎসব ‘ভাই টিকা’ নামে পরিচিত। ভাঁইফোটা, ভাই ও বোনদের উপহার পাওয়ার দিনও বটে। সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে আধুনিক প্রজন্মকে ভাইফোঁটার দিন ভাই ও বোনদের জন্য পছন্দ মতো ‘গিফট আইটেম’ কিনতে দেখা যায়। কোথাও কোথাও সামাজিক সদ্ভাবনার উদ্দেশ্যে গণ ভাইফোঁটার (Bhai Phonta) আয়োজন করা হয়।

    কী করা উচিত ও উচিত নয়

    এই পবিত্র দিনে বোনেরা ভাইয়ের কপালে চন্দনের ফোঁটা দেন। বাস্তুতন্ত্র অনুসারে ভাইকে ফোঁটা দেওযার সময় তাঁর মুখ পূর্ব, উত্তর বা উত্তর-পূর্ব দিকে থাকা উচিত। এই দিনে ভাইকে ফোঁটা দেওয়ার আগে কিছু খাওয়া উচিত নয়। ভাইয়ের থেকে পাওয়া উপহার যেমনই হোক না কেন, তার দেওয়া উপহারকে কখনও অসম্মান করবেন না। ভাইফোঁটার দিন কপালে ফোঁটা দেওযার আগে দুজনেই কিছু খাবেন না। ওই দিন মিথ্যা কথা একেবারেই বলবেন না। এদিন কালো কাপড় একেবারেই পরা উচিত নয়। 

    ভাইফোঁটার পৌরাণিক কাহিনি

    তবে, ভাইফোঁটার (Bhai Phonta) নেপথ্যে  রয়েছে বেশ কয়েকটি পৌরাণিক কাহিনী। কথিত আছে, সূর্যদেব ও তার পত্নী সংজ্ঞার যমুনা নামে কন্যা এবং যম নামে পুত্রসন্তান ছিল। পুত্র-কন্যা সন্তানের জন্মের পরে সূর্যদেবের উত্তাপ স্ত্রী সংজ্ঞা সহ্য করতে পারতেন না। তিনি তখন নিজের প্রতিলিপি ছায়াকে স্বর্গলোকে রেখে মর্ত্যে নেমে আসেন। সংজ্ঞার প্রতিরূপ হওয়ার কারণে দেবতারা ছায়াকে চিনতে পারতেন না। স্বর্গে বিমাতা ছায়া যমুনা ও যমের প্রতি দুর্ব্যবহার করতে শুরু করেন। কিন্তু ছায়ার মোহে অন্ধ সূর্যদেব কোনও প্রতিবাদ না করায় অত্যাচারের মাত্রা দিনের পর দিন বাড়তেই থাকে। এভাবেই একদিন বিমাতা কর্তৃক স্বর্গরাজ্য থেকে বিতাড়িত হন যমুনা। যমুনার বিয়ে হয় এক উচ্চ বংশজাত পরিবারে। বিয়ের পর দীর্ঘকাল যমুনাকে দেখতে না পেয়ে মনে আকুলতা তৈরি হয় যমের। এরপরই মন শান্ত করতে দিদির বাড়ি যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন যম। কালী পুজোর দুদিন পরে যমুনার বাড়ি পৌঁছান যম। ভাইয়ের আগমনে তার জন্য জন্য নানা রকমের খাবারের আয়োজন করেন দিদি যমুনা। দিদির আন্তরিকতায় ও ব্যবহারে মুগ্ধ হয়ে দিদিকে উপহার স্বরূপ বরদান প্রার্থনা করতে বলেন যম। সেই সময় যমুনা ভাইয়ের কাছে প্রার্থনা করেন যে, ‘ভ্রাতৃদ্বিতীয়ার দিন প্রত্যেক ভাই যেন তাঁর বোনের কথা স্মরণ করে এবং প্রত্যেক বোন যেন তাঁর ভাইয়ের মঙ্গলময় দীর্ঘজীবন কামনা করে।’ যমুনা আশীর্বাদ চাইলে যম বলেন যে, এই তিথিতে যে ভাই নিজের বোনের বাড়ি গিয়ে তাঁর পুজো স্বীকার করবে ও তাঁর হাতে তৈরি রান্না গ্রহণ করবে, তাঁর ভাগ্যে অকালমৃত্যুর ভয় থাকবে না। তখন থেকেই নাকি ভাইফোঁটার প্রচলন।

    অন্য একটি পৌরাণিক মতে, নরকাসুর বধের পূর্বে সুভদ্রার কাছে আসেন শ্রী কৃষ্ণ। সুভদ্রা তখন শ্রী কৃষ্ণের মঙ্গল ও বিজয় কামনা করে কপালে ফোঁটা দিয়ে মিষ্টি খেতে দেন শ্রী কৃষ্ণকে। এরপরই নরকাসুরকে বধ করেন শ্রী কৃষ্ণ। আরও একটি কাহিনী মতে, বালির হাতে পাতালে বন্দি হন ভগবান বিষ্ণু। তখন মাতা লক্ষ্মী বালিকে ভাই হিসেবে স্বীকার করে তাঁর কপালে তিলক এঁকে দেন। বালি উপহার স্বরূপ মাতা লক্ষ্মীকে কিছু দিতে চাইলে, দেবী লক্ষ্মী ভগবান বিষ্ণুকে চেয়ে নেন। তখন থেকেই নাকি ভাঁইফোটা (Bhai Phonta) প্রচলিত।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।

  • Kali Puja 2023: এখানেই সিদ্ধিলাভ করেছিলেন সাধক বামাক্ষ্যাপা, জানুন শক্তিপীঠ তারাপীঠের গল্প

    Kali Puja 2023: এখানেই সিদ্ধিলাভ করেছিলেন সাধক বামাক্ষ্যাপা, জানুন শক্তিপীঠ তারাপীঠের গল্প

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: শক্তিপীঠ, সিদ্ধপীঠ তারাপীঠ (Tarapith)। কালীপুজোয় (Kali Puja 2023) জমজমাট বীরভূমের তারাপীঠ। অনেকে ভাবেন এটি সতীপীঠ কিন্তু তারাপীঠ সতীপীঠ নয়। কথিত আছে, একবার দেবীর মাতৃরূপ দর্শন চান বশিষ্ঠ মুনি৷ দেবীও নিরাশ করেননি৷ এখানেই তাঁকে মাতৃরূপে দর্শন দেন দেবী। এখানেই তপস্যা করে সিদ্ধিলাভ করেন তারা মায়ের ভক্ত বামাক্ষ্যাপা। ফলে এটি সিদ্ধপীঠ হিসেবেও পরিচিত। অমাবস্যায় রীতি মেনে পুজো হয় এখানে।

    কালীপুজোয় কেমন হয় তারা মায়ের ভোগ?

    সকালে স্নানের পর দেবীর শিলাব্রহ্মময়ী মূর্তিকে রাজবেশে সাজিয়ে তোলা হয়। পরানো হয় চুনরি। এরপর পঞ্চ উপাচারে মঙ্গলারতি এবং নিত্যপুজো সম্পন্ন হয়। কালীপুজোর দিন খুব সকালে ডাবের জল দিয়ে শুরু হয় মায়ের ভোগ। সকালের ভোগে থাকে পাঁচ রকম বা ন’রকমের ভাজা, সাদা অন্ন, পায়েস ও মিষ্টি। এখানে মাকে পঞ্চব্যঞ্জন সহযোগে ভোগ নিবেদন করা হয়৷ আমিষ ভোগের মূল উপাদান হল শোল মাছ। ভোগের পাতে এই মাছ না থাকলে ভোগ গ্রহণ করেন না মা তারা। কালীপুজোর দিন ভোগ হিসেবে থাকে পোলাও, খিচুড়ি, সাদা ভাত, পাঁচরকম ভাজা, পাঁচ মিশালি তরকারি, মাছ, চাটনি, পায়েস এবং মিষ্টি। এখানকার অন্নভোগের বিশেষত্বই হল পোড়া শোলমাছ মাখা।

    সন্তানকে না খাইয়ে ভোগ গ্রহণ করেন না তারা মা

    দীপান্বিতা অমাবস্যা উপলক্ষ্যে নিয়ম-নিষ্ঠা মেনে হয় বিশেষ সন্ধ্যারতি। এরপর নিবেদন করা হয় লুচি, পায়েস, সুজি দিয়ে শীতল ভোগ। তারা মায়ের যেভাবে ভোগ পুজো হয়, সেই একই ভাবে পুজো করা হয় শ্মশান কালীকে। শ্মশানেই রয়েছে মায়ের আসল শিলা পাদুকা। তার পাশে বামদেবের সমাধি। তারাপীঠের নিয়ম অনুযায়ী, সন্তানকে খাইয়ে তবেই তারা মা ভোগ গ্রহণ করেন। তাই বামদেবের ভোগ আগে দেওয়া হয়। ভোগের তালিকায় রয়েছে প্রেত ভোগও। ডাকিনী-যোগিনীদের উদ্দেশ্যে দেওয়া এই ভোগ শ্মশানেই দেওয়া হয়। রাতে এক বারই এই ভোগের আয়োজন থাকে। বামদেবের খুব প্রিয় কুকুর ছিল শিবা। তার জন্যও থাকে বিশেষ ভোগের আয়োজন।

     

    দেশের খবরদশের খবরসব খবরসবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

  • Kali Puja 2023: ফি বছর মা কালীর ভিন্ন ভিন্ন রূপ সামনে এনে আকর্ষণের কেন্দ্রে সিউড়ির ক্লাব

    Kali Puja 2023: ফি বছর মা কালীর ভিন্ন ভিন্ন রূপ সামনে এনে আকর্ষণের কেন্দ্রে সিউড়ির ক্লাব

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দুর্গাপুজোর আমেজ শেষ হতে না হতেই সামনে দীপান্বিতা অমাবস্যা আর বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসবের মধ্যে একটি কালীপুজো (Kali Puja 2023)। এই সময় কয়েকটা দিন গোটা পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতবর্ষ রঙিন আলোয় সেজে ওঠে। সাধারণ মানুষের কাছে এটি যেমন একটি আনন্দোৎসব, পাশাপাশি সাধকদের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়। আজ আমরা এই প্রতিবেদনে একটি অন্য রকম কালীপুজোর কথা জানব, যেটি বীরভূম জেলার সিউড়ি শহরে অবস্থিত মালঞ্চ ক্লাব নামে পরিচিত।

    কেন এই মালঞ্চ ক্লাবের পুজো আলাদা?

    প্রত্যেক বছর চিরাচরিত কালীমূর্তির পরিবর্তে এখানে দেখা যায় হিন্দু পুরাণের কোণে লুকিয়ে থাকা অজানা ও ভিন্ন দেবীদের। এখানে থাকে না কোনও চিরাচরিত কালী মূর্তি। আর এই বিষয়টিই সব ক্লাবের পুজোর থেকে এটিকে আলাদা ও আকর্ষণীয় করে তোলে। এর সঙ্গে প্রত্যেক বছর যে মূর্তি পুজো হয় (Kali Puja 2023), সেই মূর্তির সম্বন্ধে মানুষকে অবগত করার জন্য থাকে সেই দেবীর পরিচয় পত্রিকা। এই বিষয়টির পিছনে আছে এক ইতিহাস।

    প্রত্যেক বছর ভিন্ন ভিন্ন মূর্তি

    সিউড়ি শহরের মালঞ্চ ক্লাবের নিকটবর্তী বাসিন্দাদের কাছে থেকে জানা যায়, সম্ভবত ৭০ এর দশকের শুরু থেকে এই ধরনের পরীক্ষামূলক কাজের সূচনা ঘটে, কালীমাতার বিভিন্ন রূপ নিয়ে প্রত্যেক বছর ভিন্ন ভিন্ন মূর্তি স্থাপন করা হত (Kali Puja 2023)। যা দেখতে বহু দূর দূরান্তের মানুষ ভিড় করত। আর এই  ধরনের মূর্তি স্থাপনের পিছনে যাঁর উদ্যোগ ছিল, তিনি অর্ণব মজুমদার। কোনও বার কালীর দশ মাথা ও দশ হাত যুক্ত মূর্তি, আবার কোনও বার ভয়ংকর উগ্রচণ্ডী মূর্তি স্থাপন করে পুজো শুরু হয়। এছাড়াও আর কিছু রূপ যেমন মধুকৈটভবধ, ব্রহ্মসরস্বতী, কামেশ্বরী, উগ্রতারা ইত্যাদির মূর্তি স্থাপন করা হয়েছে।

    কিন্তু কেন এমন রীতি?

    ১৯৬০ সালে এই মালঞ্চ ক্লাবের পুজো শুরু হয়। সিউড়ির ইতিহাস গবেষক অর্ণব মজুমদার নানা পৌরাণিক বই, নথি, বৌদ্ধতন্ত্র চর্চা করে কালীর বিভিন্ন রূপ সবার সামনে নিয়ে আসার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। এর পর পুরাণের বিভিন্ন শ্লোক থেকে কল্পনা করে দেবীর বিভিন্ন রকম কাল্পনিক রূপের মূর্তির ছবি কাগজে অঙ্কন করে সেটি মৃতশিল্পীর কাছে পাঠাতেন। পরে সেই মূর্তি তৈরি করে পুজো শুরু হত। প্রায় ৩০ বছর তিনি আলাদা আলাদা মূর্তি সামনে নিয়ে এসে মানুষকে অবাক করে দিয়েছিলেন (Kali Puja 2023)। এখনও একই রীতি অনুসরণ করা হচ্ছে। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষ এই মালঞ্চ ক্লাবে ভিড় করতেন। প্রত্যেক বছর যে মূর্তি স্থাপন করা হয়, সেই মূর্তিটি সম্পর্কে মানুষকে জানানোর জন্য একটি লিফলেটে সেই দেবীর সম্বন্ধে সমস্ত নথি ছাপানো হয়ে থাকে। এই বছর দেবীর যে রূপটি পূজিত হবে, সেটি কৌমরী মাতা নামে পরিচিত। ক্লাবের বয়োজ্যেষ্ঠ সদস্যদের কাছ থেকে জানা যায়, এক সময় রেডিওতে গোটা পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে এই মালঞ্চ ক্লাবের পুজো প্রচার করা হত। প্রত্যেক বছর মানুষ অপেক্ষা করে থাকতেন দেবীর নতুন রূপের দর্শন পাওয়ার জন্য।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের , Twitter এবং Google News পেজ।

  • Kali Puja 2023: এই মন্দিরে শোনা যায় মা কালীর নূপুরের ধ্বনি! কোথায় হয় এই পুজো?

    Kali Puja 2023: এই মন্দিরে শোনা যায় মা কালীর নূপুরের ধ্বনি! কোথায় হয় এই পুজো?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: সাধক বামাক্ষ্যাপার বংশধরেরা দীর্ঘদিন ধরে পুজো করে আসছেন রায়গঞ্জ আদি করুণাময়ী কালীমন্দিরে। অসম, পঞ্জাব, বিহার, উত্তরপ্রদেশ সহ বিভিন্ন রাজ্য, এমনকি বিদেশ থেকেও দীপাবলির রাতে আদি করুণাময়ী কালীবাড়িতে কালীমাতার পুজো (Kali Puja 2023) দিতে আসেন ভক্তরা। বন্দরের এই কালীমন্দিরে দীপান্বিতার পুজোকে কেন্দ্র করে হাজার হাজার ভক্তের সমাগমে পূণ্য তীর্থক্ষেত্র হয়ে ওঠে রায়গঞ্জ শহর। তবে এবছর সেবাইত তথা সাধক বামাক্ষ্যাপার বংশধর মৃত্যুঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়ের অকাল প্রয়াণে জাঁকজমক না থাকলেও পুরনো নিয়ম-রীতি মেনেই পুজোর আয়োজন হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

    ইতিহাস ৫০০ বছরের পুরনো (Kali Puja 2023)

    কথিত আছে, আজ থেকে পাঁচশো বছর আগে পঞ্জাব প্রদেশের এক সাধু হেঁটে এসে উপস্থিত হন রায়গঞ্জের কুলিক নদীর তীরে অবস্থিত বন্দর ঘাটে। ঘাটের কাছেই একটি গাছের তলায় আসনে বসে সিদ্ধিলাভ করেন৷ প্রতিষ্ঠা করেন পঞ্চমুণ্ড আসনের। সেই থেকে শুরু হয় এখানে মা কালীর আরাধনা। বেদীতেই পুজোর (Kali Puja 2023) প্রচলন হয়েছিল। ১২১৬ বঙ্গাব্দে দিনাজপুরের রাজা স্বপ্নাদেশ পেয়ে এই স্থানে নির্মাণ করেন কালীমন্দির। এরপর তারাপীঠের মহাসাধক বামাক্ষ্যাপার বংশধর জানকিনাথ চট্টোপাধ্যায় বারাণসী থেকে কষ্টি পাথরের কালীর মূর্তি এনে প্রতিষ্ঠা করেন পঞ্চমুণ্ড আসনে। সেটাও আজ থেকে আনুমানিক ২১৩ বছর আগের কথা। সেই থেকেই ওই একই মূর্তিতে দক্ষিণা কালীমাতার পুজো হয়ে আসছে বন্দর আদি করুণাময়ী কালীবাড়িতে।

    হাজার হাজার ভক্তের সমাগম

    স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এই মন্দিরে কালীপুজোর (Kali Puja 2023) রাতে মায়ের পায়ের নূপুরের ধ্বনি শোনা যায়। তন্ত্রমতে এখানে দেবী পূজিতা হন। কালীপুজোর রাতে এখনও পুরনো রীতি মেনে শেয়ালের ডাক শোনার পরই পুজো শুরু হয়। সোল ও বোয়াল মাছের ভোগ দেওয়ার পাশাপাশি ছাগ বলির প্রচলন রয়েছে। আজও কালীমন্দিরে বংশপরম্পরায় পুজো করে আসছেন সাধক বামাক্ষ্যাপার বংশধরেরা। জাগ্রতা এই দেবীর মাহাত্ম্য ছড়িয়েছে উত্তর দিনাজপুর জেলা ছাড়িয়ে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে, এমনকি বিদেশেও। তাই তো দীপান্বিতা কালীপুজোর রাতে হাজার হাজার ভক্তের সমাগম হয় রায়গঞ্জের এই কালীমন্দিরে। সারা বছরই অসংখ্য ভক্তের সমাগম হয় এই জাগ্রতা দেবীর মন্দিরে। ভক্তদের প্রণামী আর দান দিয়েই হয় দীপান্বিতা কালীপুজো। তবে এবছর বন্দর আদি করুণাময়ী কালীমন্দিরের সেবাইত সাধক বামাক্ষ্যাপার বর্তমান বংশধর মৃত্যুঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়ের অকাল প্রয়াণে শোকস্তব্ধ কালিবাড়ি চত্বর। তবে পুরনো নিয়ম-নীতি মেনেই পুজো হবে। পুজোয় কোনও রকম ত্রুটি থাকবে না বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা থেকে শুরু করে সেবাইতের পরিবার।

     

    দেশের খবরদশের খবরসব খবরসবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

  • Kali Puja 2023: লোহাদহ থেকে আসত ক্ষীর, ছানা, দুধ! বলি হত ১০৮টি! কেমন ছিল ঘোষালবাড়ির পুজো?

    Kali Puja 2023: লোহাদহ থেকে আসত ক্ষীর, ছানা, দুধ! বলি হত ১০৮টি! কেমন ছিল ঘোষালবাড়ির পুজো?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: খড়ের ছাউনি, মাটির দেওয়াল। একচালা মন্দিরের মধ্যে অষ্টধাতুর কালী বিগ্রহ। মন্দিরে নিত্যপুজো হত। কার্তিক মাসে কৃষ্ণপক্ষে বিশেষ দিনে ধুমধাম করে কালীপুজো হত। গ্রামের আবালবৃদ্ধবনিতা সেই পুজোয় সামিল হতেন। তখন মুঘল যুগ। আর গৌড়ের শাসক সুলায়মান খান কররানি। তাঁর আমলে সেনাপতি ছিলেন কালাপাহাড়। সুবে বাংলা, ওড়িশা জুড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে কালাপাহাড়। জগন্নাথ মন্দিরে হামলা চালিয়ে লুটতরাজ চালায় কালাপাহাড়। বাংলার একাধিক মন্দিরে হানা দেয় কালাপাহাড়ের দলবল। চলে লুটপাট। অত্যাচার থেকে মন্দির রক্ষা করতে মুর্শিদাবাদের বাজারসৌ ঘোষালবাড়ির অষ্টধাতুর বিগ্রহ মাটির তলায় রেখে দেওয়া হয়। তারপর থেকেই ঘোষালবাড়ির কালী মায়ের মৃন্ময়ী রূপ। কালের নিয়মে ঘোষালবাড়ি এখন ঘোষালপাড়়ায় পরিণত হয়েছে। পুরানো ঐতিহ্য মেনেই কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষের বিশেষ দিনে জাঁকজমকভাবে পুজো (Kali Puja 2023) হয়ে আসছে।

    কালীপুজোর ইতিহাস

    পুজোর ইতিহাস জানার আগে জানতে হবে ঘোষালদের আদি বাসস্থান। পরিবারের প্রবীণ সদস্য প্রয়াত চণ্ডীদাস ঘোষাল, সুর্নিমল ঘোষালের কাছে পাওয়া তথ্য অনুসারে, বাজারসৌ ঘোষালদের আদি ভিটে ছিল দক্ষিণেশ্বরের পাশে আড়িয়াদহে। সেখান থেকে আট পুরুষ আগে রাম যাদব ঘোষাল বাজারসৌ আসেন। কান্দীর জেমোর জমিদারের অধীনে ছিল এই এলাকা। ওই জমিদারদের আমলেই মোড়পতলার দুর্গামন্দির, দুটি শিব মন্দির, বর্তমান ঘোষালপাড়ার পাশে শিবপুকুর পাড়ে তিনটি শিব মন্দির নির্মিত হয়েছিল। আর মন্দিরের সেবাইত ছিলেন রামযাদব। শিবপুকুরের পাড়ে শিব মন্দিরের আশপাশে ছিল বসতভিটে। বসতভিটের কাছেই একচালার মন্দির তৈরি করে শুরু হয়েছিল কালীপুজো (Kali Puja 2023)। তবে, নির্দিষ্ট সময়কালের নথি আর নেই। ফলে, শিবমন্দিরের পাশাপাশি কালী মন্দিরে নিত্যপুজো হত। সেই সময় ঘোষালদের সঙ্গে বন্দ্যোপাধ্যায়, ভট্টাচার্য, আচার্য্যরা সামিল হতেন। সেই সময় এই পুজোকে ঘিরে গোটা গ্রামের মানুষের উন্মাদনা ছিল চোখে পড়ার মতো।

    ১০০ বছর আগে কেমন ছিল পুজো?

    কালীপুজোর অনেক আগে থেকে চলত প্রস্তুতি। এখন ঘোষালপাড়ায় করুণাসিন্ধু, দ্বিজত্তোম, দিলীপ, ভাগবত, মধুসূদন, তপন, স্বপন, উত্তম, জয়ন্ত, আশিস, সঞ্জয়, সমর ঘোষালের মতো প্রবীণ সদস্যরা রয়েছেন। মায়ের প্রতিমা থেকে সাজ, ঢাক-ঢোল সব কিছুই নির্দিষ্ট পরিবার থেকে প্রতি বছর আসত। ঘোষাল পরিবারের প্রবীণ সদস্যরা বলেন, সালারের কাছে হলদে থেকে নাটাকুরু আসতেন ঢোল, বাঁশি বাজাতে। বাজারসৌ দাসপাড়া থেকে ঢাক আসত। সুকুলি দাস, কুশো দাসরা বাজাতে আসতেন। লোহাদহ থেকে ক্ষীর, ছানা, দুধ আসত। বিনিময়ে জমি দেওয়া ছিল। আর ভরতপুর থকে মালাকার পরিবারের সদস্যরা মাকে ডাকের সাজ পরাতেন। আমাদের পুজো শুরু হওয়ার পর তালডাঙা মায়ের পুজো শুরু হত। ১০৮টি বলি হত। মেষ, মোষ বলি হত। বিশালকার তশলা ছিল। বাপ ঠাকুরদার সময় থেকেই এই নিয়ম চলে আসে। সেই সময় পরিবারের সদস্যরা মায়ের পুজোর (Kali Puja 2023) পৌরোহিত্য করতেন। আদি বড়মায়ের নতুন মন্দির তৈরিতে সহদেব ঘোষালের অন্যতম ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন। সেই নতুন মন্দির এখনও বর্তমান রয়েছে।

    কবে থেকে শুরু হল নতুন কালীপুজো?

    সালটা ১৯৬৬। পরিবারের এখন যারা প্রবীণ সদস্য, তাঁরা তখন ছোট। পুজো সংক্রান্ত বিষয়ে মতবিরোধের জেরে পুজো (Kali Puja 2023) ভাগ হয়ে যায়। শিবনারায়ণ ঘোষালের ফাঁকা জমিতে মন্দির প্রতিষ্ঠা হয়। গৌরী-কান্তি-অনিল তিন ভাই মিলে নতুন করে কালীপুজো শুরু করেন।২০১১ সালে নতুন করে মন্দির তৈরির কাজ শুরু হয়। মন্দির তৈরিতে সুনীল বন্দ্যোপাধ্যায়, করুণাসিন্ধু, উদয়, দ্বিজত্তোম, দিলীপ, প্রয়াত চণ্ডী ঘোষাল, সুভাষ ঘোষাল, সুর্নিমল ঘোষালদের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল। পরিবারের আত্মীয়রা নতুন মন্দির তৈরিতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। নতুন মন্দিরে সেই ঐতিহ্য মেনেই পুজো হয়ে আসছে। পুজোর দিন পরিবারের অধিকাংশ সদস্যও সারাদিন উপোস করে থাকেন। বিকেলের পর থেকে রাত পর্যন্ত চলে ভোগ রান্না। দুটি কালী মন্দিরে এখনও বলিপ্রথা অব্যাহত। তবে, মোষ বলি বহু বছর আগেই উঠে গিয়েছে। এখন শুধু ঘোষাল পরিবারের সদস্যরা ছাগ বলি দেন।

    বর্তমানে কেমন হয় কালীপুজো?

    ঘোষালবাড়ির বর্তমান প্রজন্মের বেশিরভাগই কর্মসংস্থানের জন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্তে থাকেন। পুজোর কদিন সকলেরই বাড়ি ফিরে আসেন। পরিবারের আত্মীয়স্বজনরাও সকলেই পুজোর কদিন চলে আসেন। আগের দিন থেকেই ঘোষালপাড়াকে আলোয় সাজানো হয়। প্রতিটি বাড়িতে জ্বলে ওঠে টুনি। আগে ছাদের উপর বাঁশ বেঁধে নাইট ল্যাম্প লাগিয়ে রঙিন কাগজ দিয়ে ঘেরা দেওয়া হত। সমগ্র এই উদ্যোগটাকে বলা হত ফনাস। সেই সময় ঘোষালপাড়া জুড়ে ফনাস টাঙানোর রেওয়াজ ছিল। সুতলির দড়িতে রঙিন কাগজ লাগিয়ে গোটা রাস্তা সাজিয়ে তোলা হত। এখন সেই রীতি উঠে গিয়েছে। কয়েক বছর আগে পর্যন্ত কালীপুজোর আগেরদিন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হত। এছাড়া অর্কেষ্টা, বাউল গান, সাঁওতালি নাচ, ম্যাজিক শো হত। করোনার পর এখন আর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয় না। তবে, পুজোর আগের দিন মণ্ডপে বসে সান্ধ্যকালীন আড্ডা কার্যত মিলন উত্সবে পরিণত হয়। পুজোর আগের দিন ঢাক-ঢোলের আওয়াজে মন্দির চত্বর মুখরিত হয়ে ওঠে। পুজোর দিন সন্ধ্যায় গোটা ঘোষালবাড়ির ছাদ মোমবাতি জ্বালিয়ে সাজানো হয়। দুই কালী মন্দিরের সামনে ঢাক-ঢোল, সাউন্ড বক্সের আওয়াজে আর ছাদে থরে থরে সাজানো মোমবাতির আলোর রোশনাইয়ে গোটা ঘোষালপাড়া গমগম করে। পরিবারের নবীন সদস্যরা বলেন, পুজোর সময় সারারাত ধরে চেয়ারে বসে পুজো দেখা, ভোরের দিকে মন্দিরে বসে পুষ্পাঞ্জলি দেওয়ার আলাদা উন্মাদনা। পুজোর (Kali Puja 2023) পরদিন প্রত্যেকের বাড়িতে পাত পেড়ে খাওয়া-দাওয়া হয়। পুজোর কদিন কার্যত ঘোষালপাড়া আদতে একটি বৃহত্ ঘোষালবাড়ির আকার নেয়। গোটা পাড়া হয়ে ওঠে একটি পরিবার। আলোর উত্সবে আদিশক্তির আরাধনায় মেতে ওঠে সকলে।

     

    দেশের খবরদশের খবরসব খবরসবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

  • Kali Puja 2023: নৈহাটির ‘বড়মা’-র পুজো এবার ১০০ বছরে, ভোর থেকেই শুরু হবে দণ্ডি কাটা

    Kali Puja 2023: নৈহাটির ‘বড়মা’-র পুজো এবার ১০০ বছরে, ভোর থেকেই শুরু হবে দণ্ডি কাটা

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: নৈহাটির বড়মা ১০০ বছরে পদার্পণ করল। তাই এবার বাড়তি উন্মাদনা পুজো উদ্যোক্তাদের। নতুন মন্দিরে বিশাল জাঁকজমকভাবে মায়ের কষ্টি পাথরের মূর্তি বসানো হয়েছে। উদয়পুর থেকে বড়মায়ের কষ্টি পাথরের মূর্তি নিয়ে আসা হয়েছে। কষ্টি পাথরের বিগ্রহে মায়ের নিত্য পুজো হচ্ছে। আর নিয়ম মেনে মায়ের মৃন্ময়ী মূর্তি তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে। মায়ের সোনা, রুপোর কয়েক কেজি গয়না থাকে ব্যাঙ্কে। অন্যবারের মতো এবারও পুলিশি নিরাপত্তার মোড়কে মাকে গয়না পরানো হবে (Kali Puja 2023)। লক্ষ্মীপুজোর দিন জাঁকজমকভাবে মায়ের বিগ্রহের খুঁটি পুজো হয়েছে। বড়মায়ের পুজো ঘিরে নৈহাটিবাসীর উন্মাদনা এখন তুঙ্গে। মায়ের মাহাত্ম্যেই ভক্তের সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলেছে।

    ভবেশ কালীই আজকের বড়মা (Kali Puja 2023)

    এই পুজোর সৃষ্টির একটি ইতিহাস রয়েছে। নৈহাটির বাসিন্দা ভবেশ চক্রবর্তী এক বন্ধুর সঙ্গে ১০০ বছর আগে নদিয়ার শান্তিপুরে রাস উৎসব দেখতে গিয়েছিলেন। সেখানে কালীর বড় বিগ্রহ দেখে নৈহাটি ফিরে অরবিন্দ রোডে কালীর বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা করেন। শুরুতে এই কালী প্রতিমা ভবেশ কালী নামেই পরিচিত ছিল। পরবর্তীকালে ২১ ফুটের এই ভবেশ কালীকে বড় কালী বলা হত। কালের নিয়মে এই বড় কালী এখন বড়মা। বড়মায়ের মাহাত্ম্য লোকমুখে ঘুরে বেড়ায়। শুধু জেলার বাসিন্দারা নয়, দূর দূরান্তের হাজার হাজার ভক্ত দণ্ডি কাটার জন্য কালীপুজোর দিন ভোর থেকে গঙ্গায় লাইন দেন। বড় মায়ের পুজো দেখতে এতটাই ভিড় হয় যে অরবিন্দ রোডে ভক্তদের দাঁড়ানোর জায়গা থাকে না। তাই, সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে এই পুজো সম্প্রচারের ব্যবস্থা থাকে। বড় মা পুজো কমিটির সম্পাদক তাপস চক্রবর্তী বলেন, করোনার সময় দু’বছর মানুষের ইচ্ছা থাকলেও আসতে পারেননি। গত বছর থেকেই ভিড় উপচে পড়েছে। এবছর তো ভিড় অনেক বাড়বে। সেই মতো ভলান্টিয়ারের ব্যবস্থা থাকছে। পাশাপাশি পুলিশ-প্রশাসনের কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকছে। কালীপুজোর (Kali Puja 2023) দিন ভোর থেকে ভক্তদের দণ্ডি কাটার জন্য বলা হচ্ছে।

    তৈরি হচ্ছে ৫ তলা ধর্মশালা (Kali Puja 2023)

    বড়মা পুজো কমিটি সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর দেড় কোটি টাকা খরচ করে অরবিন্দ রোডে পাঁচতলা ধর্মশালা তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল বড় মা পুজো কমিটির পক্ষ থেকে। প্রতিটি ফ্লোরে ৬ হাজার ৮০০ স্কোয়ার ফুট জায়গা তৈরি করা হচ্ছে। ফলে, ধর্মশালায় অসহায় বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের থাকার কোনও সমস্যা হবে না। অসহায় বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের বিনা পয়সায় থাকার জন্য এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। বড় মা মন্দির কমিটির কর্মকর্তা তথা নৈহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান অশোক চট্টোপাধ্যায় বলেন, জি প্লাস ফোর বিল্ডিং তৈরি করা হয়েছে। বড় মা পুজো কমিটির উদ্যোগেই সমস্ত কিছু করা হয়েছে। সেখানে যে কেউ চাইলে আর্থিক সাহায্য করতে পারেন। এই পুজো এবার ১০০ বছরে পদার্পণ করল। এই সময়ের মধ্যে ধর্মশালা চালু করার সব রকমের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এতদিন সারা বছর ছবি দিয়ে মায়ের নিত্য পুজো হত। এখন কষ্টি পাথরের বিগ্রহে পুজো হচ্ছে (Kali Puja 2023)।

     

    দেশের খবরদশের খবরসব খবরসবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

LinkedIn
Share